Home Blog Page 562

খালেদা জিয়াকে দেখতে আসলেন শেখ হাসিনা এবং খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে নির্বাচন পেছানোর দাবিতে মিথ্যা তথ্য প্রচার 

সম্প্রতি, “হঠাৎ খালেদাকে দেখতে আসলেন হাসিনা,খালেদাকে মুক্তি দিয়ে নির্বাচন পেছালো হাসিনা” শীর্ষক শিরোনাম এবং একই তথ্য সম্বলিত থাম্বনেইলে ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম ইউটিউবে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে। 

খালেদা জিয়াকে

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে দেখতে আসেননি এবং খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে নির্বাচন পেছানোর কোনো ঘটনাও ঘটেনি বরং ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার একাধিক পুরনো ভিডিও ক্লিপ যুক্ত করে কোনো প্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এটি ভিন্ন ভিন্ন কয়েকটি পুরোনো ঘটনার ভিডিও ক্লিপ এবং ছবি নিয়ে তৈরি একটি ভিডিও প্রতিবেদন, যেখানে আলোচিত দাবিটি প্রসঙ্গে কয়েকটি সংবাদ প্রতিবেদন এবং সাবেক সংসদ সদস্য এবং রাজনীতিবিদ গোলাম মাওলা রনির একটি ভিডিও দেখানো হয়।  

উক্ত ভিডিওটিতে দেখানো ভিন্ন ভিন্ন ভিডিও ক্লিপের বিষয়ে পৃথকভাবে অনুসন্ধান চালায় রিউমর স্ক্যানার টিম।

ভিডিও যাচাই 

অনুসন্ধানের শুরুতেই সময় টেলিভিশন এর একটি ভিডিও প্রতিবেদনের খণ্ডাংশ দেখানো হয়। উক্ত ভিডিও প্রতিবেদনের অনুসন্ধানে কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে সময় টেলিভিশন এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২২ সালের ২৪ জানুয়ারি “সেদিন কেঁদেছিলেন খালেদা জিয়া,বিমর্ষ ছিলেন প্রধানমন্ত্রীও।Arafat Rahman koko। Khaleda Zia” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিওটির ১ মিনিট ৫ সেকেন্ড সময় থেকে ১ মিনিট ১২ সেকেন্ড পর্যন্ত অংশটুকু আলোচিত ভিডিওটিতে যুক্ত করা হয়েছে। 

Video Comparison : Rumor Scanner

উক্ত ভিডিও প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০১৫ সালের ২৪ জানুয়ারি বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুতে সমবেদনা জানাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খালেদা জিয়ার বাসভবন গুলশানের ফিরোজায় দেখা করতে যান। 

ভিডিওটির পরবর্তী অংশে চ্যানেল ২৪ এর একটি ভিডিও প্রতিবেদনের খণ্ডাংশ দেখানো হয়। উক্ত ভিডিওটির অনুসন্ধানে কিওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে চ্যানেল ২৪ এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ “মুক্তি পেলেন খালেদা জিয়া” শীর্ষক শিরোনাম একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিওটির প্রথম কয়েক সেকেন্ড অংশটুকু আলোচিত ভিডিওটিতে যুক্ত করা হয়। 

 Video Comparison : Rumor Scanner 

উক্ত ভিডিও প্রতিবেদনের প্রথম অংশে ২০২০ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) প্রিজন সেল থেকে বেগম খালেদা জিয়াকে ছয় মাসের জন্য দণ্ড স্থগিত করে মুক্তি দেওয়ার বিষয়ে বলা হয়।

ভিডিওটির সর্বশেষ অংশে সাবেক সংসদ সদস্য এবং রাজনীতিবিদ গোলাম মাওলা রনিকে দেখানো হয়। উক্ত ভিডিওটির অনুসন্ধানে গোলাম মাওলা রনির ফেসবুক পেজে ২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর “বেগম জিয়াকে দেখতে প্রধানমন্ত্রী যাবেন!  ইটা কেমন দুঃস্বপ্ন!” শীর্ষক শিরোনামে একই ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Video Comparison : Rumor Scanner

উক্ত ভিডিওটিতে তিনি বেগম খালেদা জিয়াকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেখতে যাবে বলে ধারণা করেন তিনি এবং এ বিষয়ে তিনি তার নিজস্ব মতামত ব্যক্ত করেন। 

এই ভিডিওগুলো কোনো প্রকার প্রাসঙ্গিকতা ছাড়াই আলোচিত ভিডিওটিতে যুক্ত করা হয়েছে। 

অর্থাৎ প্রচারিত ভিডিওটিতে ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার পুরনো যে ভিডিও ক্লিপগুলো যুক্ত করা হয়েছে সেগুলোতে খালেদা জিয়াকে দেখতে আসলেন শেখ হাসিনা এবং খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে নির্বাচন পেছানোর কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এছাড়াও আলোচিত ভিডিওটির থাম্বনেইলে ব্যাবহৃত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে ‘Bangladesh Awami league’ এর ওয়েবসাইটে ২০১৮ সালের ৫ মার্চ “HPM Sheikh Hasina visits Zafar Iqbal at CMH”শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে থাকা প্রধানমন্ত্রীর ছবির সাথে আলোচিত ভিডিওটির থাম্বনেইলে ব্যবহৃত ছবিটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

Image Comparison : Rumor Scanner

উক্ত প্রতিবেদনে ব্যাবহৃত ছবিটিকে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির থাম্বনেইলে সম্পাদনার মাধ্যমে ব্যাবহার করা হয়েছে। 

মূলত, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি পাঁচ বছরের সাজা হয়। সেদিন থেকে তিনি কারাবন্দি হন। ২০২০ সালের মার্চে করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে সরকার খালেদা জিয়ার দণ্ড ছয় মাসের জন্য স্থগিত করে মুক্তি দেয়। এরপর দফায় দফায় তার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে এবং মামলা চলমান রয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে “হঠাৎ খালেদাকে দেখতে আসলেন হাসিনা,খালেদাকে মুক্তি দিয়ে নির্বাচন পেছালো হাসিনা” শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়। ভিডিওটি নিয়ে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত দাবিগুলো সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে অধিক ভিউ পাবার আশায় ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার কয়েকটি ভিডিও ক্লিপ এবং ছবি যুক্ত করে তাতে চটকদার থাম্বনেইল ও শিরোনাম ব্যবহার করে কোনোপ্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। এছাড়া, গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে দাবিগুলোর সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, খালেদা জিয়াকে দেখতে আসলেন শেখ হাসিনা এবং খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে নির্বাচন পেছানোর দাবিতে প্রচারিত তথ্যগুলো মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

পুলিশ, বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলামের সংঘর্ষে পুলিশ আহতের দাবিতে মিথ্যা তথ্য প্রচার 

