সম্প্রতি, “ফেসবুক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ফেসবুকের কোনো পোস্টের কমেন্টে @[4:0] লিখলে সেটি যদি পরিবর্তন হয়ে ফেসবুক প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গের নাম প্রদর্শন করে তাহলে বুঝে নিতে হবে উক্ত ব্যক্তির অ্যাকাউন্ট কখনো হ্যাক হয়নি।” শীর্ষক দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ফেসবুক কর্তৃপক্ষের বক্তব্য দাবিতে প্রচার হয়ে আসা ফেসবুকের কোনো পোস্টের কমেন্টে @[4:0] লিখলে সেটি যদি পরিবর্তন হয়ে মার্ক জাকারবার্গের নাম প্রদর্শন করলে উক্ত ব্যক্তির অ্যাকাউন্ট কখনো হ্যাক হয়নি বুঝে নিতে হবে শীর্ষক দাবিটি সঠিক নয় বরং ফেসবুক কর্তৃপক্ষ এমন কোনো বক্তব্য দেয়নি। তাছাড়া, @[4:0] জাকারবার্গের আইডি নাম্বার যার সাথে অন্যান্য ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হ্যাকের সম্পর্ক নেই।
মূলত, গেল কয়েক বছর ধরেই ইন্টারনেটের বিভিন্ন মাধ্যমে দাবি করা হচ্ছে, ফেসবুক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ফেসবুকের কোনো পোস্টের কমেন্টে @[4:0] লিখলে সেটি যদি পরিবর্তন হয়ে ফেসবুক প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গের নাম প্রদর্শন করে তাহলে বুঝে নিতে হবে উক্ত ব্যক্তির অ্যাকাউন্ট কখনো হ্যাক হয়নি। কিন্তু রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, দাবিটি সঠিক নয়। ফেসবুক কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে এমন কোনো বক্তব্যই দেয়নি। তাছাড়া, @[4:0] জাকারবার্গের আইডি নাম্বার যার সাথে অন্যান্য ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হ্যাকের কোনো সম্পর্ক নেই। এমন নাম্বার ফেসবুকের সকল অ্যাকাউন্টেরই রয়েছে। এমনকি হ্যাক হওয়ার পর ফিরে পেয়েছে এমন একটি অ্যাকাউন্টের মাধ্যমেও বিষয়টি যাচাই করে উক্ত দাবিটি মিথ্যা বলে প্রমাণ পেয়েছে রিউমর স্ক্যানার।
উল্লেখ্য, পূর্বেও একই দাবিটি ইন্টারনেটে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়লে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল রিউমর স্ক্যানার।
সম্প্রতি, ‘অবরোধে গাড়ি ভাঙচুর, দুই ছাত্রলীগ কর্মী আটক’ শীর্ষক শিরোনামে গণমাধ্যমের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনের স্ক্রিনশটের আদলে দুই ব্যক্তির ছবি সম্বলিত একটি স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, অবরোধে গাড়ি ভাঙচুররের ঘটনায় দুই ছাত্রলীগ কর্মী আটক দাবিতে প্রচারিত ছবির দুই ব্যক্তি ছাত্রলীগ কর্মী নয় বরং এটি সম্প্রতি রাজশাহীতে অস্ত্র নিয়ে টিকটক ভিডিও বানানোর অভিযোগে আটককৃত দুই ব্যক্তির ছবি। প্রকৃতপক্ষে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে উক্ত ছবি যুক্ত করে গণমাধ্যমে ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনের স্ক্রিনশটের আদলে আলোচিত স্ক্রিনশটটি তৈরি করা হয়েছে।
অনুসন্ধানের শুরুতে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল যমুনা টিভির ওয়েবসাইটে গত ৮ নভেম্বর “দেশীয় অস্ত্র হাতে টিকটক ভিডিও ভাইরাল, আটক ২” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
উক্ত প্রতিবেদনের ফিচারে ব্যবহৃত ছবির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবির হবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।
Image Comparison: Rumor Scanner
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ৮ নভেম্বর রাজশাহীতে অস্ত্র নিয়ে টিকটক ভিডিও বানানোর কারণে দুই টিকটকারকে আটক করে পুলিশ। আটক হওয়া ব্যক্তিরা হচ্ছে রাজশাহীর তালাইমারি বাদুরতলা এলাকার পিচ্চি আসাদ ও কেদুরমোড় এলাকার সালাউদ্দিন সোহাগ।
এছাড়া একই ঘটনা নিয়ে মূলধারার সংবাদমাধ্যম ইনকিলাব ও জাগোনিউজ২৪ এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনেও একই ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।
অর্থাৎ, অস্ত্র নিয়ে টিকটক ভিডিও বানানোর কারণে পুলিশ কর্তৃক আটক দুই টিকটকার যুবকের ছবিকে অবরোধে গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগে দুই ছাত্রলীগ কর্মী আটক দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।
পাশাপাশি, মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে সাম্প্রতিক সময়ে বাস ভাঙচুরের ঘটনায় ছাত্রলীগের কাউকে আটক কিংবা গ্রেপ্তারের তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।
তবে, গত ৭ নভেম্বর গাজীপুরের শ্রীপুরে মহাসড়কে গাড়ি পোড়ানোর মামলায় আব্দুল্লাহ আল মামুন নামের এক ছাত্রলীগ কর্মীকে আসামি করা হয়েছে। এছাড়া আজ ১৫ নভেম্বর নাটোরে আটটি মশালসহ তাশরিক জামান রিফাত নামে এক ছাত্রলীগ কর্মীকে পুলিশ আটক করেছে বলে গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়।
মূলত, গত ৮ নভেম্বর অস্ত্র নিয়ে টিকটক ভিডিও বানানোর অভিযোগে রাজশাহী থেকে দুই টিকটকারকে আটক করে পুলিশ। সে সময় উক্ত ঘটনা নিয়ে মূলধারার একাধিক গণমাধ্যমে দুই টিকটকারের ছবিসহ সংবাদ প্রচারিত হয়। সম্প্রতি ফেসবুকে ঐ দুই ব্যক্তির ছবি প্রচার করে অবরোধে গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগে আটক দুই ছাত্রলীগ কর্মী বলে দাবি করা হয়েছে।
সুতরাং, অবরোধে গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় দুই ছাত্রলীগ কর্মী আটক হওয়ার দাবিটি মিথ্যা এবং উক্ত দাবিতে গণমাধ্যমের ওয়েবসাইটের আদলে প্রচারিত স্ক্রিনশটটি ভুয়া ও বানোয়াট।
সম্প্রতি, ক্রিকেটার সাব্বির রহমান এঞ্জেলো ম্যাথিউসের টাইমড আউট হওয়ার ঘটনায় “সাকিব ভাই যা করসে নিয়মের ভিতরে থেকেই করসে, উনি তো তাও দুই মিনিট সময় দিসে, আমি হইলে তো ওই কাইল্লা-রে শ্বাস নেওয়ারও সময় দিতাম না” শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ক্রিকেটার সাব্বির রহমান এঞ্জেলো ম্যাথিউসের টাইমড আউট হওয়ার ঘটনায় আলোচিত মন্তব্যটি করেননি বরং বরং ‘দেউলিয়া রাষ্ট্র’ নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে সার্কাজম হিসেবে এই মন্তব্যটি প্রথম প্রচার করা হয়; যা পরবর্তীতে বাস্তব দাবিতে ছড়িয়ে পড়ে।
সূত্রপাত
