রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, বলিউড তারকা নেহা শর্মার সেলফিতে সেক্স টয় দেখা যাওয়ার দাবিটি সঠিক নয় বরং ২০১৮ সালে প্রকাশিত উক্ত সেলফিতে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় এডিট করে সেক্স টয় বসিয়ে উক্ত ছবিটি প্রচার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ২০১৮ সালের ২২ জুন নেহা শর্মার ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে আলোচিত ছবিটির সদৃশ একটি ছবি খুঁজে পাওয়া যায়।
তবে এই ছবিটিতে কোনো ‘সেক্স টয়’ দেখা যায়নি।
Screenshot: Neha Sharma Facebook
পরবর্তীতে অনুসন্ধানে নেহা শর্মার ভেরিফাইড টুইটার অ্যাকাউন্টেও একই তারিখে একই ক্যাপশনে প্রকাশিত একই ছবি খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot: Neha Sharma Twitter
আলোচিত ছবিটির সাথে নেহা শর্মার ফেসবুক পেজ এবং টুইটার অ্যাকাউন্টে প্রচারিত ছবির পোশাক, ব্যাকগ্রাউন্ড, হেয়ারস্টাইল এবং অঙ্গভঙ্গির হুবহু মিল পাওয়া গেলেও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ছবিটিতে সেক্স টয় যুক্ত করার বিষয়টি থেকে প্রতীয়মান হয় যে, ভাইরাল ছবিটিতে এডিটের মাধ্যমে সেক্স টয় যুক্ত করা হয়েছে।
Image Comparison by Rumor Scanner
মূলত, সম্প্রতি বলিউড তারকা নেহা শর্মার ২০১৮ সালের তোলা একটি সেলফি ফেসবুকে ছড়িয়ে দিয়ে দাবি করা হচ্ছে, উক্ত সেলফিতে সেক্স টয় দেখা যাচ্ছে। কিন্তু রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, দাবিটি সঠিক নয়। আলোচিত সেলফিতে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় একটি ‘সেক্স টয়’ যুক্ত করে প্রচার করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, পূর্বে ভারতের অভিনেত্রী মধুমিতা সরকারের ‘I’M NOT VIRGIN’ শীর্ষক লেখা সম্বলিত টি-শার্ট পরিহিত একটি ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে সেসময় এটিকে বিকৃত ছবি হিসেবে শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।
সুতরাং, বলিউড তারকা নেহা শর্মার সেলফিতে প্রদর্শিত ‘সেক্স টয়’ সম্বলিত ইন্টারনেটে প্রচারিত ছবিটি এডিটেড বা বিকৃত।
গত জুনে ফ্রান্সে পুলিশের গুলিতে এক যুবক নিহত হওয়ার ঘটনায় সৃষ্ট বিক্ষোভ ও সহিংসতার ঘটনার খবরে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে একটি ছবি ব্যবহার করা হয়েছে।
ছবিটির ক্যাপশনে বলা হয়, প্যারিসে পহেলা ডিসেম্বর দাঙ্গার সমতুল্য সহিংসতার দৃশ্য এটি।
ছবিটির সূত্র হিসেবে Etienne De Malglaive/Getty Images উল্লেখ করা ছিল।
Screenshot: The Telegraph
পরবর্তীতে ছবি শেয়ারিং এবং স্টোরেজ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান Getty Images এর ওয়েবসাইটে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।
সেখানে বলা হয়, ফ্রান্সের প্যারিসে ২০১৮ সালের ০১ ডিসেম্বর তোলা ছবি এটি।
Screenshot: Getty images
অর্থাৎ, ছবিটি প্যারিসের সাম্প্রতিক সময়ে হওয়া বিক্ষোভের নয়।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ব্যবহৃত আলোচিত ছবিটির ক্যাপশনে কোনো তথ্য উল্লেখ করা হয়নি। ফলে সাম্প্রতিক ঘটনার সংবাদে ছবিটি ব্যবহার করায় স্বাভাবিকভাবেই প্রতীয়মান হয় যে ছবিটি সাম্প্রতিক ঘটনার। এতে করে নেটিজেনদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হওয়া অমূলক নয়।