সম্প্রতি, পুলিশ বিএনপি জামায়াতের ব্যাপক সংঘর্ষ, পুলিশকে পিটিয়ে মাথা ফাটালো– শীর্ষক শিরোনামে এবং থাম্বনেইলে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। 

ভিডিওটিতে দাবি করা হচ্ছে, পুলিশ, বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলামের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে পুলিশকে পিটিয়ে মাথা ফাটিয়ে ফেলা হয়েছে। 

পুলিশ, বিএনপি

ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সম্প্রতি পুলিশ, বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলামের মধ্যে কোনো সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি এবং কোনো পুলিশ সদস্যও আহত হননি বরং অধিক ভিউ পাবার আশায় চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এটি ভিন্ন ঘটনার পুরোনো একটি ভিডিও ক্লিপ ও একটি সংবাদ প্রতিবেদন এবং কয়েকটি ছবি যুক্ত করে সম্পাদনার মাধ্যমে তৈরি একটি ভিডিও।

ভিডিও যাচাই- ১

অনুসন্ধান করে এই ভিডিও সম্পর্কিত কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

ভিডিও যাচাই- ২

আলোচিত ভিডিওটির এই অংশে একজন সংবাদ উপস্থাপককে সংবাদ উপস্থাপন করতে দেখা যায়। উপস্থাপকের বক্তব্যের সূত্র ধরে অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে বেসরকারি টেলিভিশন যমুনা টেলিভিশনের ইউটিউব চ্যানেলে গত ১৯ ডিসেম্বর “তেজগাঁওয়ে চলন্ত ট্রেনে আগুন দিলো দুবৃর্ত্তরা, ৪ জনের মরদেহ উদ্ধার” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত ভিডিওটির সাথে আলোচিত ভিডিওটির হুবহু মিল রয়েছে। 

Video Comparison: Rumor Scanner 

উক্ত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ১৯ ডিসেম্বর ভোরে রাজধানীর তেজগাঁও স্টেশনে নেত্রকোনা থেকে ছেড়ে আসা ‘মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস’ ট্রেনের তিনটি বগিতে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে এক নারী ও তার শিশুসন্তানসহ ওই ট্রেনের চার যাত্রী নিহত হয়েছেন। 

তখন ঘটনাস্থল থেকে লাইভ করেন যমুনা টেলিভিশনের একজন সাংবাদিক। সেই লাইভের ভিডিও এটি। 

অর্থাৎ, পুলিশ, বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলামের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনার কোনো ভিডিও নয় বরং রাজধানীর তেজগাঁও স্টেশনে ‘মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস’ ট্রেনে আগুনের ঘটনার সংবাদ প্রতিবেদন এটি। 

পরবর্তীতে, দাবিটি অধিকতর যাচাইয়ের জন্য প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করতে গণমাধ্যম ও  সামাজিক মাধ্যমের কোনো বিশ্বস্ত সূত্রে এসংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

মূলত, আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) সহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল এ নির্বাচন বয়কটের ঘোষণা দিয়েছে। এদিকে এই নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে বিগত কয়েকবছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলোর কূটনীতিকরা দফায় দফায় বাংলাদেশের সরকার ও বিরোধী পক্ষসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষের সাথে কথা বলছে। এর প্রেক্ষিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেশি বিদেশি বিভিন্ন ব্যক্তিকে জড়িয়ে নানা সময় নানা ধরনের তথ্য প্রচার হয়ে আসছে। আর এরই ধারাবাহিকতায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘পুলিশ বিএনপি জামায়াতের ব্যাপক সংঘর্ষ, পুলিশকে পিটিয়ে মাথা ফাটালো’ শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়। তবে অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত দাবিটি নয়। প্রকৃতপক্ষে সম্প্রতি পুলিশ, বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলামের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি এবংকি কোনো পুলিশ সদস্যও আহত হোননি। এছাড়া, গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে উক্ত দাবির সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, পুলিশ, বিএনপি এবং জামায়াতের সংঘর্ষে পুলিশকে পিটিয়ে মাথা ফাটানোর দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ওবায়দুল কাদের ও জি এম কাদেরের মৃত্যুর গুজব

সম্প্রতি, “জাতীয় পার্টির কার্যালয় ভাঙচুর নির্বাচন বন্ধ জিএম কাদের ও ওবায়দুল কাদের নিহত” শীর্ষক শিরোনাম এবং থাম্বনেইলে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

মৃত্যুর

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে(আর্কাইভ)

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের নিহত হননি এবং ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় নির্বাচন স্থগিত-ও করা হয়নি বরং কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই অধিক ভিউ পাওয়ার আশায় চটকদার শিরোনাম এবং থাম্বনেইল ব্যবহার করে আলোচিত ভিডিওটি প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতেই আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওটি একটি সংবাদপাঠের ভিডিও এবং ভিন্ন ভিন্ন কয়েকটি ঘটনার ভিডিও ফুটেজ ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে।

ভিডিও যাচাই-১

প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে Channel 24 এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ২৩ ডিসেম্বর “মাদারীপুরে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থককে কু*পি*য়ে হ*ত্যা | Channel 24” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

Comparison By Rumor Scanner

উক্ত ভিডিও প্রতিবেদন থেকে জানা যায় যে, মাদারীপুরের কালকিনিতে স্বতন্ত্র প্রার্থীর এক সমর্থককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। প্রতিবেদন থেকে আরো জানা যায়, মাদারীপুরের কালকিনিতে স্বতন্ত্র ও নৌকা প্রার্থীর সমর্থকদের বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বিবাদে জড়ায় দু’পক্ষ। এ ঘটনায় স্বতন্ত্র প্রার্থী তহমিনা বেগমের এসকেন্দার খাঁ নামের এক সমর্থক নিহত হন। 

ভিডিও যাচাই-২

প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ২০২৩ সালের ২২ ডিসেম্বর Voice Bangla ইউটিউব চ্যানেলে “স্বতন্ত্র প্রার্থীরা কি নির্বাচনী মাঠে টিকতে পারবেন? Mostofa Feroz I Voice Bangla” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

Comparison By Rumor Scanner

উক্ত ভিডিওতে নৌকা প্রার্থীদের প্রভাবের কারণে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নির্বাচনে কতটা সুবিধা করতে পারবেন সে বিষয়ে আলোচনা করা হয়। সেইসাথে ভিডিওতে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে আলোচনা করতে দেখা যায়।

ভিডিও যাচাই-৩

প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে, সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মওলা রনি’র ফেসবুক পেজে ২০২৩ সালের ২৩ ডিসেম্বরের একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Comparison By Rumor Scanner

উক্ত ভিডিওতে সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মওলা রনিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক আলোচনা করতে দেখা যায়।

অর্থাৎ, উপরোক্ত তিনটি ভিডিওকেই অপ্রাসঙ্গিকভাবে আলোচিত ভিডিওর সাথে জুড়ে দিয়ে প্রচার করা হয়েছে।

