Home Blog Page 548

বিশ্ব ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে বিকাশ গ্রাহকদের ১৪০০ টাকা উপহার দেওয়ার গুজব

0

সম্প্রতি, ‘১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে বিকাশ দিচ্ছে সকল বিকাশ গ্রাহকদের ১৪০০ টাকা ভালোবাসা উপহার’ শীর্ষক দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

বিকাশ

ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে বিকাশ গ্রাহকদের ১৪০০ টাকা উপহার দেওয়ার দাবিটি সত্য নয় বরং বিকাশের নামে ভুয়া ওয়েবসাইট তৈরি করে প্রতারণার উদ্দেশ্যে উপহার প্রদানের এই প্রলোভন দেখানো হচ্ছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে বিকাশ’র এমন কোনো ক্যাম্পেইন চালু আছে কিনা তা জানার চেষ্টা করে রিউমর স্ক্যনার।

বিকাশের ওয়েবসাইট ও ভেরিফাইড ফেসবুক পেইজে অনুসন্ধান করে ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে ১৪০০ টাকা উপহার দেওয়ার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

পাশাপাশি, নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্রে বিকাশ থেকে এমন বোনাস দেওয়া প্রসঙ্গে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

বিষয়টি অধিকতর যাচাইয়ের জন্য রিউমর স্ক্যানারের পক্ষ থেকে ওয়েবসাইটের লাইভ চ্যাটের মাধ্যমে নাজমুল নামের একজন বিকাশের কর্মীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, “উক্ত তথ্যটি সত্য নয়।”

তিনি আরও জানান, “অনুগ্রহ করে এ ধরনের ভুল তথ্য দ্বারা বিভ্রান্ত হবেন না। বিকাশের তুমুল জনপ্রিয়তার জন্য কিছু অসাধু চক্র বিভিন্ন নকল ওয়েবসাইট তৈরি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বা অন্য কোনো মাধ্যমে নানা ধরনের মিথ্যা অফার দেখিয়ে বিকাশের সুনাম নষ্ট করার চেষ্টা করছে। বর্তমানে বিকাশ এ ধরনের কোনো অফার ঘোষণা করেনি এবং উক্ত অফারগুলোর সাথে বিকাশ-এর কোনো সম্পর্ক নেই। তাই, এসব মিথ্যা অফারের লোভে পড়ে কিংবা প্রতারিত হয়ে এই ধরনের কোনো ওয়েবসাইট অথবা অন্য কোনো মাধ্যমে কোনো লেনদেন করবেন না এবং আপনার বিকাশ অ্যাকাউন্ট নাম্বার, পিন, ভেরিফিকেশন কোড বা অন্য কোনো তথ্য দিবেন না। এছাড়া এ ধরনের ওয়েবসাইটের লিংক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করা থেকে বিরত থাকবেন।মনে রাখবেন, বিকাশ কখনোই আপনার বিকাশ অ্যাকাউন্টের পিন ও ভেরিফিকেশন কোড জানতে চায় না। আপনি আপনার অ্যাকাউন্টের পিন, ওটিপি এবং লেনদেনের কোন তথ্য কারো সাথে শেয়ার করবেন না, তাহলে আপনার অ্যাকাউন্ট নিরাপদ থাকবে।”

মূলত, ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে বিকাশ গ্রাহকদের ১৪০০ টাকা উপহার দেওয়ার দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, বিকাশের পক্ষ থেকে এমন কোনো উপহার ঘোষণা করা হয়নি। প্রকৃতপক্ষে বিকাশের ওয়েবসাইটের আদলে তৈরি ভুয়া ওয়েবসাইটের মাধ্যমে প্রতারণার উদ্দেশ্যে উক্ত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, পূর্বে ঈদুল আযহা উপলক্ষে বিকাশ কর্তৃক ব্যবহারকারীদের ৪৯৯৯ টাকা বোনাস দেওয়ার দাবিতে একটি তথ্য ইন্টারনেটে প্রচার করা হলে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে বিকাশ গ্রাহকদের ১৪০০ টাকা উপহার দেওয়ার দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ বানোয়াট ও প্রতারণামূলক।

তথ্যসূত্র

বঙ্গবন্ধু টানেলের ভিডিও দাবিতে ভিন্ন দেশের টানেলের ভিডিও প্রচার 

0

গত বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালের নভেম্বর মাস থেকে পানির তলদেশে সুড়ঙ্গ সদৃশ একটি রাস্তার ভিডিওকে বাংলাদেশের চট্টগ্রামে উদ্বোধনের অপেক্ষায় থাকা কর্ণফুলী বা বঙ্গবন্ধু টানেলের ভিডিও দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে। 

বঙ্গবন্ধু টানেলের

সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

টিকটকে প্রচারিত এমন একটি ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

গত বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে ফেসবুকে প্রচারিত একটি পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

একই সময়ে টিকটকে প্রচারিত একটি ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।  

এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবদি সাম্প্রতিক সময়ে ভাইরাল হওয়া ফেসবুকে পোস্টটিতে প্রায় ৩৯৭ টি পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে এবং শেয়ার হয়েছে প্রায় ২০ বার।

এছাড়া, শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম টিকটকে সাম্প্রতিক সময়ে ভাইরাল হওয়া ভিডিওটিতে প্রায় ১ হাজার ৭২৫ টি ভিন্ন অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানোর পাশাপাশি শেয়ার হয়েছে প্রায় ২১ বার।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত দাবিতে দেখানো টানেলের ভিডিওটি বাংলাদেশের কর্ণফুলী বা বঙ্গবন্ধু টানেলের নয় বরং এটি চীনের দীয়ানচি টানেলের ভিডিও।

