Home Blog Page 562

বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে জাতীয় পার্টির প্রার্থী শূন্য ভোট পাননি

সম্প্রতি, বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস শূন্য ভোট পেয়েছেন দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

উল্লিখিত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বরিশাল সিটি করপোরেশন(বিসিসি) নির্বাচনে মেয়র পদে জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস শূন্য ভোট পাওয়ার দাবিটি সত্য নয় বরং গত ১২ জুন অনুষ্ঠিত বিসিসি নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস ৬ হাজার ৬৬৫ ভোট পেয়েছেন।

ভুলের সূত্রপাত 

বেসরকারি টিভি চ্যানেল দীপ্ত টিভি গত ১২ জুন অনুষ্ঠিত বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচন – ২০২৩ এর ফলাফলের লাইভ(আর্কাইভ) সংবাদ প্রকাশ করতে গিয়ে লাইভের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত বিভিন্ন কেন্দ্রের ফল অনুযায়ী নৌকা ও হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোট সংখ্যা বেশ কয়েকবার হালনাগাদ করলেও জাতীয় পার্টির প্রার্থীর ভোট সংখ্যা শূন্য দেখিয়েছে। সর্বশেষ মোট ১২৬ কেন্দ্রের ফলাফলেও দীপ্ত টিভিতে তাপসের প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা শূন্য দেখানো হয়।

Image Collage: Rumor Scanner 

পরবর্তীতে, দীপ্ত টিভির ফেসবুক পেজে প্রচারিত সেই লাইভের স্ক্রিনশট নিয়ে ‘বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস শূন্য ভোট পেয়েছেন’ শীর্ষক দাবিটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।

নির্বাচনে কত ভোট পেয়েছেন ইকবাল হোসেন তাপস?

কি-ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে প্রথম আলোতে গত ১২ জুন “নৌকার খায়ের আবদুল্লাহ বরিশালের মেয়র” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, জাতীয় পার্টি মনোনীত লাঙল প্রতীকের মেয়র প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস মেয়র নির্বাচনে ৬ হাজার ৬৬৫ টি ভোট পেয়েছেন। 

Screenshot from ‘Prothom Alo’

এছাড়া অনলাইন পোর্টাল বিডিনিউজ২৪ এ একইদিনে “বরিশাল সিটি নির্বাচনে নৌকা জিতল ৫৩ হাজার ভোটে” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot from ‘Bdnews24’

পরবর্তীতে ওপেন সোর্স অনুসন্ধানের মাধ্যমে ‘খুলনা ও বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচন ১২-০৬-২৩’ এ খুলনার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা এবং বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচন – ২০২৩ এর রিটার্নিং অফিসার মোঃ হুমায়ুন কবিরের স্বাক্ষরিত ফলাফল শিট খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার টিম।

ফলাফল শিটেও জাতীয় পার্টি থেকে মনোনীত মেয়র প্রার্থী মোঃ ইকবাল হোসেন তাপসের ভোট সংখ্যা সম্পর্কে একই তথ্য জানা যায়। 

Image: Primary Result of BCC Election2023

মূলত, গত ১২ জুন অনুষ্ঠিত বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচন – ২০২৩ এ লাঙল প্রতীকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস ৬ হাজার ৬৬৫ ভোট পেয়েছেন। তবে, মূলধারার ইলেকট্রনিক সংবাদমাধ্যম দীপ্ত টিভি তাদের ফেসবুক পেজে উক্ত নির্বাচনের ফলাফলের লাইভ সংবাদ প্রকাশ করতে গিয়ে লাইভের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত বিভিন্ন কেন্দ্রের ফল অনুযায়ী নৌকা ও হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোট সংখ্যা বেশ কয়েকবার হালনাগাদ করলেও জাতীয় পার্টির প্রার্থীর ভোট সংখ্যা শূন্য দেখিয়েছে। সর্বশেষ মোট ১২৬ কেন্দ্রের ফলাফলেও চ্যানেলটিতে তাপসের প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা শূন্য দেখানো হয়। মূলত, সেই মুহূর্তের একটি ছবিই ‘বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচন – ২০২৩ এ জাতীয় পার্টির প্রার্থী শূন্য ভোট পেয়েছেন’ দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচন – ২০২৩ এ আওয়ামী লীগ প্রার্থী আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ সিটির মোট ১২৬টি কেন্দ্রে ৮৭ হাজার ৮০৮ ভোট পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন।

প্রসঙ্গত, পূর্বেও বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইস্যুতে  ইন্টারনেটে ভুল তথ্য প্রচার করা হলে সেগুলো শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার। এমন কিছু প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস শূন্য ভোট পেয়েছেন দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

কুমিল্লায় ফুটবল দল বহনকারী পিকআপের সাথে কাভার্ডভ্যানের সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা ১২ নয়

0

সম্প্রতি, ‘কুমিল্লায় অনূর্ধ ১৭ ইউনিয়ন ভিত্তিক ফুটবল টুর্নামেন্টে অংশ নিতে যাওয়ার সময় পিকআপ-কাভার্ডভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষে ১২ জন নিহত হওয়ার দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, কুমিল্লায় ফুটবল দল বহনকারী পিকআপের সাথে কাভার্ডভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষে ১২ জন নিহত হননি  বরং এই প্রতিবেদন প্রকাশের আগ পর্যন্ত সেই দুর্ঘটনায় ৪ জন নিহত হয়েছেন।

দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে অনলাইন পোর্টাল বিডি নিউজ২৪ এ ১১ জুন “পিকআপে ফুটবল খেলা দেখতে যাওয়ার পথে দুর্ঘটনায় নিহত ৪” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: bdnews24 

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায় , কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলায় পিকআপের সঙ্গে কাভার্ডভ্যানের সংঘর্ষে চারজন নিহত হয়েছেন।আহত হয়েছেন সাতজন। রোববার (১১জুন) বিকাল ৪টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে উপজেলার জোড়কানন এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

একইদিনে জাতীয় দৈনিক যুগান্তরের অনলাইন সংস্করণে “ফুটবল খেলা দেখতে যাওয়ার পথে সড়কে প্রাণ গেল ৪ জনের” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি  প্রতিবেদনে বলা হয়, কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলায় কাভার্ডভ্যান-পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষে চারজন নিহত হয়েছে। পিকআপভ্যানে করে বঙ্গবন্ধু ফুটবল টুর্নামেন্ট দেখতে আসার সময় কাভার্ডভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষে তারা নিহত হয়।

