Home Blog Page 381

ঢাবির রং উৎসবে বক্তব্য দিয়ে ভাইরাল শিক্ষার্থীকে গণধোলাইয়ের গুজব

0

গত ২৮ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের আয়োজনে রং উৎসবে অংশ নেয় শিক্ষার্থীরা। সেদিন জাতীয় দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যাকাউন্টগুলোতে এই আয়োজনের একটি ভিডিওতে থাকা এক শিক্ষার্থীর রোজার মধ্যে রং উৎসবের মতামত সম্বলিত বক্তব্য ভাইরাল হয়। এরমধ্যে গতকাল (৩০ মার্চ) বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের প্রবেশ ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালানোর অভিযোগে দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভের ঘটনা ঘটেছে। পরবর্তীতে রাতে রং উৎসবে অংশ নেওয়া আলোচিত সেই শিক্ষার্থী বুয়েটে গণধোলাইয়ের শিকার হয়েছেন দাবিতে তার রং উৎসবের সময়ের ছবি এবং তার আরেকটি ছবি দাবিতে ছেঁড়া জামায় রক্তাক্ত একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এসব পোস্টে দুই ছবিতে একই ব্যক্তি রয়েছে দাবি করে কোথাও তাকে নকিব আশরাফ, কোথাও বা ইশরাক বলে সম্বোধন করা হয়েছে।

ঢাবির রং

এ সংক্রান্ত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ঢাবির রং উৎসবে গণমাধ্যমে ALLAH will understand বলে ভাইরাল শিক্ষার্থী গণধোলাইয়ের শিকার হননি বরং নকিব আশরাফ নামে একজন ছাত্রনেতার ২০২৩ সালের ভিন্ন ঘটনার একটি ছবি ব্যবহার করে উক্ত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে ছড়িয়ে পড়া পোস্টগুলোতে থাকা নামের সূত্রে (নকিব আশরাফ) ফেসবুকে একই নামের একটি অ্যাকাউন্টে একটি পোস্ট খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার। জনাব নকিব এই বিষয়টিকে তার পোস্টে গুজব বলে আখ্যায়িত করেন। তার পোস্টের কমেন্টে তিনি আরও উল্লেখ করেন, ডান পাশের ছবিটা তার। গত বছর গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রচারণা চলাকালীন সময়ে সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের গাড়িতে হামলার সময়ে তিনি গাড়িতেই মেয়রের প্রটোকলে দাঁড়ানো ছিলেন। তখন হামলাকারীরা তার উপরও আক্রমণ করে। সে সময়ের ছবি এটি। 

Screenshot: Facebook 

আমরা এই তথ্যের সূত্রে ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারের একটি সংবাদ প্রতিবেদন থেকে জানতে পারি, সে বছরের ২০ মে টঙ্গী রেলগেট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এতে নকিব ছাড়াও আহত হন আরও তিনজন। 

পরবর্তীতে ফেসবুকে একইদিন (২০ মার্চ) প্রকাশিত একটি ভিডিও ফুটেজে আলোচিত দৃশ্যটির সন্ধান মেলে। এই পোস্টের ক্যাপশন থেকেও জানা যাচ্ছে, উক্ত ব্যক্তির নাম নকিব আশরাফ এবং তিনি সেসময় হামলার শিকার হয়েছিলেন। 

Screenshot: Facebook 

নকিব আশরাফ রাজধানীর নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী এবং ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে সক্রিয়।

রিউমর স্ক্যানার টিম নিশ্চিত হয়েছে যে নকিব আশরাফ এবং রং উৎসবের আলোচিত ব্যক্তি দুইজন ভিন্ন ভিন্ন ব্যক্তি। রং উৎসবের ভাইরাল ব্যক্তির নামও নকিব আশরাফ নয়। রিউমর স্ক্যানারের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি সানজানা জেবিন ছোঁয়ার সহায়তায় রং উৎসবের ভাইরাল ব্যক্তির পরিচয় নিশ্চিতে সমর্থ হই আমরা। ভাইরাল ব্যক্তি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের একজন শিক্ষার্থী। (নিরাপত্তাজনিত কারণে বিস্তারিত পরিচয় প্রকাশ করা হলো না)

দাবিটির সূত্রপাত কীভাবে?

গতকাল সন্ধ্যায় আহনাফ তাহমিদ অর্জন নামে এক ব্যক্তি নকিবের ছবির সাথে তুলনা করে আরেক ব্যক্তির ছবি পোস্ট করে লিখেন, “বুয়েটে বাটাম খেলো ইশরাক।” আমাদের যাচাইয়ে দেখা যায়, উক্ত ব্যক্তির নাম মোহাম্মদ ইশরাক। 

Comparison by Rumor Scanner

রিউমর স্ক্যানারের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে, ইশরাকের সাথে নকিবের চেহারার দৃশ্যমান মিল থাকায় দুটো ছবি জোড়া দিয়ে তুলনার চেষ্টা করা হয়েছে। এই পোস্টটিই পরবর্তীতে রং উৎসবের ব্যক্তিটিকে জড়িয়ে বিবর্তিত রূপ পেয়েছে। এই বিষয়টি ভাইরাল হওয়ার ক্ষেত্রে এখানেও চেহারার দৃশ্যমান মিল কাজ করেছে বলে মনে করছে রিউমর স্ক্যানার। 

মূলত, বুয়েটে শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের মধ্যে ছাত্রনেতা নকিব আশরাফের একটি ছবি প্রকাশ করে তাকে গতকাল গণধোলাই দেওয়া হয়েছে দাবি করা হলেও রিউমর স্ক্যানারের যাচাইয়ে দেখা যায়, ভাইরাল হওয়া ছবিটি ২০২৩ সালের ২০ মে টঙ্গীতে গাজীপুরের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীরের মা জায়েদা খাতুনের নির্বাচনী প্রচারণার সময়কার। তাছাড়া, রং উৎসবের ভাইরাল ভিডিওর শিক্ষার্থীও নকিব আশরাফ নন।

সুতরাং, ভিন্ন ব্যক্তির পুরোনো ছবি ব্যবহার করে ঢাবির রং উৎসবে বক্তব্য দিয়ে ভাইরাল শিক্ষার্থী গণধোলাইয়ের শিকার হয়েছেন শীর্ষক একটি দাবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

