Home Blog Page 568

কেরালায় আতশবাজি প্রদর্শনীর ভিডিওকে পশ্চিমবঙ্গের এগরার বিস্ফোরণের দৃশ্য দাবিতে প্রচার

সম্প্রতি, পশ্চিমবঙ্গের এগরায় বিস্ফোরণের দৃশ্য দাবিতে একটি ভিডিও ভারতীয় গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম ইউটিউবে প্রচার করা হয়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন একটি পোস্ট দেখুন এখানে(আর্কাইভ)।

উক্ত ভিডিওটিকে এগরায় বিস্ফোরণের দৃশ্য দাবিতে ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রচারিত একটি প্রতিবেদন দেখুন Aajtak India(আর্কাইভ)।

একই দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে(আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি  এগরার বিস্ফোরণের ঘটনার  নয় বরং এটি ২০২২ সালে কেরালায় পুরম উৎসবে আতশবাজির প্রদর্শনীর সময়ে ধারণকৃত ভিডিও। 

ভাইরাল ভিডিওটিতে যা দেখা যাচ্ছে

অনুসন্ধানের শুরুতে উক্ত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ১৪ সেকেন্ডের এই ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে, একটি চাষের জমিতে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হয়েছে। সেখানে আগুনের সাথে কালো ধোয়াযুক্ত মেঘ আকাশে উড়ে যাচ্ছে। সেইসাথে মানুষের ভয়ার্ত চিৎকারের শব্দ শোনা যাচ্ছে।

Screenshot: Facebook

পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে গত ১৮মে উক্ত ভিডিও সম্পর্কিত একটি  একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: WB Police Facebook 

উক্ত পোস্টের ক্যাপশনে আলোচিত ভিডিওটি  সম্পর্কে বলা হয়, “কিছু মিডিয়া চ্যানেলে ও সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ভিডিওটিকে এগরার খাদিকুলের বিস্ফোরণের ঘটনা হিসাবে প্রচার করা হচ্ছে। আসলে এটি কেরালার পুরম উৎসবের দৃশ্য। #WBP সকল কে ভুয়ো খবর প্রচার করা থেকে বিরত থাকার আবেদন জানাচ্ছে। অন্যথায়, লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের সতর্কতামূলক পোস্টটি থেকে প্রাপ্ত তথ্য ধরে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে ২০২২ সালের ১৭ মার্চ Beauty Palakkad নামের একটি ফেসবুক পেজে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Beauty Palakkad Facebook

উক্ত ভিডিওটির সাথে দাবিকৃত ভাইরাল ভিডিওটির হুবহু মিল পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner

উক্ত ভিডিওটির ক্যাপশনে উল্লেখিত মালায়লাম ভাষায় লেখা বাক্য বাংলায় অনুবাদ করলে দাড়ায়- ‘আতশবাজির জন্মস্থান কাভাসেরি পুরম ডে-তে আতশবাজি প্রদর্শনী ২০২২’।

অর্থাৎ, উপরোক্ত তথ্য উপাত্ত পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, আলোচিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ে পশ্চিমবঙ্গের এগরার বিস্ফোরণের দৃশ্যের নয়। 

মূলত, ২০২২ সালে ভারতের কেরালা প্রদেশে পুরম উৎসবে আতশবাজি প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। উক্ত আতশবাজি প্রদর্শনীর একটি ভিডিও সেসময় ইন্টারনেটে প্রচারিত হয়। সাম্প্রতিক সময়ে ঐ ভিডিওকেই  গত ১৬ মে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের এগরায় ঘটে যাওয়া  বিস্ফোরণের দৃশ্য দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, গত ১৬ মে পশ্চিমবঙ্গের এগরায় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এই প্রতিবেদন প্রকাশের আগ পর্যন্ত এই ঘটনায় ১১ জন নিহত হয়েছেন।

সুতরাং, ২০২২ সালে কেরালায় পুরম উৎসবে আতশবাজি প্রদর্শনীর সময়ে ধারণকৃত একটি ভিডিওকে সাম্প্রতিক সময়ে পশ্চিমবঙ্গের এগরার বিস্ফোরণের ভিডিও দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র

পারিবারিক ঝামেলা নিয়ে খালেদা জিয়ার বক্তব্য দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি এডিটেড 

0

সম্প্রতি, খালেদা জিয়ার পারিবারিক ঝামেলা নিয়ে ঘরোয়া মিটিংয়ের ভিডিও ফাঁস হয়েছে দাবি করে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমনকিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ইউটিউবে প্রচারিত এমনকিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রচারিত ভিডিওটিতে বেগম খালেদা জিয়া নিজ পরিবার নিয়ে আলোচিত বক্তব্যটি প্রদান করেননি বরং ভিডিওটিতে দুইটি আলাদা সময়ের বক্তব্য জুড়ে দিয়ে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।

