Home Blog Page 601

জো বাইডেনের সাথে প্রধানমন্ত্রীর সেলফি নিয়ে আনন্দবাজার সূত্রে ভুয়া তথ্য প্রচার 

0

সম্প্রতি ভারতীয় বাংলা দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকার সূত্রে ‘জোর করে বাইডেনের সাথে ছবি তুলেছেন শেখ হাসিনা’ শীর্ষক শিরোনামে একটি সংবাদের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট  (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ)।  

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সাথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জোর করে ছবি তুলেছেন দাবিতে দৈনিক আনন্দবাজারে কোনো সংবাদ প্রকাশিত হয়নি। প্রকৃতপক্ষে গণমাধ্যমটিতে প্রকাশিত একটি সংবাদ বিকৃত করে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে। 

দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত পোস্টগুলোর সূত্রে দেখা যায়, ‘জোর করে বাইডেনের সাথে ছবি তুলেছেন শেখ হাসিনা’ শীর্ষক দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত সংবাদটি আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে ৯ সেপ্টেম্বর, শনিবার, শহর সংস্করণে।

এ সূত্রে গণমাধ্যমটির ওয়েবসাইটে একই দিনের একই সংস্করণটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

পরবর্তীতে এই সংস্করণটির সাথে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত সংবাদের ছবিটির তুলনামূলক পর্যালোচনা করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত ছবিটির সাথে মূল আনন্দবাজার পত্রিকার বেশ কিছু অসংগতি পাওয়া যায়।

Image Collage: Rumor Scanner 

যেমন, আনন্দবাজার পত্রিকার লিড বা প্রধান শিরোনাম ছিল ‘বিবৃতিতে বহুত্ববাদও’, সেকেন্ড লিড বা দ্বিতীয় প্রধান শিরোনাম ছিল ধূপগুড়িতে জয় ‘ইন্ডিয়া’র: মমতা, প্রথম কলামে শিরোনাম ছিল যাদবপুরে ছাত্রমৃত্যুতে পকসো ধারা।

এই শিরোনামগুলোর সাথে আনন্দবাজার সূত্রে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত ছবিটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পোস্টগুলোতে ‘জোর করে বাইডেনের সাথে ছবি তুলেছেন শেখ হাসিনা’ শীর্ষক দাবিতে যে শিরোনামটি দেখা যাচ্ছে, সেটি আনন্দবাজারের মূল পত্রিকাটিতে খুঁজে পাওয়া যায়নি। বরং তার পরিবর্তে একই জায়গায় ‘চিনের সম্পর্ক আর্থিক হলেও রক্তের বন্ধু ভারত, বার্তা হাসিনার’ শীর্ষক একটি সংবাদ দেখা যায়।

এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পোস্টগুলোতে প্রচারিত সংবাদে ‘জোর করে বাইডেনের সাথে ছবি তুলেছেন শেখ হাসিনা’ শীর্ষক সংবাদটিতে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের একটি ছবি দেখা গেলেও আনন্দবাজার পত্রিকাটিতে এমন কোনো ছবি খুঁজে পাওয়া যায়নি।

পাশাপাশি আনন্দবাজার সূত্রে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পোস্টগুলোতে প্রচারিত সংবাদটিতে ব্যবহৃত ফন্টের সাথেও মূল আনন্দবাজার পত্রিকায় ব্যবহৃত ফন্টের মধ্যেও মিল খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এ পর্যন্ত অনুসন্ধানে প্রতীয়মান হয় যে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জি২০ সম্মেলনে গিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠক প্রসঙ্গে আনন্দবাজার পত্রিকায় ‘চিনের সম্পর্ক আর্থিক হলেও রক্তের বন্ধু ভারত, বার্তা হাসিনার’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন ও গণমাধ্যমটিতে প্রকাশিত বাইডেন-মোদীর কুশল বিনিময়ের আরেকটি ছবি বিকৃত করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উপরিউক্ত সংবাদটি প্রচার করা হচ্ছে। 

মূলত, ভারতে অনুষ্ঠিত জি২০ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে কুশলাদি বিনিময়কালে সেলফি তুলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এছাড়া বাইডেন উক্ত সম্মেলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাথেও কুশল বিনিময় করেন। বাইডেন-মোদি কুশল বিনিময়ের এমন একটি ছবি ও নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে শেখ হাসিনার বৈঠক নিয়ে  আনন্দবাজারে প্রকাশিত একটি সংবাদ বিকৃত করে গণমাধ্যমটির সূত্রে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘জোর করে বাইডেনের সাথে ছবি তুলেছেন শেখ হাসিনা’ শীর্ষক বানোয়াট শিরোনামে প্রচার করা হচ্ছে।

সুতরাং, ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার সূত্রে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সাথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জোর করে ছবি তুলেছেন দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ বানোয়াট ও বিকৃত করা।

তথ্যসূত্র

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য বিকৃত করে প্রচার

0

বিগত কয়েক মাস ধরে “অবৈধ ক্ষমতাকে বা কেউ যদি ভোট চুরি করে সেটা আওয়ামী লীগ পারে, সেটা আমরা প্রমাণ করেছি” শীর্ষক মন্তব্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করেছেন দাবিতে তার বক্তব্যের একটি ভিডিও ফেসবুক এবং ইউটিউবে প্রচার করা হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী

ফেসবুকে উক্ত দাবিতে প্রচারিত ভিডিও দেখুন পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ) এবং পোস্ট (আর্কাইভ)।

ইউটিউবে উক্ত দাবিতে প্রচারিত ভিডিও দেখুন পোস্ট (আর্কাইভ)।

টিকটকে উক্ত দাবিতে প্রচারিত ভিডিও দেখুন পোস্ট (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমন কোনো মন্তব্য করেননি বরং বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তার দেওয়া একটি বক্তব্যের ভিডিও এডিটের মাধ্যমে কাটছাঁট করে খণ্ড খণ্ড অংশ জোড়া লাগিয়ে উক্ত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