ভিডিও যাচাই-৪

প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে NTV News ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ২২ ডিসেম্বর “জাতীয় পার্টির প্রধান নির্বাচনি কার্যালয়ে হা-ম-লা | NTV News” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Comparison By Rumor Scanner

উক্ত ভিডিও থেকে জানা যায়, জাতীয় পার্টির প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। 

পরবর্তীতে উক্ত ভিডিওর সূত্র ধরে, ২০২৩ সালের ২২ ডিসেম্বর দৈনিক মানবজমিন এর ওয়েবসাইটে “মৌলভীবাজারে জাপার নির্বাচনী কার্যালয়ে নৌকা সমর্থকদের হামলা ও ভাংচুর, আহত ৫” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, মৌলভীবাজার-৩ সংসদীয় আসনে জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী মো. আলতাফুর রহমানের প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর সমর্থকরা হামলা ও ভাঙচুর করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

পাশপাশি প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে, ২০২৩ সালের ২৪ ডিসেম্বর প্রথম আলো’র ওয়েবসাইটে “জাতীয় পার্টি মোটামুটি একটা উত্তরবঙ্গের দল: জি এম কাদের” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের নির্বাচনী প্রচারণার অংশ হিসেবে আজ রোববার(২৪ ডিসেম্বর) দুপুরে রংপুরে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

যা থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের জীবিত এবং সুস্থ্য আছেন।

এছাড়াও, প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে প্রথম আলো’র ওয়ারবসাইটে ২০২৩ সালের ২৪ ডিসেম্বর “ইসি কারও প্রার্থিতা বাতিল করলে আওয়ামী লীগের কিছু বলার নেই: কাদের” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, রোববার(২৪ ডিসেম্বর) রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন স্বাধীন প্রতিষ্ঠান। যৌক্তিক কোনো কারণে সে রকম (প্রার্থিতা বাতিল) কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হলে আমাদের কিছু বলার নেই।’

অর্থাৎ, আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জীবিত আছেন।

এছাড়াও জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম কিংবা নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্র থেকে আসন্ন ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন স্থগিতের সত্যতা জানা যায়নি।

মূলত, আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক যোগাযোগ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের নিহত হয়েছেন দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়। তবে অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত দাবিটি সঠিক নয়। অধিক ভিউ পাবার আশায় ভিন্ন ভিন্ন ভিডিওর খণ্ডাংশ যুক্ত করে করে তাতে চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে কোনোপ্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই আলোচিত দাবির ভিডিওটি প্রচার করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, পূর্বেও চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে বিভিন্ন ভুয়া তথ্য প্রচারের প্রেক্ষিতে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কয়েকটি প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান  জি এম কাদের নিহত হয়েছেন শীর্ষক দাবিতে একটি তথ্য ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ভিডিওটি পুলিশ কর্তৃক ট্রেনে আগুন দেওয়ার ঘটনার নয়

সাম্প্রতিক সময়ে দেশে বিএনপির ডাকা ও হরতাল অবরোধের সময় বেশ কয়েকটি স্থানে দুর্বৃত্তদের দ্বারা ট্রেনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। গত ০১ নভেম্বরও বিএনপির অবরোধ চলাকালে পাবনার ঈশ্বরদী রেল জংশনের কাছে মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনকে লক্ষ্য করে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিরা দেশি বোমা নিক্ষেপ করে। এই ঘটনার পরপর সেদিন ইন্টারনেটে একটি ভিডিও প্রচার হতে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

পাবনা জেলা প্রচার দল – Bnpp নামের একটি পেজ থেকে প্রচারিত ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায়, দুইজন পুলিশ সদস্য হাতে থাকা একটি বোতল ও কিছু তরল জাতীয় পদার্থ সম্বলিত পলিথিন নিয়ে রেল লাইনের পাশে দাঁড়িয়ে আছেন। পাশে আরো দুই ব্যক্তি এবং রেলওয়ের একজন গার্ডকে দেখা যাচ্ছে৷ পাঁচ সেকেন্ড দৈর্ঘ্যের ভিডিওটি পোস্ট করে ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, “পেট্রোল বোমা কারা মারে এবার দেখে নিন, মৈত্রী ট্রেনে পেট্রোল বোমা হামলার নাটক।”

ট্রেনে আগুন

এই ভিডিওটি এখন অবধি ২১ লক্ষাধিক বার দেখা হয়েছে, শেয়ার করা হয়েছে ২৭ হাজারেরও বেশি। এছাড়া, পোস্টটিতে প্রায় ৫০ হাজার পৃথক ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া দেখানো হয়েছে। ভাইরাল পোস্টটির মন্তব্যঘর ঘুরে পোস্টটির দাবির প্রেক্ষিতে অধিকাংশ নেটিজেনকে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানাতে দেখা যায়। ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

সেসময় ভিডিওটি আরও একাধিক পেজ এবং অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্ট করা হয়। দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

চলতি মাসেও ভিডিওটি সমজাতীয় দাবিতে ফের ইন্টারনেটে ছড়াতে শুরু করেছে। 

এ সংক্রান্ত ফেসবুকের কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

একই ভিডিও টিকটকে দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভাইরাল ভিডিওটি পুলিশ কর্তৃক ট্রেনে আগুন দেওয়ার ঘটনার নয় বরং গত ০১ নভেম্বর পাবনায় মৈত্রী ট্রেনে বোমা নিক্ষেপের ঘটনা পরবর্তী সময়ে ঘটনাস্থল থেকে জব্দকৃত আলামত পুলিশের হাতে দেখা যাওয়ার দৃশ্যকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে গত ০১ নভেম্বর উক্ত দাবিতে প্রকাশিত ভাইরাল পোস্টটি বিশ্লেষণ করেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। ভিডিওটির ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে কোনো স্থান এবং উপস্থিত ব্যক্তিদের পোশাক থেকে তাদের পরিচয় সনাক্ত করা সম্ভব না হওয়ায় ভিডিওটির ক্যাপশনের সূত্র ধরে অনুসন্ধান করেছি আমরা। 

ক্যাপশনে মৈত্রী ট্রেনে হামলার তথ্যের সূত্রে সেদিন দেশের একাধিক গণমাধ্যমে (, , ) পাবনার ঈশ্বরদী রেল জংশনের কাছে মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনে হামলার একটি খবর নজরে আসে আমাদের। 

খবরে বলা হয়, বিএনপির তিন দিনের অবরোধ কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনে সেদিন  দুপুরে পাবনার ঈশ্বরদী জংশন ও বাইপাস স্টেশনের মাঝামাঝি লোকোশেড এলাকায় মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনে ককটেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এতে ট্রেনের জানালার কাচ ভেঙেছে। তবে হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি।

গণমাধ্যমকে সেসময় ঈশ্বরদী রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুনুজ্জামান রুমেল বলেন, ‘ঘটনাস্থল থেকে একটি বোতল ও ভেতরে পেট্রল জাতীয় কিছু পদার্থ জব্দ করা হয়েছে।’

