Home Blog Page 550

পুলিশকে নিয়ে ধর্ষণের প্রতিবাদ বিষয়ক প্ল্যাকার্ডটি বিকৃত 

0

সম্প্রতি, “রাস্তার কুকুর রাস্তার পুলিশ হতে সাবধান, দুটোই কিন্তু পশু, সুযোগ পেলেই কামড়াবে।” শীর্ষক লেখা সম্বলিত প্ল্যাকার্ডের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। 

ধর্ষণের প্রতিবাদ

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং  এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, পুলিশকে কুকুরের সাথে তুলনা করে লেখা আলোচিত প্ল্যাকার্ডের ছবিটি বাস্তব নয় বরং “বাহ্ পুলিশ চমৎকার, ধর্ষকদের পাহারাদার।” লেখা একটি প্ল্যাকার্ডে উক্ত লেখা বসিয়ে বিকৃতভাবে ফেসবুকে প্রচার হয়ে আসছে।

মূলত, ২০২০ সালে নোয়াখালীতে এক গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের প্রতিবাদে সে বছরের ৫ অক্টোবর ঢাকায় অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ কর্মসূচীতে অংশ নেওয়া ছাত্র ইউনিয়ন নেত্রী ’নাজিফা জান্নাতের’ হাতে থাকা “বাহ্ পুলিশ চমৎকার, ধর্ষকদের পাহারাদার।” লেখা প্ল্যাকার্ডের একটি ছবি ফেসবুকে প্রচারিত হয়। তারপর থেকে বিভিন্ন সময় এই ছবিতে থাকা প্ল্যাকার্ডের লেখা বিকৃত করে ফেসবুকে ভিন্ন ভিন্ন দাবিতে প্রচার হয়ে আসছে।

উল্লেখ্য, পূর্বেও ছবিটি ব্যাপকভাবে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। 

প্রথম আলো’র ফটোকার্ড বিকৃত করে রাকিন আবসারের নামে ভুয়া মন্তব্য প্রচার

0

সম্প্রতি “প্রতিদিন প্রার্থনা করতাম, ঘুম থেকে জেগেই যেন নিজেকে মেয়ে হিসেবে দেখতে পাই” শীর্ষক মন্তব্য কন্টেন্ট ক্রিয়েটর রাকিন আবসার করেছেন দাবিতে দেশের মূলধারার গণমাধ্যম প্রথম আলো’র ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

রাকিন আবসারের

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, কন্টেন্ট ক্রিয়েটর রাকিন আবসার “প্রতিদিন প্রার্থনা করতাম, ঘুম থেকে জেগেই যেন নিজেকে মেয়ে হিসেবে দেখতে পাই” শীর্ষক কোনো মন্তব্য করেননি এবং প্রথম আলোও উক্ত তথ্য সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি বরং প্রথম আলো’র ফেসবুকে পেজে রুপান্তিত নারী জারা রহমানের মন্তব্য নিয়ে প্রকাশিত ফটোকার্ডটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় এডিট করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে প্রথম আলো’র ফটোকার্ডের ডিজাইন সম্বলিত ছবিটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। এতে এই সংবাদটি প্রচারের তারিখ হিসেবে ১৩ নভেম্বরে কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

Screenshot: Facebook

দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে ফটোকার্ডটিতে থাকা লোগো ও তারিখের সূত্র ধরে প্রথম আলো’র ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে গত ১৩ নভেম্বর রাকিব আবসারের মন্তব্য দাবিতে এরূপ কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে একই তারিখে প্রথম আলোর ফেসবুক পেজে রুপান্তরিত নারী জারা রহমানের মন্তব্য দাবিতে প্রচারিত পোস্টে অনুরূপ একটি ফটোকার্ড খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার টিম। উক্ত ফটোকার্ডে থাকা নাম ও ছবি ব্যতীত বাকি সব তথ্যের সাথে আলোচিত ফটোকার্ডটির হবহু মিল পাওয়া যায়। আলোচিত ফটোকার্ডটি বিশ্লেষণ করে আরো দেখা যায়, উক্ত ফটোকার্ডে রাকিন আবসার নাম লিখতে ব্যবহৃত ফন্ট ডিজাইনের সাথে প্রথম আলো’র ফন্ট ডিজাইনের কোনো মিল নেই।

Photocard Comparison: Rumor Scanner

অর্থাৎ, রূপান্তরিত নারী জারা রহমানের মন্তব্য নিয়ে প্রথম আলো’র ফেসবুক পেজে প্রকাশিত ফটোকার্ড হতে জারা রহমানের নাম মুছে দিয়ে তাতে কনটেন্ট ক্রিয়েটর রাকিন আবসারের নাম যুক্ত করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, জারা রহমান একজন ট্রান্সজেন্ডার বা রূপান্তরিত নারী (ছেলে থেকে মেয়ে হয়েছেন)। তার ছেলে থেকে মেয়ে হওয়ার পরবর্তী সময়ের বিভিন্ন সমস্যার বিষয়সমূহ তুলে ধরে গত ১৭ নভেম্বর প্রথম আলো’র ফেসবুক পেজে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

