গত জুলাই মাসে আর্জেন্টিনায় ভূমিকম্পের ঘটনায় কতিপয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে একটি ছবি ব্যবহার করা হয়েছে।
উক্ত ছবি ব্যবহার করে আর্জেন্টিনার সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের ঘটনায় প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ডেইলি বাংলাদেশ এবং ঢাকা জার্নাল।
একই ছবি ব্যবহার করে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ে আর্জেন্টিনায় হওয়া ভূমিকম্পের নয় বরং চলতি বছর দক্ষিণ কোরিয়ায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ইয়েচিওনে এলাকা থেকে তোলা ছবিকে আর্জেন্টিনার দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম Yahoo এর ওয়েবসাইটে গত ১৭ জুলাই “South Korea’s death toll from destructive rainstorm grows to 40 as workers search for survivors” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।
ছবিটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, গত ১৭ জুলাই দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল (বাঁ দিক থেকে চতুর্থ) দক্ষিণ কোরিয়ার ইয়েচিওনে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঘুরে দেখছেন।
এছাড়া, ফ্রান্সের সংবাদ সংস্থা AP এর ওয়েবসাইটে একই তারিখে “La cifra de muertos por las destructivas tormentas en Corea del Sur sube a 40 personas” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত আরেকটি প্রতিবেদনে আলোচিত মূল ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।
ছবিটির ক্যাপশনেও একই তথ্যই উল্লেখ ছিল।
গণমাধ্যমে সম্প্রতি প্রকাশিত প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিটির ক্যাপশনে ছবিটি সংগৃহীত বলে উল্লেখ করা হয়েছে, কোনো গণমাধ্যম ছবির ক্যাপশনে কিছুই উল্লেখ করা হয়নি। সাম্প্রতিক ঘটনার বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ছবিটি ব্যবহার করে সংগৃহীত উল্লেখ করা বা কোন তথ্য উল্লেখ না করায় স্বাভাবিকভাবেই ছবিটি আর্জেন্টিনায় সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের ঘটনার বলে প্রতীয়মান হয়। এতে করে নেটিজেনদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হওয়া অমূলক নয়।
মূলত, গত জুলাই মাসে আর্জেন্টিনায় ভূমিকম্পের ঘটনায় কতিপয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে একটি ছবি প্রচারের প্রেক্ষিতে অনুসন্ধানে জানা যায়, ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। এটি চলতি বছরের জুলাই মাসে দক্ষিণ কোরিয়ায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ইয়েচিওনে এলাকা থেকে তোলা। গণমাধ্যমের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনগুলোতে আলোচিত ছবিটির ক্যাপশনে পুরোনো ঘটনার ছবি শীর্ষক কোনো তথ্য না দেওয়ায় ছবিটি সাম্প্রতিক আর্জেন্টিনায় ভূমিকম্পের ঘটনার বলে প্রতীয়মান হয়, যা বিভ্রান্তির জন্ম দিয়েছে।
উল্লেখ্য, পূর্বে কঙ্গোতে ভারী বর্ষণে বন্যার ঘটনায় গণমাধ্যমে একাধিক পুরোনো ছবি ব্যবহার করা হলে সেসময় বিষয়টি নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।
সুতরাং, আর্জেন্টিনার ভূমিকম্পের ঘটনায় বাংলাদেশের গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ভিন্ন দেশের ভিন্ন ঘটনার একটি ছবিকে সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।