Home Blog Page 612

মূল্যবৃদ্ধির কারণে মাংসের পরিবর্তে কাঁঠাল খাওয়ার পরামর্শ দেননি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

0

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে, “মুরগির দাম বেশি? No Tension! এখন মাংসের পরিবর্তে কাঁঠাল” শীর্ষক শিরোনামে মুরগির মাংসের মূল্যবৃদ্ধির কারণে মাংসের পরিবর্তে কাঁঠাল খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী এমন দাবিতে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। 

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ)।

টিকটকেও প্রচারিত এ সংক্রান্ত কিছু ভিডিও দেখুন এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে প্রধানমন্ত্রী মাংসের পরিবর্তে কাঁঠাল খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন শীর্ষক দাবিটি সঠিক নয় বরং জিনোম সিকোয়েন্স আবিষ্কারের প্রেক্ষাপটে ২০২২ সালে কাঁঠালের বহুমুখী ব্যবহার নিশ্চিতে মাংসের পরিবর্তে কাঁঠাল ব্যবহারের পরামর্শ শীর্ষক প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে বিভ্রান্তিকরভাবে প্রচার করা হচ্ছে।  

রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে দেশীয় গণমাধ্যম RTV এর ইউটিউব চ্যানেলে একটি ভিডিও(আর্কাইভ) খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার। সেই ভিডিওতে দেখা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২২ সালের ১৯ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধু কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বারোমাসি কাঠালের জিনোম সিকোয়েন্স আবিষ্কারের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়কে অভিনন্দন জানান। সেইসাথে কাঁঠালের বহুমুখী ব্যবহারের উপর জোর দেন তিনি। 

গত বছরের (২০২২) ১৯ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধু কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে দেওয়া প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যটির প্রাসঙ্গিক অংশটুকু হুবহু তুলে দেওয়া হলো-

“অনেকেই কিন্তু মাংস খেতে চায় না। মাংসের পরিবর্তে এখন কাঁঠাল। এবং এই কাঁচা কাঁঠাল, এই কাঁঠালের কাবাব হয়, বার্গার হয়। কাঁঠাল নানাভাবে কিন্তু বিদেশে এখন ব্যবহার করছে, খাচ্ছে। এবং তাঁর দাম কিন্তু অনেক বেশি। মানে আপনি কাঁচা কাঁঠালের একটা বার্গার যদি কিনতে যান তাহলে তার দাম কিন্তু মাংস দিয়ে যে বার্গার করে, রোল তৈরি করে সেগুলির থেকে কিন্তু দাম অনেক বেশি। এবং তার কিন্তু ব্যাপক চাহিদা। তো আমরা যদি এই বারোমাসি কাঁঠাল উৎপাদন করতে পারি এবং সেইসাথে সাথে কাঁঠালের বিভিন্ন পণ্য যেগুলি, বর্তমান যুগে তো আমাদের দেশেও ছেলেমেয়েরা এখন বার্গার, রোল এটা-সেটা খেতেই বেশি পছন্দ করে। তো সেখানে মাংসের পরিবর্তে কাঁঠালটা, কাঁঠালটাকে কিন্তু মাংসেরই পরিবর্তে একটা ই হিসেবে ধরা হয়। মানে মাংসের পরিবর্তে এই কাঁঠালটি এখন সবথেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আমি বিশেষভাবে আপনাদের এই বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ২৫ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আপনাদের বিশেভাবে আমি আন্তরিক অভিনন্দন জানাই যে আপনারা কাঁঠাল গবেষণা করে বারোমাসি কাঁঠালের জিনোম সিকোয়েন্স আবিষ্কার করতে পেরেছেন। এখন এর বহুমুখী ব্যবহার করতে হবে।”

বক্তব্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, প্রধানমন্ত্রী মাংসের পরিবর্তে কাঁঠাল ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু, সেটি মাংসের দামের ঊর্ধ্বগতির কারণে নয় বরং, সম্পূর্ন ভিন্ন প্রেক্ষাপটে তিনি মন্তব্যটি করেছেন। মাংসের পরিবর্তে কাঁঠাল ব্যবহারের মাধ্যমে কাঁঠালের বহুমুখী ব্যবহার নিশ্চিত করার উপরে জোড় দিতে গিয়ে এবং বহির্বিশ্বে কাঁঠালের বহুমুখী ব্যবহারের উদাহরণ হিসেবে তিনি উল্লিখিত মন্তব্য করেন।

পরবর্তীতে কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে, মূলধারার একাধিক গণমাধ্যমে প্রচারিত সেদিনের (১৯ ডিসেম্বর, ২০২২) ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার টিম। এসব ভিডিও প্রতিবেদন দেখুন যমুনা টিভি(আর্কাইভ), মাছরাঙা নিউজ(আর্কাইভ), সময় টিভি(আর্কাইভ)। এসব প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করেও প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের কোনো ভিন্ন প্রেক্ষাপট খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এছাড়াও, দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকার ওয়েবসাইটে ১৯ ডিসেম্বর, ২০২২ এর একটি প্রতিবেদনেও দেখা যায়, প্রধানমন্ত্রী বহির্বিশ্বে মাংসের পরিবর্তে কাঁঠাল ব্যবহারের উদাহরণ দিয়েছেন। 

প্রতিবেদনটি দেখুন দৈনিক জনকন্ঠ। 

Source: দৈনিক জনকন্ঠ

এছাড়াও, কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসের ১৯ ডিসেম্বরের একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটি দেখুন দ্য ডেইলি ক্যাম্পাস। সেখানেও দেখা যায়, কাঁঠালের বহুমুখী ব্যবহারের উদাহরণ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী মাংসের পরিবর্তে কাঁঠাল খাওয়ার কথা বলেছেন।

Source: দ্য ডেইলি ক্যাম্পাস

মূলত, ২০২২ সালের ১৯ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বারোমাসি কাঁঠালের জিনোম সিকোয়েন্স আবিষ্কারের প্রেক্ষাপটে কাঁঠালের বহুমুখী ব্যবহার নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে মাংসের পরিবর্তে কাঁঠাল ব্যবহারের পরামর্শ দেন। বর্তমানে মাংসের বাজারমূল্যে ঊর্ধ্বগতি উল্লেখপূর্বক তার সাথে প্রধানমন্ত্রীর সেই বক্তব্য জুড়ে দিয়ে ‘মূল্যবৃদ্ধির কারণে মাংসের পরিবর্তে কাঁঠাল খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী’ শীর্ষক যে দাবিটি করা হচ্ছে তা সঠিক নয়।

উল্লেখ্য, পশ্চিমা দেশগুলোতে মাংসের পরিবর্তে দ্রুতই বাড়ছে কাঁঠালের জনপ্রিয়তা। রোল, কাটলেট এমনকি পিৎজার টপিংয়ের জন্যও ব্যবহৃত হচ্ছে কাঁঠালের ঝুরি। একদিকে যেমন বাহারি খাবারের রান্না করা সম্ভব হচ্ছে অন্যদিকে, তেমনি নানারকমের পুষ্টিগুন সম্পন্ন হওয়ায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দ্রুতই বাড়ছে কাঁঠালের চাহিদা।

সুতরাং, জিনোম সিকোয়েন্স আবিষ্কারের প্রেক্ষাপটে কাঁঠালের বহুমুখী ব্যবহার নিশ্চিতে মাংসের পরিবর্তে কাঁঠাল ব্যবহারের পরামর্শকে  দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে প্রধানমন্ত্রী মাংসের পরিবর্তে কাঁঠাল খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন শীর্ষক দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র

চাঁদের নিচে গ্রহ দেখা নিয়ে কিয়ামত বিষয়ে একটি সত্য এবং একটি বানোয়াট হাদিস প্রচার

0

সম্প্রতি আকাশে চাঁদের নিচে শুক্রগ্রহ দেখা যাওয়ার প্রেক্ষিতে ইসলাম ধর্মের হাদিসের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট দুইটি দাবি ছড়িয়ে পড়তে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার।  

দাবি ১

চৌদ্দশ বছর আগে রাসূল সাল্লাহু সাল্লাম বলেছেন কিয়ামতের আগে প্রথম রোজা হবে শুক্রবার দিন আর চাঁদের নিচে তারা থাকবে এটা কিয়া-মতের একটি লক্ষণ।