মূলত, গত জুন মাসে ফ্রান্সে পুলিশের গুলিতে এক যুবক নিহত হয়। এই ঘটনার পর বিক্ষোভ ও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে দেশটিতে। সেই ঘটনার খবর জানিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে একটি ছবি ব্যবহার করা হয়েছে, যার বিষয়ে অনুসন্ধান করে জানা যায়, ছবিটি সে সময়ের নয়। প্রকৃতপক্ষে, ২০১৮ সালে প্যারিসের এক ভিন্ন ঘটনার ছবি এটি। গণমাধ্যমের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিটির ক্যাপশনে ছবিটির বিষয়ে কোনো তথ্য উল্লেখ না থাকায় ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের বলে প্রতীয়মান হয়, যা বিভ্রান্তির জন্ম দিয়েছে।
সুতরাং, ফ্রান্সে সাম্প্রতিক সহিংসতার ঘটনায় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে অন্তত সাড়ে চার বছর পূর্বের ছবিকে সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, এই ভিডিওটিতে নৃত্য পরিবেশনকারী নারীটি ঢাকা উত্তর সিটির চিফ হিট অফিসার বুশরা আফরিন নয় বরং ভিডিওটিতে প্রদর্শিত নারীটি ভিন্ন একজন নৃত্যশিল্পী।
অনুসন্ধানের শুরুতে ভিডিওটি থেকে কয়েকটি স্থিরচিত্র নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে zakiakhanofficial7 নামের একটি টিকটক অ্যাকাউন্টে গত ২৭ মে প্রচারিত আলোচিত ভিডিওটির সদৃশ একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot: TikTok
এছাড়াও রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে MUJRA PARTY নামের একটি টিকটক অ্যাকাউন্টে গত ২২ জুন প্রকাশিত আলোচিত ভিডিওটির সদৃশ অপর একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot: TikTok
পরবর্তীতে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে street point নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে গত ০৯ জুলাই প্রকাশিত একটি শর্ট ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়, যার সাথেও আলোচিত ভিডিওটির মিল রয়েছে।
Screenshot: street point YouTube
এই ভিডিওটির সাথে ঢাকা উত্তর সিটির চিফ হিট অফিসার বুশরা আফরিনের নাচের ভিডিও দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির মিল পাওয়া যায়।
Video Comparison by Rumor Scanner
ভিডিও দুটিতে নারীর পোশাক, ব্যাকগ্রাউন্ড, চুল, অঙ্গভঙ্গি সহ সবকিছুর হুবহুই মিল পাওয়া যায়।
এছাড়াও এই চ্যানেলে প্রকাশিত অন্যান্য ভিডিও পর্যালোচনা করে বোঝা যায়, চ্যানেলটির ব্যবহারকারী একজন পাকিস্তানি ডান্সার।
পাশাপাশি, ঢাকা উত্তর সিটির চিফ হিট অফিসার বুশরা আফরিনের সঙ্গে ভিডিওতে প্রদর্শিত নৃত্য পরিবেশনকারী নারীর চেহারার পার্থক্য রয়েছে।
ছবিঃ বামে বুশরা আফরিন, ডানে নৃত্য পরিবেশনকারী নারী
অর্থাৎ, উপরোক্ত বিষয়গুলো পর্যালোচনা করলে এটা প্রতীয়মান হয় যে, ঢাকা উত্তর সিটির চিফ হিট অফিসার বুশরা আফরিনের নাচের ভিডিও দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি মূলত ভিন্ন একজন নৃত্যশিল্পীর।
মূলত, সম্প্রতি ঢাকা উত্তর সিটির চিফ হিট অফিসার বুশরা আফরিনের নাচের ভিডিও দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। তবে দাবিটি সঠিক নয়। রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, এই ভিডিওটিতে নৃত্য পরিবেশনকারী নারীটি ঢাকা উত্তর সিটির চিফ হিট অফিসার বুশরা আফরিন নয়। প্রকৃতপক্ষে ভিডিওটিতে প্রদর্শিত নারীটি ভিন্ন একজন নৃত্যশিল্পী।
প্রসঙ্গত, এশিয়ার প্রথম শহর হিসেবে ঢাকা উত্তর সিটিতে চিফ হিট অফিসার হিসেবে চলতি বছরের মে মাসে নিয়োগ পান ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলামের মেয়ে বুশরা আফরিন।
উল্লেখ্য, পূর্বেও বিএনপি নেত্রী রুমিন ফারহানার ভিডিও দাবিতে প্রচারিত ভিন্ন একটি ভিডিওকে বিকৃত হিসেবে শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।