একই তথ্য দিয়েছেন পাকশী রেলওয়ে জোনের পুলিশ সুপার সাহাবউদ্দীন।

এ বিষয়ে ফেসবুকের দুইটি পেজে সেদিন একটি ভিডিও প্রকাশ করা হয়। দুইটি ভিডিওতেই (, ) ভাইরাল ভিডিওর ক্লিপটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot collage: Rumor Scanner 

আরেকটি ভিডিওতে একজন পুলিশের হাতে উক্ত আলামতগুলো দেখা যায়। ভিডিও ধারণকারী ব্যক্তির জিজ্ঞাসার জবাবে তাকে জানানো হয়, এগুলো পেট্রোল বোমা। 

অর্থাৎ, পুলিশ যেসব আলামত জব্দের কথা বলছে তা থেকে সহজেই প্রতীয়মান হয়ে যে, ভাইরাল ভিডিওতে পুলিশের হাতে থাকা বস্তুগুলোই এসব আলামত। 

মূলত, সম্প্রতি দেশে বিএনপির ডাকা ও হরতাল অবরোধের সময় বেশ কয়েকটি স্থানে দুর্বৃত্তদের দ্বারা ট্রেনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এরই প্রেক্ষিতে ইন্টারনেটে একটি ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে, পুলিশই ট্রেনে আগুন লাগিয়েছে। ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায়, দুইজন পুলিশ সদস্য হাতে থাকা একটি বোতল ও কিছু তরল জাতীয় পদার্থ সম্বলিত পলিথিন নিয়ে রেল লাইনের পাশে দাঁড়িয়ে আছেন। কিন্তু রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, পুলিশ কর্তৃক মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন লাগানোর এই দাবিটি সঠিক নয়৷ প্রকৃতপক্ষে, গত ০১ নভেম্বর বিএনপির অবরোধ চলাকালে পাবনার ঈশ্বরদী রেল জংশনের কাছে মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনকে লক্ষ্য করে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিরা দেশি বোমা নিক্ষেপ করে। দুর্বৃত্তদের ঐ হামলার পর পুলিশ সেখানে উপস্থিত হয়ে কিছু আলামত জব্দ করে। ঘটনাস্থলে পুলিশের হাতে থাকা সেসব আলামতের ভিডিও সেসময় গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত হয়। যা সেসময় এবং পরবর্তীতে সাম্প্রতিক সময়ে পুলিশ কর্তৃক ট্রেনে আগুন ধরানোর দৃশ্য দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, পূর্বে টিয়ার শেলের ঝাঁঝের তীব্রতা থেকে রক্ষা পেতে পুলিশ ও সাংবাদিকের চেষ্টাকে বিএনপির ডাকা ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সংগঠিত সংঘর্ষে পুলিশ ও সাংবাদিক মিলে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার দৃশ্য দাবিতে ইন্টারনেটে একটি ভিডিও প্রচার করা হলে এ বিষয়ে ফ্যাক্টচেক প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার। 

সুতরাং, গত নভেম্বরে ট্রেনে দুর্বৃত্তদের হামলার ঘটনার পর পুলিশের জব্দকৃত আলামত পুলিশের হাতে থাকাকালীন ধারণকৃত ভিডিওকে পুলিশ কর্তৃক ট্রেনে আগুন দেওয়ার ভিডিও দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

প্রধানমন্ত্রীসহ ৩০ মন্ত্রীর ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার মিথ্যা দাবি প্রচার

সম্প্রতি, “প্রধানমন্ত্রীর নিষেধাজ্ঞা চিঠি প্রকাশ করলো ডে বাইডেনে,নির্বাচন হবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে” শীর্ষক শিরোনাম এবং “প্রধানমন্ত্রী -সহ ৩০ মন্ত্রীর ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিলো যুক্তরাষ্ট্র” শীর্ষক তথ্য সম্বলিত থাম্বনেইলে ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম ইউটিউবে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে। 

৩০ মন্ত্রীর উপর

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওগুলো দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়,প্রধানমন্ত্রী -সহ ৩০ মন্ত্রীর ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার দাবিটি সঠিক নয় বরং অধিক ভিউ পাবার আশায় চটকদার শিরোনাম এবং থাম্বনেইল ব্যবহার করে ভিত্তিহীনভাবে উক্ত দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৩০ মন্ত্রীর ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। উক্ত ভিডিওটিতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এর নেত্রী রুমিন ফারহানার একটি ভিডিও দেখানো হয়।

উক্ত ভিডিওটির অনুসন্ধানে কিওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে Rumeen’s Voice নামক ইউটিউব চ্যানেলে গত ২৩ ডিসেম্বর “মার্কিন রাষ্ট্রদূত ভারতে গেলেন কেন?।Rumee’s Voice। রুমিন ফারহানা। Rumeen Farhana” শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিওটির একটি অংশের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison : Rumor Scanner 

ভিডিওটিতে রুমিন ফারহানা বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের ভারত সফর এবং আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নিজস্ব অভিমত ব্যাক্ত করেন। 

অর্থাৎ আলোচিত ভিডিওটিতে প্রধানমন্ত্রী -সহ ৩০ মন্ত্রীর ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়া বিষয়ক কোনো তথ্যের উপস্থিতি ছিলো না। ভিডিওটিতে অপ্রাসঙ্গিকভাবে রুমিন ফারহানার বক্তব্য যুক্ত করা হয়েছে। 

পরবর্তীতে, প্রধানমন্ত্রী -সহ ৩০ মন্ত্রীর বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে কি না সে বিষয়ে অনুসন্ধান করে রিউমর স্ক্যানার টিম। অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ গণমাধ্যম ও বিশ্বস্ত সামাজিক মাধ্যমে এসংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

তবে, দৈনিক যুগান্তরে গত ২৪ সেপ্টেম্বর “যে কারণে ভিসা নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্তদের নাম প্রকাশ করে না যুক্তরাষ্ট্র” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। 

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গণতন্ত্র ও নির্বাচনি প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের ওপর আনুষ্ঠানিক ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ওয়াশিংটন। শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এ সিদ্ধান্তের কথা জানান। তবে কোনো ব্যক্তির নাম প্রকাশ করেনি যুক্তরাষ্ট্র।

কেন ভিসা নিষেধাজ্ঞা ব্যক্তিদের নাম প্রকাশ করা হয় না- এ বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু বলেন, ভিসানীতির আওতায় ভিসা নিষেধাজ্ঞা যাদের দেওয়া হবে, তাদের নাম প্রকাশ করা হয় না। কারণ কাউকে ভিসা না দেওয়াসহ যে কোনো ভিসা রেকর্ড মার্কিন আইন অনুযায়ী গোপনীয় তথ্য। তিনি আরও বলেন, সাক্ষ্যপ্রমাণ ভালোভাবে পর্যালোচনা করার পর আমরা আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্যদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