ফেসবুকের নিজস্ব মনিটরিং টুল ব্যবহার করে দেখা যায়, গত ১১ নভেম্বর বিকাল ৩ টা ৫৪ মিনিটে ‘Deuliya Rashtro- দেউলিয়া রাষ্ট্র’ নামক একটি ফেসবুক পেজে “সাকিব ভাই যা করসে নিয়মের ভিতরে থেকেই করসে, উনি তো তাও দুই মিনিট সময় দিসে, আমি হইলে তো ওই কাইল্লা-রে শ্বাস নেওয়ারও সময় দিতাম না- সাব্বির রহমান” শিরোনামে সম্ভাব্য প্রথম পোস্টটি (আর্কাইভ) করা হয়। ‘Deuliya Rashtro- দেউলিয়া রাষ্ট্র’ নামের ফেসবুক পেজের পোস্টটিতে এই প্রতিবেদন লেখার সময় অব্দি প্রায় ৭৮ হাজার মানুষ রিয়্যাক্ট করেছে, শেয়ার হয়েছে ৮৯৬ বার।
পরবর্তীতে পেজটি নিয়ে অনুসন্ধানে তাদের অ্যাবাউট সেকশন পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, পেজটি ‘Satire/Parody বা হাস্য রসাত্মক আধেয় বা কন্টেন্ট তৈরির উদ্দেশ্যে খোলা।
Indication By Rumor Scanner
উপরিউক্ত বিষয়গুলো পর্যালোচনা করলে এটা প্রতীয়মান হয় যে, আলোচিত পোস্টটি প্রথমে সার্কাজম বা হাস্যরসের উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছে।
পরবর্তীতে বাস্তব দাবিতে প্রচার
মজার উদ্দেশ্যে দেওয়া সাব্বির রহমানের মন্তব্য দাবিতে প্রচারিত উক্তিটি পরবর্তীতে ফেসবুকের বিভিন্ন পেজ এবং গ্রুপে বাস্তব দাবিতে ছড়িয়ে পড়ে।
এছাড়াও, গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্য কোনো সূত্রে এঞ্জেলো ম্যাথিউসের টাইমড আউট নিয়ে সাব্বির রহমানের এমন কোনো মন্তব্যের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।
মূলত, ২০২৩ ক্রিকেট বিশ্বকাপে গত ৬ নভেম্বর বাংলাদেশ বনাম শ্রীলঙ্কা ম্যাচে এঞ্জেলো ম্যাথিউস আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে টাইমড আউটের শিকার হলে ক্রিকেট মহলে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে, ‘Deuliya Rashtro – দেউলিয়া রাষ্ট্র’ নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে “সাকিব ভাই যা করসে নিয়মের ভিতরে থেকেই করসে, উনি তো তাও দুই মিনিট সময় দিসে, আমি হইলে তো ওই কাইল্লা-রে শ্বাস নেওয়ারও সময় দিতাম না” শীর্ষক বাংলাদেশের ক্রিকেটার সাব্বির রহমানের নামে সার্কাজম হিসেবে প্রচার করা হয়। পরবর্তীতে উক্ত মন্তব্যটি বাস্তব দাবিতে ফেসবুকের বিভিন্ন পেজ এবং গ্রুপে প্রচার করা হয়। প্রকৃতপক্ষে সাব্বির রহমান ম্যাথিউস প্রসঙ্গে আলোচিত মন্তব্যটি করেননি।
সুতরাং, ক্রিকেটার সাব্বির রহমান “সাকিব ভাই যা করসে নিয়মের ভিতরে থেকেই করসে, উনি তো তাও দুই মিনিট সময় দিসে, আমি হইলে তো ওই কাইল্লা-রে শ্বাস নেওয়ারও সময় দিতাম না” শীর্ষক দাবিতে একটি মন্তব্যকে সাব্বির রহমানের মন্তব্য দাবিতে ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
সম্প্রতি, ‘প্রতি রাত আমাকে বিছানায় ডাকতো জয় মুখ খুললো আ’লীগ মহিলা নেত্রী’ শীর্ষক থাম্বনেইলে এক মহিলার সাথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার পুত্র ও তাঁর তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের ছবি সম্বলিত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, লালবাগ থানার আওতাধীন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ২৫ নং ওয়ার্ডের রাবেয়া সুলতানা নামের কথিত আওয়ামী লীগ নেত্রী প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে অনৈতিক প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ আনেননি প্রকৃতপক্ষে, উক্ত নারী সংগঠনে পদ পেতে নেতাদের অনৈতিক প্রস্তাবে সাড়া দিতে হয় বলে একটি সাক্ষাৎকার দেন। যেখানে তিনি ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ২৫ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো: সুলতান আহম্মদ বিপুলের বিরুদ্ধে তার সাথে রিসোর্টে যাওয়ার শর্তে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কমিটিতে পদ প্রদানের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন।
অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ভিডিওটিতে সঞ্চালক দাবি করেন, আওয়ামী লীগের একজন মহিলা নেত্রী দলটির নেতাকর্মীদের গোপন তথ্য ফাঁস করে দিয়েছেন। তিনি জানান, নারী নেত্রীদের দলে পদোন্নতি পেতে হলে নেতাদের সাথে রাত কাটাতে হয়। এছাড়াও সঞ্চালক দাবি করেন, সজীব ওয়াজেদ জয়ের কিছু চঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস হয়েছে। তবে ভিডিওতো তিনি কোথাও দাবি করেননি যে উক্ত নেত্রীকে পদ পেতে জয় অনৈতিক প্রস্তাব দিয়েছেন।
আলোচিত ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, কথিত নেত্রী আওয়ামী লীগে নারী কর্মীদের পদ প্রাপ্তির ক্ষেত্রে নেতাদের অনৈতিক প্রস্তাবে সাড়া দিতে হয় বলে অভিযোগ তুলে এ বিষয় নিয়ে বেশকিছু কথা বলেন। এক পর্যায়ে তিনি তার অঞ্চল লালবাগ থানাধীন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ২৫ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো: সুলতান আহম্মদ বিপুলের বিরুদ্ধে তার সাথে রিসোর্টে যাওয়ার শর্তে তাকে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কমিটিতে পদ প্রদানের প্রস্তাবের অভিযোগ করেন। তবে ভিডিওটির কোথাও তাকে সজীব ওয়াজেদ জয়ের প্রসঙ্গে কোনো কথা বলে শোনা যায়নি। ভিডিওটির শেষাংশে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে সজীব ওয়াজেদ জয়ের নাম কোন যোগ্যতায় অর্ন্তভুক্ত করা হয়েছে এমন প্রশ্ন উত্থাপন করে তাজ হাশমী নামের একজন সোশাল মিডিয়া এক্টিভিস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বক্তব্য প্রদান করেছেন দাবিতে একটি ভিডিও দর্শকদের উদ্দেশ্যে দেখানো হয়। উক্ত ভিডিওটিতে তাজ হাশমীকে কথিত আওয়ামী লীগ নেত্রী এবং জয়কে নিয়ে কোনো কথা বলতে দেখা যায়নি।
উক্ত ভিডিওটি পর্যালোচনা করেও সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে আনা আলোচিত দাবিটির ব্যাপারেও তাকে কোনো কথা বলতে শোনা যায় না। তবে ভিডিওটির শেষাংশে কথিত এই নারীর নাম রাবেয়া সুলতানা বলে জানা যায়।
অর্থাৎ, কথিত এই আওয়ামী লীগ নেত্রীর সাথে সজীব ওয়াজেদ জয়ের কোনো সর্ম্পক নেই এবং জয়ের তাকে অনৈতিক প্রস্তাব দেওয়ার মতও কোনো ঘটনা ঘটেনি।