সুতরাং, ভিনদেশী ভিন্ন এক নারীর নাচের একটি ভিডিওকে ঢাকা উত্তর সিটির চিফ হিট অফিসার বুশরা আফরিনের নাচের ভিডিও দাবিতে ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় বট গাছ কর্তৃক একটি শিশুর হাত গাছের ভেতরে টেনে নিয়ে যাওয়ার দাবিটি সত্য নয় বরং বট গাছের কোটরের মৌমাছির চাক থেকে মধু সংগ্রহ করতে গিয়ে শিশুটির হাত আটকে গিয়েছিল।
দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে রিউমর স্ক্যানার টিম কি-ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে মূলধারার সংবাদমাধ্যম দৈনিক যুগান্তর এর ওয়েবসাইটে ‘গাছের ভেতর আটকে যায় শিশুর হাত,অতঃপর… ‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় মৌমাছির চাক থেকে মধু সংগ্রহ করতে গিয়ে বিশাল আকারের একটি বট গাছের কোটরের মধ্যে দশ বছরের একটি শিশুর হাত আটকে যায়। শিশুটির নাম খুকু। ফায়ার সার্ভিসের দুই ঘন্টার চেষ্টার পর তাকে উদ্ধার করা হয়।
Source: Jugantor Website
এ প্রসঙ্গে মুক্তাগাছা ফায়ার স্টেশনের অফিসার ইনচার্জ ও ওয়্যারহাউস ইন্সপেক্টর সুশান্ত কুমার দে মণ্ডল গণমাধ্যমকে জানান, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ছেলেটিকে উদ্ধার করে তার বাবা-মায়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়। শিশুটির মা-বাবার মুখে হাসি ফোটাতে পেরে ভালো লাগছে।’
পাশাপাশি পাশাপাশি দ্যা ডেইলি ম্যাসেঞ্জার নামক একটি ইংরেজি দৈনিকের ইউটিউব চ্যানেলে গত ৮ জুলাই তারিখ ‘গাছের ভেতর আটকে যায় শিশুর হাত,অতঃপর…’ শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।
উক্ত ভিডিও থেকেও যুগান্তরের ন্যায় একই তথ্য জানা যায়।
তাছাড়া, উল্লিখিত ঘটনাটি ভৌতিক নয় বলে ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান বুম বাংলাদেশকে নিশ্চিত করেছেন মুক্তগাছা উপজেলার ফায়ার সার্ভিসের সদস্য জুলহাস উদ্দিন।
অর্থাৎ, উপরোক্ত প্রতিবেদনগুলো বিশ্লেষণ করে এটা নিশ্চিত যে, বট গাছে শিশুর হাত আটকে যাওয়ার ঘটনাটি ভৌতিক কোনো বিষয় নয়। গণমাধ্যম এবং ফায়ার সার্ভিস ঘটনাটিকে স্বাভাবিক ঘটনা বলেই উল্লেখ করেছে।
মূলত, ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় দশ বছরের শিশু মিনহাজ রহমান খুকু বট গাছের কোটরেরর মৌচাক থেকে মধু সংগ্রহ করতে গিয়ে একটি হাত ঢুকিয়ে দেয়। পরবর্তীতে হাত বের করতে না পেরে বিপাকে পড়ে যায় শিশুটি। এক পর্যায়ে তার ডাক চিৎকারে আশেপাশের লোকজন আসলেও কোনো সমাধান হয়নি। অবশেষে ফায়ার সার্ভিসের দুই ঘন্টার চেষ্টার পর শিশুটির হাত বের করতে সক্ষম হয়। আর এরই প্রেক্ষিতে বটগাছ একটি শিশুর হাত টেনে নিয়ে যাচ্ছে দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়।
উল্লেখ্য, গাছের কোটরে হাত আটকে যাওয়ার ঘটনা এটিই প্রথম না। গণমাধ্যম সূত্রে এধরনের আরো ঘটনা খুঁজে পাওয়া যায়।
সুতরাং, বট গাছের কোটরে শিশুর হাত আটকে যাওয়ার স্বাভাবিক ঘটনার ভিডিওকে ‘বটগাছ শিশুর হাত ভেতরে টেনে নিয়ে যাচ্ছে’ শীর্ষক ভৌতিক ঘটনা দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
টুইটারে প্রচারিত একই দাবির দুটি টুইট দেখুন এখানে এবং এখানে।
বিষয়টি নিয়ে কতিপয় ভারতীয় গণমাধ্যমেও সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। এমন কিছু সংবাদ এখানে, এখানে এবং এখানে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, পাকিস্তানি এই তরুণীর নিজের বাবাকে বিয়ে করার দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে রাবিয়া লিয়াকত খান নামের এই তরুণী ১০ বছর আগে আমির খান নামের তার এক শিক্ষককে বিয়ে করেছেন।
অনুসন্ধান যেভাবে
পাকিস্তানি তরুণীর নিজ বাবাকে বিয়ের এই দাবিটি একটি সংক্ষিপ্ত ভিডিও ক্লিপ যুক্ত করে প্রচার করা হয়। উক্ত ভিডিও ক্লিপের নিচের বাম কোণে ‘ZEN TV VLOGS নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলের নাম দেখা যায়।