ভিডিওটির কিছু কি-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে বাংলাদেশ টেলিভিশন (BTV) এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ১০ জানুয়ারিতে প্রচারিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া বক্তব্যের মূল ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Video comparison by Rumor Scanner

ভিডিওটি থেকে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেদিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিয়েছেন। প্রচারিত ভিডিওর ১ ঘন্টা ৫৫ মিনিট ৩০ সেকেন্ড থেকে ১ ঘন্টা ৫৫ মিনিট ৫০ সেকেন্ড পর্যন্ত শেখ হাসিনার দেওয়া ভাষণে বলেন, “কিন্তু অবৈধ ক্ষমতাকে বা কেউ যদি ভোট চুরি করে, তাকে ক্ষমতা থেকে হটানো সেটা আওয়ামী লীগ পারে এটা আমরা প্রমাণ করেছি। এটা আমরা প্রমাণ করেছি বারবার। আমরা গণতন্ত্রের চর্চা নিজের দলে করি, দেশেও গণতন্ত্রের চর্চা করি।”

এছাড়া, SATV এর ফেসবুক পেজে গত ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনার একই বক্তব্য খুঁজে পাওয়া যায়।

অর্থাৎ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বক্তব্যে বিএনপিকে সমালোচনাকে করে দলটির বিরুদ্ধে অবৈধ ক্ষমতা এবং ভোট চুরির অভিযোগ তুলেছেন। কিন্তু, ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিওটি প্রধানমন্ত্রীর মূল বক্তব্য থেকে খণ্ড খণ্ড অংশ কেটে এডিটেডের মাধ্যমে জোড়া লাগিয়ে বিভ্রান্তিকরভাবে প্রচারিত করা হচ্ছে।

মূলত, গত ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বক্তব্য প্রদান করেন। উক্ত অনুষ্ঠান চলাকালীন একপর্যায়ে তিনি বলেন, “কিন্তু অবৈধ ক্ষমতা বা কেউ যদি ভোট চুরি করে, তাকে ক্ষমতা থেকে হটানো সেটা আওয়ামী লীগ পারে। এটা আমরা প্রমাণ করেছি। এটা আমরা প্রমাণ করেছি বারবার। আমরা গণতন্ত্রের চর্চা নিজের দলে করি, দেশেও গণতন্ত্রের চর্চা করি।” তবে, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সেই বক্তব্য থেকে ‘তাকে ক্ষমতা থেকে হটানো’ শীর্ষক অংশটি বাদ দিয়ে “অবৈধ ক্ষমতাকে বা কেউ যদি ভোট চুরি করে সেটা আওয়ামী লীগ পারে, এটা আমরা প্রমাণ করেছি” শীর্ষক অংশ বিকৃতভাবে প্রচার করা হচ্ছে। যার ফলে আলোচিত বক্তব্যটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে।

উল্লেখ্য, পূর্বেও বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের বক্তব্য ইন্টারনেটে বিকৃতভাবে প্রচার করা হলে সেগুলো শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। প্রতিবেদনগুলো দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘অবৈধ ক্ষমতাকে বা কেউ যদি ভোট চুরি করে সেটা আওয়ামী লীগ পারে, সেটা আমরা প্রমাণ করেছি’ শীর্ষক দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত ভিডিওটি বিকৃত বা এডিটেড।

তথ্যসূত্র

মদ খেয়ে নেশাগ্রস্থ অবস্থায় চিতাবাঘের ঘুরাফেরার দাবিটি মিথ্যা

0

সম্প্রতি, “দেশী মদ খেয়ে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় চিতাবাঘ” শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

মদ

ফেসবুকে প্রচারিত এমনকিছু ভিডিও পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, চিতাবাঘটি মদ খেয়ে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ঘুরাফেরা করেনি বরং চিতাবাঘটি জলাতঙ্কের সংক্রমণের কারণে মস্তিষ্কের বিরল রোগে আক্রান্ত। যার ফলে চিতাবাঘটি  অচেতন অবস্থায় গ্রামে ঘুরাফেরা করেছিল।

অনুসন্ধানের শুরুতে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ভারতের NDTV এর টুইটার অ্যাকাউন্টে গত ৩০ আগস্ট প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

১১ সেকেন্ডের ভিডিওটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, ভারতের মধ্যপ্রদেশের একটি গ্রামে অসুস্থ একটি চিতাবাঘ ঘুরে বেড়াচ্ছে।

NDTV তে প্রকাশিত ভিডিওটির সাথে প্রচারিত ভিডিওটির হুবহু মিল পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner

পরবর্তীতে কি ওয়ার্ড সার্চ করে NDTV এর ওয়েবসাইটে গত ৩০ আগস্ট “Sick Leopard Wanders Into Madhya Pradesh Village, This Happens Next” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ভারতের মধ্যপ্রদেশের ইকলেরা গ্রামের লোকেরা একটি চিতাবাঘকে হয়রানি করছে এমন একটি ভিডিও অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে অসুস্থ চিতাবাঘটিকে কিছু মানুষ তাড়া করছে এবং লাল প্যান্ট পরা একজন ব্যক্তি চিতাবাঘের পিঠে বসে আছে। চিতাবাঘটিকে মধ্যপ্রদেশের দেওয়াস জেলার ইকলেরার কাছে জঙ্গলে ঘুরে বেড়াতে দেখা গেছে। কিছু গ্রামবাসী প্রথমে ভয় পেয়ে যায়। কিন্তু যখন তারা দেখেছিল যে চিতাটি অলস এবং আক্রমণাত্মক নয়, তখন তারা বুঝতে পারে বাঘটি অসুস্থ।

