Home Blog Page 549

মেসিকে হুমকি দেওয়া মেক্সিকান বক্সারের বাড়িতে হামলা হয়নি

0

সম্প্রতি “মেসিকে হুমকি দেওয়া মেক্সিকান বক্সারের বাড়িতে হামলা হয়েছে” শীর্ষক একটি দাবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

যা দাবি করা হয়েছে

মেসিকে হামলার হুমকি দেওয়া মেক্সিকান বক্সার ক্যানেলো আলভারেজের বাড়িতে একদল লোক ঢুকে সব মূল্যবান জিনিস ভেঙে ফেলেছেন কিন্তু তারা কোন কিছুই চুরি করেনি। তবে তারা বেনামী একটা বার্তা রেখে গেছে যেখানে লেখা রয়েছে, “মেসি অস্পর্শনীয়, তুমি নির্বোধ।”

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে
পোস্টগুলোর আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, মেসিকে হুমকি দেওয়া মেক্সিকান বক্সার ক্যানেলো আলভারেজের বাড়িতে হামলার কোনো ঘটনা ঘটেনি বরং বানোয়াট তথ্য এবং ভিন্ন দুইটি ঘটনার পুরোনো ছবি সংযুক্ত করে উক্ত দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে।

প্রথম ছবি যাচাই

রিভার্স ইমেজ সার্চ পদ্ধতি ব্যবহার করে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম রেডিটে ২০২১ সালের ০৫ অক্টোবর তারিখে প্রকাশিত একটি পোস্টে মূল ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। পোস্টের ক্যাপশনে উল্লেখ করা হয়েছে, “আমার বয়ফ্রেন্ড (বর্তমানে প্রাক্তন), মাতাল অবস্থায় মতবিরোধের পরে আমাদের বাড়ি সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দেয় এবং আমাকে মারধর করে।” 

Screenshot Source: Reddit

দ্বিতীয় ছবি যাচাই

রিভার্স ইমেজ সার্চ পদ্ধতি ব্যবহার করে, আমেরিকান গণমাধ্যম CBS 8 এর ওয়েবসাইটে গত ১৯ জুলাই তারিখে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে সংযুক্ত ভিডিওতে হুবহু একই দৃশ্য দেখা যায়। প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত জুলাইয়ে আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের চুলা ভিস্তায় একাধিক বাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটে। উক্ত ঘটনায় একটি বাড়ির সিসিটিভিতে ধারণ করা দৃশ্য এটি।

Screenshot Source: cbs8

এছাড়া, আলোচিত পোস্টগুলোতে ফক্স এবং স্কাই স্পোর্টসকে সোর্স হিসেবে দেখানো হয়েছে কিন্তু ফক্স এবং স্কাই স্পোর্টস এ ধরণের কোনো সংবাদ প্রকাশ করেনি। এমনকি মূলধারার  অন্য কোনো গণমাধ্যমেও এই সংবাদ প্রকাশিত হয়নি।

তাছাড়া, মেক্সিকান বক্সার ক্যানেলো আলভারেজের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টগুলোতেও এই ব্যাপারে কোনো তথ্য নেই।

ক্যানেলো আলভারেজ মেসিকে কেনো হুমকি দিয়েছিলো?

ফিফা বিশ্বকাপ-২০২২ আসরের গ্রুপ পর্বের আর্জেন্টিনা বনাম মেক্সিকো ম্যাচ শেষে মেসির বিরুদ্ধে আর্জেন্টিনার ড্রেসিংরুমে জয় উদযাপনের সময় জার্সি দিয়ে মেঝে পরিষ্কার করার অভিযোগ করেছিলেন মেক্সিকান বক্সার ক্যানালো আলভারেজ। তবে তা ছিল একটি দুর্ঘটনা। ম্যাচ পরবর্তীতে সাধারণত খেলোয়াড়দের ব্যবহৃত জার্সিগুলো ঘর্মাক্ত হওয়ায় তা এভাবে মেঝেতেই পড়া থাকে৷ মেক্সিকোর অধিনায়কের সাথে মেসির বদল করা এমনই একটি জার্সি সেদিন মেসির সামনে মেঝেতে পড়েছিল। মেসি জুতা খোলার সময় তাতে দুর্ঘটনাবশত পা লেগে যায়। পরবর্তীতে এই ঘটনার একটি ভিডিও ফুটেজ ছড়িয়ে পড়লে মেক্সিকান বক্সার ক্যানালো আলভারেজ মেসি মেক্সিকোকে অপমান করেছে অভিযোগ এনে টুইট করেন৷  এরপর মেসির পক্ষ নেয় অনেক ফুটবলার এবং ক্যানেলো আলভারেজকে বিষয়টি বুঝানোর চেষ্টা করে।  এমনকি মেক্সিকোর অধিনায়কও বিষয়ে মেসির পক্ষ নিয়ে কথা বলে। সব শেষে ক্যানেলো আলভারেজ নিজের ভুল বুঝতে পেরে মেসি ও আর্জেন্টিনার জনগণের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।  উক্ত বিষয়ে রিউমর স্ক্যানারের প্রকাশিত একটি ফ্যাক্ট স্টোরি পড়ুন এখানে। 

মূলত, আর্জেন্টিনা বনাম মেক্সিকো ম্যাচের পর মেক্সিকান বক্সার ক্যানেলো আলভারেজ মেসির বিরুদ্ধে জার্সি অবমাননার অভিযোগ এনে মেসিকে হুমকি দিয়ে একটি টুইট করেন। যদিও পরবর্তীতে তিনি নিজের ভুল বুঝতে পেরে দুঃখ প্রকাশ করেন। তবে উক্ত বিষয়টিকে কেন্দ্র করে ‘মেসিকে হুমকি দেওয়া মেক্সিকান বক্সারের বাড়িতে হামলা’ শীর্ষক একটি দাবি প্রচারিত হয়। কিন্তু রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত দাবির সাথে যংযুক্ত দুইটি ছবিগুলো পুরোনো ও ভিন্ন দুইটা ঘটনার। এছাড়া পোস্টগুলোতে ফক্স ও স্কাই স্পোর্টসকে তথ্যসূত্র হিসেবে দেখানো হলেও গণমাধ্যমগুলো এ বিষয়ে কোনো সংবাদ প্রচার করেনি। এছাড়া ক্যানেলো আলভারেজের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টগুলোতে এ বিষয়ে কোনো তথ্য নেই।

সুতরাং, ‘মেসিকে হুমকি দেওয়া মেক্সিকান বক্সার ক্যানেলো আলভারেজের বাড়িতে হামলা হয়েছে’ শীর্ষক দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

মেসি ও রোনালদোকে নিয়ে কাকার নামে প্রচারিত বক্তব্যটি মিথ্যা

0

সম্প্রতি “কাকাঃ- আগামী ১০ বছরে ১০ জন রোনালদো আসবে কিন্তু আগামী ১০ হাজার বছরেও ১জন মেসিও আসবে না” শীর্ষক শিরোনামের একটি বক্তব্য ব্রাজিলিয়ান সাবেক ফুটবল তারকা কাকার নাম উদ্ধৃত করে প্রচারিত হচ্ছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এরকম কিছু পোস্ট দেখুন, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে 
পোস্টগুলোর আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, মেসি এবং রোনালদোকে নিয়ে ব্রাজিলিয়ান সাবেক ফুটবল তারকা কাকা উক্ত বক্তব্য দেন নি বরং কাকার একটি সাক্ষাৎকারের ছবি যুক্ত করে কোনরূপ তথ্যসূত্র ছাড়াই ভিত্তিহীনভাবে প্রচার করা হচ্ছে।

অনুসন্ধানে উক্ত বক্তব্যের প্রেক্ষিতে মূলধারার গণমাধ্যমে কোনো প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায় নি। এছাড়াও কাকার ভেরিফাইড ফেসবুক আইডি, টুইটার একাউন্ট পর্যবেক্ষণ করেও উক্ত বক্তব্যের কোনো ভিত্তি খুঁজে পাওয়া যায় নি। 