Screenshot: Daily Jugantor 

এছাড়াও জাতীয় দৈনিক সমকাল “কুমিল্লায় কাভার্ডভ্যান-পিকআপ মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ৪” এবং দেশ রূপান্তরে “কুমিল্লায় পিকআপ ও কাভার্ডভ্যানের মুখোমুখী সংঘর্ষ, নিহত ৪” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়।   

পরবর্তীতে তথ্যটি নিয়ে অধিকতর যাচাইয়ের জন্য  রিউমর স্ক্যানার টিম কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেবাশীষ চৌধুরী, সদর দক্ষিণ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শুভাশিষ ঘোষ এবং কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. আজিজুর রহমান সিদ্দিকীর সাথে যোগাযোগ করে। 

এ প্রসঙ্গে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেবাশীষ চৌধুরী রিউমর স্ক্যানারকে বলেন, ‘এ পর্যন্ত ৪ জনই নিহত হয়েছে। বাকিরা চিকিৎসাধীন আছে।’

সদর দক্ষিণ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শুভাশিষ ঘোষ রিউমর স্ক্যানারকে বলেন, ‘৪ জনই নিহত হয়েছে। একজনের অবস্থা একটু সংকটাপন্ন। তবে, নিহত ৪ জনই হয়েছে।’

কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. আজিজুর রহমান সিদ্দিকী রিউমর স্ক্যানারকে বলেন, ‘আমি এ পর্যন্ত ৪ জন নিহতের তথ্য পেয়েছি। ঘটনাস্থলে দুইজন ও আমরা তিনজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেছিলাম। সেখান থেকে দুইজন মারা গেছেন। একজন আইসিইউতে চিকিৎসাধীন আছেন।’ 

অর্থাৎ, উল্লিখিত দুর্ঘটনায় এই প্রতিবেদন প্রকাশের আগ পর্যন্ত ৪ জন নিহত হয়েছেন।

মূলত, গত ১১ জুন কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা পরিষদ মাঠে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের খেলা দেখতে যাচ্ছিলেন লালবাগ এলাকার একদল তরুণ। এসময় সদর দক্ষিণ উপজেলার জোড়কানন এলাকায় ঢাকা- চট্টগ্রাম মহাসড়কে তাদের বহনকারী পিকআপের সঙ্গে কাভার্ডভ্যানের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে চারজনের প্রানহানির ঘটনা ঘটে। তবে এই ঘটনাটিকেই পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোনো প্রকার তথ্যপ্রমাণ ব্যতীত ১২ জন নিহত হয়েছেন দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।   

সুতরাং, কুমিল্লায় ফুটবল দল বহনকারী পিকআপের সাথে কাভার্ডভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষে ৪ জন নিহত হওয়ার ঘটনাকে ১২ জন নিহত হওয়ার দাবিতে ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ বিভ্রান্তিকর।  

তথ্যসূত্র

হেফাজতের পুরানো সমাবেশের ভিডিওকে জামায়াতের সাম্প্রতিক সমাবেশ দাবিতে প্রচার

সম্প্রতি ‘আলহামদুলিল্লাহ, যারা বলো জামায়াত নাই তারা তাকিয়ে দেখো’ শীর্ষক শিরোনামে ঢাকায় জামায়াতে ইসলামীর মিছিল দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। 

টিকটকে প্রচারিত এমন কিছু ভিডিও এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন একটি পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত ১০ জুন ঢাকায় জামায়াতে ইসলামীর মিছিল দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পুরানো। প্রকৃতপক্ষে ইন্টারনেট থেকে হেফাজতে ইসলামের ফ্রান্সের দূতাবাস ঘেরাও কর্মসূচির একটি পুরানো ভিডিও সংগ্রহ করে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে। 

দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে রিউমর স্ক্যানার টিম প্রথমেই ভিডিওটি বিশ্লেষণ করে। বিশ্লেষণে ভিডিওটির ১১ সেকেন্ড সময়কালে ‘Boycott France’ লেখা শীর্ষক একটি ব্যানার খুঁজে পাওয়া যায়। 

Video Analysis: Rumor Scanner

এই ব্যানারের সূত্রে কি-ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে ফেসবুকে মারকাজুল কুরআন মাদরাসা বাংলাদেশ নামের একটি পেইজে ২০২০ সালের ২ নভেম্বর ‘আজকের ফ্রান্সের দূতাবাস ঘেরাও কর্মসূচিতে আল্লামা মামুনুল হক ও আল্লামা হাসান জামীল হাফিজাহুমাল্লাহ’র স্লোগান‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Markazul Quran Madrasah Bangladesh 

এই ভিডিওটির ২ মিনিট ১৮ সেকেন্ডে পাওয়া আশেপাশের দৃশ্যের সঙ্গে সম্প্রতি ঢাকায় জামায়াতে ইসলামীর মিছিলের দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

Video Analysis: Rumor Scanner

পাশাপাশি ভিডিওটি বিশ্লেষণে মিছিলটিতে উপস্থিত থাকা লোকদের হাতে কুশপুত্তলিকা সদৃশ কিছু বস্তুও দেখা যায়। 

Video Analysis: Rumor Scanner 

এছাড়া জামায়াতে ইসলামীর মিছিল দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটিতে প্রদত্ত স্লোগানের সাথেও ২০২০ সালের ফ্রান্স বিরোধী ফ্রান্সের দূতাবাস ঘেরাও কর্মসূচির ভিডিওটির স্লোগানের মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

পরবর্তীতে রিউমর স্ক্যানার টিম গত ১০ জুন ঢাকায় জামায়াতে ইসলামীর এমন (রাস্তায়) কোনো সমাবেশ হয়েছে কি না তা নিয়ে অনুসন্ধান করে। অনুসন্ধানে গণমাধ্যম এবং জামায়াতে ইসলামীর ভ্যারিফাইড ফেসবুক পেইজে এমন কোনো ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

মূলত, গত ১০ জুন দীর্ঘ ১০ বছর পর রাজধানীতে প্রকাশ্যে কর্মসূচি পালনের অনুমতি পায় বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী। রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে দলটি সমাবেশও করে। তবে এ সমাবেশের অংশ দাবি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে যে, সেটি ঢাকায় জামায়াতে ইসলামীর মিছিলের ভিডিও। তবে অনুসন্ধানে দেখা যায়, উক্ত ভিডিওটি মূলত ২০২০ সালের নভেম্বরে ঢাকায় হেফাজতে ইসলামের ফ্রান্সের দূতাবাস ঘেরাও কর্মসূচির সময়ে ধারণকৃত এবং এর সাথে জামায়াতে ইসলামীর কোনো সম্পৃক্ততা নেই।