স্বর্ণালংকারে আবৃত টয়েলেট টিস্যুর এই ছবিগুলো এআই দিয়ে তৈরি

0

সম্প্রতি, “বড়লোক্স নায়কদের ব্যবহৃত সোনায় মোড়ানো টিস্যু” শীর্ষক শিরোনামে স্বর্ণালংকারে আবৃত টয়েলেট টিস্যুর একাধিক ছবি বাস্তব দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ছবিগুলো দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, স্বর্ণালংকারে আবৃত টয়েলেট টিস্যুর ছবিগুলো বাস্তব নয় বরং ছবিগুলো আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে Sara Shakeel নামক একজন ব্যক্তির ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে গত ১৯ মার্চ করা একটি পোস্ট (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত পোস্টের সাথে আলোচিত ছবি গুলোর সাদৃশ্য খুঁজে পাওয়া যায়।

Image Comparison: Rumor Scanner

এই পোস্ট থেকে জানা যায়, পোস্টকারি এই ছবিগুলো আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে তৈরি করেছেন।

পরবর্তীতে উক্ত ইনসটাগ্রাম অ্যাকাউন্টটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দ্বারা তৈরি আরও বহু ডিজিটাল আর্টওয়ার্কের সন্ধান পায়।

Screenshot: Instagram

যা থেকে স্পষ্টতই প্রতীয়মান হয় যে, এই ব্যক্তি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে ডিজিটাল আর্টওয়ার্ক তৈরি করে থাকেন।

মূলত, Sara Shakeel নামের একজন শিল্পী কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই ব্যবহার করে স্বর্ণালংকারে আবৃত টয়েলেট টিস্যুর কিছু ছবি তৈরি করেন। উক্ত ছবিগুলোকেই বাস্তব ছবি দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, পূর্বেও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দ্বারা তৈরি বিভিন্ন ছবিকে বাস্তব দাবিতে প্রচার করা হলে সেগুলো শনাক্ত বিষয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার টিম।

সুতরাং, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই ব্যবহার করে তৈরিকৃত স্বর্ণালংকারে আবৃত টয়েলেট টিস্যুর কিছু ছবি বাস্তব দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

খুনের আসামী হয়ে ৭ বছর বয়সী শিশুর জেলে যাওয়ার ভুয়া তথ্য প্রচার

অন্তত ২০২৩ সাল থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পুলিশের পোশাক পরিহিত এক নারীর সাথে এক শিশুর ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, শিশুটির বয়স ৭ বছর এবং সে খুনের আসামী হয়ে জেলে আছে।

৭ বছর

উক্ত দাবিতে চলতি বছরে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এবং এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত দাবিতে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ভিডিওটিতে দেখানো শিশুটি খুনের আসামী হয়ে জেলে থাকার দাবিটি সঠিক নয় বরং চটকদার শিরোনামে উক্ত ভিডিও প্রচার করা হলেও ভিডিওটি পর্যবেক্ষণে নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে, সে কোনো অপরাধ করেনি এবং তার জেলও হয়নি।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে উক্ত ভিডিওতে পুলিশের পোশাক পরিহিত এক নারীর সাথে এক শিশুকে দেখা যায়। শিশুটিকে ক্যামেরার পেছনে থাকা অপর এক ব্যক্তির (পুরুষ) বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিতে শোনা যায়।

কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে Dipa akter নামের একটি ফেসবুক পেজে সম্ভাব্য প্রথম পোস্ট হিসেবে ২০২৩ সালের ২২ ডিসেম্বর প্রকাশিত উক্ত ভিডিওটি (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়।

এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি ভিডিওটি প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ বার দেখা হয়েছে। ভিডিওটিতে প্রায় ৩ লাখ ২১ হাজার পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। ভিডিওটি শেয়ার করা হয়েছে প্রায় সাড়ে ৮ হাজার বার। ভিডিওটির মন্তব্যঘর ঘুরে অধিকাংশ নেটিজেনকে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে দেখা যায়।

Screenshot: Facebook

ভিডিওটি পর্যবেক্ষণে ক্যামেরার পেছনে থাকা ব্যক্তির (পুরুষ) সাথে শিশুটির কথোপকথনে তাকে অপরাধী বলে মনে হয় এমন কোনো শব্দ বলতে শোনা যায়নি। শিশুটি জানায়, তার নাম রায়হান শেখ। বাড়ি টুঙ্গিপাড়া। পড়াশোনা করে প্লে’তে। 

সেখানে কথোপকথনের এক পর্যায়ে ক্যামেরার আড়ালে থাকা ব্যক্তি শিশুটিকে জিজ্ঞেস করেন, শিশুটি বড় হয়ে কী হতে চায়। জবাবে শিশুটি বলে, সে পুলিশ হতে চায়। তার পুলিশ ভালো লাগে। এরপর ওই ব্যক্তি তাকে পুলিশকে ভয় লাগে কিনা জিজ্ঞেস করলে শিশুটি না সূচক উত্তর দেয়। এরপর ক্যামেরার আড়ালে থাকা ব্যক্তি তাকে বলেন, “তোমার তো ভয় (পুলিশের অস্ত্র) পাওয়ার কিছু নাই। তুমি তো অপরাধ করো নাই। ভয় পাবে অপরাধীরা। তোমরা ভালোবাসবা পুলিশকে।” এরপরের কথোপকথন থেকে জানা যায়, শিশুটি সেখানে তার নানাবাড়ি বেড়াতে এসেছে।

অর্থাৎ, শিশুটি যে অপরাধী নয় তা তাদের কথোপকথনের মাধ্যমেই স্পষ্ট। 

তাছাড়া, পেজটির ট্র‍ান্সপারেন্সি সেকশনে গিয়ে দেখা যায়, ২০২৩ সালের ১৬ ডিসেম্বর পেজটি খোলা হয়েছে। এর ছয় দিন পর উক্ত ভিডিওটি আপলোড করা হয়।

Screenshot: Facebook

অর্থাৎ, উক্ত পেজ থেকে আলোচিত শিশুর ভিডিওটি চটকদার শিরোনামে আপলোড করা হয়; যা পরবর্তীতে কপি-পেস্ট হয়ে আসল দাবিতে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।

