Home Blog Page 551

আড়াই হাজার নগদ অ্যাকাউন্টে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ১ কোটি করে টাকা ঢুকার দাবিটি মিথ্যা

0

সম্প্রতি, “আড়াই হাজার নগদ অ্যাকাউন্টে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ১ কোটি করে টাকা ঢুকেছে” শীর্ষক একটি দাবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমনকিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আড়াই হাজার নগদ অ্যাকাউন্টে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ১ কোটি করে টাকা ঢুকার দাবিটি সত্য নয় বরং কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই উক্ত দাবিটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোনো গ্রহণযোগ্য সূত্রে উক্ত দাবি সংশ্লিষ্ট কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

Screenshot: Google 

পরবর্তীতে দাবিটি যাচাইয়ের জন্য মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস অপারেটর নগদ এর ভেরিফাইড ফেসবুক পেজওয়েবসাইট পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। পর্যবেক্ষণ করে, আড়াই হাজার অ্যাকাউন্টে অটোমেটিক ১ কোটি করে টাকা ঢুকার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

বিষয়টি অধিকতর যাচাইয়ের জন্য রিউমর স্ক্যানার টিম নগদের কাস্টমর কেয়ারের সাথে যোগাযোগ করলে সেখান থেকে বলা হয়, এধরনের কোনো ঘটনা সম্পর্কে আমাদের জানা নেই। আপনি যে তথ্যটির কথা বলছেন সেইধরনের কোনো ঘটনা যদি ঘটতো তাহলে আমাদের জানা থাকতো৷ আমরা আশা করছি, এই ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। 

মূলত, আড়াই হাজার নগদ অ্যাকাউন্টে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ১ কোটি করে টাকা ঢুকার একটি দাবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে দাবিটি সঠিক নয়। রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, নগদে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। প্রকৃতপক্ষে কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই ভিত্তিহীনভাবে উক্ত দাবিটি ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। 

প্রসঙ্গত, গত ২৬ জুন ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলায় ৪০ দিনের কর্মসৃজন প্রকল্পের প্রায় ১৫শ ৩ জন শ্রমিকের নগদ অ্যাকাউন্টে ১৪ হাজার ৪০০ করে টাকা পাওয়ার কথা থাকলেও “নগদ” প্রতিষ্ঠান ভুল করে একটি “শূন্য” বেশি দেওয়ায় প্রতি শ্রমিকের অ্যাকাউন্টে একটি ১ লক্ষ ৪৪ হাজার করে টাকা ঢুকে যায়। 

সুতরাং, মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস অপারেটর নগদ থেকে আড়াই হাজার অ্যাকাউন্টে ১ কোটি করে টাকা ঢুকার দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

ব্রাজিলে সাম্প্রতিক ভবন ধসের ঘটনায় গণমাধ্যমে পুরোনো ছবি প্রচার

গত ০৮ জুলাই ব্রাজিলে ভবন ধসের ঘটনায় কতিপয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে একটি ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। 

উক্ত ছবি ব্যবহার করে ব্রাজিলের সাম্প্রতিক ভবন ধসের ঘটনায় প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ডেইলি বাংলাদেশ, জনবাণী এবং নিউজ বিডি টাইপ। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, উক্ত ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং চলতি বছরের ২২ ফেব্রুয়ারিতে ব্রাজিলের সাও সেবাস্তিয়াওয়ে ভূমিধসের সময়কার দৃশ্যকে সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম REUTERS এর ওয়েবসাইটে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ‘Brazil downpours leave at least 50 dead as rescue ship arrives’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: REUTERS

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এটি ২২ ফেব্রুয়ারিতে ব্রাজিলের সাও সেবাস্তিয়াওয়ে ভারী বর্ষণের ফলে সৃষ্ট ভূমিধসের স্থানে একজন ফায়ার ফাইটার এবং অপর এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে থাকার ছবি।

অর্থাৎ, ব্রাজিলে ভবনধসের সাম্প্রতিক ঘটনায় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে পুরোনো ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। 

এছাড়াও, গণমাধ্যমে সম্প্রতি প্রকাশিত প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিটির ক্যাপশনে ছবিটি সংগৃহীত বলে উল্লেখ করা হয়েছে, কোনো গণমাধ্যম ছবির ক্যাপশনে কিছুই উল্লেখ করা হয়নি। সাম্প্রতিক ঘটনার বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ছবিটি ব্যবহার করে সংগৃহীত উল্লেখ করা বা কোন তথ্য উল্লেখ না করায় স্বাভাবিকভাবেই ছবিটি ব্রাজিলের সাম্প্রতিক সময়ের ভবন ধসের ঘটনার বলে প্রতীয়মান হয়। এতে করে নেটিজেনদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হওয়া অমূলক নয়। 

মূলত, গত ০৮ জুলাই ব্রাজিলে ভবন ধসের ঘটনায় কতিপয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে একটি ছবি প্রচারের প্রেক্ষিতে অনুসন্ধানে জানা যায়, ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। এটি এবছরের ২২ ফেব্রুয়ারিতে ব্রাজিলের সাও সেবাস্তিয়াওয়ে ভারী বর্ষণের ফলে সৃষ্ট ভূমিধসের স্থানে একজন ফায়ার ফাইটার এবং অপর এক ব্যক্তি দাড়ানোর ছবি। গণমাধ্যমের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনগুলোতে আলোচিত ছবিটির ক্যাপশনে পুরোনো ঘটনার ছবি শীর্ষক কোনো তথ্য না দেওয়ায় ছবিটি সাম্প্রতিক ভবন ধসের ঘটনার বলে প্রতীয়মান হয়, যা বিভ্রান্তির জন্ম দিয়েছে। 

উল্লেখ্য, পূর্বে কঙ্গোতে ভারী বর্ষণে বন্যার ঘটনায় গণমাধ্যমে একাধিক পুরোনো ছবি ব্যবহার করা হলে সেসময় বিষয়টি নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার। 

সুতরাং, ব্রাজিলে সাম্প্রতিক সময়ে ভবন ধসের ঘটনায় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে পুরোনো ছবিকে সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ থেকে সৈন্য না নেয়া সংক্রান্ত কোনো মন্তব্য গোয়েন লুইস করেননি

0

সম্প্রতি, “মানবধিকার লঙ্ঘন বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত না হওয়া পর্যন্ত শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ থেকে সৈন্য নেবে না জাতিসংঘ” শীর্ষক একটি মন্তব্য বাংলাদেশে নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি গোয়েন লুইস করেছেন দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশে নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি গোয়েন লুইস ”মানবধিকার লঙ্ঘন বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত না হওয়া পর্যন্ত শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ থেকে সৈন্য নেবে না জাতিসংঘ” শীর্ষক কোনো মন্তব্য করেননি বরং কোনো তথ্যসূত্র ছাড়াই ভিত্তিহীনভাবে উক্ত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।

বিভ্রান্তির শুরু

অনুসন্ধানে গত ৭ জুলাই রাত  ৯ টায় ‘Abdur Rab Bhuttow’ নামক ফেসবুক পেজ থেজে উক্ত দাবিতে একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। তবে পরবর্তীতে সেই পোস্টটি তিনি মুছে ফেলেন।

