সম্প্রতি “বঙ্গবাজার আগুন লাগায় বাড়ছে সন্দেহ,একি বললো হাসিনা,৭ জনের মৃত্যু ৫ জন আটক’ শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।
Screenshot Source: Facebook
ফেসবুকে প্রচারিত এমন একটি পোস্ট দেখুন এখানে। আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো মৃত্যু কিংবা আটক হওয়ার ঘটনা ঘটেনি বরং আগুন নেভাতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৮ জন কর্মী আহত হয়েছে এবং প্রচারিত ভিডিওটির থাম্বনেইলে অগ্নিকাণ্ডে ৭ জনের মৃত্যু এবং ৫ জন আটকের কথা লিখলেও বিস্তারিত ভিডিওতে এমন কোনো তথ্য দেওয়া নেই।
গত ৪ এপ্রিল News Plus নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে ‘বঙ্গবাজার আগুন লাগায় বাড়ছে সন্দেহ,একি বললো হাসিনা,৭ জনের মৃত্যু ৫ জন আটক’ শীর্ষক শিরোনামে ৯ মিনিট ৪১ সেকেন্ডের একটি ভিডিও প্রকাশ করা হয়।
Screenshot Source: Facebook
ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, এটি কয়েকটি প্রতিবেদন নিয়ে তৈরি একটি নিউজ বুলেটিন ভিডিও। ৯ মিনিট ৪১ সেকেন্ডের এই ভিডিওটিতে ১মিনিট ৪৫ সেকেন্ডের সময় বঙ্গবাজারের অগ্নিকাণ্ডের বিষয়ে বলা হয়। এ বিষয়ে সংবাদ পাঠ ১ মিনিট ৪৫ সেকেন্ড থেকে শুরু হয়ে ২ মিনিট ৩৭ সেকেন্ড পর্যন্ত চলে।
সে অংশে বলা হয়, “বাংলাদেশে পাইকারি কাপড়ের বৃহৎ আড়ত হিসেবে পরিচিত ঢাকার বঙ্গবাজারের ৮টি মার্কেটের অন্তত ৫ হাজার দোকান ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এতে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা। দোকানগুলোতে ৫ লাখ থেকে ৫ কোটি টাকা পর্যন্ত মূল্যের মালামাল ছিল বলে জানিয়েছেন তারা। সহায়-সম্বল হারানোর পাশাপাশি অনেকে বিভিন্ন ব্যাংকে বড় অংকের ঋণ রয়েছে বলেও জানান ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা। জানা গেছে, পবিত্র রমজানের ঈদ ঘিরে ব্যবসায়ীরা দোকানে নতুন মালামাল তুলে পূর্ণ প্রস্তুতি নেন। কিন্তু ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড তাদের পথে বসিয়ে দিল। পুড়ে যাওয়া মার্কেটগুলোতে প্যান্ট, শার্ট, গেঞ্জি, থ্রি পিস ও শাড়ির দোকান ছিল। পাঁচ হাজার ব্যবসায়ীর অন্তত ১০ হাজার কোটি টাকা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানান তারা।”
উক্ত প্রতিবেদনের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে রাজনীতি সংবাদ নামের একটি ওয়েবসাইটে ‘পাঁচ হাজার ব্যবসায়ীকে পথে বসালো ভয়াল আগুন, ক্ষতি ১০ হাজার কোটি’ শীর্ষক শিরোনামে গত ৪ এপ্রিল প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot Source: rajnitisangbad.com
রিউমর স্ক্যানার যাচাই করে দেখেছে, রাজনীতি সংবাদে প্রকাশিত উক্ত প্রতিবেদনটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত হুবহু দাবিকৃত ভিডিওতে পাঠ করা হয়েছে।
এছাড়া অধিকতর অনুসন্ধানে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে মূলধারার গণমাধ্যম প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণে ‘ঈদের আগে দোকান পুড়ে নিঃস্ব তারা’ শীর্ষক শিরোনামে ০৫ এপ্রিল প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot Source: Prothom Alo
প্রতিবেদন বলা হয়, “বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এপর্যন্ত এক হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে এবং প্রায় পাঁচ হাজার দোকান পুড়ে গেছে। এছাড়াও আগুন নেভাতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৮ জন কর্মী আহত হয়েছেন এবং এদের মধ্যে দুজনের অবস্থা গুরুতর।”
তবে প্রতিবেদনে কারো মৃত্যুর তথ্য পাওয়া যায়নি। তাছাড়া এঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতারের বিষয়েও কোনো তথ্য প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়নি।
এছাড়াও কি-ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে মূল ধারার গণমাধ্যম দৈনিক ইনকলাবের অনলাইন সংস্করণে ‘বঙ্গবাজারে ৩০ ঘণ্টা পরও মাঝে মাঝেই জ্বলছে আগুন’ শীর্ষক শিরোনামে ০৫ এপ্রিল প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot Source: The Daily Inqilab
প্রতিবেদনে বলা হয়, “মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) ভোরের দিকে বঙ্গবাজারে আগুনের সূত্রপাত হয়। সকাল ৬টা ১০ মিনিটে অগ্নিকাণ্ডের খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। ভয়াবহ আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে বঙ্গবাজার মার্কেট। আগুন লাগার ৩০ ঘণ্টারও বেশি পার হয়েছে। আগুন নেভাতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৮ জন কর্মী আহত হয়েছেন বলেও প্রতিবেদনে জানানো হয়।”
তবে এই প্রতিবেদনেও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কারো মৃত্যু কিংবা গ্রেফতার সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি।
পাশাপাশি দেশীয় গণমাধ্যম কিংবা অন্যকোনো সূত্রে বঙ্গবাজারের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত কারো আটক কিংবা মৃত্যু সম্পর্কিত কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।
মূলত, সম্প্রতি বঙ্গবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে এবং এতে ৫ হাজার দোকান পুড়ে যাওয়া, ১ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি এবং আগুন নেভাতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৮ জন কর্মী আহত হয়। তবে একটি নিউজ বুলেটিন ভিডিওতে চটকদার শিরোনামে উক্ত ঘটনায় ৭ জনের মৃত্যু এবং ৫ জনের আটকের কথা লেখা হয়। প্রকৃতপক্ষে এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ওই অগ্নিকাণ্ডে কারো মৃত্যু কিংবা আটক হওয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি।
সুতরাং, বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৭ জনের মৃত্যু এবং ৫ জন আটক হওয়ার দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা।
