Home Blog Page 383

মুস্তাফিজকে নিয়ে ডেভিড ওয়ার্নারের নামে ভুয়া মন্তব্য প্রচার

গত ২২ মার্চ চলতি আইপিএলের উদ্বোধনী ম্যাচে চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর বিপক্ষে ৪ উইকেট নিয়ে দলের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন বাংলাদেশি পেসার মুস্তাফিজুর রহমান। উক্ত ম্যাচে তিনি ম্যাচ সেরা হন। এরই প্রেক্ষিতে গত ২৩ মার্চ ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম ইউটিউব ও শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটকে একটি ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার ডেভিড ওয়ার্নার লাইভে এসে মুস্তাফিজুর রহমানের খেলা প্রসঙ্গে ‘বাংলাদেশি বলে দাম দেয় না, এখন দেবে’ শীর্ষক মন্তব্য করেছেন।

উক্ত দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত দাবিতে টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি এ বিষয়ে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওটি প্রায় ৪৬ হাজার বার দেখা হয়েছে। ভিডিওটিতে ১ হাজারের অধিক পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার ডেভিড ওয়ার্নার বাংলাদেশি পেসার মুস্তাফিজুর রহমানকে নিয়ে আইপিএলের উদ্বোধনী ম্যাচ প্রসঙ্গে কোনো মন্তব্য করেননি বরং ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে ডেভিড ওয়ার্নারের ভিন্ন প্রেক্ষাপটের একটি পুরোনো ভিডিওর সাথে চেন্নাই সুপার কিংস বনাম রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর ম্যাচের কিছু ছবি যুক্ত করে তাতে উক্ত দাবি সম্বলিত টেক্সট (টিকটক) ও থাম্বনেইল (ইউটিউব) বসিয়ে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। উক্ত ভিডিওটিতে অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার ডেভিড ওয়ার্নারের একটি ভিডিও ক্লিপ এবং চেন্নাই সুপার কিংস বনাম রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর ম্যাচের কিছু ছবি দেখা যায়।

ভিডিওটি’র সংবাদপাঠ অংশে দাবি করা হয়, আইপিএলে মুস্তাফিজের ভালো পারফরম্যান্স দেখে লাইভে এসে অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার ডেভিড ওয়ার্নার তাকে নিয়ে কথা বলেছেন। ডেভিড ওয়ার্নার লাইভে এসে বলেন, “বাংলাদেশি বলে দাম দেয় না। এখন দাম ঠিকই দিবে। সাবাস মুস্তাফিজ, সাবাস। তোমার বোলিং দেখে আমার খুব ভালো লেগেছে। তুমি দুর্দান্ত বোলিং করেছো। তুমি এ ম্যাচে জয়ের আসলেই রিয়েল নায়ক।”

বিষয়টি যাচাইয়ে ভিডিওটি থেকে কিছু স্থিরচিত্র নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে BTX Racing নামের একটি ইন্সটাগ্রাম হ্যান্ডেলে ২০২২ সালের ২২ অক্টোবর ডেভিড ওয়ার্নারের ভেরিফাইড ইন্সটাগ্রামে ট্যাগ করে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

ভিডিওটিতে অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার ডেভিড ওয়ার্নারকে BTX Racing নামের প্রতিষ্ঠানটির পক্ষে বিজ্ঞাপনে অংশ নিতে দেখা যায়। সেখানে তাকে বাংলাদেশি পেসার মুস্তাফিজুর রহমানের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে দেখা যায়নি।

এই ভিডিওটি’র একটি অংশের সাথে আলোচিত ভিডিওটি’র ডেভিড ওয়ার্নারের বক্তব্যের ক্লিপের সাথে হুবহু মিল পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor শ্চান্নের

অর্থাৎ, এই ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। এটি প্রায় দেড় বছর পূর্বের ভিডিও। এর আগে আলোচিত দাবির কোনো সম্পর্ক নেই।

পাশাপাশি, গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশি পেসার মুস্তাফিজুর রহমানকে নিয়ে আইপিএলের উক্ত ম্যাচ প্রসঙ্গে অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার ডেভিড ওয়ার্নারের কোনো মন্তব্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

অর্থাৎ, উপরোক্ত বিষয়গুলো পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার ডেভিড ওয়ার্নার বাংলাদেশি পেসার মুস্তাফিজুর রহমানকে নিয়ে উক্ত ম্যাচ প্রসঙ্গে কোনো মন্তব্য করেননি।

মূলত, গত ২২ মার্চ আইপিএলের ১৭ তম আসরের উদ্বোধনী ম্যাচে চেন্নাই সুপার কিংস রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুকে পরাজিত করে। উক্ত ম্যাচে চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর বিপক্ষে ৪ উইকেট নিয়ে দলের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে ম্যাচ সেরা হন বাংলাদেশি পেসার মুস্তাফিজুর রহমান। এরই প্রেক্ষিতে গত ২৩ মার্চ ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম ইউটিউব ও শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটকে একটি ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার ডেভিড ওয়ার্নার লাইভে এসে মুস্তাফিজুর রহমানের খেলা প্রসঙ্গে ‘বাংলাদেশি বলে দাম দেয় না, এখন দেবে’ শীর্ষক মন্তব্য করেছেন। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে ডেভিড ওয়ার্নারের ভিন্ন প্রেক্ষাপটের একটি পুরোনো ভিডিওর সাথে চেন্নাই সুপার কিংস বনাম রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর ম্যাচের কিছু ছবি যুক্ত করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার ডেভিড ওয়ার্নার বাংলাদেশি পেসার মুস্তাফিজুর রহমানকে নিয়ে উক্ত ম্যাচ প্রসঙ্গে কোনো মন্তব্য করেননি।

প্রসঙ্গত, আইপিএলের ২০২২ ও ২০২৩ মৌসুমে দিল্লি ক্যাপিটালস’র হয়ে খেলেছিলেন মুস্তাফিজুর রহমান। সে সময় দলটিতে মুস্তাফিজের সতীর্থ ক্রিকেটার ছিলেন অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটার ডেভিড ওয়ার্নার। গত মৌসুমে দলটির নিয়মিত অধিনায়ক রিশভ পান্থের ইনজুরির কারণে তার পরিবর্তে ডেভিড ওয়ার্নার দলটির অধিনায়কত্ব করেছিলেন। 

