Home Blog Page 382

ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে বিকাশ গ্রাহকদের ৭,৯৯৯ টাকা ঈদ সালামি দেওয়ার গুজব

0

সম্প্রতি, ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে বিকাশ সবাইকে ৭,৯৯৯ টাকা ঈদ সালামি বোনাস দিচ্ছে দাবিতে একটি তথ্য ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। 

ঈদ সালামি

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে বিকাশ গ্রাহকদের ৭,৯৯৯ টাকা ঈদ সালামি বোনাস দেওয়ার দাবিটি সত্য নয় বরং বিকাশের নামে ভুয়া ওয়েবসাইট তৈরি করে প্রতারণার উদ্দেশ্যে বোনাস প্রদানের এই প্রলোভন দেখানো হচ্ছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে বোনাসের অফার দেওয়া   ওয়েবসাইটটিতে প্রবেশের চেষ্টা করে রিউমর স্ক্যানার টিম। কিন্তু সেসময় ওয়েবসাইট লিংকটি কাজ না করায় প্রবেশ সম্ভব হয়নি।

Screenshot: Facebook

বিকাশ কি এমন কোনো ক্যাম্পেইন চালু আছে?

বিকাশের ওয়েবসাইট ও ভেরিফাইড ফেসবুক পেইজে অনুসন্ধান করে ৭ কোটি গ্রাহক পূর্তি উপলক্ষ্যে বোনাস দেওয়ার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

Screenshot: Bkash

পাশাপাশি, নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্রে বিকাশ থেকে এমন বোনাস দেওয়া প্রসঙ্গে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

বিষয়টি অধিকতর যাচাইয়ের জন্য রিউমর স্ক্যানারের পক্ষ থেকে বিকাশের ওয়েবসাইটের লাইভ চ্যাটের মাধ্যমে মুস্তাফিজুর নামক বিকাশের একজন কর্মীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, “অনুগ্রহ করে এ ধরনের ভুল তথ্য দ্বারা বিভ্রান্ত হবেন না। বিকাশের তুমুল জনপ্রিয়তার জন্য কিছু অসাধু চক্র বিভিন্ন নকল ওয়েবসাইট তৈরি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বা অন্য কোনো মাধ্যমে নানা ধরনের মিথ্যা অফার দেখিয়ে বিকাশের সুনাম নষ্ট করার চেষ্টা করছে। বর্তমানে বিকাশ এ ধরনের কোনো অফার ঘোষণা করেনি এবং উক্ত অফারগুলোর সাথে বিকাশ-এর কোনো সম্পর্ক নেই। তাই, এসব মিথ্যা অফারের লোভে পড়ে কিংবা প্রতারিত হয়ে এই ধরনের কোনো ওয়েবসাইট অথবা অন্য কোনো মাধ্যমে কোনো লেনদেন করবেন না এবং আপনার বিকাশ একাউন্ট নাম্বার, পিন, ভেরিফিকেশন কোড বা অন্য কোনো তথ্য দিবেন না। এছাড়া এ ধরনের ওয়েবসাইটের লিংক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করা থেকে বিরত থাকবেন। মনে রাখবেন, বিকাশ কখনোই আপনার বিকাশ একাউন্টের পিন ও ভেরিফিকেশন কোড জানতে চায় না।”

মূলত, ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে বিকাশ গ্রাহকদের ৭,৯৯৯ টাকা ঈদ সালামি বোনাস দেওয়ার দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, বিকাশের পক্ষ থেকে এমন কোনো বোনাস ঘোষণা করা হয়নি। প্রকৃতপক্ষে বিকাশের ওয়েবসাইটের আদলে তৈরি ভুয়া ওয়েবসাইটের মাধ্যমে প্রতারণার উদ্দেশ্যে উক্ত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।

পূর্বে, ঈদুল আযহা উপলক্ষে বিকাশ কর্তৃক ব্যবহারকারীদের ৪৯৯৯ টাকা বোনাস দেওয়ার দাবিতে একটি তথ্য ইন্টারনেটে প্রচার করা হলে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে বিকাশ গ্রাহকদের ৭,৯৯৯ টাকা ঈদ সালামি বোনাস দেওয়ার দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ বানোয়াট ও প্রতারণামূলক। 

তথ্যসূত্র

ভাইরাল ছবিগুলো মুহাম্মদ (সা.) এর ঘরের আসবাবপত্রের বাস্তব দৃশ্যের নয় 

সম্প্রতি, “মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর ঘরের আসবাবপত্র” শীর্ষক দাবিতে দুইটি ছবি ইন্টারনেটে ভাইরাল হয়েছে।

উক্ত দাবিতে চলতি বছর (২০২৪) ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।   

২০২৩ ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

২০২১ সালে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

একই দাবিতে চলতি বছর (২০২৪) টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

২০২৩ সালে টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

২০২২ সালে টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

একই দাবিতে ২০২৩ সালে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

২০২২ সালে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

২০২১ সালে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

২০১৯ সালে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, হয়রত মুহাম্মদ (সা.) এর ঘরের আসবাবপত্রের দৃশ্য দাবিতে ভাইরাল হওয়া ছবিগুলো মুহাম্মদ (সা.) এর ঘরের আসল দৃশ্যের নয় বরং এগুলো হাদিসের বর্ণনার ভিত্তিতে থ্রি ডি অ্যানিমেশনের মাধ্যমে তৈরি হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর ঘরের আসবাবপত্রের আদলে তৈরি শিল্পকর্ম।

ভাইরাল ছবিগুলোর বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের ‘Devlet-i-Ailyye-Turkiya’ নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলে ২০১৪ সালের ৭ সেপ্টেম্বর “[3D] The Inside of The Prophet Muhammad’s House and His Belongings (Replica)” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিওতে দেখানো মুহাম্মদ (সা.) এর ঘরের আসবাবপত্রের দৃশ্যের সাথে আলোচিত ছবিগুলোর মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

Image Comparison : Rumor Scanner 
Image Comparison : Rumor Scanner

ভিডিওটির বিস্তারিত বর্ণনা থেকে জানা যায়, এটি  হাদিসের উপর ভিত্তি করে নির্মিত মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর ঘরের আসবাবপত্রের প্রতিরূপ। সৌদি আরবের জেদ্দায় এর প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়।

পরবর্তীতে ‘The thinking Muslim’ নামক ইসলামিক ব্লগ সাইটে ২০১৫ সালের ২৮ জুন “Inside of the Prophet Muhammad’s (pbuh) House and His Belongings (3D Replica)” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। আলোচিত ছবির সাথে এই প্রতিবেদনে থাকা ছবির ছবিরও মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot : The Thinking Muslim’s Website 