মূলত, গত ১১ নভেম্বর বর্তমান দেশ টিভি নামের একটি ফেসবুক পেজ ‘পদ পেতে হলে আ.লী’গ নেতার সাথে পদ্মা রিসোর্টে এক রাত ঘু’মানোর প্রস্তাব, যা বললেন বীর মুক্তিযোদ্ধার কন্যা!’ শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও তাদের পেজে প্রচার করে। উক্ত ভিডিওটিতে একজন নারীকে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে নারী কর্মীদের পদ প্রদানের ক্ষেত্রে অনৈতিক প্রস্তাব দেওয়ার বিষয়ে অভিযোগ করেন। উক্ত নারীর এই সাক্ষাৎকারের ভিডিওটি এরপরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। যার প্রেক্ষিতে সম্প্রতি, উক্ত ভিডিওর কিছু অংশ কাট করে তার সাথে একটি অনলাইন টক শোর ভিডিও যুক্ত করে ভিত্তিহীনভাবে সজীব ওয়াজেদ জয়কে জড়িয়ে ‘প্রতি রাত আমাকে বিছানায় ডাকতো জয় মুখ খুললো আ’লীগ মহিলা নেত্রী’ শীর্ষক থাম্বনেইলে একটি ভিডিও ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।
সুতরাং, ঢাকার ওয়ার্ড পর্যায়ের সুলতান আহম্মদ বিপুল নামের এক আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে পদ পেতে এক নারীর অনৈতিক প্রস্তাব পাওয়ার অভিযোগের ভিডিওর সাথে থাম্বনেইলে অপ্রাসঙ্গিকভাবে সজীব ওয়াজেদ জয়ের ছবি ও নাম ব্যবহার করে একটি ভিডিও ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।
সম্প্রতি, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে পুলিশের গান ভাইরাল’ শীর্ষক থাম্বনেইলে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক এবং ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম ইউটিউবে ব্যাপকভাবে ভাইরাল হয়েছে।
এ বিষয়ে ফেসবুকে প্রচারিত পাঁচটি ভাইরাল পোস্ট বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, এই প্রতিবেদন প্রকাশ অবধি ভিডিওটি প্রায় ৩ লক্ষ ৩ হাজার ৩ শত বার দেখা হয়েছে, শেয়ার করা হয়েছে প্রায় ৭ হাজার ৫ শত ২৫ বার। এছাড়া, এই পোস্টগুলোতে প্রায় ২৪ হাজার ৩ শত ২৭ টি পৃথক ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া দেখানো হয়েছে। ভাইরাল পোস্টগুলোর মন্তব্যঘর ঘুরে পোস্টটির দাবির প্রেক্ষিতে অধিকাংশ নেটিজেনকে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানাতে দেখা যায়।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে পুলিশের গান গাওয়ার দাবিটি সঠিক নয় বরং অধিক ভিউ পাবার আশায় চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার কয়েকটি ভিডিও ক্লিপ এবং ছবি যুক্ত করে ভিডিওটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করা হয়েছে।
অনুসন্ধানের শুরুতে ভিডিওটি পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, একজন পুলিশ সদস্য হ্যান্ডমাইক হাতে গান গাইছেন। গানের অডিও অংশে ‘’ডায়লোগের মাস্টার শেখ হাসিনা সরকার, কয় জনগনের ভোট চুরি করার কি দরকার’’ শীর্ষক একটি গান শোনা যায়।
উক্ত গানের ভিডিওটি থেকে কিছু স্থিরচিত্র নিয়ে রিভার্স সার্চের মাধ্যমে, “Student’s” নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ২০২২ সালের ০২ জানুয়ারিত ‘খোল করতাল বাজিয়ে পুলিশের গান’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও(আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot: YouTube
ভিডিওটিতে দেখা যায়, একজন পুলিশ সদস্য হ্যান্ডমাইক হাতে “কইলজার ভিতর গাঁথি রাইক্কুম তোঁয়ারে” শিরোনামের একটি গান গাইছেন এবং উপস্থিত বাকি সদস্যরা হাততালির মাধ্যমে সেটিকে উপভোগ করেছেন।
এই ভিডিওটির সাথে প্রধানমন্ত্রী’র বিরুদ্ধে পুলিশের গান দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি’র ব্যাকগ্রাউন্ড পোশাক এবং অন্যান্য বিষয়ের হুবহু মিল পাওয়া যায়।
Video Comparison by Rumor Scanner
পরবর্তীতে আলোচিত ভিডিওতে থাকা অডিও অংশের কথাগুলো ইউটিউবে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ”Bogura Fans’ নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ২০২২ সালের ০৭ মার্চে “ডায়লগ এর মাস্টার শেখ হাসিনার সরকার নুর বাহিনীর নতুন গান ভোটাধিকার নিয়ে!” শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও(আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়।
উক্ত ভিডিওটিতে দেখা যায়, রাজনৈতিক সংগঠন ‘গণ অধিকার পরিষদ’ এর কোনো এক সমাবেশে এক ব্যক্তি মাইকে “ডায়লগের মাস্টার শেখ হাসিনা সরকার” শীর্ষক শিরোনামের একটি গান গেয়ে শোনাচ্ছেন।
অর্থাৎ, উক্ত গানের অডিও অংশের সাথে পুলিশের অন্য একটি গান গাওয়ার ভিডিওটি যুক্ত করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।
এছাড়া ভিডিওটির পরবর্তী অংশে অপর এক পুলিশ সদস্যকে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বক্তব্য দিতে দেখা যায়। তবে সেখানে কোনো সরকার বিরোধী বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
তাছাড়া, ভিডিওটির থাম্বনেইলে উল্লেখিত তথ্যের সাথে বিস্তারিত অংশের প্রাসঙ্গিকতা পাওয়া যায়নি। ভিডিওটির শিরোনামে সেনাবাহিনীর কথা উল্লেখ করা হলেও বিস্তারিত অংশে সেনাবাহিনীর সদস্যের পুরোনো কিছু ছবি ছাড়া এবিষয়ে কিছুই বলা হয়নি।
অর্থাৎ, উপরোক্ত বিষয়গুলো পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, আলোচিত ভিডিওটিতে প্রচারিত বিষয়গুলো সঠিক নয়।
মূলত, সাম্প্রতিক সময়ে ফেসবুকে এবং ইউটিউবে ‘প্রধানমন্ত্রী’র বিরুদ্ধে পুলিশের গান ভাইরাল’ শীর্ষক থাম্বনেইলে একটি ভিডিও প্রচারের প্রেক্ষিতে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, এটি ভিন্ন ভিন্ন কয়েকটি ঘটনার ভিডিও ক্লিপ এবং ছবি নিয়ে তৈরি একটি ভিডিও। ভিডিওটিতে প্রধানমন্ত্রী’র বিরুদ্ধে পুলিশের গান দাবিতে প্রচারিত ভিডিও ক্লিপটির বিষয়ে অনুসন্ধানে দেখা যায়, গণ অধিকার পরিষদের এক সদস্যের গাওয়া একটি গান (ডায়লগের মাস্টার শেখ হাসিনা সরকার) ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় পুলিশ সদস্যের কণ্ঠে গাওয়া ভিন্ন একটি গানের(কইলজার ভিতর গাঁথি রাইক্কুম তোঁয়ারে) সাথে সংযুক্ত করে এটি ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, পূর্বেও পুলিশের কণ্ঠে সরকার বিরোধী গান দাবিতে প্রচারিত ভিডিও নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।
সুতরাং, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে পুলিশের গান দাবিতে ভাইরাল ভিডিওটি এডিটেড বা বিকৃত।
সম্প্রতি, ‘প্রিয় দেশবাসী, আপনার আজকের একটু কষ্ট, একটু ত্যাগ হয়তো গড়ে দিতে পারে আগামীর জন্য একটি জুয়া নির্ভর অর্থনীতির বাংলাদেশ’ শীর্ষক মন্তব্যকে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বক্তব্য দাবিতে একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশবাসীকে জুয়া নির্ভর অর্থনীতির বাংলাদেশ গড়ার জন্য আহ্বান জানিয়ে কোনো বক্তব্য দেননি বরং তারেক রহমানের ভিন্ন একটি বক্তব্য নিয়ে বিএনপি’র অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে প্রচারিত ফটোকার্ডের তথ্য বিকৃত করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।