উল্লেখ্য, পূর্বেও মুস্তাফিজুর রহমানকে নিয়ে ইন্টারনেটে বিভিন্ন ভুয়া তথ্য প্রচারের প্রেক্ষিতে একাধিক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার ডেভিড ওয়ার্নার ‘বাংলাদেশি বলে মুস্তাফিজকে দাম দেয় না, এখন ঠিকই দাম দিবে’ শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

লিটন দাসকে জড়িয়ে তামিম ইকবালের নামে ভুয়া মন্তব্য প্রচার

সম্প্রতি, এমন ওপেনার দরকার নাই আজও লিটন ০ রানে আউট! লাইভে এসে চরম ক্ষেপেছে তামিম এমন ওপেনার লাথি দিয়ে বের করো- শীর্ষক শিরোনামে এবং থাম্বনেইলে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। 

টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, লিটন দাসকে নিয়ে তামিম ইকবাল এমন কোনো মন্তব্য করেননি বরং ২০২০ সালে করোনাকালীয় সময়ে তামিমের ইউটিউব চ্যানেলে প্রচারিতম লিটন দাস, মমিনুল হক ও সৌম্য সরকারের সাথে করা তার একটি লাইভ ভিডিওর কিছু অংশ ব্যবহার করে আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায় তামিম ইকবাল বলছেন, লিটন, সৌম্য সরকার ওদেরও.. আজ ক্রিকেটিং…..আসলে ইনসাইটে যদি কিছু ইনফরমেশন দিতে পারি।

পরবর্তীতে, বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের বেশকিছু ছবি দিয়ে উপস্থাপককে মনগড়া কিছু কথা বলতে শোনা যায়। 

তবে ভিডিওতে তামিম ইকবালকে লিটন দাস সম্পর্কে নেতিবাচক বা আলোচিত দাবি সংক্রান্ত কোনো কথা বলতে শোনা যায়নি। 

এছাড়া, তামিম ইকবালের ফেসবুক পেজ, ইউটিউব চ্যানেল ও গণমাধ্যম কিংবা বিশ্বস্ত কোনো সূত্রেও আলোচিত দাবি সংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

এরপর আলোচিত ভিডিওটিতে থাকা তামিম ইকবালের বক্তব্যের বিষয়ে অনুসন্ধান করে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে তামিম ইকবালের ইউটিউব চ্যানেলে ২০২০ সালের ১৬ মে “#T128 Tamim Iqbal Live with Mominul, Soumya and Liton” শীর্ষক ক্যাপশনে প্রকাশিত একটি লাইভ ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। (আর্কাইভ

১ ঘন্টা ২৮ মিনিট ২২ সেকেন্ডের লাইভ ভিডিওটির প্রথম ৫৫ সেকেন্ডে দেওয়া তামিম ইকবালের বক্তব্যের সাথে আলোচিত ভিডিওটিতে থাকা তামিম ইকবালের বক্তব্যের হুবহু মিল রয়েছে।

Video Comparison: Rumor Scanner 

উক্ত লাইভ ভিডিওতে তামিম ইকবাল মুমিনুল, লিটন দাস এবং সৌম্য সরকারকে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন। তবে এই লাইভে লিটন দাসকে নিয়ে তামিম ইকবাল নেতিবাচক কোনো মন্তব্য করেননি।

মূলত, করোনাকালীন সময়ে ক্রিকেটার তামিম ইকবাল তার ইউটিউব চ্যানেলে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ক্রিকেটারদের নিয়ে লাইভে এসে নানা বিষয়ে আড্ডা দিতেন। এরই প্রেক্ষিতে তিনি বাংলাদেশের ক্রিকেটার মুমিনুল হক, সৌম্য সরকার এবং লিটন দাসকে নিয়েও তার ইউটিউব চ্যানেলে একটি লাইভ করেন। সম্প্রতি, উক্ত লাইভ ভিডিওর কিছু অংশ ব্যবহার করে একটি ভিডিও তৈরি করে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। প্রচারিত ভিডিওটিতে দাবি করা হচ্ছে, এমন ওপেনার দরকার নাই আজও লিটন ০ রানে আউট! শীর্ষক মন্তব্যটি লিটন দাসকে উদ্দেশ্য করে তামিম ইকবাল করেছেন। 

সুতরাং, তামিম ইকবাল লিটন দাস উদ্দেশ্য করে “এমন ওপেনার দরকার নাই আজও লিটন ০ রানে আউট! “শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

সাকিব, মুশফিক ও তামিমের ভিডিও ব্যবহার করে সময় টিভি’র লোগো সম্বলিত জুয়ার ভুয়া বিজ্ঞাপন ফেসবুকে

