Home Blog Page 549

সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে ২০২৩ সাল জুড়ে যেমন ছিল রাজনৈতিক ভুল তথ্যের প্রবাহ

গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে বাংলাদেশে বরাবরই রাজনীতির ময়দান বেশ সরব৷ দক্ষিণ এশিয়ার দেশটি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) – এই প্রধান দুই দলের জনপ্রিয়তা এবং জনসমর্থনে ভর করে স্বাধীনতা পরবর্তী সময় থেকে রাজনীতিতে পাঁচ দশকেরও বেশি সময় দেখেছে। সময়ে সময়ে একাধিক রাজনৈতিক দলের উত্থান ঘটলেও এই দুই দলের মতো কোনো দলই বড় স্কেলে জনসমর্থন আদায় করতে পারেনি। তাই বাংলাদেশের রাজনীতিতে বছর বছর এই দুই দলই রাজনীতির মাঠকে সামনে থেকে গরম রেখেছেন। ২০২৩ সালও তার ব্যতিক্রম ছিল না৷ এমনিতে সকলেরই জানা ছিল, পরের বছরই (২০২৪) দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করেই তাই বছরজুড়ে উত্তাল এক সময় দেখেছে বাংলাদেশের রাজনীতি। 

রাজনীতিতে গুজবের প্রচারণা প্রতিপক্ষকে দমিয়ে দেয়ার এক পুরোনো কৌশল। সেই কৌশল কাজে লাগিয়ে পক্ষে বিপক্ষে বরাবরই গুজবের প্রচলন ছিল তৃতীয় বিশ্বের এই দেশটিতে। তবে সময়ের সাথে এই প্রচলন যেন মহামারির রূপ নিচ্ছে। না হলে ২০২২ সালে যেখানে রাজনৈতিক বিষয়ে মাত্র ৯২টি গুজব প্রচারের প্রমাণ পেয়েছিল রিউমর স্ক্যানার, ঠিক পরের বছর কিনা সে সংখ্যাটা সাড়ে ছয় গুণ বেড়ে ৫৯৭ তে গিয়ে ঠেকলো! যেহেতু পরের বছরই নির্বাচন, তাই আমাদের কাছে মনে হয়েছিল ২০২৩ সালে রাজনৈতিক অঙ্গনে নির্বাচনকেন্দ্রিক ভুল তথ্য প্রচারের হার বাড়বে। আমরা তাই বিষয়টিতে তীক্ষ্ণ নজরই রেখেছিলাম। এর ফলে আমরা দেখেছি, ছড়িয়ে পড়া ৫৯৭টি ভুল তথ্যের মধ্যে ৩২০টিই ছিল সংসদ নির্বাচন কেন্দ্রিক। অর্থাৎ, রাজনৈতিক ভুল তথ্যের মোট সংখ্যার ৫৪ শতাংশই নির্বাচন কেন্দ্রিক ছিল। 

রাজনৈতিক ভুল তথ্যের প্রবাহ
Statistics: Rumor Scanner

রাজনৈতিক গুজবের সংখ্যা বেড়েছে লাফিয়ে 

২০২৩ সালের শুরুর মাস অর্থাৎ জানুয়ারিতে রাজনৈতিক অঙ্গনে খুব একটা ভুল তথ্য প্রচারের প্রবণতা দেখিনি আমরা। সে মাসে মোট ভুল তথ্যের মাত্র ১১ শতাংশ ছিল রাজনীতি কেন্দ্রিক গুজব। পরের মাসে এই হার আরও কমেছে (৯ শতাংশ)। পরের সাত মাসে ক্রমেই এই হার বেড়েছে। অক্টোবরে হার কিছুটা কমলেও পরের দুই মাস বাড়তির দিকেই ছিল রাজনৈতিক গুজব। এর পেছনে ২৮ অক্টোবরের ঘটনাপ্রবাহ এক বড় কারণ বলে মনে হয়েছে আমাদের কাছে। 

বিদায়ী বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকায় দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সমাবেশকে ঘিরে সৃষ্ট উত্তপ্ত পরিস্থিতির ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ছড়িয়ে পড়া ৪০টি ভুল তথ্য (লিঙ্ক) শনাক্ত করেছিল রিউমর স্ক্যানার। এর মধ্যে ২৮ অক্টোবর একদিনেই ১২টি ভুল তথ্য শনাক্ত করে রিউমর স্ক্যানার। গেল বছরে কোনো ঘটনায় একদিনে এটিই ছিল সর্বোচ্চ ভুল তথ্য ছড়ানোর সংখ্যা। পরবর্তীতে এর রেশ পরের দুই মাসেও গড়িয়েছে।

তবে মাসভিত্তিক গুজবের সংখ্যায় উঠানামা থাকলেও ত্রৈমাসিক ভিত্তিক পরিসংখ্যান জানান দিচ্ছে, দেশে গেল বছর রাজনৈতিক গুজব ছড়ানোর প্রবণতা কখনোই কমতির দিকে যায়নি। প্রথম তিন মাসে ৪৭টি গুজব ছিল রাজনীতি কেন্দ্রিক। ১ম তিন মাসের তুলনায় ২য় তিন মাসে (এপ্রিল-জুন) রাজনৈতিক গুজব প্রচারের হার বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ১২১ শতাংশ (১০৪টি)। তৃতীয় তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) গিয়ে দেখা যাচ্ছে, এই সময়ে রাজনৈতিক গুজব ছড়িয়েছে ১৭৬টি, যা পূর্বের তিন মাসের তুলনায় প্রায় ৬৯ শতাংশ বেশি। তবে এই হার মহামারি আকারে বেড়েছে পরের তিন মাসে অর্থাৎ অক্টোবর থেকে নভেম্বরে। এ সময়ে ২৭০টি রাজনৈতিক গুজব শনাক্ত করেছে রিউমর স্ক্যানার যা পূর্বের তিন মাস থেকে প্রায় ৫৩ শতাংশ বেড়েছে। তবে এটির ভয়াবহ রূপ বোঝা যায় প্রথম তিন মাসের সাথে তুলনায়। প্রথম তিন মাসের তুলনায় শেষ তিন মাসে রাজনৈতিক গুজব ছড়িয়ে পড়ার হার বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ৪৭৪ শতাংশ।  

Statistics: Rumor Scanner

কারা ছিলেন রাজনৈতিক গুজবের টার্গেটে? 

রিউমর স্ক্যানার টিম ২০২৩ সালে রাজনৈতিক অঙ্গনে ছড়ানো ভুল তথ্যগুলো পর্যবেক্ষণ করে দেখেছে, এ সময়ে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জড়িয়ে সর্বোচ্চ সংখ্যক (১২১টি) ভুল তথ্য প্রচার করা হয়েছে, যা মোট রাজনৈতিক ভুল তথ্যের ২০ শতাংশ। অর্থাৎ, প্রতি তিনদিনে তিনি গড়ে একটি করে গুজবের শিকার হয়েছেন।

এই তালিকায় পরের অবস্থানে পাওয়া যাচ্ছে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নাম, তার বিষয়ে ৩১টি গুজব প্রচারের প্রমাণ মিলেছে। পরের অবস্থানেও বিএনপির আরেকজন রয়েছেন, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তার বিষয়ে ৩০টি গুজব প্রচার করা হয়েছে। এই তালিকায় পরের অবস্থানগুলোতে যারা রয়েছেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, বর্তমান রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন, মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসিপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেত্রী রুমিন ফারহানা এবং প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।

এর বাইরে বর্তমান প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালকে জড়িয়ে ১৯টি এবং কনটেন্ট ক্রিয়েটর  হিরো আলমের বিষয়ে ২০টি ভুল তথ্য প্রচার করা হয়েছে। তাছাড়া, নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিষয়ে ১২টি ভুল তথ্য শনাক্ত করেছে রিউমর স্ক্যানার। 

Statistics: Rumor Scanner

গুজবের রোষানল থেকে রক্ষা পায়নি রাষ্ট্রীয় বাহিনীগুলোও। গেল বছর বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে নিয়ে ৬৪টি এবং বাংলাদেশ পুলিশের বিষয়ে ছড়ানো ৩৮টি গুজব শনাক্ত করেছে রিউমর স্ক্যানার। এই বাহিনীগুলোর সাথে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা না থাকলেও রাজনৈতিক বিভিন্ন প্রেক্ষাপটেই এই গুজবগুলো প্রচার হতে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার টিম।