উক্ত প্রতিবেদনেও আলোচিত ছবিটিকে হাসিদের বর্ণনার ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর ঘরের একটি প্রতিরূপ বলে দাবি করা হয়। 

এছাড়া, অনলাইন সংবাদমাধ্যম পিএনএসনিউজ২৪ এবং ঢাকা মেইল এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন (,) থেকেও আলোচিত ছবি সম্পর্কে একই তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়। 

অর্থাৎ, মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর ঘরের আসবাবপত্রের ছবি দাবিতে প্রচারিত ভাইরাল ছবিগুলো মুহাম্মদ (সা.) এর ঘরের আসবাবপত্রের বাস্তব ছবি নয়।

মূলত, মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) কেমন বাসায় কিভাবে থাকতেন তা ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের জানাতে হাদিসের বর্ণনার ভিত্তিতে সৌদি আরবের জেদ্দায় এক শিল্পী থ্রি ডি অ্যানিমেশনের মাধ্যমে হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর ঘরের আসবাবপত্রের বাস্তবধর্মী প্রতিরূপ তৈরি করেন। উক্ত প্রতিরূপে ছবিকে বিগত কয়েক বছর ধরেই রাসূল (সা.) এর ঘরের আসবাবপত্রের ছবি দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে। 

সুতরাং, হাদিসের বর্ণনার ভিত্তিতে থ্রি ডি অ্যানিমেশনের মাধ্যমে তৈরি মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর ঘরের আসবাবপত্রের প্রতিরূপকে মুহাম্মদ (সা.) এর ঘরের আসবাবপত্রের বাস্তব দৃশ্য দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

টাকার ওপর ঘুমিয়ে ভাইরাল হওয়া দুর্নীতিতে অভিযুক্ত নেতা বাংলাদেশের নয়

0

সম্প্রতি, “টাকার বিছানায় ঘুমিয়ে ভাইরাল দুর্নীতিতে অভিযুক্ত নেতা” শীর্ষক শিরোনামে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল “আরটিভি” এবং জাতীয় দৈনিক “আমার সংবাদ” এর দুইটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। 

দাবি করা হচ্ছে, এই ঘটনাটি বাংলাদেশের।

টাকার ওপর ঘুমিয়ে

আরটিভি’র ফটোকার্ড যুক্ত ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

আমার সংবাদ এর ফটোকার্ড যুক্ত ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

একই দাবিতে ফটোকার্ড ব্যতীত ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, টাকার ওপর ঘুমিয়ে ভাইরাল হওয়া দুর্নীতিতে অভিযুক্ত নেতা বাংলাদেশের নয় বরং দুর্নীতিতে অভিযুক্ত এই নেতার নাম বেঞ্জামিন বসুমাতারি, যিনি ভারতের আসামের ইউনাইটেড পিপলস পার্টি লিবারেল (ইউপিপিএল) এর একজন নেতা।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত পোস্টগুলোতে ব্যবহৃত ফটোকার্ডগুলো পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায় ফটোকার্ডটিগুলো বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল “আরটিভি” এবং জাতীয় দৈনিক “আমার সংবাদ” এর লোগো রয়েছে এবং আরটিভি’র ফটোকার্ডটি প্রচারের তারিখ হিসেবে ২৭ মার্চ ২০২৪ ও আমার সংবাদ এর ফটোকার্ডটি প্রচারের তারিখ হিসেবে ২৮ মার্চ ২০২৪ এর কথা উল্লেখ করা হয়েছে। 

পরবর্তীতে এসব তথ্যের সূত্র ধরে ফেসবুকে ম্যানুয়ালি অনুসন্ধানের মাধ্যমে আরটিভি এবং আমার সংবাদ এর ফেসবুক পেজে আলোচিত ফটোকার্ডগুলো খুঁজে (,) পাওয়া যায়। (আর্কাইভ-,)

Screenshot Collage By Rumor Scanner

উক্ত গণমাধ্যমগুলো ফেসবুক পেজে ফটোকার্ড নিয়ে প্রচারিত পোস্টের কমেন্টে এসম্পর্কিত একটি প্রতিবেদন (,) পাওয়া যায়। 

প্রতিবেদনগুলো থেকে জানা যায়, ভারতের আসামের ইউনাইটেড পিপলস পার্টি লিবারেল (ইউপিপিএল)-এর নেতা বেঞ্জামিন বসুমাতারি। দেশটির প্রধানমন্ত্রীর আবাসন প্রকল্প এবং গ্রামীণ চাকরি প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত বড় এক দুর্নীতির মামলায় অভিযুক্ত তিনি। অদ্ভুত এক কাণ্ড ঘটিয়ে আবারও আলোচনায় এসেছেন এই নেতা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে বসুমাতারির। ভাইরাল হওয়া ছবিতে দেখা যাচ্ছে, টাকার বিছানায় ঘুমিয়ে আছেন আসামের ওদালগুড়ি জেলার ভৈরাগুড়িতে গ্রাম পরিষদ উন্নয়ন কমিটির (ভিসিডিসি) এই চেয়ারম্যান। তার ওপর ৫০০ রুপির নোটের স্তূপ।

এছাড়া একই বিষয়ে শিরোনামে ভারতের কথা উল্লেখ না করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে আরও কিছু গণমাধ্যম। প্রতিবেদন দেখুনযুগান্তর, কালবেলা, আমাদের সময়, নিউজ২৪, নয়া শতাব্দী, ঢাকা প্রকাশ, জনমত, এবি নিউজ, বি-বার্তা এবং বার্তা কণ্ঠ। 

প্রতিবেদনগুলোর শিরোনামে ঘটনাটির স্থানের নাম উল্লেখ না করায় বিষয়টি নিয়ে নেটিজেনদের মনে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। বিস্তারিত প্রতিবেদন না পড়েই তারা বিষয়টিকে বাংলাদেশের মনে করে বিভিন্ন নেতিবাচক মন্তব্য করেছেন।   

Comment Collage By Rumor Scanner

পরবর্তীতে বিষয়টি অধিকতর নিশ্চিতের জন্য কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে ভারতীয় গণমাধ্যম এবিপি এর ওয়েবসাইটে ২৮ মার্চ “ভোটের আগে নোটের বিছানায় নেতা! সত্যিটা কী?”- শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। 

