Home Blog Page 564

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত রুশো কাজী মেটার থ্রেডস এর সহপ্রতিষ্ঠাতা নন

সম্প্রতি বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত রুশো কাজীকে মেটার থ্রেডস এর সহপ্রতিষ্ঠাতা উল্লেখ করে কতিপয় গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

বাংলাদেশি গণমাধ্যমে প্রকাশিত এমনকিছু প্রতিবেদন দেখুন প্রথম আলো, মানবজমিন, ঢাকা ট্রিবিউন, বাহান্ন নিউজ

ভারতীয় গণমাধ্যম দ্য স্টেটসম্যানে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন এখানে

গণমাধ্যমের ফেসবুক পেজ এবং অন্যান্য অ্যাকাউন্টে প্রচারিত এমনকিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত রুশো কাজী মেটার থ্রেডসের সহপ্রতিষ্ঠাতা নন বরং তিনি থ্রেডস ডট কম (threads.com) নামের ভিন্ন একটি অ্যাপের সহপ্রতিষ্ঠাতা।

অনুসন্ধানের শুরুতে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে The Daily Star এর অনলাইন সংস্করণে গত ০৯ জুলাই ‘Meet Rousseau Kazi, the Bangladeshi-born CEO and Co-Founder of the other ‘Threads’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: The Daily Star

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত রুশো কাজীর অ্যাপ থ্রেডস এর সাথে মেটার থ্রেডস এর কোনো সম্পর্ক নেই। টুইটারের আদলে তৈরি মেটার থ্রেডস এর ডোমেইন ডট নেট(threads.net), অন্যদিকে রুশোর তৈরি অ্যাপ থ্রেডস এর ডোমেইন ডট কম(threads.com)। অর্থাৎ আগে থেকেই রুশোর তৈরি অ্যাপ থ্রেডস চালু থাকার কারণে মেটার থ্রেডস ডট কম ডোমেইনটি না পেয়ে ডট নেট ডোমেইন ব্যবহার করছে।

পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে থ্রেডস ডট কম এর ভেরিফাইড টুইটার অ্যাকাউন্ট খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Threads on Twitter

দুই থ্রেডস নিয়ে নেটিজেনরা যাতে বিভ্রান্তিতে না পড়ে সেজন্য এই টুইটার অ্যাকাউন্টের বায়োতে উল্লেখ করা হয়েছে  এটি মেটার থ্রেডস নয়। এছাড়াও এটি স্ল্যাক নামের অপর একটি এপ্লিকেশনের রিপ্লেসমেন্ট।

পাশাপাশি, মেটার থ্রেডস এবং রুশোর তৈরি অ্যাপ থ্রেডস এর লোগোর মধ্যেও পার্থক্য রয়েছে। টুইটারের আদলে তৈরি মেটার থ্রেডস থেকে টুইটারের মতো কাউকে সরাসরি মেসেজ পাঠানোর সুযোগ নেই। অন্যদিকে, রুশো কাজীর তৈরি অ্যাপ থ্রেডস থেকে ব্যবহারকারীদের জন্য সরাসরি মেসেজ পাঠানোর সুযোগ রয়েছে।

অর্থাৎ, উপরোক্ত তথ্য উপাত্ত পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, রুশোর তৈরি অ্যাপ থ্রেডস এর সাথে মেটার থ্রেডস এর মধ্যে বেশকিছু পার্থক্য রয়েছে এবং এগুলো সম্পূর্ণ আলাদা দুইটি অ্যাপ।

মূলত, সম্প্রতি ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান মেটার নতুন অ্যাপ থ্রেডস এর সহপ্রতিষ্ঠাতা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত রুশো কাজী শীর্ষক দাবিতে কয়েকটি গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচার করা হয়। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, রুশো কাজী মূলত থ্রেডস নামের ভিন্ন একটি অ্যাপের সহপ্রতিষ্ঠাতা এবং এই অ্যাপটি মেটার সাথে সংশ্লিষ্ট নয়। তাছাড়া রুশোর তৈরি অ্যাপ থ্রেডস এর ডোমেইন ডট কম হলেও মেটার থ্রেডস এর ডোমেইন ডট নেট। এছাড়াও এই দুই এপ্লিকেশনের মধ্যে বেশকিছু পার্থক্য রয়েছে। 

উল্লেখ্য, রুশো কাজী ২০১৭ সালের এপ্রিল থেকে থ্রেডস এর কো-ফাউন্ডার এবং সিইও হিসেবে কর্মরত আছেন। এছাড়াও তিনি প্রায় ছয় বছর (২০১১ – ২০১৭) ফেসবুকের সাথে কাজ করেছেন। রুশোর তৈরি অ্যাপ থ্রেডস মূলত কর্মক্ষেত্রে অভ্যন্তরীণ যোগাযোগের জন্য ব্যবহৃত সফটওয়্যার স্ল্যাকের আদলে সেবা পরিচালনা করে থাকে। ইতিমধ্যেই ১ কোটি ৫ লাখ ডলারের বিনিয়োগও পেয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

সুতরাং, গণমাধ্যমে থ্রেডস ডট কম এর সহপ্রতিষ্ঠাতা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত রুশো কাজীকে মেটার থ্রেডস ডট নেট এর সহপ্রতিষ্ঠাতা দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

কোরিয়ান গায়িকা মৃত্যুর ঘটনায় গণমাধ্যমে জীবিত অভিনেত্রীর ছবি প্রচার

গত ০৬ জুলাই বাথরুম থেকে কোরিয়ান গায়িকা লি সাং ইউনের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় বাংলাদেশের একাধিক গণমাধ্যমের প্রকাশিত প্রতিবেদনে গায়িকা লি সাং ইউনের ছবি দাবিতে একজন নারীর ছবি ব্যবহার করা হয়েছে।

এই ছবিটি ব্যবহার করে  গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন আরটিভিইনকিলাব, ঢাকা টাইমস, চ্যানেল আই, সংবাদ প্রতিদিন, জনবানী, বাংলা নিউজ২৪, দেশ রূপান্তর, বায়ান্ন নিউজ এবং দৈনিক করতোয়া। 

ভিন্ন আরেকটি ছবি ব্যবহার করে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন বহুমাত্রিক.কম

এবিষয়ে গণমাধ্যমের ফেসবুক পেজে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, কোরিয়ান গায়িকার মৃত্যুর ঘটনায় প্রচারিত সংবাদে ব্যবহৃত ছবিটি কোরিয়ান গায়িকা লি সাং ইউনের নয় বরং এটি কোরিয়ান অভিনেত্রী সিও ইয়াজির ছবি, যিনি এখনো জীবিত আছেন।

অনুসন্ধানের শুরুতে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে মৃত গায়িকার ছবি দাবিতে ব্যবহৃত ছবিটির প্রকৃত পরিচয় পাওয়া যায়।

Screenshot: South China Morning Post

হংকং ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম South China Morning Post এর ওয়েবসাইটে ২০২১ সালের ১৬ এপ্রিল প্রকাশিত  প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ছবিতে প্রদর্শিত ঐ নারীর নাম সিও ইয়াজি।

পরবর্তী অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে বিনোদন ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম PinkVilla এর ওয়েবসাইটে গত ০৭ জুলাই ‘Korean Soprano singer Lee Sang Eun found dead in washroom right before performance’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: PinkVilla

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, কোরিয়ান গায়িকা লি সাং ইউন ৪৬ বছর বয়সে গিমচন কালচার অ্যান্ড আর্ট সেন্টারে ০৬ জুলাই তার লাইভ পারফরম্যান্সের আগে মারা যান।

এছাড়াও কোরিয়ান গণমাধ্যম Koreaboo এর ওয়েবসাইটে ‘Singer Lee Sang Eun Found Dead In Bathroom Minutes Before Performance’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Koreaboo

এই প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদন দুইটিতে ব্যবহৃত ছবির সঙ্গে বাংলাদেশি গণমাধ্যমে ব্যবহৃত ছবির অমিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

Image Comparison by Rumor Scanner

অর্থাৎ, কোরিয়ান গায়িকা লি সাং ইউনের মৃত্যুর ঘটনায় গণমাধ্যমে যে ছবিটি ব্যবহার করা হয়েছে, সেটি দেশটির জীবিত অভিনেত্রী সিও ইয়াজির ছবি। 

গায়িকা হাসিওর ছবিকে লি সাং ইউনের ছবি দাবিতে প্রচার

কোরিয়ান গায়িকা লি সাং ইউনের মৃত্যুর ঘটনায় গণমাধ্যমে দেশটির জীবিত অভিনেত্রী সিও ইয়াজির ছবির পাশাপাশি চলতি বছরের গত ১৬ মে মারা যাওয়া কোরিয়ান আরেক গায়িকা হাসিওর ছবি ব্যবহার করে প্রতিবেদন প্রকাশ করে বহুমাত্রিক.কম নামের  একটি অনলাইন পোর্টাল। 

Image Collage: Rumor Scanner 

হাসিওর মৃত্যু নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন  Another singer dies: The imperfect world surrounding the ‘perfect idols’ of K-pop (First Post), South Korean Singer Haesoo, 29, Found Dead, Police Suspect Suicide (NDTV).

