Home Blog Page 603

ওয়েবসাইট হ্যাক করে রেজাল্ট পরিবর্তনের দায়ে তিন শিক্ষার্থী আটকের তথ্যটি ভুয়া

0

গত ২৬ নভেম্বর উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। ফলাফল ঘোষণার দিন “ব্রেকিং নিউজ: ওয়েবসাইট হ্যাক করে রেজাল্ট পরিবর্তনের দায়ে ৩ শিক্ষার্থী আটক” শীর্ষক দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

অর্থাৎ, উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশের ওয়েবসাইট হ্যাক করে রেজাল্ট পরিবর্তনের দায়ে ৩ শিক্ষার্থী আটক হওয়ার একটি তথ্য ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

ওয়েবসাইট হ্যাক

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ওয়েবসাইট হ্যাক করে রেজাল্ট পরিবর্তনের দায়ে তিন শিক্ষার্থী আটক হওয়ার তথ্যটি সত্য নয় বরং কোনো প্রকার গ্রহণযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই উক্ত দাবিটি ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

বিভ্রান্তির সূত্রপাত

দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে NDC Version নামক একটি ফেসবুক পেজে গত ২৬ নভেম্বরে দুপুর ১:০৮ টার দিকে “ব্রেকিং নিউজ: ওয়েবসাইট হ্যাক করে রেজাল্ট পরিবর্তনের দায়ে ৩ শিক্ষার্থী আটক” শীর্ষক তথ্যের সম্ভাব্য প্রথম ফেসবুক পোস্টটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook

তবে উক্ত পোস্টে আলোচিত দাবিটির ব্যপারে কোনো তথ্যসূত্র দেওয়া হয়নি।

পরবর্তীতে NDC Version নামক পেজটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। পেজটির বায়ো সেকশন লক্ষ্য করে দেখা যায়, উক্ত পেজটি নটরডেম কলেজ, ঢাকা এর নামে তৈরি করা একটি মিম পেজ।

Screenshot: Facebook

অর্থাৎ, গত ২৬ নভেম্বরে NDC Version নামক পেজ থেকে দেওয়া পোস্টটি মজা বা মিম হিসেবে প্রচার করা হলেও পরবর্তীতে সেটি সত্য দাবিতে বিভিন্ন ফেসবুক অ্যাকাউন্ট, গ্রুপ এবং পেজে পোস্ট করা হয়েছে।

আলোচিত দাবিটির বিষয়ে অধিকতর অনুসন্ধানে যুক্তরাষ্ট্রের Fox7 Austin এর ওয়েবসাইটে ২০১৮ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি “Police: Former UGA student hacked into system to change grade” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি সংবাদ প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, ২০১৮ সালের মে মাসের শুরুর দিকে যুক্তরাষ্টের জর্জিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমস বিষয়ে অধ্যয়নরত ২১ বছর বয়সী মাইকেল ল্যামন উইলিয়ামস নামক শিক্ষার্থী তার গ্রেড পরিবর্তনের উদ্দেশ্যে সহকারী অধ্যাপকদের অ্যাকাউন্ট হ্যাক করায় তাকে জেলে পাঠানো হয়।

এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক সংবাদ সংস্থা AP এর ওয়েবসাইটে ২০১৮ সালের ১১ মে “Teen arrested for hacking school system, changing grades” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদ প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০১৮ সালের মে মাসে একটি কিশোরকে স্কুলের কম্পিউটার সিস্টেম হ্যাক করে ১০ জন শিক্ষার্থীর গ্রেড পরিবর্তন করার দায়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷

তবে বাংলাদেশে ওয়েবসাইট হ্যাক করে রেজাল্ট পরিবর্তনের দায়ে তিন শিক্ষার্থী আটক হয়েছেন কিনা সে বিষয়ের সত্যতা যাচাইয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইট এবং দেশিয় গণমাধ্যমে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মূলত, গত ২৬ নভেম্বর উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ করার দিন ওয়েবসাইট হ্যাক করে রেজাল্ট পরিবর্তনের দায়ে তিন শিক্ষার্থী আটক হওয়া নিয়ে একটি তথ্য ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিটির কোনো সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি। প্রকৃতপক্ষে, একটি স্যাটায়ার ধর্মী পেজ বিনোদনের উদ্দেশ্যে উক্ত দাবিটি প্রচার করা হলে পরবর্তীতে বিষয়টি সত্য দাবিতে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে। 

উল্লেখ্য, গত ২৬ নভেম্বর উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়।

সুতরাং, এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের দিনে ওয়েবসাইট হ্যাক করে রেজাল্ট পরিবর্তনের দায়ে তিন শিক্ষার্থী আটক হওয়া হওয়া নিয়ে ফেসবুকে একটি তথ্য প্রচারিত হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

রাস্তায় কাফনে মোড়ানো ফিলিস্তিনিদের লাশ দাবিতে আর্ট পারফরম্যান্সের দৃশ্য প্রচার

সম্প্রতি, রাস্তায় কাফনে মোড়ানো ফিলিস্তিনিদের লাশ দাবিতে শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। 

রাস্তায় কাফনে

টিকটকে প্রচারিত ভিডিও পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ইউটিউবে প্রচারিত শর্ট ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি রাস্তায় কাফনে মোড়ানো ফিলিস্তিনিদের লাশের কোনো দৃশ্যের নয় বরং এটি ইরানের তেহরানে অনুষ্ঠিত একটি আর্ট পারফরম্যান্সের দৃশ্য। 

অনুসন্ধানের শুরুতে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ইরানের সংবাদ সংস্থা Tasnim News Agency এর ওয়েবসাইটে গত ১৪ নভেম্বর “Art Performance Held in Tehran in Solidarity with Gaza Children” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ১৩ নভেম্বর ইসরায়েলি হামলায় নিহত গাজার শিশুদের সাথে সংহতি প্রকাশ করার জন্য তেহরানের প্যালেস্টাইন স্কয়ারে ‘সিম্ফনি অফ দ্য কিল্ড’ নামে একটি ইনস্টলেশন আর্ট পারফরম্যান্স অনুষ্ঠিত হয়। সেই অনুষ্ঠানের দৃশ্য এটি।

Video Comparison: Rumor Scanner

উক্ত প্রতিবেদনে থাকা মসজিদের ছবির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওতে প্রদর্শিত মসজিদের ছবির মিল রয়েছে। 