সংসদ নির্বাচন যখন গুজবের টার্গেটে

বাংলাদেশে প্রতি পাঁচ বছর পরপর জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। সে হিসেবে আগামী ০৭ জানুয়ারি (২০২৪) এই নির্বাচন দ্বাদশবারের মতো হতে দেখবে বাংলাদেশের জনগণ। গুজব নিয়ে কাজ করতে গিয়ে আমরা দেখেছি, যেকোনো ইভেন্ট ভিত্তিক গুজব প্রায় সব দেশেই অন্তত একটি হলেও ছড়ায়। ইভেন্টের ব্যাপকতা বুঝে সে সংখ্যা এবং হার বাড়ে বা কমে। বাংলাদেশে তার ব্যতিক্রম দেখিনি আমরা। নির্বাচন এদেশের রাজনীতির মূল অনুষঙ্গ হয়ে ওঠায় নির্বাচনের আগে ও পরে বরাবরই উত্তাল থাকে দেশের রাজনীতি। গুজবও যেহেতু রাজনৈতিক অঙ্গনে একটি বড় হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার হয় সেহেতু নির্বাচন আসলে গুজব প্রচারও বেড়ে যায় কয়েকগুণ। 

২০১৮ সালে যখন সর্বশেষ সংসদ নির্বাচন হয়েছিল এদেশে, সেসময় ফ্যাক্টচেকিংয়ের ধারণাটি একেবারেই নতুন ছিল দেশের মানুষের কাছে। তখন গুজব যাচাইয়ের কার্যক্রমও বেশ সীমিত ছিল। ফলে নির্বাচনের আগে পরে গুজব ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে সঠিক তথ্য যাচাইয়ের সুযোগ খুব একটা ছিল না৷ তবে এবার প্রেক্ষাপট ভিন্ন। রিউমর স্ক্যানার টিম গেল বছরের শুরু থেকেই নির্বাচন বিষয়ে ভুল তথ্যের প্রচারের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে নজরে রেখেছিল। এরই ধারাবাহিকতায় আমরা দেখেছি, জানুয়ারিতেই নির্বাচন কেন্দ্রিক গুজব প্রচার হতে শুরু করে। প্রথম তিন মাসে সংখ্যাটা হাতেগোনা হলেও পরের তিন মাসে এটি বেড়েছে আশঙ্কাজনক হারে। নির্বাচন ঘনিয়ে আসায় এ সংক্রান্ত গুজব ছড়িয়ে পড়ার প্রবণতা অবশ্য অনুমিতই ছিল। প্রথম তিন মাসে নির্বাচন বিষয়ে গুজবের পরিমাণ ছিল সাতটি। পরের তিন মাসে এটি বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ৩২৯ শতাংশ হারে (৩০টি)। তৃতীয় তিন মাসে এই সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ (৫৭টি) বাড়তে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার টিম যা পূর্বের তিন মাসের তুলনায় প্রায় ৯০ শতাংশ বেড়েছে। 

Statistics: Rumor Scanner

বছরের শেষ তিন মাস অর্থাৎ চতুর্থ তিন মাসে গিয়ে আগের তিন কোয়াটারের মোট সংখ্যাকে পেছনে ফেলেছে নির্বাচনী গুজব। এ সময় ছড়িয়ে পড়েছিল ২২৬টি গুজব, যা তৃতীয় তিন মাসের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ২৯৬ শতাংশ। তবে আপনি যদি প্রথম তিন মাসের সাথে এই সংখ্যার তুলনা করেন তাহলে অবাক না হয়ে উপায় নেই। প্রথম তিন মাসের তুলনায় শেষ তিন মাসে নির্বাচনী গুজবের ছড়িয়ে পড়ার হার বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ৩১২৯ শতাংশ। 

Statistics: Rumor Scanner

গেল বছর আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে বিদেশি গণমাধ্যম, রাষ্ট্র, কূটনীতিক, আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং তাদের নেতৃত্বকে জড়িয়ে ভুয়া মন্তব্য বা তথ্য প্রচারের প্রবণতা লক্ষ্য করেছে রিউমর স্ক্যানার, সংখ্যার হিসেবে যার পরিমাণ ৪৯টি। এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রে নিষেধাজ্ঞা ও ভিসা বাতিল সংক্রান্ত ৩৫টি, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়ে ৩০টি এবং রাজনৈতিক নেতাদের বক্তব্য বিকৃত করে ৩২টি ভুল তথ্য প্রচার করতে দেখা গেছে।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন দরজায় কড়া নাড়ছে। নির্বাচন ঘনিয়ে আসায় গুজবের এই ভয়াবহতা আরও বাড়তে পারে। নির্বাচনের দিন অর্থাৎ ০৭ জানুয়ারিও সময়ে সময়ে ভুল তথ্য প্রচারের আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। নির্বাচন কমিশন এবং সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থাগুলো এ বিষয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে। 

মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পদত্যাগের নির্দেশ’ শীর্ষক ভুয়া তথ্য প্রচার

আজ (০৪ জানুয়ারি) Sabai Sikhi নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ‘মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট থেকে শেখ হাসিনাকে পদত্যাগের নির্দেশ’ শীর্ষক দাবি যুক্ত শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।

মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট

ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি ভিডিওটি প্রায় ৮ হাজার বার দেখা হয়েছে। ভিডিওটিতে প্রায় ৪ শত পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। 

পরবর্তীতে এই ভিডিওটি আরও একটি ইউটিউব চ্যানেলে প্রচার করা হয়েছে। সেটি দেখুন  এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পদত্যাগের নির্দেশ দেওয়ার দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সঠিক নয় বরং মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের প্রেস ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের বিষয়ে প্রচারিত একটি অংশের ভিডিও ক্লিপের সাথে উক্ত দাবি সম্বলিত শিরোনাম ও থাম্বনেইল যুক্ত করে আলোচিত ভিডিওটি প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। উক্ত ভিডিওটিতে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট বা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলারকে সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তর দিতে দেখা যায়। তবে সেখানে কোথাও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পদত্যাগের নির্দেশ সম্পর্কিত কোনো তথ্যের উল্লেখ পাওয়া যায়নি।

উক্ত ভিডিওটি থেকে কিছু স্থিরচিত্র নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ইউটিউব চ্যানেলে ০৪ জানুয়ারি ‘Department of State Daily Press Briefing – January 3, 2024’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

এই ভিডিওটি’র বাংলাদেশের বিষয়ে প্রশ্নোত্তর অংশের সাথে আলোচিত ভিডিওটি’র হুবহু মিল পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner

ভিডিওটিতে দেখা যায়, মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বছরের প্রথম প্রেস ব্রিফিংয়ে বক্তব্য রাখেন মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। সেখানে এক সাংবাদিক ম্যাথিউ মিলারকে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুসের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের শ্রম আদালতের দেওয়া সাম্প্রতিক রায়ের বিষয়ে প্রশ্ন করেন। 

জবাবে ম্যাথিউ মিলার জানান, আসন্ন ৭ জানুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনুসের বিরুদ্ধে মামলাকে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে যুক্তরাষ্ট্র।

পরবর্তীতে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট’র ওয়েবসাইটে প্রকাশিত উক্ত ব্রিফিংয়ের বিস্তারিত বিবরণী থেকেও বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়।

Screenshot: US State Department Press Briefing
Screenshot: US State Department Press Briefing

অর্থাৎ, এটি মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পদত্যাগের নির্দেশ দেওয়ার কোনো ভিডিও নয়।

পাশাপাশি, দেশীয় বা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পদত্যাগের নির্দেশ দেওয়ার দাবির সত্যতা পাওয়া যায়নি।