তাছাড়া, গণমাধ্যম বা অন্য কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে সাত বছর বা তার কাছাকাছি বয়সের কোনো শিশু খুনের আসামী হয়ে জেলে যাওয়ার বিষয়ে কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। 

এছাড়াও, বাংলাদেশের বিদ্যমান শিশু আইন (২০১৩) অনুযায়ী ৭ বছর বয়সী কোনো শিশুকে কোনো অবস্থাতেই গ্রেফতার করার নিয়ম নেই।

Screenshot: Laws of Bangladesh

তাছাড়া, ২০১৩ সালের শিশু আইনের ৪ নং ধারা অনুসারে, ১৮ বছর পর্যন্ত সবাই শিশু হিসেবে গণ্য হবে। ৩৩ (১) ধারামতে, অন্য কোনো আইনে যা কিছুই থাকুক না কেন, কোনো শিশুকে মৃত্যুদণ্ড, যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা কারাদণ্ড দেওয়া যাবে না। আর ৩৪ (১) ধারা অনুযায়ী, কোনো শিশু মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় কোনো অপরাধে দোষী প্রমাণিত হলে শিশু আদালত তাকে অনূর্ধ্ব ১০ বছর এবং অন্যূন তিন বছর মেয়াদে আটকাদেশ দিয়ে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে আটক রাখার আদেশ দিতে পারবেন।

অর্থাৎ, উপরোক্ত তথ্য উপাত্ত থেকে এটা স্পষ্ট যে, আলোচিত ভিডিওটিতে প্রচারিত তথ্যটি সঠিক নয়।

মূলত, অন্তত ২০২৩ সাল থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পুলিশের পোশাক পরিহিত এক নারীর সাথে এক শিশুর ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, শিশুটির বয়স ৭ বছর এবং সে খুনের আসামী হয়ে জেলে আছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, চটকদার শিরোনাম ব্যবহার করে উক্ত ভিডিও প্রচার করা হলেও ভিডিওটি পর্যবেক্ষণে নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে, শিশুটি কোনো অপরাধ করেনি বা জেলও হয়নি। বাংলাদেশে বিদ্যমান শিশু আইন (২০২৩) অনুযায়ী, ৭ বছর বয়সী কোনো শিশুকে গ্রেফতার বা জেলে দেওয়ার বিধান নেই। শিশুটি অপরাধী হিসেবে গণ্য হলেও তাকে জেলে না পাঠিয়ে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে আটক রাখা হতো।

সুতরাং, ৭ বছর বয়সী শিশুটি খুনের আসামী হয়ে জেলে আছে দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

রমজান উপলক্ষে সরকারের পক্ষ থেকে ২০,০০০ টাকা প্রদানের ভুয়া প্রচারণা 

0

সম্প্রতি, “রমজান উপলক্ষে সরকার সবাইকে বিকাশে  ২০,০০০ টাকা দিচ্ছে” শীর্ষক দাবিতে একটি তথ্য ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে।

রমজান

উক্ত দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

যা দাবি করা হচ্ছে 

রমজান উপলক্ষে সরকারের পক্ষ থেকে সবাইকে বিকাশে ২০,০০০ টাকা করে দেওয়া হচ্ছে। টাকা প্রাপ্তির জন্য ফোনে একটি ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে সেখানে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে কিছু ধাপ পার করার পর সেখানে থাকা রেজিস্ট্রেশন লিংকে গিয়ে রেজিস্ট্রেশন করার কয়েক ঘন্টা পর বিকাশে টাকা পাঠানো হবে। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, রমজান উপলক্ষে সরকারের পক্ষ থেকে সবাইকে বিকাশে ২০,০০০ টাকা দেওয়ার দাবিটি সত্য নয় বরং ভুয়া ওয়েবসাইট তৈরি করে প্রতারণার উদ্দেশ্যে এমন প্রলোভন দেখানো হচ্ছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে সরকার থেকে ২০,০০০ টাকা প্রলোভন দেখানোর ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

Screenshot : Scam Website 

ওয়েবসাইটটিতে প্রবেশ করার পর বাম পাশে থাকা থ্রি ডট ম্যানু বাটনে ক্লিক করতে বলা হয়। ক্লিক করার পর নতুন একটি ম্যানু বার আসে। 

Screenshot : Scam Website 

এবার ম্যানু বারে থাকা ‘Government’’ অপশনটি ক্লিক করতে বলা হয়। এই বাটনে ক্লিক করার পর নতুন একটি ওয়েবপেজে নিয়ে যাওয়া হয়। 

Screenshot : Scam Website 

ওয়েবপেজটিতে ক্লিক করলে নতুন আরেকটি ওয়েবপেজ আসে। ওয়েবপেজটি স্ক্রল করার পর ‘Government Help 20000 Taka:’ এই অংশে ক্লিক করতে বলা হয়। 

Screenshot : Scam Website

ক্লিক করার পর ‘myGov’ নামক একটি ওয়েবসাইটে নাম এবং ফোন নাম্বার দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে বলা হয়।

রেজিস্ট্রেশন করার পরবর্তী ধাপে এসএমএসের মাধ্যমে মোবাইল ফোনে একটি ওটিপি কোড আসে। 

Screenshot : scam Website 

ওটিপি কোড বসিয়ে সাবমিট করার পরবর্তী কয়েক ঘন্টা পর বিকাশে টাকা আসার কথা বলা হয়। তবে কয়েক ঘন্টা অপেক্ষা করার পরও কোনো টাকা আসেনি। 

এছাড়া, বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক রমজান উপলক্ষে ২০০০০ টাকা প্রদানের কোনো তথ্য গণমাধ্যম বা সরকারের কোনো সূত্রে জানা যায়নি। 

অর্থাৎ, উপরোক্ত তথ্য উপাত্ত পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, এটি একটি ভুয়া প্রচারণা। 