এছাড়া, একই তারিখে মধ্যপ্রাচ্যের সংবাদ মাধ্যম Nabd এর ওয়েবসাইটে “Dozens of symbolic shrouds in Palestine Square in Tehran” (ইংরেজি অনূদিত) শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য জানা যায়। 

পাশাপাশি, একই তথ্যে সংবাদ প্রকাশ করেছে আরও কিছু গণমাধ্যম। 

অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিওটি একটি আর্ট পারফরম্যান্সের প্রতীকী লাশের দৃশ্য। এরই মধ্যে রাস্তায় কাফনে মোড়ানো ফিলিস্তিনিদের লাশ- শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। 

মূলত, গত ১৩ নভেম্বর ইরানের তেহরানের প্যালেস্টাইন স্কয়ারে ইসরায়েলি হামলায় নিহত গাজার শিশুদের সাথে সংহতি প্রকাশ করার জন্য ‘সিম্ফনি অফ দ্য কিল্ড’ নামে একটি ইনস্টলেশন আর্ট পারফরম্যান্স অনুষ্ঠানিত হয়। সম্প্রতি ঐ অনুষ্ঠানের একটি ভিডিওকে রাস্তায় কাফনে মোড়ানো ফিলিস্তিনিদের লাশের দৃশ্য দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত ০৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস ইসরায়েলে ‘অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড’ নামে হামলা শুরু করে। এই হামলার প্রেক্ষিতে ইসরায়েলও হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজা উপত্যকায় পাল্টা হামলা চালায়। এতে দেশ দুইটির মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলা সংঘাত নতুন মাত্রা পায়৷ এই সংঘাতে গাজায় নিহতের সংখ্যা ১৪ হাজার ছাড়িয়েছে বলে গণমাধ্যমে তথ্য এসেছে।

উল্লেখ্য, চলমান ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের সংঘাত ইস্যুতে একাধিক ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে একাধিক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার৷

সুতরাং, ইসরায়েলি হামলায় নিহত গাজার শিশুদের সাথে সংহতি প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত একটি আর্ট পারফরম্যান্সের দৃশ্যকে রাস্তায় কাফনে মোড়ানো ফিলিস্তিনিদের লাশের ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র

ভারতে মিচেল মার্শের বিরুদ্ধে মামলা বা এফআইআর হয়নি 

গত ১৯ নভেম্বর ভারতে আয়োজিত আইসিসি ওডিআই ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন হয় অস্ট্রেলিয়া। এই জয়ের পর নিজের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দলটির সদস্য মিচেল মার্শের একটি ছবি ছড়িয়ে পড়ে, যাতে দেখা যায় তিনি বিশ্বকাপ ট্রফির উপর পা তুলে বসে আছেন। পরবর্তীতে এই উদযাপনকে ভারতীয়দের জন্য অসম্মানজনক জানিয়ে ভারতের উত্তর প্রদেশের নাগরিক পণ্ডিত কেশব মিচেল মার্শের বিরুদ্ধে থানায় এফআইআর দায়ের করেছেন দাবিতে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচারিত হয়েছে। কতিপয় গণমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে, পণ্ডিত কেশব মিচেল মার্শের বিরুদ্ধে থানায় মামলাই দায়ের করেছেন।

মার্শের বিরুদ্ধে

উক্ত দাবিগুলোতে গণমাধ্যমের প্রতিবেদন দেখুন ডেইলি স্টার, প্রথম আলো, ইত্তেফাক, ঢাকা টাইমস, কালবেলা, ঢাকা পোস্ট, চ্যানেল আই, বাংলা ট্রিবিউন, কালের কণ্ঠ, চ্যানেল২৪, আমাদের সময়, যায়যায়দিন, প্রতিদিনের বাংলাদেশ, বাংলাভিশন (ফেসবুক), অনফিল্ড (ফেসবুক), অলরাউন্ডার (ফেসবুক), দেশটিভি, ডেইলি ক্রিকেট (ফেসবুক), বাংলানিউজ২৪, ঢাকা মেইল, আজকের দর্পণ, আমার বার্তা, ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেস, ক্রিকফ্রেন্জি, বিডিক্রিকটাইম, সংবাদ প্রকাশ, ডেইলি বাংলাদেশ, একুশে সংবাদ, রাইজিং বিডি, সোনালী নিউজ, বাংলা২৪লাইভ নিউজপেপার, জুমবাংলা, ডেল্টা টাইমস, এমটিনিউজ২৪, তরঙ্গ নিউজ

একই দাবিতে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন দেখুন স্পোর্টস কিডা, ওপিইন্ডিয়া, ইটিভি ভারত।

একই দাবিতে গণমাধ্যমের ফেসবুক পেজসহ অন্যান্য ব্যবহারকারীদের পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

একই দাবিতে গণমাধ্যমের ইউটিউব চ্যানেলসহ অন্যান্য ব্যবহারকারীদের ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভারতে মিচেল মার্শের বিরুদ্ধে মামলা বা এফআইআর দায়েরের দাবিটি সঠিক নয় বরং এক ব্যক্তির করা অভিযোগকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হলেও পুলিশ জানিয়েছে অভিযোগ আমলে নেয়া হয়নি। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে এক্সে (সাবেক টুইটার) ভারতের সংবাদমাধ্যম The Quint এর সাংবাদিক পিয়ুস রায়ের একটি টুইট নজরে আসে আমাদের। গত ২৪ নভেম্বরের উক্ত টুইটে পিয়ুস বলছিলেন, Bhrashtachar Virodhi Sena নামে একটি সংগঠনের জাতীয় প্রেসিডেন্ট পন্ডিত কেশব দেব মিচেল মার্শের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করতে একটি অভিযোগ পাঠিয়েছেন আলীগড়ের দিল্লী গেট পুলিশ স্টেশনে। পিয়ুস অভিযোগপত্রটির একটি ছবিও যুক্ত করেছেন টুইটে।

Image: X

আমরা এ বিষয়ে জানতে পন্ডিত কেশব দেবের সাথে কথা বলেছি। কেশব রিউমর স্ক্যানারকে বলেছেন, তিনি গত ২১ নভেম্বর এই অভিযোগটি থানায় পৌঁছে দেন৷ সেদিনের একটি ছবিও তিনি আমাদের কাছে পাঠিয়েছেন। কেশব আমাদের কাছে স্থানীয় একটি পত্রিকার ক্লিপ পাঠিয়ে উক্ত সংবাদের বরাতে জানান, তার অভিযোগটির বিষয়ে ইন্সপেক্টর নরেন্দ্র শর্মা জানিয়েছেন, সাইবার সেলের মাধ্যমে এ বিষয়ে তদন্ত করা হবে। 