মূলত, গত ০৩ জানুয়ারি মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে বিভিন্ন ইস্যুতে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন মন্ত্রনালয়ের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। এসময় এক সাংবাদিক বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুসের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের শ্রম আদালতের দেওয়া সাম্প্রতিক রায়ের বিষয়ে তাকে প্রশ্ন করলে যুক্তরাষ্ট্র বিষয়গুলো নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে বলে তিনি জানান। পরবর্তীতে উক্ত প্রেস ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের বিষয়ে প্রচারিত উক্ত অংশের ভিডিও ক্লিপের সাথে Sabai Sikhi নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ‘মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট থেকে শেখ হাসিনাকে পদত্যাগের নির্দেশ’ শীর্ষক দাবি যুক্ত শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়ে। প্রকৃতপক্ষে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পদত্যাগের কোনো নির্দেশ দেওয়া হয়নি।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে করা একটি মামলায় গত পহেলা জানুয়ারি গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ও নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনকে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয় ঢাকার তিন নম্বর শ্রম আদালত। সেই সঙ্গে পাঁচ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।

মামলার আরেকটি ধারায় তাদের ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অর্থাৎ তাদের প্রত্যেককে মোট ৩০ হাজার টাকা করে জরিমানা দিতে হবে। তবে কারাদণ্ড হলেও এখনি কারাগারে যেতে হবে না ড. ইউনূসকে। আদালতে তাদের আইনজীবীরা ৩০ দিনের মধ্যে আপিল করার শর্তে জামিন চাইলে পাঁচ হাজার টাকার বন্ডে আদালত সেই আবেদন মঞ্জুর করেছেন। অর্থাৎ আগামী একমাসের মধ্যে তাদের শ্রম আপিলেট ট্রাইবুনালে আপিল করতে হবে।

উল্লেখ্য, আগামী ৭ জানুয়ারি রোববার ভোটগ্রহণের দিন রেখে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল।

সুতরাং, মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পদত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

অপু বিশ্বাস আসন্ন নির্বাচনে প্রার্থী হননি, ভাইরাল ভিডিওটি ২০২১ সালের

সম্প্রতি, চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস চট্টগ্রামে নির্বাচন করছেন দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

অপু বিশ্বাস

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি এ সংক্রান্ত একটি ভিডিওই দেখা হয়েছে ১৮ লক্ষেরও বেশি বার। ভিডিওটিতে ৩৯ হাজারেরও বেশি পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া দেখানো হয়েছে।

টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, অপু বিশ্বাস চট্টগ্রামে নির্বাচন করছেন শীর্ষক দাবিটি সঠিক নয় বরং, ২০২১ সালের চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরীর পক্ষে প্রচারণায় অংশ নেওয়ার একটি ভিডিওকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

ভিডিওটির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে Real Showbuzz নামক নামক ইউটিউব চ্যানেলে ২০২১ সালের ২৫ জানুয়ারি প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর দৃশ্যের মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Comparison: Rumor Scanner

ভিডিও থেকে জানা যায়, সেসময় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনীত প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরীর পক্ষে প্রচারণায় অংশগ্রহণ করেন চিত্রনায়ক রিয়াজ, চিত্রনায়িকা তারিন, অপু বিশ্বাস, মাহিয়া মাহিসহ আরও অনেকেই।

অপু বিশ্বাস বলেন, “রেজাউল করিম চৌধুরী ভাইকে জয়যুক্ত করে চট্টগ্রামকে সুন্দর করে সাজানোর সুযোগ করে দিবেন। বলেনতো মার্কা আছে? কোন সে মার্কা? আরও জোরে? সবাই বলেন!”

সেসময় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের প্রচারণায় তারকাদের অংশগ্রহণ নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন দেখুন এখানে।

এছাড়া, অপু বিশ্বাস দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার কোনো সংবাদ গণমাধ্যম সূত্রে পাওয়া যায়নি। 

মূলত, ২০২১ সালের চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে রেজাউল করিম চৌধুরী আওয়ামী লীগ থেকে মনোনীত প্রার্থী হন। উক্ত নির্বাচনে রেজাউল করিম চৌধুরীর পক্ষে চিত্রনায়ক রিয়াজ, চিত্রনায়িকা তারিন, অপু বিশ্বাস, মাহিয়া মাহি সহ আরও অনেকেই নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণ করেন। সেই প্রচারণায় অপু বিশ্বাস বলেন, রেজাউল করিম চৌধুরী ভাইকে জয়যুক্ত করে চট্টগ্রামকে সুন্দর করে সাজানোর সুযোগ করে দিবেন। বলেনতো মার্কা আছে? কোন সে মার্কা? আরও জোরে? সবাই বলেন। সম্প্রতি অপু বিশ্বাসের সেই বক্তব্যের ভিডিও প্রচার করে তিনি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম থেকে প্রার্থী হয়েছেন দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

সুতরাং, চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম থেকে প্রার্থী হয়েছেন দাবিতে ২০২১ সালে ভিন্ন ঘটনার একটি পুরোনো ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

সাকিব মলম বিক্রি করছেন না, নির্বাচনী প্রচারণার ভিডিওতে ভিন্ন অডিও যুক্ত করে প্রচার 

সম্প্রতি, বাংলাদেশের ক্রিকেটার ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাগুরা-১ আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সাকিব আল হাসান মাইক হাতে চুলকানির মলম বিক্রি করছেন দাবিতে মলম বিক্রির অডিও যুক্ত একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। 

সাকিব মলম বিক্রি

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

টিকটকে প্রচারিত এমন কিছু ভিডিও দেখুন  এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ইউটিউবে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, মাইক হাতে সাকিবের চুলকানির মলম বিক্রি করার দাবিটি সঠিক নয় বরং, তার নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর সময়কার একটি ভিডিওতে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় মলম বিক্রির ভিন্ন একটি অডিও যুক্ত করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওতে থাকা ‘মাগুরা TV’ এর লোগোর সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে Magura Tv News নামক একটি ফেসবুক পেজে ২০২৩ সালের ২২ ডিসেম্বর আমি এই এলাকার ছেলে নতুন করে আমার চাওয়ার কিছু নাই.. শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি  ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির সাথে উক্ত ভিডিওর মিল রয়েছে। 

Video Comparison by Rumor Scanner

তবে উক্ত ভিডিওতে মলম বিক্রি করার অডিওর পরিবর্তে সাকিব আল হাসানকে, ‘সকালবেলা আপনারা কষ্ট করে এত সুন্দর একটা আয়োজন করছেন, আপনাদের ধন্যবাদ। সারাজীবন এখানে আসছি, খেলাধুলা করছি, তো নতুন করে আপনাদের কাছে চাওয়ার কিছু নাই। একটাই চাওয়া এখন যদি আপনাদের কিছু ফেরত দিতে পারি। আপনারা যদি নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আগামী ৭ জানুয়ারি আমাকে জয় যুক্ত করেন আমি চেষ্টা করবো আমার জায়গা থেকে সর্বোচ্চ করার আপনাদের জন্য। আর আমি যদি কিছু করতে পারি আপনাদের জন্য তাহলে আমার ভালো লাগবে। তো এই কারণে আপনাদের সাথে দেখা করতে আসছি। জীবনে অনেকবার আসছি কোনো কারণ ছাড়া, খেলতে আর এবার আসছি ভোট চাইতে। আশা করি, আপনারা আমাকে হতাশ করবেন না।’ শীর্ষক বক্তব্য দিতে দেখা যায়। 

পরবর্তীতে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ‘মাগুরা নিউজ টুডে’ নামের আরেকটি ফেসবুক পেজে গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট চাইলেন সাকিব। শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একই দিনের আরেকটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, উক্ত ভিডিওটি আলোচিত ভিডিওটিরই ভিন্ন কোণ থেকে ধারণ করা অপর আরেকটি ভিডিও। এখানেও মলম বিক্রি সংক্রান্ত আলোচিত অডিও শুনতে পাওয়া যায়নি। 

উক্ত দিনের প্রচারণার বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন এখানে। 

