সম্প্রতি, গাজীপুরের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীরের বাসা থেকে ছেড়ে আসা পিক-আপ ভ্যানটি বস্তাভর্তি বোমা ও লাঠিসহ রাজধানীতে আটক– শীর্ষক তথ্য বা শিরোনামে জাতীয় দৈনিক কালবেলা’র ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, গাজীপুরের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের বাসা থেকে ছেড়ে আসা কোনো পিক-আপ ভ্যান আটক হয়নি এবং দৈনিক কালবেলাও উক্ত শিরোনামে কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি বরং ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে উক্ত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।
অনুসন্ধানের শুরুতে কালবেলা’র ফটোকার্ডের ডিজাইন সম্বলিত ছবিটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। সেখানে এই সংবাদটি প্রচারের তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে ২৮ অক্টোবর ২০২৩।
Screenshot: Facebook Claim Post
দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে ফটোকার্ডটিতে থাকা তারিখ এবং কালবেলা’র লোগোর সূত্র ধরে কালবেলা’র ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে ২৮ অক্টোবর প্রচারিত ফটোকার্ডগুলো পর্যালোচনা করে উক্ত শিরোনাম বা তথ্য সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও কালবেলা’র ওয়েবসাইট কিংবা অন্যকোনো গণমাধ্যমেও উক্ত দাবিতে প্রচারিত কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি।
পরবর্তীতে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। এতে দেখা যায়, আলোচিত ফটোকার্ডে থাকা টেক্সটের ফন্ট ডিজাইন এবং কালারের সাথে কালবেলা কর্তৃক প্রকাশিত ফটোকার্ডের টেক্সটের ফন্ট ডিজাইন এবং কালারের সুস্পষ্ট পার্থক্য রয়েছে।
Image Comparison by Rumor Scanner
এছাড়া, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে গণমাধ্যম ও বিশ্বস্ত সামাজিক মাধ্যমে উক্ত দাবি সংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
মূলত, ২৮ অক্টোবর বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে আওয়ামী লীগের শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ। সমাবেশে আগত নেতাকর্মীদের দুপুরের আপ্যায়নের জন্য গাজীপুরের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম নিজ বাসায় তিন শতাধিক ডেকচিতে খাবার রান্নার আয়োজন করেছেন। পরবর্তীতে গাজীপুরের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের বাসা থেকে ছেড়ে আসা পিক-আপ ভ্যানটি বস্তাবর্তি বোমা ও লাঠিসহ রাজনীতিতে আটক করা হয়েছে শীর্ষক দাবিতে জাতীয় কালবেলা’র ডিজাইন সম্বলিত একটি একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, দাবিটি সঠিক নয় জাতীয় দৈনিক কালবেলাও এমন কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি। প্রকৃতপক্ষে, উক্ত ফটোকার্ডটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে তৈরি করে আলোচিত দাবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, দেশের প্রায় ৪০ টি রাজনৈতিক দলের ২৮ অক্টোবরের সমাবেশকে কেন্দ্র করে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া ভুল তথ্যের বিষয়ে একাধিক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কিছু প্রতিবেদন দেখুন এখানে এবং এখানে।
সুতরাং, গাজীপুরের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের বাসা থেকে ছেড়ে আসা পিক-আপ ভ্যানটি বোমা ও লাঠিসহ আটকের দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা এবং উক্ত দাবিত কালবেলা’র নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি ভুয়া ও বানোয়াট।
সম্প্রতি, ‘বিএনপি-র সমাবেশ স্থলে কে বা কারা ফেলে গেছে ৪ টি হাঁস। হাঁস দেখতে উৎসুক জনতার ভিড়’ শীর্ষক শিরোনামে একটি তথ্য মূলধারার গণমাধ্যম ইত্তেফাকের ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বিএনপি’র সমাবেশস্থলে হাঁসের উপস্থিতির বিষয়টি সঠিক নয় এবং দৈনিক ইত্তেফাকও উক্ত তথ্য সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি বরং আলোচিত এই ফটোকার্ডটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে।
অনুসন্ধানের শুরুতে ইত্তেফাক’র ফটোকার্ডের ডিজাইন সম্বলিত ছবিটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। এতে এই সংবাদটি প্রচারের তারিখ হিসেবে ২৮ অক্টোবরের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
Screenshot: Facebook Claim Post
দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে ফটোকার্ডটিতে থাকা লোগো ও তারিখের সূত্র ধরে ইত্তেফাক’র ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে গত ২৮ অক্টোবর বা তার আগে পরে উক্ত শিরোনাম বা তথ্য সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া, ইত্তেফাক’র ওয়েবসাইট, ইউটিউব চ্যানেল বা অন্যকোনো গণমাধ্যমেও উক্ত দাবির বিষয়ে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।
তবে, ২৮ অক্টোবর ইত্তেফাক’র ফেসবুক পেজে ‘শাপলা চত্বর থেকে জামায়াত নেতাকর্মীদের সরিয়ে দিলো পুলিশ’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ফটোকার্ডের ডিজাইনের সাথে আলোচিত ফটোকার্ডটির ডিজাইনের মিল খুঁজে পাওয়া যায়। তাছাড়া, আলোচিত ফটোকার্ডটির টেক্সট ফন্টের সাথে ইত্তেফাক’র ফেসবুক পেজে প্রচারিত অন্যান্য ফটোকার্ডের টেক্সট ফন্টের ভিন্নতা রয়েছে।
Photocard Comparison by Rumor Scanner
অর্থাৎ, ‘বিএনপি-র সমাবেশ স্থলে কে বা কারা ফেলে গেছে ৪ টি হাঁস। হাঁস দেখতে উৎসুক জনতার ভিড়’ শীর্ষক শিরোনামে দৈনিক ইত্তেফাক কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি।
পাশাপাশি, মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো সূত্রে এখন পর্যন্ত বিএনপি’র সমাবেশস্থলে হাঁসের উপস্থিতির বিষয়ে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।
