Home Blog Page 380

মদ খেয়ে বাঘের ঘোরাফেরা করার ভুয়া দাবি

সম্প্রতি, মদ খেয়ে একটি বাঘ ঘোরাফেরা করছে শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ) ।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, চিতাবাঘটি মদ খেয়ে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ঘোরাফেরা করেনি বরং চিতাবাঘটি জলাতঙ্কের সংক্রমণের কারণে মস্তিষ্কের বিরল রোগে আক্রান্ত। যার ফলে চিতাবাঘটি অচেতন অবস্থায় গ্রামে ঘোরাফেরা করেছিল।

মূলত, ভারতের মধ্যপ্রদেশের ইকলেরা গ্রামে একটি চিতাবাঘকে ঘোরাফেরা করতে দেখে গ্রামবাসীরা লাঠিসোঁটা দিয়ে এগিয়ে যায়। কিন্তু, বাঘটিকে আক্রমণ করতে না দেখে তাঁরা বাঘটির সাথে সেলফি তুলে এবং উপরে চড়তে চেষ্টা করে। পরবর্তীতে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘বাঘটি দেশী মদ খেয়ে অচেতন অবস্থায় ঘোরাফেরা করছে’ শীর্ষক দাবিতে ছড়িয়ে পড়ে। প্রকৃতপক্ষে, চিতাবাঘটি জলাতঙ্কের সংক্রমণের কারণে মস্তিষ্কের বিরল রোগে আক্রান্ত হয়ে অচেতন অবস্থায় গ্রামে ঢুকে পড়ে। বাঘের এই আচরণের সাথে মদ খেয়ে নেশা করার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।

উল্লেখ্য, পূর্বেও দাবিটি ইন্টারনেটে প্রচার করা হলে সেসময় বিষয়টি মিথ্যা হিসেবে শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

জেমস এবং সাকিব আল হাসানকে জড়িয়ে করা এই পোস্টটি মারজুক রাসেলের নয়

0

সম্প্রতি, Marzuk Russell নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে ব্যান্ড সংগীত শিল্পী জেমসকে নিয়ে ক্রিকেটার ও সাংসদ সাকিব আল হাসানকে খোঁচা দিয়ে করা একটি পোস্ট অভিনেতা মারজুক রাসেলের আসল পোস্ট দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।  

আলোচিত পোস্টটিতে যা আছে

Marzuk Russell নামের পেজটির পোস্টে বলা হয়েছে, ‘জনপ্রিয়তার সর্বোচ্চ চূড়ায় থেকেও তিনি বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মতো শো রুম উদ্বোধন করতে যান না! তিনি কোনোদিন নির্বাচনের জন্য মনোনয়ন আবেদনপত্র জমা দিতে যাননি! তিনি সস্তা জনপ্রিয়তার পেছনে ছুটেন না! তিনি নিজের ব্যাক্তিত্বকে বিকিয়ে চাটুকার তেলবাজদের মতন কথা বলেন না! তিনি রাতারাতি হঠাৎ করে তারকা বনে যাননি! তিনি কোনো পদক পাওয়ার আশায় কাজ করেন না কিংবা লবিং করেন না! তিনি বাংলাদেশে দীর্ঘ সময় ধরে নিজের জনপ্রিয়তা ধরে রেখেছেন এমনই একজন! ৬০ বছর বয়সও কনসার্টে তিনি এদেশে সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক পাওয়া শিল্পী! চাইলেই কোন মিডিয়া, টিভি সাংবাদিক তার ইন্টারভিউ নিতে পারেনা! তার গান এদেশের আবালবৃদ্ধবনিতা সকল শ্রেণির মানুষেরা শুনেন! তার কনসার্টে যত দর্শক হয়, আর কারো কনসার্টে এতো দর্শক হয় না! তিনি কোন পদক কিংবা ল পুরষ্কার এর জন্য গান করেন না! তিনি অনেক বড় রকস্টার হওয়া সত্যেও নিজেকে নিজে বড় মনে করেন না কিংবা কেন তিনি কিংবদন্তি রকষ্টার তার ফিরিস্তি দিতে যান না! তিনি কিংবদন্তী হওয়া সত্ত্বেও কোনোরুপ অহংকার করে কথা বলেন না! তিনি মিডিয়ার সামনে এসে মিথ্যা, বানোয়াট বিভ্রান্তিকর কোন কথা বলেন না! তিনি কারো পেছনে কথা, হিপোক্রেসি কিংবা গীবত করেননা! প্রিয় জেমস ভাই আপনাকে এই দেশের মানুষ এই দেশের শিল্পী মিউজিশিয়ানরা অনেক ভালোবাসে, ভালো থাকবেন, নিজের প্রতি যত্ন নিবেন।’

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ব্যান্ড সংগীত শিল্পী জেমসকে জড়িয়ে  ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানকে খোঁচা দিয়ে করা আলোচিত এই পোস্টটি অভিনেতা মারজুক রাসেলের নয় বরং তার নামে পরিচালিত একটি ফ্যান পেজের মাধ্যমে এই পোস্টটি প্রচার করা হয়েছে। যদিও মূল পোস্টটি তারও পূর্বে থেকেই ফেসবুকে থাকার প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে Marzuk Russell নামেরই একটি ফেসবুক পেজে গত ২৫ মার্চ ভোর ৫ টা ১৭ মিনিটে প্রকাশিত আলোচিত পোস্টটি (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook

উক্ত পেজটির বায়ো এবং ডিটেইলস সেকশনে গিয়ে দেখা যায়, এটি একটি ফ্যান পেজ।

পরবর্তীতে এ বিষয়ে অনুসন্ধানে Marzuk Russell নামের ভিন্ন একটি পেজের সন্ধান পায় রিউমর স্ক্যানার টিম। উক্ত পেজটিতে গত ১৬ জানুয়ারি ❝কবিতাই আমার রাজনীতির জায়গা।❞… শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি লাইভ ভিডিও (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Facebook

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, উক্ত ফেসবুক পেজটিকে মারজুক রাসেল তার আসল ফেসবুক পেজ উল্লেখ করে ভক্তদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে লক্ষ করছি আমার নাম ও ছবি ব্যবহার করে কতগুলো সো কল্ড ফ্যানপেজ বিভিন্ন ব্যক্তি, সংগঠন এবং সংস্থাকে উদ্দেশ্য করে তাদের নিজস্ব মতামত প্রচার করছে। যাতে মানুষজন বিভ্রান্ত হচ্ছেন। দীর্ঘদিন আমার কোনো পেজ ছিল না। তবে ’ত্যালফ্যাল ছাড়া যে রান্ধে―’, ‘পাশা ভাই’ এমন বিষয়ভিত্তিক ৩-৪টা ইরেগুলার পেজ ছাড়া ফেসবুকে আমার কোনো অ্যাক্টিভিটি ছিল না। কিন্তু সম্প্রতি আমি একটি পেজ খুলেছি যার মাধ্যমে এই লাইভটি করছি। এইটাই আমার অফিসিয়াল পেজ।’ তিনি আরো বলেন, ‘সাইবার অপরাধ নিয়ে যারা কাজ করেন তাদেরকে বিষয়টি আমি মৌখিকভাবে জানিয়ে রেখেছি। আমাকে হেয় করার চেষ্টা করা হচ্ছে, ডিস্টার্ব করার চেষ্টা করা হচ্ছে এটা আমার জন্যে খুব বিরক্তিকর।’

