Home Blog Page 551

জাতীয় পার্টি বিএনপিতে যোগ দেয়নি, ভুয়া তথ্য ইউটিউবে 

সম্প্রতি, “নির্বাচন বর্জন করে বিএনপিতে যোগ দিলো জাতীয় পার্টি নির্বাচন বন্ধ করলো রাষ্ট্রপতি ও সিইসি” শীর্ষক থাম্বনেইলে ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম ইউটিউবে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে। 

জাতীয় পার্টি

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি ভিডিওটি প্রায় ১ লক্ষ ৫৫ হাজার  ৮৬২ বার দেখা হয়েছে। এছাড়া ভিডিওটিতে প্রায় ৮ হাজার ১ শত পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, জাতীয় পার্টি নির্বাচন বর্জন করে বিএনপিতে যোগ দেয়নি এবং রাষ্ট্রপতি এবং সিইসি নির্বাচন বন্ধও ঘোষণা করেনি বরং অধিক ভিউ পাবার আশায় চটকদার থাম্বনেইল ব্যবহার করে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায় ৮ মিনিটের এই ভিডিওটি ভিন্ন দুইটি ঘটনার ভিডিও ক্লিপ এবং ছবি নিয়ে তৈরি করা হয়েছে।   

আলোচিত ভিডিওটির শুরুতেই একটি ভিডিওর ক্লিপ দেখানো হয়েছে। পরবর্তীতে আলোচিত দাবিটি প্রসঙ্গে চ্যানেলটির উপস্থাপক বলেন, “সারা দেশ থেকে প্রার্থী প্রত্যাহার করে বিএনপিতে যোগ দিচ্ছে জাতীয় পার্টি। শুধু তাই নয় জাতিসংঘে বিএনপির ভয়ঙ্কর চিঠি। দিশা না পেয়ে সব হারিয়ে নির্বাচন বাতিল করছে সিইসি…।” পরবর্তীতে চ্যানেলটির উপস্থাপক আলোচিত দাবিটি প্রসঙ্গে দুইটি ভিডিও দেখান, যেখানে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের এবং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খানকে দেখা যায়।

সংবাদপাঠ অংশে থাকা বিষয়গুলো নিয়ে অনুসন্ধানে মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্য কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে আলোচিত দাবিটির সত্যতা পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে উক্ত ভিডিওটিতে দেখানো ভিডিও ক্লিপের বিষয়ে পৃথকভাবে অনুসন্ধান চালায় রিউমর স্ক্যানার টিম।

ভিডিও যাচাই ০১

আলোচিত ভিডিওটিতে দেখানো জিএম কাদেরের ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে কিওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে দেশ টিভির ইউটিউব চ্যানেলে গত ০১ জানুয়ারি “শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে থাকব কি না সময়ই বলে দেবে: জিএম কাদের” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। এই প্রতিবেদনের একটি অংশ আলোচিত ভিডিওটিতে যুক্ত করা হয়েছে। 

Video Comparison : Rumor Scanner

উক্ত ভিডিও প্রতিবেদনে গত ১ জানুয়ারি রংপুর নগরীর কাচারি বাজার কোর্ট এলাকায় গণসংযোগকালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি দলীয় অবস্থান সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন। তবে আলোচিত দাবির বিষয়ে তাকে কোনো মন্তব্য করতে দেখা যায়নি। 

ভিডিও যাচাই ০২

পরবর্তী ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে বায়ান্ন টিভির  ইউটিউব চ্যানেলে গত ০১ জানুয়ারি “জাতিসংঘ, ইইউ, মার্কিনিরা চিঠি ইস্যু করেছে: বিএনপি নেতা মঈন খান” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওটির একটি অংশ আলোচিত ভিডিওটিতে যুক্ত করা হয়েছে। 

Video Comparison : Rumor Scanner

উক্ত ভিডিওতে ছাত্রদলের ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গত ১ জানুয়ারি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের সাথে কথোপকথনকালে তিনি আগামী ৭ জানুয়ারি নির্বাচন কেন্দ্রিক বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন। এই ভিডিওতেও আলোচিত দাবি কেন্দ্রিক কোনো তথ্য মেলেনি।

এছাড়া, গণমাধ্যম কিংবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কোনো গ্রহণযোগ্য সূত্রে আলোচিত দাবিগুলোর বিষয়ে কেনো সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

তবে মূলধারার গণমাধ্যম যুগান্তরের ওয়েবসাইটে ২০২৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর “ভোটে থাকার সিদ্ধান্ত জাতীয় পার্টির” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে জাতীয় পার্টি। ৩০০ সংসদীয় আসনের মধ্যে ২৮৩টিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে দলটি। উক্ত প্রতিবেদনে দলটির মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নুকে উদ্ধৃত করে জাতীয় পার্টির নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয় নিশ্চিত করা হয়। অর্থাৎ জাতীয় পার্টি নির্বাচন বর্জন করছে না। 

মূলত, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে উত্তপ্ত দেশের রাজনীতির মাঠ। এই নির্বাচনের অংশগ্রহণ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে চলছে নানা আলোচনা সমালোচনা। দেশের অন্যতম রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) অনেক আগে থেকেই বর্তমান সরকারের আমলে অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়ে আসলেও এই নির্বাচনে জাতীয় পার্টির অংশগ্রহণ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে ছিল নানা কৌতূহল। দলটির বেশ কয়েকজন প্রার্থী নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেও শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে থাকবে কিনা তা সময়ই বলে দিবে বলে মন্তব্য করেন দলটির চেয়ারম্যান। এরই প্রেক্ষিতে ‘নির্বাচন বর্জন করে বিএনপিতে যোগ দিলো জাতীয় পার্টি নির্বাচন বন্ধ করলো রাষ্ট্রপতি ও সিইসি’ শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়। তবে অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত দাবিগুলো সঠিক নয়। ২০২৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু দলটির নির্বাচনে অংশগ্রহণের ঘোষণা দেন। এছাড়া রাষ্ট্রপতি কিংবা সিইসি নির্বাচন বন্ধ করেনি। প্রকৃতপক্ষে, কোনোপ্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই আলোচিত দাবিগুলো প্রচার করা হয়েছে। 

প্রসঙ্গত, আগামী ৭ জানুয়ারি রোববার ভোটগ্রহণের দিন রেখে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। 

সুতরাং, জাতীয় পার্টির নির্বাচন বর্জন করে বিএনপিতে যোগ দেওয়া এবং রাষ্ট্রপতি এ সিইসি নির্বাচন বন্ধ করল দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

পাকিস্তান ট্রিবিউন শেখ হাসিনার ছবি সম্বলিত ফারাওর চেহারা পুর্নগঠন বিষয়ে কোনো ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি

