Home Blog Page 564

ফটোকার্ড নকল করে কমলাপুরে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের হাতে তরুণী লাঞ্ছিত হওয়ার ভুয়া সংবাদ প্রচার

সম্প্রতি, “কমলাপুর রেলস্টেশনে যাবার পথে ছাত্রদলের নেতাদের হাতে লাঞ্ছিত তরুণী” শীর্ষক শিরোনামে মূলধারার গণমাধ্যম ঢাকা পোস্টে’র লোগো সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

তরুণী

ফেসবুকে প্রচারিত এমনকিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, ঢাকা পোস্ট আলোচিত শিরোনামে কোনো ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি বরং ঢাকা পোস্টে’র প্রচলিত ফটোকার্ডের আদলে ভুয়া ফটোকার্ড তৈরি করে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত হচ্ছে।

অনুসন্ধানের শুরুতেই, ঢাকা পোস্টে’র ফেসবুক পেজে ২৮ অক্টোবর প্রকাশিত ফটোকর্ডগুলো পর্যবেক্ষণ করে আলোচিত শিরোনামের কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে, ঢাকা পোস্টে’র ফেসবুক পেজে ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবরের একটি পোস্ট খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার টিম।

উক্ত পোস্ট থেকে জানা যায়, ঢাকা পোস্টের নামে ছড়ানো আলোচিত ফটোকার্ডটি এবং এর তথ্য সঠিক নয়। বিভ্রান্তি এড়াতে তাদের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ এবং অনলাইনে যুক্ত থাকার আহ্বান জানায় সংবাদমাধ্যমটি।

Source: Dhaka Post Facebook Page

বিষয়টির অধিকতর সত্যতা নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে, ঢাকা পোস্টে’র চিফ রিপোর্টার আদনান রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে, এ ধরনের কোনো নিউজ বা পোস্ট হয়নি বলে রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করেন তিনি।

পরবর্তীতে, প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে কমলাপুর এলাকায় ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের হাতে তরুণী লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনার বিষয়ে অনুসন্ধান করে রিউমর স্ক্যানার টিম। কিন্তু কোনো সংবাদমাধ্যম কিংবা কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে আলোচিত দাবির সত্যতা নিশ্চিত করা যায়নি।

মূলত, ২৮ অক্টোবর ঢাকার নয়াপল্টন এলাকায় বিএনপি মহাসমাবেশ আহ্বান করে। উক্ত মহাসমাবেশের প্রেক্ষাপটে ঢাকা পোস্টের ফটোকার্ড নকল করে বিএনপির ছাত্রসংগঠন ছাত্রদলের নেতারা কমলাপুর রেলস্টেশনে যাবার পথে এক তরুণীকে লাঞ্ছিত করেছে দাবিতে একটি তথ্য ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে, কমলাপুর এলাকায় ছাত্রদলের নেতাদের হাতে তরুণী লাঞ্ছিত হবার কোনো ঘটনা ঘটেনি এবং ঢাকা পোস্ট উক্ত শিরোনামে কোনো ফটোকার্ডও প্রকাশ করেনি।

সুতরাং, কমলাপুর এলাকায় ছাত্রদলের নেতাদের হাতে তরুণী লাঞ্ছিত হওয়ার তথ্যটি মিথ্যা এবং উক্ত শিরোনামে ঢাকা পোস্টে’র ফটোকার্ডটি এডিটেড বা বিকৃত।

তথ্যসূত্র

  • Facebook Page: Dhaka Post
  • Statement of Adnan Rahman, Chief Reporter, Dhaka Post 

২৮ অক্টোবরের সমাবেশ ঘিরে তারেক জিয়াকে নিয়ে গণমাধ্যমের নামে ভুয়া ফটোকার্ড

সম্প্রতি ‘ডেটলাইন ২৮শে অক্টোবর সমাবেশে কমপক্ষে ৮০-১০০ টা লাশ চায় তারেক জিয়া’ শীর্ষক একটি দাবি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল যমুনা টিভি ও জাতীয় পর্যায়ের দৈনিক মানবজমিন এর ডিজাইন সম্বলিত দুইটি আলাদা ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

তারেক জিয়া

উক্ত দাবিতে যমুনা টিভি’র ডিজাইন সম্বলিত ফটোকার্ডের মাধ্যমে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ)।

একই দাবিতে মানবজমিনের ডিজাইন সম্বলিত ফটোকার্ডের মাধ্যমে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, তারেক জিয়াকে নিয়ে যমুনা টিভি ও মানবজমিন এরূপ কোনো ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি। প্রকৃতপক্ষে, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় যমুনা টিভি ও মানবজমিন এর ডিজাইন নকল করে আলোচিত এই ফটোকার্ড দুইটি তৈরি করা হয়েছে। 

যমুনা টিভি’র ফটোকার্ড যাচাই

অনুসন্ধানের শুরুতে রিউমর স্ক্যানার টিম আলোচিত দাবিতে যমুনা টিভি’র নাম ও লোগো ব্যবহার করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত ফটোকার্ডটি বিশ্লেষণ করে। এতে দেখা যায়, ফটোকার্ডটিতে কোনো তারিখের উল্লেখ নেই। তাই ফটোকার্ডটির প্রচারকাল সম্পর্কে কোনো ধারণা পাওয়া যায়নি। 

পরবর্তীতে যমুনা টিভি’র ওয়েবসাইট, ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ, ইউটিউব চ্যানেলইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে এ নিয়ে অনুসন্ধানে এমন কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মানবজমিন এর ফটোকার্ড যাচাই

অনুরূপভাবে একই দাবিতে মানবজমিন এর নাম ও লোগো ব্যবহার করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত ফটোকার্ডটি বিশ্লেষণ করেও দেখা যায়, ফটোকার্ডটিতে কোনো তারিখের উল্লেখ নেই। ফলে ফটোকার্ডটির প্রচারকাল সম্পর্কে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে মানবজমিন এর ওয়েবসাইট, ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ (১), (), ইউটিউব চ্যানেলে নিয়ে অনুসন্ধানে এমন কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

