Home Blog Page 597

৯৭ আসনে মনোনয়ন নিশ্চিত করে আওয়ামী লীগ এখন পর্যন্ত কোনো তালিকা প্রকাশ করেনি

সম্প্রতি, “৯৭ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিশ্চিত যাদের” শীর্ষক শিরোনামে অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলা ইনসাইডারে প্রকাশিত সংবাদের সূত্রে ৯৭ ব্যক্তির নাম সম্বলিত একটি তালিকা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

৯৭ আসনে মনোনয়ন

বাংলা ইনসাইডার’এ প্রকাশিত সংবাদ প্রতিবেদনটি দেখুন এখানে

বাংলা ইনসাইডারের সূত্রে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু  পোস্ট দেখুন পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ) এবং পোস্ট (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ৯৭ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিশ্চিত যাদের শীর্ষক দাবিতে প্রকাশিত তালিকাটি বানোয়াট। নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যসূত্র ছাড়াই ভিত্তিহীনভাবে আলোচিত এই তালিকাটি প্রচার করা হচ্ছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘বাংলা ইনসাইডার’ এ প্রকাশিত প্রতিবেদনে উল্লিখিত তালিকাটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, উক্ত তালিকাটি ‘বাংলা ইনসাইডার’ নিজেদের বিভিন্ন জরিপের তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে তৈরী করেছে। এছাড়া উক্ত প্রতিবেদনে তালিকা প্রকাশের ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের কারও তথ্যসূত্র উল্লেখ পাওয়া যায়নি।

এ নিয়ে অনুসন্ধানে কি ওয়ার্ড সার্চ পদ্ধতি ব্যবহার করে আওয়ামী লীগের ওয়েবসাইট, ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ এবং ইউটিউব চ্যানেলে উক্ত দাবি সম্বলিত কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এছাড়া, ‘বাংলা ইনসাইডার’ ওয়েব পোর্টাল ছাড়া অন্য কোনো গণমাধ্যমে প্রাসঙ্গিক একাধিক কি ওয়ার্ড সার্চ করে ৯৭ আসনে আওয়ামী লীগের থেকে মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে, উক্ত বিষয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে গত ১৫ সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot from Facebook

ডিজিটাল ব্যানার সম্বলিত উক্ত পোস্টে বলা হয়, ‘গুজব ও বিভ্রান্তিকর নিউজ। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এধরণের কোন তালিকা প্রকাশ করেনি। যারা বার বার এধরণের তালিকা বা মনোনয়ন নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে, তাদের উদ্দেশ্য অসৎ। এসব গুজব দেখলেই পেজে ইনবক্স করুন অথবা মেইল করুন [email protected] এই ইমেইলে।’ 

অর্থাৎ, উপরোক্ত তথ্য উপাত্ত পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, ৯৭ টি আসনে আওয়ামী লীগ থেকে নিশ্চিত মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়ে বাংলা ইনসাইডারে প্রকাশিত সংবাদটি সঠিক নয়।

মূলত, গত ১৪ সেপ্টেম্বরে ওয়েব পোর্টাল ‘বাংলা ইনসাইডার’ এ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে একটি তালিকা প্রকাশ করে বলা হয় যে উল্লেখিত ব্যক্তিগণ আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৯৭ টি আসনে আওয়ামী লীগ থেকে নিশ্চিত মনোনয়ন পাবেন। পরবর্তীতে এই প্রতিবেদনের সূত্র দিয়ে ফেসবুকেও বিষয়টি প্রচার হতে থাকে। তবে অনুসন্ধানে জানা যায়, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে আওয়ামী লীগ এখনো কোনো আসনের প্রার্থীর মনোনয়ন নিশ্চিত করেনি। দলটির অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে এক পোস্টের মাধ্যমে ৯৭ টি আসনে মনোনয়ন দেওয়ার ব্যাপারটিকে গুজব বলে নিশ্চিত করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি “৩০০ আসনের প্রার্থীর নাম প্রকাশ করলো আওয়ামী লীগ” শীর্ষক দাবিতে একটি তথ্য ইন্টারনেটে প্রচার করা হলে বিষয়কে মিথ্যা হিসেবে শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৯৭ টি আসনে আওয়ামী লীগ থেকে নিশ্চিত মনোনয়ন পাওয়ার দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি বানোয়াট ও মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

  • Bangladesh Awami League – Facebook Post
  • Rumor Scanner’s own analysis

৩০০ আসনের প্রার্থীর নাম এখন পর্যন্ত প্রকাশ করেনি আওয়ামী লীগ

সম্প্রতি, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে আওয়ামী লীগের ৩০০ আসনের প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে দাবিতে নব সংবাদ নামের একটি অনলাইন পোর্টালের প্রতিবেদন সূত্রে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। 

৩০০ আসনে

অনলাইন পোর্টাল ‘নব সংবাদ’ এর প্রতিবেদন দেখুন এখানে

উক্ত দাবিতে উল্লিখিত অনলাইন পোর্টাল সূত্রে

ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য এখন পর্যন্ত ৩০০ আসনের প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ করেনি আওয়ামী লীগ বরং নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যসূত্র ছাড়াই ভিত্তিহীনভাবে আলোচিত এই তালিকাটি প্রচার করা হচ্ছে।

Screenshot Collage by Rumor Scanner 

এবিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত তালিকাটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ম্যানুয়ালি সার্চের মাধ্যমে প্রচারিত এই তালিকায় ২২ জন মৃত ব্যক্তির নাম খুঁজে পাওয়া যায়। এরা সবাই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। এরা হলেন- আকবর হোসেন পাঠান ফারুক (ঢাকা-১৭), হাবিবুর রহমান মোল্লা (ঢাকা-৫), আসলামুল হক (ঢাকা-১৪), সাহারা খাতুন (ঢাকা-১৮), সাজেদা চৌধুরী (ফরিদপুর-২), অ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরু (কুমিল্লা-৫), অধ্যাপক আলী আশরাফ (কুমিল্লা-৭), খন্দকার আব্দুল বাতেন (টাঙ্গাইল-৬), একাব্বর হোসেন (টাঙ্গাইল-৭), সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম (কিশোরগঞ্জ-১), মাহমুদ-উস-সামাদ চৌধুরী কায়েস (সিলেট-৩), রেবেকা মমিন (নেত্রকোনা-৪), ডা. ইউনুস আলী সরকার (গাইবান্ধা-৩), ফজলে রাব্বী মিয়া (গাইবান্ধা-৫), মোজাম্মেল হোসেন (বাগেরহাট-৪), ইসমত আরা সাদেক (যশোর-৬), আব্দুল মান্নান (বগুড়া-১), ইসরাফিল আলম (নওগাঁ-০৬), আব্দুল কুদ্দুস (নাটোর-৪), মোহাম্মদ নাসিম (সিরাজগঞ্জ-১), হাসিবুর রহমান স্বপন (সিরাজগঞ্জ-৬) এবং শামসুর রহমান শরীফ ডিলু (পাবনা-৪)।