একই তারিখে THE NEW INDIAN EXPRESS এর ওয়েবসাইটে “Locals in MP village try to ride on ailing leopard; animal rescued and hospitalised” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত আরেকটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

এই প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ভারতের মধ্যপ্রদেশের দেওয়াস জেলায় একটি অসুস্থ বন্য চিতাবাঘকে একদল গ্রামবাসী ঘিরে ফেলে বাঘটির সাথে তারা সেলফি তুলেছে এবং বাঘটির উপর চড়ার চেষ্টা করেছে। মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) দেওয়াসের ইকলেরা গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে। পরবর্তীতে বন বিভাগ চিতাবাঘটিকে উদ্ধার করেছে। এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, প্রাণীটি মস্তিষ্কের কিছু ব্যাধিতে ভুগছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। বুধবার গুরুতর অবস্থায় ইন্দো শহরের একটি চিড়িয়াখানায় ভর্তি করা হয়েছিল। প্রাণীটি জীবনের জন্য লড়াই করছে।

অসুস্থ চিতাবাঘটির চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক ডা. উত্তম যাদব ভারতীয় গণমাধ্যম আজতক বাংলাকে বলেন, চিতাবাঘটি ক্যানাইন ডিস্টেম্পার ভাইরাস বা জলাতঙ্কের সংক্রমণের কারণে মস্তিষ্কের বিরল রোগে আক্রান্ত। 

অর্থাৎ, বাঘটি নেশাগ্রস্থ অবস্থায় নয় অসুস্থ অবস্থায় ঘুরাফেরা করছিল।

মূলত, ভারতের মধ্যপ্রদেশের ইকলেরা গ্রামে একটি চিতাবাঘকে ঘুরাফেরা করতে দেখে গ্রামবাসীরা লাঠিসোঁটা দিয়ে এগিয়ে যায়। কিন্তু, বাঘটিকে আক্রমণ করতে না দেখে তাঁরা বাঘটির সাথে সেলফি তুলে এবং উপরে চড়তে চেষ্টা করে। পরবর্তীতে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘বাঘটি দেশী মদ খেয়ে অচেতন অবস্থায় ঘুরাফেরা করছে’ শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। তবে অনুসন্ধানে জানা যায়, চিতাবাঘটি জলাতঙ্কের সংক্রমণের কারণে মস্তিষ্কের বিরল রোগে আক্রান্ত হয়ে অচেতন অবস্থায় গ্রামে ঢুকে পড়ে। বাঘের এই আচরণের সাথে মদ খেয়ে নেশা করার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।

সুতরাং, মদ খেয়ে নেশাগ্রস্ত অবস্থান চিতাবাঘের ঘুরাঘুরি দাবিতে প্রচারিত এই তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

প্রধানমন্ত্রীর ছবি সম্বলিত ৫০ টাকার নোটটি প্রচলিত কোনো নোট নয়, এটি স্মারক নোট

0

সম্প্রতি, প্রধানমন্ত্রীর ছবি সম্বলিত ৫০ টাকার একটি নোট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমনকিছু পোস্ট দেখুন এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি সম্বলিত ৫০ টাকার নোটটি প্রচলিত কোন নোট নয় বরং এটি মেট্রোরেলের উদ্বোধন উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক প্রকাশিত একটি স্মারক নোট।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতেই ছড়িয়ে পড়া পোস্টগুলোতে সংযুক্ত নোটের ছবিটি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ৫০ টাকার নোটটিতে লাল অক্ষরে লেখা রয়েছে, “স্মারক নোট, বিক্রয়যোগ্য নয়।”

Indication by Rumor Scanner

পাশাপাশি, কি-ওয়ার্ড সার্চ পদ্ধতি ব্যবহার করে, জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে ২০২২, সালের ২৭ ডিসেম্বর “মেট্রোরেল চালু উপলক্ষে আসছে ৫০ টাকার স্মারক নোট” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, “বাংলাদেশের প্রথম মেট্রোরেলের উদ্বোধন উপলক্ষে বাংলাদেশ ব্যাংক ৫০ টাকা মূল্যমানের একটি স্মারক নোট মুদ্রণ করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাল বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় মেট্রোরেলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্মারক নোটটি আনুষ্ঠানিকভাবে অবমুক্ত করবেন।” প্রতিবেদনের সাথে উক্ত নোটের সংযুক্ত একটি ছবিও খুঁজে পাওয়া যায়।

মূলত, বাংলাদেশের প্রথম মেট্রোরেল উদ্বোধন উপলক্ষে বাংলাদেশ ব্যাংক ৫০ টাকা মূল্যমানের একটি স্মারক নোট মুদ্রণ করে এবং গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মেট্রোরেলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নোটটি অবমুক্ত করেন। সেই স্মারক নোটের একটি ছবিই সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। ফলে উক্ত স্মারক নোটকে প্রচলিত নোট ভেবে ব্যবহারকারীদের মধ্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে।

উল্লেখ্য, বিষয়টি পূর্বেও ইন্টারনেটে ব্যাপকভাবে প্রচার করা হলে সেসময় এটিকে বিভ্রান্তিকর হিসেবে শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

নির্বাচন প্রসঙ্গে সেনাবাহিনী ও শিবিরকে জড়িয়ে প্রচারিত এই মন্তব্যটি ড. কামাল হোসেনের নয়

সম্প্রতি, ‘সেনাবাহিনীকে ভয় করলে শিবিরকে দিন‘ শীর্ষক শিরোনামে একটি তথ্য ড. কামাল হোসেনের মন্তব্য দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