পাশাপাশি যমুনা টিভি ও মানবজমিন ছাড়াও এ নিয়ে অনুসন্ধানে অন্যান্য কোনো গণমাধ্যম সূত্রেও নির্ভরযোগ্য সূত্রে এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

এছাড়া তারেক রহমানের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজেও সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত একাধিক ভিডিও যাচাই করে তার এমন কোনো মন্তব্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

২৮ অক্টোবরকে ঘিরে তারেক রহমানের পেজে প্রকাশিত কিছু ভিডিও দেখুন 

মূলত, ২৮ অক্টোবর রাজধানী ঢাকায় এক দফা দাবিতে মহাসমাবেশের ডাক দেয়  বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। এ সমাবেশকে ঘিরে বিভিন্ন গণমাধ্যমের ডিজাইন সম্বলিত ফটোকার্ডে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন দাবি ছড়িয়ে পড়তে দেখা যায়। এরই ধারাবাহিকতায়  বেসরকারি টিভি চ্যানেল যমুনা টিভি ও জাতীয় পর্যায়ের দৈনিক মানবজমিন এর ডিজাইন সম্বলিত দুইটি আলাদা ফটোকার্ডে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নামে ‘ডেটলাইন ২৮শে অক্টোবর সমাবেশে কমপক্ষে ৮০-১০০ টা লাশ চায় তারেক জিয়া’ শীর্ষক একটি দাবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তবে অনুসন্ধানে দেখা যায়, যমুনা টিভি কিংবা মানবজমিন কেউই এরূপ কোনো ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি। উক্ত গণমাধ্যম দুইটির ফটোকার্ড নকল করে আলোচিত ফটোকার্ড দুইটি তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া, গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্য কোনো গ্রহণযোগ্য সূত্রে এরূপ কোনো সংবাদের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, বিএনপি’র ২৮ অক্টোবরে সমাবেশের ঘটনায় বিভিন্ন ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে একাধিক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কিছু প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, ‘ডেটলাইন ২৮শে অক্টোবর সমাবেশে কমপক্ষে ৮০-১০০ টা লাশ চায় তারেক জিয়া’ শীর্ষক দাবিতে প্রথম আলো ও মানবজমিন এর নামে প্রচারিত ফটোকার্ডগুলো ভুয়া ও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র


প্রথম আলো’র ফটোকার্ড নকল করে ছাত্রদল নেতাদের নামে বাসে আগুন দেওয়ার ভুয়া তথ্য প্রচার

সম্প্রতি, ‘কাকরাইলের বাসে আগুন দিয়ে পালিয়ে গেল ছাত্রদলের ২ নেতা‘ শীর্ষক একটি তথ্য দেশের মূলধারার গণমাধ্যম প্রথম আলো’র ফটোকার্ডের ডিজাইন সম্বলিত একটি ছবির মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

আগুন

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ‘কাকরাইলের বাসে আগুন দিয়ে পালিয়ে গেল ছাত্রদলের ২ নেতা’ শীর্ষক দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সঠিক নয় এবং প্রথম আলোও উক্ত তথ্য সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি বরং আলোচিত এই ফটোকার্ডটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে প্রথম আলো’র ফটোকার্ডের ডিজাইন সম্বলিত ছবিটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। এতে এই সংবাদটি প্রচারের তারিখ হিসেবে ২৮ অক্টোবরের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

Screenshot: Facebook Claim Post

দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে ফটোকার্ডটিতে থাকা লোগো ও তারিখের সূত্র ধরে প্রথম আলো’র ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে গত ২৮ অক্টোবর বা তার আগে পরে উক্ত শিরোনাম বা তথ্য সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া, প্রথম আলো’র ওয়েবসাইট, ইউটিউব চ্যানেল বা অন্যকোনো গণমাধ্যমেও উক্ত দাবির বিষয়ে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

তবে প্রথম আলো’র প্রযুক্তি, বিনোদন এবং বাংলাদেশ শাখা হতে প্রকাশিত কয়েকটি ফটোকার্ডের ডিজাইনের সাথে আলোচিত ফটোকার্ডটির ডিজাইনের মিল খুঁজে পাওয়া যায়। ধারণা করা যায়, এই ফটোকার্ডগুলো থেকে কোনো একটি সম্পাদনার মাধ্যমে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে। 

Photocard Comparison by Rumor Scanner

আলোচিত বিষয়ে অনুসন্ধান চলাকালে ২৯ অক্টোবর সকাল ১১:৫৪ মিনিটে প্রথম আলো’র ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে ফটোকার্ডটিকে মিথ্যা প্রচারণা উল্লেখ করে একটি ফটোকার্ড পোস্ট হতে দেখে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

Screenshot: Prothom Alo Facebook

উক্ত ফটোকার্ড পোস্টে আরও বলা হয়, “প্রথম আলোর নামে ছড়ানো এই ছবি ও তথ্য নকল, আমাদের তৈরি নয়। বিভ্রান্তি এড়াতে আমাদের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ ও অনলাইনের সঙ্গে থাকুন।”

অর্থাৎ, ‘কাকরাইলের বাসে আগুন দিয়ে পালিয়ে গেল ছাত্রদলের ২ নেতা’ শীর্ষক শিরোনামে প্রথম আলো সাম্প্রতিক সময়ে কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি।

