Home Blog Page 597

প্রথম আলো নিয়ে হিরো আলমের নামে ফেসবুকে ভুয়া বক্তব্য প্রচার

0

সম্প্রতি, “প্রথম আলো আমার মত একজন হিরো আলমকে সৃষ্টি করেছে। মতি ভাই আমাকে গুরুত্ব দিয়ে সম্পাদকীয়-উপসম্পাদকীয় লিখছে। আর এই কারণে সরকার প্রথম আলোর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। ইন্দন যোগাচ্ছে মামুনুর রশীদ গংরা। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আপনাদের হিরো আলম” শীর্ষক একটি বক্তব্যকে  আলোচিত ইউটিউবার হিরো আলমের বক্তব্য দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেপ্রচারিত হয়েছে।

Screenshot from Facebook

ফেসবুকে প্রচারিত এরকম কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এবং এখানে
পোস্টগুলোর আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে, এখানে, এবং এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, অভিনেতা মামুনুর রশীদকে সমালোচনার পাশাপাশি মূলধারার জাতীয় দৈনিক প্রথম আলো এবং  পত্রিকাটির সম্পাদক মতিউর রহমানকে

প্রশংসা করে ফেসবুকে প্রচারিত বক্তব্যটি আলোচিত ইউটিউবার হিরো আলম দেননি বরং কোনোপ্রকার তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই উক্ত মন্তব্যকে হিরো আলমের বক্তব্য দাবিতে ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে, কি-ওয়ার্ড সার্চ পদ্ধতি ব্যবহার করে, গণমাধ্যম, অভিনেতা হিরো আলমের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ এবং তার ইউটিউব অ্যাকাউন্টে উক্ত দাবিতে সংশ্লিষ্ট কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

Screenshot from Facebook.

এছাড়া দেশীয় মূলধারার সংবাদমাধ্যমেও উল্লিখিত তথ্য সম্বলিত কোনো প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়নি।

উক্ত দাবিতে ইন্টারনেটে কোনো তথ্য না পাওয়ায় পরবর্তীতে বিষয়টির অধিকতর সত্যতা যাচাইয়ে অভিনেতা হিরো আলমের সাথে যোগাযোগ করে রিউমর স্ক্যানার টিম।

হিরো আলম রিউমর স্ক্যানারকে জানান, “ না, না, আমি এইসব বিষয়ে জানিই না। প্রথম আলো কি লিখেছে, অন্য কে কি গুজব ছড়াচ্ছে, আমি এসব নিয়ে থাকি না। আমার সিনেমা রিলিজ হচ্ছে, এসব নিয়ে আমি দৌড়ের উপর আছি। এই ধরণের কথা বলিইনি।”

অর্থাৎ, অভিনেতা মামুনুর রশরীদকে সমালোচনার পাশাপাশি প্রথম আলো এবং প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানকে প্রশংসা করে ফেসবুকে প্রচারিত  মন্তব্যটি হিরো আলম করেননি। 

মূলত, আলোচিত ইউটিউবার আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলমকে উদ্ধৃত করে অভিনেতা মামুনুর রশীদকে সমালোচনার পাশাপাশি দৈনিক প্রথম আলো এবং পত্রিকাটির সম্পাদক মতিউর রহমানকে প্রশংসা করে সম্প্রতি ফেসবুক একটি মন্তব্য প্রচারিত হয়। তবে, রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে এরূপ বক্তব্যের কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। তাছাড়া, বিষয়টি নিয়ে হিরো আলমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি উক্ত মন্তব্যটি করেননি বলে রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করেছেন।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি মিথ্যা তথ্য দিয়ে সংবাদ তৈরি ও পরিবেশনের অভিযোগে  দৈনিক প্রথম আলোর একজন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। পাশাপাশি নাট্যকার ও অভিনেতা মামুনুর রশীদ একটি অনুষ্ঠানে মন্তব্য করেন, “এখন রুচির দুর্ভিক্ষ চলছে। এর মধ্য দিয়েই হিরো আলমের উত্থান হয়েছে।” 
উল্লেখ্য, পূর্বেও হিরো আলমের নামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুয়া বক্তব্য ছড়িয়ে পড়লে তা যাচাই করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, অভিনেতা মামুনুর রশীদকে সমালোচনার পাশাপাশি প্রথম আলো ও পত্রিকাটির সম্পাদককে নিয়ে প্রশংসাসূচক একটি মন্তব্যকে কোনোপ্রকার তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই হিরো আলমের বক্তব্য দাবিতে ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ইসরায়েলে রকেট হামলার ঘটনায় গণমাধ্যমে পুরোনো ছবি প্রচার

সম্প্রতি, “আল-আকসায় পুলিশি অভিযান, বৃষ্টির মতো ইসরায়েলে রকেট হামলা” শীর্ষক শিরোনামে অনলাইন সংবাদমাধ্যম ঢাকা মেইলে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দুইটি ছবি ব্যবহার করা হয়েছে।

Screenshot from Dhaka Mail

ঢাকা মেইলের প্রতিবেদনটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আল-আকসা মসজিদে ইসরায়েলি পুলিশের অভিযানের পর লেবানন থেকে ইসরায়েলে বৃষ্টির মতো রকেট হামলার ঘটনায় ঢাকা মেইলে ব্যবহৃত ছবি দুইটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং প্রথম ছবিটি ২০১৪ সালের এবং দ্বিতীয়টি ২০২১ সালের ভিন্ন ঘটনার।

প্রথম ছবির বিষয়ে অনুসন্ধান 

ঢাকা মেইলের প্রতিবেদনে উল্লিখিত প্রথম ছবিটি ইসরায়েলের আয়রন ডোম এয়ার-ডিফেন্স সিস্টেমের। ছবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চ পদ্ধতির মাধ্যমে মার্কিন সংবাদমাধ্যম CNN এর ওয়েবসাইটে ২০১৪ সালের ০৯ জুলাই প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot from CNN

ছবিটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, ইসরায়েলের আয়রন ডোম এয়ার-ডিফেন্স সিস্টেমের ছবিটি ২০১৪ সালের ০৮ জুলাই তুলেছে এএফপি। সিএনএন ছবিটি সংগ্রহ করেছে গেটি ইমেজেস থেকে। 

পরবর্তীতে অনুসন্ধানে ছবি শেয়ারিং এবং স্টোরেজ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ‘Getty Images’ এর ওয়েবসাইটে ২০১৪ সালের ৮ জুলাই “Tension Remain High At Israeli Gaza Border” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত মূল ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot from Getty Images

উক্ত ছবির ক্যাপশনে থেকে জানা যায়, আয়রন ডোম এয়ার-ডিফেন্স সিস্টেম ২০১৪ সালের ৮ জুলাই ইসরায়েলের অ্যাশডোড শহরের উপরের একটি রকেট আটকাতে ফায়ার করার সময়ের ছবি এটি। 

অর্থাৎ, ঢাকা মেইলের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে প্রকাশিত প্রথম ছবিটি সাড়ে আট বছরেরও বেশি সময়ের পুরোনো। 

