Home Blog Page 549

ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচন নিয়ে মোহাম্মদ এ. আরাফাতের বক্তব্য বিকৃত করে প্রচার

সম্প্রতি, ঢাকা-১৭ আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোহাম্মদ এ. আরাফাতের “চারিদিকে নৌকার ভোট। নৌকা তো এমনি জিতে যাবে। আমি ভোট না দিলেও জিতে যাবে” শীর্ষক বক্তব্যের একটি ভিডিও ‘আপনি ভোট না দিলেও নৌকা জিতে যাবে’ ক্যাপশনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমনকিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ‘আপনি ভোট না দিলেও জিতে যাবে’ শীর্ষক বক্তব্যটি মোহাম্মদ এ. আরাফাতের দেওয়া বক্তব্যের সম্পূর্ণ বক্তব্যের একটি খণ্ডিত অংশ। মূল বক্তব্যের একটি অংশ কর্তন করে তৈরী করা এই ভিডিও ক্লিপটি বিভ্রান্তির উদ্দেশ্যে বিকৃতভাবে প্রচার করা হচ্ছে। 

প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ অনুসন্ধানের মাধ্যমে, বায়ান্ন টিভির ফেসবুক পেজে গত ১০ জুলাই “ভোট না দিলেও নৌকা জিতে যাবে, এ চিন্তা করে বসে থাকা যাবে না, ভোটকেন্দ্রে যেতে হবে : মোহাম্মদ এ আরাফাত” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot from Facebook

ভিডিওটিতে দেখা যায়, জনাব মোহাম্মদ এ. আরাফাতের দেওয়া বক্তব্যের ভিডিওর ১ মিনিট ২৯ সেকেন্ড থেকে ১ মিনিট ৪৪ সেকেন্ড পর্যন্ত উক্ত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর মিল খুঁজে পাওয়া যায়। সেদিন বক্তব্যে তিনি বলেন, “আমরা যদি ভাবি আমার ডানে নৌকার ভোট, বামে নৌকার ভোট, সামনে নৌকার ভোট, পিছে নৌকার ভোট, চারদিকে নৌকার ভোট। নৌকাতো এমনি জিতে যাবে, আমি ভোট না দিলেও জিতে যাবে। এই চিন্তা আমরা করতে পারবো না। এই চিন্তা করা যাবে না।”

যার মানে উক্ত বক্তব্যের শেষের “এই চিন্তা আমরা করতে পারবো না। এই চিন্তা করা যাবে না” এই অংশ বাদ দিয়ে প্রচার করা হচ্ছে।

এছাড়া আলোচিত ভিডিও ক্লিপটিকে বিকৃত দাবি করে মোহাম্মদ এ. আরাফাত গত ১৫ জুন তার নিজ ফেসবুক পেজ থেকে একটি পোস্টে বক্তব্যের সম্পূর্ণ ভিডিও প্রকাশ করেন।

Screenshot from Facebook

ভিডিওর ক্যাপশনে তিনি জানান, “আমার বক্তব্য এডিট করে স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকার শাবকগোষ্ঠী অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমি নাকি বলেছি, ‘আপনি ভোট না দিলেও নৌকা জিতে যাবে।’ অথচ আমি যা বলেছি তা একেবারেই এর উল্টো। অর্থাৎ, আমি বলেছি আপনি ভোট না দিলে যদি ভাবেন নৌকা জিতে যাবে, তা ঠিক নয়, আপনাকে ভোট দিতে যেতে হবে, তাহলেই নৌকা জিতবে।’ দেখুন আমার পুরো বক্তব্য।”

মূলত, গত ১০ জুলাই নির্বাচনী প্রচারণায় এক পথসভায় বক্তব্য প্রদানকালে ঢাকা-১৭ আসনের বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকার মার্কা প্রার্থী মোহাম্মদ এ আরাফাত বলেন, “যত মানুষ ভোট দিতে আসবে নৌকা তত বেশি ভোট পাবে। এটা আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি। কিন্তু আমরা যদি ভাবি, আমার ডানে নৌকার ভোট, বামে নৌকার ভোট, পিছে নৌকার ভোট, সামনে নৌকার ভোট, চারদিকে নৌকার ভোট, নৌকাতো এমনিতেই জিতে যাবে, আমি ভোট না দিলেও জিতে যাবে। এই চিন্তা আমরা করতে পারবো না, এই চিন্তা করা যাবে না। আমাকে যেতে হবে, আমার ঘরের লোককে নিয়ে যেতে হবে, আমার পাড়া প্রতিবেশী, বন্ধু বান্ধব, যাদেরকে চিনি, সবাইকে নিয়ে একাট্টা হয়ে উদ্বুদ্ধ করে আগ্রহী করে ভোট দিতে যেতে হবে। তবেই এই যে সমাজের মধ্যে জননেত্রী শেখ হাসিনার যে জনপ্রিয়তা, যে গ্রহণযোগ্যতা, নৌকার যে গ্রহণযোগ্যতা তার প্রতিফলন আমরা ব্যালটের মাধ্যমে দিব, ভোট প্রদানের মধ্যে দিব।” তবে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আরাফাতের সেই বক্তব্যের” নৌকাতো এমনিতেই জিতে যাবে, আমি ভোট না দিলেও জিতে যাবে।” শীর্ষক খণ্ডিত অংশটুকু প্রচার করা হচ্ছে, যেখানে উক্ত মন্তব্যের পর আরাফাতের করা “এই চিন্তা আমরা করতে পারবো না। এই চিন্তা করা যাবে না” শীর্ষক এই অংশটি বাদ দেওয়া হয়েছে। যার ফলে আলোচিত বক্তব্যটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে।

উল্লেখ্য, চলচ্চিত্র অভিনেতা ও সংসদ সদস্য আকবর হোসেন পাঠান ফারুকের মৃত্যুতে ঢাকা ১৭ আসন শূন্য ঘোষণা করা হয়েছে। উক্ত আসনে আগামী ১৭ জুলাই উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

প্রসঙ্গত, পূর্বেও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের নামে ভুল তথ্য প্রচার করার প্রেক্ষিতে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কিছু ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচন নিয়ে এক পথসভায় মোহাম্মদ এ. আরাফাতের দেওয়া এক দীর্ঘ বক্তব্যের একটি খণ্ডিত অংশ বিকৃতভাবে প্রচার করা হচ্ছে।

তথ্যসূত্র

রোনালদোর নিজের ছেলেকে সুইমিংপুল থেকে ছুড়ে ফেলে দেওয়ার ভিডিওটি এডিটেড

সম্প্রতি, বহুতল ভবনের ছাদের সুইমিংপুল থেকে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো নিজের ছেলেকে নিচে ফেলে দেওয়ার দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

ফেসবুক প্রচারিত এমন একটি ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

টিকটকে প্রচারিত এমন একটি  ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ইউটিউবে প্রচারিত এমন একটি ভিডিও দেখুন  এখানে (আর্কাইভ)  

যা দাবি করা হচ্ছে

প্রচারিত ভিডিওটিতে দাবি করা হচ্ছে, পর্তুগিজ ফুটবলার ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো একটি বহুতল ভবনের ছাদের সুইমিংপুল থেকে নিজের ছেলে ম্যাতেও রোনালদোকে ছুড়ে নিচে ফেলে দিচ্ছেন এবং হাত তালি দিয়ে উল্লাস করছেন। 