মূলত, সাম্প্রতিক সময়ে পানির তলদেশে সুড়ঙ্গ সদৃশ একটি রাস্তার ভিডিওকে বাংলাদেশের চট্টগ্রামে উদ্বোধনের অপেক্ষায় থাকা কর্ণফুলী বা বঙ্গবন্ধু টানেলের ভিডিও দাবি করে প্রচার করা হচ্ছে। কিন্তু রিউমর স্ক্যানার টিম যাচাই করে দেখেছে যে উক্ত ভিডিওটি বঙ্গবন্ধু টানেলের নয়৷ চীনের ইউনান প্রদেশের কাওহাই টানেলের ভিডিওকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, পূর্বেও একই দাবিতে ভিডিওটি ইন্টারনেটে প্রচার করা হলে সেসময় বিষয়টি নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার টিম।

বাজপাখির জীবনবৃত্তান্ত নিয়ে ভুয়া তথ্য প্রচার 

0

সম্প্রতি, “বাজ পাখি প্রায় ৭০ বছর বাঁচে” শীর্ষক শিরোনামে বাজপাখির জীবন বৃত্তান্ত সম্পর্কিত একটি দীর্ঘ তথ্য সম্বলিত পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ব্যাপকভাবে প্রচার করা হচ্ছে।

যা দাবি করা হচ্ছে

“বাজ পাখি প্রায় ৭০ বছর বাঁচে। কিন্তু মাত্র ৪০ বছর পার করার পরেই বাজ পাখিকে বাঁচার জন্য কঠিন কিছু সিদ্ধান্ত নিতে হয়। ওই সময় তার শরীরের তিনটি প্রধান অঙ্গ দুর্বল হয়ে পড়ে।

১. থাবা (পায়ের নখ) লম্বা ও নরম হয়ে যায়
শিকার করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে।
২. ঠোঁটটা সামনের দিকে মুড়ে যায়। ফলে খাবার খুটে বা ছিড়ে খাওয়া প্রায় বন্ধ হয়ে যায়।
৩. ডানা ভারী হয়ে যায় এবং বুকের কাছে আটকে যাওয়ার দরুন উড়াড় ক্ষমতাও সীমিত হয়ে যায়। ফলস্বরুপ শিকার খোজা, ধরা ও খাওয়া তিনটেই ধীরে ধীরে মুশকিল হয়ে পড়ে। তখন ওর কাছে তিনটে পথ খোলা থাকেঃ 

১. আত্নহত্যা
২. শকুনের মত মৃতদেহ খাওয়া
৩. নিজকে পুনরস্থাপিত করা


বাজ তখন করে কি, ও একটা উচু পাহাড়ে আশ্রয় নেয়। সেখানে বাসা বাঁধে আর শুরু করে নতুন প্রচেষ্টা। 

সে প্রথমে তার ঠোঁট টা পাথরে মেরে মেরে ভেঙে ফেলে। এর থেকে কঠিন যন্ত্রণা আর হয় না। একইরকমভাবে নখ গুলো ভেঙে ফেলে আর অপেক্ষা করে নতুন নখ ও ঠোঁট গজানোর। নখ ও ঠোঁট গজালে ও ওর ডানার সমস্তপালক গুলো ছিড়ে ফেলে। কষ্ট সহ্যকরে অপেক্ষা করতে থাকে নতুন পালকের জন্য। ১৫০ দিনের যন্ত্রণা ও প্রতীক্ষার পর সে সব নতুন করে পায়। পায় আবার সেই লম্বা উড়ান আর ক্ষিপ্রতা। এরপর সে আরো ৩০ বছর জীবিত থাকে আগের মত শক্তি ও সামর্থ নিয়ে।”

বাজপাখির

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদন প্রকাশের আগ পর্যন্ত ফেসবুকে  সর্বাধিক ভাইরাল হওয়া এ সংক্রান্ত পোস্টটিতে প্রায় ৩ হাজার ১০০ এর উপরে মানুষ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। এছাড়া পোস্টটি ১০৮ বার শেয়ার করার পাশাপাশি ৪৮৪ টি মন্তব্য করা হয়েছে। এসব মন্তব্যের বেশিরভাগই আলোচিত দাবিকে সত্য ধরে নিয়ে করা হয়েছে। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমার স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায় যে, বাজপাখি ৭০ বছর পর্যন্ত জীবিত থাকেনা। এছাড়াও, বাজপাখি ৪০ বছর পর তার ঠোঁট, নখ ও পালক নিজে নিজে নষ্ট করে শীর্ষক তথ্যটিও সত্য নয় বরং কোনো প্রকার গ্রহণযোগ্য তথ্যসূত্র ব্যতীত দাবিগুলো প্রচার করা হচ্ছে।

তাছাড়া প্রাণীদের লাইফস্টাইল সম্পর্কিত বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য ওয়েবসাইটে, ‘জীবনচক্রের কোন এক পর্যায়ে নখ ঠোঁট এবং ডানা অস্বাভাবিক হয়ে যাওয়ার কারণে বাজপাখির স্বেচ্ছায় এসব অঙ্গহানি ঘটানো এবং পরবর্তীতে আবার নতুন করে নখ, ঠোঁট এবং ডানার পালক গজানো সম্পর্কিত’ কোনো তথ্য খুজে পাওয়া যায়না। 

প্রকৃতপক্ষে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বাজপাখির জীবনবৃত্তান্ত নিয়ে প্রচারিত মোটিভেশনাল পোস্টটি সম্পূর্ণ বানোয়াট।

মূলত, কোনোরূপ প্রমাণ ছাড়াই বিভিন্ন সময় ধরে বাজপাখি কিংবা ঈগল পাখির “৭০ বছর বয়স পর্যন্ত বেছে থাকা এবং ৪০ বছর পর নিজের নখ ও ঠোঁট ভেঙে ফেলা এবং পালক ছিঁড়ে ফেলার” কাহিনীটি প্রচারিত হয়ে আসছে। প্রকৃতপক্ষে এই ধরনের গল্প সম্পূর্ণ বানোয়াট এবং ভিত্তিহীন। 