মূলত, গত ২২ ডিসেম্বর (২০২৩) বাংলাদেশের ক্রিকেটার ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাগুরা-১ আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সাকিব আল হাসান তার নিজ এলাকা সাহাপাড়ায় নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে গেলে তখন এলাকাবাসী তাকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেয়। এ সময় তিনি তাদের কাছে ভোট চেয়ে মাইক হাতে বক্তব্য দেন। এ সংক্রান্ত ভিডিও মাগুরার স্থানীয় গণমাধ্যমগুলোর ফেসবুক পেজে প্রচার করা হয়। এর প্রেক্ষিতে সম্প্রতি সাকিব মাইক হাতে চুলকানির মলম বিক্রি করছেন দাবিতে মলম বিক্রির অডিও যুক্ত একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি সত্য নয়। মূলত ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সাকিব আল হাসানের উক্ত নির্বাচনী প্রচারণার ভিডিওতে চুলকানির মলম বিক্রির অডিও যুক্ত করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করে প্রচার করা হয়েছে।

সুতরাং, মাইক হাতে সাকিব আল হাসানের চুলকানির মলম বিক্রি করার ভিডিওটি এডিটেড বা বিকৃত।

তথ্যসূত্র

সারাদেশ থেকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী প্রত্যাহার ও দলটির বিএনপিতে যোগদানের বিভ্রান্তিকর দাবি

সম্প্রতি, ‘সারাদেশ থেকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী প্রত্যাহার হঠাৎ বিএনপিতে যোগ দিল জাতীয় পার্টি’ শীর্ষক থাম্বনেইল ও একই তথ্য সম্বলিত শিরোনামে একটি ভিডিও ইউটিউবে প্রচার করা হয়েছে।

জাতীয় পার্টির প্রার্থী প্রত্যাহার

ইউটিউবে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সারাদেশ থেকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী প্রত্যাহার করা এবং জাতীয় পার্টির বিএনপিতে যোগ দেওয়ার মত কোনো ঘটনা ঘটেনি। প্রকৃতপক্ষে, বেশ কয়েকটি আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থীদের নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণার সংবাদকে কেন্দ্র করে অধিক ভিউ পাবার আশায় চটকদার থাম্বনেইল এবং শিরোনাম ব্যবহার করে ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার ভিডিওকে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় যুক্ত করে ভিত্তিহীনভাবে উক্ত দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। এতে দেখা যায়, ভিডিওটির উপস্থাপক, ‘অবশেষে নির্বাচন থেকে প্রার্থী প্রত্যাহার করা শুরু করে দিয়েছে জাতীয় পার্টি। আপনাদেরকে বিস্তারিত দেখানো এই নির্বাচন আসলেই হচ্ছে না বিরোধী দল না থাকার কারণে। জাতিসংঘে বিএনপির চিঠি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং সেই চিঠির উত্তরে জাতিসংঘ কিভাবে নির্বাচন বানচাল করছে। এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র্য বিএনপিকে দিয়েই সরকার গঠন করবে’ শীর্ষক কথা বলে দর্শকদের উদ্দেশ্যে গণমাধ্যমের একটি প্রতিবেদন ও একজন অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টের দুটি ভিডিও দেখান যার সাথে ভিডিওটির থাম্বনেইলে থাকা দাবির কোনো সম্পর্ক নেই।

ভিডিও যাচাই ১

আলোচিত ভিডিওর শুরুতে দেখানো গণমাধ্যমের প্রতিবেদনটির সূত্র অনুসন্ধানে ভিডিওতে দেখানো ‘জাতিসংঘের কাছে বিএনপির চিঠি’ শীর্ষক লেখাটির সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে Kalbela News এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ৩১ ডিসেম্বর জাতিসংঘে পাঠানো বিএনপির চিঠিতে কী আছে | UN | BNP | BD Election | Kalbela শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor শ্চান্নের

প্রতিবেদনটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এটি মূলত আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ চেয়ে বিএনপির দেওয়া চিঠিতে কি রয়েছে তা নিয়ে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন। এর সাথে আলোচিত দাবির কোনো সম্পর্ক নেই।

ভিডিও যাচাই ২

পরবর্তীতে মোস্তফা ফিরোজ নামের অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টের দেখানো ভিডিওটির সূত্র অনুসন্ধানে ভিডিওর শুরুতে দেখানো অংশে থাকা ‘নির্বাচন ঠেকাতে জাতিসংঘ ও বিদেশিদের হস্তক্ষেপ চেয়ে বিএনপির চিঠি’ শীর্ষক লেখা এবং ভিডিওটির ডান পাশে উপরে থাকা VOICE BANGLA লেখা লোগোটির  সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে Voice Bangla নামক ইউটিউব চ্যানেলে গত ৩১ ডিসেম্বর নির্বাচন ঠেকাতে জাতিসংঘ ও বিদেশিদের হস্তক্ষেপ চেয়ে বিএনপির চিঠি I Mostofa Feroz I Voice Bangla শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, উক্ত ভিডিওটিও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-র জাতিসংঘে চিঠি দেওয়াকে নিয়ে তৈরি করা। যাতে ভিডিওতে থাকা ব্যক্তি একাধিক পত্রিকার ওয়েবসাইটে উক্ত বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন পাঠ করে শোনান। তবে ভিডিওটির কোথাও তিনি সারাদেশে থেকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী প্রত্যাহার করে নেওয়া বা তাদের বিএনপিতে যোগ দেওয়ার বিষয়ে কিছু বলেননি।

ভিডিও যাচাই ৩ 

আলোচিত ভিডিওতে দেখানো সর্বশেষ ভিডিওটি অনুসন্ধানে পূর্বের ভিডিওর মত শুরুতে দেখানো অংশে থাকা ‘ভোটের মাঠ থেকে সরে দাড়াতে শুরু করেছে জাতীয় পার্টি’ শীর্ষক লেখা এবং VOICE BANGLA এর লোগোর সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে একই নামের ইউটিউব চ্যানেলে গত ৩১ ডিসেম্বর ভোটের মাঠ থেকে সরে দাঁড়াতে শুরু করেছে জাতীয় পার্টিI Mostofa Feroz I Voice Bangla শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, উক্ত ভিডিওতে মূলত সম্প্রতি একাধিক আসন থেকে বিভিন্ন কারণে জাতীয় পার্টির প্রার্থীদের নির্বাচন থেকে সরে দাড়ানোর বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। ভিডিওটিতে তিনি দৈনিক প্রথম আলো এবং ঢাকা পোস্ট এর ওয়েবসাইটে সরে দাঁড়ালেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী, বললেন ‘আমি আর পারছি না’  এবং নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন জাপার তিন আসনের প্রার্থী  শিরোনামে প্রকাশিত দুটি প্রতিবেদন পাঠ করে শোনান। যাতে জাতীয় পার্টির একাধিক প্রার্থীর নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার কথা বলা বলেও সারাদেশ থেকে প্রার্থী প্রত্যাহার করার বিষয়ে কিছু বলা হয়নি। এছাড়াও জাতীয় পার্টির বিএনপিতে যোগদান করার বিষয়েও কিছু বলা হয়নি।

পরবর্তীতে সারা দেশে থেকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী প্রত্যাহার ও দলটির বিএনপিতে যোগদান করার দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে প্রাসঙ্গিক বিভিন্ন কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমেও কোনো গণমাধ্যম কিংবা কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে উক্ত দাবির পক্ষে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, গত ১৭ ডিসেম্বর ছিল দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন। সেসময়ের মধ্যে জাতীয় পার্টির ১১ জন প্রার্থী দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন।

