গতকাল (১৫ নভেম্বর) কুমিল্লা শহরের রামমালা এলাকায় স্থানীয় রাজিব খান গ্রুপ এবং মশু গ্রুপ নামক দুই গ্রুপের সংঘর্ষে দুইজন নিহত হয়েছেন শীর্ষক একটি দাবি ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।
উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, কুমিল্লার উক্ত সংঘর্ষে দুইজন নিহত হওয়ার তথ্যটি সঠিক নয় বরং উক্ত সংঘর্ষে একজন মারা গেছেন এবং একজন আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে উক্ত ঘটনা পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, দুইজন মৃত্যুর দাবির কিছু পোস্টে একজন পুলিশে সদস্যের বক্তব্যের ফুটেজ প্রচার করা হয়। যেখানে তিনি বলেন, “আমরা ৯৯৯ এর মাধ্যমে রাজীব খান গ্রুপ এবং মশু গ্রুপ নামক দুই গ্রুপের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষের খবর পাই। মশু গ্রুপের একজন হাসান নামের একজনকে কুপিয়ে জখম করলে তাকে কুমিল্লা মেডিক্যালে নেওয়ার পথে মারা যান। শাহজাহান নামে আরেকজন জখম হয়। পরবর্তীতে তাকে ঢাকা মেডিক্যাকে নিয়ে যাওয়া হয়।”
কিন্তু এসব পোস্টের ক্যাপশনে দাবি করা হয়, দুইজন মারা গেছে। এমন পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।
পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে অনলাইন পোর্টাল ‘বাংলা ট্রিবিউন’ এর ওয়েবসাইটে গত ১৬ নভেম্বর প্রকাশিত এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, উক্ত সংঘর্ষে হাসান নামের এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করে রাজীব গ্রুপ।
বাংলা ট্রিবিউন জানাচ্ছে, এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয় শাহজাহান (৪৫)। তিনি নগরীর গোবিন্দপুর ডিসি রোড এলাকার বাসিন্দা। উন্নত চিকিৎসার জন্য শাহাজাহানকে প্রথমে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়।
একই প্রতিবেদনে পুলিশ কর্মকর্তা দীনেশ এর বক্তব্যেও একই তথ্য উল্লেখ পাওয়া যায়৷
পরবর্তীতে কুমিল্লার স্থানীয় দৈনিক কুমিল্লার কাগজ এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একই ঘটনার বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকেও জানা যায়, সংঘর্ষে একজনই মারা গেছেন।
এ বিষয়ে অধিকতর সত্যতা যাচাইয়ের জন্য কুমিল্লা কোতোয়ালি থানার ওসি সনজুর মোরশেদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি রিউমর স্ক্যানারকে জানান, উক্ত ঘটনায় একজন মারা গেছেন এবং আরেকজন হাসপাতালে আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছেন।
মূলত, গতকাল (১৫ নভেম্বর) কুমিল্লায় স্থানীয় দুইটি গ্রুপের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট সংঘর্ষে হাসান নামের এক যুবক মারা যান। কিন্তু ফেসবু্কের একাধিক পোস্টে দাবি করা হচ্ছে, এই সংঘর্ষে দুইজন মারা গেছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যাচ্ছে, উক্ত দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, উক্ত ঘটনায় একজন মারা গেছেন এবং আরেকজন হাসপাতালে আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছেন, যা পুলিশের পক্ষ থেকেও নিশ্চিত করা হয়েছে।
সুতরাং, কুমিল্লায় দুই স্থানীয় সন্ত্রাসী গ্রুপের সংঘর্ষে একজন নিহত হওয়ার ঘটনাকে দুই জন নিহত হওয়ার দাবিতে ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।
তথ্যসূত্র
- Bangla Tribune – কুমিল্লায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে যুবককে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ
- Comillar Kagoj – কুমিল্লা শহরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে যুবক খুন
- Statement from Sanjur Morshed, OC, Cumilla.
- Rumor Scanner’s own investigation