Home Blog Page 548

ভারতের রিয়েলিটি শো এর ভিডিওতে শিশুর কোরআন তেলাওয়াতের ভিন্ন ভিডিও যুক্ত করে প্রচার

সম্প্রতি, ইন্টারনেটে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে যাতে দাবি করা হচ্ছে, এটি ভারতের একটি রিয়েলিটি শো’তে দুই বছরের এক শিশুর কোরআন তেলাওয়াতের দৃশ্য।

ভারতের

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

টিকটকে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ভারতের একটি রিয়েলিটি শো’তে দুই বছরের এক শিশুর কোরআন তেলাওয়াতের দৃশ্য শীর্ষক দাবিটি সঠিক নয় বরং ভারতের একাধিক রিয়েলিটি শো  এর দৃশ্য এবং ভিন্ন দেশের এক শিশুর ভিডিও ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় যুক্ত করে আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।  

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, সেখানে বিচারকের আসনে ভারতের নায়ক অক্ষয় কুমার, গায়িকা নেহা কক্কর এবং হিমেশ রেশামমিয়াকে দেখা যাচ্ছে। এছাড়া,  একই ভিডিওতে ভারতের আরেক নায়ক সালমান খানকেও দেখা গেছে।

ভিডিওটির কিছু কি-ফ্রেম নিয়ে তা রিভার্স সার্চের মাধ্যমে SET India এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২২ সালের ৯ আগস্ট ‘इस Suprise पर Akshay जी हुए Emotional | Superstar Singer Season 2’ শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, সুপারস্টার সিঙ্গার নামের রিয়েলিটি শো’র দ্বিতীয় সিজনের একটি পর্বে অক্ষয় ‍কুমার গেস্ট হিসেবে গেলে সেখানে রাখি দিবস উপলক্ষে তাকে একটি সারপ্রাইজ দেওয়া হয়। সারপ্রাইজটি হল তাকে নিয়ে তার বোনের লেখা আবেগঘন চিঠির আবৃত্তির পাশাপাশি তাদের পুরোনো নানা ছবি বড় পর্দায় দেখানো। এসব দেখে অক্ষয় কুমার আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। তার এই আবেগাপ্লুত অবস্থায় কান্না করার দৃশ্যের সাথে আলোচিত ভিডিওতে থাকা তার ফুটেজের হুবহু মিল পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner

পরবর্তীতে, কোরআন তেলাওয়াত শুনে নেহা কক্করের কান্নার অংশটির সত্যতা যাচাইয়ে একইভাবে রিভার্স সার্চ করে একই ইউটিউব চ্যানেলে ২০২১ সালের ৩১ অক্টোবর Adriz के ‘Tujhse Naraz Nahin’ Performance से आए Neha के आँखों में आँसू | Indian Idol | Daily Mix শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত আরেকটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ইন্ডিয়ান আইডলে উক্ত আসরের প্রতিযোগী আদ্রিজের গাওয়া গান শুনে নেহা কক্কর আবেগাপ্লুত হয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। এছাড়াও দেখা যায়, তার এই কান্নার অংশের সাথে আলোচিত ভিডিওতে থাকা নেহার ক্লিপের হুবহু মিল রয়েছে।

Video Comparison by Rumor Scanner

আলোচিত ভিডিওটিতে সালমান খানের ক্লিপটির সূত্র অনুসন্ধানে GS Updates & Blogging World নামের ইউটিউব চ্যানেলে ২০২০ সালের ৩ এপ্রিল When Salman Khan got emotional and started crying watching his long 10 yrs of journey with Bigg Boss শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়,  সালমান খানের হোস্ট করা শো বিগ বসের ১০ বছর পূর্তি উপলক্ষে তাকে উৎসর্গ করে তৈরি করা একটি ভিডিও দেখে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন তিনি। তার এই আবেগঘন মুহূর্তের দৃশ্যের সাথে আলোচিত ভিডিওতে দেখানো দৃশ্যের হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

Video Comparison by Rumor Scanner

পরবর্তী অনুসন্ধানে বাচ্চার কোরআন তেলাওয়াতের অংশটির সূত্র অনুসন্ধানে রিভার্স সার্চের মাধ্যমে Andri Sundaisme নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে গত ১৩ সেপ্টেম্বর الله أكبر Strange Baby Magically Reads Al-Qur’an Melodiously Surah Al-A’la শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির হুবহু মিল পাওয়া যায়। তবে ভিডিওটির শুরুতে দর্শকশ্রোতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে একটি বার্তা দেওয়া হয়েছে, যেখানে লেখা রয়েছে, এটি একটি প্যারোডি ভিডিও এবং ভিডিওটি শুধুমাত্র বিনোদনের ও দর্শকদের কোরআন পাঠের প্রতি অনুপ্রাণিত করতে তৈরি করা হয়েছে। 

Screenshot: YouTube 

পরবর্তীতে উক্ত ইউটিউব চ্যানেলটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, Andri Sundaisme নামের ইউটিউব চ্যানেলটি জনপ্রিয় রিয়েলিটি শো’র আবেগঘন মুহূর্তের অংশগুলোর সাথে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে বাচ্চাদের ভিডিও এবং কোরআন তেলাওয়াতের অডিও যুক্ত করার মাধ্যমে ভিডিও তৈরি করে তা প্রচার করে থাকে। 

মূলত, Andri Sundaisme নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে বিভিন্ন রিয়েলিটি শোর ক্লিপ নিয়ে তার সাথে বাচ্চাদের ভিডিও এবং কোরআন তেলাওয়াতের অডিও যুক্ত করে সম্পাদনার মাধ্যমে ভিডিও তৈরি করে প্রচার করা হয়। উক্ত চ্যানেলের একটি ভিডিওর কিছু অংশ সম্প্রতি, ‘ইন্ডিয়ার টকশোতে দুই বছরের বাচ্চা কোরআন তেলাওয়াত করে’ শীর্ষক শিরোনামে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে। 

সুতরাং, ভারতীয় রিয়েলিটি শো এর কিছু দৃশ্যের সাথে এক শিশুর কোরআন তেলাওয়াতের ভিন্ন একটি ভিডিও যুক্ত করে ইন্ডিয়ার টকশোতে দুই বছরের বাচ্চা কোরআন তেলাওয়াত করছে শীর্ষক দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে; যা এডিটেড বা বিকৃত।