দ্বিতীয় ছবিটির বিষয়ে অনুসন্ধান 

ঢাকা মেইলের প্রতিবেদনে উল্লিখিত দ্বিতীয় ছবিটিও ইসরায়েলের আয়রন ডোম এয়ার-ডিফেন্স সিস্টেমের। ছবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চ পদ্ধতির মাধ্যমে সৌদি আরবের সংবাদমাধ্যম ‘Al Arabiya News’ এর ওয়েবসাইটে গত ১ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot from Al Arabiya News

উক্ত ছবির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, ইসরায়েলের আয়রন ডোম এয়ার-ডিফেন্স সিস্টেমের ছবিটি ২০২১ সালের ১২ মে তুলেছে এএফপি।  

পরবর্তীতে অধিকতর অনুসন্ধানে ছবি শেয়ারিং এবং স্টোরেজ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ‘Getty Images’ এর ওয়েবসাইটে ২০২১ সালে ১২ মে প্রকাশিত “ISRAEL-PALESTINIAN-CONFLICT” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত মূল ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot from Getty Images

অর্থাৎ, ঢাকা মেইলের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে প্রকাশিত দ্বিতীয় ছবিটি প্রায় দুই বছরের পুরোনো।

মূলত, ২০১৪ এবং ২০২১ সালে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলে রকেট নিক্ষেপ করা হলে সেগুলো আইরন ডোম দিয়ে বাধা দেওয়ার সময় ধারণকৃত ছবি দুইটি সাম্প্রতিক সময়ে লেবানন থেকে ইসরায়েলে বৃষ্টির মতো রকেট হামলার ঘটনায় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে সুনির্দিষ্ট প্রেক্ষাপট উল্লেখ না করে ব্যবহার করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, লেবাননের দক্ষিণাঞ্চল থেকে ইসরায়েলের দিকে অন্তত ৩০টি রকেট ছোড়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, পূর্বে লেবানন থেকে ইসরায়েলে রকেট হামলার ঘটনায় গণমাধ্যমে পুরোনো ছবি প্রচার করলে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, ২০১৪ এবং ২০২১ সালের দুটি ছবিকে লেবানন থেকে ইসরায়েলে রকেট হামলার সাম্প্রতিক ঘটনায় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ব্যবহার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

এটি বঙ্গবাজারের অগ্নিকান্ডে আগুন নেভানোর কাজে ব্যবহৃত হেলিকপ্টার নয় 

সম্প্রতি, একটি হেলিকপ্টারে করে পানি নেয়ার ভিডিও “রাজধানীর বঙ্গবাজারে যে হেলিকপ্টার করে আগুনে পানি দেয়া হয়েছে” শীর্ষক দাবিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। 

Screenshot from ‘Facebook’ 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, রাজধানীর বঙ্গবাজারে আগুন নেভানোর কাজে আলোচিত নীল সাদা রঙের হেলিকপ্টারটি ব্যবহার হয়নি বরং বঙ্গবাজারে আগুন নেভানোর কাজে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর তিনটি হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হয়েছে। এইসব হেলিকপ্টারের রং এর সাথে উক্ত হেলিকপ্টারটির রং এর মিল নেই।

অনুসন্ধানের শুরুতে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে দৈনিক ‘Prothom Alo’ এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ০৪ এপ্রিল তারিখে “বঙ্গবাজারে আগুন: যেভাবে হেলিকপ্টার দিয়ে পানি নেওয়া হয়” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ভিডিওটিতে, সেদিন বঙ্গবাজারে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টার অংশ নেয় বলে জানানো হয়েছে। 

পাশাপাশি, দেশীয় বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে একই হেলিকপ্টারের ভিডিও সহ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে এবং হেলিকপ্টারটি বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টার বলে জানানো হয়েছে। 

পরবর্তীতে, এটি বাংলাদেশ বিমান বাহিনী এর হেলিকপ্টার কী না এই তথ্য যাচাইয়ে ‘Bangladesh Air Force’ এর ওয়েবসাইটে MI-171 মডেলের হেলিকপ্টারের সাথে বঙ্গবাজারে আগুন নিয়ন্ত্রণে ব্যবহৃত হেলিকপ্টারটির হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

Image by Rumor Scanner 

এছাড়া, “রাজধানীর বঙ্গবাজারে যে হেলিকপ্টার করে আগুনে পানি দেয়া হয়েছে” শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত ভিডিওটি থেকে স্থিরচিত্র নিয়ে রিভার্স সার্চের মাধ্যমে ‘JET Photos’ নামের একটি ফটো স্টক ওয়েবসাইটে ২০২০ সালের ০৬ আগষ্টে অনুরূপ একই সিরিজের হেলিকপ্টার খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot from ‘JET PHOTOS’ website

ছবিটির বিবরণীতে দাবি করা হয়েছে যে, ২০২০ সালে স্পেনে একটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আগুন নেভানোর কাজে ব্যবহারের সময় এই হেলিকপ্টরটির ছবি তোলা হয়েছিলো। 

Screenshot from ‘JET PHOTOS’ website

তাছাড়া, “রাজধানীর বঙ্গবাজারে যে হেলিকপ্টার করে আগুনে পানি দেয়া হয়েছে” শিরোনামের প্রচারিত ভিডিওতে থাকা হেলিকপ্টারটি বিশ্লেষণ করে স্পেনের পতাকা সহ ‘EC-JCX’ মডেলের সন্ধান পাওয়া যায়। 

Image by Rumor Scanner 

প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ‘Aerospace Manufacturing and Design’ নামের একটি ওয়েবসাইটে ২০১২ সালের ১১ নভেম্বর তারিখে “Helicopter Helps Extinguish Fires in Skyscrapers” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এটি আগুন নেভানোর কাজে বিশেষভাবে তৈরিকৃত ডাবল ব্লেডের হেলিকপ্টার, যা ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।

Screenshot from ‘Aerospace Manufacturing and Design’ website  

তবে, আলোচিত ভিডিওটি ঠিক কোন সময়ে বা কোন ঘটনায় ধারণ করা হয়েছিলো তা নিশ্চিত করা না গেলেও এটি পরিষ্কারভাবে বলা যায় যে, বঙ্গবাজারে আগুন নেভানোর কাজে নীল-সাদা রং এর এই হেলিকপ্টারটি ব্যবহার করা হয়নি, বরং ভিন্ন একটি হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হয়েছে।

মূলত, পুরোনো ও ভিন্ন ঘটনায় ধারণ করা একটি ভিডিওকে সাম্প্রতিক সময়ে বঙ্গবাজারে আগুন নেভানোর কাজে নীল-সাদা রং এর এই হেলিকপ্টারটি ব্যবহার করা হয়েছে শীর্ষক দাবিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে বঙ্গবাজারের অগ্নিকান্ডে আগুন নেভানোর কাজে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর তিনটিতবে এইসব হেলিকপ্টারের রং এর সাথে উক্ত হেলিকপ্টারটির রং এর মিল নেই। 