0

সম্প্রতি, পাকিস্তানের ‘পাকিস্তান ট্রিবিউন’ নামের ফেসবুক পেজের নাম সম্বলিত একটি ফটোকার্ড ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে, যাতে শিরোনাম দেওয়া হয়েছে “বিজ্ঞানীরা ৩২০০ বছর পর ফারাওয়ের চেহারার ছবি পুর্নগঠন করেছে।” এই ফটোকার্ডে ফারাওয়ের পুর্নগঠিত চেহারার ছবি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি ব্যবহার করা হয়েছে।  

শেখ হাসিনার ছবি

উক্ত ফটোকার্ড সম্বলিত ফেসবুকের কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, পাকিস্তান ট্রিবিউনের ফেসবুক পেজে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি সম্বলিত ফারাওর চেহারা পুর্নগঠন বিষয়ে কোনো ফটোকার্ড প্রকাশ করা হয়নি বরং ২০২২ সালে পাকিস্তান ট্রিবিউন কর্তৃক প্রকাশিত এ সংক্রান্ত ফটোকার্ডে ফারাওর মূল ছবির স্থলে শেখ হাসিনার ছবি যুক্ত করে প্রচার করা হচ্ছে।   

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত ফটোকার্ডটির নিচের অংশে Pakistan Tribune লেখা থাকার প্রেক্ষিতে একই নামে ফেসবুকে একটি পেজ খুঁজে পেয়েছি আমরা। 

পেজটিতে ২০২২ সালের ২৭ ডিসেম্বর প্রকাশিত এ সংক্রান্ত মূল ফটোকার্ডটির (আর্কাইভ) সন্ধান মিলেছে।

Screenshot: Facebook 

এই ফটোকার্ডটির সাথে ফেসবুকে সাম্প্রতিক সময়ে ছড়িয়ে পড়া ফটোকার্ডটি মিলিয়ে দেখা যায়, দুইটি ফটোকার্ডে আনুষঙ্গিক সকল বিষয়বস্তুর মিল থাকলেও মূল ফটোকার্ডে থাকা ফারাওয়ের চেহারার পুর্নগঠনের ছবির স্থলে শেখ হাসিনার ছবি বসিয়ে ফটোকার্ডটি এডিট করা হয়েছে। 

Photocard comparison: Rumor Scanner 

২০২২ সালের মূল ঘটনাটির বিষয়ে গণমাধ্যম সূত্রে জানা যাচ্ছে, আধুনিক বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তির সাহায্যে ৩২০০ বছর পর প্রাচীন মিসরের সবচেয়ে শক্তিশালী দ্বিতীয় ফারাও রামসেস-এর মুখাবয়ব অঙ্কন করা হয়েছে। মিসর এবং ইংল্যান্ডের বিজ্ঞানীদের সহযোগিতায় একটি ৩ডি মডেল ব্যবহার করে ফেরাউনের মুখটি পুনর্গঠন করা হয়। আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে ফারাওয়ের এটিই প্রথম বৈজ্ঞানিক চিত্র, যা তার আসল মাথার খুলির সিটি স্ক্যানের সাহায্যে তৈরি করা হয়েছে। ফারাওয়ের মাথার খুলির থ্রিডি মডেল তৈরি করেছেন কায়রো বিশ্ববিদ্যালয়ের সাহার সেলিম।

মূলত, ২০২২ সালে ৩২০০ বছর পর প্রাচীন মিসরের সবচেয়ে শক্তিশালী দ্বিতীয় ফারাও রামসেস-এর মুখাবয়ব অঙ্কন করা হয়েছে। মিসর এবং ইংল্যান্ডের বিজ্ঞানীদের সহযোগিতায় একটি ৩ডি মডেল ব্যবহার করে ফেরাউনের মুখটি পুনর্গঠন করা হয়। উক্ত ঘটনার বিষয়ে একটি ফটোকার্ড প্রকাশ করে পাকিস্তানের ‘পাকিস্তান ট্রিবিউন’ নামে একটি ফেসবুক পেজ। উক্ত ফটোকার্ডে ফারাও এর পুর্নগঠিত ছবির স্থলে শেখ হাসিনার ছবি বসিয়ে সম্প্রতি বিকৃত ফটোকার্ডটি ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে। 

সুতরাং, ২০২২ সালে পাকিস্তান ট্রিবিউন নামের ফেসবুক পেজ কর্তৃক প্রকাশিত একটি ফটোকার্ডে ফারাওর ছবির স্থলে শেখ হাসিনার ছবি যুক্ত করে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিকৃত। 

তথ্যসূত্র

ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ফুটবল ম্যাচের প্রতি মিনিটে গোল করা একমাত্র ফুটবলার নন

0

সম্প্রতি, ৯০ মিনিট দৈর্ঘ্যের ফুটবলে প্রথম থেকে ৯০ প্রতি মিনিটেই গোল করার রেকর্ড করা ফুটবল ইতিহাসে একমাত্র ফুটবলার ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো দাবি করে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। 

ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ৯০ মিনিট দৈর্ঘ্যের ফুটবলে প্রথম থেকে ৯০ প্রতি মিনিটেই গোল করার রেকর্ড করা ফুটবল ইতিহাসে একমাত্র ফুটবলার ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো নন বরং রোনালদো ছাড়াও আরো অন্তত দুই ফুটবলার এই কৃতিত্ব অর্জন করেছেন।

কি-ওয়ার্ড সার্চ পদ্ধতি ব্যবহার করে ব্রিটিশ ট্যাবলয়েড সংবাদপত্র দ্য সান এর ওয়েবসাইটে ২০২১ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর “ONE EVERY MINUTE Luis Suarez lands incredible goalscoring feat by netting in EVERY minute of match between 1 and 97 during career” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ৯০ মিনিট ফুটবলের প্রতি মিনিটে গোল দেওয়ার কৃতিত্ব অর্জন করা তিন ফুটবলার হলেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো, জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচ এবং লুইস সুয়ারেজ। সম্মানজনক এই কৃতিত্ব অর্জনের তালিকায় সর্বশেষ সংযোজন হলে লুইস সুয়ারেজ। ২০২১ সালে লা লিগার একটি ম্যাচে গেতাফের বিরুদ্ধে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের হয়ে ৭৮ মিনিটে গোল দিয়ে এই তালিকায় যুক্ত হন তিনি।

