সম্প্রতি, “৩৫ হাজার ফুট উঁচুতে মধ্য আকাশে জন্ম নিয়েছে শিশু, আজীবন আকাশ ভ্রমণ ফ্রি” শীর্ষক শিরোনামে একটি সংবাদ কিছু ভূইফোঁড় অনলাইন পোর্টালে প্রকাশের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ছড়িয়ে পড়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ৩৫ হাজার ফুট উঁচুতে শিশুর জন্ম হওয়ার ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং সংবাদটি প্রায় পাঁচ বছর পূর্বের।
মূলত, ২০১৭ সালের জুনে ভারতের বেসরকারি এয়ারলাইন্স কোম্পানি জেট এয়ারওয়েজে্র একটি ফ্লাইট সৌদি আরবের দাম্মাম থেকে ভারতের কেরালার কোচির উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করার পর পথিমধ্যে আকাশের ৩৫ হাজার ফুট উচ্চতায় এক গর্ভবতী যাত্রী বিমানের কেবিন ক্রু এবং ভ্রমণকারী একজন দক্ষ নার্সের সহায়তায় শিশুর জন্ম দেন। পরে জেট এয়ারওয়েজ কর্তৃপক্ষ তাদের অফিশিয়াল টুইটার একাউন্টে শিশুটিকে আজীবন বিনামূল্যে আকাশ ভ্রমণের সুবিধা দেয়ার বিষয়টি ঘোষণা করে। বিমানে ৩৫ হাজার ফুট উচ্চতায় সন্তান জন্মদানের ৫ বছর পুরোনো তথ্যটি সাম্প্রতিক সময়ে কোনো তারিখ উল্লেখ না করেই বেনামী অনলাইন পোর্টালে সংবাদ প্রকাশের মাধ্যমে পুনরায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, অনলাইন পোর্টালগুলোতে প্রকাশিত সংবাদের ফিচার ছবিতে কেবিন ক্রুদের শিশুকে ঘিরে রাখার যে ছবিটি ব্যবহার করা হয়েছে, সেটা একই বছরের এপ্রিল মাসে টার্কিশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে ৪২ হাজার ফুট উচ্চতায় জন্ম নেওয়া শিশুর ছবি।
পূর্বেও একই বিষয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছিল। তখনও বিষয়টিকে মিথ্যা হিসেবে শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার টিম।
সম্প্রতি “আপনারা জীবনে তো অনেক কিছুই শেয়ার করলেন পারলে এই ছোট্ট বাচ্চাটির পাশে দাড়ান (আতিক বয়স ৭ মাস) নাভির ভেতরে টিউমার।” শীর্ষক শিরোনামে এক শিশুর কয়েকটি ছবি সংযুক্ত করে একটি মানবিক সাহায্যের আবেদন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আতিক নামে প্রচারিত ছবিগুলো বাংলাদেশি কোনো রোগাক্রান্ত শিশুর নয় বরং এগুলো ভারতীয় নাগরিক দেবিকা ও প্রমোদ দম্পতির ১ মাস বয়সী শিশুর ছবি।
রিভার্স ইমেজ সার্চ পদ্ধতির মাধ্যমে, “A rare condition is threatening to take away my only child. Help us!” শীর্ষক শিরোনামে ভারতের গণ-অর্থায়ন প্লাটফর্ম ‘Ketto’ এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত মূল ছবিগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
পাশাপাশি, ‘Ketto’ এর অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ ও টুইটার একাউন্টে শিশুটির জন্য ফান্ডরাইজিং নিয়ে চলতি বছরের ২৬ মার্চে প্রকাশিত পোস্টে একই ছবিগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
“My 1-mo baby boy, whose life hasn’t even begun yet, is suffering from a rare disease. I want to watch him grow up and make sweet memories with him, but unfortunately, his treatment is beyond my financial means. You are my only hope!”