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে নীল-সাদা রং এর হেলিকপ্টার রয়েছে। তবে, বঙ্গবাজারে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় আগুন নেভানোর কাজে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর নীল-সাদা রং এর হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হয়নি। 

অর্থাৎ, পুরোনো ভিন্ন ঘটনায় ব্যবহৃত নীল-সাদা রং এর হেলিকপ্টারের ছবিকে বঙ্গবাজারে আগুন নেভানোর কাজে ব্যবহৃত হেলিকপ্টারের ছবি দাবিতে ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

হাফেজ তাকরিম তার পুরস্কারের টাকা বঙ্গবাজারের ক্ষতিগ্রস্তদের দান করেননি

সম্প্রতি, “বিশ্বজয়ী হাফেজ তাকরিম ১ম পুরস্কারের ৭১ লক্ষ টাকা বঙ্গবাজারের ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে উৎসর্গ করলেন” শীর্ষক একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে।

Screenshot from Facebook

ফেসবুকে প্রচারিত এরকম কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে এবং, এখানে
পোস্টগুলোর আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে, এখানে, এখানে এবং, এখানে

একই দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে
আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

একই দাবিতে টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে
আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমার স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত ২৬তম দুবাই আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম বাংলাদেশি হাফেজ সালেহ আহমদ তাকরিম তার পুরস্কারের ৭১ লক্ষ টাকা বঙ্গবাজারের ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে দান করেননি বরং তাকরীমের ওস্তাদ মুরতাজা হাসান মাসুম বঙ্গবাজারে ক্ষতিগ্রস্তদের তাকরীমের প্রথম হওয়ার অর্জনটি উৎসর্গ করেন। এই কথাটিই পরবর্তীতে বিবর্তিত হয়ে পুরস্কারের ৭১ লাখ টাকা উৎসর্গ বা দান করা হয়েছে দাবিতে ছড়িয়ে পড়ে।

বিভ্রান্তির শুরু যেভাবে

বিভ্রান্তির সূত্রপাত খুঁজতে গিয়ে মূলধারার গণমাধ্যম ‘Kalbela’ এর  ফেসবুকে পেজে এ গত ৭ এপ্রিল “তাকরীমের বিশ্বজয় ‘উপহার’ দিলেন বঙ্গবাজারে ক্ষতিগ্রস্তদের” শীর্ষক  ক্যাপশনে একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওটি গত ৪ এপ্রিল দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত ২৬তম কুরআন প্রতিযোগিতায় ক্ষুদে হাফেজ সালেহ আহমাদ তাকরিম বিশ্বসেরা হয়ে দেশে প্রত্যাবর্তনের সময়ের। 

সেই ভিডিওতে দেখা যায়, রাজধানীর বঙ্গবাজারে ভয়াবহ আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের সহানুভূতি জানিয়ে হাফেজ তাকরিমের শিক্ষক মুর্তজা হাসান ফয়েজি মাসুম বলেন”ক্ষতির কবলে পড়া ব্যবসায়ীদের মনোব্যথা লাঘবের জন্য তাকরিমের বিশ্বসেরার প্রথম হওয়ার পুরস্কারটি তাদের উপহার দিচ্ছি।” তিনি মূলত তাকরিমের বিশ্বজয়ের ব্যাপারটি অর্থাৎ তার অর্জনটি উপহার বা উৎসর্গের কথা বলেছেন। সেখানে তিনি পুরস্কারের অর্থ দান করার ব্যাপারে কোনো কথা বলেননি।

পরবর্তীতে হাফেজ তাকরিমের শিক্ষক মুর্তজা হাসান ফয়েজি মাসুমের বক্তব্যটি বিবর্তিত হয়ে তাকরিম তার পুরস্কারের অর্থ বঙ্গবাজারের ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মাঝে উৎসর্গ বা দান করেছেন দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে।

Shakawat Hossain নামের এক ফেসবুক ব্যবহারকারী কালবেলা’র ভিডিওটি পোস্ট(আর্কাইভ) করেন এবং ক্যাপশনে লিখেন,

“বিশ্বজয়ী হাফেজ তাকরিম ১ম পুরস্কারের ৭১ লক্ষ টাকা বঙ্গবাজারের ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে উৎসর্গ করলেন বিশ্বজয়ী হাফেজ তাকরীমের দেওয়া উপহারের টাকার সংখ্যা উল্লেখ ছিল না এজন্য ভিডিওটি ভাইরাল হয়নি | কারণ আমরা বাঙালি জাতি সস্তা জিনিস ভাইরাল করতে পছন্দ করি”

Screenshot from Facebook

এছাড়া, Free Motion(আর্কাইভ) নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে একই দাবিতে কালবেলার’র ভিডিওটি প্রচার করা হয়।

Screenshot from Facebook

আলোচিত দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য কি-ওয়ার্ড সার্চ পদ্ধতি ব্যবহার করে গণমাধ্যম, হাফেজ সালেহ আহমাদ তাকরিমের শিক্ষক মুর্তজা হাসান ফয়েজি মাসুমের ফেসবুক পেজে উক্ত দাবিতে সংশ্লিষ্ট কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

Screenshot from Facebook.

উক্ত দাবিতে ইন্টারনেটে কোনো তথ্য না পাওয়ায় পরবর্তীতে বিষয়টির অধিকতর সত্যতা যাচাইয়ে হাফেজ সালেহ আহমাদ তাকরিমের শিক্ষক মুর্তজা হাসান ফয়েজি মাসুমের সাথে যোগাযোগ করে রিউমর স্ক্যানার টিম।

মুর্তজা হাসান ফয়েজি মাসুম রিউমর স্ক্যানারকে জানান, “এ জাতীয় অসত্য তথ্য কে ছড়াচ্ছে জানিনা। কথাটা সম্পূর্ণ অসত্য।”

অর্থাৎ, হাফেজ সালেহ আহমাদ তাকরিম প্রথম পুরস্কারের ৭১ লক্ষ টাকা বঙ্গবাজারের ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে উৎসর্গ করেননি। 

মূলত, সম্প্রতি দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত ২৬তম দুবাই আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করে ৭১ লক্ষ টাকা পুরস্কার জিতেন বাংলাদেশি হাফেজ সালেহ আহমদ তাকরিম। পুরস্কার গ্রহণ শেষে গত ০৪ এপ্রিল দেশে ফিরেন তাকরিম। বিমানবন্দরে তাকরিমকে স্বাগত জানাতে যাওয়া তাকরিমের শিক্ষক মুর্তজা হাসান ফয়েজি মাসুম সাংবাদিকদের বলেন, “ক্ষতির কবলে পড়া ব্যবসায়ীদের মনোব্যথা লাঘবের জন্য তাকরিমের বিশ্বসেরার প্রথম হওয়ার পুরস্কারটি তাদের উপহার দিচ্ছি।” অর্থাৎ, তাকরিমের শিক্ষক তাকরিমের পুরস্কার অর্জনের বিষয়টি বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের মাঝে উৎসর্গ করেন। উক্ত বিষয়টি কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দাবি করা হয়, তাকরিম তার পুরস্কারের অর্থ বঙ্গবাজারের ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মাঝে উৎসর্গ বা দান করেছেন।