সম্প্রতি, “বঙ্গবাজারের সবকিছু পুড়ে ছাই হলেও ২৪ ঘণ্টায়ও অক্ষত পবিত্র কোরআন শরীফ” শীর্ষক শিরোনাম সহ বিভিন্ন শিরোনামে “বঙ্গবাজারে আগুনে কোরআন পুড়ে যায়নি” শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও এবং ভিডিওর স্থিরচিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও ভিডিও শেয়ারিং সাইট ইউটিউবে প্রচার করা হয়েছে।
যদিও পরবর্তিতে “বায়ান্ন টিভি” সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের পোস্টকার্ড হালনাগাদ করে তবে সে-সময়েও ক্যাপশন অপরিবর্তিত ছিল।
Image Collage by Rumor Scanner
পাশাপাশি, দৈনিক কালবেলা (ভিডিও) তাদের ভিডিও প্রতিবেদনটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করে পোস্টের ক্যাপশনে “দাবি” শব্দ উল্লেখ করলেও ভিডিওর থাম্বনেইলের ক্যাপশনে সরাসরি সিদ্ধান্তমূলকভাবেই উপস্থাপন করেছে।
Screenshot: Facebook
এছাড়াও, মূলধারার গণমাধ্যম সময় টেলিভিশন ও আরটিভি এর ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত ভিডিও প্রতিবেদনের শিরোনামে দাবি করা হয়েছে গ্রন্থটি বুখারী শরীফ।
Image Collage by Rumor Scanner
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, বঙ্গবাজারে আগুনের ছাই থেকে উদ্ধার দাবিতে প্রচারিত গ্রন্থটি কোরআন শরীফ নয় বরং এটি হাদিস গ্রন্থ সহীহ বুখারী শরীফ এর ব্যাখ্যাগ্রন্থ “উমদাতুল কারী শারহু সহীহুল বুখারী” এর ১০ নং ভলিউম। গ্রন্থটির রচয়িতা আল্লামা বদরুদ্দীন আইনী।
অনুসন্ধান
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত পোস্টগুলোর মতামত পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায় অধিকাংশ ব্যবহারকারী দাবিটিকে সত্য ভেবে মন্তব্য করলেও কয়েকজন ব্যবহারকারী তাদের মন্তব্যে গ্রন্থটিকে “উমদাতুল কারী শরহে সহীহিল বোখারী” হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
Screenshot: Facebook/Comment
পরবর্তীতে কি-ওয়ার্ড সার্চ পদ্ধতি ব্যবহার করে সৌদি আরবের মার্কেটিং কম্পানির বুকস্টোর ওয়েবসাইট “jarir.com”-এ “Umdat Al-Qari Explanation of Sahih Al-Bukhari 20 vols” শিরোনামে আলোচিত গ্রন্থটির ন্যায় হবহু একই রকম কভার পেজ এর ছবি পাওয়া যায়।
Image Comparison by Rumor Scanner
অর্থাৎ, “উমদাতুল কারী শারহু সহীহুল বুখারী ব্যাখ্যাগ্রন্থ (অনূদিত)” ( ২০ ভলিউম একসাথে) গ্রন্থটি মূলত বিখ্যাত হাদিস গ্রন্থ “বুখারী শরিফ” এর ব্যখ্যাগ্রন্থ। পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে যে, দেশীয় সংবাদমাধ্যম “সময় টেলিভিশন” আলোচিত গ্রন্থটিকে সরাসরি “বুখারী শরীফ” হিসেবে উল্লেখ করেছে, কিন্তু আলোচিত গ্রন্থটি “বুখারী শরীফ” এর ব্যখাগ্রন্থ।
Screenshot: jarir.com
এছাড়াও, গুগল লেন্স ব্যবহার করেও গ্রন্থটির শিরোনাম ইংরেজি ও আরবি ভাষায় দেখা যায় “উমাদাত আল কারী” বা “উমাদাতুল কারী” (সংযুক্ত উচ্চারণে)।
Screenshot: Google Lens
এখানে গ্রন্থটির রচয়িতা হিসেবে “Badr -al-Din-ai-Ayni” নামটি পাওয়া যায়। একই নাম পাওয়া যায় (সংক্ষিপ্ত) দেশীয় অনলাইন বুকশপ রকমারিতে-ও।
অনুসন্ধানে উন্মুক্ত বিশ্বকোষ উইকিপিডিয়ায় আল্লাম আইনী এর পূর্ণনাম ও তার রচনা (আলোচিত গ্রন্থটির) সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায়।
Collage by Rumorscaner
যদিও দাবির ভিডিওগুলোর মধ্যে অনেকগুলোতে গ্রন্থটিকে উল্টো অবস্থায় দেখা যায়।
Collage by Rumorscanner
মূলত, গত ৪ এপ্রিল (মঙ্গলবার) রাজধানীর গুলিস্তানের বঙ্গবাজার এর কাপড়ের মার্কেটে ভয়াবহ আগুনে কয়েক হাজার দোকান পুড়ে যায়। পরবর্তীতে ০৫ এপ্রিল ধ্বংসস্তূপে আগুনের ছাই থেকে অক্ষত অবস্থায় একটি কোরআন শরীফ উদ্ধারের দাবি করেন এক ব্যক্তি। পরবর্তীতে বিষয়টি যাচাই-বাছাই ব্যতীত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পাশপাশি কয়েকটি গণমাধ্যমে-ও বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করা হয়। তবে অনুসন্ধানে জানা যায়, বঙ্গবাজারে আগুনের ছাই থেকে উদ্ধারের দাবিকৃত গ্রন্থটি কোরআন শরীক নয়, বুখারী শরীফের ব্যাখ্যাগ্রন্থ।
উল্লেখ্য, দাবির আলোচিত গ্রন্থটি “উমদাতুল কারী শারহু সহীহুল বুখারী” এর ১০ নম্বর ভলিউম। ভিডিওতে গ্রন্থটির গায়ে আরবি ভাষায় ১০ সংখ্যা উল্লেখ রয়েছে।
Screenshot: Facebook/SonaliNews
প্রসঙ্গত, ইতোপূর্বে ধর্মীয় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বেশকিছু ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।
সুতরাং, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও গণমাধ্যমে “বঙ্গবাজারে ধবংসস্তূপের মধ্য থেকে অক্ষত কোরআন উদ্ধার” শীর্ষক দাবি প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
এসব পোস্টে ড. কামাল হোসেনের নামে যা প্রচার করা হচ্ছে-
‘সেনাবাহিনীকে ভয় করলে শিবিরকে দিন নির্বাচন কমিশনকে একটা পরামর্শ দিতে পারি, নির্বাচনে সেনাবহিনীকে মোতায়েন করলে যদি আপনাদের ভয় লাগে, তাহলে নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য ইসলামী ছাত্র শিবির মোতায়েন করেন। দেখবেন নির্বাচন সুষ্ঠু গ্রহনযোগ্য হয়েছে, কারণ এদের কাছে সেনাবাহিনীর ট্রেনিং না থাকতে পারে, ইসলামি আদর্শের ট্রেনিং আছে।’
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, নির্বাচন সুষ্ঠু করতে নির্বাচন কমিশনকে দেওয়া ড. কামাল হোসেনের পরামর্শ দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে প্রচার হয়ে আসা ‘নির্বাচনে সেনাবাহিনীকে ভয় করলে শিবিরকে দিন’ শীর্ষক মন্তব্যটি ড. কামাল হোসেন করেননি। প্রকৃতপক্ষে ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ নির্বাচনের পূর্ব থেকে তার নামে উক্ত মন্তব্যটি কোনো ধরনের তথ্যসূত্র ছাড়াই ফেসবুকে প্রচার হয়ে আসছে।
ফেসবুকে উক্তিটি প্রথম কখন পাওয়া যায়?