এছাড়াও, ‘Ketto’ এর অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেল থেকে গত ১৭ মার্চে “Born with a terrible deformity on his stomach, he needs surgery to survive” শীর্ষক শিরোনামে গণ-অর্থায়নের জন্য প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।
মূলত, ছবিগুলো ভারতীয় নাগরিক দেবিকা ও প্রমোদ দম্পতির ১ মাস বয়সী শিশুর। শিশুটি এক্সোম্ফালোস মেজর সংক্রান্ত জটিলতায় আক্রান্ত হয়ে হায়দ্রাবাদের “Ankura Hospital for Women & Children” এ চিকিৎসাধীন আছে। ফান্ডরাইজিং ঐ ওয়েবসাইটের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, আক্রান্ত শিশুটির চিকিৎসার জন্য ১২ লাখ ইন্ডিয়ান রুপির প্রয়োজন এবং তার চিকিৎসার জন্য ফান্ডরাইজিং কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
এছাড়া, সাম্প্রতিক সময়ে আতিক নামে আর্থিক সাহায্যের জন্য আবেদনকৃত ফেসবুক পোস্টগুলোয় উল্লিখিত ব্যক্তিগত বিকাশ ও নগদ নাম্বার যথাক্রমে (01611944975 ও 01628600429) একাধিক বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
প্রসঙ্গত, রিউমর স্ক্যানার টিম পূর্বেও বিভিন্ন নাম ব্যবহার করে প্রতারণার উদ্দেশ্যে আর্থিক সাহায্য চেয়ে করা পোস্টগুলোকে শনাক্ত করে একাধিক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
সুতরাং, আর্থিক সহায়তার নামে প্রতারণার উদ্দেশ্যে এক ভারতীয় শিশুকে বর্তমানে বাংলাদেশের রোগাক্রান্ত শিশু আতিক দাবি করে সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
[su_box title=”True or False” box_color=”#f30404″ radius=”0″]
Claim Review: আপনারা জীবনে তো অনেক কিছুই শেয়ার করলেন পারলে এই ছোট্ট বাচ্চাটির পাশে দাড়ান (আতিক বয়স ৭ মাস) নাভির ভেতরে টিউমার
সম্প্রতি, “পবিত্র কাবা শরিফ থেকে বের হওয়ার সময় প্রিয় আল্লামা সাঈদী সাহেবের ছবি যারা যারা বাংলার মাটিতে সাঈদী সাহেবকে আবার মুক্ত দেখতে চান তারা শেয়ার করেন।” শীর্ষক শিরোনামে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী’র কাবা শরীফ থেকে বের হওয়ার সময়কালীন দৃশ্য দাবিতে একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
ফেসবুকে প্রচারিত এমন একটি পোস্ট দেখুন এখানে এবং এখানে। আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে এবং এখানে।
ফ্যাক্ট
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত ছবিটি দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীর নয় বরং নাইজেরিয়ার রাষ্ট্রপতি মুহাম্মাদু বুহারী এর কাবা ঘর থেকে বের হওয়ার সময়কালীন একটি ছবিকে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় বিকৃত/এডিট করে উক্ত ছবিটি সম্পাদন করা হয়েছে।
মূলত, ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে নাইজেরিয়ার শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য দোয়া কামনায় দেশটির রাষ্ট্রপতি মুহাম্মাদু বুহারী এবং তার একটি প্রতিনিধি দল মক্কার কাবা শরীফে প্রবেশ করেছিলেন। দোয়া শেষে পবিত্র কাবাঘরের ভেতরের কক্ষ থেকে বেরিয়ে আসার সময়ে ধারণকৃত একটি ছবিকেই প্রযুক্তির সহায়তায় বিকৃত করে এতে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মুখমণ্ডলের ছবি বসিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।
পূর্বেও একই ছবি ব্যবহার করে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর কাবা ঘরের ভেতর থেকে বের হওয়ার দৃশ্য দাবি করে ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। তখনও বিষয়টিকে মিথ্যা হিসেবে শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।