ক্রীড়াভিত্তিক অনলাইন পোর্টাল ট্রিবুনায় ২০২১ সালের ২৩ সেপ্টেবরে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনও একই তথ্য মিলেছে।  
মূলত, সাধারণত ফুটবল খেলা ৯০ মিনিটের হয়ে থাকে। এই ‘৯০ মিনিটের প্রতি মিনিটেই গোলের রেকর্ড করা ফুটবল ইতিহাসের একমাত্র ফুটবলার ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো’ দাবি করে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। উক্ত দাবির বিপরীতে অনুসন্ধানে জানা গেছে, রোনালদো ছাড়াও এই কৃতিত্ব অর্জনের তালিকার আরো অন্তত দুই ফুটবলার রয়েছেন। এরা হলেন, দুই ফুটবলার হলেন উরুগুয়ের লুইস সুয়ারেজ ও সুইডেনের জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচ।

উল্লেখ্য, পূর্বে একই দাবি লিওনেল মেসির নামে ছড়ালে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার জানায়, মেসি এখনো এই রেকর্ড গড়েননি। ১ মিনিটের মধ্যে গোল করতে পারলে ১ থেকে ৯০ মিনিটে প্রতি মিনিটে গোল দেওয়ার তালিকায় জায়গা করে নিবেন তিনি, যে তালিকায় ইতোমধ্যেই আরো অন্তত তিন ফুটবলার রয়েছেন। 

সুতরাং, “ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোই একমাত্র ফুটবলার যিনি ফুটবল ইতিহাসে ১ থেকে ৯০ প্রতি মিনিটেই গোল করার রেকর্ড করেছেন” শীর্ষক দাবিটি বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

সিইসি কর্তৃক প্রধানমন্ত্রীকে অবাঞ্চিত ঘোষণা এবং সেনাবাহিনীর নির্দেশে জাতীয় পার্টির নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ভুয়া দাবি

গত পহেলা জানুয়ারি Sabai Sikhi নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ‘এইমাত্র হাসিনাকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করলো প্রধান নির্বাচন কমিশনার হাবিবুল আউয়াল’ শীর্ষক শিরোনাম ও ‘সেনাবাহিনীর নির্দেশে নির্বাচন থেকে সরে দাড়ালো জাতীয় পার্টি’ শীর্ষক থাম্বনেইল ব্যবহার করে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।

অবাঞ্চিত ঘোষণা

ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি ভিডিওটি দেখা হয়েছে প্রায় ১৬ হাজার বার। ভিডিওটিতে প্রায় ৫ শত পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া দেখানো হয়েছে।

পরবর্তীতে এই ভিডিওটি আরও একটি ইউটিউব চ্যানেলে প্রচার করা হয়। সেটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সিইসি অবাঞ্চিত ঘোষণা করেননি এবং সেনাবাহিনীর নির্দেশে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে জাতীয় পার্টির সরে দাঁড়ানোর দাবিটিও সঠিক নয় বরং অধিক ভিউ পাবার আশায় ভিন্ন ভিন্ন কয়েকটি ঘটনার ভিডিও ক্লিপ যুক্ত করে চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। এতে দেখা যায়, এটি ভিন্ন ভিন্ন কয়েকটি ঘটনার ভিডিও ক্লিপ নিয়ে তৈরি একটি বিস্তারিত ভিডিও। 

উক্ত ভিডিওটি’র কোথাও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল কর্তৃক অবাঞ্চিত ঘোষণা করার দৃশ্য দেখানো হয়নি কিংবা এ সম্পর্কিত কোনো তথ্যেরও উল্লেখ পাওয়া যায়নি। 

তাছাড়া সেনাবাহিনীর নির্দেশে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে জাতীয় পার্টির সরে দাঁড়ানোর দাবিটির পক্ষেও ভিডিওটির বিস্তারিত অংশে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে আলোচিত ভিডিওটিতে প্রচারিত ভিডিও ক্লিপগুলোর বিষয়ে আলাদা আলাদাভাবে অনুসন্ধান চালায় রিউমর স্ক্যানার টিম।

ভিডিও যাচাই- ০১

আলোচিত ভিডিওটি থেকে কিছু স্থিরচিত্র নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে বেসরকারি টেলিভিশন ‘চ্যানেল ২৪র ইউটিউব চ্যানেলে ২০২২ সালের ৪ অক্টোবর ‘নির্বাচন বর্জনের বিষয়ে যা বললেন জিএম কাদের’ শীর্ষক শিরোনামে জিএম কাদেরের বক্তব্য নিয়ে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

এই ভিডিওটি’র সাথে আলোচিত ভিডিওটিতে দেখানো প্রথম ভিডিও ক্লিপটি’র অর্থাৎ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের বক্তব্যের অংশের মিল পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner

অর্থাৎ, এই ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়।

ভিডিও যাচাই- ০২

আলোচিত ভিডিওটি থেকে কিছু স্থিরচিত্র নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে বেসরকারি টেলিভিশন ‘চ্যানেল আই’ এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ৩১ ডিসেম্বর (২০২৩) ‘নির্বাচন বর্জন করেছেন জাতীয় পার্টির বরিশাল-২, ৫ ও বরগুনা-১ আসনের প্রার্থীরা’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

এই ভিডিওটি’র সাথে আলোচিত ভিডিওটিতে দেখানো দ্বিতীয় ভিডিও ক্লিপটি’র মিল পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner

অর্থাৎ, এই ভিডিওটি জাতীয় পার্টির সম্মিলিত নির্বাচন বর্জনের নয় বরং সেখানে দলটি’র বরিশাল-২, ৫ ও বরগুনা-১ আসনের প্রার্থীদের নির্বাচন বর্জনের ঘোষণার উল্লেখ পাওয়া যায়।

তাছাড়া, মূলধারার গণমাধ্যম যুগান্তর এর অনলাইন সংস্করণে পহেলা জানুয়ারি ‘নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত থাকব কিনা সময়ই বলে দেবে: জিএম কাদের’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, একদিনে দেশের পাঁচটি আসনে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের কারণ হিসেবে দলটির চেয়ারম্যান ও রংপুর-৩ (সদর) আসনের প্রার্থী (লাঙ্গল) জিএম কাদের বলেন, প্রার্থিতা প্রত্যাহার হুমকির কারণেও হতে পারে, অর্থের অভাবেও হতে পারে। অনেক প্রার্থী অর্থশালী হয়ে থাকেন না, অর্থের কারণেও অনেকে নির্বাচন থেকে সরে যান।

জাতীয় পার্টি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে থাকবে কিনা-এমন প্রশ্নের জবাবে জিএম কাদের বলেন, নির্বাচন না আসা পর্যন্ত সঠিক করে বলা যাচ্ছে না। নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত থাকব কিনা সেটা সময়ই বলে দেবে। সেই পর্যন্ত অপেক্ষা করেন।

পাশাপাশি, মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে এখন পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল কর্তৃক অবাঞ্চিত ঘোষণার দাবির সত্যতা পাওয়া যায়নি।