সুতরাং, ২০২০ সালের হেফাজতে ইসলামের ফ্রান্সের দূতাবাস ঘেরাও কর্মসূচির সময়ে ধারণকৃত একটি ভিডিওকে গত ১০ জুনের ঢাকায় জামায়াতে ইসলামীর মিছিলের ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

বাংলাদেশে জাহাজ থেকে কয়লা পড়ে যাওয়ার ঘটনা দাবিতে ইন্দোনেশিয়ার পুরোনো ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি, “একে কারেন্ট এর জালাই বাঁচি না আবার কয়লা আনতে লাইগি পরে গেলো” শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে। দাবি করা হচ্ছে, বাংলাদেশে বিদেশ থেকে আমদানিকৃত কয়লা জাহাজ থেকে পড়ে গেছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)

টিকটকে প্রচারিত এমন কিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশে জাহাজ থেকে কয়লা পড়ে যাওয়ার ঘটনা দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং এটি ২০১৯ সালের ইন্দোনেশিয়ার পূর্ব-কালিমন্তনে জাহাজ থেকে কয়লা পড়ে যাওয়ার ঘটনার ভিডিও।

রিভার্স ইমেজ সার্চ অনুসন্ধানের মাধ্যমে ‘makassar_iinfo’ নামক একটি ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টে ২০১৯ সালের ১৭ ডিসেম্বর প্রকাশিত ভিডিওর সাথে  সম্প্রতি জাহাজ থেকে কয়লা পড়ে যাওয়ার দাবিতে প্রচারিত ভিডিওরহুবহু মিল খুজে পাওয়া যায়।

ইনস্টাগ্রাম পোস্টটি থেকে জানা যায়, ২০১৯ সালের ডিসেম্বর ইন্দোনেশিয়ার পূর্ব-কালিমন্তন এলাকায় জাহাজ থেকে কয়লা পড়ে যাওয়া ঘটনা ঘটে। এটি সেই ঘটনারই একটি ভিডিও।

Image Comparison by Rumor Scanner

পরবর্তীতে ইন্দোনেশিয়ার সংবাদমাধ্যম “Niaga.asia” এর ওয়েবসাইটে ২০১৯ সালের ১৯ ডিসেম্বর “Dinding Tongkang Jebol, Batubara Tumpah Kotori Laut Muara Berau” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদ প্রতিবেদনের ছবির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবির মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Image Comparison by Rumor Scanner

মূলত, ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে ইন্দোনেশিয়ার পূর্ব-কালিমন্তনে জাহাজ থেকে কয়লা পড়ে যাওয়ার ঘটনায় একটি ভিডিও সেসময় ইন্টারনেটে প্রচারিত হয়। সম্প্রতি, সেই ভিডিও ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহ করে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে জাহাজ থেকে কয়লা পড়ে যাওয়ার ঘটনার ভিডিও দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, গত ০৯ জুন রাতে বাগেরহাটের রামপাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য ইন্দোনেশিয়া থেকে ২৬ হাজার ৬২০ টন কয়লা নিয়ে মোংলা বন্দরে পৌঁছেছে চীনা পতাকাবাহী একটি জাহাজ।

সুতরাং, ২০১৯ সালে ইন্দোনেশিয়ায় জাহাজ থেকে কয়লা পড়ে যাওয়ার ঘটনার ভিডিওকে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে জাহাজ থেকে কয়লা পড়ে যাওয়ার ঘটনা দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ছোট শিশুর কোরআন তিলাওয়াতের ভাইরাল এই ভিডিওটি এডিটেড

সম্প্রতি, একটি মঞ্চে এক ছোট মেয়ের কোরআন তিলাওয়াত শুনে দর্শক এবং বিচারকদের কেউ কান্না করছে, কেউ অবাক হচ্ছে এমন দাবি করে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমনকিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, এক ছোট মেয়ের স্টেজে কোরআন তিলাওয়াতের ঘটনা দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি বাস্তব নয় এবং উক্ত ভিডিওটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় তৈরি করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে ভিডিওটির কি ফ্রেম কেটে কয়েকটি স্থিরচিত্র নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে ‘maria ulfah elkamiei’ নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে গত ১৯ মার্চ প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: maria ulfah elkamiei YouTube

ভাইরাল ভিডিওটির সাথে এই ভিডিওটির  সাদৃশ্য খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner

এছাড়াও maria ulfah elkamiei নামের ওই ইউটিউব চ্যানেলে প্রচারিত ভিডিওটির শুরুতেই ডিসক্লেইমার দিয়ে দর্শকদের উদ্দেশ্যে স্ক্রিনে জানিয়ে দেওয়া হয়, এটি একটি প্যারোডি ভিডিও। তাছাড়া এই চ্যানেলে বিভিন্ন সময় প্রচারিত আরও কিছু প্যারোডি ভিডিও দেখতে পাওয়া যায়।

Screenshot: maria ulfah elkamiei YouTube

পরবর্তীতে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে ব্রিটিশ গণমাধ্যম Express এর ওয়েবসাইটে ২০২২ সালের ২২ মে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে British got talent প্রোগ্রামের একটি ভিডিও’র ব্যাকগ্রাউন্ড এবং অনুষ্ঠানের এক বিচারকের সাথে আলোচিত ভিডিওটির ব্যাকগ্রাউন্ড এবং অনুষ্ঠানের বিচারকের মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Express Uk

এবিষয়ে আলোচিত ভিডিওটির সাথে express এ প্রকাশিত ভিডিওটির সাদৃশ্য দেখুন।

Video Comparison by Rumor Scanner

অর্থাৎ, প্রচারিত ভিডিওতে ব্রিটিশ টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব সিমন কাওয়েল এবং ব্রিটিশ অভিনেত্রী অ্যামাণ্ডা হোল্ডেন এর উপস্থিত থাকার দৃশ্যের সাথে ছোট মেয়েটির কোরআন তিলাওয়াতের ভিডিও যুক্ত করে আলোচিত ভিডিওটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় তৈরি করা হয়েছে।  

মূলত, সম্প্রতি একটি ছোট মেয়ে স্টেজে কোরআন তিলাওয়াতের একটি ভিডিওকে প্রচার করে দাবি করা হয়, ভিডিওটি দেখে উপস্থিত দর্শক এবং বিচারকদের কেউ কান্না করছে, কেউ অবাক হচ্ছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, এটি বাস্তব কোনো ভিডিও নয়। ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় তৈরি এই ভিডিওটি maria ulfah elkamiei নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত প্যারোডি ভিডিও থেকে নেওয়া হয়েছে। 