এছাড়া কন্টেন্ট ক্রিয়েটর রাকিন আবসারের ট্রান্সজেন্ডার বা ছেলে থেকে মেয়ে হওয়া দাবির বিষয়ে অনুসন্ধানে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক গণমাধমে কোনো তথ্য বা সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মূলত, জারা রহমান নামের একজন ট্রান্সজেন্ডার বা রূপান্তরিত নারী বসবাসের জন্য বাসা ভাড়া পাওয়া এবং চাকুরী পাওয়া নিয়ে সমস্যা পড়েন। যার প্রেক্ষিতে গত ১৭ নভেম্বর প্রথম আলো তাদের ফেসবুক পেজে ‘প্রতিদিন প্রার্থনা করতাম, ঘুম থেকে জেগেই যেন নিজেকে মেয়ে হিসেবে দেখতে পাই’ শীর্ষক দাবি সম্বলিত একটি  ফটোকার্ড প্রকাশ করে। সেই ফটোকার্ডটি-ই ডিজিটাল প্রযুক্তি সহায়তায় এডিট বা সম্পাদনার মাধ্যমে কন্টেন্ট ক্রিয়েটর রাকিন আবসারের নাম এবং ছবি যুক্ত করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়। 

প্রসঙ্গত, পূর্বে বিভিন্ন দেশিয় গণমাধ্যমের ফটোকার্ড বিকৃত করে ইন্টারনেটে ভুয়া তথ্য প্রচার করা হলে সেগুলো শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কিছু প্রতিবেদন দেখুন এখানে:

সুতরাং, ‘প্রতিদিন প্রার্থনা করতাম, ঘুম থেকে জেগেই যেন নিজেকে মেয়ে হিসেবে দেখতে পাই’ শীর্ষক কোনো মন্তব্য রাকিন আবসার করেননি এবং উক্ত দাবিতে প্রথম আলো’র নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি এডিটেড বা বিকৃত। 

তথ্যসূত্র

সেনাবাহিনীর নির্দেশে নির্বাচনের তফসিল বাতিল এবং প্রধানমন্ত্রী’র পদত্যাগের ভুয়া তথ্য প্রচার

গত ১৬ নভেম্বর Sabai Sikhi নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ‘তফসিল বাতিল করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দায়িত্ব নিলো সেনাবাহিনী, ভয়ে পদত্যাগের ঘোষণা দিলো শেখ হাসিনা’ শীর্ষক শিরোনাম এবং সেনাবাহিনীর নির্দেশে তফসিল বাতিল, পদত্যাগ করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’ শীর্ষক থাম্বনেইল ব্যবহার করে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়।

সেনাবাহিনীর

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদন প্রকাশ অবধি ভিডিওটি ৫ লক্ষ ৭ হাজার বার দেখা হয়েছে। এছাড়া ভিডিওতে প্রায় ৬ হাজারের বেশি সংখ্যক লাইক এবং ৩ শতর অধিক মন্তব্য করা হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সেনাবাহিনীর নির্দেশে নির্বাচনের তফসিল বাতিল কিংবা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র পদত্যাগ এবং সেনাবাহিনী কর্তৃক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার দাবিগুলো সঠিক নয় বরং অধিক ভিউ পাবার আশায় চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এটি ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার পুরোনো কয়েকটি ভিডিও ক্লিপ এবং ছবি নিয়ে তৈরি একটি ভিডিও প্রতিবেদন, যেখানে সেনাবাহিনীর সদস্যদের পূর্বের কিছু কার্যক্রম দেখানো হয়।

ভিডিওটি’র সংবাদপাঠ অংশে বলা হয়, “এবার নির্বাচন কমিশনের তফসিল ঘোষণা প্রত্যাখ্যান করলো সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনীর এ উর্ধতন কর্মকর্তা বলেন, গণতান্ত্রিক দেশে সকল রাজনৈতিক দল ও সংগঠন নির্বাচনের মাধ্যমে তাদের প্রার্থী নির্বাচিত করবে। এজন্য সকল রাজনৈতিক দল ও সংগঠন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার মধ্য দিয়েই গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকবে। এজন্য সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের বিশেষ আহ্বান জানান।”

উক্ত বিষয়গুলো নিয়ে প্রাসঙ্গিক একাধিক কি ওয়ার্ড সার্চ করেও গণমাধ্যম কিংবা অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে দাবিগুলোর সত্যতা পাওয়া যায়নি।

তবে মূলধারার ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম Jamuna TV’র ইউটিউব চ্যানেলে ২০২১ সালের ২২ জুন ‘সেনাবাহিনীর সাথে জনগণের কোন দূরত্ব থাকবে না: নতুন সেনাপ্রধান’ শীর্ষক শিরোনামে সেসময়ে নতুন দায়িত্ব পাওয়া নিয়ে সেনাপ্রধানের বক্তব্য নিয়ে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিওটির সাথে আলোচিত ভিডিওটির শুরুর দিকে সেনাপ্রধানের বক্তব্যের অংশের হুবহু মিল পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner

অর্থাৎ, সেনাপ্রধানের বক্তব্য দেওয়ার এই ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় এবং সেনাবাহিনীর নির্দেশে নির্বাচনের তফসিল বাতিল ও সেনাবাহিনী কর্তৃক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের দাবি সংক্রান্ত তথ্যও আলোচিত ভিডিওতে অনুপস্থিত।

এছাড়াও, ২০১১ সালে বাংলাদেশে আপিল বিভাগ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সম্পর্কিত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে। পরবর্তীতে এই ব্যবস্থা আর পুর্ণবহাল করা হয়নি।

পাশাপাশি, গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে এখন পর্যন্ত সেনাবাহিনীর নির্দেশে তফসিল বাতিল কিংবা সেনাবাহিনী কর্তৃক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দায়িত্ব নেওয়া এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র পদত্যাগের সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