মূলত, গত ৬ জুলাই, বাথরুম থেকে কোরিয়ান গায়িকা লি সাং ইউনের লাশ উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে। তবে অনুসন্ধানে দেখা যায়, কতিপয় দেশীয় গণমাধ্যমে মৃত গায়িকা লি সাং ইউনের ছবির পরিবর্তে ভিন্ন এক কোরিয়ান অভিনেত্রী সিও ইয়াজির ছবি ব্যবহার করা হয়েছে, যিনি এখনো জীবিত আছেন।

উল্লেখ্য, পূর্বেও  গণমাধ্যমে ব্যক্তির ভুল ছবি  ব্যবহার করে সংবাদ প্রকাশ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন একটি প্রতিবেদন দেখুন কোরিয়ার জনপ্রিয় শিল্পী জুটির বিয়ের ছবি দাবিতে গণমাধ্যমে ভুল ছবি প্রচার 

সুতরাং, গণমাধ্যমে মৃত গায়িকা লি সাং ইউনের ছবি দাবিতে অভিনেত্রী সিও ইয়াজির একটি ছবি ব্যবহার করা হয়েছে ; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের মার্কিন ভিসা বাতিলের দাবিটি মিথ্যা

সম্প্রতি, “আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের ভিসা বাতিল করেছে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট” শীর্ষক একটি দাবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমনকিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হকের ভিসা বাতিল করেনি বরং কোনো গ্রহণযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই উক্ত ভিত্তিহীন দাবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। 

মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হকের ভিসা বাতিল করেছে কি না- তার প্রাথমিক অনুসন্ধানে কি-ওয়ার্ড সার্চ পদ্ধতি ব্যবহার করে, গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোনো গ্রহণযোগ্য সূত্রে উক্ত দাবি সংশ্লিষ্ট কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

Screenshot: Google 

অনুসন্ধানের মাধ্যমে দৈনিক ডেইলি স্টারের অনলাইন সংস্করণে গত ২৫ মে “ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বেন কারা, যা জানাল যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস” শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িত বলে মনে করা যে কোনো বাংলাদেশি নাগরিকের ভিসা প্রদানে বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে। 

Screenshot: Daily Star 

পরবর্তীতে তথ্যটি নিয়ে অধিকতর অনুসন্ধানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট বা রাজস্ব বিভাগের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের Sanction Programs and Information সেকশনে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হকের ভিসা বাতিল বা কালো তালিকায় অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

Screenshot: U.S.Department Of the Treasury

পাশাপাশি সম্প্রতি বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে ভিসা নীতি ঘোষণা করা মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিনকেনের ভ্যারিফাইড টুইটার অ্যাকাউন্ট ঘুরেও আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হকের মার্কিন ভিসা বাতিল সম্পর্কে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

Screenshot from Twitter

সাধারণত, যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক কোন দেশের সরকারি উর্ধতন কর্মকর্তাদের উপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেয়া হলে অ্যান্থনি ব্লিনকেন সে বিষয় নিয়ে টুইট প্রকাশ করে থাকেন।

পাশাপাশি, মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজওয়েবসাইট পর্যবেক্ষণ করেও আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হকের ভিসা বাতিলের বিষয়ে কোনো তথ্য পায়নি রিউমর স্ক্যানার টিম।

কি আছে যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক আরোপিত নতুন ভিসা নীতিতে? 

অনুসন্ধানে বাংলাদেশস্থ যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের ওয়েবসাইটে ‘বাংলাদেশের নির্বাচনের সমর্থনে প্রণীত নতুন ভিসানীতি সম্পর্কে সচরাচর জিজ্ঞাস্য‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: US Embassy Bangladesh

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িত বলে মনে করা যে কোনো বাংলাদেশি নাগরিকের ভিসা প্রদানে বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে। প্রতিবেদনটি থেকে আরও জানা যায়, নতুন এই ভিসা নীতিমালার আওতায় এখন পর্যন্ত কোনো ভিসায় বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়নি।

Screenshot: US Embassy Bangladesh 

মূলত, গত ২৫ মে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের লক্ষ্যে নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র নতুন এই ভিসা নীতির আওতায় এখনো কাউকে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়নি। কিন্তু, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হকের মার্কিন ভিসা বাতিল করেছে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট এমন একটি তথ্য প্রচার করা হচ্ছে। অনুসন্ধানে দেখা যায়, ফেসবুকে যেসব পোস্টে উল্লিখিত দাবিতে প্রচারিত হচ্ছে সেসব পোস্টে উক্ত দাবির বিষয়ে কোনো ধরনের সুনির্দিষ্ট তথ্যসূত্র উল্লেখ নেই। অর্থাৎ, তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই ছাড়াই আনিসুল হকের ভিসা বাতিল করেছে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট শীর্ষক ভিত্তিহীন দাবিটি ফেসবুকে প্রচারিত হচ্ছে।

উল্লেখ্য, পূর্বেও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস এবং ডিএমপি’র গুলশান থানার ওসির মার্কিন ভিসা বাতিল এর  ভুল দাবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে সেগুলো শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। প্রতিবেদন গুলো দেখুন এখানে এবং এখানে

সুতরাং, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হকের ভিসা বাতিল করেছে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট শীর্ষক দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানকে দুবাই থেকে ফেরত পাঠানোর দাবিটি মিথ্যা 

সম্প্রতি ‘যুক্তরাষ্ট্রে যেতে পারলেন না সালমান এফ রহমান. আরব আমিরাত থেকে ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছে ইউএস ইমিগ্রেশন!’ শীর্ষক দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

 ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ইউটিউবে প্রচারিত এমন একটি ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

টিকটকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা ও সংসদ সদস্য সালমান এফ রহমানকে আরব আমিরাত থেকে ইউএস ইমিগ্রেশনের ফেরত পাঠানো ও তার যুক্তরাষ্ট্রে না যেতে পারার দাবিতে প্রচারিত তথ্যগুলো ভুয়া। প্রকৃতপক্ষে কোনো ধরনের তথ্যসূত্র ছাড়াই সম্পূর্ণ ভিত্তিহীনভাবে  সালমান এফ রহমানের বিষয়ে উক্ত দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে।

গুজবের সূত্রপাত

দাবিটির  সত্যতা যাচাইয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত পোস্টগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, উক্ত পোস্টগুলোতে তথ্যসূত্র হিসেবে UK Kashba TV নামে একটি সূত্র উল্লেখ করা হয়েছে।

এসব পোস্টের সূত্রে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইউটিউবে  UK Kashba TV নামের একটি চ্যানেলে গত ৩ জুলাই ‘দুবাই হয়ে আমেরিকা যাইতে চাইলে॥দুবাই ইমিগ্রেশন আটকে দেয়॥ সালমান এফ রহমান কে (আর্কাইভ)’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: UK Kashba TV

ভিডিওটির শুরুতেই উপস্থাপক বলেন, ‘গুরুত্বপূর্ণ একটি ব্রেকিং নিউজ নিয়ে এসেছি। হজ করে দুবাই হয়ে আমেরিকা যাওয়ার পথে দুবাইতে ইমিগ্রেশন পুলিশ বেক্সিমকোর মালিক এফ সালমান রহমানকে আটকে দিয়েছে বলে আমাদের কাছে গভীর জায়গা থেকে আমাদের কাছে একটি তথ্য এসেছে। আমরা আশা করছি এই তথ্যটি ভুল হবে না, সঠিক হবে।’

অর্থাৎ সালমান এফ রহমানকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত পোস্টগুলোর সূত্র  UK Kashba TV ও তার দাবির পক্ষে সুনিশ্চিত কোনো তথ্য উপস্থাপন করতে না পারলেও তাকে সূত্র উল্লেখ করেই পরবর্তীতে সালমান এফ রহমানকে দুবাইতে ইমিগ্রেশন পুলিশ আটকে দেওয়ার দাবিটি প্রচার করা হয়। 

এছাড়া দাবিটি নিয়ে রিউমর স্ক্যানার টিমের অধিকতর অনুসন্ধানেও জাতীয় ও আন্তর্জাতিক কোনো গণমাধ্যমে এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। সালমান এফ রহমান যেহেতু প্রধানমন্ত্রীর একজন উপদেষ্টা ও বাংলাদেশের একজন চলমান সংসদ সদস্য, তাই স্বাভাবিকভাবেই দুবাইতে ইমিগ্রেশন পুলিশ কর্তৃক তাকে আটকে দেওয়ার ঘটনা ঘটলে তা নিয়ে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন হওয়ার বিষয়টি অনুমেয়। 

সালমান এফ রহমান প্রকৃতপক্ষে কোথায় ছিলেন?