মূলত, ২০১৫ সালের ১ নভেম্বর লন্ডনের পার্ক প্লাজা রিভারব্যাংক হোটেলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এর দলীয় অনুষ্ঠানে দলটির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বক্তব্যের একটি ভিডিওর ৪১ মিনিটের সময়কার বক্তব্যের অংশ “আপনারা যতই বলেন যে, আন্দোলন; আন্দোলন ঢাকায়, সেভাবে করা সম্ভব হয়নি” এর ভিডিওর সাথে একই বক্তব্যের ২৫ মিনিট ১৯ সেকেন্ডের সময়কার বক্তব্যের অংশ “এখানে আবার পরিবারের মধ্যে গণ্ডগোল আছে। তাকে তো আপনারা ভাল করে চেনেন। বউ এর সঙ্গেও গণ্ডগোল। বউ ও চায় ক্ষমতা, সেও চায় ক্ষমতা” কিছুটা পরিবর্তন করে “আবার” শব্দটির স্থলে “আমার” এবং “তাকে” শব্দটির স্থলে “তারেক রহমানকে” উচ্চারিত অডিও ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় জুড়ে দিয়ে এডিটেড একটি ভিডিও সম্প্রতি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। 

উল্লেখ্য, পূর্বেও বিষয়টি প্রচারিত হলে সেসময় এটি নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। 

রায়না বার্নাভির মহাকাশ থেকে তোলা ভিডিওর দৃশ্য দাবিতে গণমাধ্যমে ভুল ছবি প্রচার

সম্প্রতি, সৌদি আরবের নারী নভোচারী রায়না বার্নাভি কর্তৃক আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন থেকে ধারণকৃত একটি ভিডিওতে মক্কা নগরীর রাতের দৃশ্য দেখা যায়। উক্ত ভিডিওর দৃশ্য দাবিতে কতিপয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে একটি ছবি প্রচার করা  হয়েছে।

গণমাধ্যমে প্রচারিত প্রতিবেদনটি দেখুন ঢাকা মেইল, যায়যায়দিন, দৈনিক জাগরণ, দৈনিক বগুড়া

ফেসবুকে প্রচারিত এমন পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, রায়না বার্নাভির মহাকাশ থেকে তোলা ভিডিওর দৃশ্য দাবিতে কতিপয় গণমাধ্যমে প্রচারিত ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং ২০১৭ সালে মহাকাশ থেকে তোলা মক্কার পুরোনো ছবিকে সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে কিওয়ার্ড সার্চ করে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (আইএসএস) থেকে রায়না বার্নাভির ধারণকৃত পবিত্র মক্কা নগরীর ভিডিওটি তার টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার টিম। গত ২৬ মে প্রকাশিত উক্ত ভিডিওর কোনো দৃশ্যের সাথে সম্প্রতি গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিটির কোনো মিল খুঁজে পাওয়া যায়নি।

Image comparison by Rumor Scanner

পরবর্তীতে রিভার্স ইমেজ সার্চ পদ্ধতি ব্যবহার করে, রাশিয়ান মহাকাশচারী সার্জেই রায়াজানাস্কি (Sergey Ryazansky) এর ফেসবুক পেজে ২০১৭ সালের ৫ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত পোস্টের ছবির সাথে উক্ত দাবিতে প্রচারিত ছবির মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Image comparison by Rumor Scanner

পোস্টে সার্জেই রায়াজানাস্কি লিখেন, মুসলিম বিশ্বের সবচেয়ে পবিত্র স্থান। মক্কা দিন এবং রাত দুই সময়েই দেখতে সুন্দর। এমনকি মহাকাশ থেকে বিশ্বের অন্য কোনো শহর থেকে পবিত্র মক্কাকে আলাদা করা সহজ।

আরও অনুসন্ধানে করে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান নাসার ওয়েবসাইটে ২০১৭ সালের ৪ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত একই ছবি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot from NASA

নাসার ওয়েবসাইটে ছবিটির মেটাডাটা বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ছবিটি ২০১৭ সালের ০৪ সেপ্টেম্বর ‘Sergey Ryazansky’ তার ক্যামেরায় তুলেছিলেন।

Screenshot source: NASA

গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিটির ক্যাপশনে ফাইল ফটো বা পুরোনো ঘটনার ছবি শীর্ষক কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি। কোনো কোনো গণমাধ্যম ছবির ক্যাপশনে কিছুই লিখে নি। সাম্প্রতিক ঘটনার বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ছবিটি ব্যবহার করে সংগৃহিত উল্লেখ কিংবা কোনো তথ্যই উল্লেখ না থাকায় স্বাভাবিকভাবে ছবিগুলো রায়না বার্নাভির সম্প্রতি মহাকাশ থেকে তোলা ভিডিওর দৃশ্য বলে প্রতীয়মান হয়। এতে করে নেটিজেনদের মধ্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হওয়া অমূলক নয়।  

মূলত, সম্প্রতি সৌদি আরবের নারী নভোচারী রায়না বার্নাভি কর্তৃক মহাকাশ থেকে ধারণকৃত মক্কার একটি ভিডিও তার টুইটার অ্যাকাউন্টে পোস্ট করা হয়। উক্ত ভিডিওর দৃশ্য দাবিতে কতিপয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে একটি ছবি প্রচার করার প্রেক্ষিতে অনুসন্ধানে জানা যায়, ছবিটির সাথে উক্ত ভিডিওর কোনো দৃশ্যের মিল নেই এবং এটি সাম্প্রতিক সময়ের ছবিও নয়। প্রকৃতপক্ষে, ২০১৭ সালে রাশিয়ান নভোচারী সার্জেই রায়াজানাস্কি মহাকাশ থেকে মক্কার উক্ত ছবিটি পাঠান। এই ছবিকেই সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।  

প্রসঙ্গত, সৌদি আরবের প্রথম নারী নভোচারী রায়ানাহ বার্নাবি গত ২১ মে ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে স্পেসএক্সের ফ্যালকন-৯ রকেটে যাত্রা শুরু করে ২২ মে ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনে পৌঁছান।