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, আসমের ইউনাইটেড পিপলস পার্টি লিবারেল (ইউপিপিএল)-এর নেতা বেঞ্জামিন বসুমাতারির একটি ছবি নিয়ে ভোটের আগে রীতিমত তোলপাড় সোশাল মিডিয়া। সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমগুলোতে একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে বসুমাতারির। আর তাতেই ভারত জুড়ে তোলপাড়। ভাইরাল হওয়া ছবিতে দেখা যাচ্ছে, টাকার বিছানায় ঘুমিয়ে আছেন অসমের ওদালগুড়ি জেলার ভৈরাগুড়িতে গ্রাম পরিষদ উন্নয়ন কমিটির (ভিসিডিসি) এই চেয়ারম্যান। তার ওপর ৫০০ টাকার নোটের স্তূপ। 

বেঞ্জামিন বসুমাতারি। ভারতের অসমের ইউনাইটেড পিপলস পার্টি লিবারেল (ইউপিপিএল)-এর একজন নেতা। প্রধানমন্ত্রীর আবাসন প্রকল্প এবং গ্রামীণ চাকরি প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত বড় এক দুর্নীতির মামলায় অভিযুক্ত তিনি। 

অর্থাৎ, টাকার ওপর ঘুমিয়ে নেতার ভাইরাল হওয়ার ঘটনাটি বাংলাদেশের নয়। তবে এসম্পর্কিত খবরের শিরোনামে স্থানের নাম না উল্লেখ করায় ঘটনাটি বাংলাদেশের ভেবে নেটিজেনরা বিভ্রান্ত হয়েছেন।   

মূলত, গত ২৭ মার্চ আসমের ইউনাইটেড পিপলস পার্টি লিবারেল (ইউপিপিএল)-এর নেতা বেঞ্জামিন বসুমাতারির টাকার ওপর ঘুমিয়ে থাকার একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়৷ উক্ত বিষয়ে বাংলাদেশের একাধিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের শিরোনামে ঘটনাটির স্থানের নাম উল্লেখ না করে সংবাদ প্রচার করা হয়। পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীরা বিষয়টি বাংলাদেশের ঘটনা মনে করে ফেসবুকে প্রচার করেন।   

উল্লেখ্য, পূর্বেও ভারতের ঘটনা বাংলাদেশের দাবিতে প্রচারিত হলে তা নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কয়েকটি প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, ভারতের আসমের ইউনাইটেড পিপলস পার্টি লিবারেল (ইউপিপিএল)-এর নেতা বেঞ্জামিন বসুমাতারির টাকার ওপর ঘুমিয়ে থাকার ঘটনায় বাংলাদেশে স্থানের নাম উল্লেখ না করে ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

ইন্ডিয়ান আইডলের মঞ্চে বাংলাদেশি যুবকের গাওয়া রাজনীতির গানের এই ভিডিওটি এডিটেড

সম্প্রতি, ‘ইন্ডিয়ান মঞ্চে সেরা রাজনীতির গজল। আমি গাইবো না গান রাজনীতি নিয়ে করবো না রাজনীতি’ শীর্ষক শিরোনামে এক যুবকের গান গাওয়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটকে প্রচার করা হয়েছে।

ইন্ডিয়ান আইডলের

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত দাবিতে টিকটকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি টিকটকে প্রচারিত ভিডিওটি প্রায় সাড়ে ৮ লাখ বার দেখা হয়েছে। ভিডিওটিতে প্রায় ৪৭ হাজার পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। এছাড়া, ভিডিওটিতে প্রায় ৭ শতাধিক মন্তব্য করা হয়েছে। ভিডিওটি শেয়ার করা হয়েছে প্রায় আড়াই হাজারের অধিক বার।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ইন্ডিয়ান আইডলের মঞ্চে আলোচিত যুবকের রাজনীতি নিয়ে গান গাওয়ার এই ভিডিওটি আসল নয় বরং ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে ইন্ডিয়ান আইডল প্রোগ্রামের বিভিন্ন পর্বের একাধিক ভিডিও ক্লিপের সাথে উক্ত যুবকের গান গাওয়ার দৃশ্য যুক্ত করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ভিডিওটি’র শুরুতেই এক যুবককে ভারতীয় এক টেলিভিশন প্রোগ্রামে মাইক্রোফোন হাতে ‘আমি গাইবো না গান রাজনীতি নিয়ে করবো না রাজনীতি’ শীর্ষক গানটি গাইতে শোনা যায়। গানটি শুনে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বিচারকের দায়িত্বে থাকা মঞ্চে উপস্থিত তারকাদের মুগ্ধ হতে দেখা যায়।

ভিডিওটিতে ভারতীয় সঙ্গীত শিল্পী শ্রেয়া ঘোষাল, হিমেশ রেশামিয়া, বলিউড অভিনেতা রনবীর কাপুর, দক্ষিণি অভিনেত্রী রাশ্মিকা মান্দানা সহ বেশ কয়েকজন তারকাকে মঞ্চে দেখা যায়। এবিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত ভিডিওটি থেকে বেশকিছু স্থিরচিত্র নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে রিউমর স্ক্যানার টিম।

আলোচিত ভিডিওটি’র বিভিন্ন অংশে দেখানো উক্ত তারকাদের একাধিক দৃশ্যের স্থিরচিত্র রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে সঙ্গীত বিষয়ক ইউটিউব চ্যানেল ‘LIV Music’ এ ২০২৩ সালের ০১ ডিসেম্বর প্রকাশিত ইন্ডিয়ান আইডল প্রোগ্রামের একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ভিডিও’র একাধিক দৃশ্যের সাথে আলোচিত ভিডিওটি’র একাধিক দৃশ্যের হুবহু মিল পাওয়া যায়। তবে ফেসবুকে প্রচারিত আলোচিত ভিডিওটিতে গান গাওয়া যুবককে এই ভিডিওটিতে দেখা যায়নি।

Video Comparison by Rumor Scanner
Video Comparison by Rumor Scanner

অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিওটিতে উক্ত টেলিভিশন প্রোগ্রামের কয়েকটি দৃশ্য যুক্ত করা হয়েছে।

পরবর্তীতে ভারতীয় সঙ্গীতশিল্পী Pawandeep এর নামে পরিচালিত একটি ইউটিউব চ্যানেলে ২০২১ সালের ২১ ডিসেম্বর প্রকাশিত Indian Idol প্রোগ্রামের একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ভিডিও’র একটি দৃশ্যের সাথে আলোচিত ভিডিওটি’র একটি দৃশ্যের মিল পাওয়া যায়। তবে ফেসবুকে প্রচারিত আলোচিত ভিডিওটি’তে গান গাওয়া যুবককে এই ভিডিওটিতেও দেখা যায়নি।

