Home Blog Page 549

সেনাবাহিনী কর্তৃক নির্বাচনের তফসিল বাতিল করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা জারির ভুয়া তথ্য প্রচার

গত ১৯ নভেম্বর ইউটিউবে Sabai Shiki নামের একটি চ্যানেলে ‘তফসিল বাতিল করে জরুরি ভিত্তিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার জারি করলো সেনাবাহিনী, ভয়ে শেখ হাসিনা’ শীর্ষক শিরোনাম ও ‘তফসিল বাতিল করলো সেনাবাহিনী জরুরী তত্ত্বাবধায়ক সরকার জারি’ শীর্ষক থাম্বনেইল ব্যবহার করে ভিডিও ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।

তফসিল বাতিল

ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদন প্রকাশ অবধি ভিডিওটি প্রায় ৩ লক্ষ ৭৬ হাজার বার দেখা হয়েছে। এছাড়া ভিডিওটিতে প্রায় ৭ হাজার ৮ শত লাইক এবং ২৭৪টি মন্তব্য করা হয়েছে।

পরবর্তীতে একই ভিডিওটি বেশ কিছু ইউটিউব চ্যানেল থেকে প্রচার করা হয়। পোস্টগুলো দেখুন  এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত ভিডিওটি লিংক শেয়ার করে ফেসবুকে প্রচারিত একটি পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সেনাবাহিনী কর্তৃক আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল বাতিল করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা জারি করার দাবিটি সঠিক নয় বরং অধিক ভিউ পাবার আশায় চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিও পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এটি ভিন্ন ভিন্ন কয়েকটি ঘটনার ভিডিও ক্লিপ এবং ছবি নিয়ে তৈরি একটি ভিডিও প্রতিবেদন, যেখানে সেনাবাহিনীর সদস্যদের পুরোনো কিছু কার্যক্রমের দৃশ্য দেখানো হয়।

ভিডিওটি’র সংবাদপাঠ অংশে বলা হয়, “এবার নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে মুখ খুললেন এক সেনা কর্মকর্তা। তিনি বলেন, অবিলম্বে তফসিল বাতিল করে নিরপেক্ষ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। নইলে জনগনের স্বার্থে যেকোনো পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত সেনাবাহিনী। এজন্য সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের বিশেষ আহ্বান জানান।”

উক্ত বিষয়গুলো নিয়ে প্রাসঙ্গিক একাধিক কি ওয়ার্ড সার্চ করেও গণমাধ্যম কিংবা অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে দাবিগুলোর সত্যতা পাওয়া যায়নি। তাছাড়া, ভিডিওটি’র শিরোনাম এবং থাম্বনেইলে উল্লেখিত তথ্যের সাথে বিস্তারিত সংবাদপাঠ অংশের অমিল রয়েছে। শিরোনাম এবং থাম্বনেইলে সেনাবাহিনী কর্তৃক নির্বাচনের তফসিল বাতিল এবং জরুরি ভিত্তিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার জারি করার বিষয়টি উল্লেখ করা হলেও সেবিষয়ে বিস্তারিত সংবাদপাঠ অংশে কিছুই বলা হয়নি। এমনকি সেখানে সেনাবাহিনীর কোনো সদস্যের এসংক্রান্ত কোনো ঘোষণার ভিডিও ক্লিপও দেখানো হয়নি।

এছাড়াও, ২০১১ সালে বাংলাদেশে আপিল বিভাগ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সম্পর্কিত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে। পরবর্তীতে এই ব্যবস্থা আর পুর্ণবহাল করা হয়নি। ফলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা জারি করার বিষয়টি সেনাবাহিনীর আওতার বাইরে।

পাশাপাশি, গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে এখন পর্যন্ত সেনাবাহিনীর কর্তৃক আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল বাতিল কিংবা সেনাবাহিনী কর্তৃক তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা জারির দাবির সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

অর্থাৎ, উপরোক্ত বিষয়গুলো পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, আলোচিত ভিডিওটিতে প্রচারিত তথ্যগুলো সঠিক নয়।

মূলত, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন করার দাবিতে বিএনপি-জামায়াতসহ আওয়ামী লীগ সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো দীর্ঘদিন ধরে রাজপথে আন্দোলন করে আসছে। এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা ধরনের ভুল তথ্য প্রচার হয়ে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৯ নভেম্বর Sabai Sikhi নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ‘তফসিল বাতিল করে জরুরি ভিত্তিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার জারি করলো সেনাবাহিনী, ভয়ে শেখ হাসিনা’ শীর্ষক শিরোনাম ও ‘তফসিল বাতিল করলো সেনাবাহিনী জরুরী তত্ত্বাবধায়ক সরকার জারি’ শীর্ষক থাম্বনেইল ব্যবহার করে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়। পরবর্তীতে উক্ত ভিডিওটি অন্যান্য ইউটিউব চ্যানেলেও ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওটি নিয়ে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে অধিক ভিউ পাবার আশায় ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার কয়েকটি ভিডিও ক্লিপ ও ছবি যুক্ত করে তাতে চটকদার থাম্বনেইল ও শিরোনাম ব্যবহার করে কোনোপ্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। এছাড়া, গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে বিষয়টির সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

প্রসঙ্গত, আগামী ৭ জানুয়ারি রোববার ভোটগ্রহণের দিন রেখে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। গত ১৫ নভেম্বর সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া এক ভাষনে এই ঘোষণা দেন তিনি।

উল্লেখ্য, পূর্বেও চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে বিভিন্ন ভুয়া তথ্য প্রচারের প্রেক্ষিতে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কয়েকটি প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, সেনাবাহিনী কর্তৃক আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল বাতিল করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা জারির দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

পুলিশ ও সেনাবাহিনী কর্তৃক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পদত্যাগের নির্দেশ দেওয়ার গুজব 

গত ১৬ নভেম্বর Sabai Shiki নামের একটি ইউটিউব চ্যানেল হতে ‘হাসিনার কথা শুনছে না পুলিশ-সেনাবাহিনী, দ্রুত পদত্যাগের নির্দেশ’ শীর্ষক থাম্বনেইল এবং ‘হাসিনাকে পদত্যাগের নির্দেশ দিলো পুলিশ ও সেনাবাহিনী, ভয়ে আ.লীগ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধিনেই নির্বাচন’ শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।

পদত্যাগের নির্দেশ

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)

এই প্রতিবেদন প্রকাশ অবধি ভিডিওটি ৪ লক্ষ ৩৮ হাজার ৯ শত ৩৭ বার দেখা হয়েছে। ভিডিওতে লাইক দেওয়া হয়েছে হয়েছে ৫ হাজার ১ শত সংখ্যক। ভিডিওটির মন্তব্যঘর ঘুরে অনেক আলোচিত দাবির প্রেক্ষিতে নেটিজেনদের মতামত জানাতে দেখা গেছে।