Image: Pandit Keshav

জনাব কেশব বলছেন, তিনি অভিযোগটির একটি কপি ভারতের প্রধানমন্ত্রী এবং ক্রীড়ামন্ত্রীর কাছেও পাঠিয়েছেন। 

ক্রীড়ামন্ত্রীকে পাঠানো অভিযোগটির কপি তিনি রিউমর স্ক্যানার টিমকেও দিয়েছেন৷ 

Image: Pandit Keshav

তবে আলীগড় পুলিশ বলছে, তারা এ সংক্রান্ত কোনো অভিযোগ আমলে নেয়নি৷ আলীগড়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ম্রিগাঙ্ক শেখর পাঠক এক্সে এক ভিডিও বার্তার মাধ্যমে জানিয়েছেন, মার্শের বিরুদ্ধে আলিগড়ের কোনো থানাতেই কোনো অভিযোগ, মামলা বা এফআইআর আমলে নেয়া হয়নি। 

ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের ফ্যাক্টচেকার অঙ্কিতা দেশকারের কাছে এফআইআর এবং অভিযোগকে ভারতে কীভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয় সে বিষয়ে জানতে চেয়েছিলাম আমরা। তিনি রিউমর স্ক্যানারকে বলেছেন, এফআইআর তখনই করা যায় যখন অভিযোগকারী তার অভিযোগের বিষয়ে শতভাগ নিশ্চিত থাকেন। এর ফলে তিনি বিষয়টি নিয়ে তদন্তের আর্জি জানাতে পারেন। অভিযোগ যে কেউই জানাতে পারে এবং সেটা কেউ তুলেও নিতে পারে। তবে এফআইআর করা হলে তা আপনি তুলে নিতে পারবেন না। 

মূলত, সম্প্রতি ভারতে আইসিসি ওডিআই ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর অস্ট্রেলিয়ার দলের মিচেল মার্শের একটি ছবি ইন্টারনেটে  ছড়িয়ে পড়ে, যাতে দেখা যায় তিনি বিশ্বকাপ ট্রফির উপর পা তুলে বসে আছেন। পরবর্তীতে এই উদযাপনকে ভারতীয়দের জন্য অসম্মানজনক জানিয়ে ভারতের পণ্ডিত কেশব নামে এক ব্যক্তি মিচেল মার্শের বিরুদ্ধে থানায় এফআইআর (কতিপয় গণমাধ্যমে মামলা দাবি) দায়ের করেছেন দাবিতে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচারিত হয়েছে। কিন্তু রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, এফআইআর বা মামলা নয়, পণ্ডিত কেশব এ সংক্রান্ত একটি অভিযোগ দিয়েছেন থানায়৷ তবে সেই অভিযোগ আমলে নেয়নি সংশ্লিষ্ট থানা। আলীগড় পুলিশ বলছে, মার্শের বিরুদ্ধে কোনো মামলা বা এফআইআর হয়নি।

সুতরাং, বিশ্বকাপের ট্রফি পায়ের নিচে রাখাকে ভারতীয়দের জন্য অসম্মানজনক জানিয়ে ভারতের এক ব্যক্তির মিচেল মার্শের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করার ঘটনাকে মার্শের বিরুদ্ধে মামলা বা এফআইআর দায়ের করা হয়েছে দাবিতে গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র

  • Statement from Pandit Keshav
  • Aligarh Police: Tweet 
  • Piyush Rai: Tweet 
  • Rumor Scanner’s own investigation 

সিরিয়ার পুরোনো ভিডিওকে হামাস কর্তৃক ইসরায়েলি ট্যাঙ্ক ধ্বংসের ভিডিও দাবিতে প্রচার

সম্প্রতি, হামাস কর্তৃক ইসরায়েলি ট্যাঙ্ক ধ্বংসের দৃশ্য দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

ট্যাঙ্ক ধ্বংসের

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ভিডিওটি ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস কর্তৃক ইসরায়েলি ট্যাঙ্ক ধ্বংসের নয় বরং ভিডিওটি প্রায় দশ বছর আগে ২০১৩ সালে সিরিয়ার সেনাবাহিনী এবং বিদ্রোহীদের মধ্যকার সংঘর্ষের সময়ে ধারণকৃত।

এবিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত ভিডিওটি থেকে কিছু স্থিরচিত্র নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে RANE নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ২০১৩ সালের ২৬ জানুয়ারি ‘Syrian Tank Allegedly Attacked and Airstrikes (raw footage)’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: YouTube

এই ভিডিওটি’র সাথে আলোচিত ভিডিওটি’র মিল পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner 

সেখানে উল্লেখিত বিস্তারিত বিবরণী থেকে জানা যায়, এটি ২০১০ সালে সিরিয়ার সেনাবাহিনী এবং বিদ্রোহীদের মধ্যকার সংঘর্ষের সময়ে সরকারি ট্যাঙ্ক ধ্বংসের ভিডিও।

পরবর্তীতে ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম DailyMotion এর ওয়েবসাইট থেকেও ভিডিওটি’র ব্যাপারে একই তথ্য জানা যায়।

Screenshot: DailyMotion

অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিওটি হামাস কর্তৃক ইসরায়েলি ট্যাঙ্ক ধ্বংসের নয়।

মূলত, ২০১০ সালে সিরিয়ার সেনাবাহিনী এবং বিদ্রোহীদের মধ্যকার সংঘর্ষের সময়ে সরকারি ট্যাঙ্ক ধ্বংসের একটি ভিডিও সেসময় ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়। সম্প্রতি সেই ভিডিওটি ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহ করে হামাস কর্তৃক ইসরায়েলি ট্যাঙ্ক ধ্বংসের ভিডিও দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, কাতারের মধ্যস্থতায় গত ২৪ নভেম্বর থেকে ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যকার যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে। গত শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) স্থানীয় সময় সকাল ৭টা থেকে এ যুদ্ধবিরতি শুরু হয়। এর আগে গত ০৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস ইসরায়েলে ‘অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড’ নামে হামলা শুরু করে। এই হামলার প্রেক্ষিতে ইসরায়েলও হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজা উপত্যকায় পাল্টা হামলা চালায়। এতে দেশ দুইটির মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলা সংঘাত নতুন মাত্রা পায়৷