মূলত, ‘বিএনপি-র সমাবেশ স্থলে কে বা কারা ফেলে গেছে ৪ টি হাঁস। হাঁস দেখতে উৎসুক জনতার ভিড়’ শীর্ষক শিরোনামে দেশের মূলধারার গণমাধ্যম ইত্তেফাক’র ফটোকার্ডের ডিজাইন সম্বলিত একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়। তবে অনুসন্ধানে ইত্তেফাক’র ফেসবুক পেজ কিংবা অন্যান্য প্ল্যাটফর্মে উক্ত তথ্য সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া, মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো গ্রহণযোগ্য সূত্রে আলোচিত দাবিটির সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত বিভিন্ন গণমাধ্যমের নাম, লোগো, শিরোনাম এবং নকল ফটোকার্ড ব্যবহার করে অপপ্রচারের বিষয়ে গত ০৫ সেপ্টেম্বর বিস্তারিত ফ্যাক্ট ফাইল প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।
সুতরাং, ‘বিএনপি-র সমাবেশ স্থলে কে বা কারা ফেলে গেছে ৪ টি হাঁস। হাঁস দেখতে উৎসুক জনতার ভিড়’ শীর্ষক শিরোনামে ফেসবুকে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং প্রচারিত ফটোকার্ডটি ভুয়া ও বনোয়াট।
সম্প্রতি ‘মঞ্চে উঠে ওবায়দুল কাদেরকে অতিরিক্ত কথা বলতে নিষেধ করেছেন প্রধানমন্ত্রী’ শীর্ষক দাবিতে প্রথম আলো’র ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে মঞ্চে উঠে অতিরিক্ত কথা বলতে নিষেধ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শীর্ষক দাবিটি সঠিক নয় এবং উক্ত দাবিতে প্রথম আলোও কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি। প্রকৃতপক্ষে, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে প্রথম আলো’র আদলে উক্ত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।
অনুসন্ধানের শুরুতে প্রথম আলো’র আদলে তৈরি আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। সেখানে এই ফটোকার্ডটি প্রচারের তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে ২৭ অক্টোবর, ২০২৩।
Screenshot: Facebook claim post
এ সূত্রে অনুসন্ধানে প্রথম আলো’র ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে ২৭ অক্টোবর বিভিন্ন বিষয়ে প্রকাশিত অন্তত ৯ টি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়।
এই ফটোকার্ডগুলোর মধ্যে ওবায়দুল কাদেরকে নিয়ে প্রথম আলো’র ফটোকার্ডে আদলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত ফটোকার্ডটির ন্যায় কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি।
তবে গত ২৪ অক্টোবর পত্রিকাটির ফেসবুক পেজে বিএনপি’র মহাসমাবেশ নিয়ে ওবায়দুল কাদেরের মন্তব্য সম্বলিত একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়। এই ফটোকার্ডটির সঙ্গে আলোচিত ফটোকার্ডটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়।
Photocard Comparison: Rumor Scanner
ফটোকার্ড দুইটি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ২৮ অক্টোবর বিএনপির ডাকা মহাসমাবেশে যোগ দিতে দলটির নেতা-কর্মীদের ঢাকায় আসা প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কমিউনিটি সেন্টার ভাড়া করছে। আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে উঠছে। কার আত্মীয় কে, এটাও খবর নেওয়া উচিত। এত আত্মীয় কোথা থেকে এল ঢাকা শহরে?’
পরবর্তীতে তার এই মন্তব্যটি সম্বলিত ফটোকার্ডটিই সম্পাদনা করে ‘মঞ্চে উঠে ওবায়দুল কাদেরকে অতিরিক্ত কথা বলতে নিষেধ করেছেন প্রধানমন্ত্রী’ শীর্ষক দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।
অপরদিকে অনুসন্ধানে সাম্প্রতিক সময়ে ওবায়দুল কাদেরকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন কোনো নিষেধের বিষয়ে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।
মূলত, ২৪ অক্টোবর রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের এক বর্ধিত সভায় ওবায়দুল কাদের ২৮ অক্টোবর বিএনপির ডাকা মহাসমাবেশে যোগ দিতে দলটির নেতা-কর্মীদের ঢাকায় আসা প্রসঙ্গে মন্তব্য করে বক্তব্য দেন। যা নিয়ে সে সময় প্রথম আলোতে একটি ফটোকার্ড প্রকাশিত হয়। অনুসন্ধানে দেখা যায়, সেই ফটোকার্ডটিই সম্পাদনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে মঞ্চে উঠে অতিরিক্ত কথা বলতে নিষেধ করেছেন শীর্ষক তথ্য যুক্ত করে আলোচিত ফটোকার্ডটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, দেশের প্রায় ৪০ টি রাজনৈতিক দলের ২৮ অক্টোবরের সমাবেশকে কেন্দ্র করে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া ভুল তথ্যের বিষয়ে একাধিক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার৷ এমন কিছু প্রতিবেদন দেখুন এখানে এবং এখানে।
সুতরাং, প্রধানমন্ত্রীর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে মঞ্চে উঠে অতিরিক্ত কথা বলতে নিষেধ করেছেন শীর্ষক দাবিটি মিথ্যা এবং উক্ত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডটি এডিটেড বা বিকৃত।
বিএনপির ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে দেশের দুই জাতীয় দৈনিক প্রথম আলো ও কালবেলার আদলে তৈরি ফটোকার্ড প্রচারের মাধ্যমে দাবি করা হচ্ছে, ২৭ অক্টোবর মহাসমাবেশের আগের রাতে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দলটির নেত্রী নিপুণ রায়ের বিতরণ করা খিচুড়ি খেয়ে ৬৫ জন অসুস্থ হয়েছেন এবং তাদের ইবনে সিনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, খিচুড়ি খেয়ে বিএনপি নেতাকর্মীরা অসুস্থ দাবি করে প্রথম আলো ও কালবেলা কোনো ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি বরং ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় কালবেলা ও প্রথম আলো’র ডিজাইন নকল করে আলোচিত ফটোকার্ড দুইটি তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া অনুসন্ধানে গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্য কোনো গ্রহণযোগ্য সূত্রে পল্টনে খিচুড়ি খেয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের অসুস্থতার দাবির বিষয়ে কোনো সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।
দাবিটির সূত্রপাত কীভাবে?
এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে ফেসবুকের মনিটরিং টুলসহ একাধিক টুলের সহায়তায় রিউমর স্ক্যানার টিম দেখেছে, Nurul Azim Rony নামক একটি ভেরিফাইড অ্যাকাইন্ট থেকে এ সংক্রান্ত একটি পোস্ট (আর্কাইভ) করা হয় ২৮ অক্টোবর রাত ১২ টা ৫৬ মিনিটে।
Screenshot: Facebook
জনাব রনি তার পোস্টে রাত ১ টা ২৪ মিনিটে কালবেলা’র আদলে তৈরি একটি ফটোকার্ড কমেন্ট করেন, যেখানে একই দাবি উল্লেখ ছিল।
Screenshot: Facebook
কালবেলার আদলে তৈরি এই ফটোকার্ডের বিষয়ে অনুসন্ধান করে দেখা গেছে, অন্তত দুই শতাধিক আইডি/পেজ থকে উক্ত ফটোকার্ডটি পোস্ট করা হয়েছে।
এর মধ্যে রাত ১ টা ১৪ মিনিটে শাওন হাওলাদার নামে একটি অ্যাকাউন্টে এ সংক্রান্ত সম্ভাব্য প্রথম পোস্টটি (আর্কাইভ) প্রকাশ করা হয়।
Screenshot: Facebook
কালবেলার আদলে তৈরি ফটোকার্ড এবং খিচুড়ির ছবি প্রকাশ করে জনাব শাওন তার পোস্টের ক্যাপশনে লিখেছেন, “একই সাথে বেশ কয়েকজনকে ইসলামি ব্যাংক হাসপাতাল কাকরাইলেও নেওয়া হয় সবাই এই খিচুড়ি খেয়েই অসুস্থ হয়েছেন বলে ছাত্রদলের স্বাস্থবিষয়ক সম্পাদক কবিরুল ইমন কালবেলাকে ফোনে নিশ্চিত করেন.. তিনি আক্ষেপ করে বলেন – অতি ক্ষুদার্ত ছিলেন তারাই টক খিচুড়ি খেয়েছেন। – মন্তব্য যাই হোক কেউ যেন ভুলেও এতে সরকারের হাত আছে বলে অভিযোগ না তোলে..কেননা সকালে আনা খিচুরি রাতে নষ্ট হবার কথা, কিন্তু নষ্ট স্বীকার না করে এটাকে টক ল্যাদা খিচুড়ি বলে চালিয়ে দিয়েছেন এক নেত্রী তাই এই দুর্দশা বলে জানান বিএনপি নেত্রী পাপিয়া।”
আলোচিত দাবিটি নিয়ে কালবেলার ফটোকার্ডটির বিষয়ে অনুসন্ধানের মধ্যেই গতরাত ১২ টার পূর্বে অর্থাৎ ২৭ অক্টোবর রাত সাড়ে ১১ টার পরে প্রকাশিত সমজাতীয় দাবি নিয়ে জাতীয় দৈনিক প্রথম আলো’র আদলে তৈরি একটি ফটোকার্ড সম্বলিত পোস্ট (আর্কাইভ) প্রকাশ হতে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার টিম।
Screenshot: Facebook
অর্থাৎ, নয়া পল্টনে বিএনপির ২৮ অক্টোবরের সমাবেশকে কেন্দ্র করে ২৭ অক্টোবর রাতে সমাবেশস্থলে উপস্থিত নেতাকর্মীদের মধ্যে বিতরণ করা খিচুড়ি খেয়ে কিছু নেতাকর্মী অসুস্থ হয়ে দুইটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বলে দাবি করা হচ্ছে। এই দাবিটি দেশের দুই জাতীয় দৈনিক প্রথম আলো ও কালবেলার আদলে তৈরি ফটোকার্ডের মাধ্যমেও প্রচার করা হয়েছে। তাছাড়া, কালবেলা’কে এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিএনপির অঙ্গ সংগঠন ছাত্রদলের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক কবিরুল ইমন শীর্ষক একটি দাবিও প্রচার করা হচ্ছে। একই সাথে দাবি করা হয়েছে, বিএনপির নেত্রী পাপিয়াও বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন।
কালবেলা কি এ সংক্রান্ত কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড প্রকাশ করেছে?
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে কালবেলার ওয়েবসাইটে গত রাতে নয়া পল্টনে খিচুড়ি বিতরণ সংক্রান্ত কোনো সংবাদই খুঁজে পাওয়া যায়নি।
গত রাতে কালবেলায় প্রকাশিত নয়া পল্টনের সমাবেশস্থল সংক্রান্ত প্রতিবেদনগুলো দেখুন –
তাছাড়া, পত্রিকাটির ফেসবুক পেজে (Kalbela Online) দাবিটি ছড়িয়ে পড়ার পূর্ব পর্যন্ত ২৮ অক্টোবর তারিখ (যেহেতু ছড়িয়ে পড়া ফটোকার্ডটিতে তারিখ ২৮ অক্টোবর লেখা রয়েছে) উল্লেখ করে তিনটি ফটোকার্ড (১, ২, ৩) প্রকাশ করা হয়েছে, যার কোনোটির সাথেই আলোচিত দাবির মিল পাওয়া যায়নি।
Screenshot: Facebook
অর্থাৎ, কালবেলা এমন কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি।
তাছাড়া, এ সংক্রান্ত কিছু পোস্টে ছাত্রদলের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে কবিরুল ইমনের নাম উল্লেখ থাকলেও অনুসন্ধানে জানা যাচ্ছে, সর্বশেষ ঘোষিত কমিটি অনুযায়ী সংগঠনটির স্বাস্থ্য সম্পাদকের নাম সাইফুল আলম বাদশা। কমিটিতে থাকা স্বাস্থ্য বিষয়ক অন্য সদস্যদের কারো নামও কবিরুল ইমন নয়।
প্রথম আলো কি এমন কোনো ফটোকার্ড প্রকাশ করেছে?