তথ্যসূত্র

এই ভিডিওটি তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মহিলাদলের ঝাড়ু মিছিলের নয়

সম্প্রতি, ‘তারেক জিয়া বিদেশে বসে থাকায় রংপুর-কুড়িগ্রাম মহাসড়কে লালমনিরহাট জেলার বড়বাড়ি ইউনিয়ন মহিলাদলের ঝাড়ু মিছিল’ শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

ঝাড়ু

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ভিডিওটি বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বিদেশে বসে থাকায় রংপুর-কুড়িগ্রাম মহাসড়কে লালমনিরহাট জেলার বড়বাড়ি ইউনিয়ন মহিলাদলের ঝাড়ু মিছিলের নয় বরং ভিডিওটি গত ১৯ নভেম্বর বিএনপির ডাকা দেশব্যাপী সর্বাত্মক হরতাল সমর্থনে রংপুর-কুড়িগ্রাম মহাসড়কে লালমনিরহাট জেলার বড়বাড়ি ইউনিয়ন মহিলাদলের ঝাড়ু মিছিলের। উক্ত মিছিলে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে কোনো স্লোগান দেওয়া হয়নি। ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় ভিন্ন ঘটনার অডিও যুক্ত করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

গুজবের সূত্রপাত 

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ভিডিওটিতে ‘তারেকের দুই গালে জুতা মারো তালে তালে’ শীর্ষক স্লোগান শোনা যায়।

ভিডিওটি’র ওপরের দিকে বাম পাশে ‘বাংলা পলিটিক্স’ শীর্ষক লোগোর সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে Bangla Politix নামের একটি ফেসবুক পেজে গত ১৯ নভেম্বর আলোচিত ভিডিও (আর্কাইভ) সম্বলিত প্রথম পোস্টটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Bangla Politix Facebook 

পেজটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এটি একটি কমেডি পেজ। বিভিন্ন সময়ে এই পেজটি থেকে কমেডিধর্মী বিভিন্ন পোস্ট প্রচার করতে দেখা যায়।

Screenshot: Facebook

অর্থাৎ, এই পেজটি থেকে আলোচিত ভিডিওটি প্রথমে প্রচার হয় এবং পরবর্তীতে তা আসল ভেবে বিভিন্ন জায়গায় তা ছড়িয়ে পড়ে।

পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে বিএনপি’র মিডিয়া সেলের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে গত ১৯ নভেম্বর প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: BNP Media Cell Facebook 

এই ভিডিওটি’র সাথে আলোচিত ভিডিওটি’র দৃশ্যের হুবহু মিল পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner

ভিডিওতে উল্লেখিত তথ্য থেকে জানা যায়, ভিডিওটি গত ১৯ নভেম্বর সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের একদফা দাবি ও নির্বাচনী তফসিল বাতিলের দাবিতে ১৯ ও ২০ নভেম্বর ডাকা ৪৮ ঘন্টার দেশব্যাপী সর্বাত্মক হরতাল সমর্থনে রংপুর-কুড়িগ্রাম মহাসড়কে লালমনিরহাট জেলার বড়বাড়ি ইউনিয়ন মহিলাদলের ঝাড়ু মিছিলের সময়ে ধারণকৃত।

ভিডিওটিতে জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার করায় সিইসির বিরুদ্ধে আপত্তিকর স্লোগান দিতে শোনা যায়। তবে উক্ত ভিডিওটি’র কোথাও বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের স্লোগান শোনা যায়নি।

এছাড়াও বিএনপি’র অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে গত ১৯ নভেম্বর ‘গণবিরোধী নির্বাচনী তফসিল বাতিলের দাবিতে লালমনিরহাটে মহিলাদের ঝাড়ু মিছিল’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত উক্ত ভিডিওটি’র দীর্ঘ সংস্করণ খুঁজে পাওয়া যায়। সেখান থেকেও ভিডিওটি’র বিষয়ে একই তথ্য জানা যায়।

Screenshot: BNP YouTube

অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিওটি বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বিদেশে বসে থাকায় রংপুর-কুড়িগ্রাম মহাসড়কে লালমনিরহাট জেলার বড়বাড়ি ইউনিয়ন মহিলাদলের ঝাড়ু মিছিলের নয়।

মূলত, গত ১৯ নভেম্বর সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের একদফা দাবি ও নির্বাচনী তফসিল বাতিলের দাবিতে ১৯ ও ২০ নভেম্বর ডাকা ৪৮ ঘন্টার দেশব্যাপী সর্বাত্মক হরতাল সমর্থনে রংপুর-কুড়িগ্রাম মহাসড়কে লালমনিরহাট জেলার বড়বাড়ি ইউনিয়ন মহিলাদলের পক্ষ থেকে ঝাড়ু মিছিল করা হয়। পরবর্তীতে উক্ত ভিডিওটি’তে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় ‘তারেকের দুই গালে জুতা মারো তালে তালে’ শীর্ষক স্লোগানের একটি অডিও এবং ‘তারেক জিয়া বিদেশে বসে থাকায় রংপুর-কুড়িগ্রাম মহাসড়কে লালমনিরহাট জেলার বড়বাড়ি ইউনিয়ন মহিলাদলের ঝাড়ু মিছিল’ শীর্ষক বাক্য যুক্ত করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, পূর্বেও বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়ে বিভিন্ন ভুল তথ্য প্রচারের প্রেক্ষিতে একাধিক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কয়েকটি প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, বিএনপির হরতালের সমর্থনে রংপুর-কুড়িগ্রাম মহাসড়কে লালমনিরহাট জেলার বড়বাড়ি ইউনিয়ন মহিলাদলের ঝাড়ু মিছিলের ভিডিওকে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বিদেশে বসে থাকায় মহিলাদলের উক্ত শাখার ঝাড়ু মিছিলের ভিডিও দাবিতে ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ভারতের অর্থনীতি চার ট্রিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়নি

সম্প্রতি, প্রথমবারের মতো ৪ ট্রিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে ভারতের অর্থনীতি শীর্ষক একটি দাবি কতিপয় গণমাধ্যমের খবরে দাবি করা হয়েছে। 