সম্প্রতি “ভিক্ষুকের মত নির্লজ্জ ভাবে পায়ে ধরে শুধুই শেয়ার টা ভিক্ষা চাচ্ছি। সাহায্য করতে না পারলেও অন্তত একটি শেয়ার করুন আপনার শেয়ারের মাধ্যমে হয়তো কোনো বিত্তবান, দানশীল ও দ্বীনদার ব্যক্তির নজরে আসবেই ইনশাআল্লাহ” শীর্ষক শিরোনামে এক শিশুর কয়েকটি ছবি সংযুক্ত করে একটি মানবিক সাহায্যের আবেদন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আর্থিক সাহায্য চেয়ে প্রচারিত উক্ত ছবিগুলো কোনো বাংলাদেশি শিশুর নয় বরং ছবিগুলো জোহান নামের ভারতীয় এক শিশুর।
রিভার্স ইমেজ সার্চ পদ্ধতির মাধ্যমে ”My baby was born with a failing liver & is critically ill. Help us save him” শীর্ষক শিরোনামে ভারতের গণ-অর্থায়ন প্লাটফর্ম ‘Ketto’ এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত মূল ছবিগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
পাশাপাশি, ‘Ketto’ এর অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে শিশুটির জন্য ফান্ডরাইজিং নিয়ে ২০২১ সালের ২০ ডিসেম্বেরে প্রকাশিত পোস্টে একই ছবিগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
মূলত, আর্থিক সহায়তার নামে প্রতারণার উদ্দেশ্যে জোহান নামের এক ভারতীয় শিশুর ছবি ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহ করে বর্তমানে বাংলাদেশের রোগাক্রান্ত শিশু দাবি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।
পূর্বেও একই শিশুর ভিন্ন কিছু ছবি ব্যবহার করে বাংলাদেশি শিশু শিয়াব দাবিতে চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহায়তা চেয়ে ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। তখনও বিষয়টিকে মিথ্যা হিসেবে শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার টিম।
সম্প্রতি, “ফর্মহীনতার কারণে প্রশ্ন উঠছিল বারবার কেন তিনি খেলছেন। অবশেষে সব ধরনের ক্রিকেট থেকে অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার অ্যারন ফিঞ্চ। আজই সংবাদ সম্মেলনে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা।” শীর্ষক একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, অস্ট্রেলিয়ান তারকা ক্রিকেটার অ্যারন ফিঞ্চ সব ধরণের ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দেননি বরং তিনি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার পরবর্তী ওয়ানডে সিরিজেও অংশগ্রহণ করবেন।
কিওয়ার্ড সার্চ করার মাধ্যমে, খেলাধুলার সংবাদ বিষয়ক ওয়েবসাইট ESPNCricinfo তে গত ০৩ এপ্রিল “Aaron Finch’s form woes raise questions: It hasn’t been up to scratch” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে ফর্মহীনতা এবং পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ হারার বিষয় নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সাদা বলের অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ এর বক্তব্য উল্লেখ করা হয়। যেখানে তিনি বলেছেন –
Obviously, it hasn’t been up to scratch. I’ve been well short of runs in the Sri Lanka series and this series here, there’s no doubting that,” he said. “I don’t need you to tell me that. It’s frustrating, no doubt, and as you get older, I think you probably question yourself a little bit more.
“But I still feel as though all my training has been really positive, it’s just been the first couple of balls, getting my pad in the way. It’s been a thing throughout my career and it would be nice if it didn’t happen – but I’m still very confident I can turn it round in the next series against Sri Lanka.