রিউমর স্ক্যানার টিম দাবিটি নিয়ে সত্যতা যাচাইয়ের এই পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের অবস্থান নিয়ে অনুসন্ধান করে। অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত ২৩ জুন সৌদি সরকারের রাজকীয় অতিথি হিসেবে হজ পালন করতে সৌদি আরব যান রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন। রাষ্ট্রপতির এই হজযাত্রায় তার সফরসঙ্গী হিসেবে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান।

Screenshot: Independent TV

রিউমর স্ক্যানার টিম পরবর্তীতে সৌদি আরবে সালমান এফ রহমানের বিভিন্ন কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করে। এতে দেখা যায়, গত ২৮ জুন সালমান এফ রহমান তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ‘With Hon’ble President Mohommad Shahabuddin after performing Hajj on 10th Zilhaj in Royal Guest Palace Mina.’ শীর্ষক দাবিতে একটি পোস্ট দেন।  

Screenshot: Salman F Rahman Facebook Post

পোস্টটির বিস্তারিত বিবরণীতে দেখা যায়, ছবিটি হজ পালন শেষে গত ১০ জিলহজ (বাংলাদেশ সময় ২৮ জুন) মিনার রয়েল গেস্ট প্যালেসে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির সাথে তোলা। 

এটি ছাড়াও সালমান এফ রহমানের ফেসবুক পেজেই গত ৩ জুলাই ‘Honoured to meet HRH Mohammed Bin Salman in Mina Palace on 11th Zilhaj’ শীর্ষক আরও একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Salman F Rahman Facebook Post 

এই পোস্টটির বিস্তারিত বিবরণী থেকে জানা যায়, এটি আরবি ১১ জিলহজ (বাংলাদেশ সময় ২৯ জুন) সৌদি যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমানের সাথে সাক্ষাতের ছবি।

পরবর্তীতে আরও অনুসন্ধানে পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি ড. আরিফ আল্ভীর ভেরিফায়েড টুইটার অ্যাকাউন্টে গত ২ জুলাই ‘Good meetings with Bangladesh President Mr Shahabuddin in Mecca, Mina & Madina.’ শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি টুইট থেকে জানা যায়, 

Screenshot: Pakistan’s President Twitt

পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি ড. আরিফ আলভী বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করেন এবং এই সময় সেখানে সালমান এফ রহমানও উপস্থিত ছিলেন। 

অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা ও সংসদ সদস্য সালমান এফ রহমান রাষ্ট্রপতির সফরসঙ্গী হিসেবে হজের পুরো সময়টাই তার সঙ্গে ছিলেন এবং একই সঙ্গে দেশে ফিরে আসেন। এ থেকেই প্রতীয়মান হয় যে,দুবাইতে ইমিগ্রেশন পুলিশ কর্তৃক সালমান এফ রহমানকে আটকে দেওয়ার দাবিটি ভিত্তিহীন। 

Screenshot: Bangla Vision Youtube

পাশাপাশি এই প্রতিবেদন লেখার সময়েই ফেসবুকে আরেকটি দাবি (আর্কাইভ) ছড়িয়ে পড়ে যে, ‘দুবাই নয় আবুধাবি থেকেই ইতিহাদের যুক্তরাষ্ট্র গামী ফ্লাইটের গেট থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হয় সালমান এই রহমানকে. উনি ইতিহাদেই হজ্জ্ব করতে গেছিলেন।’

Screenshot: Facebook claim post

তবে অনুসন্ধানে দেখা যায়, সালমান এফ রহমান হজে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ভিভিআইপি উড়োজাহাজ (ফ্লাইট নং: বিজি ৩৩১) এ  রাষ্ট্রপতির সফরসঙ্গী হিসেবে গত ২৩ জুন হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করেন। 

Screenshot: Dhaka Times

এ নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত একাধিক প্রতিবেদন দেখুন হজ পালনে সৌদি আরব গেছেন রাষ্ট্রপতি (এনটিভি), হজে গেলেন রাষ্ট্রপতি (আরটিভি)। 

মূলত, গত ২৩ জুন সৌদি সরকারের রাজকীয় অতিথি হিসেবে হজ পালন করতে রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন। রাষ্ট্রপতির এই হজযাত্রায় তার সফরসঙ্গী হিসেবে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে যে, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ও সংসদ সদস্য সালমান এফ রহমান হজ করে দুবাই হয়ে আমেরিকা যাওয়ার পথে দুবাইতে ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে আটকে দেয়। তবে অনুসন্ধানে দেখা যায়, সালমান এফ রহমানকে দুবাইতে ইমিগ্রেশন পুলিশ কর্তৃক আটকে দেওয়ার দাবিতে প্রচারিত তথ্যগুলো কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্যসূত্র ছাড়াই সম্পূর্ণ ভিত্তিহীনভাবে প্রচার করা হচ্ছে।

সুতরাং, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা ও সংসদ সদস্য সালমান এফ রহমানকে আরব আমিরাত থেকে ইউএস ইমিগ্রেশনের ফেরত পাঠানো ও তার যুক্তরাষ্ট্রে না যেতে পারার দাবিতে প্রচারিত তথ্যগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ইরানি যুবক রেজা পারাসতেশ মেসি সেজে ২৩ নারীর সাথে শারীরিক সম্পর্ক করেননি

সম্প্রতি, ‘ফেইক মেসির কর্মকাণ্ড‘ শীর্ষক শিরোনামে একটি ডিজিটাল ব্যানার সম্বলিত তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমনকিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে, (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

যা দাবি করা হচ্ছে

ফেসবুকে প্রচারিত ডিজিটাল ব্যানারটিতে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালের দিকে ইরানে রেজা পারাসতেশ নামের এক ব্যক্তির আবির্ভাব ঘটে, যে কিনা দেখতে লিওনেল মেসির মতো। সে নিজেকে লিওনেল মেসি দাবী করে ২৩ জন নারীর সাথে শারীরিক সম্পর্কও করেছিলো। সেই নারীরা ভেবেছিলেন মেসির সাথে এসব কাজ করছেন! 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ফুটবল তারকা লিওনেল মেসির মতো দেখতে ইরানি যুবক রেজা পারাসতেশ নিজেকে মেসি দাবি করে ২৩ জন  নারীর সাথে শারীরিক সম্পর্ক করেননি বরং কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই শুধুমাত্র একটি প্যারোডি টুইটার অ্যাকাউন্টে ২০১৯ সালে প্রকাশিত এক টুইটের পর এই দাবিটি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে।

গুজবের সূত্রপাত 

অনুসন্ধানের শুরুতে উক্ত দাবিতে প্রচারিত পোস্টগুলো পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। সেখানে সোর্স হিসেবে Marca নামটি উল্লেখ পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook

পরবর্তী অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে স্প্যানিশ স্পোর্টস ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম Marca এর ওয়েবসাইটে ২০১৯ সালের ২৫ জুন ‘The Iranian who pretended to be Messi in order to sleep with 23 women’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Marca

প্রতিবেদনে ইরানি যুবক রেজা পারাসতেশ মেসি সেজে ২৩ জন নারীর সাথে শারীরিক সম্পর্ক করেছে দাবি করা হলেও সেখানে কোনো সূত্র বা সংশ্লিষ্ট কারো বক্তব্য উল্লেখ করা হয়নি। 

পরবর্তীতে রিউমর স্ক্যানার টিমের অধিকতর অনুসন্ধানে তুরস্কের ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান Teyit এর ওয়েবসাইটে ২০১৯ সালের ২৭ জুন ‘Did Messi loolalike Reza Parastesh trick 23 women into sleeping with him?’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Teyit