Screenshot from ‘Crowdtangle’

উল্লিখিত দাবির সত্যতা যাচাইয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে জাতিসংঘে শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের সৈন্য নিয়ে নিয়ে জাতিসংঘের সাম্প্রতিক অবস্থান পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম।

অনুসন্ধানে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ‘বিবিসি বাংলা’ এর ওয়েবসাইটে গত ২৭ জুন “জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের সদস্য পাঠানোর বিষয়টি কেন আলোচনায়?” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত  প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot from ‘BBC বাংলা’

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, গত ২৫-২৬শে জুন বাংলাদেশে সফর করেছিলেন জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল জাঁ পিয়ের ল্যাক্রোয়ার। তিনি আগামী ডিসেম্বরে ঘানায় অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের আগে ঢাকায় প্রথম প্রস্তুতি সভায় অংশ নেন। সভায় জাঁ পিয়ের ল্যাক্রোয়ার তার বক্তব্যে অন্যান্য বিষয়ের সাথে শান্তিরক্ষা মিশনে মানবাধিকার লংঘনের বিষয়টি নিয়েও কথা বলেন।

উক্ত সভায় জাঁ পিয়ের ল্যাক্রোয়ার বলেন, বিভিন্ন কমিউনিটির সাথে জাতিসংঘের সংযুক্তিকে সফল করতে তাদের সব কাজের পূর্বশর্ত থাকে যে, সব শান্তিরক্ষীর আচরণ যাতে সর্বোচ্চ মানের হয়। তাদের যাতে সততা, যোগ্যতা এবং দক্ষতার সর্বোচ্চ মান নিশ্চিত করা হয়। একইসাথে যেসব দেশ সেনা এবং পুলিশ সদস্যদের পাঠাচ্ছে সেসব দেশকে নিশ্চিত করতে হয় যে, তাদের পাঠানো আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বাহিনীর কোন সদস্য আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের লঙ্ঘনের সাথে জড়িত নয় বা তাদের বিরুদ্ধে এমন কোন অভিযোগও নেই।

এছাড়া, দেশীয় মূলধারার গণমাধ্যম ডেইলি স্টার এর ওয়েবসাইটে গত ২৬ জুন “‘নিশ্চিত হতে হবে কোনো শান্তিরক্ষী মানবাধিকার লঙ্ঘনে জড়িত নয়” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদ প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot from ‘The Daily Star’

উক্ত প্রতিবদন থেকে জানা যায়, গুমের শিকার ব্যক্তিদের স্বজনদের সংগঠন ‘মায়ের ডাক’ ২৫ জুন জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল জাঁ পিয়ের ল্যাক্রোয়ারের কাছে স্মারকলিপি জমা দেন। সেই স্মারকলিপির জবাবে জাঁ পিয়ের ল্যাক্রোয়ার ইমেলের মাধ্যমে একটি বিবৃতি পাঠান।

ঐ বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শান্তিরক্ষায় যেসব দেশ সেনা ও পুলিশ পাঠায় তাদের নিশ্চিত করতে হবে যে তাদের কেউ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন লঙ্ঘন করছে না বা তাদের বিরুদ্ধে এ ধরনের কোনো অভিযোগ নেই।’

পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ‘বিবিসি বাংলা’ এর ওয়েবসাইটে গত ২৪ জুন “বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনে জড়িতদের শান্তিরক্ষা মিশনে না নিতে জাতিসংঘকে অ্যামনেস্টির আহবান” শীর্ষক শীরোনামে প্রকাশিত সংবাদ প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot from ‘BBC বাংলা’

প্রকাশিত প্রতবেদন থেকে জানা যায়, জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেলের বাংলাদেশ সফরে আসা উপলক্ষে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি বিশেষভাবে পর্যবেক্ষণ করার আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।

একইসঙ্গে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে মানবাধিকার লঙ্ঘনে যারা জড়িত তারা যেন জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশনে যেতে না পারে সেটিও নিশ্চিতের আহ্বান জানায় তারা।

এছাড়া, মানবাধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংগঠন হিউম্যান রাইট ওয়াচ এর ওয়েবসাইটে

গত ১২ জুন “UN Should Enhance Screening of Bangladesh Peacekeepers” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি বিবৃতি খুঁজে পাওয়া যায়।

বিবৃতিতে জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশনে বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের নিয়োগের ক্ষেত্রে মানবাধিকার সংক্রান্ত বিষয় যাচাই বাছাইয়ের আহ্বান জানানো হয়। 

এইচআরডব্লিউর দাবি, বাংলাদেশে ক্ষমতার অপব্যবহারের সঙ্গে জড়িত নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা যেন দেশের বাইরে শান্তি রক্ষা মিশনে অংশ না নিতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে জাতিসংঘের মানবাধিকার সংক্রান্ত নীতিমালা ব্যর্থ হয়েছে। শুধু উচ্চপদস্থ কর্তকর্তাদের মানবাধিকার সংক্রান্ত বিষয় যাচাই বাছাই করে জাতিসংঘ।

র‍্যাবকে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত বাহিনী হিসেবে দাবি করে বিবৃতিতে আরো বলা হয়, জাতিসংঘের উচিত কোনো বাংলাদেশি কর্মকর্তা র‍্যাবের সঙ্গে জড়িত থাকলে, তা প্রকাশ করা এবং বাহিনী–সংশ্লিষ্ট কাউকে শান্তি রক্ষা মিশনে যোগদানে বিরত রাখা। শুধু উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা নয়, বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর সব সদস্যের মানবাধিকার সংশ্লিষ্ট বিষয় যাচাই–বাছাই করার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশন বিভাগকে।

উক্ত প্রতিবেদন গুলোর কোথাও বাংলাদেশে নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি গোয়েন লুইস “মানবধিকার লঙ্ঘন বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত না হওয়া পর্যন্ত শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ থেকে সৈন্য নেবে না জাতিসংঘ” শীর্ষক কোনো বক্তব্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এছাড়া বিষয়টি অধিকতর নিশ্চিতে গোয়েন লুইস এর টুইটার অ্যাকাউন্ট  পর্যবেক্ষণ করে এমন কোনো বক্তব্য বা এই সম্পর্কিত কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

Screenshot from Twitter

বাংলাদেশ সংশ্লিষ্ট জাতিসংঘের টুইটার অ্যাকাউন্টেও গোয়েন লুসের দেওয়া এমন কোনো বক্তব্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

Screenshot from Twitter

অনুসন্ধানের মাধ্যমে জাতিসংঘ বাংলাদেশ এর ওয়েবসাইটে গত ২৯ মে “আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবসে বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস এর বানী” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত বিবৃতি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot from UN Bangladesh

তবে উক্ত বিবৃতিতে গোয়েন লুইসের “মানবধিকার লঙ্ঘন বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত না হওয়া পর্যন্ত শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ থেকে সৈন্য নেবে না জাতিসংঘ” শীর্ষক বক্তব্য প্রদান করেননি।

