Home Blog Page 568

কোকাকোলা ও পেপসি নিয়ে ডিবি পুলিশের বরাতে প্রচারিত সতর্কবার্তাটি ভুয়া

0

দীর্ঘদিন ধরে ডিবি পুলিশের বরাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ‘সতর্ক বার্তা’ শীর্ষক একটি তথ্য প্রচার করা হচ্ছে।

পোস্টগুলোতে যা দাবি করা হচ্ছেঃ

‘আগামি কয়েক সপ্তাহ Coca cola বা Pepsi অথবা পানীয় জাতীয় কোন জিনিস যা বাজারে পাওয়া যায় সেই সব জিনিস খাবেন না!! কারন এতে কেউ HIV Blood মিশিয়ে দিয়েছে এটা ভারতের ‘এন ডি’ টি ভি তে দেখানো হয়েছিল!! দয়া করে সব বন্ধুদের শেয়ার করে একজন দায়িত্ববান নাগরিকের ভূমিকা পালন করুন।।দয়া করে এটি delete করার আগে, তোমার বন্ধুদের সাহায্য করো এটি পাঠিয়ে। 16 কোটি বাংলাদেশীদের কাছে পৌঁছে দাও। এটি কাউকে সাহায্য করতে পারে। যতবেশি সম্ভব এটি Forword করো।…’

কোকাকোলা

চলতি বছর ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ),  এখানে (আর্কাইভ),  এখানে (আর্কাইভ)।

২০২২ সালে ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ),  এখানে (আর্কাইভ)।
২০২১ সালে ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ),  এখানে (আর্কাইভ)। 
২০২০ সালে ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ),  এখানে (আর্কাইভ)। 
২০১৯ সালে ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ),  এখানে (আর্কাইভ)। 
২০১৮ সালে ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুনএখানে (আর্কাইভ),  এখানে (আর্কাইভ)। 
২০১৭ সালে ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ),  এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ডিবি পুলিশের বরাতে ফেসবুকে ‘সতর্ক বার্তা’ শীর্ষক Coca cola বা Pepsi অথবা পানীয় জাতীয় পণ্য পান না করার পরামর্শ দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি ভিত্তিহীন। প্রকৃতপক্ষে ২০১৭ সাল থেকে বিভিন্ন সূত্র  উল্লেখ করে বাংলাদেশে উক্ত দাবিটি প্রচার হয়ে আসছে।

সূত্রের সন্ধানে

দাবিটি নিয়ে অনুসন্ধানে দেখা যায়, একই দাবিটি ২০১৭ সালের অন্তত মার্চ মাস থেকে ইন্টারনেটে বিদ্যমান। 

সে সময়ে প্রচারিত এই পোস্টগুলোতে দাবি করা হয়, ‘ভারতের দিল্লি পুলিশের থেকে এই massageটা পুরো দুনিয়ার জন্য দেওয়া হয়েছে!! আগামি কয়েক সপ্তাহ Coca cola বা Pepsi অথবা পানীয় জাতীয় কোন জিনিস যা বাজারে পাওয়া যায় সেই সব জিনিস খাবেন না !! কারন এতে কেউ HIV Blood মিশিয়ে দিয়েছে এটা ভারতের ‘এন ডি’ টি ভি তে দেখানো হয়েছিল!! দয়া করে সব বন্ধুদের শেয়ার করে একজন দায়িত্ববান নাগরিকের ভূমিকা পালন করুন।।’

ফেসবুকের এই পোস্টগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, Coca cola বা Pepsi অথবা পানীয় জাতীয় পণ্য পান না করার পরামর্শ দাবিতে প্রচারিত সতর্কবার্তাটির সূত্র হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে ভারতের দিল্লি পুলিশ ও ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভিকে।

সে সময়ে ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ),  এখানে (আর্কাইভ)। 

এসব সূত্র ধরে অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক বিভিন্ন কি-ওয়ার্ড সার্চ করেও ভারতের দিল্লি পুলিশের এমন কোনো সতর্কবার্তা পাওয়া যায়নি। এছাড়া পোস্টগুলোতে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভিকে সূত্র হিসেবে উল্লেখ করা হলেও গণমাধ্যমটিতে এ সংক্রান্ত অনুসন্ধানে কোনো তথ্য বা প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

এছাড়া ভারতের একটি অঙ্গরাজ্যের পুলিশের সারা বিশ্বের জন্য সতর্কবার্তা দেওয়ার বিষয়টিও অযৌক্তিক। 

তবে ভারতীয় গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়াতে ২০১৯ সালের ৪ জুন ‘FACT CHECK: Did Hyderabad Police claim soft drinks contain Ebola Virus?’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০১৯ সালে ভারতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হোয়াটসঅ্যাপে একটি দাবি ছড়িয়ে পড়ে।  

যেখানে বলা হয়, ভারতের হায়দ্রাবাদ পুলিশ ও জনসাধারণকে যেকোনো কোমল পানীয় পান করা থেকে বিরত থাকতে সতর্ক বার্তা দিয়েছে। কারণ, এই পানীয়গুলোর উৎপাদন কারখানার একজন কর্মী তার ইবোলা ভাইরাসে দূষিত রক্ত এই পানীয়তে যোগ করে দিয়েছে। এছাড়া এই সতর্কবার্তার সাথেও এনডিটিভির নাম যুক্ত করে দেওয়া হয়।

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, ভারতে এই ধরনের সতর্কবার্তা ২০১৪ সাল থেকেই কোমল পানীয় ব্র্যান্ডের নাম পরিবর্তন করে বিভিন্ন সময়ে প্রচার হয়ে আসছিল। ২০১৯ সালে হায়দ্রাবাদ পুলিশের বরাতে এমন দাবি পুনরায় ছড়িয়ে পড়লে তারা এটিকে ভুয়া নিশ্চিত করে মাইক্রোব্লগিং সাইট এক্সে (সাবেক টুইটার) একটি টুইট করে। এছাড়া সে সময় এনডিটিভিতেও এমন কোনো প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়নি।