উল্লেখ্য, পূর্বেও ভিন্ন ঘটনার ভিডিওকে হামাস কর্তৃক ইসরায়েলি জাহাজ জব্দের দাবিতে প্রচার করা হলে তা নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, ২০১০ সালে সিরিয়ায় ট্যাঙ্ক ধ্বংসের একটি ভিডিওকে সাম্প্রতিক সময়ে হামাস কর্তৃক ইসরায়েলি ট্যাঙ্ক ধ্বংসের ভিডিও দাবিতে ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ভারতের হারে বাংলাদেশিদের উল্লাসের কারণে আইপিএল থেকে তিন বাংলাদেশি ক্রিকেটারকে বাদ দেয়া হয়নি 

0

২০২৩ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেটে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ভারতের হারের পর বাংলাদেশিদের উল্লাসের কারণে আসন্ন আইপিএল সিজন থেকে তিন বাংলাদেশি ক্রিকেটারকে বাদ দেওয়া হয়েছে শীর্ষক দাবিতে একটি তথ্য ইন্টারনেটে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। 

ভারতের হারে

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

সামাজিক মাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

এছাড়া, একই দাবিতে ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম ইউটিউবে প্রচারিত এমন একটি ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ভারতের হারের পর বাংলাদেশিদের উল্লাসের কারণে আইপিএল থেকে তিন বাংলাদেশি ক্রিকেটারকে বাদ দেওয়া হয়নি বরং আইপিএল রিটেইনেশনে বিভিন্ন দেশের ক্রিকেটারদের মতো বাংলাদেশি তিন ক্রিকেটারকেও ছেড়ে দিয়েছে তাদের ফ্রাঞ্চাইজি। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘Hindustan Times’ এর ওয়েবসাইটে গত ২৬ নভেম্বর ‘IPL 2024 Player Retention: বাদ পড়লেন শাকিব-লিটন, কাদের ধরে রাখল KKR, ছেড়ে দিল কোন কোন তারকাকে’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot from ‘Hindustan Times’ website 

উক্ত প্রতিবেদনটিতে আসন্ন আইপিএল এ ‘কলকাতা নাইট রাইডার্স’ এবং ‘দিল্লি ক্যাপিটালস’ এর স্কোয়াড থেকে বাংলাদেশের সাকিব আল হাসান, লিটন দাস এবং মুস্তাফিজুর রহমানকে বাদ দেওয়া হয়েছে এবং আইপিএল ২০২৪-এর নিলামের আগে বাংলাদেশের কোনো ক্রিকেটার কোনো দলে নেই বলে উল্লেখ করা হয়েছে। 

বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের আইপিএল এর স্কোয়াড থেকে বাদ দেওয়ার কারণ অনুসন্ধানে ২৭ নভেম্বর দেশীয় সংবাদমাধ্যম দৈনিক ভোরের কাগজের ওয়েবসাইটে ‘আইপিএল থেকে বাদ পড়ল বাংলাদেশি ক্রিকেটারা’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot from ‘Bhorer Kagoj’ website  

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, আইপিএলে বাংলাদেশের হয়ে নিয়মিত মুখ ছিলেন সাকিব আল হাসান। তবে, গত আসরে দলে থেকেও তিনি খেলতে পারেননি। এছাড়া, লিটন দাস এক ম্যাচ খেলার সুযোগ পেলেও হাস্যকর ভুলে নিজের জায়গা হারিয়ে ফেলেছিলেন। আর দিল্লি ক্যাপিটালস এর হয়ে মুস্তাফিজুর রহমানের অবস্থাও ছিল বেশ নাজুক। 

সঙ্গত কারণে এবং ২০২৩ সালে বিশ্বকাপ ক্রিকেটে এই তিন খেলোয়ারের বাজে পারফর্মেন্সের কারণ হিসেবে আইপিএল এর এবারের প্লেয়ার তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন তারা। 

পরবর্তীতে গত ২৬ নভেম্বর আইপিএলের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে ‘IPL 2024 Player retentions’ এর একটি তালিকা প্রকাশ করা হয়। সেই প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগ আইপিএলের ২০২৪ মৌসুমের খেলোয়াড় রিটেনশনের সময়সীমার শেষ দিনে ১০টি ফ্র্যাঞ্চাইজি একত্রে ১৭৩ জন খেলোয়াড়কে ধরে রেখেছে এবং ৯০ জন খেলোয়াড়কে ছেড়ে দিয়েছে। কলকাতা নাইট রাইডার্স সাকিব ও লিটনসহ মোট ১২ জন, দিল্লি ক্যাপিটালস মোস্তাফিজুর রহমানসহ ১১ জন, মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স ১১ জন, পাঞ্জাব কিংস ৭ জন, রাজস্থান রয়েলস ৯ জন, রয়েল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর ১১ জন, সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ ৬ জন, লক্ষ্ণৌ সুপারজায়ান্টস ৮ জন, গুজরাট টাইটান্স ৮ জন এবং চেন্নাই সুপার কিংস ৮ জন খেলোয়াড় রিলিজড করেছে বা ছেড়ে দিয়েছে।  

আইপিএল রিটেনশনে মূলত দলগুলো নিলামের আগে তাদের কোন খেলোয়াড়দের ধরে রাখতে চায় এবং কোন খেলোয়াড়দের ছেড়ে দিতে চায় বা অন্য দলের কাছে বিক্রি করতে চায় তা চূড়ান্ত করে এবং তালিকা প্রকাশ করে। ছেড়ে দেওয়া খেলোয়াড়রা আইপিএলে খেলতে আগ্রহী হলে তাদের নাম পরবর্তীতে নিলামে আবার উঠবে এবং সেখান থেকে দলগুলো চাইলে তাদের দলে ভেড়াতে পারবে।