0

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের একাধিক সেলিব্রেটির ছবি, ভিডিও এমনকি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি অডিও ব্যবহার করে জুয়া ও ক্যাসিনোর বিজ্ঞাপন ফেসবুকে প্রচার করার প্রমাণ পেয়েছে রিউমর স্ক্যানার। এরই ধারাবাহিকতায় অতি সম্প্রতি ফেসবুকে Fast Fortune নামে একটি পেজ থেকে Banger Casino নামে একটি অ্যাপের প্রচারণা নজরে এসেছে আমাদের। উক্ত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশের মূলধারার ইলেকট্রনিক সংবাদমাধ্যম সময় টেলিভিশনের লোগো যুক্ত করে প্রচারিত এই ভিডিওতে একজন উপস্থাপিকাকে সংবাদ পাঠ করতে দেখা যায়। সময়ের লোগোর পাশে স্ক্রলে লেখা রয়েছে, “প্রখ্যাত বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের ক্যাপ্টেন শাহীব আল হাসান তার অ্যাপটি উন্মুক্ত করেছেন।” সংবাদ পাঠিকাকে এ সংক্রান্ত তথ্যই দিতে দেখা যায়। তিনি যখন সংবাদ পাঠ করছিলেন তখন তার পাশে একটি স্ক্রিনে ফেসবুকের একটি নিউজফিড স্ক্রল করা হচ্ছিল। এতে বাংলাদেশের ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিমের ফেসবুক পেজের পোস্ট এবং সাকিবের একটি ভিডিও ফুটেজ দেখানো হয়েছে। এই সব ফুটেজে অ্যাপটির প্রচারণা চালাতে দেখা গেছে এই ব্যক্তিদের। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সাকিব, মুশফিক ও তামিম Banger Casino নামে কোনো অ্যাপের প্রচারণায় অংশ নেননি বরং তাদের পুরোনো ও ভিন্ন কোম্পানির বিজ্ঞাপনের ফুটেজ, এআই দিয়ে তৈরি অডিও, সময় টিভির লোগো এবং ভারতের একটি সংবাদমাধ্যমের সংবাদ পাঠিকার ভিন্ন সংবাদের ভিডিও ব্যবহার করে উক্ত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওতে থাকা সংবাদ পাঠিকার ফুটেজের কিছু অংশ রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ভারতের সংবাদমাধ্যম জি নিউজের একটি সংবাদের সংবাদ পাঠিকার ফুটেজের সাথে সাদৃশ্য খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot comparison: Rumor Scanner 

গত ০৬ মার্চের এই সংবাদে অবশ্য উক্ত পাঠিকাকে আলোচিত ক্যাসিনো বা বাংলাদেশের কোনো ক্রিকেটারের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে দেখা যায়নি। অন্যদিকে, ভিডিওটির স্ক্রলে সময় টিভির লোগো ব্যবহার করা হলেও সময়ের কোনো প্লাটফর্মেই এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য মেলেনি।

ভিডিওর ৬ষ্ঠ সেকেন্ডে সাকিবের, ১৬ তম সেকেন্ডে তামিমের, ৩০ তম সেকেন্ডে মুশফিকের একটি পোস্টে দেখানো হয়, যাতে অ্যাপটির প্রচারণার বিষয়টি উঠে এসেছে। তবে এমন কোনো পোস্ট সাকিবের ফেসবুক পেজে প্রকাশিত হয়নি। তাছাড়া, তামিমের ২০২৩ সালের ট্যাপ ট্যাপ সেন্ড এর একটি বিজ্ঞাপনের ভিডিওর ফুটেজ এবং মুশফিকের ২০২১ সালের আইডিএলসি এর একটি বিজ্ঞাপনের ভিডিওর ফুটেজ ব্যবহার করে তাদের নামে ভুয়া ফেসবুক পোস্টের স্ক্রিনশট বানানো হয়েছে৷ 

এছাড়া, ৩৭তম সেকেন্ডে যে সাকিবের ভিডিওটি দেখানো হয়েছে তা খুঁজে পাওয়া যায় ২০২৩ সালে পুমার সাথে সাকিবের একটি বিজ্ঞাপনের ভিডিওতে। এই ভিডিওতে পুমার বিষয়ে সাকিবকে প্রচারণা চালাতে দেখা গেলেও আলোচিত দাবির বিষয়ে তাকে কোনো মন্তব্য করতে দেখা যায়নি। 

Screenshot comparison: Rumor Scanner 

মূলত, সম্প্রতি ফেসবুকে Fast Fortune নামে একটি পেজ থেকে Banger Casino নামে একটি অ্যাপের প্রচারণায় বাংলাদেশের ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম অংশ নিয়েছেন শীর্ষক দাবি সম্বলিত একটি ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, ভারতের একটি সংবাদমাধ্যমের সংবাদ পাঠিকার ভিডিও, ক্রিকেটারদের পুরোনো ও ভিন্ন কোম্পানির বিজ্ঞাপনের ফুটেজ এবং এআই দিয়ে তৈরি অডিও ও সময় টিভির লোগো ব্যবহার করে প্রতারণার উদ্দেশ্যে ভুয়া এই দাবি প্রচার করা হয়েছে। 

সুতরাং, সাকিব, মুশফিক ও তামিমের ভিডিও ব্যবহার করে সময় টিভি’র লোগো সম্বলিত একটি ক্যাসিনোর বিজ্ঞাপনে ক্রিকেটাররা অংশ নিয়েছেন শীর্ষক একটি দাবি ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে যা মিথ্যা এবং উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিওটি এডিটেড বা সম্পাদিত।

তথ্যসূত্র

“আমি চাইলে শেখ হাসিনা ১ মিনিট ক্ষমতায় থাকতে পারবে না” শীর্ষক মন্তব্য ড. ইউনূস করেননি

সম্প্রতি, “আমি চাইলে শেখ হাসিনা ১ মিনিট ক্ষমতায় থাকতে পারবে না, বললেন ড. ইউনুস” শীর্ষক শিরোনামে জার্মান ভিত্তিক গণমাধ্যম ডয়েচে ভেলে এর টকশো বিষয়ক অনুষ্ঠান DW খালেদ মুহিউদ্দীন জানতে চায় এর একটি পর্বের খণ্ডিত ছোট ফুটেজ ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

টিকটকে উক্ত দাবিতে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি এই দুই পোস্ট মিলে প্রায় ১ লাখ ৭ হাজার বার দেখা হয়েছে। পোস্টগুলোতে প্রায় ২ হাজার দুইশত শত হাজার পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে এবং শেয়ার করা হয়েছে ৫১ বার।

ফেসবুকে প্রাচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে “আমি চাইলে শেখ হাসিনা ১ মিনিট ক্ষমতায় থাকতে পারবে না” শীর্ষক মন্তব্য করেননি বরং কোনো প্রকার গ্রহণযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই তার ভিন্ন ঘটনার একটি ভিডিও ফুটেজ ব্যবহার করে আলোচিত দাবিটি নামে প্রচার করা হয়েছে।