মূলত, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন সময়ে ইন্টারনেটে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বিষয়ে বিভিন্ন ধরনের তথ্য প্রচারের প্রবণতা বাড়ছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত পহেলা জানুয়ারি Sabai Sikhi নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ‘এইমাত্র হাসিনাকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করলো প্রধান নির্বাচন কমিশনার হাবিবুল আউয়াল’ শীর্ষক শিরোনাম ও সেনাবাহিনীর নির্দেশে নির্বাচন থেকে সরে দাড়ালো জাতীয় পার্টি’ শীর্ষক থাম্বনেইল ব্যবহার করে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে। তবে অনুসন্ধানে মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্য কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে আলোচিত দাবিগুলোর সত্যতা পাওয়া যায়নি। প্রকৃতপক্ষে, অধিক ভিউ পাবার আশায় ভিন্ন ভিন্ন কয়েকটি ঘটনার ভিডিও ক্লিপ যুক্ত করে চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, আগামী ৭ জানুয়ারি রোববার ভোটগ্রহণের দিন রেখে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল।

সুতরাং সিইসি কর্তৃক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অবাঞ্চিত ঘোষণা এবং সেনাবাহিনীর নির্দেশে জাতীয় পার্টির নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর দাবিতে প্রচারিত তথ্যগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

মাহিয়া মাহির ভোটের প্রচারের ভিডিওতে মুরাদ হাসানকে জড়িয়ে ভিন্ন অডিও যুক্ত করে প্রচার

সম্প্রতি, রাজশাহী-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি জামালপুর-৪ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মুরাদ হাসানকে জড়িয়ে শারীরিক সম্পর্কের বিষয়ে মন্তব্য করেছেন দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। 

ভিডিওটিতে মাহিয়া মাহিকে কথিত কন্ঠে বলতে শোনা যায়, উনি আমার সাথে এত বাজেভাবে সেক্স করছে যে আমি জাস্ট বলে বুঝাতে পারবো না। আমি অসুস্থ। আমি তিনদিন হচ্ছে যে বিছানা থেকে উঠে দাঁড়াতে পারি না। ইভেন আমি এখনো অসুস্থ। আমি আমার রিপোর্ট গুলা আপনাদের কাছে দেখাবো। আমার যে জরায়ুতে ইনফেকশন হয়ে গেছে।… (বানান এবং শব্দচয়ন অপরিবর্তিত)

মাহিয়া মাহির

ফেসবুকে প্রচারিত কিছু ভিডিও পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, মাহিয়া মাহি মুরাদ হাসানকে জড়িয়ে শারীরিক সম্পর্কের বিষয়ে সম্প্রতি কোনো মন্তব্য করেননি বরং মাহিয়া মাহি কর্তৃক সময় সংবাদকে দেওয়া নির্বাচনী প্রচারণা কেন্দ্রিক একটি বক্তব্যের ভিডিওর সাথে ভিন্ন ব্যক্তির অডিও যুক্ত করে আলোচিত ভিডিওটি ভিন্ন দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে। 

ভিডিও যাচাই 

অনুসন্ধানে গত ৩১ ডিসেম্বর (২০২৩) ‘সময় টিভি’র ইউটিউব চ্যানেলে “ভোটের সব খবর জানতে চোখ রাখুন সময়ে” শীর্ষক ক্যাপশনে এ সংক্রান্ত মূল রিলস ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত ভিডিওতে থাকা মাহিয়া মাহির পোশাক, ব্যাকগ্রাউন্ড এবং গলায় ঝুলানো আইডি কার্ডের সাথে আলোচিত ভিডিওটিতে থাকা মাহিয়া মাহির পোশাক, ব্যাকগ্রাউন্ড এবং গলায় ঝুলানো আইডি কার্ডের মিল পরিলক্ষিত হয়। 

Video Comparison: Rumor Scanner 

ভিডিওটিতে মাহিয়া মাহিকে বলতে শোনা যায়, “আসসালামু আলাইকুম! আমি মাহিয়া মাহি। ভোটের খুঁটিনাটি সব খবর জানতে চোখ রাখুন সময় টিভি’র ইউটিউব এবং ফেসবুক চ্যানেলে। আর ভিজিট করুন ইলেকশন ডট সময় নিউজ ডট টিভিতে।”

এছাড়া, সময় টিভি’র ফেসবুক পেজেও একই ভিডিও পাওয়া যায়।

অর্থাৎ, এই ভিডিওতে মাহি মুরাদ হাসানের বিষয়ে কোনো মন্তব্যই করেননি।

অডিও যাচাই 

দেশীয় সংবাদমাধ্যম ডিবিসি নিউজের ইউটিউব চ্যানেলে গত বছরের ২৩ নভেম্বর “পদের লোভ দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্কের অভিযোগ” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত এক নারীর সংবাদ সম্মেলনের ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

১৩ মিনিট ২৭ সেকেন্ডের সংবাদ সম্মেলনের ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ৯ মিনিট ৫০ সেকেন্ডের পর থেকে উক্ত নারীর বক্তব্যের সাথে আলোচিত ভিডিওটিতে মাহিয়া মাহির কথিত কন্ঠ ও বক্তব্যের মিল রয়েছে।  

পরবর্তীতে, এ বিষয়ে অনুসন্ধানে চ্যানেল২৪ এর ওয়েবসাইটে গতবছরের ২৪ নভেম্বর “পদের লোভ দেখিয়ে’ তরুণীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কের অভিযোগ আ.লীগ নেতার বিরুদ্ধে (ভিডিও)” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, পদ-পদবির লোভ দেখিয়ে তরুণীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে কোনাবাড়ি থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রার্থী আব্দুর রহমান মাস্টারের বিরুদ্ধে। ২৩ নভেম্বর গাজীপুরে সংবাদ সম্মেলনে ওই তরুণী এ অভিযোগ করেন।

একই তথ্যে সংবাদ প্রকাশ করেছে বেশ কয়েকটি গণমাধ্যম। দেখুন- আজকের পত্রিকা, ঢাকা পোস্ট এবং বাংলা ভিশন 

মূলত, ২০২২ সালের নভেম্বরে গাজীপুরের এক আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে পদ-পদবির লোভ দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্কে বাধ্য করার অভিযোগ তোলেন এক নারী। এ সংক্রান্ত সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী নারীর বক্তব্যের কিছু অংশের অডিও কেটে নিয়ে গত ৩১ ডিসেম্বর রাজশাহী-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির ‘সময় টিভি’র প্রমোশন করার একটি ভিডিওর সাথে যুক্ত করে মাহিয়া মাহির বক্তব্য দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।

সুতরাং, মুরাদ হাসানের সাথে শারীরিক সম্পর্কের বিষয়ে মাহিয়া মাহির দেওয়া বর্ণনা দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি এডিটেড বা বিকৃত। 