ভিডিওর শুরুতেই সাক্ষাতকারকারী স্পষ্ট করে জানান যে রাবিয়া নামের এ নারী তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা আমির খান নামের ব্যক্তিকে ১০ বছর আগে বিয়ে করেছেন এবং তিনি আমির খান নামের এ ব্যক্তির চতুর্থ স্ত্রী। এর আগে তিনটি ব্যর্থ বিয়েতে জড়িত ছিলেন, যেগুলো ডিভোর্স হয়েছে। ভিডিওর একটা সময়ে সাক্ষাতকারকারী রাবিয়া নামের নারী কে একটি প্রশ্ন করে বলেন, রাবিয়া আরবি শব্দ, এর অর্থ চতুর্থ এবং আপনি ওনার চতুর্থ স্ত্রী। এটা কিভাবে ঘটলো? তখন রাবিয়া নামের ঐ নারী হেসে উত্তর করেন, ‘আমি শুনেছি রাবিয়া নামটি চতুর্থ সন্তানের হয়। আমি দ্বিতীয় সন্তান। নাম অনুযায়ী আমি চতুর্থ সন্তান হতে পারিনি। চতুর্থতম স্ত্রী হওয়ার সুযোগ আসলো তাই ভাবলাম চতুর্থতম স্ত্রী হয়ে যাই।’ মূলত, এই অংশটুকু কর্তন করে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করে প্রচার করার মাধ্যমে পাকিস্তানি নারীর নিজ পিতাকে বিয়ে করেছেন শীর্ষক দাবিটি প্রচার করা হয়। তবে ঐ অংশের কথোপকথন এই অর্থে ছিল না বরং তার নামের অর্থ এবং নিজ স্বামীর চতুর্থতম স্ত্রী হওয়াটা কাকতালীয়ভাবে মিলে যাওয়ার বিষয়টি তিনি হেসে হেসে বলেছেন।
ভিডিওতে সাক্ষাতকারকারী সম্পর্ক শুরুর জন্য কে আগে প্রস্তাব দিয়েছিলেন সেই প্রশ্নটি করতে দেখা যায় এবং উক্ত নারী উত্তর করেন তার স্বামী আগে প্রস্তাব দিয়েছিলেন।
পরবর্তীতে Rabia Amir Official নামের একটি টুইটার অ্যাকাউন্টে উক্ত দম্পতির একটি ভিডিও পাওয়া যায়। যেখানে রাবিয়া লিয়াকত নামের নারীর স্বামীকে মুফতি হিসেবে প্রচারের বিষয়টি নিয়ে তারা কথা বলেন। ভিডিওতে রাবিয়া লিয়াকত এর স্বামী আমির খান বলেন, ‘একটা নেগেটিভ প্রোপাগাণ্ডা প্রচার হচ্ছে। আমাকে মুফতি হিসেবে উল্লেখ করে আমার নাম মুফতি তাকি লাহরি হিসেবে প্রচার করা হচ্ছে। তবে আমার নাম আমির খান। আমি কোনো মুফতি নই।……’
শেষের দিকে তাকে বলতে শোনা যায়, ‘এটা সত্য রাবিয়া আমার চতুর্থ স্ত্রী। তবে আমার একসাথে চার স্ত্রী নেই। আমার বর্তমানে একজনই স্ত্রী এবং সেটা রাবিয়া। আমার আগের তিন স্ত্রীর সাথে বিচ্ছেদ হয়েছে। আমি একসাথে দুই স্ত্রীও সামলাতে পারব না।’ (হেসে)
পাকিস্তানি সাংবাদিক Moin Zubair এর ফেসবুক পেজে উক্ত ইন্টারভিউ ভিডিওর সম্পূর্ণ অংশ খুঁজে পাওয়া যায়। বিস্তারিত অংশ থেকে জানা যায়, রাবিয়া তার স্বামীর ছাত্রী ছিলেন।
ভিডিওতে আমির খান নামের ব্যক্তি জানান, ‘আমি রাবিয়ার টিচার ছিলাম এটি সত্য। তবে আমি তার কোরআন বা ইসলামিক টিচার ছিলাম না। কম্পিউটার ট্রেইনিং টিচার ছিলাম। সেই সূত্রে শিক্ষক।’
ভিডিওতে রাবিয়া বলেন, ‘প্রথম দেখাতেই তিনি আমাকে পছন্দ করেন এবং বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন। আমাদের বিয়ে হয়। ১০ বছর আগে তারা বিয়ে করেন এবং তাদের সন্তানও রয়েছে।’
উপরোক্ত ইন্টারভিউ ভিডিওর ওপর Daily Pakistan নামের একটি পোর্টালে সেসময় প্রকাশিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনেও একইভাবে উল্লেখ পাওয়া যায়।
অর্থাৎ, রাবিয়া তার নিজ বাবাকে বিয়ে করেছেন শীর্ষক দাবিটি সত্য নয় বরং রাবিয়া তার এক সময়ের কম্পিউটার শিক্ষার শিক্ষককে বিয়ে করেছেন।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ভিডিওতে থাকা নারী রাবিয়া লিয়াকত খান, যিনি একজন সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার, ইনস্টাগ্রামে তার ২.৭ লাখ ফলোয়ার রয়েছে। তার নিজস্ব ওয়েবসাইট রয়েছে এবং তিনি পোশাক এবং খাবার নিয়ে কাজ করেন। তার স্বামী আমির খান, আমেরিকায় থাকেন, যার ইনস্টাগ্রামে বায়ো থেকে জানা যায় তিনি একজন রিয়েল এস্টেট এজেন্ট/শিক্ষক/ ইনফ্লুয়েন্সার এবং দ্বীনের ছাত্র। ইনস্টাগ্রামে তারও প্রায় ৫৪ হাজার ফলোয়ার রয়েছে।