দাবি ২

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ ‘‘কিয়ামত নিকটবর্তী হওয়ার আলামত হচ্ছে, চন্দ্র মোটা হয়ে উদিত হবে। বলা হবে এটি দুই দিনের চাঁদ’’। তাবরানী। ইমাম আলবানী হাদীস টিকে সহীহ বলেছেন, সহীহুল জামে আস্ সাগীর, হাদীস নং- ৫৭৭৪।

উক্ত দাবিগুলোতে ছড়িয়ে পড়া কিছু ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

একই দাবিতে ছড়িয়ে পড়া কিছু টিকটক ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সম্প্রতি আকাশে চাঁদের নিচে শুক্রগ্রহ দেখা যাওয়ার প্রেক্ষিতে ইসলাম ধর্মের হাদিসের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট যে দুইটি দাবি ছড়িয়েছে তার মধ্যে প্রথম দাবিটির অস্তিত্ব কোনো হাদিসে পাওয়া যায়নি বরং দ্বিতীয় দাবিটি গ্রহণযোগ্য হাদিস হিসেবে “সহিহুল জামে আস সাগীর” নামক একটি হাদিস গ্রন্থে উল্লেখ রয়েছে। 

গত শুক্রবার (২৪ মার্চ) প্রথম রমজানে সন্ধ্যার পর থেকে দেশের আকাশে ব্যতিক্রমী চাঁদ দেখা যায়। সাধারণত চাঁদের ওপরে তারা থাকলেও এই চাঁদের নিচে তারা দেখা গেছে। চাঁদের নিচে যে উজ্জ্বল তারা সদৃশ বিন্দু দেখা গেছে, তা হলো শুক্রগ্রহ। এই দৃশ্যকে ঘিরে পরবর্তীতে ইন্টারনেটে আলোচিত দাবিগুলো ছড়িয়ে পড়ে। 

প্রথম দাবি যাচাই

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে ছড়িয়ে পড়া পোস্টগুলো পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, সেখানে আলোচিত হাদিসটির কোনো সূত্র উল্লেখ করা হয়নি৷ 

পরবর্তীতে কিওয়ার্ড সার্চ করে নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্রেই এ সংক্রান্ত হাদিসের অস্তিত্ব মেলেনি। একাধিক হাদিস গ্রন্থ পর্যবেক্ষণ করেও রাসূল (সাঃ) এমন মন্তব্য করেছেন শীর্ষক কোনো তথ্য মেলেনি। 

পাশাপাশি হাদিস বিষয়ক ওয়েবসাইট ‘Hadith Bd’ তেও কিওয়ার্ড সার্চ করেও উক্ত হাদিসের কোনো অস্তিত্ব মেলেনি। 

পরবর্তীতে রিউমর স্ক্যানার টিমের পক্ষ থেকে হাদিসবিডির প্রতিষ্ঠাতা রোকন উল হকের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, “এই ধরনের কোন বিশুদ্ধ হাদিস নেই। যইফ বা জাল হাদিস থাকতে পারে।” 

অর্থাৎ, রাসূল (সাঃ) ১৪শ বছর পূর্বে “কিয়ামতের আগে প্রথম রোজা হবে শুক্রবার দিন আর চাঁদের নিচে তারা থাকবে এটা কিয়া-মতের একটি লক্ষণ।” শীর্ষক মন্তব্য করেছেন মর্মে কোনো বিশুদ্ধ হাদিসের অস্তিত্ব মেলেনি। 

দ্বিতীয় দাবি যাচাই

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ছড়িয়ে পড়া পোস্টগুলো পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, সেখানে আলোচিত হাদিসটির সূত্র হিসেবে “সহীহুল জামে আস্ সাগীর, হাদীস নং- ৫৭৭৪” শীর্ষক তথ্য উল্লেখ রয়েছে। 

পরবর্তীতে কিওয়ার্ড সার্চ করে ‘Hadith Bd’ এর ওয়েবসাইটে আলোচিত হাদিসটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

হাদিসে বলা হয়েছে, “মাসের প্রথম দিন আমরা চাঁদকে একেবারে চিকন ও সরু অবস্থায় উঠতে দেখি। কিন্তু কিয়ামতের নিকটবর্তী সময়ে চাঁদ প্রথম দিনেই অনেক বড় হয়ে উদিত হবে। দেখে মনে হবে এটি দুই দিন বা তিন দিনের চাঁদ। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ ‘‘কিয়ামত নিকটবর্তী হওয়ার আলামত হচ্ছে, চন্দ্র মোটা হয়ে উদিত হবে। বলা হবে এটি দুই দিনের চাঁদ।”

Screenshot source: Hadith bd

অর্থাৎ, “কিয়ামত নিকটবর্তী হওয়ার আলামত হচ্ছে, চন্দ্র মোটা হয়ে উদিত হবে। বলা হবে এটি দুই দিনের চাঁদ” শীর্ষক তথ্যটি “সহিহুল জামে আস সাগীর” নামক একটি হাদিস গ্রন্থে রয়েছে।

হাদিসটি কি গ্রহণযোগ্য? 

সহীহুল জামে আস্ সাগীর নামক হাদিসগ্রন্থে উল্লিখিত হাদিসটি গ্রহণযোগ্য কিনা তা জানতে রিউমর স্ক্যানার টিমের পক্ষ থেকে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের গবেষণা বিভাগের মুহাদ্দিস ড. ওয়ালীয়ুর রহমান খানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, হাদিসটি গ্রহণযোগ্য। 

তাছাড়া, হাদিসবিডির প্রতিষ্ঠাতা রোকন উল হকও আলোচিত হাদিসটি গ্রহণযোগ্য বলে রিউমর স্ক্যানারকে জানিয়েছেন। 

মূলত, গত ২৪ মার্চ রমজানের প্রথম দিনে আকাশে চাঁদের নিচে শুক্রগ্রহ দেখা যাওয়ার প্রেক্ষিতে ‘কিয়ামতের আগে প্রথম রোজা হবে শুক্রবারে ও চাঁদের নিচে তারা থাকবে’ শীর্ষক তথ্য মহানবী (সা.) ১৪শ বছর পূর্বে বলেছেন দাবিতে প্রচার করা হলেও বিভিন্ন ইসলামিক গবেষকের সাহায্যে জানা যায় যে বাস্তবে এমন কোনো হাদিসের অস্তিত্ব নেই। তবে “কিয়ামত নিকটবর্তী হওয়ার আলামত হচ্ছে, চন্দ্র মোটা হয়ে উদিত হবে। বলা হবে এটি দুই দিনের চাঁদ” শীর্ষক তথ্যটি ‘সহিহুল জামে আস সাগীর’ নামক একটি হাদিস গ্রন্থে রয়েছে। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে হাদিসটিকে গ্রহণযোগ্য হাদিস বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

সুতরাং, সম্প্রতি আকাশে চাঁদের নিচে শুক্রগ্রহ দেখা যাওয়ার প্রেক্ষিতে রাসূলের নাম উদ্ধৃত করে কিয়ামত বিষয়ে দুইটি হাদিস প্রচার করা হচ্ছে ; যার একটি সত্য ও অন্যটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

জাইমা রহমানের নামে ভুয়া পেজ থেকে তার দেশে ফেরার ভিত্তিহীন সংবাদ প্রচার 

0

সম্প্রতি ‘Zaima Rahman’ এর নামে পরিচালিত একটি ফেসবুক পেজ থেকে “জুন মাসের ২৮ তারিখে বাংলাদেশ আসতাছি। ইনশাআল্লাহ আপনাদের সবার সাথে দেখা হবে। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। বিজয় আসবেই আমাদের ইনশাআল্লাহ”” শীর্ষক ক্যাপশনে একটি পোস্ট করা হয়।

ফেসবুকে প্রচারিত পোস্টটি দেখুন এখানে
পোস্টটির আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে। 

