Home Blog Page 551

লটারিতে নয়, একাদশে ভর্তি মাধ্যমিকের ফলাফলের ভিত্তিতে

সম্প্রতি ‘চলতি বছরের একাদশে ভর্তি কার্যক্রম লটারির মাধ্যমে সম্পন্ন হবে’ শীর্ষক দাবিতে একটি তথ্য গণমাধ্যম  সহ সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন প্রথম আলো, দৈনিক বাংলাকালবেলা, চ্যানেল২৪, রাইজিং বিডি, দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস, সারা বাংলানিউজজি২৪, বাংলাদেশ জার্নাল, রিদ্মিক নিউজ, নিউজ নাউ২৪,  শিক্ষা বার্তা, বিজনেস আওয়ার২৪, সময়ের খবর, ঢাকা টুডে, বাংলা খবর, ডেল্টা টাইমস, সুরমা মেইল

গণমাধ্যমের ফেসবুক পেজ সহ অন্যান্য পেজে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট  (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, চলতি বছর একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি লটারি পদ্ধতিতে নয় বরং শিক্ষার্থীদের মাধ্যমিকের ফলের ভিত্তিতেই ভর্তি করানো হবে জানিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ সম্প্রতি নীতিমালা প্রকাশ করেছে। 

দাবিটি নিয়ে অনুসন্ধানে  শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের ওয়েবসাইটে গত ৬ আগস্ট ‘২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির নীতিমালা-২০২৩’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত চলতি বছরের একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির নীতিমালাটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: 2023-2024 Academic Year 11th Class Admission Policy-2023

পরবর্তীতে নীতিমালাটি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, নীতিমালাটির ‘প্রার্থী নির্বাচনে অনুসরণীয় পদ্ধতি’ শীর্ষক তৃতীয় ধারার ৩.১ উপধারায় বলা হয়েছে, ভর্তির জন্য কোন বাছাই বা ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণ করা হবে না। কেবল শিক্ষার্থীর এস.এস.সি বা সমমান পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে ভর্তি করানো হবে। 

একইভাবে ৩.২ উপধারায় বলা হয়, কলেজ/সমমানের প্রতিষ্ঠানে ভর্তির ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কলেজ/সমমানের প্রতিষ্ঠানের ৯৩% আসন সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকবে যা মেধার ভিত্তিতে নির্বাচন করা হবে। একই ধারায় কোটার ক্ষেত্রেও বলা হয়েছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও অধীনস্থ দপ্তর/সংস্থায় কর্মরত কর্মকর্তা/কর্মচারীদের সন্তানদের ক্ষেত্রে মহানগর, বিভাগীয় ও জেলা সদরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির জন্য নূন্যতম যোগ্যতা থাকা সাপেক্ষে ২% কোটা সংরক্ষিত থাকবে। যদি আবেদনকারীর সংখ্যা বেশি হয় সেক্ষেত্রে তাদের নিজেদের মধ্যে মেধার ভিত্তিতে ভর্তির সুযোগ পাবে। বাকি ৫% আসন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান/সন্তানের সন্তানদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে। উপর্যুক্ত কোটায় যদি প্রার্থী না পাওয়া যায় তবে এ আসন কার্যকরী থাকবে না।

Screenshot: 2023-2024 Academic Year 11th Class Admission Policy-2023

নীতিমালাটির ৩.৩ উপধারাটি বিশ্লেষণ করেও দেখা যায়, সেখানে সমান জিপিএ প্রাপ্তদের ক্ষেত্রে সর্বমোট প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে মেধাক্রম নির্ধারণের বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। 

Screenshot: 2023-2024 Academic Year 11th Class Admission Policy-2023

এসবের বাইরে পুরো নীতিমালাটি বিশ্লেষণ করেও লটারির মাধ্যমে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির বিষয়ে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে অধিকতর নিশ্চয়তার জন্য রিউমর স্ক্যানার টিম নীতিমালাটির সূত্রে পাওয়া মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সহকারি সচিব (সরকারি কলেজ-১) রেবেকা সুলতানার সাথে যোগাযোগ করলে তিনিও সম্প্রতি প্রকাশিত নীতিমালাটি অনুসরন করার পরামর্শ দেন। 

পাশাপাশি এই বিষয়ে জানতে রাজধানীর আদমজী ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজের উপাধ্যক্ষ গোলাম ফারুকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, যেই নীতিমালা মাউশি থেকে দেওয়া হয়েছে সেটাই প্রকৃত তথ্য। কারণ উচ্চ মাধ্যমিকে তো লটারি দিয়ে ভর্তি হয় না বরং এখানে মাধ্যমিকের ফলাফলের ভিত্তিতেই ভর্তি করানো হয়। 

উল্লেখ্য, গণমাধ্যমে একাদশে ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোতে দাবি করা হয়, ‘এবারও একাদশে ভর্তি প্রক্রিয়া লটারিতে।’ অর্থাৎ পূর্বেও লটারির মাধ্যমে একাদশে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। 

এ নিয়ে অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত বছর অর্থাৎ ২০২২ সালেও লটারির মাধ্যমে একাদশে ভর্তি করানো হবে দাবিতে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছিল। এমন কিছু প্রতিবেদন দেখুন ডেইলি ক্যাম্পাসইত্তেফাক, সাম্প্রতিক দেশকাল। 

Screenshot: Daily Ittefaq

তবে সে বছরের একাদশে ভর্তি সংক্রান্ত নীতিমালা বিশ্লেষণ করেও এমন কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

Screenshot: 2022-2023 Academic Year 11th Class Admission Policy-2022

মূলত, গত ৬ আগস্ট একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির বিস্তারিত তথ্য সংক্রান্ত নীতিমালা প্রকাশ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ। পরবর্তীতে দেশীয় কতিপয় গণমাধ্যমে এই নীতিমালার বরাতেই দাবি করা হয় যে, এ বছর লটারির মাধ্যমে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি প্রক্রিয়া চলবে। তবে অনুসন্ধানে নীতিমালাটি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, এই  নীতিমালার কোথাও লটারির বিষয়টি উল্লেখ নেই। বরং এই নীতিমালা অনুযায়ী, একাদশ শ্রেণিতে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীকে তার এস.এস.সি বা সমমান পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে ভর্তি করানো হবে।