তথ্যসূত্র

জাতিসংঘ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন স্থগিত করার নির্দেশ দেয়নি

সম্প্রতি, জাতিসংঘের নির্দেশে নির্বাচন স্থগিত করলো প্রধান নির্বাচন কমিশনার শীর্ষক শিরোনাম এবং ৬ মাসের জন্য নির্বাচন স্থগিত করলো জাতিসংঘ, ভয়ে শেখ হাসিনা শীর্ষক থাম্বনেইলে একটি ভিডিও ইউটিউবে প্রচার করা হয়েছে।

সংসদ নির্বাচন স্থগিত

উক্ত দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি ভিডিওটি দেখা হয়েছে সাড়ে চার হাজারেরও বেশি বার। ভিডিওটিতে প্রায় সাড়ে তিনশত পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া দেখানো হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, জাতিসংঘ আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন স্থগিত করার নির্দেশ দেয়নি এবং প্রধান নির্বাচন কমিশনারও নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করেননি। প্রকৃতপক্ষে ভিন্ন ঘটনায় গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের ভিডিও ক্লিপ যুক্ত করে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

ভিডিও যাচাই ০১

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। পর্যবেক্ষণে ২ মিনিট ২০ সেকেন্ডের ভিডিওটির শুরুতে বাংলা ভাষায় “স্থগিত হলো নির্বাচন, দেশটিতে গণতান্ত্রিক উপায়ে নির্বাচন হওয়ার কথা ছিলো” শীর্ষক তথ্যে একটি সংবাদ প্রতিবেদন উপস্থাপন করতে লক্ষ্য করা যায়।

পরবর্তীতে কি-ওয়ার্ড সার্চ করে বেসরকারি ইলেকট্রনিক মিডিয়া Jamuna TV এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ১ আগস্ট “মিয়ানমারের নির্বাচন স্থগিত, জরুরি অবস্থার মেয়াদ বাড়ালো জান্তা সরকার” শীর্ষক শিরোনামে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদনের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর দৃশ্যের হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison: Rumor Scanner

ভিডিও থেকে জানা যায়, মিয়ানমারে ২০২৩ সালের আগস্ট মাসে গণতান্ত্রিক উপায়ে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু জরুরি অবস্থার কারণে নির্বাচনের সময়সীমা ৬ মাসের জন্য পিছিয়ে নেওয়া হয়। এটি সে-সময় ঐ ঘটনা নিয়ে প্রচারিত প্রতিবেদন।

অর্থাৎ, ৬ মাস নির্বাচন পেছানোর খবর গত বছরের আগস্ট মাসে মিয়ানমারের, বাংলাদেশের নয়।

ভিডিও যাচাই ০২

প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ অনুসন্ধান করে, বেসরকারি ইলেকট্রনিক মিডিয়া Boishakhi TV 

এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর “সহিংসতার তথ্য উপাত্ত দিয়ে জাতিসংঘে বিএনপির চিঠি” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদ প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রকাশিত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর দৃশ্যের হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison: Rumor Scanner

ভিডিও থেকে জানা যায়, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সরকারের কারচুপি সহিংসতার নানা তথ্য এবং উপাত্ত তুলে ধরে জাতিসংঘে চিঠি পাঠিয়েছে বিএনপি। গত ৩১ ডিসেম্বর অনলাইন ব্রিফিং এ দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ কথা জানান। এটি ঐ ঘটনা নিয়ে প্রচারিত প্রতিবেদন।

আলোচিত দাবির সত্যতা যাচাইয়ে জাতিসংঘের ওয়েবসাইট পর্যবেক্ষণ করে এ সম্পর্কিত কোনো বিবৃতি পাওয়া যায়নি। এছাড়া, আলোচিত দাবির প্রেক্ষিতে দেশিয় এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মূলত, আগামী ৭ জানুয়ারি বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানিয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) সহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল এই নির্বাচন বয়কটের ঘোষণা দিয়েছে। এদিকে বিভিন্ন সময় এই নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে করার দাবি জানিয়েছে জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলো। এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি জাতিসংঘ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন স্থগিত করার নির্দেশ দিয়েছে এবং প্রধান নির্বাচন কমিশনার নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করেছে দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায় দাবিটি সত্য নয়। প্রকৃতপক্ষে, ২০২৩ সালে মাসে মিয়ানমারে জরুরি অবস্থার কারণে নির্বাচনের সময়সীমা ৬ মাসের জন্য পিছিয়ে নেওয়া এবং একই বছরের ৩১ ডিসেম্বরে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন সরকারের কারচুপি সহিংসতার নানা তথ্য এবং উপাত্ত তুলে ধরে বিএনপি কর্তৃক জাতিসংঘে চিঠি পাঠানোর তথ্য নিয়ে দেশিয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের ফুটেজ একত্রে যুক্ত করে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

সুতরাং, জাতিসংঘ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন স্থগিত করার নির্দেশ দিয়েছে এবং প্রধান নির্বাচন কমিশনার নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করেছে দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

নির্বাচনী প্রচারণা করে মাহিয়া মাহি পাগল হয়েছেন শীর্ষক দাবিতে প্রচারিত ধূমপানের ভিডিওটি সিনেমার দৃশ্য  

সম্প্রতি, রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী এবং চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির ধূমপান করার একটি দৃশ্য যুক্ত করে “অতিরিক্ত নির্বাচন প্রচারনার কারনে এমপি মাহিয়া মাহি এখন অনেকটাই পাগল” শীর্ষক দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে। 

মাহিয়া মাহি পাগল

উক্ত ভিডিও ব্যবহার করে ফেসবুকের কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ভিডিওগুলোর কমেন্ট সেকশকে অনেক নেটিজেনকেই বিষয়টি সত্য ভেবে নিয়ে মন্তব্য করতে দেখা গিয়েছে।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, নির্বাচনী প্রচারণার কারণে মাহিয়া মাহির বর্তমান অবস্থা দাবি করে প্রচারিত ভিডিওটি বাস্তব নয় বরং তার করা স্বপ্নবাজী সিনেমার একটি দৃশ্যকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে প্রচারিত ভিডিওর ওপরের অংশে থাকা মাহিয়া মাহির হতাশাগ্রস্থ অবস্থায় ধূমপান করার দৃশ্যটির অনুসন্ধানে বিজয় টেলিভিশন এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২০ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারী “কেন এত ধূমপান করছেন মাহি? স্বপ্নবাজী। Mahiya Mahi” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Video Comparison : Rumor Scanner 

এই প্রতিবেদনের স্বপ্নবাজী সিনেমায় মাহিয়া মাহির ধূমপান করার দৃশ্য নিয়ে আলোচনা করা হয়। এবং এই দৃশ্যটিই আমরা আলোচিত ভিডিওতে দেখতে পাই।