দাবিটি নিয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ভিডিওটিতে ডয়েচে ভেলে বাংলা বিভাগের প্রধান খালেদ মুহিউদ্দীন এবং অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের একটি সাক্ষাৎকারের একটি অংশ দেখানো হয়। উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ডয়েচে ভেলের ‘DW খালেদ মুহিউদ্দীন জানতে চায়’ নামক ইউটিউব চ্যানেলে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি “মুখোমুখি প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত মূল ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিওটির ৫ মিনিট ৫৩ সেকেন্ড থেকে ৬ মিনিট ৫৩ সেকেন্ড পর্যন্ত আলোচিত ভিডিওটিতে যুক্ত করা হয়েছে। 

Screenshot: Youtube

ভিডিওটি থেকে জানা যায়, এটি ইউনূসের নেওয়া একটি সাক্ষাৎকারের ভিডিও।

ভিডিওটির ৫ মিনিট ৫০ সেকেন্ডে খালেদ মুহিউদ্দীন ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রশ্ন করেন, “বর্তমান সরকার আরও স্পেসিফিক ভাবে বললে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আপনাকে স্পষ্টতই অপছন্দ করেন। অনেককিছুর জন্য আপনাকে দায়ী করেন, পদ্মা সেতু এবং এই সেই। এর কারণ কি বলে আপনি মনে করেন? আপনাকে কি তিনি প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করেন নাকি সত্যিই তার কাছে এমন কিছু তথ্য রয়েছে যে আপনার বিশাল কোনো রাজনৈতিক অভিলাষ রয়েছে। আপনি কি রাজনৈতিক ভাবে তার প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছেন বলে তিনি আপনাকে অপছন্দ করছেন? কি কারণেআপনার কি মনে হয়?”

এই প্রশ্নের জবাবে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “আমার মনে হয় উনি মনে করেন যে আমি দেশের সর্বোচ্চ ডাকু, সন্ত্রাসী কিংবা অপরাধী, আমি সেরা চোর। এজাতীয় জিনিস মনে করেন। কাজেই সেগুলো ব্যাখ্যা করেন উনি মুখে। উনি বলেন যে আমি সুদখোর, আমি ঘুষখোর। এমন সব কটু শব্দ ব্যবহার করেন যাতে মনে হয় যে আমার সম্পর্কে তার ধারণা খুবই খারপ।”

তবে এমন সময়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের থেকে, “আমি চাইলে শেখ হাসিনা এক মিনিট ক্ষমতায় থাকতে পারবে না” শীর্ষক এমন কোনো মন্তব্য শোনা যায়নি। এমনকি পুরো সাক্ষাৎকারে তিনি এমন কোনো মন্তব্য করেননি।

এছাড়া, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ফেসবুক পেজ, দেশিয় কিংবা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে অনুসন্ধানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের এমন কোনো মন্তব্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মূলত, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ডয়েচে ভেলের বাংলা বিভাগের প্রধান খালেদ মুহিউদ্দীন সমসাময়িক বিষয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের একটি সাক্ষাৎকার নেন। যা ‘DW খালেদ মুহিউদ্দীন জানতে চায়’ নামক ইউটিউব চ্যানেলে সরাসরি সম্প্রচারিত হয়। সম্প্রতি, সেই সাক্ষাতকারের একটি দৃশ্য কাট করে ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে “আমি চাইলে শেখ হাসিনা এক মিনিট ক্ষমতায় থাকতে পারবে না” শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত দাবিটি সঠিক নয়। উক্ত সাক্ষাৎকারে ড. মুহাম্মদ ইউনূস এমন কোনো মন্তব্য করেননি।

সুতরাং, ড. মুহাম্মদ ইউনূস খালেদ মুহিউদ্দীনের সাক্ষাৎকারে “আমি চাইলে শেখ হাসিনা ১ মিনিট ক্ষমতায় থাকতে পারবে না” শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

হালনাগাদ/ Update

২৪ জুন, ২০২৪ : এই প্রতিবেদন প্রকাশ পরবর্তী সময়ে ফেসবুকেও একই দাবি সম্বলিত ভিডিও আমাদের নজরে আসার প্রেক্ষিতে উক্ত ভিডিওগুলোকে প্রতিবেদনে দাবি হিসেবে যুক্ত করা হলো।

রিশাদ হোসেনকে বিয়ে করতে চাই- এমন মন্তব্য নাফিসা কামাল করেননি

গত ১৮ মার্চ চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সিরিজ নিশ্চিতের লড়াইয়ে মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা। উক্ত ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ৪ উইকেটে হারিয়ে সিরিজ জেতে বাংলাদেশ। ম্যাচ জয়ে বিধ্বংসী ইনিংস খেলে অনবদ্য অবদান রাখেন বাংলাদেশি লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেন। তাঁর এই ইনিংস ঘিরে “রিশাদকে আমি বিয়ে করতে চাই রিশাদের ব্যাটিংয়ে মুগ্ধ হয়ে একি বললেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের মালকিন নাফিসা কামাল” শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে টিকটকে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

একই দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

উক্ত দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত একটি ভিডিও দেখা হয়েছে বার ২৬ হাজার বার। পাশাপাশি ভিডিওতে ৩৯৪ টি পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। 

ফাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) এর ফ্র্যাঞ্চাইজিদল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের মালিক নাফিসা কামাল ক্রিকেটার রিশাদ হোসেনকে বিয়ে করতে চান শীর্ষক কোনো মন্তব্য করেননি বরং ২০২৩ সালের ১৯ মার্চ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) চতুর্থবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে শেয়ার করা ভিডিওর একটি অংশকেই আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে ভিডিওতে প্রচারিত আলোচিত দাবি নিয়ে প্রাসঙ্গিক একাধিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করেও গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্য কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে উক্ত দাবির সত্যতা পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে আলোচিত দাবিতে যুক্ত নাফিসা কামালের ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে ২০২৩ সালের ১৯ মার্চ তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে “আগামীকাল ২০ মার্চ আপনাদের সবার দাওয়াত আমার পক্ষ থেকে।শিরোপা জয়ের উল্লাসে মেতে উঠি একসাথে।” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিওটির একটি অংশই আলোচিত দাবিতে যুক্ত করা হয়েছে। 