ড. কামাল

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

পোস্টগুলোতে ড. কামাল হোসেনের মন্তব্য দাবিতে যা প্রচার করা হচ্ছে

‘সেনাবাহিনীকে ভয় করলে শিবিরকে দিন। নির্বাচন কমিশনকে একটা পরামর্শ দিতে পারি, নির্বাচনে সেনাবহিনীকে মোতায়েন করলে যদি আপনাদের ভয় লাগে, তাহলে নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য ইসলামী ছাত্র শিবির মোতায়েন করেন। দেখবেন নির্বাচন সুষ্ঠু গ্রহনযোগ্য হয়েছে, কারণ এদের কাছে সেনাবাহিনীর ট্রেনিং না থাকতে পারে, ইসলামি আদর্শের ট্রেনিং আছে।’

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, নির্বাচন সুষ্ঠু করতে নির্বাচন কমিশনকে দেওয়া ড. কামাল হোসেনের পরামর্শ দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে প্রচার হয়ে আসা ‘নির্বাচনে সেনাবাহিনীকে ভয় করলে শিবিরকে দিন’ শীর্ষক মন্তব্যটি ড. কামাল হোসেন করেননি। প্রকৃতপক্ষে ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্ব থেকে তার নামে উক্ত মন্তব্যটি কোনো ধরনের তথ্যসূত্র ছাড়াই ফেসবুকে প্রচার হয়ে আসছে।

মূলত, ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কিছুদিন পূর্ব থেকে দীর্ঘদিন ধরেই গণফোরাম সভাপতি ও সেসময় বাংলাদেশের সমমনা রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহবায়ক ড. কামাল হোসেনের নামে ‘সেনাবাহিনীকে ভয় করলে শিবিরকে দিন’ শীর্ষক একটি মন্তব্য ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, সেসময় ড. কামাল হোসেনের নামে উক্ত মন্তব্যটি প্রচার করা হলেও ফেসবুকের সেসব পোস্টে এই মন্তব্যটির কোনো তথ্যসূত্র বা সময়কাল উল্লেখ করা হয়নি। এছাড়া রিউমর স্ক্যানারের সার্বিক অনুসন্ধানেও এই দাবির পক্ষে কোনো সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি। একইসাথে ড. কামাল হোসেনের পরিবার থেকেও রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করা হয়েছে যে, ড. কামাল হোসেনের নামে প্রচারিত এই মন্তব্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

উল্লেখ্য, পূর্বেও একাধিকবার এই দাবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। প্রতিবেদনগুলো দেখুন এখানে এবং এখানে

ভারতীয় অভিনেত্রীর ভিডিও বিকৃত করে বিএনপি নেত্রী নিপুন রায়ের ভিডিও দাবিতে প্রচার

0

সম্প্রতি ‘নিপুণ রায়ের রাতের রঙলীলা দিনে আবোল তাবোল বকা’ শীর্ষক শিরোনামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি কোলাজ ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে, ভিডিওটির ডান অংশের মতো বাম অংশে থাকা নারীটিও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের পুত্রবধূ ও বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাড‌ভো‌কেট নিপুন রায় চৌধুরী।

নিপুন

ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট  (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত কোলাজ ভিডিওটির বাম অংশে থাকা নারীটি গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের পুত্রবধূ ও বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাড‌ভো‌কেট নিপুন রায় চৌধুরী নন। প্রকৃতপক্ষে ভারতীয় অভিনেত্রী সোহিনী সরকারের অভিনয়ের দৃশ্য ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় বিকৃত করে অভিনেত্রীর মুখমণ্ডল পরিবর্তন করার মাধ্যমে উক্ত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

দাবিটি নিয়ে অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে ফেসবুকে ওটিটি প্লাটফর্ম হৈচৈ এর ভেরিফায়েড পেজে ২০২২ সালের ১০ জুন ‘সে পিয়ালী না রাজলক্ষ্মী | Srikanto (শ্রীকান্ত) | hoichoi’ শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Hoichoi

এই ভিডিওটির সঙ্গে নিপুণ রায়ের ভিডিও দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

Image Analysis: Rumor Scanner

অর্থাৎ, পশ্চিমবঙ্গের ওয়েব সিরিজের অভিনেত্রী সোহানী সরকারের অভিনয়ের একটি দৃশ্যকে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে সোহানীর মুখমণ্ডল পরিবর্তন করে সেখানে নিপুন রায় চৌধুরীর মুখায়ব বসিয়ে তার বিভিন্ন সময়ে দেওয়া বক্তব্যের সঙ্গে কোলাজ করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, পূর্বেও আরেক বিএনপি নেত্রী রুমিন ফারহানার ২০১৩ সালের ভিডিও দাবিতে আমেরিকান মডেল ও সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার আলেক্সা ব্রুক রিভেরার ভিডিও একইভাবে বিকৃত করে প্রচার করা হয়েছিল। যা নিয়ে সেসময় ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল রিউমর স্ক্যানার টিম। 

প্রতিবেদনটি পড়ুন ২০১৩ সালের রুমিন ফারহানা দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি এডিটেড

মূলত, ২০২২ সালে ওটিটি প্লাটফর্ম হৈচৈ তে মুক্তি পায় পশ্চিমবঙ্গের ওয়েব সিরিজ শ্রীকান্ত৷ এই ওয়েব সিরিজটিতে অভিনয় করেছেন ভারতীয় অভিনেত্রী সোহিনী সরকার। সম্প্রতি উক্ত ওয়েব সিরিজে তার সুইমিংপুলে স্নানরত একটি দৃশ্যের ভিডিওয়ের খন্ডিত অংশকে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় মুখমণ্ডল পরিবর্তন করে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাড‌ভো‌কেট নিপুন রায় চৌধুরীর মুখমণ্ডলের অবয়ব বসিয়ে দাবি করা হচ্ছে, সুইমিংপুলে স্নানরত এই নারীটি নিপুন রায় চৌধুরী।