এই সিনেমার বিষয়ে সংবাদ দেখুন বাংলা ট্রিবিউন

পরবর্তীতে আলোচিত দাবিতে দেখানো মাহিয়া মাহির নির্বাচনী প্রচারণার ভিডিওটির অনুসন্ধানে অনলাইন পোর্টাল Daily Ekattor এর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ২০২৩ সালের ২৮ ডিসেম্বর “যদি কিছু না পাড়ি তাইলে তো আর পরের বার ভোট চাইতে আসতে পারব না” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে (আর্কাইভ) পাওয়া যায়।

উক্ত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণে মাহিয়া মাহি নির্বাচনী প্রচারণায় ভোটারদের কাছে ভোট চাইতে দেখা যায়।  

মূলত, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেব নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি। উক্ত নির্বাচনে অংশগ্রহনকে কেন্দ্র করে প্রচারণা চালাচ্ছেন তিনি। এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি তার নির্বাচনী প্রচারণার একটি ভিডিওর সাথে ধূমপান করার একটি দৃশ্য যুক্ত করে “অতিরিক্ত নির্বাচন প্রচারনার কারনে এমপি মাহিয়া মাহি এখন অনেকটাই পাগল” শীর্ষক দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে। তবে রিউমর স্ক্যানার অনুসন্ধানে দেখেছে যে ২০২০ সালে তার অভিনীত সিনেমা স্বপ্নবাজী’র একটি দৃশ্যকে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।  

সুতরাং, মাহিয়া মাহির সিনেমার একটি দৃশ্য যুক্ত করে ‘অতিরিক্ত নির্বাচন প্রচারনার কারনে এমপি মাহিয়া মাহি এখন অনেকটাই পাগল’ শীর্ষক দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে ; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র

সেনাবাহিনী প্রধানমন্ত্রীকে তাদের কাছে নিজেকে সোপর্দ করতে বলেনি

সম্প্রতি সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তার একটি বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওটিতে উক্ত কর্মকর্তাকে বলতে শোনা যায়, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিজেদেরকে আমাদের কাছে সোপর্দ করেন। আর না হলে যে কোনো মূল্যে আমরা সবাই সম্মিলিতভাবে আপনাদের বিরুদ্ধে যে কোনো প্রকার স্যাক্রিফাইস করা প্রয়োজন, যে কোনো প্রকার আত্মদান করা প্রয়োজন তা করতে প্রস্তুত আছি। 

সেনাবাহিনী

এ সংক্রান্ত ভিডিওটি পোস্ট করে দেশের জন্য ভাল একটা খবর পেলাম। আলহামদুলিল্লাহ। শীর্ষক লাইন লিখে সকলকে শেয়ার করতে আহ্বান জানানো হয়েছে। এই আহ্বান সাড়াও ফেলেছে নেটিজেনদের মধ্যে। ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিওটি এখন অবধি ১৫ লক্ষাধিক মানুষ দেখেছেন। শেয়ার করেছেন প্রায় ২১ হাজার মানুষ। 

ফেসবুকের ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

একই ভিডিও টিকটকেও ছড়াতে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সেনাবাহিনীর এই কর্মকর্তার নাম মো. সাইফুল আবেদীন যিনি ২০২২ সালে সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি এবং চট্টগ্রামের এরিয়া কমান্ডার থাকাকালীন একটি অনুষ্ঠানে দেওয়া তার একটি বক্তব্যকে বিকৃত করে উক্ত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, জনাব সাইফুল পাহাড়ের সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজদের উদ্দেশ্য করে উক্ত মন্তব্য করেন।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ইউটিউবে চ্যানেল২৪ এর চ্যানেলে ২০২২ সালের ২৭ মে প্রকাশিত ‘যুদ্ধ করতে চান? ৩০ মিনিটও টিকবেন না শীর্ষক শিরোনামের এ সংক্রান্ত মূল ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

ভিডিওর এক মিনিট সময় থেকে উক্ত ব্যক্তিকে বলতে শোনা যায়, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে শান্তিচুক্তি সম্পাদন করেছেন। আমরা সবাই সেই শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নে এগিয়ে আসি। কারণ উনি বলেছেন, “আমরা পার্বত্য চুক্তি সম্পাদন করেছি এবং তা পূর্ণ বাস্তবায়ন করবো।” আমি আশা করবো, সরকারের পক্ষ থেকে যে কটি ধারা এখনও বাস্তবায়িত হয়নি সেটি বাস্তবায়নের আগে যারা অস্ত্রধারী আছেন, তারা আপনাদের মাত্র দুইটি ধারা, সেই দুটি ধারা বাস্তবায়ন করেন। আপনারা অস্ত্র সমর্পন করেন এবং নিজেদের সোপর্দ করেন। আর না হলে যে কোনো মূল্যে আমরা সবাই সম্মিলিতভাবে আপনাদের বিরুদ্ধে যে কোনো প্রকার স্যাক্রিফাইস করা প্রয়োজন, যে কোনো প্রকার আত্মদান করা প্রয়োজন তা করতে প্রস্তুত আছি।

Screenshot: YouTube 

এই ভিডিওতে উক্ত ব্যক্তির নাম উল্লেখ না থাকলেও (আর্মি কমান্ডার পরিচয় উল্লেখ করা হয়েছে) এটা স্পষ্ট যে, তিনি প্রধানমন্ত্রীকে সেনাবাহিনীর কাছে নিজেকে সোপর্দ করতে বলেননি। তিনি মূলত, পাহাড়ে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের উদ্দেশ্য করে উক্ত মন্তব্য করেন। 

স্থানীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা যাচ্ছে, সে বছরের ২৬ মে রাঙামাটিতে পুলিশ লাইনস সুখী নীলগঞ্জে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নস এর পার্বত্য আঞ্চলিক দপ্তর ও তিন পার্বত্য জেলায় তিনটি আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন কার্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন উপলক্ষে আয়োজিত সুধী সমাবেশে আলোচিত মন্তব্যটি করেন সেনাবাহিনীর সেসময়ের ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি এবং চট্টগ্রামের এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল মো. সাইফুল আবেদীন। 