মূলত, সম্প্রতি গাজীপুর-১ ও ৫ আসনের জাতীয় পার্টির প্রার্থী এম এম নিয়াজ উদ্দিন নির্বাচন থেকে সরে দাড়ানোর ঘোষণা দেন। এছাড়াও গত ৩১ ডিসেম্বর বরিশাল-২ এবং বরিশাল-৫ আসন ও  বরগুনা-১ আসনের জাতীয় পার্টির প্রার্থীরাও নিজের নির্বাচন থেকে সরে দাড়ানোর ঘোষণা দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি, ‘সারাদেশ থেকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী প্রত্যাহার হঠাৎ বিএনপিতে যোগ দিল জাতীয় পার্টি’ শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, তফসিল অনুযায়ী বর্তমানে নির্বাচনে প্রার্থীতা প্রত্যাহারের কোনো সুযোগ নেই  প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ছিল ১৭ ডিসেম্বর। অধিকতর ভিউ পাবার আশায় আলোচিত দাবির থেকে ভিন্ন দুটি ঘটনার ভিডিও সমন্বয় করে তাতে চটকদার থাম্বনেইল ও শিরোনাম ব্যবহার করে কোনোপ্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে। পাশাপাশি দেশের নির্ভরযোগ্য কোনো গণমাধ্যম সূত্রেও এমন কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, সারাদেশ থেকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী প্রত্যাহার করে বিএনপিতে যোগ দিয়েছে দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত  তথ্যটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

সাকিব আল হাসান ও মাহিয়া মাহিকে হত্যার গুজব

সম্প্রতি, শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটকে Sumon Hosen নামের একটি অ্যাকাউন্ট থেকে বাংলাদেশের ক্রিকেটার ও মাগুরা-১ আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সাকিব আল হাসান এবং চিত্রনায়িকা ও রাজশাহী-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহিয়া মাহিকে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের কারণে হত্যা করা হয়েছে শীর্ষক তথ্য প্রচার করা হয়েছে।

হত্যার

উক্ত টিকটক অ্যাকাউন্টটি (আর্কাইভ) থেকে এই দুই তারকার হত্যার দাবিতে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সাকিব আল হাসান ও মাহিয়া মাহি হত্যাকাণ্ডের শিকার হননি বরং অধিক ভিউ পাবার আশায় নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যসূত্র ছাড়াই ভিত্তিহীনভাবে উক্ত টিকটক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে এই তারকাদের হত্যার ভুয়া দাবি প্রচার করা হয়েছে।

সাকিব আল হাসান ও মাহিয়া মাহিকে হত্যার দাবির বিষয়ে সত্যতা যাচাইয়ের শুরুতে দেশীয় মূলধারার গণমাধ্যমগুলো পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। অনুসন্ধানে উক্ত দাবির সত্যতা পাওয়া যায়নি।

অনুসন্ধানের এ পর্যায়ে উক্ত তারকাদের মৃত্যুর বিষয়ে প্রচারিত ভিডিওগুলো পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। সাকিব আল হাসানকে হত্যার দাবিতে প্রচারিত পোস্টে উল্লেখ করা হয়েছে, তিনি এমপি পদে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কারণে রাতে তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।

Screenshot: TikTok

তবে অনুসন্ধানে গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে উক্ত দাবিটির সত্যতা পাওয়া যায়নি। তাছাড়া টিকটকে সাকিব আল হাসান হত্যার তথ্য প্রচারের পরবর্তী সময়ে সাকিবের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে তার নির্বাচনী প্রচারণা কার্যক্রমের ভিডিও প্রচার হতে দেখা যায়।

Screenshot: Shakib Al Hasan Facebook

অর্থাৎ, সাকিব আল হাসান হত্যাকাণ্ডের শিকার হননি বরং তিনি সুস্থ ও স্বাভাবিক অবস্থায় নিয়মিত নির্বাচনী কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছেন।

পরবর্তীতে চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহিকে হত্যা দাবিতে প্রচারিত পোস্টটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, সেখানেও তিনি এমপি পদে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কারণে রাতে তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে শীর্ষক তথ্য উল্লেখ করা হয়।

Screenshot: TikTok

তবে অনুসন্ধানে গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে উক্ত দাবিটির সত্যতা পাওয়া যায়নি। তাছাড়া টিকটকে মাহিয়া মাহির হত্যার তথ্য প্রচারের পরবর্তী সময়ে মাহির ফেসবুক অ্যাকাউন্টে তার নির্বাচনী প্রচারণা কার্যক্রমের ছবি প্রচার হতে দেখা যায়।

Screenshot: Mahiya Mahi Facebook

অর্থাৎ, মাহিয়া মাহি হত্যাকাণ্ডের শিকার হননি বরং তিনি সুস্থ ও স্বাভাবিক অবস্থায় নিয়মিত নির্বাচনী কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছেন।

মূলত, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান মাগুরা-১ আসন থেকে নৌকা প্রতীকে এবং চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি রাজশাহী-১ আসন থেকে ট্রাক প্রতীকে ভোটের যুদ্ধে অংশ নিচ্ছেন। নির্বাচন উপলক্ষে বিভিন্ন তারকাদের বিষয়ে ইন্টারনেটে বিভিন্ন ধরনের তথ্য প্রচারিত হচ্ছে। এরই প্রেক্ষিতে সাম্প্রতিক সময়ে শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটকে Sumon Hosen নামের একটি অ্যাকাউন্ট থেকে সাকিব আল হাসান ও মাহিয়া মাহিকে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের কারণে হত্যা করা হয়েছে শীর্ষক তথ্য প্রচার করা হয়। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত তারকাদের কেউই হত্যাকাণ্ডের শিকার হননি বরং তারা সুস্থ ও স্বাভাবিক অবস্থায় নিয়মিত নির্বাচনী প্রচারণাসহ অন্যান্য কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছেন।

উল্লেখ্য, পূর্বেও একই টিকটক অ্যাকাউন্ট থেকে ৯ তারকার মৃত্যুর গুজব প্রচার করা হলে তা নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান ও চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন দাবিতে টিকটকে প্রচারিত তথ্যগুলো ভুয়া এবং বানোয়াট।

তথ্যসূত্র

সংসদ নির্বাচন: স্বতন্ত্র প্রার্থীর গুলিতে আওয়ামী লীগের দুই প্রার্থী নিহতের গুজব 

গত ০২ জানুয়ারি ইউটিউবে HN tech 75 নামের একটি চ্যানেলে ‘২ নৌকা প্রার্থীকে খুন, আওয়ামী লীগ স্বতন্ত্রের গুলিতে নৌকা প্রার্থী খুন’- শীর্ষক থাম্বনেইলে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়।  

আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার দুইটি সংবাদ প্রতিবেদন এর সাথে চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির একটি ভিডিও ও গণঅধিকার পরিষদের নেতা নুরুল হক নুরের একটি ভিডিও এবং ভিন্ন আরেকটি ঘটনার ভিডিও ক্লিপ যুক্ত করে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

স্বতন্ত্র প্রার্থীর গুলিতে

ইউটিউবে ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সম্প্রতি স্বতন্ত্র প্রার্থীর গুলিতে আওয়ামী লীগের দুই প্রার্থী নিহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি বরং অধিক ভিউ পাওয়ার  আশায় চটকদার থাম্বনেইল ব্যবহার করে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

ভিডিও যাচাই- ১

ভিডিওর শুরুতে একজন সংবাদ উপস্থাপককে সংবাদ পাঠ করতে দেখা যায়। পরবর্তীতে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে যমুনা টেলিভিশনের ইউটিউব চ্যানেলে গত ২ জানুয়ারি “নির্বাচন অফিস লক্ষ্য করে গাজীপুরের শ্রীপুরে গোলাগুলি!” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও সংবাদ প্রতিবেদন পাওয়া যায়। 

উক্ত ভিডিওটিতে থাকা সংবাদ উপস্থাপক এবং পঠিত সংবাদের সাথে আলোচিত ভিডিওটিতে থাকা উপস্থাপক এবং পঠিত সংবাদের মিল রয়েছে। 

Video Comparison: Rumor Scanner 

উক্ত সংবাদ প্রতিবেদন পর্যবেক্ষণ করে জানা যায়, গাজীপুর-৩ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ইকবাল হোসেন সবুজের নির্বাচনী ক্যাম্পের পাশের একটি ইলেকট্রনিক্স দোকানে গুলি করেছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় তার দুইজন সমর্থক আহত হয়েছেন। সোমবার (১ জানুয়ারি) রাতে শ্রীপুর উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের চকপাড়া সলিং মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

আহতরা হলেন, মাওনা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও চকপাড়া গ্রামের বেলাল উদ্দিনের ছেলে সাজেদুল ইসলাম ও চকপাড়া গ্রাম আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল ইসলাম। তবে, এই গোলাগুলির ঘটনায় কেউ নিহত হয়নি। 