উল্লেখ্য, পূর্বেও বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমে ভুল ছবি প্রকাশিত হলে সেসব শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কিছু প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, রাশিয়ান নভোচারী সার্জেই রায়াজানাস্কি কর্তৃক ২০১৭ সালে মহাকাশ থেকে পাঠানো মক্কার ছবিকে সাম্প্রতিক সময়ে সৌদি আরবের নভোচারী রায়না বার্নাভির ধারণকৃত মক্কার ভিডিওর দৃশ্য  দাবিতে কতিপয় গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

 তথ্যসূত্র

জোম্যাটো ৭২ শতাংশ ক্যাশ অন ডেলিভারিতে ২ হাজার টাকার নোট নিচ্ছে না

সম্প্রতি, “2000 Rs Notes: ক্যাশ অন ডেলিভারিতে শুধু ২ হাজার টাকার নোট, টুইট করে জানাল Zomato” শীর্ষক শিরোনামে একটি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

উক্ত দাবি সহ সংবাদ প্রকাশ করেছে ভারতীয় গণমাধ্যম এই সময়Eedina

Screenshot: eisamay.com
যা দাবি করা হচ্ছে

গত ১৯ মে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ (আরবিআই) ইন্ডিয়া বাজার থেকে ২ হাজার টাকার নোট তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে সাধারণ মানুষ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। ফুড ডেলিভারি অ্যাপ জোম্যাটো তাদের টুইটার অ্যাকাউন্টের একটি টুইটে জানায় তারা ৭২ শতাংশ ক্যাশ অন ডেলিভারির ক্ষেত্রে ২ হাজার টাকার নোট নিচ্ছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ফুড ডেলিভারি অ্যাপ জোম্যাটো কর্তৃক ভারতীয় ২ হাজার রূপির নোট নেওয়ার দাবিটি সত্য নয় বরং ফুড ডেলিভারি অ্যাপ জোম্যাটো’র টুইটার একাউন্টে মজার ছলে আপ্লোডকৃত এক টুইট’কে সত্য ভেবে আলোচ্য দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।

কি-ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে ভারতীয় গণমাধ্যম ‘The Economic Times’ এ “Rs 2,000 note withdrawal: Cash-on- delivery payments for online orders set to rise” শীর্ষক শিরোনামে গত ২৪ মে প্রকাশিত সংবাদ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, “ফুড ডেলিভারি অ্যাপ জোম্যাটো (তাদের টুইটারে) ঠাট্টা এবং মজার ছলে আলোচিত টুইটটি করেছিল (ভাবানুবাদ)।”

Screenshot from The Economic Times

পাশাপাশি, বার্তা সংস্থা ‘Reuters’ এ “From mangoes to luxury watches, Indians look to offload 2,000-rupee notes” শীর্ষক শিরোনামে গত ২৪ মে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জোম্যাটোর একজন স্পোকস পার্সনের বরাতে উল্লেখ করা হয়, “ফুড ডেলিভারি অ্যাপ জোম্যাটোর টুইটটি মজার ছলে করা এবং এটি সত্য নয়।”

Screenshot from Reuters

Merriam-webster.com অনুযায়ী, “in jest” idiom এর ক্ষেত্রে উল্লেখ করা হয়েছে এটি “রসিকতা হিসেবে” ব্যবহার করা হয়। 

Screenshot: merriam-webster.com
জোম্যাটো এজাতীয় হাস্যরসাত্মক টুইট কি এবারই প্রথম আপ্লোড করেছে?

না, এর আগেও বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফুড ডেলিভারি অ্যাপ জোম্যাটো তাদের টুইটার অ্যাকাউন্টে হাস্যরসাত্মক পোস্ট (,,) খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Twitter/zomato

মূলত, মে মাসের শেষ দিকে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ‘ক্লিন নোট নীতি’ অনুসারে ২ হাজার রূপির ব্যাঙ্কনোট প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিলে ফুড ডেলিভারি অ্যাপ জোম্যাটো আলোচিত ইস্যু নিয়ে মজার ছলে একটি টুইট পোস্টে জানায় তারা ৭২ শতাংশ ক্যাশ অন ডেলিভারির ক্ষেত্রে ২ হাজার টাকার নোট নিচ্ছে। চলমান ভাইরাল ইস্যুকে কাজে লাগিয়ে স্যাটায়ারভিত্তিক প্রমোশনাল মার্কেটিং’র এই স্ট্র্যাটেজিকে (জোম্যাটোর সেই টুইট) সত্য ভেবে ভারতীয় গণমাধ্যমে “জোম্যাটো ৭২ শতাংশ ক্যাশ অন ডেলিভারির ক্ষেত্রে ২ হাজার টাকার নোট নিচ্ছে দাবিতে” সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত ১৯ মে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক তাদের ওয়েবসাইটে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জানায় যে, তারা ‘ক্লিন নোট নীতি’ অনুসারে ২ হাজার রূপির ব্যাঙ্কনোট প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয় যে, ২৩ মে থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত একজন ২ হাজার রূপির সর্বোচ্চ বিশ হাজার রূপি পর্যন্ত বিনিময় করতে পারবে। 