ফ্যাক্টিচেক

রিউমার স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, পর্তুগিজ ফুটবলার ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো বহুতল ভবনের ছাদের সুইমিংপুল থেকে নিজের ছেলে ম্যাতেও রোনালদোকে ছুড়ে নিচে ফেলে দেননি বরং নিজের পরিবারকে নিয়ে রোনালদোর আনন্দমুখর সময় কাটানোর মুহূর্তের একটি ভিডিওকে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় এডিট করে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে ভিডিওটির কিছু স্থিরচিত্র রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে ফুটবল ভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম  GOAL এর নামের ভেরিফাইড টুইটার  অ্যাকাউন্টে ২০২৩ সালের ৬ মে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Twitter

এই ভিডিওটির সাথে বহুতল ভবনের ছাদের সুইমিংপুল থেকে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর ছেলেকে নিচে ফেলে দেওয়ার ভিডিওটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner

ভিডিও দুটিতে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ও ম্যাতেও রোনালদোর পোষাক, অঙ্গভঙ্গি এবং সুইমিংপুলের হুবহু মিল রয়েছে। তবে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় এই ভিডিওটি এডিট করে সুইমিংপুলটিকে একটি বহুতল ভবনের ছাদে যুক্ত করা হয়। যাতে করে ভিডিওটি দেখে মনে হচ্ছে সুইমিংপুলটি বহুতল ভবনের ছাদে অবস্থিত এবং রোনালদো তার ছেলে ম্যাতেওকে ছুড়ে নিচে ফেলে দিচ্ছেন। 

এছাড়াও পরবর্তীতে Tony’s Football Stories নামে একটি ইউটিউব চ্যানেলে গত ৬ মে প্রকাশিত শর্টসে একই ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Youtube

পরবর্তীতে  প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে Sportsmanor নামে একটি স্পোর্টস ভিত্তিক অনলাইন পোর্টালে “Teaching His Son How to Dive Already” – Fans Have a Field Day as Cristiano Ronaldo Launches His Son, Mateo, in the Pool – Sportsmanor শিরোনামে গত ৭ মে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পায়। 

Screenshot: Sportsmanor

প্রতিবেদনটি থেকেও রোনালদো তার পরিবারের সদস্যদের সুইমিংপুলে আনন্দমুখর সময় কাটানোর কথাটি নিশ্চিত হওয়া যায়।

মূলত, সম্প্রতি ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ও তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সুইমিংপুলে আনন্দমুখর সময় কাটাতে দেখা যায়। সেসময় রোনালদো তার ছেলে ম্যাতেওকে ডাইভ দেওয়া শেখানোর জন্যে হাতে তুলে পানিতে ছুড়ে মারেন। যেটা এবং সেই দৃশ্য তখন ক্যামেরায় ধারণ করা হয়। পরবর্তীতে তা টুইটারে ছড়িয়ে পড়ে এবং বহুমানুষ তাতে রিটুইট করেন। উক্ত ভিডিওকেই এডিট করে সুইমিংপুলটিকে একটি বহুতল ভবনের ছাদে যুক্ত করে ‘রোনালদো বহুতল ভবনের ছাদের সুইমিংপুল থেকে নিজের ছেলে ম্যাতেও রোনালদোকে ছুড়ে নিচে ফেলে দিচ্ছেন এবং হাত তালি দিয়ে উল্লাস করছেন’ শীর্ষক দাবিটি ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে। 

উল্লেখ্য, পূর্বেও ইন্টারনেটে রোনালদোকে নিয়ে প্রচারিত একাধিক ভুল তথ্য শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

এমন কিছু প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, বহুতল ভবনের ছাদের সুইমিংপুল থেকে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর নিজের ছেলে ম্যাতেওকে ছুড়ে ফেলে দেওয়ার দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত ভিডিওটি সম্পূর্ণ এডিটেড। 

তথ্যসূত্র

  • ‘Goal’ Verified Twitter Account: post 
  • Tony’s Football Stories Youtube Channel: post
  • SportsManor Article: Link
  • Rumor Scanner’s Own Analysis 

আরটিভির ফটোকার্ড নকল করে অভিনেতা আফরান নিশোর বিষয়ে ভুয়া তথ্য প্রচার

0

সম্প্রতি ‘নাটকে অভিনয়ের আগে টাঙ্গাইলের এক বস্তি এলাকায় থাকতেন জনপ্রিয় অভিনেতা আফরান নিশো’ শীর্ষক একটি তথ্য আরটিভির আদলে তৈরি একটি ফটোকার্ডের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমনকিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ‘নাটকে অভিনয়ের আগে টাঙ্গাইলের এক বস্তি এলাকায় থাকতেন জনপ্রিয় অভিনেতা আফরান নিশো’ শীর্ষক দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত এই তথ্যটি সঠিক নয় এবং আরটিভিও এধরণের কোনো সংবাদ প্রচার করেনি বরং ভিত্তিহীনভাবে আরটিভির আদলে তৈরি করা একটি ফটোকার্ডের মাধ্যমে উক্ত দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আরটিভির আদলে তৈরি আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। সেখানে এই সংবাদটি প্রচারের কোনো নির্দিষ্ট তারিখ উল্লেখ করা হয়নি। তাছাড়া আলোচিত এই ফটোকার্ডের টেক্সট ফন্টের সাথে আরটিভির অন্যান্য ফটোকার্ডের টেক্সট ফন্টের ভিন্নতা রয়েছে। 

Image Comparison by Rumor Scanner

অনুসন্ধানে কি-ওয়ার্ড সার্চ পদ্ধতি ব্যবহার করে আরটিভির ওয়েবসাইট, ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ এবং আরটিভির ইউটিউব চ্যানেলে উক্ত তথ্য সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এছাড়াও, আরটিভি ছাড়াও অন্যকোনো গণমাধ্যমেও প্রাসঙ্গিক একাধিক কি ওয়ার্ড সার্চ করেও আলোচিত দাবিটির বিষয়ে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

Screenshot: Google Search

পরবর্তীতে বিষয়টি অধিকতর নিশ্চিতের জন্য ম্যানুয়ালি অনুসন্ধানে আরটিভির ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে গত ১৪ জুলাই অভিনেতা আফরান নিশোকে নিয়ে আলোচিত ফটোকার্ড সম্পর্কিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: RTV Facebook 

উক্ত পোস্টে আফরান নিশোকে নিয়ে প্রচারিত ফটোকার্ড সম্বলিত তথ্যটিকে ভুয়া সংবাদ উল্লেখ করে জানানো হয়, ‘আরটিভির নামে ছড়ানো এই ছবিটি নকল, আমাদের তৈরি নয়। বিভ্রান্তি এড়াতে আমাদের ফেসবুক পেজ ও অনলাইনের সঙ্গে থাকুন।’

অর্থাৎ, অভিনেতা আফরান নিশোকে নিয়ে আরটিভি এমন কোনো ফটোকার্ড কিংবা সংবাদ প্রকাশ করেনি।

পাশাপাশি, উপরোক্ত বিষয়গুলো পর্যালোচনা করলে এটা প্রতীয়মান হয় যে, ‘নাটকে অভিনয়ের আগে টাঙ্গাইলের এক বস্তি এলাকায় থাকতেন জনপ্রিয় অভিনেতা আফরান নিশো’ শীর্ষক দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সঠিক নয় এবং কোনো গণমাধ্যমে এমন কোনো সংবাদ প্রচার করা হয়নি।