প্রতিবেদনে এবিষয়ে প্রথম ছড়ানো দাবি হিসেবে Insolite TV নামের একটি প্যারোডি টুইটার অ্যাকাউন্টের কথা বলা হয়। তবে বর্তমানে টুইটারে এই অ্যাকাউন্টটি সক্রিয় নেই।

২০১৯ সালের ২৩ জুন Insolite TV নামের টুইটার অ্যাকাউন্টে প্রচারিত দাবির স্ক্রিনশট দেখুন এখানে

Screenshot: Twitter

Teyit এর প্রতিবেদন থেকে আরও জানা যায়, Insolite TV নামের এই টুইটার অ্যাকাউন্টটি এর আগেও বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বিখ্যাত ব্যক্তিদেরকে নিয়ে প্যারোডিধর্মী টুইট প্রচার করেছে। মেসির মতো দেখতে ইরানি যুবক রেজা পারাসতেশ নিজেকে মেসি দাবি করে ২৩ জন নারীর সাথে শারীরিক সম্পর্ক নিয়ে প্রচারিত টুইটিও তারই অংশ।

উক্ত দাবির বিষয়ে মেসির মত দেখতে ইরানি যুবক রেজা পারাসতেশ এর বক্তব্য

প্রচারিত দাবির বিষয়ে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে এই ব্যক্তির ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টে ২০১৯ সালের ২৩ জুন প্রকাশিত একটি ভিডিও পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot- Instagram

উক্ত ভিডিও বার্তায় তিনি তার বিরুদ্ধে প্রচারিত বিষয়টিকে অস্বীকার করেন এবং এতে তিনি এবং তার পরিবারের সম্মানহানী হওয়ার বিষয়টিও উল্লেখ করেন। তিনি এর বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেবেন বলেও জানান। 

পাশাপাশি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো মাধ্যমে ইরানি যুবক রেজা পারাসতশের বিরুদ্ধে মেসি সেজে নারীদের সাথে প্রতারণার বিষয়ে ওই কথিত নারীদের কেউ অভিযোগ করার কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

অর্থাৎ, এই দাবিটি তথ্যসূত্র ছাড়াই দীর্ঘদিন ধরে প্রচার হয়ে আসছে এবং এই দাবির স্বপক্ষে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

মূলত, সম্প্রতি ফুটবল তারকা লিওনেল মেসির মতো দেখতে ইরানি যুবক রেজা পারাসতেশ নিজেকে মেসি দাবি করে ২৩ জন নারীর সাথে শারীরিক সম্পর্ক করেছিল দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়। তবে অনুসন্ধানে এই দাবির কোনো সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি এবং কথিত অভিযোগ সংশ্লিষ্ট নারীদের কেউ রেজা পারাসতেশের বিষয়ে অভিযোগ করার কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাছাড়া জানা যায়, ২০১৯ সালের ২৩ জুন Insolite TV নামের একটি প্যারোডি টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে এই দাবিটি সর্বপ্রথম ছড়ায়। তবে বর্তমানে টুইটারে এই অ্যাকাউন্টটি সক্রিয় নেই। 

প্রসঙ্গত, মেসির সাথে চেহারার হুবহু মিল থাকায় সেলিব্রিটি তকমা পায় ইরানি যুবক রেজা পারাসতেশ। মেসি সেজে ভক্তদের সাথে সেলফি তোলা সহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে ২০১৭ সালে ব্যাপকভাবে আলোচনায় আসেন তিনি।

উল্লেখ্য, পূর্বেও মেসি সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমনকিছু প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, মেসির মতো দেখতে ইরানি যুবক রেজা পারাসতেশ নিজেকে মেসি দাবি করে ২৩ জন  নারীর সাথে শারীরিক সম্পর্ক করেছিল দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

অবসরকাণ্ডে তামিমকে প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণ ও গণমাধ্যমে ভুল খবর

গত ৬ জুলাই বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক তামিম ইকবালের অবসর ঘোষণার পর ‘তামিমকে আজ রাত ৮ টায় ডিনারের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী, তামিমও ঢাকার জন্য রওনা দিয়েছেন’ শীর্ষক একটি দাবি ফেসবুক সহ দেশীয় কতিপয় গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়।

গণমাধ্যমের ফেসবুক সহ অন্যান্য পেইজে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

উক্ত দাবিতে গতকাল দেশীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলো দেখুন জনকন্ঠ, বার্তা বাজার, বাংলাভিশন, দূরবীন নিউজ

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, অবসর ঘোষণার দিন রাতেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তামিমকে গণভবনে আমন্ত্রণ করেননি বরং সেদিন রাত ৮ টার পর থেকে রাত ১০ টারও বেশি সময় পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী সংসদ অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন। তাছাড়া, তামিম ইকবালও সেদিন তার চট্টগ্রামের বাসাতেই ছিলেন। প্রকৃতপক্ষে, পরবর্তীতে ৭ জুলাই (শুক্রবার) অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়ে কথা বলতে তামিমকে আমন্ত্রন জানান প্রধানমন্ত্রী এবং ঐদিন দুপরেই প্রধানমন্ত্রীর রাষ্ট্রীয় বাসভবন গণভবনে যান তামিম ইকবাল। তবে, বেশকিছু ফেসবুক পেজ থেকে কোনো প্রকার সূত্র উল্লেখ ছাড়াই গতদিন রাত ৮ টায় ডিনারের আমন্ত্রণ শীর্ষক দাবিটি প্রথম প্রচার করা হয়েছিল।

ভুয়া তথ্যের সূত্রপাত যেভাবে

দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে ফেসবুকের নিজস্ব মনিটরিং টুলস ব্যবহার করে ৬ জুলাই বিকাল ৫ টা ৪৫ মিনিটে খেলার পাতা নামে একটি ফেসবুক পেইজে এই সম্পর্কিত সম্ভাব্য প্রথম পোস্টটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Crowdtangle.com

তবে পোস্টটি বিশ্লেষণ করে এই দাবির পক্ষে কোনো সুনির্দিষ্ট সূত্র খুঁজে পাওয়া যায়নি। পোস্টটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

পরবর্তীতে উল্লিখিত দাবিতে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলো বিশ্লেষণ করেও উক্ত তথ্যের কোনো সূত্র খুঁজে পাওয়া যায়নি। বরং গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোর সাথে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচারিত বাক্যগুলোর প্রায় হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

Image Collage: Rumor Scanner 

এছাড়া প্রতিবেদনগুলোতে সূত্র হিসেবে ‘জানা গেছে।’ এমন অনির্ভরযোগ্য শব্দের উল্লেখ করা হয়েছে। অর্থাৎ গণমাধ্যমের প্রতিবেদনগুলো সূত্রহীন এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে গণমাধ্যমে প্রচারিত তথ্যগুলো সংগৃহীত। 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৬ জুলাই সন্ধ্যায় কোথায় ছিলেন? 

গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত পোস্টগুলোতে দাবি করা হয়, বৃহস্পতিবার রাত ৮ টায় প্রধানমন্ত্রী তামিমকে ডিনারের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। তবে অনুসন্ধানে দেখা যায়, ঐ সময় প্রধানমন্ত্রী একাদশ জাতীয় সংসদের ২৩ তম বাজেট অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন।

বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) সন্ধ্যা ৭ টা ৩২ মিনিটে শুরু হওয়া সংসদ অধিবেশনটির লাইভ দেখুন এখানে

Screenshot: BTV Facebook live

অর্থাৎ দেখা যাচ্ছে, বৃহস্পতিবার রাত ৮ টায় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক তামিম ইকবালকে ডিনারের আমন্ত্রণ জানানোর দাবি করা হলেও ঐ সময় প্রধানমন্ত্রীই স্বয়ং সংসদ অধিবেশনে ব্যস্ত ছিলেন। 

৬ জুলাই তামিমের অবস্থান সম্পর্কে যা জানা যাচ্ছে 

দাবিটি নিয়ে বিস্তারিত অনুসন্ধানের সময়ে গত ৬ জুলাই ৬ টা ৪৪ মিনিটে অনলাইন নিউজ পোর্টাল বিডিনিউজ২৪ এর স্পোর্টস এডিটর আরিফুল ইসলাম রনির একটি ফেসবুক পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Ariful Islam Roney facebook post

পোস্টটিতে তিনি লিখেন, ‘ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে, তামিমকে নাকি প্রাইম মিনিস্টার ডিনারে ডেকেছেন, তামিম নাকি রওনাও দিয়েছেন ঢাকার পথে… অথচ তামিম চট্টগ্রামে নিজের বাসায় আছেন… পরিবারের সঙ্গে আছেন…  কোনো কল পাননি, এরকম কিছুই হয়নি…ভাইরে ভাই, জাতি একখান আমরা।’