উল্লেখ্য, পূর্বেও আজান শোনানোর এডিটেড ভিডিও বাস্তব দাবিতে প্রচার করা হলে সে সময় বিষয়টি নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় তৈরি করা একটি এডিটেড ভিডিওকে এক ছোট মেয়ের কোরআন তিলাওয়াতের বাস্তব ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে মে মাসের সংঘর্ষের ঘটনায় গণমাধ্যমে পুরোনো ছবি প্রচার

গত মে মাসে ফিলিস্তিনে ইসরাইলের হামলার ঘটনায় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে একটি ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। 

উক্ত ছবি ব্যবহার করে ফিলিস্তিনে ইসরাইলের হামলার ঘটনায় প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সময় টিভি

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত ছবিটি গত মে মাসের ইসরায়েলের হামলার নয় বরং ২০২১ সালে ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরাইলের হামলার সময়কার দৃশ্যকে সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এবিষয়ে অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে আরব ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম  ALARABIYA news এর ওয়েবসাইটে ২০২১ সালের ২৭ মে ‘Israel’s attacks on Gaza may constitute ‘war crimes’: UN rights chief’  শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: ALARABIYA news

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ছবিটি ২০২১ সালের ১৬ মে গাজায় হামাস নিয়ন্ত্রিত এলাকায় ইসরায়েলের বোমা বর্ষণের সময়ের।

পরবর্তীতে মূল উৎস অনুসন্ধানে ছবি শেয়ারিং এবং স্টোরেজ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান Getty Images এর ওয়েবসাইটে ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: getty Images

উক্ত ছবির বিস্তারিত বিবরণী থেকেও একই তথ্য জানা যায়।

অর্থাৎ, মে মাসে ফিলিস্তিনে ইসরাইলের হামলার ঘটনায় গণমাধ্যমে দুই বছর পূর্বের ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। 

গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিটির ক্যাপশনে ছবিটি সংগৃহীত বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সাম্প্রতিক ঘটনার বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ছবিটি ব্যবহার করে সংগৃহীত উল্লেখ করায় স্বাভাবিকভাবেই ছবিটি ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলার ঘটনার বলে প্রতীয়মান হয়। এতে করে নেটিজেনদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হওয়া অমূলক নয়। 

মূলত, গত মে মাসে ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরাইলের হামলার ঘটনায় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে একটি ছবি প্রচারের প্রেক্ষিতে অনুসন্ধানে জানা যায়, ছবিটি সে সময়ের নয়। এটি ২০২১ সালের ১৬ মে ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরাইলের হামলায় সময়কার ছবি। গণমাধ্যমের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিটির ক্যাপশনে পুরোনো ঘটনার ছবি শীর্ষক কোনো তথ্য না দেওয়ায় ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের বলে প্রতীয়মান হয়, যা বিভ্রান্তির জন্ম দিয়েছে। 

উল্লেখ্য, পূর্বে কঙ্গোতে ভারী বর্ষণে বন্যার ঘটনায় গণমাধ্যমে একাধিক পুরোনো ছবি ব্যবহার করা হলে সেসময় বিষয়টি নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার। 

সুতরাং, ফিলিস্তিনের গাজায় সাম্প্রতিক সময়ে ইসরায়েলের হামলার ঘটনায় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দুই বছর পূর্বের ছবিকে সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

সরকার দলীয় জনপ্রতিনিধিদের মার্কিন নিষেধাজ্ঞা ও ভিসা বাতিলের গুজব

সম্প্রতি, বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল যুক্তরাষ্ট্রের স্যাংশন তালিকায় থাকা ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের আমেরিকার ভিসা বাতিলের দাবিতে দুইটি ভিন্ন ভিন্ন তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। 

দাবি: বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল যুক্তরাষ্ট্রের স্যাংশন তালিকায়। 

এই দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

টিকটকে প্রচারিত এমন ভিডিও এখানে (আর্কাইভ)।

দাবি: মেয়র তাপস যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা পাবেন না

এই দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ইউটিউবে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল যুক্তরাষ্ট্রের স্যাংশন তালিকায় নেই ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের আমেরিকার ভিসাও বাতিল হয়নি। বরং কোনো ধরনের তথ্যসূত্র ছাড়াই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উক্ত দাবি দুইটি প্রচার করা হচ্ছে। 

দাবি: বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল  যুক্তরাষ্ট্রের স্যাংশন লিস্টে 

দাবিটির সত্যতা অনুসন্ধানে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক কোনো গণমাধ্যমে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের যুক্তরাষ্ট্রের কালো তালিকায় থাকার বিষয়ে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

তবে গত ৩১ মে জাতীয় দৈনিক বণিক বার্তায় ‘মার্কিন ভিসা নীতির প্রতিক্রিয়া জানতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে পিটার হাসের সাক্ষাৎ‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Banik Barta

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বাংলাদেশীদের জন্য মার্কিন সরকার ঘোষিত ভিসা নীতির প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলেন দেশটির রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। প্রতিক্রিয়ায় সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে ঘোষিত যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতিকে স্বাগত জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তবে প্রতিবেদনটি থেকে আসাদুজ্জামান খান কামালকে যুক্তরাষ্ট্রের কালো তালিকায় অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে তথ্যটি নিয়ে অধিকতর অনুসন্ধানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট বা রাজস্ব বিভাগের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের Sanction Programs and Information সেকশনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের কালো তালিকায় অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

Screenshot: U.S. Department of the treasury

পাশাপাশি সম্প্রতি বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে ভিসা নীতি ঘোষণা করা মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিনকেনের ভ্যারিফাইড টুইটার অ্যাকাউন্ট ঘুরেও এ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা সম্পর্কে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

Screenshot: Secretary Antony Blinken Twitter 

মূলত, যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক কোন দেশের সরকারি উর্ধতন কর্মকর্তাদের উপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেয়া হলে অ্যান্থনি ব্লিনকেন সে বিষয় নিয়ে টুইট প্রকাশ করে থাকেন। 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এমন ভিসা নীতি ঘোষণার পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের মূলধারার ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম চ্যানেল আই এর টকশো অনুষ্ঠান তৃতীয় মাত্রায় লাইভে যুক্ত হন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু।

উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থাপক জিল্লুরের প্রশ্নের জবাবে ডোনাল্ড লু বলেন, “আমি একটি বিষয় খুব স্পষ্ট করে বলতে চাই যে, আজ আমরা কাউকে স্যাংশন দিচ্ছি না। সেক্রেটারি অফ স্টেট একটি নতুন নীতির ঘোষণা করেছেন, যা দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সরকার সেই সব ব্যক্তির ভিসা সুবিধায় বিধি–নিষেধ আরোপ করতে পারবে, যারা বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত বা ক্ষতিগ্রস্ত করবে।”

এছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশ অ্যাম্বাসির ফেসবুক পেইজ ও বাংলাদেশে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের টুইটার অ্যাকাউন্ট খুঁজেও এমন কোনো তথ্যের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

অর্থাৎ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল যুক্তরাষ্ট্রের স্যাংশন তালিকায় থাকার দাবিটি কোনো ধরনের তথ্যসূত্র ছাড়াই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হচ্ছে।

দাবি: মেয়র তাপস যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা পাবেন না

দাবিটির সত্যতা অনুসন্ধানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে গত পহেলা জুন ‘Yes, মেয়র তাপস যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা পাবেন না.এটাই সত্য‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ইউটিউব ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: M Rahman Masum Facebook Page

ভিডিওটিতে উপস্থাপক দাবি করেন, সম্প্রতি বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপসের ‘একজন চিফ জাস্টিসকেও নামিয়ে দিয়েছিলাম‘ শীর্ষক বক্তব্যের জেরে তার ভিসা বাতিল হবে। 

Screenshot: Daily Manabzamin 

এক্ষেত্রে উপস্থাপক সূত্র হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক আরোপিত নতুন ভিসা নীতির কথা উল্লেখ করেন এবং এর পক্ষে ব্যাখ্যা প্রদান করেন। 

অর্থাৎ উপস্থাপক ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপসের সাম্প্রতিক একটি বক্তব্যের জেরে তার আমেরিকার ভিসা বাতিল হওয়ার সম্ভাবনা বা অনুমানের কথা বলেছেন এবং তার দাবির পক্ষে পুরো ভিডিওতে তিনি আর কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্যসূত্র উল্লেখ করতে পারেননি। 

পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট বা রাজস্ব বিভাগের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেনের ভ্যারিফাইড টুইটার অ্যাকাউন্ট, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশ অ্যাম্বাসির ফেসবুক পেইজ ও বাংলাদেশে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের টুইটার অ্যাকাউন্ট বিশ্লেষণ করেও উপস্থাপকের দাবির পক্ষে কোনো সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

কি আছে যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক আরোপিত নতুন ভিসা নীতিতে? 

অনুসন্ধানে বাংলাদেশস্থ যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের ওয়েবসাইটে ‘বাংলাদেশের নির্বাচনের সমর্থনে প্রণীত নতুন ভিসানীতি সম্পর্কে সচরাচর জিজ্ঞাস্য‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: US Embassy Bangladesh 

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িত বলে মনে করা যে কোনো বাংলাদেশি নাগরিকের ভিসা প্রদানে বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে। প্রতিবেদনটি থেকে আরও জানা যায়, নতুন এই ভিসা নীতিমালার আওতায় এখন পর্যন্ত কোনো ভিসায় বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়নি।

Screenshot: US Embassy Bangladesh 

মূলত, গত ২৫ মে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের লক্ষ্যে নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে নতুন এই ভিসা নীতির আওতায় এখনো কাউকে বিধিনিষেধ আরোপ করা না হলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরকার দলীয়  বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ যেমন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের  নামে প্রচার করা হচ্ছে যে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের স্যাংশন বা নিষেধাজ্ঞার তালিকায় পড়েছেন বা তাদের ভিসা বাতিল করা হয়েছে। তবে অনুসন্ধানে দেখা যায়, কোনো ধরনের সুনির্দিষ্ট তথ্যসূত্র ছাড়াই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উক্ত ভিত্তিহীন দাবিগুলো প্রচার করা হচ্ছে।

সুতরাং, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল যুক্তরাষ্ট্রের স্যাংশন তালিকায় থাকার ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের আমেরিকার ভিসা বাতিল দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

মাধ্যমিকের রসায়ন বই নিয়ে জাফর ইকবালের বিরুদ্ধে বিদ্যুৎ কুমার রায়ের অভিযোগ: কী ঘটেছে আসলে? 

0

গত ১৪ এপ্রিল নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে “জাফর ইকবাল স্যারের কুকৃতি” শীর্ষক ক্যাপশন ব্যবহার করে লাইভে (আর্কাইভ) আসেন নিজেকে নবম-দশম শ্রেণির রসায়ন পাঠ্যবইয়ের লেখক দাবি করা বিদ্যুৎ কুমার রায়। 

বিদ্যুৎ কুমার রায় বলছেন, “আজকে আমি এক ছাত্রকে জিজ্ঞেস করলাম তোমার কেমিস্ট্রি (রসায়ন) বইয়ের লেখক কে? সে বলে, জাফর ইকবাল। খুব কষ্ট লাগলো। বই লিখসি আমি, জাফর ইকবাল স্যার এক লাইনও লেখে নাই৷ অথচ জাফর ইকবাল স্যার আমার এই ভালো বইটা তার নাম দিয়ে একদম পপুলার হয়ে গেল। খুব কষ্ট লাগে।” 

জনাব বিদ্যুৎ কুমার রায় জানান, জাফর ইকবাল স্যার কমিটিতে ছিল। স্যারকে বলছিলাম, স্যার, আপনি নাম, মোবাইল নাম্বার সবকিছু বইয়ে লিখে দেন। যাতে বই পড়ে কোনো ছাত্র যদি কোনো জায়গায় সমস্যা হয় তাহলে যেন সরাসরি একদম মোবাইল নাম্বার দিয়ে কথা বলতে পারে। অনেক ছাত্রদের অনেক সমস্যা, বইয়ে অনেক ত্রুটি থাকে, বিভিন্ন ঝামেলা থাকে। জাফর ইকবাল স্যার বলেন, না এগুলো লেখার দরকার নাই। একটা জ্ঞান দিবো আমি। আমার মোবাইল নাম্বার দিতে চাইলাম। জাফর ইকবাল স্যার দিতে দেয় নাই। আমি বললাম, আমি ভাষানটেক সরকারি কলেজে আছি। আপনি কলেজের নাম লিখে দেন। কিন্তু তিনি বললেন, না বোর্ড দেয় না। আমি বললাম, শিক্ষা মন্ত্রণালয় যখন আপনাকে দিয়ে বলছে বই লেখার কথা, তখন কক্সবাজারে শিক্ষা সম্মেলনে শিক্ষা মন্ত্রী আপনাকে দায়িত্ব দিসিলো পুরো বইটাকে নতুন করে গরীব অসহায় মানুষের জন্য দেওয়া। কিন্তু স্যার, আপনি যদি না করেন তাহলে কী হবে? যাহোক জাফর ইকবাল স্যার করে নাই। আমার লেখা বই। আমার নাম হয় না। জাফর ইকবাল স্যারের নামে হয়। আমার খুব কষ্ট লাগে। এটা কখনোই ভালো কাজ হতে পারে না। এটা কুকীর্তির শামিল।”