মূলত, সম্প্রতি ‘নাটকে অভিনয়ের আগে টাঙ্গাইলের এক বস্তি এলাকায় থাকতেন জনপ্রিয় অভিনেতা আফরান নিশো’ শীর্ষক একটি তথ্য আরটিভির আদলে তৈরি একটি ফটোকার্ডের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আরটিভির ওয়েবসাইট, ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ এবং ইউটিউব চ্যানেলে উক্ত তথ্য সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও আরটিভির ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ থেকেও উক্ত ফটোকার্ডটি ভুয়া এবং তাদের তৈরি নয় বলেও জানানো হয়।

উল্লেখ্য, পূর্বেও বিভিন্ন গণমাধ্যমের ফটোকার্ড নকল করে মিথ্যা তথ্য প্রচার করা হলে সেসময় বিষয়গুলো নিয়ে  ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কয়েকটি প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, ‘নাটকে অভিনয়ের আগে টাঙ্গাইলের এক বস্তি এলাকায় থাকতেন জনপ্রিয় অভিনেতা আফরান নিশো’ শীর্ষক একটি তথ্যকে আরটিভির আদলে তৈরি একটি ফটোকার্ডের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং প্রচারিত ফটোকার্ডটি এডিটেড।

তথ্যসূত্র

ভারতীয় নারীর সাপের বাচ্চা জন্ম দেওয়ার ভাইরাল দাবিটি ভুয়া

সম্প্রতি, ‘ভারতে মহিলার পেটে সাপের বাচ্চা’ শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

বাংলাদেশের আলোচিত ইসলামি বক্তা গিয়াসউদ্দিন তাহেরির ফেসবুকে প্রচারিত এই সম্পর্কিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ইউটিউবে প্রচারিত এমন কিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

টিকটকে প্রচারিত এমন কিছু ভিডিও এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ভারতে এক নারীর সাপের বাচ্চা জন্মদানের দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি ভিত্তিহীন। প্রকৃতপক্ষে ভারতে এমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি বরং বিভিন্ন সময়ে ধারণকৃত একাধিক ভিন্ন ভিন্ন ভিডিও ক্লিপ যুক্ত করে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।

ভারতে কি এমন কোনো ঘটনা ঘটেছে?

দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে রিউমর স্ক্যানার টিম প্রথমেই তথ্যের সূত্র খুঁজতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত ভিডিওগুলো নিয়ে বিশ্লেষণ করে। বিশ্লেষণে দেখা যায়, এই ভিডিওগুলোতে কেউ সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য উপস্থাপন করতে পারেননি। বরং দেখা যায়, কেউ কেউ দাবি করছেন, উক্ত ঘটনাটি ভারতের ব্যাঙ্গালোরের, কেউ দাবি করছেন ঘটনাটি ঝাড়খণ্ডের, আবার কারো দাবি , এটি মুম্বাই শহরের ঘটনা। 

Image Collage: Rumor Scanner 

ভিডিওগুলো বিশ্লেষণে কোনো তথ্যসূত্র খুঁজে না পাওয়ায় পরবর্তীতে রিউমর স্ক্যানার টিম প্রাসঙ্গিক বিভিন্ন কি-ওয়ার্ড ধরে গণমাধ্যমে অনুসন্ধান করে। কিন্তু ভারতের নির্ভরযোগ্য কোনো গণমাধ্যমেও দেশটিতে এমন কোনো ঘটনার বিষয়ে কোনো তথ্য খুঁজে পায়নি।

স্বাভাবিকভাবেই ভারতে এমন কোনো ব্যতিক্রমী ঘটনা ঘটলে সেটা ভারতীয় গণমাধ্যমসহ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রচারিত হওয়াটা অনুমেয়। অর্থাৎ পুরো দাবিটিই কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্যসূত্র ছাড়া বিভিন্ন এলাকার নাম উল্লেখ করে প্রচার করা হচ্ছে।

এছাড়া রিউমর স্ক্যানার টিম দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে ভারতীয় গণমাধ্যম The Indian Express এর ফ্যাক্টচেকার অংকিতা দেশকরের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তিনি রিউমর স্ক্যানারকে জানান, ‘কোনো বিশ্বস্ত গণমাধ্যম সূত্রে ভারতে এমন কোনো ঘটনার বিষয় সম্পর্কে তথ্য পাইনি।’

ভিডিওতে দৃশ্যমান নারী ও চিকিৎসকদের পরিচয় সম্পর্কে যা জানা যাচ্ছে 

ভারতে মহিলার পেট থেকে সাপের বাচ্চা পাওয়ার দাবিতে প্রচারিত ভিডিওগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, উক্ত দাবিতে ভারতের হাসপাতালের অস্ত্রোপচার কক্ষের ভিডিও দাবির ফুটেজটি আরও আগে থেকেই ইন্টারনেটে বিদ্যমান।

এ নিয়ে অনুসন্ধানে ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম টিকটকে চলতি বছরের গত ২০ এপ্রিল Ehtishad (আর্কাইভ) নামের একটি অ্যাকাউন্টে ভারতের হাসপাতালের অস্ত্রোপচার কক্ষের ভিডিও ফুটেজ দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Image Collage: Rumor Scanner

এটি ছাড়াও ভিডিওটিতে থাকা আরেকটি ফুটেজ নিয়ে অনুসন্ধানে দেখা যায়, মুখ থেকে সাপ বের করার ভিডিওটি মূলত রাশিয়ার দাগেস্তানের ২০২০ সালের একটি ঘটনা। 

Image Collage: Rumor Scanner 

মূলত, সাপটি ঐ নারীর ঘুমন্ত অবস্থায় তার মুখের ভিতর ঢুকে গিয়েছিল। যা পরবর্তীতে অপারেশনের মাধ্যমে বের করা হয় এবং এটি ভিডিও ধারণ করা হয়। 

পাশাপাশি ভিডিওটিতে যে মহিলাটি দেখা যাচ্ছে, তার পরিচয় জানার জন্য অনুসন্ধান চালালেও কোনো ফল পাওয়া যায়নি। বরং উক্ত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, একেক ভিডিওটিতে একেক নারীর ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। 

Image Collage: Rumor Scanner

অর্থাৎ ইন্টারনেট থেকে বিভিন্ন ছবি ও ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করে একসাথে যুক্ত করে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে। 

সাপ-মানুষের জৈবিক বৈশিষ্ট্য  

আলোচিত দাবিটির সত্যতা বিশ্লেষণের এই পর্যায়ে জেনে নেওয়া যাক মানুষ ও সাপের জৈবিক বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে। 

মানুষ স্তন্যপায়ী প্রাণী, যারা সন্তান প্রসব করে। অপরদিকে সাপ হল সরীসৃপ, যারা বেশিরভাগ ডিম পাড়ে। মানুষ ও সাপের জিনগত বৈশিষ্ট্য, শারীরবৃত্তীয় কাঠামো এবং প্রজনন প্রক্রিয়া মৌলিকভাবেই আলাদা। 

এই জৈবিক কারণগুলো ছাড়াও এখন পর্যন্ত এমন কোনো ঘটনার সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি, যেখানে কোনো মানব মহিলা কখনো সাপ বা অন্য প্রজাতির জন্ম দিয়েছে। ইন্টারনেটে ইতোপূর্বে এমন দাবিতে যা প্রচার হয়েছে, সেগুলো গুজব বলেই প্রমাণিত হয়েছে। 