সুতরাং, নিপুন রায় চৌধুরীর ভিডিও দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত এই ভিডিওটি তার নয় এবং ভিডিওটি এডিটেড বা বিকৃত।

তথ্যসূত্র

চবির শাটল ট্রেন দুর্ঘটনায় এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুর গুজব

0

সম্প্রতি, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটল ট্রেনের ছাদে করে শহর থেকে ক্যাম্পাসে ফেরার পথে গাছের ধাক্কায় এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুর দাবিতে একটি তথ্য গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ) এবং পোস্ট (আর্কাইভ)।

উক্ত দাবিতে গণমাধ্যম প্রকাশিত এমন কিছু প্রতিবেদন দেখুন পূর্বপশ্চিম, প্রতিদিনের কাগজ, খুলনা গেজেট

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সম্প্রতি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটল ট্রেনের ছাদে করে ক্যাম্পাসে ফেরার পথে গাছের ধাক্কায় এক শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে উক্ত ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীসহ প্রায় ২০ জন আহত হলেও কেউ নিহত হননি। 

এ নিয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটল ট্রেন দুর্ঘটনার বিষয়ে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে গত ০৭ সেপ্টেম্বর দেশীয় মূলধারার সংবাদমাধ্যম কালেরকণ্ঠ এর ওয়েবসাইটে চবির শাটল ট্রেনের ছাদে গাছের ধাক্কায় আহত অন্তত ২০“শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বৃহস্পতিবার(৭ সেপ্টেম্বর) রাত সোয়া ৯টার দিকে হাটহাজারীর চৌধুরীহাট এলাকায় চট্টগ্রাম শহর থেকে শাটল ট্রেনের ছাদে করে ক্যাম্পাসে যাওয়ার সময় গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ প্রায় ২০ জন আহত হন। 

প্রতিবেদনে প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীদের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, চৌধুরীহাট এলাকায় রেললাইনে গাছের ডালপালা ঝুলে ছিল। শাটল ট্রেন চৌধুরীহাট ক্রস করার সময় ছাদে থাকা শিক্ষার্থীরা ঝুলে থাকা গাছ থেকে আঘাত পান। তাদের মুখে ও মাথায় আঘাত লাগে। আঘাতের ফলে বেশ কয়েকজন চলন্ত ট্রেন থেকে নিচে পড়ে যায়। আহতদের স্থানীয় ক্লিনিক ও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

এছাড়া, একই বিষয়ে মূলধারার অন্যান্য গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকেও প্রায় একই তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদন গুলো দেখুন ইউএনবি, ভয়েস অব আমেরিকা, চ্যানেল আই, প্রথম আলো, ডেইলি স্টার

উল্লিখিত কোনো গণমাধ্যমেই উক্ত ঘটনায় কোনো ব্যক্তির মৃত্যুর তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে, একই দিনে মূলধারার অনলাইন সংবাদমাধ্যম বাংলা ট্রিবিউন এর ওয়েবসাইট ট্রেনের ছাদে বসে দুর্ঘটনার শিকার ৩ ছাত্রের অবস্থা আশঙ্কাজনক” শীর্ষক শিরোনাম প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) শাটল ট্রেনের ছাদে বসে গাছের ধাক্কায় আহতদের মধ্যে তিন জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদেরকে বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) মধ্যরাত থেকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের (চমেক) আইসিইউতে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তারা হলেন- আমজাদ হোসেন সোহাগ (১৮), খলিলুর রহমান (২২) ও অংসইনু মারমা (২১)।

বিষয়টি অধিকতর নিশ্চিতের জন্য রিউমর স্ক্যানারের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি শাহরিয়ার শান্তের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, শাটল ট্রেন দুর্ঘটনায় এক শিক্ষার্থী মৃত্যুর তথ্যটি ভুয়া। মৃত্যুর গুজব ছড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৫০ টি বাস ভাংচুর করা হয়েছে।

অর্থাৎ, গত ০৭ সেপ্টেম্বর রাতে চবির শাটল ট্রেন দুর্ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীসহ প্রায় ২০ জন ব্যক্তি আহত হলেও কোনো ব্যক্তি বা শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়নি। 

মূলত, গত ০৭ সেপ্টেম্বর রাতে চট্টগ্রাম শহর থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় অভিমুখী শাটল ট্রেনের ছাদে করে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে দুর্ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীসহ প্রায় ২০ জন আহত হয়। পরবর্তীতে এই ঘটনায় ফেসবুকে এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুর দাবি ছড়িয়ে পরে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিম অনুসন্ধানে দেখেছে, উক্ত দুর্ঘটনায় কোনো শিক্ষার্থী নিহত হয়নি।এছাড়া আহতদের মধ্যে তিন শিক্ষার্থী আইসিইউতে চিকিৎসাধীন আছে বলে একাধিক সূত্রে জানা যায়। 

সুতরাং, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শাটল ট্রেন দুর্ঘটনায় এক শিক্ষার্থীর নিহত হওয়ার দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যুতে কালবেলাকে উদ্ধৃত করে ভিত্তিহীন তথ্য প্রচার

সম্প্রতি, “তত্ত্বাবধায়ক সরকার ঘোষণার সাথে সাথে প্রায় ৭০-৮০ লক্ষ প্রবাসী দেশে আসতে প্রস্তুত” শীর্ষক একটি তথ্য দেশীয় সংবাদমাধ্যম কালবেলার সূত্রে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

টিকটকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, কালবেলা’তে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ঘোষণার সাথে সাথে প্রায় ৭০-৮০ লক্ষ প্রবাসী দেশে আসার বিষয়ে কোনো সংবাদ প্রকাশিত হয়নি বরং সম্পূর্ণ ভিত্তিহীনভাবে কালবেলার সূত্রে এ দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।