Source : CrowdTangle

এছাড়া আলোচিত ফেসবুক পোস্টটির সূত্র ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভিন্ন ভিন্ন একাউন্ট থেকে প্রচারিত পোস্টগুলো দেখুন এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে। পোস্টগুলোর আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কন্যা জাইমা রহমানের দেশে আসার তথ্যটি সঠিক নয় বরং জাইমা রহমানের নামে পরিচালিত ভুয়া একটি ফেসবুক পেজের পোস্টের বরাতে আগামী ২৮ জুনতারিখে তার বাংলাদেশে আসার তথ্যটি প্রচার করা হচ্ছে।

এছাড়া, জাইমা রহমানের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে কোনো একাউন্ট নেই বলে গণমাধ্যম ও বিএনপির নির্ভরযোগ্য সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে জাইমা রহমানের নামে পরিচালিত ফেসবুক পেজটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, পেজটির ফলোয়ার সংখ্যা বর্তমানে ৯৪ হাজার। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত উক্ত পেজের আলোচিত পোস্টটিতে প্রায় ১ লাখ ৪৮ রিয়্যাক্ট, ১২ হাজার কমেন্ট এবং ৬ হাজার শেয়ার রয়েছে। 

screenshot: Ffacebook

পরবর্তীতে ‘Zaima Rahman’নামের ফেসবুক অ্যাকাউন্টটির ট্রান্সপারেন্সি সেকশন যাচাই করে দেখা যায়, পেজটি ২০২০ সালের ২৩ অক্টোবর তারিখে ‘Mother of Democracy Begum Khaleda Zia’ নামে প্রথম তৈরি করা হয়েছিল। এরপর ২০২২ সালের ১৪ জানুয়ারিতে পেজটির নাম পুনরায় পরিবর্তন করে ‘মহিন মজুমদার’ ও ২৩ জানুয়ারিতে Md. Mohin Uddin রাখা হয়। সর্বশেষ একই বছরের অর্থাৎ ২০২০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি তারিখে শেষবারের মত পেজটির নাম পরিবর্তন করে ‘Zaima Rahman’ করা হয়। এরপর থেকেই পেজটিকে জাইমা রহমানের নিজস্ব পেজ দাবি করে পরিচালনা করা হচ্ছে এবং পেজ থেকে করা পোস্টগুলোর কারণে নেটিজেনদের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে পড়ছে।

অর্থাৎ, ‘Zaima Rahman’ নামে পরিচালিত ফেসবুক পেজটি পর্যবেক্ষণ করে এতটুকু স্পষ্ট হয়ে বলা যায় যে, উক্ত পেজটি জাইমা রহমানের নয় বরং এটি জাইমা রহমানের নামে পরিচালিত একটি ভুয়া পেজ।

পাশাপাশি চলতি বছরের জুন মাসের ২৮ তারিখ জাইমা রহমান দেশে আসবেন কিনা সে বিষয়ে দেশীয় কোনো সংবাদমাধ্যমে বা বিএনপির কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে কিছু জানানো হয়নি।

মূলত, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কন্যা জাইমা রহমানের নামে পরিচালিত ভুয়া একটি ফেসবুক পেজ থেকে সাম্প্রতিক সময়ে একটি পোস্ট করা হয় এবং পোস্টে দাবি করা হয়, আগামী জুন মাসের ২৮ তারিখে তিনি বাংলাদেশে আসছেন। প্রকৃতপক্ষে, ভুয়া এই ফেসবুক পেজের পোস্টের সূত্র ধরে জাইমা রহমান আগামী ২৮ জুন তারিখে বাংলাদেশে আসছেন শীর্ষক একটি দাবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। তবে, রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জাইমা রহমানের দেশে আসা শীর্ষক তথ্যের কোনো সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

প্রসঙ্গত, পূর্বেও জাইমা রহমানের নাম ব্যবহার করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুয়া তথ্য প্রচার করা হলে সে সময়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার প্রেস উইং এর সদস্য শায়রুল কবির খানের সাথে যোগাযোগ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে জাইমা রহমানের একাউন্ট এবং তার দেশে ফেরা নিয়ে জানতে চাইলে প্রতিত্তোরে শায়রুল কবির জানান, “সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে জাইমা রহমানের কোনো অ্যাকাউন্ট নেই। জাইমা রহমানের শীঘ্রই দেশে আসার ব্যাপারে বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্যায় হতে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।” 

Screenshot from Rumor Scanner website

উল্লেখ্য, পূর্বেও জাইমা রহমানকে নিয়ে এবং তার নামে পরিচালিত ফেসবুক পেজ থেকে প্রচারিত একাধিক ভুয়া তথ্য ও গুজব শনাক্ত করে বিস্তারিত ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

Screenshot from Rumor Scanner website

সুতরাং,জাইমা রহমানের নামে পরিচালিত ভুয়া ফেসবুক পেজ থেকে তিনি ২৮ জুন দেশে আসছেন শীর্ষক দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

  • Rumor Scanner’s Own Analysis 
  • Statement from শায়রুল কবির খান 

অ্যালিসা কার্সন ২০৩৩ সালে মঙ্গলে গিয়ে আর পৃথিবীতে ফিরে আসবে না শীর্ষক দাবিটি বানোয়াট

দীর্ঘদিন ধরে ‘মঙ্গল গ্রহে গিয়ে পৃথিবীতে আর ফিরে আসবে না যে মেয়েটি, তিনি হলেন #এলিজা_কার্সন, নাসার কনিষ্ঠতম সদস্য।’ শীর্ষক শিরোনামে একটি তথ্য ইন্টারনেটে প্রচার হয়ে আসছে। 

সম্প্রতি ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে
আর্কাইভ দেখুন এখানে, এখানে, এখানে

২০১৯ সালে ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে । আর্কাইভ দেখুন এখানে, এখানে
২০২০ সালে ফেসবুকে প্রচারিত এমন একটি পোস্ট দেখুন এখানে। আর্কাইভ দেখুন এখানে
২০২১ সালে ফেসবুকে প্রচারিত এমন একটি পোস্ট দেখুন এখানে। আর্কাইভ দেখুন এখানে। 
২০২২ সালে ফেসবুকে প্রচারিত এমন একটি পোস্ট দেখুন এখানে। আর্কাইভ দেখুন এখানে। 

শিক্ষামূলক ওয়েবসাইট 10 মিনিট স্কুলের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এমন প্রতিবেদন দেখুন এখানে।  

গণমাধ্যমের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত এমন প্রতিবেদন দেখুন সময় টিভি

যা দাবি করা হচ্ছে

  • অ্যালিসা কার্সন নাসার কনিষ্ঠতম সদস্য। এই মেয়ের আগ্রহ, তৃষ্ণা আর ডেডিকেশন দেখে মাত্র ১১ বছর বয়সে নাসা তাকে মনোনীত করে নেয় এবং ঘোষণা করে যে -সমস্ত অবস্থা অনুকূল হলে সে হবে ২০৩৩ সালে মঙ্গলে যাওয়া পৃথিবীর প্রথম মানুষ।
  • এখন তার বয়স ১৭। যেহেতু সে মঙ্গলে গেলে ফিরে আসার সম্ভাবনা খুবই কম তাই নাসার কাছে সে কোন প্রকার যৌনতা, বিয়ে বা সন্তানধারণের নিষেধাজ্ঞাপত্রতে সাক্ষর করেছে। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, অ্যালিসা কার্সনের মঙ্গল গ্রহে গিয়ে পৃথিবীতে আর ফিরে আসার দাবিতে প্রচারিত তথ্যগুলো সঠিক নয় বরং কোনো ধরনের তথ্যসূত্র ছাড়াই সম্পূর্ণ ভিত্তিহীনভাবে দীর্ঘদিন ধরে তথ্যগুলো ইন্টারনেটে প্রচার হয়ে আসছে। 

অ্যালিসা কার্সন সম্পর্কে যা জানা যাচ্ছে 

কি-ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে অ্যালিসা কার্সনের ওয়েবসাইট Nasa Blueberry তে তার নিজের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Nasa blueberry

ওয়েবসাইটটির প্রদত্ত তথ্যানুযায়ী, অ্যালিসা কার্সন মাত্র ৩ বছর বয়সেই তার বাবার কাছে মহাকাশচারী হওয়ার ইচ্ছার কথা জানায়৷ ঐ বয়সেই এলিসা তার বাবাকে বলেন, ‘মঙ্গলে যাওয়া মানুষদের একজন হতে চান তিনি।’ 

