সম্প্রতি, “বেকিং নিউজ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় জামাত শিবিরের টচর্চার সেল নবাব আবদুল লতিফ হল” শিরোনামে শিবিরের সদস্যরা এক ব্যক্তিকে চার হাত-পা ধরে শূন্যে ঝুলিয়ে রেখে পিটিয়েছে দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অথবা বাংলাদেশের কোনো স্থানে কাউকে নির্যাতনের দৃশ্যের নয়। বরং, ভারতে ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্তকে গণপিটুনির ভিডিও দাবিতে ২০১৫ সাল থেকে ভিডিওটি ইন্টারনেটে বিদ্যমান।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে তুরস্কের সংবাদমাধ্যম ‘Ensonhaber’ এর ওয়েবসাইটে ২০১৫ সালের ২০ ফেব্রুয়ারিতে “Hindistan’da tecavüzcününı halk verdi” শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে ব্যবহৃত ছবিগুলোর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির মিল রয়েছে।

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, ভারতে ধর্ষণের অভিযোগে ধরা পড়া এক ব্যক্তিকে হাত-পা ধরে গণপিটুনি দেওয়া হয়েছে।
পরবর্তীতে উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে ফরাসি অনলাইন ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম ‘Dailymotion’ এ ২০১৫ সালের ২৫ সেপ্টেম্বরে “Cheating man gets a public caning” শিরোনামে আপলোডকৃত ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর দৃশ্যাবলীর সঙ্গে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির সাদৃশ্য দেখতে পাওয়া যায়।
অর্থাৎ, এটা নিশ্চিতভাবে বলা যায় যে, উক্ত ভিডিওর সঙ্গে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির কর্তৃক কোনো ব্যক্তিকে নির্যাতনের সম্পর্ক নেই।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর শিক্ষার্থীরা এক ব্যক্তিকে চার হাত-পা ধরে শূন্যে ঝুলিয়ে রেখে পিটিয়েছে দাবিতে গত বছরের আগস্ট মাসে ভিডিওটি ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছিল। সে সময়ে বিষয়টিকে মিথ্যা হিসেবে শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।
সুতরাং, ভারতের ভিডিওকে সাম্প্রতিক সময়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবির কর্তৃক এক ব্যক্তিকে নির্যাতনের ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।
তথ্যসূত্র
- Ensonhaber: Hindistan’da tecavüzcünün cezasını halk verdi
- Dailymotion: Cheating man gets a public caning
- Rumor Scanner’s Fact check: বাংলাদেশে শিক্ষার্থীদের কর্তৃক নির্যাতনের দৃশ্য দাবিতে ভারতের ভিডিও প্রচার