উল্লেখ্য, পূর্বেও হাফেজ সালেহ আহমাদ তাকরিমকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একাধিক তথ্যের সত্যতা যাচাই করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কিছু ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে। 

সুতরাং, বিশ্বজয়ী হাফেজ তাকরিম তার প্রথম পুরস্কারের ৭১ লক্ষ টাকা বঙ্গবাজারের ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে দান বা উৎসর্গ করলেন শীর্ষক দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ভূমি আইন পাস এবং কার্যকর হয়েছে দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা

0
Screenshot from Facebook.

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, নতুন ভূমি আইন পাস ও ১০ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হয়েছে দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সঠিক নয় বরং ভূমি আইন নামে কোনো আইন এখন পর্যন্ত সংসদে প্রণয়ন করা হয়নি বলে নিশ্চিত করেছে ভূমি মন্ত্রণালয়।

অনুসন্ধানের মাধ্যমে, বাংলাদেশ সরকারের ভূমি মন্ত্রণালয়ের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ ‘ভূমি মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ-Ministry of Land, Bangladesh’ এ গত ২২ জানুয়ারি ‘ভূমি মন্ত্রণালয় ডিজিটাল সেবা প্রবর্তনের পাশাপাশি আইন ও বিধি-বিধান সংশোধন করে, এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে নতুন আইনের খসড়া করে টেকসই ভূমি ব্যবস্থাপনা স্থাপনে জোর দিচ্ছে।’ শীর্ষক ক্যাপশনে প্রকাশিত সতর্কতামূলক গণবিজ্ঞপ্তি সংক্রান্ত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। 

গণবিজ্ঞপ্তিটিতে বলা হয়েছে, ‘ভূমি আইন পাস হয়েছে, ১০ই জানুয়ারি থেকে কার্যকর হয়েছে মর্মে একটি ভুয়া খবর/গুজব সম্প্রতি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে/ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে যা ভূমি মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত সংবাদ পর্যালোচনার সময় নজরে আসে। এই ধরণের ভুয়া খবর/গুজব জনমনেবিরূপ প্রভাব ও বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে- যা মোটেই কাম্য নয়।’

Source: Ministry of Land, Bangladesh

তাছাড়া, সম্প্রতি ‘ভূমি আইন’ নামের কোনো আইন পাশ হওয়া সংক্রান্ত কোনো সংবাদ বিশ্বস্ত কোনো গণমাধ্যম কিংবা ভূমি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

মূলত, ভূমি মন্ত্রণালয় ডিজিটাল সেবা প্রবর্তনের পাশাপাশি আইন ও বিধি-বিধান সংশোধন ও নতুন আইনের খসড়া তৈরি করছে৷ এরই ধারাবাহিকতায় আইন কমিশন ‘ভূমি আইন, ২০২২ (ধারনা পত্র, খসড়া আইন ও সুপারিশ)’ নামক একটি খসড়া সরকারের কাছে পাঠিয়েছে। যেটি এখনো প্রণয়ন না হলেও সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ‘ভূমি আইন পাস হয়েছে, ১০ই জানুয়ারি থেকে কার্যকর  হয়েছে।’ শীর্ষক শিরোনামে একটি তথ্য প্রচার করা হচ্ছে। তবে বাংলাদেশ সরকারের ভূমি মন্ত্রণালয় বিষয়টিকে গুজব হিসেবে উল্লেখ করে তাদের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে জানায়, ‘ভূমি আইন’ নামে কোনো আইন জাতীয় সংসদে এখন পর্যন্ত প্রণয়ন করা হয়নি।

উল্লেখ্য, গত জানুয়ারি মাসেও ‘ভূমি আইন পাস হয়েছে’ শীর্ষক একই দাবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে, সেসময় বিষয়টিকে মিথ্যা হিসেবে শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকরিমকে বাড়ি উপহার দেননি

0

সম্প্রতি ‘হাফেজ তাকরিমকে বিশাল বাড়ি উপহার দিলেন প্রধানমন্ত্রী’ শীর্ষক শিরোনাম ব্যবহার করে কয়েকটি ভিডিও ইউটিউবে প্রচার করা হচ্ছে।

Screenshot: YouTube

ইউটিউবে প্রচারিত এমনকিছু ভিডিও দেখুন এখানে এবং এখানে
আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে এবং এখানে। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, তাকরিমকে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে বাড়ি উপহার দেওয়ার দাবিটি সঠিক নয় বরং অধিক ভিউ পাবার আশায় চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইলে প্রধানমন্ত্রীর ছবি ব্যবহার করে কোনো তথ্যসূত্র ছাড়াই উক্ত দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে।

কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে Most Topic নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ‘সুখবরঃ এইমাত্র হাফেজ তাকরিমকে বিশাল বাড়ি উপহার দিলেন প্রধানমন্ত্রী? দেখলে অবাক হবেন!’ শীর্ষক শিরোনামে গত ৭ এপ্রিল প্রকাশিত একটি ভিডিও(আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: YouTube

২ মিনিট ২৬ সেকেন্ডের এই ভিডিওটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। ভিডিওটির শিরোনাম এবং থাম্বনেইলে প্রধানমন্ত্রী পক্ষ থেকে তাকরিমকে বাড়ি উপহার দেওয়ার কথা বলা হলেও বিস্তারিত প্রতিবেদনে কোথাও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে বাড়ি উপহারের ব্যাপারে কিছুই বলা হয়নি। 

ভিডিওটির ২ মিনিট ৬ সেকেন্ড অংশে বলা হয়, তাকরিমের সাফল্যে খুশি হলেন প্রধানমন্ত্রী। খবর পাওয়া যায় তাকরিম দুবাই থেকে প্রথম হয়ে দেশের নাম উজ্জ্বল করেছে আর এতে আনন্দিত হন তিনি।’ রিউমর স্ক্যানার যাচাই করে দেখেছে, উক্ত ভিডিওটি তাকরিমের প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার এবং বিভিন্ন জায়গায় সংবর্ধনার কয়েকটি ছবি  যুক্ত করে তৈরি করা হয়েছে। 

পরবর্তীতে একই দাবিতে Popular News BD নামের ইউটিউব চ্যানেলে ‘এইমাত্র হাফেজ তাকরিমকে বিশাল বাড়ি উপহার দিলেন প্রধানমনন্ত্রী!! খুশি তাকরিম’ শীর্ষক শিরোনামে গত ৮ এপ্রিল প্রকাশিত একটি ভিডিও (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: YouTube 