গুজবের সূত্রপাত

ফেসবুক মনিটরিং টুল ব্যবহার করে দেখা যায়, আলোচিত এই দাবিটি গত ০৪ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৬.৪০ মিনিটে ‘২৪ ঘণ্টার ভাইরাল খবর’ নামের একটি ফেসবুক গ্রুপ থেকে প্রথমদিকে প্রচার করা হয়। 

Screenshot: CrowdTangle

বিএনপি নেত্রী শামা ওবায়েদের নামে পরিচালিত দুটি ভুয়া ফেসবুক পেজেও এ দাবিটি প্রচার করা হয়। রিউমর স্ক্যানার বিএনপি নেত্রী শামা ওবায়েদ এর সাথে যোগাযোগ করে তার নামে পরিচালিত এ পেজ দুটি ভুয়া হওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছে। রিউমর স্ক্যানারের পক্ষ থেকে শামা ওবায়েদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এগুলো তিনি অপারেট করেন না। তার নামে একাধিক ভুয়া ফেসবুক পেজ আছে। এ বিষয়ে তিনি জিডি করেছেন।

Screenshot Collage by Rumor Scanner

এভাবে বিভিন্ন পেজে কালবেলাকে সূত্র দেখিয়ে প্রচার হওয়ার মাধ্যমে আলোচিত দাবিটি ব্যাপকভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।

কালবেলা’য় কি এমন কোনো সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে?

দেশীয় গণমাধ্যম কালবেলার বরাতে ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার ঘোষণার পর ৭০-৮০ লক্ষ প্রবাসী দেশে আসতে প্রস্তুত’ শীর্ষক দাবিটি প্রচার করা হয়। কালবেলা এমন কোনো সংবাদ প্রকাশ করেছে কি না সে বিষয়ে অনুসন্ধান করে রিউমর স্ক্যানার।

অনুসন্ধানে কালবেলার ওয়েবসাইট, অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ এবং ইউটিউব চ্যানেলে আলোচিত দাবির বিষয়ে কোনো সংবাদ বা তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

পরবর্তীতে বিষয়টি অধিকতর নিশ্চিতের জন্য রিউমর স্ক্যানারের পক্ষ থেকে কালবেলার অনলাইন বিভাগের প্রধান পলাশ মাহমুদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, “কালবেলায় এমন কোনো খবর প্রকাশ করা হয়নি। এটি কালবেলার নামে ভুয়া তথ্য ছড়ানো হচ্ছে।”

কি ওয়ার্ড সার্চ করার মাধ্যমে দাবিটি নিয়ে অনুসন্ধানে কালবেলা ছাড়াও অন্য কোনো সংবাদমাধ্যমেও আলোচিত দাবিটি নিয়ে প্রকাশিত কোনো সংবাদ খুঁজে পায়নি রিউমর স্ক্যানার টিম।

এছাড়াও, গত কয়েকদিনে বিভিন্ন গণমাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে প্রকাশিত সংবাদ পর্যবেক্ষণ করে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার। পর্যবেক্ষণে তত্ত্বাবধায়ক সরকার সম্পর্কিত সংবাদগুলিতে আলোচিত দাবির বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

মূলত, বাংলাদেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সাম্প্রতিক সময়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন ভুয়া তথ্য প্রচার হতে দেখা যাচ্ছে। এর ধারাবাহিকতায় গত ০৪ সেপ্টেম্বর থেকে ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার ঘোষণার পর ৭০-৮০ লক্ষ প্রবাসী দেশে আসার বিষয়ে একটি তথ্য দেশের মূলধারার গণমাধ্যম কালবেলার সূত্রে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়। তবে অনুসন্ধানে কালবেলা কিংবা অন্য কোনো সংবাদমাধ্যমে এমন কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

প্রসঙ্গত, ২০১১ সালে বাংলাদেশে আপিল বিভাগ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সর্ম্পকিত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে। পরবর্তীতে এই ব্যবস্থা আর পূর্ণবহাল করা হয়নি।

উল্লেখ্য, পূর্বেও কালবেলাকে সূত্র উল্লেখ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়ে ভুয়া তথ্য প্রচার করা হয় এবং তা নিয়েও ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল রিউমর স্ক্যানার। এমন দুইটি প্রতিবেদন দেখুন এখানে এবং এখানে। 

এছাড়া, গত আট মাসে বিভিন্ন গণমাধ্যমের নাম, লোগো, শিরোনাম এবং নকল ফটোকার্ড ব্যবহার করে অপপ্রচারের বিষয়ে বিস্তারিত ফ্যাক্ট ফাইল প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার ঘোষণার সাথে সাথে প্রায় ৭০-৮০ লক্ষ প্রবাসী দেশে আসতে প্রস্তুত’ শীর্ষক তথ্যকে কালবেলা’র সংবাদ দাবিতে প্রচারের বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

  • Kalbela: Facebook Page 
  • Kalbela: Website 
  • Kalbela: YouTube Channel
  • Statement from Shama Obaed
  • Statement from Palash Mahmud, Online Editor, Kalbela
  • Rumor Scanner’s Own Analysis

বিশালাকৃতির চিংড়ি মাছের ছবিটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দ্বারা তৈরি

0

সম্প্রতি, “১৫০ কেজি ওজনের গলদা চিংড়ি” শীর্ষক শিরোনামে বিশালাকার একটি প্রাণীর ছবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে।

চিংড়ি

ফেসবুকে প্রচারিত এরূপ কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচ্য ছবিটি চিংড়ি মাছের কোনো বাস্তব ছবি নয় বরং বিশালাকৃতির এই চিংড়ির ছবিটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে।