ড. কামাল হোসেনের নামে দীর্ঘদিন ধরে প্রচারিত উক্ত মন্তব্যটির উৎস অনুসন্ধানে দেখা যায়, অন্তত ২০১৮ সালের ১৯ নভেম্বর থেকে তার নামে উক্ত মন্তব্যটি ফেসবুকে প্রচার হয়ে আসছে। ২০১৮ সালে ফেসবুকে প্রচারিত এমন পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে। আর্কাইভ দেখুন এখানে, এখানে, এখানে।
Image Collage by Rumor Scanner
তবে এসব পোস্ট বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, এগুলোর কোথাও তার এই সম্পর্কিত বক্তব্যের কোনো তথ্যসূত্র উল্লেখ করা হয়নি। অর্থাৎ ড. কামাল হোসেন কখন, কোথায় এমন মন্তব্য করেছেন সে বিষয়ে পোস্টগুলোতে কোনো তথ্য নেই।
পাশাপাশি একই সময়ে উক্ত পোস্টগুলোর বিপরীতে সেসময়ে ফেসবুকে এমন কিছু পোস্টও পাওয়া যায়, যেখানে ড. কামাল হোসেনের নামে প্রচারিত উক্ত উক্তিটিকে ভুয়া হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এমন কিছু ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে।
Image Collage by Rumor Scanner
পরবর্তীতে দাবিটি নিয়ে আরও অধিকতর অনুসন্ধানে ২০১৮ সাল ও পরবর্তী বিভিন্ন সময়ে ড. কামাল হোসেনকে নিয়ে করা বিভিন্ন গণমাধ্যমের একাধিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম।
যেমন, ২০১৮ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর একাদশ নির্বাচনকে ঘিরে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ড. কামাল হোসেন বলেন, বর্তমান সংবিধানিক কাঠামো এবং ক্ষমতাসীন সরকারের অধীনে নির্বাচনে যোগদান করতে তারা নীতিগতভাবে রাজি আছেন। তবে এ ব্যাপারে তাদের নবগঠিত জোটের শরীকদের সাথে কোন কথা হয়নি। এটি শুধুই তার দলের অবস্থান।
Screenshot: BBC Bangla
একই গণমাধ্যমে ২০১৮ সালের ২৮ নভেম্বর ‘কেন নির্বাচন করছেন না জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতা ড. কামাল হোসেন‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ড. কামাল হোসেন বলেন রাজনৈতিক ব্যাপারে যতটুকু যা করার তা তিনি করবেন, কিন্তু তিনি নির্বাচন করবেন না শুধু বয়সের কারণেই।
Screenshot: BBC Bangla
বেসরকারি টিভি চ্যানেল এনটিভির ২০১৮ সালের ১১ নভেম্বর ‘নির্বাচন কমিশনকে ড. কামাল হোসেনের চিঠি‘ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিক রাজনৈতিক দল হিসেবে দলীয় প্রতীক ‘উদীয়মান সূর্য’ নিয়ে অংশ নিতে চায় গণফোরাম। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়েছিলেন দলটির সভাপতি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন।
জার্মান গণমাধ্যম ডয়েচে ভেলেতে ২০১৮ সালের ১৪ ডিসেম্বর ‘জামায়াত নিয়ে প্রশ্ন করায় ড. কামালের ধমক‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, শহীদ বুদ্ধিজীবীদের শ্রদ্ধা জানাতে মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে গিয়ে এক সাংবাদিকের ‘‘জামায়াতকে নিয়ে আপনাদের সর্বশেষ অবস্থান কী?” শীর্ষক প্রশ্নে উত্তেজিত হয়ে পড়েন ড. কামাল হোসেন।
Screenshot: DW Bangla
তার এ উত্তেজিত হয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে ড. কামাল হোসেনের দল গণফোরামের প্রশিক্ষন সম্পাদক ও লেখক রফিকুল ইসলাম পথিক সেসময় গণমাধ্যমটিকে বলেন, ‘‘এখানে তো স্বাধীনতাবিরোধী কেউ নেই৷ জামায়াতকে নির্বাচন কমিশন থেকেই নিষিদ্ধ করা হয়েছে৷ ফলে জামায়াত তো নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না৷ তবে হ্যাঁ, যারা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে, তারা কয়েকজন ব্যক্তি৷ তারা যদি এখন কোনো খারাপ কাজ করে, তখন ব্যবস্থা নেয়া যাবে৷ আর স্বাধীনতাবিরোধী কোথায় নেই? প্রধানমন্ত্রীর আত্মীয় নেই, শেখ সেলিম সাহেব বিএনপি নেতার সঙ্গে আত্মীয়তা করেননি? তাহলে এখানে এসব নিয়ে কথা হচ্ছে কেন? আর ড. কামাল সাহেব তো জামায়াতের সঙ্গে যাননি৷ উনার সঙ্গে বিএনপি আছে৷ এখন বিএনপির সঙ্গে জামায়াত নেতাদের একটা সম্পর্ক আছে, সেটা যেভাবেই হোক, তার দায়-দায়িত্ব তো ড. কামাল হোসেন নেবেন না৷” ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা হিসেবে কী দায় ড. কামাল হোসেনের উপর বর্তায় না? এ প্রশ্নের জবাবে জনাব পথিক বলেন, ‘‘আমরা তো স্বীকারই করছি না৷ তাহলে আমাদের উপর কেন দায় বর্তাবে? এটা ঠিক নয়৷”
Screenshot: DW Bangla
এই প্রতিবেদন থেকে দেখা যায়, ড. কামাল হোসেনের দল গণফোরাম ইসলামি ছাত্রশিবিরের মূল সংগঠন জামায়াতে ইসলামীকে অস্বীকার করছে।
মূলধারার অনলাইন পোর্টাল জাগোনিউজ২৪ এ ২০১৯ সালের ২৫ মার্চ ‘সঞ্চালনায় সাবেক শিবির সভাপতি, বক্তব্যে ড. কামাল‘ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভাপতি ও জামায়াত থেকে বহিষ্কৃত নেতা মজিবুর রহমান মঞ্জুর সঞ্চালনায় এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রেখেছিলেন গণফোরাম সভাপতি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন। তবে একাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগ থেকেই জামায়াত-শিবিরের রাজনীতির বিরোধিতা করে আসছিলেন তিনি। এ বিরোধিতার জেরে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও জামায়াত ইস্যুতে টানাপোড়েন সৃষ্টি হয় ড. কামাল হোসেন গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মধ্যে। পরে জামায়াত নেতারা ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে আলাদাভাবে নির্বাচনে অংশ নেন।
Screenshot: Jago News24
অনলাইন নিউজ পোর্টাল বিডিনিউজ২৪ এ ২০১৮ সালের ৪ ডিসেম্বর ‘এনডিআইকে নির্বাচন পরিস্থিতি জানালেন কামাল হোসেন‘ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইন্সটিটিউটের (এনডিআই) সাথে সকালে বৈঠকে ড. কামাল হোসেন নির্বাচন ও নির্বাচনের পরিবেশ প্রভৃতি বিষয়ে নিয়ে আলোচনা করেন।
Screenshot: BD News24
জাতীয় দৈনিক সমকালের ২০১৭ সালের ২১ সেপ্টেম্বর ‘সেনা মোতায়েন চান ড. কামাল‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ড. কামাল হোসেন নির্বাচনের সময় সরকার ও প্রশাসনের নিরপেক্ষ ভূমিকা পালনের বিষয়টি নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। ইসি আয়োজিত রাজনৈতিক দলের ধারাবাহিক সংলাপে এ আহবান জানান তিনি। এসময় সশস্ত্র বাহিনীকে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাবও দেওয়া হয় দলটি থেকে।
Screenshot: Samakal
বেসরকারি টিভি চ্যানেল আরটিভির ২০১৮ সালের ২৫ নভেম্বর ‘সিইসির পদত্যাগ চান ড. কামাল‘ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ড. কামাল হোসেন বলেন, নির্বাচন কতটা সুষ্ঠু ও সুন্দর হবে সেটা নির্ভর করে নির্বাচনকালীন সরকার এবং নির্বাচন কমিশনের উপর। যেখানে নির্বাচন কমিশন পক্ষপাতিত্ব আচরণ করে সেই নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে সুষ্ঠু নির্বাচন আশা করা যায় না। এজন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদার পদত্যাগ চান তিনি।
Screenshot: RTV
দৈনিক নয়াদিগন্তের ‘ড. কামালের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের অভিযোগ‘ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ড. কামালের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ নেতারা অভিযোগ করেন, একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ড. কামাল হোসেন পাকিস্তানে সামরিক জান্তা ইয়াহিয়া খানের সাথে ছিলেন। তবে এসব অভিযোগের মধ্যে ড. কামালের শিবির ও সেনাবাহিনী সংশ্লিষ্ট মন্তব্যের ব্যাপারে কোনো উল্লেখ নেই।
Screenshot: Naya Diganta
এসব প্রতিবেদনেরও কোথাও এমন কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি, যা সুষ্ঠু নির্বাচন প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনকে উদ্দেশ্য করে ‘সেনাবাহিনীকে ভয় করলে শিবিরকে দিন।’ শীর্ষক মন্তব্য করেছেন ড. কামাল হোসেন এমন দাবিকে সমর্থন করে।
এছাড়া সাম্প্রতিক সময়েও ড. কামাল হোসেনের শিবির ও সেনাবাহিনীকে জড়িয়ে এমন কোনো বক্তব্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।
এই দাবি প্রসঙ্গে ড. কামাল হোসেনের পরিবার কি বলছে?
