Home Blog Page 569

চীনের টানেলের ভিডিওকে বাংলাদেশের বঙ্গবন্ধু টানেল দাবিতে প্রচার 

0

অন্তত গেল আগস্ট মাস থেকে পানির তলদেশে সুড়ঙ্গ সদৃশ একটি রাস্তার ভিডিওকে বাংলাদেশের চট্টগ্রামে উদ্বোধনের অপেক্ষায় থাকা কর্ণফুলী বা বঙ্গবন্ধু টানেল দাবি করে প্রচার হয়ে আসতে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

বঙ্গবন্ধু টানেল

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ভিডিওটি বাংলাদেশের কর্ণফুলী বা বঙ্গবন্ধু টানেলের নয় বরং চীনের দীয়ানচি টানেলের ভিডিওকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটির কিছু কী ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ইউটিউবে Reddy in China নামক একটি চ্যানেলে একই ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়, যেখানে বলা হয়, চীনে পানির তলদেশে একটি টানেলের ভিডিও এটি। 

Screenshot: Youtube

ইউটিউবে Knowledge World নামে আরেকটি চ্যানেলেও একই টানেলের ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিও থেকে জানা যাচ্ছে, চীনের এই টানেলটির অবস্থান কুনমিনের দীয়ানচী (Dianchi) হ্রদের তলদেশে। টানেলটির নাম কাওহাই আন্ডারগ্রাউন্ড টানেল।

Screenshot: Youtube 

টানেলের নামের সূত্র ধরে অনুসন্ধান করে চীনের সংবাদমাধ্যম ‘People’s Daily’-এর অফিশিয়াল ফেসবুক পেজেও ২০২১ সালে একই টানেলের আরেকটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওটির ক্যাপশনেও এটিকে দক্ষিণ-পশ্চিম চীনের ইউনান প্রদেশের দিয়ানচি হ্রদের তলদেশে নির্মিত কাওহাই টানেলের ভিডিও বলে উল্লেখ করা হয়।  

Screenshot: Facebook

গুগল ম্যাপ থেকেও একই তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।  

Screenshot: Google Maps

অর্থাৎ, এটা নিশ্চিত যে, প্রচারিত ভিডিওটি বঙ্গবন্ধু টানেলের নয়।

তাছাড়া, বঙ্গবন্ধু টানেলের প্রবেশমুখসহ এর ডিজাইনের সাথে আলোচিত ভিডিওতে দেখানো টানেলের কোনো মিল নেই৷ বঙ্গবন্ধু টানেলের একটি ভিডিও দেখুন এখানে। 

Screenshot: Youtube

মূলত, সাম্প্রতিক সময়ে পানির তলদেশে সুড়ঙ্গ সদৃশ একটি রাস্তার ভিডিওকে বাংলাদেশের চট্টগ্রামে উদ্বোধনের অপেক্ষায় থাকা কর্ণফুলী বা বঙ্গবন্ধু টানেল দাবি করে প্রচার করা হয়। কিন্তু রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত ভিডিওটি বঙ্গবন্ধু টানেলের নয়৷ চীনের ইউনান প্রদেশের কাওহাই টানেলের ভিডিওকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

প্রসঙ্গত, পূর্বে চীনের রাস্তার ছবিকে বাংলাদেশের মিঠামইনের রাস্তা দাবিতে প্রচার করা হলে এ বিষয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার। 

সুতরাং, চীনের কাওহাই টানেলের ভিডিওকে বঙ্গবন্ধু টানেল দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

শেখ হাসিনার বাসভবন কিংবা সাভারের হামিম গ্রুপের ভবনের নয়, এই ভিডিওটি মিশরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার

সম্প্রতি, ‘শেখ হাসিনার বাড়ি ও গদিতে আগুন’ এবং বেতন বৃদ্ধির অজুহাতে সাভারে হামিম গ্রুপে আগুন জালিযে দিয়েছে গার্মেন্টস শ্রমিকরা পৃথক দুই দাবিতে একটি ভিডিও শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটকে প্রচার করা হয়েছে।

শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গদিতে আগুন দাবিতে টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

সাভারে হামিম গ্রুপের ভবনে গার্মেন্টস শ্রমিকরা আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে দাবিতে টিকটকে প্রচারিত একটি ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

যা দাবি করা হচ্ছে

দুটি ভিন্ন দাবিতে একই ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।

দাবি-১

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাসভবন/গদিতে আগুন

দাবি-২

বেতন বৃদ্ধির অজুহাতে সাভারে হামিম গ্রুপে আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে গার্মেন্টস শ্রমিকরা

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, এই ভিডিওটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাসভবনে কিংবা সাভারে হামিম গ্রুপের ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার নয় বরং এটি গত ০২ অক্টোবর মিশরের ইসমাইলিয়া শহরে পুলিশ সদর দপ্তরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ধারণকৃত ভিডিও। প্রকৃতপক্ষে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন কিংবা সাম্প্রতিক সময়ে সাভারে হামিম গ্রুপের ভবনে অগ্নিকাণ্ডের কোনো ঘটনা ঘটেনি। 