এই স্বপ্ন পূরণে মাত্র ১৯ বছর বয়সেই অ্যালিসার কৃতিত্বের তালিকায় আছে ৩টি স্পেস শাটল উৎক্ষেপণ, ৭ বার স্পেস ক্যাম্পে অংশ নেওয়া, স্পেস একাডেমি ৩ বার, রোবোটিক্স একাডেমি একবার, অ্যাডভান্সড স্পেস একাডেমি থেকে কনিষ্ঠ স্নাতক, এবং একাধিক স্যালি রাইড ক্যাম্প অংশগ্রহণের অভিজ্ঞতা।

Screenshot: Nasa blueberry

ওয়েবসাইটটিতে আরও উল্লেখ করা হয়, ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা তাকে নাসা টিভিতে মঙ্গল গ্রহের ভবিষ্যত মিশন নিয়ে আলোচনা করার জন্য ওয়াশিংটন ডিসিতে আয়োজিত এমইআর১০ নামে একটি প্যানেলে থাকতে আমন্ত্রণ জানায়।

Screenshot: mars.nasa.gov

এছাড়া অ্যালিসা কার্সন মঙ্গল অভিযানের বেসরকারি উদ্যোগ মার্স ওয়ানের প্রতিনিধিও নির্বাচিত হয়েছিলেন। তবে মার্কিন গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, মার্স ওয়ান ২০১৯ সালেই দেউলিয়া হয়ে যায়।

Screenshot: NPR

তবে, অ্যালিসা কার্সনের উক্ত ওয়েবসাইট থেকে নাসা কর্তৃক তাকে মাত্র ১১ বছর বয়সে মঙ্গল অভিযানের জন্য মনোনীত করা এবং ২০৩৩ সালে মঙ্গলে পৃথিবীর প্রথম মানুষ হিসেবে তার মঙ্গলে যাওয়ার বিষয়ে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

অ্যালিসা কার্সনের সঙ্গে নাসার সম্পর্ক নিয়ে যা জানা যাচ্ছে 

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত তথ্য অনুযায়ী, ‘অ্যালিসা কার্সন নাসার কনিষ্ঠতম সদস্য। নাসা তাকে মাত্র ১১ বছর বয়সে নাসা তাকে মনোনীত করে নেয় এবং ঘোষণা করে যে, সমস্ত অবস্থা অনুকূল হলে সে হবে ২০৩৩ সালে মঙ্গলে যাওয়া পৃথিবীর প্রথম মানুষ।’

তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, অ্যালিসা কার্সনের সঙ্গে নাসার আনুষ্ঠানিক কোনো সম্পর্কই নেই। 

এ প্রসঙ্গে আমেরিকা ভিত্তিক ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান Snopes এ ২০১৮ সালের ১৬ জুলাই ‘Is NASA Training a 17-Year-Old Girl to Be an Astronaut?‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে নাসার মুখপাত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে উল্লেখ করা হয়, সেই সময়ে কার্সনকে নাসা কোনো প্রশিক্ষণ দিচ্ছে না বা কোনো মিশনের জন্য প্রস্তুতও করছে না।

Screenshot: Snopes

একই বিষয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের ওয়েবসাইটে ২০২১ সালের ৮ জুন ‘Fact Check-Alyssa Carson, 20, has not been selected for a Mars mission‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে নাসার মুখপাত্রকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, নাসার মঙ্গল অভিযান পরিকল্পনার সাথে কার্সনের সম্পর্ক নেই।

Screenshot: Reuters

আমেরিকান ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান Politifact ২০১৮ সালের ১৯ জুলাই ‘NASA prepping 17-year-old Alyssa Carson to become first human on Mars‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে নাসার মুখপাত্র সেন পটারকে উদ্ধৃত করে জানায়, নাসার সঙ্গে কার্সনের কোনো প্রাতিষ্ঠানিক সম্পর্ক নেই।

Screenshot: Politifact

Politifact ছাড়াও আমেরিকান আরেকটি ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান USA Today তে ২০২১ সালের ১২ জুলাই ‘Fact check: Claim about Alyssa Carson preparing to go to Mars is missing context‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে নাসার জনসংযোগ কর্মকর্তা ক্যাথারিন হামব্লেটনের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, নাসা তার মূল লক্ষ্য এবং মহাকাশ অনুসন্ধানের বিষয়ে প্রচার করার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের আগ্রহী করে তুলতে বিভিন্ন কার্যক্রম চালিয়ে থাকে। তবে তাদের সঙ্গে কার্সনের কোনো প্রাতিষ্ঠানিক সম্পর্ক নেই।

Screenshot: USA Today 

পাশাপাশি অনুসন্ধানে সাম্প্রতিক সময়েও অ্যালিসা কার্সনের নাসাতে যোগ দেওয়ার বিষয়ে কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে ও তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটার, ইনস্টাগ্রাম, ফেসবুকলিংকড-ইন বিশ্লেষণ করেও কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

এছাড়া অ্যালিসা কার্সনকে নাসার সর্বকনিষ্ঠ সদস্য হিসেবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দাবি করা হলেও নাসার ওয়েবসাইট সূত্রে জানা যায়, নাসার সর্বকনিষ্ঠ মহাকাশচারীর নাম শেলী রাইড। তিনি ১৯৮৩ সালে ৩২ বছর ২৩ দিন বয়সে মহাকাশ অভিযানে যান।

Screenshot: NASA TV

পাশাপাশি অতীতে যে সকল প্রার্থী মহাকাশচারী হিসেবে মনোনীত হয়েছেন তাদের বয়সসীমা ছিল ২৬ থেকে ৪৬ এর মধ্যে, গড় বয়স ছিল ৩৪ বছর।

বিপরীতে নাসার ওয়েবসাইট NASA TV তে ২০১৫ সালের ৬ জুলাই Mars Generation নামে একটি প্রতিবেদনে অ্যালিসা কার্সনের অর্জনের বিষয়ে উল্লেখ থাকলেও সেখানে তাকে মঙ্গল অভিযানে মনোনয়নের ব্যাপারে কোনো তথ্য উল্লেখ করা হয়নি। ২০১৫ সালে প্রতিবেদনটি যখন প্রকাশিত হয় তখন অ্যালিসা কার্সনের বয়স ছিল ১৪ বছর। অপরদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত তথ্যমতে, নাসা তাকে ১১ বছর বয়সে মঙ্গল অভিযানের জন্য মনোনীত করেছে।

Screenshot: NASA TV 

অ্যালিসা কার্সনের মঙ্গল অভিযান নিয়ে যা জানা যাচ্ছে 

আমেরিকান বার্তা সংস্থা সিএনএনে ২০১৯ সালের ৩ এপ্রিল ‘NASA wants to land astronauts on Mars by 2033‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, দেশটির মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা ২০৩৩ সালের মধ্যে মঙ্গলে মহাকাশচারী প্রেরণে ইচ্ছুক।

Screenshot: CNN

তবে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, এই অভিযানের জন্য এখনো কোনো মহাকাশচারী বা নভোচারীকে নির্বাচন করা হয়নি।

Screenshot: Reuters 

পরবর্তীতে অ্যালিসা কার্সনকে নাসার এই অভিযানের জন্য মনোনীত করা সংক্রান্ত তথ্য অনুসন্ধানে নাসার মঙ্গল অভিযান সংক্রান্ত ওয়েবসাইট ঘেটেও এমন কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। 
এছাড়া অ্যালিসা কার্সনের বাবা বার্ট কার্সন তার মেয়ের মঙ্গল অভিযানের বিষয়ে ২০২১ সালে রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “অ্যালিসার স্বপ্ন মঙ্গলে যাওয়া প্রথম মানুষদের একজন হওয়া৷ সে এভাবেই নিজেকে গড়ে তুলছে, যাতে সে এই অভিযানের জন্য নির্বাচিত হতে পারে।

Screenshot: Reuters 

পাশাপাশি সে বিশ্বের বিভিন্ন মহাকাশ সংস্থার সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছে৷ আমরা আসলে জানি না, আমাদের পরিকল্পনাটা কি হবে?”