তার এই পোস্ট থেকে জানা যায়, তামিম ৬ জুলাই চট্টগ্রামেই অবস্থান করছিলেন।

বিষয়টি অধিকতর নিশ্চিতের জন্য রিউমর স্ক্যানার টিম দেশের মূলধারার গণমাধ্যমগুলোয় কর্মরত একাধিক ক্রীড়া সাংবাদিকের সাথে যোগাযোগ করে এবং তারা প্রত্যেকেই বিষয়টিকে গুজব হিসেবে উল্লেখ করে জানান, তামিম ৬ জুলাই চট্টগ্রামেই অবস্থান করছিলেন।

প্রধানমন্ত্রীর সাথে তামিমের সাক্ষাৎ

তামিম ইকবালের অবসর ঘোষণা নিয়ে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা আলোচনা-সমালোচনার মধ্যেই ৭ জুলাই একাধিক গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, তামিম ইকবালের সঙ্গে কথা বলতে তাকে গণভবনে ডেকেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে অবসর প্রত্যাহার তামিমের(সমকাল), প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে অবসরের সিদ্ধান্ত পাল্টালেন তামিম (ডেইলি স্টার), প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপে অবসর তুলে নিয়েছেন তামিম ইকবাল (বিবিসি বাংলা)।

Screenshot: BBC Bangla 

এসব প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, তামিম ইকবাল চট্টগ্রাম থেকে শুক্রবার (৭ জুলাই) সকালে ঢাকায় আসেন তামিম। পরবর্তীতে দুপুর ৩টার দিকে গণভবনে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা ও স্ত্রী আয়েশা ইকবালসহ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন এবং সেখানে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়। 

পাশাপাশি সাক্ষাৎ শেষে তামিম নিজেই গণমাধ্যমকে বলেন, ‘দুপুরবেলায় আমাকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তার বাসায় দাওয়াত করেছিলেন। উনার সঙ্গে অনেকক্ষণ আমরা আলোচনা করেছি। উনি আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন খেলায় ফিরে আসতে। আমি আমার অবসর এই মুহূর্তে তুলে নিচ্ছি।’

Screenshot: The Daily Star

তবে এই প্রতিবেদনগুলো বিশ্লেষণ করে এমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি, যার মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, তামিমকে এর আগের দিন অর্থাৎ ৬ জুলাই প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক রাত ৮ টায় ডিনারে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল এবং তিনি চট্টগ্রাম থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছেন। বরং প্রতিবেদনগুলো থেকে জানা যায়, তামিম ঢাকায় এসেছিলেন ৭ জুলাই, তার অবসরের ঘোষণা দেওয়ার পরেরদিন সকালে এবং তামিম নিজেও গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন তাকে দুপুরবেলা অর্থাৎ ৭ জুলাই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল।

এছাড়া অনুসন্ধানের মাধ্যমে জাতীয় দৈনিক সমকাল ও খেলাধুলা ভিত্তিক অনলাইন পোর্টাল বিডি ক্রিক টাইমেও ৬ জুলাই তামিমকে প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক রাত ৮ টায় ডিনারে আমন্ত্রণ জানানো এবং তার চট্টগ্রাম থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার বিষয়টিকে গুজব উল্লেখ করে প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাতের পরেই তামিম ইকবাল অবসর ভেঙে পুনরায় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার ঘোষণা দেন।

মূলত, বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রামের একটি হোটেলে ১৬ বছরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ারের ইতি টানার ঘোষণা দেন বাংলাদেশের ওয়ানডে দলের অধিনায়ক তামিম ইকবাল। এরই প্রেক্ষিতে বিকাল নাগাদ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি দাবি ছড়িয়ে পড়ে যে, বৃহস্পতিবার রাত আটটায় প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে ডিনার করার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই ডিনারে অংশগ্রহণ করতে চট্টগ্রাম ছেড়ে ঢাকার পথে রওনা হয়েছেন তামিম ইকবাল। তবে উক্ত দাবিটি কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্র ছাড়াই প্রথমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ও পরবর্তীতে গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তবে অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক তামিম ইকবালকে ডিনারের জন্য আমন্ত্রণের দাবিকৃত সময়ে তামিম চট্টগ্রামে ও প্রধানমন্ত্রী জাতীয় সংসদের অধিবেশনে ছিলেন।

সুতরাং, বাংলাদেশ ওয়ানডে ক্রিকেট দলের অধিনায়ক তামিম ইকবালের ক্রিকেট থেকে অবসর ঘোষণার দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক তামিমকে ডিনারের আমন্ত্রণ জানানো ও তামিমের চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা রওনা হওয়ার দাবিটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ঘূর্ণিঝড়ের সময় জাহাজগুলোকে সমুদ্রে পাঠানো হয় কেন?

0

বাংলাদেশের মতো দুর্যোগপ্রবণ দেশের জন্য ঘূর্ণিঝড় একটি আতঙ্কের নাম। ঘূর্ণিঝড়ের সময় বিভিন্ন ধরণের ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা থাকে। এ সময় জনজীবনের পাশাপাশি স্থাপনার বহু ক্ষয়ক্ষতির উদাহরণ খুঁজে পাওয়া যায়। ঘূর্ণিঝড়ের সময়টায় খেয়াল করলে হয়ত দেখবেন,   জাহাজগুলোকে সমুদ্রে পাঠিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু কেন এমন নির্দেশনা? 

সম্প্রতি বাংলাদেশে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় মোখা। সে সময় জাতীয় দৈনিক প্রথম আলো’র এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবিলার অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরের জেটি থেকে পণ্যবাহী ১৮টি জাহাজ সাগরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। 

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের ‘Cyclone Disaster Preparedness and post Cyclone Rehabilitation Plan-1992‘ অনুযায়ী ঘূর্ণিঝড়ের সিগন্যাল- ৫ এ গেলেই জেটি এবং চ্যানেলের সুরক্ষার্থে জেটির ভেতরের জাহাজগুলোকে বহির্নোঙরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

সোর্সঃ চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ

সিগন্যাল-৫ এ বলা আছে, বন্দর ছোট বা মাঝারি তীব্রতর এক সামুদ্রিক ঝড়ের কবলে পড়বে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কিলোমিটার। ঝড়টি বন্দরকে বাঁ দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

জেটি থেকে কেন জাহাজ সাগরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়, তা জানতে চাইলে বন্দর সচিব ওমর ফারুক প্রথম আলোকে বলেন, বড় জাহাজগুলো জেটিতে থাকলে ঢেউয়ের কারণে জেটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তবে সাগরে জাহাজগুলো ইঞ্জিন চালু রেখে ঢেউ বা ঝড়ের সঙ্গে ভারসাম্য রক্ষা করে ভাসতে পারে। এ জন্য সম্ভাব্য দুর্ঘটনা এড়াতে বড় জাহাজগুলো সাগরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। 

Screenshot: Prothom Alo

ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশন এর মতে জাহাজ সাগরে নিরাপদ থাকে। সুপার সাইক্লোন বা হেভিং টো হলে সাগরে জাহাজ ঢেউয়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলতে পারবে, ঢেউ চলে যাওয়ার পর পানিতে আছড়ে পড়বে কিন্তু ডুবে যাবে না। এতে জাহাজে থাকা মালামালও সুরক্ষিত থাকবে।

এসময় জাহাজগুলোকে সমুদ্রে পাঠিয়ে না দিলে বিপদ বাড়ে। কেননা বর্হিনোঙরে সাধারণ গভীরতা ১০ মিন্টার বা তার আশপাশে। জোয়ারের পানিতে জলোচ্ছ্বাসের ফলে পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পেলে তখন ঢেউয়ের ধাক্কায় জাহাজ উপরে উঠে যায়। পরবর্তীতে জাহাজ যখন নিচে নামে সেসময় জাহাজের তলা ফেটে যেতে পারে। ঘূর্ণিঝড়ের সময় জাহাজগুলোকে সমুদ্রে পাঠানোর এটা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কারণ। তাই এ আশঙ্কা এড়াতে সাধারণত বন্দর থেকে জাহাজগুলোকে সমুদ্রে ২ হাজার মিটার বা তার বেশি গভীরতায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