অর্থাৎ, জেমস এবং সাকিব আল হাসান প্রসঙ্গে মারজুক রাসেলের পোস্ট দাবিতে ছড়িয়ে পড়া আলোচিত পোস্টটি মারজুক রাসেলের নয়। 

তবে আমাদের অনুসন্ধান বলছে, মারজুক রাসেলের ফ্যান পেজ থেকে করা পোস্টটিই এ সংক্রান্ত প্রথম পোস্ট নয়। ‘Nagarbaul James – International Rockstar of Bangladesh’ নামের একটি ফ্যান পেজে গত ২৩ মার্চ একই পোস্টটি প্রচার করতে দেখা যায়। যা মারজুক রাসেলের ফ্যান পেজে করা পোস্টটির দুইদিন আগের।

Screenshot: Facebook

মূলত, অন্তত গত ২৩ মার্চ থেকে ব্যান্ড সংগীত শিল্পী জেমস ও ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের তুলনা করে একটি পোস্ট ফেসবুক ছড়িয়ে পড়তে দেখা যায়। পরবর্তীতে ২৫ মার্চ থেকে কবি ও অভিনেতা মারজুক রাসেলের নামে পরিচালিত ফেসবুকের একটি ফ্যান পেজ থেকে একই পোস্ট করা হয়। সম্প্রতি উক্ত পোস্টকে মারজুক রাসেলের আসল পোস্ট ভেবে নেটিজেনরা সেটি শেয়ার করেন।  প্রকৃতপক্ষে, দীর্ঘদিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মারজুক রাসেল নিজের নামে পরিচালিত তার কোনো পেজ ছিল না। তিনি ভিন্ন ভিন্ন নামের বিষয়ভিত্তিক কয়েকটি পেজের মাধ্যমে অনিয়মিতভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যুক্ত ছিলেন। কিন্তু গত ডিসেম্বর তিনি তার নামে একটি ফেসবুক পেজ খুলেছেন। যেখানে আলোচিত পোস্টটির কোনো অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, অভিনেতা মারজুক রাসেলের নামে পরিচালিত ফ্যান পেজ থেকে জেমস এবং  সাকিব আল হাসানকে নিয়ে করা একটি পোস্ট মারজুক রাসেলের আসল ফেসবুক পোস্ট দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

এটি ফ্রান্সের সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নাজাত বেলকাসেমের ছোটবেলার ছবি নয়

সম্প্রতি, ২০ বছর আগে তিনি মরক্কোতে ভেড়া চরছিলেন, এখন তিনি ফ্রান্সের শিক্ষামন্ত্রী শীর্ষক দাবিতে একটি কোলাজ ছবি ইন্টারনেটে প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে, কোলাজে থাকা ছোট শিশুর ছবিটি ফ্রান্সের শিক্ষামন্ত্রী নাজাত বেলকাসেম এর।

ফ্রান্সের

টিকটকে উক্ত দাবিতে প্রচারিত ভিডিও দেখুন  (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে গণমাধ্যমে অন্তত ২০১৬ সাল থেকে সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। 

বাংলাদেশি গণমাধ্যমে উক্ত দাবিতে সংবাদ প্রতিবেদন দেখুন যুগান্তর (২০২০), সোনালি নিউজ (২০১৭), এমটিনিউজ২৪ (২০১৬)। 

ওপার বাংলার কিছু গণমাধ্যমে উক্ত দাবিতে সংবাদ প্রতিবেদন দেখুন আনন্দবাজার, নিউজ ১৮

গণমাধ্যমের ফেসবুক পেজসহ ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ছবিটিতে কোলাজ করা দুইজন একই ব্যক্তি নয় বরং দুইজন আলাদা ব্যক্তির ছবিকে কোলাজের মাধ্যমে একই ব্যক্তির ভিন্ন বয়সের ছবি দাবি করে প্রচার করা হচ্ছে।

এ বিষয়ের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য আলোচিত ভিডিওটির কিছু কি-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চ করে “Child Notice Morocco – 2015” ইউনিসেফের ওয়েবসাইটে একটি নথি খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত নথির ২৬ তম পেজে প্রকাশিত ছবির সাথে বাম দিকের শিশুটির ছবির সাদৃশ্য খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison: Rumor Scanner

উক্ত নথিতে মেয়েটির বিষয়ে কিছু না জানা গেলেও যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান স্নোপস ২০১৮ সালে জানায়, মেয়েটির নাম ফৌজিয়া। তার বয়স আট বছর। ইউনিসেফের একজন ফটোগ্রাফার ২০০৫ সালের ১৫ জুন এই ছবিটি তুলেছিলেন। ইউনিসেফের সাথে যোগাযোগ করে বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে স্নোপস।

দ্বিতীয় ছবির বিষয়ে অনুসন্ধানে সৌদি আরব ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম Arab News এর ওয়েবসাইটে ২০১৩ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি “Paris women finally allowed to wear trousers” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনের সংযুক্ত ছবিতে ডান পাশের আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Arab News

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এই নারীর নাম নাজাত ভাল্লাউদ-বেলকাসেম। 

তিনি ২০১৪ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ফ্রান্সের শিক্ষামন্ত্রীর পদে ছিলেন।

বেলকাসেমের নিজস্ব ওয়েবসাইট এবং আমেরিকান ম্যাগাজিন Vanity Fair এর ওয়েবসাইটে তার ছোটবেলার কিছু ছবি পাওয়া যাচ্ছে। এসব ছবির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবির কোনো মিল খুঁজে পাওয়া যায়নি।


Image Comparison: Rumor Scanner

নাজাত ভাল্লাউদ-বেলকাসেম ১৯৭৭ সালে মরক্কোতে জন্মগ্রহণ করেন এবং চার বছর বয়সে পিতা-মাতার সাথে তিনি সাথে ফ্রান্সে চলে আসেন। যেহেতু তার ছোটবেলার দাবিতে প্রচারিত ছবিটি ২০০৫ সালে তোলা, সেহেতু ১৯৭৭ সালে জন্ম নেওয়া বেলকাসেমের ছোটবেলার ছবি হওয়া সম্ভব নয় এটি। 

তবে Franceinfo নামে ফ্রান্সের একটি গণমাধ্যমে ২০১৩ সালের ৩০ নভেম্বর প্রকাশিত নাজাত ভাল্লাউদ-বেলকাসেমের একটি সাক্ষাৎকার থেকে জানা যাচ্ছে, তিনি ছোটবেলায় ছাগল ছড়িয়েছেন।

মূলত, ফ্রান্সের সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নাজাত ভাল্লাউদ-বেলকাসেমের জন্মস্থান মরক্কোতে থাকাকালীন তিনি নিজেদের ছাগল চড়াতেন। তবে সম্প্রতি মরক্কোর একটি ভিন্ন শিশুর ছবির সাথে নাজাত ভাল্লাউদ-বেলকাসেমের ছবি কোলাজ করে বেলকাসেমের ছোটবেলার ছবি দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