উল্লেখ্য, পূর্বেও উক্ত দাবিটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়লে তা মিথ্যা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল। 

কোকের বোতলে ফিলিস্তিনকে সমর্থন জানিয়ে কোনো লেখা যুক্ত করা হয়নি

0

সম্প্রতি, একটি রেফ্রিজারেটরে রাখা কয়েকটি কোমল পানীয়র বোতলের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ছড়িয়ে পড়া বোতলগুলোর মধ্যে উলটো করে রাখা একটি বাদে বাকি বোতলগুলো কোমল পানীয় ব্র্যান্ড কোকা-কোলার বলে স্পষ্টভাবেই বুঝা যাচ্ছে। উলটো করে রাখা বোতলটিতে থাকা ‘We Support Palestine’ লেখার দিকে ইঙ্গিত করে দাবি করা হচ্ছে, ব্যবসায় লস হওয়ার কারণে কোকা-কোলার বোতলে ফিলিস্তিনের সমর্থনে এই লেখা যুক্ত করা হয়েছে।

কোকের বোতলে

উক্ত দাবিতে এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ব্যবসায়ের লস ঠেকাতে ফিলিস্তিনকে সমর্থন জানিয়ে কোকা-কোলার বোতলে ‘We Support Palestine’ শব্দটি যুক্ত করা হয়নি বরং আলোচ্য ছবিতে উলটো অবস্থায় থাকার বোতলের ছবিটি বাংলাদেশের কোমল পানীয় ব্র্যান্ড মোজোর।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত বোতল গুলোর গায়ে থাকা ব্র্যান্ডিং স্টিকার গুলো পর্যবেক্ষণ করে দেখে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, ডান পাশের অর্থাৎ কোকা কোলার লোগো প্রদর্শিত বোতলে কিউআর কোড এবং বারকোড যথাক্রমে উপর এবং নিচে অবস্থিত। তবে উলটো অবস্থায় থাকা ‘We Support Palestine’ লেখাযুক্ত বোতলে প্রদর্শিত কিউআর কোড এবং বারকোড যথাক্রমে বা এবং ডান দিকে অবস্থিত।

পরবর্তীতে উলটো অবস্থায় থাকা বোতলে প্রদর্শিত কিউআর কোড স্ক্যান করলে “https://www.wesupportpalestine.net/” শীর্ষক একটি ওয়েবসাইট প্রদর্শিত হয়। ওয়েবসাইটটি বাংলাদেশের কোমল পানীয় ব্র্যান্ড মোজোর। জানা যায়, ক্ষতিগ্রস্ত ফিলিস্তিনিদের সহায়তায় We support Palestine”  নামের একটি ক্যাম্পেইন চালু করে মজো। এই ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে মোজোর বিক্রয়কৃত প্রতিটি বোতল থেকে ১ টাকা চলমান ফিলিস্তিন যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত ফিলিস্তিনিদের সহায়তায় পাঠানোর ঘোষণা দেয় কোম্পানিটি। ।

Screenshot: www.wesupportpalestine.net

আমরা বাজার থেকে কোমল পানীয় মোজো’র বোতল সংগ্রহ করি। আলোচ্য ছবিটির সাথে বাজার থেকে সংগ্রহকৃত মজোর বোতলের তুলনামূলক বিশ্লেষণ করে দেখতে পাই বোতল দুইটির মধ্যে হুবহু মিল রয়েছে।

Image Comparison: Rumor Scanner

মূলত, ২০২৩ সালের ০৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ইসরায়েলে ‘অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড’ নামে হামলা শুরু করে। এই হামলা কেন্দ্র করে শুরু হয় ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত। পরবর্তীতে এই সংঘাতকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন দেশে কোকা-কোলা সহ আরো কিছু পশ্চিমা পণ্যে বয়কটের ডাক দেওয়া হয়। সম্প্রতি একটি রেফ্রিজারেটরে রাখা কোকা-কোলার বোতলের মধ্যে উলটো অবস্থায় থাকা  ‘We support Palestine’ লেখা যুক্ত একটি বোতলের ছবি প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে ব্যবসায় লস ঠেকাতে ফিলিস্তিনের সমর্থনে কোকা-কোলা এই লেখা যুক্ত করেছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, উলটো অবস্থায় থাকা বোতলটি দেশীয় কোমল পানীয় ব্র্যান্ড মোজোর।

উল্লেখ্য, পূর্বে বয়কটের কারণে কোকা-কোলার মোড়ক পরিবর্তন করা হয়েছে দাবিতে একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সেটি খণ্ডন করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিলো রিউমর স্ক্যানার টিম।  

সুতরাং, ব্যবসায় লস ঠেকাতে ফিলিস্তিনের সমর্থনে কোকা-কোলার বোতলে ‘We Support Palestine’ যুক্ত করা হয়েছে দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত বিষয়টি মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

  • www.wesupportpalestine.net – Website
  • Rumor Scanner’s own analysis

ডিপফেকের কবলে নায়িকা দীঘি, ব্যবহার হলো সানি লিওনের ভিডিও

0

সম্প্রতি, ‘আমাদের সেই *কাবুলিওয়ালা ছোট্ট দিঘী এখন চিত্রনায়িকা’ শীর্ষক শিরোনামে চিত্রনায়িকা প্রার্থনা ফারদিন দীঘি’র নাচের দৃশ্য দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ভাইরাল হয়েছে।

চলচ্চিত্র প্রযোজক ও পরিচালক বিপ্লব শরীফের নাম ব্যবহার করে চালু থাকা একটি পেজ (পূর্বে পেজটির নাম ছিল Md. Sheikh Jamal Somrat) থেকে উক্ত ভিডিওটি শেয়ার করার পর এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া পর্যন্ত ভিডিওটি ১ লাখ ৪৪ হাজার মানুষ দেখেছেন। 