উল্লেখ্য, পূর্বেও বিভিন্ন সময়ে ভারতীয় গণমাধ্যমে ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়লে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্ট-চেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কিছু প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, ঠাট্টা এবং মজার ছলে আপ্লোডকৃত টুইটকে সত্য ভেবে “ডেলিভারি অ্যাপ জোম্যাটো ৭২ শতাংশ ক্যাশ অন ডেলিভারির ক্ষেত্রে ২ হাজার টাকার নোট নিচ্ছে” দাবিতে গণমাধমে সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

বাস স্টেশনের লাইব্রেরি দাবিতে প্রচারিত ছবিটি এআই জেনারেটেড

সম্প্রতি, “Bus station with book library. এ রকম একটা বাস স্টান্ড ঢাকায় হলে কেমন হতো?” শীর্ষক শিরোনামসহ বিভিন্ন শিরোনামে একটি ছবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে। 

এখানে উল্লেখ্য যে দাবিতে বলা হয়েছে, “এরকম একটা বাস স্ট্যান্ড ঢাকায় হলে কেমন হতো”। অর্থাৎ পোস্টের দাবি অনুযায়ী আলোচিত ছবিটি অন্য কোনো জায়গার বাস স্ট্যান্ডের বুঝিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে “চীনের বাস স্ট্যান্ডের লাইব্রেরি’র ছবি” দাবিও খুঁজে পাওয়া গেছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবি সম্বলিত ইউটিউবে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, স্টেশনে পাঠাগার দাবিতে প্রচারিত ছবিটি বাস্তব নয় বরং ছবিটি আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স (এআই) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি করা হয়েছে।

রিভার্স ইমেজ সার্চ পদ্ধতি ব্যবহার করে, ‘Architecture Daily’ নামের একটি ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে “bus stops double as cozy reading nooks in @ulises.ai’s #midjourney series.” শীর্ষক ক্যাপশনে গত ১৮ এপ্রিল প্রকাশিত পোস্টের ছবির সাথে আলোচিত ছবির হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Image Comparison by Rumor Scanner

‘Architecture Daily’ এর ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে প্রকাশিত পোস্ট-এ উল্লেখ করা হয়, এই ছবিটি ‘Ulises’ নামক একটি ইনস্টাগ্রাম একাউন্ট থেকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ছবি প্রস্তুতকারক টুলস মিডজার্নি দিয়ে তৈরি করে আপ্লোড করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের মাধ্যমে ‘Ulises’ (Design Studio) এর ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে “#futureofcities #futureofdesign “ সহ বিভিন্ন হ্যাশট্যাগে গত ৪ এপ্রিল প্রকশিত পোস্টে উক্ত দাবিতে প্রচারিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot from Instagram

পাশাপাশি, আর্কিটেকচার এবং ডিজাইন কালচারের জনপ্রিয় ডিজিটাল ম্যাগাজিন “ডিজাইনবুম” এর সাইটে Ulises তৈরি ডিজাইনের ছবিগুলোর পেজেও আলোচিত ছবিটি পাওয়া যায়। সেখানে ছবিটির সাথে উল্লেখ করা হয়, “power of artificial intelligence in imagining innovative and often surreal design concepts”। অর্থাৎ, এআই দিয়ে উদ্ভাবনী ডিজাইন কনসেপ্ট হিসেবে এই ছবিটি তৈরি করা হয়েছে।

মূলত, গত ৪ এপ্রিল Ulises আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স (এআই) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে স্টেশনে পাঠাগারের কাল্পনিক ছবি তৈরি করে এবং তাদের ইনস্টাগ্রাম একাউন্টে আপ্লোড করে। পরবর্তীতে উক্ত ছবি ব্যবহার করে কখনো স্থান উল্লেখ ব্যতীত আবার কখনো চীনের বাস স্টেশনের লাইব্রেরি দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, মিডজার্নি হলো আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন একটি ছবি প্রস্তুতকারক টুল। এটি ব্যবহার করে কিছু কমান্ডের সাহায্যে প্রায় নিখুঁত ছবি তৈরি করা সম্ভব। সোশ্যাল মেসেজিং প্লাটফর্ম ডিস্কর্ডে মিডজার্নির সার্ভারে থাকা বট ব্যবহার করে এই ছবি প্রস্তুত করা হয়।

প্রসঙ্গত, পূর্বেও বিভিন্ন সময়ে আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স (এআই) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি ছবি নিয়ে ইন্টারনেটে ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়লে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্ট-চেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কিছু প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স দিয়ে তৈরি বাস স্টেশনের লাইব্রেরির ছবিকে বাস্তব দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে কেএনএফের হামলার দৃশ্য দাবিতে মিয়ানমারের পুরোনো ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি, বান্দরবানের রেমাক্রি অঞ্চলে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী কেএনএফ কর্তৃক বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে গুলি করার পরের দৃশ্য দাবিতে একটি ভিডিও এবং ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমনকিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

যা দাবি করা হচ্ছে

  • প্রচারিত ভিডিওটির ক্যাপশনে দাবি করা হচ্ছেঃ “আজ থেকে যুদ্ধবিধ্বস্ত রেমাক্রি অঞ্চলে সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার উড্ডয়ন নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে কেএনএ…।  লঙ্ঘন করলে একিই অবস্থা হবে। এর আগেও ২ বারের মতো হেলিকপ্টারের গায়ে গুলি লেগেছিল । তৃতীয়বার আসলে কিন্তু  খবর আছে : কেএনএফ”
  • প্রচারিত ছবিটির ক্যাপশনে দাবি করা হচ্ছেঃ ‘বান্দরবানে বাংলাদেশ সরকারের সেনাবাহিনীর আগ্রাসন ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং সেনাবাহিনীর দমন পীড়ন রুখতে কেএনএফ এর যুদ্ধ চলাকালীন মুহূর্ত। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার বিধস্ত অবস্থায় উদ্ধয়মান‌। ফুটেজ কেপচার বাই কেএনএফ যোদ্ধা।’