সাধারণত একটি আইপিএল দল মেগা এবং মিনি নিলামের আগে যেকোনো সংখ্যক খেলোয়াড়কে ছেড়ে দিতে পারে। দলগুলো তাদের পরিকল্পনা বা গেম প্ল্যান, অর্থনৈতিক হিসাব না পার্স, খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্স এবং তাদের প্রাইস ট্যাগ ইত্যাদিসহ নানা কারণ বিবেচনা করে খেলোয়াড় রেখে দেয় কিংবা ছেড়ে দেয়। নিলামের আগে তারা যত মূল্যের খেলোয়াড় ছেড়ে দেয় তা তাদের পার্সে যুক্ত হয় এবং সেই অর্থ তারা নিলামে নতুন খেলোয়াড় কিনতে ব্যবহার করতে পারে।

আগামী ১৯ ডিসেম্বর দুবাইয়ে আইপিএলের মিনি নিলাম অনুষ্ঠিত হবে এবং এই নিলামকে ঘিরে দলগুলো ইতিমধ্যে প্লেয়াররা রিটেনশনের মাধ্যমে কিছু খেলোয়াড় ছেড়ে দিয়েছে, কিছু ধরে রেখেছে। সাকিব আল হাসান, লিটন কুমার দাস কিংবা মোস্তাফিজুর রহমানকে ঠিক একই কারণে তাদের ফ্রাঞ্চাইজি ছেড়ে দিয়েছে।

এছাড়া, সাকিব-লিটন-মোস্তাফিজের বাদ পড়ার বিষয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে আলোচিত দাবির কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি।

ইতোপূর্বেও একাধিকবার সাকিবমোস্তাফিজকে তাদের পূর্বের ফ্রাঞ্চাইজি নিলামের আগে ছেড়ে দিয়েছে বা রিলিজড করেছিল।

মূলত, আইপিএল ২০২৪ মৌসুম এর মিনি নিলামকে সামনে রেখে দলগুলো তাদের খেলোয়াড় রিটেইন এবং রিলিজ করেছে। দেশি-বিদেশি মিলে প্রতিটি দল তাদের বেশকিছু সংখ্যক খেলোয়াড় ছেড়ে দিয়েছে। একইভাবে সাকিব আল হাসান, লিটন দাস এবং মোস্তাফিজির রহমানকেও দলগুলো ছেড়ে দিয়েছে। তাদের ছেড়ে দেওয়ার এই বিষয়টিকে ভারতের হারে উল্লাসের কারণে আইপিএল থেকে তিন বাংলাদেশি ক্রিকেটারকে বাদ দেয়ার সাথে মিলিয়ে প্রচার করা হয়েছে, যা সঠিক নয়।

প্রসঙ্গত, ভারতীয় ক্রিকেট নিয়ন্ত্রণ বোর্ড (বিসিসিআই) আইপিএলে পাকিস্তানের সাথে সাথে বাংলাদেশি প্লেয়ারদের ও নিষিদ্ধ করেছে শীর্ষক শিরোনামে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছিল। উক্ত বিষয়টিকে মিথ্যা হিসেবে শনাক্ত করে  ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। 

সুতরাং, ২০২৩ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেটে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ভারতের হারের পর বাংলাদেশিদের উল্লাসের কারণে আইপিএল থেকে তিন বাংলাদেশি ক্রিকেটারকে বাদ দেওয়া হয়েছে শীর্ষক দাবিটি বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র

হাসপাতালের বেডে শুয়ে ডাক্তারদের নিয়ে গান গাওয়া মেয়েটি মারা যাননি 

0

অপারেশনের পূর্বে হাসপাতালের বেডে শুয়ে ডাক্তারদের নিয়ে একটি মেয়ের গান গাওয়ার ভিডিও ২০১৯ সাল থেকে ইন্টারনেটে প্রচার হয়ে আসছে।  সম্প্রতি, একই ভিডিও “ডাক্তারকে নিয়ে গান গেয়ে হাসতে হাসতে দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছে মেয়েটি” শীর্ষক দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার হতে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

হাসপাতালের বেডে শুয়ে

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

একই দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

একই দাবিতে টিকটিকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, হাসপাতালের বেডে শুয়ে ডাক্তারদের নিয়ে গান গাওয়া মেয়েটি মারা যাওয়ার দাবিটি সঠিক নয় বরং রাপূর্ণা ভট্টাচার্য নামে ভারতের এই মেয়েটি ২০১৯ সালে অপারেশনের সপ্তাহখানেক পরই সুস্থ হয়ে ওঠেন। বর্তমানে তিনি দেশটির পুনেতে পড়াশোনা করছেন।

রিউমর স্ক্যানার টিম এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে কিওয়ার্ড সার্চ করে ২০১৯ সালে ফেসবুকে একাধিক অ্যাকাউন্ট এবং পেজ থেকে প্রচারিত একই ভিডিও খুঁজে পেয়েছে। পোস্টগুলো দেখুন এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে। 

এর মধ্যে ১৩ নভেম্বর প্রকাশ হওয়া একটি ভিডিওতেই প্রায় ১৭ মিলিয়ন ভিউ হয়েছে। তবে সেসময়ের ভিডিওগুলোতে মেয়েটির মৃত্যুর দাবি ছিল না। 

Screenshot : Facebook Post  

পরবর্তীতে অনুসন্ধানে আমরা ২০২১ সালে Sukanti Roy নামে একটি অ্যাকাউন্টে একই ভিডিও (আর্কাইভ) খুঁজে পাই। উক্ত পোস্টের কমেন্ট সেকশনে ‘Rapurna Bhattacharya’ নামক এক নারী মন্তব্য করেন, ভিডিওতে থাকা মেয়েটি হচ্ছেন তিনি। 

Screenshot : Facebook Post

উক্ত কমেন্টের সূত্র ধরে আমরা পরবর্তীতে রাপূর্ণা ভট্টাচার্যের ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি পর্যবেক্ষণ করি। তার অ্যাকাউন্ট থেকে জানা যাচ্ছে, তিনি ভারতের কলকাতায় বসবাস করেন এবং বর্তমানে পুনের সিমবায়োসিস সেন্টার ফর মিডিয়া এন্ড কমিউনিকেশনে পড়াশোনা করছেন। 

রাপূর্ণা ভট্টাচার্যকে নিয়মিতই তার অ্যাকাউন্টে বিভিন্ন পোস্ট করতে দেখা যাচ্ছে। গতকালও (২৬ নভেম্বর) তিনি একটি ভিডিও প্রকাশ করেছেন। দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