এছাড়া অন্য একটি ইউটিউব চ্যানেল থেকেও একই ভিডিওটি প্রচার করা হয়েছে। ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পুলিশ ও সেনাবাহিনী কর্তৃক পদত্যাগের নির্দেশ দেওয়ার দাবিটি সঠিক নয় বরং চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, সেখানে ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার পুরোনো দুইটি ভিডিও ক্লিপ যুক্ত করা হয়েছে।

ভিডিও যাচাই ০১

প্রথম ভিডিও ক্লিপের বিষয়ে জানতে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে ‘maksud un nabi’ নামক ইউটিউব চ্যানেলে ২১৪ সালের ২৬ জুন “Narayanganj asp Bashir disclose Shamim Osman” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Comparison: Rumor Scanner

ভিডিও থেকে জানা যায়, এটি ২০১৪ সালের ২৬ জুন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে উপনির্বাচন চলাকালীন সময়ের ভিডিও। নির্বাচনের দিন নারায়ণগঞ্জের তৎকালীন সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. বশিরউদ্দীন সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের বিরুদ্ধে তার সাথে অশোভন আচরণ এবং তাকে হুমকি প্রদানের অভিযোগ তোলেন।

উক্ত ঘটনা নিয়ে সেসময় প্রথম আলো’র ওয়েবসাইটেও প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

ভিডিও যাচাই ০২

রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে বেসরকারি মূলধারার টিভি চ্যানেল সময় টিভি’র ইউটিউব চ্যানেলে গত ৪ সেপ্টেম্বর “সফলভাবে নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করছে পুলিশ: আইজিপি” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদ প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Comparison: Rumor Scanner

উক্ত প্রতিবেদনে প্রচারিত পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন এর বক্তব্যের সাথে আলোচিত ভিডিওতে প্রচারিত আব্দুল্লাহ আল-মামুন বক্তব্যের হবহু মিল পাওয়া যায়। 

পরবর্তীতে কি-ওয়ার্ড সার্চে একই দিনে দেশিয় সংবাদ সংস্থা বাসস এর ওয়েবসাইটে “আগামী দিনেও যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রস্তুত পুলিশ : আইজিপি” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদ প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন সিনিয়র সচিবের পদমর্যাদা পেয়ে গত ৪ সেপ্টেম্বর দুপুরে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নোত্তরে এসব কথা বলেন।

অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিওটিতে থাকা এই দুই ভিডিও ক্লিপের কোনটিতেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পুলিশ ও সেনাবাহিনী পদত্যাগের নির্দেশ দেওয়ার কোনো তথ্য জানানো হয়নি।

মূলত, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে  সামনে রেখে শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন করার দাবিতে বিএনপি-জামায়াতসহ আওয়ামী লীগ সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো দীর্ঘদিন ধরে রাজপথে আন্দোলন করে আসছে। এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা ধরনের তথ্য প্রচার প্রচার হয়ে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি ‘হাসিনার কথা শুনছে না পুলিশ-সেনাবাহিনী, দ্রুত পদত্যাগের নির্দেশ’ শীর্ষক থাম্বনেইল এবং হাসিনাকে পদত্যাগের নির্দেশ দিলো পুলিশ ও সেনাবাহিনী, ভয়ে আ.লীগ শীর্ষক শিরোনামে ইউটিউবে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। তবে অনুসন্ধানে দেখা যায়, উক্ত দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে অধিক ভিউ পাবার আশায় পুরোনো ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার ভিডিও ক্লিপ যুক্ত করে তাতে চটকদার থাম্বনেইল ও শিরোনাম ব্যবহার করে কোনোপ্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। এছাড়া, গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে আলোচিত দাবির সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, পূর্বেও চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে বিভিন্ন ভুয়া তথ্য প্রচারের প্রেক্ষিতে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কয়েকটি প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পুলিশ ও সেনাবাহিনী পদত্যাগের নির্দেশ দিয়েছে দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

বিশ্বকাপ ফাইনালে হেরে যাওয়ায় ভারতের সমর্থকদের টিভি ভাঙচুরের দৃশ্য দাবিতে প্রচারিত ছবিটি পুরোনো

গতকাল (১৯ নভেম্বর), আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপের (পুরুষ) ফাইনাল ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরেছে ভারত। এই পরাজয় মানতে না পেরে ভারতীয় ক্রিকেট সমর্থকরা টিভি ভাঙচুর করেছেন দাবিতে একটি ছবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। 

টিভি

উক্ত ছবি ব্যবহার করে প্রচারিত গণমাধ্যমের প্রতিবেদন দেখুন বিডিক্রিকটাইম (ফেসবুক) এবং একুশে সংবাদ। 

একই দাবিতে গণমাধ্যমের ইউটিউব চ্যানেলে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

তাছাড়া, একই ছবি ব্যবহার করে উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ছবিটি গতকাল অর্থাৎ ১৯ নভেম্বরের ফাইনাল পরবর্তী সময়ের নয় বরং এটি ২০১৭ সালে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে পাকিস্তানের কাছে ভারতের হেরে যাওয়ার পরে ভারতের সমর্থকদের টিভি ভাঙচুরের ঘটনার ছবি।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ছবিটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম দেখেছে, এই ছবিটির বিষয়ে পূর্বেও ফ্যাক্টচেক প্রকাশ করা হয়েছিল। 

গেল বছরের সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, আলোচিত ছবিটি ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে ভারত পাকিস্তানের কাছে হেরে যাওয়ার পর ভারতের আহমেদাবাদের পালডিতে ক্রিকেট ভক্তরা ক্ষিপ্ত হয়ে কয়েকটি টিভি সেট ভেঙে ফেলার দৃশ্য।  

একই ছবি ভিন্ন দাবিতে একই বছরের (২০২২) নভেম্বরেও প্রচার করা হলে সেসময়ও ফ্যাক্টচেক প্রকাশ করেছিল রিউমর স্ক্যানার। 

মূলত, গতকাল (১৯ নভেম্বর) আইসিসি ম্যানস্ ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার কাছে পরাজিত হয় ভারত। এই হার মানতে না পেরে ভারতীয় ক্রিকেট সমর্থকরা টিভি ভাঙচুর করেছে দাবিতে একটি ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। কিন্তু রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যাচ্ছে, ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। ২০১৭ সালে  চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে ভারত পাকিস্তানের কাছে হারার পর ভারতের ক্রিকেট ভক্তরা ক্ষিপ্ত হয়ে কয়েকটি টিভি সেট ভেঙে ফেলে। সেসময়কার দৃশ্য এটি।