মূলত, রমজান উপলক্ষে সরকারের পক্ষ থেকে সবাইকে বিকাশ নাম্বারে ২০,০০০ টাকা দেওয়া হচ্ছে দাবিতে ইন্টারনেটে একটি প্রচারণা চালানো হচ্ছে। তবে উক্ত ক্যাম্পেইনের লিংকে ঢুকে প্রদত্ত সকল ধাপ অতিক্রম করে দেখা যায় সেখানে কোনো টাকা দেওয়া হচ্ছে না । প্রকৃতপক্ষে সরকারের পক্ষ থেকে টাকা দেওয়া হচ্ছে দাবিতে ভুয়া ওয়েবসাইট তৈরি করে প্রতারণার উদ্দেশ্যে এই প্রচারণাটি পরিচালনা করা হচ্ছে।

সুতরাং, রমজান উপলক্ষে সরকার সবাইকে বিকাশে ২০,০০০ টাকা দিচ্ছে দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত বিষয়টি সম্পূর্ণ ভুয়া ও প্রতারণামূলক।

তথ্যসূত্র

মুঠোফোন ও মোবাইলে খুদে বার্তায় উপবৃত্তির টাকা দেওয়ার নামে প্রতারণা

0

সম্প্রতি, “উপবৃত্তির টাকা 3300, যোগাযোগ: 01866565418, 01819409814, শিক্ষা বোর্ড” শীর্ষক একটি খুদে বার্তা এবং ফোন দিয়ে উপবৃত্তির টাকা পেতে বিকাশে টাকা পাঠাতে বলা হচ্ছে- এমন দাবিতে ফেসবুকে একাধিক পোস্ট হতে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার টিম।

উপবৃত্তি

খুদে বার্তার স্ক্রিনশটসহ ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফোন দিয়ে টাকা চাওয়া হয়েছে এমন তথ্যে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট হতে শিক্ষার্থী বা অভিভাবকদের মোবাইলে উপবৃত্তির টাকা পেতে ট্রাস্ট বা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাথে যোগাযোগ করতে কোনো খুদে বার্তা পাঠানো হয়নি এবংকি কোনো ফোনকলও করা হয়নি বরং প্রতারণার উদ্দেশ্যে একটি চক্র এসব কার্যক্রম পরিচালনা করছে। প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট থেকে টাকা লেনদেনের বিষয়ে সতর্ক করে একটি সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তিও দেওয়া হয়েছে। 

আলোচিত দাবির বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের ওয়েবসাইট পর্যবেক্ষণে গত ১৪ মার্চ প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের স্কিম পরিচালক (যুগ্মসচিব) মোহাম্মদ আসাদুল হক সাক্ষরিত একটি সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি পাওয়া যায়। 

Warning notice by Prime Minister’s Educational Assistance Trust Website 

উক্ত বিজ্ঞপ্তিতে সতর্ক করে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের আওতায় উপবৃত্তি ও অন্যান্য আর্থিক সহায়তা প্রাপ্তির আশ্বাস দিয়ে প্রতারকচক্র শিক্ষার্থী/অভিভাবকদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে। ট্রাস্ট হতে অর্থ প্রাপ্তির জন্য কোন প্রকার আর্থিক লেনদেন করার প্রয়োজন হয় না। 

তাই এ ধরনের আর্থিক লেনদেন থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে এই বিজ্ঞপ্তিতে। 

পরবর্তীতে একই ওয়েবসাইটে গত ১৩ মার্চ স্কিম পরিচালক (যুগ্মসচিব) মোহাম্মদ আসাদুল হক সাক্ষরিত আরেকটি বিজ্ঞপ্তি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Notice By Prime Minister’s Educational Assistance Trust Website

প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের আওতায় বাস্তবায়নাধীন সমন্বিত উপবৃত্তি কর্মসূচির আওতায় ৬ষ্ঠ থেকে ১২শ ও সমমান শ্রেণিতে উপবৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের মাঝে গত বছরের জুলাই-ডিসেম্বর কিস্তির উপবৃত্তির অর্থ HSP-MIS সফটওয়‍্যারের বিদ্যমান ‘নগদ’ ও ব্যাংক হিসাবধারী ব্যতীত অন্যান্য সকল উপকারভোগীর ‘নগদ হিসাব’ খোলার পরে উপবৃত্তির অর্থ বিতরণ করার বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ কর্তৃক নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, এমতাবস্থায়, HSP-MIS সফটওয়‍্যারের বিদ্যমান ‘নগদ’ ও ব্যাংক হিসাবধারী সুবিধাভোগী ব্যতীত অন্যান্য সকল উপকারভোগীর ‘নগদ হিসাব’ খোলার পরে গত বছরের জুলাই-ডিসেম্বর কিস্তির উপবৃত্তির অর্থ বিতরণ করা হবে। 

মূলত, গত ১৩ মার্চ গত বছরের জুলাই-ডিসেম্বর কিস্তির উপবৃত্তির টাকা প্রদানের জন্য ‘নগদ হিসাব’ খোলার প্রসঙ্গে একটি বিজ্ঞপ্তি দেয় প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট। এরই প্রেক্ষিতে একটি প্রতারক চক্র পরিকল্পিতভাবে শিক্ষার্থীদের এবং অভিভাবকদের নাম্বার সংগ্রহ করে ভিন্ন ভিন্ন ব্যক্তিগত নাম্বার থেকে উপবৃত্তি দেওয়ার নামে ভুয়া বার্তা প্রেরণ করছে এবং ফোনকল দিচ্ছে। যেখানে শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা সরকার থেকে মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস ‘নগদ’ এবং ‘ব্যাংক একাউন্ট’ এর মাধ্যমে সরাসরি শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছানো হয়। ট্রাস্ট হতে অর্থ প্রাপ্তির জন্য কোন প্রকার আর্থিক লেনদেন করার প্রয়োজন হয় না। অর্থাৎ ব্যক্তিগত কোনো নাম্বার থেকে ঐ ধরণের উপবৃত্তি সংক্রান্ত খুদে বার্তা প্রেরণের বা ফোনকলের কোনো অবকাশ নেই। এছাড়া, প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট থেকে এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ ধরনের প্রতারক চক্র থেকে শিক্ষার্থী/অভিভাবকদের সতর্ক থাকতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। 