সুতরাং, ফ্রান্সের সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নাজাত ভাল্লাউদ-বেলকাসেমের ছবির সাথে ভিন্ন এক শিশুর ছবি কোলাজ করে তার ছোটবেলার ছবি দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

‘২য় বিয়ে না করলে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে’ শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত সংবাদ প্রতিবেদনের ছবিটি এডিটেড

0

সম্প্রতি, ‘২য় বিয়ে না করলে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে’ শীর্ষক শিরোনামে সংবাদপত্রে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হয়ে আসছে।

সম্প্রতি উক্ত পেপার কাটিং ব্যবহার করে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

একই দাবিতে ২০২৩ সালে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

২০২২ সালে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ‘২য় বিয়ে না করলে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে’ শীর্ষক শিরোনামে সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদনের ছবিটি সত্য নয় বরং, ‘বিয়ে না করলে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে’ শীর্ষক শিরোনামে একটি সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদনের ছবি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে প্রতিবেদনটির শিরোনামের শুরুতে ‘২য়’ লেখাটি যুক্ত করে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত প্রতিবেদনটি পর্যালোচনা করে দেখে রিউমর স্ক্যানার টিম। এতে দেখা যায়, ‘ইনভেস্টিগেটিভ জার্নাল’ নামের একটি গবেষণা জার্নালে চীনা গবেষকদের প্রকাশিত একটি গবেষণার বরাতে উক্ত প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে। মূলত, ৩ হাজার গ্যাস্ট্রিক ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীদের উপর উক্ত গবেষণাটি চালান একদল চীনা গবেষক। 

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, ‘যারা অবিবাহিত বা যাদের জীবনসঙ্গী নেই, তাদের ক্ষেত্রে পাকস্থলীর ক্যানসারে মৃত্যু হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি। বিয়ে ক্যানসার রোগীদের দীর্ঘায়ু পেতে সাহায্য করতে পারে। গবেষণায় অংশগ্রহণকারী রোগীদের প্রত্যেকেই ছিলেন ক্যানসারের প্রাথমিক পর্যায়ে আক্রান্ত। চীনা বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, ৭২ শতাংশ বিবাহিত পুরুষ ও মহিলার গ্যাস্ট্রিক ক্যানসার ধরা পড়ার পর অবিবাহিতদের তুলনায় পাঁচ বছর বেশি বেঁচে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।’

প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়, ‘জীবনসঙ্গী পাশে থাকলে তিনি আপনার খেয়াল রাখতে পারেন। অসুখ হলে ওষুধ খাওয়ানো এবং অন্যান্য সেবা তার মাধ্যমে পাওয়া সম্ভব। ফলে রোগীর জন্য স্বাস্থ্যকর আচরণ মেনে চলা সহজ হয়। দীর্ঘায়ু হওয়ার জন্য এসব অভ্যাস জরুরি। আর শরীরে কোনো রকম সমস্যা হলে যারা অবিবাহিত বা একা থাকেন তারা ততটাও গুরুত্ব দেন না। আর তাতেই রোগে কাবু হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। যারা বিবাহিত তাদের ক্ষেত্রে রোগ আগেই ধরা পড়েছে। তাই চিকিৎসা পদ্ধতিও দ্রুত চালু করা সম্ভব হয়েছে। তাই বিবাহিতদের সুস্থতার হারও বেশি। বিবাহিতরা আর্থিক ও মানসিক দুই ক্ষেত্রেই রোগের সঙ্গে লড়াই করার বেশি সামর্থ্য রাখেন। যাদের স্বামী কিংবা স্ত্রী মারা গিয়েছেন, তাদের ক্ষেত্রে পাকস্থলীর ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুঝুঁকির হার অনেকটাই বেশি।’ তবে প্রতিবেদনটির কোথাও দ্বিতীয় বিয়ের বিষয়ে কোনো কিছু বলা হয়নি।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে Md Alamin নামের এক ব্যক্তির ফেসবুক আইডিতে ২০২২ সালের ১৯ আগস্ট নিউজ টি ছিল বিয়ে না করলে ক‍্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে সেখানে ইডিট করে দ্বিতীয় বিয়ে লেখার দরকার কি ছিল শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Facebook 

ছবিটি পর্যলোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত প্রতিবেদনের ছবিটির সাথে উক্ত প্রতিবেদনের ছবির  মিল রয়েছে। তবে উক্ত ছবির প্রতিবেদনের শিরোনমের স্থানে ‘২য় বিয়ে না করলে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে’ শীর্ষক লেখাটির পরিবর্তে ‘বিয়ে না করলে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে’ শীর্ষক লেখাটি দেখতে পাওয়া যায়।

Image Comparison by Rumor Scanner 

অর্থাৎ, ‘বিয়ে না করলে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে’ শীর্ষক শিরোনামের উক্ত প্রতিবেদনের ছবিটি সম্পাদনার মাধ্যমে আলোচিত ছবিটি তৈরি করা হয়েছে।

তবে উক্ত প্রতিবেদনটি কোন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল সেটি জানা না গেলেও কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে দৈনিক ইত্তেফাক-এর ওয়েবসাইটে ২০২২ সালের ২২ জুলাই বিয়ে করলে কী ক্যানসারের ঝুঁকি কমে শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

এর সাথে আলোচিত প্রতিবেদনটির শিরোনাম ব্যতিত বাকি অংশের মিল পাওয়া যায়। 

পরবর্তীতে উক্ত গবেষণায় গ্যাস্ট্রিক ক্যানসারের সঙ্গে বৈবাহিক অবস্থার সম্পর্ক নিয়ে কি আলোচনা করা হয়েছে তা জানতে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নাল (বিএমজে)- এর ওয়েবসাইটে গবেষণাটি নিয়ে প্রকাশিত আলোচনা খুঁজে পাওয়া যায়। 

বিএমজে সূত্রে জানা যায়, আলোচিত গবেষণাটি চীনের হেফেই শহরে অবস্থিত আনহুই মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত হাসপাতালের একদল গবেষক করেন। যেটি পিয়ার-রিভিউড মেডিকেল জার্নাল ‘দ্য জার্নাল অব ইনভেস্টিগেটিভ মেডিসিনে (জিআইএম)’ প্রকাশিত হয়।

গবেষণাটিতে বলা হয়, প্রাথমিক পর্যায়ে গ্যাস্ট্রিক ক্যানসারে আক্রান্ত ব্যক্তিদের দীর্ঘদিন বেঁচে থাকার ক্ষেত্রে অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে বৈবাহিক অবস্থারও প্রভাব আছে। এই ক্ষেত্রে বিবাহিতদের মধ্যে বেশিদিন বেঁচে থাকার ভালো সম্ভাবনা মিলেছে গবেষণায়।