Screenshot Collage by Rumor Scanner 

এছাড়াও ঢাকা-১০ আসনের প্রার্থী হিসেবে শেখ ফজলে নূর তাপসের নাম উল্লেখ করা হয়েছে যিনি বর্তমানে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

আলোচিত দাবির সত্যতা যাচাইয়ে অনুসন্ধানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে এসম্পর্কিত একটি সতর্কতামূলক পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত পোস্টে বলা হয়, ‘এগুলো গুজব ও বিভ্রান্তিকর নিউজ। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এধরণের কোন তালিকা প্রকাশ করেনি। যারা বার বার এধরণের তালিকা বা মনোনয়ন নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে, তাদের উদ্দেশ্য অসৎ। এসব গুজব দেখলেই পেজে ইনবক্স করুন অথবা মেইল করুন [email protected] এই ইমেইলে।’

অর্থাৎ, উপরোক্ত বিষয়গুলো পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ৩০০ আসনের প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ করা হয়নি।

মূলত, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিভিন্ন আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ব্যক্তিরা মনোনয়নের জন্য দলের নানা মহলে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় মনোনয়ন প্রত্যাশী ব্যক্তিদের মনোনয়ন প্রাপ্তির নানা হিসাব নিকাশ  নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন তথ্য প্রচার করা হচ্ছে। তারই অংশ হিসেবে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ৩০০ আসনের প্রার্থীর নাম প্রকাশ করা হয়েছে দাবি করে কথিত ৩০০ প্রার্থীর একটি নামের তালিকা প্রচার করেছে ‘নব সংবাদ’ নামের একটি অনলাইন পোর্টাল। তবে অনুসন্ধানের দেখা যায়, প্রচারিত এই তালিকার ২২ জন ব্যক্তিই মৃত। যারা প্রত্যেকে একাদশ জাতীয় সংসদের সংসদ সদস্য ছিলেন। তাদের মৃত্যুর পর অধিকাংশ আসন গুলোতেই উপ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং কিছু আসনে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, আগামী নির্বাচন উপলক্ষে আওয়ামী লীগ এখন পর্যন্ত দলীয় প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ করেনি। দলটির ভেরিফাইড ফেসবুক পেজের এক পোস্টের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। 

সুতরাং, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে আওয়ামী লীগের ৩০০ আসনের প্রার্থীর নাম প্রকাশ করার বিষয়টি সম্পূর্ণ বানোয়াট ও মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

লন্ডনে গণধোলাই খেয়ে তারেক রহমানের হাসপাতালে ভর্তির ভুয়া দাবি ভাইরাল

0

সম্প্রতি, ‘লন্ডনে গণধোলাই খেয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান হাসপাতালে ভর্তি‘ শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

গণধোলাই

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ),  পোস্ট (আর্কাইভ)।

টিকটকে প্রচারিত এমন কিছু ভিডিও দেখুন  ভিডিও (আর্কাইভ), ভিডিও (আর্কাইভ)। 

ইউটিউবে প্রচারিত এমন একটি ভিডিও দেখুন  ভিডিও (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে ২০১৮ সালে ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ),  পোস্ট (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, লন্ডনে গণধোলাই খেয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন শীর্ষক দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে ভাইরাল এই ভিডিওটি ২০০৮ সালে দেশ ত্যাগ করে তারেক রহমান লন্ডনে যাওয়ার পর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যাওয়ার সময়ের।

দাবিটি নিয়ে অনুসন্ধানে কি-ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে Sports Hour24 নামের একটি ওয়েবসাইটে  ২০১৭ সালের ২৬ জুলাই ‘লন্ডনে তারেক জিয়ার মাথায় ব্যান্ডেজ বাঁধা ভিডিও নিয়ে তোলপাড়’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, আলোচিত ভিডিওটি ২০১৭ সালেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হয়েছিল। তবে প্রতিবেদনটিতে তারেক রহমানের ঘনিষ্ট সূত্রের বরাতে দাবি করা হয়, ভিডিও ২০১৭ সালেরও নয়। বরং তারেক রহমান যখন বাংলাদেশ থেকে ওয়ান ইলেভেনের সরকারের সময়ে বিদেশে চিকিৎসার জন্য যান তখনকার।

উক্ত প্রতিবেদনটি ছাড়াও জাতীয় পর্যায়ের দৈনিক আমাদের সময় ডটকমের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজেও ২৫ জুলাই একই শিরোনামে ‘লন্ডনে তারেক জিয়ার মাথায় ব্যান্ডেজ বাঁধা ভিডিও নিয়ে তোলপাড়’ শীর্ষক একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Amader somoy

তবে পোস্টটিতে থাকা লিংকটিতে প্রবেশ করে কোনো প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

পরবর্তীতে অধিকতর অনুসন্ধানে একই বছরের ১৮ জুলাই পলাশ রহমান নামের এক ব্যক্তির ‘একটা গুজব অাজ অনলাইনে ছড়ানো হয়েছে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমান কে মাথায় গুলি করা হয়েছে। এক্ষেত্রে ২০০৮ সালের মাথায় ব্যান্ডেজ দিয়ে হুইল চেয়ারে বসা ছবি টাকে দেখানো হচ্ছে। ছবি তে দেখা যায় সাথে তৎকালিন ইউ কে বিএনপির সভাপতি মরহুম কমর উদ্দিন সাহেব কেও।’ শীর্ষক ক্যাপশনে একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Palash Rahman facebook post