সূত্রপাত
অনুসন্ধানের শুরুতে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে Bangla Politix নামের একটি ফেসবুক পেজে গত ১১ নভেম্বর আলোচিত ফটোকার্ডটি নিয়ে প্রচারিত প্রথম পোস্ট (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot: Bangla Politix Facebook
পেজটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এটি একটি কমেডি পেজ। বিভিন্ন সময়ে এই পেজটি থেকে কমেডিধর্মী বিভিন্ন পোস্ট প্রচার করতে দেখা যায়।
Screenshot: Facebook
অর্থাৎ, এই পেজটি থেকে আলোচিত ফটোকার্ডটি প্রথমে প্রচার হয় এবং পরবর্তীতে তা আসল ভেবে বিভিন্ন জায়গায় তা ছড়িয়ে পড়ে।
এবিষয়ে অনুসন্ধানে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি’র ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে গত ১০ নভেম্বর তারেক রহমানের বক্তব্য সম্পর্কিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot: BNP Facebook Page
পোস্টটিতে তারেক রহমানের ছবি যুক্ত একটি ফটোকার্ডে তার বক্তব্য হিসেবে উল্লেখ করা হয়, ‘প্রিয় দেশবাসী, আপনার আজকের একটু কষ্ট, একটু ত্যাগ হয়তো গড়ে দিতে পারে আগামীর জন্য নিরাপদ একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ।’
এই ফটোকার্ডটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডটির মিল পাওয়া যায়।
Photocard Comparison by Rumor Scanner
অর্থাৎ, উক্ত ফটোকার্ডটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে সেখানে আগামীর জন্য নিরাপদ একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ’ এর পরিবর্তে আগামীর জন্য একটি জুয়া নির্ভর অর্থনীতির বাংলাদেশ’ শীর্ষক তথ্য যুক্ত করে তৈরিপ্রচার করা হয়েছে।
পরবর্তীতে Tarique Rahman এর ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে গত ০৯ নভেম্বর প্রকাশিত তার বক্তব্যের একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot: Tarique Rahman Facebook
ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে সেখানকার বক্তব্যের ১ মিনিট ১০ সেকেন্ড থেকে ১ মিনিট ২৫ সেকেন্ড অংশ পর্যন্ত বিএনপি’র ভেরিফাইড পেজে প্রচারিত ফটোকার্ডের ব্যানারে উল্লেখিত তারেক রহমানের বক্তব্যের হুবহু মিল পাওয়া যায়।
অর্থাৎ, তারেক রহমানের উক্ত বক্তব্যের কিছু অংশ বিএনপি’র ভেরিফাইড পেজে ফটোকার্ডের মাধ্যমে প্রচার করা হয়।
মূলত, গত ০৯ নভেম্বর বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তার ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে এসে এক ভিডিও বার্তায় ‘প্রিয় দেশবাসী, আপনার আজকের একটু কষ্ট, একটু ত্যাগ হয়তো গড়ে দিতে পারে আগামীর জন্য নিরাপদ একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ’’ শীর্ষক বক্তব্য প্রদান করেন। এরপর উক্ত বক্তব্যটি নিয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপি’’র ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে তারেক রহমানের ছবি সম্বলিত একটি ফটোকার্ড প্রচার করা হয়। পরবর্তীতে উক্ত ফটোকার্ডটিতেটিতে উল্লেখিত তারেক রহমানের বক্তব্যকে বিকৃত করে সেখানে ‘আগামীর জন্য একটি জুয়া নির্ভর অর্থনীতির বাংলাদেশ’ শীর্ষক বাক্য যুক্ত করে তৈরি ভুয়া ফটোকার্ডের মাধ্যমে আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, পূর্বেও বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়ে বিভিন্ন ভুল তথ্য প্রচারের প্রেক্ষিতে একাধিক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কয়েকটি প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
সুতরাং, বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান জুয়া নির্ভর অর্থনীতির বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা এবং উক্ত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডটি এডিটেড বা বিকৃত।
বাংলাদেশের আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি “এবার সেনাবাহিনী পাঠাচ্ছে জাতিসংঘ আর রক্ষা নাই,ফেঁসে গেলো প্রধানমন্ত্রী” শীর্ষক থাম্বনেইলে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, জাতিসংঘের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সেনাবাহিনী পাঠানোর কোনো ঘটনা ঘটেনি বরং ভিন্ন ভিন্ন কয়েকটি ঘটনার ভিডিও সম্পাদনার মাধ্যমে চটকদার থাম্বনেইল ব্যবহার করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করে দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।
দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে শুরুতেই জাতিসংঘের ওয়েবসাইট এবং ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে অনুসন্ধান করে রিউমর স্ক্যানার টিম। তবে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে সেনাবাহিনী পাঠানো সংক্রান্ত কোনো তথ্য তাদের ওয়েবসাইটে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
এছাড়া, জাতীয় কিংবা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।
পরবর্তীতে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। গত ১৩ নভেম্বর Wow 10 নামক একটি ফেসবুক পেজ থেকে আলোচিত ভিডিওটি প্রচার করা হয়।
Source: Facebook
ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এটি ভিন্ন ভিন্ন কয়েকটি ঘটনার ছবি ও ভিডিও নিয়ে তৈরি একটি ভিডিও প্রতিবেদন। ভিডিওটির কোথাও জাতিসংঘ সেনাবাহিনী পাঠাচ্ছে শীর্ষক কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি। তাছাড়া ভিডিওটির বিস্তারিত সংবাদপাঠের অংশেও এমন তথ্য উল্লেখ করা হয়নি।
ভিডিওটি’র শুরুতে দুইটি সংবাদ প্রতিবেদন এবং একটি ভিডিওর খন্ডাংশ দেখানো হয় এবং দাবিটি প্রসঙ্গে ভিডিওটির প্রতিবেদক বলেন,’বাংলাদেশের নির্বাচনকে অবাদ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে বাংলাদেশে শান্তিরক্ষা বাহিনী পাঠাতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। এজন্য যুক্তরাষ্ট্রের ১৪ জন সদস্য জাতিসংঘে চিঠি দিয়েছে। এ সম্পর্কে বিস্তারিত থাকছে ভিডিওর পরবর্তী অংশে…।’