তাই কোনো ব্যক্তির গ্যাস্ট্রিক ক্যানসার শনাক্ত হলে তার চিকিৎসা ও অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে বৈবাহিক বিষয় বিবেচনায় নিয়ে ওই ব্যক্তির বাঁচার মেয়াদ হিসাব করার পরামর্শ দিয়েছেন গবেষকরা৷ তবে ওই গবেষণার আগে গ্যাস্ট্রিক ক্যানসারের ক্ষেত্রে বৈবাহিক অবস্থাকে বিবেচনায় নেওয়া হতো না৷

এই গবেষণায় গবেষকরা খোঁজার চেষ্টা করেছেন, গ্যাস্ট্রিক ক্যানসারে আক্রান্ত ব্যক্তিদের দীর্ঘদিন বাঁচার ক্ষেত্রে তার বৈবাহিক অবস্থা কোনো প্রভাব ফেলে কিনা৷ ফলে তারা দেখতে পান, এটি একজন গ্যাস্ট্রিক ক্যানসারে আক্রান্তদের দীর্ঘায়ু লাভের সম্ভাবনাকে প্রভাবিত করে৷ কারণ, অবিবাহিতদের চেয়ে বিবাহিত ব্যক্তিরা তাদের সঙ্গীদের কাছ থেকে মানসিক সহযোগিতা ও প্রবল উৎসাহ পেয়ে থাকেন৷ পাশাপাশি তাদের আর্থিক সচ্ছলতাও বেশি থাকে৷

গবেষণায় দেখা যায়, গ্যাস্ট্রিক ক্যানসারের প্রাথমিক পর্যায়ে বিবাহিতদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা ৭২ শতাংশ এবং অবিবাহিতদের ক্ষেত্রে ৬০ শতাংশ।

এছাড়াও দেখা যায়, গবেষণাটিতে বিয়ে না করলে ক্যানসারের ঝুঁকি তৈরি হওয়ার ব্যাপারে কোনো তথ্য ছিল না। পাশাপাশি গবেষণাটিতে বিয়েকে প্রাথমিক পর্যায়ে ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীদের দীর্ঘায়ু লাভের কারণ হিসাবেও দেখানো হয়নি।

অর্থাৎ, দ্বিতীয় বিয়ে ক্যানসারের ঝুঁকি কমায় দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি সঠিক নয়।

মূলত, প্রাথমিক পর্যায়ের গ্যাস্ট্রিক ক্যানসারে আক্রান্ত ব্যক্তিদের দীর্ঘদিন বেঁচে থাকার সাথে অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে বৈবাহিক অবস্থারও প্রভাব রয়েছে কিনা সেটি জানতে চীনের আনহুই মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত হাসপাতালের একদল গবেষক একটি গবেষণা করেন। উক্ত গবেষণার বরাত দিয়ে ২০২২ সালে একাধিক দেশীয় গণমাধ্যম প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি, একটি গণমাধ্যমের প্রিন্ট সংস্করণে ‘২য় বিয়ে না করলে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের ছবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ‘২য় বিয়ে না করলে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে’ শীর্ষক শিরোনামে কোনো সংবাদ প্রকাশ করা হয়নি। প্রকৃতপক্ষে, ‘বিয়ে না করলে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে’ শীর্ষক শিরোনামে একটি সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদনের ছবি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তা সম্পাদনার মাধ্যমে প্রতিবেদনটির শিরোনামের শুরুতে ‘২য়’ লেখাটি যুক্ত করে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।

সুতরাং,‘২য় বিয়ে না করলে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে’ শীর্ষক শিরোনামে সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদনের ছবি দাবিতে প্রচারিত ছবিটি এডিটেড বা সম্পাদিত।

তথ্যসূত্র

আইপিএল খেলতে রিশাদকে শাহরুখের প্রস্তাব দেওয়া ও রিশাদের নাকচ করে দেওয়ার গুজব  

সম্প্রতি, “আমি আইপিএলে খেলবো না- শারুখকে না করলো রিশাদ! কলকাতার কোটি কোটি টাকার অফার ফিরিয়ে দিয়ে একি বললো রিশাদ” শীর্ষক শিরোনামে এবং থাম্বনেইলে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। 

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি টিকটকে প্রচারিত উক্ত দাবির ভিডিওটি দেখা হয়েছে ৩ লাখ ২৯ হাজার বারের উপরে। এছাড়াও ভিডিওটিতে ১৭ হাজারের উপরে পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়াও দেখানো হয়েছে। পাশাপাশি ভিডিওটি ২০৮ বার শেয়ার করা হয়েছে। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, বাংলাদেশি ক্রিকেটার রিশাদ হোসেনকে আইপিএলে নিজের দলে নেওয়ার জন্যে শাহরুখ খান কোনো প্রস্তাব দেননি এবং আইপিএল খেলবেন না বলে রিশাদও কোনো বক্তব্য দেননি বরং গত বিপিএল শুরুর আগে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে খেলবেন তা নিশ্চিত করে সমর্থন চেয়ে রিশাদের একটি ভিডিও বার্তার কিছু অংশের সাথে রিশাদ এবং শাহরুখ খানের কিছু ছবি যুক্ত করে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীনভাবে আলোচিত দাবির ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যালোচনা করে ভিডিওটির শুরুতে রিশাদ হোসেনকে বলতে শোনা যায়, আসসালামু আলাইকুম! আমি রিশাদ হোসেন রাইট হ্যান্ড, লেগ স্পিনার। আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন!

পরবর্তীতে শাহরুখ খান এবং রিশাদ হোসেনের কয়েকটি ছবি যুক্ত করে উপস্থাপককে মনগড়া কিছু কথা বলতে শোনা যায়।

পরবর্তীতে আলোচিত দাবিটির বিষয়ে অনুসন্ধান করে শাহরুখ খানের ফেসবুক পেজ ও তার দল কলকাতা নাইট রাইডার্স এর ফেসবুক পেজ এবং রিশাদ হোসেনের ফেসবুক পেজেও এ সংক্রান্ত কোনে তথ্য পাওয়া যায়নি। 

পাশাপাশি, জাতীয় এবং ভারতীয় গণমাধ্যমেও এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য মেলেনি।

আলোচিত ভিডিওতে থাকা রিশাদ হোসেনের বক্তব্যের বিষয়ে অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে রিশাদের ফেসবুক পেজে গত ২২ জানুয়ারি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের ফেসবুক পেজ ক্যাপশনে ম্যানশন করা একটি পোস্ট খুঁজে (আর্কাইভ) পাওয়া যায়। 

উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওতে থাকা রিশাদ হোসেনের বক্তব্যের মিল রয়েছে। 

Video Comparison: Rumor Scanner 

উক্ত ভিডিওতে রিশাদ হোসেনকে বলতে শোনা যায়, আসসালামু আলাইকুম! আসসালামু আলাইকুম! আমি রিশাদ হোসেন রাইট হ্যান্ড, লেগ স্পিনার। এবারের বিপিএলে আমি কুমিল্লার হয়ে মাঠে নামবো ইনশাআল্লাহ! আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন। আমরা যেন ট্রফিটা ধরে রাখতে পারি৷ কুমিল্লার ফ্যানদের জন্য অগ্রীম শুভেচ্ছা এবং আমাদেরকে সবাই সাপোর্ট করবেন। আমরা যেন কুমিল্লার হয়ে চ্যাম্পিয়ন হতে পারি আবারও। উইন অর উইন!