এই পোস্টটির সূত্রে পরবর্তী অনুসন্ধানে ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম ইউটিউবের Khaled Patwary নামের একটি চ্যানেলে ২০০৮ সালের ২৭ ডিসেম্বর ‘রাজনীতিতে জড়িত না হওয়ার মুচেলেকা দিয়ে, গুরুতর অসুস্থ অবস্তায় লন্ডনে এসেছেন বিএনপি নেতা তারেক রহমান (আর্কাইভ)’ শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিওটির সাথে লন্ডনে গণধোলাই খেয়ে তারেক রহমান হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

Video Comparison: Rumor Scanner 

পাশাপাশি ভিডিওটির বিস্তারিত বিবরণী থেকে জানা যায়, ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর তারেক রহমানের মা বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তির পর তিনি যুক্তরাজ্যের লন্ডনে চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যের সেন্ট জনস উডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য এসেছেন।

এছাড়া ইংরেজি জাতীয় দৈনিক ডেইলি স্টারে ২০০৮ সালের ১২ সেপ্টেম্বর ‘Tarique quits party post, flies to UK’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকেও তারেক রহমানের ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাজ্যে যাওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়। 

অর্থাৎ, লন্ডনে গণধোলাই খেয়ে তারেক রহমান হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় এবং এই দাবির সঙ্গে ভিডিওটির প্রকৃত ঘটনারও কোনো মিল নেই।

মূলত, ২০০৭ সালের জানুয়ারি মাসের ১১ তারিখ সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে ফখরুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠিত হওয়ার পর ৭ই মার্চ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান গ্রেফতার হন। পরবর্তীতে আঠারো মাস কারাগারে থাকার পর ২০০৮ সালের ৩রা সেপ্টেম্বর তারেক রহমান মুক্তি পান। পরবর্তীতে ১১ই সেপ্টেম্বর তারেক রহমান পরিবারের সদস্যদেরকে সাথে নিয়ে লন্ডনের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়েন এবং যুক্তরাজ্যের ওয়েলিংটন হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য যান। সেই সময়ে ধারণকৃত একটি ভিডিওকে পূর্বে ২০১৮ সালে এবং পরবর্তীতে সাম্প্রতিক সময়ে লন্ডনে গণধোলাই খেয়ে তারেক রহমান হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, তারেক রহমান লন্ডন যাত্রার আগে তার মা বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন যে, সুস্থ না হয়ে উঠা পর্যন্ত তারেক রহমান রাজনীতির বাইরে থাকবেন। এ প্রসঙ্গে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি বাংলায় ২০২০ সালে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন দেখুন 

সুতরাং, লন্ডনে গণধোলাই খেয়ে তারেক রহমানের হাসপাতালে ভর্তির দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

আলোচিত হৃদয় হত্যার ঘটনায় ফারাজ করিমের নামে ভুয়া অ্যাকাউন্ট খুলে আর্থিক প্রতারণা

0

সম্প্রতি, চট্টগ্রাম-৬ আসনের সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীর পুত্র ফারাজ করিম চৌধুরীর নাম ও ছবি ব্যবহার করে তৈরি Faraaz Karim Chowdhury নামের একটি অ্যাকাউন্ট থেকে শিবলী সাদিক হৃদয় নামের মৃত এক কলেজ শিক্ষার্থীর বাবাকে সহায়তার জন্য অনুদান চেয়ে একটি পোস্ট ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

ফারাজ করিম

ফেসবুকে প্রচারিত পোস্টটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, শিবলী সাদিক হৃদয়ের বাবাকে সহায়তার জন্য অনুদান চেয়ে ফারাজ করিম চৌধুরী কোনো পোস্ট করেননি বরং তার নামে ভুয়া ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুলে হৃদয়ের বাবাকে সাহায্যের জন্য অনুদান চাওয়া হচ্ছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে Faraaz Karim Chowdhury নামের ফেসবুক অ্যাকাউন্টের ট্রান্সপারেন্সি সেকশন যাচাই করে দেখা যায়, উক্ত অ্যাকাউন্টটি আজই (১৬ সেপ্টেম্বর) খোলা হয়েছে। 

Screenshot: Facebook

কিন্তু ফারাজ করিমের পূর্ব থেকেই একটি ফেসবুক পেজ রয়েছে। পেজটির অ্যাক্টিভিটি পর্যালোচনা করে সহজেই প্রতীয়মান হয়, উক্ত পেজটি ফারাজের আসল পেজ। 

পরবর্তীতে, ফারাজ করিম চৌধুরীর ফেসবুক পেজ থেকে আজ (১৬ সেপ্টেম্বর) একটি পোস্টের (আর্কাইভ) মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয় যে, চট্টগ্রামের নিহত শিক্ষার্থীর জন্য ফারাজ করিম চৌধুরীর পক্ষ থেকে কোনো আর্থিক সহযোগিতা চাওয়া হয়নি এবং উক্ত ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি ভুয়া।

Screenshot: Facebook 

মূলত, গত ১১ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামে রাউজানের কদলপুর-রাঙ্গুনিয়া সীমান্তবর্তী পাহাড়ি এলাকা থেকে পুলিশ হৃদয়ের ক্ষত-বিক্ষত ও খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার করে। নিহত শিক্ষার্থী হৃদয়ের বাবার জন্য সহায়তার অনুদান চেয়ে Faraaz Karim Chowdhury নামের একটি পেজ থেকে পোস্ট করা হয়। কিন্তু রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত অ্যাকাউন্টটি ফারাজ করিম চৌধুরীর নয় এবং তার পক্ষ থেকে চট্টগ্রামের নিহত শিক্ষার্থী হৃদয়ের বাবা সহায়তার জন্য কোনো প্রকার অনুদানও চাওয়া হয়নি। 

উল্লেখ্য, পূর্বে ফারাজ করিম চৌধুরীর নামে ফেসবুক পেজ খুলে সহায়তার অনুদান চেয়ে পোস্ট করা হলে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। 