তার বক্তব্যের নিচের অংশটুকু অনুবাদ করলে দাঁড়ায় –
“তবে আমি এখনও অনুভব করি যে আমার সমস্ত প্রশিক্ষণ সত্যিই ইতিবাচক ছিল, এটা মাত্র প্রথম কয়েকটা বল, আমার প্যাড বাধা হয়ে গেছে। এটা আমার ক্যারিয়ার জুড়ে একটা জিনিস(সমস্যা) ছিল এবং এটা না ঘটলে ভালো হবে – কিন্তু আমি এখনও খুব আত্মবিশ্বাসী যে আমি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পরের সিরিজে এটাকে ঘুরিয়ে দিতে পারব।”
অর্থাৎ অ্যারন ফিঞ্চ এর বক্তব্য থেকে এটি স্পস্ট যে তিনি অবসরের ঘোষণা দেননি বরং তিনি দেশের মাটিতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া অস্ট্রেলিয়ার পরবর্তী সিরিজে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেও অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছেন।
পরবর্তীতে অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট দলের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে ২০২০ সালের ১৯ আগস্টে “Lockdown helps Finch settle on retirement date” শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে অ্যারন ফিঞ্চের অবসর নেওয়ার সময় সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। সেখানে উল্লেখ করা হয়-
Australia captain Aaron Finch says the enforced break due to the COVID-19 pandemic has affirmed his desire to play for another three years and retire at the end of the 2023 ODI World Cup in India.
Finch, 33, plans to lead Australia in white-ball cricket to the next three major tournaments; the T20 events in 2021 and 2022 and then the 50-over showpiece a year later.
অর্থাৎ, অ্যারন ফিঞ্চ ভারতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ২০২৩ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর অবসরের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছেন এবং পরবর্তী (২০২০ সালের পরবর্তী) তিনটি বড় টুর্নামেন্টে সাদা বলের ক্রিকেটে অস্ট্রেলিয়াকে নেতৃত্ব দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন।
তবে অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে ২০২০ সালের ২৭ আগস্টে “Finch concedes his Test dream is all but over” শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ফিঞ্চ সাদা বলের খেলা চালিয়ে গেলেও টেস্ট খেলা থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। টেস্ট থেকে সরাসরি অফিশিয়াল অবসর নেওয়ার ঘোষণা না দিলেও টেস্টে আর মাঠে নামা হবে না তার বিষয়টি একরকম নিশ্চিত করেছেন তিনি।
সুতরাং, অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার অ্যারন ফিঞ্চ সব ধরণের ক্রিকেট থেকে অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দাবিতে একটি তথ্য সূত্রহীনভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
[su_box title=”True or False” box_color=”#f30404″ radius=”0″]
Claim Review: অবশেষে সব ধরনের ক্রিকেট থেকে অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার অ্যারন ফিঞ্চ
সম্প্রতি, “জানি না যে এই ঘটনাটি কোন যায়গায় ঘটেছে, আমি পেয়েছি ফেইসবুকে সেখান থেকে নেওয়া। এখান থেকে অনেক কিছু শেখার রয়েছে মুসলমানদের জন্য। আল্লাহু আকবার , হে আল্লাহ তুমি আমাদের ক্ষমা কর ( আমিন ) শরীর শিউরে উঠার মত একটি ভিডিও” শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমগুলোতে ছড়িয়ে পড়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, পানিতে মৃতদেহ পড়ে যাওয়ার আলোচিত ভিডিওটি কোনো বাস্তব ঘটনা নয় বরং এটি ইন্দোনেশিয়ার একটি সিরিজ নাটকের দৃশ্য।