সুতরাং, ২০১৭ সালে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে পাকিস্তানের কাছে ভারতের হেরে যাওয়ার পরে ভারতে টিভি ভাঙচুরের ঘটনার পুরোনো ছবিকে সদ্য সমাপ্ত ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার সাথে ভারতের পরাজয়ের পর ভারতীয় ক্রিকেট সমর্থকদের টিভি ভাঙচুরের ঘটনার দৃশ্য দাবিতে ইন্টারনেটে করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র 

পুলিশ নয়, বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনায় ধারণকৃত এই ভিডিওতে প্রদর্শিত ব্যক্তিরা যুবদলের সদস্য

সম্প্রতি, ‘বাসে আগুন দেয় আওয়ামী পুলিশ লীগ আর নাম হয় বিএনপির’ শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটকে প্রচার করা হয়েছে।

বাসে আগুন

টিকটকে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রচারিত ভিডিওতে বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনায় ধারণকৃত দৃশ্যে গোল চিহ্নিত ব্যক্তি পুলিশ সদস্য নন বরং ভিডিওতে গোল চিহ্নিত যে ব্যক্তিকে বাসে আগুন লাগাতে দেখা যাচ্ছে তার নাম মহিউদ্দিন হৃদয়। তিনি রমনা থানাধীন ১৯ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক। বাসে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার পরবর্তীতে সময়ে এই ব্যক্তিকে  জ্যাকেট বা ভেস্ট পরিহিত যে ব্যক্তির সঙ্গে দেখা গিয়েছে তিনি ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম নয়ন। 

এবিষয়ে অনুসন্ধানে মূলধারার গণমাধ্যম কালবেলা’র ফেসবুক পেজে গত ০৫ নভেম্বর ‘যেভাবে বাসে আগুন লাগায় যুবদল নেতা’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Kalbela Facebook

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশ পণ্ড হওয়ার পর বাসে পেট্রোল ঢেলে আগুন দেওয়ার ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম নয়ন এবং তার সহযোগী রমনা থানা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মহিউদ্দিন হৃদয়কে শনাক্ত করে ডিবি পুলিশ।

এই ভিডিও প্রতিবেদনে দেখানো উক্ত দৃশ্যের সাথে আলোচিত ভিডিওটির মিল পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner
Video Comparison by Rumor Scanner

পরবর্তীতে মূলধারার অনলাইন সংবাদমাধ্যম বাংলা ট্রিবিউনের ওয়েবসাইটে “গাড়িতে আগুন দেওয়া সেই ভেস্ট পরা যুবক শনাক্ত” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে একই দিনে একই পোশাকে তোলা যুবদল নেতা নয়নের একটি স্পষ্ট ছবি খুঁজে পাওয়া। 

Image Comparison by Rumor Scanner

উক্ত ছবিতে নয়নের পাশে হলুদ টি শার্ট পরিহিত এক ব্যক্তিকে দেখা যাচ্ছে, যিনি বাসে আগুনের ঘটনায় ধারণকৃত একই ভিডিওতে নয়নের সাথেই ছিলেন।

এছাড়াও, মূলধারার ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম যমুনা টিভি’র ইউটিউব চ্যানেলে গত ০৫ নভেম্বর ‘বাসে আগুন দেয়া সেই যুবদল নেতার জবানবন্দি; যেভাবে আগুন দেয়’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Jamuna TV

উক্ত প্রতিবেদন থেকেও গত ২৮ নভেম্বর কাকরাইলে বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনায় একই তথ্য জানা যায়।

অর্থাৎ, উপরোক্ত বিষয়গুলো পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, প্রচারিত ভিডিওতে বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনায় পুলিশ নয় বরং যুবদলের সদস্যরা জড়িত ছিল।

পাশাপাশি, মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে গত ২৮ অক্টোবর কোথাও বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনায় পুলিশের জড়িত থাকার প্রমাণ সম্পর্কিত কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মূলত, গত ২৮ অক্টোবর পুলিশের সাথে বিএনপি নেতা কর্মীদের সংঘর্ষে বিএনপির মহাসমাবেশ পণ্ড হয়ে যাওয়ার পর রাজধানীর কাকরাইলে ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের সামনে একদল লোক একটি বাসে আগুন দেয়। ঘটনা পরবর্তী সময়ে ঐ ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ঘটনায় জড়িত রমনা থানাধীন ১৯নং ওয়ার্ড যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মহিউদ্দিন হৃদয়কে আটক করে ডিবি পুলিশ। পরবর্তীতে তার দেওয়া তথ্যমতে ঐ ভিডিওতে ভেস্ট বা জ্যাকেট পরিহিত ব্যক্তি ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম নয়নকে শনাক্ত করে পুলিশ। যা নিয়ে মূলধারার গণমাধ্যম কালবেলা’র ফেসবুক পেজে একটি ভিডিও প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। পরবর্তীতে উক্ত ভিডিও প্রতিবেদনের অডিও কাট করে তাতে

‘বাসে আগুন দেয় আওয়ামী পুলিশ লীগ আর নাম হয় বিএনপির’ শীর্ষক বাক্য যুক্ত করে ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটকে প্রচার করা হয়।

প্রসঙ্গত, পূর্বেও অবরোধে বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় পুলিশকে দায়ী করে ইন্টারনেটে প্রচারিত দুইটি ভিডিওকে শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।
প্রতিবেদনগুলো দেখুন-

উল্লেখ্য,  গত ২০ নভেম্বর ফায়ার সার্ভিসের দেওয়া সর্বশেষ তথ্যমতে, গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপির সমাবেশ ঘিরে সংঘর্ষের পর থেকে গতকাল পর্যন্ত সারাদেশে ১৮৫টি যানবাহনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। ১৮৫ টি যানবাহনের মধ্যে ১১৮ টিই বাস বলে জানা গেছে।

সুতরাং, অবরোধে বিএনপির সহযোগী সংগঠন যুবদলের সদস্যদের বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনার ভিডিওকে পুলিশ কর্তৃক বাসে আগুন দেওয়ার ভিডিও দাবিতে টিকটকে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

মেসিকে জড়িয়ে জ্লাতন ইভ্রাহিমোভিচ এর নামে ভুয়া মন্তব্য প্রচার 

0

সম্প্রতি, সুইডিশ ফুটবলার জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচের উক্তি সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। যেখানে দাবি করা হচ্ছে তিনি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, বিশ্বকাপে কোন ডিফেন্ডার মেসিকে আটকাতে পারেনি। কারণ কোন ডিফেন্ডার এর ক্ষমতা নেই পেনাল্টি আটকানোর।