নায়িকা দীঘি

ফেসবুকে প্রচারিত উক্ত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত ভিডিওটিতে নৃত্য পরিবেশনকারী এই নারী চিত্রনায়িকা দীঘি কিনা জানতে চেয়ে একজন নেটিজেন ফেসবুকে ভিডিওটি পোস্ট করেছেন। সেটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি এই ভিডিওটি প্রায় ৩.৭ মিলিয়ন বার দেখা হয়েছে। ভিডিওটি ৪০৫ বার শেয়ার করা হয়েছে। এছাড়া ভিডিওটি’র মন্তব্যঘর ঘুরে অধিকাংশ নেটিজেনকে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানাতে দেখা যায়।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওটিতে নৃত্য পরিবেশনকারী নারী চিত্রনায়িকা প্রার্থনা ফারদিন দীঘি নয় বরং ভারতীয় তারকা সানি লিওনের নাচের একটি দৃশ্যে সানি লিওনের মুখের স্থলে ডিপফেক প্রযুক্তির সহায়তায়  দীঘি’র মুখমণ্ডল বসিয়ে উক্ত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে ‘Zee Music Company’ এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ০৮ অক্টোবর ‘Mera Piya Ghar Aaya 2.0’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Zee Music Company YouTube

ভিডিওটিতে নীতি মোহনের কণ্ঠে ‘মেরা পিয়া ঘর আয়া ২.০’ গানে ভারতীয় তারকা সানি লিওনকে নাচতে দেখা যায়। জানা যায়, মাধুরী দীক্ষিতের ১৯৯৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ইয়ারানা’ সিনেমার গান ‘মেরা পিয়া ঘর আয়া’ গানটি’র রিমেক এটি।

এই ভিডিওটি’র একটি অংশের সাথে আলোচিত ভিডিওটি’র মিল পাওয়া যায়। আলোচিত ভিডিওটিতে দেখানো দীঘির পোশাক, অঙ্গভঙ্গি, ব্যাকগ্রাউন্ড এবং আনুষঙ্গিক বিষয়বস্তুর সাথে এই ভিডিওটিতে দেখানো সানি লিওনের পোশাক, অঙ্গভঙ্গি, ব্যাকগ্রাউন্ড এবং আনুষঙ্গিক বিষয়বস্তুর হুবহু মিল রয়েছে।

Video Comparison by Rumor Scanner

অর্থাৎ, ভিডিওর এই নারী ঢাকাই সিনেমার নায়িকা দীঘি নয়।

মূলত, ২০২৩ সালের ০৮ অক্টোবর ভারতীয় সঙ্গীত প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ‘Zee Music Company’ এর ইউটিউব চ্যানেলে ভারতীয় তারকা সানি লিওনের নাচের একটি ভিডিও প্রচার করা হয়। সাম্প্রতিক সময়ে উক্ত ভিডিওটি ডিপফেক প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে সানি লিওনের মুখমণ্ডলের স্থলে ঢাকাই সিনেমার নায়িকা প্রার্থনা ফারদিন দীঘি’র মুখমণ্ডল বসিয়ে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ডিপফেক হলো বাস্তবসম্মত দেখতে কিন্তু নকল বা কিছুটা পরিবর্তিত কন্টেন্ট যা ভিডিও বা অডিওর উপাদান সম্পাদনা করে তৈরি করা হয়। ডিপফেক ভিডিওতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (AI) প্রযুক্তি ব্যবহার করে একজন ব্যক্তির মুখের অবয়ব বা ভয়েসকে অন্য কারোর সাথে বিশ্বাসযোগ্যভাবে প্রতিস্থাপন করা হয়। এই প্রযুক্তির সহায়তায় একজন ব্যক্তির এমন কিছু ভিডিও বা অডিও কন্টেন্ট তৈরি করা সম্ভব যা তিনি নিজে বলেননি বা করেননি। 

উল্লেখ্য, গত জানুয়ারিতে ভোটকেন্দ্রে না যাওয়ার বিষয়ে ডিবি প্রধান হারুনকে উদ্ধৃত করে ভুয়া মন্তব্যের ডিপ ফেক ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে সে বিষয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল রিউমর স্ক্যানার। 

সুতরাং, চিত্রনায়িকা প্রার্থনা ফারদিন দীঘি’র নাচের ভিডিও দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিওটি দীঘির নয় এবং ভিডিওটি সম্পূর্ণ এডিটেড বা বিকৃত।

তথ্যসূত্র

যমুনা টিভির ফটোকার্ড নকল করে বিশ্ব ইজতেমায় ১ লাখ সাদ পন্থীর বিয়ের ভুয়া খবর প্রচার

0

২০১৮ সাল থেকে তাবলিগ জামাতের বিবদমান দুই পক্ষ (আমির মাওলানা সাদ কান্ধলভী ও মাওলানা জুবায়ের) আলাদাভাবে বিশ্ব ইজতেমার আয়োজন করে আসছে। এ বছরও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। গত ০৯ ফেব্রুয়ারি থেকে মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারীদের দায়িত্বে শুরু হয় বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব। পরদিন (১০ ফেব্রুয়ারি) ইজতেমা ময়দানে প্রায় ১৪ যুগলের যৌতুকবিহীন বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে যমুনা টিভি’র আদলে তৈরি একটি ফটোকার্ডের মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে, “বিশ্ব ইজতেমার ২য় দিনে ১ লাখ সাদ পন্থীর বিয়ে হয়েছে