অনুসন্ধানের এই পর্যায়ে রিউমর স্ক্যানার টিম দাবিটির সত্যতা নিয়ে আরও নিশ্চিত হতে ড. কামাল হোসেনের মেয়ে ব্যারিস্টার সারাহ হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করে।
Statement of Sara Hossain (daughter of Dr Kamal Hossain).
এই বিষয়ে তিনি রিউমর স্ক্যানারকে বলেন, ‘ড. কামাল হোসেনের নামে প্রচারিত এই মন্তব্যটি পুরোপুরি মিথ্যা। তিনি কখনো এমন মন্তব্য করেননি।’
মূলত, ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় নির্বাচনের কিছুদিন পূর্ব থেকে দীর্ঘদিন ধরেই গণফোরাম সভাপতি ও সেসময় বাংলাদেশের সমমনা রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহবায়ক ড. কামাল হোসেনের নামে ‘সেনাবাহিনীকে ভয় করলে শিবিরকে দিন।’ শীর্ষক একটি বক্তব্য ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সেসময় ড. কামাল হোসেনের নামে উক্ত মন্তব্যটি প্রচার করা হলেও ফেসবুকের সেসব পোস্টে এই মন্তব্যটির কোনো তথ্যসূত্র বা সময়কাল উল্লেখ করা হয়নি। এছাড়া রিউমর স্ক্যানারের সার্বিক অনুসন্ধানেও এই দাবির পক্ষে কোনো সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি। একইসাথে ড. কামাল হোসেনের পরিবার থেকেও রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করা হয়েছে যে, ড. কামাল হোসেনের নামে প্রচারিত এই বক্তব্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।
সুতরাং, নির্বাচন সুষ্ঠু করা প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনকে উদ্দেশ্য করে ‘সেনাবাহিনীকে ভয় করলে শিবিরকে দিন।’ শীর্ষক দাবিতে ড. কামাল হোসেনের নামে ফেসবুকে প্রচারিত মন্তব্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।
সম্প্রতি প্রথম আলোর নির্বাহী সম্পাদক সাজ্জাদ শরিফ তার নারী সহকর্মীদের যেভাবে উত্ত্যক্ত করেন এমন দাবিতে পত্রিকাটির একজন নারী সাংবাদিককে উদ্ধৃত করে ‘সুন্দরী সহকর্মীদের গাল রগড়ে আদর করে দেন প্রথম আলো নির্বাহী সম্পাদক সাজ্জাদ শরীফ।’ শীর্ষক একটি তথ্য ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রথম আলোর নির্বাহী সম্পাদক সাজ্জাদ শরিফ কর্তৃক নারী সহকর্মীদের উত্ত্যক্ত করার দাবিতে পত্রিকাটির নারী সাংবাদিক নাজনীন আখতার তন্বীর নামে প্রচারিত বক্তব্যটি মিথ্যা। প্রকৃতপক্ষে ঐ নারী সাংবাদিককে উদ্ধৃত করে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীনভাবে উক্ত বক্তব্যটি প্রচার করা হচ্ছে।
প্রথম আলোতে ঐ নামে কি কোনো নারী সাংবাদিক আছে?
দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে রিউমর স্ক্যানার টিম প্রথমেই উল্লিখিত নাজনীন আখতার তন্বীর পরিচয় জানার চেষ্টা করে। আমরা অনুসন্ধানে নিশ্চিত হই যে, উক্ত নামে একজন নারী সাংবাদিক প্রথম আলোতে জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক হিসেবে কর্মরত আছেন।
নাজনীন আখতার তন্বী কি এমন কোনো মন্তব্য করেছেন?
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে প্রথম আলোর নির্বাহী সম্পাদক সাজ্জাদ শরিফ কর্তৃক নারী সহকর্মীদের উত্ত্যক্ত করার দাবিতে নারী সাংবাদিক নাজনীন আখতার তন্বীকে উদ্ধৃত করে যে বক্তব্যটি প্রচার করা হচ্ছে তার কোনো অস্তিত্ব খুঁজে পায়নি।
পরবর্তীতে বিষয়টির অধিকতর সত্যতা যাচাইয়ে রিউমর স্ক্যানার টিম নারী সাংবাদিক নাজনীন আখতার তন্বীর সঙ্গে যোগাযোগ করে।
এসময় তিনি রিউমর স্ক্যানারকে বলেন, “এটা পুরোপুরি মিথ্যা৷ আমি এমন মন্তব্য কখনোই করিনি৷ আমি অবাক হচ্ছি, মানুষ এত ঘৃণ্য কাজ কিভাবে করে?”