সুতরাং, চলতি বছরের একাদশে ভর্তি কার্যক্রম লটারির মাধ্যমে সম্পন্ন হবে দাবিতে গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

বাইডেন কর্তৃক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পদত্যাগের নির্দেশ দেওয়ার ভুয়া দাবি

সম্প্রতি, প্রথম আলোর লোগো ব্যবহার করে ‘আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে শেখ হাসিনাকে পদত্যাগের নির্দেশ দিয়েছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো-বাইডেন। জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশন থেকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে সরিয়ে নেয়ারও কড়া হুশিয়ারী দেন তিনি। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম আল-জাজিরার এক সাক্ষাৎকারে একথা বলেন তিনি’ শীর্ষক দাবি সম্বলিত একটি ডিজিটাল ব্যানার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমনকিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন পদত্যাগের নির্দেশ কিংবা জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মিশন থেকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে সরিয়ে নেয়ার হুশিয়ারী দেননি এবং আল জাজিরা এসম্পর্কিত কোনো সাক্ষাৎকার কিংবা প্রথম আলোও এসম্পর্কিত কোন সংবাদ বা ব্যানার প্রচার করেনি। বরং নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যসূত্র ছাড়াই ভিত্তিহীনভাবে প্রথম আলোর লোগো সংযুক্ত করে উক্ত দাবি সম্বলিত ডিজিটাল ব্যানারটি প্রচার করা হচ্ছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে প্রথম আলোর লোগো ব্যবহার করে প্রচারিত আলোচিত দাবি সম্বলিত ব্যানারটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। সেখানে এই বিষয়টি প্রচারের কোনো তারিখ উল্লেখ করা হয়নি।

Screenshot: Facebook

অনুসন্ধানে কি ওয়ার্ড সার্চ পদ্ধতি ব্যবহার করে প্রথম আলোর ওয়েবসাইট, ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ এবং ইউটিউব চ্যানেলে উক্ত তথ্য সম্বলিত কোনো ব্যানার বা সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাছাড়া আলোচিত এই ব্যানারের ডিজাইন ও টেক্সট ফন্টের সাথে প্রথম আলোর ফেসবুক পেজে প্রচারিত ব্যানারগুলোর ডিজাইন ও টেক্সট ফন্টের ভিন্নতা রয়েছে।

Image Comparison by Rumor Scanner

এছাড়াও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার ওয়েবসাইট, ফেসবুক পেজ এবং ইউটিউব চ্যানেলেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন কর্তৃক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পদত্যাগের নির্দেশ কিংবা জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মিশন থেকে বাংলাদেশর সেনাবাহিনী সরিয়ে নেওয়ার হুশিয়ারি দেওয়ার বিষয়ে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

তাছাড়া, প্রথম আলো, আল জাজিরা ছাড়াও অন্যকোনো গণমাধ্যমেও প্রাসঙ্গিক একাধিক কি ওয়ার্ড সার্চ করেও আলোচিত দাবি সম্পর্কিত কোনো সংবাদের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এছাড়াও, জাতিসংঘের আইন অনুযায়ী, ‘যেকোনো কারণে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কোনো রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বা বহিরাগত বিষয় অন্য কোনো রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ করার অধিকার নেই’। অর্থাৎ, বাংলাদেশের শাসন বিভাগ বা সরকারের ওপর মার্কিন প্রেসিডেন্ট কিংবা বিদেশি কোনো ব্যক্তির সরাসরি হস্তক্ষেপের সুযোগ নেই এবং রাষ্ট্রের প্রধান নির্বাহী প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগের নির্দেশ দেওয়ারও এখতিয়ার নেই।

Screenshot: The Daily Star

অর্থাৎ, উপরোক্ত বিষয়গুলো পর্যালোচনা করলে এটা প্রতীয়মান হয় যে, প্রথম আলো কিংবা আল জাজিরা উল্লিখিত বিষয়গুলো নিয়ে কোনো সংবাদ প্রচার করেনি। 

পাশাপাশি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন পদত্যাগের নির্দেশ কিংবা জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মিশন থেকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে সরিয়ে নেয়ার হুশিয়ারি দেওয়ার দাবিগুলোও সঠিক নয়। 

মূলত, সম্প্রতি প্রথম আলোর লোগো ব্যবহার করে ‘আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে শেখ হাসিনাকে পদত্যাগের নির্দেশ দিয়েছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো-বাইডেন। জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশন থেকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে সরিয়ে নেয়ারও কড়া হুশিয়ারী দেন তিনি। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম আল-জাজিরার এক সাক্ষাৎকারে একথা বলেন তিনি’ শীর্ষক দাবি সম্বলিত একটি ব্যানার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে উল্লেখিত দাবিগুলোর কোনো অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। প্রকৃতপক্ষে প্রথম আলো কিংবা আল জাজিরা এ সম্পর্কিত কোনো সংবাদ, ব্যানার বা সাক্ষাৎকার প্রকাশ করেনি।

প্রসঙ্গত, গত ১২ জুন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) এক বিবৃতিতে জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশনে বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের নিয়োগের ক্ষেত্রে মানবাধিকার সংক্রান্ত বিষয় যাচাই বাছাইয়ের আহবান জানায়। র‍্যাবের বিরুদ্ধে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে বিবৃতিতে বলা হয়, জাতিসংঘের উচিত র‍্যাবের সঙ্গে জড়িত সদস্যদের শান্তিরক্ষী মিশনে নিষিদ্ধ করা। এর আগে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে র‍্যাব ও তার ছয় কর্মকর্তার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের  নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার প্রেক্ষিতে ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচসহ মোট ১২টি মানবাধিকার সংস্থা র‍্যাবকে শান্তি মিশন থেকে বাদ দেওয়ার আহবান জানিয়ে জাতিসংঘকে চিঠি দেয়।