 বিয়ে

উক্ত ফটোকার্ডটি প্রচার করে যমুনা টিভির সমালোচনাও করা হয়েছে কতিপয় পোস্টে।

উক্ত ফটোকার্ড সম্বলিত ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ),এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বিশ্ব ইজতেমায় গত ১০ ফেব্রুয়ারি ১ লাখ সাদ পন্থীর বিয়ের তথ্য সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড যমুনা টিভি প্রকাশ করেনি বরং ইজতেমায় বিয়ে সংক্রান্ত যমুনা টিভির একটি ফটোকার্ড ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে উক্ত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।

যমুনা টিভি’র লোগো সম্বলিত আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, এতে ফটোকার্ডটি প্রকাশের তারিখ হিসেবে ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ উল্লেখ রয়েছে।

Screenshot : Facebook Claim Post 

এটির সূত্র ধরে যমুনা টিভি’র  ফেসবুক পেজে গত ১০ ফেব্রুয়ারি প্রচারিত ফটোকার্ডগুলো পর্যালোচনা করে “বিশ্ব ইজতেমার ২য় দিনে ১৪ টি যৌতুকবিহীন বিয়ে” শীর্ষক শিরোনাম বা তথ্য সম্বলিত একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়।

Photocard Comparison : Rumor Scanner 

পর্যবেক্ষণে যমুনা টিভি’র ফটোকার্ডে ব্যবহৃত ফন্টের সাথে আলোচিত ফটোকার্ডের ফন্টের কিছু অংশের মধ্যে ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়। যমুনা টিভি’র ফটোকার্ডের ‘বিশ্ব ইজতেমার ২য় দিনে’ এবং ‘বিয়ে’ বাক্যাংশের সাথে আলোচিত ফটোকার্ডের বাক্যাংশগুলো মিললেও বাকি অংশে যমুনা টিভি’র ফটোকার্ডে লেখা ‘১৪ টি যৌতুকবিহীন বিয়ে’ যেখানে আলোচিত ফটোকার্ডে লেখা ‘১ লাখ সাদ পন্থীর’।

অর্থাৎ, এই ফটোকার্ডটির শিরোনাম ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে ‘১ লাখ সাদ পন্থীর’ শীর্ষক বাক্যাংশ যুক্ত করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

একই দিনে যমুনা টেলিভিশনের ওয়েবসাইটেও এ সংক্রান্ত একটি সংবাদ প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গাজীপুরের টঙ্গীতে ১০ ফেব্রুয়ারি ইজতেমার দ্বিতীয় দিনে আসরের নামাজের পর মোট ১৪টি যৌতুকবিহীন বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। এই ১৪টি বিয়ে পড়ান মাওলানা ইউসুফ বিন সাদ। 

মূলত, গাজীপুরের টঙ্গীতে গত ০৯ ফেব্রুয়ারি মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারীদের দায়িত্বে বিশ্ব ইজতেমা শুরু হওয়ার পরদিন ১৪টি যৌতুকবিহীন বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে যমুনা টিভি’র আদলে তৈরি একটি ফটোকার্ডের মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে, “বিশ্ব ইজতেমার ২য় দিনে ১ লাখ সাদ পন্থীর বিয়ে হয়েছে। কিন্তু রিউমর স্ক্যানার টিম অনুসন্ধানে দেখেছে, উক্ত ঘটনায় “বিশ্ব ইজতেমার ২য় দিনে ১৪ টি যৌতুকবিহীন বিয়ে” শীর্ষক তথ্যসম্বলিত শিরোনামে একটি ফটোকার্ড  প্রকাশ করে যমুনা টিভি। যমুনা টিভি’র উক্ত ফটোকার্ডটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে ‘বিশ্ব ইজতেমার ২য় দিনে ১ লাখ সাদ পন্থীর বিয়ে’ শীর্ষক শিরোনামে ফেসবুকে প্রচার করা হয়।

সুতরাং, ‘বিশ্ব ইজতেমার ২য় দিনে ১ লাখ সাদ পন্থীর বিয়ে’ শীর্ষক শিরোনামে যমুনা টেলিভিশনের নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি এডিটেড বা বিকৃত। 

তথ্যসূত্র

প্রথম আলোর লোগো যুক্ত করে ঢাকা কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের নামে ভুয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রচার

0

সম্প্রতি, ঢাকা কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে দাবিতে জাতীয় দৈনিক ‘প্রথম আলো’র লোগো ব্যবহার করে একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির ছবি ফেসবুকে প্রচার হতে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার।

কথিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির ছবিটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি প্রকাশের সময় গত ৭ ফেব্রুয়ারি উল্লেখ করা এবং ছবির উপরে ‘প্রথম আলো’র লোগো যুক্ত আছে। এছাড়া, আবেদনের নিয়মাবলীতে লেখা আছে, উক্ত পদ সমূহের জন্য আগ্রহী প্রার্থীদের ১২ ফেব্রুয়ারি রাত ১১ টার মধ্যে ছবি ও সিভি [email protected] শীর্ষক ইমেইল অ্যাকাউন্টে প্রেরণ করার কথা বলা হয়েছে।

নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রথম আলোর লোগোসহ প্রচারিত ঢাকা কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি প্রথম আলো বা সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রকাশ করেনি বরং আলোচিত বিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া বলে হাসপাতালের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি ‘প্রথম আলো’র প্রিন্ট সংস্করণে প্রকাশিত হয়েছে কিনা তা জানতে গত ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ১১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রথম আলো প্রিন্ট সংস্করণগুলো পর্যবেক্ষণ করে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। তবে ঢাকা কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের নামে কথিত এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটির সন্ধান মেলেনি।

অনুসন্ধানে Moshiur Rahman Choyon নামের এক ব্যক্তি কর্তৃক গত ১১ জানুয়ারি প্রকাশিত ফেসবুক পোস্ট (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়।

ঢাকা কমিউনিটি হাসপাতাল ট্রাস্ট এর হাসপাতাল সেক্রেটারি পরিচয়ধারী এই ব্যক্তি জানান, আলোচিত বিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া ও ভিত্তিহীন।

আলোচিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটির বিষয়ে জানতে ঢাকা কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের একাডেমিক সেক্রেটারি হাসানুজ্জামান রতনের সাথে কথা হয় রিউমর স্ক্যানারের। তিনি জানান, ঢাকা কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এমন কোনো নিয়োগ বিজ্ঞতি প্রকাশ করেনি। এটি সম্পূর্ণ ভুয়া।

একই ইমেইলে গিনিপিগ একাধিক প্রতিষ্ঠান 

আমরা উল্লিখিত ইমেইল ঠিকানাটির বিষয়ে অনুসন্ধান করতে গিয়ে সিলেটের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ‘Sylhet View’ এর ওয়েবসাইটে গত ০৮ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানাতে পারি, গত কয়েকদিন ধরে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৬টি পদে ভুয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির একটি পত্রিকা কাটিং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুরছে। এই বিজ্ঞপ্তিতেও একই ইমেইল ঠিকানা ব্যবহার করা হয়েছে। ভুয়া এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির বিষয়ে কোতোয়ালী থানায় জিডি করেছেন সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের সচিব মামুনুর রশিদ। 

গত নভেম্বরে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তাদের কলেজের নামেও ভুয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রচার করা হয়েছে। এতেও একই ইমেইল ঠিকানা ব্যবহার করা হয়েছে। 

এই ইমেইল ঠিকানা ব্যবহার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের নামেও ভুয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি (আর্কাইভ) ফেসবুকে প্রচার হতে দেখেছি আমরা। এই বিজ্ঞপ্তিতেও প্রথম আলোর লোগোর জলছাপ ব্যবহার করা হয়েছে। 

Screenshot: Facebook 

মূলত, সম্প্রতি ঢাকা কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে দাবিতে প্রথম আলোর লোগো ব্যবহার করে একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির ছবি ফেসবুকে প্রচার হতে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার। উক্ত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে [email protected] এই ইমেইল ঠিকানায় যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রথম আলো বা ঢাকা কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কথিত এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি প্রকাশ করেনি। তাছাড়া, একই ইমেইল ঠিকানা ব্যবহার স্বাস্থ্য বিষয়ক একাধিক প্রতিষ্ঠানের নামে ভুয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রচারের প্রমাণ পাওয়া গেছে। 

সুতরাং, প্রথম আলো’র লোগোসহ ঢাকা কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের নাম ব্যবহার করে কথিত একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির ছবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ভুটানের খাদ্য, পানি ও পরিবেশ নিয়ে ভুল তথ্য প্রচার

0

সম্প্রতি, ভুটানের খাদ্য, পানি ও পরিবেশ নিয়ে কিছু তথ্য একটি ফটোকার্ডের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

যা দাবি করা হচ্ছে

আলোচিত পোস্টগুলোতে বলা হয়েছে, “ভুটান হলো পৃথিবীর একমাত্র দেশ যেটি কখনো পানি ও খাদ্য সংকট বা পানি ও বাতাস দূষণের সমস্যার সম্মুখীন হয়নি। এছাড়া এটি একমাত্র কার্বন নেগেটিভ দেশ যেখানে এটি কার্বন উৎপাদন থেকে কার্বন বেশি শোষণ করে।”

ভুটানের খাদ্য

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভুটানের খাদ্য, পানি ও পরিবেশ নিয়ে প্রচারিত আলোচিত দাবিগুলো সঠিক নয় বরং ভুটান বিভিন্ন সময়ে খাদ্য ও পানি সংকট এবং পানি ও বাতাস দূষণের সম্মুখীন হয়েছে। তাছাড়া ভুটান পৃথিবীর একমাত্র কার্বন নেগেটিভ দেশ নয়। কার্বন নেগেটিভ দেশের তালিকায় আরও দুটি দেশের নাম রয়েছে। দেশ দুটি হলো পানামা ও সুরিনাম।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। রিউমর স্ক্যানারের পাঠকদের বোঝার সুবিধার্থে উক্ত ফটোকার্ডে উল্লেখিত দাবিগুলো পৃথকভাবে যাচাই করেছে রিউমর স্ক্যানার টিম।

দাবি ০১ঃ ‘ভুটান একমাত্র দেশ যেখানে কখনো পানি ও খাদ্য সংকট হয়নি’

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে জাতিসংঘের ‘World Food Program’ এর ওয়েবসাইটে ‘BHUTAN: Threatened by Climate Change’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে ভুটান সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ভুটানের খাদ্যসামগ্রীর ৫০% বাহির থেকে আমদানি করতে হয়।

Screenshot: UN WFP

এছাড়াও, ভুটানের গণমাধ্যম ‘Business Bhutan’ এর ওয়েবসাইটে ২০২২ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর ‘Will Bhutan undergo a food crisis?’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদনে ভুটান ভোক্তা মূল্য সূচকের বরাতে জানানো হয়, ২০২১ সালের জুন থেকে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত দেশটিতে ভোগ্যপণ্য ও পরিসেবার দাম ৬.৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে দেশটিতে বসবাসের খরচ বৃদ্ধির পাশাপাশি পুষ্টিকর খাদ্য ক্রয়ের প্রবণতা কমেছে।

ভারতীয় গণমাধ্যম ‘Business Today’ এর ওয়েবসাইটে ২০২২ সালের ২৬ মে ‘Bhutan faces food shortage; spike in domestic prices’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, খাদ্য চাহিদা পূরণে ভুটান আমদানির ওপর নির্ভরশীল। ভুটান ২০২১ সালে ভারত থেকে 30.35 মিলিয়ন ডলারের খাদ্যসামগ্রী, প্রধানত চাল এবং গম আমদানি করে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্বব্যাপী অপরিশোধিত তেল এবং শস্যের দাম বৃদ্ধির কারণে ভুটানে খাদ্যসামগ্রীর দাম বৃদ্ধি পায়।