অর্থাৎ ২০২১ সাল পর্যন্ত অ্যালিসা কার্সনের মঙ্গলে যাওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত কোনো তথ্য তার বাবা বার্ট কার্সনের কাছেও ছিল না। 

এছাড়া অনুসন্ধানে মঙ্গলে অভিযানে যাওয়ার জন্য নাসার কাছে অ্যালিসা কার্সনের কোন প্রকার যৌনতা, বিয়ে বা সন্তানধারণের নিষেধাজ্ঞাপত্রতে স্বাক্ষরের দাবিতে প্রচারিত তথ্যটিরও কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। 

মূলত, যুক্তরাষ্ট্রের লুজিয়ানা অঙ্গরাজ্যের বাসিন্দা অ্যালিসা কার্সন মাত্র তিন বছর বয়স থেকেই মহাকাশ নিয়ে আগ্রহী হয়ে উঠে। এরই ধারাবাহিকতায় খুব অল্প বয়সেই মহাকাশ বিষয়ক একাধিক অর্জন নিজের অভিজ্ঞতার ঝুলিতে পুরে নেয়৷ ৩টি স্পেস শাটল উৎক্ষেপণ, ৭ বার স্পেস ক্যাম্পে অংশ নেওয়া, স্পেস একাডেমি ৩ বার, রোবোটিক্স একাডেমি একবার, অ্যাডভান্সড স্পেস একাডেমি থেকে কনিষ্ঠ স্নাতক, এবং একাধিক স্যালি রাইড ক্যাম্প অংশগ্রহণের অর্জন। তার এসব অর্জনের প্রেক্ষিতেই দীর্ঘদিন ধরে ইন্টারনেটে প্রচার হয়ে আসছে যে, ‘অ্যালিসা কার্সন নাসার কনিষ্ঠতম সদস্য। নাসা তাকে মাত্র ১১ বছর বয়সে নাসা তাকে মনোনীত করে নেয় এবং ঘোষণা করে যে, সমস্ত অবস্থা অনুকূল হলে সে হবে ২০৩৩ সালে মঙ্গলে যাওয়া পৃথিবীর প্রথম মানুষ।’ তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, অ্যালিসা কার্সন নয়, নাসার সর্বকনিষ্ঠ মহাকাশচারী শেলী রাইড এবং ২০৩৩ সালে অ্যালিসা মঙ্গলে যাবেন এমন দাবিরও কোনো গ্রহণযোগ্য তথ্যপ্রমাণ নেই।

সুতরাং, অ্যালিসা কার্সনে মঙ্গল গ্রহে গিয়ে পৃথিবীতে আর ফিরে আসার দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত তথ্যগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

ভারতের উইমেন প্রিমিয়ার লীগের ধারাভাষ্যকার নিষিদ্ধ হয়নি

সম্প্রতি “ভারতের মহিলা ক্রিকেটের প্রিমিয়ার লীগ বা Women Premier League (WPL) এ একজন নারী খেলোয়াড় সাধারণ ক্যাচ মিস করার পর ধারাভাষ্য কক্ষ থেকে একজন ধারাভাষ্যকার ‘Women HaHaHa’ বলায় ধারাভাষ্য কক্ষে থাকা দুইজন ধারাভাষ্যকারকে WPL থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে” শীর্ষক দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমনকিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে। 
পোস্টগুলোর আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভারতের উইমেন প্রিমিয়ার লীগের ধারাভাষ্যকারদের নারী খেলোয়াড়কে ‘women hahaha’ বলে বিদ্রুপ করায় ২ জন ধারাভাষ্যকার নিষিদ্ধের দাবিটি সঠিক নয় বরং উক্ত দাবিটি প্রথমে কৌতুক হিসেবে টুইটারে শেয়ার করা হয়েছিলো যা পরবর্তীতে সত্য ভেবে অনেকেই ফেসবুকে শেয়ার দিয়েছেন। 

অনুসন্ধানের মাধ্যমে জানা যায়, উক্ত দাবিটি গত ১০ মার্চ একটি টুইটার অ্যাকাউন্ট (আর্কাইভ) থেকে ডিজিটাল ব্যানারের মাধ্যমে সর্বপ্রথম প্রচার করা হয়। 

screenshot: Twitter

টুইটার অ্যাকাউন্টটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এটি একটি স্যাটায়ারধর্মী টুইটার অ্যাকাউন্ট। অ্যাকাউন্টের বায়োতে ‘মিম, ক্রিকেট, প্যারোডি ইত্যাদি শব্দ লেখা রয়েছে। তাছাড়া ভাইরাল ব্যানারের বাম পাশে ছোটকরে ‘স্যাটায়ার’ শব্দ লক্ষ্য করা যায়। এতে বোঝা যায় একটি স্যাটায়ারধর্মী টুইটার অ্যাকাউন্টটি থেকে মজার ছলে উক্ত দাবিটির সূত্রপাত ঘটে।

Image Source: H on Twitter

এছাড়া, উক্ত টুইটের কমেন্টবক্স পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, সেখানে অনেকেই খবরটির সত্যতা জানতে চেয়ে মন্তব্য করেছেন। সেগুলোর রিপ্লাইয়ে পোস্টদাতা নিজেই জানান, এটা একটা স্যাটায়ার পোস্ট।

screenshot: Twitter 

এছাড়াও, ভারতের উইমেন প্রিমিয়ার লীগের খেলোয়াড়দের বিদ্রুপ করে করা মন্তব্যের কারণে ধারাভাষ্যকারদের নিষিদ্ধ করা হয়েছে  মর্মে কোন সংবাদ ভারতীয় কিংবা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে খুঁজে পাওয়া যায়নি।

আলোচিত দাবির সাথে প্রচারিত ধারাভাষ্যকারদের ছবিটির সূত্র খুঁজার চেষ্টা করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ডেকান হেরাল্ড এর অনলাইন সংস্করণে ২০১৯ সালের ০২ মে তারিখে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে মূল ছবিটি পাওয়া যায়। 

screenshot: Deccan Herald

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, ওই ৩ জন ব্যক্তির নাম সুজিত সোমসুন্দর, বিজয় ভরদ্বাজ (দাঁড়িয়ে) এবং শ্রীনিবাস মূর্তি।  ছবির ৩ ব্যক্তি ২০১৯ সালে কন্নড় ভাষায় আইপিএল টুর্নামেন্টের ধারাভাষ্য দিয়েছিলেন।

পরবর্তীতে, ভারতীয় স্পোর্টস পোর্টাল ‘mykhel’ এর ওয়েবসাইটে ২০২৩ সালের ভারতীয় উইমেন প্রিমিয়ার লীগ টুর্নামেন্টের ধারাভাষ্যকারদের নামের তালিকা খুঁজে পাওয়া যায়। সেখানে উক্ত তিন ব্যক্তির নাম পাওয়া যায়নি।

Screenshot: mykhel

মূলত, গত ১০ই মার্চ ভারতীয় স্যাটায়ারধর্মী একটি টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে মজার ছলে একটি ডিজিটাল ব্যানার পোস্ট করা হয়। যেখানে বলা হয়, ভারতের উইমেন প্রিমিয়ার লীগে একজন নারী খেলোয়াড় ক্যাচ মিস করার কারণে ধারাভাষ্যকার তাকে ‘Woman HaHaHa’’ বলে বিদ্রুপাত্মক মন্তব্য করেন এবং নিষিদ্ধ হন। পরবর্তীতে স্যাটায়ারধর্মী উক্ত টুইটার অ্যাকাউন্টের পোস্টই অনূদিত হয়ে বাস্তব দাবিতে বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়ে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে, বিশ্বস্ত কোনো সূত্র উক্ত দাবি সংক্রান্ত কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি। তাছাড়া উক্ত দাবির সাথে যে তিনজন ধারাভাষ্যকারদের ছবি ব্যবহার করা হয়েছে তারা ২০২৩ উইমেন প্রিমিয়ার লীগের দায়িত্বে নেই এবং প্রচারিত ছবিটি ২০১৯ আইপিএলে ধারাভাষ্য দেওয়ার সময় ধারণকৃত।

প্রসঙ্গত, নারী ক্রিকেটারদের নিয়ে ভারতে গত ৪ মার্চ প্রথমবারের মত ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট আসর উইমেন প্রিমিয়ার লীগ (ডব্লিউপিএল) টুর্নামেন্ট শুরু হয়।