অর্থাৎ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিসানীতিতে নিষেধাজ্ঞা প্রাপ্তদের নাম প্রকাশ করে না।

এছাড়া প্রধানমন্ত্রীসহ ৩০ মন্ত্রীর ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের ওয়েবসাইটে এমন কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মূলত, বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার গত ২২ সেপ্টেম্বর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান। যুক্তরাষ্ট্রের এই ঘোষণাকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যক্তির নাম উল্লেখ করে তাদেরকে ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে বলে  প্রচার হয়ে আসছে। এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি “প্রধানমন্ত্রী -সহ ৩০ মন্ত্রীর ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিলো যুক্তরাষ্ট্র” শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়। ভিডিওটি নিয়ে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসা ব্যক্তিদের নাম প্রকাশ করেনা। অধিক ভিউ পাবার আশায় ভিন্ন ঘটনার  ভিডিও যুক্ত করে তাতে চটকদার থাম্বনেইল ও শিরোনাম ব্যবহার করে কোনোপ্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। এছাড়া, গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে দাবিগুলোর সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, পূর্বেও বিভিন্ন ব্যক্তির ওপর মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞা নিয়ে মিথ্যা তথ্য প্রচারের প্রেক্ষিতে একাধিক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কয়েকটি প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, প্রধানমন্ত্রীসহ ৩০ মন্ত্রীর ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার দাবিটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার ভুয়া তথ্য প্রচার

সম্প্রতি, ‘ব্রেকিং নিউজ! হঠাৎ ভিসা নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নিলো যুক্তরাষ্ট্র নতুন কৌশলে কাজ করেছে প্রধানমন্ত্রী’ শীর্ষক থাম্বনেইল এবং প্রায় একই দাবি সম্বলিত  শিরোনামে একটি ভিডিও ইউটিউবে প্রচার করা হয়েছে।

ভিসা নিষেধাজ্ঞা

ইউটিউবে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া নতুন ভিসা নীতি বা ভিসা নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার মত কোনো ঘটনা ঘটেনি। বরং, অধিক ভিউ পাওয়ার আশায় ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার একাধিক ভিডিও যুক্ত করে চটকদার থাম্বনেইল ও শিরোনাম ব্যবহার করে কোনো প্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই ভিত্তিহীনভাবে আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যালোচনা করে রিউমর স্ক্যানার টিম। এতে ভিডিওটির শুরুতে এর উপস্থাপককে বলতে শোনা যায়, ‘ অনেকেই আশায় ছিল, এইযে যুক্তরাষ্ট্র থেকে নিষেধাজ্ঞা, স্যাংশন অনেক কিছু আসতেছে। এগুলো আসার কারণে হয়তো আওয়ামী লীগ হয়তো দমে যাবে। তফসিল পিছিয়ে দেওয়া হবে। নির্বাচন পেছানো হবে। নির্বাচনকে বানচাল করা হবে। এক তরফা নির্বাচন করতে পারবে না। আরও একটা আশা ছিল, ১০ ডিসেম্বর একটা নিষেধাজ্ঞা আসার কথা ছিল। কিন্তু সেটা আসেনি। তলে তলে সমঝোতা হয়ে গেছে। বিশ্বাস না হলে প্রতিবেদনটি মনোযোগ সহকারে দেখেন।’ এরপর ভিডিওটির উপস্থাপক দর্শকদের উদ্দেশ্যে দুটি ভিডিও দেখান। যার একটি চ্যানেল ২৪ এর একটি প্রতিবেদন এবং অপরটি একটি ভিন্ন ঘটনার ভিডিও। যার কোনোটিতেই যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

ভিডিও যাচাই ১

দর্শকদের উদ্দেশ্যে দেখানো প্রথম ভিডিওটির সূত্র অনুসন্ধানে ভিডিওতে থাকা চ্যানেল ২৪ এর লোগোর সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল Channel 24 News এর ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে গত ১২ ডিসেম্বর ওয়াদা রক্ষায় ১০ ডিসেম্বর আসেনি নিষেধাজ্ঞা; বলছে সরকার | চ্যানেল 24 সকাল ১০ টার খবর শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook 

প্রতিবেদনটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওতে দেখানো Channel 24 এর প্রতিবেদনের সংবাদপাঠকের অংশের সাথে উক্ত প্রতিবেদনের সংবাদপাঠকের অংশের মিল না থাকলেও মূল প্রতিবেদনের হুবহু মিল রয়েছে। 

Video Comparison by Rumor Scanner 

এছাড়াও প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, ২০২১ সালের ১০ ডিসেম্বর বাংলাদেশের এলিট ফোর্স র‌্যাবের উপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। যার পর থেকে দেশটির সাথে বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকট তৈরি হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে এবছর ১০ ডিসেম্বর নতুন নিষেধাজ্ঞা আসার একটি শঙ্কা ছিল। কিন্তু সরকারকে দেওয়া ওয়াদার প্রেক্ষাপটে দেশটি থেকে নতুন কোনো নিষেধাজ্ঞা আসেনি। উক্ত প্রতিবেদনটি মূলত এই বিষয়েই পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের দেওয়া বক্তব্যকে নিয়ে করা। এতে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেওয়ার বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

ভিডিও যাচাই ২

পরবর্তীতে দ্বিতীয় ভিডিওটির সূত্র অনুসন্ধানে ভিডিওতে দেখানো ব্যক্তির বক্তব্যের ‘এটা নৌকার সাথে নৌকার যুদ্ধ হচ্ছে’ শীর্ষক অংশটুকু সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ & বিএনপি ২০২৪ নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে গত ৮ ডিসেম্বর নৌকার সাথে নৌকার যুদ্ধ হবে, জনগণের ভোটাধিকার থাকবে না : ড. আসিফ নজরুল #বিএনপি শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: YouTube 

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিও সাথে উক্ত ভিডিওর মিল রয়েছে। তবে উক্ত ভিডিওটি ভিন্ন কোণ থেকে ধারণ করা হয়েছে। এছাড়াও ভিডিওটির শিরোনাম থেকে জানা যায়, ভিডিওতে বক্তব্য প্রদানকারী ব্যক্তির নাম ড. আসিফ নজরুল।

Video Comparison by Rumor Scanner 

তাছাড়াও ভিডিওটি পর্যালোচনা করে একটি ব্যানার দেখতে পাওয়া যায়। 

Screenshot: YouTube 

ব্যানারটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এতে ‘ভোটাধিকার ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার দাবিতে মুক্তির যাত্রা’ কথাটি লেখা রয়েছে। 

উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে দৈনিক পত্রিকা ভোরের কাগজ এর ইউটিউব চ্যানেল Bhorer Kagoj Live এ গত ৮ ডিসেম্বর ভোটাধিকার ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার দাবিতে মুক্তির যাত্রা | Muktir Jatra | BD Politics | Bhorer Kagoj শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি লাইভ ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: YouTube