মেসিকে জড়িয়ে

উক্ত দাবিতে ছড়িয়ে পড়া কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সুইডিশ ফুটবলার জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচ আর্জেন্টাইন ফুটবলার লিওনেল মেসিকে নিয়ে আলোচিত মন্তব্যটি করেননি বরং কোনোপ্রকার নির্ভরযোগ্য সূত্র ছাড়াই উক্ত তথ্যটি প্রচার করা হচ্ছে।

সূত্রপাত 

ফেসবুকের নিজস্ব মনিটরিং টুল ব্যবহার করে দেখা যায়, গত ৩ জানুয়ারি রাত ৮ টা ৫০ মিনিটে ‘মাটির ব্যাংক প্লাটফর্ম BD!’ নামক গ্রুপে “বিশ্বকাপে কোন ডিফেন্ডার মেসিকে আটকাতে পারেনি।কারণ কোনো ডিফেন্ডার এর ক্ষমতা নেই পেনাল্টি আটকানোর:ইব্রা” শীর্ষক শিরোনামে বাংলা ভাষায় সম্ভাব্য প্রথম পোস্টটি (আর্কাইভ) করা হয়। উক্ত পোস্টে কোনো প্রকার তথ্য সূত্রের উল্লেখ পাওয়া যায়নি। 

Screenshot : Facebook claim post 

পরবর্তীতে আরও অনুসন্ধানে গত ২৮ জানুয়ারি ‘Shakile Ahmmed’ নামক একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টে “ বিশ্বকাপে কোন ডিফেন্ডার মেসিকে আটকাতে পারেনি কারণ কোন ডিফেন্ডার এর ক্ষমতা নেই পেনাল্টি আটকানোর: জলাতান ইব্রাহিমোভিচ” শীর্ষক শিরোনামে একটি ফটোকার্ড (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ফটোকার্ডেও কোনো প্রকার তথ্য সূত্রের উল্লেখ ছিলো না। পরবর্তীতে উক্ত ফটোকার্ডটি ফেসবুকে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। 

Screenshot : Facebook Claim Post 

দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে শুরুতেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ডিজিটাল ব্যানারটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচের মন্তব্য সম্বলিত ফটোকার্ডটি ক্রীড়াবিষয়ক বাংলাদেশি অনলাইন সংবাদমাধ্যম প্যাভিলিয়নের ফটোকার্ডের আদলে তৈরি করা। কিন্তু প্যাভিলিয়নের ফেসবুক পেজে উক্ত তথ্য সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি।

তবে, প্যাভিলিয়নের ব্যানারের সাথে আলোচ্য ব্যানারের তুলনামূলক পর্যালোচনা করে ব্যবহৃত ফন্টের ভিন্নতা খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার। এছাড়া ব্যানারটিতে প্যাভিলিয়নের লোগোও নেই।

Image Comparison : Rumor Scanner 

পরবর্তীতে জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজের বিশ্বকাপের পর থেকে সকল অ্যাক্টিভিটি পর্যালোচনা করে তার এরূপ কোনো বক্তব্য খুঁজে পায়নি রিউমর স্ক্যানার টিম।

পাশাপাশি, জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচের ভেরিফাইড ইনস্টাগ্রামটুইটার অ্যাকাউন্টের অ্যাক্টিভিটিও পর্যালোচনা করা হয়। সেখানেও উল্লিখিত বক্তব্যের সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এছাড়া অনুসন্ধানে জাতীয় কিংবা আন্তর্জাতিক কোনো গণমাধ্যমে মেসিকে নিয়ে জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচের উক্ত মন্তব্য সম্বলিত কোনো সংবাদ বা এরূপ কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

তবে গত ২৫ জানুয়ারি জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোতে “মেসির সতীর্থরা আর বিশ্বকাপ জিততে পারবে না’” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়,জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচ মেসিকে নিয়ে বলেন, “মেসি সর্বকালের সেরা। আমি নিশ্চিত ছিলাম, সে বিশ্বকাপ জিততে যাচ্ছে।”

মূলত, ২০২২ সালের ডিসেম্বরে ফিফা বিশ্বকাপ-২০২২ অনুষ্ঠিত হয়। এ আসরের বিশ্বকাপ জয় করে লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা। বিশ্বাপের একমাস পর সুইডিশ ফুটবলার জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচ মেসিকে নিয়ে ‘বিশ্বকাপে কোন ডিফেন্ডার মেসিকে আটকাতে পারেনি। কারণ কোন ডিফেন্ডার এর ক্ষমতা নেই পেনাল্টি আটকানোর’ শীর্ষক মন্তব্য করেছে দাবিতে একটি তথ্য ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে তথ্যটিকে ক্রীড়াবিষয়ক বাংলাদেশি অনলাইন সংবাদমাধ্যম প্যাভিলিয়নের ফটোকার্ড নকল করেও প্রচার করতে দেখা যায়।  তবে অনুসন্ধানে দেখা যায়, জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচ মেসিকে নিয়ে এ মন্তব্যটি করেননি। কোনোপ্রকার নির্ভরযোগ্য সূত্র ছাড়াই উক্ত তথ্যটি প্রচার করা হচ্ছে। 

প্রসঙ্গত, পূর্বেও জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচের নামে প্রচারিত মিথ্যা উক্তির ব্যাপারে একাধিক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। প্রতিবেদনগুলো দেখুন এখানে,এখানে

সুতরাং, সুইডিশ ফুটবলার জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচ মেসিকে নিয়ে “বিশ্বকাপে কোন ডিফেন্ডার মেসিকে আটকাতে পারেনি। কারণ কোন ডিফেন্ডার এর ক্ষমতা নেই পেনাল্টি আটকানোর” শীর্ষক মন্তব্য করেছেন শীর্ষক দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

সরকারের পদত্যাগ চেয়ে করা এই মিছিলটি আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগের নয়

সম্প্রতি, ‘সরকারের পদত্যাগ চাই ছাত্রলীগ’ শীর্ষক দাবিতে ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ’ লেখা ব্যানার সম্বলিত মিছিলের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

ছাত্রলীগের

পোস্টগুলোর শিরোনামের মাধ্যমে বোঝানো হচ্ছে, এটি বাংলাদেশের আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের মিছিল। সে অনুযায়ী পোস্টগুলোর মন্তব্যঘরে নেটিজেনদের প্রতিক্রিয়া জানাতেও দেখা গেছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ব্যানারে সরকারের পদত্যাগ দাবিতে প্রচারিত মিছিলের ভিডিওটি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নয়। প্রকৃতপক্ষে, এটি আ. স. ম. আব্দুর রবের নেতৃত্বাধীন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) এর ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (জেএসডি) এর মিছিল।

