সম্প্রতি, ইডেন কলেজের ছাত্রী মুক্তা সুলতানা নিজের অ্যাকাডেমিক সার্টিফিকেট পুড়িয়ে সরকারি চাকরি পেয়েছেন দাবিতে গণমাধ্যম, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম ইউটিউব এবং শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটকে একটি তথ্য প্রচার করা হচ্ছে।
গণমাধ্যমে প্রচারিত সংবাদ দেখুন সমকাল, ডেইলি ক্যাম্পাস, লাস্ট নিউজ বিডি।
ফেসবুকে প্রচারিত এমনকিছু পোস্ট দেখুন এখানে(আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এবং এখানে (আর্কাইভ)।
একই দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।
ইউটিউবে প্রচারিত কিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।
টিকটকে প্রচারিত এমনকিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ফেসবুক লাইভে এসে সার্টিফিকেট পুড়িয়ে ভাইরাল হয়ে পাওয়া ইডেন ছাত্রী মুক্তা সুলতানার চাকরিটি সরকারি নয় বরং এটি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অধীন ‘এস্টাবলিশমেন্ট অব সিকিউরড ই-মেইল ফর গভর্নমেন্ট অ্যান্ড ডিজিটাল লিটারেসি সেন্টার’ প্রজেক্টে ‘কন্টেন্ট ডেভেলপমেন্ট এন্ড সোশ্যাল কমিউনিকেশন অফিসার’ পদে ছয় মাসের চুক্তিভিত্তিক একটি অস্থায়ী চাকরি
দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে ওপেন সোর্স অনুসন্ধানের মাধ্যমে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের ভেরিফাইড ফেসবুক পেইজে গত ২৯ মে প্রচারিত এ সম্পর্কিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।
ভিডিওটির শিরোনামে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক লিখেন, ‘আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে আমরা আইসিটি ডিভিশনের পক্ষ থেকে ১ লক্ষ কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবো। সেই প্রজেক্টের কন্টেন্ট ডেভেলপার, সোশ্যাল কমিউনিকেশন অফিসার হিসেবে আমাদের আইসিটি ডিভিশনে কাজ করবে মুক্তা সুলতানা। ছয় মাসের জন্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার আমরা তার হাতে তুলে দিয়েছি।
আমার বিশ্বাস এই ছয় মাসের মধ্যেই সে তার নিজের যোগ্যতা প্রমাণ দিয়ে আগামীতে আরো ভালো করবে এবং তার সাফল্যের মধ্য দিয়ে লক্ষ কোটি তরুণ তরুণী উৎসাহিত হবে। আমাদের এই সুযোগটা করে দিয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা।’
পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে অধিকতর নিশ্চিতের জন্য রিউমর স্ক্যানারের পক্ষ থেকে মুক্তা সুলতানার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ‘চাকরিটি একটি সরকারি প্রজেক্টের অধীনে, তবে এটি কোনো সরকারি চাকরি নয়।’
অর্থাৎ সরকারি চাকরি না পাওয়ায় সার্টিফিকেট পুড়িয়ে ভাইরাল হওয়া ইডেন কলেজের ছাত্রী মুক্তা সুলতানার আইসিটি ডিভিশনে পাওয়া চাকরিটি কোনো সরকারি চাকরি নয়।
মূলত, ইডেন কলেজ থেকে পড়াশোনা শেষ করে দীর্ঘদিন যাবত চাকরি না পাওয়ার হতাশা থেকে সম্প্রতি ফেসবুক লাইভে এসে নিজের অ্যাকাডেমিক সার্টিফিকেট পুড়িয়ে ভাইরাল হন মুক্তা সুলতানা নামের এক তরুণী। পরবর্তীতে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের সহায়তায় তিনি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অধীন ‘এস্টাবলিশমেন্ট অব সিকিউরড ই-মেইল ফর গভর্নমেন্ট অ্যান্ড ডিজিটাল লিটারেসি সেন্টার’ প্রজেক্টে ‘কন্টেন্ট ডেভেলপমেন্ট এন্ড সোশ্যাল কমিউনিকেশন অফিসার’ পদে ৬ মাসের চুক্তিভিত্তিক চাকরি পান। তবে, একটি প্রজেক্টের অধীনে মুক্তার পাওয়া চুক্তিভিত্তিক অস্থায়ী চাকরির বিষয়টিকেই মুক্তা সুলতানা সরকারি চাকরি পেয়েছেন দাবিতে গণমাধ্যমে ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়।
প্রসঙ্গত, আইসিটি বিভাগের প্রজেক্টে চুক্তিভিত্তিক চাকরিতে যোগদান করায় চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ প্রত্যাশী শিক্ষার্থী সমন্বয় পরিষদের যুগ্ন আহ্বায়ক মুক্তা সুলতানাকে সংগঠনটি থেকে বহিস্কার করা হয়েছে।
সুতরাং, ইডেন কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী মুক্তা সুলতানার পাওয়া একটি প্রজেক্টের অধীনে ছয় মাস মেয়াদী অস্থায়ী চাকরিকে সরকারি চাকরি হিসেবে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।
তথ্যসূত্র
- Zunaid Ahmed Palak Verified Facebook Page : Post
- Statement from Mukta Sultana
- BD24LIVE: ৩৫ প্রত্যাশী শিক্ষার্থী সমন্বয় পরিষদ থেকে বহিষ্কার মুক্তা সুলতানা
- Rumor Scanner Own Analysis