মূলত, সম্প্রতি “মানবধিকার লঙ্ঘন বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত না হওয়া পর্যন্ত শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ থেকে সৈন্য নেবে না জাতিসংঘ” শীর্ষক একটি তথ্য বাংলাদেশে নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি গোয়েন লুইস বক্তব্য দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, গোয়েন লুইস এমন কোনো বক্তব্য দেননি। জাতিসংঘের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট, মূলধারার দেশীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য মাধ্যমে গোয়েন লুইসের এমন মন্তব্যের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, পূর্বেও বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি. হাসের মন্তব্য দাবিতে ইন্টারনেটে মিথ্যা তথ্য প্রচার করা হলে সেসময় বিষয়টি নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার। 

সুতরাং,”মানবধিকার লঙ্ঘন বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত না হওয়া পর্যন্ত শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ থেকে সৈন্য নেবে না জাতিসংঘ” শীর্ষক একটি তথ্যকে বাংলাদেশে নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি গোয়েন লুইস মন্তব্য দাবিতে ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

মৃত স্কুল শিক্ষার্থী তাকিয়াকে পুঁজি করে অনলাইনে আর্থিক প্রতারণার ফাঁদ

0

সম্প্রতি ‘তাকিয়া।  আমার ছোট বোন। সে সিভিল অ্যাভিয়েশন স্কুল, শাহীনবাগ, তেজগাঁও এর ৮ম শ্রেণীর ছাত্রী । গত ১৯ তারিখ বাসার শিক্ষককে গেটের চাবি দিতে গিয়ে  ৫ তলার ছাদ থেকে নিচে পড়ে যায়। আমাদের বাবা  স্বল্প বেতনের চাকরি করে। তাকিয়া বর্তমানে ইউনিভার্সাল মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছে। ওর চিকিৎসার খরচ চালানোর মতো অবস্থা বাবার নেই।’ শীর্ষক দাবিতে চিকিৎসার জন্য অর্থ চেয়ে একটি তথ্য  সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ঢাকার সিভিল অ্যাভিয়েশন স্কুলের শিক্ষার্থী তাকিয়া আক্তারের চিকিৎসার জন্য অর্থ চেয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা। প্রকৃতপক্ষে তাকিয়া আক্তার ২০২২ সালের অক্টোবরেই মারা যান। তবে প্রতারণার উদ্দেশ্যে দীর্ঘদিন ধরেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্টসহ লেনদেনের বিভিন্ন মাধ্যম ব্যবহার করে তাকিয়ার নামে অর্থ চাওয়া হচ্ছে।

অনুসন্ধান যেভাবে

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত পোস্টগুলোর সূত্রে জানা যায়, তাকিয়া আক্তার ইউনিভার্সাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছে এবং এই হাসপাতালের ঠিকানা দেওয়া আছে  77/A পান্থপথ, ঢাকা ১২১৫। 

তবে গুগল ম্যাপ অনুসন্ধানে দেখা যায়, ইউনিভার্সাল মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের অবস্থান ৭৪জি/৭৫, পি-কক স্কয়ার, নিউ এয়ারপোর্ট রোড, ঢাকা১২১৫। অপরদিকে 77/A পান্থপথ, ঢাকা ১২১৫ তে এই নামের কোনো হাসপাতাল খুঁজে পাওয়া যায়নি।

Image Collage: Rumor Scanner

একইসাথে পোস্টগুলোর সূত্রে ইউনিভার্সাল মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের ‘Case Summary ON 6-19-23‘ শীর্ষক একটি চিকিৎসা সম্পর্কিত নথির ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Image Collected from Facebook 

এই নথির সূত্র ধরে ইউনিভার্সাল হাসপাতাল প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করে রিউমর স্ক্যানার টিম।

তাদের কাছে হাসপাতালে এই নামে রোগী আছে কি না এই বিষয়ে জানতে চাইলে হাসপাতাল প্রশাসন রিউমর স্ক্যানারকে জানায়, হাসপাতালটিতে বর্তমানে এই নামে কোনো রোগী নেই। তবে উক্ত নামে ইতোপূর্বে একজন রোগী ভর্তি করা হয়েছিল, পরবর্তীতে তাকে এই হাসপাতাল থেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। পাশাপাশি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ফেসবুকে দেওয়া হাসপাতালের ঠিকানাটিও ভুল বলে নিশ্চিত করে।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উক্ত তথ্যের বরাতে রিউমর স্ক্যানার টিম ফেসবুকে তথ্যটি নিয়ে অধিকতর অনুসন্ধান করে। এতে দেখা যায়, অন্তত ২০২২ সালের পহেলা সেপ্টেম্বর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাকিয়া আক্তারের নামে অর্থ সাহায্য চেয়ে করা পোস্টগুলোর অস্তিত্ব রয়েছে।  

Screenshot: Random Facebook Post

সেই সময় থেকে ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত পোস্টগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, পোস্টগুলোতে সংযুক্ত ইউনিভার্সাল মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের ‘Case Summary’ এর তারিখগুলো পরিবর্তন করে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন তারিখ বসানো হয়েছে। 

Image Collage: Rumor Scanner

এছাড়া সময়ে সময়ে অর্থ সহায়তার জন্য দেওয়া পোস্টগুলোতে ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বার ও ব্যাংক হিসাবের নাম্বারেও পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে।

Image Collage: Rumor Scanner 

রিউমর স্ক্যানার টিম বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধানের এই পর্যায়ে সাম্প্রতিক সময়ে তাকিয়ার নামে সাহায্য চেয়ে করা পোস্টগুলোতে সংযুক্ত নাম্বারে যোগাযোগের চেষ্টা করে। এক্ষেত্রে পোস্টগুলোতে প্রদত্ত একটি নাম্বারে দেওয়া কল রিসিভ করার পর তাকিয়ার ব্যাপারে তাদের কাছে জানতে চাওয়া হলে সাথে সাথে কলটি কেটে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে এই নাম্বারসহ আরও পোস্টগুলোতে সংযুক্ত আরেকটি নাম্বারে (01833527107, 01619741760) একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও আর সংযোগ পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে ওপেন সোর্স অনুসন্ধানের মাধ্যমে তাকিয়া আক্তারের বাবা মুহাম্মদ তারেককে খুঁজে পাওয়া যায়।

তার কাছে তাকিয়া আক্তারের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি রিউমর স্ক্যানারকে বলেন, বিষয়গুলো আসলে আমার ও আমার পরিবারের জন্য বিব্রতকর। তাকিয়া ২০২২ সালের অক্টোবরে মারা গেছে। তারপরও কতিপয় মানুষ প্রতারণার জন্য এভাবে সাহায্য তুলছে।