এছাড়া একই বিষয়ে প্রথম আলোর হেড অব রিপোর্টিং টিপু সুলতান রিউমর স্ক্যানারকে জানান, “এটা তো ভুয়া অবশ্যই। কদিন আগে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে আমাদের নামে একটি মামলা দিলো, আমরা সেসব মামলায় জামিনও পেলাম। এখন এটা আমাদের বিরুদ্ধে একরকম চরিত্রহননের চেষ্টা করছে, কেউ না কেউ এটা তো বুঝা যাচ্ছে। কারণ এটা প্রথম না, গত এক সপ্তাহে আমাদের আরও কলিগের নামে এমন প্রচারণা চালানো হয়েছে।”
প্রথম আলোর নির্বাহী সম্পাদকের নামে পূর্বেও গুজব প্রচার করা হয়
উল্লেখ্য, গত ২৯ মার্চ প্রথম আলোর নির্বাহী সম্পাদক সাজ্জাদ শরিফের নামে স্বাধীনতা দিবসে প্রথম আলোতে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের দায় ঐ প্রতিবেদকের উপর দিয়ে ‘এই দায় প্রথম আলোর নয়, এই দায় শামসুজ্জামানের’ শীর্ষক একটি উক্তি ফেসবুকে প্রচার করা হয়৷
Screenshot: Rumor Scanner
তবে পরবর্তীতে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, স্বাধীনতা দিবসে প্রথম আলোতে প্রকাশিত আলোচিত প্রতিবেদনের দায় প্রতিবেদক শামসুজ্জামানের বলে কোনো মন্তব্য করেননি পত্রিকাটির নির্বাহী সম্পাদক সাজ্জাদ শরিফ বরং কোনোপ্রকার তথ্যপ্রমাণ ছাড়া ভিত্তিহীনভাবে উক্ত তথ্যটি প্রচার করা হচ্ছে।
Screenshot: Rumor Scanner
এ প্রসঙ্গে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানটি পড়ুন এখানে।
মূলত, প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক নারী সাংবাদিক নাজনীন আখতার তন্বীকে উদ্ধৃত করে সম্প্রতি ফেসবুকে ‘সুন্দরী সহকর্মীদের গাল রগড়ে আদর করে দেন প্রথম আলো নির্বাহী সম্পাদক সাজ্জাদ শরীফ।’ শীর্ষক একটি বক্তব্য প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে যে, সাজ্জাদ শরিফ কর্মক্ষেত্রে তার নারী সহকর্মীদের এভাবে উত্ত্যক্ত করে থাকেন। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, নারী সাংবাদিক নাজনীন আখতার তন্বীর নামে উক্ত দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, যা নাজনীন আখতার তন্বী নিজেই রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করেছেন।
সুতরাং, প্রথম আলোর নির্বাহী সম্পাদক সাজ্জাদ শরিফ কর্তৃক নারী সহকর্মীদের উত্ত্যক্ত করার দাবিতে পত্রিকাটির নারী সাংবাদিক নাজনীন আখতার তন্বীর নামে প্রচারিত বক্তব্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।
তথ্যসূত্র
Contact with Nazneen Akther Ronny, Senior Reporter, Prothom Alo
Contact with Tipu Sultan, Head of Reporting, Prothom Alo
সম্প্রতি ‘আ’লীগ বিএনপির সংঘর্ষে এমপি শেষ‘ শীর্ষক শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।
ফেসবুকে প্রচারিত এমন একটি পোস্ট দেখুন এখানে। আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রচারিত নিউজ বুলেটিনের বিস্তারিত অংশে আওয়ামী লীগ-বিএনপির সংঘর্ষে এমপি হেনস্তা সম্পর্কিত কোনো তথ্য পাঠ করা হয়নি এবং এ সংক্রান্ত কোনো দৃশ্যও দেখানো হয়নি বরং নিউজ বুলেটিনের বিস্তারিত অংশে ভারতের এক এমপি গ্রেফতার হওয়া এবং বাংলাদেশের একটি মসজিদে ইমামের আলোচনাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষের খবর পাঠ করা হলেও অধিক ভিউ পাবার আশায় উক্ত ক্যাপশন এবং থাম্বনেইল ব্যবহার করে ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।
গত ২৮ মার্চ News Plus নামের ফেসবুক পেজ থেকে আ’লীগ বিএনপির সংঘর্ষে এমপি শেষ!’ শীর্ষক শিরোনাম এবং থাম্বনেইল ব্যবহার করে আলোচিত ভিডিওটি প্রকাশ করা হয়।
অনুসন্ধানের শুরুতে ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, এটি কয়েকটি প্রতিবেদন নিয়ে তৈরি একটি নিউজ বুলেটিন ভিডিও। ৮ মিনিট ২৯ সেকেন্ডের এই ভিডিওটিতে ভারতে বিজেপির এমপি গ্রেফতারের বিষয়ে বলা হয়। এবিষয়ে সংবাদ পাঠ ৪ মিনিট ২৫ সেকেন্ড থেকে শুরু হয়ে ৫ মিনিট ২৫ সেকেন্ড পর্যন্ত চলে। সেখানে বলা হয়, ‘ভারতের কর্নাটকে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে বিজেপি বিধায়ক মাদল বিরূপাক্ষকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। চুক্তি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে ঘুষ নিয়েছিলেন সরকারি কর্মকর্তার ছেলে। এবার সেই ঘটনায় তার বাবাকে সোমবার গ্রেফতার করা হলো। খবর ইন্ডিয়া টুডের। সম্প্রতি মাদলের ছেলে প্রশান্ত কুমার ৪০ লাখ রুপি ঘুস নেওয়ার সময় হাতেনাতে ধরা পড়েন। ওই ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত ছিলেন মাদল। ঘটনার ২০ দিনের বেশি সময় পর তাকে গ্রেফতার করা হলো।’
উক্ত প্রতিবেদনের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে দেশে বিদেশে নামের একটি অনলাইন পোর্টালে ‘ভারতে বিজেপির এমপি গ্রেপ্তার’ শীর্ষক শিরোনামে গত ২৮ মার্চ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন(আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot: deshebideshe.com
প্রতিবেদনে সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে’র বরাতে জানানো হয়, ‘ভারতের কর্নাটকে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে বিজেপি বিধায়ক মাদল বিরূপাক্ষকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। চুক্তি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে ঘুষ নিয়েছিলেন সরকারি কর্মকর্তার ছেলে। এবার সেই ঘটনায় তার বাবাকে সোমবার গ্রেফতার করা হলো। সম্প্রতি মাদলের ছেলে প্রশান্ত কুমার ৪০ লাখ রুপি ঘুষ নেওয়ার সময় হাতেনাতে ধরা পড়েন। ওই ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত ছিলেন মাদল। ঘটনার ২০ দিনের বেশি সময় পর তাকে গ্রেফতার করা হলো।’
পরবর্তীতে India Today তে গত ৬ মার্চ ‘Karnataka BJP MLA, booked for corruption, absconds as party calls for his arrest’ শিরোনামে প্রকাশিত মূল প্রতিবেদনটি খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot: India Today
রিউমর স্ক্যানার যাচাই করে দেখেছে, অনলাইন পোর্টাল দেশে বিদেশের প্রতিবেদনটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত হুবহু আলোচিত নিউজ বুলেটিন ভিডিওতে পাঠ করা হয়েছে।
অন্যদিকে ভিডিওটির বিস্তারিত অংশে আওয়ামী লীগ-বিএনপির সংঘর্ষের বিষয়ে কিছু বলা না হলেও সেখানে বুড়িচংয়ে মসজিদে সংঘর্ষের বিষয়ে বলা হয়। এবিষয়ে সংবাদ পাঠ ৫ মিনিট ২৭ সেকেন্ড থেকে শুরু হয়ে ৭ মিনিট ৩৮ সেকেন্ড পর্যন্ত চলে। সেখানে বলা হয়, বুড়িচংয়ে মসজিদের ইমামের আলোচনাকে কেন্দ্র করে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। বুড়িচংয়ে ষোলনলে বায়তুল আমান জামে মসজিদে তারাবির নামাজের সময় ইমামের আলোচনাকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে নয়জন আহত হয়েছেন। সোমবার (২৭ মার্চ) ইউনিয়নের খাড়াতাইয়া পূর্বপাড়ায় এ সংঘর্ষ হয়।