পরবর্তীতে, উক্ত ছবিটি রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে ফুটবল ক্লাব এসি মিলানের অফিশিয়াল টুইটার একাউন্টে ২০১৮ সালের ৫ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত kaka : “Milanello is a unique place. Gattuso has the same energy he had as a player” শীর্ষক শিরোনামের একটি সাক্ষাৎকার ভিডিও পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওতে কাকা এসি মিলানে খেলার সময়ের স্মৃতিচারন করেন এবং ক্লাবের তৎকালীন কোচ Gennaro Gattuso সম্পর্কে প্রশংসাসূচক মন্তব্য করেন। তবে ভিডিওর কোথাও মেসি এবং রোনালদোকে নিয়ে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায় নি।

মূলত, ২০১৮ সালের ৫ সেপ্টেম্বর ব্রাজিলিয়ান ফুটবল তারকা কাকা ক্লাব ফুটবল দল এসি মিলানের মিলান টিভিতে একটি সাক্ষাৎকার প্রদান করেন। উক্ত সাক্ষাৎকারটি এসি মিলানের অফিশিয়াল টুইটার একাউন্টে পোস্ট করা হয়। ভিডিওর কোথাও মেসি ও রোনালদোকে নিয়ে কোনো মন্তব্য কাকা করেন নি। কিন্তু উক্ত ভিডিওর একটি স্থিরচিত্র ব্যবহার করে “আগামী ১০ বছরে ১০ জন রোনালদো আসবে কিন্তু আগামী ১০ হাজার বছরেও ১জন মেসিও আসবে না” বক্তব্যটি কাকার নামে উদ্ধৃত করে প্রচার করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, ব্রাজিলিয়ান সাবেল ফুটবল তারকা কাকা ২০০২ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ব্রাজিলের মধ্যমাঠের খেলোয়াড় হিসেবে দায়িত্বপালন করেন। এছাড়াও ক্লাব ফুটবলে এসি মিলান ও রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে খেলেন এই ফুটবলার।

প্রসঙ্গত, ফিফা বিশ্বকাপের প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন ফুটবলারের নাম উদ্ধৃত করে ভুয়া বক্তব্য প্রচার হয়ে আসছে। এসকল বক্তব্যের প্রেক্ষিতে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, ব্রাজিলিয়ান সাবেক ফুটবল তারকা কাকার নাম উদ্ধৃত করে “আগামী ১০ বছরে ১০ জন রোনালদো আসবে কিন্তু আগামী ১০ হাজার বছরেও ১জন মেসিও আসবে না” শীর্ষক বক্তব্যটি প্রচারিত হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

ব্রাজিল ও নেইমারকে নিয়ে রবার্ট লেভানদোভস্কির ভুয়া মন্তব্য প্রচার

0

সম্প্রতি “পোল্যান্ড অধিনায়ক রবার্ট লেভানদোভস্কি ব্রাজিলকে কাতার বিশ্বকাপের ফেবারিট বলেছেন” শীর্ষক একটি দাবি যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচারিত হচ্ছে। 

যা দাবি করা হচ্ছে

ছড়িয়ে পড়া পোস্টগুলোতে রবার্ট লেভানদোভস্কিকে কাতার বিশ্বকাপের স্পন্সর বোর্ডের সামনে দাঁড়িয়ে এক উপস্থাপককে সাক্ষাৎকার দিতে দেখা যাচ্ছে। 

পোস্টগুলোর ক্যাপশনে লেখা রয়েছে, “সাংবাদিক: কাতার বিশ্বকাপে কার হাতে উঠবে আপনার মনে হয়?.
লেভানডক্সি: ‘অবশ্যই আমি বলবো ব্রাজিল 
সাংবাদিক: কেনো ব্রাজিল ফেবারিট মনে হলো?
লেভানডক্সি: কারণ এই দলে নেইমারের মতো আরও ১০ টা নেইমার আছে ।”

ফেসবুকে প্রচারিত এরকম কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে।
পোস্টগুলোর আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, কাতার বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করে ব্রাজিল ও নেইমার প্রসঙ্গে রবার্ট লেভানদোভস্কি উক্ত বক্তব্য দেননি বরং লেভানদোভস্কির একটি ইন্টারভিউয়ের সময়ের ছবির সাথে ভিত্তিহীনভাবে উক্ত ক্যাপশনের বক্তব্যটি প্রচারিত হচ্ছে। 

অনুসন্ধানে মূলধারার কোনো গণমাধ্যম, রবার্ট লেভানদোভস্কির ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ এবং নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্র থেকে উক্ত বক্তব্যের কোনো ভিত্তি পাওয়া যায় নি।

স্ক্রিনশটের সূত্র ধরে অনুসন্ধান যেভাবে  

রবার্ট লেভানদোভস্কির নামে প্রচারিত উক্ত বক্তব্যটির কোনো তথ্যসূত্র না পেয়ে বক্তব্যটির সাথে সংযুক্ত ছবিটির সূত্র পেতে অনুসন্ধান শুরু করে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

কিওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ফেসবুকে ‘Barca forever’ নামক একটি ফেসবুক পেজে একই ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। 

ছবির ক্যাপশনে TyCSports চ্যানেলের বরাতে লেখা রয়েছে, “রবাট লেভানদোভস্কি বলেছেন, আমি মনে করি আর্জেন্টিনা রাউন্ড অফ সিক্সটিনে যাওয়ার যোগ্য। আজ তারা প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পুরো খেলায় তারা আমাদের উপর আধিপত্য বিস্তার করেছে।”

এই ছবির ক্যাপশনের সূত্র ধরে পরবর্তীতে আর্জেন্টিনাভিত্তিক স্পোর্টস চ্যানেল ‘Tyc Sports’ এর ভেরিফাইড টুইটার অ্যাকাউন্টে গত ১ ডিসেম্বর প্রকাশিত লেভানদোভস্কির একটি ইন্টারভিউয়ের একটি টুইট ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। টুইট ভিডিওটির ক্যাপশনে লেখা রয়েছে, “রবার্ট লেভানদোভস্কি আর্জেন্টিনার সাথে ম্যাচের পর গ্যাস্টোন ইডুলের সাথে কথোপকথনে জানিয়েছেন, আর্জেন্টিনা প্রতিটি খেলায় উন্নতি করছে।” 

টুইটের সাথে সংযুক্ত ভিডিওটি বাংলাদেশ থেকে দেখা না যাওয়ায় লেভানদোভস্কি ব্রাজিল সম্পর্কে কিছু বলেছেন কিনা সে সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে TyC Sports এর টুইটের ক্যাপশনে থাকা ‘Gaston Edul’ সম্পর্কে অনুসন্ধান করে জানা যায়, তিনি TyC Sports এর একজন সাংবাদিক। বিশ্বকাপ কাভার করতে এই আর্জেন্টাইন এখন কাতারেই অবস্থান করছেন। তার ব্যক্তিগত টুইটার অ্যাকাউন্টে গত ১ ডিসেম্বর প্রকাশিত একটি টুইটে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

টুইটে তিনি লিখেছেন, “রবাট লেভানদোভস্কি ‘TyC Sports’কে বলেছেন, আমি মনে করি আর্জেন্টিনা রাউন্ড অফ সিক্সটিনে যাওয়ার যোগ্য। আজ তারা প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পুরো খেলায় তারা আমাদের উপর আধিপত্য বিস্তার করেছে।

গ্যাস্টোন ইডুল ইউটিউব চ্যানেলেও একইদিন (১ ডিসেম্বর) তাকে দেওয়া লেভানদোভস্কির ইন্টারভিউয়ের ভিডিও প্রকাশ করেছেন। ইন্টারভিউতে লেভানদোভস্কি আর্জেন্টিনার সাথে তার দলের ম্যাচের পারফরম্যান্স, পেনাল্টি এবং আর্জেন্টিনার সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স বিষয়ে কথা বললেও ব্রাজিল প্রসঙ্গে কোনো কথা বলেননি।

অর্থাৎ, লেভানদোভস্কির ইন্টারভিউয়ের একটি ছবি ব্যবহার করে তার উদ্ধৃতি দিয়ে কাতার বিশ্বকাপ প্রসঙ্গে বানোয়াট বক্তব্য প্রচার করা হচ্ছে।