অর্থাৎ, উপবৃত্তির টাকা পেতে শিক্ষা বোর্ডে যোগাযোগ এবং বিকাশে টাকা পাঠানোর দাবিতে শিক্ষার্থীদের বা অভিভাবকদের মোবাইল নাম্বারে প্রেরিত ফোনকল ও খুদে বার্তাগুলো সম্পূর্ণ প্রতারণামূলক।

তথ্যসূত্র

  • Prime Minister’s Educational Assistance Trust Website 
  • Prime Minister’s Educational Assistance Trus Notice
  • Rumor Scanner’s Own Analysis 

রাষ্ট্রপতির ছবি ব্যবহার করে দেশের প্রত্যেক নাগরিককে ১৫ হাজার টাকা সহায়তার ভুয়া ক্যাম্পেইন

0

সম্প্রতি, রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনের ছবি যুক্ত করে ‘আমরা প্রত্যেক নাগরিককে ১৫ হাজার বাংলাদেশী টাকা প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছি ছবিতে ক্লিক করুন এবং নিবন্ধন করুন’ শীর্ষক শিরোনামে একটি তথ্য ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে।

যা দাবি করা হচ্ছে

একটি ওয়েবসাইটের লিংক ফেসবুকে শেয়ার করে প্রত্যেক নাগরিককে ১৫ হাজার টাকা সহায়তা দেওয়ার দাবি প্রচার করা হয়েছে। ছবিতে ক্লিক করে নিবন্ধন করার কথা বলা হয়েছে।

রাষ্ট্রপতি

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, দেশের প্রত্যেক নাগরিককে ১৫ হাজার টাকা দেওয়ার কোনো ঘোষণা সরকার বা রাষ্ট্রপতি দেয়নি। প্রকৃতপক্ষে রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনের ছবিসহ একটি ভুয়া ওয়েবসাইট তৈরি করে প্রতারণার উদ্দেশ্যে প্রত্যেক নাগরিককে ১৫ হাজার টাকা সহায়তা প্রদানের এই প্রলোভন দেখানো হচ্ছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে প্রত্যেক নাগরিককে ১৫ হাজার টাকা সহায়তা দেওয়ার দাবিকৃত ওয়েবসাইটটিতে প্রবেশ করে রিউমর স্ক্যানার টিম।

Screenshot: Scam Website

ওয়েবসাইটটিতে প্রবেশ করলে শুরুতে “অভিনন্দন! একজন নাগরিক, আপনাকে ২৫ হাজার বাংলাদেশী টাকা মূল্যের অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান। এখান থেকে অনুদানের জন্য নিবন্ধন করুন।” শীর্ষক একটি বার্তা প্রদর্শিত হয় এবং নিচের একটি বাটনে নিবন্ধন করতে বলা হয়। 

লক্ষ্য করে দেখা যায়, ওয়েবসাইটটিতে প্রত্যেক নাগরিককে ১৫ হাজার টাকা সহায়তা প্রদান করার দাবি করলেও ওয়েবসাইটে প্রবেশের পর অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে ২৫ হাজার টাকা অনুদান দেওয়ার দাবি করা হয়েছে।

ওয়েবসাইটটির নিবন্ধন বাটনে ক্লিক করার পর ‘my.gaskmedics.com’ নামক ওয়েবসাইটে ফোন নাম্বার দিয়ে সাইন আপ করতে বলা হয়।

Screenshot: Scam Website

ওয়েবসাইটে থাকা তথ্যানুযায়ী ফোন নাম্বার প্রবেশ করলে এসএমএসের মাধ্যমে মোবাইল ফোনে একটি ওটিপি পিন কোড আসে।

Screenshot: Scam Website

তবে গোপন পিন কোডটি প্রবেশ করে পরের ধাপে যেতে চাইলে আবার চেষ্টা করতে বলা হয়। কিন্তু ফোনে কোনো টাকা আসেনি।

Screenshot: Scam Website

এছাড়া বাংলাদেশ সরকার বা রাষ্ট্রপতি কর্তৃক এমন কোনো সহায়তা প্রদানের তথ্য পাওয়া যায়নি।

অর্থাৎ, উপরোক্ত তথ্য উপাত্ত পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, এটি একটি ভুয়া ক্যাম্পেইন।

মূলত, রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনের ছবি ব্যবহার করে প্রত্যেক নাগরিককে ১৫ হাজার টাকা সহায়তা প্রদানের নামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ক্যাম্পেইন পরিচালনা করা হচ্ছে। তবে উক্ত ক্যাম্পেইনের লিংকে ঢুকে প্রদত্ত সকল ধাপ অতিক্রম করে দেখা যায় সেখানে সহায়তা দেওয়া হচ্ছে না। প্রকৃতপক্ষে রাষ্ট্রপতির ছবি দিয়ে ভুয়া ওয়েবসাইট তৈরি করে প্রতারণার উদ্দেশ্যে এই ক্যাম্পেইনটি পরিচালনা করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, ইতিপূর্বে বিভিন্ন সময়ে বিকাশের ওয়েবসাইট নকল করে প্রতারণার উদ্দেশ্যে প্রলোভন দেখানো হলে সে সময় উক্ত বিষয়টিকে মিথ্যা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার। 

সুতরাং, রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনের ছবি ব্যবহার করে দেশের প্রত্যেক নাগরিককে ১৫ হাজার টাকা প্রদানের দাবিতে প্রচারিত ওয়েবসাইটটি ভুয়া এবং দাবিটি সম্পূর্ণ প্রতারণামূলক।

তথ্যসূত্র

সাকিব আল হাসানকে জড়িয়ে জুয়ার অ্যাপের ভুয়া বিজ্ঞাপন প্রচার 

0

সম্প্রতি, মাগুরা- ১ আসনের সংসদ সদস্য ও ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান ‘Shakib Banger’ নামের কথিত জুয়ার অ্যাপের প্রচারণা করছেন দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

জুয়ার অ্যাপের

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সাকিব আল হাসান ‘Shakib Banger’ নামের কোনো জুয়ার অ্যাপের প্রচারণা করেননি বরং গত বছর ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে সাকিব আল হাসান কর্তৃক জার্মানভিত্তিক ব্র্যান্ড পুমা-এর প্রচারণার ভিডিওর সাথে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে তাতে ভিন্ন অডিও এবং জুয়ার বিজ্ঞাপন যুক্ত করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে ভিডিওটিতে যুক্ত সাকিব আল হাসানের কিছু স্থিরচিত্র রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে সাকিব আল হাসানের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে ২০২৩ সালের ১৭ এপ্রিল  Step into the festive spirit with PUMA ✨ Shop athleisure outfits and trendy styles, only at your nearest PUMA Store. শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Facebook 