উক্ত প্রতিবেদনের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে মূল ধারার গণমাধ্যম নয়াদিগন্ত’র অনলাইন সংস্করণে গত ২৭ মার্চ ‘বুড়িচংয়ে মসজিদের ইমামের আলোচনাকে কেন্দ্র করে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন(আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot: Naya Diganta
রিউমর স্ক্যানার যাচাই করে দেখেছে, উক্ত প্রতিবেদনটিও শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত হুবহু আলোচিত নিউজ বুলেটিন ভিডিওতে পাঠ করা হয়েছে। প্রচারিত ভিডিওতে ব্যবহৃত এই সংবাদের অংশের ছবিও উক্ত প্রতিবেদন থেকে নেওয়া হয়েছে।
পাশাপাশি, দেশীয় কিংবা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে সম্প্রতি আ’লীগ বিএনপির সংঘর্ষে এমপি হেনস্তা সম্পর্কিত কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।
অর্থাৎ, প্রচারিত ভিডিও’র বিস্তারিত প্রতিবেদন এবং এবিষয়ে গণমাধ্যমের প্রতিবেদন পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, বাংলাদেশে আ’লীগ বিএনপির সংঘর্ষে কোনো এমপি হেনস্তা হওয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি।
মূলত, সম্প্রতি ভারতে দূর্নীতির অভিযোগে বিজেপির এক এমপি গ্রেফতার হয়েছেন এবং বাংলাদেশে বুড়িচংয়ে মসজিদের ইমামের আলোচনাকে কেন্দ্র করে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। তবে উক্ত ঘটনা দুইটিকে পাশাপাশি প্রচার করতে গিয়ে একটি নিউজ বুলেটিন ভিডিওতে ‘আ’লীগ বিএনপির সংঘর্ষে এমপি শেষ!’ শীর্ষক অপ্রাসঙ্গিক শিরোনাম এবং চটকদার থাম্বনেইল ব্যবহার করা হয়।
উল্লেখ্য, ক্যাপশন এবং থাম্বনেইলে চটকদার শিরোনাম ব্যবহার করে বিভিন্ন সময় বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করা হচ্ছে। এসব ঘটনা নিয়ে পূর্বেও ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।
সুতরাং, ভারতের এমপি গ্রেফতার হওয়া এবং বাংলাদেশের একটি মসজিদে সংঘর্ষের দুটো আলাদা ঘটনাকে পাশাপাশি রেখে ‘আ’লীগ বিএনপির সংঘর্ষে এমপি শেষ’ শীর্ষক শিরোনামে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।
রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, দুবাইয়ে বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা বন্ধ হয়নি বরং কোনোপ্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই দুবাইয়ে বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা বন্ধ হয়ে গেছে শীর্ষক দাবিটি ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।
কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে সংযুক্ত আরব আমিরাত ভিত্তিক পত্রিকা ‘Gulf News’ এ ২০১২ সালের ৩ অক্টোবর ‘No new UAE visas for Bangladeshis’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার টিম। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, ২০১২ সালে নিরাপত্তাজনিত কারণে বাংলাদেশীদের জন্য ভিসা প্রদান সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয় সংযুক্ত আরব আমিরাত।
পাশাপাশি কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে, ২০১৪ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত বাংলা নিউজ ২৪ এর একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, ২০১২ সালের পর থেকে শ্রমিক ভিসা ছাড়া অন্যন্যা ভিসা চালু আছে বাংলাদেশীদের জন্য।
তবে, সংযুক্ত আরব আমিরাতের ভিসা বন্ধের পুরনো প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া গেলেও, সাম্প্রতিক সময়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ভিসা বন্ধ হয়ে যাওয়ার ব্যাপারে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে কোনো তথ্য খুঁজে পায়নি রিউমর স্ক্যানার।
উপরন্তু, অনুসন্ধানে ২০২২ সালের ১৮ই অক্টোবর কলের কণ্ঠ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার। ‘বাংলাদেশে ই ভিসা বাস্তবায়নে আমিরাতের সঙ্গে চুক্তি’ শীর্ষক সেই প্রতিবেদনে দেখা যায় গতবছরের অক্টোবরে ভিসা প্রসেসিং সহজতর করতে ই-ভিসা চালু ব্যাপারে দুই দেশের মধ্যে চুক্তিপত্র স্বাক্ষরিত হয়েছে।
পাশাপাশি, বাংলাদেশিদের জন্য দুবাইয়ের ভিসা বন্ধ হওয়ার দাবির বিষয়ে জানতে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের কর্মসংস্থান অনুবিভাগের উপসচিব গাজী মোঃ শাহেদ আনোয়ার এর সাথে যোগাযোগ করে রিউমর স্ক্যানার টিম।
এ বিষয়ে তিনি রিউমর স্ক্যানারকে জানান, “দুবাইয়ের ভিসা বন্ধ হয়েছে এমন কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই।”
মূলত, সম্প্রতি বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য দুবাইয়ের ভিসা বন্ধ হয়ে গেছে শীর্ষক একটি দাবি কোনোপ্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে উক্ত দাবির কোনো সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া বাংলাদেশিদের জন্য দুবাইয়ের ভিসা বন্ধ হয়ে যাওয়ার দাবিটি সত্য নয় বলে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সূত্র রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করেছে।
উল্লেখ্য, মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশের মত সংযুক্ত আরব আমিরাতের অন্যতম প্রদেশ দুবাইয়ে প্রতিবছর বহু সংখ্যক বাংলাদেশি কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে পাড়ি জমায়।
সুতরাং, বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য দুবাইয়ের ভিসা বন্ধ হয়ে যাওয়ার তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।
সম্প্রতি, ফেসবুকে প্রচারিত একটি ডিজিটাল ব্যানারে আইপিএলের দল কলকাতা নাইট রাইডার্সের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ থেকে ‘আর্জেন্টিনাও প্রথম ম্যাচ হেরেছিল, কিন্তু তারাই চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল’ ক্যাপশন সম্বলিত একটি পোস্ট করা হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে।