ভুটানের পানি সংকটের বিষয়ে অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ২০২২ সালের ২৩ জুন জার্মানি ভিত্তিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ডয়েচে ভেলে’র ওয়েবসাইটে ‘Bhutan fights back against water crisis’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ক্রমবর্ধমান জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ভুটান পানি সংকটের সম্মুখীন হচ্ছে। খরা এবং হিমালয়ের বরফ গলার প্রভাবে দেশটির কৃষি ও বনায়ন হুমকির মুখে পড়ছে।

অর্থাৎ, ‘ভুটান একমাত্র দেশ যেখানে কখনো পানি ও খাদ্য সংকট হয়নি’ শীর্ষক দাবিটি সঠিক নয়।

দাবি ০২ঃ ‘ভুটান একমাত্র দেশ যেখানে কখনো পানি ও বাতাস দূষণ হয়নি’

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ভুটানের গণমাধ্যম ‘The Bhutanese’ এর ওয়েবসাইটে ২০১৪ সালের ০৪ ডিসেম্বর ‘NEC study shows deteriorating air quality in Bhutan’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদনে ২০০৪ সালে ন্যাশনাল এনভায়রনমেন্ট কমিশনের এক সমীক্ষার বরাতে ভুটানের বায়ু দূষণের বিষয়ে জানানো হয়। প্রতিবেদনে ভুটানের থিম্পু সহ শহর অঞ্চলে বায়ু দূষণের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার বিষয়ে বলা হয়।

এছাড়াও, ভুটানের গণমাধ্যম ‘Bhutan Broadcasting Corporation’ এর ওয়েবসাইটে ২০১৮ সালের ২২ জানুয়ারি ‘Air pollution becoming a serious concern in Bhutan’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদনে ন্যাশনাল এনভায়রনমেন্ট কমিশনের বরাতে ভুটানের বায়ু দূষণের জন্য দায়ী ‘পিম ১০’ এবং ‘পিএম ২.৫’ নামক দুটি কণার বিষয়ে উল্লেখ করা হয়। অত্যন্ত ক্ষুদ্র এই কণা বাতাসে প্রবেশের মাধ্যমে বায়ু দূষণ ঘটায়। এটি শ্বাস প্রশ্বাসের মাধ্যমে হৃৎপিণ্ড ও ফুসফুসকে প্রভাবিত করতে পারে, যা গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা তৈরিতে ভূমিকা পালন করে।

ভুটানের পানি দূষণের বিষয়ে অনুসন্ধানে গবেষণা জার্নাল ‘Science Direct’ এর ওয়েবসাইটে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ‘Assessing the water quality and status of water resources in urban and rural areas of Bhutan’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি নিবন্ধ খুঁজে পাওয়া যায়।

সেখানে উল্লেখিত তথ্য থেকে জানা যায়, ভুটানের কিছু অঞ্চলে টেকসই ও নিরাপদ পানির অভাব রয়েছে। ভুটানে শহুরে অবকাঠামোগত উন্নয়নের ফলে শহর অঞ্চলে প্রাকৃতিক পানির গুণগত মান হ্রাস পেয়েছে। গত দশকের তুলনায় ভুটানের পানির গুণগত মান হ্রাস পেয়েছে বলেও উক্ত গবেষণায় উল্লেখ করা হয়।

অর্থাৎ, ‘ভুটান একমাত্র দেশ যেখানে কখনো পানি ও বাতাস দূষণ হয়নি’ শীর্ষক দাবিটি সঠিক নয়।

দাবি ০৩ঃ ‘ভুটান একমাত্র কার্বন নেগেটিভ দেশ’

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়ার ক্লাইমেট কাউন্সিলের ওয়েবসাইটে ২০১৭ সালের ০২ এপ্রিল ‘BHUTAN IS THE WORLD’S ONLY CARBON NEGATIVE COUNTRY, SO HOW DID THEY DO IT?

শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ভুটান শুধুমাত্র একটি কার্বন নিরপেক্ষ দেশ নয়, এটি একটি কার্বন নেগেটিভ দেশও। ভুটান আন্তর্জাতিকভাবে পৃথিবীর প্রথম কার্বন নেগেটিভ দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার বিষয়টিও সেখানে উল্লেখ পাওয়া যায়।

পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে ‘World Population Review’ এর ওয়েবসাইটে ‘Carbon-Negative Countries 2024’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত কার্বন নেগেটিভ দেশগুলোর একটি তালিকা খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত তালিকা পর্যবেক্ষণ করে তালিকায়  ভুটানের পাশাপাশি,পানামা ও সুরিনামের নাম উল্লেখ পাওয়া যায়।

Screenshot: World Population Review

অর্থাৎ, ভুটানই একমাত্র কার্বন নেগেটিভ দেশ নয়। এই তালিকায় পানামা এবং সুনিনাম নামের আরও দুটি দেশও রয়েছে।

উপরোক্ত তথ্য উপাত্ত পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, আলোচিত ফটোকার্ডটিতে ভুটানের খাদ্য, পানি ও পরিবেশ নিয়ে প্রচারিত তথ্যগুলো সঠিক নয়।