পাশাপাশি, মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো সূত্রে এখন পর্যন্ত কাকরাইলে বাসে আগুনের ঘটনায় ছাত্রদলের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মূলত, গতকাল ২৮ অক্টোবর সরকার পতনের এক দফা দাবিতে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপি মহাসমাবেশের আয়োজন করে। পরবর্তীতে সংঘর্ষ ও ভাঙচুরের ঘটনার জের ধরে সেই সমাবেশ স্থগিত করে দলটির পক্ষ থেকে ২৯ অক্টোবর সারাদেশে হরতালের ডাক দেওয়া হয়। পরবর্তীতে ‘কাকরাইলের বাসে আগুন দিয়ে পালিয়ে গেল ছাত্রদলের ২ নেতা’ শীর্ষক একটি তথ্য দেশের মূলধারার গণমাধ্যম প্রথম আলো’র ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ডেরমাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়। তবে অনুসন্ধানে প্রথম আলো’র ফেসবুক পেজ কিংবা অন্যান্য প্ল্যাটফর্মে উক্ত তথ্য সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাছাড়া, প্রথম আলো’র ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ থেকেও উক্ত ফটোকার্ডটি ভুয়া এবং তাদের তৈরি নয় বলে জানানো হয়।

প্রসঙ্গত, গত ২৮ অক্টোবর মূলধারার গণমাধ্যম ডেইলি স্টারে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে কাকরাইলে বাসে আগুনের ঘটনার বিষয়ে বাস চালকের বরাতে জানানো হয়, কাকরাইল এলাকায় বাসে আগুন দেওয়া দুই যুবক পুলিশের ভেস্ট পরিহিত ছিলেন।

উক্ত ঘটনায় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) প্রধান হারুন অর রশীদ বলেন, “রাজধানীর কাকরাইলে বাসে অগ্নিসংযোগকারী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বা ডিবির কেউ না। অনেক সময় ডিবির জ্যাকেট পড়ে ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধ করে অপরাধীরা। ঢাকায় বাসে আগুনের ঘটনাটিও তেমন কোনো চক্র। যারাই এটা করেছে, আমরা তাদের খুঁজছি।”

উল্লেখ্য, বিএনপি’র ২৮ অক্টোবরে সমাবেশের ঘটনায় বিভিন্ন ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে একাধিক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কিছু প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

এছাড়া, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত বিভিন্ন গণমাধ্যমের নাম, লোগো, শিরোনাম এবং নকল ফটোকার্ড ব্যবহার করে অপপ্রচারের বিষয়ে গত ০৫ সেপ্টেম্বর বিস্তারিত ফ্যাক্ট ফাইল প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, ‘কাকরাইলের বাসে আগুন দিয়ে পালিয়ে গেল ছাত্রদলের ২ নেতা’ শীর্ষক দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা এবং উক্ত দাবিতে প্রথম আলো’র নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি ভুয়া ও বানোয়াট। 

তথ্যসূত্র

কালবেলা’র নকল ফটোকার্ডে মহিলাদলের কর্মীকে স্পর্শ করে যুবদলের নেতা গণপিটুনি খাওয়ার মিথ্যা তথ্য প্রচার 

সম্প্রতি, ‘পল্টনে মহিলাদল কর্মী মৌসুমীর পাছায় হাত দিয়ে গণপিটুনি খেলেন বরিশাল যুবদল নেতা রায়হান’– শীর্ষক তথ্য বা শিরোনামে জাতীয় দৈনিক কালবেলা’র ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

গণপিটুনি

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, গত ২৮ অক্টোবর বিএনপি’র নয়াপল্টনে ডাকা মহাসমাবেশে মহিলাদলের কর্মীকে স্পর্শ করে কোনো ব্যক্তির গণপিটুনি খাওয়ার মত ঘটনা ঘটেনি এবং দৈনিক কালবেলাও উক্ত শিরোনামে কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি বরং ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে উক্ত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে কালবেলা’র ফটোকার্ডের ডিজাইন সম্বলিত ছবিটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। সেখানে এই সংবাদটি প্রচারের তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে ২৮ অক্টোবর ২০২৩। 

Screenshot: Facebook Claim Post

আলোচিত ফটোকার্ডে থাকা মৌসুমী নামক কথিত নারীর ছবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চসহ একাধিক পদ্ধতির অনুসন্ধানে ছবিটির মূল উৎসের খোঁজ মেলেনি। 

তবে, আলোচিত ফটোকার্ডে থাকা টেক্সটের ফন্ট ডিজাইন এবং কালারের সাথে কালবেলা কর্তৃক প্রকাশিত ফটোকার্ডের টেক্সটের ফন্ট ডিজাইন এবং কালারের সুস্পষ্ট পার্থক্য রয়েছে।

Photocard Comparison by Rumor Scanner

পাশাপাশি, প্রচারিত দাবিটির বিষয়ে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে অন্যান্য গণমাধ্যম এবং নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্রেও কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে ফটোকার্ডটিতে থাকা তারিখ এবং কালবেলা’র লোগোর সূত্র ধরে কালবেলা’র ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে ২৮ অক্টোবর প্রচারিত ফটোকার্ডগুলো পর্যালোচনা করে উক্ত শিরোনাম বা তথ্য সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও কালবেলা’র ওয়েবসাইটেও এসংক্রান্ত কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি।

এছাড়া, আলোচিত ফটোকার্ডে থাকা ছবিগুলোর বিষয়ে অনুসন্ধানে ভারতীয় গণমাধ্যম Opindia এর ওয়েবসাইটে ২০২০ সালের ১৮ এপ্রিল “Maharashtra: 3 men, including 2 Sadhus, brutally hacked to death by a mob in Palghar, police arrest 110 people” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে ফটোকার্ডে থাকা একটি ছবির খোঁজ মেলে। 

ছবিটির ক্যাপশন এবং বিস্তারিত প্রতিবেদন পড়ে জানা যাচ্ছে, মুম্বাইয়ের পালঘর জেলার একটি গ্রামের বাসিন্দারা ডাকাত সন্দেহে তিন জন ব্যক্তির উপর হামলা চালালে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করলে পুলিশের গাড়িতেও হামলা চালায় গ্রামবাসী। ছবিটি সেসময়ই তোলা। 

অর্থাৎ, ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়, এমনকি বাংলাদেশের কোনো ঘটনার নয় দৃশ্য এটি। 