ভিডিও যাচাই- ২

ভিডিওটির এই অংশে একজন সংবাদ উপস্থাপককে সংবাদ পাঠ করতে দেখা যায় এবং বেসরকারি টেলিভিশন ‘ইনডিপেনডেন্ট টিভি’র লোগো দেখা যায়। পরবর্তীতে লোগো’র সূত্র ধরে অনুসন্ধানে ‘ইনডিপেনডেন্ট টিভি’র ইউটিউব চ্যানেলে গত ১ জানুয়ারি “সাভারে স্বতন্ত্র প্রার্থীর নির্বাচনী ক্যাম্প ভাঙ চুর, সড়ক অবরোধ” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও সংবাদ প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত ভিডিওতে থাকা সংবাদ উপস্থাপক এবং পঠিত সংবাদের সাথে আলোচিত ভিডিওটিতে থাকা উপস্থাপক এবং পঠিত সংবাদের মিল রয়েছে। 

Video Comparison: Rumor Scanner 

উক্ত সংবাদ প্রতিবেদন পর্যবেক্ষণ করে জানা যায়, ঢাকা-১৯ সাভার আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মুহাম্মদ সাইফুল ইসলামের অস্থায়ী ক্যাম্প ভাংচুর ও তার কর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে নৌকার প্রার্থী ডা. এনামুর রহমানের সমর্থকদের বিরুদ্ধে। এতে আহত হয়েছেন ৫ জন। এ ঘটনায় বাইপাইল-আব্দুল্লাপুর ও নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক অবরোধ করেন শ্রমিকলীগের নেতাকর্মীরা। পরে পুলিশের আশ্বাসে তারা সড়ক অবরোধ প্রত্যাহার করে নেন। ৩১ ডিসেম্বর ইয়ারপুর ইউনিয়নের সোনামিয়া মার্কেট এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। তবে, এখানেও কোনো নিহতের ঘটনা ঘটেনি। 

ভিডিও যাচাই- ৩

আলোচিত ভিডিওটির এই অংশে একজনকে আর্তনাদ করতে দেখা যায় এবং ভিডিওটিতে ‘দেশ টিভি’স লোগো দেখা যায়। সেই লোগো’র সূত্র ধরে অনুসন্ধানে ‘দেশ টিভি’র ইউটিউব চ্যানেলে “বাবাকে না পেয়ে নৌকার সমর্থকের মেয়ের ওপর হামলা” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত ভিডিওটির সাথে আলোচিত ভিডিওটির মিল রয়েছে। 

Video Comparison: Rumor Scanner 

উক্ত ভিডিও পর্যবেক্ষণ করে জানা যায়, রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় আসন্ন নির্বাচনে বাবা নৌকার পক্ষে কাজ করায় আওয়ামী লীগ নেতার কিশোরী মেয়েকে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে। ১ জানুয়ারি বিকেলে উপজেলার হামিরকুৎসা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহত কিশোরীকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এখানেও কোনো নিহতের ঘটনা ঘটেনি। 

ভিডিও যাচাই- ৪

এই অংশে চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির সাথে একজনের বাকবিতণ্ডার দৃশ্য দেখা যায় এবং ভিডিওটিতে ‘সময় টিভি’র লোগো দেখা যায়। লোগো’র সূত্র ধরে অনুসন্ধানে ‘সময় টিভি’র ইউটিউব চ্যানেলে গতবছরের ৩১ ডিসেম্বর “ভোট চাইতে গিয়ে যুব মহিলা লীগ নেত্রীর তোপের মুখে মাহি” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত ভিডিওটির সাথে আলোচিত ভিডিওটির মিল রয়েছে। 

Video Comparison: Rumor Scanner 

উক্ত ভিডিও পর্যবেক্ষণ করে জানা যায়, মাহিয়া মাহি রাজশাহী-১ আসনে ট্রাক প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়াই করছেন। নির্বাচনী এলাকায় ভোট চাইতে গিয়ে গত ৩১ ডিসেম্বর এক যুবলীগ নেত্রীর তোপের মুখে পড়েন মাহিয়া মাহি। সেই সময়কার ভিডিও এটি। এখানেও কোনো গোলাগুলি বা নিহতের ঘটনা ঘটেনি। 

ভিডিও যাচাই- ৫

আলোচিত ভিডিওটির সর্বশেষ অংশে গণঅধিকার পরিষদের নেতা নুরুল হক নুরকে বক্তব্য দিতে দেখা যায়। সেই বক্তব্যের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এর ইউটিউব চ্যানেলে গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর “ডামি ভোটের প্রতিবাদে নজরুলের গানে গানে ফ্যাসিবাদকে লাল কার্ড প্রদর্শন” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি লাইভ ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত ভিডিওটিতে নুরুল হক নুরের দেওয়া বক্তব্যের সাথে আলোচিত ভিডিওটিতে থাকা নুরুল হক নুরের বক্তব্যের মিল রয়েছে। 

Video Comparison: Rumor Scanner 

৩৬ মিনিট ২৭ সেকেন্ডের ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে জানা যায়, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনগণকে ভোট বর্জনের আহ্বান করে গণঅধিকার পরিষদের একাংশ গণসংযোগ করে। সেই গণসংযোগে নুরুল হক নুর বর্তমান সরকার এবং আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতাদের নিয়ে সমালোচনা করেন। সমালোচনা করে দেওয়া বক্তব্যের ভিডিও এটি। লাইভ ভিডিওটির ৭ মিনিট ৫০ সেকেন্ড থেকে নুরুল হক নুর বক্তব্য দেওয়া শুরু করেন। দীর্ঘ সেই বক্তব্যের ভিডিও অংশ কেটে আলোচিত ভিডিওটিতে ব্যবহার করা হয়েছে। 

এছাড়া, স্বতন্ত্র প্রার্থীর গুলিতে আওয়ামী লীগের কোনো প্রার্থী নিহত হয়েছেন কি না সে বিষয়ে অনুসন্ধান করে রিউমর স্ক্যানার টিম। অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে গণমাধ্যম সূত্রে এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

তবে, গত বছরের ২৫ ডিসেম্বর ডেইলি স্টারে “নৌকা-স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ ৩, আটক ২” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। 

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, টাঙ্গাইল সদর উপজেলার বাঘিল ইউনিয়নের যুগনীতে নৌকা ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে ছররা গুলিবিদ্ধ হয়ে কমপক্ষে তিনজন আহত হয়েছেন। ২৪ ডিসেম্বর রাত ১১টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। আহতদের মধ্যে ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রোকন মিয়া এবং যুবলীগ কর্মী এমদাদুল ও সিয়াম আছেন। তবে, নিহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি। 

এছাড়া, গত ৩ জানুয়ারি প্রথম আলো’র ওয়েবসাইটে “আট স্থানে নির্বাচনী সংঘাতে আহত ৬৩, চার ক্যাম্পে আগুন” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। এই প্রতিবেদন থেকেও দেশের বিভিন্ন স্থানে হামলার ঘটনায় আহতের তথ্য পাওয়া গেলেও নিহতের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

মূলত, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী ৭ জানুয়ারি। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন জায়গায় হামলা, গোলাগুলি এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটলেও নিহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি। এরইমধ্যে ইন্টারনেটে স্বতন্ত্র প্রার্থীর গুলিতে আওয়ামী লীগের দুই প্রার্থী নিহত হয়েছেন দাবিতে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার কয়েকটি সংবাদ প্রতিবেদন এবং ভিডিও ক্লিপ ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় যুক্ত করে অধিক ভিউ পাওয়ার আশায় চটকদার থাম্বনেইল ব্যবহার করে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে। 

সুতরাং, স্বতন্ত্র প্রার্থীর গুলিতে আওয়ামী লীগের দুই প্রার্থী নিহত হয়েছেন- শীর্ষক দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