অনুসন্ধানের শুরুতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে Jonomukti নামের একটি ফেসবুক পেজে গত ১২ অক্টোবর  ‘এবার বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সেখ হাসিনা সরকারের প’দ’ত্যা’গ দাবি জেএসডি সংগঠন।’ শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

Video Comparison by Rumor Scanner

আলোচিত ভিডিওতে মিছিলে থাকা  ব্যানার এবং প্রথম সারির ব্যক্তিদের সাথে উক্ত ভিডিওতে থাকা ব্যানার এবং ব্যক্তিদের হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

পরবর্তীতে উক্ত ভিডিওর শিরোনামে উল্লিখিত‘জেএসডি সংগঠন’ শীর্ষক শব্দদ্বয়ের সূত্র ধরে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) এর ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ(জেএসডি) এর ফেসবুক পেজ পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম।

উক্ত ফেসবুকে পেজে গত ১৪ অক্টোবর ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র ঐক্যের ছাত্র কনভেনশনে বাংলাদেশ বাংলাদেশ ছাত্রলীগ’র অংশগ্রহণ।’ শীর্ষক শিরোনামে উক্ত সংগঠনের সভাপতি তৌফিক উজ জামান পীরাচা-এর শেয়ার করা একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Facebook

উক্ত পোস্টে ব্যবহৃত ছবিগুলোতে তৌফিক উজ জামানের নেতৃত্বে নেতাকর্মীদের মিছিল করতে দেখা যায়। যার সাথে আলোচিত ভিডিওতে মিছিলের ব্যানার এবং  সামনের সাড়িতে থাকা ব্যক্তিদের হুবহু মিল রয়েছে।

এছাড়াও পেজটিতে গত ১৪ অক্টোবর ‘সার্বজনীন শিক্ষাব্যবস্থা, নিরাপদ ক্যাম্পাস ও ভোটাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা সহ ৯ দফা দাবী আদায়ে ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্রঐক্য কনভেনশনে বক্তব্য রাখছেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ’র কেন্দ্রীয় সংসদের সংগ্রামী  সভাপতি ,তৌফিক উজ জামান পীরাচা ভাই।’  শীর্ষক শিরোনামে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান মুক্তার-এর করা একটি ভিডিও পোস্টও খুঁজে পাওয়া যায়। যাতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ(জেএসডি) এর সভাপতি তৌফিক উজ জামান পীরাচাকে উক্ত অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে দেখা যায়। 

Screenshot: Facebook

পরবর্তীতে ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র ঐক্য কনভেনশনের বিষয়ে অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে দৈনিক সমকালের ওয়েবসাইটে গত ১২ অক্টোবর ‘বিএনপির ছাত্র কনভেনশন শুরু’ শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Samakal

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সার্বজনীন শিক্ষাব্যবস্থা, নিরাপদ ক্যাম্পাস ও ভোটাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবিতে গত ১২ অক্টোবর বৃহস্পতিবার রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ‘ফ্যাসিবাদ বিরোধী ছাত্র ঐক্য’র উদ্যোগে বিএনপির ‘ছাত্র কনভেনশন’ অনুষ্ঠিত হয়। 

Screenshot: Samakal

এছাড়াও জানা যায়, ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খানের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এই কনভেনশনে সারাদেশে ছাত্রদলের জেলা ও জেলা পদমর্যাদার ১১৭টি সাংগঠনিক ইউনিটের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকেরা ছাত্র কনভেনশনে অংশ নেয়। এছাড়াও ছাত্র কনভেনশন সামনে রেখে গত ২৯ সেপ্টেম্বর ৯ দফার ভিত্তিতে যুগপৎ আন্দোলনের শরিক ১৫টি ছাত্র সংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, ছাত্র ফেডারেশন, ছাত্র অধিকার পরিষদ, ছাত্রলীগ (জেএসডি), গণতান্ত্রিক ছাত্রদল (এলডিপি), নাগরিক ছাত্র ঐক্য, জাগপা ছাত্রলীগ, ছাত্র ফোরাম (গণফোরাম-মন্টু), ভাসানী ছাত্র পরিষদ, জাতীয় ছাত্র সমাজ (কাজী জাফর), জাতীয় ছাত্র সমাজ (বিজেপি-পার্থ), জাগপা ছাত্রলীগ (খন্দকার লুৎফর), ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশ, বিপ্লবী ছাত্র সংহতি এবং রাষ্ট্র সংস্কার ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ে গঠিত ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র ঐক্য’-র সকলেই উক্ত কনভেনশনে অংশগ্রহণ করে। 

অর্থাৎ, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি মূলত জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) এর ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (জেএসডি) এর   ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র ঐক্য’-র ছাত্র কনভেনশনে অংশগ্রহণকালেমিছিল নিয়ে যাওয়ার সময় ধারণ করা। এর সাথে আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কোনো সম্পর্ক নেই।

উল্লেখ্য, ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলের অ্যাসেম্বলি হলে পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ নামে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৫৫ সালে আওয়ামী মুসলিম লীগ মুসলিম শব্দটি বাদ দিয়ে অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক সংগঠনে পরিণত হলে ছাত্রলীগও মুসলিম শব্দটি বাদ দিয়ে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগ নামে পরিচিত হয়। একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধে জয় লাভের পর সংগঠনটি নাম থেকে পূর্ব পাকিস্তান শব্দ বাদ গিয়ে বাংলাদেশ শব্দ যোগ হয়। ১৯৬৯ সালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগে প্রথম ভাঙনের সৃষ্টি হয়। তৎকালীন ছাত্রলীগ নেতা ফেরদৌস আহমদ কোরেশী ও আল মোজাহেদী বাংলা ছাত্রলীগ নামে নতুন সংগঠন গঠন করেন। যদিও সেই উদ্যোগ ফলপ্রসূ হয়নি। কিছুদিনের মাঝেই বিলুপ্ত হয়ে যায় সেই সংগঠন। তবে স্বাধীনতা পরবর্তী এক যুগে মত-পথ ও আদর্শের দ্বন্দ্বে জড়িয়ে প্রায় একই নামে বেশ কয়েকটি সংগঠন জন্মলাভ করে। 

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ বাদে বাকি সংগঠনগুলো সাংগঠনিকভাবে খুব বেশি সক্রিয় নয়। এই সংগঠনটির বাহিরে বর্তমানে আ. স. ম. আব্দুর রবের নেতৃত্বাধীন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) এর ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (জেএসডি), হাসানুল হক ইনুর নেতৃত্বাধীন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) এর ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ(জাসদ-ইনু), শরীফ নুরুল আম্বিয়ার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ জাসদের ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ(জাসদ-আম্বিয়া) এবং শফিউল আলম প্রধানের নেতৃত্বাধীন জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির ছাত্র সংগঠন জাগপা ছাত্রলীগ নামে চারটি সংগঠনের সাংগঠনিক অস্তিত্ব রয়েছে।