মূলত, গত ২৮ অক্টোবর সরকার পতনের এক দফা দাবিতে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপি মহাসমাবেশের আয়োজন করে। উক্ত সমাবেশে মহিলাদলের এক কর্মীকে স্পর্শ করে গণপিটুনি খেলেন বরিশালের রায়হান নামের এক যুবদল নেতা- শীর্ষক তথ্য বা শিরোনামে  জাতীয় দৈনিক কালবেলা’র আদলে তৈরি একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। কিন্তু রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় জাতীয় দৈনিক কালবেলা’র ডিজাইন নকল করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া, অনুসন্ধানে গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্য কোনো গ্রহণযোগ্য সূত্রে পল্টনে মহিলা দলের কথিত কর্মী মৌসুমীকে শ্লীলতাহানি করায় বরিশালের যুবদল নেতা গণপিটুনির শিকার শীর্ষক দাবির বিষয়ে কোনো সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, পূর্বেও বিএনপি’র এই মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে গুজব ছড়ানো হলে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। 

সুতরাং, পল্টনে মহিলাদলের এক কর্মীকে স্পর্শ করে গণপিটুনি খেলেন বরিশালের রায়হান নামের এক যুবদলের নেতা- শীর্ষক তথ্যটি মিথ্যা এবং উক্ত দাবিতে কালবেলা’র নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি ভুয়া ও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র

ঢাবির বিশেষ সমাবর্তন স্থগিতের গুজব ছড়ালো গণমাধ্যমের ভুয়া ফটোকার্ডে

0

সম্প্রতি ‘নিরাপত্তাজনিত কারণে স্থগিত ঢাবির বিশেষ সমাবর্তন’ শীর্ষক একটি দাবি প্রথম আলো’র আদলে তৈরি একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ) এবং এখানে(আর্কাইভ)।

এছাড়া ‘‘হরতাল’ এর কারণে স্থগিত ঢাবির বিশেষ সমাবর্তন’ শীর্ষক আরেকটি দাবিতে কালবেলা’র ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন একটি পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, নিরাপত্তা বা হরতালজনিত কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের(ঢাবি) বিশেষ সমাবর্তন স্থগিত হওয়ার দাবিটি সঠিক নয় এবং উক্ত দাবিতে প্রথম আলো কিংবা কালবেলা কেউই ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি। প্রকৃতপক্ষে, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় প্রথম আলো ও কালবেলা’র ডিজাইন নকল করে আলোচিত ফটোকার্ড দুইটি তৈরি করা হয়েছে।

প্রথম আলো কি এমন কোনো ফটোকার্ড প্রচার করেছে?

অনুসন্ধানের শুরুতে প্রথম আলো’র আদলে তৈরি আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। সেখানে এই ফটোকার্ডটি প্রচারের তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে ২৯ অক্টোবর, ২০২৩।

এ সূত্রে অনুসন্ধানে প্রথম আলো’র ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে ২৯ অক্টোবর এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়। এই ফটোকার্ডটি ছিল প্রযুক্তি বিষয়ক একটি সংবাদের। এর বাইরে ২৯ অক্টোবর এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আর কোনো গণমাধ্যমটি আর কোনো ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি।

অপরদিকে নিরাপত্তাজনিত কারণে ঢাবির বিশেষ সমাবর্তন স্থগিত হওয়ার দাবিতে প্রথম আলো’র আদলে তৈরি প্রচারিত ফটোকার্ডটিতে ব্যবহৃত ফন্ট বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ফটোকার্ডটিতে ব্যবহৃত ফন্টের সাথে প্রথম আলো’র ব্যবহৃত ফন্টের অমিল রয়েছে। 

Photocard Analysis: Rumor Scanner

এছাড়া ফটোকার্ডটিতে উল্লিখিত শিরোনামের সূত্রে কি-ওয়ার্ড সার্চ করেও গণমাধ্যমটির ওয়েবসাইটটিতে এমন কোনো প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়নি। পাশাপাশি অন্যান্য কোনো গণমাধ্যমেও ঢাবির বিশেষ সমাবর্তন স্থগিত হওয়ার খবর খুঁজে পাওয়া যায়নি।

কালবেলা কি এমন কোনো ফটোকার্ড প্রচার করেছে?

‘‘হরতাল’ এর কারণে ঢাবির বিশেষ সমাবর্তন স্থগিত শীর্ষক দাবিতে কালবেলা’র আদলে তৈরি প্রচারিত ফটোকার্ডটি নিয়ে অনুসন্ধানে দেখা যায়, উক্ত ফটোকার্ডটিরও প্রচারের সময় দেওয়া ২৯ অক্টোবর।

এ সূত্রে অনুসন্ধানে কালবেলা’র ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে ২৯ অক্টোবর এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ২০ টি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়। তবে এসব ফটোকার্ডের মধ্যে ‘‘হরতাল’ এর কারণে ঢাবির বিশেষ সমাবর্তন স্থগিত শীর্ষক কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। অনুরূপভাবে ফটোকার্ডটিতে উল্লিখিত শিরোনামের সূত্রে কি-ওয়ার্ড সার্চ করেও গণমাধ্যমটির ওয়েবসাইটটিতে এমন কোনো প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়নি।

পাশাপাশি ফটোকার্ডটিতে ব্যবহৃত ফন্ট বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ফটোকার্ডটিতে ব্যবহৃত ফন্টের সাথে কালবেলায় ব্যবহৃত ফন্টের অমিল রয়েছে।

Photocard Analysis: Rumor Scanner

ঢাবির সমাবর্তন কি স্থগিত হয়েছে?