অর্থাৎ, ভিডিওটির থাম্বনেইলে উল্লেখিত তথ্যের সাথে ভিডিওটি’র বিস্তারিত অংশের মিল পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে ভিডিওটিতে আলোচিত দাবিটি প্রসঙ্গে তিনটি ভিডিও দেখানো হয়৷
প্রথম ভিডিও যাচাই
আলোচিত ভিডিওটিতে উল্লেখিত Bangla Vision এর লোগোর সূত্র ধরে অনুসন্ধানে গত ১২ নভেম্বর BVNEWS24 নামক ইউটিউব চ্যানেলে “জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলোকে বাংলাদেশের কাছে জবাবদিহিতা চাইতে বলেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত অনুরূপ ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিওটির খণ্ডাংশ আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির সাথে যুক্ত করা হয়েছে।
Video Comparison : Rumor Scanner
ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে জানা যায়, মানবাধিকার লঙ্ঘন ও মানবাধিকার পরিস্থিতির দ্রুত অবনতির জন্য জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের কাছে জবাবদিহি চাইতে বলেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। কিন্তু প্রতিবেদনের কোথাও আলোচিত দাবিটি প্রসঙ্গে কোনো তথ্যের উল্লেখ পাওয়া যায়নি।
অর্থাৎ কোনো প্রকার প্রাসঙ্গিকতা ছাড়াই উক্ত ভিডিওটিকে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির সাথে যুক্ত করা হয়েছে।
দ্বিতীয় ভিডিও যাচাই
দ্বিতীয় ভিডিওটির অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক কিওয়ার্ড সার্চ পদ্ধতির মাধ্যমে গত ২৮ জুলাই Jamuna Television এর ইউটিউব চ্যানেলে “বাংলাদেশের নির্বাচনে শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েনের আহ্বান। US BD।EU। Jamuna TV” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত অনুরূপ ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়।
Video Comparison : Rumor Scanner
উক্ত ভিডিও প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বাংলাদেশে অবাদ-সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা বাহিনী মোতায়েনের আহ্বান জানালেন যুক্তরাষ্ট্রের ১৪ পার্লামেন্টের সদস্য।
ভিডিও প্রতিবেদনের কোথাও জাতিসংঘের পক্ষ থেকে সেনাবাহিনী পাঠানোর বিষয়ে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।
তৃতীয় ভিডিও যাচাই
ভিডিওটি নিয়ে অনুসন্ধানে ভিডিওটির পেছনে থাকা UK Kashba TV News লিখার সূত্র ধরে অনুসন্ধানে গত ১২ নভেম্বর UK Kashba TV নামক ইউটিউব চ্যানেলে “বাংলাদেশ স*র*কা*র*কে আন্তর্জাতিক আ*দা*ল*তে-বি*চা*রে*র দাবী॥Syed Mashuk॥UK Kasba TV” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিওটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।
Video Comparison : Rumor Scanner
ভিডিওটি বিশ্লেষণ করে দেখা যায় ভিডিওতে চ্যানেলটির উপস্থাপক জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোতে গত ১২ নভেম্বর “মানবাধিকার লঙ্ঘন: বাংলাদেশ সরকারের কাছে জবাবদিহি চাইতে বলল অ্যামনেস্টি” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পড়ে শোনান। তবে উক্ত প্রতিবেদনের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটিতে থাকা তথ্যের কোনো মিল খুঁজে পাওয়া যায়নি।
উপরিউক্ত ভিডিওগুলো পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে এটি স্পষ্ট যে কোনো প্রকার প্রাসঙ্গিকতা ছাড়াই আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটিতে সম্পাদনার মাধ্যমে এই ভিডিওগুলো যুক্ত করা হয়েছে।
মূলত, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে “এবার সেনাবাহিনী পাঠাচ্ছে জাতিসংঘ আর রক্ষা নাই,ফেঁসে গেলো প্রধানমন্ত্রী” শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিম অনুসন্ধানে দেখেছে যে জাতিসংঘ কর্তৃক সেনাবাহিনী পাঠানো বিষয়ক কোনো ঘটনা ঘটেনি বরং অধিকতর ভিউ পাবার আশায় চটকদার থাম্বনেইল ও শিরোনাম ব্যবহার করে কোনোপ্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে।এছাড়া জাতীয় কিংবা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।
সুতরাং, জাতিসংঘ কর্তৃক সেনাবাহিনী পাঠানোর দাবিতে একটি ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
সম্প্রতি, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ইতালি, অস্ট্রেলিয়াসহ প্রায় ১২ টি দেশ বাংলাদেশ থেকে পোশাক রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে শীর্ষক একটি দাবি ইন্টারনেটে প্রচার হতে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার টিম।
একই দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ইতালি, অস্ট্রেলিয়াসহ প্রায় ১২ টি দেশ বাংলাদেশ থেকে পোশাক রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে শীর্ষক দাবিটি সঠিক নয় বরং জাতীয় দৈনিক আজকের পত্রিকা’র খবরের সূত্রে স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি বিবেচনায় কিছু দেশ কর্তৃক তাদের বাজারে থাকা সংশ্লিষ্ট পোশাক প্রত্যাহারের ঘটনাকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। তাছাড়া, আজকের পত্রিকা চলতি বছর পোশাক প্রত্যাহারের দাবিতে তিনটি দেশের নাম উল্লেখ করেছে যারা এই তালিকাতেই নেই৷
এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে এ সংক্রান্ত পোস্টগুলোতে একটি সংবাদকে সূত্র হিসেবে দেখানো হয়েছে। জাতীয় দৈনিক ‘আজকের পত্রিকা’র প্রিন্ট সংস্করণে প্রকাশিত সংবাদটির শিরোনাম ছিল, “১২ দেশে বাংলাদেশের পোশাক প্রত্যাহার।”
Screenshot: Facebook
পত্রিকাটির প্রিন্ট সংস্করণে গত ০৫ নভেম্বর লিড নিউজ হিসেবে ছাপা (আর্কাইভ) হয় সংবাদটি৷
Screenshot: Ajker Patrika
রিউমর স্ক্যানার টিম পুরো প্রতিবেদনটি পড়ে দেখেছে, যার সারমর্ম দাঁড়াচ্ছে, ‘স্বাস্থ্যঝুঁকির’ অজুহাতে চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্রসহ ১২টি দেশের বাজার থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে বাংলাদেশের কারখানায় তৈরি হওয়া নানা ব্র্যান্ডের পোশাক। সর্বশেষ কানাডা সরকার বাংলাদেশের কারখানায় তৈরি হওয়া জর্জ ব্র্যান্ডের ২ লাখ ১৬ হাজারের বেশি পোশাক ক্রেতাদের কাছ থেকে ফেরত নিতে বলেছে বৈশ্বিক চেইনশপ ওয়ালমার্টকে।
গত ৩ অক্টোবর কানাডা সরকার সে দেশের সরকারি ওয়েবসাইটে এ ব্যাপারে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। বিজ্ঞপ্তিতে এরই মধ্যে বিক্রি হয়ে যাওয়া জর্জ ব্র্যান্ডের এসব পোশাক ওয়ালমার্টে ফেরত দেওয়ার জন্য গ্রাহকদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