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে আক্রমণের দৃশ্য দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি বান্দরবানের রেমাক্রিতে কেএনএফ কর্তৃক সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে হামলার দৃশ্যের নয় বরং এটি চলতি বছরের গত ০৩ মার্চ মিয়ানমারের থান্টলাং শহরে একটি হেলিকপ্টারে ড্রোন হামলার ভিডিও।

অনুসন্ধানের শুরুতে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম The Irrawaddy(Eng)-র টুইটার অ্যাকাউন্টে চলতি বছরের গত ০৮ মার্চ  বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে আক্রমণের দৃশ্য দাবিতে প্রকাশিত একটি ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Twitter 

ভিডিওটির ক্যাপশনে উল্লেখিত তথ্য থেকে জানা যায়, এটি গত ০৩ মার্চ মিয়ানমারের থান্টলাং শহরে একটি হেলিকপ্টারে চীন ন্যাশনাল আর্মির ড্রোন হামলার পর ঐ হেলিকপ্টারের উড়ে যাওয়ার ভিডিও।

এই ভিডিওটির সঙ্গে বান্দরবানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে আক্রমণের দৃশ্য দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

Video Comparison by Rumor Scanner

এছাড়াও, Asia News নামের একটি অনলাইন পোর্টালের ওয়েবসাইটে গত ১০ মার্চ ‘At least one airstrike a day in Chin state since the start of 2023‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Asia News

উক্ত প্রতিবেদনে ব্যবহৃত ছবির সঙ্গে আলোচিত ভিডিওটির একটি অংশের মিল খুঁজে পাওয়া যায়। এছাড়া প্রতিবেদনটির বিস্তারিত বিবরণী থেকেও নিশ্চিত হওয়া যায় যে, প্রচারিত ভিডিওটি মিয়ানমারের থান্টলাং শহরের।

পরবর্তীতে এই সম্পর্কিত অনুসন্ধানে মূলধারার কোনো গণমাধ্যম ও আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর(আইএসপিআর) কিংবা অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে বাংলাদেশের কোথাও সম্প্রতি সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে হামলার কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

অর্থাৎ, উপরোক্ত তথ্য উপাত্ত পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, আলোচিত ভিডিওটি বান্দরবানের বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে কেএনএফের হামলার কোনো ঘটনার নয়।

মূলত, গত ০৩ মার্চ মিয়ানমারের থান্টলাং শহরে একটি হেলিকপ্টারে চীন ন্যাশনাল আর্মি কর্তৃক ড্রোন হামলার দাবি করা হয়। পরবর্তীতে ঐ হেলিকপ্টার উড়ে যাওয়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। সাম্প্রতিক সময়ে ঐ ভিডিওকেই পার্বত্য অঞ্চলের সন্ত্রাসী সংগঠন কেএনএফ কর্তৃক বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে গুলি করার পরের দৃশ্য দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, গত ১৬ মে কেনএনএফ সন্ত্রাসীদের হামলায় ২ সেনা সদস্য নিহতের ঘটনা ঘটেছে।

Screenshot: Prothom Alo

উল্লেখ্য, পূর্বেও কেএনএফ ওর ওপর যৌথবাহিনীর হামলার দাবিতে মিয়ানমারের ভিডিও প্রচার করা হলে সেসময় বিষয়টি নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। 

সুতরাং, মিয়ানমারের থান্টলাং শহরে হেলিকপ্টারে ড্রোন হামলার একটি ভিডিওকে বান্দরনবনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে কেএনএফ এর হামলার ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে ; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

প্রথম আলো’র আদলে ডিজিটাল ব্যানার তৈরি করে মির্জা ফখরুলের নামে ভুয়া মন্তব্য প্রচার

সম্প্রতি, “যুক্তরাষ্ট্র চাইলে বিএনপি যে কোনো সময়েই ক্ষমতা গ্রহণে প্রস্তুত – বিএনপি মহাসচিব” শীর্ষক দাবিতে সাংবাদিকদের সাথে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কথোপকথনের একটি ছবি যুক্ত প্রথম আলোর লোগোসহ একটি ডিজিটাল পোস্টার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।  

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে(আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমার স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ‘যুক্তরাষ্ট্র চাইলে বিএনপি যে কোনো সময়েই ক্ষমতা গ্রহণে প্রস্তুত’ শীর্ষক দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত এই বক্তব্যটি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দেননি এবং প্রথম আলোও এ ধরনের কোনো সংবাদ প্রচার করেনি। বরং ভিত্তিহীনভাবে প্রথম আলোর আদলে একটি ডিজিটাল ব্যানার তৈরি করে উক্ত মন্তব্যটি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মন্তব্য দাবিতে ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে, কি-ওয়ার্ড সার্চ পদ্ধতি ব্যবহার করে প্রথম আলোর ওয়েবসাইট , প্রথম আলোর ফেসবুক পেজ এবং প্রথম আলোর ইউটিউব চ্যানেলে উক্ত দাবিতে প্রচারিত কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