পূর্বেও এমন ভিত্তিহীন দাবি ছড়ানোর রেকর্ড 

সাপ-মানুষের জৈবিক বৈশিষ্ট্য নিয়ে অনুসন্ধান করতে গিয়ে রিউমর স্ক্যানার টিম ইন্টারনেটে বিভিন্ন সময়ে আলোচিত দাবিটির ন্যায় প্রচারিত একাধিক ঘটনা খুঁজে পায়৷ 

যেমন, ২০১২ সালে ভারতেই মহারাষ্ট্র রাজ্যের যায়াভাতমাল জেলায় এক নারী কর্তৃক সাপ সদৃশ শরীর নিয়ে ‘অলৌকিক শিশু’ জন্মের একটি ঘটনার ভিডিও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল। 

Screenshot: Times of India 

তবে পরবর্তীতে পুরো বিষয়টিই গুজব হিসেবে প্রমাণিত হয় এবং এই ধরনের কোনো ঘটনার অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এমন আরেকটি ঘটনার সন্ধান পাওয়া যায় ২০১৪ সালে ইন্দোনেশিয়ায়। সে সময় ইন্দোনেশিয়ার প্রত্যন্ত ওয়েনান্টু গ্রামে এক গর্ভবতী নারীর গিরগিটি জাতীয় সরীসৃপ জন্ম দেওয়ার একটি ঘটনা ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে। এই ঘটনার পর স্থানীয়রা ঐ নারীর উপর উত্তেজিত হয়ে উঠে এবং তাকে প্রকাশ্যে হত্যা করতে চায়। তবে পরবর্তীতে দেশটির কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে জানা যায়, এটি পুরোপুরি একটি ভুয়া খবর ছিল। 

Screenshot: IBT

এছাড়াও আমেরিকান ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান Snopes ২০১৭ সালে ‘Does This X-Ray Show a Snake Inside a Woman’s Body?‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বিভিন্ন ঘটনা যুক্ত করে নারীর পেটে এক্সরের সময় সাপ দেখা গিয়েছে এমন একটি দাবি সম্বলিত ছবি প্রচার হয়েছিল। তবে অনুসন্ধানে দেখা যায়, ঐ ভাইরাল ছবিটি আসলে একটি ডিজিটাল আর্টওয়ার্ক ছিল।

Screenshot: Snopes 

উল্লেখ্য, সম্প্রতি ভারতে নারী কর্তৃক সাপ জন্ম দেওয়ার ঘটনায় ভারতীয় গণমাধ্যমে এ সংক্রান্ত কোনো প্রতিবেদন না পাওয়ার বিপরীতে দেশটির একাধিক ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠানের ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। এই প্রতিবেদনগুলোতে ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠানগুলো পুরো বিষয়টিকেই গুজব হিসেবে উল্লেখ করেছে। 

এমন কিছু প্রতিবেদন দেখুন 

মূলত, সম্প্রতি ভারতে এক নারীর সাপের বাচ্চা জন্ম দেওয়ার একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। তবে এ নিয়ে অনুসন্ধানে দেখা যায়, ভিডিওটিতে উক্ত ঘটনাটির বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্যসূত্র নেই বরং একেকজন এই ঘটনাটির বিষয়ে একেকরকম তথ্য উপস্থাপন করছে। এছাড়া আলোচিত ঘটনাটি নিয়ে যে ভিডিওটি প্রচার করা হচ্ছে, সেটিও ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত বিভিন্ন ঘটনার পুরানো ফুটেজ ও সূত্রহীন ছবি ব্যবহার করে প্রচার করা হচ্ছে। পাশাপাশি মানুষ ও সাপের জীনগত বৈশিষ্ট্য ও শারিরীক বিন্যাসও সম্পূর্ণ আলাদা হওয়ায় বৈজ্ঞানিকভাবেও এমন কোনো ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা নেই।

সুতরাং, ভারতে এক নারী কর্তৃক সাপের বাচ্চা জন্মদানের দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত ভিডিওটি সম্পূর্ণ বানোয়াট এবং আলোচিত দাবিটিও সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ফিলিস্তিনি বালক আব্দুল আলী নামে প্রচারিত ছবি ও গল্পটি বিভ্রান্তিকর

0

সম্প্রতি “ফিলিস্তিনি যুবক ফরিদ আব্দুল আলী। যিনি বর্তমানে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রসিদ্ধ তরুণ প্রফেসর।” শীর্ষক শিরোনামে একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমনকিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ফিলিস্তিনি যুবক ও বর্তমানে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রসিদ্ধ তরুণ প্রফেসর ফরিদ আব্দুল আলীর দাবিতে ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া ছবির ব্যক্তিটি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নয়, এবং তিনি ২০১৮ সালেই মারা গেছেন।

মূলত, ফিলিস্তিনি যুবক ও বর্তমানে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রসিদ্ধ তরুণ প্রফেসর ফরিদ আব্দুল আলীর দাবিতে ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া ছবির ব্যক্তিটি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নয় এবং তিনি ২০১৮ সালেই মারা গেছেন। এছাড়া তাকে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক দাবি করা হলেও হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে এ নামের কোনো শিক্ষক খুঁজে পাওয়া যায়নি।

পূর্বেও একই দাবিটি ইন্টারনেটে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়লে সেসময় বিষয়টিকে মিথ্যা হিসেবে শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

IAS পরীক্ষায় প্রথম হয়ে বাবাকে রিকশায় বসিয়ে শহর ঘোরানোর দাবিতে প্রচারিত গল্পটি বানোয়াট 

সম্প্রতি, “যে মেয়েটি রিক্সা টানছে সে ২০১৮ সালের ইন্ডিয়ান আডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস (IAS) পরীক্ষায় প্রথম হয়েছে। যাত্রী তার বাবা। যার অক্লান্ত পরিশ্রমে তার স্বপ্ন পূরণ সম্ভব হয়েছে, তাকে রিক্সায় (কলকাতার) চড়িয়ে সে শহর প্রদক্ষিণ করে” শীর্ষক শিরোনামে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত ছবিতে থাকা মেয়েটির ২০১৮ সালের আইএএস (IAS) পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করা এবং প্রথম হওয়ার পর তার নিজের স্বপ্নপূরণে নেপথ্যে থাকা বাবাকে রিক্সায় চাপিয়ে পুরো শহর ঘুরিয়ে দেখানোর দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সঠিক নয় বরং শ্রামণা পোদ্দার নামে ছবির মেয়েটি একজন ট্র্যাভেল ব্লগার, যিনি শখের বশে কলকাতার শোভাবাজারের রাস্তায় ছবিটি তুলেছিলেন।

অনুসন্ধানের শুরুতে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে ‘mishti.and.meat’ নামের একটি ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টে ২০১৮ সালের ২৫ এপ্রিল তারিখে “So here goes the story behind this” শীর্ষক ক্যাপশনে প্রচারিত একটি পোস্টে একই ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot from ‘mishti.and.meat’ instagram post 

ইংরেজি ভাষায় ক্যাপশনে প্রচারিত উক্ত পোস্টটিতে লেখা হয়,“ছোটবেলায় উত্তর কিংবা মধ্যে কলকাতায় গেলে এই হাতে টানা রিক্সা দেখতে পেতাম। রিক্সাওয়ালদের দেখলেই মনটা খারাপ হয়ে যেত। কী পরিশ্রমটাই ওনারা করতো। কলকাতায় গিয়ে ভাবলাম নিজে একবার রিক্সা টেনে দেখি। রিক্সাওয়ালা কাকুকে বললাম পিছনে বসতে। শোভাবাজারের রাস্তায় ছবিটি তোলা হয়েছিল।” 