অর্থাৎ, উপরোক্ত বিষয়গুলো পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, আলোচিত ভিডিওটিতে প্রচারিত তথ্যগুলো সঠিক নয়।

মূলত, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন করার দাবিতে বিএনপি-জামায়াতসহ আওয়ামী লীগ সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো দীর্ঘদিন ধরে রাজপথে আন্দোলন করে আসছে। এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা ধরনের তথ্য প্রচার প্রচার হয়ে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৬ নভেম্বর Sabai Sikhi নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ‘তফসিল বাতিল করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দায়িত্ব নিলো সেনাবাহিনী, ভয়ে পদত্যাগের ঘোষণা দিলো শেখ হাসিনা’ শীর্ষক শিরোনাম এবং সেনাবাহিনীর নির্দেশে তফসিল বাতিল, পদত্যাগ করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’ শীর্ষক থাম্বনেইল ব্যবহার করে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়। তবে অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত দাবিগুলো সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে অধিক ভিউ পাবার আশায় পুরোনো ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার ভিডিও ক্লিপ যুক্ত করে তাতে চটকদার থাম্বনেইল ও শিরোনাম ব্যবহার করে কোনোপ্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই আলোচিত বিষয়টি প্রচার করা হয়েছে। এছাড়া, গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে বিষয়টির সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

প্রসঙ্গত, আগামী ৭ জানুয়ারি রোববার ভোটগ্রহণের দিন রেখে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। গত ১৫ নভেম্বর সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া এক ভাষনে এই ঘোষণা দেন তিনি।

উল্লেখ্য, পূর্বেও চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে বিভিন্ন ভুয়া তথ্য প্রচারের প্রেক্ষিতে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কয়েকটি প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, সেনাবাহিনীর নির্দেশে তফসিল বাতিল ও সেনাবাহিনী কর্তৃক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দায়িত্ব নেওয়া এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র পদত্যাগ দাবিতে প্রচারিত তথ্যগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর প্যারালাইজড অবস্থার দৃশ্য দাবিতে ভুয়া ছবি ভাইরাল 

সম্প্রতি, “ফিলিস্তিনের বিজয় হবে ইনশাল্লাহ ইসরায়েলে নেতা নিয়াহুর উপর আল্লাহর বড় গজব এসেছে” শীর্ষক শিরোনামে একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে(আর্কাইভ) এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ)

একই দাবিতে টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ)

যা দাবি করা হচ্ছে

টিকটকে প্রচারিত ভিডিওগুলোতে দাবি করা হচ্ছে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর শরীর প্যারালাইজড বা পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়েছেন।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু প্যারালাইজড বা পক্ষাঘাতগ্রস্ত হননি বরং রবার্ট লারা নামের এক করোনা আক্রান্ত রোগীর ছবিকে এডিট করে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু আসলেই পক্ষাঘাতগ্রস্ত বা প্যারালাইজড হয়েছেন কিনা তাযাচাইয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে গুগলে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম কিংবা নির্ভরযোগ্য কোনও সূত্রে এমন দাবির কোনো সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে, কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে CBS Evening News এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ১৭ নভেম্বর “Netanyahu on a potential cease-fire, Al-Shifa hospital raid” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর একটি ভিডিও সাক্ষাৎকার খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার টিম।

উক্ত ভিডিওতে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে চলমান হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধের বিষয়ে সাক্ষাৎকার প্রদান করতে দেখা যায়।

Source: CBS Evening News YouTube Channel

অর্থাৎ, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু শারীরিকভাবে সুস্থ আছেন।

এছাড়া,  আলোচিত ছবিটি রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে, ২০২০ সালের ৭ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম WWL-TV এর ওয়েবসাইটে “After 85 days on a ventilator and 4 weeks in a coma, man survives battle with coronavirus” শীর্ষক শিরোনামের একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত প্রতিবেদনে সংযুক্ত ভিডিওতে প্রদর্শিত মুমূর্ষু ব্যক্তির ছবির সাথে আলোচিত ছবিটির সাদৃশ্য খুঁজে পাওয়া যায়।

Comparison Image By Rumor Scanner

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ছবির ব্যক্তির নাম রবার্ট লারা। ২০২০ সালে করোনা আক্রান্ত হয়ে চার সপ্তাহ কোমায় ছিলেন তিনি। 

পাশাপাশি, যুক্তরাষ্ট্রের তথ্য যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান Verify এর ওয়েবসাইটে ২০২০ সালের ৭ সেপ্টেম্বর “JP Man recovering from medical coma after battling COVID-19” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার টিম।

Source: Verify

উক্ত প্রতিবেদন থেকেও নিশ্চিত হওয়া যায় যে আলোচিত ছবিটি ২০২০ সালে করোনা আক্রান্ত হয়ে কোমায় চলে যাওয়া রবার্ট লারা’র।

মূলত, ২০২০ সালে রবার্ট লারা নামের জনৈক মার্কিন নাগরিক করোনা আক্রান্ত হয়ে চার সপ্তাহ কোমায় ছিলেন। তার করোনা আক্রান্ত সময়ের একটি ছবিকে ডিজিটাল প্রযুক্তির সাহায্যে এডিট করে তার মুখমণ্ডলের স্থলে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর মুখচ্ছবি বসিয়ে নেতানিয়াহু পক্ষাঘাতগ্রস্ত বা প্যারালাইজড হয়েছেন দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, পূর্বেও ইন্টারনেটে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে জড়িয়ে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে পড়লে সে বিষয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু প্যারালাইজ বা পক্ষাঘাতগ্রস্ত হওয়ার দাবিটি সঠিক নয় এবং উক্ত দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত ছবিটি এডিটেড বা বিকৃত।