উল্লেখ্য, পূর্বেও বিভিন্ন গণমাধ্যমের ফটোকার্ড নকল করে মিথ্যা তথ্য প্রচার করা হলে সেসময় বিষয়গুলো নিয়ে  ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কয়েকটি প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, প্রথম আলোর লোগো ব্যবহার করে আল জাজিরার বরাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন কর্তৃক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পদত্যাগের নির্দেশ এবং জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মিশন থেকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে সরিয়ে নেয়ার হুশিয়ারি দেওয়ার দাবিতে প্রচারিত তথ্যগুলো মিথ্যা এবং প্রচারিত ব্যানারটি এডিটেড।

তথ্যসূত্র

সমাবেশে ভাড়াটে কর্মী নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের শিরোনাম বিকৃত করে প্রচার

0

সম্প্রতি, দেশীয় মূলধারার গণমাধ্যম দেশ রূপান্তরের ই-প্রিন্ট সংস্করণের আদলে ‘বিএনপির সমাবেশে ভাড়াটে কর্মী রেট পুরুষ ৪০০ নারী ৬০০’ শীর্ষক শিরোনাম সম্বলিত একটি সংবাদ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এখানে (আর্কাইভ) এখানে (আর্কাইভ) এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ‘বিএনপির সমাবেশে ভাড়াটে কর্মীর রেট পুরুষ ৪০০ নারী ৬০০’ শীর্ষক দাবিতে দেশ রূপান্তরে কোনো সংবাদ প্রকাশিত হয়নি বরং ‘সভা সমাবেশে ভাড়াটে কর্মী রেট পুরুষ ৪০০ নারী ৬০০’ শীর্ষক শিরোনামে দেশ রূপান্তরে প্রকাশিত সংবাদের শিরোনাম বিকৃত করে উক্ত সংবাদটি প্রচার করা হচ্ছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে মূলধারার গণমাধ্যম দেশ রূপান্তর এর অনলাইন সংস্করণে গত ৪ আগস্ট ‘ সভা সমাবেশে ভাড়াটে কর্মী রেট পুরুষ ৪০০ নারী ৬০০’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Desh rupantor Website

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, রাজধানীর পল্টন, প্রেস ক্লাব ও গুলিস্তান এলাকায় এক শ্রেণির ভাড়াটে কর্মী টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন দল ও সংগঠনের প্রতিবাদ সমাবেশ, মানববন্ধন, সেমিনার প্রভৃতি সাংগঠনিক ও সামাজিক আয়োজনে অংশ নেওয়ার জন্য অপেক্ষায় থাকে। এই চক্রের সাথে জড়িত এক ব্যক্তি গণমাধ্যমটির প্রতিবেদককে জানান, এক থেকে দেড় ঘণ্টার প্রোগ্রামের জন্য দিতে হয় ১৫০ টাকা। দিনব্যাপী হলে সর্বনিম্ন ৪০০ টাকা দিতে হয় জনপ্রতি। নারীদের চাহিদা বেশি, তাই তাদের ৬০০ টাকা দিতে হয়।

তবে উক্ত প্রতিবেদনের বিস্তারিত অংশে কোথাও কোনো নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের নাম উল্লেখ করে কোন দলের সমাবেশে অংশ নিলে কত টাকা দেওয়া হয় এমন কোনো তথ্য উল্লেখ করা হয়নি।

পরবর্তীতে একই তারিখে গণমাধ্যমটির ই-প্রিন্ট সংস্করণেও একই সংবাদটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Photo: Desh Rupantor E. Print

উক্ত প্রতিবেদনের প্রতিবেদকের নাম এবং সংবাদের বিস্তারিত অংশের সাথে ‘বিএনপির সমাবেশে ভাড়াটে কর্মীর রেট পুরুষ ৪০০ নারী ৬০০’ শীর্ষক দাবিতে প্রচারিত সংবাদটির হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Comparison of headline: Rumor Scanner

অর্থাৎ, দেশ রূপান্তরের শিরোনামে উল্লেখিত ‘সভা সমাবেশে ভাড়াটে কর্মী রেট পুরুষ ৪০০ নারী ৬০০ ‘ এর  ‘সভা’ অংশটুকুর বদলে বিএনপির শব্দটি যুক্ত করে উক্ত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।

মূলত, দেশের মূলধারার গণমাধ্যম দেশ রূপান্তরের ওয়েবসাইট ও প্রিন্ট সংস্করণে গত ৪ আগস্ট ‘সভা সমাবেশে ভাড়াটে কর্মী রেট পুরুষ ৪০০ নারী ৬০০’ শীর্ষক শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। উক্ত প্রতিবেদনের শিরোনামটিকে বিকৃত করে ‘বিএনপির সমাবেশে ভাড়াটে কর্মী রেট পুরুষ ৪০০ নারী ৬০০” শীর্ষক শিরোনামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। 

উল্লেখ্য, পূর্বে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের শিরোনাম বিকৃত করে ইন্টারনেটে প্রচার করা হলে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার। প্রতিবেদনটি দেখুন এখানে

সুতরাং, দেশ রূপান্তরের সংবাদ বিকৃত করে বিএনপির সমাবেশে ভাড়াটে কর্মীর রেট দাবিতে এই ভুয়া তথ্যটি প্রচার করা হচ্ছে।

 তথ্যসূত্র

চীনে ১৯ দিনে ৫৭ তলা বিল্ডিং বানানোর দাবিতে ব্রাজিলের বিল্ডিংয়ের ছবি প্রচার

0

সম্প্রতি “মাত্র ১৯ দিনে ৫৭ তলা বিল্ডিং বানালো চীন” শীর্ষক দাবিতে একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, চীনের ১৯ দিনে ৫৭ তলা বিল্ডিং বানানোর দাবিতে প্রচারিত ছবিটি চীনে অবস্থিত কোনো বিল্ডিংয়ের নয়। প্রকৃতপক্ষে ছবিটি দক্ষিণ ব্রাজিলের সান্তা ক্যাটরিনা রাষ্ট্রের বালনেয়ারিও কামবরিও শহরে অবস্থিত ইয়টহাউস রেসিডেনস ক্লাবের ভবনের ছবি।