এছাড়া, ‘Union Public Service Commission of India’ এর ওয়েবসাইটে ২০১৮ সালে উত্তীর্ণ IAS পরীক্ষার্থীদের তালিকা পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ২০১৮ সালে ‘KANISHAK KATARIA’ নামে এক ব্যক্তি উক্ত পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করেছিলেন। 

Screenshot from ‘Union Public Service Commission of India’ website 

অর্থাৎ, শ্রামণা পোদ্দার শখের বশে ইচ্ছে করেই ছবিটি তুলেছিলেন এবং ২০১৮ সালে IAS পরীক্ষায় তার প্রথম স্থান অধিকার করার বিষয়টিও সত্য নয়। 

মূলত, শ্রামণা পোদ্দার একজন ট্র্যাভেল ব্লগার। তিনি স্বভাবত বেড়াতে ভালোবাসেন এবং সেগুলো নিয়ে ব্লগ কনটেন্ট বানিয়ে থাকেন। কলকাতার শোভাবাজারের রাস্তায় ঘুরতে গিয়ে এক রিকশাওয়ালাকে পেছনে বসিয়ে রিকশা টেনে নিয়ে যাওয়ার সময়ে শখের বশে একটি ছবি তুলেছিলেন। সেই ছবিটি ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহ করে সাম্প্রতিক সময়ে ‘মেয়েটি ২০১৮ সালের IAS টপার এবং তিনি তার সাফল্যের নেপথ্যে থাকা বাবাকে রিক্সায় চাপিয়ে পুরো শহর ঘুরিয়ে দেখাচ্ছেন’ শীর্ষক দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে ভারতে একই মনগড়া ক্যাপশনে ছবিটি প্রচার করা হয়েছিলো। সে সময়ে ভারতীয় তথ্য যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান ‘Boom’ কর্তৃক শ্রামণা পোদ্দারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, গল্পটি সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে নিশ্চিত করেছিলেন। 

সুতরাং, ইন্ডিয়ান আডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস (IAS) পরীক্ষায় প্রথম হয়ে বাবাকে রিকশায় বসিয়ে শহর ঘোরানোর দাবিতে এক তরুণীর ছবি সম্বলিত প্রচারিত এই গল্পটি সম্পূর্ণ বানোয়াট ও মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন নিয়ে ঢাকা ট্রিবিউনে বিভ্রান্তিকর সংবাদ

সম্প্রতি,  বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের ইতিহাস সম্পর্কিত একটি প্রতিবেদনে অনলাইন পোর্টাল ঢাকা ট্রিবিউন দাবি করে দেশের ২৬তম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ২০১৮ সালে নাম পরিবর্তন করে Comilla University (CU) থেকে Cumilla University ধারণ করে। 

গণমাধ্যমটিতে প্রকাশিত প্রতিবেদনটি দেখুন University name changes in history

গণমাধ্যমটির ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় নাম পরিবর্তন করে Comilla University (CU) থেকে Cumilla University ধারণ করার দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে ২০১৯ সালে বিশ্ববিদ্যালয়টি ইংরেজি নামের বানান পরিবর্তন করলেও পরবর্তীতে একই বছরে আবার পূর্বের বানানে ফিরে যায়। এছাড়া কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের নামের সংক্ষিপ্ত রূপও CU নয় বরং CoU।

নামের বানান পরিবর্তনের ঘটনাটি যখনের

ঢাকা ট্রিবিউনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ২০১৮ সালে প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস-সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি (নিকার) এর কুমিল্লা জেলার ইংরেজি নামের বানান পরিবর্তনের সাথে সংগতি রেখে নিজেদের ইংরেজি নামের বানান পরিবর্তন করে Comilla University (CU) থেকে Cumilla University ধারণ করেছে।

তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি নামের বানান পরিবর্তনের ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১৯ সালের ৫ মার্চ। 

Screenshot: banglanews24

এ নিয়ে বিশ্লেষণে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়টির তৎকালীন রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০১৮ সালের ২ এপ্রিল অনুষ্ঠিত নিকারের ১১৫তম বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কুমিল্লা জেলার ইংরেজি নামের বানান Comilla এর পরিবর্তন করে Cumilla হিসেবে সংশোধন করা হয়েছে।

 Image: Comilla University press release      

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি নাম সে অনুযায়ী Comilla University এর পরিবর্তে Cumilla University করার নিমিত্তে সিন্ডিকেটের ৭২ তম সভায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সিন্ডিকেটের গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবর্তিত ইংরেজি নাম Cumilla University হিসেবে ব্যবহারের জন্য বলা হয়েছে।

অপরদিকে অনুসন্ধানে আরও দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়টি ২০১৯ সালের ৫ মার্চ নামের ইংরেজি বানান পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত নিলেও পরবর্তীতে একই বছরের ৩ জুলাই পুনরায় আগের বানানে অর্থাৎ  Cumilla University এর পরিবর্তে Comilla University তে ফিরে যায়।

Screenshot: Daily Campus

পাশাপাশি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০০৬ অনুযায়ীও বিশ্ববিদ্যালয়টির ইংরেজি নামের বানান এখনো Comilla University-ই রয়েছে।

Screenshot: Comilla university law

এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়টির ওয়েবসাইট ঘেটেও দেখা যায়, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টি ইংরেজি নামের বানান Comilla University-ই লিখছে।

Screenshot: Comillla University website 

অর্থাৎ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় নাম পরিবর্তন করেনি। কেবল বিশ্ববিদ্যালয়টি ইংরেজি নামের বানান পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তবে পরবর্তীতে বিষয়টি পুনরায় পরিবর্তন করে আগের ইংরেজি নামের বানানে ফিরে আসে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। 

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংক্ষিপ্ত রূপ CU নয়

ঢাকা ট্রিবিউনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি নামের (Comilla University) এর সংক্ষিপ্ত রূপ CU।

Screenshot: Dhaka Tribune

তবে অনুসন্ধানে দেখা যায়, CU কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় নয় বরং এটি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (University of Chittagong) এর সংক্ষিপ্ত রূপ।

Screenshot: University of Chittagong website

অপরদিকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট সূত্রে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়টির ওয়েবসাইট লিংক www.cou.ac.bd.com। অর্থাৎ বিশ্ববিদ্যালয়টির ইংরেজি নামের সংক্ষিপ্ত রূপ হলো CoU।

মূলত, ২০১৮ সালের ২ এপ্রিল প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস-সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির (নিকার) সভায় কুমিল্লাসহ পাঁচটির জেলার ইংরেজি নামের বানান পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত নেয়। এ হিসেবে কুমিল্লা জেলার ইংরেজি বানান Comilla থেকে Cumilla করা হয়। নিকারের এই সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে ২০১৯ সালের ৫ মার্চ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিজেদের নামের ইংরেজি বানান পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত নিলেও পরবর্তীতে একই বছরের ৩ জুলাই পুনরায় আগের বানানে অর্থাৎ  Cumilla University এর পরিবর্তে Comilla University তে ফিরে যায়। তবে সম্প্রতি গণমাধ্যমে উক্ত বিষয়টিকেই বিস্তারিত উল্লেখ না করে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় নাম পরিবর্তন করেছে দাবিতে মূলধারার অনলাইন গণমাধ্যম ঢাকা ট্রিবিউন সংবাদ প্রকাশ করেছে।