মূলত, রাজধানীর সিভিল অ্যাভিয়েশন স্কুলের ৮ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী তাকিয়া আক্তার ২০২২ সালের ২৩ আগস্ট বাসার ছাদ থেকে পড়ে আহত হলে তাকে রাজধানীর  ইউনিভার্সাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। একই বছরের অক্টোবরে তাকিয়া মারাও যান বলে জানান তার বাবা মুহাম্মদ তারেক। তবে তার জীবিত থাকার সময়ে আর্থিক সাহায্য চেয়ে করা পোস্টের সূত্রে ২০২২ সালের অক্টোবর পরবর্তী বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মোবাইল নাম্বার ব্যবহার করে আর্থিক সাহায্য চাওয়া হয়। সম্প্রতি এরই ধারাবাহিকতায় পুনরায় তাকিয়ার চিকিৎসার জন্য আর্থিক সাহায্য চেয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। 

সুতরাং, ঢাকার সিভিল অ্যাভিয়েশন স্কুলের শিক্ষার্থী তাকিয়া আক্তারের চিকিৎসার জন্য অর্থ চেয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ প্রতারণামূলক এবং মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

  • Rumor Scanner Own Investigation 
  • Contact with Universal Medical College and Hospital 
  • Contact with Takiya Akter’s Father 

দামেস্কে গত জুনের বিমান হামলার ঘটনায় গণমাধ্যমে পুরোনো ছবি

সম্প্রতি, সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইসরায়েলের বিমান হামলার ঘটনায় কতিপয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে একটি ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। 

উক্ত ছবি যুক্ত করে গণমাধ্যমে প্রকাশিত এমনকিছু প্রতিবেদন দেখুন দৈনিক নয়া দিগন্ত, দ্য রিপোর্ট লাইভ, নিউজ২৪, দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশ (ই-পেপার), এবিনিউজ২৪, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস), একুশে টিভি এবং তরঙ্গ নিউজ। 

উক্ত ছবি ব্যবহার করে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইসরায়েলের বিমান হামলার ঘটনায় গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের সাথে প্রচারিত ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং সিরিয়ায় ইসরায়েলি হামলার পূর্বের ঘটনার পুরোনো ছবিকে দেশটিতে সাম্প্রতিক বিমান হামলার ঘটনার দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে মালয়েশিয়া ভিত্তিক গণমাধ্যম NEW STRAITS TIMES এ গত ১৯ ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ১৮ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাতে ইসরাইলি রকেট হামলায় দামেস্কের কাফর সুসার আশেপাশের একটি ভবনে আঘাত করা হয়। এতে পাঁচজন নিহত হয়েছে। 

ছবিটির ক্যাপশনে বলা হয়, ছবিটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে প্রাপ্ত এবং এটি দামেস্কর কাফর সুসার আশেপাশের ক্ষতিগ্রস্থের ছবি। 

Screenshot: New Straits Times

অনুসন্ধানে Richard Medhurst নামক একটি ভেরিফাইড টুইটার অ্যাকাউন্টে দুটি ছবিসহ গত ১৯ ফেব্রুয়ারিতে দেওয়া একটি পোস্ট (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়। সেখানেও আলোচিত ছবিটি পাওায়া যায়। 

পোস্টের ক্যাপশনে বলা হয়, ইসরায়েল মাত্র বোমাবর্ষণ করেছে সিরিয়ায়। দামেস্কের একটি আবাসিক এলাকায় আঘাত করেছে। নিহত হয়েছে ১৫ জন। 

Screenshot: Richard Medhurst Twitter Account 

Richard Medhurst নামক অ্যাকাউন্টটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, তিনি একজন স্বাধীন সাংবাদিক। 

Screenshot: Richard Medhurst Twitter Account

অর্থাৎ, ছবিটি সাম্প্রতিক সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে হওয়া বিমান হামলার নয়। 

গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিটির ক্যাপশনে ফাইল ফটো বা পুরোনো ঘটনার ছবি শীর্ষক কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি। বরং কিছু গণমাধ্যম ছবিগুলো সংগৃহিত কেউ-বা ছবির ক্যাপশনে কিছুই লিখেনি। সাম্প্রতিক ঘটনার বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ছবিটির ব্যবহার করে সংগৃহিত উল্লেখ কিংবা কোনো তথ্যই উল্লেখ না থাকায় স্বাভাবিকভাবে ছবিগুলো সিরিয়ায় সাম্প্রতিক বিমান হামলার ঘটনার বলে প্রতীয়মান হয়। এতে করে নেটিজেনদের মধ্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হওয়া অমূলক নয়। 

মূলত, গত ১৩ জুন দিবাগত রাতে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে বিমান হামলার ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় কতিপয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে সিরিয়ার পুরোনো ও ভিন্ন ঘটনার ছবি ব্যবহার করে সাম্প্রতিক ঘটনার ছবি দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে। প্রতিবেদনগুলোতে আলোচিত ছবিটির ক্যাপশনে ফাইল ফটো বা পুরোনো ঘটনার ছবি শীর্ষক কোনো তথ্যও দেওয়া হয়নি। এতে করে স্বাভাবিকভাবে ছবিটি সিরিয়ায় সাম্প্রতিক হওয়া বিমান হামলার ঘটনার বলে প্রতীয়মান হয়, যা বিভ্রান্তির জন্ম দিয়েছে।

সুতরাং, সম্প্রতি সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে বিমান হামলার ঘটনায় গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে পুরোনো ঘটনার ছবিকে সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

কিশোরগঞ্জের বঙ্গবন্ধু বিশ্ববিদ্যালয়ের নকশাকে ঠাকুরগাঁও বিশ্ববিদ্যালয়ের নকশা দাবি

0

সম্প্রতি, একটি নকশাকে ঠাকুরগাঁও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাবিত নকশা দাবি করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ঠাকুরগাঁও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাবিত নকশার দাবিতে যে নকশাটি প্রচার করা হচ্ছে তা ঠাকুরগাঁও বিশ্ববিদ্যালয়ের নয় বরং এটি কিশোরগঞ্জে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাবিত নকশা। 

দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ের রিউমর স্ক্যানার টিম রিভার্স ইমেজ সার্চ পদ্ধতি ব্যবহার করে কিশোরগঞ্জে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে আলোচিত নকশাটি খুঁজে পায়। 

Screenshot: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয় ওয়েবসাইট।

তথ্যটি অধিকতর যাচাইয়ের জন্য রিউমর স্ক্যানার টিম যোগাযোগ করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার শেখ মেহেদী হাসান এবং জনসংযোগ কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দ্বায়িত্ব) জামিউর রহমানের সাথে। 

রেজিস্ট্রার শেখ মেহেদী হাসান রিউমর স্ক্যানারকে বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাবিত নকশা দেওয়া আছে। এটি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের নকশা।

জনসংযোগ কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দ্বায়িত্ব) জামিউর রহমান রিউমর স্ক্যানারকে বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে যে নকশা দেওয়া আছে এটি ২০২১ সালেই তৈরি করা হয়েছে। গত তিন-চার মাস আগে এটি ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। 

মূলত, একটি প্রস্তাবিত নকশার ছবি ঠাকুরগাঁও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাবিত নকশার ছবি দাবিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে, রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত নকশাটি কিশোরগঞ্জে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাবিত নকশার ছবি। এছাড়া, ঠাকুরগাঁও বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনো উপাচার্য নিয়োগ না হওয়ায় এবং বিশ্ববিদ্যালয়টির ওয়েবসাইট না থাকায় কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। 