ভারতের

উক্ত দাবিতে গণমাধ্যমের প্রতিবেদন দেখুন আমাদের সময়.কম, আমাদের অর্থনীতি।

একই দাবিতে গণমাধ্যমের ফেসবুক পেজের পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভারতের অর্থনীতি চার ট্রিলিয়ন ডলারে উন্নীত হওয়ার সংবাদটি সঠিক নয় বরং ইউটিউবের একটি ভিডিও থেকে নেওয়া স্ক্রিনশট ব্যবহার করে গণমাধ্যমে উক্ত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। তবে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ভারতের অর্থনীতি উক্ত মাইলফলক স্পর্শ করতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে গণমাধ্যমে প্রচারিত এ সংক্রান্ত সংবাদগুলোয় ভারতীয় নিউজ ওয়েব পোর্টাল আলজেবরা নামক একটি সূত্রকে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু এই নামে ভারতের মূলধারার কোনো সংবাদমাধ্যমের নাম না পাওয়া গেলেও এক্সে (সাবেক টুইটার) Times Algebra নামে ভারতীয় একটি নিউজ পোর্টালের অ্যাকাউন্ট পাওয়া গেছে। 

এই অ্যাকাউন্টে গত ১৯ নভেম্বর এক টুইটে উক্ত দাবিটি করা হয়। 

Screenshot: X

টুইটে একটি ছবি যুক্ত করা হয়েছে যাতে GDP Live এবং ১৮ নভেম্বর লেখা রয়েছে। এতে বিভিন্ন দেশের নাম এবং পতাকা রয়েছে। পাঁচ নং অবস্থানে ভারতের নামের সাথে ৪০০১১৯১৩৮৯৬০ সংখ্যা দেখা যাচ্ছে। 

এই ছবিটির সূত্র অনুসন্ধানে ইউটিউবে Livestream07 নামক একটি চ্যানেলে একই ধরণের ইন্টারফেস সম্বলিত একটি লাইভ স্ট্রিমিং ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

গত ০৬ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই লাইভে যে ডাটাগুলো দেখানো হচ্ছে তার সূত্র হিসেবে ভিডিওটির ডেসক্রিপশন অংশে IMF (international monetary fund) এর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। 

Screenshot: YouTube 

কিন্তু আইএমএফ বলছে, তারা এভাবে রিয়েল টাইম ডাটা একত্র করে প্রকাশ করে না৷ 

আলোচিত দাবির বিষয়ে ভারতের Bank of Baroda এর প্রধান অর্থনীতিবিদ Madan Sabnavis দেশটির ফ্যাক্টচেকিং সংস্থা বুমকে বলেছেন, আইএমএফ নিজেরা স্বাধীনভাবে জিডিপি হিসাব করে, এমনটা তিনি মনে করেন না। সংস্থাটি এসব তথ্য সংশ্লিষ্ট সরকার থেকেই সংগ্রহ করে বলেই দাবি তার। 

ভারতের জিডিপি’র হালনাগাদ তথ্য সংগ্রহ এবং প্রকাশের দায়িত্বে রয়েছে দেশটির জাতীয় পরিসংখ্যান অফিস (এনএসও)। পরিসংখ্যান ও কর্মসূচি বাস্তবায়ন মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা এই অফিস বছরে ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে এই তথ্য প্রকাশ করে। এই অফিসের মাধ্যমে প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরোর ওয়েবসাইটে সর্বশেষ জিডিপির তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে গত ৩১ আগস্ট। দেখুন এখানে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ভারতের ব্যাঙ্গালোর ভিত্তিক বিনিয়োগ, গবেষণা এবং সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক স্টার্টআপ Capitalmind এর প্রধান নির্বাহী Deepak Shenoy এর এক্স অ্যাকাউন্টে করা একটি টুইট খুঁজে পাওয়া যায়। গত ১৯ নভেম্বরের টুইটে তিনি লিখেছেন, জুন পর্যন্ত ভারতের জিডিপি ছিল ৩.৩৮ ট্রিলিয়ন ডলার, যা বর্তমানে সর্বোচ্চ ৩.৪৫ ট্রিলিয়ন ডলার হতে পারে। 

ভারতের সংবাদমাধ্যম Business Standard এর এডিটোরিয়াল ডিরেক্টর Ashok Bhattacharya বলছেন, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ভারতের অর্থনীতি ৪ ট্রিলিয়ন ডলারে উন্নীত হতে পারে৷ 

মূলত, গত ১৯ নভেম্বর দেশের কতিপয় গণমাধ্যমের খবরে দাবি করা হয়, প্রথমবারের মতো ৪ ট্রিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে ভারতের অর্থনীতি। কিন্তু রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, ইউটিউবের একটি লাইভ স্ট্রিমিং ভিডিও থেকে আইএমএফের নাম ব্যবহার করে বিভিন্ন দেশের জিডিপির রিয়েল টাইম ডাটা দাবিতে ভুল তথ্য প্রচার করা হচ্ছিল। সেই ভিডিওরই একটি স্ক্রিনশট নিয়ে উক্ত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। ভারত সরকারের সংশ্লিষ্ট কোনো সূত্র এ বিষয়টি প্রকাশ করেনি। সরকার কর্তৃক এ বিষয়ে সর্বশেষ গত আগস্টে প্রকাশিত তথ্যে সেসময়ের জিডিপি ছিল ৩.৩৮ ট্রিলিয়ন ডলার। তবে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ভারতের অর্থনীতি উক্ত মাইলফলক স্পর্শ করতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।

সুতরাং, ইউটিউবের একটি ভিডিও থেকে নেওয়া স্ক্রিনশটকে ব্যবহার করে ভারতের অর্থনীতি চার ট্রিলিয়ন ডলারে উন্নীত হওয়ার একটি সংবাদ গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র

ক্ষমাচেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা জারির ভুয়া তথ্য প্রচার

সম্প্রতি, “ক্ষমাচেয়ে পদত্যাগের ঘোষণা দিলো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা,জরুরী অবস্থায় তত্ত্বাবধায়ক সরকার জারি” শীর্ষক শিরোনামে  ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম ইউটিউবে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে। 