সুতরাং, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় নাম পরিবর্তন করেছে দাবিতে গণমাধ্যমে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

বাম হাতের নির্দিষ্ট আঙুলে বিয়ের আংটি পরানোর বৈজ্ঞানিক কোনো ভিত্তি নেই

দীর্ঘদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘বিয়ের আংটি বাম হাতের তৃতীয়/চতুর্থ আঙুলে কেন পড়ানো হয়, কারণ এটি একমাত্র আঙ্গুল যার স্নায়ু সরাসরি আমাদের হৃদয়ের সাথে অর্থাৎ হৃদযন্ত্রের সাথে যুক্ত থাকে।’ শীর্ষক একটি তথ্য প্রচার হয়ে আসছে।

বিয়ের আংটি কেবল বাম হাতের তৃতীয় আঙুলে পরানোর দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

বিয়ের আংটি কেবল বাম হাতের চতুর্থ আঙুলে পরানোর দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, বাম হাতের তৃতীয় বা চতুর্থ আঙ্গুলই একমাত্র নয়, যার শিরার সাথে হার্ট বা হৃৎপিণ্ডের সরাসরি সংযুক্তি আছে বরং হাতের প্রত্যেকটি আঙ্গুলই শিরার মাধ্যমে হৃৎপিণ্ডের সাথে যুক্ত। প্রকৃতপক্ষে বিয়ের আংটি বাম হাতের একটি নির্দিষ্ট আঙুলে পরানোর পেছনে আছে প্রাচীন মিশরীয় বিশ্বাস, যেখানে মনে করা হতো ঐ একটি আঙুলের শিরাই সরাসরি হৃৎপিণ্ডের সাথে যুক্ত এবং এই শিরাটিকে বলা হয় Vena Amoris বা Vein of Love।

হাতের প্রত্যেকটি আঙ্গুলই শিরার মাধ্যমে হৃৎপিণ্ডের সাথে যুক্ত

আলোচিত দাবিটি নিয়ে আলোচনার পূর্বে হৃৎপিণ্ডের কাজ ও দেহের রক্ত সংবহনতন্ত্র নিয়ে মৌলিক কিছু আলোচনা করা যাক।

রক্ত সংবহনতন্ত্র হলো হৃৎপিণ্ড, রক্তনালী এবং রক্তের সমন্বয়ে গঠিত একটি তন্ত্র। হৃৎপিণ্ডের অবিরাম সংকোচন এবং প্রসারণের মাধ্যমে সারা দেহে রক্ত সংবহন পদ্ধতি অব্যাহত থাকে। 

এই রক্ত সংবহন পদ্ধতি যেসব নালীর মাধ্যমে পরিচালিত হয়, তাকে রক্তনালী বা রক্তবাহিকা (Blood Vessel) বলে। গঠন, আকৃতি এবং কাজের ভিত্তিতে রক্তবাহিকা বা রক্তনালী তিন ধরনের হয়ে থাকে। যথা, ধমনি, শিরা এবং কৈশিক জালিকা।

এর মধ্যে ধমনির মাধ্যমে সাধারণত অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত হৃৎপিণ্ড থেকে সারাদেহে প্রবাহিত হয় এবং শিরার মাধ্যমে রক্ত দেহের বিভিন্ন অংশ থেকে হৃৎপিণ্ডে ফিরে আসে। এরা ধমনির মতোই সারা দেহে ছড়িয়ে থাকে।

Screenshot: 10 Minute School

আমাদের পুরো মানবদেহ অর্থাৎ হাতের প্রত্যেকটি আঙ্গুলও শিরা (vein) এবং ধমনির (Artery) মাধ্যমে হৃৎপিণ্ডের সাথে যুক্ত। 

মানুষের হাতের গঠনতন্ত্র নিয়ে আরও বিশ্লেষণে দেখা যায়, আমাদের হাতদ্বয় বিভিন্ন উপাদান যেমন হাড়, পেশী এবং নরম টিস্যু দ্বারা গঠিত।

Screenshot: Florida Orthopedic Institute

এছাড়া হাতদ্বয়ের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ অভ্যন্তরীণ কাঠামো রয়েছে যা রক্তনালী হিসাবে পরিচিত, যেমন ধমনী এবং শিরা। এই রক্তনালীগুলো হাত থেকে হৃৎপিণ্ডে এবং  হৃৎপিণ্ড থেকে হাতে রক্ত ​​​​বহন করার জন্য এবং হাতের অন্যান্য উপাদানগুলোকে কর্মক্ষম করে রাখে, যা আমাদের হাতদ্বয়কে নড়াচড়া করতে এবং বিভিন্ন কাজ করতে সক্ষম করে তোলে। 

হাতের গঠনতন্ত্রের আরও বিস্তারিত ছবি দেখুন এখানে

Screenshot: Istock

এই ছবি থেকেও বুঝা যায়, হাতের আঙুলের শিরাগুলো বড় একটি শিরার সাথে যুক্ত হয়ে অবশেষে হৃৎপিণ্ডে গিয়ে পৌঁছেছে। 

এছাড়া ভিজিবল বডি নামের একটি শিক্ষামূলক ওয়েবসাইটে ২০১২ সালের ১১ জানুয়ারি ‘Anatomy and Physiology: 5 Medical Myths Demythified!’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, হাতের কেবল একটি শিরাই সরাসরি হৃৎপিণ্ডের সাথে যুক্ত নয়, বরং প্রত্যেকটি আঙুলের শিরাই হৃৎপিণ্ডের সাথে যুক্ত। মূলত এই বিশ্বাসটির উৎপত্তি প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতায় এবং ঐ বিশ্বাসের ভিত্তিতেই এখনো বিয়ের সময় এভাবে আংটি পরানো হয়। প্রকৃতপক্ষে  Vena Amoris বা Vein of Love নামে কোনো শিরার অস্তিত্ব নেই।

Screenshot: Visible Body

বিয়ের আংটি বাম হাতের অনামিকায় পরার মিথ সম্পর্কে যা জানা যাচ্ছে

অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে, বিয়ের আংটি বাম হাতের একটি নির্দিষ্ট আঙুলে পরানোর ব্যাপারে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে তথ্যটি প্রচার হয়ে আসছে, তার কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। তবে  বৈজ্ঞানিক ভিত্তি না থাকলেও এ দাবির যোগসূত্র খুঁজে পাওয়া যায় প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতায়। 

এ প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিন বলছে, বাম হাতের চতুর্থ আঙ্গুলটির শিরা সরাসরি হৃৎপিণ্ডের সঙ্গে যুক্ত থাকা ও এজন্যই এ আঙুলে আংটি পরানোর প্রথাটির সূচনা প্রাচীন মিশরে।

Screenshot: National Library of Medicine

পরবর্তীতে এ প্রথা ছড়িয়ে পড়ে রোমান ও গ্রীকদের মধ্যেও। এই শিরাকে তারা নাম দেয় Vena Amoris। তবে মিশরের সভ্যতা বিশেষজ্ঞ ড. ফ্লোরা অ্যান্থনি বলেন, বিয়েতে আংটি পরানো কোনো প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতা নয়। প্রাচীন মিশরে বিয়েতে এই ধরনের অনুসঙ্গ সম্পর্কে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় না।