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওর সাকিব আল হাসানের ক্লিপের সাথে উক্ত ভিডিওর হুবহু মিল রয়েছে। দুটোতেই তার পোশাক, অঙ্গভঙ্গি এবং কথা বলার স্টাইলের মিল দেখতে পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner 

ভিডিওটি থেকে জানা যায়, গত বছর ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে জার্মানভিত্তিক ব্র্যান্ড পুমা এর শো-রুমগুলো পরিদর্শন করার জন্যে সাকিব আল হাসান তার পেজে উক্ত ভিডিওটি প্রচার করেন। মূলত ভিডিওটি পুমার একটি প্রমোশনাল ভিডিও। যেখানে তিনি ঈদের শপিংয়ের তালিকায় পুমার অ্যাথলেইজার পোশাকগুলো রাখার আহ্বান জানান। উক্ত ভিডিওতে সাকিবকে কোনো জুমার অ্যাপের প্রচারণা করতে দেখা যায়নি। তাই সাকিব আল হাসানের উক্ত ভিডিওটির সাথে আলোচিত দাবিটির কোনো সম্পর্ক নেই।

অর্থাৎ, ভিন্ন একটি ভিডিওতে সাকিব আল হাসানের কন্ঠস্বরের পরিবর্তে নকল কন্ঠস্বর বসিয়ে উক্ত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।

ভিডিওটি প্রচার করা ফেসবুক পেজ সম্পর্কে যা জানা গেল

আলোচিত জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচারকারী পেজটি (আর্কাইভ) পর্যালোচনা করে দেখা যায় এতে কিছু অনলাইন ভিত্তিক জুয়া খেলার প্রচারণামূলক পোস্ট রয়েছে (, , )। এছাড়াও পেজটির লোকেশনের স্থানে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক শহরের কথা উল্লেখ রয়েছে। তবে তথ্য গোপন রাখায় পেজটির ট্রান্সপারেন্সি সেকশন যাচাই করে পেজটি কোন দেশ থেকে পরিচালিত হচ্ছে তা জানা সম্ভব হয়নি। পাশাপাশি জানা যায় উক্ত পেজটি ২০২৩ সালের ১৬ জুন তৈরি করা হয়েছে এবং পেজটির নাম একবার পরিবর্তন করা হয়েছে।

Screenshot: Facebook 

মূলত, বাংলাদেশে অবস্থিত জার্মানভিত্তিক ব্র্যান্ড পুমা এর শো-রুমগুলো ঈদের শপিংয়ের জন্যে পরিদর্শন করার আহ্বান জানিয়ে মাগুরা- ১ আসনের সংসদ সদস্য ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান গত বছর ঈদুল ফিতরের আগে আর পেজে একটি প্রমোশনাল ভিডিও প্রচার করেন। সম্প্রতি উক্ত ভিডিওর কিছু অংশ কাট করে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় তাতে ভিন্ন একটি ভয়েসওভার এবং জুয়ার অ্যাপের প্রচারণার ভিডিও যুক্ত করে দাবি করা হচ্ছে, সাকিব আল হাসান জুয়ার অ্যাপের প্রচারণা করছেন।  প্রকৃতপক্ষে, সাকিব আল হাসান এমন কোনো জুয়ার অ্যাপের প্রচারণা করেননি।

সুতরাং, সাকিব আল হাসান ‘Shakib Banger’ নামের অনলাইন জুয়ার অ্যাপের প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন শীর্ষক দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

সাকিব আল হাসানের ভিডিও ব্যবহার করে জুয়ার অ্যাপের ভুয়া বিজ্ঞাপন প্রচার 

সম্প্রতি, মাগুরা- ১ আসনের সংসদ সদস্য ও ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান ‘Shakib Banger’ নামের কথিত জুয়ার অ্যাপের প্রচারণা করছেন দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

সাকিব আল হাসানের

Herbal power নামের একটি পেজে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সাকিব আল হাসান ‘Shakib Banger’ নামের কোনো জুয়ার অ্যাপের প্রচারণা করেননি বরং GlucoMaxD এর ফেসবুকে পেজে সাকিবকে নিয়ে আয়োজিত এক অনলাইন আড্ডার ভিডিও ব্যবহার করে আলোচিত দাবিটি প্রচার  করা হয়েছে।

দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে ভিডিওটিতে যুক্ত সাকিব আল হাসানের কিছু স্থিরচিত্র রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে সাকিব আল হাসানের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে ২০২৩ সালের ২৭ আগস্ট আমি আসছি…. বিশ্বের এক নাম্বার অলরাউন্ডার সাথে দেশের এক নাম্বার Glucose ব্র্যান্ড। শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Facebook 

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওর সাকিব আল হাসানের ক্লিপের সাথে উক্ত ভিডিওর সাদৃশ্য রয়েছে। দুই ভিডিওতেই তার পোশাক, অঙ্গভঙ্গি এবং কথা বলার স্টাইলের মিল পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner 

ভিডিও থেকে জানা যায়, গত বছরের (২০২৩) ৩১ আগস্ট ইউনিলিভার কনজ্যুমার কেয়ার লিমিটেড-এর গ্লুকোজ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান GlucoMaxD তাদের ফেসবুকে পেজে সাকিব আল হাসানকে নিয়ে একটি অনলাইন আড্ডার আয়োজন করতে যাচ্ছিল। যেখানে সাকিব  ক্রিকেট এবং নিজের পছন্দ অপছন্দ নিয়ে নানা গল্প করবেন। মূলত সেই অনুষ্ঠানের প্রচারণামূলক একটি ভিডিও-ই এটি।  এর সাথে আলোচিত দাবির কোনো সম্পর্ক নেই।

অর্থাৎ, ভিন্ন একটি ভিডিওতে সাকিব আল হাসানের কন্ঠস্বরের পরিবর্তে নকল কন্ঠস্বর বসিয়ে উক্ত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।