ওয়ালমার্টে বিক্রির জন্য জর্জ ব্র্যান্ডের এই পোশাকগুলো তৈরি হয়েছে গাজীপুরের ইউনিক ডিজাইনার্স লিমিটেড নামের একটি কারখানায়।
পোশাকগুলোর ত্রুটি নিয়ে ইউনিক ডিজাইনার্স লিমিটেডের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল আজকের পত্রিকা। প্রতিষ্ঠানটির মানবসম্পদ বিভাগের ব্যবস্থাপক মিজানুর রহমান বলছেন, ‘কানাডায় ওয়ালমার্টকে সরবরাহের জন্য সিঙ্গাপুরভিত্তিক বায়িং হাউস পিডিএস-ফারইস্ট লিমিটেড আমাদের কাছে যে মান ও গুণের পণ্য চেয়েছিল, আমরা তাদের সেই মানের পণ্য সরবরাহ করেছি। এখানে যদি কোনো সমস্যা হয়ে থাকে, সেটি পিডিএস থাকতে পারে, এখানে আমাদের কোনো দায় নেই।’
বিশ্বের ১০০টির বেশি দেশে অর্থনৈতিক ও আর্থসামাজিক নীতি সহায়তা প্রদান করা সংস্থা অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (ওইসিডি) তথ্যমতে, কানাডা ছাড়াও চলতি ২০২৩ সালে ১১টি দেশের বাজার থেকে বাংলাদেশের কারখানায় তৈরি হওয়া পোশাক উঠিয়ে নিতে বাধ্য করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো।
ওইসিডির তথ্যের বরাত দিয়ে আজকের পত্রিকা লিখেছে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশি তৈরি পোশাকের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ এনেছে, সেগুলোর মধ্যে আছে পোশাক পরার কারণে শ্বাসরোধ ও আঘাত পাওয়ার আশঙ্কা, ঢিলেঢালা হওয়ার কারণে আগুনের সংস্পর্শে আসার ঝুঁকি, পোশাকে অতিমাত্রায় রাসায়নিক পদার্থ থাকা, আগুন প্রতিরোধী মান নিশ্চিত না হওয়া প্রভৃতি।
আজকের পত্রিকা’র ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনটি পড়ুন এখানে। যদিও ওয়েবসাইট থেকে প্রতিবেদনটি ইতোমধ্যে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
আজকের পত্রিকা এবং এ সংক্রান্ত অন্য প্রতিবেদনগুলো কয়েকটি দেশ বাংলাদেশের তৈরি পোশাক প্রত্যাহারের বিষয়টি তুলে ধরলেও বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি বন্ধ করা হয়েছে শীর্ষক কোনো তথ্য উল্লেখ পাওয়া যায়নি প্রতিবেদনগুলোতে।
রিউমর স্ক্যানার টিম পরবর্তীতে আজকের পত্রিকা’র প্রতিবেদনে উল্লিখিত এ সংক্রান্ত তথ্যগুলো যাচাইয়ের সিদ্ধান্ত নেয়।
গত ৩ অক্টোবর কানাডা সরকার সে দেশের সরকারি ওয়েবসাইটে এ ব্যাপারে যে বিজ্ঞপ্তিটি প্রকাশ করেছিল তাতে আজকের পত্রিকা’র উল্লিখিত তথ্যগুলোই উল্লেখ পাওয়া যাচ্ছে। বলা হচ্ছে, এসব পোশাকের ব্যাপারে কানাডার স্বাস্থ্য বিভাগ তাদের ওয়েবসাইটে বলেছে, জর্জ ব্র্যান্ডের রাতে পরার পোশাকের জিপারের বর্ধিতাংশ ভেঙে যেতে পারে এবং পায়ের ও গলার গ্রিপ বারবার ধোয়ার ফলে চেপে যেতে পারে, যা ওই পোশাক পরা ব্যক্তির দম বন্ধ হওয়ার পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে।
তবে বিজ্ঞপ্তিতে এও উল্লেখ রয়েছে, গেল ২১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পোশাকগুলোর বিষয়ে গ্রাহক পর্যায় থেকে কোনো অভিযোগ পায়নি কোম্পানি। এই তথ্য অবশ্য আজকের পত্রিকা উল্লেখ করেনি।
বিজিএমইএ’র সভাপতি ফারুক হাসান বলছেন, অভিযুক্ত পোশাকগুলো ২০২২ সালের প্রথম দিকে পাঠানো হয়েছিল। সে বছরের নভেম্বর থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত পোশাকগুলো বিক্রি হয়েছে, যা কানাডা সরকারের বিজ্ঞপ্তিতেও উল্লেখ রয়েছে।
বিজিএমইএ’র বরাত দিয়ে বিবিসি বাংলা জানাচ্ছে, এই পোশাকগুলো দামও মিটিয়ে দিয়েছে ব্র্যান্ড কোম্পানিগুলো।
স্লিপারগুলো প্রস্তুত করেছে বাংলাদেশের ইউনিক ডিজাইনার্স লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ ফরিদ আহমেদ বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, “ওয়ালমার্ট আমাদের অর্ডার দেয়া বন্ধ করেনি। আমাদের কারখানায় উৎপাদন চলছে। তবে এবার তারা আমাদের ভিন্ন রকম জিপার লাগাতে বলছে, আমরা সেটাই করছি।”
বিজিএমইএ বলছে, ক্রেতারা অর্ডার দেয়ার সময় পণ্যের যাবতীয় বিবরণ দিয়ে থাকে এবং সেই অনুযায়ী পণ্য বানানো হয়। এরপর নমুনা পাঠানো হলে সেটির অনুমোদনের পর মালামাল শিপমেন্ট করা হয়। স্যাম্পল অনুযায়ী পণ্য না পাঠানো হলে অর্ডারই বাতিল হয়ে যেতে পারে। ফলে এক্ষেত্রে বাংলাদেশি কারখানাগুলোর কোন দায় নেই।
তাদের দাবি, বাংলাদেশ থেকে যখন বিদেশে পণ্য যায়, তখন সেটি সব ধরনের মান উত্তীর্ণ হয়ে ক্রেতাদের চূড়ান্ত অনুমোদন শেষেই পাঠানো হয়।
অর্থাৎ, কানাডায় বাংলাদেশের তৈরি যেসব পোশাক প্রত্যাহার হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে, তাতে বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কারখানার কোনো দায় নেই। এসব পোশাকের বিষয়ে কোনো ক্রেতা অভিযোগও করেনি। উপরন্তু পোশাকের দামও মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশের কারখানাকে৷
ওইসিডির ওয়েবসাইটে ফিল্টারিং সার্চের মাধ্যমে জানা যাচ্ছে, এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া পর্যন্ত চলতি বছর ১০ টি দেশ থেকে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক প্রত্যাহারের ঘটনা ঘটেছে। এই তালিকায় রয়েছে স্লোভাকিয়া, লিথুনিয়া (১, ২), অস্ট্রেলিয়া, বুলগেরিয়া, ইতালি (১, ২), অস্ট্রিয়া, যুক্তরাষ্ট্র এবং সাইপ্রাস। এর বিপরীতে একই সূত্রের বরাতে আজকের পত্রিকা যে ১২ টি দেশের নাম উল্লেখ করেছে তারা হলো স্লোভাকিয়া, লিথুয়ানিয়া, অস্ট্রেলিয়া, বুলগেরিয়া, ইতালি, অস্ট্রিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, সাইপ্রাস, কানাডা, পোল্যান্ড, স্লোভেনিয়া, এস্তোনিয়া। কিন্তু ওইসিডির তালিকায় কানাডা, পোল্যান্ড, এস্তোনিয়া, স্লোভেনিয়া নেই যা আজকের পত্রিকা উল্লেখ করেছে। তবে কানাডার সরকারি ওয়েবসাইটে পোশাক প্রত্যাহার সংক্রান্ত তথ্য উপরেই উল্লেখ করেছি আমরা। এর বাইরে বাকি দেশগুলোর মধ্যে পোল্যান্ডের নাম ২০২১ সালের তালিকায় উল্লেখ পাওয়া যায়।
অর্থাৎ, আজকের পত্রিকা চলতি বছর পোশাক প্রত্যাহারের দাবিতে তিনটি দেশের নাম উল্লেখ করেছে যারা এই তালিকাতেই নেই৷
তাছাড়া, ওইসিডির চলতি বছরের তালিকায় যে ১০ টি দেশের নাম উল্লেখ রয়েছে এদের ক্ষেত্রে কানাডার মতোই ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কারখানার কোনো দায় নেই। এসব পোশাকের বিষয়ে কোনো ক্রেতা অভিযোগও করেনি।