ফটোকার্ড দুইটিতে উল্লিখিত তথ্যের সত্যতা যাচাইয়ে রিউমর স্ক্যানার টিম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ডক্টর এম মাকসুদুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করে। 

তিনি মুঠোফোনে রিউমর স্ক্যানারকে বলেন, ‘সমাবর্তন চলমান, স্থগিত হয়নি।’

অর্থাৎ উপরিউক্ত বিশ্লেষণ সমূহ থেকে প্রতীয়মান হয় যে, প্রথম আলো ও কালবেলা’র ডিজাইন নকল করে আলোচিত ফটোকার্ড দুইটি তৈরি করা হয়েছে এবং ফটোকার্ড দুইটিতে উল্লিখিত দাবিগুলোও সত্য নয়। 

মূলত, গত ২৮ অক্টোবর রাজধানী ঢাকায় এক দফা দাবিতে মহাসমাবেশের ডাক দেয়  বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। তবে এই মহাসমাবেশে হামলার প্রতিবাদে আজ রোববার সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডাকে বিএনপি। একইদিনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বিশেষ সমাবর্তন অনুষ্ঠানেরও পূর্বঘোষিত কর্মসূচি রয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে দুইটি ভিন্ন ভিন্ন গণমাধ্যমের ফটোকার্ড ব্যবহার করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়, নিরাপত্তা বা হরতালজনিত কারণে ঢাবির বিশেষ সমাবর্তন স্থগিত করা হয়েছে। তবে অনুসন্ধানে দেখা যায়, উক্ত দাবিতে প্রচারিত গণমাধ্যম দুইটির ফটোকার্ড দুইটি আসল নয়। প্রকৃতপক্ষে, গণমাধ্যম দুইটির ডিজাইন নকল করে তৈরি ফটোকার্ডের মাধ্যমে আলোচিত দাবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। এছাড়া, ঢাবির সমাবর্তনও স্থগিত হয়নি। 

সুতরাং, নিরাপত্তা বা হরতালজনিত কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ সমাবর্তন স্থগিতের দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা ও উক্ত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ড দুইটি বিকৃত বা এডিটেড।

তথ্যসূত্র

ভিডিওটি ঢাকায় বিএনপি’র মহাসমাবেশে আসার দৃশ্যের নয়

সম্প্রতি, “স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার ক্ষমতার মসনদটি খুব শীঘ্রই বুড়িগঙ্গায় ডুবানো হবে ইনশাআল্লাহ। আগামী কালকের মহাসমাবেশে দলে দলে যোগ দিন সফল করুন। কালকের মহাসমাবেশ সফল ও স্বার্থক হোক।” শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। 

মহাসমাবেশে

একই ভিডিও সম্বলিত ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

যা দাবি করা হচ্ছে

ভিডিওটি ফেসবুকে প্রচার করে গত ২৮ অক্টোবর ক্ষমতাসীন সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে রাজধানীতে মহাসমাবেশে বিএনপি’র বিভিন্ন নেতাকর্মী আসার দৃশ্য দাবি করা হচ্ছে।

ভিডিওতে দেখা যায়, ছাদভর্তি মানুষ নিয়ে একটি ট্রেন একটি ব্রিজ অতিক্রম করছে। ভিডিওতে বিএনপি নেতাকর্মীদের স্লোগানের অডিও শোনা যায়।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভিডিওটি ঢাকায় মহাসমাবেশে যোগদানের উদ্দেশ্যে বিএনপি’র নেতা-কর্মীদের ট্রেনে করে আসার ঘটনার নয় বরং এটি ২০২২ সালে ঈদুল ফিতরে ট্রেনে করে মানুষের বাড়ি ফেরার ভিডিও।

রিভার্স ইমেজ সার্চ পদ্ধতির মাধ্যমে ইউটিউবে ‘BD Train Express’ নামক একটি চ্যানেলে ২০২২ সালের ১ মে “নাড়ির টানে যখন মানুষ তার জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাড়ি ফিরে || ৪৭ আপ দেওয়ানগঞ্জ কমিউটার” শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

আলোচিত ভিডিওটির সাথে উক্ত ভিডিওটির  মিল খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওটিতে কোনো স্লোগান শোনা যায়নি বরং ট্রেনের আওয়াজই শোনা যাচ্ছিল।

Screenshot from Youtube

অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিওটি নেতাকর্মীদের ঢাকায় মহাসমাবেশে গমনের নয় এবং এতে সংযুক্ত বিএনপি’র স্লোগানটিও সম্পাদনার মাধ্যমে যুক্ত করা।

পরবর্তীতে একই দিনে ‘Ashraful Alam Nobel Patowary’ নামক একটি ফেসবুক পেজে একই ভিডিওটি (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়।

ভিডিওর ক্যাপশনে লেখা হয়, “বলতে হবে এরা ট্রেন নিয়ে কই যাচ্ছে ??? ৪৭ আপ দেওয়ানগঞ্জ কমিউটার,,,,,এ এক ইতিহাস !!!! বেসম্ভবের দেশ!!”

Image Comparison: Rumor Scanner

একটি ভিডিওর নানান প্রেক্ষাপট দাবি!

ট্রেনের ছাদভর্তি হয়ে মানুষের গমনের এই ভিডিওটি ব্যবহার করে বিভিন্ন সময়ে দেশে বিদেশে বিভিন্ন গুজব ছড়িয়ে পড়তে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার।

২০২২ সালের ১২ আগস্ট ভারতীয় ফ্যাক্ট চেকিং প্রতিষ্ঠান Logically জানায়, বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গারা বিহারের উদ্দেশ্যে এ দেশ ছাড়ার ভিডিও দাবিতে ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। 

২০২২ সালে ১৯ সেপ্টেম্বর ভারতীয় সংবাদমাধ্যম India Today জানায়, পাশ্ববর্তী দেশগুলো থেকে শরণার্থীরা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের ভিডিও দাবিতে ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

এছাড়া, ২০২২ সালের ২৪ অক্টোবর এই ভিডিওটিকে খুলনায় বিএনপি’র গণসমাবেশে নেতাকর্মীদের গমনের ভিডিও দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়। সে সময় বিষয়টি শনাক্ত ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন করেছিল রিউমর স্ক্যানার।

মহাসমাবেশে যোগ দিতে বিএনপি নেতা-কর্মীরা কি ট্রেনে করে ঢাকায় এসেছেন?

