ডেথ সার্টিফিকেট সহ নম্বরপত্রটি বাংলাদেশের কোনো স্কুলের নয় 

সম্প্রতি “স্কুল পরীক্ষার মার্কশীটে ডেথ সার্টিফিকেইটও দিয়ে দেওয়া হয় আমার দেশে” শীর্ষক শিরোনামে একটি নম্বরপত্রের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। 

Screenshot from ‘Facebook’ 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে। 
পোস্টগুলোর আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ‘She has passed away’ লেখা সম্বলিত স্কুল পরীক্ষার নম্বরপত্রটি বাংলাদেশের কোনো স্কুলের নয় বরং এটি পূর্ব আফ্রিকার মালাউই দেশের একটি সেকেন্ডারি স্কুলের নম্বরপত্রের ছবি। 

Screenshot from ‘Facebook’

আলোচিত নম্বরপত্রে থাকা সাবজেক্ট গুলো বিশ্লেষণ করে ‘CHICHEWA’ নামের বিষয়ের উল্লেখ পাওয়া যায়। ন্যাশনাল আফ্রিকান ল্যাঙ্গুয়েজ রিসোর্স সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী, পূর্ব আফ্রিকার দেশ মালাউই’তে এই ‘CHICHEWA’ ভাষা ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। 

Source: ন্যাশনাল আফ্রিকান ল্যাঙ্গুয়েজ রিসোর্স সেন্টার

পরবর্তীতে মালাউই দেশের শিক্ষাগত পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত বিষয়সমূহের তালিকা অনুসন্ধান করতে গিয়ে, জার্মানি ভিত্তিক বিভিন্ন দেশের বিশ্ববিদ্যালয় সমূহের তথ্য সংক্রান্ত ওয়েবসাইট ‘RocApply’ এর একটি নিবন্ধে মালাউই এর সেকান্ডারি স্কুলের পাঠ্যক্রম খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার টিম। উক্ত ওয়েবসাইট থেকে প্রাপ্ত তথ্য ও ফেসবুকে প্রচারিত ‘She has passed away’ শীর্ষক লেখা সম্বলিত স্কুল পরীক্ষার নম্বরপত্রের ছবি পর্যবেক্ষণ করে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, আলোচিত নম্বরপত্রটি পূর্ব আফ্রিকার দেশ মালাউই এর একটি সেকেন্ডারি স্কুলের নম্বরপত্র।

Screenshot from RocApply 

নম্বরপত্রের ব্যাপারে সংবাদমাধ্যমগুলো কি বলছে?

রিভার্স ইমেজে সার্চের মাধ্যমে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম ‘নিউজ ২৪’ এর ওয়েবসাইটে “African English teacher gives hilarious remark on student’s marksheet; SEE PIC” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে নম্বরপত্রের হুবহু একই ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। ‘নিউজ ২৪’ এর  প্রতিবেদনটি বিশ্লেষণ করেও দেখা যায়, আলোচ্য নম্বরপত্রটি পূর্ব আফ্রিকার একটি স্কুলের নম্বরপত্র, বাংলাদেশের নয়। 

Source: News 24

পাশাপাশি প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে,  ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘Times of India’ এর ওয়েবসাইটে ২৭ মার্চ তারিখে ““She has passed away”: Teacher’s remark on student’s report card strikes a nostalgic chord for many” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত আরেকটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot from ‘Times of India’ website

‘Times of India’ এর প্রতিবেদনটিতেও একটি টুইটার একাউন্টে প্রচারিত টুইটের ভিত্তিতে আলোচিত নম্বরপত্রটিকে দক্ষিণ-পূর্ব আফ্রিকার মালাউই দেশের একটি স্কুলের নম্বরপত্র বলে উল্লেখ করা হয়েছে। 

মূলত, পূর্ব আফ্রিকার দেশ মালাউই এর একটি সেকেন্ডারি স্কুলে ‘She has passed away’ শীর্ষক লেখা সম্বলিত নম্বরপত্রটি কোনোপ্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্য প্রমাণ ছাড়াই ভিত্তিহীনভাবে বাংলাদেশের একটি স্কুলের নম্বরপত্র দাবি করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। 

অর্থাৎ, ‘She has passed away’ লেখা সম্বলিত নম্বরপত্রটি বাংলাদেশের স্কুলের নম্বরপত্র দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

আরও পড়ুন

spot_img