রিভার্স ইমেজ সার্চ অনুসন্ধানের মাধ্যমে ‘jcdronesvideos’ এর ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে ২০১৯ সালের ১৩ মার্চ প্রকাশিত একটি ছবির সাথে উক্ত দাবিতে প্রচারিত ছবির হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Image Collage by Rumor Scanner

উক্ত পোস্টের লোকেশন চেক-ইন, হ্যাশট্যাগ ট্যাগ এবং ছবির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, এই ভবনটি ব্রাজিলের ব্রাজিলের সান্তা ক্যাটরিনা রাষ্ট্রের বালনেয়ারিও কামবরিও শহরে অবস্থিত।

পরবর্তীতে বিষয়টি অধিকতর নিশ্চিতের জন্য, কি-ওয়ার্ড সার্চ অনুসন্ধানের মাধ্যমে ব্রাজিলের বিল্ডিং বিষয়ক ওয়েবসাইট ‘Blumenau Vertical’ এ ২০১৮ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর “Yachthouse Residence Club exceeds 200 meters in height” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত তথ্য থেকে জানা যায় এই ভবনটি ব্রাজিলে অবস্থিত।

Screenshot from Blumenau Vertical

বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ভবনের তথ্য নিয়ে কাজ করা সংস্থা ‘Skyscraper Center’ এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য থেকে জানা যায় ইয়টহাউস রেসিডেনস ক্লাবের কাজ ২০১৪ সাল থেকে শুরু হয়ে ২০২২ সালে শেষ হয়েছিলো।

Screnshot from Skyscraper Center Website

কি-ওয়ার্ড সার্চ অনুসন্ধানের মাধ্যমে ব্রিটিশ গণমাধ্যম ‘The Guardian’ এ ২০১৫ সালের ৩০ এপ্রিল “Chinese build 57-storey skyscraper in 19 days – timelapse video” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন পাওয়া যায়।

Screenshot from The Guardian

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, চীনের হুনান প্রদেশের চাংশা শহরের ৫৭ তলা মিনি স্কাই সিটি টাওয়ারের কাজ ১৯ দিনে শেষ হয়েছিলো।

এছাড়া, ‘Skyscraper Center’ এর ওয়েবসাইটে  প্রকাশিত চীনের হুনান প্রদেশের মিনি স্কাই সিটি টাওয়ারের ছবির সাথে ব্রাজিলের ইয়টহাউস রেসিডেনস ক্লাব ভবনের বেশ পার্থক্য রয়েছে।

Image Comparison by Rumor Scanner

দুটি ছবি তুলনামূলক পার্থক্য করলে দেখা যায়, চীনের হুনান প্রদেশের মিনি স্কাই সিটি টাওয়ারের ভবন হচ্ছে একটি। অপরদিকে ব্রাজিলের সান্তা ক্যাটরিনা রাষ্ট্রের বালনেয়ারিও কামবরিও শহরে অবস্থিত ইয়টহাউস রেসিডেনস ক্লাবের ভবন ছিলো দুইটি।

মূলত, ২০১৫ সালে চীনের হুনান প্রদেশে চাংশা শহরে অবস্থিত ৫৭ তলা মিনি স্কাই সিটি টাওয়ারের কাজ ১৯ দিনে শেষ হয়। সম্প্রতি সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফেসবুকে একটি ছবি প্রকাশ করে চীনের মিনি সিটি টাওয়ারের ছবি দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায় উক্ত ছবিটি চীনের মিনি সিটি টাওয়ারের নয় বরং ছবিটি দক্ষিণ ব্রাজিলের সান্তা ক্যাটরিনা রাষ্ট্রের বালনেয়ারিও কামবরিও শহরে অবস্থিত ইয়টহাউস রেসিডেনস ক্লাবের ভবনের ছবি।

প্রসঙ্গত, পূর্বেও ব্রাজিলে সাম্প্রতিক ভবন ধ্বসের ঘটনায় গণমাধ্যমে পুরোনো ছবি প্রচার করলে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, চীনে ১৯ দিনে ৫৭ তলা বিল্ডিং বানানোর দাবিতে ব্রাজিলের ইয়টহাউস রেসিডেনস ক্লাব ভবনের ছবি প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

ঢাবির দুই ছাত্রলীগ কর্মী কর্তৃক এক ব্যক্তি ছিনতাইয়ের শিকারের ঘটনাটি এক বছর পূর্বের

0

সম্প্রতি, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ছিনতাইকারী’ শীর্ষক শিরোনামে দুইজন ব্যক্তির ছবিসহ একটি ডিজিটাল ব্যানার ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

যা দাবি করা হচ্ছে

ডিজিটাল ব্যানারে উল্লিখিত তথ্যানুযায়ী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও সূর্যসেন হল ছাত্রলীগের দুই কর্মী তুষার হোসেন এবং শামীমুল ইসলাম মঙ্গলবার রাত ১১ টায় ঢাবি ক্যাম্পাসে প্রজিত দাস নামক এক ব্যক্তিকে মারধর করে মোটরসাইকেল, মোবাইল ও ১৭ হাজার টাকা ছিনতাই করেছে। পরবর্তীতে ভুক্তভোগী শাহবাগ থানায় তাদের নামে মামলা করেন। 

উক্ত ব্যানারে তথ্যসূত্র হিসেবে জাতীয় দৈনিক ‘আজকের পত্রিকা’ এবং তারিখ ০৪ আগস্ট উল্লেখ করা হয়েছে। এ থেকে প্রতীয়মান হচ্ছে, ঘটনাটি চলতি বছরের ০৪ আগস্ট অর্থাৎ সাম্প্রতিক সময়ের। এর ফলে ছড়িয়ে পড়া পোস্টগুলোর কমেন্টেও বিভ্রান্ত হতে দেখা গেছে অনেক কমেন্টকারীকে। 

Collage by Rumor Scanner

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ছিনতাইয়ের ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং ২০২২ সালের ০৪ আগস্টের উক্ত ঘটনাকে গত ০৪ আগস্ট প্রচার করায় ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ের বলে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে কি-ওয়ার্ড সার্চ করে, জাতীয় দৈনিক আজকের পত্রিকার ওয়েবসাইটে ২০২২ সালের ০৪ আগস্ট “ঢাবিতে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে যুবককে মেরে মোটরসাইকেল ছিনতাইয়ের অভিযোগ” শীর্ষক শিরোনামে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot from ‘Ajker Patrika’