Screenshot source: Facebook

লাইভ ভিডিওটি ডাউনলোড করে পরবর্তীতে তিনি আবার পোস্ট করেন এবং এ সংক্রান্ত একটি স্ট্যাটাসও দেন। 

বিদ্যুৎ কুমার রায় কর্তৃক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের বিষয়ে অভিযোগ এনে করা পোস্টগুলোর কমেন্টেও তিনি জাফর ইকবাল বিষয়ে কিছু মন্তব্য করেন। 

তার কিছু নমুনা দেখুন স্ক্রিনশটে- 

Screenshot collage: Rumor Scanner 

উক্ত লাইভটি পরবর্তীতে অনেক ফেসবুক ব্যবহারকারীই ডাউনলোড করে পোস্ট করেছেন। দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

গত ২১ এপ্রিল ‘ফেস দ্য পিপল’ নামে একটি ফেসবুক পেজের লাইভ অনুষ্ঠানে (আর্কাইভ) বিদ্যুৎ কুমার রায়কে আমন্ত্রণ জানানো হয়। তিনি সেখানে তার অভিযোগগুলোর বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।

Screenshot source: Facebook

এ সংক্রান্ত বিদ্যুৎ কুমার রায়ের অভিযোগগুলোর বিষয়ে নিশ্চিত হতে আমরা তার সাথে যোগাযোগ করি। তিনি আমাদের সুনির্দিষ্ট চারটি অভিযোগ জানান। 

প্রথম অভিযোগ হচ্ছে, বইটির লেখক হিসেবে তিনি প্রাপ্য সম্মান পাননি। রসায়ন বইতে লেখক এবং সম্পাদনসহ বই সংশ্লিষ্ট কাজে জড়িত সকলের নাম একসাথে থাকায় লেখক হিসেবে তার নাম আলাদাভাবে হাইলাইট হয়নি। 

জনাব বিদ্যুৎ কুমার রায়ের দ্বিতীয় অভিযোগ, লেখক হিসেবে তার নামের সাথে তার কলেজের নাম এবং ফোন নম্বরও যুক্ত করতে বলেছিলেন জাফর ইকবালকে। কিন্তু তিনি তাতে সাড়া দেননি। 

তৃতীয় অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, রসায়ন বইটির লেখার দায়িত্ব একমাত্র তিনজনের ছিল, যেখানে জাফর ইকবালের নাম নেই। তবু রসায়ন বইয়ের লেখক হিসেবে জাফর ইকবালের নামই জেনে আসছে মানুষ। যা লেখক হিসেবে তাকে পীড়া দেয়।

সর্বশেষ অভিযোগে জনাব বিদ্যুৎ কুমার রায় জানান, রসায়ন বইয়ে যে ছবিগুলো দেওয়া হয়েছে সেগুলো জাফর ইকবালের দেওয়া। কিন্তু ছবিগুলো বিষয়বস্তুর সাথে প্রাসঙ্গিক নয়। ছবিগুলো চূড়ান্ত হওয়ার পর তাকে দেখানো হয়নি।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে দেখা যায়, রসায়ন বইটির সর্বশেষ পরিমার্জিত সংস্করণ বেরিয়েছে ২০১৭ সালে। ছয় বছর পর এসে তিনি অভিযোগ করছেন। সেটিও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে নয়, অভিযোগ উত্থাপন করেছেন ফেসবুকে।  

Screenshot source: Class 9-10 Textbook Chemistry 

আরও অনুসন্ধান করে দেখা যাচ্ছে, বই সংশ্লিষ্টদের নামের তালিকায় আলাদা করে লেখকদের কোনো নাম নেই। এ সংক্রান্ত পাতায় বইটিকে সহজপাঠ্য, আকর্ষণীয় ও সহজবোধ্য করার জন্য পরিমার্জিত সংস্করণে প্রয়োজনীয় সংযোজন, পরিবর্ধন, পুনর্লিখন ও সম্পাদনার জন্য একটি দল কাজ করেছে। এই দলের শুরুতেই বিদ্যুৎ কুমার রায়ের নাম দেখা যাচ্ছে। তালিকার ৪র্থ নামটি ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের। 

Screenshot collage: Rumor Scanner 

তালিকায় প্রথমেই লেখক হিসেবে বিদ্যুৎ কুমার রায়ের নাম থাকায় তিনি হাইলাইট না হওয়া বিষয়ক যে অভিযোগটি করেছেন তা অবান্তর বলেই প্রতীয়মান হয়৷ 

বিদ্যুৎ কুমার রায় লেখক হিসেবে তার নামের সাথে তার কলেজের নাম এবং ফোন নম্বরও যুক্ত করতে বলেছিলেন। কিন্তু বাংলাদেশের একাধিক সংস্করণের পাঠ্যবই রিউমর স্ক্যানার টিম যাচাই করে দেখেছে। কোনো বইতেই এমন রীতির প্রচলন নেই। এক্ষেত্রে তাই জাফর ইকবালকে এখানে ঢালাওভাবে অভিযুক্ত করার সুযোগ নেই বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে। 

অভিযোগগুলোর বিষয়ে জানতে ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের সাথে কথা বলেছি আমরা। 

ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল রিউমর স্ক্যানারকে জানান, “বইয়ের উন্নত সংস্করণের কাজে এডিটরদের কিছু সুনির্দিষ্ট নিয়ম মেনে কাজটাকে এগিয়ে নিতে হয়েছে৷ আমি এবং ড. কায়কোবাদ সে সময় বিজ্ঞান এবং গণিতের ছয়টি বইয়ের সম্পাদনায় ছিলাম। আমি আপনাকে এ বিষয়ে এনসিটিবির সাথে যোগাযোগের পরামর্শ দিচ্ছি এবং একইসাথে যে নিয়মগুলো মানতে হয়েছে সেগুলোও খুঁজে বের করার অনুরোধ করছি। আমার এ বিষয়ে ব্যক্তিগত কোনো মতামত নেই।”

জাফর ইকবালের সাথে কথা বলার পর গত এপ্রিলের শেষ দিকে রিউমর স্ক্যানার টিমের পক্ষ থেকে এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ফরহাদুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করি আমরা। অভিযোগগুলো তাকে দেখানোর পর তিনি জানান, “আমি এ বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছি। মূল সমন্বয়কারীকে বিস্তারিত জানাতে বলেছি। আমি যতটুকু জেনেছি মূল লেখক সে (বিদ্যুৎ কুমার রায়) ছিলনা, বইটি সুখপাঠ্য করার সময়ে সে সাহায্য করেছে মাত্র।”