 হাসিনার পদত্যাগ

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেননি এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা জারি করারও কোনো ঘটনা ঘটেনি বরং পুরোনো ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার কয়েকটি ছবি ও ভিডিও ক্লিপ সংযুক্ত করে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি (আর্কাইভ)পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। আজ (২১ নভেম্বর) Sabai Sikhi নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ৩ মিনিট ১৬ সেকেন্ডের এই ভিডিওটি প্রচার করা হয়। আলোচিত ভিডিওটিতে দাবিটি প্রসঙ্গে তিনটি ভিডিও দেখানো হয়। 

১ম ভিডিও যাচাই 

আলোচিত ভিডিওটিতে থাকা প্রথম ভিডিওটির অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক কিওয়ার্ড সার্চ পদ্ধতির মাধ্যমে ২০২০ সালের ২৪ মার্চ এনটিভি’র ইউটিউব চ্যানেলে “আজ থেকে মাঠে নামছে সেনাবাহিনী” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি সংবাদ প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত সংবাদ প্রতিবেদনের ১১ সেকেন্ড থেকে ১৭ সেকেন্ড পর্যন্ত অংশটুকু আলোচিত ভিডিওটিতে যুক্ত করা হয়েছে।

Video Comparison by Rumor Scanner

২০২০ সালে প্রকাশিত উক্ত প্রতিবেদনে করোনাভাইরাসে সন্দেহভাজন যারা সরকারের নির্দেশ মানছে না তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা পাশাপাশি সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখতে সেসময়  সেনাবাহিনীর মাঠে নামার  তথ্য দেওয়া হয়।

২য় ভিডিও যাচাই 

দ্বিতিয় ভিডিওটির অনুসন্ধানে প্রতিবেদকের বলা তথ্যের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ২০২০ সালের ২৪ মার্চ সময় টিভি’র ইউটিউব চ্যানেলে “কোয়ারেন্টিন নিশ্চিতে মাঠে নামছে সেনাবাহিনী। Bangladesh আরম্য। Somoy Tv। #Stayhome #Withme” শীর্ষক শিরোনামে একটি সংবাদ প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনের ৫ সেকেন্ড থেকে ১২ সেকেন্ড পর্যন্ত অংশটুকু আলোচিত ভিডিওটিতে যুক্ত করা হয়েছে। 

Video Comparison by Rumor Scanner 

উক্ত প্রতিবেদনে ২০২০ সালে করোনার ভয়াবহতা মোকাবেলায় করোনো রোগীদের কোয়ারেন্টিন নিশ্চিতে সেনাবাহিনী মাঠে নামার বিষয়ে তথ্য দেওয়া হয়।

৩য় ভিডিও যাচই 

অনুরূপভাবে অনুসন্ধানে গত ১৯ নভেম্বর ‘1A News’ নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলে “হাসিনা কি সেনাবিদ্রোহের ভয়ে ভীত।। 1A News।। The Untold” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিওটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

Video Comparison by Rumor Scanner 

উক্ত ভিডিওটিতে উপস্থাপক দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকার, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সেনাবাহিনী সম্পর্কে নিজের মতামত জানাতে গিয়ে কিছু ধারণা বা সন্দেহমূলক কথা বলেন।

উপরোক্ত তিনটি ভিডিও ক্লিপের কোথাও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা জারি করা হয়েছে দাবি করে কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি। অর্থাৎ কোনো প্রকার প্রাসঙ্গিকতা ছাড়াই ভিন্ন ঘটনার কিছু পুরোনো ভিডিও ক্লিপ যুক্ত করে দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। 

এছাড়া, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগের ঘোষণা কিংবা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যাবস্থা জারি করা হয়েছে কিনা তা জানতে গুগলে কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্য কোনো সূত্রে এমন কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগের ঘোষণা দেননি এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যাবস্থা জারির কোনো ঘটনাও ঘটেনি। 

মূলত, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা চালুর দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগ সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো রাজপথে আন্দোলন করে আসছে। এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা ধরনের তথ্য প্রচার প্রচার হয়ে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় আজ (২১ নভেম্বর) ‘Sabai Sikhi’ নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে “ক্ষমাচেয়ে পদত্যাগের ঘোষণা দিলো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, জরুরী অবস্থায় তত্ত্বাবধায়ক সরকার জারি” শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়। তবে অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত দাবিগুলো সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে অধিক ভিউ পাওয়ার আশায় পুরোনো ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার ভিডিও ক্লিপ যুক্ত করে তাতে চটকদার থাম্বনেইল ও শিরোনাম ব্যবহার করে কোনোপ্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই আলোচিত বিষয়টি প্রচার করা হয়েছে। এছাড়া, গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে বিষয়টির সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার জারি শীর্ষক দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

ভাইরাল ছাত্রী শিক্ষকের বিয়ে দাবিতে ভিন্ন দম্পতির বিয়ের ভিডিও প্রচার

0

সম্প্রতি, অবশেষে বিয়ে হয়ে গেলো সেই ভাইরাল স্যার আর ছাত্রীর- শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। 

ছাত্রী শিক্ষকের বিয়ে

ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভাইরাল ছাত্রী শিক্ষকের বিয়ে হয়েছে শীর্ষক দাবিটি সঠিক নয় বরং গত ফেব্রুয়ারিতে বরিশালে বিয়ে হওয়া ভিন্ন এক দম্পতির বিয়ের ভিডিও ব্যবহার করে উক্ত দাবিটি ছড়িয়ে পড়েছে। 

মূলত, গত ফেব্রুয়ারি মাসে রাজধানীর একটি কলেজের ছাত্রী শিক্ষকের ব্যক্তিগত আলাপ ভাইরাল হয়। পরবর্তীতে ভাইরাল হওয়া সেই ছাত্রী শিক্ষকের ‘বিয়ে হয়েছে’ দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত ছাত্রী ও শিক্ষকের বিয়ে হয়নি। তাছাড়া, ভাইরাল হওয়া বিয়ের ভিডিওটি গত ১৭ ফেব্রুয়ারি বরিশালে বিয়ে হওয়া ভিন্ন এক দম্পতির।

উল্লেখ্য, পূর্বেও একই দাবিতে একই ভিডিও ও কিছু ছবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হলে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। 

তানজিন তিশার আত্মহত্যা চেষ্টা পরবর্তী হাসপাতালে ভর্তি থাকার দৃশ্য দাবিতে নাটকের ভিডিও প্রচার  

সম্প্রতি, তাহলে কি আসলেই সুইসাইড করতে গেছিলো তানজিন তিশা- শীর্ষক ক্যাপশনে একটি ভিডিও ক্লিপ ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। 