সুতরাং, উইমেন প্রিমিয়ার লীগে খেলোয়াড়কে ‘Women HaHaHa’ বলে বিদ্রুপাত্মক মন্তব্যের কারণে ধারাভাষ্যকারদের নিষিদ্ধ হওয়ার দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ড ভুল করে জাজাইকে ৭৫তম জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানায়নি 

0

সম্প্রতি, “Afghanistan Cricket Board Mistakenly Wished 75th Birthday to Hazratullah Zazai Instead of 25th Birthday” শীর্ষক একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এই দাবির কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে,এখানে এবং এখানে
আর্কাইভ দেখুন এখানে, এখানে,এখানে  এবং এখানে

একই দাবিতে টুইটারে প্রচারিত টুইট দেখুন এখানে এবং এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়,  আফগানিস্থান ক্রিকেট বোর্ড হযরতুল্লাহ জাজাইকে ২৫তম জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে ৭৫তম জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানায়নি বরং উক্ত পোস্টে আফগানিস্থান ক্রিকেট বোর্ড পাশতু এবং ইংরেজি দুই ভাষাতেই ২৫ তম জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছে। 

অনুসন্ধানে ফেসবুক অ্যাপ থেকে Afghanistan Cricket Board এর অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে হযরতুল্লাহ জাজাই কে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে করা সেই পোস্টটি খুঁজে দেখা যায় সেখানে পোস্টটির প্রথম অংশে স্বয়ংক্রিয় অনুবাদে ৭৫ তম জন্মদিন দেখাচ্ছে।

কতিপয় ফেসবুক এবং টুইটার ব্যবহারকারীরা ফেসবুকের দেখানো এই স্বয়ংক্রিয় অনুবাদের ক্যাপশনের এই অংশটি দেখেই বিষয়টির স্ক্রিনশট  শেয়ার করে আফগানিস্থান ক্রিকেট বোর্ড ভুলে জাজাইকে ২৫তম এর পরিবর্তে ৭৫তম জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছে শীর্ষক এই দাবিটি করেছে। 

তবে উক্ত পোস্টের See more এ ক্লিক করে দেখা যায় পোস্টটি পাশতু এবং ইংলিশ দুই ভাষাতেই লেখা হয়েছে। প্রথমে পাশতু এবং শেষে ইংলিশেও কিছু অংশ লেখা হয়েছে৷ ইংলিশ অংশে সেখানে ২৫ তম জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে লেখা হয়েছে, “Wishing our explosive top-order batter Hazratullah Zazai a very happy 25th Birthday. His 162* runs against Ireland are still the 2nd highest score in the IT20s.” 

পরবর্তীতে পাশতু ভাষায় লেখা অংশটি গুগল লেন্স এর মাধ্যমে অনুবাদ করে দেখা গেছে সেখানে ২৫তম জন্মদিনের শুভেচ্ছাই জানানো হয়েছে। পাশাপাশি পোস্টের প্রথম অংশে থাকা حضرت الله ځاځي ته دې د زوکړې ۲۵ مه کالیزه مبارک‘ وي!’ এই অংশটি কপি করে গুগল অনুবাদ করেও ২৫তম জন্মদিনের শুভেচ্ছা দেখা গেছে।

অর্থাৎ, আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ড প্রকৃতপক্ষে হজরতুল্লাহ জাজাইকে ২৫তম জন্মদিনের শুভেচ্ছাই জানিয়েছে। ফেসবুকের ত্রুটিপূর্ণ স্বয়ংক্রিয় অনুবাদের কারণে ‘হজরতুল্লাহ জাজাইকে ২৫তম জন্মদিনের পরিবর্তে ৭৫তম জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে’ শীর্ষক বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে।

এছাড়াও উক্ত ফেসবুক পোস্টের স্বয়ংক্রিয় অনুবাদে বয়সের তিনটি ভিন্ন ভিন্ন ভুল অনুবাদ দেখা গেছে। 

ফেসবুকের স্বয়ংক্রিয় অনুবাদে তিন জায়গায় জাজাই এর বয়সের সংখ্যার ভুল অনুবাদ করা হয়েছে। ফেসবুক উক্ত পোস্টের স্বয়ংক্রিয় অনুবাদে যথাক্রমে জাজাই এর বয়স ৭৫, ৬২ এবং ৩ বছর দেখিয়েছে!

এছাড়া, উক্ত পোস্টে উল্লেখ করা পাশতু ভাষার অন্যান্য সংখ্যার অনুবাদেও ভুল করেছে ফেসবুক। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে জাজাই এর আন্তর্জাতিক টি-টুয়ান্টিতে করা ১৬২* রানকে যথাক্রমে ১৬৮, ১৬* এবং ১৬২* তিনটি ভিন্ন অনুবাদ করেছে, যার দুটি ভুল। পাশাপাশি জাজাই এর এখন পর্যন্ত আফগানিস্তানের হয়ে খেলা ৬২ আন্তর্জাতিক ম্যাচের জায়গায় স্বয়ংক্রিয় অনুবাদে ২২ আন্তর্জাতিক ম্যাচ দেখানো হয়েছে। 

মূলত, আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ড এর অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে হযরতুল্লাহ জাজাইকে গত ২৩ মার্চ তার ২৫তম জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে পাশতু ও ইংলিশ উভয় ভাষার ক্যাপশনে একটি ফেসবুক পোস্ট করা হয়। ফেসবুক কর্তৃক উক্ত পোস্টের পাশতু অংশের ভুল স্বয়ংক্রিয় অনুবাদ প্রদর্শিত হলে ‘হযরতুল্লাহ জাজাইকে ২৫তম জন্মদিনের পরিবর্তে ৭৫তম জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে’ শীর্ষক বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয় এবং লোকজন সঠিকভাবে পুরো পোস্ট এবং এর অনুবাদ লক্ষ্য না করেই এই বিভ্রান্তি প্রচার করে। 

সুতরাং, আফগানিস্থান ক্রিকেট বোর্ড হযরতুল্লাহ জাজাইকে ২৫তম জন্মদিনের পরিবর্তে ৭৫তম জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছে শীর্ষক দাবিটি মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

১১ নয়, নাইজেরিয়ায় আমিনু ডানমালিকি ২১ বছর বয়সী নারীকে বিয়ে করেছেন

0

সম্প্রতি, “নাইজেরিয়ায় ৫৬ বছরের বৃদ্ধ কানো আলহাজী ১১ বছরের এক নাবালিকাকে বিয়ে করেছেন রমজানের আগে।” শীর্ষক একটি দাবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে।

Screenshot source: Facebook 

উক্ত দাবিতে কিছু ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

একই দাবিতে টিকটকের কিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, নাইজেরিয়ায় ৫৬ বছরের বৃদ্ধ কানো আলহাজী ১১ বছর বয়সী নাবালিকাকে বিয়ে করেননি বরং আমিনু ডানমালিকি নামের উক্ত ব্যক্তি ২১ বছরের এক নারীকে বিয়ে করেছেন।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে কিওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে নাইজেরিয়ার সংবাদমাধ্যম ‘Daily Post Nigeria’ এর ওয়েবসাইটে গত ২২ মার্চ My wife is 21 – Kano man accused of marrying minor speaks শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায় যেখানে বলা হয় নাইজেরিয়ার কানো শহরের ৬০ বছর বয়সী আমিনু ডানমালিকি ২১ বছরের সখিনা নামক নারীকে বিয়ে করেছেন। তারা একে অন্যকে ভালোবাসেন এবং এই বিয়ের জন্য সখিনাকে জোরাজুরিও করা হয়নি৷ 

Screenshot source: Daily Post Nigeria

উক্ত প্রতিবেদনে আমিনু ডানমালিকির এই প্রসঙ্গে করা একটি ফেসবুক পোস্টের স্ক্রিনশট যুক্ত করা হয়েছে। 
পরবর্তীতে গত ২২ মার্চ ফেসবুকে প্রকাশিত আমিনু ডানমালিকির আলোচিত পোস্টটি (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়, যেখানে একই তথ্য উল্লেখ পাওয়া যায়।