Video Comparison by Rumor Scanner

অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিওটিতে উক্ত টেলিভিশন প্রোগ্রামেরও কয়েকটি দৃশ্য যুক্ত করা হয়েছে।

পরবর্তীতে অধিকতর অনুসন্ধানে ভাইরাল ভিডিওটি’র নির্মাতা সবুজ খানকে খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার টিম। তিনি তার ফেসবুক পেজে গত ১৮ মার্চ ‘ইন্ডিয়ান মঞ্চে সেরা রাজনীতির গজল। আমি গাইবো না গান রাজনীতি নিয়ে করবো না রাজনীতি’ শীর্ষক গানের ভিডিওটি পোস্ট করে জানান, “ভিডিওটা এডিট করে তৈরি করা। দয়াকরে কেউ সিরিয়াসলি নিবেন না।”

Screenshot: Facebook

অর্থাৎ, উপরোক্ত তথ্য প্রমাণ থেকে এটা স্পষ্ট যে, ইন্ডিয়ান আইডলের মঞ্চে যুবকের রাজনীতির গান গাওয়ার আলোচিত এই ভিডিওটি আসল নয়।

মূলত, সবুজ খান নামের এক যুবক ইন্ডিয়ান আইডল প্রোগ্রামে ভারতীয় তারকাদের উপস্থিতির পুরোনো কিছু ভিডিও ক্লিপ সংগ্রহ করে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় ‘ইন্ডিয়ান মঞ্চে সেরা রাজনীতির গজল। আমি গাইবো না গান রাজনীতি নিয়ে করবো না রাজনীতি’ শীর্ষক একটি গান ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে যুক্ত করে নিজের ফেসবুক পেজে পোস্ট করেন। পরবর্তীতে উক্ত ভিডিওটি ‘ইন্ডিয়ান মঞ্চে সেরা রাজনীতির গজল। আমি গাইবো না গান রাজনীতি নিয়ে করবো না রাজনীতি’ শীর্ষক শিরোনামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটকে আসল ভিডিও দাবিতে ছড়িয়ে পড়ে।

উল্লেখ্য, পূর্বেও একই ব্যক্তির ইন্ডিয়ান আইডল অনুষ্ঠানের মঞ্চে মাকে নিয়ে গান গাওয়ার ভিডিও ইন্টারনেটে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়লে সেসময় ভিডিওটিকে এডিটেড হিসেবে শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, ইন্ডিয়ান আইডলের মঞ্চে বাংলাদেশি যুবকের ‘আমি গাইবো না গান রাজনীতি নিয়ে করবো না রাজনীতি’ শীর্ষক গান গাওয়ার দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত ভিডিওটি এডিটেড বা সম্পাদিত।

তথ্যসূত্র

বিএনপির মিছিলের ভিডিও দাবিতে মেক্সিকোর কনসার্টের ভিডিও প্রচার

২০২৩ সালের জুলাইয়ের দিকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল – (বিএনপি) সহ তাদের সমমনা দল ও জোটগুলো একযোগে ‘এক দফা দাবি’ আদায়ের কর্মসূচির ঘোষণা করে। এক দফা হিসেবে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের পদত্যাগের কথাই উল্লেখ করে নেতাকর্মীরা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে একই বছরের অক্টোবর মাসে বিএনপির মিছিলের ভিডিও দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়।

টিকটকে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি ভিডিওটি প্রায় ১৮ লক্ষ বার দেখা হয়েছে। ভিডিওটিতে প্রায় ১ লক্ষ ২১ হাজার পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে এবং শেয়ার করা হয়েছে ৮ হাজার বার।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ভিডিওটি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) কোনো মিছিল কিংবা কর্মসূচির নয় বরং আর্জেন্টাইন ব্যান্ড সংগীত লস ফ্যাবুলোসোস ক্যাডিলাকস এর কনসার্ট ও পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়ার পুলিশের স্লোগানের পৃথক দুইটি দৃশ্যের সাথে ভিন্ন অডিও যুক্ত করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। পর্যবেক্ষণে ভিডিওর ব্যাকগ্রাউন্ডে “শেখ হাসিনার ক্ষমতা, কেঁড়ে নেবে জনতা। জেগেছে রে জেগেছে, তরুণ সমাজ জেগেছে” শীর্ষক স্লোগান শোনা যায়।

ভিডিও যাচাই: ০১

আলোচিত ভিডিওটির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য ভিডিওর  কিছু কী-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ViveTuMusica Karaokelive নামক ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ৫ জুনে “Los Fabulosos Cadillacs. Mas De 300 Mil En #cdmx #makemusicgreatagain #music #fabulososcadillacs” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওতে ব্যবহৃত প্রথম ফুটেজটির দৃশ্যের হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison: Rumor Scanner

ভিডিওর শিরোনাম এবং বিস্তারিত বিবরণী থেকে জানা যায়, আলোচিত ভিডিওটি লস ফ্যাবুলোসোস ক্যাডিলাকস নামক ব্যান্ড সংগীত দলের তিন লক্ষ মানুষ নিয়ে আয়োজিত একটি কনসার্টের দৃশ্যের।

তবে এই ভিডিওর কোথাও “শেখ হাসিনার ক্ষমতা, কেঁড়ে নেবে জনতা। জেগেছে রে জেগেছে, তরুণ সমাজ জেগেছে” শীর্ষক স্লোগান শোনা যায়নি।

লস ফ্যাবুলোসোস ক্যাডিলাকস নামক ব্যান্ড সংগীত দলের বিষয়ে অনুসন্ধানে জানা যায়, এটি আর্জেন্টিনার একটি ব্যান্ড।

পরবর্তীতে উক্ত সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে মিউজিক বিষয়ক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান বিলবোর্ড এর ওয়েবসাইটে ২০২৩ সালের ৪ জুনে “Los Fabulosos Cadillacs Draw 300,000 To Mexico’s Zócalo, Setting New Attendance Record” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০২৩ সালের ৩ জুন মেক্সিকো সিটির জোকালোতে লস ফ্যাবুলোসোস ক্যাডিলাকস ব্যান্ড সংগীত দল বিনামূল্যে কনসার্ট করে। মেক্সিকোর স্থানীয় সরকারের তথ্যমতে এই কনসার্টে পূর্বের রেকর্ড অতিক্রম করে তিন লক্ষ মানুষ উপস্থিত হয়েছিল।