উক্ত ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এটিতে ড. আসিফ নজরুল ইসলামের ভিন্ন পরিস্থিতিতে বক্তব্য প্রদান করার ফুটেজ রয়েছে। তবে পূর্বের এবং উক্ত ভিডিও কোথাও তাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার বিষয়ে কোনো বক্তব্য প্রদান করতে দেখা যায়না। 

এছাড়াও প্রাসঙ্গিক নানা কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা বা ভিসা নীতি তুলে নেওয়ার বিষয়ে দেশীয় কিংবা বিদেশী গণমাধ্যমে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মূলত, বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘণের নানা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২১ সালের ১০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে বাংলাদেশের এলিট ফোর্স র‍্যাবের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। পরবর্তীতে ২০২২ সালে ১০ ডিসেম্বর আশঙ্কা করা হয় যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে নতুন কোনো নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে। কিন্তু সেবছর কোনো নিষেধাজ্ঞা না আসলেও আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে এবছর মানবাধিকার দিবসে নিষেধাজ্ঞা আসা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছিল। কিন্তু এত জল্পনা কল্পনার পরও এবারও নতুন কোনো নিষেধাজ্ঞা দেখা যায়নি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ১২ ডিসেম্বর Channel 24 একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। উক্ত প্রতিবেদনের সাথে ভিন্ন একটি ঘটনার ভিডিও যুক্ত করে অধিকতর ভিউ পাবার আশায় ‘ব্রেকিং নিউজ! হঠাৎ ভিসা নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নিলো যুক্তরাষ্ট্র নতুন কৌশলে কাজ করেছে প্রধানমন্ত্রী’ শীর্ষক থাম্বনেইল ও প্রায় একই দাবি সম্বলিত শিরোনাম ব্যবহার করে কোনোপ্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে।

সুতরাং, হঠাৎ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেওয়ার দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

ডিভোর্স পেপারে বুবলীর স্বাক্ষরের বিষয়ে আরটিভি কোনো ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি 

0

গেল প্রায় দুই বছরের বেশি সময় ধরে চিত্রনায়ক শাকিব খান ও চিত্রনায়িকা শবনম বুবলীর সম্পর্ক ঘিরে গুঞ্জন চলছে। গত বছরের ০৩ অক্টোবর বুবলী এক ফেসবুক পোস্টে জানান, তিনি শাকিব খানকে ২০১৮ সালে বিয়ে করেছেন এবং তিনি ২০২০ সালে একটি পুত্রসন্তানের জন্ম দিয়েছেন। সপ্তাহখানেক পরই গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, তাদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছে। সম্প্রতি, বুবলীর ছবি সম্বলিত বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল আরটিভি’র আদলে তৈরি একটি ফটোকার্ডের মাধ্যমে দাবি করা হচ্ছে, বুবলী ডিভোর্সের কাগজে স্বাক্ষর করেছেন।  

ডিভোর্স

উক্ত ফটোকার্ড ব্যবহার করে প্রচারিত ফেসবুকের কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বুবলী শাকিব খানকে ডিভোর্স দিয়ে ডিভোর্সের কাগজে স্বাক্ষর করেছেন শীর্ষক দাবিতে আরটিভি কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি বরং আলোচিত এই ফটোকার্ডটি আরটিভির ডিজাইনের আদলে সম্পাদনার মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ফটোকার্ড পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। এতে সংবাদটি প্রচারের তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে ১৬ ডিসেম্বর ২০২৩। 

Screenshot: Facebook Claim 

পরবর্তীতে ১৬ ডিসেম্বর আরটিভি এমন কোনো সংবাদ প্রকাশ করেছে কি না সে বিষয়ে অনুসন্ধানে আরটিভি’র ওয়েবসাইট, ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ এবং আরটিভি’র ইউটিউব চ্যানেলে উক্ত তথ্য সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া অন্য কোনো গণমাধ্যমেও উক্ত দাবিতে প্রচারিত কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

তাছাড়া, আরটিভি’র ফটোকার্ডে ব্যবহৃত ফন্ট এবং আলোচিত ফটোকার্ডটিতে ব্যবহৃত ফন্টের মধ্যেও পার্থক্য রয়েছে। 

Photocard Comparison by Rumor Scanner

এ বিষয়ে জানতে আরটিভির অনলাইন ইনচার্জ বিপুল হাসানের কথা বলেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। তিনি রিউমর স্ক্যানারকে জানান, এ ধরনের নিউজ আমরা করিনি। আমাদের নাম ব্যবহার করে হয়তো কেউ প্রচার করছে। আমাদের চোখে যেগুলো পড়ে সেগুলো আমরা ফেসবুক পেজে পোস্ট দিয়ে থাকি৷

এরপর, আলোচিত ফটোকার্ডে ব্যবহৃত চলচ্চিত্র নায়িকা বুবলীর ছবির বিষয়ে অনুসন্ধান করে রিউমর স্ক্যানার টিম। বুবলীর ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর ১৩ টি ছবি সংযুক্ত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। সেখানে আলোচিত ছবিটিও রয়েছে।

Image Comparison: Rumour Scanner 

পোস্টের ক্যাপশনে বলা হয়, আদ্-দ্বীন মাদার কেয়ার লিমিটেডের হাইজিন প্রোডাক্ট ‘ফ্লাই’ স্যানিটারি ন্যাপকিনের সাথে যুক্ত হতে পেরে আমি ভীষণ আনন্দিত ও সম্মানিত বোধ করছি। এই ব্র্যান্ডটি নারীর ভেতরে লুকিয়ে থাকা আত্মবিশ্বাস জাগ্রত করবে। চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে নারীকে সামনে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্র তৈরি করবে। একই সঙ্গে নারীর ক্ষমতায়নে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। 

অর্থাৎ, বুবলীকে যে কাগজটিতে স্বাক্ষর করতে দেখা যাচ্ছে তা কোনো ডিভোর্সের কাগজ নয়। 

মূলত, গত বছরের ৩ অক্টোবর চলচ্চিত্র নায়িকা বুবলীর দেওয়া একটি পোস্টের মাধ্যমে শাকিব- বুবলীর বিয়ে এবং সন্তানের খবর সামনে আসে। পরবর্তীতে, সেই বছরই তাদের মধ্যে বিচ্ছেদ হয়েছে বলে সংবাদ প্রকাশ করে গণমাধ্যম। সম্প্রতি, অবশেষে ডিভোর্স পেপারে সাইন করলো বুবলী- শীর্ষক শিরোনামে আরটিভি’র ফটোকার্ডের ডিজাইন সম্বলিত একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সম্প্রতি আরটিভি এমন কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি এবং আলোচিত ফটোকার্ডে ব্যবহৃত ছবিটি ২০২১ সালে একটি পণ্যের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হয়ে চুক্তি স্বাক্ষরের সময় তোলা। 