তানজিন তিশার

ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

টিকটকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ছোটপর্দার অভিনেত্রী তানজিন তিশা সুইসাইড করে হাসপাতালে ও তাকে দেখতে গিয়েছে অভিনেতা মুশফিক আর ফারহান শীর্ষক দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি বাস্তব কোনো ঘটনার নয় বরং এটি এই দুই তারকার ‘কোথায় খুঁজি তারে’ নামক নাটকে অভিনয়ের দৃশ্য।

আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ছোটপর্দার অভিনেত্রী তানজিন তিশা হাসপাতালের বেডে কান্নারত অবস্থায় বসে আছেন। তার হাত ধরে কথা বলছেন অভিনেতা মুশফিক আর ফারহান।

অনুসন্ধানের শুরুতে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে Sultan Entertainment নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত তানজিন তিশা ও মুশফিক আর ফারহানের অভিনীত “Kothay Khuji Take” নামক একটি নাটক খুঁজে পাওয়া যায়।  

উক্ত নাটকের ৫৫ মিনিট ৫৪ সেকেন্ডের এই ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে, ৩৯ মিনিটে প্রদর্শিত একটি মুহূর্তের দৃশ্যের সাথে আলোচিত দৃশ্যটির হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

Video Comparison by Rumor Scanner 

এছাড়া, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি Sadekul islam নামের ফেসবুক পেজ থেকে প্রকাশিত একই নাটকের ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওতেও একই দৃশ্য খুঁজে পাওয়া যায়।

উল্লেখ্য, ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান সুলতান এন্টারটেইনমেন্ট ‘কোথায় খুঁজি তারে’ নাটকটি তাদের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ করে। মাহমুদ মাহিনের রচনা ও পরিচালনায় তৈরি হওয়া এই নাটকটিতে অভিনয় করেন অভিনেত্রী তানজিন তিশা ও অভিনেতা মুসফিক আর ফারহান।

মূলত, গত ১৫ নভেম্বর অভিনেত্রী তানজিন তিশা অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। পরবর্তীতে গুঞ্জন উঠে আরেক অভিনেতা মুশফিক আর ফারহানের সাথে সম্পর্কের টানাপোড়েনে ‘আত্মহত্যার’ চেষ্টা করেছিলেন তিনি। তবে তানজিন তিশা এসব গুঞ্জন উড়িয়ে দেন।  এরই মধ্যে ‘হাসপাতাল তানজিন তিশার সাথে কথা বলছেন মুশফিক আর ফারহান’ এমন একটি দৃশ্য ‘তাহলে কি আসলেই সুইসাইড করতে গেছিলো তানজিন তিশা’- শীর্ষক ক্যাপশনে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওতে প্রচারিত দৃশ্যটি বাস্তব কোনো ঘটনার নয়। এটি ‘কোথায় খুঁজি তারে’ নামক একটি নাটকের দৃশ্য। 

সুতরাং, তানজিন তিশার নাটকের অভিনয়ের দৃশ্যকে সম্প্রতি তার আত্মহত্যা চেষ্টা পরবর্তী হাসপাতালে ভর্তিরত অবস্থার দৃশ্য দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

সম্প্রতি পুলিশের গুলিতে ঢাকা মহানগর পশ্চিম ছাত্রদলের কোনো নেতা নিহত হননি

সম্প্রতি, ঢাকা পশ্চিম ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক রনিকে পুলিশ গুলি করে হত্যা করেছে শীর্ষক দাবিতে এক যুবকের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে উক্ত ছবি বিহীন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকা মহানগর পশ্চিম ছাত্রদলের কোনো নেতা পুলিশের গুলিতে নিহত হননি বরং আলোচিত দাবিতে প্রচারিত পোস্টে ব্যবহৃত ছবির ব্যক্তির নাম রবিন খান এবং তিনি বর্তমানে সুস্থ আছেন। এটি গত বছর পুলিশের গুলিতে তার আহত হওয়ার পরবর্তী সময়ে ধারণকৃত। এছাড়া, রনি বা আহমেদ রনি নামের কোনো ব্যক্তি ঢাকা মহানগর পশ্চিম ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক পদে নেই।

বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধানে কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ঢাকা মহানগর পশ্চিম ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক বদিউজ্জামান বিপ্লবের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে গতকাল ২০ নভেম্বর উক্ত ছবিটি নিয়ে প্রকাশিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook

সেখানে উল্লেখিত তথ্য থেকে জানা যায়, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত পোস্টে ব্যবহৃত ছবিটির যুবকের নাম মোঃ রবিন খান, তিনি ঢাকা মহানগর পশ্চিম ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক।

সেখানে আরও বলা হয়, মো: রবিন খান বর্তমানে সুস্থ এবং স্বাভাবিক আছেন এবং তার আহত হওয়ার এই ছবিটি পূর্বের।

পরবর্তীতে ম্যানুয়ালি অনুসন্ধানের মাধ্যমে ঢাকা মহানগর পশ্চিম ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মো: রবিন খানের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এবিষয়ে গত ২০ নভেম্বর প্রকাশিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook

উক্ত পোস্টে বলা হয়, “আমাকে নিয়ে যারা এই ধরনের বিভ্রান্ত পোস্ট করতেছেন তারা দয়া করে এসব থেকে বিরত থাকুন স্বাভাবিক আছি আমার সাথে এই ধরনের কোন ঘটনা ঘটেনি এটা গত বছরের ঘটনা দয়া করে সবাই ডিলিট করুন এবং আমি ভালো আছি।”

অর্থাৎ, ছবির এই যুবকের নাম রনি নয় বরং মোঃ রবিন খান এবং তিনি মারা যাননি।

তাছাড়া, গণমাধ্যম কিংবা বিএনপি সংশ্লিষ্ট কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে সাম্প্রতিক সময়ে ছাত্রদলের ঢাকা মহানগর পশ্চিম ছাত্রদলের কোনো নেতা-কর্মীর পুলিশের গুলিতে মারা যাওয়ার তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। পাশাপাশি, রনি বা আহমেদ রনি নামে ঢাকা পশ্চিম ছাত্রদলের কোনো সাংগঠনিক সম্পাদকের খোঁজ পাওয়া যায়নি।