প্রসঙ্গত, চট্টগ্রামের রাউজানে ২ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায়ের পরও শিবলী সাদিক হৃদয় (২০) নামের এক কলেজ শিক্ষার্থীকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এই ঘটনায় পুলিশের কাছ থেকে অপহরণকারীদের একজনকে ছিনিয়ে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে স্থানীয় জনতা। গত ১১ সেপ্টেম্বর সকালে রাউজানের কদলপুর-রাঙ্গুনিয়া সীমান্তবর্তী পাহাড়ি এলাকা থেকে পুলিশ হৃদয়ের ক্ষত-বিক্ষত ও খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার করেছে।

সুতরাং, ফারাজ করিম চৌধুরীর নাম এবং ছবি ব্যবহার করে একটি ভুয়া অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে তিনি চট্টগ্রামের নিহত শিক্ষার্থী হৃদয়ের বাবাকে সাহায্যের জন্য অনুদান সংগ্রহ করছেন শীর্ষক একটি দাবি ইন্টারনেটে প্রচারিত হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

  • Faraaz Karim Chowdhury Facebook Post 

আজকের পত্রিকা’র ফটোকার্ড বিকৃত করে মির্জা ফখরুলের নামে ভুয়া মন্তব্য প্রচার

0

সম্প্রতি, দৈনিক আজকের পত্রিকা’র সূত্রে ‘ক্ষমতায় গেলে বাইডেন ও ঋষি সুনাক এর বিচার করা হবে- মির্জা ফখরুল ইসলাম’ শীর্ষক তথ্য সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

মির্জা ফখরুল

ফেসবুকে প্রচারিত এমনকিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সম্প্রতি বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাককে নিয়ে এমন কোনো মন্তব্য করেননি এবং উল্লিখিত দাবিতে দৈনিক আজকের পত্রিকাও কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি বরং গণমাধ্যমটির ফেসবুক পেজে জো বাইডেনকে নিয়ে করা মির্জা ফখরুল ইসলামের মন্তব্য নিয়ে প্রকাশিত একটি সংবাদের ফটোকার্ডকে বিকৃত করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত ফটোকার্ডটি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, উক্ত ফটোকার্ডটিতে আজকের পত্রিকার লোগো রয়েছে।

পরবর্তীতে উল্লিখিত তথ্যের সূত্র ধরে দৈনিক আজকের পত্রিকার ফেসবুক পেজ পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। অনুসন্ধানে, গণমাধ্যমটির ফেসবুক পেজে গত ১০ সেপ্টেম্বর “বাইডেনের সঙ্গে সেলফি তুলে সরকার ভাবছে জিতে গেছে: মির্জা ফখরুল ইসলাম” শীর্ষক শিরোনাম সম্বলিত একটি ফটোকার্ড (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ফটোকার্ডের সাথে আলোচিত ফটোকার্ডের সাদৃশ্য খুঁজে পাওয়া যায়। পাশাপাশি আলোচিত ফটোকার্ডে সংযুক্ত মির্জা ফখরুল ইসলামের ছবির সাথে আজকের পত্রিকার ফেসবুক পেজে প্রচারিত ফটোকার্ডে সংযুক্ত ছবির হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Photocard Comparison by Rumor Scanner

তবে আলোচিত ফটোকার্ডে মির্জা ফখরুল ইসলামের মন্তব্য বলে জো বাইডেন এবং ঋষি সুনাককে বিচার করার কথা উল্লেখ করা হলেও আজকের পত্রিকার ফেসবুক পেজে প্রকাশিত ফটোর্কাডে তা উল্লেখ নেই।

এছাড়া, একই দিনে দৈনিক আজকের পত্রিকার ওয়েবসাইটে “বাইডেনের সঙ্গে সেলফি তুলে সরকার ভাবছে জিতে গেছে: মির্জা ফখরুল” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়।

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, রোববার (১০ সেপ্টেম্বর)  রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সাবেক অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই স্মরণসভায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। তা না হলে কোনো সেলফিই আপনাদের রক্ষা করতে পারবেন না।’ 

ওবায়দুল কাদেরকে পরামর্শ দিয়ে ফখরুল বলেন, ‘আমি বলি, আমার পরামর্শটা নেবেন? সেটা হচ্ছে যে ওই ছবিটা বাঁধিয়ে গলায় নিয়ে ঘোরেন আর জনগণকে বোঝানোর চেষ্টা করেন, আমেরিকা ও বাইডেন আমাদের (সরকার) সঙ্গে আছে।’ 

সরকারকে উদ্দেশ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এত নিঃস্ব হয়ে গেছেন যে বাইডেনের সঙ্গে সেলফি তুলে ঢোল পেটাচ্ছেন আমরা (সরকার) জিতে গেছি।’ 

তাছাড়া, উক্ত বিষয়ে অন্যান্য গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনগুলো দেখুন ডেইলি স্টার এবং প্রথম আলো। 

তথ্যটি অধিকতর যাচাইয়ের জন্য দৈনিক আজকের পত্রিকার সাথে যোগাযোগ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। এ বিষয়ে আজকের পত্রিকা ডিজিটাল কন্টেন্ট ম্যানেজমেন্টের ইনচার্জ হযরত আলী গাজী রিউমর স্ক্যানারকে বলেন, এই ধরনের ফটোকার্ড আমরা করিনি। আমাদের মূল ফটোকার্ডের ফন্টের সাথে তুলনা করলেই দেখবেন, দুইটার ফন্ট আলাদা। কেউ আসলে অসৎ উদ্দেশ্যে এই কাজ করে থাকতে পারে।

অর্থাৎ, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জো বাইডেন এবং ঋষি সুনাকের বিচার করা হবে এমন কোনো মন্তব্য করেননি এবং বর্তমান সরকারকে নিয়ে মন্তব্য করেছেন। 

মূলত, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গত ১০ সেপ্টেম্বর এক স্মরণসভায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের করা পূর্বের এক বক্তব্যে জেরে তিনি “বাইডেনের সঙ্গে সেলফি তুলে সরকার ভাবছে জিতে গেছে…” শীর্ষক মন্তব্য করেন৷ উক্ত বক্তব্যের ভিত্তিতে জাতীয় দৈনিক আজকের পত্রিকার ফেসবুক পেজে “বাইডেনের সঙ্গে সেলফি তুলে সরকার ভাবছে জিতে গেছে: মির্জা ফখরুল ইসলাম” শীর্ষক তথ্য উল্লেখ করে ফটোকার্ড প্রকাশিত হয়। উক্ত ফটোকার্ডকেই ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় বিকৃত করে জো বাইডেন ও ঋষি সুনাককে বিচার করা হবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন মন্তব্য করেছেন উল্লেখ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত আট মাসে বিভিন্ন গণমাধ্যমের নাম, লোগো, শিরোনাম এবং নকল ফটোকার্ড ব্যবহার করে অপপ্রচারের বিষয়ে বিস্তারিত ফ্যাক্ট ফাইল প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, ক্ষমতায় গেলে বাইডেন ও ঋষি সিনাক এর বিচার করা হবে- মির্জা ফখরুল ইসলাম’’ শীর্ষক মন্তব্যটি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং উক্ত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডটি এডিটেড বা বিকৃত।