মূলত, সরকারের পদত্যাগের একদফা দাবিতে বিএনপির নেতৃত্বে চলমান যুগপৎ আন্দোলনে সহযোগী শক্তি হিসেবে সেপ্টেম্বরে আত্মপ্রকাশ করা ‘ফ্যাসিবাদ বিরোধী ছাত্র ঐক্য’ নামক ছাত্রজোটের উদ্যোগে গত ১২ অক্টোবর রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক  ‘ছাত্র কনভেনশন’ অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত কনভেনশনে ফ্যাসিবাদ বিরোধী ছাত্র ঐক্যের জোটে থাকা অন্যান্য ছাত্র সংগঠনের মতো আ. স. ম. আব্দুর রবের নেতৃত্বাধীন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) এর ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ(জেএসডি)ও অংশ নেয়। তবে,  সরকার বিরোধী মিছিলযোগে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ(জেএসডি) এর নেতা-কর্মীদের উক্ত কনভোকেশনে যোগ দেওয়ার সময় ধারণকৃত একটি ভিডিওকে আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সরকার বিরোধী মিছিল দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

সুতরাং, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ(জেএসডি) এর সরকার বিরোধী মিছিলের ভিডিওকে আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সরকার বিরোধী  মিছিল দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

চলমান ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধে গাজায় আমেরিকান জেনারেল নিহতের ভুয়া দাবি 

0

সম্প্রতি, ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ছবি প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে ছবিতে থাকা ব্যক্তি  আমেরিকান সাবেক জেনারেল টমাস হার্লি গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় নিহত হয়েছেন। 

ইসরায়েল-ফিলিস্তিন

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, চলমান ইসরায়েল-ফিলিস্থিন যুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোনো আমেরিকান জেনারেল মারা যায়নি বরং আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিটি ২০০৫ সালের ৩০ নভেম্বর ইরাকে কর্মকালীন তোলা অবসরপ্রাপ্ত মার্কিন জেনারেল জর্জ ক্যাসির।  

দাবিটি নিয়ে অনুসন্ধানের শুরুতেই রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে স্টক ফটোর ওয়েবসাইট ‘gettyimage’ এ আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot Source : gettyimage

ছবিটির বিস্তারিত বর্ণনা থেকে জানা যায়, এটি ২০০৫ সালে ৩০ নভেম্বর সিরিয়া-ইরাক সীমান্তে মার্কিন অপারেশন চলাকালীন সময়ে ইরাকে কর্মরত মার্কিন জেনারেল জর্জ ক্যাসির ছবি। 

জর্জ ক্যাসির বিষয়ে অনুসন্ধানে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বিভাগের ওয়েবসাইট ‘U.S.Department of Defence থেকে জানা যায় তিনি প্রায় ৪১ বছর যাবৎ মার্কিন সেনাবাহিনীতে কাজ করেছেন। মার্কিন সেনাবাহিনীর ৩৬ তম চিফ অব স্টাফ জেনারেল ক্যাসি ২০১১ সালের ১১ এপ্রিল অবসর গ্রহণ করেন। 

এছাড়া প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ‘ Cornell SC Johnson College of Business’ এর অফিশিয়াল ওয়েবসাইট থেকে জানা যায় বর্তমানে তিনি কর্ণেল ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষকতা করছেন। 

অর্থাৎ আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিটি কথিত মার্কিন জেনারেল টমাস হার্লির নয় এবং প্রচারিত ছবির ব্যক্তির নাম জর্জ ক্যাসি।

পরবর্তীতে অনুসন্ধানে জাতীয় কিংবা আন্তর্জাতিক কোনো গণমাধ্যমে চলমান ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধে কোনো মার্কিন জেনারেলের মৃত্যুর সংবাদ পাওয়া যায়নি।

তবে এ বিষয়ে মার্কিন সামরিক মুখপাত্র সার্জেন্ট পাবলো সেজ এএফপি-কে জানিয়েছেন, তার জানা তথ্য মতে মার্কিন সেনাবাহিনীতে টমাস হার্লি  নামের একজন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল, যিনি সেনাবাহিনীর মেডিকেল কোরের সদস্য ছিলেন, তিনি ১৮৯০ সালে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৬৩ সালে মারা যান। 

উল্লেখ্য, ইসরায়েল- ফিলিস্তিন সংঘাতকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের জন্য ১৪.৫ বিলিয়ন ডলার সামরিক সহায়তা প্রদানের একটি রিপাবলিকান পরিকল্পনা পাস করেছে । কিন্তু প্রতিরক্ষা দফতরের কর্মকর্তারা বলছেন ইসরায়েলের পক্ষে কোনো সৈন্যকে যুদ্ধে পাঠানোর কোনো পরিকল্পনা তাদের নেয়।

মূলত, চলমান ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে প্রায় প্রতিদিনই এক পক্ষের বিরুদ্ধে আরেক পক্ষকে আক্রমণ, পাল্টা আক্রমণের নানা তথ্য গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উঠে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায়  হত্যাকাণ্ডে আমেরিকান কথিত জেনারেল টমাস হার্লি নিহত হয়েছেন শীর্ষক দাবিতে একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিম অনুসন্ধানে দেখেছে যে, আলোচিত দাবিতে ছবিতে থাকা ব্যক্তিটি ২০০৫ সালে ইরাকে দায়িত্ব পালনকালে তোলা তৎকালীন মার্কিন জেনারেল জর্জ ক্যাসির। তিনি সেনাবাহিনী থেকে অবসরগ্রহণ করে বর্তমানে শিক্ষকতা করছেন। এছাড়া, বর্তমানে মার্কিন সেনাবাহিনীতে টমাস হার্লি নামের কোনো জেনারেল নেই এবং চলমান ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতে কোনো আমেরিকান জেনারেলও নিহত হননি।

সুতরাং, গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে আমেরিকান জেনারেল টমাস হার্লি নিহত দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

রস টেলর ভারত ক্রিকেট খেলার কমিটির দল শীর্ষক মন্তব্য করেননি

0

সম্প্রতি, নিউজিল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক রস টেলর ভারতকে ‘ক্রিকেট খেলার কমিটির দল‘ শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে একাধিক ফেসবুক পোস্ট নজরে এসেছে রিউমর স্ক্যানার টিমের। 