প্রথম আলো বাইরে অন্য কোনো সংবাদমাধ্যমেও আলোচিত মন্তব্যটি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর করেছেন এমন কেনো তথ্য নেই। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন কোনো মন্তব্য করার কোনো প্রমাণ কোনো মাধ্যমেই পায়নি রিউমর স্ক্যানার টিম।

Screenshot from Google

মির্জা ফখরুল সংক্রান্ত বক্তব্য অনুসন্ধানে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা ও এর পূর্ববর্তী সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের দেওয়া কিছু বক্তব্য পাওয়া গেলেও উল্লেখিত দাবির বক্তব্যটি পাওয়া যায়নি।

সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এর বক্তব্যের প্রেক্ষিতে প্রচারিত কিছু সংবাদ নিম্নরূপ:

দ্য ডেইলি স্টার: ‘সরকারের সুর নিচে নেমে এসেছে: মির্জা ফখরুল’(২৯ মে)
বাংলা ট্রিবিউন: ‘যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবির প্রতিধ্বনি: মির্জা ফখরুল’(২৬ মে) 
ঢাকা ট্রিবিউন: কোন জাদুতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে রেমিট্যান্স বেড়েছে, প্রশ্ন ফখরুলের (২৯ মে)
প্রথম আলো: ‘যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী সম্ভবত বিরক্ত: মির্জা ফখরুল’(১৫ মে) 

ইন্টারনেটে ওপেন সোর্স অনুসন্ধানে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আলোচিত বক্তব্যটি দিয়েছেন এমন কোনো তথ্য-প্রমাণ না পাওয়ায় পরবর্তীতে বিষয়টির অধিকতর সত্যতা যাচাইয়ের লক্ষ্যে প্রথম আলো’র নির্বাহী সম্পাদক সাজ্জদ শরীফের সাথে কথা হয় রিউমর স্ক্যানার টিমের।

তিনি রিউমর স্ক্যানারকে জানান, ‘এটা শতভাগ ভুল। আমরা ভালো করে চেক করেছি। এরকম কোনো খবর আমরা দেইনি। আমাদের কার্ড (পোস্টার) যারা ব্যবহার করেছে তারা অসৎ উদ্দেশ্যে ব্যবহার করেছে।’

এছাড়া, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন কোনো মন্তব্য করেছেন কিনা তা যাচাইয়ের জন্য বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার প্রেস উইং সদস্য শায়রুল কবিরের সাথে কথা হয় রিউমর স্ক্যানার টিমের। শায়রুল কবির জানান, ‘এটা ধান্ধাবাজদের এক ধরণের ধান্ধা। মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আজেবাজে পোস্ট করছে। এগুলো থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ করছি।’

তাছাড়া, আলোচিত বিষয়টিকে মিথ্যা উল্লেখ করে আজ ৩১ মে নিজেদের ভেরিফাইড ফেসবুক থেকে প্রচারিত এক পোস্টে প্রথম আলো জানায়,

Screenshot: Prothom Alo Facebook  Page

“সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সম্প্রতি প্রথম আলোর নিউজ কার্ডের মতো হুবহু নকল এই ছবিটি ছড়িয়ে পড়েছে। এটি প্রথম আলোর তৈরি করা নয়। আমাদের পাঠকদের জানাতে চাই, এর আগেও বিভিন্ন সময়ে প্রথম আলোর নামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভূয়া খবর, ছবি ও কার্ড ছড়িয়েছে। বিভ্রান্তি এড়ানোর জন্য আমাদের অনলাইন ও ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে গিয়ে যাচাই করে নিন যেকোনো খবর।”

অর্থাৎ, উপরোক্ত তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতে এটা নিশ্চিত যে, যুক্তরাষ্ট্রকে নিয়ে আলোচিত মন্তব্যটি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর করেননি।

মূলত, সম্প্রতি ‘যুক্তরাষ্ট্র চাইলে বিএনপি যে কোন সময়েই ক্ষমতা গ্রহণে প্রস্তুত’ শীর্ষক একটি মন্তব্যকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মন্তব্য দাবি করে দৈনিক প্রথম আলো’র আদলে তৈরি একটি ব্যানার ফেসবুক প্রচারিত হয়। তবে এমন কোনো সংবাদ প্রথম আলো প্রচার করেনি বলে পত্রিকাটির নির্বাহী সম্পাদক সাজ্জাদ শরিফ রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করেছেন। এছাড়া অনুসন্ধানে বিএনপি মহাসচিবের এমন কোনো বক্তব্যও খুঁজে পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, এর আগে ‘মির্জা ফখরুল বিএনপির মেয়াদোত্তীর্ণ মহাসচিব। তার এখনই অবসরে যাওয়া উচিত। -হিরো আলম” শীর্ষক দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ডিজিটাল পোস্টার প্রচার হলে তা মিথ্যা হিসেবে শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, ‘যুক্তরাষ্ট্র চাইলে বিএনপি যে কোনো সময়েই ক্ষমতা গ্রহণে প্রস্তুত’ শীর্ষক বক্তব্য বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দিয়েছেন দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ছবিটি প্রধানমন্ত্রীর পুত্রবধূ ক্রিস্টিন ওয়াজেদের নয়