অর্থাৎ, বক্তব্যটি চলমান আইপিএল কেন্দ্রিক নয়। 

মূলত, গত ১৮ মার্চ চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে আয়োজিত হয় বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচ। উক্ত ম্যাচে ৫৮ বল হাতে রেখে ৪ উইকেটে জয়ের মাধ্যমে ২-১ ব্যবধানে সিরিজে জয় লাভ করে বাংলাদেশ। ম্যাচটিতে রিশাদ হোসেন মাত্র ১৮ বলে পাঁচটি চার এবং চারটি ছয় হাঁকিয়ে মোট ৪৮ রান করেন। দুর্দান্ত এই পারফরমেন্সে ইন্টারনেট দুনিয়ায় প্রশংসার জোয়ারে ভাসছেন তিনি। এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি, তার পারফরমেন্স দেখে শাহরুখ খান তাকে আইপিএলে নিজের দল কলকাতা নাইট রাইডার্সে নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন এবং সেই প্রস্তাব রিশাদ হোসেন নাকচ করে দিয়েছেন- শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত দাবিটি সত্য নয়। প্রকৃতপক্ষে, গত বিপিএল আসরের আগে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে খেলবেন জানিয়ে সমর্থকদের সমর্থন চেয়ে ফেসবুকে একটি ভিডিও বার্তা পোস্ট করেন রিশাদ। উক্ত ভিডিওর কিছু অংশের সাথে শাহরুখ খান এবং রিশাদের কিছু ছবি যুক্ত করে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীনভাবে আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে। 

সুতরাং, বাংলাদেশি ক্রিকেটার রিশাদ হোসেনকে আইপিএলে নিজের দলে নেওয়ার জন্যে শাহরুখ খানের প্রস্তাব এবং তা নাকচ করে দিয়েছেন রিশাদ হোসেন- শীর্ষক দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

আইপিএলে মুস্তাফিজের বোলিং দেখে মুগ্ধ হয়েছেন শীর্ষক মন্তব্য করেননি প্রীতি জিনতা 

গত ২২ মার্চ চলতি আইপিএলের উদ্বোধনী ম্যাচে চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর বিপক্ষে ৪ উইকেট নিয়ে দলের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন বাংলাদেশি পেসার মুস্তাফিজুর রহমান। উক্ত ম্যাচে তিনি ম্যাচ সেরা হন। পরদিন ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম ইউটিউবে একটি ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে, পাঞ্জাব কিংসের মালিক প্রীতি জিনতা মুস্তাফিজুর রহমানের খেলা প্রসঙ্গে “মুস্তাফিজের বোলিং দেখে আমি সত্যি মুগ্ধ, মুস্তাফিজকে পাঞ্জাবে চাই” শীর্ষক মন্তব্য করেছেন। 

উক্ত দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রীতি জিনতা মুস্তাফিজুরকে নিয়ে আইপিএলের উদ্বোধনী ম্যাচ প্রসঙ্গে কোনো মন্তব্য করেননি বরং ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে প্রীতির গত আইপিএলে তার দল পাঞ্জাব কিংসের একটি ম্যাচ পরবর্তী সময়ে তার দেওয়া সাক্ষাৎকারের একটি পুরোনো ভিডিওর সাথে চেন্নাইয়ের হয়ে খেলার সময়কার মুস্তাফিজুরের কিছু ছবি যুক্ত করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে উক্ত ভিডিওটিতে পাঞ্জাব কিংসের মালিক প্রীতি জিনতার একটি ভিডিও ক্লিপ এবং চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে খেলার সময়ে মুস্তাফিজুর রহমানের কিছু ছবি দেখা যায়।

ভিডিওটির সংবাদপাঠ অংশে দাবি করা হয়, আইপিএলে মুস্তাফিজের ভালো পারফরম্যান্স দেখে পাঞ্জাব কিংসের মালিক প্রীতি জিনতা মুস্তাফিজ প্রসঙ্গে বলেছেন, “মুস্তাফিজের বোলিং ফিগার ইনক্রেডিবল। সত্যি সে অবিশ্বাস্য বোলিং করেছে। পরের আসরে মুস্তাফিজকে পাঞ্জাবে রাখব…।” 

বিষয়টি যাচাইয়ে ভিডিওটি থেকে কিছু স্থিরচিত্র নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে ইন্ডিয়ার খেলাধুলা বিষয়ক চ্যানেল ‘Star Sports’ এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ২৩ এপ্রিল “IPL 2023। Preity Zinta’s take on Punjab’s thumping win over Mumbai” শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিওটির ১ মিনিট ১০ সেকেন্ড সময় থেকে ১ মিনিট ১৪ সেকেন্ড সময় পর্যন্ত অংশটুকুই আলোচিত ভিডিওতে যুক্ত করা হয়েছে। 

Video Comparison : Rumor Scanner 

উক্ত ভিডিওতে প্রীতি জিনতা ও হারভজন সিং আইপিএল ২০২৩ এর মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স বনাম পাঞ্জাব কিংস এর ম্যাচে প্রীতি জিনতার দল পাঞ্জাব কিংসের জয় পরবর্তী সময়ে ম্যাচ নিয়ে আলোচনা করেন। তবে পুরো ভিডিওর কোথাও তাকে মুস্তাফিজুর রহমানকে নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে দেখা যায়নি। 

পাশাপাশি, গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশি পেসার মুস্তাফিজুর রহমানকে নিয়ে আইপিএলের উক্ত ম্যাচ প্রসঙ্গে পাঞ্জাব কিংসের মালিক প্রীতি জিনতার কোনো মন্তব্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মূলত, গত ২২ মার্চ আইপিএলের ১৭ তম আসরের উদ্বোধনী ম্যাচে চেন্নাই সুপার কিংস রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুকে পরাজিত করে। উক্ত ম্যাচে চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর বিপক্ষে ৪ উইকেট নিয়ে দলের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে ম্যাচ সেরা হন বাংলাদেশি পেসার মুস্তাফিজুর রহমান। এরই প্রেক্ষিতে ২৩ মার্চ লইউটিউবে “মুস্তাফিজের বোলিং দেখে আমি সত্যি মুগ্ধ, মুস্তাফিজকে পাঞ্জাবে চাই, বোমা ফাটিয়ে একি বললেন প্রীতি জিনতা” শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়। তবে রিউমর স্ক্যানার টিম যাচাই করে দেখেছে যে, উক্ত দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে প্রীতি জিনতার গত আইপিএলে তার দল পাঞ্জাব কিংসের একটি ম্যাচ পরবর্তী সময়ে তার দেওয়া সাক্ষাৎকারের একটি পুরোনো ভিডিওর সাথে চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে খেলার সময়কার মুস্তাফিজুর রহমানের ম্যাচের কিছু ছবি যুক্ত করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে। তাছাড়া, প্রীতি জিনতা মুস্তাফিজুর রহমানকে নিয়ে উক্ত ম্যাচ প্রসঙ্গে কোনো মন্তব্য করেননি।