ভিডিওটি প্রচার করা ফেসবুক পেজ সম্পর্কে যা জানা গেল

আলোচিত জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচারকারি Herbal power নামের পেজটি (আর্কাইভ) পর্যালোচনা করে এতে কিছু অপ্রাসঙ্গিক পোস্ট লক্ষ্য করা যায় (, , )। পাশাপাশি গুগল ট্রান্সলেটর ব্যবহার করে দেখা যায়, পেজটিতে প্রচারিত সব পোস্টেই রাশিয়ান ভাষা ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও পেজটির লোকেশনের স্থানে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ-এর কথা উল্লেখ রয়েছে। তবে তথ্য গোপন রাখায় পেজটির ট্রান্সপারেন্সি সেকশন যাচাই করে পেজটি কোন দেশ থেকে পরিচালিত হচ্ছে তা জানা সম্ভব হয়নি। তবে উক্ত পেজটি ২০২২ সালের ২২ সেপ্টেম্বর তৈরি করা হয়েছে বলে জানা যায়।

Screenshot: Facebook 

মূলত, ইউনিলিভার কনজ্যুমার কেয়ার লিমিটেড-এর গ্লুকোজ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান GlucoMaxD ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানকে নিয়ে তাদের বাংলাদেশ সেকশনের ফেসবুক পেজে ২০২৩ সালের ৩১ আগস্ট একটি অনলাইন আড্ডার আয়োজন করতে যাচ্ছিল। তাই তারা সাকিবকে নিয়ে উক্ত অনুষ্ঠানের একটি প্রচারণামূলক ভিডিও তৈরি করে। যা সাকিবের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে প্রচার করা হয়। সম্প্রতি উক্ত ভিডিওর কিছু অংশ কেটে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় তাতে ভিন্ন একটি ভয়েসওভার এবং জুয়ার অ্যাপের প্রচারণার ভিডিও যুক্ত করে দাবি করা হচ্ছে, সাকিব জুয়ার অ্যাপের প্রচারণা করছেন। প্রকৃতপক্ষে, সাকিব এমন কোনো জুয়ার অ্যাপের প্রচারণা করেননি।

সুতরাং, সাকিব আল হাসান ‘Shakib Banger’ নামের অনলাইন জুয়ার অ্যাপের প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন শীর্ষক দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং এ সংক্রান্ত ভিডিওটি এডিটেড বা সম্পাদিত।

তথ্যসূত্র

চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে বাবার মৃত্যুর শোকে মেয়ের মৃত্যুর ভুয়া দাবি ইন্টারনেটে 

0

সম্প্রতি, চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে বাবার মৃত্যুর শোকে কাঁদতে কাঁদতে বাবার বুকের উপরেই মেয়ের মৃত্যু- শীর্ষক দাবিতে একটি ছবি ইন্টারনেটে  ছড়িয়ে পড়েছে। 

বাঁশখালীতে

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে বাবার মৃত্যুর শোকে মেয়ের মৃত্যুর কোনো ঘটনা ঘটেনি বরং উক্ত দাবিতে প্রচারিত ছবিটি অন্তত ২০২০ সাল থেকে ইন্টারনেটে বিদ্যমান।  

গুজবের সূত্রপাত

অনুসন্ধানে দেখা যায়, Jh Kurshed নামক একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে গত ২৭ মার্চ রাত ১১ টা ০৩ মিনিটে আলোচিত দাবির সম্ভাব্য প্রথম পোস্ট (আর্কাইভ) করা হয়।

Screenshot: Facebook 

পরবর্তীতে উক্ত পোস্টটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। 

ফেসবুকে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে গত ২৮ মার্চ বাংলাদেশ বুলেটিনের বিশেষ সংবাদদাতা ও চট্টগ্রামের স্থানীয় সাংবাদিক Kamruzzaman Rony এর ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে আলোচিত দাবিটি মিথ্যা উল্লেখ করে প্রচারিত একটি পোস্ট (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়৷

Screenshot: Facebook 

উক্ত পোস্টে বলা হয়, “রোজা রেখে মিথ্যা ছবি ও তথ্য প্রকাশ থেকে বিরত থাকুন।
প্রসঙ্গ: বাঁশখালীতে মৃত বাবার শোকে মেয়ের মৃত্যু ৷ 
(প্রমান কমেন্টসে- ২০২২ সালেও ছবিটি ভাইরাল হয়েছে)”

পরবর্তীতে কমেন্টে মন্তব্য ঘরে গিয়ে দেখা যায়, আলোচিত ছবিটি ২০২২ সালের উল্লেখ করে তিনি নিজেই একটি স্ক্রিনশট প্রদান করেছেন।

Screenshot: Facebook 

এছাড়া, সম্প্রতি চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে বাবার মৃত্যুর শোকে মেয়ের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে কি না এ বিষয়ে অনুসন্ধানে চট্টগ্রামের স্থানীয় গণমাধ্যম ও মূলধারার জাতীয় গণমাধ্যমে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

পাশাপাশি, বিষয়টি অধিকতর যাচাইয়ের জন্য বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার জেসমিন আক্তারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি রিউমর স্ক্যানারকে জানান, বাঁশখালী এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি।

ছবির বিষয়ে অনুসন্ধান

আলোচিত পোস্টগুলোতে থাকা ছবিটির বিষয়ে অনুসন্ধান করে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

অনুসন্ধানে R A Masum Chowdhury নামক একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ২০২০ সালের ০৫ অক্টোবর প্রকাশিত একটি পোস্টে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। (আর্কাইভ)।

Screenshot: Facebook 

উক্ত পোস্টের ক্যাপশনে দাবি করা হয়, ছবির ঘটনাটি ২০২০ সালে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার চাপিতলা গ্রামের। সেসময় ঐ এলাকায় বিদেশ ফেরত বাবার লাশ দেখে শোক সইতে না পেরে বাবার লাশের ওপরে চিৎকার দিয়ে পরে মেয়ের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। 

সেসময় একই ছবি ব্যবহার করে একই দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত আরও পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

পরবর্তীতে ২০২২ সালেও একই দাবিতে ছবিটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তে দেখে রিউমর স্ক্যানার।