মূলত, গত ১ ডিসেম্বর কাতার বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার সাথে ম্যাচের পর পোল্যান্ডের অধিনায়ক রবার্ট লেভানদোভস্কির ইন্টারভিউ নেন ‘TyC Sports’ চ্যানেলের সাংবাদিক গ্যাস্টোন ইডুল। ইন্টারভিউতে লেভানদোভস্কি আর্জেন্টিনার সাথে তার দলের ম্যাচের পারফরম্যান্স, পেনাল্টি এবং আর্জেন্টিনার সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স বিষয়ে কথা বলেন। কিন্তু উক্ত ইন্টারভিউয়ের সময়ে তোলা একটি ছবি ব্যবহার করে লেভানদোভস্কি ব্রাজিলকে ফেবারিট বলেছেন দাবিতে ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। অথচ, উক্ত ইন্টারভিউতে ব্রাজিল প্রসঙ্গই উঠেনি৷ তাছাড়া, অনুসন্ধানে নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্র থেকে উক্ত বক্তব্যের কোনো ভিত্তি পাওয়া যায় নি।

সুতরাং, কাতার বিশ্বকাপে ব্রাজিল ও নেইমারের প্রসঙ্গ টেনে রবার্ট লেভানদোভস্কি ব্রাজিলকে কাতার বিশ্বকাপের ফেবারিট বলেছেন দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে ; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

পোলিশ গোলরক্ষক ভইচেক স্টেঞ্চনির নাম উদ্ধৃত করে ভুয়া বক্তব্য প্রচার 

0

সম্প্রতি “রিপোর্টার: “বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়ের বিরুদ্ধে পেনাল্টি বাঁচাতে পেরে কেমন লাগছে” Szczesny :” সত্যি বলতে, আমি জানি না। আমি কখনো ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর পেনাল্টি বাঁচাতে পারিনি” শীর্ষক শিরোনামের একটি বক্তব্য পোল্যান্ডের গোলরক্ষকের নাম উদ্ধৃত করে প্রচারিত হচ্ছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এরকম কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে। 
পোস্টগুলোর আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত বক্তব্যটি পোল্যান্ডের গোলরক্ষক Wojciech Szczęsny (ভইচেক স্টেঞ্চনি) দেন নি বরং কোনোরূপ তথ্যসূত্র ছাড়াই ভিত্তিহীনভাবে উক্ত বক্তব্যটি প্রচার করা হচ্ছে। 

অনুসন্ধানে মূলধারার গণমাধ্যম, Wojciech Szczęsny’র অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ, টুইটার একাউন্ট পর্যবেক্ষণ করে কোথাও উক্ত দাবির কোনো ভিত্তি খুঁজে পাওয়া যায় নি। 

এছাড়াও পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, উক্ত বক্তব্যের দাবিতে প্রচারিত ছবিটিতে গোলরক্ষক স্টেঞ্চনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেয়ার সময়ের। পরবর্তীতে আর্জেন্টিনা-পোল্যান্ডের ম্যাচ পরবর্তী প্রেস কনফারেন্সে স্টেঞ্চনির বক্তব্য পর্যবেক্ষণ করেও কোথাও উক্ত বক্তব্য পাওয়া যায় নি।

উল্লেখ্য, Wojciech Szczęsny (ভইচেক স্টেঞ্চনি) পোল্যান্ডের গোলরক্ষক এবং ক্লাব ফুটবলে জুভেন্ডাসের হয়ে মাঠে গোলরক্ষকের দায়িত্বপালন করেন।

মূলত, আর্জেন্টিনা-পোল্যান্ডের ম্যাচে পেনাল্টিতে লিওনেল মেসির গোল ঠেকিয়ে দেয়ায় পোলিশ গোলরক্ষক ভইচেক স্টেঞ্চনিকে নিয়ে নেট দুনিয়ায় বেশ প্রশংসা করা হয়। এই প্রেক্ষাপটকে কেন্দ্র করে কোনোরূপ তথ্যসূত্র ছাড়াই ভিত্তিহীনভাবে স্টেঞ্চনির বক্তব্য দাবিতে একটি তথ্য ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। 

প্রসঙ্গত, একই বক্তব্য এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে বেলজিয়াম ফুটবল দলের গোলরক্ষক কর্তোয়ার নাম উদ্ধৃত করেও প্রচারিত (আর্কাইভ) হয়েছে। উক্ত বক্তব্যেরও কোনো ভিত্তি খুঁজে পাওয়া যায় নি। ফিফা বিশ্বকাপের প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন ফুটবলারের নাম উদ্ধৃত করে ভুয়া বক্তব্য প্রচার হয়ে আসছে। এসকল বক্তব্যের প্রেক্ষিতে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়ের বিরুদ্ধে পেনাল্টি বাঁচাতে পেরে কেমন লাগছে প্রশ্নে “সত্যি বলতে, আমি জানি না। আমি কখনো ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর পেনাল্টি বাঁচাতে পারিনি” শীর্ষক বক্তব্যটি পোলিশ গোলরক্ষক ভইচেক স্টেঞ্চনির নামে প্রচারিত হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

পাকিস্তান-বাংলাদেশের মধ্যে মাশরিক-মাগরিব এক্সপ্রেস নামে কি কোনো ট্রেন চলতো?

0

দীর্ঘদিন ধরে “হারিয়ে যাওয়া একটি ট্রেনের নাম মাশরিক-মাগরিব এক্সপ্রেস,উর্দুতে মাশরিক শব্দের অর্থ পূর্ব এবং মাগরিব শব্দের অর্থ হলো পশ্চিম। পশ্চিম পাকিস্তান ও পূর্ব পাকিস্তানের মধ্যে যোগাযোগের উদ্দেশ্য ও পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া দুই ভুখন্ডকে সংযোগ করতে এটি ছিল ঐতিহাসিক ট্রেন। অর্থাৎ পশ্চিম পাকিস্তান থেকে পূর্ব পাকিস্তানের (বাংলাদেশ) মধ্যে চলাচলকারী একটি ট্রেন পরিসেবা। এই ট্রেনটি  ১৯৫০-১৯৫৫ সালের দিকে চলাচল করতো” শীর্ষক শিরোনামে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে আসছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে
পোস্টগুলোর আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান তথা বর্তমান বাংলাদেশের চট্টগ্রাম থেকে পাকিস্তানে ১৯৫০-১৯৫৫ সালে মাশরিক-মাগরিব এক্সপ্রেস নামে ট্রেন চলাচলের দাবিটি সঠিক নয় বরং এই তথ্যটি উইকিপিডিয়া সূত্রে ভিত্তিহীনভাবে দীর্ঘদিন ধরে প্রচার হয়ে আসছিলো।

যা দাবি করা হচ্ছে

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া পোস্টগুলোতে দাবি করা হচ্ছে, মাশরিক-মাগরিব এক্সপ্রেস একটি হারিয়ে যাওয়া ট্রেনের নাম। উর্দুতে মাশরিক শব্দের অর্থ পূর্ব এবং মাগরিব শব্দের অর্থ হলো পশ্চিম। পশ্চিম পাকিস্তান ও পূর্ব পাকিস্তানের মধ্যে যোগাযোগের উদ্দেশ্য ও পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া দুই ভুখন্ডকে সংযোগ করতে এটি ছিল ঐতিহাসিক ট্রেন। এই ট্রেনটি  ১৯৫০-১৯৫৫ সালের দিকে চলাচল করতো।

পোস্টগুলোর তথ্যানুযায়ী, ভারতের ভূখন্ড ব্যবহার করে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংযোগ করতে কয়েকদফা মিটিং হয় দুই দেশের মধ্যে। এতে সিদ্ধান্ত হয় লাহোর থেকে দিল্লি অবধি একটি ট্রেন চলাচল করবে ও আরেকটি ট্রেন পূর্ব পাকিস্তান অবধি চলবে, সেটি হবে প্যাসেঞ্জার ট্রেন। অতঃপর ট্রেনটি পশ্চিম পাকিস্তানের বেলুচিস্তানের কোহ-ই-তাফতান (Kuh-e-Taftan) থেকে পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) চট্রগ্রাম পর্যন্ত চলতো। 