Screenshot : Instagram accounts of the Couple
মূলত, ভাইরাল সেই ভিডিওর দম্পতি হচ্ছেন আমেরিকান প্রবাসী পাকিস্তানি আমির খান এবং রাবিয়া লিয়াকত খান। রাবিয়া আমির খান নামের সেই ব্যক্তির চতুর্থ স্ত্রী এবং তাদের কিছু ভিডিও সোস্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পর তারা পাকিস্তানে পরিচিত হয়ে ওঠেন। যার ফলে বিভিন্ন মিডিয়া তাদের সাক্ষাতকার নেয়৷ এমনই একটা সাক্ষাতকারের ক্ষুদ্র অংশ কর্তন করে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করে রাবিয়া তার নিজ বাবাকে বিয়ে করে তার বাবার চতুর্থ স্ত্রী হয়েছেন শীর্ষক দাবিটি প্রচার করা হয়। প্রকৃতপক্ষে, ভিডিওর ব্যক্তি আমির খান রাবিয়ার বাবা নন বরং একসময়ের শিক্ষক।
সুতরাং, পাকিস্তানি নারী রাবিয়া লিয়াকত তার নিজ বাবা কে বিয়ে করেছেন শীর্ষক দাবিটি মিথ্যা।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ছবিগুলো সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং দেশটিতে পূর্বের ঘটনার পুরোনো ছবিকে সাম্প্রতিক দাবিতে গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।
ছবিটির ক্যাপশনে বলা হয়, ২০১৪ সালে আইভরি কোস্টের রাজধানী আবিদজানে বন্যার সময় ছবিটি তুলেছিলেন অ্যালেক্সিস অ্যাডেল।
Screenshot source: FloodList
অর্থাৎ, গণমাধ্যমে প্রচারিত এই ছবিটি আইভরি কোস্টের সাম্প্রতিক ভারী বর্ষণের নয়।
গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিগুলোর ক্যাপশনে ফাইল ফটো বা পুরোনো ঘটনার ছবি শীর্ষক কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি। বরং কিছু গণমাধ্যম ছবিগুলো সংগৃহিত বলেছে। কতিপয় গণমাধ্যম ছবির ক্যাপশনে কিছুই লিখেনি। সাম্প্রতিক ঘটনার বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ছবিগুলো ব্যবহার করে সংগৃহিত লিখায় কিংবা কোনো তথ্যই উল্লেখ না থাকায় স্বাভাবিকভাবে ছবিগুলো আইভরি কোস্টের সাম্প্রতিক ভারী বর্ষণের ঘটনার বলে প্রতীয়মান হয়। এতে করে নেটিজেনদের মধ্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হওয়া অমূলক নয়।
মূলত, সম্প্রতি আইভরি কোস্টে প্রবল বৃষ্টির কারণে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। এই ঘটনায় কতিপয় দেশীয় কয়েকটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে যে ছবিগুলো ব্যবহার করা হয়েছে তা সাম্প্রতিক সময়ের নয়। আইভরি কোস্টের পূর্বের বন্যার ছবি ব্যবহার করে সাম্প্রতিক ঘটনার ছবি দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। গণমাধ্যমের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিটির ক্যাপশনে এ বিষয়ে কোনো তথ্য না থাকায় ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের বলে প্রতীয়মান হয়, যা বিভ্রান্তির জন্ম দিয়েছে।
উল্লেখ্য, পূর্বেও গণমাধ্যমে ভিন্ন ঘটনার ছবি ব্যবহার করে সংবাদ প্রকাশ নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।
সুতরাং, সম্প্রতি আইভরি কোস্টের বন্যার ঘটনায় কতিপয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে পুরোনো ঘটনার ছবি সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।
সম্প্রতি, আর্জেন্টিনার বিভিন্ন শহরে মার্টিনেজের ভাস্কর্য নির্মাণ করা হয়েছে” শীর্ষক ক্যাপশনের সাথে আর্জেন্টিনার গোলকিপার এমিলিয়ানো মার্টিনেজের চারটি স্ট্যাচুর ছবি ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আর্জেন্টিনার বিভিন্ন শহরে মার্টিনেজের স্ট্যাচু নির্মাণ করা হয়েছে শীর্ষক তথ্যটি সঠিক নয় বরং মার্টিনেজের একটি স্ট্যাচু নির্মাণ বিষয়ে প্রস্তাবনা রয়েছে। তাছাড়া, আলোচিত ছবিগুলো বাস্তব স্ট্যাচুর ছবিও নয়।