এছাড়া, ২০২৩ সালের ৩ জুন মেক্সিকো সিটির জোকালোতে লস ফ্যাবুলোসোস ক্যাডিলাকস ব্যান্ড সংগীতের কনসার্টের একাধিক ভিডিও (, ) ইন্টারনেটে খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওগুলো স্থানের সাথে আলোচিত ভিডিওর মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

ভিডিও যাচাই: ০২

ভিডিওটির কিছু কি-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চ করে Unique Forces নামক ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ৩০ জুলাই “Pakistan Zindabad, Khyber Pakhtunkhwa Police Zindabad, Elite Force Zindabad #newvideo” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওতে ব্যবহৃত দ্বিতীয় ফুটেজটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison: Rumor Scanner

ভিডিওর শিরোনাম এবং বিস্তারিত বিবরণী থেকে জানা যায়, এটি পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়ার পুলিশের “পাকিস্তান জিন্দাবাদ, খাইবার পাখতুনখোয়ার পুলিশ জিন্দাবাদ, এলিট ফোর্স জিন্দাবাদ” শীর্ষক স্লোগানের ভিডিও।

তবে এই ভিডিওরও কোথাও “শেখ হাসিনার ক্ষমতা, কেঁড়ে নেবে জনতা। জেগেছে রে জেগেছে, তরুণ সমাজ জেগেছে” শীর্ষক স্লোগান শোনা যায়নি।

অডিও যাচাই

একাধিক প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করেও “শেখ হাসিনার ক্ষমতা, কেঁড়ে নেবে জনতা। জেগেছে রে জেগেছে, তরুণ সমাজ জেগেছে” শীর্ষক স্লোগানের আসল অডিওটি খুঁজে না পাওয়া গেলেও প্রায় সমজাতীয় কিছু স্লোগানের অডিও (, , ) ইন্টারনেটে খুঁজে পাওয়া যায়।

অর্থাৎ, ভিন্ন প্রেক্ষাপটের দুইটি ভিডিওতে “শেখ হাসিনার ক্ষমতা, কেঁড়ে নেবে জনতা। জেগেছে রে জেগেছে, তরুণ সমাজ জেগেছে” শীর্ষক স্লোগানের অডিও যুক্ত করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

মূলত, ২০২৩ সালের অক্টোবরে সরকার পতনের একদফা দাবিতে রাজপথে সরব ছিল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। এরই প্রেক্ষিতে সেসময় বিএনপির মিছিলের দৃশ্য দাবিতে টিকটকে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়। যেখানে শেখ হাসিনার ক্ষমতা, কেঁড়ে নেবে জনতা। জেগেছে রে জেগেছে, তরুণ সমাজ জেগেছে” শীর্ষক স্লোগান দিতে শোনা যায়। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ভিডিওটি এডিটেড। প্রকৃতপক্ষে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় ২০২৩ সালে জুনে মেক্সিকো সিটির জোকালোতে লস ফ্যাবুলোসোস ক্যাডিলাকস ব্যান্ড সংগীতের কনসার্টে দর্শক সমাগম ও একই বছরের জুলাই মাসে পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়ার পুলিশের পাকিস্তান জিন্দাবাদ শীর্ষক স্লোগানের ভিডিওর সাথে শেখ হাসিনার ক্ষমতা, কেঁড়ে নেবে জনতা। জেগেছে রে জেগেছে, তরুণ সমাজ জেগেছে” শীর্ষক স্লোগানের অডিও যুক্ত করে আলোচিত ভিডিওটি প্রচার করা হয়েছে।

সুতরাং, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এর মিছিলের দৃশ্য দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত এই ভিডিওটি এডিটেড বা সম্পাদিত।

তথ্যসূত্র

উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৪ সালের এইচএসসি পরীক্ষার ভুয়া রুটিন প্রচার

0

সম্প্রতি, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাউবি) এইচএসসি পরীক্ষা-২০২৪ এর রুটিন প্রকাশ শীর্ষক দাবিতে একটি রুটিনের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাউবি) এইচএসসি পরীক্ষা-২০২৪ এর রুটিন এখন পর্যন্ত প্রকাশিত হয়নি। ২০২৩ সালের বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাউবি) এইচএসসি পরীক্ষার রুটিন ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে উক্ত রুটিনটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে ২০২৪ সালের বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাউবি) এইচএসসি পরীক্ষার রুটিন দাবিতে প্রচারিত ছবিটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম।

ছবিটি পর্যবেক্ষণ করে রুটিনে থাকা তারিখগুলোর ফন্টে অসামঞ্জতা পরিলক্ষিত হয়। 

পরবর্তীতে ম্যানুয়ালি অনুসন্ধানের মাধ্যমে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এইচএসসি পরীক্ষা-২০২৩ রুটিনটি খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার টিম।

এই রুটিনটি’র সাথে আলোচিত রুটিনটিতে উল্লেখিত সবগুলো বিষয়ের সিরিয়াল এবং বার হুবহু মিল পাওয়া যায়।

অর্থাৎ, ২০২৩ সালের এই রুটিনটি সম্পাদনার মাধ্যমে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এইচএসসি পরীক্ষা-২০২৪ সালের রুটিন দাবিতে প্রচারিত আলোচিত ছবিটি তৈরি করা বলে আমাদের প্রাথমিক অনুসন্ধানে প্রতীয়মান হয়।

পরবর্তীতে, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটের পরীক্ষা সংক্রান্ত পেজে অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের এইচএসসি পরীক্ষা-২০২৪ এর সময়সূচির কোনো বিজ্ঞপ্তি তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

তবে গত ২৮ মার্চ বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটের পরীক্ষা সংক্রান্ত পেজে অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের এইচএসসি পরীক্ষা-২০২৪ নিয়ে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের বরাতে একটি সাধারণ বিজ্ঞপ্তি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: bou.ac.bd

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “পরীক্ষা বিভাগ, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় লক্ষ্য করছে যে, অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের এইচএসসি পরীক্ষা-২০২৪ এর সময়সূচি ফেসবুকসহ অন্যান্য মিডিয়াতে প্রকাশ করা হয়েছে যা সম্পূর্ণ ভূয়া অর্থাৎ Fake Routine। শুধু বিভ্রান্তি ছড়ানোর জন্য কে বা কারা এই ভূয়া সময়সূচি প্রকাশ করেছে। সংশ্লিষ্ট সকলকে বিভ্রান্ত না হওয়ার এবং সময়সূচি আমলে না নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হলো।”