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে প্রথম আলোর ওয়েবসাইটেও গত রাতে নয়া পল্টনে খিচুড়ি বিতরণ সংক্রান্ত কোনো সংবাদই খুঁজে পাওয়া যায়নি।
গত রাতে প্রথম আলোয় প্রকাশিত নয়া পল্টনের সমাবেশস্থল সংক্রান্ত প্রতিবেদনগুলো দেখুন –
তাছাড়া, পত্রিকাটির ফেসবুক পেজে দাবিটি ছড়িয়ে পড়ার পূর্ব পর্যন্ত ২৭ অক্টোবর তারিখ (যেহেতু ছড়িয়ে পড়া ফটোকার্ডটিতে তারিখ ২৭ অক্টোবর লেখা রয়েছে) উল্লেখ করে একই ডিজাইনের ছয়টি ফটোকার্ড (১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬) প্রকাশ করা হয়েছে, যার কোনোটির সাথেই আলোচিত দাবির মিল পাওয়া যায়নি।
অর্থাৎ, প্রথম আলো এমন কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি।
কালবেলা বা প্রথম আলো ছাড়া অন্যান্য কতিপয় গণমাধ্যমে সমাবেশস্থলে খিচুড়ি বিতরণের বিষয়ে সংবাদ প্রকাশিত (১, ২) হলেও তা খেয়ে অসুস্থ হওয়া বিষয়ক কোনো তথ্য সংবাদগুলোয় উল্লেখ পাওয়া যায়নি।
মূলত, বিএনপির ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে দেশের দুই জাতীয় দৈনিক প্রথম আলো ও কালবেলার আদলে তৈরি ফটোকার্ড প্রচারের মাধ্যমে দাবি করা হচ্ছে, ২৭ অক্টোবর মহাসমাবেশের আগের রাতে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দলটির নেত্রী নিপুণ রায়ের বিতরণ করা খিচুড়ি খেয়ে ৬৫ জন অসুস্থ হয়েছেন এবং তাদের ঢাকার দুইটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাছাড়া, একই দাবি প্রথম আলো ও কালবেলা’র আদলে তৈরি ফটোকার্ডের মাধ্যমেও প্রচার করা হয়েছে। কিন্তু রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, খিচুড়ি খেয়ে বিএনপি নেতাকর্মীরা অসুস্থ দাবি করে প্রথম আলো ও কালবেলা কোনো ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি। প্রকৃতপক্ষে, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় কালবেলা ও প্রথম আলো’র ডিজাইন নকল করে আলোচিত ফটোকার্ড দুইটি তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া অনুসন্ধানে গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্য কোনো গ্রহণযোগ্য সূত্রে পল্টনে খিচুড়ি খেয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের অসুস্থতার দাবির বিষয়ে কোনো সত্যতা মেলেনি।
সুতরাং, ২৭ অক্টোবর রাতে নয়া পল্টনে বিএনপির সমাবেশস্থলে খিচুড়ি খেয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের অসুস্থ হয়েছে শীর্ষক একটি দাবি ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং একই দাবিতে প্রথম আলো ও কালবেলার লোগো ব্যবহার করে প্রচারিত ফটোকার্ডগুলোও ভুয়া।
ফেসবুক পোস্ট গুলোর মন্তব্য ঘরে অনেক ফেসবুক ব্যবহারকারী এই ভিডিওকে সত্য মনে করছেন।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, শিশুর কণ্ঠে সুমধুর কোরআন তেলাওয়াতের দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিওটি সত্য নয়। প্রকৃতপক্ষে ভিডিওটি ভারতের একটি রিয়েলিটি শো থেকে কিছু দৃশ্য যুক্ত করে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় এডিটের মাধ্যমে ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।
আলোচিত ভিডিওটির কিছু কি-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে ‘SET India’ নামক ইউটিউব চ্যানেলে ২০২২ সালের ১৭ জানুয়ারি এ প্রকাশিত একটি ভিডিওর কিছু দৃশ্যের সাথে আলোচিত ভিডিওর মিল খুঁজে পাওয়া যায়।
ভিডিও থেকে জানা যায়, এটি ‘ইন্ডিয়া গট ট্যালেন্ট’ নামক একটি রিয়েলিটি শো। উক্ত অনুষ্ঠানে কিরন খের, শিল্পা শেঠি, বাদশাহ, মানোজ মুনতাসির বিচারক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
মূলত, ২০২২ সালে ভারতে ‘ইন্ডিয়া গট ট্যালেন্ট’ নামক একটি রিয়েলিটি শোর অনুষ্ঠানে ভারতীয় তারকা কিরন খের, শিল্পা শেঠি, বাদশাহ, মানোজ মুনতাসির বিচারক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। পরবর্তীতে ভিডিওটি SET India নামক ইউটিউব চ্যানেলে প্রচার করা হয়। তবে সম্প্রতি উক্ত রিয়েলিটি শো এর কিছু দৃশ্য সংগ্রহ করে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় এডিটের মাধ্যমে শিশুর কণ্ঠে সুমধুর কোরআন তেলাওয়াত শীর্ষক ভিডিও তৈরি করে ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, পূর্বে মোহাম্মদ রাফির মতো গান গাওয়ার দাবিতে ফেসবুকে ভিডিওটি এডিটেড প্রচার করলে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।
সুতরাং, ভারতীয় রিয়েলিটি শো এর কিছু দৃশ্য সংগ্রহ করে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় এডিটের মাধ্যমে শিশুর কণ্ঠে সুমধুর কোরআন তেলাওয়াত দাবিতে ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিকৃত।
২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে দলটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহ-সম্পাদক রুমিন ফারহানা চ্যানেল আই’য়ের টকশোতে ২৮ অক্টোবর অনুষ্ঠিতব্য বিএনপির মহাসমাবেশের তারিখ পেছানোর বিষয়ে “বৌদ্ধদের প্রবারণা পূর্ণিমার জন্য কেন সমাবেশ পেছাতে হবে? দেশে বৌদ্ধ আছে কতজন যে তাদের জন্য আপনারা মায়াকান্না করছেন?” শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে একটি তথ্য মূলধারার গণমাধ্যম মানবজমিনের লোগো সম্বলিত একটি ফটোকার্ড ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বৌদ্ধদের নিয়ে রুমিন ফারহানা আলোচিত মন্তব্যটি করেননি বরং মানবজমিন এর ফটোকার্ড নকল করে আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে মানবজমিনের ওয়েবসাইট এবং ফেসবুক পেজে অনুসন্ধান চালায় রিউমর স্ক্যানার টিম। কিন্তু, ফেসবুক পেজ এ সংক্রান্ত কেনো ফটোকার্ড এবং ওয়েবসাইটে উক্ত দাবিতে কোনো সংবাদ প্রকাশের তথ্য মেলেনি।