মূলত, ২০২২ সালের ২৬ ডিসেম্বর ‘Tomas Escobar Alonso’ নামের একজন স্পোর্টস গ্রাফিকস ডিজাইনার তার ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টে এমিলিয়ানো মার্টিনেজের ছবি ব্যবহার করে তৈরি কিছু স্ট্যাচু ডিজাইন প্রকাশ করেন। উক্ত ছবিগুলো ব্যবহার করে সম্প্রতি আর্জেন্টিনার বিভিন্ন শহরে মার্টিনেজের ভাস্কর্য নির্মাণ করা হয়েছে শীর্ষক একটি তথ্য ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। তবে অনুসন্ধানে দেখা যায়, আর্জেন্টিনার কোথাও এখন পর্যন্ত মার্টিনেজের কোনো ভাস্কর্য তৈরি হয়নি। তবে ভাস্কর্য তৈরির বিষয়ে একটি প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া, আলোচিত ডিজাইন দিয়েও ভাস্কর্য তৈরি হচ্ছে না বলে টমাস রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করেছেন।
উল্লেখ্য, পূর্বেও বিষয়টি ব্যাপকভাবে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে সেসময় এটিকে মিথ্যা হিসেবে শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।
সম্প্রতি “এখানে আমার পরিবারের মধ্যে গন্ডগোল আছে। তারেক রহমানকে তো আপনারা ভালো করেই চেনেন। বৌয়ের সাথেও গন্ডগোল। বৌ ও চায় ক্ষমতা, সে ও চায় ক্ষমতা” শীর্ষক শিরোনামে পারিবারিক গণ্ডগোল নিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার বক্তব্যের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রচারিত ভিডিওটিতে বেগম খালেদা জিয়া নিজ পরিবার নিয়ে আলোচিত বক্তব্যটি প্রদান করেননি বরং ভিডিওটিতে দুইটি আলাদা সময়ের বক্তব্য জুড়ে দিয়ে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
মূলত, ২০১৫ সালের ১ নভেম্বর লন্ডনের পার্ক প্লাজা রিভারব্যাংক হোটেলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এর দলীয় অনুষ্ঠানে দলটির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বক্তব্যের একটি ভিডিওর ৪১ মিনিটের সময়কার বক্তব্যের অংশ “আপনারা যতই বলেন যে, আন্দোলন; আন্দোলন ঢাকায়, সেভাবে করা সম্ভব হয়নি” এর ভিডিওর সাথে একই বক্তব্যের ২৫ মিনিট ১৯ সেকেন্ডের সময়কার বক্তব্যের অংশ “এখানে আবার পরিবারের মধ্যে গণ্ডগোল আছে। তাকে তো আপনারা ভাল করে চেনেন। বউ এর সঙ্গেও গণ্ডগোল। বউ ও চায় ক্ষমতা, সেও চায় ক্ষমতা” কিছুটা পরিবর্তন করে “আবার” শব্দটির স্থলে “আমার” এবং “তাকে” শব্দটির স্থলে “তারেক রহমানকে” উচ্চারিত অডিও ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় জুড়ে দিয়ে এডিটেড একটি ভিডিও সম্প্রতি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে।
উল্লেখ্য, পূর্বেও বিষয়টি ব্যাপকভাবে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে সেসময় এটিকে বিকৃত হিসেবে শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।
সম্প্রতি, ঢাকা-১৭ আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোহাম্মদ এ. আরাফাতের “চারিদিকে নৌকার ভোট। নৌকা তো এমনি জিতে যাবে। আমি ভোট না দিলেও জিতে যাবে” শীর্ষক বক্তব্যের একটি ভিডিও ‘আপনি ভোট না দিলেও নৌকা জিতে যাবে’ ক্যাপশনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ‘আপনি ভোট না দিলেও জিতে যাবে’ শীর্ষক বক্তব্যটি মোহাম্মদ এ. আরাফাতের দেওয়া বক্তব্যের সম্পূর্ণ বক্তব্যের একটি খণ্ডিত অংশ। মূল বক্তব্যের একটি অংশ কর্তন করে তৈরী করা এই ভিডিও ক্লিপটি বিভ্রান্তির উদ্দেশ্যে বিকৃতভাবে প্রচার করা হচ্ছে।
প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ অনুসন্ধানের মাধ্যমে, বায়ান্ন টিভির ফেসবুক পেজে গত ১০ জুলাই “ভোট না দিলেও নৌকা জিতে যাবে, এ চিন্তা করে বসে থাকা যাবে না, ভোটকেন্দ্রে যেতে হবে : মোহাম্মদ এ আরাফাত” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot from Facebook