তথ্যসূত্র

সেনাবাহিনীর সহায়তায় জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের সচিবালয় ও নির্বাচন কমিশন ভবন দখলের ভুয়া খবর

গত ১৫ নভেম্বর Sabai Sikhi নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ‘রাতেই সেনাবাহিনীর সহায়তায় সচিবালয় ও নির্বাচন ভবন দখলে নিলো জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা’ শীর্ষক থাম্বনেইল ব্যবহার করে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়।

সেনাবাহিনী

ইউটিউবে প্রচারিত  ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদন প্রকাশ অবধি ভিডিওটি ২ লক্ষ ৮ হাজার ১ শত ৮২ বার দেখা হয়েছে। এছাড়া ভিডিওতে প্রায় ৫ হাজার সংখ্যক লাইক দেওয়া হয়েছে।

উক্ত ইউটিউব ভিডিওটি বেশ কয়েকটি ফেসবুক আইডি থেকেও পোস্ট করা হয়েছে। এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সেনাবাহিনীর সহায়তায় জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের সচিবালয় ও নির্বাচন কমিশন ভবন দখলে নেওয়ার দাবিটি সঠিক নয় বরং অধিক ভিউ পাওয়ার আশায় চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, সেখানে ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার সাম্প্রতিক ও পুরোনো বিক্ষোভ এবং মশাল মিছিলের দুইটি ভিডিও ক্লিপ ও কিছু ছবি যুক্ত করা হয়েছে।

ভিডিও ক্লিপ দুটির বিষয়ে অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রথম ভিডিওটি গত ১৫ নভেম্বর নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার প্রতিবাদে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াতের তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ মিছিলের। 

Video Comparison by Rumor Scanner

পরবর্তী ভিডিও ক্লিপে দেখানো ভিডিওটি খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে চিকিৎসা দাবিতে গত ১৩ অক্টোবর ঢাকা মহানগর পূর্ব ছাত্রদলের মশাল মিছিলের।

Video Comparison by Rumor Scanner 

অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিওটিতে থাকা এই দুই ভিডিও ক্লিপের কোনটিতেই সচিবালয় বা নির্বাচন কমিশন ভবন ঘেরাও করার কোনো দৃশ্য দেখানো হয়নি। তাছাড়া উক্ত ঘটনার সাথে সেনাবাহিনীর সংশ্লিষ্টতারও কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

ভিডিওটি’র সংবাদপাঠ অংশে বলা হয়, “এবার সেনাবাহিনীর সহায়তায় নির্বাচন কমিশন ভবন এবং সচিবালয় ঘেরাওয়ের পথে জামায়াত-শিবিরের হাজারো নেতাকর্মীরা। ইতোমধ্যেই মিছিল নিয়ে সচিবালয়ের সামনে অবস্থান করছেন জামায়াত শিবিরের লাখো নেতাকর্মী। জামায়াতের নেতাকর্মীরা হুশিয়ার দিয়ে বলেন, অবিলম্বে তফসিল বাতিল করে নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের আহ্বান জানান।”

উক্ত বিষয়গুলো নিয়ে প্রাসঙ্গিক একাধিক কি ওয়ার্ড সার্চ করেও গণমাধ্যম কিংবা অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে উক্ত দাবিগুলোর সত্যতা পাওয়া যায়নি।

অর্থাৎ, উপরোক্ত বিষয়গুলো পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, সেনাবাহিনীর সহায়তায় জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের সচিবালয় ও নির্বাচন কমিশন ভবন দখলে নেওয়ার দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সঠিক নয়।

মূলত, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন করার দাবিতে বিএনপি-জামায়াতসহ আওয়ামী লীগ সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো দীর্ঘদিন ধরে রাজপথে আন্দোলন করে আসছে। এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা ধরনের তথ্য প্রচার করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৫ নভেম্বর Sabai Sikhi নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ‘রাতেই সেনাবাহিনীর সহায়তায় সচিবালয় ও নির্বাচন ভবন দখলে নিলো জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা’ শীর্ষক থাম্বনেইল ব্যবহার করে ইউটিউবে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়। তবে অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে অধিক ভিউ পাবার আশায় পুরোনো ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার ভিডিও ক্লিপ যুক্ত করে তাতে চটকদার থাম্বনেইল ও শিরোনাম ব্যবহার করে কোনোপ্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। এছাড়া, গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে আলোচিত দাবির সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

প্রসঙ্গত, আগামী ৭ জানুয়ারি রোববার ভোটগ্রহণের দিন রেখে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। গতকাল সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া এক ভাষনে এই ঘোষণা দেন তিনি।

উল্লেখ্য, পূর্বেও চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে বিভিন্ন ভুয়া তথ্য প্রচারের প্রেক্ষিতে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কয়েকটি প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, সেনাবাহিনীর সহায়তায় জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের সচিবালয় ও নির্বাচন কমিশন ভবন দখলে নেওয়ার দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

কুড়িগ্রামে ৩১ জন খ্রিস্টানের ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার ঘটনাটি পুরোনো

0

সম্প্রতি, কুড়িগ্রামে ৩১ জন খ্রিস্টান ধর্ম ত্যাগ করে, ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছে- শীর্ষক একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। 