সম্প্রতি, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নাকি সারা রাত্র তাহাজ্জুদ নামাজ পারেন। ওনার ছেলের বউয়ের অবস্থা নোবেল দেওয়া হোক। জাতির বৌমা” শীর্ষক শিরোনামের একটি পোস্টে বিকিনি পরিহিত একটি নারীর ছবিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্রবধূ দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।

ফেসবুকে একই দাবিতে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ)।

টুইটারে প্রচারিত কিছু টুইট দেখুন এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ) এবং এখানে(আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, বিকিনি পরিহিত নারীর ছবিটি প্রধানমন্ত্রীর পুত্রবধূ ক্রিস্টিন ওয়াজেদের নয় বরং এটি মার্কিন অভিনেত্রী Katie Cassidy এর ছবি। 

রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে, যুক্তরাজ্য ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল এর ওয়েবসাইটে ২০১৬ সালের ১৪ই আগস্ট “Bathing beauty! Katie Cassidy soaks up the sun in sexy bikini during Miami Beach holiday” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ছবির ব্যক্তিটি মার্কিন অভিনেত্রী Katie Cassidy.

Source: Daily Mail

পাশাপাশি, কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে Popsugar নামের যুক্তরাষ্ট্রের মিডিয়া এবং প্রযুক্তি ভিত্তিক একটি ওয়েবসাইটে ২০১৬ সালের ১৫ই আগস্ট “Katie Cassidy Sizzles in a Bikini on the Beach in Miami” শীর্ষক একটি নিবন্ধে একই নারীর একই বিকিনি পরিহিত একাধিক ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। নিবন্ধটিতে বলা হয়েছে, মিয়ামি বিচ হতে অভিনেত্রী Katie Cassidy এর বিকিনি পরিহিত ছবিগুলো ধারণ করা হয়েছে।

Source: Popsugar 

তাছাড়া, মার্কিন অভিনেত্রী Katie Cassidy এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্রবধূ ক্রিস্টিন ওয়াজেদের মুখচ্ছবির তুলনা করে সাদৃশ্যগত কোনো মিল খুঁজে পাওয়া যায় না।

Collage By Rumor Scanner

মূলত, ২০১৬ সালে মিয়ামি মিচ থেকে মার্কিন অভিনেত্রী Katie Cassidy এর ধারণকৃত বিকিনি পরিহিত ছবিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্রবধূ ক্রিস্টিন ওয়াজেদের ছবি দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

সুতরাং, বিকিনি পরিহিত মার্কিন অভিনেত্রীর ছবিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্রবধূ ক্রিস্টিন ওয়াজেদের ছবি দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

বিএনপি’র সমালোচনা করে দেওয়া ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য বিকৃত করে প্রচার

সম্প্রতি ‘বিএনপির কাছে ক্ষমতা মানেই উন্নয়ন: ওবায়দুল কাদের’ শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে প্রচার করা হচ্ছে। 

যেখানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘খালেদা জিয়ার সাথে শেখ হাসিনার পার্থক্য। বিএনপির কাছে ক্ষমতার মানে মানুষের উন্নয়ন। মানুষকে ভালোবাসা। মানুষের পাশে থাকা। বিপদে-আপদে দুঃখে-দারিদ্র্যে অসহায় মানুষের পাশে থাকা। আর আওয়ামীলীগের কাছে, শেখ হাসিনার কাছে ক্ষমতার মানে হলো পকেটের উন্নয়ন, অর্থ পাচার দুর্নীতি ভোট চুরি। লজ্জা শরম থাকলে আগুন শব্দটি অন্যের ঘাড়ে চাপাত না।’

ফেসবুকে প্রচারিত এরূপ পোস্ট দেখুন এখানে(আর্কাইভ)।

টিকটকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ‘বিএনপির কাছে ক্ষমতা মানেই উন্নয়ন’ শীর্ষক কোনো বক্তব্য দেননি বরং তার বক্তব্যের একাধিক খণ্ডাংশ জোড়া লাগিয়ে বিকৃত করে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় উক্ত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটির সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে বেসরকারি সংবাদ ভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল নিউজ২৪ এর ফেসবুক পেজে ২০২৩ সালের ১৮ এপ্রিল “বিএনপির কাছে ক্ষমতা মানে পকেটের উন্নয়ন: ওবায়দুল কাদের” শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

ভিডিওতে ২ মিনিট ১ সেকেন্ড থেকে ২ মিনিট ৩১ সেকেন্ড পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে বলতে শোনা যায়, “বিএনপির কাছে ক্ষমতার মানে হলো পকেটের উন্নয়ন, অর্থ পাচার দুর্নীতি ভোট চুরি। আর আওয়ামীলীগের কাছে, শেখ হাসিনার কাছে ক্ষমতার মানে মানুষের উন্নয়ন। মানুষকে ভালোবাসা। মানুষের পাশে থাকা। বিপদে-আপদে দুঃখে-দারিদ্র্যে অসহায় মানুষের পাশে থাকা।”

ভিডিওতে ২ মিনিট ৩২ সেকেন্ড থেকে পরবর্তী সময়ে ওবায়দুল কাদের বলেন,  “রমজান মাসজুড়ে মির্জা ফখরুল সামর্থবানদের নিয়ে ইফতার পার্টি খায়। আর আওয়ামী লীগ ইফতার বিতরণ করেছে। বিএনপির সাথে আওয়ামী লীগের পার্থক্য এটা। এটাই খালেদা জিয়ার সঙ্গে শেখ হাসিনার পার্থক্য।”