Screenshot source: Facebook

মূলত, সম্প্রতি কানো আলহাজী নামে নাইজেরিয়ার ৫৬ বছর বয়সী এক ব্যক্তি ১১ বছরের এক নাবালিকাকে বিয়ে করেছেন শীর্ষক দাবি ইন্টারনেটের বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। কিন্তু অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত ব্যক্তির প্রকৃত নাম আমিনু ডানমালিকি। তার বয়স ৬০ বছর। তার স্ত্রীর বয়স ২১ বছর। তারা দুইজন পরস্পর ভালোবেসেই বিয়ে করেছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। 

সুতরাং, নাইজেরিয়ায় ৫৬ বছরের বৃদ্ধ কানো আলহাজী ১১ বছর বয়সী নাবালিকাকে বিয়ে করেছেন দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

মুফতি শরীফুল ইসলাম মারা যাননি

0

সম্প্রতি ‘দুঃসংবাদ! পুরো দেশ কাঁদিয়ে মারা গেলেন জিহ্বা কাটা বক্তা শরিফুল ইসলাম, কেঁদে কেঁদে যা বললেন মিজানুর রহমান‘ শীর্ষক একটি তথ্য কিছু ব্লগ সাইট ও ভূঁইফোড় পোর্টালে প্রকাশের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমনকিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে
পোস্টগুলোর আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সম্প্রতি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় দুর্বৃত্তের হামলায় আহত ইসলামি বক্তা শরীফুল ইসলাম মারা যাননি বরং তিনি হাসপাতাল থেকে সফল সার্জারী পরবর্তী শেষে বর্তমানে নিজ গ্রামের বাড়িতে অবস্থান করছেন।

তথ্যের সত্যতা যাচাই

ইসলামি বক্তা শরীফুল ইসলামের মারা যাওয়ার দাবিতে প্রচার করা কয়েকটি পোর্টাল ও ব্লগের লিংকে গিয়ে দেখা যায় সেগুলোতে কোনোটিতে বিস্তারিত কোনো তথ্য দেওয়া নেই। আবার কোনোটিতে বিস্তারিত তথ্য দেওয়া থাকলেও বিস্তারিত অংশে শরীফুল ইসলামের মৃত্যু সম্পর্কিত কোনো তথ্য উল্লেখ নেই। 

viralnew101.com নামের ব্লগ সাইটটির সংবাদের বিস্তারিত অংশে শিরোনামের তথ্যটি হুবহু লেখা ব্যতীত আর কিছু উল্লেখ নেই।

screenshot: viralnews101.com

অন্যদিকে, এই বিষয়ে viraltopics24.com নামের ব্লগ সাইটে প্রকাশিত সংবাদটির বিস্তারিত অংশেও বক্তা শরীফুল ইসলামের মারা যাওয়া সংক্রান্ত কোনো তথ্যের উল্লেখ নেই।  

এছাড়া, শরীফুল ইসলামের মৃত্যুর তথ্য সম্পর্কিত সংবাদের শিরোনাম ‘কেঁদে কেঁদে যা বললেন মিজানুর রহমান আজহারী’ শীর্ষক তথ্য উল্লেখ থাকলেও প্রতিবেদনগুলোর বিস্তারিত অংশে আজহারীর কোনো মন্তব্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

অনুসন্ধানের শুরুতে মুফতি শরীফুল ইসলামের মারা যাওয়ার দাবির সত্যতা যাচাইয়ে তার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম।

Screenshot: Facebook/ Mufti Shariful Islam Nuree

আজ ২৬ মার্চ নিজ ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে দেওয়া এক পোস্টে মুফতি শরীফুল ইসলাম নূরী জানান,

“#মহান আল্লাহ তায়ালার অশেষ মেহেরবানিত ঢাকা ইবনে সিনা হাসপাতালে সফল সার্জারীর পরবর্তী চিকিৎসা নিয়ে এইমাত্র নিজ গ্রামের বাড়িতে ফিরে আসলাম।(আলহামদুলিল্লাহ)#এখনো তরল খাবার যেমন-সুপ,জুস,ডাবের পানি খাচ্ছি। আরো সপ্তাখানেক এমন খাবারই চলবে। পরবর্তী সপ্তাহ থেকে আস্তে আস্তে নরম খাবার ও পরে স্বাভাবিক খাবারের দিকে যাবো। আলহামদুলিল্লাহ, রোজা পালন করছি,যদিও চিকিৎসক রোজা রাখতে নিষেধ করেছেন। #ক্ষত শুকাতে আরো অনেক সময় লাগবে এবং স্বাভাবিক কথা বলতে আরো ৯০ দিনের বেশি সময় লাগবে বলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানিয়েছেন।”

Screenshot: Facebook/ Mufti Shariful Islam Nuree

এছাড়া, গতকাল ২৫ মার্চ এক ফেসবুক পোস্টে তিনি জানান,

“আলহামদুলিল্লাহ, আজ রাত ৮ টায় দয়াগঞ্জ ইবনে সিনা হাসপাতালে আমার সফল সার্জারী হয়েছে। আগামীকাল বিকালে গ্রামে ফিরবো, ইনশাআল্লাহ।”

ছবির সত্যতা যাচাই

মুফতি শরীফুল ইসলামের লাশের কফিন বহরের দৃশ্য  দাবিতে ভূঁইফোড় পোর্টাল ও ব্লগ সাইটের সংবাদে ব্যবহৃত ছবিটির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য অনুসন্ধান করে রিউমর স্ক্যানার টিম।

রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে Smart Panjabi Shop নামের একটি ফেসবুক পেজে ২০২০ সালের ০৫ মার্চ মুফতি মুফতি গিয়াস উদ্দিন আত-তাহেরী বাবার লাশ বহনের দৃশ্য দাবিতে প্রচারিত পোস্টে(আর্কাইভ) আসল ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Image Comparison by Rumor Scanner 

ছবিটি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ছবিতে মুফতি গিয়াস উদ্দিন আত-তাহেরীর সাথে লাশের খাটিয়া কাঁধে নেওয়া ব্যক্তির ছবি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় মুছে দিয়ে ওই জায়গায় মাওলানা মো. হাফিজুর রহমান সিদ্দিক এর ছবি বসানো হয়েছে।

অর্থাৎ, উপরোক্ত তথ্য উপাত্ত এবং ছবি পর্যালোচনা করে এটা স্পষ্ট যে, ইসলামি বক্তা শরীফুল ইসলাম মারা গেছেন দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সঠিক নয়।

মূলত, গত ০৪ মার্চ রাতে মাহফিল থেকে বাড়ি ফেরার পথে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় মাওলানা শরীফুল ইসলাম  নামের এক ইসলামি বক্তার ওপর হামলা চালিয়ে ছুরি দিয়ে তার জিহ্বা কেটে নেয় দুর্বৃত্তরা। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠায়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে প্রথমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে এবং পরবর্তীতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। তবে উক্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে  আহত ইসলামি বক্তা শরীফুল ইসলাম মারা গেছেন দাবিতে একটি তথ্য ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে।

তবে অনুসন্ধানে জানা যায়, মুফতি শরীফুল ইসলাম সর্বশেষ ঢাকার ইবনে সিনা হাসপাতালে সফল সার্জারী পরবর্তী চিকিৎসা শেষে বর্তমানে নিজ বাড়িতে অবস্থান করছেন। অর্থাৎ তিনি বেঁচে আছেন।

প্রসঙ্গত, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় ইসলামি বক্তা মুফতি শরীফুল ইসলামের ওপর হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে গত ৭ মার্চ চারজনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। এর আগে গত ০৪ মার্চ আখাউড়ায়এক মাহফিলে শিয়া সম্প্রদায় নিয়ে বিরূপ বক্তব্য দিয়েছিলেন বক্তা শরীফুল ইসলাম। ওই মাহফিল থেকে ফেরার পথে তার ওপর হামলা হয়।

উল্লেখ্য, ইতিপূর্বে ইসলামি বক্তা শরীফুল ইসলামের জিহ্বা কাটার ঘটনায় মাওলানা তাহেরির গ্রেফতার হওয়ার তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। সেসময় উক্ত বিষয়টিকে মিথ্যা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার। 