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০২২ সালের ০২ আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সূর্যসেন হলের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ কর্মী তুষার হোসেন ও শামীমুল ইসলামের নেতৃত্বে প্রজিত দাস নামের এক ব্যক্তিকে মারধর ও সাথে থাকা মোটরসাইকেল, টাকা এবং ফোন ছিনতাই করায় রাজধানীর শাহবাগ থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।

এই ঘটনায় উল্লেখ থাকা তথ্য এবং দুই ব্যক্তির ছবির সাথে সাম্প্রতিক সময়ের দাবিতে প্রচারিত তথ্য ও ছবির মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

২০২২ সালের একই ঘটনার বিষয়টি সেসময় অন্যান্য গণমাধ্যমেও উল্লেখ পাওয়া যায়। দেখুন এখানে

অর্থাৎ, আলোচিত ঘটনাটি এক বছর পূর্বের। 

পরবর্তীতে এ বিষয়ে আরো অনুসন্ধান করে সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় এমন কোনো ঘটনার বিষয়ে প্রকাশিত কোনো সংবাদ গণমাধ্যমে উল্লেখ পাওয়া যায়নি। 

মূলত, সম্প্রতি ০৪ আগস্ট তারিখ এবং তথ্যসূত্র হিসেবে জাতীয় দৈনিক ‘আজকের পত্রিকা’র নাম উল্লেখ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রলীগ কর্মী কর্তৃক এক ব্যক্তিকে মারধর করে মোটরসাইকেল, মোবাইল ও টাকা ছিনতাই করা হয়েছে শীর্ষক একটি দাবি ফেসবুকে প্রচার করা হয়। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, উক্ত ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ের (০৪ আগস্ট) নয় বরং ঘটনাটি ২০২২ সালের ০৪ আগস্টের। উক্ত দাবিতে প্রচারিত ডিজিটাল ব্যানারগুলোতে ঘটনার সাল উল্লেখ না করার কারণে এটি সাম্প্রতিক সময়ের ঘটনা ভেবে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ছাত্রলীগ নেতা-কর্মী আটক দাবিতে পুরোনো সংবাদ প্রচার করলে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রলীগ কর্মী কর্তৃক এক ব্যক্তি ছিনতায়ের শিকার হওয়ার এক বছর আগের ঘটনার ডিজিটাল ব্যানার তৈরি করে সম্প্রতি ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

বিজ্ঞাপনের ভিডিওকে গাড়ির ড্রাইভার নিজের জীবন বাজি রেখে প্লেনের যাত্রীদের বাঁচানোর দাবিতে প্রচার

সম্প্রতি, “মন থেকে স্যালুট জানাই ওই গাড়ির ড্রাইভারকে, যিনি তার নিজের জীবন বাজি রেখে প্লেন যাত্রীদের বাঁচালেন” শীর্ষক লেখা সম্বলিত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

যা দাবি করা হচ্ছে

ভিডিওতে দেখানো গাড়ির ড্রাইভার নিজের জীবন বাজি রেখে প্লেনের যাত্রীদের বাঁচিয়েছেন। অর্থাৎ ঘটনাটি সত্য দাবি করা হচ্ছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, গাড়ির ড্রাইভার তার নিজের জীবন বাজি রেখে প্লেনের যাত্রীদের বাঁচানোর দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি সত্য নয়। প্রকৃতপক্ষে ভিডিওটি জাপানের অটোমোবাইল কোম্পানি ‘Nissan’ এর একটি বিজ্ঞাপন এবং এটি সম্পূর্ণ কম্পিউটার গ্রাফিক্সের সাহায্যে তৈরি।

ভিডিওটির কিছু কি-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে অনুসন্ধান করে ইউটিউবে ২০১১, ২০১২ এবং ২০১৩ সালের দিকে একাধিক ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Image Collage by Rumor Scanner

এর মধ্যে ২০১২ সালের ভিডিওটিতে ‘Fictionalization. Do not attempt’ (কাল্পনিক) লিখে সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ উল্লেখ করা ছিলো।

Screenshot from Youtube

এছাড়া ‘Nissan’ অটোমোবাইল কোম্পানির যুক্তরাজ্য শাখার ইউটিউব চ্যানেল ‘NissanUK’ তে ২০১১ সালের ২৫ নভেম্বর “Nissan FRONTIER Saves Aeroplane from Crashing” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একই ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot from Youtube

তবে এই ভিডিওতে কোনো সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণে না ঘটার ব্যাপারে কোনো তথ্য উল্লেখ করা ছিলো না।

পরবর্তীতে বিষয়টি অধিকতর নিশ্চিতের জন্য, আমেরিকার ভিজ্যুয়াল ইফেক্ট কোম্পানি ‘Zoic Studios’ এর ওয়েবসাইটে একই ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Image Collage by Rumor Scanner

ওয়েবসাইটটি থেকে জানা যায় তারা বিজ্ঞাপনের এই ভিডিওটি ‘Nissan’ এর উত্তর আমেরিকা শাখার জন্য তৈরি করেছিলেন।

Screenshot from Zoic Studios

এছাড়া, ‘Zoic Studios’ এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০১২ সালের ৫ এপ্রিল “Nissan Frontier “Landing Gear” Before and After” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot from Youtube

উক্ত ভিডিওটিতে অটোমোবাইল কোম্পানি ‘Nissan’ এর জন্য তাদের তৈরি বিজ্ঞাপনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কাজের প্রক্রিয়া তুলে ধরে।

মূলত, সম্প্রতি গাড়ির ড্রাইভার নিজের জীবন বাজি রেখে প্লেনের যাত্রীদের বাঁচিয়েছেন শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, উক্ত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি জাপানের অটোমোবাইল কোম্পানি ‘Nissan’ এর একটি কাল্পনিক বিজ্ঞাপন। যা সম্পূর্ণ কম্পিউটার গ্রাফিক্সের সাহায্যে তৈরি করা হয়েছিলো।