মূলত, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন করার দাবিতে বিএনপি-জামায়াতসহ আওয়ামী লীগ সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো দীর্ঘদিন ধরে রাজপথে আন্দোলন করে আসছে। এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে প্রায়ই পুলিশের সাথে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে উভয়পক্ষের লোক নিহত হওয়ার মতো তথ্য গণমাধ্যমের খবরে উঠে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি ফেসবুকে প্রচারিত ‘ঢাকা পশ্চিম ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক রনিকে পুলিশ গুলি করে হত্যা করেছে’ শীর্ষক দাবির প্রেক্ষিতে অনুসন্ধানে দেখা যায়, দাবিটি সঠিক নয়। সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকা মহানগর পশ্চিম ছাত্রদলের কোনো নেতা-কর্মী পুলিশের গুলিতে মারা যায়নি। প্রকৃতপক্ষে উক্ত দাবিতে প্রচারিত পোস্টে ব্যবহৃত ছবির যুবকের নাম রনি নয় বরং রবিন খান। তিনি ঢাকা মহানগর পশ্চিম ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক। ২০২২ সালে পুলিশের সাথে সংঘর্ষে তিনি গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছিলেন। ব্তমানে তিনি বর্তমানে সুস্থ আছেন। এছাড়া, রনি বা আহমেদ রনি নামে ঢাকা মহানগর পশ্চিম ছাত্রদলের কমিটিতে কোনো সাংগঠনিক সম্পাদক নেই।

প্রসঙ্গত, গত ৩১ অক্টোবর বিএনপির চলমান অবরোধ শুরুর প্রথম দিনে কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরের ছয়সুতী ইউনিয়ন ছাত্রদলের সহসভাপতি রিফাত (২০) পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়।

উল্লেখ্য, ২০২২ সালেও একই ছবি ব্যবহার করে পুলিশের গুলিতে ছাত্রদল নেতা রবিন খান নিহত হওয়ার ভুয়া তথ্য প্রচার করা হলে সেসময় বিষয়টি নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, ঢাকা পশ্চিম ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক রনিকে পুলিশ গুলি করে হত্যা করেছে দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ বানোয়াট ও মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

  • Badiuzzaman Biplob: Post
  • Rabin Khan: Post
  • Rumor Scanner’s Own Analysis

বিশ্বকাপে ব্যর্থতার দায়ে সাকিব হেনস্তার শিকার দাবিতে ভিন্ন ঘটনার ভিডিও বিকৃত করে প্রচার 

২০২৩ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাজে পারফরমেন্সের কারণে দেশে ফিরে সাকিব আল হাসান ক্রিকেট সমর্থকদের তোপের মুখে পড়েছেন শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। কিছু সংখ্যক পোস্টে সাকিবের সমর্থকদের তোপের মুখে পড়ার কারণ হিসেবে তার সাম্প্রতিক রাজনৈতিক সম্পৃক্ততার বিষয়টিকে ইঙ্গিত করা হচ্ছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

সাকিব

এছাড়া একই  দাবিতে সামাজিক মাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) কিছু পোস্ট প্রচার হতে দেখা যায়। এমন কিছু টুইট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

উক্ত ভিডিও যুক্ত করে বাংলাদেশি সমর্থকরা সাকিব আল হাসানের ওপর আক্রমণ করেছে শীর্ষক দাবিতে ভারতীয় ক্রিকেট ভিত্তিক ওয়েবসাইট ক্রিকট্র্যাকার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সম্প্রতি বিশ্বকাপ খেলা শেষে দেশে ফিরে সাকিব আল হাসান সমর্থকদের তোপের মুখে পড়েছেন দাবিটিতে প্রচারিত ভিডিওর দৃশ্যটি পুরোনো ভিন্ন ঘটনার। প্রকৃতপক্ষে চলতি বছরের মার্চে দুবাইয়ে সাকিব একটি স্বর্ণের দোকান উদ্বোধন করতে গেলে উৎসুক প্রবাসীরা তাকে দেখতে ভিড় করে। তখন উক্ত ভিডিওটি ধারণ করা হয়। তবে সেসময় সাকিবকে কেউ মার মার বলে সম্বোধন করেনি। এই ঘটনার ভিডিওটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে ‘মার মার’ শব্দগুচ্ছ যুক্ত করে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে। 

উক্ত লোগোর সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে মাধ্যমে সময় টিভি’র ইউটিউব চ্যানেল SomoyTVBulletin এ গত ১৭ মার্চে ‘দুবাইয়ে সাকিবের সঙ্গে প্রবাসীদের এ কেমন আচরণ!’ শিরোনামে একটি শর্ট ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিওর সাথে সাম্প্রতিক সময়ে প্রচারিত ভিডিওর দৃশ্যের হুবহু মিল পাওয়া যায়। 

Video Comparison: Rumor Scanner 

এছাড়া সেসময় একই ভিডিওটি আরটিভি এবং বায়ান্ন টিভি‘র ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত হয়।

পরবর্তীতে, ভিডিওর ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত অনুসন্ধানে সময় টিভি’র ওয়েবসাইটে গত ১৬ মার্চ ‘বিতর্কিত সেই স্বর্ণের দোকান উদ্বোধন করলেন সাকিব’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, গত ১৫ মার্চ  স্বর্ণ ব্যবসায়ী ও বাংলাদেশে পুলিশ সদস্য হত্যা মামলার পলাতক আসামি রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খানকে সঙ্গে নিয়ে ডুবাইয়ে আরাভ খানের একটি জুয়েলারি দোকান উদ্বোধন করেন সাকিব আল হাসান। আয়োজন ঘিরে সেদিন সন্ধ্যা থেকেই দুবাই গোল্ডসূকে ভিড় করেন হাজার হাজার মানুষ। 

পাশাপাশি, গত আগস্টে প্রকাশিত প্রথম আলো’র একটি প্রতিবেদনে সাকিবের দুবাইয়ে স্বর্ণের দোকান উদ্বোধন করতে গিয়ে বিশৃঙ্খলার মধ্যে পড়ার তথ্য তুলে ধরা হয়। 

অর্থাৎ, ভাইরাল ভিডিওটি গত মার্চে সাকিব আল হাসানের দুবাইয়ে একটি স্বর্ণের দোকান উদ্বোধন করতে গিয়ে ভিড়ের মধ্যে বিশৃঙ্খলায় পড়ে যাওয়ার ঘটনার। 