Screenshot: Big Think

তিনি পুরো বিষয়টিকেই বিশেষ করে প্রাচীন মিশরের অংশটিকে মিথ হিসেবে আখ্যায়িত করেন।

সাধারণ লোককাহিনী এবং কুসংস্কারের উপর ১৯৩২ সালে লেখা ‘The hand of destiny : the folk-lore and superstitions of everyday life’ শীর্ষক একটি বইয়ে ব্রিটিশ লেখক চার্লস থম্পসন সতের শতকের লেখক টমাস ব্রাউনকে উদ্ধৃত করে লিখেন, আংটি পরানোর জন্য চতুর্থ আঙুলটি বেছে নেওয়া হয়েছিল, কারণ এই আঙুলের একটি নির্দিষ্ট স্নায়ু, শিরা বা ধমনী হৃৎপিণ্ড থেকে সরাসরি সেখানে পাঠানো হয়। 

তবে একই বইয়ে বাম হাতের চতুর্থ আঙুলে আংটি পরানোর বিষয়ে তিনি ভিন্ন আরেকটি মতও উল্লেখ করেন। বইটির ৫৫ পৃষ্ঠায় তিনি লিখেন, ‘ডান হাতের তুলনায় নিকৃষ্টতার কারণে বাম হাতটি বিয়ের আংটির জন্য বেছে নেওয়া হয়েছিল এবং এর মাধ্যমে স্বামীর প্রতি স্ত্রীর আনুগত্যের বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছিল।

Screenshot: The hand of destiny : the folk-lore and superstitions of everyday life

বাম হাতের অনামিকায় আংটি পরানোর বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একজন কপিরাইটার এবং লেখক লিলিয়ান আইখলার ১৯২৪ সালে তার লেখা  The Customs of Mankind বইয়ের ২৩৪ নং পৃষ্ঠায় লিখেন,  “স্বামীর প্রতি স্ত্রীর আনুগত্যতা বোঝাতে বাম হাতে আংটি পরা হয়।’’ তবে একই বইয়ে বাম হাতের চতুর্থ আঙুলে আংটি পরার সম্ভাব্য আসল কারণ উল্লেখ করে তিনি লিখেন, “সম্ভবত এই আঙুলে আংটি পরার আসল কারণ, এটি সমস্ত আঙুলের মধ্যে সবচেয়ে কম ব্যবহৃত হয়।”

এসব দাবি ছাড়াও বাম হাতের অনামিকায় আংটি পরানোর বিষয়ে আরও একটি দাবি খুঁজে পাওয়া যায়। এই দাবি অনুসারে, বিয়ের সময় চার্চে খ্রিস্টান যাজক বিয়ের আংটি নিয়ে পিতা, পুত্র এবং পবিত্র আত্মার নামে কনের বাম হাতের প্রথম তিনটি আঙুলে স্পর্শ করিয়ে চতুর্থ আঙুলে আংটি পরিয়ে দেয়।

Screenshot: The Customs of Mankind

মূলত, ইন্টারনেটে দীর্ঘদিন ধরেই ‘বিয়ের আংটি বাম হাতের তৃতীয়/চতুর্থ আঙুলে পরানোর কারণ হিসেবে একটি তথ্য প্রচার হয়ে আসছে। যেখানে দাবি করা হচ্ছে এটিই হাতের একমাত্র আঙ্গুল, যার স্নায়ু সরাসরি আমাদের হৃদযন্ত্রের সাথে যুক্ত থাকে। তবে অনুসন্ধানে দেখা যায়, এটি বহু যুগ ধরে চলে আসা একটি প্রচলিত মিথ। বিয়ের আংটি বাম হাতের তৃতীয়/চতুর্থ আঙুলে পরানোর কারণ হিসেবে প্রচারিত দাবিটির কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই বরং হাতের প্রতিটি আঙুলের সাথেই হৃৎপিণ্ডের সংযোগ রয়েছে।

উল্লেখ্য, ‘বিয়ের আংটি বাম হাতের চতুর্থ আঙুলে পরানোর কারণ হিসেবে প্রচারিত তথ্যটি নিয়ে আফ্রিকা ভিত্তিক ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান Africa Fact Check এর প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন এখানে। 

সুতরাং, ‘বিয়ের আংটি বাম হাতের তৃতীয়/চতুর্থ আঙুলে পরানোর কারণ হিসেবে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

বৃদ্ধের সাথে তরুণীর হিল্লা বিয়ের দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি স্ক্রিপ্টেড

ফেসবুকে প্রচারিত এমন পোস্ট দেখুন এখানে(আর্কাইভ)

ইউটিউবে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে(আর্কাইভ)।

টুইটারে প্রচারিত দুইটি টুইট দেখুন এখানে(আর্কাইভ) এবং এখানে(আর্কাইভ)।

টিকটকে একই দাবিতে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে(আর্কাইভ)।

যা দাবি করা হচ্ছে:

টুইটারে প্রচারিত টুইটগুলোর হিন্দি ভাষার ক্যাপশন বাংলায় অনুবাদ করে দেখা যায় সেখানে লেখা আছে, 

“বাবার বাবা অর্থাৎ দাদা হালাল করেছেন। দাদা জারজ হয়ে উঠল, নাতির স্ত্রীকে ফিরিয়ে দিতে অস্বীকার করল। স্ত্রীও আনন্দের আস্বাদন করলেন এবং স্ত্রী নিজেও দাদী হয়ে গেলেন। ধর্ম এক রঙ্গে বহু, তাই সহজে ধর্ম ছাড়ে না কেউ।”

অর্থাৎ, ভিডিওটিকে বাস্তব ঘটনা দাবিতে এসব টুইটে প্রচার করা হচ্ছে।

এছাড়াও, টিকটকে প্রচারিত ভিডিওটির ক্যাপশনে “১০০% রিয়েল” লেখা দাড়া ভিডিওটিকে সত্য দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, বৃদ্ধের সাথে তরুণীর হিল্লা বিয়ে দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত এই তথ্যটি সত্য নয় বরং উক্ত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি একটি স্ক্রিপ্টেড ভিডিও। 

দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে আলোচ্য ভিডিওর মূল উৎস হিসেবে ২০২২ সালের ২৫শে নভেম্বর ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম ইউটিউবে আপলোডকৃত একই ভিডিওটি খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার টিম।

৮০ বছরের দাদার সাথে ছোট মেয়ের হিল্লা বিয়ে দিলো জামাই | রহস্য জনক ঘটনা | Sharmin Shakil 2022” শীর্ষক শিরোনামের সেই ভিডিওর ডেসক্রিপশন পর্যালোচনা করে জানা যায়, ভিডিওটি নেহাতই বিনোদনের উদ্দেশ্যে তৈরিকৃত।

Source: Youtube

পাশাপাশি, আলোচ্য ভিডিওটি Sharmin Shakil নামের যে ইউটিউব চ্যানেল থেকে আপলোড করা হয়েছিল সেই চ্যানেলে অনুসন্ধান চালায় রিউমর স্ক্যানার। ইউটিউব চ্যানলটি পর্যবেক্ষণ করে, একই ব্যক্তির একাধিক ভিডিওতে উপস্থিতি শনাক্ত করা হয়। অর্থাৎ, একই ব্যক্তিকে বিভিন্ন ভিডিওতে ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা গেছে।

Collage by Rumor Scanner

উক্ত ইউটিউব চ্যানেলে আপলোডকৃত এরূপ কিছু ভিডিও দেখুন:

অর্থাৎ, বৃদ্ধের সাথে তরুণীর হিল্লা বিয়ের দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি এভাবেই ধারণকৃত একটি বিনোদনমূলক স্ক্রিপ্টেড ভিডিও।

হিল্লা বিয়ে কী?