যেহেতু ভিডিওটি ২০১৯ সাল থেকেই ফেসবুকে বিদ্যমান, সেই সূত্রে মেয়েটি আসলেই রাপূর্ণা ভট্টাচার্য কিনা তা নিশ্চিত হতে আমরা ফেসবুক অ্যাকাউন্টে থাকা ২০১৮ এবং ২০১৯ সালের ছবিগুলোর (, , ) সাথে ভিডিওর মেয়েটির চেহারার তুলনামূলক বিশ্লেষণ করে দৃশ্যমান মিল খুঁজে পেয়েছি। 

Image Comparison : Rumor Scanner 

অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিওতে থাকা মেয়েটিই রাপূর্ণা ভট্টাচার্য এবং তার ফেসবুক এক্টিভিটি জানাচ্ছে, তিনি দিব্যি সুস্থ আছেন।

এ বিষয়ে আরও জানতে রাপূর্ণা ভট্টাচার্যের মা বিতস্তা ঘোষালের সাথে কথা বলেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। বিতস্তা ঘোষাল বলছিলেন, ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে তার মেয়ে রাপূর্ণা বাড়িতে পড়ে গিয়ে আঘাত পাওয়ার পর একটি অপারেশনের প্রয়োজন পড়ে। সে বছরের ০৪ নভেম্বর অপারেশন থিয়েটারে প্রবেশের আগে সে এই গানটি গায়। ভাইরাল ভিডিওটি বিতস্তাই ধারণ করেছিলেন। সপ্তাহখানেক পরই রাপূর্ণা সুস্থ হয়ে ওঠেন। 

বিতস্তা রিউমর স্ক্যানার টিমের কাছে অনুরোধ করেন “আপনারা অনুগ্রহ করে বিষয়টি দেখবেন। নিজের সন্তানের মৃত্যুর ভুল খবর প্রচারিত হলে মন খারাপ হয়ে যায়। নিশ্চয়ই এটা বুঝবেন।”

মূলত, ২০১৯ সালে রাপূর্ণা ভট্টাচার্য নামে ভারতের এক কিশোরী মেয়ের একটি অপারেশনের পূর্বে হাসপাতালের বেডে শুয়ে ডাক্তারদের নিয়ে তার গলায় গাওয়া একটি গান গাওয়ার পর সেটি ইন্টারনেটে ভাইরাল হয়। সম্প্রতি, একই ভিডিও প্রচার করে একাধিক পোস্টে দাবি করা হয়, ডাক্তারকে নিয়ে গান গেয়ে হাসতে হাসতে দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছে মেয়েটি। কিন্তু রিউমর স্ক্যানার টিম অনুসন্ধানে জেনেছে, রাপূর্ণা অপারেশনের পর মারা যাননি। ২০১৯ সালে অপারেশনের সপ্তাহখানেক পরই তিনি সুস্থ হয়ে যান। বর্তমানে তিনি পুনের একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গ্র্যাজুয়েশন করছেন। 

সুতরাং, অপারেশনের পূর্বে হাসপাতালের বেডে শুয়ে ডাক্তারদের নিয়ে ভারতের একটি মেয়ের গান গাওয়ার ভিডিও ব্যবহার করে তিনি মারা গেছেন শীর্ষক দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র 

  • Rapurna Bhattacharya: Facebook Account 
  • Statement of Rapurna’s Mother 
  • Rumor Scanner’s own investigation 

নির্বাচন বাতিল করে নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগের ভুয়া তথ্য প্রচার

সম্প্রতি, নির্বাচন বাতিল করে নির্বাচন কমিশন পদত্যাগ করেছে শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত দাবিতে প্রচারিত সর্বাধিক ভাইরাল ভিডিওটি গত ২৫ নভেম্বর ‘ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা’ নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে প্রচার করা হয়। ভিডিওটি এই প্রতিবেদন প্রকাশ অবধি প্রায় ৭ লাখ  হাজার বার দেখা হয়েছে, শেয়ার করা হয়েছে প্রায় ১১ হাজার বার। এছাড়া, পোস্টটিতে প্রায় ৪২ হাজার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া দেখানো হয়েছে। ভাইরাল পোস্টটির মন্তব্যঘর ঘুরে পোস্টটির দাবির প্রেক্ষিতে অধিকাংশ নেটিজেনকে দাবির প্রেক্ষিতে তাদের প্রতিক্রিয়া জানাতে দেখা যায়। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাতিল ঘোষণা করা হয়নি এবং প্রধান নির্বাচন কমিশনার বা নির্বাচন কমিশনের অন্যকোনো সদস্য পদত্যাগ করেননি বরং অধিক ভিউ পাবার আশায় চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, সেখানে ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার কয়েকটি ভিডিও ক্লিপ যুক্ত করা হয়েছে।

ভিডিওটি’র সংবাদপাঠ অংশে বলা হয়, তফসিল বাতিল এবং নির্বাচন বন্ধের ঘোষণা করেছেন সিইসি। তিনি ক্ষমা চেয়ে পদত্যাগ করতে যাচ্ছেন। এছাড়াও ভিডিটিতে আরও বলা হয়, নির্বাচন হবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন সিইসি হাবিবুল আউয়াল।

ভিডিওটি থেকে কিছু স্থিরচিত্র নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে Shaifur Rahman নামের একটি ফেসবুক পেজে গত ২৪ নভেম্বর শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook

এই ভিডিওটির সাথে আলোচিত ভিডিওটি’র একটি অংশের হুবহু মিল পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner

তাছাড়া, মূলধারার ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম যমুনা টিভি’র ইউটিউব চ্যানেলে আজ ২৬ নভেম্বর ‘বিএনপি নির্বাচনে এলে তা জাতির জন্য সৌভাগ্যের হবে: ইসি’ শীর্ষক শিরোনামে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের বক্তব্য নিয়ে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। সেখানে আসন্ন নির্বাচনের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তিনি কথা বলেন।

Screenshot: Jamuna TV

অর্থাৎ, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি প্রচারের পরবর্তী সময়েও প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল তার পদে বহাল রয়েছেন।

এছাড়াও, নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট পর্যবেক্ষণ করেও নিশ্চিত হওয়া যায় যে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার সহ নির্বাচন কমিশনের প্রত্যেকেই নিজ পদে বহাল আছেন।

