সম্প্রতি ” প্রধানমন্ত্রীকে চ্যালেঞ্জ করায় হিরো আলম গ্রেফতার। হিরো আলম হারার গোপন তথ্য ফাঁস” শীর্ষক শিরোনামের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচারিত হচ্ছে।
ফেসবুকে প্রচারিত এরকম কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে।
পোস্টগুলোর আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রীকে চ্যালেঞ্জ করায় হিরো আলমকে গ্রেফতার করা হয়েছে দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সঠিক নয় বরং কোনরূপ তথ্যসূত্র ছাড়াই ভিত্তিহীনভাবে চটকদার ক্যাপশন ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে উক্ত তথ্যটি ইন্টারনেটে প্রচারিত হয়।
অনুসন্ধানে হিরো আলমকে গ্রেফতার করা হয়েছে দাবিতে প্রচারিত ভিডিওগুলো পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ক্যাপশন এবং থাম্বনেইলে প্রধানমন্ত্রীকে চ্যালেঞ্জ করায় হিরো আলমকে গ্রেফতারের তথ্য উপস্থাপন করা হলেও ভিডিওর বিস্তারিত অংশে প্রধানমন্ত্রীকে চ্যালেঞ্জ এবং উক্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে হিরো আলম গ্রেফতার দুটি তথ্যেরই কোনো ভিত্তি নেই।
ভিডিওর বিভিন্ন অংশে হিরো আলমের নির্বাচনী প্রচারণার বিভিন্ন চিত্র তুলে ধরা হয়। এছাড়াও, হিরো আলমের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা নিয়ে বিভিন্ন আলোচকদের বক্তব্য প্রদান করতে দেখা যায়। কিন্তু হিরো আলম প্রধানমন্ত্রীকে চ্যালেঞ্জ করায় গ্রেফতারের বিষয়ে কোনো তথ্যই খুঁজে পাওয়া যায় নি।
পরবর্তীতে, বাংলাদেশের মূলধারার গণমাধ্যম পর্যবেক্ষণ করে সাম্প্রতিক সময়ে হিরো আলম গ্রেফতারের তথ্যের কোনো ভিত্তি খুঁজে পাওয়া যায় নি।
এছাড়াও, হিরো আলমের ভেরিফাইড ফেসবুক একাউন্টের কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণ করেও উক্ত দাবির কোনো সত্যতা পাওয়া যায় নি।
পরবর্তীতে, প্রাধানমন্ত্রীকে চ্যালেঞ্জ প্রসঙ্গে কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে জাতীয় গণমাধ্যম The Daily Star এর অনলাইন সংস্করণে গত ৫ ফেব্রুয়ারি “এবার ওবায়দুল কাদেরকে হিরো আলমের চ্যালেঞ্জ” শীর্ষক শিরোনামের একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
তবে প্রধানমন্ত্রীকে চ্যালেঞ্জ করায় গ্রেফতার করায় হিরো আলম গ্রেফতার দাবিটি হিরো আলম কর্তৃক ওবায়দুল কাদেরকে চ্যালেঞ্জ জানানোর ঘটনার( ৫ ফেব্রুয়ারি) একদিন আগ থেকেই(৪ ফেব্রুয়ারি) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।
এছাড়া, ১ ফেব্রুয়ারী অনুষ্ঠিত বগুড়া ৪ ও ৬ আসনের নির্বাচনের প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হিরো আলমের চ্যালেঞ্জ করার তথ্যের কোনো ভিত্তি খুঁজে পাওয়া যায়নি।
পরবর্তীতে, জাতীয় গণমাধ্যম দৈনিক প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণে ২০১৯ সালের ৮ মার্চ “হিরো আলম কারাগারে” শীর্ষক শিরোনামের একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়।
উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়,
পরবর্তীতে একই বছরের ১৯ এপ্রিল উক্ত মামলায় জামিনে মুক্তি পান হিরো আলম।
তবে, বগুড়ায় অনুষ্ঠিত উপ নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে হিরো আলমকে গ্রেফতারের দাবির পক্ষে কোনো সত্যতা খুঁজে পায়নি রিউমর স্ক্যানার টিম।
মূলত, গত ০১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত বগুড়া ৪ ও ৬ আসনে সংসদ সদস্য উপ নির্বাচনে নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিচিত মুখ আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলম। তবে নির্বাচনের ফলাফল অনুযায়ী দুইটি আসনেই পরাজিত হয়েছেন আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলম। পরবর্তীতে পরাজয়ের কারণ হিসেবে ভোট গণনায় কারচুপিকে দায়ী করে গণমাধ্যমে বেশ সরব হন হিরো আলম। উক্ত ঘটনার প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রীকে চ্যালেঞ্জ করায় হিরো আলম গ্রেফতার হয়েছেন দাবিতে চটকদার ক্যাপশন ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে কোনরূপ তথ্যসূত্র ছাড়াই ভিত্তিহীনভাবে তথ্যটি ইন্টারনেটে প্রচারিত হয়।
উল্লেখ্য, পূর্বেও হিরো আলমের সংসদ সদস্য নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার প্রেক্ষিতে মিথ্যা তথ্য প্রচার করা হয়। উক্ত ঘটনায় ইতোমধ্যে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।
সুতরাং, প্রধানমন্ত্রীকে চ্যালেঞ্জ করায় হিরো আলম গ্রেফতার হয়েছেন দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা।
তথ্যসূত্র
- রিউমর স্ক্যানার টিমের নিজস্ব অনুসন্ধান
- ফেসবুক পেজ : হিরো আলম
- দ্য ডেইলি স্টার : এবার ওবায়দুল কাদেরকে হিরো আলমের চ্যালেঞ্জ
- দৈনিক প্রথম আলো : হিরো আলম কারাগারে