সুতরাং, গাড়ির বিজ্ঞাপনের একটি অবাস্তব ভিডিওকে বাস্তব দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

এনটিভির ফটোকার্ড নকল করে ব্রাজিলের জুলেরিমে ট্রফি জেতার বিষয়ে মিথ্যা তথ্য প্রচার

সম্প্রতি, ‘দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট এর এক গোপন সূত্র থেকে জানা গেছে ব্রাজিলের জেতা তিনটা জুলেরিমে ট্রফি ছিল টাকা দিয়ে কেনা’ শীর্ষক একটি তথ্য মূলধারার গণমাধ্যম এনটিভির আদলে তৈরি একটি ফটোকার্ডের মাধ্যমে ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। 

Screenshot: Facebook

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে ( আর্কাইভ),  এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।   

ফ্যাক্টচেক

রিউমার স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, এনটিভি এমন কোনো ফটোকার্ড কিংবা সংবাদ প্রচার করেনি বরং এনটিভির ফটোকার্ড নকল করে ভুয়া এই তথ্যটি প্রচার করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে এ সংক্রান্ত ছড়িয়ে পড়া পোস্টগুলোতে এনটিভি‘র আদলে তৈরি ফটোকার্ডটি বিশ্লেষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। এতে দেখা যায় এই ফটোকার্ডটি প্রচারের তারিখ দেখানো হয়েছে ২৭ জুলাই ২০২৩।

পরবর্তীতে কি-ওয়ার্ড সার্চ পদ্ধতি ব্যবহার করে, ‘এনটিভি’-র ওয়েবসাইট, ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ এবং ইউটিউব চ্যানেল পর্যবেক্ষণ করেও ২৭ জুলাই ২০২৩ তারিখে উক্ত দাবিতে প্রচারিত কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

পাশাপাশি, এনটিভি ছাড়া অন্য কোনো সংবাদমাধ্যমেও আলোচিত দাবিটির বিষয়ে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

একই বিষয়ে জানতে মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়াশিংটন পোস্টের ওয়েবসাইটেও অনুসন্ধান করে জুলি রিমে ট্রফি বিষয়ক এমন কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

এছাড়া, বিষয়টি অধিকতর নিশ্চিতের জন্য রিউমর স্ক্যানারের পক্ষ থেকে এনটিভির স্পোর্টস বিটের স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট বর্ষণ কবীরের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি নিশ্চিত করেন, এনটিভিতে এমন কিছু প্রচার করা হয়নি।

মূলত, সম্প্রতি ‘দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট এর এক গোপন সূত্র থেকে জানা গেছে ব্রাজিলের জেতা তিনটা জুলেরিমে ট্রফি ছিল টাকা দিয়ে কেনা’ শীর্ষক একটি তথ্য মূলধারার গণমাধ্যম এনটিভির আদলে তৈরি একটি ফটোকার্ডের মাধ্যমে ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। কিন্তু রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, এনটিভি এমন কোনো ফটোকার্ড প্রচার করেনি যা গণমাধ্যমটির পক্ষ থেকেও নিশ্চিত করা হয়েছে। তাছাড়া, ওয়াশিংটন পোস্টেও এমন কোনো সংবাদ প্রচার করা হয়নি। 

সুতরাং, এনটিভি’র ফটোকার্ডে নকল করে দ্য ওয়াশিংটন পোস্টের বরাতে গোপন সূত্রে ব্রাজিলের জেতা তিনটা জুলেরিমে ট্রফি টাকা দিয়ে কেনা শীর্ষক একটি দাবি ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

চীনে গত জুলাইতে প্রবল বর্ষণে সৃষ্ট বন্যার খবরে গণমাধ্যমে পুরোনো ছবি

গত জুলাইতে, চীনে বন্যার ঘটনায় বাংলাদেশের গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে চারটি ভিন্ন ছবি ব্যবহার করা হয়েছে।

ছবিগুলো ব্যবহার করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ঢাকা ট্রিবিউন, আজকের পত্রিকা, বিজয় টিভি, একাত্তর টিভি, এবিনিউজ২৪, একুশে সংবাদ, মানবকণ্ঠ, সংবাদ প্রকাশ, পিবিএ এজেন্সি এবং রেডিও টুডে। 

একই ছবি ব্যবহার করে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ছবিগুলো সাম্প্রতিক সময়ে চীনের বন্যার ঘটনার নয় বরং পূর্বের ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার পুরোনো ছবিকে সাম্প্রতিক ঘটনার দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

ছবি যাচাই -১

চীনে জুলাইয়ে বন্যার ঘটনায় এই ছবিটি ব্যবহার করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ঢাকা ট্রিবিউন, বিজয় টিভি এবং এবিনিউজ২৪। 

কিন্তু ছবিটি উক্ত ঘটনার নয়।

ছবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে চীনের একটি ইন্টারনেট ভিত্তিক তথ্য কেন্দ্রের ওয়েবসাইট Spanish.CHINA.ORG.CN এ ২০০৯ সালের ১৭ মে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।

চীনের প্রাকৃতিক দূর্যোগ বিষয়ক এই প্রতিবেদনে ছবিটি ব্যবহার করা হলেও এর মূল সূত্র উল্লেখ করা হয়নি।  

অর্থাৎ, ছবিটি অন্তত ১৪ বছর পূর্ব থেকেই ইন্টারনেটে রয়েছে যা থেকে প্রতীয়মান হয় যে এটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়।  

ছবি যাচাই- ২

চীনে জুলাইয়ে বন্যার ঘটনায় এই ছবিটি ব্যবহার করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে আজকের পত্রিকা, একুশে সংবাদ এবং রেডিও টুডে। 

কিন্তু ছবিটি উক্ত ঘটনার নয়।

ছবিটির মূল সূত্রের বিষয়ে অনুসন্ধানে আন্তজার্তিক সংবাদ সংস্থা AP’র ওয়েবসাইটে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: AP 

ছবিটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, ২০২২ সালের ২১ জুন মধ্য চীনের জিয়াংসি প্রদেশের শাংগ্রাওতে শ্রমিকরা প্লাবিত রেলপথের একটি অংশের দৃশ্য এটি। 