২ মিনিট ২০ সেকেন্ডের এই ভিডিওটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। ভিডিওটির শুরুতে ১৩ সেকেন্ড অংশে বলা হয়, তাকরিমের সাফল্যে হাফেজ তাকরিমকে বাড়ি উপহার দিলেন প্রধানমন্ত্রী। তবে বিস্তারিত প্রতিবেদনে ভিডিও’র ১ মিনিট ৪৮ সেকেন্ড অংশে বলা হয়, ‘বারবার তাকরিম দেশের নাম উজ্জ্বল করায় তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীও। জানা যায় তাকরিমকে বিশাল অংকের পুরুস্কার দেবেন প্রধানমন্ত্রী।’ তবে সেখানে কোনো তথ্যসূত্র উল্লেখ করা হয়নি। 

রিউমর স্ক্যানার যাচাই করে দেখেছে, উক্ত ভিডিওগুলো তাকরিমের আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার এবং বিভিন্ন জায়গায় সংবর্ধনার কয়েকটি ছবি  যুক্ত করে তৈরি করা হয়েছে। 

পাশাপাশি গণমাধ্যমে কিংবা নির্ভরযোগ্য অন্যকোনো সূত্রে এখন পর্যন্ত তাকরিমকে প্রধানমন্ত্রী বাড়ি উপহার দেওয়ার কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

তবে ‘হাফেজ তাকরিমের সাফল্যে প্রধানমন্ত্রীও খুশি’ শীর্ষক শিরোনামে সময় নিউজের অনলাইন সংস্করণে ২০২২ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন(আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়। সেসময় আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় তাকরিম তৃতীয় হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী খুশি হওয়ার বিষয়ে বলা হলেও প্রতিবেদনে কোনো প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে উপহারের বিষয়ে কোনো তথ্য উল্লেখ নেই।

Screenshot: Somoy News

অর্থাৎ, প্রচারিত ভিডিওগুলোর বিস্তারিত প্রতিবেদন পর্যবেক্ষণ করলে এটা স্পষ্ট যে, প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে তাকরিমকে বাড়ি উপহার দেওয়ার দাবিটি সঠিক নয়। 

মূলত, সম্প্রতি দুবাই আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় ১ম স্থান অর্জন করেন বাংলাদেশের হাফেজ সালেহ আহমেদ তাকরিম। হাফেজ তাকরিমের এ অর্জনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খুশি হয়ে তাকরিমকে বাড়ি উপহার দেওয়ার দাবিতে ইউটিউবে ভিডিও প্রচার করা হয়। তবে রিউমর স্ক্যানারে অনুসন্ধানে জানা যায়, অধিক ভিউ পাবার আশায় চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি ব্যবহার করে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যসূত্র ছাড়াই ভিডিওগুলো প্রচার করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাফেজ তাকরিমকে কোনো বাড়ি উপহার দেননি।

উল্লেখ্য, পূর্বেও ক্যাপশন এবং থাম্বনেইলে বিভ্রান্তিকর তথ্য উপস্থাপন করে অভিনেতা শাকিব খান তাকরিমকে এক কোটি টাকা উপহার দিয়েছেন দাবিতে ছড়িয়ে পড়লে সেসময় বিষয়টিকে মিথ্যা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার। 

সুতরাং, প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে তাকরিমকে বাড়ি উপহার দেওয়ার দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

‘সানিয়া মির্জা শোয়েবের সাবেক স্ত্রী’ শীর্ষক দাবিটি সত্য নয়

0

সম্প্রতি, “ছেলেকে নিয়ে ওমরাহ হজ্জ পালন করলেন শোয়েব মালিকের সাবেক স্ত্রী সানিয়া মির্জা” শীর্ষক শিরোনামে কয়েকটি ছবি সহ তথ্যটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচারিত হচ্ছে।

Screenshot From Facebook

ফেসবুকে প্রচারিত এরকম কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে। পোস্টগুলোর আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সানিয়া মির্জা শোয়েব মালিকের সাবেক স্ত্রী নন বরং তিনি বর্তমানেও শোয়েব মালিকের স্ত্রী।

কি-ওয়ার্ড সার্চ পদ্ধতি ব্যবহার করে, ভারতীয় গণমাধ্যম ‘Times Of India” তে গত ৩০ জানুয়ারি “Amid divorce rumours, Shoaib Malik has a special message for Sania Mirza: ‘You are an inspiration…” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায় শোয়েব মালিক এবং সোনিয়া মির্জা মাঝে এখনও স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক বিদ্যমান আছে।

Screenshot From ‘Times Of India’

গত ৩১ জানুয়ারি ২০২৩ ‘The Indian Express’ এ “Sania Mirza hugs husband Shoaib Malik amid divorce rumours, thanks Abhishek Bachchan and Kajol for wishes on her retirement” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। সেই প্রতিবেদনে শোয়েব মালিক এবং সানিয়া মির্জার মধ্যে এখনও বৈবাহিক সম্পর্ক আছে তার প্রমাণ পাওয়া যায়।

Screenshot From ‘The Indian express’

৩১ জানুয়ারি, ২০২৩ এ ‘Times Of India’ তে “Are divorce rumours put to rest? Shoaib Malik hugs wife Sania Mirza in THIS viral video” শীর্ষক শিরোনামে অপর একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সানিয়া মির্জা টেনিস খেলা থেকে অবসর নেওয়ার পর তার পরিবার দুবাইয়ে একটি ঘরোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সেই অনুষ্ঠানে শোয়েব মালিকও যোগদান করেন।

Screenshot From ‘Times Of India’

গত ২৯ জানুয়ারি সানিয়া মির্জার টেনিস খেলা থেকে অবসর নেওয়া নিয়ে শোয়েব মালিক একটি টুইট পোস্ট করেন। সেই টুইটকে ‘ধন্যবাদ’ ক্যাপশন দিয়ে সানিয়া মির্জা আয়াব্র রিটুইট করেন।

Screenshot From Twitter

এছাড়াও এই প্রতিবেদন প্রকাশের সময় পর্যন্ত শোয়েব মালিক এবং সানিয়া মির্জার বিবাহ বিচ্ছের খবর সংবাদমাধ্যম সহ গ্রহণযোগ্য কোনো মাধ্যমে পাওয়া যায়নি।

অর্থাৎ, শোয়েব মালিক এবং সানিয়া মির্জার মধ্যে এখনো বৈবাহিক সম্পর্ক আছে।

মূলত, গত বছরের ডিসেম্বর মাস থেকেই শোয়েব মালিক এবং সানিয়া মির্জার বিবাহ বিচ্ছেদের একটি তথ্য বিভিন্ন গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলোতে ছড়িয়ে পড়ে। সাম্প্রতিক সময়ে সানিয়া মির্জা তার ছেলে সহ পরিবার নিয়ে ওমরাহ পালন করতে গেলেও সাথে দেখা যায়নি শোয়েব মালিককে। এরপরেই ‘ছেলেকে নিয়ে ওমরাহ হজ্জ পালন করলেন শোয়েব মালিকের সাবেক স্ত্রী সানিয়া মির্জা’ শীর্ষক শিরোনামে শোয়েব মালিক এবং সানিয়া মির্জার বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে (পরোক্ষভাবে) দাবিটি কয়েকটি ছবি সহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়। 