ওইসিডির তথ্য-উপাত্তের বরাতে আজকের পত্রিকা ২০২২ সালে এই রকম ঘটনা চারবার এবং ২০২১ সালে পাঁচবার ঘটার বিষয়ে উল্লেখ করেছে। ওইসিডির ওয়েবসাইট ঘেঁটে বিষয়টির সত্যতা মিলেছে।
এই ঘটনা যে একেবারেই নতুন বা বাংলাদেশের সাথেই ঘটছে এমনও নয়। উন্নত দেশগুলোতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা নানা কারণে অনেক সময় বিভিন্ন পোশাক ও পণ্য বাজার থেকে প্রত্যাহার করে নেয়ার নির্দেশ দিয়ে থাকে। অতীতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বাজারে বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা পোশাক, প্রসাধনী পণ্য বাজার থেকে তুলে নেয়ার উদাহরণ হয়েছে। ওইসিডির ওয়েবসাইটে বিভিন্ন দেশের সাথে ঘটা এমন ঘটনার উল্লেখ রয়েছে।
মূলত, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ইতালি, অস্ট্রেলিয়াসহ প্রায় ১২ টি দেশ বাংলাদেশ থেকে পোশাক রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে শীর্ষক একটি দাবি জাতীয় দৈনিক আজকের পত্রিকা’র বরাতে ইন্টারনেটে প্রচার হতে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। কিন্তু রিউমর স্ক্যানার টিম অনুসন্ধানে দেখেছে, আজকের পত্রিকার এ সংক্রান্ত সংবাদ বা অন্য কোনো গণমাধ্যমে পোশাক রপ্তানি বন্ধ হওয়ার বিষয়ে কোনো তথ্য উল্লেখ নেই। পণ্য প্রত্যাহার করার গ্লোবাল প্লাটফর্ম হিসেবে পরিচিত অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো–অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ওইসিডি) জানাচ্ছে, স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি বিবেচনায় চলতি বছর ১০ টি দেশ কর্তৃক তাদের বাজারে থাকা সংশ্লিষ্ট পোশাক প্রত্যাহার করেছে। এর বাইরে কানাডা সরকারও তাদের দেশে এমন ঘটনা ঘটার বিষয়ে জানিয়েছে। কিন্তু আজকের পত্রিকা চলতি বছর পোশাক প্রত্যাহারের দাবিতে এই তালিকার বাইরেও আরও তিনটি দেশের নাম উল্লেখ করেছে যারা এই তালিকাতেই নেই৷ তাছাড়া, এসব পোশাক রপ্তানি পরবর্তী সময়ে বাজার থেকে প্রত্যাহার হওয়ায় সংশ্লিষ্ট পোশাক কারখানার এ ঘটনার জন্য দায় নেই এবং কারখানাতে সংশ্লিষ্ট দেশের পোশাক তৈরির কার্যাদেশও বন্ধ হয়নি বলে জানিয়েছে বিজিএমইএ। এমনকি এসব পোশাকের বিষয়ে কোনো ক্রেতা অভিযোগও করেনি। বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশ থেকে পাঠানো কিছু পোশাকে’ স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি থাকায় কেবল সেগুলোই বাজার থেকে প্রত্যাহার করে নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
সুতরাং, স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি থাকায় বাংলাদেশের রপ্তানি করা কিছু পোশাক কিছু দেশের বাজার থেকে প্রত্যাহারের ঘটনাকে ১২ টি দেশ বাংলাদেশ থেকে পোশাক রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে শীর্ষক দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।
সম্প্রতি, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ঘোষণা রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনের, তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে যা বলল আমেরিকা– শীর্ষক শিরোনাম এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার দিতে বলল আমেরিকা, রাজি হয়ে একি বলল রাষ্ট্রপতি– শীর্ষক থাম্বনেইলে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।
ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের আগামী সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে দিতে বলেনি এবং রাষ্ট্রপতি মো: সাহাবুদ্দিন তত্বাবধায়ক সরকার গঠনে রাজি হয়ে কোনো মন্তব্য করেননি বরং কোনো প্রকার গ্রহণযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই অধিক ভিউ পাওয়ার আশায় ভিন্ন কয়েকটি ভিডিও ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে উক্ত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।
আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, কালবেলা’র লোগো সম্বলিত একটি ভিডিও সংবাদ প্রতিবেদন রয়েছে।
ভিডিও পর্যবেক্ষণ করে জানা যায়, গত ৯ নভেম্বর বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যু নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের উপপ্রধান মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেলের প্রেস ব্রিফিং নিয়ে করা প্রতিবেদন এটি।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যু নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের উপপ্রধান মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল বলেন, বাংলাদেশে কোনো নির্দিষ্ট সরকার, রাজনৈতিক দল বা নির্দিষ্ট কোনো প্রার্থীকে সমর্থন করে না যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্র চায় একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন, যা বাংলাদেশের মানুষের ইচ্ছাকে সম্মান করবে।
বাংলাদেশে কোনো ধরনের অনির্বাচিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন করে কি না? সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের উত্তরে বেদান্ত বলেন, নিশ্চিত যে, আমি গতকাল বা তার আগের দিন বা তার আগের দিন এই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আপনি অতীতেও আমাদের বলতে শুনেছেন যে, আমরা কোনো দেশে কোনো নির্দিষ্ট সরকার, রাজনৈতিক দল বা কোনো নির্দিষ্ট প্রার্থীকে সমর্থন করি না এবং সে ক্ষেত্রে যেখানে নির্বাচন চলছে সেখানে আমাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলো- এই নির্বাচনগুলো অবাধ ও সুষ্ঠু উপায়ে অনুষ্ঠিত হবে যাতে দেশের জনগণের ইচ্ছাকে সম্মান করা হবে।’
এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দেওয়ার দাবিটির সূত্রের খোঁজ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। তবে অনুসন্ধানে দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে বলেছে এমন কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।
বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের ওয়েবসাইটেও যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে বলেছে এমন কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।
তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে গত ৬ নভেম্বরে “Department Press Briefing – November 6, 2023” শীর্ষক প্রকাশিত প্রেস ব্রিফিং শিরোনামে প্রকাশিত প্রেস ব্রিফিং এ মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেলের বক্তব্য খুঁজে পাওয়া যায়।
বেদান্ত প্যাটেলকে একজন সাংবাদিক বাংলাদেশের সমসাময়িক রাজনৈতিক অবস্থা এবং এই মূহুর্তে যুক্তরাষ্ট্র কি বাংলাদেশের জনগণের পাশে থাকবে কিনা এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন আয়োজনে যুক্তরাষ্ট্রের ইচ্ছা আছে কিনা এমন প্রশ্ন করেন।
প্রশ্নের জবাবে বেদান্ত প্যাটেল বলেন ‘এটা মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের কোনো রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করে না। এটি আমরা আগেও বলেছি, আপনার বন্ধুর প্রশ্নের জবাবে আমরা এটি পুনরুল্লেখ করেছি। একটি দলের বিপরীতে আমরা আলাদা করে কোনো রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করি না। এই মুহূর্তে আমাদের ফোকাস হচ্ছে আগামী জানুয়ারির নির্বাচনের আগে বাংলাদেশে নির্বাচনী পরিবেশ ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করা।
বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিক যুগান্তর এর ওয়েবসাইটে ৯ নভেম্বর “বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্র” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বাংলাদেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে গত ৮ নভেম্বররের মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল এর আরও একটি বক্তব্য খুঁজে পাওয়া যায়।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বেগম খালেদা জিয়ার সাবেক সহকারী প্রেস সচিব মুশফিকুল ফজল আনসারী বিএনপির পক্ষে প্রশ্ন করলে বেদান্ত প্যাটেল স্পষ্ট করে বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র নির্দিষ্ট কোনো রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করে না। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সরকার ও বিরোধী দলসহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে কাজ করছে ওয়াশিংটন।”
তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বরাবরই বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের কথা বলে আসছে।
পাশাপাশি, আলোচিত ভিডিওটিতে থাকা রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিনের মূল ভিডিওটি অনুসন্ধান করে রিউমর স্ক্যানার টিম। অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে এটিএন বাংলা’র ফেসবুক পেজে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি “মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকার যেন নির্বাচিত হয়: মো. সাহাবুদ্দিন” শীর্ষক ক্যাপশনে একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।
মো: সাহাবুদ্দিনের ৪ মিনিট ৮ সেকেন্ডের সাক্ষাৎকারটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে কোনো কথা বলেননি তিনি।
মূলত, সম্প্রতি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে বললো যুক্তরাষ্ট্র এবং বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো: সাহাবুদ্দিন রাজি হয়েছে- শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে, রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, বাংলাদেশের আগামী সংসদ নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এমন কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি এবং রাষ্ট্রপতি মো: সাহাবুদ্দিনও তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে কোনো বক্তব্য দেননি। প্রকৃতপক্ষে, উক্ত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি কোনো প্রকার গ্রহণযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়া এবং অধিক ভিউ পাওয়ার আশায় ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, পূর্বেও বাংলাদেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে জড়িয়ে গুজব ছড়ানো হলে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল রিউমর স্ক্যানার।
সুতরাং, বাংলাদেশের আগামী সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে দিতে বললো যুক্তরাষ্ট্র এবং বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো: সাহাবুদ্দিন রাজি হয়েছে দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা।
সম্প্রতি, পৃথিবীর সবচেয়ে পুরাতন যন্ত্রের নাম ষড়যন্ত্র যা যুগের পর যুগ সার্ভিসিং ছাড়াই চলছে শীর্ষক লেখা এবং বাংলাদেশি ক্রিকেটার তামিম ইকবালের ছবি সম্বলিত একটি পোস্টার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, পৃথিবীর সবচেয়ে পুরাতন যন্ত্রের নাম ষড়যন্ত্র যা যুগের পর যুগ সার্ভিসিং ছাড়াই চলছে শীর্ষক লেখা তামিম ইকবালের ছবি সম্বলিত এই ছবিটি বাস্তব নয় বরং ভিন্ন ঘটনার একটি ছবিতে তামিম ইকবালের ছবি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় এডিট করে যুক্ত করে আলোচিত ছবিটি তৈরি করা হয়েছে।
রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে Mr. Battu Boi নামক ফেসবুক পেজে গত ২ নভেম্বরে প্রকাশিত একটি ছবির সাথে আলোচিত ছবিটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়।
Image Comparison: Rumor Scanner
ছবিটিতে তামিম ইকবালের পরিবর্তে ভিন্ন ব্যক্তিকে লক্ষ্য করা যায়।
মূলত, পৃথিবীর সবচেয়ে পুরাতন যন্ত্রের নাম ষড়যন্ত্র যা যুগের পর যুগ সার্ভিসিং ছাড়াই চলছে শীর্ষক লেখা এবং তামিম ইকবালের ছবি সম্বলিত একটি পোস্টার ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায় ছবিটি বাস্তব নয়। প্রকৃতপক্ষে উক্ত আলোচিত পোস্টারে ভিন্ন ব্যক্তির ছবি ছিলো এবং সেই পোস্টারে তামিম ইকবালের একটি ছবি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তা যুক্ত করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, পূর্বে তামিম ইকবালকে নিয়ে ইন্টারনেটে ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়লে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার। এমন কিছু প্রতিবেদন দেখুন এখানে:
সুতরাং, পৃথিবীর সবচেয়ে পুরাতন যন্ত্রের নাম ষড়যন্ত্র যা যুগের পর যুগ সার্ভিসিং ছাড়াই চলছে শীর্ষক লেখা এবং তামিম ইকবালের ছবি সম্বলিত একটি পোস্টার ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিকৃত বা এডিটেড।