সুতরাং, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে আহত ইসলামি বক্তা মুফতি শরীফুল ইসলামের মারা গিয়েছেন  দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

জয় বাংলা কনসার্টের স্টেজের ছবিকে বিকৃত করে প্রচার 

0

সম্প্রতি, “বেশি তেল মারতে গেলে যা হয়। জয় হয়ে যায় বয় জংলা” শীর্ষক শিরোনামে একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। 

Screenshot from Facebook | Jamal Miah-জামাল মিয়া 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে
পোস্টগুলোর আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, জয় বাংলা কনসার্টের স্টেজে থাকা ‘জয় বাংলা’ লেখার পরিবর্তে ‘বয় জংলা’ লেখা ছিলোনা বরং স্টেজের ‘জয় বাংলা’ লেখাটি এডিট করে ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। 

কি-ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে যুব সংগঠন ‘Young Bangla’ এর ওয়েবসাইটে “Joy Bangla Concert 2023: A Spectacular Resurgence” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে চলতি বছরের মার্চ মাসে অনুষ্ঠিত জয় বাংলা কনসার্টের বেশকিছু ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot from ‘Young Bangla’ website 

‘Young Bangla’ এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ছবিগুলো পর্যবেক্ষণ করে স্টেজের উপরে থাকা ‘জয় বাংলা’ লেখা স্পষ্টভাবে পরিলক্ষিত হয়েছে। 

পাশাপাশি প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ‘BIJOY TV’ এর ইউটিউব চ্যানেলে প্রচারিত গত ০৮ মার্চ তারিখে জয় বাংলা কনসার্টের লাইভ অনুষ্ঠান পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

Screenshot from ‘BIJOY TV’ Youtube 

পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, জয় বাংলা কনসার্ট ২০২৩ এর স্টেজের উপরে থাকা লেখাটি ‘জয় বাংলা’ লেখা রয়েছে, ‘বয় জংলা’ নয়। 

এছাড়া, বিগত বছরগুলোতে অনুষ্ঠিত জয় বাংলা কনসার্টের ভিডিওগুলো পর্যবেক্ষণ করেও স্টেজের উপরে ‘জয় বাংলা’ লেখা শব্দদ্বয় খুঁজে পাওয়া যায়নি। দেখুন এখানে(২০১৯) এবং এখানে(২০২০)। 

Image Collage by Rumor Scanner  

মূলত, দুই বছর সময়ের বিরতির পর চলতি বছরের ০৮ মার্চ তারিখে জয় বাংলা কনসার্ট অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে কনসার্টে স্টেজের উপরে থাকা ‘জয় বাংলা’ লেখাটি এডিট করে ‘জ’ এর স্থলে ‘ব’ প্রতিস্থাপন করে ‘বয় জংলা’ লেখা রয়েছে দাবি করে একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। 

অর্থাৎ, জয় বাংলা কনসার্টের স্টেজে ‘জয় বাংলা’ শব্দটি ‘বয় জংলা’ হয়ে গেছে দাবিতে প্রচারিত ছবিটি এডিটেড।

তথ্যসূত্র

মুলা দিয়ে শ্রীকৃষ্ণের পায়ের প্রতিকৃতি তৈরির দাবিটি মিথ্যা

0

সম্প্রতি, “জাপানের একটি ক্ষেতে উৎপাদিত দুটি মুলা দ্বারা শ্রীকৃষ্ণের বাঁশি হাতে দাড়িয়ে থাকা অবিকল পায়ের প্রতিকৃতি তৈরী করলেন এক দম্পতি।” শীর্ষক শিরোনামে একটি পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। 

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া এমন কিছু পোস্ট দেখুন- এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এবং এখানে। 
উক্ত পোস্টগুলোর  আর্কাইভ- দেখুন, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এবং এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, জাপানের  ক্ষেতে উৎপাদিত মুলা দ্বারা শ্রীকৃষ্ণের পায়ের প্রতিকৃতি তৈরি করা হয়নি এবং প্রচারিত ছবিগুলো আসল কোনো মুলার ছবি নয় বরং এটি ২০০৫ সালে কেনঝি সুয়েটসুগু নামের একজন জাপানি আর্টিস্ট এর তৈরি আর্টওয়ার্ক। 

Screenshot from Facebook 

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে মানুষের পায়ের মতো দেখতে মুলার ছবিটির মূল উৎস অনুসন্ধান করার ক্ষেত্রে, প্রাসঙ্গিক কিওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ছবিটির মূল উৎস খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার টিম। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে ফেসবুকে গত ১৭ মার্চ Japan moments নামক একটি পেজ থেকে ‘Strange radish in Japan’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি পোস্টে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত পোস্টের ক্যাপশন থেকে জানা যায় উক্ত ছবিটি মূলত কেনঝি সুয়েটসুগু (Kenji Suetsugu) নামক একজন জাপানি আর্টিস্টের তৈরি। তাছাড়া সেই পোস্টের ক্যাপশনে মূল আর্টিস্টের ইনস্টাগ্রাম আইডির লিংক ম্যানশন করা ছিল। 

Screenshot from Facebook

পরবর্তীতে, কেনঝি সুয়েটসুগু এর ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot from Instagram

কেনঝি সুয়েটসুগু এর ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে জানা যায়, জাপানের ফুকুওকাতে পরাবাস্তব ভাস্কর্য, স্পেশাল মেকআপ ইফেক্টের কাজ করেন তিনি।

আইডির বায়োতে https://tsukurimono.com/ নামক একটি সাইট উল্লেখ রয়েছে। 

পরবর্তীতে উক্ত সাইটেও আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। সাইটে ছবিটির ক্যাপশনে ছবিটিকে Daikonashi (2005) নামে অভিহিত করে এটি তৈরি প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, এটির মূল অংশ ইউরেথেন এবং পাতার অংশটি আসল মুলার পাতা দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। 

Screenshot from Tsukurimono

কিন্তু ছবির ক্যাপশনে ছবিটি শ্রীকৃষ্ণের বাঁশি হাতে দাঁড়িয়ে থাকা অবিকল পায়ের প্রতিকৃতির মতো বা উক্ত অঙ্গভঙ্গি থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে তৈরি কিনা সে বিষয়টি উল্লেখ পাওয়া যায়নি। 

পরবর্তীতে সাইটটির About সেকশন থেকে জানা যায়, এই সাইটটি মূলত কেনঝি সুয়েটসুগু এরই।

Screenshot from Tsukurimono

এই ছবির বিষয়ে জানতে পরবর্তীতে রিউমর স্ক্যানার টিমের পক্ষ থেকে কেনঝি সুয়েটসুগু এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান,“শিল্পকর্মটি জাপানি অভিব্যক্তি ‘ডাইকোন-আশি’ এর উপর ভিত্তি করে ২০০৫ সালে আমি তৈরি করেছিলাম। ‘ডাইকোনাশি’ নারীর মোটা পা অর্থে ব্যবহৃত হয়। এই মুলার সাথে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কোনো সম্পর্ক নেই। আমি ভেবেছিলাম আসল পায়ের মতো একটি মূলা তৈরি করা আকর্ষণীয় হবে, তাই এটি তৈরি করেছি।”

মূলত, জাপানি এক্সপ্রেশন “daikon-ashi’ এর উপর ভিত্তি করে ২০০৫ সালে তৈরি একটি আর্টওয়ার্কের ছবিকে মুলা দিয়ে শ্রীকৃষ্ণের পায়ের প্রতিকৃতি তৈরি করা হয়েছে দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে। তবে অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত আর্টওয়ার্কের সাথে শ্রীকৃষ্ণের পায়ের প্রতিকৃতির কোনো সম্পর্ক নেই বলে শিল্পী সুয়েটসুগু রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করেছেন।

সুতরাং জাপানের ক্ষেতে উৎপাদিত মুলা দিয়ে শ্রীকৃষ্ণের পায়ের প্রতিকৃতি তৈরির দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

  • Japan moments: Facebook Post 
  • Tsukurimono: Daikonashi (2005) / Produced at the request of “a realistic radish foot sculpture”. The root part is made of urethane, and the leaf part uses real radish leaves.
  • Statement form Kenji Suetsugu.