মূলত, সাম্প্রতিক সময়ে “ভুটান হলো পৃথিবীর একমাত্র দেশ যেটি কখনো পানি ও খাদ্য সংকট বা পানি ও বাতাস দূষণের সমস্যার সম্মুখীন হয়নি। এছাড়া এটি একমাত্র কার্বন নেগেটিভ দেশ যেখানে এটি কার্বন উৎপাদন থেকে কার্বন বেশি শোষণ করে।” শীর্ষক দাবি সম্বলিত কিছু তথ্য একটি ফটোকার্ডের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার হতে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। তবে অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত দাবিগুলো সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত দাবিগুলো প্রচার করা হয়েছে। রিউমর স্ক্যানার টিম যাচাই করে দেখেছে ভুটান খাদ্য ও পানি সংকট এবং পানি ও বাতাস দূষণের সম্মুখীন হয়েছে। তাছাড়া ভুটান কার্বন নেগেটিভ দেশ হলেও এটি পৃথিবীর একমাত্র কার্বন নেগেটিভ দেশ নয়। উক্ত তালিকায় পানামা ও সুরিনাম নামের আরও দুটি দেশের নাম রয়েছে।

সুতরাং, ভুটানের খাদ্য, পানি ও পরিবেশ নিয়ে ফেসবুকে প্রচারিত তথ্যগুলোর অধিকাংশই মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ভিডিওটিতে প্রদর্শিত ব্যক্তির বয়স ৩০৯ বছর নয়

সম্প্রতি, ইন্টারনেটের বিভিন্ন মাধ্যমে এক বৃদ্ধ ব্যক্তির শুয়ে থাকার ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, তার বয়স ৩০৯ বছর।

 বয়স ৩০৯ বছর

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি এ বিষয়ে সর্বাধিক ভাইরাল ভিডিওটি প্রায় ২৬ লাখ বা ২.৬ মিলিয়ন বার দেখা হয়েছে। ভিডিওটিতে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার মন্তব্য এবং প্রায় ১ লাখ ৩২ হাজার পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। ভিডিওটি ৭ শত ৮৭ বার শেয়ার করা হয়েছে। এছাড়া ভিডিওটি’র মন্তব্যঘর ঘুরে অধিকাংশ নেটিজেনকে দাবিটি’র পক্ষে প্রতিক্রিয়া জানাতে দেখা যায়। 

উক্ত দাবিতে টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ভিডিওতে প্রদর্শিত ব্যক্তির বয়স ৩০৯ বছর নয় বরং লুয়াং ফো ইয়াই নামে থাইল্যান্ডের এই ব্যক্তি ২০২২ সালে মারা যান। সেসময় তার বয়স ছিল ১০৯ বছর।

মূলত, আলোচিত ভিডিওটিতে প্রদর্শিত ব্যক্তিটি’র বয়স মৃত্যুর আগে অর্থাৎ ২০২২ সালে ১০৯ বছর ছিল। তিনি থাইল্যান্ডের নাগরিক লুয়াং ফো ইয়াই। সাম্প্রতিক সময়ে তাকে ৩০৯ বছর দাবি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০২২ সালে একই ব্যক্তির বয়স ১৯৩ বছর এবং ২০২৩ সালে ৩০৯ বছর বলে ইন্টারনেটে প্রচার করা হলে বিষয়টি নিয়ে একাধিক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। প্রতিবেদন দুইটি দেখুন এখানে এবং এখানে। 

ফটিকছড়িতে কোনো টানেল নেই, ভাইরাল ছবিটি তাইওয়ানের 

0

সম্প্রতি, চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি টানেলের দৃশ্য দাবিতে একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। এ সংক্রান্ত ভাইরাল পোস্টগুলোতে ছবিটি চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির হেয়াকো বাজারের ইসলামপুর রোডের বলেও দাবি কী হচ্ছে। 

টানেল

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ফটিকছড়িতে কোনো টানেল নেই বরং ভাইরাল এই ছবিটি তাইওয়ানে উচ্চগতিসম্পন্ন একটি ট্রেন টানেলের।

ছবিটির বিষয়ে জানতে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে প্রযুক্তি বিষয়ক ওয়েবসাইট Tech & Facts এর ওয়েবসাইটে ২০১৩ সালের ৩১ অক্টোবর প্রকাশিত একটি ছবি খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ছবির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবির মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot comparison: Rumor Scanner 

ওয়েবসাইটে থাকা তথ্য থেকে জানা যায়, এটি তাইওয়ানের হুসুহশান টানেলের ছবি। টানেলটি তাইওয়ানের পিংলিন জেলার নিউ তাইপেই সিটি থেকে শুরু হয়ে টাউচেং এর ইলান কাউন্টিতে গিয়ে শেষ হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ইলিনয় অ্যাট আর্বানা-চ্যাম্পেইন এর রেল ট্রান্সপোর্টেশন এন্ড ইন্জিনিয়ারিং সেন্টারের ওয়েবসাইটে  প্রকাশিত নিবন্ধনে তাইওয়ানের হুসুহশান টানেল সম্পর্কিত একই তথ্য ও ছবি খুঁজে পাওয়া যায়।  

Screenshot: University of Illinois Rail Transportation and Engineering Center (RailTEC)

প্রবন্ধ থেকে জানা যায়, এটি উচ্চ গতি সম্পন্ন ট্রেনের জন্য তৈরি টানেল।

গুগল ম্যাপে সার্চ করেও হুসুহশান টানেলের দৃশ্যের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবির মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

এছাড়া, চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে কোনো টানেল থাকা সংক্রান্ত তথ্য নির্ভরযোগ্য সূত্রে পাওয়া যায়নি। 

মূলত, সাম্প্রতিক সময়ে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির দাবিতে একটি টানেলের ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিম অনুসন্ধানে দেখেছে, ছবিটি বাংলাদেশের নয়। ফটিকছড়িতে এমন কোনো টানেলও নেই। তাইওয়ানে উচ্চগতির ট্রেনের জন্য নির্মিত একটি টানেলের ছবিকে উক্ত দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

সুতরাং, তাইওয়ানের একটি ট্রেন টানেলের ছবিকে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির দৃশ্য  দাবিতে ইন্টারনেটে  প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

  • Tech & Facts – Website
  • University of Illinois Rail Transportation and Engineering Center (RailTEC) – PDF
  • Rumor Scanner’s own analysis