২০২২ সালে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

Screenshot: Facebook 

অর্থাৎ, একই ছবি ২০২০ সালে কুমিল্লার মুরাদনগরে বাবার মৃত্যুর শোকে মেয়ের মৃত্যুর ঘটনা দাবিতে প্রচার করা হয়। 

মূলত, সম্প্রতি চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে বাবার মৃত্যুর শোকে মেয়ের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে- শীর্ষক দাবিতে একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সম্প্রতি চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। এছাড়া, আলোচিত ছবিটি অন্তত ২০২০ সাল থেকে কুমিল্লার মুরাদনগরে বাবার মৃত্যুর শোকে মেয়ের মৃত্যুর ঘটনা দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার হতে দেখা যায়। 

সুতরাং, সম্প্রতি চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে বাবার মৃত্যুর শোকে মেয়ের মৃত্যুর ঘটনা দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

  • Jh Kurshed- Facebook Post
  • Kamruzzaman Rony- Facebook Post 
  • R A Masum Chowdhury- Facebook Post 
  • Banshkhali Upazila UNO- Statement 
  • Rumor Scanner’s Own Analysis 

নকল কোকা-কোলা তৈরির এই কারখানাটি বাংলাদেশে অবস্থিত নয়

সম্প্রতি অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে নকল কোকা-কোলা তৈরির একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। দাবি করা হচ্ছে, ভিডিওটিতে দেখানো নকল কোকা-কোলা তৈরির কারখানাটি বাংলাদেশে অবস্থিত।

কোকা-কোলা তৈরির

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ),  এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ইউটিউবে প্রচারিত এমন কিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)

টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, নকল কোকা-কোলা তৈরির কারখানাটি বাংলাদেশের নয় বরং পাকিস্তানের।

আলোচ্য ভিডিওটি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরালের পর বিষয়টির সত্যতা জানতে চেয়ে একাধিক ফ্যাক্ট-চেক অনুরোধ পায় রিউমর স্ক্যানার টিম। ভাইরাল ভিডিওটির প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে ভিডিওতে থাকা ব্যক্তিদের উর্দু ভাষায় কথা বলতে শোনা যায়।

পরবর্তীতে ভিডিওটির কিছু স্থীর-চিত্র রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে, ‘Karachi Update’ নামের পাকিস্তান ভিত্তিক একটি ফেসবুক পেজে গত ২৭ মার্চ রাত ৯টা ২৫ মিনিটে প্রকাশিত একই ভিডিও (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত পোস্টের ক্যাপশনে উর্দু ভাষায় ব্যঙ্গাত্মকভাবে লেখা হয়, “কোকা-কোলা পান করে জীবন উপভোগ করুন, এখন থেকে আর বলবেন না যে এটি ইহুদিদের কোম্পানি। এটা আমাদের নিজের দেশ, পাকিস্তানে তৈরি।”

Screenshot: Facebook. 

উক্ত পোস্টের প্রায় ২ ঘণ্টা পর ‘Saleem Lashari’ নামের পাকিস্তান ভিত্তিক একটি ফেসবুক আইডিতে একই ভিডিও (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিওর ক্যাপশনে ব্যঙ্গাত্মকভাবে লেখা হয়, “পেপসি এবং কোক বর্জন করবেন না, কারণ এগুলো গুজরানওয়ালাতেই এক মুসলিম ভাই তৈরি করছেন।”

Screenshot: Facebook.

পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে পাকিস্তানের একাধিক গণমাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে নকল কোমল পানীয় তৈরির কারখানায় পাকিস্তানের বিভিন্ন প্রদেশের নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের অভিযানের তথ্য পাওয়া যায় (,,,)। এসব কারখানা ও আলোচ্য ভিডিওতে থাকা কারখানায় ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি ও নকল পানীয় তৈরির পদ্ধতির মধ্যে মিল লক্ষ্য করা যায়। 

এছাড়া আলোচ্য ভিডিওটিতে দেখানো কোকা-কোলার মোড়কে ইংরেজি ভাষায় ‘CocaCola’ ব্র্যান্ডের নাম লেখা রয়েছে। তবে, বাংলাদেশে বাজারজাত কোকা-কোলার মোড়কগুলোতে সাধারণত বাংলা অক্ষরে ব্র্যান্ডের নাম লেখা হয়। 

Image Comparison : Rumor Scanner.

পাশাপাশি উক্ত ভিডিওতে যে কোকা-কোলার বোতল দেখা যাচ্ছে, তা ১.৫ লিটারের। তবে কোকা-কোলা বাংলাদেশের ওয়েবসাইট অনুযায়ী, বাংলাদেশে ১.৫ লিটারের কোকা-কোলা পাওয়া যায় না। বাংলাদেশে কোকা-কোলার বড় সাইজের বোতলগুলো হল ১ লিটার, ১.২৫ লিটার এবং ২ লিটার। এছাড়া নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্রেও ভাইরাল ভিডিওতে থাকা ‘নকল কোকা-কোলা তৈরির এই কারখানাটি বাংলাদেশে অবস্থিত’ এমন দাবির পক্ষে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

তাছাড়া বিভিন্ন দেশের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রতিষ্ঠানের প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে পাকিস্তানের নকল পানীয় তৈরির কারখানার ভিডিও এবং ছবি পূর্বেও বিভিন্ন দেশের নামে ছড়িয়ে পড়ার প্রমাণ পাওয়া যায় (,,)।

মূলত, বাংলাদেশে নকল কোকা-কোলা তৈরি করা হচ্ছে দাবিতে একটি নকল কোকা-কোলা তৈরির কারখানার ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে। তবে, রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, এই কারখানাটি বাংলাদেশে অবস্থিত নয়। ভাইরাল ভিডিওটিতে উর্দু ভাষায় কথা বলতে শোনা যায়। পাশাপাশি, ভাইরাল ভিডিওতে থাকা মোড়ক এবং বাংলাদেশে বিক্রীত কোকা-কোলার মোড়কের লেখা এবং বোতলের আকারের বিষয়েও অসামঞ্জস্যতা পাওয়া যায়।

সুতরাং, পাকিস্তানের নকল কোকা-কোলা তৈরির কারখানার একটি ভিডিও বাংলাদেশের দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

  • Rumor Scanner’s own analysis.