অর্থাৎ, ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের একাধিক খণ্ডিত অংশকে কেটে বিকৃতের মাধ্যমে আলোচিত ৪২ সেকেন্ডের ভিডিও ক্লিপটি তৈরি করা হয়েছে।

সেদিনের ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারিত ভিডিও দেখুন সময় টিভি, এস এ টিভি। একই ঘটনায় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন ইত্তেফাক, ঢাকা টাইমস

সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে জানা যায়, গত ১৮ এপ্রিল রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ উপকমিটি আয়োজিত ঈদুল ফিতর উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে সুবিধাবঞ্চিত মানুষের মাঝে ঈদ উপহার বিতরণ অনুষ্ঠানে বক্তব্য প্রদানকালে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।

Source: Dhaka Times 24

মূলত, গত ১৮ এপ্রিল বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে সুবিধাবঞ্চিত মানুষের মাঝে ঈদ উপহার বিতরণ অনুষ্ঠানে বক্তব্য প্রদানকালে

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বিএনপিকে সমালোচনা করেন। ঐ অনুষ্ঠানে দেওয়া ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য থেকে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় বক্তব্যের ভিন্ন ভিন্ন অংশ কেটে বিকৃত করে ওবায়দুল কাদের ‘বিএনপির কাছে ক্ষমতা মানেই উন্নয়ন’ শীর্ষক বক্তব্য দিয়েছেন দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে প্রচার করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, পূর্বেও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যে ডিজিটাল প্রযুক্তির সাহায্যে বিকৃত করে উপস্থাপন করার বিষয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। 

সুতরাং, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের একটি বক্তব্যের ভিডিও থেকে নেওয়া একাধিক খণ্ডিত অংশকে জোড়া লাগিয়ে বিকৃত করে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় ‘বিএনপির কাছে ক্ষমতা মানেই উন্নয়ন’ শীর্ষক একটি বক্তব্যকে ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য দাবি করে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ভিন্ন ঘটনার ছবিকে আইপিএলে ধোনি সমর্থকদের ছবি দাবিতে প্রচার

সম্প্রতি হলুদ পোশাকে বিপুল সংখ্যক মানুষের রাস্তায় দাঁড়ানোর দুইটি ছবিকে মাহেন্দ্র সিং ধোনি এবং আইপিএলের চেন্নাই সুপার কিংস এর সমর্থকদের ছবি দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। 

ছবি ১

এই ছবি ব্যবহার করে উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ছবি ২

ধোনি এবং চেন্নাই সুপার কিংস এর সমার্থক দাবিতে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভাইরাল ছবিগুলো ধোনি বা চেন্নাই সুপার কিংস এর সমর্থকদের নয় বরং এগুলো ভিন্ন দেশের ভিন্ন ঘটনার পুরোনো ছবি।

ছবি যাচাই ১

অনুসন্ধানের শুরুতে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা CNN Travel এর ওয়েবসাইটে ২০১৭ সালের ০৪ আগস্ট প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে  প্রকাশিত একটি ছবির সাথে প্রথম ছবিটির ছবির মিল খুঁজে পাওয়া গেছে।

Screenshot: CNN Travel

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ছবিটি ইথিওপিয়ার রাজধানী আদ্দিস আবাবায় বাৎসরিক গ্রেট ইথিওপিয়ান রানের সময়ে ধারণকৃত। 

Screenshot Comparison by Rumor Scanner

ছবি যাচাই ২

রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে ক্রীড়া সংবাদমাধ্যম Marca এর ওয়েবসাইটে গত ২৭ মে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে  প্রকাশিত একটি ছবির সাথে দ্বিতীয় ছবিটির মিল খুঁজে পাওয়া গেছে।

Screenshot: Marca

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এটি স্পেনের ফুটবল ক্লাব Las Palmas এর সাফল্য উদযাপনের সময় সমর্থকদের ঢলের ছবি।

Screenshot Comparison  by Rumor Scanner

মূলত, গত ২৮ মে চেন্নাই সুপার কিংস বনাম গুজরাট টাইটান্স এর মধ্যকার আইপিএল ফাইনাল ম্যাচকে কেন্দ্র করে চেন্নাইয়ের অধিনায়ক মাহেন্দ্র সিং ধোনি এবং তার দল চেন্নাই সুপার কিংস এর সমর্থকদের রাস্তায় ঢল নামার দাবিতে দুইটি ছবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ছবিগুলো উক্ত ঘটনা বা সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং ইথিওপিয়া এবং স্পেনে ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার সময় তোলা  দুইটি ছবিকে সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, চেন্নাই সুপার কিংস এবং গুজরাট টাইটান্স এর মধ্যকার ফাইনাল ম্যাচটি বৃষ্টির কারণে ২৮ মে না হওয়ায় রিজার্ভ ডে’তে গড়িয়ে ২৯ মে অনুষ্ঠিত হয়।

উল্লেখ্য, পূর্বেও ভিন্ন ঘটনার ছবিকে সাম্প্রতিক দাবিতে ছবি প্রচার করা হলে সে বিষয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। 

সুতরাং, ইথিওপিয়া এবং স্পেনের ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার ছবিকে ধোনি এবং চেন্নাই সুপার কিংস এর সমর্থকদের ছবি দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র