রস টেলর

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, রস টেলর ভারতের বিষয়ে ‘ক্রিকেট খেলার কমিটির দল’ শীর্ষক মন্তব্য করেননি বরং কোনো তথ্যসূত্র ছাড়াই টেলরের নামে উক্ত ভুয়া মন্তব্যটি প্রচার করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে এ বিষয়ে ছড়িয়ে পড়া দাবিটির সূত্র খুঁজতে গিয়ে ফেসবুক মনিটরিং টুল এবং ম্যানুয়াল পদ্ধতির মাধ্যমে সম্ভাব্য প্রথম পোস্টটির সন্ধান মেলে Sports X নামক একটি ফেসবুক পেজে। পেজটিতে গত ১৫ নভেম্বর রাত ১১:৩২ মিনিটে এ বিষয়ে পোস্টটি করা হয়। 

অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে, সেদিনই বিশ্বকাপের প্রথম সেমিফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল ভারত ও নিউজিল্যান্ড। পোস্টটি প্রকাশের অন্তত আধঘন্টা পূর্বে ম্যাচ শেষ হয়, যাতে ভারত জয় পায় ৭০ রানের ব্যবধানে। 

প্রথম সেমিফাইনালের আগে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল পিচ নিয়ে। নক আউট পর্বের এই ম্যাচ সতেজ পিচের বদলে ব্যবহৃত উইকেটে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে খবর প্রকাশ করেছিল ক্রিকেট বিষয়ক আন্তর্জাতিক ওয়েবসাইট ইএসপিএন ক্রিকইনফো।

ক্রিকইনফো জানাচ্ছে, প্রথমে সেমিফাইনাল ম্যাচটি হওয়ার কথা ছিলো ওয়াংখেড়ের ৭ নম্বর উইকেটে। যে উইকেটে টুর্নামেন্টের কোন ম্যাচ হয়নি। কিন্তু এই সিদ্ধান্ত বদল করে খেলা ৬ নম্বর পিচে নেওয়া হয়েছে। যেখানে এরমধ্যে হয়েছে দুই ম্যাচ। 

এই বিতর্কের আগে পরে রস টেলর ভারতের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেছেন কিনা সে বিষয়টি যাচাই করতে গিয়ে আইসিসির ওয়েবসাইটে টেলরের লেখা একটি কলাম খুঁজে পেয়েছে রিউমর স্ক্যানার টিম। কলামে ভারত ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার সেমিফাইনাল ঘিরে নিজের প্রত্যাশা ও এ সংক্রান্ত অতীত স্মৃতিচারণ করেন টেলর। তবে ভারতের বিষয়ে নেতিবাচক কোনো মন্তব্য করেননি তিনি।

Screenshot: ICC Website 

টেলরের এই কলামের বিষয়ে পরবর্তীতে দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক একাধিক গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে। দেখুন প্রথম আলো, বিডিনিউজ২৪, ইনডিপেনডেন্ট (যুক্তরাজ্য), এএনআই (ভারত)। 

এ পর্যায়ে আমরা টেলরের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অ্যাকাউন্ট এবং পরবর্তীতে একাধিক প্রাসঙ্গিক কিওয়ার্ড সার্চ করে দেখার চেষ্টা করেছি টেলর এমন কিছু বলেছেন কিনা। তবে অনুসন্ধানে টেলরের এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্ট এবং ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে এ সংক্রান্ত কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। টেলর কর্তৃক “গ্রামের ক্রিকেট খেলার কমিটির দল ভারত” শীর্ষক কোনো মন্তব্য করা হলে স্বাভাবিকভাবে তাও গণমাধ্যমের খবর হতো। গণমাধ্যমেও এ সংক্রান্ত কোনো সংবাদ মেলেনি।  

মূলত, গত ১৫ নভেম্বর বিশ্বকাপের প্রথম সেমিফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল ভারত ও নিউজিল্যান্ড। উক্ত ম্যাচে ভারতের কাছে হেরে বিশ্বকাপের লড়াই থেকে ছিটকে পড়ে নিউজিল্যান্ড। তাছাড়া, এই ম্যাচের পূর্বে পিচ নিয়েও বিতর্কের খবর এসেছে গণমাধ্যমে। এই ঘটনাবলির পর ফেসবুকের একাধিক পোস্টে দাবি করা হয়, নিউজিল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক রস টেলর ভারতকে ‘ক্রিকেট খেলার কমিটির দল’ শীর্ষক মন্তব্য করেছেন। কিন্তু রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, দাবিটি সঠিক নয়। টেলর ভারতের বিষয়ে এমন কোনো মন্তব্যই করেননি। 

সুতরাং, নিউজিল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক রস টেলর ভারতকে ‘ক্রিকেট খেলার কমিটির দল’ শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা৷ 

তথ্যসূত্র

যুক্তরাষ্ট্রের নয়, তাইওয়ানের নির্বাচনে চীনকে হস্তক্ষেপ না করতে আহ্বান জানিয়েছেন বাইডেন

গত ১৫ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের প্রেসিডেন্টের মধ্যকার বৈঠককে কেন্দ্র করে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করতে বারণ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বাইডেন শীর্ষক একটি দাবি দেশের একাধিক গণমাধ্যম এবং পরবর্তীতে ফেসবুকে প্রচার হতে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

উক্ত দাবিতে গণমাধ্যমের প্রতিবেদন দেখুন সময় টিভি, ইনডিপেনডেন্ট টিভি, যুগান্তর, একাত্তর টিভি, মানবজমিন, নিউজ২৪ (ইউটিউব), দীপ্ত টিভি, কালবেলা, বাংলাভিশন, প্রতিদিনের বাংলাদেশ, সাম্প্রতিক দেশকাল, বাংলা ইনসাইডার, সোনালী নিউজ, বহুমাত্রিক, বিবার্তা২৪, এই মুহূর্তে, ক্যাম্পাস টাইমস.প্রেস (ফেসবুক)।   

একই দাবিতে গণমাধ্যমসহ ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

তাছাড়া, একই ঘটনায় ফেসবুকে প্রচারিত এক পোস্টে দাবি করা হয়েছে, চীনা প্রেসিডেন্টকে বাংলাদেশের নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করতে বারণ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকের পোস্টটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে হস্তক্ষেপ না করতে আহ্বান জানাননি বরং তাইওয়ানের আসছে জানুয়ারির নির্বাচনে চীনকে হস্তক্ষেপ না করার আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে দেশীয় একাধিক গণমাধ্যমে আলোচিত দাবিটির সূত্র হিসেবে বিবিসি’র নাম উল্লেখ করতে দেখা গেছে। এই সূত্রে আমরা ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ‘BBC’ এর ওয়েবসাইটে আলোচিত বৈঠকটির বিষয়ে একাধিক প্রতিবেদন (, , ) খুঁজে পেয়েছি, যেগুলো বিশ্লেষণ করে আলোচিত দাবিটি অর্থাৎ শি জিনপিংকে আসন্ন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করতে বারণ করেছেন বাইডেন শীর্ষক কোনো তথ্যের উল্লেখ পাইনি।