দাবিটি নিয়ে আরও অনুসন্ধানে মার্কিন ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান স্নোপসে ২০১১ সালের ১৪ জুলাই ‘Is Pepsi Contaminated with HIV?’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এই দাবিটির জন্ম আরও আগে। ২০১১ সালের জুলাইয়েও পেপসির পণ্যে এইচআইভি থাকার দাবিটি মোবাইল ফোনে ক্ষুদে বার্তা আকারে ও  ইন্টারনেটে প্রচার হয়েছিল। 

এই প্রতিবেদন থেকে উক্ত দাবির সঙ্গে দিল্লি পুলিশ ও এনডিটিভির যোগসূত্র পাওয়া যায়। অর্থাৎ ২০১১ সাল থেকেই Coca cola বা Pepsi অথবা পানীয় জাতীয় পণ্য পান না করার পরামর্শ দাবিতে প্রচারিত দাবিটির সঙ্গে দিল্লি পুলিশ ও এনডিটিভির নাম জড়িয়ে আছে। 

খাবার বা পানীয়ের মাধ্যমে মানুষ কি এইচআইভি আক্রান্ত হতে পারে?

এ প্রশ্নের উত্তরে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল জানায়, খাবার বা পানীয়ের মাধ্যমে এইচআইভি আক্রান্ত হওয়ার কোনো তথ্য তাদের কাছে নেই। মূলত, এইচআইভি ভাইরাস মানবদেহের তরল হোস্টের বাইরে বেশিদিন বেঁচে থাকতে পারে না। বাতাসের সংস্পর্শে আসা, রান্নার তাপ এবং পাকস্থলীর অ্যাসিড এই ভাইরাসকে মেরে ফেলে। তাই এভাবে এইচআইভি সংক্রমণের ঝুঁকি নেই। 

বাংলাদেশে দাবিটি যেভাবে বিবর্তিত হয়ে প্রচার হলো

এ সংক্রান্ত অনুসন্ধানে ২০১৭ সালের অন্তত আগস্ট থেকে প্রচারিত পোস্টগুলোর সূত্র বিবর্তিত হতে দেখা যায়। অর্থাৎ দিল্লি পুলিশের পরিবর্তে ডিবি পুলিশের নাম ও পোস্টগুলোর শেষে অনুরোধক্রমে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর নামের উল্লেখ পাওয়া যায়। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ),  এখানে (আর্কাইভ)। 

আবার ২০১৮ সাল থেকে উক্ত দাবিতে প্রচারিত পোস্টগুলোর শেষে অনুরোধক্রমে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নামের উল্লেখ পাওয়া যায়।  

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ),  এখানে (আর্কাইভ)। 

এছাড়া পোস্টগুলোতে স্বাস্থ্য পরামর্শমূলক আরও অতিরিক্ত কিছু অংশের উল্লেখ পাওয়া যায়, যেগুলো ভারতের দিল্লি পুলিশের নামে প্রচারিত পোস্টগুলোতে উল্লেখ ছিল না।

এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলোঃ 

১। আমেরিকান ডাক্তাররা মানুষের শরীরে এক নতুন ক্যান্সার খুঁজে পেয়েছেন যার কারন Silver Nitro Oxide. যখন তুমি মোবাইল কার্ড নোখ দিয়ে ঘসিয়ে তোলো তখন এটি তোমার শরীরে স্কিন ক্যান্সারের কারণ হয়ে দাড়াতে পারে।

২। মোবাইলের চার্জ যখন শেষ দাগে তখন কোনো কল ধরোনা, এই সময় রেডুএশন (রেডিয়েশন) অন্যান্য সময়ের চেয়ে ১০০০ গুন বেশি থাকে।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, অতিরিক্ত উল্লিখিত এই অংশগুলোও বিদেশি বিভিন্ন পোস্ট থেকে অনূদিত হয়ে বাংলা ভাষায় প্রচার হয়ে আসছে। 

এ নিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপির ফ্যাক্টচেক বিভাগ এএফপি ফ্যাক্টচেক  ২০২০ সালের ২৩ জুন ‘Experts say cancer-causing “silver nitro oxide” does not exist as viral post suggests’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত তাদের একটি প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের এনভায়রনমেন্টাল প্রটেকশন এজেন্সি(EPA)’র বরাতে জানায়, সিলভার নাইট্রো অক্সাইড নামে কোনো রসায়নিকের অস্তিত্ব নেই। 

এছাড়া আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটির চীফ মেডিকেল ও সায়েন্টিফিক কর্মকর্তা উইলিয়াম জি ক্যান্স এএফপিকে জানান, আইএআরসি এবং ইপিএ ডাটাবেসের অনুসন্ধানের উপর ভিত্তি করে ‘সিলভার নাইট্রো অক্সাইড’ কার্সিনোজেনিক ( যা ক্যান্সার সৃষ্টি করতে সক্ষম) হওয়ার কোনো যুক্তিযুক্ত প্রমাণ নেই। 

উল্লেখ্য, আইএআরসির পূর্ণরূপ হলো ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যান্সার। এটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা দ্বারা পরিচালিত একটি আন্তঃসরকারি সংস্থা, যা ক্যান্সারের কারণ নিয়ে গবেষণার সমন্বয় করে।

এছাড়া বাংলাদেশে প্রচারিত পোস্টগুলোতে উল্লিখিত মোবাইলের রেডিয়েশন বা বিকিরণ সম্পর্কে অনুসন্ধানে এএফপির একই ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, মোবাইল ফোনের সর্বোচ্চ বিকিরণ শক্তি মাত্র 2 ওয়াট,যা শরীরের কোন ক্ষতি করে না। 

এছাড়া বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক প্রতিবেদন থেকেও জানা যায়, মোবাইল ফোনের বিকিরণ মানুষের স্বাস্থ্যের উপর কোনো বিরূপ প্রভাব দেখায় না।

একই প্রসঙ্গে জানতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের ডেপুটি কমিশনার ফারুক হোসেন রিউমর স্ক্যানারকে বলেন, ‘এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। এগুলা ডিবি পুলিশের কাজ নয়। ডিবি পুলিশের কাজ হচ্ছে ডিটেকটিভ কাজ। অস্ত্র ধরা, মাদক ধরা, ক্লু লেস মামলা তদন্ত করা।’