সুতরাং, অবশেষে ডিভোর্স পেপারে সাইন করলো বুবলী- শীর্ষক শিরোনামে আরটিভি ফটোকার্ড প্রকাশ করেছে শীর্ষক একটি দাবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র 

অবৈধ নির্বাচনের দায় শেখ হাসিনার শীর্ষক কোনো মন্তব্য সিইসি ও রাষ্ট্রপতি করেননি  

সম্প্রতি, “অবৈধ নির্বাচনের দায় হাসিনার,ফাঁস করলো সিইসি ও রাষ্ট্রপতি” শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

অবৈধ নির্বাচনের দায়

ফেসবুকে প্রচারিত এমন একটি পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, অবৈধ নির্বাচনের দায় শেখ হাসিনার শীর্ষক কোনো মন্তব্য সিইসি ও রাষ্ট্রপতি করেননি বরং ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার একাধিক ভিডিও ক্লিপ যুক্ত করে কোনো প্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এটি ভিন্ন ভিন্ন কয়েকটি ঘটনার ভিডিও ক্লিপ এবং ছবি নিয়ে তৈরি একটি ভিডিও প্রতিবেদন, যেখানে দাবিটি প্রসঙ্গে চ্যানেল ২৪ এর একটি ভিডিও প্রতিবেদন এবং প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল এর ভয়েজ বাংলার একটি সাক্ষাৎকার এর ভিডিও দেখানো হয়।  

ভিডিও যাচাই 

অনুসন্ধানে শুরুতে আলোচিত ভিডিওটিতে থাকা চ্যানেল ২৪ এর ভিডিও প্রতিবেদনটির অনুসন্ধানে কিওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে চ্যানেল ২৪ এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ২০ ডিসেম্বর “নির্বাচন গ্রহনযোগ্য না হলে একা দায় নেবে না ইসি:সিইসি।CEC।Kazi Habibul Awal। VOA। Channel 24” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। এই প্রতিবেদনের প্রথম কয়েক সেকেন্ডের অংশটুকু আলোচিত ভিডিওটিতে যুক্ত করা হয়েছে। 

Video Comparison : Rumor Scanner 

উক্ত প্রতিবেদনে ভয়েজ অব আমেরিকায় আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারের বিষয়ে বলা হয়। উক্ত সাক্ষাৎকারে নির্বাচন গ্রহনযোগ্য না হলে একা দায় নেবে না ইসি বলে মন্তব্য করেন তিনি। 

আলোচিত ভিডিওটিতে দেখানো পরবর্তী ভিডিও ক্লিপটিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালকে দেখানো হয়। উক্ত ভিডিও ক্লিপটির অনুসন্ধানে কিওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ভয়েজ অব আমেরিকা বাংলার ইউটিউব চ্যানেলে গত ১৯ ডিসেম্বর  ‘হাবিবুল আউয়াল : তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিষয়ে কোন মন্তব্য করা এ পর্যায়ে সমীচীন হবে না’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিওটির ২৩ মিনিট ২২ সেকেন্ড সময় থেকে পরবর্তী এক মিনিট সময় পর্যন্ত অংশটুকু আলোচিত ভিডিওটিতে যুক্ত করা হয়েছে। 

Video Comparison : Rumor Scanner 

উক্ত ভিডিওটিতে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রসঙ্গে ভয়েজ অব আমেরিকা বাংলায় এক সাক্ষাৎকার দেন তিনি। উক্ত সাক্ষাৎকারে তিনি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন।

অর্থাৎ প্রচারিত ভিডিওটিতে ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার যে ভিডিও ক্লিপগুলো যুক্ত করা হয়েছে সেগুলোতে অবৈধ নির্বাচনের দায় শেখ হাসিনার শীর্ষক কোনো মন্তব্য সিইসি ও রাষ্ট্রপতি করেছেন এমন কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এছাড়া বিষয়গুলো নিয়ে প্রাসঙ্গিক একাধিক কি ওয়ার্ড সার্চ করেও গণমাধ্যম কিংবা অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে দাবিগুলোর সত্যতা পাওয়া যায়নি।

মূলত, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বর্তমান সরকারের পদত্যাগ এবং সেনাবাহিনীর অধীনে নির্বাচন করার দাবিতে বিএনপি-জামায়াতসহ আওয়ামী লীগ সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো দীর্ঘদিন ধরে রাজপথে আন্দোলন করে আসছে। এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ইন্টানেটে নানা ধরনের তথ্য প্রচার হয়ে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় ইন্টারনেটে “অবৈধ নির্বাচনের দায় হাসিনার,ফাঁস করলো সিইসি ও রাষ্ট্রপতি” শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়। ভিডিওটি নিয়ে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত দাবিগুলো সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে অধিক ভিউ পাবার আশায় ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার কয়েকটি ভিডিও ক্লিপ এবং ছবি যুক্ত করে তাতে চটকদার থাম্বনেইল ও শিরোনাম ব্যবহার করে কোনোপ্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। এছাড়া, গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে দাবিগুলোর সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

সুতরাং,অবৈধ নির্বাচনের দায় শেখ হাসিনার শীর্ষক মন্তব্য সিইসি ও রাষ্ট্রপতি করেছেন দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

গাজা ও মিশরের সীমান্ত দেয়াল ছিদ্র করে রুটি পৌঁছানোর বাস্তব দৃশ্য দাবিতে চলচ্চিত্রের দৃশ্য প্রচার 

গাজা ও মিশরের সীমান্ত দেয়াল ছিদ্র করে এক কিশোর ক্ষুধার্ত গাজাবাসীর কাছে রুটি পৌঁছে দিচ্ছে দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলোতে প্রচার করা হয়েছে। 

দেয়াল ছিদ্র

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ইউটিউবে প্রচারিত এমন একটি পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

একই দাবিতে এক্সে (সাবেক টুইটার) প্রচারিত এমন একটি পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওটি মিশরের এক কিশোর কর্তৃক গাজা ও মিশরের সীমান্ত দেয়াল ছিদ্র করে ক্ষুধার্ত গাজাবাসীর কাছে রুটি পৌঁছে দেওয়ার ঘটনার নয় বরং ইজরায়েলের জেরুজালেম থেকে পশ্চিম তীরে কিভাবে রুটি পাচার হয় তা নিয়ে ২০১২ সালে নির্মিত প্রামাণ্য চলচ্চিত্রের দৃশ্যকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে ভিডিওটি থেকে প্রাপ্ত স্থিরচিত্র রিভার্স সার্চের মাধ্যমে জর্ডান ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ‘Alghad Newspaper’ এর ফেসবুক পেইজে ২০১৫ সালের ০৮ ডিসেম্বরে প্রকাশিত একটি ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

আরবি ভাষায় প্রচারিত পোস্টটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, এটি পরিচালক খালেদ জারার ‘Infiltrators’ নামক প্রামাণ্য চলচ্চিত্রের দৃশ্য। যেখানে জেরুজালেম থেকে পশ্চিম তীরে কিভাবে রুটি পাচার করা হয় তার নমুনা দেখানো হচ্ছে। 