মূলত, ২০২২ সালে রাঙামাটির একটি সুধী সমাবেশে দেওয়া মন্তব্যে পাহাড়ের সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজদের উদ্দেশ্য করে সেনাবাহিনীর সেসময়ের ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি এবং চট্টগ্রামের এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল মো. সাইফুল আবেদীন বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে শান্তিচুক্তি সম্পাদন করেছেন। আমরা সবাই সেই শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নে এগিয়ে আসি। কারণ উনি বলেছেন, “আমরা পার্বত্য চুক্তি সম্পাদন করেছি এবং তা পূর্ণ বাস্তবায়ন করবো।” আমি আশা করবো, সরকারের পক্ষ থেকে যে কটি ধারা এখনও বাস্তবায়িত হয়নি সেটি বাস্তবায়নের আগে যারা অস্ত্রধারী আছেন, তারা আপনাদের মাত্র দুইটি ধারা, সেই দুটি ধারা বাস্তবায়ন করেন। আপনারা অস্ত্র সমর্পন করেন এবং নিজেদের সোপর্দ করেন। আর না হলে যে কোনো মূল্যে আমরা সবাই সম্মিলিতভাবে আপনাদের বিরুদ্ধে যে কোনো প্রকার স্যাক্রিফাইস করা প্রয়োজন, যে কোনো প্রকার আত্মদান করা প্রয়োজন তা করতে প্রস্তুত আছি।’ তার এই বক্তব্যের ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী’ এবং ‘নিজেদের সোপর্দ করেন। আর না হলে যে কোনো মূল্যে আমরা সবাই সম্মিলিতভাবে আপনাদের বিরুদ্ধে যে কোনো প্রকার স্যাক্রিফাইস করা প্রয়োজন, যে কোনো প্রকার আত্মদান করা প্রয়োজন তা করতে প্রস্তুত আছি।’ শীর্ষক লাইন যুক্ত করে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। 

সুতরাং, ২০২২ সালে রাঙামাটিতে পাহাড়ের সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজদের উদ্দেশ্য করে সেনাবাহিনীর সেসময়ের কর্মকর্তা মেজর জেনারেল মো. সাইফুল আবেদীনের মন্তব্যকে প্রধানমন্ত্রীর নিজেকে সোপর্দ করা বিষয়ক মন্তব্য দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা বিকৃত। 

তথ্যসূত্র

রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগের নির্দেশ দেননি

0

সম্প্রতি, “আদালত অচলে বিপাকে প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগের নির্দেশ দিল রাষ্ট্রপতি” শীর্ষক থাম্বনেইল এবং প্রায় সমজাতীয় দাবিসহ “বিএনপি পক্ষ নিলো সেনাবাহিনী” শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

পদত্যাগের নির্দেশ

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে(আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পদত্যাগের নির্দেশ দেননি এবং সেনাবাহিনীর বিএনপির পক্ষ নোওয়া সংক্রান্ত ঘটনা ঘটেনি বরং কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই অধিক ভিউ পাওয়ার আশায় চটকদার শিরোনাম এবং থাম্বনেইল ব্যবহার করে আলোচিত ভিডিওটি প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতেই আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওটি কয়েকটি সংবাদপাঠের ভিডিও এবং ভিন্ন ঘটনার ভিডিও ফুটেজ ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে।

ভিডিও যাচাই-১

প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে DBC News এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি “জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের আদালত বর্জন কর্মসূচি | DBC NEWS” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ভিডিওর সংবাদ উপস্থাপকের সাথে আলোচিত ভিডিওটির হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Comparison By Rumor Scanner 

উক্ত ভিডিও থেকে জানা যায়, গত ০১ জানুয়ারি ন্যায়বিচারের দাবিতে আদালত বর্জনের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি পালন করেছে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম। এ উপলক্ষ্যে ঢাকার নিম্ন আদালত প্রাঙ্গণে মিছিল করে সংগঠনটি। 

ভিডিও যাচাই-২

প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে Channel 24 এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ১ জুন “সুপ্রিম কোর্টের সামনের সড়কে বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের মিছিলে পুলিশের বাধা । BNP lawyer | Channel 24” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Comparison By Rumor Scanner

উক্ত ভিডিও থেকে জানা যায়, ভিডিওটি ২০২৩ সালের জুন মাসে সুপ্রিম কোর্টের সামনে বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের বিক্ষোভ মিছিলের। । 

অর্থাৎ, ভিডিওটি পুরোনো ঘটনার এবং অপ্রাসঙ্গিকভাবে ফুটেজটি আলোচিত ভিডিওতে ব্যবহার করা হয়েছে।

এছাড়াও, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম কিংবা নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্র থেকে রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন কর্তৃক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পদত্যাগের নির্দেশ দেওয়ার দাবিটির সত্যতা জানা যায়নি। পাশাপাশি সেনাবাহিনীর বিএনপির পক্ষ নেওয়ার দাবির স্বপক্ষেও কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি।

প্রসঙ্গত, বিএনপির ঘোষিত অসহযোগ আন্দোলনের সাথে সংহতি জ্ঞাপন করে ১লা জানুয়ারি থেকে ৭ই জানুয়ারি পর্যন্ত আপিল বিভাগ, হাইকোর্ট বিভাগসহ সারাদেশের সকল আদালত বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম।

উল্লেখ্য, আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা করতে গত ০৩ জানুয়ারি মাঠে নেমেছে সশস্ত্র বাহিনী। ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত সশস্ত্র বাহিনীর এই কার্যক্রম চলবে বলে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর- আইএসপিআর থেকে জানানো হয়েছে।

মূলত, গত ২৭ ডিসেম্বর বিএনপিপন্থী জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম বিএনপির ঘোষিত অসহযোগ আন্দোলনের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে পহেলা জানুয়ারি থেকে ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত আদালত বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে। এরই অংশ হিসেবে গতকাল ০১ জানুয়ারি পূর্বঘোষিত পালন করেন বিএনপিপন্থী জাতীয়তাবাদী আইনজীবীরা। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে, “আদালত অচলে বিপাকে প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগের নির্দেশ দিল রাষ্ট্রপতি” এবং “বিএনপির পক্ষ নিল সেনাবাহিনী” শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়। তবে অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত দাবিগুলো সঠিক নয়। রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন কর্তৃক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পদত্যাগের নির্দেশ সংক্রান্ত কোনো ঘটনা ঘটেনি। এছাড়া সেনাবাহিনীর বিএনপির পক্ষ নেওয়ারও কোনো ঘটনা ঘটেনি। অধিক ভিউ পাওয়ার আশায় ভিন্ন ভিন্ন ভিডিওর খণ্ডাংশ যুক্ত করে করে তাতে চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে কোনোপ্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই আলোচিত দাবির ভিডিওটি প্রচার করা হয়েছে।

সুতরাং, রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পদত্যাগের নির্দেশ দিয়েছেন এবং সেনাবাহিনী বিএনপির পক্ষ নিয়েছে দাবিতে  ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