প্রসঙ্গত,  ইতোপূর্বে ক্রীড়া ক্ষেত্রের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বেশকিছু ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘সানিয়া মির্জা শোয়েবের সাবেক স্ত্রী’ শীর্ষক দাবি প্রচার করা হচ্ছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

কনুইয়ের ত্বকে ব্যথার অনুভূতি না থাকার দাবিটি মিথ্যা

0

বেশ কয়েকবছর ধরে ‘কনুইয়ের ত্বক হলো মানুষের শরীরের একমাত্র ত্বক যেখানে কোনো ব্যথার অনুভূতি নেই’ শীর্ষক দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হয়ে আসছে।

Screenshot from Facebook

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিভিন্ন সময় প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে। পোস্টগুলোর আর্কাইভ দেখুন এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায় যে, ‘মানুষের শরীরের একমাত্র কনুইয়ের ত্বক-এ ব্যাথার কোন অনুভূতি নেই’ শীর্ষক দাবিটি সঠিক নয় বরং কনুইয়ের ত্বক-এ ব্যাথার অনুভূতি রয়েছে। তবে দেহের অন্যান্য স্থানের ত্বকের চেয়ে কনুইয়ের ত্বকে ব্যথার অনুভূতি কিছুটা কম।

আমরা কিভাবে ব্যথা অনুভব করি?

আমাদের ত্বকে সুচ ফুটলে, কেটে গেলে অথবা গরম কোথাও স্পর্ষ করলে কিংবা আঘাত পেলে আমরা ব্যাথা পাই। স্বাস্থ্য বিষয়ক ওয়েবসাইট Medical News Today -তে “What is pain, and how do you treat it?” শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, যদি ত্বকের টিস্যুগুলো কোনো কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয় তখন সেই ব্যথার উদ্দীপনা বা সংকেতগুলো Nociceptors থেকে সেন্সরি নিউরনের মাধ্যমে স্পাইনাল কর্ড হয়ে তা মস্তিষ্কে পৌঁছায় এবং আমরা ব্যথা অনুভব করি।

Screenshot from Medical News Today

তাছাড়া, স্বাস্থ্য বিষয়ক ওয়েবসাইট My Doctor এ একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। “Pain and how you sense it” শিরোনামে প্রকাশিত এই আর্টিকেলটিতে থাকা ডায়াগ্রামের মাধ্যমে বাহ্যিক প্রভাবকের দ্বারা টিস্যু ক্ষতিগ্রস্ত হলে আমাদের ব্রেইনে কিভাবে ব্যাথার অনুভূতি সৃষ্টি হয় সেই বিষয়টি ফুঁটিয়ে তোলা হয়েছে। উক্ত ডায়াগ্রামটি নিচে তুলে ধরা হলোঃ

Pain and how you sense it – MyDr.com.au

Nociceptors কী?

বিজ্ঞান বিষয়ক ওয়েবসাইট Science Direct এ “Pain receptors sense chemical, as well as mechanical and thermal, stimuli” শিরোনামে প্রকাশিত একটি রিসার্চ আর্টিকেলে বলা হয় “Nociceptors হচ্ছে বিশেষ ধরনের ‘Nerve Endings’ যারা মূলত আমাদের ত্বক, মাংসপেশি, হাড়ের জয়েন্টের মতো স্থানগুলোতে ব্যাপকভাবে বিস্তৃত থাকে। এদের কাজ প্রধান হচ্ছে ক্ষতিগ্রস্থ টিস্যু থেকে ব্যথার উদ্দীপনা গ্রহন এবং সেই সংকেতকে মস্তিষ্কে প্রেরণ প্রেরণ করা।”

Screenshot from Science Direct

কনুইয়ে চিমটি কাটলে ব্যথা কম অনুভব হয় কেন?

ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি-তে “Hands-on science: try these experiments wherever you are” শিরোনামে প্রকাশিত আর্টিকেলে উল্লেখ হয় আমাদের ত্বকের বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন ধরনের নার্ভ এন্ডিংস রয়েছে। তবে আমাদের কনুইয়ের ত্বকের পেইন রিসেপ্টর কম থাকার কারনে যদি কেউ সেথানে চিমটি কাটে তাহলে ব্যাথা কম লাগে।

আরো উল্লেখ করা হয় যে, শরীরের যেসব অংশে নার্ভ এন্ডিং এর পরিমান বেশি রয়েছে সেগুলো বেশি সংবেদনশীল এবং সেসব অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনাও বেশি।

Screenshot from BBC

প্রকৃতপক্ষে, দেহের কোনো স্থানের টিস্যু ক্ষতিগ্রস্ত হলে একজন মানুষ ঠিক কতটা ব্যাথা অনুভব করবে সেটা নির্ভর করে ওই স্থানে থাকা পেইন রিসেপ্টররের সংখ্যার উপর। উদাহরণস্বরুপঃ বিজ্ঞান বিষয়ক জার্নাল ‘Science Direct’ এর একটি আর্টিকেলে বলা হয় আমাদের দেহে মস্তিষ্কের মধ্যে কোন পেইন রিসেপ্টর নেই। ফলে মস্তিষ্ক নিজে ব্যথা সংবেদী নয়

Screenshot from Science Direct

পাশাপাশি, স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইট Medical News Today-তে “Why is testicular trauma so painful?” শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা আমাদের অন্ডকোষে অত্যধিক পেইন ডিটেক্টর থাকার কারনে সামান্য আঘাতেই বেশি ব্যথা লাগে। 

Screenshot from Medical News Today

অর্থাৎ, যেহুতু দেহের অন্যান্য স্থানের চেয়ে কনুইয়ের ত্বক কিছুটা পুরু তাই তাই ত্বকের উপরিভাগে Nociceptors সংখ্যা কম কম থাকে। তবে, পেইন রিসেপ্টরের সংখ্যা যেহুতু একেবারেই শূন্য নয় তাই একটু জোরে চিমটি কাটলে সেখানে কিছুটা হলেও ব্যথা অনুভব হবেই।

মূলত, কনুইয়ের ত্বকের উপরিভাগের দিকে ব্যথার অনুভূতি সৃষ্টিকারী রিসেপ্টর নিউরনের সংবেদনশীল প্রান্ত (Nerve endings) কম থাকার কারণে দেহের অন্যান্য স্থানের ত্বকের তুলনায় কনুইয়ের ত্বকে ব্যথা কম লাগে। এ বিষয়টিকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে “কনুইয়ের ত্বকে একেবারেই কোনো ব্যথার অনুভূতি নেই” শীর্ষক দাবি প্রচার করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, ইতোপূর্বে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বেশকিছু ফ্যাক্ট-চেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘কনুইয়ের ত্বক হল মানুষের শরীরের একমাত্র ত্বক যেখানে কোন ব্যথার অনুভূতি নেই’ শীর্ষক দাবি প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

  • Medical News today || People feel pain when signals travel through nerve fibers to the brain for interpretation.
  • MyDr.com.au || Pain and how you sense it.
  • Science Direct || Pain receptors, also called nociceptors, are a group of sensory neurons with specialized nerve endings widely distributed in the skin, deep tissues (including the muscles and joints), and most of the visceral organs.
  • BBC || Tough skin, like that on elbows, has fewer pain detectors.
  • Science Direct || The brain and most of the overlying meninges have no pain receptors and are therefore insensitive to pain.
  • Medical News Today || The testicles contain a great numberTrusted Source of densely packed nerve endings in a small area. This high concentration of nerves makes them very sensitive and susceptible to pain.