নির্বাচনের কারণে ৫-৮ জানুয়ারি সাধারণ ছুটির ঘোষণা দাবিতে ভুয়া প্রজ্ঞাপন ফেসবুকে 

গত ০২ জানুয়ারি থেকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে ০৫ জানুয়ারি হতে ০৮ জানুয়ারি, ২০২৪ পর্যন্ত ৪ দিন সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে দাবিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব সোনিয়া হাসান স্বাক্ষরিত একটি প্রজ্ঞাপনের ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়তে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

এই প্রজ্ঞাপন এতটাই ছড়িয়েছে যে এটি রীতিমতো প্রিন্ট করেও প্রচার করা হচ্ছে। 

এ সংক্রান্ত ফেসবুকের কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে ৫-৮ জানুয়ারি চারদিন সরকারি ছুটি ঘোষণার দাবিতে প্রচারিত প্রজ্ঞাপনটি আসল নয় বরং আগামী ০৭ জানুয়ারির নির্বাচন উপলক্ষ্যে কেবল ভোটের দিনই সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি প্রজ্ঞাপন ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে সম্পাদনা করে উক্ত দাবির প্রজ্ঞাপনটি তৈরি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে গত ২৮ ডিসেম্বর (২০২৩) দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে ঘোষণাকৃত সাধারণ সরকারি ছুটির মূল প্রজ্ঞাপনটি খুঁজে পাওয়া যায়। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, নির্বাচন উপলক্ষ্যে কেবল ভোটের দিন অর্থাৎ ৭ জানুয়ারি সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।

উক্ত প্রজ্ঞাপনটির সাথে আলোচ্য দাবিতে প্রচারিত প্রজ্ঞাপনটির তুলনামূলক বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, দাবিকৃত প্রজ্ঞাপনটিতে স্মারক নম্বর, তারিখ, অনুলিপি পাঠানোর ঠিকানায় অসঙ্গতির পাশাপাশি একাধিক বানান ভুল রয়েছে। 

Image comparison: Rumor Scanner

মূল প্রজ্ঞাপনে দুইবার স্মারক নম্বর এবং দুইবার তারিখ লিখা রয়েছে। অন্যদিকে, ভুয়া প্রজ্ঞাপনে একবার স্মারক নম্বর এবং কোনো তারিখ উল্লেখ নেই। মূল প্রজ্ঞাপনে অনুলিপি পাঠানোর ১৭টি ঠিকানা উল্লেখ করা হলেও ভুয়া প্রজ্ঞাপনে কেবল ৮টি ঠিকানা উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া ভুয়া প্রজ্ঞাপনে ‘প্রজ্ঞাপন’ বানানই ভুল। এসব বিষয় ছাড়াও ভুয়া প্রজ্ঞাপনে নতুন কিছু শব্দ জুড়ে দেওয়া হয়েছে। মূল প্রজ্ঞাপনে ছুটি অবহেলা করলে কোনো শাস্তির কথা উল্লেখ না করা হলেও ভুয়া প্রজ্ঞাপনে ছুটি অবহেলা করলে আর্থিক জরিমানাসহ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। 

পরবর্তীতে বিষয়টি অধিকতর নিশ্চিতের জন্য প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষরকারী জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব সোনিয়া হাসানের সাথে যোগাযোগ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। তিনি জানান, “আমাদের ওয়েবসাইটে যেটা দেওয়া আছে সেটাই সঠিক। এটা ভুয়া প্রজ্ঞাপন।”

রিউমর স্ক্যানার টিমকে বক্তব্য দেওয়ার পরই উক্ত ভুয়া প্রজ্ঞাপনের বিষয়ে সতর্ক করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে এ সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে।

মূলত, আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে কেবল ভোটের দিন অর্থাৎ ৭ জানুয়ারি সাধারণ সরকারি ছুটি ঘোষণা করে গত ২৮ ডিসেম্বর (২০২৩) প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি সেই প্রজ্ঞাপনটি প্রযুক্তির সহায়তায় এডিট করে তাতে ৭ জানুয়ারির স্থলে ৫ জানুয়ারি হতে ৮ জানুয়ারি চারদিনের নির্বাচনকালীন সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে দাবি করে একটি তথ্য ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে। উক্ত এডিটেড প্রজ্ঞাপনে স্মারক নম্বর, তারিখ, অনুলিপি পাঠানোর ঠিকানায় অসঙ্গতির পাশাপাশি একাধিক বানান ভুল লক্ষ্য করা গেছে। 

প্রসঙ্গত, নির্বাচনের কারণে আগামী ৫ জানুয়ারি দুপুর ১২টা থেকে ৮ জানুয়ারি দুপুর ১২টা পর্যন্ত মোটরসাইকেল চলাচলের অনুমতি দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। 

সুতরাং, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে ৫-৮ জানুয়ারি সাধারণ ছুটি ঘোষণার দাবিতে প্রচারিত প্রজ্ঞাপনটি বিকৃত বা এডিটেড।

তথ্যসূত্র

বিএনপির ও জামায়াতের গণভবন দখলে নেওয়ার ভুয়া দাবি ইউটিউবে 

সম্প্রতি, “গণভবনে ভাংচুর, সেনা পুলিশকে পিটিয়ে গণভবন দখলে নিলো জামায়াত বিএনপির নেতাকর্মীরা” শীর্ষক শিরোনাম এবং “লাঠি মিছিল নিয়ে গণভবনে ভাংচুর ভয়ে পদত্যাগের ঘোষণা” শীর্ষক থাম্বনেইলে ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম ইউটিউবে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে। 

গণভবন দখলে

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, গণভবনে ভাংচুর করে বিএনপি – জামায়াত নেতাকর্মীদের গণভবন দখলে নেওয়া কিংবা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের ঘোষণা সংক্রান্ত কোনো ঘটনা ঘটেনি বরং কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই অধিক ভিউ পাওয়ার আশায় চটকদার শিরোনাম এবং থাম্বনেইল ব্যবহার করে আলোচিত ভিডিওটি প্রচার করা হয়েছে।

আলোচিত ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে বিএনপির ইউটিউব চ্যানেলে ২০২২ সালের ২৮ আগস্ট “ময়মনসিংহ মুক্তাগাছায় আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলা পরবর্তী নেতাকর্মীদের প্রতিরোধ” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিওটিই আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটিতে যুক্ত করে প্রচার করা হয়েছে। 

Video Comparison : Rumor Scanner

ভিডিওটির বিস্তারিত বর্ণনা থেকে জানা যায়, সেদিন জ্বালানী তেলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি, বিদ্যুতের নজিরবিহীন লোডশেডিং, গণপরিবহনের ভাড়া বৃদ্ধি, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি, ভোলায় পুলিশের গুলিতে নূরে-আলম ও আব্দুর রহিম-কে নির্মমভাবে হত্যার প্রতিবাদে ময়মনসিংহ মুক্তাগাছায় বিএনপি’র বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের ভিডিও এটি। 

এছাড়া অনুসন্ধানে গণমাধ্যম কিংবা নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্রে গণভবনে ভাংচুর, বিএনপি – জামায়াতের গণভবন দখলে নেওয়া কিংবা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ সংক্রান্ত কোনো তথ্য বা সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।  

মূলত, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগ এবং সেনাবাহিনীর অধীনে নির্বাচন করার দাবিতে বিএনপি-জামায়াতসহ আওয়ামী লীগ সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো দীর্ঘদিন ধরে রাজপথে আন্দোলন করে আসছে। এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ইন্টারনেটে নানা ধরনের তথ্য প্রচার হয়ে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় ইন্টারনেটে “গণভবনে ভাং*চু*র, সেনা পুলিশকে পি*টি*য়ে গণভবন দখলে নিলো জামায়াত বিএনপির নেতাকর্মীরা” শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়। ভিডিওটি নিয়ে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০২২ সালে ময়মনসিংহ মুক্তাগাছায় বিএনপি’র বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের একটি ভিডিওর সাথে চটকদার থাম্বনেইল ও শিরোনাম যুক্ত করে কোনোপ্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই আলোচিত দাবিগুলো প্রচার করা হয়েছে। এছাড়া, গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে দাবিগুলোর সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, গণভবন ভাংচুর করে বিএনপি – জামায়াত নেতাকর্মীদের গণভবন দখলে নেওয়া এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যগুলো মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