ভিডিওটিতে দেখা যায়, জনাব মোহাম্মদ এ. আরাফাতের দেওয়া বক্তব্যের ভিডিওর ১ মিনিট ২৯ সেকেন্ড থেকে ১ মিনিট ৪৪ সেকেন্ড পর্যন্ত উক্ত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর মিল খুঁজে পাওয়া যায়। সেদিন বক্তব্যে তিনি বলেন, “আমরা যদি ভাবি আমার ডানে নৌকার ভোট, বামে নৌকার ভোট, সামনে নৌকার ভোট, পিছে নৌকার ভোট, চারদিকে নৌকার ভোট। নৌকাতো এমনি জিতে যাবে, আমি ভোট না দিলেও জিতে যাবে। এই চিন্তা আমরা করতে পারবো না। এই চিন্তা করা যাবে না।”
যার মানে উক্ত বক্তব্যের শেষের “এই চিন্তা আমরা করতে পারবো না। এই চিন্তা করা যাবে না” এই অংশ বাদ দিয়ে প্রচার করা হচ্ছে।
এছাড়া আলোচিত ভিডিও ক্লিপটিকে বিকৃত দাবি করে মোহাম্মদ এ. আরাফাত গত ১৫ জুন তার নিজ ফেসবুক পেজ থেকে একটি পোস্টে বক্তব্যের সম্পূর্ণ ভিডিও প্রকাশ করেন।
Screenshot from Facebook
ভিডিওর ক্যাপশনে তিনি জানান, “আমার বক্তব্য এডিট করে স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকার শাবকগোষ্ঠী অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমি নাকি বলেছি, ‘আপনি ভোট না দিলেও নৌকা জিতে যাবে।’ অথচ আমি যা বলেছি তা একেবারেই এর উল্টো। অর্থাৎ, আমি বলেছি আপনি ভোট না দিলে যদি ভাবেন নৌকা জিতে যাবে, তা ঠিক নয়, আপনাকে ভোট দিতে যেতে হবে, তাহলেই নৌকা জিতবে।’ দেখুন আমার পুরো বক্তব্য।”
মূলত, গত ১০ জুলাই নির্বাচনী প্রচারণায় এক পথসভায় বক্তব্য প্রদানকালে ঢাকা-১৭ আসনের বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকার মার্কা প্রার্থী মোহাম্মদ এ আরাফাত বলেন, “যত মানুষ ভোট দিতে আসবে নৌকা তত বেশি ভোট পাবে। এটা আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি। কিন্তু আমরা যদি ভাবি, আমার ডানে নৌকার ভোট, বামে নৌকার ভোট, পিছে নৌকার ভোট, সামনে নৌকার ভোট, চারদিকে নৌকার ভোট, নৌকাতো এমনিতেই জিতে যাবে, আমি ভোট না দিলেও জিতে যাবে। এই চিন্তা আমরা করতে পারবো না, এই চিন্তা করা যাবে না। আমাকে যেতে হবে, আমার ঘরের লোককে নিয়ে যেতে হবে, আমার পাড়া প্রতিবেশী, বন্ধু বান্ধব, যাদেরকে চিনি, সবাইকে নিয়ে একাট্টা হয়ে উদ্বুদ্ধ করে আগ্রহী করে ভোট দিতে যেতে হবে। তবেই এই যে সমাজের মধ্যে জননেত্রী শেখ হাসিনার যে জনপ্রিয়তা, যে গ্রহণযোগ্যতা, নৌকার যে গ্রহণযোগ্যতা তার প্রতিফলন আমরা ব্যালটের মাধ্যমে দিব, ভোট প্রদানের মধ্যে দিব।” তবে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আরাফাতের সেই বক্তব্যের” নৌকাতো এমনিতেই জিতে যাবে, আমি ভোট না দিলেও জিতে যাবে।” শীর্ষক খণ্ডিত অংশটুকু প্রচার করা হচ্ছে, যেখানে উক্ত মন্তব্যের পর আরাফাতের করা “এই চিন্তা আমরা করতে পারবো না। এই চিন্তা করা যাবে না” শীর্ষক এই অংশটি বাদ দেওয়া হয়েছে। যার ফলে আলোচিত বক্তব্যটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে।
উল্লেখ্য, চলচ্চিত্র অভিনেতা ও সংসদ সদস্য আকবর হোসেন পাঠান ফারুকের মৃত্যুতে ঢাকা ১৭ আসন শূন্য ঘোষণা করা হয়েছে। উক্ত আসনে আগামী ১৭ জুলাই উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
প্রসঙ্গত, পূর্বেও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের নামে ভুল তথ্য প্রচার করার প্রেক্ষিতে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কিছু ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
সুতরাং, ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচন নিয়ে এক পথসভায় মোহাম্মদ এ. আরাফাতের দেওয়া এক দীর্ঘ বক্তব্যের একটি খণ্ডিত অংশ বিকৃতভাবে প্রচার করা হচ্ছে।