শুরুতেই, সবচেয়ে বড় আকৃতির ক্রাস্টেসিয়ান প্রাণীর (চিংড়ি এবং লবস্টার এই পরিবারভুক্ত প্রাণী) বিষয়ে অনুসন্ধান চালায় রিউমর স্ক্যানার। 

কিওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে আমেরিকান ওশেনের ওয়েবসাইটে “The Largest Lobster Ever Recorded” শীর্ষক শিরোনামের একটি নিবন্ধ খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার। 

উক্ত নিবন্ধ থেকে জানা যায়, এখন পর্যন্ত ধরা পড়া পৃথিবীর সবচেয়ে বড় আকারের লবস্টারের ওজন ছিল ৫১.৫ পাউন্ড বা ২৩.৩৬ কেজি। ১৯২৬ সালে ধরা পড়া এই লবস্টারটিই এখন পর্যন্ত রেকর্ড করা সবচেয়ে বড় আকারের ক্রাস্টেসিয়ান জাতীয় প্রাণী। 

এছাড়াও, ১৯৭৭ সালে নোভা স্কটিয়ার সামুদ্রিক এলাকায় ধরা পড়া একটি আমেরিকান লবস্টার তালিকার দুই নম্বরে রয়েছে। যার ওজন ছিল প্রায় ৪৪ পাউন্ড বা ২০.১৪ কেজি।

পাশাপাশি, গিনেজ বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের ওয়েবসাইটেও এখন পর্যন্ত ধরা পড়া সবচেয়ে বড় আকৃতির ক্রাস্টেসিয়ান প্রাণীর রেকর্ডটি রয়েছে আমেরিকান লবস্টারের দখলে। গিনেজ বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের তথ্যমতে, ১৯৭৭ সালে ধরা পড়া পৃথিবীর বৃহত্তম ক্রাস্টেসিয়ানের ওজন রেকর্ড করা হয়েছিল ২০.১৪ কেজি বা ৪৪ পাউন্ড।

Source: Guiness Book of World Records

তবে ১৫০ কেজি ওজনের চিংড়ি বা অন্য কোনো ক্রাস্টেসিয়ান জাতীয় প্রাণী ধরা পড়ার বিষয়ে কোনো তথ্য ইন্টারনেটে খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

পাশাপাশি, কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক অনলাইন গণমাধ্যম ‘Buzz Feed News’ এ গত ০১ ফেব্রুয়ারি “Why Are AI-Generated Hands So Messed Up?” শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার টিম।

উক্ত প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে তৈরিকৃত ছবি সমূহে অসংলগ্ন হাতের আকার দেখতে পাওয়া যায়। হাতের আঙুলের আকারও সঠিকভাবে চিত্রায়ণ করতে পারে না কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। ফলে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে তৈরিকৃত ছবিসমূহে প্রায়শই দেখা মেলে অসংলগ্ন হাত কিংবা আঙুলের আকৃতি।

Buzz Feed News এর প্রতিবেদনে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া চিংড়ি মাছের ছবিটি বিশ্লেষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। বিশ্লেষণে দেখা যায়, মাছের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ব্যক্তিদের হাতের আঙুল মানুষের বাস্তব হাতের আঙুলের মত নয়। যা নির্দেশ করে যে ছবিটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দ্বারা তৈরি।

Source: Indication by Rumor Scanner

এছাড়াও, ফুড এন্ড এগ্রিকালচারাল অর্গানাইজেশন (FAO) এর ওয়েবসাইটে প্রাপ্ত গলদা চিংড়ি মাছের (Macrobrachium rosenbergii) শারীরিক গঠন বিশ্লেষণ করে আলোচ্য ছবির সাথে বিভিন্ন বৈসাদৃশ্য খুঁজে পাওয়া যায়। যেমন: 

১. গলদা চিংড়ির ক্যারাপেস (মস্তক) কিংবা অ্যাবডোমেন (উদর) অঞ্চলে আলোচ্য ছবির মত খাড়া একজোড়া অ্যান্টেনা সদৃশ কোন উপাঙ্গ থাকে না।

২. সাধারণত গলদা চিংড়ির রোস্ট্রামটি(মস্তকের অগ্রভাগের খাজকাটা সূঁচালো অঙ্গ) উপরের দিকে ঈষৎ বাঁকা হলেও আলোচ্য ছবিতে রোস্ট্রামটি নিচের দিকে বাঁকানো।

Indication By Rumor Scanner

মূলত, বিশালাকৃতির একটি ক্রাস্টেসিয়ান জাতীয় প্রাণীর ছবিকে ১৫০ কেজি ওজনের চিংড়ি মাছের বাস্তব ছবি দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়। প্রকৃতপক্ষে আলোচ্য ছবিটি চিংড়ি মাছের বাস্তব কোনো ছবি নয়। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি ব্যবহার করে উক্ত ছবিটি তৈরি করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, পূর্বেও পোপ ফ্রান্সিসের এআই জেনারেটেড ছবিকে বাস্তব দাবিতে প্রচার করা হলে সে বিষয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, বিশালাকৃতির চিংড়ি মাছের ছবিকে বাস্তব ছবি দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

২৪ আগস্ট পাঁচ নয়, তিন ওয়াক্ত নামাজের আজান মাইকে প্রচারের বিষয়ে চিঠি দিয়েছিল নিউইয়র্ক পুলিশ