ট্টেনটি ভারতের পাঞ্জাবের আটারি(Attari) হয়ে বাংলাদেশের দর্শনা হয়ে ঢুকতো। চলার পথে এই ট্রেন ভারতের প্রায় ১৯৮৬ কিলোমিটার রেল ট্র্যাক এবং রোলিং স্টক ব্যবহার করতো। পশ্চিম পাকিস্তান থেকে পূর্ব পাকিস্তান আসতে ট্রেনটির প্রায় ৫/৬ দিন লেগে যেতো ও যাত্রাপথে ফেরি ও পারাপার হতে হতো। 

পোস্টগুলোর  দাবি অনুযায়ী, এটি একই রেক নিয়ে চলাচল করতো না। লম্বা রাস্তা চলতে গিয়ে পথিমধ্যে ট্রেনের রেক ও কয়েকদফা বদল করতে হতো। যাত্রীরা এক ট্রেন থেকে নেমে অন্য ট্রেনে উঠতো। পূর্ব পাকিস্তানে নদী পারাপারে তখন ফেরী ব্যাবহার করতো বলে জানা যায়।

এছাড়া এসব পোস্টে আরও বলা হয়, নথিপত্র না থাকায় ট্রেনটির ব্যাপারে বিস্তারিত জানা যায়নি।

মাশরিক-মাগরিব এক্সপ্রেস ট্রেন সম্পর্কিত তথ্যের সূত্রপাত ও সত্যতা যাচাই

মাশরিক-মাগরিব এক্সপ্রেস ট্রেন সম্পর্কিত তথ্যের সূত্রপাত অনুসন্ধানেকি-ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে ভারতীয় গণমাধ্যম OpIndia তে ২০২১ সালের ১৮ জুন “Information about a fictitious train on ‘reliable’ Wikipedia, picked up by websites and academic journals: Here is how it originated” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, মাশরিক-মাগরিব এক্সপ্রেস ট্রেন সম্পর্কিত তথ্যের সূত্রপাত ২০১৬ সালের ২৮ নভেম্বর PAKHIGHWAY নামে একজন উইকিপিডিয়া সম্পাদকের মাধ্যমে। 

তিনি উইকিপিডিয়ার Pakistan Eastern Railway এর উইকিপেজ সম্পাদনা করে সেখানে ৫২১৪ নাম্বার বিশিষ্ট মাশরিক-মাগরিব এক্সপ্রেস ট্রেন সম্পর্কিত তথ্য লিপিবদ্ধ করেন৷ 

এই সম্পাদনা অনুসারে, ট্রেনটি ১৯৫০ থেকে ১৯৫৫ সাল পর্যন্ত চলাচল করতো। যেটি পশ্চিম পাকিস্তানের বেলুচিস্তানের কোহ-ই-তাফতান (Kuh-e-Taftan) থেকে পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) চট্রগ্রাম পর্যন্ত চলতো। ট্টেনটি ভারতের আটারি(Attari) ও বেনাপোলের মধ্যে ১৯৮৬ কিলোমিটার বা ১২৪৫ মাইল ভারতের রেলপথ এবং রোলিং স্টক ব্যবহার করতো।

OpIndia এর প্রতিবেদনটির সূত্রে উইকিপিডিয়া থেকে এই তথ্যটি সরিয়ে ফেলার পূর্বের Pakistan Eastern Railway এর উইকিপেজে মাশরিক-মাগরিব এক্সপ্রেস ট্রেন সম্পর্কিত তথ্যের উপস্থিতির সত্যতা পাওয়া যায়।

এছাড়া প্রতিবেদনটি থেকে আরও জানা যায়, মাশরিক-মাগরিব এক্সপ্রেস ট্রেন সম্পর্কিত তথ্যটি ভুয়া। তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তান ও পূর্ব পাকিস্তানের মধ্যে সরাসরি চলাচলকারী এই ধরনের ট্রেন সম্পর্কিত কোনো প্রমাণ নেই। যদি থাকতো তবে সেটার ঐতিহাসিক প্রমাণ থাকতো। প্রকৃতপক্ষে পাকিস্তানের প্রথম গভর্নর জেনারেল ও পাকিস্তানের জাতির পিতা মুহাম্মদ আলি জিন্নাহ পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে ১২৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি ট্রানজিট করিডোরের প্রস্তাব দিয়েছিলেন৷ তবে সে সময় ব্রিটিশ সরকার বা ভারতের কংগ্রেস পার্টি কেউই এটিতে রাজি হয়নি।

এছাড়া OpIndia এর প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়, উইকিপিডিয়ায় মাশরিক-মাগরিব এক্সপ্রেস ট্রেন সম্পর্কিত তথ্যে ত্রুটিপূর্ণ যুক্তি রয়েছে। দুই পাকিস্তানের মধ্যে চলাচলকারী এত গুরুত্বপূর্ণ একটি ট্রেন পাকিস্তানের একদম পশ্চিমের একটি পর্বতঘেরা ছোট শহর কোহ-ই-তাফতান রেল স্টেশন থেকে চালানোর কোনো কারণ নেই৷ এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ একটি ট্রেন পশ্চিম পাকিস্তানের বড় শহর যেমন লাহোর বা করাচী থেকে চালানোর কথা। একই কথা প্রযোজ্য পূর্ব পাকিস্তান তথা বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও৷ কারণ, চট্টগ্রাম বাংলাদেশের পূর্বপ্রান্তে অবস্থিত। পশ্চিম পাকিস্তান থেকে চলা এমন কোনো ট্রেনের ঢাকাতেই আসার কথা।

পরবর্তীতে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানেও মাশরিক-মাগরিব এক্সপ্রেস ট্রেন সম্পর্কিত বিশ্বস্তসূত্রে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায় না।  

এছাড়া অনুসন্ধানে দেখা যায়, উইকিপিডিয়া থেকে ২০২০ সালের ১৬ আগস্ট মাশরিক-মাগরিব এক্সপ্রেস ট্রেন সম্পর্কিত তথ্যটির কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র উল্লেখ না থাকায় মুছে ফেলা হয়েছে। 

পরবর্তীতে Pakistan Eastern Railway এর বর্তমান উইকিপেজে এই সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। অর্থাৎ, মাশরিক-মাগরিব এক্সপ্রেস ট্রেন সম্পর্কিত তথ্যটি উইকিপিডিয়া থেকে মুছে ফেলা হয়েছে।

অনুসন্ধানে আরও দেখা যায়, মাশরিক-মাগরিব এক্সপ্রেস ট্রেন সম্পর্কিত তথ্য উইকিপিডিয়ার পেজে PAKHIGHWAY নামে যে উইকিপিডিয়া সম্পাদক যুক্ত করেছিলেন, সেই সম্পাদককে একাধিক একাউন্ট ব্যবহার সহ একাধিক অভিযোগে উইকিপিডিয়া থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

অর্থাৎ, উইকিপিডিয়ায় যিনি মাশরিক-মাগরিব এক্সপ্রেস ট্রেন সম্পর্কিত তথ্য যুক্ত করেছিলেন, তিনিও কোনোও নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রদানকারী নন।

উল্লেখ্য, পাকিস্তানের লাহোরের পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘Why Pakistan Railways Has Failed To Perform: A Special Focus On Passenger Perspective‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রেও উইকিপিডিয়ার সূত্রে মাশরিক-মাগরিব এক্সপ্রেস ট্রেন সম্পর্কিত তথ্য তুলে ধরা হয়েছিল।