ভিডিওটির কিছু স্থিরচিত্র রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে, ইন্দোনেশিয়ান টেলিভিশন স্টেশন MNCTV এর অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ এবং ইন্সটাগ্রাম একাউন্টে ২০১৮ সালের ২৩ সেপ্টেম্বরে প্রচারিত ৩০ সেকেন্ডের একটি ট্রেইলার ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ট্রেইলার ভিডিওর দৃশ্যের সঙ্গে আলোচিত ভিডিওটির দৃশ্যের মিল লক্ষ্য করা যায়।
পরবর্তীতে, MNCTV এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০১৮ সালের ২ অক্টোবরে “Mulut Busuk Jasad Si Pemandi Jenazah Tukang Ghibah – Dzolim Part 1 (23/9)” শিরোনামে প্রকাশিত একই দৃশ্য সম্বলিত ১৬ মিনিটের পূর্ণাঙ্গ ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।
মূলত, Dzolim/জলিম হচ্ছে MNCTV তে প্রচারিত একটি ধর্মীয় শিক্ষামূলক সিরিজ নাটক। যার প্রতিটি অংশে Jumi Binti Arsat নামের এক পাপী মহিলার জীবদ্দশায় সকল পাপের বর্ণনা দেওয়া হয়েছে এবং পরবর্তীতে তার পাপের শাস্তি কিভাবে পায় তা দেখানো হয়েছে। ধর্মীয় শিক্ষামূলক Dzolim নাটকে মৃতদেহ পানিতে পড়ে যাওয়ার শুটিং চলাকালীন সময়ে ভিন্ন কোণ থেকে ধারণকৃত দৃশ্যকেই সম্প্রতি খাটিয়া থেকে মৃতদেহ পানিতে পড়ে যাওয়ার বাস্তব দৃশ্য দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজের পবিত্র কাবা শরিফের ভেতরে নামাজ আদায়ের ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং এটি ৬ বছর পূর্বের।
ভিডিওটির কিছু স্থিরচিত্র রিভার্স সার্চের মাধ্যমে, পবিত্র কাবা শরিফ ভিত্তিক প্রকাশনা Haramain এর ইউটিউব চ্যানেল ‘HARAMAINGALLERY’ এ ২০১৫ সালের ৩১ মে “Latest: King Salman Washing Kaba 31st May 2015” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত মূল ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়।
পাশাপাশি, মধ্যপ্রাচ্য ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল আরাবিয়ার ইংরেজি সংস্করণে বিষয়টি নিয়ে সেসময়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন পাওয়া যায়।
মূলত, ২০১৫ সালে সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ পবিত্র রমজান মাসের শুরুতে ঐতিহ্যের অংশ হিসাবে মক্কার পবিত্র কাবা শরীফে ভিতরে সালাত আদায়ের পর কাবা শরীফ পরিষ্কার করেন। বর্তমানে সেই ছয় বছর পুরোনো ভিডিওকে সাম্প্রতিক কোনো তারিখ উল্লেখ ছাড়া নতুন করে সামাজিক মাধ্যমে পুনরায় প্রচার করা হচ্ছে।
সুতরাং, সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজের পবিত্র কাবা শরীফের ভিতরে সালাত আদায়ের ছয় বছর পুরোনো ভিডিওকে পূর্বের তারিখ উল্লেখ ছাড়া পুনরায় সামাজিক মাধ্যম টিকটকে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।
[su_box title=”True or False” box_color=”#f30404″ radius=”0″]
সম্প্রতি, “এই চিত্রগুলো একটি মানসিক হাসপাতালে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত রোগী দ্বারা অঙ্কন করা হয়েছিলো” শীর্ষক শিরোনামে দুইটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত চিত্রগুলো মানসিক হাসপাতালে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত রোগী দ্বারা অঙ্কন করা নয় বরং চিত্রগুলো ভিন্ন ভিন্ন দুইজন আর্টিস্টের অঙ্কন করা।
প্রথম ছবি যাচাই
রিভার্স ইমেজ সার্চ পদ্ধতির মাধ্যমে, ‘najimir’ নামের একটি ইন্সটাগ্রাম একাউন্টে ২০১৯ সালের ৮ নভেম্বরে “Ink on 42x30cm paper | 2017 (Sold)” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি পোস্টে আলোচিত দুইটি ছবির মধ্যে প্রথম ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।
দ্বিতীয় ছবি যাচাই