এ বিষয়ে ফলোআপ জানতে চেয়ে গত ২৮ মে ফের জনাব অধ্যাপক মো. ফরহাদুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি রিউমর স্ক্যানারকে জানান, “রসায়ন বইটির মূল লেখক হিসেবে তিনি (বিদ্যুৎ কুমার রায়) কখনোই ছিলেন না। ২০১২ এর শিক্ষাক্রম অনুযায়ী পাঠ্যপুস্তকটি ২০১৩ সালে প্রনয়ণ করা হয়েছে। তবে ২০১৭ সালে বইটি সুখপাঠ্য করা হয়। মোট ১২টি বই তখন সুখপাঠ্য করা হয়। সুখপাঠ্য করার সময় তিনি অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। এমতাবস্থায় তার দাবীর  যৌক্তিকতা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। বিষয়টি জাফর ইকবাল স্যার, সদস্য শিক্ষাক্রম বা অন্যরা আমলে নিচ্ছে না।”

জনাব বিদ্যুৎ কুমার রায় ইতোমধ্যেই তার এ সংক্রান্ত দুইটি ভিডিও এবং একটি স্ট্যাটাস ফেসবুক থেকে সরিয়ে নিয়েছেন। 

সুতরাং, সংশ্লিষ্ট সকলের বক্তব্য অনুযায়ী, বিদ্যুৎ কুমার রায়ের অভিযোগগুলো আমলে নেওয়ার মতো কোনো ভিত্তি নেই বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে।

তথ্যসূত্র

  • Class 9-10: Chemistry Book
  • Statement from Biddut Kumer Ray
  • Statement from Dr. Muhammed Zafar Iqbal
  • Statement from Prof Md Farhadul Islam, Chairman, NCTB
  • Rumor Scanner’s own analysis 

ঈদুল আযহা উপলক্ষে বিকাশ কর্তৃক ব্যবহারকারীদের ৫৯৯৯ টাকা বোনাস দেওয়ার দাবিটি মিথ্যা

0

সম্প্রতি, ‘বিকাশ ঈদুল আযহা উপলক্ষে ব্যবহারকারীদের ৫৯৯৯ টাকা বোনাস দিচ্ছে’ শীর্ষক একটি ক্যাম্পেইন লিংক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমনকিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ঈদুল আযহা উপলক্ষে বিকাশ কর্তৃক ব্যবহারকারীদের ৫৯৯৯ টাকা বোনাস দেওয়ার দাবিটি সত্য নয় বরং বিকাশের ওয়েবসাইট নকল করে তৈরি ভুয়া ওয়েবসাইট থেকে প্রতারণার উদ্দেশ্যে বোনাস প্রদানের এই প্রলোভন দেখানো হচ্ছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে বোনাসের প্রলোভন দেখানো ওয়েবসাইটটিতে প্রবেশের চেষ্টা করে রিউমর স্ক্যানার টিম। কিন্তু সেসময় ওয়েবসাইট লিংকটি কাজ না করায় প্রবেশ সম্ভব হয়নি।

Screenshot: Fake Website

বিকাশ কি এমন কোনো ক্যাম্পেইন চালু আছে?

বিকাশের ওয়েবসাইট ও ভেরিফাইড ফেসবুক পেইজে অনুসন্ধান করে ঈদুল আযহা উপলক্ষে ব্যবহারকারীদের বোনাস দেওয়ার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

Screenshot: BKash Website

পাশাপাশি, নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্রে বিকাশ থেকে এমন বোনাস দেওয়া প্রসঙ্গে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

বিষয়টি অধিকতর যাচাইয়ের জন্য রিউমর স্ক্যানারের পক্ষ থেকে বিকাশের কাস্টমার কেয়ারে যোগাযোগ করা হলে সেখান থেকে বলা হয়, ‘অনুগ্রহ করে এ ধরনের ভুল তথ্য দ্বারা বিভ্রান্ত হবেন না। অসাধু চক্র বিভিন্ন নকল ওয়েবসাইট তৈরি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বা অন্য কোনো মাধ্যমে নানা ধরনের মিথ্যা অফার দেখিয়ে বিকাশের সুনাম নষ্ট করার চেষ্টা করছে। বর্তমানে বিকাশ এ ধরনের কোনো অফার ঘোষণা করেনি এবং উক্ত অফারগুলোর সাথে বিকাশ-এর কোনো সম্পর্ক নেই। তাই, এসব মিথ্যা অফারের লোভে পড়ে কিংবা প্রতারিত হয়ে এই ধরনের কোনো ওয়েবসাইট অথবা অন্য কোনো মাধ্যমে কোনো লেনদেন করবেন না এবং আপনার বিকাশ একাউন্ট নাম্বার, পিন, ভেরিফিকেশন কোড বা অন্য কোনো তথ্য দিবেন না। এছাড়া এ ধরনের ওয়েবসাইটের লিংক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করা থেকে বিরত থাকবেন।’

মূলত, ঈদুল আযহা উপলক্ষে বিকাশ ব্যবহারকারীদের ৫৯৯৯ টাকা বোনাস দিচ্ছে দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, বিকাশের পক্ষ থেকে এমন কোনো বোনাস ঘোষণা করা হয়নি। প্রকৃতপক্ষে বিকাশের লোগো ব্যবহার করে বিকাশের ওয়েবসাইটের আদলে তৈরি ভুয়া ওয়েবসাইটের মাধ্যমে প্রতারণার উদ্দেশ্যে উক্ত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। 

ইতিপূর্বে একাধিকবার বিকাশের ওয়েবসাইট নকল করে প্রতারণার উদ্দেশ্যে প্রলোভন দেখানো হয়। সেসময় উক্ত বিষয়গুলোকে মিথ্যা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। 

প্রতিবেদন গুলো দেখুন: বিকাশের ছয় কোটি গ্রাহক পূর্তি উপলক্ষ্যে ব্যবহারকারীদের ৬৬০০ টাকা বোনাস দেওয়ার দাবিটি মিথ্যা, ১০ বছর পূর্তিতে বিকাশ থেকে ১০ হাজার টাকা উপহার শীর্ষক ক্যাম্পেইনটি ভুয়া। 

সুতরাং, ঈদুল আযহা উপলক্ষে বিকাশ ব্যবহারকারীদের ৫৯৯৯ টাকা বোনাস দিচ্ছে শীর্ষক দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

চৌদ্দগ্রামে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে মুজিবুল হক এমপি আহত হননি

সম্প্রতি, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে আওয়ামী লীগের দুই নেতার অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় কুমিল্লা-১১ আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ও সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক আহত হয়েছেন দাবি করে জাতীয় ইংরেজি দৈনিক নিউ এজের ওয়েবসাইট এবং প্রিন্ট সংস্করণে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত এমন প্রতিবেদন দেখুন নিউ এজ