উপরিউক্ত তথ্যসমূহ সার্বিক বিশ্লেষণে প্রতীয়মান হয় যে, ডিবি পুলিশের বরাতে ফেসবুকে ‘সতর্ক বার্তা’ শীর্ষক Coca cola বা Pepsi অথবা পানীয় জাতীয় পণ্য পান না করার পরামর্শ দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি ভিন্ন ভাষা থেকে অনূদিত হয়ে স্বাস্থ্য সম্পর্কিত আরও বিভিন্ন দাবি সংযুক্তির মাধ্যমে বিবর্তিত হয়ে বিভিন্ন আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সূত্রে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন ধরে প্রচার হয়ে আসছে। 

মূলত, দীর্ঘদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে Coca cola বা Pepsi অথবা পানীয় জাতীয় পণ্য পান না করার পরামর্শ দাবিতে একটি সতর্কবার্তা প্রচার করা হচ্ছে। এই সতর্কবার্তায় দাবি করা হচ্ছে, এসব পানীয়তে কেউ HIV Blood মিশিয়ে দিয়েছে। যা ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভিতে প্রচার করা হয়েছে। তবে অনুসন্ধানে দেখা যায়, উক্ত সতর্কবার্তাটি একটি বহুল প্রচলিত গুজব। যেটি ইতোপূর্বে ভিন্ন ভিন্ন ভাষায় ইন্টারনেটে প্রচারিত হয়ে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশেও বিভিন্ন আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী  বাহিনীর সূত্রে দীর্ঘদিন ধরে প্রচার হয়ে আসছে। 

সুতরাং, ডিবি পুলিশের বরাতে ‘সতর্ক বার্তা’ শীর্ষক Coca cola বা Pepsi অথবা পানীয় জাতীয় পণ্য পান না করার পরামর্শ দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

৫ লক্ষ টাকার লোভে মা মেয়েকে জোর করে তালাক দেওয়ানোর ভিডিও দাবিতে নাটকের ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি, ৫ লক্ষ টাকার লোভে মা মেয়েকে জোর করে তালাক দেওয়ালো শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

তালাক

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ) এবং পোস্ট (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ৫ লক্ষ টাকার লোভে মা মেয়েকে জোর করে তালাক দেওয়ানোর ভিডিও দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত ভিডিওটি সত্য নয়। প্রকৃতপক্ষে আলোচিত ভিডিওটি Ts Tv Bd নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলে প্রচারিত স্ক্রিপ্টেড ভিডিও। যাকে উক্ত চ্যানেলটি নাটক বলে দাবি করছে। আলোচিত ভিডিওটি ব্যতীতও চ্যানেলটিতে এ ধরনের বহু ভিডিও রয়েছে। 

আলোচিত দাবির সত্যতা যাচাইয়ে প্রাসঙ্গিক নানা কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে Ts Tv Bd নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলে গত ৩১ আগস্ট কাবিনের ৫ লাখ টাকার জন্য মেয়েকে তালাক দেওয়ার জন্য বাধ্য করল মা।#viral video#viralNatok #new Natok# শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Youtube

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির সাথে উক্ত ভিডিওর হুবহু মিল রয়েছে। 

ভিডিওটির শিরোনাম এবং বিস্তারিত তথ্য থেকে জানা যায় যে, ভিডিওটি মূলত একটি স্ক্রিপ্টেড নাটক। উক্ত চ্যানেলটি ছোট নাটক, কমেডি ভিডিও ছাড়াও নানা ধরনের ভিডিও কনটেন্ট তাদের চ্যানেলে প্রচার করে থাকে।

পরবর্তীতে চ্যানেলটিতে প্রচারিত বেশকিছু ভিডিও পর্যালোচনা করে রিউমর স্ক্যানারে টিম। এতে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওতে অভিনয় করা ব্যক্তিরা চ্যানেলে প্রচারিত অন্যান্য ভিডিওতেও রয়েছেন। 

Video Comparison by Rumor Scanner 

অর্থাৎ, ৫ লক্ষ টাকার লোভে মা মেয়েকে জোর করে তালাক দেওয়ানোর ভিডিওটি স্ক্রিপ্টেড।

মূলত, Ts Tv Bd নামক একটি ইউটিউব চ্যানেল পারিবারিক নানা বিষয় নিয়ে ছোট ছোট নাটক তাদের ইউটিউব চ্যানেলে প্রচার করে থাকে। তারই ধারাবাহিকতায় গত ৩১ আগস্ট ‘কাবিনের ৫ লাখ টাকার জন্য মেয়েকে তালাক দেওয়ার জন্য বাধ্য করল মা’ শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও তাদের চ্যানেলে প্রচার করা হয়। এরপর থেকে উক্ত ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিভিন্ন শিরোনাম ব্যবহার করে বাস্তব ঘটনা দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে। 

সুতরাং, ৫ লক্ষ টাকার লোভে মা মেয়েকে জোর করে তালাক দেওয়ালো শীর্ষক দাবিতে একটি স্ক্রিপটেড ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচারিত হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেলজিয়ামে গিয়ে পদত্যাগের ঘোষণা দেননি

সম্প্রতি, ‘বেলজিয়ামে গিয়েই পদত্যাগের ঘোষণা দিলো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’ শীর্ষক থাম্বনেইল এবং ‘বেলজিয়ামে গিয়েই পদত্যাগের ঘোষণা দিলো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দায়িত্বে বিচারপতি’ শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম ইউটিউবে প্রচার করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী

ইউটিউবে প্রচারিত এমন একটি ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বেলজিয়ামে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগের কোনো ঘোষণা দেননি বরং ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার কয়েকটি পুরোনো ছবি ও ভিডিও ক্লিপ সংযুক্ত করে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। গত ২৫ অক্টোবর Sabai Sikhi নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ২ মিনিট ১৭ সেকেন্ডের এই ভিডিওটি প্রচার করা হয়।

Screenshot: YouTube Claim Video

এতে দেখা যায়, এটি ভিন্ন ভিন্ন কয়েকটি ঘটনার কয়েকটি পুরোনো ছবি ও ভিডিও ক্লিপ নিয়ে তৈরি একটি প্রতিবেদন ভিডিও। যেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুরোনো কিছু ছবি ও ভিডিও’র অংশ দেখা যায়।