Screenshot from: Alghad Newspaper facebook post 

পরবর্তীতে খালেদ জারার আলোচ্য ডকুমেন্টারির বিষয়ে কি-ওয়ার্ড অনুসন্ধানে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার ওয়েবসাইটে ২০১২ সালের ২৪ ডিসেম্বরে “Infiltrators”: An innovative film about the isolation wall শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot from: Al Jazeera website

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনের পরিচালক (Movie Director) খালেদ জারার ‘Infiltrators’ প্রামাণ্য চলচ্চিত্রটি বেশ ইতিবাচক সাড়া ফেলেছিল, যেটি দুবাইয়ের ফিল্ম ফেস্টিভালে দেখানো হয়েছিল এবং ফিল্মটি আন্তর্জাতিক সমালোচক সমিতি পুরষ্কার ও সেরা চলচ্চিত্র পুরষ্কার পেয়েছে। 

মূলত, ২০১২ সালে ফিলিস্তিনি নির্মাতা খালেদ ইজরায়েলের জেরুজালেম থেকে পশ্চিম তীরে কিভাবে রুটি পাচার হয় তা নিয়ে একটি প্রামাণ্য চলচ্চিত্র তৈরি করেন। সম্প্রতি সেই প্রামাণ্য চলচ্চিত্রের ভিডিওকে মিশরের এক কিশোর কর্তৃক গাজা ও মিশরের সীমান্ত দেয়াল ছিদ্র করে ক্ষুধার্ত গাজাবাসীর কাছে রুটি পৌঁছে দেওয়ার দৃশ্য দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। 

সুতরাং, পুরোনো ডকুমেন্টারির দৃশ্যকে মিশরের এক কিশোর কর্তৃক গাজা ও মিশরের সীমান্ত দেয়াল ছিদ্র করে ক্ষুধার্ত গাজাবাসীর কাছে রুটি পৌঁছে দেওয়ার দৃশ্য দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

মিশা সওদাগর নির্বাচন করছেন না, এটি শুটিংয়ের দৃশ্য 

সম্প্রতি, চলচ্চিত্র অভিনেতা মিশা সওদাগর নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। 

টিকটকে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে মিশা সওদাগরের পাশে অভিনেতা নিলয় আলমগীরকেও দেখা যাচ্ছে। তাদের পেছনে মিশা সওদাগরের ছবি সম্বলিত একটি পোস্টার দেখা যাচ্ছে। পোস্টারে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে শরীফ খান নামক ব্যক্তিকে আপেল মার্কায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

মিশা সওদাগর

টিকটকে প্রচারিত এমন কিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, মিশা সওদাগরের নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার তথ্যটি সঠিক নয় বরং মিশা সওদাগর অভিনীত একটি শুটিংয়ের দৃশ্যকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানে Niloy Heme Natok নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে গত ১২ ডিসেম্বর নতুন চমক | Niloy Alamgir | Misha Sawdagor | Heme #shooting #shorts শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি শর্টস ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওতে মিশা সওদাগর ও নিলয় আলমগীর-এর পোশাকের সাথে উক্ত ভিডিওর তাদের দুজনের পোশাকের মিল রয়েছে। আলোচিত ভিডিওতে থাকা মিশা সওদাগরের নির্বাচনী প্রচারণার ব্যানারের সাথে উক্ত ভিডিওতে থাকা ব্যানারেরও মিল রয়েছে। ভিডিওর হ্যাশট্যাগ থেকে জানা যায়, এটি শুটিংয়ের দৃশ্য।

VIdeo Comparison by Rumor Scanner

পরবর্তীতে Niloy Heme Natok নামের উক্ত ইউটিউব চ্যানেলটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, উক্ত চ্যানেলটিতে মিশা সওদাগর ও নিলয় আলমগীরের একই শুটিংয়ের আরও বেশকিছু শর্টস ভিডিও প্রচার করা হয়েছে। দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে। 

এছাড়াও উক্ত শুটিংয়ের বিষয়ে অধিকতর অনুসন্ধানে Sentu M Sentu নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে গত ২৫ নভেম্বর Coming soon cinematic drama by hridoy vai! শীর্ষক ক্যাপশন যুক্ত উক্ত শুটিং চলাকালীন তোলা বেশকিছু ছবি খুঁজে পাওয়া যায়।

ছবিগুলোর মধ্যে শুটিং স্পটে মিশা সওদাগরের নির্বাচনী প্রতিপক্ষের ব্যানারও দেখতে পাওয়া যায়। 

Image: Facebook 

আরো অনুসন্ধান করে MD Rabbani Miyazi নামের একটি ফেসবুকে অ্যাকাউন্ট থেকে গত ২৪ নভেম্বর Watching @Niloy Alamgir And @Himi  Shooting শীর্ষক ক্যাপশন যুক্ত একই শুটিংয়ের সময় ধারণ করা আরও কিছু ছবি ও ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

পোস্টটিতে ব্যবহৃত লোকেশন থেকে জানা যায়, উক্ত শুটিং গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের অধীন পুবাইল আদর্শ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে করা হয়েছে। 

আমাদের অনুসন্ধানে জানা যায়, ফেসবুকে আরো দুইটি অ্যাকাউন্ট (, ) থেকে এই শুটিংয়ের বিষয়ে পোস্ট করা হয়, যেখানে এটিকে ওয়েব সিরিজের শুটিং বলে জানানো হয়েছে।  

Screenshot collage: Rumor Scanner

তবে অনুসন্ধানে উক্ত ওয়েব সিরিজের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি। তাছাড়া, গণমাধ্যম সূত্রে সাম্প্রতিক সময়ে কোনো উপজেলায় নির্বাচন আয়োজনের কোনো তথ্যও উল্লেখ পাওয়া যায়নি। 

মূলত, সম্প্রতি চলচ্চিত্র অভিনেতা মিশা সওদাগর নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে যাতে মিশা সওদাগরের ছবি সম্বলিত একটি পোস্টার দেখা যাচ্ছে। পোস্টারে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে শরীফ খান নামক ব্যক্তিকে আপেল মার্কায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। কিন্তু রিউমর স্ক্যানার টিম অনুসন্ধানে জেনেছে, মিশা সওদাগর সাম্প্রতিক সময়ে কোনো নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন না। প্রকৃতপক্ষে, একটি শুটিংয়ের দৃশ্যকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।   

প্রসঙ্গত, মিশা সওদাগর অভিনয়কে বিদায় জানিয়েছেন শীর্ষক একটি দাবি ২০২২ সালে ইন্টারনেটে প্রচার করা হলে বিষয়টি নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার। 

সুতরাং, মিশা সওদাগরের একটি শুটিংয়ের দৃশ্যকে ব্যবহার করে তিনি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন শীর্ষক একটি দাবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র