সম্প্রতি, আর্থিক সংকটে একই পরিবারের সবার আত্মহত্যার একটি সংবাদ বাংলাদেশের দাবিতে মূলধারার গণমাধ্যম কালবেলা এবং বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ইনডিপেনডেন্ট টিভি’র পৃথক দুটি ফটোকার্ড যুক্ত করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।
উক্ত গণমাধ্যম দুটির ফটোকার্ড শেয়ার করে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন- এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আর্থিক সংকটে একই পরিবারের সবার আত্মহত্যার ঘটনাটি বাংলাদেশের নয় বরং ঘটনাটি ভারতের কর্ণাটকের।
অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত পোস্টগুলোতে ব্যবহৃত কালবেলা এবং ইনডিপেনডেন্ট টিভি’র ফটোকার্ডের সূত্র ধরে ম্যানুয়ালি অনুসন্ধানের মাধ্যমে গণমাধ্যম দুটির ফেসবুক পেজে এসম্পর্কিত ফটোকার্ড দুটি (কালবেলা, ইনডিপেনডেন্ট টিভি) খুঁজে পাওয়া যায়।
উক্ত গণমাধ্যম দুটির ফটোকার্ড নিয়ে প্রচারিত পোস্টের কমেন্টে উল্লেখিত এসম্পর্কিত বিস্তারিত প্রতিবেদন পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। কালবেলার ওয়েবসাইটে ‘অনটনে সন্তানকে হত্যার পর বাবা-মায়ের আত্মহত্যা’ শীর্ষক শিরোনামে এবং ইনডিপেনডেন্ট টিভি’র ওয়েবসাইটে ‘আর্থিক সংকটে’ শিশুসহ পরিবারের সবার আত্মহত্যা’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন দুটি থেকে জানা যায়, উক্ত ঘটনাটি ভারতের কর্ণাটকের।
প্রতিবেদনগুলোর শিরোনামে ঘটনাটির স্থানের নাম উল্লেখ না করায় বিষয়টি নিয়ে নেটিজেনদের মনে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। বিস্তারিত প্রতিবেদন না পড়েই তারা বিষয়টিকে বাংলাদেশের মনে করে বিভিন্ন মন্তব্য করেছেন।
পরবর্তীতে বিষয়টি অধিকতর নিশ্চিতের জন্য কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি’র ওয়েবসাইটে গত ১০ ডিসেম্বর ‘Couple Kills 11-Year-Old Daughter, Dies By Suicide At Karnataka Resort’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ভারতের কর্ণাটকের কোডাগু এলাকায় একটি রিসোর্ট থেকে একই পরিবারের ৩ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রতিবেদনে পুলিশের বরাতে জানানো হয়, পরিবারটি আর্থিক সংকটের কথা জানিয়ে একটি সুইসাইড নোট রেখে যায়।
অর্থাৎ, আর্থিক সংকটে একই পরিবারের সবার আত্মহত্যার ঘটনাটি বাংলাদেশের নয়। তবে এসম্পর্কিত খবরের শিরোনামে স্থানের নাম না উল্লেখ করায় ঘটনাটি বাংলাদেশের ভেবে নেটিজেনরা বিভ্রান্ত হয়েছেন।
মূলত, সম্প্রতি ভারতের কর্ণাটকে আর্থিক সংকটে একটি পরিবারের সদস্যদের আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে উক্ত বিষয়ে বাংলাদেশের একাধিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের শিরোনামে ঘটনাটির স্থানের নাম উল্লেখ না করে সংবাদ প্রচার করা হয়। পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীরা বিষয়টি বাংলাদেশের ঘটনা মনে করে ফেসবুকে প্রচার করেন।
উল্লেখ্য, পূর্বেও ভারতের ঘটনা বাংলাদেশের দাবিতে প্রচারিত হলে তা নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন দুটি প্রতিবেদন দেখুন এখানে এবং এখানে।
সুতরাং, আর্থিক সংকটে ভারতের কর্ণাটকের একই পরিবারের সবার আত্মহত্যার ঘটনাটি বাংলাদেশে স্থানের নাম উল্লেখ না করে ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।
তথ্যসূত্র
- Kalbela: অনটনে সন্তানকে হত্যার পর বাবা-মায়ের আত্মহত্যা
- Independent TV: আর্থিক সংকটে’ শিশুসহ পরিবারের সবার আত্মহত্যা
- NDTV: Couple Kills 11-Year-Old Daughter, Dies By Suicide At Karnataka Resort
- Rumor Scanner’s Own Analysis