অডিও যাচাই

আলোচিত ভিডিওটির ব্যাকগ্রাউন্ডে ‘মার মার’ শীর্ষক শব্দটি নিয়ে অনুসন্ধানে জানা যায়, এটি মূলত ছোট পর্দার অভিনেতা মোশাররফ করিম অভিনীত ‘রক’ নামক একটি নাটকের সংলাপের অংশবিশেষ। নাটকের ৫৪ মিনিট ৩৯ সেকেন্ড সময়ে মোশাররফ করিমকে ‘মার মার’ শীর্ষক সংলাপটি বলতে শোনা যায়।

এছাড়া, বিশ্বকাপ খেলা শেষে সাম্প্রতিক সময়ে দেশে ফিরে সাকিব আল হাসানের হেনস্তা হওয়ার কোনো খবর দেশীয় বা আন্তর্জাতিক কোনো সংবাদমাধ্যমে পাওয়া যায়নি। 

তবে, বিশ্বকাপ চলাকালীন সাকিব তার শৈশবের কোচ নাজমুল আবেদীন ফাহিমের সঙ্গে নিবিড় অনুশীলনের জন্য দেশে আসলে মাঠে অনুশীলন শেষে বেরিয়ে যাওয়ার পথে মিরপুর ইনডোর স্টেডিয়ামে উপস্থিত সমর্থকরা সাকিবকে ‘ভুয়া ভুয়া’ বলে দুয়োধ্বনি দেয়। তবে এ ঘটনার সাথে আলোচিত ভিডিওটির কোনো সম্পর্ক নেই।

মূলত, বিতর্কিত দুবাই প্রবাসী ব্যবসায়ী আরাভ খানের স্বর্ণের দোকান উদ্বোধন করতে ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান চলতি বছরের মার্চ মাসে দুবাই গিয়েছিলেন। সে সময়ে সাকিব দেখতে ছুটে এসেছিলেন অসংখ্য প্রবাসী বাংলাদেশি। সেসময় সাকিবকে দেখতে আসা বাংলাদেশি প্রবাসী সমর্থকদের ভিড়ে ঘটনাস্থলে একটি  বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্ট হয়। সম্প্রতি সেই বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির ঘটনায় ধারণকৃত একটি ভিডিওতে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় ‘মার মার’ শীর্ষক বেকগ্রাউন্ট অডিও যুক্ত করে সাকিবের বিশ্বকাপে বাজে পারফরম্যান্সে কারণে সমর্থকদের তোপের মুখে পড়ার ভিডিও দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে। 

উল্লেখ্য, আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হবে বলে তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। আসন্ন এ নির্বাচনে অংশ নিতে গত ১৮ নভেম্বর তিনটি আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম কেনেন জাতীয় দলের এই ক্রিকেটার। 

সুতরাং, ভিন্ন ঘটনার পুরোনো ভিডিও এডিট করে সেটিকে বিশ্বকাপে ব্যর্থতার কারণে জড়ানোর কারণে সম্প্রতি সাকিব আল হাসান সমর্থকদের দ্বারা হেনস্তা হয়েছেন দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা সঠিক নয়। 

তথ্যসূত্র

রিকি পন্টিং অস্ট্রেলিয়ার সদ্য বিশ্বকাপ জয়ের পর ক্রিকেট মাফিয়া শীর্ষক কোনো মন্তব্য করেননি

0

গতকাল (১৯ নভেম্বর) ওডিআই ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফাইনালে ভারতকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে অস্ট্রেলিয়া। এই ম্যাচের পর ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া কিছু পোস্টে দাবি করা হচ্ছে, “অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক রিকি পন্টিং বলেছেন, মাফিয়াদের টাকা ও ক্ষমতা তাদের ওয়ার্ল্ড কাপ জেতাতে পারেনি। এটি ক্রিকেট মাফিয়াদের বিপক্ষে ন্যায়বিচারের জয়।”

অস্ট্রেলিয়ার

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, রিকি পন্টিং অস্ট্রেলিয়ার সদ্য বিশ্বকাপ জয়ের পর ক্রিকেট মাফিয়া শীর্ষক কোনো মন্তব্য করেননি বরং ফক্স ক্রিকেটকে সূত্র হিসেবে ব্যবহার করে রিকি পন্টিংয়ের নামে উক্ত ভুয়া মন্তব্যটি প্রচার করা হয়েছে। 

দাবিটি নিয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে ছড়িয়ে পড়া পোস্টগুলোতে দাবিটির সূত্র হিসেবে একটি টুইটের স্ক্রিনশট সংযুক্ত দেখেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। এক্সে (সাবেক টুইটার) পরবর্তীতে ASG নামক একটি ভেরিফাইড অ্যাকাউন্টে আলোচিত টুইটটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

গতকাল (১৯ নভেম্বর) রাত ৯ টা ৫১ মিনিটে প্রকাশিত টুইটটি এই প্রতিবেদন প্রকাশের সময় পর্যন্ত অন্তত ১০ লাখ মানুষের নজরে এসেছে। 

screenshot: X

এখানে লক্ষ্যণীয় বিষয় হচ্ছে, গতকালই বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচ হয়েছে। ভারতের বিপক্ষে খেলে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে অস্ট্রেলিয়া। ম্যাচটি শেষ হয় বাংলাদেশ সময় প্রায় সাড়ে নয়টায়। অর্থাৎ, দাবি অনুযায়ী পন্টিংকে এরপরই কথিত এই মন্তব্যটি করার কথা। 

কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার ক্রীড়া বিষয়ক সংবাদমাধ্যম Fox Cricket এর ওয়েবসাইটের ভিডিও এবং নিউজ সেকশনে এই সময়ের মধ্যে পন্টিংয়ের মন্তব্য সংশ্লিষ্ট কোনো সংবাদ বা ভিডিও প্রতিবেদনের অস্তিত্ব মেলেনি। 

তাছাড়া, ফক্সের সামাজিক মাধ্যমের অ্যাকাউন্টগুলোতেও (ইউটিউব, এক্স, ফেসবুক) পন্টিংয়ের উক্ত কথিত মন্তব্যের হদিস মেলেনি৷ 