উল্লেখ্য, পূর্বেও মুস্তাফিজুর রহমানকে নিয়ে ইন্টারনেটে বিভিন্ন ভুয়া তথ্য প্রচারের প্রেক্ষিতে একাধিক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, পাঞ্জাব কিংসের মালিক প্রীতি জিনতা ‘মুস্তাফিজের বোলিং দেখে আমি সত্যিই মুগ্ধ, মুস্তাফিজকে পাঞ্জাবে চাই’ শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ইসরায়েলি এলজিবিটিকিউ সংস্থা থেকে ব্র্যাক, বিকাশ ও আড়ংয়ের পুরস্কার প্রাপ্তির ভুয়া দাবি ফেসবুকে

0

ইসরায়েলের এলজিবিটিকিউ অধিকারের জন্য কাজ করা অন্যতম প্রধান সংগঠন দ্য আগুদা থেকে বাংলাদেশের ব্র্যাক ব্যাংক এবং এর অধীনস্থ দুই প্রতিষ্ঠান, বিকাশ ও আড়ং ২০২৪ সালের ‘প্রাইড পাইওনিয়ার অ্যাওয়ার্ড’ (Pride Pioneer Award) পেয়েছে দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। 

এমন কিছু ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, দ্য আগুদার তরফ থেকে ব্র্যাক ব্যাংক, বিকাশ কিংবা আড়ং ২০২৪ সালের ‘প্রাইড পাইওনিয়ার অ্যাওয়ার্ড’ পায়নি বরং সংস্থাটির নামে তৈরি একটি ভুয়া পেজের বরাতে উক্ত দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে।

আলোচ্য দাবিতে ছড়িয়ে পড়া পোস্টগুলোতে অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্তি সংক্রান্ত একটি ফটোকার্ড প্রচার হতে দেখা যায়। আবার কিছু পোস্টে ‘האגודה הגלובלית The Aguda Global’ নামের একটি ফেসবুক পেজে করা পোস্টের স্ক্রিনশট প্রচার হতেও দেখা যায়।

উক্ত সূত্র অনুসরণ করে גלוֹבְּלִי The Aguda Global’ নামের ফেসবুক পেজের সন্ধান পায় রিউমর স্ক্যানার টিম এবং পেজটিতে গত ২৮ মার্চ রাতে প্রকাশিত আলোচ্য পোস্টটিও (আর্কাইভ) খুঁজে পায়। উক্ত পোস্টে জানানো হয়েছে, “ব্র্যাক ব্যাংক এবং এর অধীনস্থ দুই প্রতিষ্ঠান, বিকাশ ও আড়ং এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের জন্য সমন্বয় এবং সমান অধিকার নিশ্চিত করার অনন্য প্রচেষ্টার জন্য দ্য আগুদার পক্ষ থেকে ২০২৪ সালের ‘প্রাইড পাইওনিয়ার অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছে।”

Screenshot: Facebook.

তবে পেজটির ট্রান্সপারেন্সি সেকশন যাচাই করে দেখা যায়, এটি ২০২২ সালের ১০ সেপ্টেম্বর তারিখে ‘Update BD News’ নামে প্রথম তৈরি করা হয়েছিল। পরবর্তীতে গত ২৮ মার্চ পেজটির নাম পরিবর্তন করে ‘האגודה הגלובלית The Aguda Global’ করা হয়। 

Screenshot: Facebook. 

পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, পেজটিতে মূলত বাংলা ভাষায় পোস্ট করা হতো। কিন্তু নাম পরিবর্তনের পর পুরোনো ও ভিন্ন প্রসঙ্গের বাংলা ভাষার পোস্টগুলো এডিট করে হিব্রু ভাষায় পরিবর্তন করা হয়েছে।

Screenshot: Facebook. 

অনুসন্ধানের এই পর্যায়ে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে দ্য আগুদার ওয়েবসাইট খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ওয়েবসাইটে ব্র্যাক ব্যাংক এবং এর অধীনস্থ দুই প্রতিষ্ঠান বিকাশ ও আড়ংয়ের এমন কোনো পুরস্কার প্রাপ্তির বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

পাশাপাশি ওয়েবসাইটের সূত্রে সংস্থাটির ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত পেজেও এমন কোনো পুরস্কারের বিষয়ে কোনো পোস্ট পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, ‘האגודה הגלובלית The Aguda Global’ নামের ফেসবুক পেজটি ভুয়া।

Image Comparison: Rumor Scanner.

এছাড়া, বাংলাদেশি এবং ইসরায়েলি কোনো গণমাধ্যম কিংবা বিশ্বস্ত কোনো সূত্রেও এই তথ্যের সত্যতা পাওয়া যায়নি।

মূলত, গত ২৮ মার্চ রাতে ইসরায়েলের এলজিবিটিকিউ অধিকারের জন্য কাজ করা অন্যতম প্রধান সংগঠন দ্য আগুদার নামে তৈরি একটি ভুয়া পেজে বাংলাদেশের ব্র্যাক ব্যাংক এবং এর অধীনস্থ দুই প্রতিষ্ঠান, বিকাশ ও আড়ং ২০২৪ সালের ‘প্রাইড পাইওনিয়ার অ্যাওয়ার্ড’ (Pride Pioneer Award) পেয়েছে জানিয়ে একটি ফটোকার্ড পোস্ট করা হয়। পরবর্তীতে উক্ত ভুয়া পেজের বরাতে বাংলাদেশি উক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো এই অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

সুতরাং, ইসরায়েলি এলজিবিটিকিউ বিষয়ক সংস্থা দ্য আগুদার তরফ থেকে বাংলাদেশের ব্র্যাক ব্যাংক এবং এর অধীনস্থ দুই প্রতিষ্ঠান, বিকাশ ও আড়ং ২০২৪ সালের ‘প্রাইড পাইওনিয়ার অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছে দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

  • Rumor Scanner’s own analysis. 