পরবর্তীতে বিষয়টির অধিকতর সত্যতা নিশ্চিতের উদ্দেশ্যে পত্রিকাটির প্রধান বার্তা সম্পাদক সাজেদুল হক এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি রিউমর স্ক্যানারকে জানান, “এ ধরণের কোনো ফটোকার্ড মানবজমিন প্রকাশ করেনি। এটি গুজব।”
পরবর্তীতে, গত ১৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশের তারিখ ঘোষণার পর থেকে চ্যানেল আই’তে প্রচারিত টকশোর ভিডিওগুলো পর্যবেক্ষণ করে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। কিন্তু, ১৮ অক্টোবর পরবর্তী সময়ে চ্যানেল আই’য়ের ইউটিউব চ্যানেলের সকল টকশোর ভিডিও বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, সমাবেশের তারিখ ঘোষণার পর রুমিন ফারহানা চ্যানেল আই’য়ের কোনো টকশোতেই অংশগ্রহণ করেননি।
১৮ অক্টোবর এবং তার পরবর্তী সময়ে চ্যানেল আই’য়ের টকশো ‘টু দ্য পয়েন্ট’ এর প্রচারিত পর্বগুলো দেখুন-
পরবর্তীতে, বিষয়টির অধিকতর সত্যতা নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে চ্যানেল আই’য়ের সিনিয়র সাংবাদিক এবং ‘টু দ্য পয়েন্ট’ টক শো’র উপস্থাপক সোমা ইসলামের সাথে কথা বলেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। তিনি জানিয়েছেন, রুমিন ফারহানার আলোচিত মন্তব্যটি চ্যানেল আইয়ের টকশো’র নয়। এছাড়াও, গত প্রায় ছয় মাস যাবত তিনি চ্যানেল আইয়ের কোনো টক শো’তে অংশ নেননি বলে জানান সোমা।
মূলত, বিএনপি ২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে। একইদিনে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব প্রবারণা পূর্ণিমা রয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে দলটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহ-সম্পাদক রুমিন ফারহানা চ্যানেল আই’য়ের টকশোতে ২৮ অক্টোবর অনুষ্ঠিতব্য বিএনপির মহাসমাবেশের তারিখ পেছানোর বিষয়ে “বৌদ্ধদের প্রবারণা পূর্ণিমার জন্য কেন সমাবেশ পেছাতে হবে? দেশে বৌদ্ধ আছে কতজন যে তাদের জন্য আপনারা মায়াকান্না করছেন?” শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে একটি তথ্য মূলধারার গণমাধ্যম মানবজমিনের লোগো সম্বলিত একটি ফটোকার্ড ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। কিন্তু রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ২৮ অক্টোবরের বিএনপির সমাবেশ বৌদ্ধদের প্রবারণা পূর্ণিমার জন্য পেছানো যাবে না সংক্রান্ত কোনো মন্তব্য করেননি রুমিন ফারহানা। তাছাড়া, রুমিন ফারহানা এই মন্তব্য চ্যানেল আইয়ের টকশোতে করেছেন দাবি করা হলেও এই কর্মসূচী ঘোষণা পরবর্তী সময়ে রুমিন ফারহানা চ্যানেল আইয়ের কোনো টকশোতে যাননি। তাছাড়া, মানবজমিনও এ সংক্রান্ত কোনো ফটোকার্ড প্রকাশ করেননি।
উল্লেখ্য, বিএনপির মহাসমাবেশের দিন অর্থাৎ ২৮ অক্টোবর বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব প্রবারণা পূর্ণিমা অনুষ্ঠিত হবে।
সুতরাং, ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশ বৌদ্ধদের প্রবারণা পূর্ণিমার জন্য পেছানো হবে না শীর্ষক একটি মন্তব্য দলটির নেত্রী রুমিন ফারহানা করেছেন দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং উক্ত বক্তব্য সম্বলিত মানবজমিনের ফটোকার্ডটি ভুয়া।
সম্প্রতি, ‘আগামী ২৮ অক্টোবর ২০২৩, শনিবার রাজধানী ঢাকায় বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত সমাবেশে যোগদানের আগে যেসকল নেতাকর্মীরা ঢাকায় আসবেন, তারা তাদের পরিবারের নিকট থেকে বিদায় নিয়ে আসবেন।’ শীর্ষক তথ্য সম্বলিত বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত দলটির প্রেস বিজ্ঞপ্তির আদলে তৈরি একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।
আলোচিত দাবিতে প্রচারিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিকে আসল দাবি করে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ‘২৮ অক্টোবর বিএনপির সমাবেশে নেতাকর্মীদের পরিবারের নিকট থেকে বিদায় নিয়ে আসতে বলেছেন বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী’ শীর্ষক তথ্য সম্বলিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া। প্রকৃতপক্ষে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে বিএনপির অফিসিয়াল প্রেস বিজ্ঞপ্তির আদলে আলোচিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি তৈরি করা হয়েছে।
অনুসন্ধানের শুরুতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)- এর প্রেস বিজ্ঞপ্তির আদলে তৈরি আলোচিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, আলোচিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি প্রচারের তারিখ হিসেবে ২৫ অক্টোবরের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে থাকা লোগো ও তারিখের সূত্র ধরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)- এর ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে গত ২৫ অক্টোবর বা তার আগে পরে উক্ত শিরোনাম বা তথ্য সম্বলিত কোনো প্রেস বিজ্ঞপ্তি খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও প্রাসঙ্গিক নানা কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে গণমাধ্যমেও উক্ত দাবির বিষয়ে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।