তথ্যসূত্র

বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী এবং মির্জা আব্বাসের বক্তব্য বিকৃত করে প্রচার

0

সম্প্রতি, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী একই দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস উদ্দিন আহমেদকে ‘নমরুদ ফেরাউন’ বলে কটাক্ষ করেছেন দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

যা দাবি করা হচ্ছে

১১ সেকেন্ড দৈর্ঘ্যের ভিডিওটির প্রথমে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস উদ্দিন আহমেদ বলতে দেখা যায়, “তিন তিন বার গণতান্ত্রিক ভাবে ভোটের মাধ্যমে তারা ক্ষমতায় এসেছে।” ভিডিওটির পরবর্তী অংশে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, “আপনি এটা কি করে বলতে পারলেন? আপনি নমরুদ, আপনি ফেরাউন, আপনি হিটলারের আত্মা।”

রুহুল কবির রিজভী

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু ভিডিও দেখুন পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ)।

এক্সে (সাবেক টুইটার) প্রচারিত এমন একটি ভিডিও দেখুন পোস্ট (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, মির্জা আব্বাস উদ্দিন আহমেদকে কটাক্ষ করে রুহুল কবির রিজভী এমন কোনো মন্তব্য করেননি বরং ভিন্ন সময় ও প্রেক্ষাপটের মির্জা আব্বাস এবং রুহুল কবির রিজভীর আলাদা দুইটি অনুষ্ঠানের বক্তব্যের ভিডিও সম্পাদনার মাধ্যমে কাটছাঁট করে খণ্ড খণ্ড অংশ জোড়া লাগিয়ে উক্ত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

মির্জা আব্বাসের বক্তব্যের ভিডিও যাচাই

ভিডিওটির কিছু কি-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে ‘Bangla Vision’ এর ফেসবুক পেজে গত ১৮ আগস্ট “আলোর দেখা পাচ্ছি, সামনে আমাদের দিন আসছে: মির্জা আব্বাস” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিওর সাথে উক্ত দাবিতে প্রচারিত আলোচিত ভিডিওর হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner

ভিডিওটি থেকে জানা যায়, গত ১৮ আগস্ট বিকালে গুলশান-১ ডিসিসি মার্কেটের সামনে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি আয়োজিত গণমিছিলের আগে মির্জা আব্বাস এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য দেন। বক্তব্য দেওয়ার এক পর্যায়ে তিনি বলেন, ‘আমি একদিন স্কুল খুঁজতেছিলাম, যেই স্কুলে ভর্তি হলে মিথ্যা কথা শেখা যায়। যেই স্কুলে ভর্তি হলে আজকের প্রধানমন্ত্রীর হাসিনার মতো, যেই স্কুলে ভর্তি হলে কাদেরের মতো মিথ্যা কথা শেখা যায়। ভাই এরা যে কোন স্কুল থেকে পড়ছে আমি জানিনা। এতো মিথ্যা কথা বলে আমি জানিনা। বলে কি জানেন? “তিন তিন বার গণতান্ত্রিক ভাবে ভোটের মাধ্যমে তারা ক্ষমতায় এসেছে। আয়নায় কি নিজের মুখটাও দেখেনা?

অর্থাৎ, মির্জা আব্বাস সেদিন আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ্য করে এসব কথা বলছিলেন।

রুহুল কবির রিজভীর বক্তব্যের ভিডিও যাচাই

ভিডিওটির মূল সূত্রের বিষয়ে অনুসন্ধানে সময় টিভির ইউটিউব চ্যানেলে গত ১ আগস্ট “পুলিশ শেখ হাসিনার প্রাইভেট বাহিনী: রিজভি” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনের সাথে আলোচিত ভিডিওর মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ১ আগস্ট নয়াপল্টনে কেরানীগঞ্জ দক্ষিণ থানা বিএনপির উদ্যোগে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের উপর হামলার প্রতিবাদে আয়োজিত এক সমাবেশে রুহুল কবির রিজভী বক্তব্য দেন। রুহুল কবির রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী আপনার মধ্যে বিবেক থাকতো, মহিলাদের মধ্যে মানবতাবোধ বেশি থাকে কিন্তু আপনার মধ্যে সেই মানবতাবোধ নেই। আপনি নমরুদ, আপনি ফেরাউন আপনি হিটলারের আত্মা। হিটলারের আত্মা আপনার মধ্যে ভর করেছে বলেই আপনি আজকে হাফেজ আবরারের সোনার ছেলে, হাফেজ রেজাউলকে, সাজিদ বাবুকে, রহিম নেওয়াজকে এবং সর্বোপরি এদেশের একজন জাতীয় নেতা গায়েশ্বর চন্দ্র রায়কে আঘাত করতে দ্বিধা করেননি।

অর্থাৎ, রুহুল কবির রিজভী সেদিন প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে এসব কথা বলেন।

মূলত, গত ১৮ আগস্ট বিএনপির এক কর্মসূচিতে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস উদ্দিন আহমেদ এর দেওয়া বক্তব্যের সম্পূর্ণ অংশ তুলে না ধরে শুধু “তিন তিন বার গণতান্ত্রিক ভাবে ভোটের মাধ্যমে তারা ক্ষমতায় এসেছে” শীর্ষক অংশ তুলে ধরে ভিডিওর পরবর্তী অংশে গত ১ আগস্ট বিএনপির আরেক কর্মসূচিতে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর দেওয়া বক্তব্যের “আপনি নমরুদ, আপনি ফেরাউন আপনি হিটলারের আত্মা।” শীর্ষক অংশ যুক্ত করে মির্জা আব্বাসকে রুহুল কবির রিজভী সমালোচনা করেছেন দাবিতে বিকৃতভাবে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে। যার ফলে আলোচিত ভিডিওটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে।