ভিডিওটিতে বলা হয়, “অবশেষে বেলজিয়াম গিয়েই পদত্যাগের ঘোষণা দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামী জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ শর্তে এই পদত্যাগের ঘোষণা দেন। এবার সংবিধানের বিশেষ ধারা অনুযায়ী তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দায়িত্ব পাচ্ছে সাবেক প্রধান বিচারপতি। যাতে নির্বাচন সুষ্ঠু এবং সুশৃঙ্খল পরিবেশে সকল রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করেন।”

উক্ত বিষয়গুলো নিয়ে প্রাসঙ্গিক একাধিক কি ওয়ার্ড সার্চ করেও উক্ত দাবির কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। 

আলোচিত ভিডিওটি’তে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের বিষয় নিয়ে একটি ভিডিও ক্লিপ যুক্ত করা হয়েছে। প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে সে ভিডিওটি’র অনুরূপ একটি ভিডিও মূলধারার ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম Ekattor TV এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২২ সালের ০৬ অক্টোবর ‘আমার অবসরের সময় হয়ে গেছে: প্রধানমন্ত্রী’ শীর্ষক শিরোনামে খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner 

এই ভিডিও প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, সেসময় যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র সফর নিয়ে গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে সংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ থেকে নিজের অবসরের সময় হয়ে যাওয়ার বিষয়ে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী  শেখ হাসিনা।

অর্থাৎ, এই ভিডিওটি এক বছর পূর্বের ভিন্ন ঘটনার এবং এর সাথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চলমান বেলজিয়াম সফর কিংবা প্রধানমন্ত্রী’র দায়িত্ব থেকে পদত্যাগের কোনো সম্পর্ক নেই।

পাশাপাশি, মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্য কোনো সূত্রে এখন পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেলজিয়ামে গিয়ে পদত্যাগের ঘোষণা কিংবা কোনো বিচারপতি’র তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দায়িত্ব পাওয়ার বিষয়ের সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এছাড়াও, ২০১১ সালে বাংলাদেশে আপিল বিভাগ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সর্ম্পকিত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে। পরবর্তীতে এই ব্যবস্থা আর পূর্ণবহাল করা হয়নি।

মূলত, গত ২৫ অক্টোবর Sabai Sikhi নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ‘বেলজিয়ামে গিয়েই পদত্যাগের ঘোষণা দিলো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’ শীর্ষক থাম্বনেইল এবং ‘বেলজিয়ামে গিয়েই পদত্যাগের ঘোষণা দিলো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দায়িত্বে বিচারপতি’ শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, অধিক ভিউ পাবার আশায় চটকদার থাম্বনেইল ও শিরোনাম ব্যবহার করে কোনোপ্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো সূত্রে আলোচিত দাবিটির সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

প্রসঙ্গত, ইউরোপীয় কমিশনের (ইসি) প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডের লেইনের আমন্ত্রণে গত ২৪ অক্টোবর বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে ‘গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরামে’ যোগ দিতে বেলজিয়ামে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে ২৫ এবং ২৬ অক্টোবর এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

উল্লেখ্য, পূর্বেও চটকদার থাম্বনেইল এবং শিরোনামে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের ঘোষণা দাবিতে ভুয়া তথ্য প্রচারের প্রেক্ষিতে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেলজিয়ামে গিয়ে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছে দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ইসরায়েলে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভের ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়

সম্প্রতি, “ইসরায়েলে নেতানিয়াহুর পদত্যাগের দাবীতে ব্যাপক বিক্ষোভ। ইসরায়েলীদের দাবী নেতানিয়াহু একজন খুনি। এখনই গাজায় আগ্রাসন বন্ধের দাবী ইসরায়েলের নাগরিকদের।” শীর্ষক শিরোনামের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে(আর্কাইভ)।

প্রধানমন্ত্রী

ইংরেজি ভাষায় একই দাবিতে প্রচারিত কিছু এক্স(টুইটার) ভিডিও দেখুন এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ভিডিওটির প্রথম অংশে ড্রোনশটের মাধ্যমে দেখানো ইসরায়েলে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভের ভিডিওটি সম্প্রতি ফিলিস্থিনের সাথে সংঘাত শুরু পরের নয় বরং এটি চলতি বছরের মার্চে নেতানিয়াহুর পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভের ভিডিও।

অনুসন্ধানের শুরুতেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ভিডিওটি পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওর প্রথম অংশে ইসরায়েলি পতাকা তুলে ধরে বিক্ষোভ করতে দেখা যায়। উক্ত দৃশ্যের পরেই তেলআবিবে নেতানিয়াহুর পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভরত জনতার মাঝে নিউজ রিপোর্টিং দেখতে পাওয়া যায়। 

পরবর্তীতে, আলোচিত বিক্ষোভরত দৃশ্যের কী ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফের ওয়েবসাইটে ২০২৩ সালের ১২মার্চ “Israel’s ‘biggest ever’ protests as Benjamin Netanyahu’s government persists with reforms” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, চলতি বছরের মার্চে নেতানিয়াহু প্রশাসনের আইন সংস্কারের প্রতিবাদে তেল আবিবে নেতানিয়াহুর পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ পালন করে ইসরায়েলি জনগণ।

Source: The Telegraph

উক্ত প্রতিবেদনের সূত্র ধরে টেলিগ্রাফের ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ১২মার্চের একটি ভিডিও খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার টিম।

উক্ত ভিডিওর বিস্তারিত বিবরণ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, আলোচিত ভিডিওটির ড্রোন শটের মাধ্যমে নেওয়া দৃশ্যের অংশটি চলতি বছরের মার্চে নেতানিয়াহুর পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভরতদের ভিডিও।

Source: The Telegraph

পরবর্তীতে, আলোচিত ভিডিওটির দ্বিতীয় অংশ অর্থাৎ বিক্ষোভরতদের মধ্যে রিপোর্টিংয়ের অংশের বিষয়ে অনুসন্ধান চালায় রিউমর স্ক্যানার টিম। 

উক্ত অংশের কি ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে, ABC News এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ১৪ অক্টোবর “On the ground in Tel Aviv with protestors” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার টিম।