২৮ অক্টোবর যায়যায়দিন, জাগোনিউজ২৪রাইজিং বিডিসহ বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সড়ক পথের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তল্লাশি এড়াতে ট্রেনে করে ঢাকা এসেছেন গাজীপুর ও আশপাশের এলাকার বিএনপি নেতাকর্মীরা।

মূলত, গত ২৮ অক্টোবর সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে রাজধানীতে মহাসমাবেশ করে  বিএনপি। উক্ত মহাসমাবেশে যোগ দিতে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে বিএনপি’র বিভিন্ন নেতা কর্মীরা স্থল, রেল ও নৌপথে ঢাকায় জড়ো হন। এরই প্রেক্ষিতে ২০২২ সালের ঈদুল ফিতর পালনের উদ্দেশ্যে মানুষের ট্রেনে করে বাড়ি ফেরার ভিডিওকে সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপি’র মহাসমাবেশে যোগদান করতে বিএনপি’র নেতাকর্মী ঢাকায় আসার ভিডিও দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, বিএনপি’র ২৮ অক্টোবরে সমাবেশের ঘটনায় বিভিন্ন ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে একাধিক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কিছু প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, ঈদুল ফিতর পালনের উদ্দেশ্যে মানুষের ট্রেনে করে বাড়ি ফেরার ভিডিওকে বিএনপি’র নেতাকর্মীদের ঢাকায় বিএনপি’র মহাসমাবেশে যাওয়ার ভিডিও দাবিতে ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

প্রথম আলো’র ফটোকার্ড নকল করে তারেক রহমানকে জড়িয়ে টাঙ্গাইলের বিএনপি নেতার নামে ভুয়া মন্তব্য প্রচার 

সম্প্রতি, “তারেক রহমান না আসা পর্যন্ত আর কোন সমাবেশে আসবো না” শীর্ষক মন্তব্যকে টাঙ্গাইলের বিএনপি নেতার মন্তব্য দাবিতে দেশের মূলধারার গণমাধ্যম প্রথম আলো’র ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, তারেক রহমান না আসা পর্যন্ত আর কোন সমাবেশে অংশগ্রহণ করবো না শীর্ষক মন্তব্যকে টাঙ্গাইলের বিএনপি নেতার মন্তব্য দাবিতে প্রথম আলো সংবাদ বা ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি বরং আলোচিত এই ফটোকার্ডটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে প্রথম আলো’র ফটোকার্ডের ডিজাইন সম্বলিত ছবিটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। সেখানে এই সংবাদটি প্রচারের তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে ২৮ অক্টোবর ২০২৩। 

দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে আলোচিত ফটোকার্ডটিতে থাকা লোগো ও তারিখের সূত্র ধরে প্রথম আলো’র ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে গত ২৮ অক্টোবর কিংবা তার আগে উক্ত তথ্য সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া, প্রথম আলো’র ওয়েবসাইট, ইউটিউব চ্যানেল কিংবা অন্যকোনো গণমাধ্যমেও উক্ত দাবির বিষয়ে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

এছাড়া,পত্রিকাটির ফেসবুক পেজে গত ২৮ অক্টোবর (যেহেতু ছড়িয়ে পড়া ফটোকার্ডটিতে তারিখ ২৮ অক্টোবর লেখা রয়েছে) উল্লেখ করে তিনটি ফটোকার্ড (,,,) প্রকাশ করা হয়েছে, যার কোনোটির সাথেই আলোচিত দাবির মিল পাওয়া যায়নি। পাশাপাশি আলোচিত ফটোকার্ডটির টেক্সট ফন্টের সাথে প্রথম আলো’র ফেসবুক পেজে প্রচারিত অন্যান্য ফটোকার্ডের টেক্সট ফন্টের ভিন্নতা রয়েছে।

Image Collage : Rumor Scanner

অর্থাৎ, প্রথম আলো আলোচিত দাবিতে কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি। 

আলোচিত ফটোকার্ডের ছবিতে থাকা এই ব্যক্তিটি কে? 

ছবিটি নিয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত ফটোকার্ডের ছবির পেছনে আমরা একটি ব্যানার দেখতে পাই। ব্যানারে থাকা ‘বিএনপি, টাঙ্গাইল’ লেখার সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে বেশ কিছু ফেসবুক পোস্টে এক ব্যক্তির ছবি খুঁজে পেয়েছে রিউমর স্ক্যানার টিম। উক্ত ছবির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডে থাকা ব্যাক্তির ছবির মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

ছবিতে উক্ত ব্যক্তির পরিচয় দেওয়া হয়েছে,  টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ফরহাদ ইকবাল। 

Image: Facebook 

উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে আরও অনুসন্ধানে ‘Ad.Farhad Iqbal- এড.ফরহাদ ইকবাল‘ নামে উক্ত ব্যক্তির ফেসবুক পেজে প্রকাশিত ছবির সাথেও আলোচিত ছবিতে থাকা ব্যক্তির মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Facebook 

পরবর্তীতে ফরহাদ ইকবালের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি রিউমর স্ক্যানারকে জানান, “প্রথম আলোর নামে ছড়ানো এই ফটোকার্ডটি প্রথম আলো প্রকাশ করেনি সেটি আমি আগেই জানতে পেরেছি এবং আমার এমন কোনো মন্তব্য করার প্রশ্নই উঠেনা।”