কুড়িগ্রামে ৩১

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, কুড়িগ্রামে ৩১ জন খ্রিস্টানের ইসলাম ধর্ম গ্রহণের ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং এটি ২০১৯ সালের ঘটনা।

অনুসন্ধানের শুরুতে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে গণমাধ্যম কিংবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিশ্বস্ত অন্যকোনো সূত্রে এ বিষয়ে সাম্প্রতিক সময়ে কোনো সংবাদ বা তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি৷

তবে, দৈনিক আমাদের সময় পত্রিকায় ২০১৯ সালের ২৪ অক্টোবর “খ্রিষ্টান ধর্ম ছেড়ে কুড়িগ্রামে পুনরায় ৩১ জনের ইসলাম গ্রহণ” শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, কুড়িগ্রামে ৩১ জন নারী-পুরুষ খ্রিস্ট ধর্ম গ্রহণের পর পুনরায় ইসলামে ফিরে এসেছেন। ২১ আগস্ট দুপুরে জেলার নাগেশ্বরী উপজেলা বাস স্ট্যান্ড সংলগ্ন সাবিলুর রাশাদ ক্যাডেট মাদরাসায় এসে তারা আবারও কালিমা পড়ে ইসলাম গ্রহণ করেন। সাবিলুর রাশাদ ক্যাডেট মাদরাসার পরিচালক হাফেজ মোহাম্মদ ফেরদাউস হাসানের তথ্য মতে, ‘এ ৩১ নারী-পুরুষ সবাই আগে মুসলিম ছিলেন। বিভিন্ন সময় খ্রিস্টান মিশনারী পরিচালিত সংস্থাগুলোর নানা প্রলোভন ও আর্থিক সহায়তায় তারা দলবদ্ধভাবে খ্রিস্টান ধর্ম গ্রহণ করেছিল।’ খ্রিস্টান হওয়ার পর তাদেরকে পুনরায় মুসলিম হওয়ার জন্য দীর্ঘদিন ধরে দাওয়াতি কাজ পরিচালনা করা হয়। পরবর্তীতে তারা নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে সেচ্ছায় পুনরায় ইসলাম গ্রহণ করেছেন।”

একই তথ্যে সংবাদ প্রকাশ করেছিল জাগোনিউজ

সাম্প্রতিক সময়ে ছড়ানো গুজবের সূত্রপাত

ফেসবুক মনিটরিং টুলব্যবহার করে দেখা যায়, ‘হাসির আড্ডা’ নামক একটি ফেসবুক গ্রুপে ‘মায়াবী মিষ্টি হুজুর’ নামক একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে গত ২৬ অক্টোবর রাত ১০ টা ২৩ মিনিটে ‘কুড়িগ্রামে ৩১ জন খ্রিস্টান ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন, আলহামদুলিল্লাহ’– শীর্ষক তথ্যে সাম্প্রতিক সময়ে উক্ত দাবিতে সম্ভাব্য প্রথম পোস্টটি (আর্কাইভ) করা হয়। পরবর্তীতে ঘটনাটি সাম্প্রতিক দাবিতে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে। 

Screenshot: Facebook

মূলত, ২০১৯ সালে কুড়িগ্রামে ৩১ জন নারী-পুরুষ খ্রিস্ট ধর্ম থেকে মুসলিম হন। উক্ত ঘটনাটিকে সম্প্রতি কোনো তারিখ উল্লেখ ব্যতীত “কুড়িগ্রামে ৩১ জন খ্রিষ্টান মুসলমান হয়েছেন।” শীর্ষক শিরোনামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। 

উল্লেখ্য, পূর্বেও দাবিটি ইন্টারনেটে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়লে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল রিউমর স্ক্যানার। 

প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আওয়ালের পদত্যাগের ঘোষণার গুজব

সম্প্রতি, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে “সেনাবাহিনীর ভয়ে ক্ষমা চেয়ে পদত্যাগের ঘোষণা দিলো প্রধান নির্বাচন কমিশনার, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ঘোষণা” শীর্ষক শিরোনামে ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম ইউটিউবে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে। 

নির্বাচন

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

পরবর্তীতে উক্ত ইউটিউব ভিডিওটি বেশ কয়েকটি ফেসবুক আইডি থেকেও পোস্ট করা হয়েছে। এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে ( আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আওয়ালের পদত্যাগ কিংবা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ঘোষণা বিষয়ক কোনো ঘটেনা ঘটেনি বরং ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় ভিন্ন ঘটনার একটি ভিডিও ক্লিপ যুক্ত করে কোনো প্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই উক্ত দাবি সম্বলিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে। 

প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আওয়াল আসলেই পদত্যাগ করেছেন কিংবা দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ঘোষণা করা হয়েছে কিনা তা জানতে গুগলে কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্য কোনো সূত্রে এমন কোনো  তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি বরং তিনি আজ (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৭ টায় জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া এক ভাষনে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছেন।

অর্থাৎ, প্রধান নির্বাচন কমিশনার পদত্যাগ করেননি।

পরবর্তীতে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ২ মিনিট ৪৮ সেকেন্ডের এই ভিডিওটিতে আলোচিত দাবিটি প্রসঙ্গে একটি ভিডিও দেখানো হয়।