তবে, গত ২৫ অক্টোবর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)- এর ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে প্রকাশিত একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি খুঁজে পাওয়া যায়।এটি মূলত বিএনপি’র উদ্যোগে ঢাকায় আয়োজিত মহাসমাবেশ সফল করার জন্যে ঢাকাসহ দেশব্যাপী সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের স্বতঃস্ফুর্তভাবে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়ে দলটির পক্ষ থেকে এ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত ২৪ অক্টোবর দেওয়া একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি। আলোচিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিটির সাথে উক্ত প্রেস বিজ্ঞপ্তির বেশ মিল খুজে পাওয়া যায়। উভয় বিজ্ঞপ্তিতেই দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষর রয়েছে এবং প্রথম লাইনটিতেও বেশ সামঞ্জস্য লক্ষ্য করা যায়। ধারণা করা যায়, এই প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি এডিট বা সম্পাদনা করে আলোচিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি তৈরি করা হয়েছে।
Image Comparison by Rumor Scanner
এছাড়াও পরবর্তী অনুসন্ধানে বিএনপি’র মিডিয়া সেল এর ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে আলোচিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া দাবিতে গত ২৬ অক্টোবর প্রচারিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot: Facebook
পোস্টটিতে জানানো হয়, দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ এর স্বাক্ষর জাল করে বানোয়াট ও ভূয়া প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি গণমাধ্যমে ছড়ানো হয়েছে। জনমনে বিভ্রান্তি তৈরীর জন্যই স্বার্থান্বেষী মহলের এটি একটি চক্রান্ত মাত্র। ২৮শে অক্টোবরের সমাবেশকে ঘিরে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মনগড়া প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি ফেসবুকে ছড়ানো হয়েছে। এছাড়াও বিএনপি ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনসহ সর্বস্তরে মানুষকে এ বিষয়ে বিভ্রান্ত না হওয়ার অনুরোধও জানানো হয় পোস্টটিতে।
অর্থাৎ, বিএনপির মহাসমাবেশে নেতাকর্মীদের পরিবারের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আসতে বলে রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত কোনো প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)।
মূলত, আগামীকাল ২৮ অক্টোবর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে দলটির সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সমাবেশে স্বত:স্ফুর্ত অংশগ্রহণের জন্যে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে দলটির পক্ষ থেকে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত ২৪ অক্টোবর দেওয়া একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি বিএনপি’র ভেরিফাইড পেজ থেকে গত ২৫ অক্টোবর প্রচার করা হয়। এরপর থেকেই বিএনপি’র প্রেস বিজ্ঞপ্তির আদলে ‘২৮ অক্টোবর বিএনপির সমাবেশে যেসকল নেতাকর্মীরা ঢাকায় আসবেন, তাদের পরিবারের নিকট থেকে বিদায় নিয়ে আসতে বলেছেন বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী’ শীর্ষক তথ্য সম্বলিত একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় এডিট বা সম্পাদনা করে তৈরি করা হয়েছে। এছাড়াও বিএনপি’র মিডিয়া সেল থেকে জানানো হয় উক্ত দাবিতে প্রচারিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া।
সুতরাং, বিএনপি অফিসিয়াল প্রেস বিজ্ঞপ্তির আদলে ‘২৮ অক্টোবর বিএনপির সমাবেশে যেসকল নেতাকর্মীরা ঢাকায় আসবেন, তাদের পরিবারের নিকট থেকে বিদায় নিয়ে আসতে বলেছেন বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী’ শীর্ষক তথ্য সম্বলিত ইন্টারনেট প্রচারিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া ও বানোয়াট।
সম্প্রতি, “আমেরিকাকে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে উত্তর কোরিয়া এবং রাশিয়া দুই দেশ মিলে ১২টি ব্যালিস্টিক মিসাইল পাঠাচ্ছে ফিলিস্তিনে” শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত হচ্ছে।
ফেসবুকে প্রচারিত এরূপ পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, উত্তর কোরিয়া ও রাশিয়া ফিলিস্তিনে ১২টি ব্যালিস্টিক মিসাইল সরবরাহ করছে দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সঠিক নয় বরং ২০২০ সালের ১০ অক্টোবর উত্তর কোরিয়ার রাত্রিকালীন সামরিক মহড়ার ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।
শুরুতেই উত্তর কোরিয়া এবং রাশিয়া ফিলিস্তিনকে সহায়তার জন্য কোন ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সহায়তা করছে কী-না সে বিষয়ে অনুসন্ধান চালায় রিউমর স্ক্যানার টিম। কিন্তু জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম, কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে ফিলিস্তিনে উত্তর কোরিয়া ও রাশিয়ার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পাঠানোর বিষয়ে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।
পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটির ব্যাপারে অনুসন্ধান চালায় রিউমর স্ক্যানার টিম।
উক্ত ভিডিওর ক্যাপশন থেকে জানা যায়, কোরিয়া ওয়ার্কার্স পার্টির ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত সামরিক মহড়া অনুষ্ঠানের পূর্ণাঙ্গ ভিডিও এটি।
উক্ত ২ঘণ্টা ১৬মিনিট ১২সেকেন্ডের সেই ভিডিও পর্যবেক্ষণ করে ২ ঘণ্টা ৯মিনিট ১২ সেকেন্ড থেকে ২ ঘণ্টা ১১মিনিট পর্যন্ত আলোচিত ভিডিওর সাথে হুবহু মিল খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার টিম।
উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০২০ সালের ১০ অক্টোবর ওয়ার্কার্স পার্টির ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জন উন একটি রাত্রিকালীন সামরিক মহড়ায় অংশ নেন। ভিডিওটি উক্ত মহড়া থেকেই ধারণ করা।