Video Comparison : Rumor Scanner 

ভিডিওতে নাফিসা কামাল চতুর্থবারের মতো শিরোপা জয় নিয়ে নিজের সন্তুষ্টির কথা জানিয়ে সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং কুমিল্লার লালমাই উপজেলার জামতলীতে অনুষ্ঠিত বিজয় উৎসবে সকলকে যোগ দেওয়ার অনুরোধ করেন। তবে এই ভিডিওর কোথাও তিনি রিশাদ হোসেনকে বিয়ের বিষয়ে কোনো কথা বলেননি। 

এছাড়া আলোচিত ভিডিওতে সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিকভাবে গত ৯ মার্চ ‘T Sports’ এর ইউটিউব চ্যানেলে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার মধ্যকার সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় টি টোয়েন্টি ম্যাচে রিশাদ হোসেনের পারফরম্যান্স নিয়ে “এক ওভারেই ৩ ছক্কা হাঁকালেন ইয়ং সেনশন রিশাদ হোসেন। T Sports” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও থেকে কিছু অংশ কাট করে যুক্ত করা হয়েছে। 

মূলত, ২০২৩ সালে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) নবম আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়ে শিরোপা লাভ করে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। শিরোপা জয়ী কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের মালিক নাফিসা কামাল ২০২৩ সালের ১৯ মার্চ নিজের ফেসবুক প্রোইাফলে একটি ভিডিও বার্তা শেয়ার দিয়ে সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান এবং কুমিল্লার লালমাই উপজেলার জামতলীতে অনুষ্ঠিত বিজয় উৎসবে সকলকে যোগ দেওয়ার অনুরোধ করেন। উক্ত ভিডিওর একটি অংশ ইন্টারনেটে প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে, তিনি রিশাদ হোসেনকে বিয়ে করার কথা বলেছেন। তবে রিউমর স্ক্যানার অনুসন্ধানে দেখেছে যে, আলোচিত দাবিটি সঠিক নয়। এছাড়া, গণমাধ্যম কিংবা অন্য কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রেও আলোচিত দাবির পক্ষে কোনো তথ্য বা সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

উল্লেখ্য, পূর্বেও নাফিসা কামাল বাংলাদেশি ক্রিকেটার তাওহীদ হৃদয়কে বিয়ে করার কথা বলেছেন দাবিতে ইন্টারনেটে একাধিক ভিডিও প্রচার করা হলে সেসময় বিষয়গুলো মিথ্যা হিসেবে শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। প্রতিবেদনগুলো দেখুন এখানে এবং এখানে। 

সুতরাং, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের মালিক নাফিসা কামাল ক্রিকেটার রিশাদ হোসেনকে বিয়ে করবেন বলেছেন দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

টিকটকের মাধ্যমে প্রায় নয় লাখ ভিউ পেয়েছে পূজা চেরির মৃত্যুর গুজব 

চিত্রনায়িকা পূজা চেরি মারা গেছেন দাবিতে একটি ভিডিও ঘুরছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। টিকটকে এটিএন নিউজের একটি ভিডিও প্রতিবেদন ব্যবহার করে উক্ত দাবিটি প্রচার হতে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার। 

পূজা চেরির মৃত্যু

টিকটকে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। এই ভিডিও এখন পর্যন্ত ৮ লাখ ৯১ হাজারের বেশিবার দেখা হয়েছে। প্রায় সাড়ে ১৬ হাজারের অধিক পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে এই ভিডিওতে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, চিত্রনায়িকা পূজা চেরি মারা যাননি বরং তার মায়ের মৃত্যুর খবরের ভিডিও প্রতিবেদনের অডিও এডিট করে উক্ত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে এটিএন নিউজের ইউটিউব চ্যানেলে গত ২৪ মার্চ প্রকাশিত এ সংক্রান্ত মূল ভিডিও প্রতিবেদনটি খুঁজে পাওয়া যায়। এই প্রতিবেদনে পূজা চেরির মায়ের মৃত্যুর খবরের বিষয়ে উপস্থাপককে বলতে শোনা যায়, “মারা গেছেন ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেত্রী পূজা চেরির মা।”

Screenshot comparison: Rumor Scanner 

টিকটকের ভিডিওতে উপস্থাপকের উচ্চারিত “মারা গেছেন ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেত্রী পূজা চেরির মা” এর স্থলে শেষের ‘মা’ শব্দটি কেটে দিয়ে প্রচার করে ভিডিওটিকে বাস্তব ভিত্তি দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। 

গণমাধ্যম সূত্রে জানা যাচ্ছে, বেশ কিছুদিন ধরে পূজা চেরির মা ঝর্ণা রায় অসুস্থ ছিলেন। ডায়াবেটিসসহ নানা রোগে ভুগছিলেন তিনি। কয়েকদিন আগে হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরেছিলেন। ২৪ মার্চ সকালে মারা যান তিনি। 

এদিকে গতকালও (২৭ মার্চ দুপুর) পূজা চেরিকে তার ব্যক্তিগত ফেসবুক প্রোফাইলে তার মাকে নিয়ে স্টোরি প্রকাশ করতে দেখা যায়। তার প্রোফাইল ঘুরে দেখা যায়, মাকে নিয়ে গত কয়েকদিনে একাধিক স্মৃতিচারণ করেছেন তিনি। 

Screenshot: Puja Cherry’s facebook story

মূলত, সম্প্রতি চিত্রনায়িকা পূজা চেরি মারা গেছেন দাবিতে টিকটকে এটিএন নিউজের একটি ভিডিও প্রতিবেদন ব্যবহার করে প্রচার করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, পূজা চেরি নয়, উক্ত প্রতিবেদনে পূজার মায়ের মৃত্যুর খবর জানানো হচ্ছিল। মূল ভিডিও প্রতিবেদনটির প্রাসঙ্গিক অডিও কেটে দিয়ে উক্ত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। 

সুতরাং, নায়িকা পূজা চেরি মারা গেছেন দাবিতে টিকটকে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