ঘূর্ণিঝড়ের সময় বন্দরের সুরক্ষার জন্যও জাহাজগুলোকে সমুদ্রে পাঠিয়ে দেওয়া হয়, যা চট্টগ্রাম বন্দর সচিব ওমর ফারুকের কথাতেই স্পষ্ট। বিশেষজ্ঞদের মতে, জাহাজ বন্দরে থাকলে তীব্র ঝড়ের ফলে সৃষ্ট ঢেউয়ে জাহাজগুলো একটা আরেকটার সাথে প্রচণ্ড ধাক্কা লেগে ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা  তৈরি হতে পারে। এতে বন্দরে রাখা বিভিন্ন প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের ক্ষতি হতে পারে।

এছাড়াও এতে বন্দরের জ্বালানি রাখার স্থান ক্ষতিগ্রস্ত হলে বড় ধরনের বিপদের আশঙ্কা তৈরি হয়। এতে বহুমানুষের প্রাণনাশের সম্ভবনা তৈরি হতে পারে।  

জাহাজ ঠিকমতো চলাচলের চ্যানেলের সুরক্ষা প্রয়োজন। প্রত্যেকটি বন্দরে জাহাজ চলাচলের জন্য আলাদা একটা চ্যানেল থাকে। ঘূর্ণিঝড়ের সময়ে জাহাজগুলো সমুদ্রে পাঠানোর আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হল, ঢেউ বা তীব্র গতির ঝড়ের ফলে বড় জাহাজ বন্দর চ্যানেলে ডুবে গেলে সেই জাহাজ না সরানো পর্যন্ত নৌযান চলাচল বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তাছাড়া পরবর্তীতে ডুবে যাওয়া জাহাজ সরানো বেশ ব্যয়বহুল এবং সময়সাপেক্ষ ব্যাপার।

২০১৭ সালে চট্রগ্রামের আনোয়ারা সৈকতে ক্রিস্টাল গোল্ড নামে একটি জাহাজ আটকা পড়ে। পরবর্তীতে সেটিকে আর সমুদ্রে নেওয়া সম্ভব হয়নি। ১৯২ মিটার দৈর্ঘ্যের বিশালাকৃতির জাহাজটি দীর্ঘদিন আটকে থাকায় প্রায় ৫০০ মিটার জায়গায় পলি জমে যায়৷ পরবর্তীতে ২০২১ সালে জাহাজটি কেটে ফেলা হয়।

Screenshot: The Daily Star

বিভিন্ন স্থাপনার সুরক্ষার ঘূর্ণিঝড়ের সময় জাহাজগুলোকে সমুদ্রে পাঠানো হয়। ঘূর্ণিঝড়ের সময় সমুদ্রে জাহাজ পাঠানো না হলে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। ১৯৯১ সালে ঘূর্ণিঝড়ের সময় কর্ণফুলী নদীর শাহ আমানত সেতুর মাঝখানের একটি বড় অংশ ভেঙে যায়। সেসময় একটি জাহাজের ধাক্কায় সেতুর মাঝখানের অংশ নদীতে বিলীন হয়ে যায়। 

Screenshot: bdnews24.com

এ ঘটনার পর থেকে বাংলাদেশে সমুদ্রে জাহাজ পাঠানোর নিয়মটি কঠোরভাবে পালন করা হয়। 

গভীর সমুদ্রে জাহাজ পাঠানো নিয়ে সংশ্লিষ্টরা কী বলছেন?

ঘূর্ণিঝড়ের সময় সমুদ্রে জাহাজগুলোকে পাঠানোর বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক রিউমর স্ক্যানারকে বলেন, “Cyclone Preparedness Plan অনুযায়ী আমরা যখন সাইক্লোন আসার পূর্বাভাস পাই তখন ওই প্ল্যান অনুযায়ী আমার সব রকম ব্যবস্থা নেই। সিগন্যাল বাড়লে কী রকম ব্যবস্থা নেওয়া হবে Cyclone Preparedness Plan এ সবকিছু বলা আছে। কখন জাহাজগুলো বের হয়ে যাবে, কখন জাহাজগুলো ফেরত আনবো সবকিছু। এখানে আমাদের কিছু নিজস্ব এলার্ট আছে। সিগন্যাল- ৫ এ গেলে আমরা জেটি এবং চ্যানেলের সুরক্ষার্থে জেটির ভেতরের জাহাজগুলোকে বহির্নোঙরে পাঠিয়ে দেই। যদি না পাঠাতাম, তাহলে ঝড়, তুফানের কারণে জাহাজগুলো জেটির ক্ষতি করবে নয়তো চ্যানেলে ডুবে গিয়ে চ্যানেল ব্লক হয়ে যেতে পারে।”

ঘূর্ণিঝড়ের সময় জাহাজগুলোকে সমুদ্রে পাঠানোর বিষয়ে জানতে চাইলে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কোস্টাল স্টাডিজ অ্যান্ড ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্টের চেয়ারম্যান ড. হাফিজ আশরাফুল হক রিউমর স্ক্যানারকে বলেন, ‘বড় বড় ওয়েভ বা ব্রেক ওয়াটার জোন থেকে ঢেউটা প্রডিউস হয়। আমরা যদি ব্রেক ওয়াটার জোনে গভীরে সমুদ্রে জাহাজগুলোকে পাঠিয়ে দিতে পারি তাহলে ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো যাবে। আমরা যদি জাহাজগুলোকে গভীর সমুদ্রে পাঠাই তাহলে জাহাজগুলো সেইফ থাকবে।’

এছাড়াও বিশেষজ্ঞদের মতে, বিশ্বের সব পণ্যবাহী বড় জাহাজে দুটি ইঞ্জিন কার্যকর থাকে। দুই ইঞ্জিন চালিয়ে অনেক বড় বড় ঢেউয়ের সাথে তাল মিলিয়ে জাহাজ চলাচল করতে পারে। নাবিকরা ঝড়ের সময় একটি বিশেষ কৌশলে নির্দিষ্ট গতিতে জাহাজ চালিয়ে ভারসাম্য বজায় রাখেন। এতে বন্দরের চেয়ে গভীর সমুদ্রে বেশি সুরক্ষিত থাকে জাহাজগুলো। 

বাংলাদেশ নৌবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন জাহিদুল করিম আকন্দ গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘বঙ্গোপসাগর বা আরব সাগরে ঘূর্ণিঝড়ে গতিপথের অঞ্চল ছাড়া সাধারণত গভীর সমুদ্রের চাইতে তীরবর্তী অঞ্চলের পানি বেশি ঝঞ্জাক্ষুব্ধ হয়। এত বড় জাহাজগুলো জেটিতে বাঁধা থাকলে প্রচণ্ড ঝড়ে একটি আরেকটির ওপর আছড়ে পড়ে বা ধাক্কা খেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। শুধু জাহাজই নয়, শক্তিশালী এই ধাক্কায় বন্দরেরও ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে। এছাড়া বন্দরের চ্যানেলে যদি কোনো জাহাজ ডুবে যায় তবে বন্দরে জাহাজ আসা-যাওয়া বন্ধ হওয়ার আশঙ্কাও থাকে। এজন্য আন্তর্জাতিক মেরিটাইম স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) অনুযায়ী ল্যান্ড লক এরিয়া বা প্রাকৃতিকভাবে বেষ্টিত সুরক্ষিত নৌবন্দর না থাকলে বিশ্বের সর্বত্রই ঝড়ের সময় বড় জাহাজকে গভীর সাগরে পাঠিয়ে দেওয়া। আর তুলনামূলক মাঝারি ও ছোট জাহাজ ও জলযানকে তীরের কাছাকাছি থাকতে বলা হয়।’

সুতরাং, জাহাজের সুরক্ষা, বন্দরের সুরক্ষা, চ্যানেলের সুরক্ষা এবং স্থাপনার সুরক্ষা সহ অন্যান্য সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি এড়াতেই ঘূর্ণিঝড়ের সময় জাহাজগুলোকে সমুদ্রে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

তথ্যসূত্র

প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের আমেরিকার ভিসা বাতিলের দাবিটি গুজব

সম্প্রতি, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা ও সংসদ সদস্য সালমান এফ রহমানকে যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ করা হয়েছে শীর্ষক দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ইউটিউবে প্রচারিত এমন একটি ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা ও সংসদ সদস্য সালমান এফ রহমানকে যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ করার দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে কোনো ধরনের তথ্যসূত্র ছাড়াই উক্ত দাবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

গুজবের সূত্রপাত

দাবিটির সত্যতা অনুসন্ধানে Mo Rahman Masum নামের একটি ফেসবুক পেইজে গত ৩ জুলাই ‘যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ সালমান এফ রহমান (আর্কাইভ)’ শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Mo Rahman Masum Facebook Post