ভিডিওটি নিয়ে অনুসন্ধানে ভিডিওটিতে উল্লেখিত ব্যানারের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চ পদ্ধতির মাধ্যমে আজ (১৫ নভেম্বর) দৈনিক স্বাধীন বাংলার ফেসবুক পেজে “নির্বাচন কমিশন অভিমুখে ইসলামী আন্দোলনের গ ণ মি ছি ল” শীর্ষক শিরোনামে সরাসরি সম্প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিওটিতে থাকা ব্যানার এবং মিছিলে থাকা ব্যাক্তিদের সাথে আলোচিত ভিডিওটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison : Rumor Scanner

ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে জানা যায়, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে এর প্রতিবাদে ঢাকায় নির্বাচন কমিশন অভিমুখে গণমিছিল করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। 

অর্থাৎ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের উক্ত ভিডিওটি কোনো প্রকার প্রাসঙ্গিকতা ছাড়াই আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটিতে যুক্ত করা হয়েছে।

মূলত, আগামী ৭ জানুয়ারী রবিবার সন্ধ্যা ৭ টায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণের তারিখ জানিয়ে আজ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আওয়াল। উক্ত নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার বিষয়কে কেন্দ্র করে তসফিল ঘোষণার পূর্বে আজ বিকেলে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন অভিমুখে গণমিছিলের আয়োজন করে। পরবর্তীতে উক্ত  গণমিছিলের একটি ভিডিওর সাথে থাম্বনেইলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ক্ষমা চেয়ে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ঘোষনা করা হয়েছে শীর্ষক দাবি যুক্ত করে ইউটিউবে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়। প্রকৃতপক্ষে অধিক ভিউ পাওয়ার আশায় চটকদার থাম্বনেইলে কোনো প্রকার প্রাসঙ্গিক তথ্যসূত্র ছাড়াই আলোচিত ভিত্তিহীন দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। 

সুতরাং, প্রধান নির্বাচন কমিশনারের পদত্যাগ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ঘোষণা হওয়ার দাবিতে ইন্টারনেট প্রচারিত বিষয়টি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র 

অবরোধে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বাসে আগুন সংক্রান্ত  কল রেকর্ড ফাঁসের ভুয়া দাবি

সম্প্রতি, ‘অবরোধে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশেই বাসে আগুন গোপন কল রেকর্ড ফাঁস’ শীর্ষক শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

বাসে আগুন

ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিওটি  দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, বিএনপি-জামায়াতসহ সমমনা দলগুলোর ডাকা চলমান হরতাল-অবরোধে  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে বাসে আগুন দেওয়া সংক্রান্ত কোনো কল রেকর্ড ফাঁস হয়নি প্রকৃতপক্ষে, ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার একাধিক ভিডিও যুক্ত করে কোনরূপ তথ্যসূত্র ছাড়াই চটকদার থাম্বনেইল এবং ক্যাপশন ব্যবহার করে আলোচিত ভিডিও তৈরি করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। এতে সঞ্চালক দর্শকদের উদ্দেশ্যে তিনটি ভিডিও ক্লিপ দেখান। আলোচিতভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, কয়েকটি ভিন্ন ঘটনার ভিডিও ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় যুক্ত করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে। এছাড়াও ভিডিওটির ক্যাপশন এবং থাম্বনেইলে প্রধানমন্ত্রীর বাসে আগুন দেওয়ার নির্দেশের কল রেকর্ড ফাঁসের কথা বলা হলেও ভিডিওটির বিস্তারিত অংশে দেখা যায় কল রেকর্ডটি মূলত বাংলাদেশ ছাত্রলীগের বিগত কমিটির উপ-অর্থ বিষয়ক সম্পাদকের এবং এর সাথে বাসে আগুন দেওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই।

ভিডিও যাচাই ১

অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে BNP Uttaranchol নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ২০২২ সালের ১০ নভেম্বর ‘১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ কে বানচাল করতে সরকার ২০০ টি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করার পরিকল্পনা করেছে👉 ভিপি নুর’ শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওটির সাথে আলোচিত ভিডিওর নুরের বক্তব্যের অংশটুকুর হুবহু মিল খুঁজে পাওযা যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner 

ভিডিওটিতে নুরুল হক নুরকে বলতে শোনা যায়, গত কয়েকদিন আগে গোয়েন্দা সংস্থার এক লোক ভোর রাতে আমার বাসায় গিয়েছে। বাসায় গিয়ে বলেছে, গোয়েন্দা সংস্থাকে সরকার নির্দেশ দিয়েছে ১০ই ডিসেম্বরে বিরোধী দলকে প্রতিহত করতে ঢাকায় ২০০ গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করতে হবে। তবে নুর তার বক্তব্যের সপক্ষে কোনো সূত্র উল্লেখ করেননি।

ভিডিও যাচাই ২

আলোচিত ভিডিওটির থাম্বনেইলে প্রধানমন্ত্রীর বাসে আগুন দেওয়ার নির্দেশের কল রেকর্ড ফাঁসের দাবিতে মূল ভিডিওটিতে একটি ভিডিও প্রচার করতে দেখা যায়। উক্ত ভিডিওটি পর্যালোচনা করে জানা যায়, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের নাম ব্যবহার করে একই কমিটির উপ-অর্থ বিষয়ক সম্পাদক আতিকুল ইসলাম চাঁপাইনবাবগঞ্জ ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতিকে পদ দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে আড়াই লাখ টাকা নেন। এছাড়াও দেখা যায়, উক্ত ভিডিওটি মূলত সেসময় এই ঘটনা নিয়ে গণমাধ্যমে প্রচারিত একটি প্রতিবেদনেরই অংশ।  