কফিন মিছিলে নুরুল হক নুর গুলিবিদ্ধ হয়ে রক্তাক্ত হননি

গত ৩০ ডিসেম্বর গণ অধিকার পরিষদের কফিন মিছিলে নেতা–কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় দলটির সভাপতি নুরুল হক নুর পুলিশের হাতে রক্তাক্ত হয়েছেন দাবি করে ইউটিউবে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে যাতে শিরোনাম দেওয়া হয়েছে  ভিপি নুরের সাথে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ পুলিশের গুলিতে রক্তাক্ত ভিপি নুর এবং থাম্বনেইলে লেখা রয়েছে, ভিপি নুরের সাথে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ শুধু গুলি আর গুলি রক্তাক্ত ভিপি নুর।

কফিন মিছিলে

উক্ত দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি ভিডিওটি দেখা হয়েছে প্রায় ১১ হাজার বার। ভিডিওটিতে প্রায় চারশত পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া দেখানো হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত কফিন মিছিলে গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের সাথে পুলিশের ধস্তাধস্তি হলেও পুলিশ কোনো গুলি চালায়নি এবং নুরুল হক নুরও রক্তাক্ত হননি। 

আলোচিত দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য ভিডিওটির কিছু কি-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চ করে Newsbaba24 নামক ইউটিউব চ্যানেলে গত ৩১ ডিসেম্বর (২০২৩) “৭ তারিখের নির্বাচন পাতানো। কফিন মিছিলে পুলিশের বাধা” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর দৃশ্যের মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison: Rumor Scanner

ভিডিও থেকে জানা যায়, গত ৩০ ডিসেম্বর (২০২৩) গণঅধিকার পরিষদের কফিন মিছিলে পুলিশ বাধা দেয়।

পরবর্তীতে এরই সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে জাতীয় দৈনিক মানবজমিন এর ওয়েবসাইটে গত ৩১ ডিসেম্বর (২০২৩) “পুলিশি বাধায় গণঅধিকারের কফিন মিছিল পণ্ড” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদ প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ৩০ ডিসেম্বর গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা ভোটাধিকার হরণ ও নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংসের প্রতিবাদে সমাবেশ ও কফিন মিছিল করে। সমাবেশ শেষে কফিন মিছিল করার সময় পুলিশ মারমুখী ভাবে প্রতিরোধ করে। কফিন মিছিল বন্ধ না করায় পুলিশ গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর ও সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খানের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে এবং কয়েকদফা ধাক্কা দিয়ে আটক করার হুমকি দেয়। একপর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে দলটির নেতাকর্মীদের সাথে ধস্তাধস্তি হয়। পরবর্তীতে পুলিশ কফিন লাথি দিয়ে ভেঙে ফেলে। পুলিশের এনন ধস্তাধস্তিতে গণঅধিকার পরিষদের বিভিন্ন শীর্ষ নেতৃবৃন্দ নিচে পড়ে গিয়ে আহত হন।

কফিন ভাঙচুরের পর নুরুল হক নুর বলেন, আপনারা দেখেছেন আমরা দুই-আড়াইশ’ লোক শান্তিপূর্ণ ভাবে মিছিল করতে চেয়েছিলাম। সেখানে পুলিশ বাধা দিয়েছে, গুণ্ডা-মাস্তানদের মতো লাথি দিয়ে আমাদের কফিনটি ভেঙে ফেললো। এটি কি পুলিশ করতে পারে? কোন আইনে তারা এসব করতে পারে? আমাদের চেয়ে পুলিশের সংখ্যা বেশি, তাদের অনেকের হাতে ইলেকট্রিক শক লাঠি, টিপ ছুরির মতো জিনিস ছিল। ভিড়ের মাঝে কাউকে ছুরিকাঘাত করা বা পুলিশেরই কোনো সদস্যকে ছুরিকাঘাত করে আমাদের ওপর দায় চাপাতো। যেভাবে ২৮শে অক্টোবর ছাত্রলীগ, যুবলীগকে দিয়ে পুলিশ হত্যা করে মির্জা ফখরুলদের আসামি করেছে।

উক্ত প্রতিবেদনে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরের দেওয়া বক্তব্যে ছুরিকাঘাত হওয়ার সম্ভাবনা প্রকাশ করলেও তিনি পুলিশের বিরুদ্ধে সরাসরি ছুরিকাঘাত করার অভিযোগ করেননি। এছাড়া, তার বক্তব্যের কোথাও পুলিশ কর্তৃক গোলাগুলি হওয়া এবং নুরুল হক নুর আহত হয়ে রক্তাক্ত হওয়ার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

অনুসন্ধানে অন্যান্য জাতীয় দৈনিক প্রথম আলো, কালের কণ্ঠ, যুগান্তর, ইনকিলাব, দেশ রুপান্তর, কালবেলা পত্রিকার ওয়েবসাইটসহ দৈনিক ইত্তেফাকে প্রকাশিত ভিডিও সংবাদ প্রতিবেদন এবং বেসরকারি ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া বাংলা ভিশন প্রকাশিত সংবাদ প্রতিবেদনেও পুলিশ কর্তৃক গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের ওপর গোলাগুলি এবং দলের সভাপতি নুরুল হক নুর রক্তাক্ত হয়ে আহত হওয়ার তথ্য পাওয়া যায়নি।

মূলত, গত ৩০ ডিসেম্বর (২০২৩) ভোটাধিকার হরণ ও নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংসের প্রতিবাদে গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা সমাবেশ ও কফিন মিছিল করে। নেতাকর্মীরা সমাবেশ শেষে কফিন মিছিল করলে সেসময় পুলিশ মারমুখী ভাবে প্রতিরোধ করে এবং এক পর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে দলটির সভাপতি নুরুল হক নুর ও সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খানসহ নেতাকর্মীদের সাথে ধস্তাধস্তি হয়। উক্ত ঘটনা নিয়ে পরবর্তীতে দেশীয় গণমাধ্যমে সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। তবে সম্প্রতি সেই ঘটনায় পুলিশ গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের ওপর গুলি চালিয়েছে এবং সভাপতি নুরুল হক নুর রক্তাক্ত হয়ে আহত হয়েছেন দাবিতে ইন্টারনেটে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে। কিন্তু রিউমর স্ক্যানার টিম অনুসন্ধানে দেখেছে, নুরুল হক নুর এ ঘটনার পর দেওয়া বক্তব্যে ছুরিকাঘাত হওয়ার সম্ভাবনা প্রকাশ করলেও তিনি পুলিশের বিরুদ্ধে সরাসরি ছুরিকাঘাত করার অভিযোগ করেননি। গণমাধ্যমেও এমন কোনো তথ্য আসেনি। 

সুতরাং, গত ৩০ ডিসেম্বরে গণঅধিকার পরিষদ কর্তৃক আয়োজিত কফিন মিছিলে পুলিশ গুলি চালিয়েছে এবং সভাপতি নুরুল হক নুর রক্তাক্ত হয়ে আহত হয়েছে দাবিতে ইন্টারনেটে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র