উল্লেখ রাখা প্রয়োজন, ২০২২ সালের কাতার বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা প্রথম ম্যাচ হেরে গিয়েও শেষপর্যন্ত চ্যাম্পিয়ন হয়।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, কলকাতা নাইট রাইডার্সের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজের স্ক্রিনশট সম্বলিত একটি ডিজিটাল ব্যানারে ‘আর্জেন্টিনাও প্রথম ম্যাচ হেরেছিল, কিন্তু তারাই চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল’ শীর্ষক যে পোস্টের দাবি করা হচ্ছে তা সঠিক নয় বরং কলকাতা নাইট রাইডার্সের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ থেকে এমন কোনো পোস্ট করা হয়নি।
দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য কলকাতা নাইট রাইডার্সের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে অনুসন্ধান চালায় রিউমর স্ক্যানার টিম। তাদের সাম্প্রতিক ফেসবুক এক্টিভিটি পর্যালোচনা করে ‘আর্জেন্টিনাও প্রথম ম্যাচ হেরেছিল, কিন্তু তারাই চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল’ শীর্ষক কোনো পোস্টের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায় নি।
তাছাড়া, এ বিষয়ে গণমাধ্যমেও কোনো খবর প্রকাশিত হয়নি।
অর্থাৎ, কলকাতা নাইট রাইডার্স তাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে আলোচিত পোস্টটি করেনি।
বিভ্রান্তির নমুনা
আলোচ্য ডিজিটাল ব্যানারটিতে কলকাতা নাইট রাইডার্স ‘আর্জেন্টিনাও প্রথম ম্যাচ হেরেছিল, কিন্তু তারাই চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল’ শীর্ষক দাবি করেছে বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত হলে বাংলাদেশের অনেক ফেসবুক ব্যবহারকারী বিষয়টি যথাযথ যাচাই না করে ফেসবুকে প্রচার করেছেন। ফলে, অনেকে বিষয়টি সত্য ভেবে নিয়ে বিভ্রান্ত হয়েছেন। বিভ্রান্তির নমুনা দেখুন ছবিতে –
Source: Rumor Scanner Collage
মূলত, কলকাতা নাইট রাইডার্সের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজের স্ক্রিনশট সম্বলিত ডিজিটাল ব্যানারে কলকাতা নাইট রাইডার্স ‘আর্জেন্টিনাও প্রথম ম্যাচ হেরেছিল, কিন্তু তারাই চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল’ শীর্ষক পোস্ট করেছে বলে যে দাবির প্রেক্ষিতে অনুসন্ধানে জানা যায়, দলটি তাদের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ থেকে এমন কোনো পোস্ট করেনি। ২০২২ সালের ফুটবল বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার প্রথম ম্যাচ হারা এবং পরবর্তীতে বিশ্বকাপ জয়ের বিষয়টি উদাহরণ টেনে স্যাটায়ার হিসেবে ছড়িয়ে পড়েছে কলকাতা নাইট রাইডার্স বিষয়ক পোস্টটি।
উল্লেখ্য, গত পহেলা এপ্রিল এবারের আইপিএলে নিজেদের প্রথম ম্যাচে পাঞ্জাব কিংসের মুখোমুখি হয় কলকাতা নাইট রাইডার্স। বৃষ্টি আইনে সে ম্যাচে ৭ রানে পরাজিত হয় তারা। প্রথম ম্যাচে কলকাতা নাইট রাইডার্সের পরাজয়ের পরই উল্লিখিত পোস্টটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়।
সুতরাং, কলকাতার ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ থেকে ‘আর্জেন্টিনাও প্রথম ম্যাচ হেরেছিল, কিন্তু তারাই চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল’ শীর্ষক পোস্ট করার যে দাবি করা হচ্ছে; সেটি স্যাটায়ার।
সম্প্রতি, চাঁদপুর শহরের একটি মসজিদের ইমাম কর্তৃক মোবাইল দেখে নামাজ পড়ানোর ছবি দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, মোবাইল দেখে ইমাম কর্তৃক নামাজ পড়ানোর ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং এটি গত রমজানে অর্থাৎ ২০২২ সালে চাঁদপুরে মুসআব বিন উমাইর নামক একটি মসজিদে তারাবী নামাজ পড়ানোর দৃশ্য থেকে প্রাপ্ত ছবি।
অনুসন্ধানের শুরুতে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে ‘Mamunur Rashid’ নামের ফেসবুক একাউন্টে গত বছরে অর্থাৎ ২০২২ সালের ০৫ এপ্রিল তারিখে “মোবাইল দেখে নামাজ পড়া কোন সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত?” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি পোস্টে একই ছবির অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়।
“চাঁদপুর শহরের একটি মসজিদের ইমাম মোবাইলে সুরা দেখে তারাবির নামাজ পড়াচ্ছেন—এমন একটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। এ নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। তবে ভাইরাল ছবিটি গত রমজান মাসের। এ বছর এমন কোনও ঘটনা ঘটেনি।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বছর চাঁদপুর শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কের মুসআব বিন উমাইর মসজিদে আহলে হাদিসপন্থিদের তারাবির নামাজ পড়ানোর একটি ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। চলতি রমজানে ওই ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়। বিষয়টি দেখে বেশিরভাগ মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। সেইসঙ্গে অনেকে নেতিবাচক মন্তব্য করেছেন।ওই মসজিদের দায়িত্বশীলরা বলছেন, এ বছর অন্যান্য মসজিদের মতোই তারাবির নামাজ পড়ানো হচ্ছে। এবার মোবাইল দেখে তারাবির নামাজ পড়ানোর ঘটনা ঘটেনি। ভাইরাল হওয়া ছবি গত বছরের। এটি আমাদের এই মসজিদে ঘটেছিল।”
আলোচিত বিষয়টি নিয়ে চাঁদপুর মুসআব বিন উমাইর জামে মসজিদ এবং মাদ্রাসা কমপ্লেক্স এর ফেসবুক পেইজে প্রদত্ত মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করা হলে মসজিদ কর্তৃপক্ষ রিউমর স্ক্যানারকে জানায়, ২০২২ সালের রমজান মাসেই কেবল মোবাইলে সূরা দেখে তারাবী নামাজ পড়ানো হয়েছিলো। সাম্প্রতিক সময়ে ফেসবুকে যেসব ভিডিও এবং ছবি প্রচারিত হচ্ছে মূলত তাদের পেইজ থেকেই সর্বপ্রথম এটি প্রচার করা হয়েছিলো। যদিও ভিডিওটি পরবর্তীতে ডিলিট করে দেয়া হয়েছে।
তবে, গত বছরে অর্থাৎ ২০২২ সালের রমজান মাসে মোবাইল দেখে নামাজ পড়ানোর ভিডিওটি থেকে প্রাপ্ত স্ক্রিনশট সাম্প্রতিক সময়ে পূর্বের তারিখ উল্লেখ ব্যতীত প্রচার করার ফলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীদের মধ্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। সম্প্রতি ফেসবুকে প্রচারিত পোস্টগুলোর কমেন্টবক্সে কিছু বিভ্রান্তির নমুনা উল্লেখ করা হলো;
Image Collage by Rumor Scanner
মূলত, গত বছরে অর্থাৎ ২০২২ সালের রমজান মাসে চাঁদপুর শহরের বঙ্গবন্ধু সড়ক সংলগ্ন “মুসআব বিন উমাইর” নামক একটি মসজিদে ইমাম কর্তৃক মোবাইলে সূরা দেখে নামাজ পড়ানো হয়েছিলো। সে সময়ে মসজিদ কর্তৃপক্ষ তাদের ফেসবুক পেজে ভিডিওটি প্রচার করেছিলো। গত রমজানে ইমাম কর্তৃক মোবাইল দেখে নামাজ পড়ানোর ঘটনায় ধারণকৃত ভিডিওটি থেকে স্ক্রিনশট নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে ফেসবুকে পূর্বের তারিখ উল্লেখ ব্যতীত তা পুনরায় প্রচার করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ন্যায় এ বছরেও অর্থাৎ ২০২৩ সালে বরিশাল নগরের ব্যাপ্টিস্ট মিশন রোডের ‘বায়তুল আনোয়ার’ জামে মসজিদে মোবাইল দেখে তারাবি নামাজ পড়ানোর ঘটনা ঘটেছে বলে গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়। এ সংক্রান্ত একটি সংবাদ ‘BanglaNews24‘ এর ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।