প্রধানমন্ত্রী গ্রেফতার এবং সেনাবাহিনীর হাতে দেশের ক্ষমতা যাওয়ার দাবিটি মিথ্যা 

সম্প্রতি ‘প্রধানমন্ত্রী গ্রেফতার, দেশ সেনাবাহিনীর হাতে’ শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। 

Screenshot: Facebook 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন একটি পোস্ট দেখুন এখানে। আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী গ্রেফতার কিংবা সেনাবাহিনীর হাতে দেশের ক্ষমতা যাওয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি বরং কোনো তথ্যসূত্র ছাড়াই ভিত্তিহীনভাবে ভিডিওটির থাম্বনেইলে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ছবি ব্যবহার করে অধিক ভিউ পাবার আশায় ভিডিওটি প্রচার করা হয়েছে।

গত ১০ এপ্রিল News Plus নামের ফেসবুক পেজ থেকে ‘প্রধানমন্ত্রী গ্রেফতার, দেশ সেনাবাহিনীর হাতে’ শীর্ষক শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে আলোচিত ভিডিওটি প্রকাশ করা হয়।

Screenshot: Facebook 

অনুসন্ধানের শুরুতে ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, এটি কয়েকটি প্রতিবেদন নিয়ে তৈরি একটি নিউজ বুলেটিন ভিডিও। ৯ মিনিট ৩৪ সেকেন্ডের এই ভিডিওটিতে ক্যাপশনের সাথে ভেতরের তথ্যের কোনো মিল খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

ভিডিওটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত শুনে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। ভিডিওটির শিরোনামে প্রধানমন্ত্রীর গ্রেফতার এবং সেনাবাহিনীর হাতে দেশের ক্ষমতা যাওয়ার বিষয়টি লেখা থাকলেও প্রতিবেদনের বিস্তারিত অংশে এই বিষয়ে কিছু বলা হয়নি। এছাড়াও ভিডিওটির থাম্বনেইলে ওবায়দুল কাদের, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ছবি দেওয়া রয়েছে।

রিউমর স্ক্যানার টিম যাচাই করে দেখেছে, ৯ মিনিট ৩৪ সেকেন্ডের এই ভিডিওটিতে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মোট ৯টি বিষয়ের ওপর সংবাদ পাঠ করা হয়ঃ

  • আওয়ামী লীগ কাওয়ার্ড সরকার, বলেছেন মির্জা ফখরুল 
  • ছাত্রলীগের হামলায় বিএনপির অবস্থান কর্মসূচি পণ্ড, আহত ২৫
  • লক্ষীপুরে আওয়ামী লীগ বিএনপি সংঘর্ষ, আহত ১৫
  • নাটরে যুবলীগ ছাত্রলীগের হামলায় বিএনপির ২ নেতা আহত
  • নির্বাচনে না এলে জোর করে আনতে পারবো না, বলেছেন কাদের
  • বিএনপি চেয়ারপার্সনেট উপদেষ্টা মোক্তাদির গ্রেফতার 
  • পাকিস্তান এখন বাংলাদেশ হতে চায়, বলছেন কৃষিমন্ত্রী 
  • সরকারকে বিদায় নিতেই হবে, বলছেন নিপুন
  • বঙ্গবাজারে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের ক্ষতিপূরণ ও পূর্নবাসন না করলে গণভবন ঘেরাও করা হবে, বলেছেন পেশাজীবী গণতান্ত্রিক জোট

প্রচারিত নিউজ বুলেটিন ভিডিও’র কোথাও প্রধানমন্ত্রী গ্রেফতার কিংবা দেশের ক্ষমতা সেনাবাহিনীর হাতে যাওয়ার বিষয়ে সংবাদ পাওয়া যায়নি। পাশাপাশি দেশীয় কিংবা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে কিংবা অন্যকোনো সূত্রে এমনকোন সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

অর্থাৎ, প্রচারিত ভিডিও’র বিস্তারিত প্রতিবেদন, থাম্বনেইলে ভুল তথ্য উপস্থাপন এবং এই বিষয়ে গণমাধ্যমে কোনো প্রতিবেদন খুঁজে না পাওয়ায় এটা স্পষ্ট যে, প্রধানমন্ত্রী গ্রেফতার এবং দেশের ক্ষমতা সেনাবাহিনীর হাতে যাওয়ার দাবিটি সঠিক নয়। 

মূলত, গত ১০ এপ্রিল একটি ভূঁইফোড় পেজ থেকে ‘প্রধানমন্ত্রী গ্রেফতার এবং দেশ সেনাবাহিনীর হাতে’ শীর্ষক চটকদার ক্যাপশন ও থাম্বনেইলে একটি নিউজ বুলেটিন ভিডিও প্রচারিত হয়। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে উক্ত ভিডিওতে প্রধানমন্ত্রী গ্রেফতার এবং দেশের ক্ষমতা সেনাবাহিনীর হাতে যাওয়া সংক্রান্ত কোনো খবর পাওয়া যায়নি। প্রকৃতপক্ষে, চটকদার ক্যাপশন এবং থাম্বনেইল ব্যবহার করে অধিক ভিউ পাবার আশায় উক্ত দাবিতে ভিডিওটি প্রচার করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, ক্যাপশন এবং থাম্বনেইলে প্রচারিত তথ্যের সাথে ভিডিও প্রতিবেদনের মূল সংবাদের কোথাও উল্লেখ না করে অধিক ভিউ পাওয়ার আশায় দীর্ঘদিন ধরে একই কাজ করে আসছে উক্ত ফেসবুক পেজটি। এরকম বেশকয়েকটি তথ্যের সত্যতা যাচাই করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। এরকম কিছু প্রতিবেদন দেখুন এখানে এবং এখানে

সুতরাং, কোনোপ্রকার তথ্যসূত্র ছাড়া একটি নিউজ বুলেটিন ভিডিওর ক্যাপশন এবং থাম্বনেইলে প্রধানমন্ত্রী গ্রেফতার এবং দেশের ক্ষমতা সেনাবাহিনীর হাতে যাওয়ার দাবি করা হচ্ছে; সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

  • Rumor Scanner Own Analysis

রাজধানীতে বোমা হামলায় ৪৪ জন নিহত দাবিতে বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রচার