প্রসঙ্গত, গত ১২ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে মন্ত্রিসভা বৈঠকে দুইটি নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়। একটি শরীয়তপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এবং আরেকটি ঠাকুরগাঁও জেলায় ঠাকুরগাঁও বিশ্ববিদ্যালয়।

সুতরাং, কিশোরগঞ্জে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাবিত নকশার ছবিকে ঠাকুরগাঁও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাবিত নকশা দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ  মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

পাকিস্তানে ভারী বর্ষণের ঘটনায় গণমাধ্যমে একাধিক পুরোনো ছবি

গত জুনে পাকিস্তানের খাইবার পাখতুম প্রদেশের বান্নু, লাক্ষী মারওয়াত এবং কারাক জেলায় ভারী বৃষ্টির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় কতিপয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে ১২ টি ছবি ব্যবহার করা হয়েছে।

উক্ত ছবিগুলো যুক্ত করে গণমাধ্যমে প্রকাশিত এমন কিছু প্রতিবেদন দেখুন একাত্তর টিভি, চ্যানেল২৪, সময় টিভি, চ্যানেল আই, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস), কালের কণ্ঠ, যমুনা টিভি, যুগান্তর, ইত্তেফাক, ইনকিলাব, নিউজ২৪, ডিবিসি নিউজ, সাম্প্রতিক দেশকাল, ডেইলি সান (১), ডেইলি সান (২), ইত্তেফাক, দেশ রূপান্তর, মানবজমিন, বাংলাদেশ প্রতিদিন, ভোরের কাগজ, দৈনিক আমাদের সময়, সময়ের আলো, বাংলানিউজ২৪, ঢাকা মেইল, বায়ান্ন টিভি, সোনালী নিউজ, বার্তা২৪, বাংলাদেশ জার্নাল, এশিয়ান টিভি, ডেইলি মেসেঞ্জার, জাগোনিউজ২৪ (ইউটিউব), ফ্রিডম বাংলা নিউজ, মত ও পথ, ডেল্টা টাইমস, সময়ের কণ্ঠস্বর, বিজনেস পোস্ট, নিউজনাউ২৪, আমাদের বার্তা, আজকালের খবর

এর মধ্যে একটি ছবি সাম্প্রতিক সময়ে পাকিস্তানের ভারী বর্ষণের ঘটনার প্রকাশিত প্রতিবেদনে ব্যবহার করেছে আল জাজিরা। 

উক্ত ছবিগুলো ব্যবহার করে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, পাকিস্তানে গত জুনে ভারী বর্ষণের ঘটনায় গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের সাথে প্রচারিত ছবিগুলো সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং পূর্বে পাকিস্তানের বিভিন্ন ঘটনার পুরোনো ছবিকে দেশটির সাম্প্রতিক ভারী বর্ষণের ঘটনার দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

ছবি যাচাই ১

Screenshot source: Facebook

পাকিস্তানের সাম্প্রতিক ভারী বৃষ্টির ঘটনার বিষয়ে জানিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই ছবিটি ব্যবহার করেছে ইনকিলাব, সাম্প্রতিক দেশকাল, ঢাকা মেইল, সোনালী নিউজ, বার্তা২৪। 

কিন্তু ছবিটি উক্ত ঘটনার নয়। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে সৌদি আরবের সংবাদমাধ্যম Arab News এর ওয়েবসাইটে ২০১৯ সালের ১৬ এপ্রিল প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

আরব নিউজ বলছে, সেসময় পাকিস্তানে ভারী বর্ষণের কারণে রাস্তাঘাট পানিতে ডুবে গিয়েছিল। আরব নিউজের পক্ষে ছবিটি তুলেছেন শফিক মালিক। 

Screenshot source: Arab News

অর্থাৎ, গণমাধ্যমে প্রচারিত এই ছবিটি পাকিস্তানের সাম্প্রতিক ভারী বর্ষণের ঘটনার নয়।

ছবি যাচাই ২ 

Screenshot source: Facebook

পাকিস্তানের সাম্প্রতিক ভারী বৃষ্টির ঘটনার বিষয়ে জানিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই ছবিটি ব্যবহার করেছে চ্যানেল২৪, সময় টিভি, ডিবিসি নিউজ, ডেইলি সান, ইত্তেফাক, দেশ রূপান্তর, মানবজমিন, বাংলাদেশ প্রতিদিন, সময়ের আলো, বাংলানিউজ২৪, বাংলাদেশ জার্নাল, এশিয়ান টিভি, ডেইলি মেসেঞ্জার, নিউজনাউ২৪।

কিন্তু ছবিটি উক্ত ঘটনার নয়। 

অনুসন্ধানে দেখা যায়, দেশের একাধিক গণমাধ্যমে উক্ত ছবিটির সূত্র হিসেবে আল জাজিরায় নাম উল্লেখ রয়েছে। 

পরবর্তীতে কাতার ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম Al Jazeera এর ওয়েবসাইটে গত ১০ জুন প্রকাশিত পাকিস্তানের সাম্প্রতিক ভারী বর্ষণের ঘটনার বিষয়ে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

আল জাজিরা তাদের প্রতিবেদনে এই ঘটনার বিষয়ে একটি ভিডিও যুক্ত করেছে যার থাম্বনেইলে উক্ত ছবিটি দেখা যাচ্ছে।  কিন্তু ছবিটি ঠিক কোন ঘটনা বা সময়ের সে বিষয় উল্লেখ করেনি সংবাদমাধ্যমটি। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের বলে প্রতীয়মান হবে যে কারো কাছে।

Screenshot source: Al Jazeera 

এ বিষয়ে তাই আরো অনুসন্ধান করে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম Reuters এর ওয়েবসাইটে ২০২২ সালের ২৭ আগস্ট প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে একই ছবি খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার টিম। 

রয়টার্স ছবির ক্যাপশনে লিখেছে, সেসময় পাকিস্তানে বন্যায় এক ব্যক্তিকে সাঁতার কাটতে দেখা যায় যার ছবি রয়টার্সের পক্ষে তুলেছেন ফায়াজ আজিজ। 

Screenshot source: Reuters 

অর্থাৎ, গণমাধ্যমে প্রচারিত এই ছবিটি পাকিস্তানের সাম্প্রতিক ভারী বর্ষণের ঘটনার নয়।

ছবি যাচাই ৩

পাকিস্তানের সাম্প্রতিক ভারী বৃষ্টির ঘটনার বিষয়ে জানিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই ছবিটি ব্যবহার করেছে ভোরের কাগজ, আমাদের বার্তা। 

Screenshot source: Bhorer Kagoj

কিন্তু ছবিটি উক্ত ঘটনার নয়। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধান করতে গিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম Voice of America এর ওয়েবসাইটে ২০১৩ সালের ০৫ আগস্ট প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

ছবিটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, ২০১৩ সালের ০৪ আগস্ট রয়টার্স কর্তৃক তোলা ছবিটি পাকিস্তানের সেসময়ের বন্যার দৃশ্য তুলে ধরা হয়েছে। 

Screenshot source: VoA

অর্থাৎ, গণমাধ্যমে প্রচারিত এই ছবিটি পাকিস্তানের প্রায় দশ বছর পুরোনো ঘটনার দৃশ্য। 

ছবি যাচাই ৪ 

Screenshot source: Freedom Bangla News 

পাকিস্তানের সাম্প্রতিক ভারী বৃষ্টির ঘটনার বিষয়ে জানিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই ছবিটি ব্যবহার করেছে জাগোনিউজ২৪ (ইউটিউব), ফ্রিডম বাংলা নিউজ, মত ও পথ, ডেল্টা টাইমস। 

কিন্তু ছবিটি উক্ত ঘটনার নয়। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে রয়টার্সের ওয়েবসাইটে ২০২২ সালের ২৯ আগস্ট প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

সে বছরের ২৮ আগস্ট আমের হোসেনের তোলা ছবিটিতে দেখা যায়, সেমসয় পাকিস্তানের বন্যায় মানুষ ঘর থেকে বেরিয়ে চারপাশের পরিবেশ পর্যবেক্ষণ করছে। 

Screenshot source: Reuters 

অর্থাৎ, গণমাধ্যমে প্রচারিত এই ছবিটি বছরখানেকের পুরোনো। 

ছবি যাচাই ৫

Screenshot source: Dainik Amader Somoy 

পাকিস্তানের সাম্প্রতিক ভারী বৃষ্টির ঘটনার বিষয়ে জানিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই ছবিটি ব্যবহার করেছে দৈনিক আমাদের সময়, সময়ের কণ্ঠস্বর

ছবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে ছবি শেয়ারিং এবং স্টোরেজ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান Getty Images এর ওয়েবসাইটে উক্ত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত পাতা থেকে জানা যায়, পাকিস্তানে গত বছরের আগস্টে বন্যার ঘটনার সময়ের ছবি এটি, যা তুলেছেন শহীদ সায়েদ মির্জা। 

Screenshot source: Getty Images 

অর্থাৎ, গণমাধ্যমে প্রচারিত এই ছবিটি বছরখানেকের পুরোনো। 

ছবি যাচাই ৬

Screenshot source: Business Post

পাকিস্তানের সাম্প্রতিক ভারী বৃষ্টির ঘটনার বিষয়ে জানিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই ছবিটি ব্যবহার করেছে বিজনেস পোস্ট

কিন্তু ছবিটি উক্ত ঘটনার নয়। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে মার্কিন সংবাদমাধ্যম Bloomberg এর ওয়েবসাইটে ২০২২ সালের ২৮ আগস্ট প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উক্ত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

ব্লুমবার্গ বলছে, সেসময় পাকিস্তানের পাঞ্জাব জেলার বন্যায় মানুষকে উদ্ধারের দৃশ্য ছিল এটি। 

আরেক মার্কিন সংবাদমাধ্যম Associated Press (AP) এর পক্ষে ২৭ আগস্ট ছবিটি তোলেন আসিম তানভীর। 

Screenshot source: Bloomberg 

অর্থাৎ, গণমাধ্যমে প্রচারিত এই ছবিটি এক বছর পুরোনো। 

ছবি যাচাই ৭

Screenshot source: News24

পাকিস্তানের সাম্প্রতিক ভারী বৃষ্টির ঘটনার বিষয়ে জানিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই ছবিটি ব্যবহার করেছে নিউজ২৪, আজকালের খবর

একই ছবি পাকিস্তানের বালুচিস্তানে এপ্রিলের বন্যার খবরে প্রচার করেছে যমুনা টিভি, বায়ান্ন টিভি। 

কিন্তু ছবিটি উক্ত দুই ঘটনার নয়। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে মূল ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায় গেটি ইমেজেসে। 

গেটি ইমেজেসের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালের ০৫ জুলাই পাকিস্তানের এই ছবিটি এএফপির পক্ষে তুলেছিলেন বানারাশ খান। 

সেসময় দেশটিতে বর্ষার প্রবল বৃষ্টিতে বাড়িঘরও ক্ষতিগ্রস্ত হয় যা বাসিন্দাদের কর্তৃক পরিষ্কার করার দৃশ্য এটি।  

Screenshot source: Getty Images 

অর্থাৎ, গণমাধ্যমে প্রচারিত এই ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। 

ছবি যাচাই ৮

Screenshot source: Channel I

পাকিস্তানের সাম্প্রতিক ভারী বৃষ্টির ঘটনার বিষয়ে জানিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই ছবিটি ব্যবহার করেছে চ্যানেল আই

কিন্তু ছবিটি উক্ত ঘটনার নয়। 

ছবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে ছবি শেয়ারিং এবং স্টোরেজ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান Alamy এর ওয়েবসাইটে উক্ত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত পাতা থেকে জানা যায়, পাকিস্তানের পেশোয়ার থেকে ২০২০ সালের ০৭ মার্চ ছবিটি তুলেছিল মার্কিন প্রকাশনা সংস্থা Pacific Press Agency। 

Screenshot source: Alamy

পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম Geo Tv বলছে, সেসময় দেশটিতে প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার দৃশ্য এটি।   

অর্থাৎ, গণমাধ্যমে প্রচারিত এই ছবিটি বছরখানেক আগে ভিন্ন ঘটনার দৃশ্য।

ছবি যাচাই ৯

Screenshot source: BSS

পাকিস্তানের সাম্প্রতিক ভারী বৃষ্টির ঘটনার বিষয়ে জানিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই ছবিটি ব্যবহার করেছে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস), কালের কণ্ঠ

কিন্তু ছবিটি উক্ত ঘটনার নয়। 

ছবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে Associated Press (AP) এর ওয়েবসাইটে উক্ত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

এপি বলছে, পাকিস্তানে গত বছরের জুলাইয়ে প্রবল বৃষ্টিতে রাস্তা ডুবে যাওয়ার ঘটনার সময়ের ছবি এটি, যা তুলেছেন ফরিদ খান। 

Screenshot source: AP

অর্থাৎ, গণমাধ্যমে প্রচারিত এই ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। 

ছবি যাচাই ১০

Screenshot source: Jugantor 

পাকিস্তানের সাম্প্রতিক ভারী বৃষ্টির ঘটনার বিষয়ে জানিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই ছবিটি ব্যবহার করেছে যুগান্তর, ইত্তেফাক।

কিন্তু ছবিটি উক্ত ঘটনার নয়। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে রয়টার্সের ওয়েবসাইটে ২০২২ সালের ১০ জুলাই প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উক্ত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

রয়টার্স জানিয়েছে, পাকিস্তানে গত বছরের জুলাইয়ে ভারী বৃষ্টি থেকে সৃষ্ট বন্যার ঘটনার সময়ের ছবি এটি, যা তুলেছেন আক্তার সোম্রো। 