Source: ABC News(Australia) YouTube Channel
পাশাপাশি, যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম BBC এর ওয়েবসাইটে ২০২০ সালের ১০ অক্টোবর “North Korea hosts military spectacle” শীর্ষক শিরোনামের একটি প্রতিবেদন খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার টিম।
উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জন উং ২০২০ সালের ১০ অক্টোবর একটি সামরিক মহড়ায় অংশ নেন এবং করোনা মহামারীর সময়ে উত্তর কোরিয়ার নাগরিকদের সুস্থাস্থ্যের জন্য কৃতজ্ঞতা জানান। উক্ত প্রতিবেদনের সাথে সংযুক্ত সামরিক মহড়ার ভিডিও থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি উত্তর কোরিয়ার সামরিক মহড়ার ভিডিও।
Source:BBC
মূলত, ২০২০ সালের ১০অক্টোবর উত্তর কোরিয়ার ওয়ার্কার্স পার্টির প্রতিষ্ঠাবর্ষিকী উপলক্ষ্যে একটি রাত্রিকালীন সামরিক মহড়ার আয়োজন করা হয়। উক্ত সামরিক মহড়ার ক্ষেপণাস্ত্রের প্রদর্শনীর একটি ভিডিওকে সম্প্রতি উত্তর কোরিয়া ও রাশিয়া ফিলিস্তিনের জন্য ১২টি ব্যালিস্টিক মিসাইল সরবরাহ করছে দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, পূর্বেও উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জন উন এর বিষয়ে মিথ্যা তথ্য প্রচারিত হলে সেবিষয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।
সুতরাং, ফিলিস্তিনে উত্তর কোরিয়া ও রাশিয়া থেকে ১২টি ব্যালিস্টিক মিসাইল পাঠানোর দাবিটি মিথ্যা।
সম্প্রতি, “বিশ্বকাপের পাঁচ সেঞ্চুরিয়ান ওপেনার গুরু তামিমের কাছে ব্যাটিং পরামর্শ নিতে ঢাকা এসেছেন সাকিব” শীর্ষক শিরোনামে ডিবিসি নিউজের লোগো সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত হচ্ছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ফটোকার্ডটি ডিবিসি নিউজে’র তৈরি করা নয় বরং ডিবিসি নিউজের প্রচলিত ফটোকার্ডের আদলে একটি ভুয়া ফটোকার্ড তৈরি করে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।
ছবি যাচাই
অনুসন্ধানের শুরুতে ডিবিসি নিউজের ওয়েবসাইট কিংবা ফেসবুক পেজে উক্ত শিরোনামে কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায় নি।
পরবর্তীতে, আলোচিত ফটোকর্ড এবং ডিবিসি নিউজে’র প্রচলিত ফটোকার্ডের তুলনামূলক বিশ্লেষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম।
বিশ্লেষণে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত ফটোকার্ড এবং ডিবিসি নিউজের প্রচলিত ফটোকার্ডের ফন্টের অসঙ্গতি লক্ষ্য করা যায়।
IPhotocard comparison by Rumor Scanner.
পরবর্তীতে, বিষয়টির অধিকতর সত্যতা নিশ্চিত করা জন্য ডিবিসি নিউজের সিনিয়র ডিজিটাল মিডিয়া ম্যানেজার মো: কামরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি রিউমর স্ক্যানারকে জানান, আলোচিত ফটোকার্ডের ফন্ট এবং কালার ডিবিসি নিউজের প্রচলিত ফটোকার্ডের মত নয়। এছাড়াও, উক্ত শিরোনামে কোনো ফটোকার্ড ডিবিসি নিউজ প্রকাশ করেনি বলে নিশ্চিত করেন তিনি।
তথ্য যাচাই
আলোচিত ফটোকার্ডটিতে ক্রিকেটার তামিম ইকবালকে বিশ্বকাপে পাঁচটি সেঞ্চুরির মালিক দাবি করা হয়।
espn cricinfo এর ওয়েবসাইটে তামিম ইকবালের ব্যাটিং পরিসংখ্যান পাওয়া যায়।
espn cricinfo এর ওয়েবসাইটের তথ্যমতে, ক্রিকেটার তামিম ইকবাল ইকবাল ওডিআই বিশ্বকাপে কোনো সেঞ্চুরি পাননি। তবে, ২০১৬ সালে টি২০ বিশ্বকাপে ওমানের বিপক্ষে একটি সেঞ্চুরি করেন তিনি। এছাড়াও, আইসিসির ইভেন্ট চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি এবং ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপেও একটি করে সেঞ্চুরির মালিক তামিম ইকবাল।
Source: espn cricinfo
পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে মূলধারার গণমাধ্যম দ্য ডেইলি স্টারে’র ওয়েবসাইটে ২০২৩ সালের ২৪ অক্টোবর “Riyad ton in vain as Tigers lose by 149 runs against Proteas” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার টিম।
উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ২৪ অক্টোবর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সেঞ্চুরি করে বাংলাদেশের হয়ে বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরির মালিক এখন ক্রিকেটার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। বিশ্বকাপে ৩টি সেঞ্চুরি করে সবার শীর্ষে অবস্থান করছেন তিনি। ২টি সেঞ্চুরি নিয়ে সাকিব আল হাসান দ্বিতীয় এবং ১টি সেঞ্চুরি নিয়ে মুশফিকুর রহিম তালিকার তৃতীয় অবস্থানে আছেন।
Source: The Daily Star
মূলত, গত ২৪ অক্টোবর ক্রিকেট বিশ্বকাপের বাংলাদেশ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচের পর কোচ নাজমূল আবেদীনের সাথে ব্যাটিং অনুশীলন সেশনে অংশ নেওয়ার উদ্দেশ্যে ঢাকায় আসেন সাকিব আল হাসান। বিশ্বকাপ চলাকালীন সাকিব আল হাসানের ঢাকায় আসার ঘটনার প্রেক্ষাপটে ডিবিসি নিউজের একটি ফটোকার্ড বিকৃত করে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য পূর্বেও, ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান এবং তামিম ইকবালকে জড়িয়ে ভূল তথ্য ছড়িয়ে পড়লে সেবিষয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।
সুতরাং, তামিম ইকবাল বিশ্বকাপে পাঁচটি সেঞ্চুরির মালিক দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা এবং “তামিমের কাছে ব্যাটিং পরামর্শ নিতে ঢাকা এসেছেন সাকিব” শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত ডিবিসি নিউজের লোগো সম্বলিত ফটোকার্ডটি এডিটেড বা বিকৃত।
সম্প্রতি, মন্ত্রীদের পদত্যাগের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী– শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।