ভিডিওটিতে উপস্থাপক দাবি করেন, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা ও সংসদ সদস্য সালমান এফ রহমান হজ করে দুবাই হয়ে আমেরিকা যেতে চাইলে যুক্তরাষ্ট্রগামী প্লেনের গেইট থেকে ফেরত পাঠিয়েছে ইউএস ইমিগ্রেশন। উনি হজ করে যুক্তরাষ্ট্রে যেতে চেয়েছিলেন, তবে এমিরেটাস বিমানের গেইট থেকে উনাকে দেশে যেতে বাধ্য করা হয়েছে।’

কিন্তু ভিডিওতে এসব দাবির পক্ষে তিনি কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্র উপস্থাপন করতে পারেননি। বরং ভিডিওটিতে তিনি  UK Kashba TV নামের একটি চ্যানেলের ভিডিওকে (আর্কাইভ) তার দাবির পক্ষে সূত্র হিসেবে উপস্থাপন করেন। 

Screenshot:  UK Kashba TV 

তবে অনুসন্ধানে উক্ত ভিডিওটিতেও প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ও সংসদ সদস্য সালমান এফ রহমানকে যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ করার বিষয়ে কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

বিপরীতে ভিডিও বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, উক্ত ভিডিওতে উপস্থাপক দাবি করেন, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানকে হজ করে দুবাই হয়ে আমেরিকা যাওয়ার পথে দুবাইতে ইমিগ্রেশন পুলিশ আটকে দিয়েছে বলে গভীর জায়গা থেকে একটি তথ্য এসেছে। তবে তিনি আশা করছেন, তার এই তথ্যটি ভুল হবে না, সঠিক হবে। অর্থাৎ উক্ত ব্যক্তিও তার দাবির পক্ষে কোনো সুনিশ্চিত তথ্য উপস্থাপন করতে পারেননি।

এছাড়া দুই ব্যক্তির কেউই তাদের ভিডিওতে সালমান এফ রহমানকে যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ করার বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণ দেখাতে পারেননি। 

সালমান এফ রহমান কি যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ হয়েছেন? 

দাবিটির সত্যতা অনুসন্ধানে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক কোনো গণমাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা ও সংসদ সদস্য সালমান এফ রহমান যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ হওয়ার বিষয়ে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

তবে গত ৬ জুন জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোতে ‘প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ও আইনমন্ত্রীর সঙ্গে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বৈঠক’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সঙ্গে গত ৬ জুন বৈঠক করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস।

Screenshot: Daily Prothom Alo

বৈঠকটি প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক গণমাধ্যমকে বলেন, তাঁদের সঙ্গে বৈঠকে মার্কিন রাষ্ট্রদূত মূলত শ্রম আইন নিয়ে আলোচনা করেছেন। বাংলাদেশের শ্রম আইন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কিছু বক্তব্য ছিল। সে সব বিষয় নিয়েই রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের সরকারের বক্তব্য জানতে চেয়েছেন। এর বাইরে সাম্প্রতিক সময়ে সালমান এফ রহমান ও যুক্তরাষ্ট্র প্রসঙ্গে ভিন্ন কোনো প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

অপরদিকে সালমান এফ রহমানের যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ হওয়ার বিষয়ে অধিকতর অনুসন্ধানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট বা রাজস্ব বিভাগের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের Sanction Programs and Information সেকশনে উক্ত বিষয়ে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।  

Screenshot: U.S. Department of the treasury

পাশাপাশি সম্প্রতি বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে ভিসা নীতি ঘোষণা করা মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিনকেনের ভ্যারিফাইড টুইটার অ্যাকাউন্ট ঘুরেও সালমান এফ রহমানের যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা সম্পর্কে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

সাধারণত, যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক কোন দেশের সরকারি উর্ধতন কর্মকর্তাদের উপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেয়া হলে অ্যান্থনি ব্লিনকেন সে বিষয় নিয়ে টুইট প্রকাশ করে থাকেন।

এছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশ অ্যাম্বাসির ফেসবুক পেইজ ও বাংলাদেশে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের টুইটার অ্যাকাউন্ট খুঁজেও এমন কোনো তথ্যের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ও সংসদ সদস্য সালমান এফ রহমান যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ হওয়ার দাবিটি কোনো ধরনের তথ্যসূত্র ছাড়াই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হচ্ছে।

উল্লেখ্য, ইতোপূর্বে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান হজ করে দুবাই হয়ে আমেরিকা যাওয়ার পথে দুবাইতে ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে আটকে দেওয়ার দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি তথ্য ছড়িয়ে পড়লে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দাবিটি গুজব হিসেবে প্রতীয়মান হয়।

মূলত, গত ২৩ জুন সৌদি সরকারের রাজকীয় অতিথি হিসেবে হজ পালন করতে রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন। রাষ্ট্রপতির এই হজযাত্রায় তার সফরসঙ্গী হিসেবে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে যে, সালমান এফ রহমান যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ হওয়ায় দুবাইতে ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে আটকে দিয়েছে। তবে অনুসন্ধানে দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্রে সালমান এফ রহমান নিষিদ্ধ হওয়ার দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্যসূত্র ছাড়াই সম্পূর্ণ ভিত্তিহীনভাবে প্রচার করা হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি।

সুতরাং, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা এবং সংসদ সদস্য সালমান এফ রহমান যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ হওয়ার দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার কুতিনহো জামাল ভূঁইয়াকে নিয়ে ফেসবুকে কোনো স্টোরি দেননি

সম্প্রতি, ব্রাজিলের ফুটবলার ফিলিপ কুতিনহো বাংলাদেশ ফুটবল দলের অধিনায়ক জামাল ভুঁইয়ার বিষয়ে তার ফেসবুক পেজে স্টোরি দিয়েছেন শীর্ষক একটি দাবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। 

কী দাবি করা হচ্ছে?

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া পোস্টগুলোতে দাবি করা হচ্ছে, কুতিনহো তার ফেসবুক পেজের স্টোরিতে একটি প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। প্রশ্নটি এমন, বাংলাদেশের কোন খেলোয়াড়কে তিনি চেনেন কিনা। জবাবে কুতিনহো জানান, তিনি জামাল ভূঁইয়াকে চেনেন এবং জামাল ভূঁইয়া তার প্রিয়।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ফিলিপ কুতিনহো জামাল ভূঁইয়া প্রসঙ্গে তার ফেসবুক পেজে কোনো স্টোরি দেননি বরং কুতিনহোর নামে বাংলাদেশ থেকে পরিচালিত একটি ফ্যান পেজ থেকে উক্ত ফেসবুক স্টোরিটি দেওয়া হয়।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট থেকে পাওয়া সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ‘P.Coutinho’ নামক পেজটিতে (আর্কাইভ) আলোচিত স্টোরিটি খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার টিম।

Screenshot from Facebook

পেজটির ‘About’ সেকশন পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, সেখানে স্পষ্টই লেখা রয়েছে যে পেজটি কুতিনহোর একটি ফ্যান পেজ।

Screenshot from Facebook

পরবর্তীতে পেজটির ট্রান্সপারেন্সি (আর্কাইভ) সেকশন পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায় পেজটি ২০১৯ সালের ২১ আগস্ট তৈরি করা হয়েছে। 

আরো পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, পেজটি বাংলাদেশি একজন এডমিন কর্তৃক পরিচালিত হচ্ছে।

Screenshot from Facebook

অর্থাৎ, কুতিনহো জামাল ভূঁইয়াকে নিয়ে ফেসবুকে যে স্টোরি দিয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে তা কুতিনহোর নামে চালু থাকা একটি ফ্যান পেজের স্টোরি। 

অনুসন্ধানে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ‘Philippe Coutinho’ নামে কুতিনহোর মূল পেজটি (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়। 

পেজটিতে ২০১৫ সালের ০৭ আগস্ট এক ভিডিও বার্তায় (আর্কাইভ) কুতিনহো নিজেই এই পেজটি তার অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ বলে জানান।

Screenshot from Facebook

উক্ত পেজটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, কুতিনহো সর্বশেষ ২০২০ সালের ২৭ জানুয়ারি তার পেজে সক্রিয় ছিলেন। সেদিন তিনি তার পেজের Bio সেকশন আপডেট করে জানান, এটি তার অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ। 

এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত ফেসবুকে আর কোনো পোস্ট করেননি তিনি।