Screenshot source: Reuters 

অর্থাৎ, গণমাধ্যমে প্রচারিত এই ছবিটিও সাম্প্রতিক সময়ের নয়। 

ছবি যাচাই ১১

Screenshot source:, Ekattor Tv

পাকিস্তানের সাম্প্রতিক ভারী বৃষ্টির ঘটনার বিষয়ে জানিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই ছবিটি ব্যবহার করেছে একাত্তর টিভি।

কিন্তু ছবিটি উক্ত ঘটনার নয়। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে Getty Images এর ওয়েবসাইটে উক্ত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত পাতা থেকে জানা যায়, পাকিস্তানের লাহোরে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে অতিবৃষ্টি থেকে সৃষ্ট বন্যার ঘটনার সময়ের ছবি এটি। 

Screenshot source: Getty Images 

অর্থাৎ, গণমাধ্যমে প্রচারিত এই ছবিটি প্রায় দুই বছরের পুরোনো।

ছবি যাচাই ১২

Screenshot source: Daily Sun

পাকিস্তানের সাম্প্রতিক ভারী বৃষ্টির ঘটনার বিষয়ে জানিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই ছবিটি ব্যবহার করেছে ডেইলি সান। 

কিন্তু ছবিটি উক্ত ঘটনার নয়। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে Getty Images এর ওয়েবসাইটে উক্ত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot source: Getty Images

উক্ত পাতা থেকে জানা যায়, পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশে ২০২২ সালের আগস্টে অতিবৃষ্টি থেকে সৃষ্ট বন্যার ঘটনার সময়ের ছবি এটি।

গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিগুলোর ক্যাপশনে ফাইল ফটো বা পুরনো ঘটনার ছবি শীর্ষক কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি। বরং কিছু গণমাধ্যম ছবিগুলো সংগৃহিত, কেউ-বা ছবিসূত্র হিসেবে বিদেশী গণমাধ্যমের নাম উল্লেখ করেছে। কতিপয় গণমাধ্যম ছবির ক্যাপশনে কিছুই লিখে নি। সাম্প্রতিক ঘটনার বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ছবিগুলো ব্যবহার করে সংগৃহিত উল্লেখ, বিদেশী গণমাধ্যমের নাম উল্লেখ কিংবা কোনো তথ্যই উল্লেখ না থাকায় স্বাভাবিকভাবে ছবিগুলো পাকিস্তানের সাম্প্রতিক ভারী বর্ষণের ঘটনার বলে প্রতীয়মান হয়। এতে করে নেটিজেনদের মধ্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হওয়া অমূলক নয়।  

মূলত, গত ১০ জুন পাকিস্তানে ভারী বৃষ্টির ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় কতিপয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে পাকিস্তানের পুরোনো ও ভিন্ন ঘটনার ছবি ব্যবহার করে সাম্প্রতিক ঘটনার ছবি দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে। প্রতিবেদনগুলোতে আলোচিত ছবিগুলোর ক্যাপশনে ফাইল ফটো বা পুরনো ঘটনার ছবি শীর্ষক কোনো তথ্যও দেওয়া হয়নি। এতে করে স্বাভাবিকভাবে ছবিগুলো পাকিস্তানের সাম্প্রতিক ভারী বর্ষণের ঘটনার বলে প্রতীয়মান হয়, যা বিভ্রান্তির জন্ম দিয়েছে। 

সুতরাং, সম্প্রতি পাকিস্তানে ভারী বর্ষণের ঘটনায় গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে একাধিক পুরোনো ঘটনার ছবিকে সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র

টাইটানিক দেখতে যাওয়া নিয়ে ওশানগেটের নতুন বিজ্ঞাপনের দাবিটি মিথ্যা

0

সম্প্রতি,‘আবারও টাইটানিক দেখতে যাওয়ার বিজ্ঞাপন দিল ওশানগেট’ শীর্ষক দাবিতে একটি তথ্য গণমাধ্যম সূত্রে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমনকিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

দেশীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন দৈনিক ইনকিলাব এবং কারেন্ট কানেক্ট নিউজ

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, টাইটানিক ধ্বংসাবশেষ দেখতে যাওয়ার জন্য  টাইটান ধ্বংসের পর ওশানগেট নতুন কোনো বিজ্ঞাপন দেয়নি বরং ইন্টারনেট আর্কাইভ অনুযায়ী উক্ত বিজ্ঞাপনটি টাইটান ধ্বংসের আগে থেকেই ওয়েবসাইটে রয়েছে।

মূলত, টাইটানিক জাহাজের ধ্বংসাবশেষ দেখাতে পাঁচজন আরোহী নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ওশানগেটের টাইটান নামে একটি সাবমেরিন গত ১৮ জুন আটলান্টিক মহাসাগরের তলদেশে যাত্রা শুরু করে। তবে যাত্রার প্রায় দুই ঘন্টা পরেই সাবমেরিনটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থাকা মূল জাহাজের সঙ্গে সংযোগ হারিয়ে ফেলে। পরবর্তীতে গত ২২ জুন মহাসাগরের তলদেশে ব্যাপক তল্লাশির পর উদ্ধারকারীরা সাবমেরিনটির ধ্বংসাবশেষ পাওয়ার কথা জানান। কিন্তু সম্প্রতি গণমাধ্যম সূত্রে ওশানগেটের আবারও টাইটানিক দেখতে যাওয়ার বিজ্ঞাপন দেওয়ার দাবিতে একটি তথ্য ব্যাপকভাবে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে। তবে অনুসন্ধানে ইন্টারনেট আর্কাইভ অনুযায়ী উক্ত বিজ্ঞাপনটি টাইটান ধ্বংসের আগে থেকেই প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটে খুঁজে পাওয়া যায় এবং দূর্ঘটনার পর টাইটানিক দেখতে যাওয়ার জন্য ওশানগেট কর্তৃক পুনরায় বিজ্ঞাপন প্রকাশের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, পূর্বেও বিষয়টি ব্যাপকভাবে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে সেসময় এটি মিথ্যা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। 

এমিলিয়ানো মার্টিনেজ ২০২২ বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার অধিনায়ক ছিলেন না

সম্প্রতি, দেশের কতিপয় গণমাধ্যমে  আর্জেন্টিনার ফুটবল খেলোয়াড় এমিলিয়ানো মার্টিনেজকে বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক দাবিতে সংবাদ প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন যমুনা টিভি, ঢাকা ট্রিবিউন (১), ঢাকা ট্রিবিউন (২), বাংলা ট্রিবিউন, সমকাল, সারাবাংলা, ডেইলি শেয়ারবাজার

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, এমিলিয়ানো মার্টিনেজ নয় বরং ২০২২ বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ী দলটির অধিনায়ক ছিলেন লিওনেল মেসি।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে কি-ওয়ার্ড সার্চ করে যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ‘CNBC’ এ গত ১৯ ডিসেম্বর ২০২২ এ “Leo Messi used a ‘growth mindset’ to finally win his World Cup trophy—here’s what that looked like” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ফিফা বিশ্বকাপ ফাইনাল ২০২২ এর লিওনেল মেসির ছবি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot from ‘CNBC’ 