ভিডিওটিতে ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভির একটি লাইভ প্রচারে উপস্থাপনকে বলতে শোনা যায়, মন্ত্রীদের পদত্যাগের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ বিষয়ে আমাদের একটু সবশেষে তথ্য জানাবেন। লাইভে যুক্ত সাংবাদিক বলেন, আজ সকালে মন্ত্রীপরিষদের সভা হয়েছে। সেই সভায় মন্ত্রীদের যে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা থাকে তার মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বর্তমান মন্ত্রী পরিষদের যারা মন্ত্রী আছেন এদেরকে পদত্যাগের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। খুব শিগগিরই তারা পদত্যাগ করবেন এবং ওবায়দুল কাদের আজ কিছুক্ষণ আগে গণভবনের ঢুকার সময় আমাদের সঙ্গে দেখা হয়েছে। তিনি আমাদের ডেকে বলেছেন তিনি আমাদের কিছু ইনফরমেশন দিতে চান। অনানুষ্ঠানিক ব্রিফ করে তিনি আমাদের জানিয়েছেন। পরবর্তীতে একজনকে বক্তব্য দিতে শোনা যায়। এরপর অন্য একজন উপস্থাপক নিজের মনগড়া কিছু কথা বলেন। তারপর আরও কয়েকজনের বক্তব্য শোনা যায়। সবশেষে আবারও উপস্থাপক নিজের মনগড়া কথা বলেন৷
ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্ত্রীদের পদত্যাগের কোনো নির্দেশ দেননি এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনেরও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বরং চারবছর আগে প্রধানমন্ত্রী টেকনোক্র্যাট মন্ত্রীদের পদত্যাগের নির্দেশের ভিডিওকে এডিট করে সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।
তথ্য যাচাই
সম্প্রতি মন্ত্রীদের পদত্যাগের কোনো নির্দেশ প্রধানমন্ত্রী দিয়েছেন কি না এই বিষয়ে অনুসন্ধানে কি-ওয়ার্ড সার্চ করে গণমাধ্যম ও বিশ্বস্ত সামাজিক মাধ্যমে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বাংলাদেশে সাধারণ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে টেকনোক্র্যাট কোটায় নিয়োগ পাওয়া মন্ত্রীদের পদত্যাগের জন্য প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দেবার পর তারা পদত্যাগ করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে চারজন টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী আজ (২০১৮ সালের ৬ নভেম্বর) মন্ত্রীপরিষদ বিভাগে তাদের পদত্যাগপত্র জমা দেন।
এই প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর মন্ত্রীসভার টেকনোক্র্যাট মন্ত্রীদের পদত্যাগ করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মঙ্গলবার (৬ নভেম্বর) মন্ত্রীসভার এক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই নির্দেশ দিয়েছেন বলে সড়ক পরিবহন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। মন্ত্রীসভায় বর্তমানে ৪ জন টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী রয়েছেন এবং তাঁরা হলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার, ধর্ম মন্ত্রী মতিউর রহমান এবং প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রী নূরুল ইসলাম।
একই তথ্যে আরও সংবাদ প্রকাশ করে মূলধারার গণমাধ্যমগুলোও।
অর্থাৎ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনগণের ভোটে নির্বাচিত মন্ত্রীদের নয় বরং ২০১৮ সালের ৬ নভেম্বর মন্ত্রী পরিষদের টেকনোক্র্যাট চার মন্ত্রীকে পদত্যাগের নির্দেশ দিয়েছিলেন।
ভিডিও যাচাই
অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটিতে ইন্ডিপেনডেন্ট টিভির লোগো দেখা যায়।লোগোর সূত্র ধরে ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভির ইউটিউব চ্যানেলে ২০১৮ সালের ৬ নভেম্বর প্রকাশিত মূল ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot: Independent Tv
২ মিনিট ১৪ সেকেন্ডের ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওটির সাথে হুবহু মিল রয়েছে এবং এই ভিডিওটিতে যেখানে “টেকনোক্র্যাট মন্ত্রীদের” কথা উল্লেখ করা হয়েছে সেই দৃশ্যটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় এডিট করে বাদ দিয়ে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।
টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী কারা?
সরাসরিজনগণের ভোটে নির্বাচিত নয় এবং সংসদ সদস্য না হয়েও যারা মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করে থাকেন তাদেরকে টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী বলা হয়। বিশেষ বিবেচনায় সরকারের মন্ত্রিপরিষদে দায়িত্ব পালন করেন তারা।
মূলত, ২০১৮ সালের ৬ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনগণের তৎকালীন মন্ত্রী পরিষদের টেকনোক্র্যাট চার মন্ত্রীকে পদত্যাগের নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই প্রেক্ষিতে একটি লাইভ সম্প্রচার করে দেশের বেসরকারি টেলিভিশন ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভি। পরবর্তীতে, মন্ত্রীদের পদত্যাগের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী- শীর্ষক দাবিতে উক্ত ভিডিওটি এডিট করে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়। এছাড়া, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রীদের পদত্যাগের নির্দেশ দেননি এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের কোনো সিদ্ধান্তও হয়নি।
সুতরাং, ২০১৮ সালে টেকনোক্র্যাট চার মন্ত্রীকে প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক পদত্যাগের নির্দেশ দেওয়ার ভিডিওকে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্ত্রীদের পদত্যাগের নির্দেশ দিয়েছেন দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা মিথ্যা।