মূলত, গতকাল ২৮ অক্টোবর সরকার পতেনের এক দফা দাবি আদায়ে ঢাকায় মহাসমাবেশ করে বিএনপি। উক্ত মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে ‘তারেক রহমান না আসা পর্যন্ত আর কোন সমাবেশে আসবো না’ শীর্ষক মন্তব্যকে টাঙ্গাইলের বিএনপি নেতার মন্তব্য দাবিতে দেশের জাতীয় দৈনিক প্রথম আলো’র ফটোকার্ডের ডিজাইন সম্বলিত একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। তবে অনুসন্ধানে প্রথম আলো’র ফেসবুক পেজ কিংবা অন্যান্য প্ল্যাটফর্মে উক্ত তথ্য সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া, মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো সূত্রে আলোচিত দাবিটির সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাছাড়া, এই মন্তব্যটি টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবালের নামে প্রচার করা হলেও তিনি এমন কোনো মন্তব্য করেননি বলে নিশ্চিত করেছেন। 

উল্লেখ্য, বিএনপি’র ২৮ অক্টোবরে সমাবেশের ঘটনায় বিভিন্ন ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে একাধিক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কিছু প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, টাঙ্গাইলের বিএনপি নেতা’ তারেক রহমান না আসা পর্যন্ত আর কোন সমাবেশে আসবো না’ শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং প্রচারিত ফটোকার্ডটি ভুয়া ও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র

কালবেলা’র নকল ফটোকার্ডে তারেক রহমান ও মির্জা ফখরুলকে নিয়ে ভুয়া তথ্য প্রচার 

সম্প্রতি, পল্টন ছেড়ে বিএনপি নেতাদের পলায়ন। মীর্জা ফখরুল’কে ফোনে পাচ্ছেন না তারেক জিয়া শীর্ষক তথ্য বা শিরোনামে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবি যুক্ত জাতীয় দৈনিক কালবেলা’র ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

তারেক রহমান

ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে নিয়ে দৈনিক কালবেলা উক্ত শিরোনামে কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি বরং ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে উক্ত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে কালবেলা’র ফটোকার্ডের ডিজাইন সম্বলিত ছবিটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। সেখানে এই সংবাদটি প্রচারের তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে ২৮ অক্টোবর ২০২৩। 

Screenshot: Facebook Claim Post

দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে ফটোকার্ডটিতে থাকা তারিখ এবং কালবেলা’র লোগোর সূত্র ধরে কালবেলা’র ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে ২৮ অক্টোবর প্রচারিত ফটোকার্ডগুলো পর্যালোচনা করে উক্ত শিরোনাম বা তথ্য সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও কালবেলা’র ওয়েবসাইটেও এসংক্রান্ত কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি।

অর্থাৎ, আলোচিত ফটোকার্ডটির সাথে জাতীয় দৈনিক কালবেলা’র ফটোকার্ডের ডিজাইনের প্রায় হুবহু মিল থাকলেও আলোচিত দাবিতে কালবেলা কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি।

Image Collage : Rumor Scanner 

এছাড়া, দাবিটির বিষয়ে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে অন্যান্য গণমাধ্যম এবং নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্রেও কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

মূলত, গত ২৮ অক্টোবর সরকার পতনের এক দফা দাবিতে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপি মহাসমাবেশের আয়োজন করে। পরবর্তীতে সংঘর্ষ ও ভাঙচুরের ঘটনার জের ধরে সেই সমাবেশ স্থগিত করে ২৯ অক্টোবর সারাদেশে হরতালের ডাক দেয় বিএনপি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে পল্টন ছেড়ে বিএনপি নেতাদের পলায়ন। মীর্জা ফখরুল’কে ফোনে পাচ্ছেন না তারেক জিয়া– শীর্ষক তথ্য সম্বলিত বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবি যুক্ত জাতীয় দৈনিক কালবেলা’র আদলে তৈরি একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। কিন্তু রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, জাতীয় দৈনিক কালবেলা এমন কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি। ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় গণমাধ্যমটির আদলে তৈরি একটি ফটোকার্ডে তারেক রহমানের একটি ছবি ব্যবহার করে উক্ত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। এছাড়া, মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো সূত্রে আলোচিত দাবিটির সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, পূর্বেও বিএনপি’র এই মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে গুজব ছড়ানো হলে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। 

সুতরাং, পল্টন ছেড়ে বিএনপি নেতাদের পলায়ন,নির্জা ফখরুলকে ফোনে পাচ্ছেন না তারেক রহমান শীর্ষক তথ্যটি মিথ্যা এবং কালবেলা’র নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি ভুয়া ও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র

বিএনপি’র চট্টগ্রামে রোড মার্চের ছবিকে ঢাকার মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট গণজমায়েতের ছবি দাবি

সম্প্রতি, ‘ঢাকার রাজপথ এখন মুক্তিকামী জনতার দখলে’ শীর্ষক দাবিতে একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত এই ছবিটি ঢাকায় বিএনপি’র ২৮ অক্টোবরের সমাবেশকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট গণজমায়েতের নয় বরং এটি গত ০৫ অক্টোবর চট্টগ্রাম অনুষ্ঠিত বিএনপি’র রোডমার্চের ছবি।

অনুসন্ধানের শুরুতে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে বিএনপি’র ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে গত ০৫ অক্টোবর ‘চট্টগ্রামে সমাপনী পথসভায় জনতার ঢল’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি পোস্টে কিছু ছবি খুঁজে পাওয়া যায়।

উল্লেখিত পোস্টটির বিস্তারিত বিবরণীতে বলা হয়, “৫ অক্টোবর ২০২৩, বৃহস্পতিবার অবৈধ সরকারের পদত্যাগ ও সংসদ বিলুপ্ত করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির লক্ষ্যে ১ দফা দাবি আদায়ে কুমিল্লা-ফেনী-চট্টগ্রাম রোড মার্চ এর কাজীর দেউড়ী মোড়ে সমাপনী পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।”

এই ছবিগুলোর মধ্যকার একটি ছবির সাথে বিএনপি’র ২৮ অক্টোবরের সমাবেশকে কেন্দ্র করে ঢাকার জনতার ঢল দাবিতে প্রচারিত ছবিটির হুবহু মিল পাওয়া যায়।

অর্থাৎ, আলোচিত এই ছবিটি ঢাকায় বিএনপি’র ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট গণজমায়েতের নয়।