এছাড়া বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, “এইচএসসি পরীক্ষা-২০২৪ এর সময়সূচি এখনও চূড়ান্ত করা হয়নি। পরবর্তীতে সময়সূচি চুড়ান্ত হলে পরীক্ষা বিভাগের নির্ধারিত প্যাডে বাউবি’র ওয়েব সাইটে Upload-সহ অন্যান্য গণমাধ্যমে প্রকাশ করা হবে। বাউবি পরিচালিত যেকোনো পরীক্ষার সময়সূচি দেখতে www.bou.ac.bd ওয়েব সাইটে ভিজিট করার জন্য অনুরোধ করা হ’ল।”

মূলত, সম্প্রতি বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাউবি) এইচএসসি পরীক্ষা-২০২৪ এর রুটিন প্রকাশিত হয়েছে দাবিতে একটি রুটিনের ছবি ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। তবে অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত রুটিনটি ভুয়া। প্রকৃতপক্ষে বাউবির ২০২৪ সালের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষার সময়সূচি এখন পর্যন্ত প্রকাশিত হয়নি। বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এইচএসসি পরীক্ষা-২০২৩ সালের রুটিনের একটি ছবি ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহ করে তা ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে সেখানে উল্লেখিত তারিখগুলো পরিবর্তন করে ২০২৪ সালের বিভিন্ন তারিখ বসিয়ে ২০২৪ সালের এসএসসি পরীক্ষার সময়সূচি দাবিতে সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

সুতরাং, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এইচএসসি পরীক্ষা-২০২৪ সালের রুটিন প্রকাশিত হয়েছে দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং উক্ত দাবিতে প্রচারিত রুটিনের ছবিটি এডিটেড বা বিকৃত।

তথ্যসূত্র

ভাইরাল ভিডিওতে দীঘির কোলের শিশুটি তার নিজের নয়

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে Prarthana Fardin Dighi নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে কোলে শিশুসহ চিত্রনায়িকা প্রার্থনা ফারদিন দীঘির একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওটিতে দাবি করা হচ্ছে, দীঘিও এক বাচ্চার মা হয়ে গেলো।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি ফেসবুকে প্রচারিত এই ভিডিওটি দেখেছে প্রায় ৪ লক্ষাধিক মানুষ। ভিডিওটিতে প্রায় ৪৬ হাজার পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে এবং শেয়ার করা হয়েছে প্রায় ১৬৯ বার। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রার্থনা ফারদিন দীঘির কোলে থাকা শিশুটি তার নিজের সন্তান নয় বরং দীঘির কোলের শিশুটি তার ছোট মামা আবু নুসরাত ভিক্টরের ছোট ছেলে ইজিয়ান।

এটি কি প্রার্থনা ফারদিন দীঘির অফিসিয়াল পেজ?

ফলোয়ার সংখ্যা (২৮ হাজার) কম হওয়ায় শুরুতেই পেজটি আসলেই দীঘির কিনা তা নিয়ে সন্দেহের সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে পেজটি পর্যবেক্ষণ করে জানা যায়, ভাইরাল ভিডিওটি পোস্টের মাত্র দুইদিন আগে অর্থাৎ গত ১৭ ফেব্রুয়ারি পেজটি খোলা হয়েছে। এছাড়া, পেজ ক্যাটাগরি অপশনে চিত্রনায়িকার পেজ হিসেবে Artist উল্লেখ থাকার কথা থাকলেও Personal Blog উল্লেখ রয়েছে। এসব অসঙ্গতি বিবেচনায় এটা নিশ্চিত যে এটি দীঘির অফিসিয়াল পেজ নয়। অনুসন্ধানে ফেসবুকে দীঘির একটি ভেরিফায়েড অফিসিয়াল পেজ পাওয়া যায়, যাতে ফলোয়ার সংখ্যা প্রায় ৫ লক্ষ ৮৮ হাজার।  

আলোচিত দাবির সত্যতা যাচাইয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে ভাইরাল ভিডিওটির মন্তব্যঘরে Tahmina Bilkis নামের এক ফেসবুক অ্যাকাউন্টের একটি মন্তব্য রিউমর স্ক্যানার টিমের নজরে আসে। তিনি বলেন, “এটা দীঘির ছোট মামা ভিক্টর এর ছোট ছেলে… দীঘির মামাতো ভাই। জানা না থাকলে জেনে নিতে হয়”

Screenshot : Claim Post 

উক্ত মন্তব্যের সূত্র ধরে দীঘির ছোট মামা ভিক্টরের ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। আবু নুসরাত ভিক্টরের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে থাকা তার ছোট ছেলের বেশ কিছু ছবির সাথে আলোচিত ভিডিওতে দীঘির কোলে থাকা শিশুটির চেহারার মিল খুঁজে পাওয়া যায়। এ থেকে ধারণা করা হয় যে শিশুটি দীঘির ছোট মামা ভিক্টরের ছেলে। 

Image Collage : Rumor Scanner 

পরবর্তীতে বিষয়টি অধিকতর নিশ্চিতের লক্ষ্যে আলোচিত ভিডিওটির খোঁজে আবু নুসরাত ভিক্টরের ভেরিফায়েড টিকটক অ্যাকাউন্টে ২০২৩ সালের ২৮ জুন একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিওটির সাথে আলোচিত ভিডিওটির হুবহু মিল রয়েছে।

Video Comparison : Rumor Scanner 

অর্থাৎ, দীঘির কোলে থাকা শিশুটি তার নিজের সন্তান নয়। 

এছাড়া, চিত্রনায়িকা দীঘি সন্তানের মা হয়েছেন কিনা সে বিষয়ে জানতে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড করে গণমাধ্যম বা বিশ্বস্ত কোনো সূত্রে এমন কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মূলত, ২০২৩ সালের ২৮ জুন চিত্রনায়িকা প্রার্থনা ফারদিন দীঘির ছোট মামা আবু নুসরাত ভিক্টর দীঘির কোলে তার ছোট ছেলে ইজিয়ানসহ দীঘির একটি ভিডিও তার টিকটক অ্যাকাউন্টে আপলোড করেন। পরবর্তীতে উক্ত ভিডিওটি “অবশেষে দীঘিও এক বাচ্চার মা হয়ে গেলো” শীর্ষক দাবি যুক্ত করে দীঘির নামে পরিচালিত একটি ফেইক ফেসবুক পেজ থেকে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। 

সুতরাং, ভাইরাল ভিডিওতে চিত্রনায়িকা দীঘির কোলে থাকা শিশুটি তার সন্তান দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