Screenshot from Facebook

এছাড়া, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফিলিপ কুতিনহোর ফেসবুক পেজ ছাড়াও অফিসিয়াল ইন্সটাগ্রাম এবং টুইটার অ্যাকাউন্ট পর্যালোচনা করে বাংলাদেশি ফুটবল খেলোয়াড় জামাল ভূঁইয়াকে নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ের কোনো পোস্ট খুঁজে পায়নি রিউমর স্ক্যানার টিম।

মূলত, সম্প্রতি ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার কুতিনহো ফেসবুক পেজে স্টোরি দিয়ে বাংলাদেশের ফুটবলার জামাল ভুঁইয়াকে চেনেন বলে জানিয়েছেন শীর্ষক একটি দাবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে অনুসন্ধান করে জানা যায়, দাবিটি সঠিক নয়। ‘P.Coutinho’ নামক ফেসবুক পেজটি ব্রাজিলিয়ান ফুটবল তারকা ফিলিপ কুতিনিহোর আসল পেজ নয় বরং কুতিনহোর নামে বাংলাদেশ থেকে পরিচালিত একটি ফ্যান পেজের স্টোরিকে আসল ভেবে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত ৩ জুন আর্জেন্টিনার ফুটবল তারকা এমিলিয়ানো মার্টিনেজ ঢাকা সফরে এসেছিলেন। বাংলাদেশ ফুটবল দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া সেই সময় চেষ্টা করেছিলেন মার্টিনেজের সাথে দেখা করতে কিন্তু তিনি দেখা করতে পারেননি বলে দাবি এসেছে গণমাধ্যমে। 

উল্লেখ্য, পূর্বেও ব্রাজিলিয়ান ফুটবল তারকা ফিলিপ কুতিনহোর ফিলিস্তিনিদের বিষয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন দাবিতে দেশীয় গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচার করার প্রেক্ষিতে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার। 

সুতরাং, ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার কুতিনহো ফেসবুক পেজে স্টোরি দিয়ে বাংলাদেশের ফুটবলার জামাল ভুঁইয়াকে চেনেন বলে জানিয়েছেন শীর্ষক একটি দাবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

নেপালে ভারী বর্ষণে বন্যার ঘটনায় গণমাধ্যমে একাধিক পুরোনো ছবি

গত জুনে নেপালের পূর্বাঞ্চলে ভারী বর্ষণের ফলে বন্যার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় কতিপয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে তিনটি ছবি ব্যবহার করা হয়েছে।

উক্ত ছবিগুলো যুক্ত করে দেশীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত এমনকিছু প্রতিবেদন দেখুন সময় টিভি, ঢাকা পোস্ট, দৈনিক মানবকণ্ঠ, দ্যা ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস, সংবাদ প্রকাশ, সময় ট্রিবিউন

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, নেপালে গত জুনে ভারী বর্ষণের ঘটনায় গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের সাথে প্রচারিত ছবিগুলো সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং নেপালের পূর্বের বন্যার ঘটনার পুরোনো ছবিকে দেশটির সাম্প্রতিক ভারী বর্ষণের ঘটনার দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

ছবি যাচাই- ১

Screenshot source: Dhaka Post

নেপালের ভারী বর্ষণের ঘটনার বিষয় জানিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই ছবিটি ব্যবহার করেছে দেশীয় অনলাইন গণমাধ্যম ঢাকা পোস্ট, সংবাদ প্রকাশ, সময় ট্রিবিউন

কিন্তু ছবিটি উক্ত ঘটনার নয়। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ফরাসি সংবাদ সংস্থা AP এর ওয়েবসাইটে ২০২১ সালের ২২ অক্টোবর প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

AP নেপালের পুলিশের মুখপাত্র বসন্ত বাহাদুর কুনওয়ারের বরাদ দিয়ে বলেছে, ২০২১ সালের ২১ অক্টোবর নেপালে বন্যা ও ভূমিধসে একশোর বেশী মানুষ নিখোঁজ হয়েছিল।

Screenshot source: AP

অর্থাৎ, গণমাধ্যমে প্রচারিত এই ছবিটি নেপালের সাম্প্রতিক ভারী বর্ষণের নয়। 

ছবি যাচাই- ২

Screenshot source: Somoy Tv 

নেপালের ভারী বর্ষণের ঘটনার বিষয় জানিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই ছবিটি ব্যবহার করেছে দেশীয় অনলাইন গণমাধ্যম সময় টিভি এবং দ্যা ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস

কিন্তু ছবিটি উক্ত ঘটনার নয়। 

অনুসন্ধানে দেখা যায়, একটি গণমাধ্যম উক্ত ছবিটি সূত্র হিসেবে NDTV’র নাম উল্লেখ করেছে। 

পরবর্তীতে ভারতীয় গণমাধ্যম NDTV এর ওয়েবসাইটে গত ১৮ জুন প্রকাশিত নেপালের সাম্প্রতিক ভারী বর্ষণের ঘটনার বিষয়ে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

NDTV তাদের প্রতিবেদনে এই ছবিটি যুক্ত করে ক্যাপশনে “প্রতীকী” ছবি বলে উল্লেখ করা হয়েছে, যা থেকে প্রতীয়মান হয়, ছবিটি সাম্প্রতিক ঘটনার সময়ের নয়। 

Screenshot source: NDTV 

এ বিষয়ে তাই আরো অনুসন্ধানে ব্রিটিশ সংবাদ সংস্থা Reuters এর ওয়েবসাইটে ২০২১ সালের ১৮ জুন প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে খুঁজে পাওয়া যায়। 

Reuters এর প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২১ সালের জুন মাসে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে ভূমিধসে ভারত এবং চীনা নাগরিকসহ অন্তত ২৫ জন নিখোঁজ হয়েছেন। 

Screenshot source: Reuters 

অর্থাৎ, গণমাধ্যমে প্রচারিত এই ছবিটি নেপালের সাম্প্রতিক ভারী বর্ষণের নয়। 

ছবি যাচাই – ৩

Screenshot source: ManobKantha

নেপালের ভারী বর্ষণের ঘটনার বিষয় জানিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই ছবিটি ব্যবহার করেছে দেশীয় গণমাধ্যম দৈনিক মানবকণ্ঠ

কিন্তু ছবিটি উক্ত ঘটনার নয়। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে নেপালের মূলধারার গণমাধ্যম THE KATHMANDU POST এর ২০২১ সালের ২০ অক্টোবর প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পায়। 

ছবিটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে ভারী বর্ষণের ফলে নেপালে বন্যার সৃষ্টি হয়। সেইসময় নেপালের দারচুলা জেলার মহাকালী নদীর ছবি এটি। 

Screenshot: The Kathmandu Post

অর্থাৎ, গণমাধ্যমে প্রচারিত এই ছবিটি নেপালের সাম্প্রতিক ভারী বর্ষণের নয়। 

গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিগুলোর ক্যাপশনে ফাইল ফটো বা পুরোনো ঘটনার ছবি শীর্ষক কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি। বরং কিছু গণমাধ্যম ছবিগুলোর ছবিসূত্র হিসেবে বিদেশী গণমাধ্যমের নাম উল্লেখ করেছে। কতিপয় গণমাধ্যম ছবির ক্যাপশনে কিছুই লিখেনি। সাম্প্রতিক ঘটনার বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ছবিগুলো ব্যবহার করে বিদেশী গণমাধ্যমের নাম উল্লেখ কিংবা কোনো তথ্যই উল্লেখ না থাকায় স্বাভাবিকভাবে ছবিগুলো নেপালের সাম্প্রতিক ভারী বর্ষণের ঘটনার বলে প্রতীয়মান হয়। এতে করে নেটিজেনদের মধ্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হওয়া অমূলক নয়। 

মূলত, সম্প্রতি নেপালে ভারী বর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় কতিপয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে নেপালের পুরোনো ও ভিন্ন ঘটনার ছবি ব্যবহার করে সাম্প্রতিক ঘটনার ছবি দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে। প্রতিবেদনগুলোতে আলোচিত ছবিগুলোর ক্যাপশনে ফাইল ফটো বা পুরোনো ঘটনার ছবি শীর্ষক কোনো তথ্যও দেওয়া হয়নি। এতে করে স্বাভাবিকভাবে ছবিগুলো নেপালের সাম্প্রতিক ভারী বর্ষণের ঘটনার বলে প্রতীয়মান হয়, যা বিভ্রান্তির জন্ম দিয়েছে।

সুতরাং, সম্প্রতি নেপালের ভারী বর্ষণের ঘটনায় গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে একাধিক পুরোনো ঘটনার ছবিকে সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র