উক্ত ভিডিও প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ভিডিওটি চলমান হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধে হামাসের হাতে বন্দি ইসরায়েলি নাগরিকদের মুক্তির জন্য তেলআবিবে ইসরায়েলি জনতার সমবেতস্থল থেকে সাংবাদিক ম্যাট গুটম্যানের ভিডিও প্রতিবেদন। 

Source: ABC News

মূলত, চলতি বছরের মার্চে নেতানিয়াহু প্রশাসনের আইনি সংস্কারের প্রতিবাদে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর পদত্যাগের দাবিতে বিপুলসংখ্যক ইসরায়েলি বিক্ষোভে অংশ নেয়। সেই বিক্ষোভের ড্রোন শটের ভিডিওকে চলমান হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধে হামাসের হাতে বন্দি ইসরায়েলিদের মুক্তির জন্য তেলআবিবে সমবেত ইসরায়েলিদের বিক্ষোভের একটি ভিডিও প্রতিবেদনের সাথে জুড়ে দিয়ে হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে নেতানিয়াহুর পদত্যাগের জন্য সমবেত ইসরায়েলিদের বিক্ষোভের ভিডিও দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, গত ০৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ইসরায়েলে ‘অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড’ নামে হামলা শুরু করে। এই হামলার প্রেক্ষিতে ইসরায়েলও হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজা উপত্যকায় পাল্টা হামলা চালায়। এতে দেশ দুইটির মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলা সংঘাত নতুন মাত্রা পায়৷ 

উল্লেখ্য, চলমান ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের সংঘাত ইস্যুতে একাধিক ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে একাধিক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার৷

সুতরাং, ভিন্ন ইস্যুতে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর পদত্যাগের দাবির বিক্ষোভের ভিডিওর সাথে হামাসের হাতে বন্দি ইসরায়েলিদের মুক্তির জন্য তেলআবিবে সমবেত ইসরায়েলিদের বিক্ষোভের সাম্প্রতিক ভিডিও জুড়ে দিয়ে তৈরি ভিডিওকে চলমান-হামাস ইসরায়েল যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে নেতানিয়াহুর পদত্যাগের জন্য ইসরায়েলিদের বিক্ষোভের ভিডিও দাবি করে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে;যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

ঐশীর মুখে ‘কাউয়া কাদের’ শীর্ষক গান দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি বিকৃত

সম্প্রতি, “ঐশীর মুখে কাওয়া কাদেরের ভাইরাল গান” শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচারিত হয়েছে।

কাউয়া কাদের

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ) এবং এখানে(আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সংগীতশিল্পী ফাতিমা তুয যাহরা ঐশী ‘কাউয়া কাদের’ শীর্ষক কোনো গান গাননি বরং ঐশীর পরিবেশিত ভিন্ন একটি গানের ভিডিওর সাথে কাউয়া কাদের শীর্ষক গানের অডিও জুড়ে দিয়ে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

ভিডিও যাচাই 

আলোচিত ভিডিওটির কিছু কি-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে Bangla Baul Media নামের ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি “ঐশীর গানে উরাধুরা নাচ | এক আকাশের তারা তুই একা গুনিস নে | ঐশীর গান | Oishi New song 2023” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার টিম। 

উক্ত ভিডিও পর্যবেক্ষণ আলোচিত ভিডিওর সাথে মিল খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওতে সংগীত শিল্পী ঐশীকে আইয়ুব বাচ্চুর বিখ্যাত গান ‘এক আকাশের তারা’ পরিবেশন করতে দেখা যায়। এছাড়াও, ভিডিওর বিস্তারিত বিবরণী থেকে জানা যায়, এটি ক্রিস্টাল মার্টিন নামের একটি গার্মেন্টস কর্তৃক আয়োজিত কনসার্টের ভিডিও।

Comparison By Rumor Scanner

অডিও যাচাই

প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে Bangladesh Political News নামের ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ২১অক্টোবর “কাওয়া কাদের কে নিয়ে অস্থির বিনোদনের সম্পুর্ন নতুন গান” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত ভিডিওর অডিও গানের সাথে আলোচিত ভিডিওর গানের অডিওর মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

Source: Bangladesh Political News 

এ থেকে স্পষ্টতই প্রতীয়মান হয় যে, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় ঐশীর কনসার্টের ভিডিওর সাথে ভিন্ন একটি গানের অডিও যুক্ত করে আলোচিত বিষয়টি প্রচার করা হয়েছে।

মূলত, ক্রিস্টাল মার্টিন নামের একটি গার্মেন্টস কোম্পানি কর্তৃক আয়োজিত কনসার্টে সংগীতশিল্পী ফাতিমা তুয যাহরা ঐশী আইয়ুব বাচ্চুর ‘এক আকাশ তারা’ গানটি পরিবেশন করেন। তার সেই পরিবেশনার ভিডিওর সাথে ভিন্ন একটি গানের অডিও ডিজিটাল প্রযুক্তির সাহায্যে যুক্ত করে  ঐশী ‘কাউয়া কাদের’ শীর্ষক গান গেয়েছেন দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, পূর্বেও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরে’র নাম জড়িয়ে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে পড়লে সে বিষয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, “ঐশীর মুখে কাওয়া কাদেরের ভাইরাল গান” শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত ভিডিওটি এডিটেড বা বিকৃত।

তথ্যসূত্র

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ওপর জামায়াত-শিবিরের হামলার ভুয়া তথ্য প্রচার

সম্প্রতি, ‘সমাবেশের অনুমতি না দেওয়ায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে পিটালো জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা’ শীর্ষক থাম্বনেইল ব্যবহার করে একটি ভিডিও ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম ইউটিউবে প্রচার করা হয়েছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর

ইউটিউবে প্রচারিত এমন একটি ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী’র ওপর জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মী কর্তৃক হামলার কোনো ঘটনা ঘটেনি বরং ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার কয়েকটি ছবি ও ভিডিও ক্লিপ সংযুক্ত করে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। গত ২৫ অক্টোবর Sabai Sikhi নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ২ মিনিট ১৫ সেকেন্ডের এই ভিডিওটি প্রচার করা হয়।