Screenshot: Election Commission Website 

পাশাপাশি, মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে এখন পর্যন্ত আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাতিল এবং প্রধান নির্বাচন কমিশনার কিংবা নির্বাচন কমিশনের অন্যকারো পদত্যাগের তথ্য পাওয়া যায়নি।

মূলত, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে উত্তপ্ত রাজনীতির মাঠ। এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বর্তমান সরকারের পদত্যাগ এবং নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন গ্রহণের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে বিএনপি এবং সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি পালন করে আসছে। এসব ঘটনায় প্রতিদিনই বিভিন্ন ধরনের তথ্য ইন্টারনেটে প্রচারিত হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৫ নভেম্বর ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা নামের একটি ফেসবুক পেজ সহ আরও কয়েকটি পেজে নির্বাচন বাতিল করে নির্বাচন কমিশন পদত্যাগ করেছে শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়। তবে অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত দাবিটি সঠিক নয়। অধিক ভিউ পাবার আশায় ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার কয়েকটি ভিডিও ক্লিপ ও ছবি যুক্ত করে তাতে চটকদার থাম্বনেইল ও শিরোনাম ব্যবহার করে কোনোপ্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। এছাড়া, গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে বিষয়টির সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

প্রসঙ্গত, আগামী ৭ জানুয়ারি রোববার ভোটগ্রহণের দিন রেখে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। গত ১৫ নভেম্বর সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া এক ভাষনে এই ঘোষণা দেন তিনি।

উল্লেখ্য, পূর্বেও চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে বিভিন্ন ভুয়া তথ্য প্রচারের প্রেক্ষিতে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কয়েকটি প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, নির্বাচন বাতিল করে নির্বাচন কমিশন পদত্যাগ করেছে শীর্ষক দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

মানুষের সাথে রোবটের ব্যাডমিন্টন খেলার এই ভিডিওটি সম্পাদিত

সম্প্রতি, রোবট মানুষের সাথে ব্যাডমিন্টন খেলছে দাবিতে দুটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে।

রোবটের ব্যাডমিন্টন

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত আরেকটি ভিন্ন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিনের অনুসন্ধানে জানা যায়, রোবট মানুষের সাথে ব্যাডমিন্টন খেলছে দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত ভিডিও গুলো বাস্তব নয় বরং মানুষের ব্যাডমিন্টন খেলার ভিডিওতে কৃত্রিম বুদ্ধিমতার সাহায্যে রোবট যুক্ত করে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।

ভিডিও যাচাই ০১

আলোচিত দাবির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য ভিডিওটির কিছু কি-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চ করে Phalore bedmation club নামক ফেসবুক পেজে ২০২১ সালের ২১ অক্টোবরে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ভিডিওর সাথে উক্ত আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর দৃশ্যের হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison: Rumor Scanner

এছাড়া magicalmagicworld নামক টিকটক অ্যাকাউন্টে গত ৫ সেপ্টেম্বর আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Tiktok

তবে ভিডিওটির শিরোনাম থেকে জানা যায় এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে তৈরি।

ভিডিও যাচাই ০২

আলোচিত দাবির সত্যতা যাচাইয়ে Badminton Ham নামক ইউটিউব চ্যানেলে গত ২৮ সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ভিডিওর সাথে উক্ত আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর দৃশ্যের হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison: Rumor Scanner

ভিডিওটিতে ভালোভাবে লক্ষ্য করে দেখা যায়, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর রোবটের জায়গায় দুইজন মানুষ ছিলো। এছাড়া, ভিডিওটির বিস্তারিত বিবরণী থেকে জানা যায়, এটি কোরিয়া বনাম জাপানের ব্যাডমিন্টন খেলা ছিলো। 

অর্থাৎ, প্রচারিত ভিডিও দুটিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) এর সাহায্যে মানুষের অবস্থানের স্থলে রোবটের অবয়ব জুড়ে দেওয়া হয়েছে।

মূলত, সম্প্রতি রোবট মানুষের সাথে ব্যাডমিন্টন খেলছে দাবিতে একাধিক ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায় ভিডিওগুলো সম্পাদনা করা। প্রকৃতপক্ষে দুটি ভিন্ন ব্যাডমিন্টন খেলার ভিডিওতে উপস্থিত থাকা মানুষের দৃশ্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে পরিবর্তন করে সেখানে রোবটের দৃশ্য জুড়ে দেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, পূর্বে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে লিওনেল মেসির ইংরেজিতে কথা বলার ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচারিত হলে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, রোবট মানুষের সাথে ব্যাডমিন্টন খেলছে দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত ভিডিও দুটি এডিটেড বা বিকৃত।

তথ্যসূত্র

মিশরের কোরআন প্রতিযোগিতায় হাফেজ মুহাম্মদ মুতাসিম বিল্লাহর প্রথম হওয়ার দাবিটি সঠিক নয়

0

সম্প্রতি, “মিশরে কুরআন প্রতিযোগিতায় ২৬০ দেশকে পিছনে ফেলে ১ম হয়েছে বাংলাদেশের হাফেজ মুতাসিম বিল্লাহ মুজাহিদ” শীর্ষক একটি দাবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

কোরআন প্রতিযোগিতায়

ফেসবুকে প্রচারিত এমনকিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, হাফেজ মুহাম্মদ মুতাসিম বিল্লাহ মিশরের আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম হননি বরং বাংলাদেশে আয়োজিত বাছাই পরীক্ষায় দেশের হাফেজদের মধ্যে প্রথম হয়ে আগামী ডিসেম্বরে মিশরের উক্ত প্রতিযোগিতায় অংশ নেবেন তিনি। 

আলোচিত দাবির সত্যতা যাচাইয়ের শুরুতেই মিশরের আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতার বিষয়ে অনুসন্ধানে গত ১৫ নভেম্বর দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার প্রিন্ট ভার্সনের ১৪ নম্বর পাতায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের একটি বিজ্ঞপ্তি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Source: Jugantor Epaper

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের দীনী দাওয়াত ও সংস্কৃতি বিভাগের পরিচালক মো. আনিছুর রহমান সরকার স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিটি থেকে জানা যায়, চলতি বছরের ২২ থেকে ২৮ ডিসেম্বর মিশরের রাজধানী কায়রোতে ৩০তম আন্তর্জাতিক হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। উক্ত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণে আগ্রহী বাংলাদেশী হাফেজগণের আবেদনপত্র আহ্বান করা হয় উক্ত বিজ্ঞপ্তিতে। ২০ নভেম্বর আগ্রহী প্রতিযোগীদের নির্বাচনী পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা জানা যায় বিজ্ঞপ্তি থেকে।