নীল রঙ দাবি করা ব্লু জাভার রং স্বাভাবিক কলার মতোই হলুদ 

সম্প্রতি, “নীল রঙের কলা হয়, এ কথা শুনেছেন কখনও…” শীর্ষক শিরোনামে কিছু ছবি গণমাধ্যম সহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। 

উক্ত দাবিতে চলতি বছর (২০২৪) গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন জুম বাংলা, দেশ রূপান্তর। 

উক্ত দাবিতে ২০২৩ সালে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন ডেইলি বাংলাদেশ, নিউজ২৪, এমটিনিউজ২৪। 

একই দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

একই দাবিতে ওপার বাংলায় নিউজ১৪ বাংলা’র ফেসবুক পেজে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ব্লু জাভা কলাটির বাস্তব অস্তিত্ব থাকলেও এই কলার প্রকৃত রং আলোচিত ছবির কলার রং এর মত নীল নয় বরং এই জাতের কলাগুলো সম্পূর্ণ পরিপক্ব হওয়ার আগে এর রং হালকা নীলাভ-সবুজ থাকে এবং পরিপক্ক হওয়ার সাথে সাথে এগুলো হলুদ হয়ে যায়।

মূলত, ব্লু জাভা নামের কলাটি দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় জন্মায় এবং পশ্চিম আমেরিকার হাওয়াইতে এই ফল খুব জনপ্রিয়। কলাগুলো কাঁচা অবস্থায় থাকলে নীলাভ-সবুজ রঙের হয়। পরবর্তীতে সম্পূর্ণরূপে পাকলে খোসা হলুদ হয়ে যায় এবং ভিতরের অংশ স্বাভাবিক অন্যান্য কলার মতই হলুদাভ হয়। এর স্বাদ একটি আপেল কলার মতো সামান্য টার্ট তবে তাদের একটি ঘন এবং সুপার ক্রিমি টেক্সচার রয়েছে। এই টেক্সচারের কারণেই ব্লু জাভা কলাকে আইসক্রিম কলা বলা হয়, তাদের স্বাদের জন্য নয়। সাম্প্রতিক সময়ে ইন্টারনেট থেকে ব্লু জাভা কলার কিছু এডিটেড ছবি সংগ্রহ করে এই কলার রং নীল এবং এর স্বাদ ভ্যানিলা আইসক্রিমের মতো দাবি করে গণমাধ্যম সহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। 

পূর্বেও একই দাবিতে ছবিগুলো ইন্টারনেটে প্রচার করা হলে সেসময় বিষয়টি নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

গাজার ধ্বংসস্তূপের নিচে বিড়ালের কান্নার এই ছবিগুলো এআই দিয়ে তৈরি

0

২০২৩ সালের ৭ই অক্টোবর থেকে ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের মধ্যে চলমান সংঘাত গাজা উপত্যকায় বাস করা সাধারণ মানুষের জীবনে প্রবল প্রভাব ফেলেছে। এই অব্যাহত সংঘাতের কারণে, অনেক পরিবার তাদের ঘরবাড়ি হারিয়েছে, এবং অসংখ্য লোক হতাহত হয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে, সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে “গাজায় পশুদের এই অবস্থা হলে মানুষের কি অবস্থা?” শীর্ষক শিরোনামে দুটি ছবির কোলাজ সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এই ছবিগুলোতে, ধ্বংসস্তূপের নিচে একটি বড় বিড়াল একটি ছোট বিড়ালকে আলিঙ্গন করে কাঁদতে দেখা যাচ্ছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

টিকটকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, গাজার ধ্বংসস্তূপের নিচে বিড়ালের কান্নার আলোচ্য ছবিগুলো বাস্তব নয় বরং আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই), বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি ছবিকে বাস্তব দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে।
ছড়িয়ে পড়া ছবিগুলোতে বিড়ালের পায়ের আঙুল ও মুখের গঠনে কিছু অস্বাভাবিকতা লক্ষ্য করে রিউমর স্ক্যানার টিম। এ ধরনের অস্বাভাবিকতা সাধারণত এআই টুল দিয়ে তৈরি ছবিতে দেখা যায়।

পরবর্তীতে এ বিষয়ের সত্যতা যাচাইয়ে অনুসন্ধান শুরু করে রিউমর স্ক্যানার টিম। রিভার্স ইমেজ সার্চ পদ্ধতি ব্যবহার করে এই ছবিগুলোসহ একই ধরণের আরও কয়েকটি ভিন্ন ছবি দিয়ে তৈরি একটি ভিডিও ইন্সটাগ্রাম ও টিকটকে খুঁজে পাওয়া যায় (,,)।

ভিডিওগুলোর এক কোণে থাকা জলছাপের সূত্রে Maria Bartin নামের একটি ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্ট খুঁজে পাওয়া যায়। তবে উক্ত ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টে এই ছবিগুলো পাওয়া যায়নি। কিন্তু এআই দিয়ে তৈরি বিড়ালের অন্য কিছু ছবি এই ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টিতে দেখা যায়।

পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের ওয়েবসাইটে আলোচ্য ছবিগুলো নিয়ে আরবি ভাষায় প্রকাশিত একটি ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন পাওয়া যায়। রয়টার্সকে মারিয়া বার্টিন জানান, তিনি Bing AI এর মাধ্যমে এই ছবিগুলো তৈরি করেছেন।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে মারিয়া বার্টিনের করা মূল পোস্টের আর্কাইভও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Internet Archive.

এছাড়া অনুসন্ধানে জানা যায়, বিড়াল মানুষের মতো আবেগের বশে কাঁদে না। তারা চোখের স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য অশ্রু উৎপাদন করে। বিড়ালের আবেগ প্রকাশ পায় তাদের ডাক, শারীরিক ভাষা এবং আচরণের মাধ্যমে। 

তাছাড়া ‘AI or Not’ এবং ‘Hive Moderation’ নামের দুটি এআই শনাক্তকারী ওয়েবসাইটে উক্ত ছবিগুলো যাচাই করে দেখা যায় এগুলো এআইয়ের সাহায্যে তৈরি।

মূলত, ২০২৩ সালের ৭ই অক্টোবর থেকে ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের মধ্যে সংঘাত চলমান রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে গাজার ধ্বংসস্তূপের নিচে বিড়ালের কান্নার দৃশ্য দাবিতে দুটি ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায় ছড়িয়ে পড়া এই ছবিগুলো এআইয়ের মাধ্যমে তৈরি। মারিয়া বার্টিন নামের একজন ব্যক্তি Bing AI এর সাহায্যে এই ছবিগুলো তৈরি করেছেন।