মূলত, ২০১৬ সালের ২৮ নভেম্বর PAKHIGHWAY নামে একজন উইকিপিডিয়া সম্পাদক Pakistan Eastern Railway এর উইকিপেজ সম্পাদনা করে সেখানে ৫২১৪ নাম্বার বিশিষ্ট মাশরিক-মাগরিব এক্সপ্রেস ট্রেন সম্পর্কিত তথ্য লিপিবদ্ধ করেন৷ সেখানে তিনি লিখেন, ট্রেনটি ১৯৫০ থেকে ১৯৫৫ সাল পর্যন্ত চলাচল করতো। যেটি পশ্চিম পাকিস্তানের বেলুচিস্তানের কোহ-ই-তাফতান (Kuh-e-Taftan) থেকে পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) চট্রগ্রাম পর্যন্ত চলতো। ট্টেনটি ভারতের আটারি(Attari) ও বেনাপোলের মধ্যে ১৯৮৬ কিলোমিটার বা ১২৪৫ মাইল ভারতের রেলপথ এবং রোলিং স্টক ব্যবহার করতো। পরবর্তীতে মাশরিক-মাগরিব এক্সপ্রেস ট্রেন সম্পর্কিত এই তথ্যগুলোই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও ছড়িয়ে পড়ে। তবে উইকিপিডিয়া কর্তৃপক্ষ ২০২০ সালের ১৬ আগস্ট মাশরিক-মাগরিব এক্সপ্রেস ট্রেন সম্পর্কিত তথ্যটির কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র উল্লেখ না থাকায় মুছে ফেলে। এছাড়া PAKHIGHWAY নামে ঐ সম্পাদককে একাধিক একাউন্ট ব্যবহার সহ একাধিক অভিযোগে উইকিপিডিয়া থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। 

প্রসঙ্গত, উইকিপিডিয়া যে তথ্যের কোনো শতভাগ নির্ভরযোগ্য সূত্র নয় এবং উইকিপিডিয়া কিভাবে কাজ করে এ সম্পর্কে জানতে রিউমর স্ক্যানারের প্রতিবেদন দেখুন এখানে। 

সুতরাং, তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান তথা বর্তমান বাংলাদেশের চট্টগ্রাম থেকে পাকিস্তানে ১৯৫০-১৯৫৫ সালে মাশরিক-মাগরিব এক্সপ্রেস নামে ট্রেন চলাচলের দাবিটি সঠিক নয়; এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

মেসিই বিশ্বকাপে প্রথম ২ টি পেনাল্টি মিস করেননি

0

সম্প্রতি “বিশ্বকাপে মেসি প্রথম খেলোয়াড়, যার দুইটা পেনাল্টি ঠেকিয়ে দেওয়া হয়েছে” শীর্ষক শিরোনামে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচারিত হচ্ছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এখানে।
পোস্টগুলোর আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এখানে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, বিশ্বকাপের ইতিহাসে প্রথম ২টি পেনাল্টি মিসকারী ফুটবলার লিওনেল মেসি নন বরং ঘানার ফুটবলার আসামোয়াহ জ্ঞান।

কি-ওয়ার্ড সার্চ পদ্ধতিতে গত ১ ডিসেম্বরে অনলাইট পোর্টাল ‘GhanaWeb’ এর ওয়েবসাইটে “Messi equals Asamoah Gyan’s unenviable penalty miss record at World Cup” শীর্ষক শিরোনামে একটি সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়।

সংবাদ বিবরণীতে বলা হয়েছে, “মেসি এই বিশ্বকাপে তার তিনটি পেনাল্টি কিকের মধ্যে দুটি মিস করে বিশ্বকাপে মোট পেনাল্টি মিস করার রেকর্ডে আসামোয়াহ জ্ঞানের সমান হয়েছেন। প্রাক্তন ব্ল্যাক স্টার অধিনায়ক, ঘানার ফুটবলার আসামোয়াহ জ্ঞান, বিশ্বকাপে চারটি স্পট কিকের মধ্যে দুটি মিস করেছেন।”

চলমান কাতার 2022 বিশ্বকাপে মেক্সিকো বনাম আর্জেন্টিনা ম্যাচে মেসির সাম্প্রতিকতম পেনাল্টি মিসটি ঘটে।

অন্যদিকে, আসামোয়াহ জ্ঞান ২০১০ সালের বিশ্বকাপে শেষবার পেনাল্টি মিস করেন। ঐ পেনাল্টি মিসটিকে বিশ্বকাপের ইতিহাসে সবচেয়ে স্মরণীয় পেনাল্টি মিস বলা হয়। কারণ, ঐ একটি পেনাল্টির উপর নির্ভর করছিলো প্রথমবারের মতো ঘানার বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনালে খেলতে পারার বিষয়টি।

পরবর্তীতে, গত ১৬ আগস্ট তারিখে ‘BBC’ এর ওয়েবসাইটে “Asamoah Gyan eyes shock return to Ghana squad for World Cup in Qatar” শীর্ষক শিরোনামে একটি সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়।

সংবাদে ২০১০ সালের বিশ্বকাপে আসামোয়াহ জ্ঞানের ঘানা বনাম উরুগুয়ে ম্যাচের সেই স্মরণীয় পেনাল্টি মিসের ব্যাপারটি উল্লেখ করা হয়েছে।

মূলত, চলমান কাতার 2022 বিশ্বকাপে মেক্সিকো বনাম আর্জেন্টিনা ম্যাচে, মেসি একটি পেনাল্টি মিস করায় বিশ্বকাপে তাঁর মোট পেনাল্টি মিসের সংখ্যা দাঁড়ায় ২। এর প্রেক্ষিতে বিশ্বকাপে প্রথম ২টি পেনাল্টি মিস করেন মেসি এমন দাবিটি ছড়িয়ে পড়ে। তবে, মেসির পূর্বে ঘানার স্ট্রাইকার আসামোয়াহ জ্ঞান ২ টি পেনাল্টি মিস করেন ২০১০ সালের বিশ্বকাপে ঘানা বনাম উরুগুয়ে ম্যাচের সেই স্মরণীয় পেনাল্টি মিসের মাধ্যমে। ২০২২ সালে মেক্সিকো বনাম আর্জেন্টিনা ম্যাচে পেনাল্টি মিস করে মেসি পেনাল্টি মিস করার রেকর্ডে আসামোয়াহ জ্ঞানের সমান হয়েছেন।

উল্লেখ্য, চলতি বিশ্বকাপে মেক্সিকো বনাম আর্জেন্টিনা ম্যাচটি আর্জেন্টিনা জিতেছে। অন্যদিকে ২০১০ সালের বিশ্বকাপে ঘানা বনাম উরুগুয়ে ম্যাচটিতে ৪-২ পেনাল্টি স্কোরের ব্যবধানে হার মেনে নিতে হয়েছিলো ঘানাকে। 

প্রসঙ্গত, বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করে ছড়ানো গুজবকে শনাক্ত করে প্রতিনিয়ত ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, “বিশ্বকাপের ইতিহাসে ২ বার পেনাল্টি মিস করা প্রথম ফুটবলার মেসি” শীর্ষক দাবিতে যে তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

৮ থেকে ১২ ডিসেম্বর বাংলাদেশ থেকে কোনো দেশের ফ্লাইটে সিট না থাকার দাবিটি মিথ্যা

0

সম্প্রতি “৮ তারিখ থেকে ১২ তারিখ পর্যন্ত  বাংলাদেশ থেকে কোনো দেশে কোনো এয়ারলাইন্সে কোনো ক্লাশে কোনো সিট নাই! রাগব বোয়াল পালাচ্ছে” শীর্ষক একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে
পোস্টগুলোর আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রচারিত তথ্যটি সত্য নয় বরং ৮-১২ তারিখে বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন দেশের ফ্লাইটে সিট খালি রয়েছে।

গুজবের সূত্রপাত

অনুসন্ধানে ২ ডিসেম্বর রাত ৩টা ৩মিনিটে ‘Shamsul Alam’ নামক একটি ফেসবুক প্রোফাইল থেকে প্রথম পোস্টটি পাওয়া যায়। 

পরবর্তীতে, সকাল ১১টা ৪৫মিনিটে ‘ফাতেমা-তুজ জোহরা মীতু’ নামক একটি প্রোফাইল থেকে একই পোস্টটি প্রকাশ করা হলে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে।

অনুসন্ধানে, বাংলাদেশ বিমান এর ই-টিকেটিং সাইটে বাংলাদেশ থেকে কানাডা, দুবাই, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, ভারত সহ বেশকিছু দেশের ফ্লাইটে সিট খালি পাওয়া যায়।

স্ক্রিনশটঃ বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ওয়েবসাইট

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে বাংলাদেশ থেকে কানাডার ফ্লাইটে ৯ ডিসেম্বরে দুই ক্লাসে মোট ৬টি সিট খালি পাওয়া গেছে