প্রসঙ্গত, পূর্বে বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভীর বক্তব্য বিকৃত করে প্রচার করা হলে বিষয়টি শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী একই দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস উদ্দিন আহমেদকে নমরুদ ফেরাউন বলেছেন দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত ভিডিওটি সম্পূর্ণ এডিটেড বা বিকৃত।

তথ্যসূত্র

পৃথিবীর সেরা সন্ত্রাসীর তালিকায় প্রধানমন্ত্রীর নাম থাকার দাবিটি গুজব

0

সম্প্রতি ‘পৃথিবীর সেরা সন্ত্রাসী’র তালিকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম’ থাকার দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে।

টিকটকে প্রচারিত এমন কিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

প্রধানমন্ত্রীর

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, পৃথিবীর সেরা সন্ত্রাসীর তালিকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে লন্ডনভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম Channel 4 News এ প্রকাশিত একটি পুরানো প্রতিবেদনের বরাতে ভিত্তিহীনভাবে উক্ত ভিডিওটি প্রচার করা হচ্ছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটিতে বিদ্যমান 4 News এর লোগোর সূত্রে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে লন্ডনভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম Channel 4 News এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০১৮ সালের ১৮ এপ্রিল Bangladesh PM refuses to answer questions on human rights record শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।  

Screenshot: Channel 4 News 

উক্ত ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২০১৮ সালের কমনওয়েলথ সামিটে অংশগ্রহণ করার উদ্দেশ্যে যুক্তরাজ্যে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সে সময় সেন্ট্রাল লন্ডনে উন্নয়নের উপর একটি বক্তব্য দেন তিনি। এরপর স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে একটি বৈঠকে নানা প্রশ্নে উত্তর দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

পাশাপাশি এ সময় প্রধানমন্ত্রীর যুক্তরাজ্য সফরকে কেন্দ্র করে সেখানে বসবাসকারী বিএনপি সমর্থকদের প্রতিবাদের চিত্রও তুলে ধরা হয় প্রতিবেদনটিতে। যার সঙ্গে আলোচিত ভিডিওটির  হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

Video Comparison: Rumor Scanner 

তবে প্রতিবেদনটি বিশ্লেষণ করে পৃথিবীর সেরা সন্ত্রাসীর তালিকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম থাকার বিষয়ে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।  

পরবর্তীতে দাবিটি নিয়ে অধিকতর অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক বিভিন্ন কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমেও জাতীয় বা আন্তর্জাতিক কোনো নির্ভরযোগ্য গণমাধ্যম সূত্রেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে এমন কোনো তথ্যের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

উল্লেখ্য, ইতোপূর্বেও বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিশ্বের নিকৃষ্ট শাসক, বিশ্বের তৃতীয় সৎ সরকার প্রধান, জাতিসংঘ কর্তৃক বিশ্বের সেরা স্বৈরাচার প্রধানমন্ত্রী, বিশ্বের দ্বিতীয় সেরা প্রধানমন্ত্রী শীর্ষক বিভিন্ন দাবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছিল। 

তবে এসব দাবি নিয়ে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রত্যেকটি দাবিই মিথ্যা। যেগুলো মূলত কিছু ভিত্তিহীন প্রতিষ্ঠান, ভুঁইফোড় অনলাইন পোর্টাল ও সামাজিক যোগাযোগ সাইটের বরাতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছিল।

রিউমর স্ক্যানার কর্তৃক প্রকাশিত এমন কিছু ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন দেখুন  

মূলত, ২৫ তম কমনওয়েলথ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করার জন্যে ২০১৮ সালে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেসময় বাংলাদেশের চলমান মানবাধিকার সংকট নিয়ে একটি মাল্টিমিডিয়া প্রতিবেদন প্রকাশ করে লন্ডনভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম Channel 4 News। সম্প্রতি উক্ত প্রতিবেদনটিকেই পৃথিবীর সেরা সন্ত্রাসীর তালিকায় শেখ হাসিনার নাম থাকার দাবিতে ইন্টারনেটে  প্রচার করা হচ্ছে। তবে  অনুসন্ধানে দেখা যায়, এই প্রতিবেদনটিতে পৃথিবীর সেরা সন্ত্রাসীর তালিকায় শেখ হাসিনার নাম থাকার বিষয়ে কোনো তথ্য নেই। এছাড়া জাতীয় বা আন্তর্জাতিক দেশী-বিদেশী কোনো নির্ভরযোগ্য গণমাধ্যম সূত্রেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে এমন কোনো তথ্যের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, পৃথিবীর সেরা সন্ত্রাসীর তালিকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম থাকার দাবিতে ইন্টারনেটে একটি ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

লিওনেল মেসির ইংরেজিতে কথা বলার ভিডিওটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে তৈরি

সম্প্রতি, ফুটবল তারকা লিওনেল মেসি ইংরেজিতে কথা বলেছেন শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

মেসি

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু ভিডিও দেখুন পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ) এবং পোস্ট (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, লিওনেল মেসি ইংরেজিতে কথা বলার দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) এর সাহায্যে তৈরি করা। প্রকৃতপক্ষে ভিডিওটি মেসির নতুন ক্লাব ইন্টার মায়ামির প্রথম প্রেস কনফারেন্সের। তিনি সেদিন স্প্যানিশ ভাষায় কথা বলেন।

ভিডিওটি থেকে কিছু স্থিরচিত্র নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে আমেরিকার ফুটবল ক্লাব ইন্টার মায়ামির ইউটিউব চ্যানেলে গত ১৮ আগস্ট সরাসরি সম্প্রচারিত একটি ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Image comparison by Rumor Scanner

ভিডিও থেকে জানা যায়, গত ১৮ আগস্ট ফুটবল তারকা লিওনেল মেসি তার নতুন ক্লাব ইন্টার মায়ামিতে প্রথম প্রেস কনফারেন্সে অংশগ্রহণ করেন এবং সম্পূর্ণ কনফারেন্সে তিনি স্প্যানিশ ভাষায় কথা বলেন।