তবে ফক্সের এক্স অ্যাকাউন্টে আজ (২০ নভেম্বর) সকালে প্রকাশিত একটি টুইটে পন্টিংয়ের একটি মন্তব্য সংযুক্ত করা হয়, যাতে তিনি অস্ট্রেলিয়া দলের অধিনায়ক কামিন্সের বিষয়ে কথা বলেছেন। এছাড়া, আজ দুপুরে ফক্সেরই প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত প্রতিবেদনে সদ্য সমাপ্ত ওডিআই ক্রিকেট বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়া এবং ভারতের ফাইনাল ম্যাচের পিচ সম্পর্কে রিকি পন্টিং বলেন, ভারত যে উইকেট বানিয়েছে সেটা তাদের উপরই উল্টোভাবে কাজ করেছে এবং তাদের ব্যাটিং লাইনআপের ধ্বংসের কারণ হয়েছে।

যদিও উপরোল্লিখিত টুইট এবং সংবাদ প্রতিবেদনটি দাবিটি ছড়িয়ে পড়ার পরদিন প্রকাশিত হয়েছে। তবুও প্রাসঙ্গিকতা বিবেচনায় বিষয়টি অবগত করা হলাে।  

পরবর্তীতে রিকি পন্টিং এর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অ্যাকাউন্টগুলোতেও (ফেসবুক এবং ইনস্টাগ্রাম) এ সংক্রান্ত কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। 

তাছাড়া রিকি পন্টিং কর্তৃক টাকা ও ক্ষমতা ভারত মাফিয়াদের ওয়ার্ল্ড কাপ জেতাতে পারেনি শীর্ষক কোনো মন্তব্য করা হলে স্বাভাবিকভাবে তা গণমাধ্যমে প্রচারিত হতো। কিন্তু দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে এ সংক্রান্ত কোনো সংবাদ বা তথ্য মেলেনি। 

মূলত, গত ১৯ নভেম্বর ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০২৩ এ ভারত এবং অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার ফাইনাল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। এই ম্যাচে ভারতকে হারিয়ে ষষ্ঠ বারের মতো শিরোপা জিতেছে অস্ট্রেলিয়া। উক্ত ম্যাচকে কেন্দ্র করে টাকা ও ক্ষমতা ক্রিকেট মাফিয়াদের ওয়ার্ল্ড কাপ জেতাতে পারেনি শীর্ষক মন্তব্যকে অস্ট্রেলিয়ার সাবেক ক্রিকেট অধিনায়ক রিকি পন্টিং এর মন্তব্য দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে। তবে রিউমর স্ক্যানার অনুসন্ধানে দেখেছে যে দাবিটি সঠিক নয়। রিকি পন্টিং এমন কোনো মন্তব্যই করেননি।

উল্লেখ্য, ASG নামক একই এক্স অ্যাকাউন্ট থেকে গত অক্টোবরে ভারতের সাবেক ক্রিকেটার এবং ধারাভাষ্যকার সুনীল গাভাস্কার ভারতের বিশ্বকাপ আয়োজনের অব্যবস্থাপনা নিয়ে স্টার স্পোর্টসে বক্তব্য দিয়েছেন শীর্ষক একটি দাবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার। 

সুতরাং, অস্ট্রেলিয়ার সাবেক ক্রিকেটার  রিকি পন্টিং ‘টাকা ও ক্ষমতা ক্রিকেট মাফিয়াদের ওয়ার্ল্ড কাপ জেতাতে পারেনি’ শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা৷ 

তথ্যসূত্র

এটি বিশ্বকাপ ফাইনালে ভারত হারায় পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটারদের আনন্দ উল্লাসের ভিডিও নয়

গতকাল (১৯ নভেম্বর) আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপের (পুরুষ) ফাইনাল ম্যাচে ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়া দল মুখোমুখি হয়। ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ভারতের হারের পর পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটাররা আনন্দ উল্লাস করছে দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। 

ভারত হারায়

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি গত ১৯ নভেম্বরের নয় বরং ২০২২ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পাকিস্তানের জয়ের পর পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটাররা আনন্দ উল্লাস করার ভিডিও এটি।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ভিডিওর শুরুতে একটি দৃশ্যে ২০২২ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের লোগো দেখা যায়।

Screenshot: Facebook

পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে পাকিস্তানের ক্রীড়া গণমাধ্যম A Sports এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২২ সালের ০৯ নভেম্বর “YESSS! We’re into the FINAL!!! It’s time for some Bhangra and why not!” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিটির মিল খুজে পাওয়া যায়।

Comparison: Rumor Scanner

ভিডিওটির বিস্তারিত বিবরণ থেকে জানা যায়, সেসময় চলা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ উপলক্ষে A Sports কর্তৃক আয়োজিত The Pavilion নামক অনুষ্ঠানে পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটাররা অংশ গ্রহণ করেন। ০৯ নভেম্বর আসরের প্রথম সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডকে ৭ উইকেটে হারিয়ে পাকিস্তান ফাইনাল নিশ্চিত করে। এর জেরে পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটাররা সেদিন উক্ত অনুষ্ঠানে উল্লাস করেন। তারই দৃশ্য এটি।

মূলত, ২০২২ সালে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডকে  হারিয়ে পাকিস্তান ফাইনাল নিশ্চিত করে। এর প্রেক্ষিতে পাকিস্তানের ক্রীড়া গণমাধ্যম A Sports কর্তৃক আয়োজিত অনুষ্ঠানে পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটাররা উল্লাস প্রকাশ করেন। সেই মূহুর্তের ভিডিওটি A Sports তাদের ইউটিউব চ্যানেনে প্রকাশ করে। তবে সম্প্রতি উক্ত ভিডিওটি ব্যবহার  করে সদ্য সমাপ্ত বিশ্বকাপ ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ভারত হারার কারণে পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটাররা আনন্দ উল্লাস করার দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে।

সুতরাং, ২০২২ সালে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডকে  হারিয়ে পাকিস্তান ফাইনাল নিশ্চিত করার পর পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটারদের উল্লাস প্রকাশের ভিডিওকে সদ্য সমাপ্ত বিশ্বকাপ ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ভারত হারার কারণে পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটাররা আনন্দ উল্লাস করার দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

  • A Sports – Youtube Video
  • Rumor Scanner’s own investigation