ঢাবির রং উৎসবে বক্তব্য দিয়ে ভাইরাল শিক্ষার্থীকে গণধোলাইয়ের গুজব

0

গত ২৮ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের আয়োজনে রং উৎসবে অংশ নেয় শিক্ষার্থীরা। সেদিন জাতীয় দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যাকাউন্টগুলোতে এই আয়োজনের একটি ভিডিওতে থাকা এক শিক্ষার্থীর রোজার মধ্যে রং উৎসবের মতামত সম্বলিত বক্তব্য ভাইরাল হয়। এরমধ্যে গতকাল (৩০ মার্চ) বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের প্রবেশ ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালানোর অভিযোগে দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভের ঘটনা ঘটেছে। পরবর্তীতে রাতে রং উৎসবে অংশ নেওয়া আলোচিত সেই শিক্ষার্থী বুয়েটে গণধোলাইয়ের শিকার হয়েছেন দাবিতে তার রং উৎসবের সময়ের ছবি এবং তার আরেকটি ছবি দাবিতে ছেঁড়া জামায় রক্তাক্ত একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এসব পোস্টে দুই ছবিতে একই ব্যক্তি রয়েছে দাবি করে কোথাও তাকে নকিব আশরাফ, কোথাও বা ইশরাক বলে সম্বোধন করা হয়েছে।

ঢাবির রং

এ সংক্রান্ত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ঢাবির রং উৎসবে গণমাধ্যমে ALLAH will understand বলে ভাইরাল শিক্ষার্থী গণধোলাইয়ের শিকার হননি বরং নকিব আশরাফ নামে একজন ছাত্রনেতার ২০২৩ সালের ভিন্ন ঘটনার একটি ছবি ব্যবহার করে উক্ত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে ছড়িয়ে পড়া পোস্টগুলোতে থাকা নামের সূত্রে (নকিব আশরাফ) ফেসবুকে একই নামের একটি অ্যাকাউন্টে একটি পোস্ট খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার। জনাব নকিব এই বিষয়টিকে তার পোস্টে গুজব বলে আখ্যায়িত করেন। তার পোস্টের কমেন্টে তিনি আরও উল্লেখ করেন, ডান পাশের ছবিটা তার। গত বছর গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রচারণা চলাকালীন সময়ে সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের গাড়িতে হামলার সময়ে তিনি গাড়িতেই মেয়রের প্রটোকলে দাঁড়ানো ছিলেন। তখন হামলাকারীরা তার উপরও আক্রমণ করে। সে সময়ের ছবি এটি। 

Screenshot: Facebook 

আমরা এই তথ্যের সূত্রে ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারের একটি সংবাদ প্রতিবেদন থেকে জানতে পারি, সে বছরের ২০ মে টঙ্গী রেলগেট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এতে নকিব ছাড়াও আহত হন আরও তিনজন। 

পরবর্তীতে ফেসবুকে একইদিন (২০ মার্চ) প্রকাশিত একটি ভিডিও ফুটেজে আলোচিত দৃশ্যটির সন্ধান মেলে। এই পোস্টের ক্যাপশন থেকেও জানা যাচ্ছে, উক্ত ব্যক্তির নাম নকিব আশরাফ এবং তিনি সেসময় হামলার শিকার হয়েছিলেন। 

Screenshot: Facebook 

নকিব আশরাফ রাজধানীর নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী এবং ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে সক্রিয়।

রিউমর স্ক্যানার টিম নিশ্চিত হয়েছে যে নকিব আশরাফ এবং রং উৎসবের আলোচিত ব্যক্তি দুইজন ভিন্ন ভিন্ন ব্যক্তি। রং উৎসবের ভাইরাল ব্যক্তির নামও নকিব আশরাফ নয়। রিউমর স্ক্যানারের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি সানজানা জেবিন ছোঁয়ার সহায়তায় রং উৎসবের ভাইরাল ব্যক্তির পরিচয় নিশ্চিতে সমর্থ হই আমরা। ভাইরাল ব্যক্তি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের একজন শিক্ষার্থী। (নিরাপত্তাজনিত কারণে বিস্তারিত পরিচয় প্রকাশ করা হলো না)

দাবিটির সূত্রপাত কীভাবে?

গতকাল সন্ধ্যায় আহনাফ তাহমিদ অর্জন নামে এক ব্যক্তি নকিবের ছবির সাথে তুলনা করে আরেক ব্যক্তির ছবি পোস্ট করে লিখেন, “বুয়েটে বাটাম খেলো ইশরাক।” আমাদের যাচাইয়ে দেখা যায়, উক্ত ব্যক্তির নাম মোহাম্মদ ইশরাক। 

Comparison by Rumor Scanner

রিউমর স্ক্যানারের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে, ইশরাকের সাথে নকিবের চেহারার দৃশ্যমান মিল থাকায় দুটো ছবি জোড়া দিয়ে তুলনার চেষ্টা করা হয়েছে। এই পোস্টটিই পরবর্তীতে রং উৎসবের ব্যক্তিটিকে জড়িয়ে বিবর্তিত রূপ পেয়েছে। এই বিষয়টি ভাইরাল হওয়ার ক্ষেত্রে এখানেও চেহারার দৃশ্যমান মিল কাজ করেছে বলে মনে করছে রিউমর স্ক্যানার। 

মূলত, বুয়েটে শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের মধ্যে ছাত্রনেতা নকিব আশরাফের একটি ছবি প্রকাশ করে তাকে গতকাল গণধোলাই দেওয়া হয়েছে দাবি করা হলেও রিউমর স্ক্যানারের যাচাইয়ে দেখা যায়, ভাইরাল হওয়া ছবিটি ২০২৩ সালের ২০ মে টঙ্গীতে গাজীপুরের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীরের মা জায়েদা খাতুনের নির্বাচনী প্রচারণার সময়কার। তাছাড়া, রং উৎসবের ভাইরাল ভিডিওর শিক্ষার্থীও নকিব আশরাফ নন।

সুতরাং, ভিন্ন ব্যক্তির পুরোনো ছবি ব্যবহার করে ঢাবির রং উৎসবে বক্তব্য দিয়ে ভাইরাল শিক্ষার্থী গণধোলাইয়ের শিকার হয়েছেন শীর্ষক একটি দাবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

স্বর্ণালংকারে আবৃত টয়েলেট টিস্যুর এই ছবিগুলো এআই দিয়ে তৈরি

0

সম্প্রতি, “বড়লোক্স নায়কদের ব্যবহৃত সোনায় মোড়ানো টিস্যু” শীর্ষক শিরোনামে স্বর্ণালংকারে আবৃত টয়েলেট টিস্যুর একাধিক ছবি বাস্তব দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ছবিগুলো দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, স্বর্ণালংকারে আবৃত টয়েলেট টিস্যুর ছবিগুলো বাস্তব নয় বরং ছবিগুলো আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে Sara Shakeel নামক একজন ব্যক্তির ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে গত ১৯ মার্চ করা একটি পোস্ট (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত পোস্টের সাথে আলোচিত ছবি গুলোর সাদৃশ্য খুঁজে পাওয়া যায়।

Image Comparison: Rumor Scanner

এই পোস্ট থেকে জানা যায়, পোস্টকারি এই ছবিগুলো আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে তৈরি করেছেন।

পরবর্তীতে উক্ত ইনসটাগ্রাম অ্যাকাউন্টটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দ্বারা তৈরি আরও বহু ডিজিটাল আর্টওয়ার্কের সন্ধান পায়।

Screenshot: Instagram

যা থেকে স্পষ্টতই প্রতীয়মান হয় যে, এই ব্যক্তি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে ডিজিটাল আর্টওয়ার্ক তৈরি করে থাকেন।