স্ক্রিনশটঃ বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ওয়েবসাইট

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে বাংলাদেশ থেকে সিঙ্গাপুরের ফ্লাইটে বিজনেস ক্লাসে ৯ ডিসেম্বরে ৪ টি সিট খালি পাওয়া গেছে। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ১০ ডিসেম্বর ২ টি ও ১১ ডিসেম্বর ১ টি সিট খালি পাওয়া গেছে।

স্ক্রিনশটঃ বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ওয়েবসাইট

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে বাংলাদেশ থেকে আরব আমিরাতের (দুবাই) ফ্লাইটে ১২ ডিসেম্বরে বিজনেস ক্লাসে ৬ টি সিট খালি পাওয়া গেছে

স্ক্রিনশটঃ বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ওয়েবসাইট

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে বাংলাদেশ থেকে থাইল্যান্ডের ফ্লাইটে দুই ক্লাসে ৯ ডিসেম্বরে মোট ৮ টি সিট খালি পাওয়া গেছে

স্ক্রিনশটঃ বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ওয়েবসাইট

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে বাংলাদেশ থেকে ভারতের ফ্লাইটে ১০ ডিসেম্বরে বিজনেস ক্লাসে ৭ টি সিট খালি পাওয়া গেছে

যা বলেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ রিউমর স্ক্যানারকে জানিয়েছে, বাংলাদেশ থেকে কানাডাতে সপ্তাহে দুইদিন দুটি ফ্লাইট রয়েছে। ডিসেম্বরে বছরের অন্যান্য সময়ের থেকে বিদেশে বেশি মানুষ ট্রাভেল করে। ফলে ডিসেম্বরের দিকে সিট কম খালি থাকে। কিন্তু ফেসবুকে প্রচারিত দাবিটি সত্য নয়, সিট যে খালি আছে তা তো অনলাইনেই দেখা যাচ্ছে।

ইউ এস বাংলা এয়ারলাইনসের আপডেট

অনুসন্ধানে দেখা যায় ইউ এস বাংলা এয়ারলাইন্সের (তাদের বাংলাদেশ-কানাডা ফ্লাইট নেই) দুবাই, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড সহ বেশকিছু দেশের ফ্লাইটে সিট খালি পাওয়া যায় (সবগুলো চেক করা হয়েছে ৫ ডিসেম্বর দুপুর ১ টার দিকে)।

ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সে বাংলাদেশ থেকে আরব আমিরাত (দুবাই) ফ্লাইটে ৯ ডিসেম্বরে ২১ টি সিট খালি পাওয়া গেছে

ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সে বাংলাদেশ থেকে ব্যাংকক ফ্লাইটে ১০ ডিসেম্বরে ৪টি সিট খালি পাওয়া গেছে

ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সে বাংলাদেশ থেকে সিঙ্গাপুরের ফ্লাইটে ৮ ডিসেম্বরে ১০টি সিট খালি পাওয়া গেছে

ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সে বাংলাদেশ থেকে সিঙ্গাপুরের ফ্লাইটে ৯ ডিসেম্বরে ৪টি সিট খালি পাওয়া গেছে

মূলত, সারাদেশে সমাবেশের অংশ হিসেবে রাজধানী ঢাকায় ১০ ডিসেম্বর গণসমাবেশের ডাক দিয়েছে বিরোধী দল বিএনপি। এই সমাবেশকে ঘিরে দলটির কিছু নেতাকর্মীরা বিভিন্ন মাধ্যমে দাবি করেছেন ১০ ডিসেম্বরের পরে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের অনেক নেতাকর্মী দেশ ছেড়ে পালাবেন। সেই দাবির সাথে মিলিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পুনরায় ভিত্তিহীনভাবে দাবি করা হচ্ছে যে “৮-১২ ডিসেম্বর বাংলাদেশ থেকে কোনো দেশের কোনো ফ্লাইটে কোনো সিট খালি নেই” তথা পূর্বেই বুকিং দিয়ে রাখা হয়েছে। তবে অনুসন্ধানে এই সময়ের মধ্যে বেশকিছু ফ্লাইটে সিট খালি পাওয়া গেছে।

উল্লেখ্য, গত ১২ই অক্টোবর চট্টগ্রাম থেকে বিভাগীয় গণসমাবেশ কর্মসূচী শুরু করে বিএনপি যা শেষ হবে ঢাকায় ১০ই ডিসেম্বর সমাবেশের মধ্য দিয়ে। জ্বালানি তেল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি, দলীয় কর্মসূচিতে গুলি করে নেতা-কর্মীদের হত্যার প্রতিবাদ, নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবিতে বিভাগীয় (দলের সাংগঠনিক বিভাগ) পর্যায়ে এই সমাবেশের কর্মসূচি শুরু করে বিএনপি

প্রসঙ্গত, আগামী ১০ ডিসেম্বর বিরোধী দল বিএনপি রাজধানী ঢাকায় গণসমাবেশ আয়োজন করবে এবং এই সমাবেশকে ঘিরে দলটির নেতাকর্মীরা সরকার পতন সহ বিভিন্ন বক্তব্য দিয়েছেন। বাংলাদেশের রাজনীতি সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য ও ছবি নিয়ে ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি ফ্যাক্ট-চেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, “৮-১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে কোনো দেশে কোনো এয়ারলাইন্সে কোনো ক্লাসে কোনো সিট নাই! রাঘব বোয়াল পালাচ্ছে” শীর্ষক দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

আর্থিক প্রতারণার উদ্দেশ্যে ভারতীয় শিশুকে বাংলাদেশী শিশু জান্নাত দাবিতে প্রচার

0

সম্প্রতি, “আসসালামু আলাইকুম দয়া করে কেউ এরিয়ে যাবেন না প্লিজ, সাহায্য করতে না পারলেও দয়া করে শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন” শীর্ষক শিরোনামে একটি শিশুর ছবি সংযুক্ত করে শিশুটিকে বাংলাদেশী জান্নাত দাবিতে একটি মানবিক সাহায্যের আবেদন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে।
পোস্টগুলোর আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, শিশু জান্নাত নামে প্রচারিত ছবিটি কোনো বাংলাদেশি শিশুর নয় বরং এটি ভারতের রোগাক্রান্ত শিশু আফিয়ার ছবি। 

রিভার্স ইমেজ সার্চ পদ্ধতির মাধ্যমে, ভারতের গণ-অর্থায়ন প্লাটফর্ম ‘Ketto’ এর অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে ২০১৯ সালের ০৭ জানুয়ারীতে “Please Save My Aafiya, She Is On The Verge Of Dying” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

ভিডিওতে রোগাক্রান্ত যে শিশুটিকে দেখানো হয়েছে তার সাথে আলোচিত ছবির শিশুটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

ভিডিওর বিবরণী থেকে জানা যায়, শিশুটির নাম আফিয়া। ছয় বছর বয়সী শিশুটি গওচার ডিজিজ নামক রোগে আক্রান্ত। 

ভিডিওর ক্যাপশনে সংযুক্ত লিংকের সূত্র ধরে Ketto এর ওয়েবসাইটে এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদনও খুঁজে পাওয়া যায়।  

প্রতিবেদনে থাকা আবেদনটিতে যুক্ত করা বিভিন্ন ব্যবস্থাপনা পত্র থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে শিশুটি ২০১৭ সাল থেকে গাউচার ডিজিজ নামক এক বিরল রোগে আক্রান্ত ছিল। তাকে বাঁচানোর একমাত্র উপায় ছিল ব্যয়বহুল অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন। এই অস্ত্রোপচারের পর তাকে পর্যবেক্ষণের জন্য ৩ মাস হাসপাতালে থাকার প্রয়োজন ছিল।

একই প্রতিবেদনের ‘Update’ অংশে আফিয়ার বাবা মোহাম্মদ মহসিনের একটি কমেন্ট খুঁজে পাওয়া যায়। তিনি জানান, তার মেয়ে আগের চেয়ে ভালো আছে এবং নিয়মিত চেকআপের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে।  তিনি আফিয়ার একটি ছবিও প্রকাশ করেন সেই কমেন্টে।