0

সম্প্রতি ‘এইমাত্র রাজধানীতে বোমা হামলা, হঠ্যাৎ-ই নিহত ৪৪’ শীর্ষক শিরোনাম ও থাম্বনেইলে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচারিত হয়েছে।

Screenshot: Facebook

ফেসবুকে প্রচারিত এমন একটি ভিডিও দেখুন এখানে। আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশে বোমা হামলায় ৪৪ জন নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেনি বরং আফ্রিকার দেশ বুরকিনা ফাসোয় বোমা হামলায় ৪৪ জন নিহত হয়েছে এবং কোন দেশ তা নির্দিষ্ট করে উল্লেখ না করা এবং ভিডিও’র থাম্বনেইলে বাংলাদেশের মানুষের আহাজারি ও লাশের ছবি ব্যবহার করায় বিষয়টি নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। 

গত ১০ এপ্রিল News Plus নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে ‘এইমাত্র রাজধানীতে বোমা হামলা, হঠ্যাৎ-ই নিহত ৪৪’ শীর্ষক শিরোনাম এবং থাম্বনেইলে বাংলাদেশের মানুষের আহাজারি ও লাশের ছবি ব্যবহার করে ভিডিওটি প্রকাশ করা হয়।

Screenshot: Facebook

ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, এটি কয়েকটি প্রতিবেদন নিয়ে তৈরি একটি নিউজ বুলেটিন ভিডিও। ৮ মিনিট ২২ সেকেন্ডের এই ভিডিওটিতে ৫ মিনিট ৩৬ সেকেন্ডের সময় আফ্রিকার দেশ বুরকিনা ফাসোয় বোমা হামলায় ৪৪ জন নিহতের বিষয়ে বলা হয়। এবিষয়ে সংবাদ পাঠ ৫ মিনিট ৩৬ সেকেন্ড থেকে শুরু হয়ে ৬ মিনিট ১০ সেকেন্ড পর্যন্ত চলে। এবিষয়ে বিস্তারিত সংবাদে বলা হয়, আফ্রিকার দেশ বুরকিনা ফাসোয় সন্ত্রাসীদের হামলায় অন্তত ৪৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। রোববার (৯ এপ্রিল) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, গত ৬ এপ্রিল দেশটির নাইজার সীমান্তের কাছে সাহেল অঞ্চলের কৌরাকাউ এবং টন্ডোবি গ্রামে সন্ত্রাসীরা এলোপাথারি গুলি চালালে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে। নিহতের মধ্যে কৌরাকাউতে ৩১ জন এবং টন্ডোবি গ্রামের ১৩ জন হয়েছেন। সম্প্রতি গবাদি পশু চুরির চেষ্টাকারী দুই সন্ত্রাসীকে পিটিয়ে হত্যার প্রতিশোধ হিসেবে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

উক্ত প্রতিবেদনের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে মূল ধারার গণমাধ্যম আরটিভির অনলাইন সংস্করণে ‘বুরকিনা ফাসোতে সন্ত্রাসীদের হামলা, নিহত ৪৪’ শীর্ষক শিরোনামে গত ০৯ এপ্রিল প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন(আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: RTV Online

প্রতিবেদনে ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসির বরাতে জানানো হয়, গত ৬ এপ্রিল দেশটির নাইজার সীমান্তের কাছে সাহেল অঞ্চলের কৌরাকাউ এবং টন্ডোবি গ্রামে সন্ত্রাসীরা এলোপাথারি গুলি চালালে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে। নিহতের মধ্যে কৌরাকাউতে ৩১ জন এবং টন্ডোবি গ্রামের ১৩ জন হয়েছেন। সম্প্রতি গবাদি পশু চুরির চেষ্টাকারী দুই সন্ত্রাসীকে পিটিয়ে হত্যার প্রতিশোধ হিসেবে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

রিউমর স্ক্যানার যাচাই করে দেখেছে, আরটিভি অনলাইনে প্রকাশিত উক্ত প্রতিবেদনটি দাবিকৃত ভিডিওতে প্রতিবেদনের শেষ পর্যন্ত হুবহু পাঠ করা হয়েছে। তাছাড়া দাবিকৃত ভিডিও’র শিরোনামে রাজধানীতে বোমা হামলায় ৪৪ জন নিহতের কথা লেখা হলেও বিস্তারিত সংবাদ পাঠের সময় আরটিভি অনলাইনে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী আফ্রিকার দেশ বুরকিনা ফাসোয় বোমা হামলায় ৪৪ জন নিহতের কথা বলা হয়। এছাড়া প্রচারিত ভিডিওতে দেখানো ছবিটিও আরটিভি অনলাইনে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে নেওয়া হয়েছে।

পাশাপাশি দেশীয় কিংবা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম কিংবা অন্যকোনো সূত্রে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে রাজধানীতে বোমা হামলা কিংবা বোমা হামলায় নিহতের কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

অর্থাৎ, প্রচারিত ভিডিও’র বিস্তারিত প্রতিবেদন এবং এবিষয়ে গণমাধ্যমের প্রতিবেদন পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, আফ্রিকার দেশ বুরকিনা ফাসোয় বোমা হামলায় ৪৪ জন নিহতের ঘটনাকে দেশটির নাম উল্লেখ না করে রাজধানীতে বোমা হামলায় ৪৪ জন নিহত দাবি করে থাম্বনেইলে বাংলাদেশের মানুষের আহাজারি ও লাশের ছবি ব্যবহার করে বিভ্রান্তিকরভাবে প্রচার করা হয়েছে।

মূলত, সম্প্রতি আফ্রিকার দেশ বুরকিনা ফাসোয় বোমা হামলায় ৪৪ জন নিহতের ঘটনা ঘটে। তবে বাংলাদেশে একটি নিউজ বুলেটিন ভিডিওতে দেশটির নাম উল্লেখ না করে ‘এইমাত্র রাজধানীতে বোমা হামলা, হঠ্যাৎ-ই নিহত ৪৪’ শীর্ষক ক্যাপশন এবং থাম্বনেইলে বাংলাদেশের মানুষের আহাজারি ও লাশের ছবি ব্যবহার করায় বিষয়টি নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়। প্রকৃতপক্ষে, চটকদার ক্যাপশন এবং থাম্বনেইল ব্যবহার করে অধিক ভিউ পাবার আশায় উক্ত দাবিতে ভিডিওটি প্রচার করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, ক্যাপশন এবং থাম্বনেইলে চটকদার শিরোনাম ব্যবহার করে বিভিন্ন সময় বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করা হচ্ছে। এসব ঘটনা নিয়ে পূর্বেও ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, আফ্রিকার দেশ বুরকিনা ফাসোয় বোমা হামলায় ৪৪ জন নিহতের ঘটনার সংবাদের ভিডিও’র ক্যাপশনে শুধুমাত্র রাজধানীতে বোমা হামলায় ৪৪ জন নিহত লিখে প্রচার করা হচ্ছে এবং থাম্বনেইলে বাংলাদেশের মানুষের আহাজারি ও লাশের ছবি ব্যবহার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র