উক্ত তথ্যের সত্যতা যাচাইয়ে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল যমুনা টিভি’র ইউটিউব চ্যানেলে ২০২২ সালের ১১ নভেম্বর ‘কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতার অডিও ভাইরাল; টাকা নিয়েছেন পদের লোভ দিয়ে! | Chapai BCL’ শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি মাল্টিমিডিয়া প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Video Comparison by Rumor Scanner 

উক্ত প্রতিবেদনটিতেও আতিকুল ইসলাম এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জ ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সাব্বির আহমেদ-এর একই কলের রেকর্ড শুনতে পাওয়া যায়।

ভিডিও যাচাই ৩

আলোচিত ভিডিওটিতে প্রচারিত সর্বশেষ ভিডিওতে একজন ব্যক্তি সম্প্রতি চ্যানেল ২৪ এর একটি ভাইরাল ভিডিওর স্ক্রিনশট দেখান। যেখানে একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে জ্বলন্ত বাসে বোতল দিয়ে কিছু একটা ঢালতে দেখা যায়। উক্ত পুলিশ কর্মকর্তা বাসে আগুন দিচ্ছেন দাবি করে তিনি ছবিটি দর্শকদের উদ্দেশ্যে দেখান। 

উক্ত ভিডিওটির সূত্র অনুসন্ধানে ভিডিওতে থাকা DR. FAYZUL HUQ নামটির সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে Dr. Fayzul Huq নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে গত ১৪ নভেম্বর ‘বাসে আ*গুন দিলেন পুলিশ! ভিডিওতে হাসিনার গোপন মিশন স্বীকার করলেন! ড. ফয়জুল হকDr. Fayzul Hu’  শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

Video Comparison by Rumor Scanner 

ভিডিওটির সাথে আলোচিত ভিডিওতে প্রদর্শিত ভিডিওর হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়। এছাড়াও পুলিশের বাসে আগুন দেওয়া ছবি দাবিতে দেখানো ছবিটির ভিডিওটি অংশ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উক্ত দাবিতে ছড়িয়ে পড়লে সেসময় ভিডিওটি নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। যাতে দেখা যায়, উক্ত পুলিশ সদস্য মূলত পানি ঢেলে বাসের আগুন নেভানোর চেষ্টা করছিলেন।

অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিওতে প্রদর্শিত তিনটি ভিডিও ক্লিপর কোথাও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে বাসে আগুন দেওয়া সংক্রান্ত কোনো কল রেকর্ড ফাঁসের তথ্য দেখানো হয়নি।

এছাড়াও প্রাসঙ্গিক নানা কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো সূত্রে অবরোধে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বাসে আগুন গোপন কল রেকর্ড ফাঁসের বিষয়ে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি উপরোক্ত বিষয়গুলো পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে,অবরোধে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বাসে আগুন গোপন কল রেকর্ড ফাঁসের কোনো ঘটনা ঘটেনি।

মূলত, গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে শেখ হাসিনা সরকার পতনের এক দফা দাবিতে মহাসমাবেশ আয়োজন করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। উক্ত সমাবেশে পুলিশের সাথে দলটির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের পরবর্তী সময়ে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তাল হয়ে উঠে। যার পর থেকে বিএনপি ও তার সমমনা দলগুলোর  পক্ষ থেকে ক্রমাগত দেশব্যাপী অবরোধ ও হরতালের ডাক দেওয়া হচ্ছে। যাকে কেন্দ্র করে দেশের ভিন্ন স্থানে দফায় দফায় যানবাহনে অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটেছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি, ‘অবরোধে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশেই বাসে আগুন গোপন কল রেকর্ড ফাঁস’ শীর্ষক শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত দাবিটি সঠিক নয়। অধিক ভিউ পাওয়ার আশায় চটকদার থাম্বনেইল ও শিরোনাম ব্যবহার করে কয়েকটি  ভিন্ন ঘটনার পুরোনো ভিডিও যুক্ত করে আলোচিত ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার  করা হয়েছে।

সুতরাং, অবরোধে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনার গোপন কল রেকর্ড ফাঁস শীর্ষক দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত তথ্যটি  মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

দুইজন নয়, কুমিল্লায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষে একজন মারা গেছেন

0

গতকাল (১৫ নভেম্বর) কুমিল্লা শহরের রামমালা এলাকায় স্থানীয় রাজিব খান গ্রুপ এবং মশু গ্রুপ নামক দুই গ্রুপের সংঘর্ষে দুইজন নিহত হয়েছেন শীর্ষক একটি দাবি ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

কুমিল্লায় আধিপত্য

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, কুমিল্লার উক্ত সংঘর্ষে দুইজন নিহত হওয়ার তথ্যটি সঠিক নয় বরং উক্ত সংঘর্ষে একজন মারা গেছেন এবং একজন আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি আছেন। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে উক্ত ঘটনা পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, দুইজন মৃত্যুর দাবির কিছু পোস্টে একজন পুলিশে সদস্যের বক্তব্যের ফুটেজ প্রচার করা হয়। যেখানে তিনি বলেন, “আমরা ৯৯৯ এর মাধ্যমে রাজীব খান গ্রুপ এবং মশু গ্রুপ নামক দুই গ্রুপের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষের খবর পাই। মশু গ্রুপের একজন হাসান নামের একজনকে কুপিয়ে জখম করলে তাকে কুমিল্লা মেডিক্যালে নেওয়ার পথে মারা যান। শাহজাহান নামে আরেকজন জখম হয়। পরবর্তীতে তাকে ঢাকা মেডিক্যাকে নিয়ে যাওয়া হয়।”