Screenshot: YouTube Claim Video

এতে দেখা যায়, এটি ভিন্ন ভিন্ন কয়েকটি ঘটনার কয়েকটি ছবি ও ভিডিও ক্লিপ নিয়ে তৈরি একটি প্রতিবেদন ভিডিও। ভিডিওতে বলা হয়, “অবশেষে ২৮শে অক্টোবর সমাবেশের অনুমতি না পেয়ে কঠোর আন্দোলনের ডাক দিলো জামায়াত-শিবির। ইতিমধ্যেই জামায়াতের নেতাকর্মীরা সমাবেশ বাস্তবায়ন করতে নেতাকর্মীদের নির্দেশ প্রদান করেছে। আগামী দুয়েকদিনের মধ্যেই জামায়াতের কঠোর আন্দোলনের মধ্য দিয়েই সরকার পতন হবে। ইতিমধ্যেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে কঠোর হুশিয়ার দিয়ে বলেন, সমাবেশে বাধা প্রদান করলে কঠোর হস্তে দমন করা হবে বলে ইঙ্গিত দেন জামায়াত শিবিরের নেতাকর্মীরা।”

অর্থাৎ, ভিডিওটি’র বিস্তারিত অংশে কোথাও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ওপর হামলার বিষয়ে বলা হয়নি এবং কোনো ঝামেলার ভিডিও ক্লিপও দেখানো হয়নি বরং শুধুমাত্র ভিডিওটি’র শিরোনাম এবং থাম্বনেইলেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ওপর হামলা সম্পর্কিত বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।

এছাড়া, ভিডিওটি’র ১ মিনিট ৫৬ সেকেন্ড অংশে এক ব্যক্তিকে লাঠি দিয়ে একটি গাড়িতে আঘাত করার একটি স্থিরচিত্র দেখানো হয়।

Screenshot: YouTube

বিষয়টি যাচাইয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে নোয়াখালী’র আঞ্চলিক গণমাধ্যম হাতিয়া কণ্ঠ’র ওয়েবসাইটে ২০১৫ সালের ২০ এপ্রিল ‘খালেদা জিয়ার গাড়ি বহরে হামলা : ১০ জন আহত’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিটি’র অনুরূপ একটি ছবি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Hatia Kantha

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এই ছবিটি ২০১৫ সালে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া’র গাড়িবহরে হামলার ঘটনার।

Image Comparison by Rumor Scanner

অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিওটি’তে দেখানো এই ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়।

পাশাপাশি, মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো সূত্রে এখন পর্যন্ত জামায়াত-শিবির বা অন্যকোনো ব্যক্তি বা সংগঠন কর্তৃক সাম্প্রতিক সময়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ওপর হামলার কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

অর্থাৎ, সমাবেশের অনুমতি না দেওয়ায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ওপর জামায়াত-শিবিরের হামলার দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সঠিক নয়।

মূলত, গত ২৫ অক্টোবর Sabai Sikhi নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ‘সমাবেশের অনুমতি না দেওয়ায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে পিটালো জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা’ শীর্ষক থাম্বনেইল ব্যবহার করে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, অধিক ভিউ পাবার আশায় চটকদার থাম্বনেইল ব্যবহার করে কোনোপ্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো সূত্রে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ওপর জামায়াত-শিবিরের হামলার সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, পূর্বেও চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে ভুল তথ্য প্রচারের প্রেক্ষিতে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, সমাবেশের অনুমতি না দেওয়ায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ওপর জামায়াত-শিবিরের হামলার দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ইসরায়েলের গ্যাস ফিল্ডের নয়, ভিডিওটি যুক্তরাষ্ট্রে রাসায়নিক কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার

0

সম্প্রতি, “ইসরায়েলের গ্যাস ফিল্ডে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ও ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটেছে” শীর্ষক শিরোনামে একটি অগ্নিকাণ্ডের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত হচ্ছে।

গ্যাস

টিকটকে প্রচারিত এরূপ কিছু ভিডিও দেখুন এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ)

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ভিডিওটি ইসরায়েলের গ্যাস ফিল্ডে অগ্নিকাণ্ডের নয় বরং এটি ২০১১ সালের যুক্তরাষ্ট্রে অগ্নিকাণ্ডের একটি ভিডিও।

মূলত, ২০১১ সালের ৩ অক্টোবর টেক্সাসের একটি রাসায়নিক কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এই অগ্নিকাণ্ডের একটি ভিডিও ফুটেজকে সম্প্রতি ইসরায়েলের গ্যাস ফিল্ডে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের  ভিডিও দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। 

উল্লেখ্য, পূর্বেও ইসরায়েলের গ্যাস ফিল্ডে ভূমিকম্পের ভিডিও দাবিতে আলোচিত ভিডিওটি ইন্টারনেটে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়লে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

ভারতীয় শিশু নাঈমকে বাংলাদেশি রোগাক্রান্ত শিশু দাবিতে আর্থিক প্রতারণা

0

সম্প্রতি, ঝিনাইদহ জেলার শৈলকূপা থানার আবায়পুর ইউনিয়নের জহুরুল ইসলামের ছেলে মোঃ সবুজ নামের এক ক্যান্সারে আক্রান্ত শিশুর উন্নত চিকিৎসার জন্য আর্থিক সাহায্যের আবেদন সম্বলিত একটি তথ্য ও কিছু ছবি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

রোগাক্রান্ত শিশু

ফেসবুকে প্রচারিত এরূপ পোস্ট দেখুন এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ)

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, মোঃ সবুজ নামে প্রচারিত ছবিগুলো বাংলাদেশের কোনো শিশুর নয় বরং ছবিগুলো ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত নাঈম নামক ভারতীয় এক শিশুর ছবি।

রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে, ভারতের গণ-অর্থায়ন প্ল্যাটফর্ম ‘Ketto’ এর টুইটার অ্যাকাউন্টে আলোচ্য ছবিগুলো খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার টিম। 