এছাড়া, সাম্প্রতিক সময়ে জান্নাত নামে আর্থিক সাহায্যের জন্য আবেদনকৃত ফেসবুক পোস্টগুলোয় উল্লিখিত ব্যক্তিগত বিকাশ ও নগদ নাম্বারে যথাক্রমে (01935353640, 01935353640, 01935353640, 01935353640) একাধিক বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করে তা বন্ধ পাওয়া যায়।

মূলত, ছবিটি ভারতীয় শিশু আফিয়ার। শিশুটি গওচার ডিজিজ রোগে আক্রান্ত হয়ে ২০১৯ সালে হাসপাতালে ভর্তি ছিল। কিন্তু ভারতীয় এই শিশুর ছবি ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহ করে বাংলাদেশি রোগাক্রান্ত শিশু জান্নাতের চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহায়তা প্রয়োজন দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, রিউমর স্ক্যানার টিম পূর্বেও বিভিন্ন নাম ব্যবহার করে প্রতারণার উদ্দেশ্যে আর্থিক সাহায্য চেয়ে করা পোস্টগুলোকে শনাক্ত করে একাধিক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

সুতরাং, আর্থিক প্রতারণার উদ্দেশ্যে ভারতীয় শিশু আফিয়াকে বাংলাদেশী শিশু জান্নাত দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

আর্জেন্টিনা ও মেসিকে নিয়ে ডেভিড ওয়ার্নারের ভুয়া মন্তব্য প্রচার

0

সম্প্রতি “ডেভিড ওয়ার্নার আর্জেন্টিনাকে কাতার বিশ্বকাপের ফেবারিট বলেছেন” শীর্ষক একটি দাবি যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচারিত হচ্ছে।

যা দাবি করা হচ্ছে

ছড়িয়ে পড়া পোস্টগুলোতে ডেভিড ওয়ার্নারকে ছাতা মাথায় দিয়ে দাঁড়িয়ে ছাতা মাথায় এক নারী উপস্থাপককে সাক্ষাৎকার দিতে দেখা যাচ্ছে। 

পোস্টগুলোর ক্যাপশনে লেখা রয়েছে, “সাংবাদিক: কাতার বিশ্বকাপে কোন দল ফেভারিট?
ওয়ার্নারঃ ‘অবশ্যই আর্জেন্টিনা।’ 
সাংবাদিক: কেনো আর্জেন্টিনা ফেবারিট মনে হলো?
ওয়ার্নার: কারণ এই দলে লিওনেল মেসির মতো খেলোয়াড় আছে।”

ফেসবুকে প্রচারিত এরকম কিছু পোস্ট দেখুন এখানেএখানেএখানেএখানে এবং এখানে। 
পোস্টগুলোর আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানেএখানেএখানেএখানে এবং এখানে।  

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, কাতার বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করে আর্জেন্টিনা ও মেসি প্রসঙ্গে ডেভিড ওয়ার্নার উক্ত বক্তব্য দেননি বরং ওয়ার্নারের একটি ইন্টারভিউয়ের স্ক্রিনশটের সাথে ভিত্তিহীনভাবে উক্ত ক্যাপশনের বক্তব্যটি প্রচারিত হচ্ছে। 

অনুসন্ধানে মূলধারার কোনো গণমাধ্যম, ডেভিড ওয়ার্নারের ভেরিফাইড ফেসবুক একাউন্ট এবং নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্র থেকে উক্ত বক্তব্যের কোনো ভিত্তি পাওয়া যায় নি।

স্ক্রিনশটের সূত্র ধরে অনুসন্ধান যেভাবে  

ছড়িয়ে পড়া পোস্টের সাথে সংযুক্ত স্ক্রিনশটটি ভালোভাবে লক্ষ্য করলে দেখা যায়, স্ক্রিনশটের কোণায় একটি স্কোরকার্ড দেখা যাচ্ছে। যেখানে উল্লেখ রয়েছে, বৃষ্টির কারণে খেলা বন্ধ আছে। ঐ সময়ে ১ উইকেটে ৪৯ রান করেছে ইংল্যান্ড। ওয়ার্নার যেহেতু অষ্ট্রেলিয়ার খেলোয়াড়, তাই উক্ত ম্যাচটি ইংল্যান্ড ও অষ্ট্রেলিয়ার মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়েছিল বলে প্রতীয়মান হয়।

উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে ক্রিকেট বিষয়ক ওয়েবসাইট ‘Cricinfo’তে চলতি বছরের ১৪ অক্টোবর অষ্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরায় অনুষ্ঠিত ইংল্যান্ড ও অষ্ট্রেলিয়ার মধ্যকার তৃতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচের একটি স্কোরকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়। 

স্কোরকার্ডে দেখা যায়, ইংল্যান্ড ১ম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ৬ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে ৪৭ রান করে। পরের ওভারে অ্যাডাম জাম্পার প্রথম বলে দুই রান এবং দ্বিতীয় বলে কোনো রান হয়নি। এরপরই বৃষ্টির কারণে খেলা বন্ধ হয়ে যায়। অর্থাৎ, খেলা বন্ধ হওয়ার আগে স্কোরকার্ডে ইংল্যান্ডের স্কোর ছিল ৪৯/১, যেটি মিলে যায় আলোচিত স্ক্রিনশটটির স্কোরকার্ডের সাথে।

ক্রিকইনফোর ঐ সময়ের কমেন্ট্রি সেকশনে ফক্স স্পোর্টস চ্যানেলকে দেওয়া ডেভিড ওয়ার্নারের একটি বক্তব্য খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত বক্তব্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ওয়ার্নার কাতার বিশ্বকাপ প্রসঙ্গে কোনো মন্তব্যই করেননি।  

কিন্তু এই ইন্টারভিউটি ঐদিন লাইভ ব্রডকাস্টে দেখানো হয়েছিল কিনা সে বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

সাধারণত আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচগুলোর পুরো ভিডিও ইন্টারনেটে পাওয়া যায়না। তবে হাইলাইটস পাওয়া যায়। ইউটিউবে আলোচিত ম্যাচটিরও হাইলাইটস খুঁজে পাওয়া যায়। তবে হাইলাইটস ভিডিওতে সাধারণত মাঠের খেলার মুহূর্তগুলোই জায়গা পাওয়ায় মাঠের বাইরে ওয়ার্নারের উক্ত ইন্টারভিউ খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

পরবর্তীতে ইউটিউবে ‘Cricket England’ নামক চ্যানেলে ম্যাচের দিনই (১৪ অক্টোবর) “Australia v England 3rd T20 14th October 2022 Full Commentary” শিরোনামে প্রকাশিত উক্ত ম্যাচের পুরো ধারাভাষ্যের অডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

আলোচিত স্ক্রিনশটে থাকা ইংল্যান্ডের ৪৯ রানে ১ উইকেট সময়কার সূত্র ধরে ধারাভাষ্যের অডিও সম্বলিত ভিডিওটি বিশ্লেষণ করে দেখে রিউমর স্ক্যানার টিম। ভিডিওর ১:০৩:৩৫ সেকেন্ড সময়ে ধারাভাষ্যকারকে বলতে শোনা যায়, ডেভিড ওয়ার্নার এখন আয়োজক ব্রডকাস্টারের সাথে কথা বলবেন। ওয়ার্নার প্রায় নয় মিনিট কথা বলেন সে সময়। তার বক্তব্যের পুরো সময়টায় তিনি অন্যান্য প্রসঙ্গের পাশাপাশি আসন্ন (১৬ অক্টোবর শুরু হয়েছিল) টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তার এবং দলের প্রত্যাশা নিয়ে কথা বলেন। কিন্তু কাতার বিশ্বকাপ নিয়ে কিছু বলেননি ওয়ার্নার। 

অর্থাৎ, উক্ত ম্যাচে ওয়ার্নারের ইন্টারভিউয়ের একটি স্ক্রিনশট ব্যবহার করে ওয়ার্নারের উদ্ধৃতি দিয়ে কাতার বিশ্বকাপ প্রসঙ্গে বানোয়াট বক্তব্য প্রচার করা হচ্ছে।