এছাড়া, আমেরিকান গণমাধ্যম ‘WSVN-TV’ এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ১৮ আগস্টে প্রকাশিত একই ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot From Youtube

পরবর্তীতে, উক্ত বিষয়ে স্পেনের ক্রীড়া গণমাধ্যম ‘Marca’ এ গত ১১ সেপ্টেম্বর “Messi speaks perfect English with AI and it sounds very weird” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot from Marca

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, আর্জেন্টিনার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) বিশেষজ্ঞ জাভি ফার্নান্দেজ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে মেসির কণ্ঠে ইংরেজি বলার উক্ত ভিডিওটি তৈরি করেছেন।

মূলত, গত ১৮ আগস্ট লিওনেল মেসির নতুন ক্লাব ইন্টার মায়ামির হয়ে প্রথম প্রেস কনফারেন্সে অংশগ্রহণ করেন। সেই প্রেস কনফারেন্সে মেসি স্প্যানিশ ভাষায় বক্তব্য রাখেন। তবে পরবর্তীতে আর্জেন্টিনার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) বিশেষজ্ঞ জাভি ফার্নান্দেজ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে মেসির সেই প্রেস কনফারেন্সটি স্প্যানিশ ভাষা থেকে ইংরেজি ভাষায় রুপান্তর করেন। পরবর্তীতে উক্ত ভিডিওটি আসল ভিডিও দাবিতে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে। যার ফলে আলোচিত ভিডিওটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে।

প্রসঙ্গত, পূর্বে ইন্টার মায়ামির হয়ে মেসি প্রথম ম্যাচে জোড়া গোল দেওয়ার দাবিতে পুরোনো ভিডিও প্রচার করা হলে বিষয়টি শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার। 

সুতরাং, ইন্টার মায়ামিতে লিওনেল মেসির প্রথম প্রেস কনফারেন্সে ইংরেজি ভাষায় কথা বলেছেন দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত ভিডিওটি বিকৃত বা এডিটেড।

তথ্যসূত্র

সাঈদীর মৃত্যুতে পুলিশ সদস্যের চাকরি ছেড়ে দেওয়ার ভুয়া দাবি ভাইরাল

0

সম্প্রতি ‘আল্লামা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীকে যে পুলিশ দেখাশোনা করত সাঈদী সাহেব মারা যাওয়ার পরে সেই পুলিশ চাকরি ছেড়ে দিয়েছে’ শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

সাঈদীর মৃত্যু

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ)।

টিকটকে প্রচারিত এমন কিছু ভিডিও দেখুন  ভিডিও (আর্কাইভ),  ভিডিও (আর্কাইভ), ভিডিও (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, জামায়েত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুর পর তার দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যের চাকরি ছেড়ে দেওয়ার দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি ভিন্ন ঘটনার। প্রকৃতপক্ষে এটি কুষ্টিয়ার সাবেক পুলিশ সুপার মোঃ খাইরুল আলমের কুষ্টিয়া থেকে বদলির সময়ে ধারণকৃত।

দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুর পর তার দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যের চাকরি ছেড়ে দেওয়ার দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি নিয়ে অনুসন্ধানে উক্ত পোস্টটির কমেন্টবক্সে সজল বিশ্বাস নামে এক ব্যক্তির একটি কমেন্ট খুঁজে পাওয়া যায়। 

যেখানে তিনি দাবি করেন, এটি কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার খাইরুল আলমের বদলিজনিত কারণে বিদায় নেওয়ার সময় আবেগঘন মুহূর্তের একটি ভিডিও। 

Screenshot: facebook post

তার এই কমেন্টের সূত্রে পরবর্তী অনুসন্ধানে CT News24 নামের একটি ফেসবুক পেজে গত ১৫ জুলাই ‘কুষ্টিয়া পুলিশ সুপার খায়রুল আলমের বিদায় সম্বর্ধনা’ শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত ভিডিওটির ৭ মিনিট ৩৫ সেকেন্ড থেকে ৭ মিনিট ৫০ সেকেন্ড পর্যন্ত অংশটির সাথে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুর পর তার দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যের চাকরি ছেড়ে দেওয়ার দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

Image Analysis: Rumor Scanner 

এছাড়া ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম ইউটিউবেও Noman Al Sakib নামের একটি চ্যানেলে গত ১৫ জুলাই ‘অশ্রুসিক্ত চোখে বিদায় নিলেন কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার; নিজে কাঁদলেন এবং কাঁদালেন সবাইকে!’ শীর্ষক শিরোনামে একই ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিওটির ৫ মিনিট ৪৫ সেকেন্ড থেকে ৫ মিনিট ৫৫ সেকেন্ড পর্যন্ত অংশের সাথে দাবিকৃত ভিডিওটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

পরবর্তীতে দাবিটি নিয়ে অধিকতর অনুসন্ধানে কুষ্টিয়া জেলা পুলিশের ফেসবুক পেজে ‘পুলিশের_চিরায়ত_নিয়মে_ফুলে_ফুলে_সুসজ্জিত_গাড়িতে_চড়ে_অশ্রুসিক্ত_নয়নে_বিদায়_নিলেন_কুষ্টিয়ার মানবিক পুলিশ সুপার’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। 

পোস্টটি থেকে জানা যায়, কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার (এসপি) মোঃ খাইরুল আলম কুষ্টিয়া জেলা থেকে হাইওয়ে পুলিশে বদলি হয়েছেন। এ উপলক্ষে গত ১৫ জুলাই কুষ্টিয়া জেলা পুলিশ লাইন্স থেকে বিদায়ী পুলিশ সুপারকে বাংলাদেশ পুলিশের চিরায়ত নিয়ম অনুযায়ী বিদায় জানানো হয়। এ বিদায় অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে আবেগঘন মুহূর্তের সৃষ্টি হয়। 

উপরিউক্ত আলোচনা থেকে প্রতীয়মান হয় যে, উক্ত ভিডিওটিকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুর পর তার দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যের চাকরি ছেড়ে দেওয়ার দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে। 