মূলত, Sara Shakeel নামের একজন শিল্পী কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই ব্যবহার করে স্বর্ণালংকারে আবৃত টয়েলেট টিস্যুর কিছু ছবি তৈরি করেন। উক্ত ছবিগুলোকেই বাস্তব ছবি দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, পূর্বেও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দ্বারা তৈরি বিভিন্ন ছবিকে বাস্তব দাবিতে প্রচার করা হলে সেগুলো শনাক্ত বিষয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার টিম।

সুতরাং, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই ব্যবহার করে তৈরিকৃত স্বর্ণালংকারে আবৃত টয়েলেট টিস্যুর কিছু ছবি বাস্তব দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

খুনের আসামী হয়ে ৭ বছর বয়সী শিশুর জেলে যাওয়ার ভুয়া তথ্য প্রচার

অন্তত ২০২৩ সাল থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পুলিশের পোশাক পরিহিত এক নারীর সাথে এক শিশুর ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, শিশুটির বয়স ৭ বছর এবং সে খুনের আসামী হয়ে জেলে আছে।

৭ বছর

উক্ত দাবিতে চলতি বছরে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এবং এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত দাবিতে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ভিডিওটিতে দেখানো শিশুটি খুনের আসামী হয়ে জেলে থাকার দাবিটি সঠিক নয় বরং চটকদার শিরোনামে উক্ত ভিডিও প্রচার করা হলেও ভিডিওটি পর্যবেক্ষণে নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে, সে কোনো অপরাধ করেনি এবং তার জেলও হয়নি।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে উক্ত ভিডিওতে পুলিশের পোশাক পরিহিত এক নারীর সাথে এক শিশুকে দেখা যায়। শিশুটিকে ক্যামেরার পেছনে থাকা অপর এক ব্যক্তির (পুরুষ) বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিতে শোনা যায়।

কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে Dipa akter নামের একটি ফেসবুক পেজে সম্ভাব্য প্রথম পোস্ট হিসেবে ২০২৩ সালের ২২ ডিসেম্বর প্রকাশিত উক্ত ভিডিওটি (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়।

এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি ভিডিওটি প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ বার দেখা হয়েছে। ভিডিওটিতে প্রায় ৩ লাখ ২১ হাজার পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। ভিডিওটি শেয়ার করা হয়েছে প্রায় সাড়ে ৮ হাজার বার। ভিডিওটির মন্তব্যঘর ঘুরে অধিকাংশ নেটিজেনকে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে দেখা যায়।

Screenshot: Facebook

ভিডিওটি পর্যবেক্ষণে ক্যামেরার পেছনে থাকা ব্যক্তির (পুরুষ) সাথে শিশুটির কথোপকথনে তাকে অপরাধী বলে মনে হয় এমন কোনো শব্দ বলতে শোনা যায়নি। শিশুটি জানায়, তার নাম রায়হান শেখ। বাড়ি টুঙ্গিপাড়া। পড়াশোনা করে প্লে’তে। 

সেখানে কথোপকথনের এক পর্যায়ে ক্যামেরার আড়ালে থাকা ব্যক্তি শিশুটিকে জিজ্ঞেস করেন, শিশুটি বড় হয়ে কী হতে চায়। জবাবে শিশুটি বলে, সে পুলিশ হতে চায়। তার পুলিশ ভালো লাগে। এরপর ওই ব্যক্তি তাকে পুলিশকে ভয় লাগে কিনা জিজ্ঞেস করলে শিশুটি না সূচক উত্তর দেয়। এরপর ক্যামেরার আড়ালে থাকা ব্যক্তি তাকে বলেন, “তোমার তো ভয় (পুলিশের অস্ত্র) পাওয়ার কিছু নাই। তুমি তো অপরাধ করো নাই। ভয় পাবে অপরাধীরা। তোমরা ভালোবাসবা পুলিশকে।” এরপরের কথোপকথন থেকে জানা যায়, শিশুটি সেখানে তার নানাবাড়ি বেড়াতে এসেছে।

অর্থাৎ, শিশুটি যে অপরাধী নয় তা তাদের কথোপকথনের মাধ্যমেই স্পষ্ট। 

তাছাড়া, পেজটির ট্র‍ান্সপারেন্সি সেকশনে গিয়ে দেখা যায়, ২০২৩ সালের ১৬ ডিসেম্বর পেজটি খোলা হয়েছে। এর ছয় দিন পর উক্ত ভিডিওটি আপলোড করা হয়।

Screenshot: Facebook

অর্থাৎ, উক্ত পেজ থেকে আলোচিত শিশুর ভিডিওটি চটকদার শিরোনামে আপলোড করা হয়; যা পরবর্তীতে কপি-পেস্ট হয়ে আসল দাবিতে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।

তাছাড়া, গণমাধ্যম বা অন্য কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে সাত বছর বা তার কাছাকাছি বয়সের কোনো শিশু খুনের আসামী হয়ে জেলে যাওয়ার বিষয়ে কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। 

এছাড়াও, বাংলাদেশের বিদ্যমান শিশু আইন (২০১৩) অনুযায়ী ৭ বছর বয়সী কোনো শিশুকে কোনো অবস্থাতেই গ্রেফতার করার নিয়ম নেই।

Screenshot: Laws of Bangladesh

তাছাড়া, ২০১৩ সালের শিশু আইনের ৪ নং ধারা অনুসারে, ১৮ বছর পর্যন্ত সবাই শিশু হিসেবে গণ্য হবে। ৩৩ (১) ধারামতে, অন্য কোনো আইনে যা কিছুই থাকুক না কেন, কোনো শিশুকে মৃত্যুদণ্ড, যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা কারাদণ্ড দেওয়া যাবে না। আর ৩৪ (১) ধারা অনুযায়ী, কোনো শিশু মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় কোনো অপরাধে দোষী প্রমাণিত হলে শিশু আদালত তাকে অনূর্ধ্ব ১০ বছর এবং অন্যূন তিন বছর মেয়াদে আটকাদেশ দিয়ে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে আটক রাখার আদেশ দিতে পারবেন।

অর্থাৎ, উপরোক্ত তথ্য উপাত্ত থেকে এটা স্পষ্ট যে, আলোচিত ভিডিওটিতে প্রচারিত তথ্যটি সঠিক নয়।

মূলত, অন্তত ২০২৩ সাল থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পুলিশের পোশাক পরিহিত এক নারীর সাথে এক শিশুর ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, শিশুটির বয়স ৭ বছর এবং সে খুনের আসামী হয়ে জেলে আছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, চটকদার শিরোনাম ব্যবহার করে উক্ত ভিডিও প্রচার করা হলেও ভিডিওটি পর্যবেক্ষণে নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে, শিশুটি কোনো অপরাধ করেনি বা জেলও হয়নি। বাংলাদেশে বিদ্যমান শিশু আইন (২০২৩) অনুযায়ী, ৭ বছর বয়সী কোনো শিশুকে গ্রেফতার বা জেলে দেওয়ার বিধান নেই। শিশুটি অপরাধী হিসেবে গণ্য হলেও তাকে জেলে না পাঠিয়ে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে আটক রাখা হতো।

সুতরাং, ৭ বছর বয়সী শিশুটি খুনের আসামী হয়ে জেলে আছে দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র