ভিন্ন ক্যাপশনে একই স্ক্রিনশট

আলোচিত স্ক্রিনশটটি ব্যবহার করে গত অক্টোবরে ভিন্ন একটি ক্যাপশনের পোস্ট ফেসবুকে ছড়াতে দেখা গিয়েছিল। 

উক্ত পোস্টে বলা হয়, “১৫ অক্টোবর ২০২২, শনিবার, গতকাল  তিন ম্যাচ টি টোয়েন্টি সিরিজে শেষ টি টোয়েন্টি ম্যাচে বৃষ্টির কারণে ইংল্যান্ড ও অস্ট্রোলিয়া খেলা হয়নি তবে যেটুকু খেলা গড়েছিলো মাঠে তখন ডেভিড ওয়ার্নার কে এক নারী ধারাভাষ্যকার প্রশ্ন করেছিলে আপনি বিশ্বকাপে কোন প্লেয়ারকে মিস করবেন,ডেভিড ওয়ার্নার: তামিম ইকবাল কে।”

কিন্তু অডিও কমেন্ট্রিতে ওয়ার্নারের ইন্টারভিউ অংশটি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে কোনো খেলোয়াড়কে মিস করবেন কিনা এমন কোনো প্রশ্নই ওয়ার্নারকে উক্ত ইন্টারভিউতে করা হয়নি।

অর্থাৎ, তামিমমকে জড়িয়ে ওয়ার্নারের উক্ত বক্তব্যটিও বানোয়াট। 

মূলত, গত অক্টোবরে অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের মধ্যে তৃতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচ চলাকালীন বৃষ্টির বাধায় খেলা বন্ধ থাকার সময়ে মাঠে ওয়ার্নারের ইন্টারভিউ নেয় হোস্ট ব্রডকাস্টার। প্রচারিত ইন্টারভিউয়ের একটি স্ক্রিনশট ব্যবহার করে পরবর্তীতে কাতার বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা ও মেসির বিষয়ে একটি মনগড়া ক্যাপশনকে ওয়ার্নারের বক্তব্য দাবিতে ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। অথচ, ওয়ার্নার উক্ত বক্তব্য দেননি। তাছাড়া, একই স্ক্রিনশট পূর্বেও তামিমের প্রসঙ্গ টেনে ওয়ার্নারের বক্তব্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছিল।  

সুতরাং, কাতার বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা ও মেসির প্রসঙ্গ টেনে ডেভিড ওয়ার্নার আর্জেন্টিনাকে কাতার বিশ্বকাপের ফেবারিট বলেছেন দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে ; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

মিশেল প্লাতিনির জার্সিতে ‘NO CORRUPTION’ লেখা ছিল না

0

সম্প্রতি “ম্যারাডোনার জার্সিতে লেখা ‘নো ড্রাগস’, প্লাতিনির জার্সিতে লেখা ‘নো করাপশন’।” শীর্ষক শিরোনামে একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে
পোস্টগুলোর আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়,এই ছবিতে ম্যারাডোনার জার্সিতে No Drug লেখা থাকার বিষয়টি সত্য হলেও প্লাতিনির জার্সিতে No Corruption লেখা থাকার বিষয়টি সঠিক নয় বরং প্লাতিনির জার্সিতেও ফরাসি ভাষায় নো ড্রাগস লেখা ছিল।

কি-ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে ফ্রান্সের ফুটবল ক্লাব Nancy Lorraine এর ওয়েবসাইটে ২০১৯ সালের ১৮ জুলাই “Were you at the Platini Jubilee?” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদনে থাকা ছবিটিতে দেখা যায়, আর্জেন্টিনার কিংবদন্তি ফুটবলার ম্যারাডোনার জার্সিতে ইংরেজিতে ‘No DRUG’ লেখা এবং ফরাসি ফুটবলার মিশেল প্লাতিনির জার্সিতে ফরাসী ভাষায় ‘DROGUE NO’ লেখা। 

পরবর্তীতে মিশেল প্লাতিনির জার্সিতে ফরাসী ভাষায় ‘DROGUE NO’ শব্দটি অনুবাদ করে দেখা যায়, এটির অর্থ ‘Drug no’ বা মাদক নয়।

অর্থাৎ, ম্যারাডোনার জার্সির মতোই মিশেল প্লাতিনির জার্সিতেও মূলত No Drug-ই লেখা। 

এছাড়া আমেরিকান বার্তা সংস্থা Associated Press (AP) এর ওয়েবসাইটেও “DIEGO MARADONA AND PELE WITH MICHEL PLATINI” শীর্ষক শিরোনামে আলোচিত ছবিটির আরেকটি ভার্সন খুঁজে পাওয়া যায়। 

এখানেও প্লাতিনির জার্সিতে একই লেখা অর্থাৎ ‘DROGUE NO’ বা মাদক নয় শব্দগুচ্ছই খুঁজে পাওয়া যায়।

উপরিউক্ত ছবিটি দুইটির কোথাও প্লাতিনির জার্সিতে ‘No Corruption’ শব্দগুচ্ছ খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

মূলত, ফ্রান্সের ন্যান্সি স্টেডিয়ামে প্লাতিনির পেশাদার ফুটবল খেলোয়াড় হিসাবে ক্যারিয়ারের সমাপ্তি উদযাপন করার জন্য একটি বিদায়ের আয়োজন করা হয়েছিল। যেটি ১৯৮৮ সালের ২৩ মে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এই অনুষ্ঠানে ব্রাজিলের কিংবদন্তি পেলেকে মাঝে রেখে ইংরেজিতে ‘NO DRUG’ বা মাদক নয় লেখা জার্সিতে আর্জেন্টিনার  ম্যারাডোনা, ও ফরাসি ভাষায় ‘DROGUE NO’ বা মাদক নয় লেখা জার্সিতে ফ্রান্সের মিশেল প্লাতিনির একটি ছবি তোলা হয়। এই আয়োজনের কোথাও প্লাতিনির জার্সিতে ‘No Corruption’ শব্দগুচ্ছ খুঁজে পাওয়া যায়নি। অর্থাৎ, প্লাতিনির জার্সিতে ‘No Corruption’ শব্দগুচ্ছ লেখা ছিল না। 

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে ডিসেম্বরে, ফিফা থেকে আট বছরের জন্য প্লাতিনিকে নিষিদ্ধ করে সংস্থাটির নীতি-নৈতিকতা বিষয়ক কমিশন। ওই আপিলে আদালতে সিদ্ধান্ত ছিল, ব্লাটার-প্লাতিনির লেনদেন ঠিক দুর্নীতি নয়, তবে বিষয়টি আইন বহির্ভূত। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল,  নামমাত্র পরমার্শ কাজের অজুহাতে ব্লাটারের অ্যাকাউন্ট থেকে প্লাতিনির অ্যাকাউন্টে ১.৮ মিলিয়ন ইউরো ঢুকে ছিল। পরবর্তীতে এই দুর্নীতির দায়মুক্তিতে প্লাতিনি চেষ্টা করলেও সাফল্য আসেনি।  ক্রীড়া আদালতেও তার আপিল ব্যর্থ হয়। তবে তাঁর নিষেধাজ্ঞা আট থেকে কমিয়ে চার বছর করা হয়। এছাড়া ২০২২ কাতার বিশ্বকাপ আয়োজন নিয়েও প্লাতিনির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আছে। 

অপরদিকে আর্জেন্টিনার কিংবদন্তি ফুটবলার ম্যারাডোনার বিরুদ্ধে মাদকাসক্তির অভিযোগ ছিল। এএফপির বরাতে জানা যায়, তিনি কয়েক দশক ধরে কোকেন আসক্তির সঙ্গে লড়াই করার পর ৬০ বছর বয়সে ২০২০ সালে মারা যান। 

সুতরাং, ম্যারাডোনার জার্সিতে লেখা ‘নো ড্রাগস’, প্লাতিনির জার্সিতে লেখা ‘নো করাপশন’। শীর্ষক দাবিটি পুরোপুরি সঠিক নয়; এটি আংশিক মিথ্যা।

তথ্যসূত্র