বিবিসি সেদিন বৈঠকের বিষয়ে লাইভ রিপোর্টিং করেছে। চার পাতার এই রিপোর্টিং এর প্রথম পাতায় বৈঠক শুরুর পূর্বে সংবাদমাধ্যমটির মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট প্রতিনিধি বারবারা প্লেট উসার (Barbara Plett Usher) এর বরাতে উল্লেখ করা হয়েছে, “মার্কিন কর্মকর্তারা বলেছেন, ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ, তাইওয়ান, ইউক্রেনের যুদ্ধ এবং নির্বাচনে হস্তক্ষেপ নিয়ে আলোচনা হবে।”

রিপোর্টিংয়ের দ্বিতীয় পাতায় নির্বাচন সংক্রান্ত কোনো তথ্য না থাকলেও তৃতীয় পাতায় শেষের দিকে বিবিসির উত্তর আমেরিকা সম্পাদক সারা স্মিথের  (Sarah Smith) “What Biden wants from today’s meeting with Xi” শিরোনামে একটি নিবন্ধে এ সংক্রান্ত আলোচনা দেখেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। সারা তার নিবন্ধে বাইডেন বহুল প্রতীক্ষিত এই বৈঠক থেকে কী কী বিষয়ে ফলপ্রসূ আলোচনার আশা করছেন সে বিষয়ে আলোকপাত করেছেন। তিনি লিখেছেন, বৈঠকের এজেন্ডায় আগামী বছরের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে চীনের হস্তক্ষেপের চেষ্টার বিরুদ্ধে সতর্কতার বিষয়টি থাকবে।

Screenshot: BBC

এরপর বৈঠক শুরু হয় এবং বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সামনে বক্তব্য দেন বাইডেন। বিবিসি একই পাতায় লিখেছে, বাইডেন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, নির্বাচনী হস্তক্ষেপের বিষয়ে বাইডেন বলেছেন যে তিনি শিকে বলেছিলেন যে তিনি “কোনও হস্তক্ষেপ করবেন না” আশা করেছিলেন। 

কিন্তু কোন দেশ বা কী নির্বাচন সে বিষয়ে কোনো তথ্য দেয়নি বিবিসি। 

Screenshot: BBC

বিষয়টি নিশ্চিত হতে রিউমর স্ক্যানার টিম হোয়াইট হাউজের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বাইডেনের সেদিনের সংবাদ সম্মেলনের পুরো বক্তব্য বিশ্লেষণ করে দেখেছে। বাইডেন তার বক্তব্য দেওয়ার পর সাংবাদিকদের প্রশ্ন করার সুযোগ দেন। তার বক্তব্যে নির্বাচন প্রসঙ্গ না এলেও এক সাংবাদিকের প্রশ্নে তাইওয়ানের নির্বাচন নিয়ে আলোচনার উল্লেখ পাওয়া যায়। ঐ সাংবাদিক বাইডেনের কাছে জানতে চান,  “তাইওয়ানের বিষয়ে একটি প্রশ্ন। আপনি এবং আপনার প্রশাসনিক কর্মকর্তারা আসন্ন নির্বাচনে হস্তক্ষেপ সম্পর্কে প্রেসিডেন্ট শি এবং চীনকে সতর্ক করেছেন। আমি ভাবছি যে তারা যদি নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করে তাহলে এর পরিণতি কী হবে?”

Screenshot: White House Website

নির্বাচন বিষয়ে এই অংশের আলোচনা ছাড়া সংবাদ সম্মেলনের বাকি অংশে নির্বাচন বিষয়ক কোনো আলোচনার বিষয়ে উল্লেখ পাওয়া যায়নি। 

বাইডেনের সংবাদ সম্মেলনের ভিডিও দেখুন এখানে। 

রিউমর স্ক্যানার টিম যাচাই করে দেখেছে, আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোতেও (, , ) বাইডেন কর্তৃক তাইওয়ানের আসন্ন নির্বাচনে চীনের হস্তক্ষেপ না করার আহ্বানের বিষয়েই সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। এসব প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের বাইডেনের কোনো বক্তব্য বা এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য মেলেনি।   

Screenshot: NBC News

বাইডেন কর্তৃক তাইওয়ানের আসন্ন নির্বাচনে চীনের হস্তক্ষেপ না করার আহ্বানের বিষয়ে দেশীয় একাধিক গণমাধ্যমও (ডেইলি স্টার, চ্যানেল২৪, ঢাকা পোস্ট, পূর্ব পশ্চিম বিডি) সংবাদ প্রকাশ করেছে।

মূলত, গত ১৫ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্র সফররত চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সাথে বৈঠকে বসেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। বৈঠক শেষে শি জিনপিংকে যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করতে বারণ করেছেন বাইডেন শীর্ষক একটি দাবি দেশের একাধিক গণমাধ্যম এবং পরবর্তীতে ফেসবুকে প্রচারিত হয়েছে। এছাড়া, একই ঘটনার বিষয়ে এমনও দাবি করা হয় যে, চীনা প্রেসিডেন্টকে বাংলাদেশের নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করতে বারণ করেছেন বাইডেন। রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, এসব দাবির কোনোটিই সঠিক নয়। জো বাইডেন চীনকে যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে হস্তক্ষেপ না করতে আহ্বান জানাননি। প্রকৃতপক্ষে, তাইওয়ানের আসন্ন জানুয়ারির নির্বাচনে চীনকে হস্তক্ষেপ না করার আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

উল্লেখ্য, চীনের মূল ভূখন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন তাইওয়ান মূলত দক্ষিণ চীন সমূদ্রের একটি দ্বীপ। বিবিসির দেওয়া তথ্যমতে, চীন মনে করে তাইওয়ান তাদের দেশেরই অংশ। এটি চীন থেকে বেরিয়ে যাওয়া একটি প্রদেশ। যেটি ভবিষ্যতে কোন একদিন চীনের সঙ্গে বিলুপ্ত হবে।

প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের ১৩ জানুয়ারি তাইওয়ানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হবে একই বছরের (২০২৪) ০৫ নভেম্বর। অন্যদিকে বাংলাদেশের সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণের তারিখ ২০২৪ সালেরই ৭ জানুয়ারি নির্ধারণ করেছে নির্বাচন কমিশন।

সুতরাং, তাইওয়ানের নির্বাচনে চীনকে হস্তক্ষেপ না করতে বাইডেনের আহ্বান জানানোর খবরকে যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে চীনকে হস্তক্ষেপ না করতে বাইডেনের আহ্বান জানানোর দাবিতে গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র