অর্থাৎ, বাংলাদেশি হাফেজ মুহাম্মদ মুতাসিম বিল্লাহ মিশরের হিফজুল কুরআন নামের যে প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে তা আগামী ২২-২৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে।

পরবর্তীতে, দাবিটির সূত্রের বিষয়ে অনুসন্ধানে গত ২০ নভেম্বর প্রকাশিত  ফেসবুকের একাধিক পোস্ট (, , ) থেকে জানা যায়, নেত্রকোনা জামালুল কোরআন মাদরাসার ছাত্র হাফেজ মুতাসিম বিল্লাহ মুজাহিদ মিশরে আন্তর্জাতিক কুরআন প্রতিযোগিতার জন্য নির্বাচিত হয়েছে।

মাসুম বিল্লাহ নামে এক ব্যক্তি ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, আমার ভাই মুতাসিম বিল্লাহ মুজাহিদ, “৩০ তম আন্তর্জাতিক মিশর কুরআন প্রতিযোগিতার জন্য নির্বাচিত হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ!! সবাই দোয়া করবেন আমার ভাই যেন আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় বিশ্ব জয় করে প্রথম স্থান অর্জন করে বাংলাদেশের সুনাম বয়ে আনতে পারে।”

Screenshot: Facebook 

অর্থাৎ, মিশরে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া কোরআন প্রতিযোগিতা নয়, উক্ত কোরআন প্রতিযোগিতার জন্য দেশে আয়োজিত বাছাই পরীক্ষায় প্রথম হয়েছেন হাফেজ মুহাম্মদ মুতাসিম বিল্লাহ।

কিন্তু ২১ নভেম্বর কতিপয় ফেসবুক পোস্টে আলোচিত দাবিটি অর্থাৎ মিশরে কোরআন প্রতিযোগিতায় ২৬০ দেশকে পিছনে ফেলে ১ম হয়েছে বাংলাদেশের হাফেজ মুতাসিম বিল্লাহ মুজাহিদ শীর্ষক তথ্যটি প্রচার হতে দেখে রিউমর স্ক্যানার। 

আবার, একইদিন আরো কিছু পোস্টে কতিপয় শব্দ বদলে দিয়ে প্রচার করা হয়, “মিশরে কুরআন প্রতিযোগিতায় ২৬০ জনকে পিছনে ফেলে  ১ম হয়েছে বাংলাদেশের হাফেজ মুতাসিম বিল্লাহ মুজাহিদ।”

Screenshot collage: Rumor Scanner 

অর্থাৎ, একদিনের ব্যবধানে একটি তথ্য বদলে গিয়ে দুইটি ভিন্ন দাবিতে ছড়িয়েছে।

পরবর্তীতে, বিষয়টির অধিকতর সত্যতা নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের দীনী দাওয়াত ও সংস্কৃতি বিভাগের পরিচালক মো. আনিছুর রহমান সরকারের সাথে যোগাযোগ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। তিনি জানান, হাফেজ মুহাম্মদ মুতাসিম বিল্লাহ কোরআন প্রতিযোগিতার জন্য দেশে আয়োজিত বাছাই পরীক্ষায় প্রথম হয়েছেন। 

তাছাড়া, বিষয়টি হাফেজ মুহাম্মদ মুতাসিম বিল্লাহর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নেত্রকোনা জামালুল কোরআন মাদ্রাসা’র সিনিয়র শিক্ষক মো: জুবায়েরুল হাসানও রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করেছেন। 

জনাব জুবায়েরুল রিউমর স্ক্যানারকে জানান, উক্ত প্রতিযোগিতায় হাফেজ মুহতাসিম বিল্লাহ্ মুজাহিদ হিফজুল কুরআন ৩০ পারা বিভাগে অংশগ্রহণ করবেন।

মূলত, আগামী ২২-২৮ ডিসেম্বর মিশরে ৩০তম আন্তর্জাতিক হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। উক্ত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের লক্ষ্যে বাংলাদেশী হাফেজগণের নির্বাচনী পরীক্ষায় হাফেজ মুহাম্মদ মুতাসিম বিল্লাহ প্রথম স্থান অধিকার করে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পেয়েছেন। উক্ত ঘটনাকেই হাফেজ মুহাম্মদ মুতাসিম বিল্লাহ মিশরের আন্তর্জাতিক হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছেন দাবিতে প্রচার করা হয়েছে, যা সঠিক নয়।

উল্লেখ্য, পূর্বে হাফেজ তাকরিমের নামে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে পড়লে সে বিষয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার টিম।

সুতরাং, মিশরের আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতার বাছাই পরীক্ষায় দেশের হাফেজদের মধ্যে হাফেজ মুহাম্মদ মুতাসিম বিল্লাহ প্রথম হওয়ার ঘটনাকে তিনি মিশরের কোরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম হওয়ার দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

  • Jugantor: ই-পেপার 
  • Masum Billah: Facebook Post
  • Statement from Jobayedul Hasan, Senior Teacher, Netrokona Jamalul Quran
  • Statement from Anisur Rahman, Islamic Foundation 
  • Rumor Scanner’s own investigation 

ভিডিওর ব্যক্তিটির বয়স ৩০৯ বছর নয় 

0

সম্প্রতি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে ভিডিওতে থাকা ব্যাক্তিটির বয়স ৩০৯ বছর। 

৩০৯ বছর

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

টিকটিকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ভিডিওতে থাকা ব্যক্তিটির বয়স ৩০৯ বছর নয় বরং তিনি ১০৯ বছর বয়সী থাইল্যান্ডের নাগরিক লুয়াং ফো ইয়াই যিনি ২০২২ সালের মার্চ মাসে মারা যান। 

মূলত, আলোচিত ভিডিওর ব্যক্তিটি ১০৯ বছর বয়সী থাইল্যান্ডের নাগরিক লুয়াং ফো ইয়াই। সাম্প্রতিক সময়ে তাকে ৩০৯ বছর দাবি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, পূর্বে একই ব্যক্তির বয়স ১৯৩ বছর বলে ইন্টারনেটে প্রচার করা হলে বিষয়টি নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার টিম।