ধর্ষণে অভিযুক্তের পক্ষে উকিলের আইনি সহায়তা নিয়ে ডা. দীপু মনির নামে ভুয়া মন্তব্য প্রচার

0

বেশ কয়েকবছর ধরে “যে দেশে ধর্ষকের পক্ষে উকিল পাওয়া যায়, সে দেশ ধর্ষণ মুক্ত হবে কি করে?”- শীর্ষক একটি মন্তব্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ডা. দীপু মনির দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হয়ে আসছে।

সম্প্রতি ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

টিকটকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

২০২২ সালে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

২০২১ সালে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

২০২০ সালে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

২০১৯ সালে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্তের পক্ষে উকিলদের আইনি সহায়তা নিয়ে সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমন কোনো মন্তব্য করেননি বরং কোনো রকম তথ্যসূত্র ছাড়াই সম্পূর্ণ ভিত্তিহীনভাবে তার নামে উক্ত মন্তব্যটি প্রচার হয়ে আসছে।

ডা. দীপু মনি কি আসলেই এমন মন্তব্য করেছিলেন?

এই প্রশ্নের উত্তর জানতে অনুসন্ধানে মূলধারার গণমাধ্যম ও দীপু মনির ভেরিফাইড ফেসবুক আইডি পর্যবেক্ষণ করে আলোচিত দাবির সপক্ষে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

ফেসবুকে উক্তিটি প্রথম কখন পাওয়া যায়?

হুবহু না হলেও ২০১৭ সালের ৩১ মে মুস্তাফিজুর রহমান সাবায়েত নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে করা একটি পোস্ট খুঁজে (আর্কাইভ) পাওয়া যায়। 

পোস্টে তিনি লিখেন, “যে দেশে ধর্ষকের পক্ষে আইনজীবী পাওয়া যায়।”
বুঝতে হবে সে দেশ ‘বাজারী’ হয়ে গেছে। 
বুঝতে হবে এটা একটা চুতিয়া রাষ্ট্র।

Screenshot: Facebook

অনুসন্ধানে ফেসবুকে ম্যানুয়ালি সার্চের মাধ্যমে ২০১৯ সালের জুলাই মাসে হুবহু একই বক্তব্যটি দীপু মনির নামে প্রচার হতে দেখা যায়। 

 এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

Screenshot: Facebook 

সেসময় চাঁদপুরের স্থানীয় সাংবাদিক Rifat Kanti Sen এক ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে আলোচিত উক্তিটি দীপু মনির নয় জানিয়ে বলেন, “মাননীয় শিক্ষা মন্ত্রীর সাথে যোগাযোগ করে জেনেছি এই ধরণের কোন বক্তব্য তিনি প্রদান করেননি। শিক্ষা মন্ত্রীর নামে ভূয়া আইডি থেকে এসব তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। অনুগ্রহ পূর্বক এ ধরনের প্রচারণা থেকে বিরত থাকবেন।”

Screenshot: Facebook 

পরবর্তীতে একই বছর ডা. দীপু মনি ছাড়াও একই মন্তব্যটি বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তাহসিনা রুশদীর লুনার মন্তব্য দাবিতেও প্রচার হতে দেখে রিউমর স্ক্যানার টিম।

তাহসিনা রুশদীর লুনার মন্তব্য দাবিতে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

Screenshot: Facebook

তবে এই দাবি সপক্ষেও কোনো তথ্য প্রমাণ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

অর্থাৎ, সর্বপ্রথম আলোচিত মন্তব্যটি কে করেছেন সেই বিষয়ে নির্দিষ্ট কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া গেলেও এটি নিশ্চিত যে এটি দীপু মনির বক্তব্য নয়।

মূলত, সম্প্রতি সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ডা. দীপু মনির নামে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে “যে দেশে ধর্ষকের পক্ষে উকিল পাওয়া যায়, সে দেশ ধর্ষণ মুক্ত হবে কি করে?” শীর্ষক একটি মন্তব্য প্রচার করা হচ্ছে। এ নিয়ে অনুসন্ধানে দেখা যায়, অন্তত  প্রায় ৪ বছর আগে থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ডা. দীপু মনির নামে মন্তব্যটি প্রচার করা হলেও তিনি এই মন্তব্য কবে, কোথায় করেছেন তার কোনো সূত্র উল্লেখ নেই। ২০১৯ সালে আলোচিত মন্তব্যটি দীপু মনির নামে ছড়িয়ে পড়লে সেসময় চাঁদপুরের এক স্থানীয় সাংবাদিক দীপু মনির সাথে কথা বলে এই মন্তব্য নয় বলে এক ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে নিশ্চিত করেন। এছাড়া ২০১৯ সালে একই মন্তব্যটি বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তাহসিনা রুশদীর লুনার দাবিতেও প্রচার করা হয়েছিল। তবে এই দাবির পক্ষেও কোনো তথ্যপ্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি।

সুতরাং, যে দেশে ধর্ষকের পক্ষে উকিল পাওয়া যায়, সে দেশ ধর্ষণ মুক্ত হবে কি করে?- শীর্ষক মন্তব্য সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ডা. দীপু মনির দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

  • Dipu Moni- Facebook Page
  • Mustafizur Rahman Sabayat- Facebook Post 
  • Rifat Kanti Sen- Facebook Post 
  • Rumor Scanner’s Own Analysis 

ভারতের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি ম্যাচ জয় বাংলাদেশকে উৎসর্গ করেননি অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক 

গত বছরের (২০২৩) নভেম্বর-ডিসেম্বরে ভারতের মাটিতে ভারত বনাম অষ্ট্রেলিয়ার পাঁচ ম্যাচের একটি টি-টোয়েন্টি সিরিজ অনুষ্ঠিত হয়৷ ২৮ নভেম্বর সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে ভারতকে হারায় অজিরা। এই জয়ের পর সেদিন ইউটিউবের একটি ভিডিওতে দাবি করা হয়, অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক ম্যাথু ওয়েড ম্যাচশেষে তাদের এই জয় বাংলাদেশকে উৎসর্গ করেছে। 

ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এতে প্রথম ২ সেকেন্ড সময়ে ওয়েডের ম্যাচ পরবর্তী একটি সাক্ষাৎকারের অংশ রয়েছে যেখানে তাকে বাংলাদেশ শব্দটি উচ্চারণ করতে দেখা যায়। এরপর মাঠের কিছু স্থিরচিত্র দেখিয়ে তৃতীয় ম্যাচের পরিস্থিতি এবং ফলাফল নিয়ে আলোচনা করেন উপস্থাপক।

Bd Crics Pro নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। ভিডিওটি এখন অবধি প্রায় ৩৮ হাজার বার দেখা হয়েছে৷ 

টি-টোয়েন্টি

একই ভিডিও টিকটকে দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

গত ২৯ নভেম্বর প্রকাশিত এই ভিডিওটি টিকটকে এখন পর্যন্ত দেখা হয়েছে প্রায় ৯ লাখ ১৮ হাজারের অধিক বার। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভারতের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি ম্যাচ জয় বাংলাদেশকে উৎসর্গ করেননি অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক ম্যাথু ওয়েড বরং ওয়েডের সিরিজের ভিন্ন একটি ম্যাচ পরবর্তী সাক্ষাৎকারের ফুটেজ ব্যবহার করে ভুয়া এই দাবি প্রচার করা হয়েছে।  

২৮ নভেম্বরের ভারতের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার তৃতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচের তথ্যের সূত্র ধরে অনুসন্ধানের শুরুতে উক্ত ম্যাচ পরবর্তী সময়ে অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক ম্যাথু ওয়েডের বক্তব্যের লিখিত অংশ যাচাই করে ম্যাচটি বাংলাদেশকে উৎসর্গ করার বিষয়ে কোনো তথ্য মেলেনি।  

আমরা ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) ওয়েবসাইট থেকে ম্যাথু ওয়েডের বক্তব্যের ভিডিও ফুটেজ খুঁজে বের করেছি৷ আলোচিত ভিডিওর ফুটেজে ওয়েডের মাথায় ক্যাপ থাকলেও এই ফুটেজে মাথায় ক্যাপ দেখা যায়নি। 

Screenshot: BCCI

এ বিষয়ে আরো অনুসন্ধান করে বিসিসিআইয়ের ওয়েবসাইট থেকে ২৩ নভেম্বরের প্রথম ম্যাচ পরবর্তী সময়ের ফুটেজ খুঁজে বের করে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওর প্রথম ২ সেকেন্ড সময়ে ওয়েডের ম্যাচ পরবর্তী যে সাক্ষাৎকারের অংশ রয়েছে তা এই ভিডিও থেকে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু ভিডিওতে ওয়েডকে বাংলাদেশের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে শোনা যায়নি। 

Screenshot Comparison: Rumor Scanner

ম্যাথু ওয়েড বাংলাদেশকে নিয়ে কোনো মন্তব্য করলে স্বাভাবিকভাবেই তা গণমাধ্যমে প্রচারিত হতো। কিন্তু এমন কোনো তথ্য গণমাধ্যমেও আসেনি। 

মূলত, গত বছরের (২০২৩) নভেম্বর- ডিসেম্বরে ভারতের মাটিতে ভারত বনাম অষ্ট্রেলিয়ার পাঁচ ম্যাচের একটি টি-টোয়েন্টি সিরিজ তৃতীয় ম্যাচে ভারতকে হারায় অজিরা। এই জয়ের পর সেদিন ইউটিউবের একটি ভিডিওতে দাবি করা হয়, অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক ম্যাথু ওয়েড ম্যাচশেষে তাদের এই জয় বাংলাদেশকে উৎসর্গ করেছে। কিন্তু রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে উক্ত দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ মেলেনি। প্রকৃতপক্ষে, সিরিজের ১ম ম্যাচ পরবর্তী সময়ে ওয়েডের বক্তব্যের ফুটেজ ব্যবহার করে ভুয়া এই দাবি প্রচার করা হয়েছে।

সুতরাং, গত নভেম্বরে ভারতের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার তৃতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচ জয় দলটির অধিনায়ক বাংলাদেশকে উৎসর্গ করেছেন দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

বিরাট কোহলি রমজানে ইফতারের জন্য মসজিদে ১০ কোটি টাকা দান করেননি

ভারতীয় ক্রিকেটার বিরাট কোহলি ইফতারের জন্য মসজিদে ১০ কোটি টাকা দান করেছেন দাবিতে গত ১১ মার্চ একটি ভিডিও শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটকে প্রচার করা হয়েছে।

বিরাট কোহলি

উক্ত দাবিতে টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি ভিডিওটি প্রায় ২ লাখ ২০ হাজার বার দেখা হয়েছে। ভিডিওটিতে ২২ হাজারের অধিক পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। ভিডিওটি সাড়ে ৫ শতাধিক বার শেয়ার করা হয়েছে এবং ভিডিওটিতে প্রায় ২ শতাধিক মন্তব্য করা হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভারতীয় ক্রিকেটার বিরাট কোহলি রমজানে ইফতারের জন্য মসজিদে ১০ কোটি টাকা দান করেননি বরং প্রায় ৭ বছর পূর্বে বিরাট কোহলি অভিনীত একটি বাণিজ্যিক বিজ্ঞাপনের ভিডিওর সাথে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে ভিন্ন একটি গানের অডিও যুক্ত করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। উক্ত ভিডিওটিতে বিরাট কোহলিকে একটি কক্ষে কয়েকজনের সাথে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করতে দেখা যায়। তবে সেখানে কোনো দৃশ্যে তাকে কোনো অর্থ দান করতে দেখা যায়নি। তাছাড়া উক্ত কক্ষটি কোনো মসজিদের কক্ষের মত নয়।