সুতরাং, ২০২২ সালের রমজানে মসজিদের ইমাম কর্তৃক মোবাইলে দেখে নামাজ পড়ানোর দৃশ্যটি সাম্প্রতিক সময়ে পূর্বের তারিখ উল্লেখ ব্যতীত ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ বিভ্রান্তিকর।
সম্প্রতি, “যে কারণে ফেরাউনের পাসপোর্ট করেছিল মিশর !! পৃথিবীর ইতিহাসে তিনি একমাত্র ফেরাউন যার পাসপোর্ট রয়েছে। মিশরের এই ফেরাউন, হ য র ত মুসা (আ) এর যুগে রাজত্ব করছিল।” শীর্ষক শিরোনামে একটি কথিত পাসপোর্টের ছবি সম্বলিত ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ভিডিওতে ব্যবহৃত ফেরাউন বা দ্বিতীয় রামসেস এর পাসপোর্ট দাবিতে প্রচারিত পাসপোর্টটি আসল নয় বরং পাসপোর্টের ছবিটি একজন শিল্পীর তৈরি ডিজিটাল আর্টওয়ার্ক।
মূলত, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় নির্মিত একটি নমুনাস্বরূপ পাসপোর্টের ছবি ব্যবহার করে একটি ভিডিওচিত্রে আলোচিত পাসপোর্টটি ফেরাউন বা দ্বিতীয় রামসেস এর প্রকৃত/আসল পাসপোর্ট দাবি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, একই ছবিটি ফেরাউন বা দ্বিতীয় রামসেস এর পাসপোর্টের আসল ছবি দাবিতে পূর্বেও একাধিকবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হলে সে সময় বিষয়টিকে মিথ্যা হিসেবে শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার টিম।
সম্প্রতি, বিভিন্ন শিরোনামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে দেখা যায় “কাপড় বিতরণ করতে গিয়ে বিতরণকারী কাপড় নিতে আসা এক মহিলাকে আঘাত করে বসে।” ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
পরবর্তীতে এই বিষয়টি নিয়ে “সংসদ সদস্যের শাড়ি নিতে গিয়ে মার খেলেন বৃদ্ধা, ভিডিও ভাইরাল” শীর্ষক শিরোনামে অনলাইনে সংবাদ প্রকাশ করে সংবাদ মাধ্যম ঢাকাটাইমস।
ঢাকাটাইমস তাদের সংবাদের শিরোনামে “ভিডিও ভাইরাল” শব্দদ্বয় ব্যবহার করেছে যেটা সাধারণত সাম্প্রতিক কোনো ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হলে গণমাধ্যমগুলো এভাবে শিরোনাম করে থাকে। ফলে যে কেউ শুধুমাত্র শিরোনাম পড়লে ভিডিওর ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ে ঘটেছে।
Screenshot Dhakatimes24
এমনকি সংবাদের বিস্তারিত অংশেও ঢাকাটাইমস উল্লেখ করেছে ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ের।
Screenshot Dhakatimes24
অর্থাৎ, দাবি করা হচ্ছে আলোচিত ভিডিওর ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ে ঘটেছে।
উক্ত দাবিতে গণমাধ্যমে প্রকাশিত ‘সংবাদ’ দেখুন ‘ঢাকাটাইমস২৪’ (আর্কাইভ)। এছাড়াও ঢাকাটাইমস তাদের ফেসবুক পেজেও সংবাদটি শেয়ার করে, দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
সংবাদ অনুযায়ী ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ে ঘটেছে ভেবে ঢাকাটাইমস এর সংবাদটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও অনেকে শেয়ার করে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সংসদ সদস্যের শাড়ি নিতে গিয়ে বৃদ্ধার মার খাওয়ার ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং এটি ২০২২ সালের ২৭ তম রমজানের (২৯ এপ্রিল) ঘটনা।
বিভ্রান্তির নমুনা
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আলোচিত ভিডিওটির কমেন্টবক্সে নানাবিধ মন্তব্য পাওয়া গেছে। যাদের অনেকেই ভিডিওটি সাম্প্রতিক কোনো ঘটনার ভেবে সে অনুযায়ী মন্তব্য করেছেন। আবার অনেকে ভিডিওটি সাম্প্রতিক ভেবে ভিডিওর সাথে সাম্প্রতিক ঘটনার মতো করে ক্যাপশন বা প্রতিক্রিয়া লিখে শেয়ার করেছেন। একই উদাহরণ (সাম্প্রতিক ভেবে বিভ্রান্তির) পাওয়া যায় ব্যবহারকারীদের দ্বারা ঢাকাটাইমসের প্রতিবেদনটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ারের ক্ষেত্রেও।
ভিডিওটির একটি মূহূর্তের সাথে ‘ঢাকা টাইমস২৪’ এ প্রকাশিত সংবাদের ছবির সাথে হুবহু মিলে যায়।
Collage by RSB
পরবর্তীতে,’Satkhira Bulletin’ এর সাথে যোগাযোগ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। সাতক্ষীরা বুলেটিন কর্তৃপক্ষ এর একজন রিউমর স্ক্যানারকে জানান, তিনি ভিডিওটি ২০২২ সালের আরবি রমজান মাসের ২৭ (২৯ এপ্রিল) তারিখ ধারণ করেছিলেন। তিনি বলেন, ২০২২ সালের ২২ এপ্রিল (২৭ রমজান) সাতক্ষীরা-২ সদর আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবির কথামতো তার বাসভবনের সামনের রাস্তায় যাকাতের শাড়ি বিতরণ কার্যক্রম চলছিলো। সাংসদের পক্ষ থেকে শড়ি বিতরণ করছিলেন তার মামাতো ভাই। এক পর্যায়ে কোনো কারণে তিনি ভিডিওতে দেখানো মহিলার মাথায় শাড়ি দিয়ে আঘাত করেন।
এছাড়াও, সাতক্ষীরার স্থানীয় এক প্রতিনিধির মাধ্যমে ভুক্তভোগীর সাথে সরাসরি কথা বলেও জানা গেছে ঘটনাটি গত বছর ২৭শে রমজানের সময়কার।
অর্থাৎ, সংসদ সদস্যের দানের শাড়ি নিতে গিয়ে বৃদ্ধার হেনস্থা হওয়ার ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং উক্ত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি গত ২০২২ সালের ২৯ এপ্রিলে ধারণকৃত।
মূলত, গত বছরের ২৯ এপ্রিল সাতক্ষীরা-২ সদর আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ বাসভবনের সামনের রাস্তায় যাকাতের শাড়ি বিতরণ কার্যক্রম চলাকালীন বিতরণকারী এক পর্যায়ে সেই মহিলার মাথায় শাড়ি দিয়ে আঘাত করে। পরবর্তীতে আব্দুল্লাহ আল মাহফুজ এই ভিডিওটি কোনো কারণে তার নিজস্ব ফেসবুক পেজে প্রকাশ করলে গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেটি সাম্প্রতিক ভিডিও বলে দাবি করছে।
উল্লেখ্য, অভিযুক্ত ব্যক্তি সম্প্রতি একটি রাজনৈতিক দলের স্থানীয় পর্যায়ে সভাপতি পদ লাভ করেছেন। সে কারণে-ই পুরাতন ভিডিওটি পুনরায় ছড়িয়ে পড়েছে বলে মতামত দিয়েছেন স্থানীয় একজন সাংবাদিক।
প্রসঙ্গত, পূর্বেও ভিডিও ভিত্তিক বেশকিছু তথ্য যাচাই করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।
সুতরাং, সংবাদমাধ্যমে সংসদ সদস্যের শাড়ি নিতে গিয়ে বৃদ্ধার হেনস্তা হওয়া শীর্ষক ভিডিওর পুরোনো ঘটনাকে সাম্প্রতিক সময়ের ঘটনা দাবি করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।