Screenshot: Facebook

কিন্তু এসব পোস্টের ক্যাপশনে দাবি করা হয়, দুইজন মারা গেছে। এমন পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে অনলাইন পোর্টাল ‘বাংলা ট্রিবিউন’ এর ওয়েবসাইটে গত ১৬ নভেম্বর প্রকাশিত এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, উক্ত সংঘর্ষে হাসান নামের এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করে রাজীব গ্রুপ। 

বাংলা ট্রিবিউন জানাচ্ছে, এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয় শাহজাহান (৪৫)। তিনি নগরীর গোবিন্দপুর ডিসি রোড এলাকার বাসিন্দা। উন্নত চিকিৎসার জন্য শাহাজাহানকে প্রথমে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। 

একই প্রতিবেদনে পুলিশ কর্মকর্তা দীনেশ এর বক্তব্যেও একই তথ্য উল্লেখ পাওয়া যায়৷ 

পরবর্তীতে কুমিল্লার স্থানীয় দৈনিক কুমিল্লার কাগজ এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একই ঘটনার বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকেও জানা যায়, সংঘর্ষে একজনই মারা গেছেন।  

এ বিষয়ে অধিকতর সত্যতা যাচাইয়ের জন্য কুমিল্লা কোতোয়ালি থানার ওসি সনজুর মোরশেদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি রিউমর স্ক্যানারকে জানান, উক্ত ঘটনায় একজন মারা গেছেন এবং আরেকজন হাসপাতালে আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছেন।

মূলত, গতকাল (১৫ নভেম্বর) কুমিল্লায় স্থানীয় দুইটি গ্রুপের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট সংঘর্ষে হাসান নামের এক যুবক মারা যান। কিন্তু ফেসবু্কের একাধিক পোস্টে দাবি করা হচ্ছে, এই সংঘর্ষে দুইজন মারা গেছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যাচ্ছে, উক্ত দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, উক্ত ঘটনায় একজন মারা গেছেন এবং আরেকজন হাসপাতালে আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছেন, যা পুলিশের পক্ষ থেকেও নিশ্চিত করা হয়েছে।

সুতরাং, কুমিল্লায় দুই স্থানীয় সন্ত্রাসী গ্রুপের সংঘর্ষে একজন নিহত হওয়ার ঘটনাকে দুই জন নিহত হওয়ার দাবিতে ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

ঢাকা ঘেরাও এর দাবিতে ভিন্ন ঘটনার পুরনো ভিডিও প্রচার 

সম্প্রতি, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে “ এইমাত্র পাওয়া! রাতেই ঢাকা ঘেরাও কার্যালয়ে ঢোকার চেষ্টা নুর বাহিনী” শীর্ষক শিরোনাম এবং “রাতেই ঢাকা ঘেরাও আগুনের মিছিল হঠাৎ ঝাপিয়ে পড়লো নুর বাহিনী” শীর্ষক থাম্বনেইলে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। 

ঢাকা ঘেরাও

ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, নূর বাহিনীর ঢাকা ঘেরাও এর দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং গত ২৮ ফেব্রুয়ারী নাটোর জেলা যুব অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক ফরহাদ হোসেনকে আহত করার প্রতিবাদে ঢাকা যুব অধিকার পরিষদের মশাল মিছিলের ভিডিও। ভুয়া লাইভ স্ট্রিমিং অ্যাপের সহায়তায় সাম্প্রতিক ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

দাবিটি নিয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ৪ মিনিট ১৬ সেকেন্ডের এই ভিডিওটিতে আলোচিত দাবিটি প্রসঙ্গে একটি ভিডিও দেখানো হয়।

উক্ত ভিডিওটিতে থাকা ব্যানারের লিখার সূত্র ধরে অনুসন্ধানে গত ২৮ ফেব্রুয়ারী Md. Nurul Haque নামক ফেসবুক পেজে একটি সরাসরি সম্প্রচারিত ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিওটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির ব্যানার, মিছিলে থাকা ব্যাক্তিদ্বয় এবং ব্যাকরাউন্ডের মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

Video Comparison : Rumor Scanner 

এছাড়াও আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির স্লোগানের সাথে উক্ত ভিডিওর স্লোগানের হুবহু মিল রয়েছে। 

উক্ত ভিডিওটির বিস্তারিত বর্ণনা থেকে জানা যায়, নাটোর জেলা যুব অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক ফরহাদ হোসেনকে আহত করার প্রতিবাদে ঢাকা যুব অধিকার পরিষদ প্রতিবাদ স্বরূপ মশাল মিছিল বের করে। 

অর্থাৎ ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়।

মূলত, বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদ এর নাটোর জেলার আহবায়ক ফরহাদ হোসেনকে কুপিয়ে জখম ও ফরিদপুরে পরিচিতি সভায় হামলার প্রতিবাদে ছাত্র, যুব, শ্রমিক ও গণ অধিকার পরিষদের গত ২৮ ফেব্রুয়ারির মশাল মিছিলের একটি ভিডিওকে সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকা ঘেরাও শীর্ষক শিরোনামে ভুয়া লাইভ স্ট্রিমিং অ্যাপের সহায়তায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়।

সুতরাং, পুরনো ভিন্ন ঘটনার ভিডিওকে নুর বাহিনীর ঢাকা ঘেরাও করার ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে ; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র