মূলত, গত ০৫ অক্টোবর সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্ত করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন এবং দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির লক্ষ্যে ১ দফা দাবি আদায়ে চট্টগ্রামে বিএনপি’র রোড মার্চ অনুষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে সেই রোড মার্চের একটি ছবিকে বিএনপি’র ২৮ অক্টোবরের সমাবেশকে কেন্দ্র করে ঢাকার রাজপথে জনতার ঢলের দৃশ্য ছবি দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়।

প্রসঙ্গত, গতকাল ২৮ অক্টোবর সরকার পতনের এক দফা দাবি আদায়ে ঢাকায় মহাসমাবেশ করে বিএনপি।

উল্লেখ্য, বিএনপি’র ২৮ অক্টোবরে সমাবেশের ঘটনায় বিভিন্ন ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে একাধিক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কিছু প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, গত ০৫ অক্টোবর চট্টগ্রাম অনুষ্ঠিত বিএনপি’র রোডমার্চ কর্মসূচির ছবিকে ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে ঢাকার রাজপথে জনতার ঢলের দৃশ্য দাবিতে ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

  • BNP Verified Facebook Page: Post
  • Rumor Scanner’s Own Analysis

প্রথম আলো’র ফটোকার্ড বিকৃত করে সমাবেশ স্থগিতের বিষয়ে মির্জা ফখরুলের নামে ভুয়া মন্তব্য প্রচার

সম্প্রতি, ‘কারো ভয়ে সমাবেশ স্থগিত করা হয়নি; হঠাৎ বুকে প্রচন্ড ব্যাথা অনুভব করায় সমাবেশ স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছি’ শীর্ষক মন্তব্যকে বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মন্তব্য দাবিতে দেশের মূলধারার গণমাধ্যম প্রথম আলো’র ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

মির্জা ফখরুল

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম ‘কারো ভয়ে সমাবেশ স্থগিত করা হয়নি; হঠাৎ বুকে প্রচন্ড ব্যাথা অনুভব করায় সমাবেশ স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছি’ শীর্ষক কোনো মন্তব্য করেননি এবং প্রথম আলোও উক্ত তথ্য সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি বরং আলোচিত এই ফটোকার্ডটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে প্রথম আলো’র ফটোকার্ডের ডিজাইন সম্বলিত ছবিটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। এতে এই সংবাদটি প্রচারের তারিখ হিসেবে ২৮ অক্টোবরের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

Screenshot: Facebook Claim Post

দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে ফটোকার্ডটিতে থাকা লোগো ও তারিখের সূত্র ধরে প্রথম আলো’র ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে গত ২৮ অক্টোবর বা তার আগে পরে উক্ত শিরোনাম বা তথ্য সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া, প্রথম আলো’র ওয়েবসাইট, ইউটিউব চ্যানেল বা অন্যকোনো গণমাধ্যমেও উক্ত দাবির বিষয়ে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

তবে প্রথম আলো’র বিনোদন শাখা হতে প্রকাশিত ফটোকার্ডের ডিজাইনের সাথে আলোচিত ফটোকার্ডটির ডিজাইনের মিল খুঁজে পাওয়া যায়। গণমাধ্যমটির বিনোদন শাখা হতে প্রকাশিত ফটোকার্ডের ন্যায় আলোচিত ফটোকার্ডটির ব্যাকগ্রাউন্ডেও পেল পিংক ও ল্যাভেন্ডার পিংক রঙের একাধিক শেড রয়েছে। ধারণা করা যায়, প্রথম আলোর’র বিনোদন শাখার একটি ফটোকার্ড সম্পাদনার মাধ্যমে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে। তাছাড়া, আলোচিত ফটোকার্ডটির টেক্সট ফন্টের সাথে প্রথম আলো’র ফেসবুক পেজে প্রচারিত অন্যান্য ফটোকার্ডের টেক্সট ফন্টের ভিন্নতা রয়েছে।

Photocard Comparison by Rumor Scanner

অর্থাৎ, আলোচিত দাবিতে প্রথম আলো কোনো ফটোকার্ড কিংবা সংবাদ প্রকাশ করেনি।

পাশাপাশি, মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো গ্রহণযোগ্য সূত্রে বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুলের এমন কোনো মন্তব্যের দাবির সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মূলত, গতকাল ২৮ অক্টোবর সরকার পতনের এক দফা দাবিতে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপি মহাসমাবেশের আয়োজন করে। পরবর্তীতে সংঘর্ষ ও ভাঙচুরের ঘটনার জের ধরে সেই সমাবেশ স্থগিত করে দলটির পক্ষ থেকে ২৯ অক্টোবর সারাদেশে হরতালের ডাক দেওয়া হয়। পরবর্তীতে ‘কারো ভয়ে সমাবেশ স্থগিত করা হয়নি; হঠাৎ বুকে প্রচন্ড ব্যাথা অনুভব করায় সমাবেশ স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছি’ শীর্ষক শিরোনামে একটি তথ্য বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মন্তব্য দাবিতে দেশের মূলধারার গণমাধ্যম প্রথম আলো’র ফটোকার্ডের ডিজাইন সম্বলিত একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়। তবে অনুসন্ধানে প্রথম আলো’র ফেসবুক পেজ কিংবা অন্যান্য প্ল্যাটফর্মে উক্ত তথ্য সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া, মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো সূত্রে আলোচিত দাবিটির সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, বিএনপি’র ২৮ অক্টোবরে সমাবেশের ঘটনায় বিভিন্ন ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে একাধিক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কিছু প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, মির্জা ফখরুল ‘কারো ভয়ে সমাবেশ স্থগিত করা হয়নি; হঠাৎ বুকে প্রচন্ড ব্যাথা অনুভব করায় সমাবেশ স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছি’ শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং উক্ত দাবিতে প্রথম আলো’র নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি ভুয়া ও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র