অর্থাৎ, এই ছবিটিও সাম্প্রতিক সময়ের নয়। 

ছবি যাচাই- ৩

চীনে জুলাইয়ে বন্যার ঘটনায় এই ছবিটি ব্যবহার করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে মানবকণ্ঠ, সংবাদ প্রকাশ এবং পিবিএ এজেন্সি। 

কিন্তু ছবিটি উক্ত ঘটনার নয়।

ছবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে কানাডা ভিত্তিক গণমাধ্যম CBC তে ২০২০ সালের ১৩ জানুয়ারি “5 dead in latest flooding in southern China rainstorms” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: CBC

এপির তোলা এই ছবিতে সেসময় চীনে বন্যার ঘটনায় উদ্ধারকাজে দৃশ্য উঠে এসেছে। 

অর্থাৎ, ছবিটি তিন বছর পূর্বের। 

ছবি যাচাই- ৪

চীনে জুলাইয়ে বন্যার ঘটনায় এই ছবিটি ব্যবহার করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে একাত্তর টিভি। 

কিন্তু ছবিটি উক্ত ঘটনার নয়।

ছবিটির মূল সূত্রের বিষয়ে অনুসন্ধানে ব্রিটিশ গণমাধ্যম BBC এর ওয়েবসাইটে ২০২২ সালের ২২ জুন “Hundreds of thousands evacuated as floods ravage southern China” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: BBC

ছবিটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, সেসময় চীনের বন্যার ঘটনায় উদ্ধারকারীরা ফুজিয়ান প্রদেশে বন্যার পানিতে আটকে পড়া মানুষকে সরিয়ে নিতে রাবারের ডিঙ্গি ব্যবহার করছে।

অর্থাৎ, এই ছবিটিও পুরোনো। 

গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিগুলোর ক্যাপশনে ফাইল ফটো বা পুরোনো ছবি শীর্ষক কোনো তথ্য উল্লেখ করা হয়নি বরং কিছু গণমাধ্যম ছবিগুলো সংগৃহীত এবং কোনো কোনো গণমাধ্যম ছবির ক্যাপশনে বিদেশি সংবাদ সংস্থার নাম উল্লেখ করেছে। আবার কোনোটিতে কিছুই উল্লেখ করা হয়নি। সাম্প্রতিক ঘটনার বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ছবিগুলো ব্যবহার করে সংগৃহীত উল্লেখ কিংবা কোনো তথ্য উল্লেখ না থাকায় স্বাভাবিকভাবেই ছবিগুলো চীনের গত জুলাইয়ের বন্যার ঘটনার বলে প্রতীয়মান হয়। এতে করে নেটিজেনদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হওয়া অমূলক নয়। 

মূলত, গত জুলাইতে চীনের বন্যার ঘটনায় দেশীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে চীনের ঘটনার দাবিতে চারটি ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। তবে, রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ছবিগুলো উক্ত ঘটনার নয়। ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার পুরোনো ছবিকে চীনের গত জুলাইয়ের বন্যার ঘটনার খবরে ব্যবহার করা হয়েছে। প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোতে আলোচিত ছবিগুলোর ক্যাপশনে ফাইল ফটো বা পুরোনো ঘটনার ছবি শীর্ষক কোনো তথ্যও দেওয়া হয়নি। এতে করে স্বাভাবিকভাবে ছবিগুলো চীনের গত জুলাইয়ের বন্যার ঘটনার বলে প্রতীয়মান হয়, যা বিভ্রান্তির জন্ম দিয়েছে।

সুতরাং, চীনে গত জুলাইয়ে বন্যার ঘটনায় বাংলাদেশের গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে চারটি পুরোনো ছবিকে সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

হাইকোর্টের নির্দেশে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অনুমতি দেওয়ার দাবিটি মিথ্যা 

সম্প্রতি ‘হাইকোর্টের নির্দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অনুমতি দিলো রাষ্ট্রপতি’ শীর্ষক শিরোনাম এবং ‘রাষ্ট্রপতির অনুমোদন সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অনুমতি’ শীর্ষক থাম্বনেইল ব্যবহার করে একটি ভিডিও ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম ইউটিউবে প্রচার করা হয়েছে। 

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, হাইকোর্টের নির্দেশে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অনুমতি দেওয়ার দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সঠিক নয় বরং অধিক ভিউ পাবার আশায় চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যসূত্র ছাড়াই ভিত্তিহীনভাবে উক্ত দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অনুমতি দেওয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি কিংবা এখন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে এসম্পর্কিত কোনো ঘোষণাও দেওয়া হয়নি।

অনুসন্ধানের শুরুতে ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। গত ০২ আগস্ট Sabai Sikhi নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ‘হাইকোর্টের নির্দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অনুমতি দিলো রাষ্ট্রপতি’ শীর্ষক শিরোনাম এবং ‘রাষ্ট্রপতির অনুমোদন সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অনুমতি’ শীর্ষক থাম্বনেইল ব্যবহার করে আলোচিত ভিডিওটি প্রকাশ করা হয়।

Screenshot: Sabai Sikhi YouTube 

১ মিনিট ৫৮ সেকেন্ডের এই ভিডিওটিতে বলা হয়, ‘এবার হাইকোর্টের নির্দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ঘোষণা দিলো নতুন রাষ্ট্রপতি শাহাবুদ্দিন চুপ্পু। আদালতের রায়ে আগামী জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ সরকারের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিকল্প নেই। এজন্য সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে আগামী তিন মাসের মধ্যেই সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বহালের ঘোষণা দেন।’

উক্ত প্রতিবেদনের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক একাধিক কি ওয়ার্ড সার্চ করেও আলোচিত দাবির কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। এছাড়াও, গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্রে উল্লিখিত দাবির অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

পাশাপাশি, ২০১১ সালে বাংলাদেশে আপিল বিভাগ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সর্ম্পকিত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে। পরবর্তীতে এই ব্যবস্থা আর পূর্ণবহাল করা হয়নি।