অপরদিকে দাবিকৃত ভিডিওটির ইনসার্টে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর সঙ্গে যে পুলিশ সদস্যটিকে দেখা যাচ্ছে, সে পুলিশ সদস্যটির সঙ্গেও বিদায়ী  পুলিশ সুপার (এসপি) মোঃ খাইরুল আলমের চেহারার মিল খুঁজে পাওয়া যায়নি।

Image Analysis: Rumor Scanner 

এছাড়া মূলধারার কোনো গণমাধ্যম সূত্রেও সাঈদীর মৃত্যুর পর কোনো পুলিশ সদস্যের চাকরি ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মূলত, গত ১৪ আগস্ট রাতে ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী। এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যের চাকরি ছেড়ে দেওয়ার আবেগঘন মুহূর্তের দৃশ্য দাবিতে একটি ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে। তবে অনুসন্ধানে দেখা যায়, দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, উক্ত ভিডিওটি গত ১৫ জুলাই কুষ্টিয়া জেলা পুলিশ লাইন্স থেকে জেলার তৎকালীন পুলিশ সুপার মোঃ খাইরুল আলমের বদলিজনিত কারণে বিদায়ের সময়ের তৈরি হওয়া আবেগঘন মুহূর্তের। 

সুতরাং, ভিন্ন ঘটনায় ধারণকৃত ভিডিওকে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুর পর তার দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যের চাকরি ছেড়ে দেওয়ার আবেগঘন মুহূর্তের ভিডিও দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ডিএমপির এডিসি সানজিদাকে এখনও কোথাও বদলি করা হয়নি

0

সম্প্রতি, ঢাকায় ছাত্রলীগের দুই কেন্দ্রীয় নেতাকে মারধরের ঘটনায় পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার সানজিদা আফরিন নিপাকে রংপুরে বদলি করা হয়েছে শীর্ষক একটি দাবি কতিপয় গণমাধ্যম সূত্রে ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার সানজিদাকে রংপুরে বদলি করা হয়েছে শীর্ষক দাবিটি সঠিক নয় বরং কতিপয় গণমাধ্যমে বদলি হতে পারে শীর্ষক খবর প্রকাশের সূত্রে বিষয়টি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লেও ডিএমপি এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এই তথ্যকে গুজব বলে নিশ্চিত করেছেন।

অনুসন্ধানের শুরুতে অনলাইন সংবাদমাধ্যম Dhaka Times এর ফেসবুক পেজের এ সংক্রান্ত ফটোকার্ড (আর্কাইভ) নজরে আসে রিউমর স্ক্যানার টিমের। ফটোকার্ডে পাশাপাশি দুইটি প্রতিবেদনের স্ক্রিনশট যুক্ত করা হয়েছে। একটিতে অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশীদকে রংপুরে বদলি করার সংবাদ এবং অন্যটিতে একই ঘটনায় পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) সানজিদা আফরিনকেও রংপুরে বদলি করা হচ্ছে বলে জানানো হয়। 

Screenshot source: Facebook

ঢাকা টাইমসের ওয়েবসাইটে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, সানজিদাকে শিগগির বদলি করা হবে বলে ১২ সেপ্টেম্বর রাতে পুলিশ সদর দপ্তর সূত্র ঢাকা টাইমসকে জানিয়েছে। সূত্র ঢাকা টাইমসকে জানায়, এডিসি হারুন অর রশীদকাণ্ডে গঠিত তদন্ত কমিটি প্রাথমিকভাবে ওই ঘটনায় সানজিদার জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছে। এরপরই তাকে বদলির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। রংপুর পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারে তাকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে বদলি করা হচ্ছে বলে সূত্রে জানা গেছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। 

পরবর্তীতে যুগান্তর এবং দীপ্ত নিউজ এর ওয়েবসাইটেও একই দাবিতে প্রতিবেদন প্রকাশ হতে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

এ বিষয়ে আরো অনুসন্ধান করে গতকাল (১৩ সেপ্টেম্বর) রাতে মূলধারার সংবাদমাধ্যম ঢাকা ট্রিবিউন এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মো. ফারুক হোসেন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, এডিসি সানজিদাকে রংপুর বদলি করার খবরের সত্যতা নেই। এখন পর্যন্ত এমন কোনো অর্ডার হয়নি। এডিসি সানজিদার বদলির বিষয়ে কোনো আদেশের কপি পাইনি। বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি।

Screenshot source: Dhaka Tribune

অন্যান্য গণমাধ্যমে প্রকাশিত একই খবর দেখুন সমকাল, কালবেলা।

পরবর্তীতে আজ (১৪ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিজ দপ্তরে এক সভা শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সাংবাদিকদের জানান, এডিসি সানজিদা আফরিনকে রংপুর পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারে (পিটিসি) বদলি করা হতে পারে বলে যে খবর প্রকাশিত হয়েছে তা গুজব।

তাছাড়া, একই ঘটনায় সাময়িক বরখাস্ত ডিএমপির অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (এডিসি) হারুন-অর-রশীদকে রংপুর রেঞ্জ ডিআইজির কার্যালয়ে সংযুক্ত করার বিষয়ে ১২ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব মো. মাহাবুর রহমান শেখ সই করা  এক প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে জানানো হয়। কিন্তু এডিসি সানজিদাকে রংপুরে বদলি সংক্রান্ত কোনো প্রজ্ঞাপন জারি হয়নি। 

মূলত, সম্প্রতি ঢাকার শাহবাগে ছাত্রলীগের দুই কেন্দ্রীয় নেতাকে মারধরের ঘটনায় পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার সানজিদা আফরিন নিপাকে রংপুরে বদলি করা হতে পারে শীর্ষক একটি দাবি কতিপয় গণমাধ্যমে প্রকাশের পর সানজিদাকে বদলি করা হয়েছে শীর্ষক একটি দাবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়তে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার। তবে অনুসন্ধানে জানা যায়, দাবিটি সঠিক নয়৷ সানজিদাকে এখন পর্যন্ত কোথাও বদলি করা হয়নি। সানজিদাকে রংপুর বদলি করার খবরের সত্যতা নেই বলে ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মো. ফারুক হোসেন এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল নিশ্চিত করেছেন। 

সুতরাং, এখনও কোথাও বদলি করা না হলেও পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার সানজিদাকে রংপুরে বদলি করা হয়েছে শীর্ষক একটি দাবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র