জাতিসংঘ বাংলাদেশের নির্বাচন স্থগিতের ঘোষণা দেয়নি

সম্প্রতি, নির্বাচন বন্ধ করতে জাতিসংঘে চিঠি পাঠালো বিএনপি, নির্বাচন স্থগিত করার ঘোষণা জাতিসংঘের- শীর্ষক শিরোনামে এবং থাম্বনেইলে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। 

ভিডিওটিতে দাবি করা হয়েছে, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বন্ধে জাতিসংঘে বিএনপি চিঠি পাঠিয়েছে এবং জাতিসংঘ নির্বাচন বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে।

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বিএনপি জাতিসংঘে চিঠি দিলেও তার প্রেক্ষিতে জাতিসংঘ নির্বাচন স্থগিত করার কোনো ঘোষণা দেয়নি বরং অধিক ভিউ পাবার আশায় চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ভিডিওটির শুরুতে সাংবাদিক মোস্তফা ফিরোজের বক্তব্য দেওয়ার একটি ভিডিও রয়েছে। পরবর্তীতে সাংবাদিক মঞ্জুরুল আলম পান্নার বক্তব্য দেওয়ার ভিডিও দেখা যায়। এরপর কালবেলা’র একটি ভিডিও প্রতিবেদন এবং সর্বশেষ দেশীয় অনলাইন গণমাধ্যম জাগো নিউজের একটি ভিডিও সংবাদ প্রতিবেদন প্রচার করতে দেখা যায়। 

ভিডিও যাচাই- ১

আলোচিত ভিডিওটির এই অংশে সাংবাদিক মোস্তফা ফিরোজকে বক্তব্য দিয়ে দেখা যায়। পরবর্তীতে অনুসন্ধানে Voice Bangla নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলে গতবছরের ৩১ ডিসেম্বর “নির্বাচন ঠেকাতে জাতিসংঘ ও বিদেশিদের হস্তক্ষেপ চেয়ে বিএনপির চিঠি” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত ভিডিওটিতে সাংবাদিক মোস্তফা ফিরোজের দেওয়া বক্তব্যের সাথে আলোচিত ভিডিওটিতে থাকা বক্তব্যের  মিল রয়েছে। 

Video Comparison: Rumor Scanner 

উক্ত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, সাংবাদিক মোস্তফা ফিরোজ বিএনপি’র পক্ষ থেকে জাতিসংঘে দেওয়া চিঠি নিয়ে আলোচনা করছেন। 

গণমাধ্যম সূত্রে জানা যাচ্ছে (, , ),  দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ‘একতরফা’ উল্লেখ করে এবং রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বিএনপি তাদের বক্তব্য তুলে ধরে জাতিংঘের মহাসচিবের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে। ৩১ ডিসেম্বর (২০২৩) দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত চিঠিটি নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে পাঠানো হয়। 

ভিডিও যাচাই- ২

আলোচিত ভিডিওটির এই অংশে সাংবাদিক মঞ্জুরুল আলম পান্নাকে বক্তব্য দিতে দেখা যায়। সেই বক্তব্যের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে MANCHITRO নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলে গতবছরের ৩১ ডিসেম্বর “বাংলাদেশে কী ধরণের ব্যবস্থা নেয়ার সম্ভাবনা জাতিসংঘের?” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত ভিডিওটিতে সাংবাদিক মঞ্জুরুল আলম পান্নার দেওয়া বক্তব্যের সাথে আলোচিত ভিডিওটিতে থাকা বক্তব্যের  মিল রয়েছে।

Video Comparison: Rumor Scanner 

উক্ত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, সাংবাদিক মঞ্জুরুল আলম পান্না বিএনপি’র পক্ষ থেকে জাতিসংঘে দেওয়া চিঠি নিয়ে আলোচনা করছেন। এছাড়া, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে জাতিসংঘের অবস্থান নিয়েও তিনি আলোচনা করেন। 

তবে, সাংবাদিক মঞ্জুরুল আলম পান্নাও জাতিসংঘ নির্বাচন বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে সংক্রান্ত কোনো তথ্য উল্লেখ করেননি।

ভিডিও যাচাই- ৩

এই অংশে কালবেলা’র লোগো সম্বলিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন দেখানো হয়। পরবর্তীতে অনুসন্ধানে কালবেলা’র ইউটিউব চ্যানেলে গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর “জাতিসংঘে পাঠানোে বিএনপির চিঠিতে কী আছে” শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও প্রতিবেদন (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ভিডিও প্রতিবেদনটির সাথে  আলোচিত ভিডিওটিতে থাকা ভিডিও প্রতিবেদনটির মিল রয়েছে।

Video Comparison: Rumor Scanner 

৩ মিনিট ৩৫ সেকেন্ডের ভিডিও প্রতিবেদনটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এখানেও বিএনপি’র পক্ষ থেকে দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে পাঠানো চিঠির প্রেক্ষিতে করা সংবাদ প্রতিবেদন এটি। 

এই প্রতিবেদনেও জাতিসংঘ নির্বাচন বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে সংক্রান্ত কোনো তথ্য উল্লেখ হয়নি। 

ভিডিও যাচাই- ৪

এই অংশে দেশীয় অনলাইন গণমাধ্যম জাগো নিউজের লোগো সম্বলিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন দেখানো হয়। পরবর্তীতে অনুসন্ধানে জাগো নিউজের ইউটিউব চ্যানেলে গত ১ জানুয়ারি “নির্বাচন ঠেকাতে জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ চেয়ে বিএনপির চিঠি” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি সংবাদ প্রতিবেদন (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত ভিডিও প্রতিবেদনটির সাথে আলোচিত ভিডিওটিতে থাকা ভিডিও প্রতিবেদনটির মিল রয়েছে।

Video Comparison: Rumor Scanner 

উক্ত সংবাদ প্রতিবেদন পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এখানেও শুধু বিএনপি’র পক্ষ থেকে জাতিসংঘে চিঠি পাঠানোর কথা বলা হয়েছে। 

এছাড়া, জাতিসংঘ নির্বাচন বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে কি না এবিষয়ে অনুসন্ধান করে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম এ-সংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। পাশাপাশি জাতিসংঘের ফেসবুক পেজ, ওয়েবসাইট এবং ইউটিউব চ্যানেলেও এ-সংক্রান্ত কিছু পাওয়া যায়নি। 

মূলত, আগামী ৭ জানুয়ারি বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানিয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) সহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল এই নির্বাচন বয়কটের ঘোষণা দিয়েছে। গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর বিএনপি’র পক্ষ থেকে বিরোধী দলবিহীন ‘একতরফা’ নির্বাচন উল্লেখ করে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন দেশের দূতাবাসে চিঠি দেওয়ার খবর বেরোয় গণমাধ্যমে। এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে “নির্বাচন বন্ধ করতে জাতিসংঘে চিঠি পাঠালো বিএনপি, নির্বাচন স্থগিত করার ঘোষণা জাতিসংঘের” শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়। তবে অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত দাবিটি সঠিক নয়। অধিক ভিউ পাবার আশায় সাংবাদিক মোস্তফা ফিরোজ এবং সাংবাদিক মঞ্জুরুল আলম পান্নার জাতিসংঘসহ বিভিন্ন দেশের দূতাবাসে দেওয়া চিঠির বিষয়ে বক্তব্য দেওয়ার ভিডিও এবং একই বিষয়ে কালবেলা ও জাগো নিউজের করা সংবাদ প্রতিবেদনকে যুক্ত করে চটকদার থাম্বনেইল ব্যবহার করে কোনোপ্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে,  জাতিসংঘ নির্বাচন বন্ধের কোনো ঘোষণা দেয়নি। এছাড়া, আন্তর্জাতিক ও দেশীয় গণমাধ্যমে এ সংক্রান্ত কোনো তথ্যও পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, বিএনপি জাতিসংঘে চিঠি দিলেও তার প্রেক্ষিতে জাতিসংঘ নির্বাচন বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে শীর্ষক একটি দাবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র