হিল্লা বিয়ের প্রথা মূলত একটি কুসংস্কার। এই কুসংস্কার মতে, কোনো স্বামী তার স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার পর আবার যদি ঐ স্ত্রীকে নিয়ে সংসার করতে চান, তালাক দেওয়া স্ত্রীকে প্রথমে অন্য পুরুষের সঙ্গে বিয়ে দিতে হবে। পরে আগের স্বামী যদি রাজি থাকেন, তবেই পুনরায় ওই স্ত্রীকে গ্রহণ করতে পারবেন। মূলত, তালাক দেওয়া স্ত্রীর সাথে পুনরায় সাংসারিক বন্ধনে আবদ্ধ হতে চাইলে স্ত্রীকে প্রথমে অন্য পুরুষের সাথে বিয়ে দেওয়ার যে প্রথা সেটিই হিল্লা বিয়ে নামে পরিচিত। বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে হিল্লা বিয়ের প্রথা একটি দণ্ডনীয় অপরাধ।

Source: Prothom Alo

মূলত, ২০২২ সালের ২৫শে নভেম্বর Sharmin Shakil নামের ইউটিউব চ্যানেলে “৮০ বছরের দাদার সাথে ছোট মেয়ের হিল্লা বিয়ে দিলো জামাই | রহস্য জনক ঘটনা | Sharmin Shakil 2022” শীর্ষক একটি ভিডিও আপলোড করা হয়। পরবর্তীতে, সেই ভিডিওকে সত্যি ঘটনা দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচ্য ভিডিও ব্যবহার করে বৃদ্ধের সাথে তরুণীর হিল্লা বিয়ের যে তথ্য প্রচার করা হচ্ছে তা সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, ভিডিওটি স্ক্রিপ্টেড এবং নেহায়েতই বিনোদনের উদ্দেশ্যে নির্মিত। এছাড়াও, ভিডিওটির এক ব্যক্তিকে একাধিক ভিডিওতে ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা গেছে।

উল্লেখ্য, পূর্বেও চাচাতো বোনের সাথে ৫ বছরের সম্পর্ক ভেঙে অন্যত্র বিয়ের ঘটনার একটি স্ক্রিপ্টেড ভিডিওকে বাস্তব ঘটনা দাবি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে উক্ত বিষয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার। 

সুতরাং, বৃদ্ধের সাথে তরুণীর হিল্লা বিয়ের একটি স্ক্রিপ্টেড ভিডিওকে বাস্তব ঘটনা দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত হচ্ছে; যা সম্পূর্ন মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

মার্টিনেজ জামাল ভূঁইয়াকে ফোন করে সরি বলেননি

0

সম্প্রতি, ‘জামাল ভুইয়াকে নিজে থেকে ফোন করে সরি বলেছিলেন এমিলিয়ানো মার্টিনেজ’ শীর্ষক দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

জামাল ভূঁইয়া

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ইউটিউবে প্রচারিত এমন কিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ জামাল ভূঁইয়াকে ফোন করে সরি বলেননি বরং মার্টিনেজের ভারত-বাংলাদেশ সফরের উদ্যোক্তা শতদ্রু দত্ত জামালকে ফোন করে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। 

দাবিটি নিয়ে সত্যতা যাচাইয়ে জাতীয় দৈনিক সমকালে গত ৮ জুলাই ‘জামালকে ‘সরি’ বলেছেন মার্টিনেজের কলকাতা এজেন্ট’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ ঢাকায় আসার পর বাংলাদেশের ফুটবল অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়ার সাথে দেখা না হওয়ায় সমালোচনায় পড়েন আয়োজকেরা। এরপর নিজের ভুল বুঝতে পেরে জামাল ভূঁইয়াকে ফোন দিয়ে ‘সরি’ বলেছেন  মার্টিনেজের ভারত-বাংলাদেশ সফর আয়োজনের উদ্যোক্তা শতদ্রু দত্ত।

Screenshot: Daily Samakal

পাশাপাশি বেসরকারি টিভি চ্যানেল দেশ টিভিতে একইদিনে ‘জামালের জন্য জার্সি পাঠালেন মার্তিনেজ’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য জানা যায় যে, শতদ্রুই মূলত জামাল ভূঁইয়াকে সরি বলেছেন।

  Screenshot: Desh TV

এছাড়া দেশের অন্য কোনো গণমাধ্যম সূত্রেও ‘মার্টিনেজ জামাল ভূঁইয়াকে ফোন দিয়ে নিজে সরি বলেছেন’ এমন দাবির পক্ষে কোনো সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে জামাল ভুঁইয়ার অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে তার সময় টিভিকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারের ভিডিও ক্লিপ খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot source: Facebook 

ভিডিওতে জামালকে বলতে শোনা (৪২ সেকেন্ড সময় থেকে) যায়, মার্টিনেজকে বাংলাদেশে এনেছে ইন্ডিয়া (ভারত)। উনাকে/উনি আমাকে ফোন দিসে ইন্ডিয়া থেকে। বলসে, আমি খুব দুঃখিত। আমার খুব লজ্জা লাগতেসে কারণ আমি জানতাম না আপনি এয়ারপোর্টে অপেক্ষা করছিলেন। মার্টিনেজ নিজে দেখসে নিউজটা। কলকাতার ওরা নিউজ করসে। মার্টিনেজ সবকিছু দেখসে। আমার জন্য একটা গিফট দিসে। একটা জার্সি সাইন দিসে। এটা ভালো লাগসে।” 

অর্থাৎ, ভিডিওতে জামালের বক্তব্য থেকে স্পষ্ট হওয়া যায়নি, প্রকৃতপক্ষে কে তাকে ফোন করেছিলেন। 

এ বিষয়টি নিশ্চিত হতে রিউমর স্ক্যানার টিম তাই মার্টিনেজের ভারত-বাংলাদেশ সফরের উদ্যোক্তা শতদ্রু দত্তের সাথে যোগাযোগ করে। তিনি রিউমর স্ক্যানারকে জানান, জামালকে ফোন মার্টিনেজ নয়, তিনি (শতদ্রু) নিজেই দিয়েছিলেন।

মূলত, গত ৩ জুন ঢাকায় আসেন আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ী গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। একইদিনে বাংলাদেশ ফুটবল দল ভারতের ব্যাঙ্গালুরুতে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ খেলে দেশে ফিরে। সেই সময় বাংলাদেশ সফর শেষে বিমানবন্দরে ঢাকা ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। সেখানে তার  সাথে দেখা করার জন্য অপেক্ষায় ছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। তবে শেষ পর্যন্ত তার সাথে দেখা হয়নি জামালের। এ নিয়ে  গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় উঠে। এরই প্রেক্ষিতে পরবর্তীতে মার্টিনেজের এই সফরের উদ্যোক্তা শতদ্রু দত্ত জামাল ভূঁইয়াকে ফোন দিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন। তবে তার দুঃখ প্রকাশের এই ঘটনাটিকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মার্টিনেজ জামাল ভূঁইয়াকে ফোন দিয়েছেন দাবিতে প্রচার করা হয়।

সুতরাং, জামাল ভুঁইয়াকে এমিলিয়ানো মার্টিনেজ নিজে থেকে ফোন করে সরি বলেছিলেন দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র