বিষয়টি অধিকতর যাচাইয়ের লক্ষ্যে ভিডিওটি থেকে কিছু স্থিরচিত্র নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে পোশাক ও ফ্যাশন বিষয়ক ভারতীয় প্রতিষ্ঠান Manyavar এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০১৭ সালের ১০ মার্চ ‘Virat Kohli against boundaries’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এটি বিরাট কোহলি অভিনীত একটি বাণিজ্যিক বিজ্ঞাপন। মেনিয়েভার ব্যান্ডের পোশাকে উক্ত বিজ্ঞাপনে ধর্মীয় সম্প্রীতির বার্তা দেওয়া হয়েছে।

এই ভিডিওটি’র একটি অংশের সাথে আলোচিত ভিডিওটি’র হুবহু মিল পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner

পরবর্তীতে একই তারিখে Manyavar এর ভেরিফাইড ফেসবুক পেজেও একই শিরোনামে প্রকাশিত উক্ত ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook

অর্থাৎ, এই ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। এটি প্রায় ৭ বছর পূর্বের ভিডিও। এর সাথে আলোচিত দাবির কোনো সম্পর্ক নেই।

তাছাড়া, আলোচিত ভিডিওটিতে প্রচারিত অডিওতে ‘নূর-ই-রমজান’ শীর্ষক একটি গান বাজতে শোনা যায়। কি-ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম ইউটিউবে উক্ত গানটি খুঁজে পাওয়া যায়।

অর্থাৎ, উপরোক্ত বিজ্ঞাপনের ভিডিওর সাথে উক্ত গানের অডিও যুক্ত করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

এছাড়াও, ভারতীয় গণমাধ্যম, বিরাট কোহলি’র ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ, ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্ট, এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্ট কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে এখন পর্যন্ত বিরাট কোহলির পক্ষ থেকে রমজানে ইফতারের জন্য মসজিদে ১০ কোটি টাকা দানের বিষয়ে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

অর্থাৎ, উপরোক্ত বিষয়গুলো পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, বিরাট কোহলি ইফতারের জন্য মসজিদে ১০ কোটি টাকা দান করেননি।

মূলত, ভারতীয় ক্রিকেটার বিরাট কোহলি ইফতারের জন্য মসজিদে ১০ কোটি টাকা দান করেছেন দাবিতে একটি ভিডিও সাম্প্রতিক সময়ে শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটকে প্রচার করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে প্রায় ৭ বছর পূর্বে বিরাট কোহলি অভিনীত একটি বাণিজ্যিক বিজ্ঞাপনের ভিডিওর সাথে ভিন্ন একটি গানের অডিও যুক্ত করে তাতে উক্ত দাবি সম্বলিত টেক্সট বসিয়ে আলোচিত ভিডিওটি প্রচার করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, পূর্বেও বিরাট কোহলিকে নিয়ে ইন্টারনেটে বিভিন্ন ভুয়া তথ্য প্রচারের প্রেক্ষিতে একাধিক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, ভারতীয় ক্রিকেটার বিরাট কোহলি রমজানে ইফতারের জন্য মসজিদে ১০ কোটি টাকা দান করেছেন দাবিতে টিকটকে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

আগামী ৫ মে এসএসসির ফল প্রকাশ দাবিতে ঢাকা বোর্ডের নামে ভুয়া বিজ্ঞপ্তি ফেসবুকে

0

গত ১২ মার্চ শেষ হয়েছে চলতি বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। রেওয়াজ অনুযায়ী, পরীক্ষা শেষ হওয়ার মাস দুয়েকের মধ্যে ফলাফল প্রকাশিত হয়ে থাকে। এই নিয়ম মেনে ফল প্রকাশের তারিখ ফল প্রকাশের সপ্তাহখানেক পূর্বে  প্রকাশ করা হয়। তবে গত ২৪ মার্চ থেকে ফেসবুকে ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের প্যাডের আদলে তৈরি একটি প্যাডের নোটিশ ছড়িয়ে পড়তে দেখা যায়, যাতে দাবি করা হচ্ছে, চলতি বছরের এসএসসির ফল আগামী ০৫ মে প্রকাশিত হবে। 

উক্ত নোটিশ সম্বলিত ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, এসএসসির ফল প্রকাশের তারিখ নিয়ে ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের নামে ভাইরাল বিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া। ফল প্রকাশের তারিখ নিয়ে এখনও কোনো বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়নি বলে জানিয়েছেন ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান তপন কুমার সরকার। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে গণমাধ্যমে এই বিজ্ঞপ্তি সংক্রান্ত কোনো তথ্য মেলেনি। পরবর্তীতে ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের ওয়েবসাইটেও এসএসসির ফলাফল সংক্রান্ত কোনো বিজ্ঞপ্তির অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। 

কথিত এই বিজ্ঞপ্তি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ঢাকা বোর্ড কর্তৃক প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিগুলোর লেখার ফন্টের সাথে এই বিজ্ঞপ্তির লেখার ফন্টে ভিন্নতা রয়েছে। তারিখ অংশের ফন্টটিও সন্দেহের উদ্রেক সৃষ্টি করে। 

Screenshot comparison: Rumor Scanner

এ বিষয়ে জানতে ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান তপন কুমার সরকারের সাথে কথা বলেছি আমরা। তিনি জানিয়েছেন, এটি ভুয়া নোটিশ। এসএসসির ফলাফল নিয়ে কোনো নোটিশ এখন অবধি দেওয়া হয়নি।

মূলত, সদ্য সমাপ্ত চলতি বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা আগামী ০৫ই মে প্রকাশিত হবে দাবিতে ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের প্যাডে প্রকাশিত একটি বিজ্ঞপ্তি ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত বিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া। ঢাকা বোর্ড এমন কোনো বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেনি বলে নিশ্চিত করা হয়েছে বোর্ডের পক্ষ থেকে। তাছাড়া, এসএসসির ফলাফলের তারিখ ঘোষণার বিষয়েও এখনও কোনো বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়নি। 

সুতরাং, এসএসসির ফল ০৫ই মে প্রকাশিত হবে দাবিতে ঢাকা বোর্ডের নামে একটি বিজ্ঞপ্তি ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ ভুয়া।

তথ্যসূত্র

  • Statement from Tapan Kumar 
  • Dhaka Board: SSC Corner 
  • Rumor Scanner’s own analysis