সম্প্রতি ‘প্রধানমন্ত্রী গ্রেফতার, দেশ সেনাবাহিনীর হাতে’ শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন একটি পোস্ট দেখুন এখানে। আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী গ্রেফতার কিংবা সেনাবাহিনীর হাতে দেশের ক্ষমতা যাওয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি বরং কোনো তথ্যসূত্র ছাড়াই ভিত্তিহীনভাবে ভিডিওটির থাম্বনেইলে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ছবি ব্যবহার করে অধিক ভিউ পাবার আশায় ভিডিওটি প্রচার করা হয়েছে।
গত ১০ এপ্রিল News Plus নামের ফেসবুক পেজ থেকে ‘প্রধানমন্ত্রী গ্রেফতার, দেশ সেনাবাহিনীর হাতে’ শীর্ষক শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে আলোচিত ভিডিওটি প্রকাশ করা হয়।

অনুসন্ধানের শুরুতে ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, এটি কয়েকটি প্রতিবেদন নিয়ে তৈরি একটি নিউজ বুলেটিন ভিডিও। ৯ মিনিট ৩৪ সেকেন্ডের এই ভিডিওটিতে ক্যাপশনের সাথে ভেতরের তথ্যের কোনো মিল খুঁজে পাওয়া যায়নি।
ভিডিওটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত শুনে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। ভিডিওটির শিরোনামে প্রধানমন্ত্রীর গ্রেফতার এবং সেনাবাহিনীর হাতে দেশের ক্ষমতা যাওয়ার বিষয়টি লেখা থাকলেও প্রতিবেদনের বিস্তারিত অংশে এই বিষয়ে কিছু বলা হয়নি। এছাড়াও ভিডিওটির থাম্বনেইলে ওবায়দুল কাদের, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ছবি দেওয়া রয়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিম যাচাই করে দেখেছে, ৯ মিনিট ৩৪ সেকেন্ডের এই ভিডিওটিতে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মোট ৯টি বিষয়ের ওপর সংবাদ পাঠ করা হয়ঃ
- আওয়ামী লীগ কাওয়ার্ড সরকার, বলেছেন মির্জা ফখরুল
- ছাত্রলীগের হামলায় বিএনপির অবস্থান কর্মসূচি পণ্ড, আহত ২৫
- লক্ষীপুরে আওয়ামী লীগ বিএনপি সংঘর্ষ, আহত ১৫
- নাটরে যুবলীগ ছাত্রলীগের হামলায় বিএনপির ২ নেতা আহত
- নির্বাচনে না এলে জোর করে আনতে পারবো না, বলেছেন কাদের
- বিএনপি চেয়ারপার্সনেট উপদেষ্টা মোক্তাদির গ্রেফতার
- পাকিস্তান এখন বাংলাদেশ হতে চায়, বলছেন কৃষিমন্ত্রী
- সরকারকে বিদায় নিতেই হবে, বলছেন নিপুন
- বঙ্গবাজারে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের ক্ষতিপূরণ ও পূর্নবাসন না করলে গণভবন ঘেরাও করা হবে, বলেছেন পেশাজীবী গণতান্ত্রিক জোট
প্রচারিত নিউজ বুলেটিন ভিডিও’র কোথাও প্রধানমন্ত্রী গ্রেফতার কিংবা দেশের ক্ষমতা সেনাবাহিনীর হাতে যাওয়ার বিষয়ে সংবাদ পাওয়া যায়নি। পাশাপাশি দেশীয় কিংবা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে কিংবা অন্যকোনো সূত্রে এমনকোন সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।
অর্থাৎ, প্রচারিত ভিডিও’র বিস্তারিত প্রতিবেদন, থাম্বনেইলে ভুল তথ্য উপস্থাপন এবং এই বিষয়ে গণমাধ্যমে কোনো প্রতিবেদন খুঁজে না পাওয়ায় এটা স্পষ্ট যে, প্রধানমন্ত্রী গ্রেফতার এবং দেশের ক্ষমতা সেনাবাহিনীর হাতে যাওয়ার দাবিটি সঠিক নয়।
মূলত, গত ১০ এপ্রিল একটি ভূঁইফোড় পেজ থেকে ‘প্রধানমন্ত্রী গ্রেফতার এবং দেশ সেনাবাহিনীর হাতে’ শীর্ষক চটকদার ক্যাপশন ও থাম্বনেইলে একটি নিউজ বুলেটিন ভিডিও প্রচারিত হয়। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে উক্ত ভিডিওতে প্রধানমন্ত্রী গ্রেফতার এবং দেশের ক্ষমতা সেনাবাহিনীর হাতে যাওয়া সংক্রান্ত কোনো খবর পাওয়া যায়নি। প্রকৃতপক্ষে, চটকদার ক্যাপশন এবং থাম্বনেইল ব্যবহার করে অধিক ভিউ পাবার আশায় উক্ত দাবিতে ভিডিওটি প্রচার করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ক্যাপশন এবং থাম্বনেইলে প্রচারিত তথ্যের সাথে ভিডিও প্রতিবেদনের মূল সংবাদের কোথাও উল্লেখ না করে অধিক ভিউ পাওয়ার আশায় দীর্ঘদিন ধরে একই কাজ করে আসছে উক্ত ফেসবুক পেজটি। এরকম বেশকয়েকটি তথ্যের সত্যতা যাচাই করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। এরকম কিছু প্রতিবেদন দেখুন এখানে এবং এখানে।
সুতরাং, কোনোপ্রকার তথ্যসূত্র ছাড়া একটি নিউজ বুলেটিন ভিডিওর ক্যাপশন এবং থাম্বনেইলে প্রধানমন্ত্রী গ্রেফতার এবং দেশের ক্ষমতা সেনাবাহিনীর হাতে যাওয়ার দাবি করা হচ্ছে; সম্পূর্ণ মিথ্যা।
তথ্যসূত্র
- Rumor Scanner Own Analysis