অনুসন্ধানের শুরুতে রির্ভাস ইমেস সার্চের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম The Guardian এর ওয়েবসােইটে গত ০২ অক্টোবর ‘Fire breaks out at police premises in Egypt’s Ismailia – video’ শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিওটির সাথে আলোচিত ভিডিওটির মিল পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner

গার্ডিয়ানে প্রকাশিত ভিডিওটির বিস্তারিত বিবরণী থেকে জানা যায়, এটি গত ০২ অক্টোবর মিশরের সুয়েজ খালের তীরবর্তী শহর ইসমাইলিয়ায় পুলিশ সদর দপ্তরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ধারণকৃত  ভিডিও।

পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম REUTERS এর ওয়েবসাইটে একই দিনে ‘Fire engulfs police facility in Egypt’s Ismailia, 25 hurt’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। এই প্রতিবেদনে প্রচারিত ভিডিওটির সাথেও আলোচিত ভিডিওটির মিল পাওয়া যায়।

Screenshot: REUTERS 

এই প্রতিবেদন থেকেও আলোচিত ভিডিওটির বিষয়ে একই তথ্য জানা যায়।

অর্থাৎ, উপরোক্ত বিষয়গুলো পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, আলোচিত ভিডিওটি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে কিংবা সাভারে হামিম গ্রুপের ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার নয়।

পাশাপাশি, মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো সূত্রে এখন পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে বা সাম্প্রতিক সময়ে সাভারে হামিম গ্রুপের ভবনে অগ্নিকাণ্ডের বিষয়ে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মূলত, গত ০২ অক্টোবর মিশরের ইসমাইলিয়া শহরে পুলিশ সদর দপ্তরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে সেই অগ্নিকাণ্ডের ভিডিও’র একটি দৃশ্য সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাসভবনে এবং সাভারে হামিম গ্রুপের ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার ভিডিও দাবিতে শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটকে প্রচার করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন কিংবা সাম্প্রতিক সময়ে সাভারে হামিম গ্রুপে অগ্নিকাণ্ডের কোনো ঘটনা ঘটেনি।

উল্লেখ্য, পূর্বেও একই ভিডিও বাংলাদেশের সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের দাবিতে প্রচার করা হলে সেসময় বিষয়টি মিথ্যা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, মিশরে পুলিশ সদর দপ্তরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার ভিডিওকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাসভবন এবং সাভারে হামিম গ্রুপের ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ভিডিও দাবিতে টিকটকে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

তামিম ইকবালকে জড়িয়ে ডিবিসি নিউজের ফটোকার্ড নকল করে প্রচার 

0

সম্প্রতি, “বিশ্বের একমাত্র ওপেনার যিনি বিশ্বকাপে ২৯ ইনিংস ব্যাট করে ৫০+ রান করেছেন চার বার” শীর্ষক তথ্য বা শিরোনামে বাংলাদেশ জাতীয় দলের ওপেনার তামিম ইকবালের ছবিসহ মূলধারার গণমাধ্যম ডিবিসি নিউজের ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

তামিম

ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, “বিশ্বের একমাত্র ওপেনার যিনি বিশ্বকাপে ২৯ ইনিংস ব্যাট করে ৫০+ রান করেছেন চার বার” শীর্ষক তথ্য বা শিরোনামে ডিবিসি নিউজ কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি বরং ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে উক্ত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। এতে দেখা যায়, আলোচিত ফটোকার্ড থাকা টেক্সটের ফন্ট ডিজাইনের সাথে ডিবিসি নিউজ কর্তৃক প্রকাশিত ফটোকার্ডের টেক্সট ফন্ট ডিজাইনের সুস্পষ্ট পার্থক্য রয়েছে।

Comparison: Rumor Scanner 

ডিবিসি নিউজের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে সাম্প্রতিক সময়ে প্রচারিত ফটোকার্ডগুলো পর্যালোচনা করে উক্ত শিরোনাম বা তথ্য সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও ডিবিসি নিউজের ওয়েবসাইটেও উক্ত দাবিতে প্রচারিত কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি।

তবে গত ২৩ অক্টোবর “ক্রিকেট থেকে অবসরের প্রশ্নে মুখ খুললেন তামিম” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: DBC News

উক্ত ফটোকার্ডের সাথে আলোচিত ফটোকার্ডের ডিজাইনের অনেকাংশে মিল খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ফটোকার্ডে থাকা তামিমের ছবির উপর আলোচিত ফটোকার্ডে থাকা তামিমের ছবিটি বসানো হয়েছে। যা আলোচিত ফটোকার্ডের ব্যাকগ্রাউন্ড দেখে স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে। 