গণমাধ্যমটির প্রিন্ট সংস্করণে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত ৬ জুন কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে আওয়ামী লীগের দুই নেতার অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ও সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক মুজিব আহত হননি বরং সংঘর্ষের দিন মুজিবুল হক কুমিল্লাতেই ছিলেন না। তিনি সে-সময় ঢাকায় অবস্থান করছিলেন।

দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে কি-ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে অনলাইন পোর্টাল বাংলা ট্রিবিউনে ৬ জুন ‘কুমিল্লায় আ.লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত ২৫‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Bangla Tribune 

প্রতিবেদনটিতে প্রদত্ত তথ্যানুযায়ী, গত ৬ জুন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন। কুমিল্লা-১১ (চৌদ্দগ্রাম) আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক এবং চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার সাবেক মেয়র মিজানুর রহমানের সমর্থকদের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে। 

Screenshot: Bangla Tribune 

প্রতিবেদনটিতে চৌদ্দগ্রাম উপজেলার স্বাস্থ্য কর্মকর্তা গোলাম কিবরিয়ার বরাতে বলা হয়, ঐ সংঘর্ষের ঘটনায় আহতদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এর মাঝে একজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তবে প্রতিবেদনটি থেকে আহতদের নামের কোনো সুনির্দিষ্ট তালিকা পাওয়া যায়নি। 

পাশাপাশি অনুসন্ধানে জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোতে একইদিনে ‘কুমিল্লায় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ, বন্ধ ছিল ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যান চলাচল‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, কুমিল্লা-১১ আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মুজিবুল হক ও চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার সাবেক মেয়র মো. মিজানুর রহমানের অনুসারীদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে আওয়ামী লীগের দুই নেতার অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। 

Screenshot: Daily Prothom Alo 

এই প্রতিবেদন থেকেও সেদিনের সংঘর্ষের ঘটনায় আহতদের নামের কোনো সুনির্দিষ্ট তালিকা খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

এ ঘটনায় অন্যান্য গণমাধ্যম যেমন, ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারের ‘20 hurt as AL factions clash ‘, অনলাইন পোর্টাল বিডিনিউজ২৪ এর  ‘আওয়ামী লীগের ২ পক্ষের সংঘর্ষে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ‘, কালেরকণ্ঠের ‘কুমিল্লায় আ. লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ, মহাসড়কে ভোগান্তি’, নিউজবাংলা২৪ এর ‘কুমিল্লায় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ২৩‘, সমকালের ‘কুমিল্লায় আ. লীগের দুই পক্ষে সংঘর্ষ, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ‘ প্রতিবেদন থেকেও উল্লেখিত ঘটনায় সংসদ সদস্য ও সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুল হকের উপস্থিতি ও তার আহত হওয়ার দাবি সংক্রান্ত কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

গণমাধ্যমের পাশাপাশি মুজিবুল হকের উপস্থিতি সম্পর্কে অনুসন্ধানে রিউমর স্ক্যানার টিম সংঘর্ষের ঘটনার দিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে মুজিবুল হকের সমর্থক কর্তৃক প্রচারিত একাধিক পোস্ট যাচাই করে দেখে। এসব পোস্টের ছবি ও ভিডিওতে সংঘর্ষের দিন ঘটনাস্থলে মুজিবুল হকের অনুগত চৌদ্দগ্রাম উপজেলা ও পৌরসভার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের উপস্থিতি থাকলেও সংসদ সদস্য মুজিবুল হকের কোনো উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানেএখানে

Image Collage: Rumor Scanner

পরবর্তীতে উক্ত বিষয়টির অধিকতর সত্যতা যাচাইয়ে রিউমর স্ক্যানার টিম চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার সাবেক মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান, সংসদ সদস্য মুজিবুল হকের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মো. জুয়েল এবং চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার বর্তমান মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের জৈষ্ঠ্য সহসভাপতি মীর হোসেন মীরু এবং চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শুভরঞ্জন চাকমার সঙ্গে যোগাযোগ করে। 

এ বিষয়ে চৌদ্দগ্রামে মুজিবুল হকের বিরোধী পক্ষের নেতা চৌদ্দগ্রামের সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান বলেন, ‘সংঘর্ষের ঘটনায় আমাদের কিছু নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। তবে আমি বা মুজিবুল হক সাহেব আহত হননি এবং তিনি ঘটনাস্থলেও ছিলেন না।’ 

সংসদ সদস্য মুজিবুল হকের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মো. জুয়েল বলেন, ‘স্যার ঐদিন ঢাকায় ছিলেন, উনার সংসদ ছিল। তাহলে উনি কিভাবে কুমিল্লায় সংঘর্ষে থাকেন?’

একই বিষয়ে মুজিবুল হক এমপির অনুগত নেতা, চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার বর্তমান মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের জৈষ্ঠ্য সহসভাপতি মীর হোসেন মীরু বলেন, ‘ঐদিনের ঘটনায় মুজিবুল হকের উপস্থিত থাকা ও আহত হওয়ার তথ্যটি সঠিক নয়, এটি মিথ্যা।’

এছাড়া চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শুভরঞ্জন চাকমা বলেন, ‘সংসদ সদস্য মুজিবুল হকের আহত হওয়ার তথ্যটি সঠিক নয়। তিনি তো ঢাকায় ছিলেন, আহত হবেন কিভাবে?’

মূলত, গত ৬ জুন কুমিল্লা-১১ আসনের সংসদ সদস্য মুজিবুল হক ও চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার সাবেক মেয়র মো. মিজানুর রহমানের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে প্রায় আড়াই ঘণ্টার জন্য ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকে এবং বেশ কয়েকজন আহতও হয়। তবে পরবর্তীতে এই ঘটনায় সংবাদ প্রকাশ করতে গিয়ে মূলধারার জাতীয় ইংরেজি দৈনিক নিউ এজ জানায়, উক্ত সংঘর্ষে সংসদ সদস্য ও সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক উপস্থিত ছিলেন এবং তিনি আহত হয়েছেন। তবে অনুসন্ধানে দেখা যায়, তার কর্মী সমর্থকদের সাথে সংঘর্ষ হলেও তিনি সে ঘটনায় আহত হননি এবং তিনি কুমিল্লাতেও উপস্থিত ছিলেন না।

সুতরাং, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে আওয়ামী লীগের দুই নেতার অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় সাবেক রেলমন্ত্রী ও সংসদ সদস্য মুজিবুল হক আহত হয়েছেন দাবিতে জাতীয় দৈনিক নিউ এজে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র