0

সম্প্রতি, দেশের কতিপয় গণমাধ্যমে নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্টের কমিউনিটি এফেয়ার্সের ডেপুটি কমিশনার মার্ক টি স্টিয়ার্টের স্বাক্ষর যুক্ত একটি চিঠির বরাতে নিউইয়র্ক শহরের মসজিদগুলোতে প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের আজান মাইকে শব্দ করে দেওয়া যাবে বলে দাবি করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন ডিবিসি নিউজ, নিউজ২৪ (ইউটিউব), বাংলানিউজ২৪, কালবেলা, দেশ রূপান্তর, চ্যানেল২৪, বাংলাদেশ প্রতিদিন, আরটিভি (ইউটিউব), এসএ টিভি (ইউটিউব), ঢাকা প্রকাশ, বাংলাদেশ বুলেটিন, বাহান্ন নিউজ, জনবাণী, বিডি২৪রিপোর্ট, প্রবাস জার্নাল, বাঙ্গি নিউজ, সানবিডি২৪, সুখবর, বাংলার জনপদ, বিজনেস আওয়ার, ২৪লাইভনিউজপেপার

আজান মাইকে

একই চিঠিকে ‘ভুয়া’ হিসেবে দাবি করা হয়েছে কিছু গণমাধ্যমে। 

এমন কিছু প্রতিবেদন দেখুন প্রথম আলো, প্রতিদিনের সংবাদ, জাগোনিউজ২৪

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের আজানের অনুমতি দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্টের কমিউনিটি এফেয়ার্সের চিঠির বরাতে নিউইয়র্ক শহরের মসজিদগুলোতে প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের আজান মাইকে শব্দ করে দেওয়া যাবে দাবি করে গণমাধ্যমে প্রচারিত তথ্যটি সঠিক নয় বরং সকল কমিউনিটি এফেয়ার্স সদস্যদের কাছে পাঠানো উক্ত চিঠিতেই সকাল নয়টার পর থেকে সূর্যাস্তের আগ পর্যন্ত অর্থাৎ তিন ওয়াক্ত আজানের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছিল। তাছাড়া চিঠিটি ভুয়া নয় বলেও নিশ্চিত করেছে নিউইয়র্ক পুলিশ।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে গণমাধ্যম এবং ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্টের কমিউনিটি এফেয়ার্সের চিঠির (Memorandum) ছবিটি বিশ্লেষণ করে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

ছবিটিতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, এটি কোনো বিজ্ঞপ্তি নয়। মূলত এটিকে চিঠি বলে উল্লেখ করেছে কমিউনিটি এফেয়ার্স অফিস। এই চিঠি পাঠানো হয়েছে সকল কমিউনিটি এফেয়ার্স সদস্যদের কাছে।

চিঠি প্রকাশের তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে, ২৪ আগস্ট ২০২৩। চিঠিতে নিউইয়র্কের মসজিদগুলোতে আজানের অনুমতি প্রদানের বিষয়টি জানিয়ে আজান দেওয়ার সময় মাইকের শব্দ যেন নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে থাকে তা নিশ্চিত করতে বলা হয়। একইসাথে সকাল নয়টার পর থেকে সূর্যাস্তের আগ পর্যন্ত অর্থাৎ তিন ওয়াক্ত আজান দেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়।

Screenshot: Facebook

এই চিঠির উৎস অনুসন্ধানে নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্টের ওয়েবসাইট, নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্টের খবরভিত্তিক এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্ট, কমিউনিটি এফেয়ার্সের এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে এমন কোনো চিঠি খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

পরবর্তীতে কমিউনিটি এফেয়ার্সের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে রিউমর স্ক্যানার টিম। তাদের পক্ষ থেকে সাড়া না পেয়ে নিউইয়র্কের মেয়র অফিসে যোগাযোগ করলে তারা আমাদের নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্টের পাবলিক ইনফরমেশন বিষয়ক ডেপুটি কমিশনারের (DCPI) সাথে যোগাযোগ করিয়ে দেন। 

ডেপুটি কমিশনার রিউমর স্ক্যানারকে জানিয়েছেন, আলোচিত চিঠিটি আসল।

মূলত, গত ২৪ আগস্ট দেশের কতিপয় গণমাধ্যমে নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্টের কমিউনিটি এফেয়ার্সের ডেপুটি কমিশনার মার্ক টি স্টিয়ার্টের স্বাক্ষর যুক্ত একটি চিঠির বরাতে নিউইয়র্ক শহরের মসজিদগুলোতে প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের আজান মাইকে শব্দ করে দেওয়া যাবে বলে দাবি করা হয়েছে। একই চিঠিকে ‘ভুয়া’ হিসেবেও দাবি করা হয়েছে কিছু গণমাধ্যমে। কিন্তু রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সকল কমিউনিটি এফেয়ার্স সদস্যদের কাছে পাঠানো উক্ত চিঠিটি আসল, যা নিউইয়র্ক পুলিশই রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করেছে। তাছাড়া, চিঠিতেই সকাল নয়টার পর থেকে সূর্যাস্তের আগ পর্যন্ত অর্থাৎ তিন ওয়াক্ত আজান দেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ ছিল। 

উল্লেখ্য, গত ২৯ আগস্ট নিউইয়র্ক সিটির মেয়র এরিক অ্যাডামস এক সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা দেন, যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে পবিত্র জুমার নামাজের আজান সুনির্দিষ্ট মাত্রায় শব্দ করে দেওয়া যাবে। এ ছাড়া পবিত্র রমজান মাসে শুধু মাগরিবের নামাজের আজান সুনির্দিষ্ট মাত্রার শব্দে দেওয়া যাবে।

সুতরাং, নিউইয়র্কের মসজিদে তিন ওয়াক্ত নামাজের আজান মাইকে প্রচারের বিষয়ে নিউইয়র্ক পুলিশ কর্তৃক সকল কমিউনিটি এফেয়ার্স সদস্যদের কাছে পাঠানো চিঠির বরাতে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের আজানের অনুমতি দেওয়ার দাবিতে গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে: যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

  • Statement from NYPD DCPI
  • Statement from NY Mayor Office 
  • Rumor Scanner’s own analysis