Source: Ketto

মূলত, ছবির শিশুটির নাম নাঈম। তার বাবার নাম সুলাইমান এবং তারা ভারতের নাগরিক। নাঈম মায়লোমোনোসাইটিক লিউকেমিয়া নামক এক জটিল রোগে আক্রান্ত যা এক ধরনের ব্লাড ক্যান্সার। সম্প্রতি আর্থিক সহায়তার নামে প্রতারণার উদ্দেশ্যে নাঈমের রোগাক্রান্ত অবস্থার কিছু ছবি ব্যবহার করে বাংলাদেশের কথিত রোগাক্রান্ত শিশু মোঃ সবুজ দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, পূর্বেও একই দাবিটি ইন্টারনেটে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়লে সেসময় তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মৃত্যুর গুজব 

সম্প্রতি, ‘খালেদা জিয়া মারা গেছেন, ২৮ তারিখ জানাজা’ শীর্ষক ক্যাপশনে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। 

ভিডিওটিতে একটা সংবাদ পাঠিকাকে বলতে শোনা যায়, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া মারা গেছেন। সকাল সোয়া সাতটার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। ইন্না-লিল্লাহ ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। 

খালেদা জিয়া

টিকটিকে প্রচারিত ভিডিও পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া মারা গেছেন দাবিটি মিথ্যা বরং ভিন্ন একটি ভিডিওকে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

ভিডিও যাচাই

অনুসন্ধানের শুরুতে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে প্রচারিত ভিডিওটিতে থাকা সংবাদ পাঠিকার মূল ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

এটিএন বাংলার এই সংবাদ পাঠিকা গত ১৪ জুন দুপুর দুইটার বুলেটিন পাঠ করেন। ২২ মিনিট ৪৩ সেকেন্ডের বুলেটিনটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায় প্রথম ৬ মিনিট ১১ সেকেন্ডে থেকে তিনি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া নিয়ে ভিন্ন একটি সংবাদ পাঠ করেন। পরবর্তীতে এই অংশটি কেটে খালেদা জিয়া মারা গেছেন দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

Video Comparison by Rumor Scanner 

পরবর্তীতে খালেদা জিয়ার বর্তমান শারিরীক অবস্থা জানতে কি-ওয়ার্ড সার্চ করে গত ২৪ অক্টোবর প্রথম আলোয় ”সিসিইউতে আট ঘণ্টা থাকার পর আবার কেবিনে খালেদা জিয়া” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আজ (২৪ অক্টোবর) করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) প্রায় আট ঘণ্টা রাখার পর আবার কেবিনে নেওয়া হয়েছে। তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন আজ দুপুর পৌনে ১২টার দিকে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

গত ৯ আগস্ট থেকে আড়াই মাস ধরে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়া।

গত ২৫ অক্টোবর ডেইলি স্টারে “খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় ঢাকায় মার্কিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বুধবার (২৫ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৭টা ৪০ মিনিটে তারা ঢাকায় পৌঁছান বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় মার্কিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের একটি দল। 

এছাড়া, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে খালেদা জিয়ার মৃত্যু সংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

একটি দেশের তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মারা গেলে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে সংবাদ হওয়া স্বাভাবিক। তবে, খালেদা জিয়ার মৃত্যুর দাবিতে কোনো তথ্য বা সংবাদ জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে পাওয়া না যাওয়ায় প্রতীয়মান হয় যে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা। 

মূলত, গত ৯ আগস্ট বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে দফায় দফায় স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা এবং করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) আনা-নেওয়া করা হয়েছে। সর্বশেষ গত ২৪ অক্টোবর করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) প্রায় আট ঘন্টা রেখে কেবিনে স্থানান্তর করা হয়েছে। গত ২৫ অক্টোবর বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসা দেওয়া জন্য একটি মার্কিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের দল ঢাকায় এসেছেন। এরমধ্যে বেগম খালেদা জিয়া মারা গেছেন শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ভিন্ন একটি ভিডিওকে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। 

উল্লেখ্য, পূর্বেও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অসুস্থতার সময় গুজব ছড়ানো হলে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল রিউমর স্ক্যানার। 

সুতরাং, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া মারা গেছেন শীর্ষক দাবিটি মিথ্যা এবং প্রচারিত ভিডিওটি এডিটেড। 

তথ্যসূত্র

সালাউদ্দিন নয়, সাকিব মিরপুরে কোচ ফাহিমের সাথে অনুশীলন করেছেন 

ভারতের চলমান আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপের মাঝেপথে গতকাল (২৫ অক্টোবর) ঢাকায় ফিরে মিরপুরে অনুশীলন করেছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। এ সংক্রান্ত খবরে কতিপয় গণমাধ্যম দাবি করেছে, কোচ সালাউদ্দিনের সাথে অনুশীলন করেছেন সাকিব। 

সাকিব

উক্ত দাবিতে গণমাধ্যমের প্রতিবেদন দেখুন প্রথম আলো (ইংরেজি), খবরের কাগজ, যুগান্তর, আরটিভি, জনকণ্ঠ, কালবেলা, ভোরের কাগজ, যায়যায়দিন, এনটিভি, এটিএন বাংলা, সাম্প্রতিক দেশকাল, ডেইলি অবজারভারদৈনিক সংগ্রাম, জাগোনিউজ২৪, বার্তা২৪, ঢাকা পোস্ট, সারা বাংলা, প্রতিদিনের বাংলাদেশ, প্রতিদিনের সংবাদ, বিডিক্রিকটাইম, বাংলাদেশ বুলেটিন, বাংলাদেশ জার্নাল, বাংলাদেশ পোস্ট, দ্য ডেইলি ক্যাম্পাস, সংবাদ প্রকাশ, ঢাকা প্রকাশ, বায়ান্ন টিভি, পূর্বপশ্চিম বিডি, জনবাণী, আজকালের খবর, আজকের দর্পণ, সময়ের কণ্ঠস্বর, বিজনেস জার্নাল, একুশে সংবাদ, বহুমাত্রিক, ঢাকা রিপোর্ট২৪, সময় জার্নাল, সোনালী নিউজ, বিডি২৪রিপোর্ট, বিডি২৪লাইভ, এমটিনিউজ২৪, কালের আলো।  