প্রসঙ্গত, ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের চলমান সংঘাত ঘিরে এআই এর সাহায্যে তৈরি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া একাধিক ছবির সত্যতা যাচাই করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। দেখুন –

সুতরাং, এআই দিয়ে তৈরি ছবিকে গাজার ধ্বংসস্তূপের নিচে বিড়ালের কান্নার বাস্তব ছবি দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

মুশফিকুর রহিমকে জড়িয়ে জুয়ার অ্যাপের ভুয়া প্রচারণা

সম্প্রতি, ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম জুয়ার অ্যাপের প্রচারণা করছেন দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)

এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি ভিডিওটি প্রায় ২ হাজার একশত বার দেখা হয়েছে। ভিডিওটিতে প্রায় ২ হাজার নয় শত পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে এবং শেয়ার করা হয়েছে ২০ বার।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, মুশফিকুর রহিম জুয়ার অ্যাপের প্রচারণা করেননি বরং ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে ভিন্ন প্রেক্ষাপটে এনটিভিতে মুশফিকুর রহিমের দেওয়া একটি ভিডিও সাক্ষাৎকারের কিছু অংশের সাথে ভিন্ন ঘটনার অডিও এবং জুয়ার বিজ্ঞাপন যুক্ত করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার। ভিডিওটির শুরুতে মুশফিকুর রহিমকে বলতে শোনা যায়, “শুভ অপরাহ্ণ বন্ধুরা। আমার বন্ধু সাকিব আল হাসান একটি নতুন অ্যাপ বাংগের উন্মোচন করেছেন। আমি তোমাদেরকে বলতে চাচ্ছি, এটি একটি পুরোপুরি নতুন খেলা। ক্রেজি টাইম ভিত্তিক। এটি তোমাদের সকলের পছন্দ হবে। আমি নিজেই এক সপ্তাহের বেশি খেলছি। অ্যাপ্লিকেশনটির প্রতিটি তোমার জন্য সম্পূর্ণ নিরাপদ। সহজে নিবন্ধন করুন। পাঁচশত টাকার বেশি ব্যালেন্স দিয়ে শুরু করতে সুবিধাজনক। একইদিনে তুমি তোমার ব্যালেন্সকে দশ, পঞ্চাশ, একশতগুন করতে পারবে। প্রতিদিন খেল এবং জিত। খেলার এক মাস পরেই অনেকেই তার মাতার জন্য গাড়ি এবং বাড়ি কিনে ফেলে। শুধু আজকে যখন তুমি নিবন্ধন করবে তখন তুমি একটি সুপার বোনাস পাবে, যা দিয়ে তুমি খেলা শুরু করতে পারবে।”

পরবর্তীতে আলোচিত ভিডিওটির সত্যতা জানতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে বেসরকারি ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যম এনটিভির ইউটিউব চ্যানেলে ২০১৫ সালের ৪ সেপ্টেম্বর “Keeping helps batting Mushfiqur Rahim” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত মুশফিকুর রহিমের একটি সাক্ষাৎকার খুঁজে পাওয়া যায়।

মুশফিকুর রহিমের উক্ত সাক্ষাৎকারের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর অডিও ব্যতীত ফুটেজের বাম দিক থেকে মিরর করা অবস্থায় হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison: Rumor Scanner

ভিডিও থেকে জানা যায়, সেসময় মুশফিকুর রহিম এনটিভির স্পোর্টস এডিটর নাসিমুল হাসানের সাথে তার ক্রিকেট ক্যারিয়ার নিয়ে কথা বলেন। নাসিমুল হাসান মুশফিকুর রহিমকে প্রশ্ন করেন, “আপনি কিপিং করলে ব্যাটিংটা ভালো করেন যদি আপনি কিপিং এ না থাকেন শুধু ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে থাকেন, এটা কি আপনার জন্য প্রেশার পরে?” 

জবাবে মুশফিক বলেন, “না খুব একটা প্রেশার না। বাট এটলিস্ট আপনি যখন একটা সাইট করবেন আর আমার এভারেজ ৫০ ও না যে কন্সটেন্টলি অনেক রান করছি। অভিয়াসলি এটা একটা ডিফ্রেন্ট ফিলিংস আমার জন্য। আরেকটু সময় হয়তো লাগবে বাট সবসময় সময় যেটা বলি কিপিং করলে অনেক হেল্প পাওয়া যায় আমি দেখতে পারি ওইকেট হচ্ছে বা বোলার কি করছে। হোপফুল্লি ইন ফিউচারে আমি এটা চিন্তা করে দেখবো। 

উক্ত সাক্ষাৎকারে মুশফিকুর রহিম চাপের মুখে খেলা, তার ক্যারিয়ার, শ্রীলংকান ক্রিকেটার সাঙ্গাকারা এবং বাংলাদেশ দল নিয়ে তিনি কথা বলেন। তবে এই ভিডিওতে তিনি জুয়ার অ্যাপের বিষয়ে কোনো কথা বলেন নি।

আলোচিত ভিডিও প্রচার করা পেজ সম্পর্কে যা জানা গেল

আলোচ্য ভিডিওটি প্রচার করা ফেসবুক পেজে ক্যাসিনো সম্পর্কিত একাধিক পোস্ট (, ) লক্ষ্য করা যায়।

Screenshot: Facebook

তথ্য গোপন রাখায় পেজটির ট্রান্সপারেন্সি সেকশন যাচাই করে পেজটি কোন দেশ থেকে পরিচালিত হচ্ছে তা জানা সম্ভব হয়নি। তবে পেজটির লোকেশন সেকশনে এটি যুক্তরাষ্ট্র থেকে পরিচালিত বলে দাবি করা হয়েছে।

Screenshot: Facebook

মূলত, ২০১৫ সালে ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম এনটিভির সাথে তার ক্রিকেট ক্যারিয়ার নিয়ে একটি সাক্ষাৎকার দেন। সম্প্রতি, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে সেই ভিডিও সাক্ষাৎকারের কিছু অংশের সাথে ভিন্ন ঘটনার অডিও এবং জুয়ার বিজ্ঞাপন যুক্ত করে ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম জুয়ার অ্যাপের প্রচারণা করছেন দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

সুতরাং, ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিমের জুয়ার অ্যাপের প্রচারণা করার দাবিটি মিথ্যা এবং একই দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত ভিডিওটি সম্পাদিত।

তথ্যসূত্র

NTV – Keeping helps batting Mushfiqur Rahim