‘CNBC’ এর প্রকাশিত প্রতিবেদনের ছবিতে দেখা যায়, লিওনেল মেসি বাম হাতে আর্ম ব্যান্ড পড়েছেন। যেহেতু ফুটবল খেলায় অধিনায়করা তাদের হাতের কব্জির উপরে আর্ম ব্যান্ড পড়েন, তাই মেসির হাতে আর্ম ব্যান্ড দেখে বুঝা যায় তিনি ফিফা বিশ্বকাপ ফাইনাল ম্যাচে অধিনায়ক ছিলেন।

এ বিষয়ে আরো অনুসন্ধানে ব্রিটিশ গণমাধ্যম ‘BBC’ এর ওয়েবসাইটে ২০২২ সালের ১৭ ডিসেম্বরে “Lionel Messi: Inside Argentina captain’s quest for World Cup 2022 glory” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ফিফা ফুটবল বিশ্বকাপ – ২০২২ এ লিওনেল মেসি আর্জেন্টিনা ফুটবল টিমের অধিনায়ক থাকার তথ্য পাওয়া যায়।

Screenshot from ‘BBC’ 

এছাড়া, আর্জেন্টিনা ফুটবল দলের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ ‘AFA – Selección Argentina’ এ ২০২২ সালের ১৮ ডিসেম্বর ফিফা ফুটবল বিশ্বকাপ ফাইনালের দিন লিওনেল মেসিকে অধিনায়ক বলে সম্বোধন করে প্রকাশিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot from ‘Facebook’

মূলত, সম্প্রতি দেশের কতিপয় গণমাধ্যমে আর্জেন্টিনার ফুটবল দলের গোলকিপার এমিলিয়ানো মার্টিনেজকে অধিনায়ক দাবিতে সংবাদ প্রকাশ করা হয়। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ২০২২ সালের ফিফা বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা দলটির অধিনায়ক ছিলেন লিওনেল মেসি।

প্রসঙ্গত, পূর্বেও মার্টিনেজের বিষয়ে ভুল তথ্য ইন্টারনেটে প্রচার করার প্রেক্ষিতে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, আর্জেন্টিনার ফুটবল খেলোয়াড় এমিলিয়ানো মার্টিনেজকে বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক দাবিতে গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

‘বিগ বস’ মিনিটে ৪০০ কোটি মানুষ দেখার দাবিতে গণমাধ্যমে ভুল তথ্য

সম্প্রতি ‘মিনিটে ৪০০ কোটি মানুষ দেখছেন ‘বিগ বস’ শীর্ষক দাবিতে একটি তথ্য গণমাধ্যম সূত্রে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

গণমাধ্যমের ফেসবুক পেইজে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন- এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন- চ্যানেল আই, ঢাকা পোস্ট, চ্যানেল২৪, প্রতিদিনের সংবাদ, টাইম নিউজ বিডি, ভিন্ন বার্তা

ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন- হিন্দুস্তান টাইমস (বাংলা)

ইউটিউবে প্রচারিত এমন একটি ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, বলিউড অভিনেতা সালমান খানের সঞ্চালনায় পরিচালিত ‘বিগ বস: ওটিটি সিজন ২’ শোটি প্রথম দু’সপ্তাহে মিনিটে ৪০০ কোটি লোক দেখার দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সঠিক নয় বরং শোটি প্রথম দু’সপ্তাহে ৪০০ কোটি মিনিট দেখা হয়েছে। 

দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে কি-ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে ভারতীয় গণমাধ্যম ভারতীয় গণমাধ্যম India Times এ গত ৯ জুলাই ‘He’s A Hypocrite’, Fans React As Salman Khan Holds Cigarette While Hosting Bigg Boss OTT 2‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ‘বিগ বস: ওটিটি সিজন ২’ এর প্রথম দুই সপ্তাহে এটি ৪০০ কোটি মিনিট দেখা হয়েছে।

Screenshot: India Times

পাশাপাশি ভারতীয় বিনোদন ভিত্তিক ওয়েবসাইট Pink Villa তে ৮ জুলাই ‘Bigg Boss OTT 2: Salman Khan announces extension of this season; Will there be wild cards?‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকেও শোটি ৪০০ কোটি মিনিট ভিউ বা দেখার বিষয়ে তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Pink Villa

এ প্রতিবেদনগুলো থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, ‘বিগ বস: ওটিটি সিজন ২’ এর প্রথম দুই সপ্তাহে প্রতি মিনিটে ৪০০ কোটি মানুষ নয় বরং এই সময়ে এটি ৪০০ কোটি মিনিট দেখা হয়েছে।

এছাড়া Hindustan Times এর ইংরেজি সংস্করণে ‘Bigg Boss OTT 2: Salman Khan confirms two-weeks’ extension for show, says 400 crore minutes watched in 2 week‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে সালমান খানকে উদ্ধৃত করে গণমাধ্যমটি জানায়, ‘বিগ বস: ওটিটি সিজন ২’ এর সময়সীমা দুই সপ্তাহের জন্য বাড়ানো হলো। শোটি প্রথম দুই সপ্তাহে ৪০০ কোটি মিনিট দেখা হয়েছে। 

Screenshot: Hindustan Times

তবে গণমাধ্যমটির বাংলা সংস্করণে এই বিষয়টিকেই বিগ বস OTT 2-এর প্রথম দু’সপ্তাহে মিনিটে ৪০০ কোটি লোক দেখার দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

অপরদিকে রিউমর স্ক্যানারে অনুসন্ধানে শোটির সময় বাড়ানোর বিষয়ে সালমান খানের ঘোষণার ভিডিওটিও খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিওটি যাচাই করেও নিশ্চিত হওয়া যায়, সালমান খান ৪০০ কোটি মিনিট দেখার বিষয়টিই বলেছেন। ভিডিওটির একটি কপি রিউমর স্ক্যানারের সংগ্রহে আছে, কপিরাইট ইস্যুর কারণে ভিডিওটি সাইটে প্রকাশ করা যাচ্ছে না।

মূলত, সম্প্রতি বলিউড অভিনেতা সালমান খান তার সঞ্চালনায় পরিচালিত ‘বিগ বস: ওটিটি সিজন ২’ শোয়ের মেয়াদ আরও দুই সপ্তাহ বাড়ানোর ঘোষণা দেন এবং একই সময়ে তিনি জানান, শোটির প্রথম দুই সপ্তাহে ৪০০ কোটি মিনিট দেখা হয়েছে। তবে অনুসন্ধানে দেখা যায়, এই তথ্যটিকেই বিকৃত করে পরবর্তীতে ভারতীয় গণমাধ্যমসহ বাংলাদেশি একাধিক গণমাধ্যমে ‘বিগ বস: ওটিটি সিজন ২’ প্রতি মিনিটে ৪০০ কোটি মানুষ দেখেছেন দাবিতে সংবাদ প্রচার করা হচ্ছে। 

সুতরাং, ‘বিগ বস: ওটিটি সিজন ২’ প্রথম দুই সপ্তাহে প্রতি মিনিটে ৪০০ কোটি মানুষ দেখার দাবিতে প্রচারিত সংবাদটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র