তাছাড়া, কতিপয় গণমাধ্যম একই দাবিতে সংবাদ প্রকাশ করে পরবর্তীতে তা পরিবর্তন করেছে। উক্ত তথ্য সম্বলিত প্রতিবেদনের আর্কাইভ পাওয়া সম্ভব হয়নি। এমন কিছু গণমাধ্যম হলো চ্যানেল২৪, সময় টিভি, অলরাউন্ডার, বাংলাদেশ মোমেন্টস। 

একই দাবিতে ভারতের সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন দেখুন বাংলা হান্ট। 

একই দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বিশ্বকাপের মাঝপথে ঢাকায় এসে সাকিব কোচ সালাউদ্দিনের সাথে অনুশীলন করার দাবিটি সঠিক নয় বরং তিনি আরেক কোচ নাজমূল আবেদীন ফাহিমের সাথে অনুশীলন করেছেন। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে জাতীয় দৈনিক প্রথম আলো’র গতকাল (২৫ অক্টোবর) প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, “সকালে ঢাকায় ফিরে দুপুরেই সাকিব হাজির মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের ইনডোরে। সেখানে বিকেএসপির ক্রিকেট উপদেষ্টা ও ক্রিকেট কোচ নাজমূল আবেদীনের সঙ্গে অনুশীলনে নেমে পড়েন সাকিব। তিন ঘণ্টার লম্বা অনুশীলন সেশন শেষে বিকেলের দিকে ইনডোর থেকে বেরিয়ে আসেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।”

ক্রীড়া বিষয়ক দেশীয় সংবাদমাধ্যম Daily Cricket এর ফেসবুক পেজে গতকাল (২৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় প্রকাশিত এক ভিডিওতে দেখা যায়, বিকেএসপির ক্রিকেট উপদেষ্টা ও ক্রিকেট কোচ নাজমূল আবেদীন ফাহিমকে সাকিবের সাথে অনুশীলন শেষে বেরিয়ে আসতে দেখা যায়। তবে ভিডিওতে তার মুখ স্পষ্টভাবে দেখা যায়নি। 

Screenshot: Facebook

আমরা এ বিষয়টি নিশ্চিত হতে গিয়ে দেখেছি, নাজমূল আবেদীন ফাহিম গতকাল যে গাড়িতে চড়ে মিরপুর ত্যাগ করেছেন, সেটির নাম্বার প্লেটের নাম্বার ছিল ঢাকা মেট্রো গ ৩৩-৫৫৭৫।

Screenshot: Facebook

আমরা গণমাধ্যম সূত্রেই দেখেছি, আজ (২৬ অক্টোবর) সকালেও নাজমূল আবেদীন ফাহিম একই গাড়িতে মিরপুরে এসেছেন, যার নাম্বার প্লেট একই ছিল। 

Screenshot: Facebook

আরো অনুসন্ধান করে, আরেক সংবাদমাধ্যম ‘সময় টিভি’তে গতকাল নাজমূল আবেদীন ফাহিমের দেওয়া একটি অডিও সাক্ষাৎকার খুঁজে পাওয়া যায়, যেখানে তিনি বলেন, ” (সাকিব) আসলো তো ব্যাটিংটা ঝালাই করার জন্য। প্র্যাক্টিস সেশন কনডাক্ট করলো। একটা সেশন করলো। আরেকটা সেশন করবে। তারপর চলে যাবে।” 

Screenshot: Facebook 

নাজমূল আবেদীন ফাহিম মূলধারার অনলাইন সংবাদমাধ্যম ‘বিডিনিউজ২৪’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারেও একই তথ্যই দিয়েছেন।

Screenshot: Bdnews24

তাছাড়া, ক্রিকেট বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম Cricinfo এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনেও একই তথ্য উঠে এসেছে। 

অর্থাৎ, সাকিব ঢাকায় ফিরে গতকাল কোচ নাজমূল আবেদীন ফাহিমের অধীনে অনুশীলন করেছেন। কিন্তু এ সংক্রান্ত উপরোল্লিখিত প্রতিবেদনের কোনোটিতেই সাকিব কোচ সালাউদ্দিনের সাথে অনুশীলন করেছেন শীর্ষক তথ্য উল্লেখ নেই। 

সাকিব কোচ সালাউদ্দিনের সাথে অনুশীলন করেছেন শীর্ষক দাবিটি ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে ক্রীড়া বিষয়ক দেশীয় আরেক সংবাদমাধ্যম Cricfrenzy এ বিষয়ে জানতে সালাউদ্দিনের সাথে কথা বলেছে। 

তিনি গতকাল বিকেলে সংবাদমাধ্যমটিকে জানিয়েছেন, সাকিব দেশে এসেছে কিনা সেটাই তার জানা নেই। তখন পর্যন্ত তার সাথে কথা হয়নি। তিনি এর আগ পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে সাকিবেরই ক্রিকেট একাডেমি ‘মাস্কো সাকিব ক্রিকেট একাডেমি‘ তে ছিলেন। তাই তার মিরপুরে থাকার কথা নয় সেসময়।

Screenshot: Facebook

অর্থাৎ, কোচ সালাউদ্দিনের সাথে সাকিবের অনুশীলনের দাবিটি সঠিক নয়৷ 

মূলত, ভারতের চলমান ক্রিকেট বিশ্বকাপের মাঝেপথে গতকাল (২৫ অক্টোবর) ঢাকায় ফিরে মিরপুরে অনুশীলন করেছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। এ সংক্রান্ত খবরে কতিপয় গণমাধ্যম দাবি করেছে, কোচ সালাউদ্দিনের সাথে অনুশীলন করেছেন সাকিব। কিন্তু রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত দাবিটি সঠিক নয়৷ সাকিব গতকাল বিকেএসপির ক্রিকেট উপদেষ্টা ও ক্রিকেট কোচ নাজমূল আবেদীন ফাহিমের সাথে অনুশীলন করেছেন। সালাউদ্দিন গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তিনি মিরপুরে ছিলেন না সেসময়, ছিলেন রূপগঞ্জে সাকিবেরই একাডেমিতে।  

সুতরাং, ঢাকায় ফিরে ক্রিকেট কোচ নাজমূল আবেদীন ফাহিমের সাথে সাকিবের অনুশীলনের তথ্যকে আরেক কোচ সালাউদ্দিনের সাথে অনুশীলনের দাবিতে গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র