রিভার্স ইমেজ সার্চ পদ্ধতির মাধ্যমে, ‘adamrichesart’ নামের একটি ইন্সটাগ্রাম একাউন্টে ২০১৯ সালের ১১ মার্চে “This image has been made into an edition of 10 giclee prints, on Somerset velvet enhanced paper 330gsm (42 x 59.4 cm)” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি পোস্টে আলোচিত দ্বিতীয় ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।
উল্লেখ্য যে, উল্লিখিত দুইটি ইন্সটাগ্রাম একাউন্ট দুইজন আর্টিস্টের। তাদের একাউন্টে আলোচিত দুটি ছবি ছাড়াও একই ধরণের অসংখ্য ছবি রয়েছে।
মূলত, Adam Riches এবং Naji Chalhoub নামের দুইজন আর্টিস্টের অঙ্কন করা দুটি চিত্রকে সংগ্রহ করে সেগুলোকে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় একত্রিত করে চিত্রগুলো একটি মানসিক হাসপাতালে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত রোগী দ্বারা অঙ্কন করা হয়েছিলো দাবি করে সামাজিক যোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।
এছাড়াও, বিষয়টি অধিক নিশ্চিতের জন্য রিউমর স্ক্যানার টিম আলোচিত ছবি দুইটির আর্টিস্টদের সাথে যোগাযোগ করলে তারা দুইজনেই নিশ্চিত করেন ছবি দুইটি তাদের নিজেদের আঁকা এবং তারা কেউ ই মানসিক রোগী নন।
সুতরাং, Naji Chalhoub ও Adam Riches নামের দুইজন আর্টিস্টের অঙ্কন করা দুইটি চিত্রকে প্রযুক্তির সহায়তায় একত্রিত করে চিত্রগুলো একটি মানসিক হাসপাতালে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত রোগী দ্বারা অঙ্কন করা হয়েছিলো দাবি করে সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
[su_box title=”True or False” box_color=”#f30404″ radius=”0″]
Claim Review: এই চিত্রগুলো একটি মানসিক হাসপাতালে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত রোগী দ্বারা অঙ্কন করা হয়েছিলো
সম্প্রতি “প্রথম বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান হিসেবে যেকোনো ফরম্যাটে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সেঞ্চুরি করার কৃতিত্ব দেখালেন মাহমুদুল হাসান জয়।” শীর্ষক দাবিতে একটি তথ্য দেশীয় মূলধারার সংবাদমাধ্যম ‘যমুনা টিভি‘র ইউটিউব চ্যানেলে, ‘দৈনিক বনিক বার্তা‘ এর অনলাইন সংস্করণে এবং অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘রাইজিং বিডি‘তে প্রচার করা হয়েছে।
এছাড়াও প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ক্রিকেটার জয় দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে প্রথম সেঞ্চুরী করেছেন দাবিতে একাধিক সংবাদমাধ্যম এবং ফেসবুক আইডি ও পেজে তথ্যটি প্রচারিত হয়েছে। দেখুন এখানে এবং এখানে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধান দেখা যায়, প্রথম বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান হিসেবে যেকোনো ফরম্যাটে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সেঞ্চুরীর কৃতিত্ব তরুণ ক্রিকেটার মাহমুদুল হাসান জয়ের নয় বরং ২০১৭ সালের অক্টোবরে ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে ওয়ানডে ক্রিকেটে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সেঞ্চুরীর রেকর্ড গড়েন।
দেশীয় ইলেকট্রনিক সংবাদমাধ্যম ‘যমুনা টিভি” এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ০২ এপ্রিল দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের চলমান টেস্ট ম্যাচে ক্রিকেটার মাহমুদুল হাসান জয়ের সেঞ্চুরী নিয়ে প্রকাশিত ভিডিও প্রতিবেদনে বলা হয়, “২০ বছরের চেষ্টায় প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে অবশেষে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সেঞ্চুরী হাঁকিয়েছিন মাহমুদুল হাসান জয়। আর যেটি যেকোনো ফর্মেটে বাংলাদেশে প্রথম।”
