সম্প্রতি, “উপবৃত্তির টাকা 3300, যোগাযোগ: 01866565418, 01819409814, শিক্ষা বোর্ড” শীর্ষক একটি খুদে বার্তা এবং ফোন দিয়ে উপবৃত্তির টাকা পেতে বিকাশে টাকা পাঠাতে বলা হচ্ছে- এমন দাবিতে ফেসবুকে একাধিক পোস্ট হতে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার টিম।
খুদে বার্তার স্ক্রিনশটসহ ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
ফোন দিয়ে টাকা চাওয়া হয়েছে এমন তথ্যে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট হতে শিক্ষার্থী বা অভিভাবকদের মোবাইলে উপবৃত্তির টাকা পেতে ট্রাস্ট বা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাথে যোগাযোগ করতে কোনো খুদে বার্তা পাঠানো হয়নি এবংকি কোনো ফোনকলও করা হয়নি বরং প্রতারণার উদ্দেশ্যে একটি চক্র এসব কার্যক্রম পরিচালনা করছে। প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট থেকে টাকা লেনদেনের বিষয়ে সতর্ক করে একটি সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তিও দেওয়া হয়েছে।
আলোচিত দাবির বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের ওয়েবসাইট পর্যবেক্ষণে গত ১৪ মার্চ প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের স্কিম পরিচালক (যুগ্মসচিব) মোহাম্মদ আসাদুল হক সাক্ষরিত একটি সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি পাওয়া যায়।
উক্ত বিজ্ঞপ্তিতে সতর্ক করে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের আওতায় উপবৃত্তি ও অন্যান্য আর্থিক সহায়তা প্রাপ্তির আশ্বাস দিয়ে প্রতারকচক্র শিক্ষার্থী/অভিভাবকদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে। ট্রাস্ট হতে অর্থ প্রাপ্তির জন্য কোন প্রকার আর্থিক লেনদেন করার প্রয়োজন হয় না।
তাই এ ধরনের আর্থিক লেনদেন থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে এই বিজ্ঞপ্তিতে।
পরবর্তীতে একই ওয়েবসাইটে গত ১৩ মার্চ স্কিম পরিচালক (যুগ্মসচিব) মোহাম্মদ আসাদুল হক সাক্ষরিত আরেকটি বিজ্ঞপ্তি খুঁজে পাওয়া যায়।
প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের আওতায় বাস্তবায়নাধীন সমন্বিত উপবৃত্তি কর্মসূচির আওতায় ৬ষ্ঠ থেকে ১২শ ও সমমান শ্রেণিতে উপবৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের মাঝে গত বছরের জুলাই-ডিসেম্বর কিস্তির উপবৃত্তির অর্থ HSP-MIS সফটওয়্যারের বিদ্যমান ‘নগদ’ ও ব্যাংক হিসাবধারী ব্যতীত অন্যান্য সকল উপকারভোগীর ‘নগদ হিসাব’ খোলার পরে উপবৃত্তির অর্থ বিতরণ করার বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ কর্তৃক নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, এমতাবস্থায়, HSP-MIS সফটওয়্যারের বিদ্যমান ‘নগদ’ ও ব্যাংক হিসাবধারী সুবিধাভোগী ব্যতীত অন্যান্য সকল উপকারভোগীর ‘নগদ হিসাব’ খোলার পরে গত বছরের জুলাই-ডিসেম্বর কিস্তির উপবৃত্তির অর্থ বিতরণ করা হবে।
মূলত, গত ১৩ মার্চ গত বছরের জুলাই-ডিসেম্বর কিস্তির উপবৃত্তির টাকা প্রদানের জন্য ‘নগদ হিসাব’ খোলার প্রসঙ্গে একটি বিজ্ঞপ্তি দেয় প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট। এরই প্রেক্ষিতে একটি প্রতারক চক্র পরিকল্পিতভাবে শিক্ষার্থীদের এবং অভিভাবকদের নাম্বার সংগ্রহ করে ভিন্ন ভিন্ন ব্যক্তিগত নাম্বার থেকে উপবৃত্তি দেওয়ার নামে ভুয়া বার্তা প্রেরণ করছে এবং ফোনকল দিচ্ছে। যেখানে শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা সরকার থেকে মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস ‘নগদ’ এবং ‘ব্যাংক একাউন্ট’ এর মাধ্যমে সরাসরি শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছানো হয়। ট্রাস্ট হতে অর্থ প্রাপ্তির জন্য কোন প্রকার আর্থিক লেনদেন করার প্রয়োজন হয় না। অর্থাৎ ব্যক্তিগত কোনো নাম্বার থেকে ঐ ধরণের উপবৃত্তি সংক্রান্ত খুদে বার্তা প্রেরণের বা ফোনকলের কোনো অবকাশ নেই। এছাড়া, প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট থেকে এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ ধরনের প্রতারক চক্র থেকে শিক্ষার্থী/অভিভাবকদের সতর্ক থাকতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
অর্থাৎ, উপবৃত্তির টাকা পেতে শিক্ষা বোর্ডে যোগাযোগ এবং বিকাশে টাকা পাঠানোর দাবিতে শিক্ষার্থীদের বা অভিভাবকদের মোবাইল নাম্বারে প্রেরিত ফোনকল ও খুদে বার্তাগুলো সম্পূর্ণ প্রতারণামূলক।
তথ্যসূত্র
- Prime Minister’s Educational Assistance Trust Website
- Prime Minister’s Educational Assistance Trus Notice
- Rumor Scanner’s Own Analysis