সম্প্রতি, বহুতল ভবনের ছাদের সুইমিংপুল থেকে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো নিজের ছেলেকে নিচে ফেলে দেওয়ার দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।
ফেসবুক প্রচারিত এমন একটি ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
টিকটকে প্রচারিত এমন একটি ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
ইউটিউবে প্রচারিত এমন একটি ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)
যা দাবি করা হচ্ছে
প্রচারিত ভিডিওটিতে দাবি করা হচ্ছে, পর্তুগিজ ফুটবলার ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো একটি বহুতল ভবনের ছাদের সুইমিংপুল থেকে নিজের ছেলে ম্যাতেও রোনালদোকে ছুড়ে নিচে ফেলে দিচ্ছেন এবং হাত তালি দিয়ে উল্লাস করছেন।
ফ্যাক্টিচেক
রিউমার স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, পর্তুগিজ ফুটবলার ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো বহুতল ভবনের ছাদের সুইমিংপুল থেকে নিজের ছেলে ম্যাতেও রোনালদোকে ছুড়ে নিচে ফেলে দেননি বরং নিজের পরিবারকে নিয়ে রোনালদোর আনন্দমুখর সময় কাটানোর মুহূর্তের একটি ভিডিওকে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় এডিট করে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।
অনুসন্ধানের শুরুতে ভিডিওটির কিছু স্থিরচিত্র রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে ফুটবল ভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম GOAL এর নামের ভেরিফাইড টুইটার অ্যাকাউন্টে ২০২৩ সালের ৬ মে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot: Twitter
এই ভিডিওটির সাথে বহুতল ভবনের ছাদের সুইমিংপুল থেকে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর ছেলেকে নিচে ফেলে দেওয়ার ভিডিওটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়।
Video Comparison by Rumor Scanner
ভিডিও দুটিতে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ও ম্যাতেও রোনালদোর পোষাক, অঙ্গভঙ্গি এবং সুইমিংপুলের হুবহু মিল রয়েছে। তবে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় এই ভিডিওটি এডিট করে সুইমিংপুলটিকে একটি বহুতল ভবনের ছাদে যুক্ত করা হয়। যাতে করে ভিডিওটি দেখে মনে হচ্ছে সুইমিংপুলটি বহুতল ভবনের ছাদে অবস্থিত এবং রোনালদো তার ছেলে ম্যাতেওকে ছুড়ে নিচে ফেলে দিচ্ছেন।
এছাড়াও পরবর্তীতে Tony’s Football Stories নামে একটি ইউটিউব চ্যানেলে গত ৬ মে প্রকাশিত শর্টসে একই ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।
প্রতিবেদনটি থেকেও রোনালদো তার পরিবারের সদস্যদের সুইমিংপুলে আনন্দমুখর সময় কাটানোর কথাটি নিশ্চিত হওয়া যায়।
মূলত, সম্প্রতি ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ও তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সুইমিংপুলে আনন্দমুখর সময় কাটাতে দেখা যায়। সেসময় রোনালদো তার ছেলে ম্যাতেওকে ডাইভ দেওয়া শেখানোর জন্যে হাতে তুলে পানিতে ছুড়ে মারেন। যেটা এবং সেই দৃশ্য তখন ক্যামেরায় ধারণ করা হয়। পরবর্তীতে তা টুইটারে ছড়িয়ে পড়ে এবং বহুমানুষ তাতে রিটুইট করেন। উক্ত ভিডিওকেই এডিট করে সুইমিংপুলটিকে একটি বহুতল ভবনের ছাদে যুক্ত করে ‘রোনালদো বহুতল ভবনের ছাদের সুইমিংপুল থেকে নিজের ছেলে ম্যাতেও রোনালদোকে ছুড়ে নিচে ফেলে দিচ্ছেন এবং হাত তালি দিয়ে উল্লাস করছেন’ শীর্ষক দাবিটি ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, পূর্বেও ইন্টারনেটে রোনালদোকে নিয়ে প্রচারিত একাধিক ভুল তথ্য শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।