একই ঘটনা নিয়ে দেশীয় সংবাদমাধ্যম ‘দৈনিক বনিক বার্তা‘ এর অনলাইন সংস্করণে গত ০২ এপ্রিল প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, “প্রথম বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান হিসেবে যেকোনো ফরম্যাটে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সেঞ্চুরি করার কৃতিত্ব দেখালেন মাহমুদুল হাসান জয়।”
একই দিনে একই ঘটনা নিয়ে অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪ এ প্রকাশিত প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, “গত ২০ বছরে তিন দফা দক্ষিণ আফ্রিকা সফর করেও সেঞ্চুরি হাঁকাতে পারেননি বাংলাদেশের কোনো ব্যাটার।”
তাছাড়াও, একই বিষয়টি নিয়ে অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘রাইজিং বিডি‘তে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, “প্রথম বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম সেঞ্চুরি পেলেন মাহমুদুল হাসান জয়। তার আগে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে দেশে কিংবা দেশের বাইরে কেউ-ই তিন অঙ্ক ছুঁতে পারেননি। ২১ বছর বয়সী তরুণ সেই সেঞ্চুরির গেরো ছুটালেন।”
এছাড়াও, দেশীয় সংবাদমাধ্যম ‘নিউজ২৪‘ ও ‘ইনকিলাব‘ এ আলোচিত তথ্যটি নিয়ে প্রকাশিত সংবাদের শিরোনামে দাবি করা হয়, দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে প্রথম কোনো বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান হিসেবে মাহমুদুল হাসান জয় শতরান করেছেন।
পরবর্তীতে সংবাদটির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য, কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে, দেশীয় মূলধারার সংবাদমাধ্যম ‘দৈনিক সমকাল’ এর অনলাইন সংস্করণে ২০১৭ সালের ১৫ অক্টোবর “দ. আফ্রিকার বিপক্ষে বাংলাদেশের ‘প্রথম সেঞ্চুরিয়ান’ মুশফিক” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
পাশাপাশি, ক্রিকেট ভিত্তিক জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ‘Cricbuzz’ এর ওয়েবসাইটে ২০১৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মুশফিকের সেঞ্চুরি করা ম্যাচটির বিস্তারিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়।
সম্প্রতি “প্রচুর পড়ালেখা করতাম বলে আজ প্রশাসন ক্যাডারে ২য় হয়েছিঃ হাসিবুর রহমান” শীর্ষক শিরোনামে একটি সংবাদ একটি ভূইফোঁড় অনলাইন পোর্টালে প্রকাশের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
ভাইরাল কিছু ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে। আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে। এবং ভূইফোঁড় অনলাইন পোর্টালে প্রকাশিত খবরের আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, বিসিএসে হাসিবুর রহমানের প্রশাসন ক্যাডারে দ্বিতীয় হওয়ার ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং ঘটনাটি ৩ বছর পূর্বের।
কি-ওয়ার্ড সার্চ পদ্ধতি ব্যবহার করে, ‘একুশে ETV’ এর অনলাইন সংস্করণে ২০১৮ সালের ১৯ জুলাই “বিসিএসে সফল হওয়ার চাই নিষ্ঠা-একাগ্রতা” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনটি থেকে ৩৭ তম বিসিএসে হাসিবুরের কৃতিত্ব সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়।
মূলত, মানিকগঞ্জ জেলার কাকুরিয়া গ্রামের কৃতি সন্তান হাসিবুর রহমান এমিল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে ২০১৮ সালে ৩৭ তম বিসিএসে শিক্ষা (প্রশাসন) ক্যাডারে দ্বিতীয় স্থান লাভ করেন। সেসময় তার বিসিএসে সাফল্য নিয়ে সংবাদমাধ্যমে তথ্য প্রচারিত হয়। তবে, গত ২৯ মার্চ ৪০ তম বিসিএস এর চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পর ৩৭ তম বিসিএসে হাসিবুর রহমানের দ্বিতীয় হওয়ার বিষয়টি পুনরায় বিভ্রান্তিকর শিরোনামে প্রচার করা হচ্ছে।