তাছাড়া, বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী, জাতীয় সংসদে বিল পাশ হওয়ার পূর্বে এধরণের বিষয়ে বিচার বিভাগ কিংবা রাষ্ট্রপতির সরাসরি হস্তক্ষেপেরও সুযোগ নেই। 

অর্থাৎ, উপরোক্ত বিষয়গুলো পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, আলোচিত ভিডিওটিতে প্রচারিত দাবিটি সঠিক নয়। 

মূলত, সম্প্রতি ‘হাইকোর্টের নির্দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অনুমতি দিলো রাষ্ট্রপতি’ শীর্ষক শিরোনাম এবং ‘রাষ্ট্রপতির অনুমোদন সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অনুমতি’ শীর্ষক থাম্বনেইল ব্যবহার করে একটি ভিডিও ইউটিউবে প্রচার করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানের প্রেক্ষিতে দেখা যায়, উক্ত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটিতে কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রের উল্লেখ নেই এবং আলোচিত দাবিগুলো সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। প্রকৃতপক্ষে, হাইকোর্ট বা সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অনুমতি দেওয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি।

উল্লেখ্য, পূর্বেও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়ে ইন্টারনেটে একাধিক ভুয়া তথ্য প্রচার করা হলে সেসময় বিষয়গুলো নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কয়েকটি প্রতিবেদন দেখুন এখানে এবং এখানে

সুতরাং, হাইকোর্টের নির্দেশে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অনুমতি দেওয়ার দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

জাপানে জুলাইতে প্রবল বর্ষণে সৃষ্ট বন্যার খবরে গণমাধ্যমে পুরোনো ছবি

গত জুলাইতে, জাপানে প্রবল বর্ষণে সৃষ্ট বন্যার ঘটনায় বাংলাদেশের গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দুইটি  ছবি ব্যবহার করা হয়েছে।

ছবিগুলো ব্যবহার করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বাংলা ট্রিবিউন, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস), ডেইলি সান, নয়া দিগন্ত, সাম্প্রতিক দেশকাল, জুম বাংলা এবং নিউজজি২৪

একই ছবি ব্যবহার করে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ছবি দুইটি সাম্প্রতিক সময়ে জাপানে প্রবল বর্ষণের ঘটনায় সৃষ্ট বন্যার নয় বরং পূর্বের ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার পুরোনো ছবিকে সাম্প্রতিক ঘটনার দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে। 

ছবি যাচাই- ১

Screenshot: Bangla Tribune

জাপানে সাম্প্রতিক প্রবল বর্ষণে সৃষ্ট বন্যার ঘটনার খবরে ছবিটি ব্যবহার করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বাংলা ট্রিবিউন। 

কিন্তু ছবিটি উক্ত ঘটনার নয়।

ছবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি’তে ২০১৩ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর “Powerful Typhoon Man-yi hits central Japan” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: BBC

ছবিটির ক্যাপশনে বলা হয়, সে সময় জাপানের কিয়োটোর লোকেরা বন্যা কবলিত রাস্তায় চলাচলের জন্য নৌকায় চড়তে বাধ্য হয়েছিল। 

অর্থাৎ, ছবিটি অন্তত ১০ বছরের পুরোনো। 

ছবি যাচাই- ২

জাপানে সাম্প্রতিক প্রবল বর্ষণে সৃষ্ট বন্যার ঘটনার খবরে ছবিটি ব্যবহার করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস), ডেইলি সান, নয়া দিগন্ত, সাম্প্রতিক দেশকাল, জুম বাংলা এবং নিউজজি২৪

কিন্তু ছবিটি উক্ত ঘটনার নয়।

ছবিটির মূল সূত্রের বিষয়ে অনুসন্ধানে ব্রিটিশ সংবাদ সংস্থা রয়টার্স এ আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Reuters

ছবিটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, ২০১৫ সালের ১০ সেপ্টেম্বর জাপানের ইবারাকি প্রিফেকচারের জোসোতে, টাইফুন ইটাউ দ্বারা সৃষ্ট কিনুগাওয়া নদী দ্বারা প্লাবিত একটি এলাকায় অগ্নিনির্বাপকদের দ্বারা যানবাহন থেকে লোকদের উদ্বার করার সময় ছবিটি তোলা। 

অর্থাৎ, ছবিটি অন্তত ৮ বছরের পুরোনো। 

গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিগুলোর ক্যাপশনে ফাইল ফটো বা পুরোনো ছবি শীর্ষক কোনো তথ্য উল্লেখ করা হয়নি বরং কিছু গণমাধ্যম ছবিগুলো সংগৃহীত এবং কোনো কোনো গণমাধ্যম ছবির ক্যাপশনে বিদেশি সংবাদ সংস্থার নাম উল্লেখ করেছে। আবার কোনোটিতে কিছুই উল্লেখ করা হয়নি। সাম্প্রতিক ঘটনার বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ছবিগুলো ব্যবহার করে সংগৃহীত উল্লেখ কিংবা কোনো তথ্য উল্লেখ না থাকায় স্বাভাবিকভাবেই ছবিগুলো জাপানের সাম্প্রতিক প্রবল বর্ষণের ঘটনার বলে প্রতীয়মান হয়। এতে করে নেটিজেনদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হওয়া অমূলক নয়। 

মূলত, গত জুলাইতে জাপানে প্রবল বর্ষণের ঘটনায় দেশীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জাপানের ঘটনার দাবিতে দুইটি ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। তবে, রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ছবিগুলো উক্ত ঘটনার নয়। ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার পুরোনো ছবিকে জাপানের সাম্প্রতিক প্রবল বর্ষণের ঘটনার খবরে ব্যবহার করা হয়েছে। প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোতে আলোচিত ছবিগুলোর ক্যাপশনে ফাইল ফটো বা পুরোনো ঘটনার ছবি শীর্ষক কোনো তথ্যও দেওয়া হয়নি। এতে করে স্বাভাবিকভাবে ছবিগুলো জাপানের সাম্প্রতিক বন্যার ঘটনার বলে প্রতীয়মান হয়, যা বিভ্রান্তির জন্ম দিয়েছে।

সুতরাং, জাপানের প্রবল বর্ষণের ঘটনায় বাংলাদেশের গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দুইটি পুরোনো ছবিকে সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র