Comparison: Rumor Scanner

এছাড়া, আলোচিত বিষয়ে অনুসন্ধান চলাকালে আলোচিত ফটোকার্ডটি ভুয়া উল্লেখ করে ডিবিসি নিউজের ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট হতে দেখে রিউমর স্ক্যানার টিম।

Screenshot: DBC News Facebook Page 

ঐ পোস্টের কমেন্টে থাকা প্রতিবেদন বলা হয়, ডিবিসি নিউজ এমন কোনো ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি। ভাইরাল এই ফটোকার্ডটি ভুয়া। 

মূলত, বাংলাদেশ জাতীয় দলের ওপেনার তামিম ইকবাল ‘বিশ্বের একমাত্র ওপেনার যিনি বিশ্বকাপে ২৯ ইনিংস ব্যাট করে ৫০+ রান করেছেন চার বার’ শীর্ষক তথ্য বা শিরোনামে ডিবিসি নিউজের ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশ জাতীয় দলের ওপেনার তামিম ইকবালকে নিয়ে ডিবিসি নিউজ এমন কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি। প্রকৃতপক্ষে, গত ২৩ অক্টোবর “ক্রিকেট থেকে অবসরের প্রশ্নে মুখ খুললেন তামিম” শীর্ষক শিরোনামে ডিবিসি নিউজের অফিসিয়াল ফেসবুকে পেজে প্রকাশিত ফটোকার্ডকে ডিজিটাল প্রযুক্তি সহায়তায় বিকৃত করে উক্ত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে। 

উল্লেখ্য, পূর্বেও বাংলাদেশের ক্রিকেটার লিটন দাসকে নিয়ে ডিবিসি নিউজের ফটোকার্ড নকল করে ইন্টারনেটে ভুয়া তথ্য প্রচার করা হলে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিলো রিউমর স্ক্যানার। 

সুতরাং, ‘বিশ্বের একমাত্র ওপেনার যিনি বিশ্বকাপে ২৯ ইনিংস ব্যাট করে ৫০+ রান করেছেন চার বার’ শীর্ষক তথ্য বা শিরোনামে ডিবিসি নিউজের ফটোকার্ডের আদলে প্রচারিত ফটোকার্ডটি এডিটেড বা বিকৃত।

তথ্যসূত্র

শেখ হাসিনার বাড়িতে আগুন দাবিতে ভিন্ন ঘটনার পুরোনো ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি, ‘শেখ হাসিনার বাড়িতে আগুন’ শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটক এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

আগুন

টিকটকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।


ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, এই ভিডিওটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাসভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার নয় বরং এটি ২০১৯ সালে বনানীর বহুতল বানিজ্যিক ভবন এফআর টাওয়ারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ধারণকৃত ভিডিও।

অনুসন্ধানের শুরুতে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে দেশের মূলধারার গণমাধ্যম প্রথম আলো’র ইউটিউব চ্যানেলে ২০১৯ সালের ২৮ মার্চ ‘বনানীর আগুনে নিহত ৭ | 7 die in Dhaka high-rise building fire’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Prothom Alo YouTube 

ভিডিও’টির বিস্তারিত বিবরণী থেকে জানা যায়, এটি ২০১৯ সালের ২৮ মার্চ রাজধানীর বনানীর বহুতল বানিজ্যিক ভবন এফআর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার ভিডিও। এই ভিডিওটির সাথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাসভবনে অগ্নিকাণ্ডের দাবিতে প্রচারিত ভিডিও’টির হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner 

পরবর্তীতে কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে মূলধারার গণমাধ্যম ডেইলি স্টারের অনলাইন সংস্করণে ২০১৯ সালের ২৯ মার্চ ‘বনানীর আগুনে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৫,পরিবারের কাছে ২৪ মরদেহ হস্তান্তর’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকেও সেসময়ের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়।

Screenshot: The Daily Star

অর্থাৎ, উপরোক্ত বিষয়গুলো পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, আলোচিত ভিডিওটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাসভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার নয়।

পাশাপাশি, মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো সূত্রে সাম্প্রতিক সময়ে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে অগ্নিকাণ্ডের বিষয়ে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মূলত, ২০১৯ সালের ২৮ মার্চ বনানীর বহুতল বানিজ্যিক ভবন এফআর টাওয়ারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। সাম্প্রতিক সময়ে সেই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ধারণকৃত একটি ভিডিওকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাসভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার ভিডিও দাবি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাসভবনে অগ্নিকাণ্ডের কোনো ঘটনা ঘটেনি।

উল্লেখ্য, পূর্বেও ভিন্ন ঘটনার একটি ভিডিওকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাসভবন এবং হামিম গ্রুপের ভবনে অগ্নিকাণ্ডের দাবিতে প্রচার করা হলে সেসময় বিষয়টি মিথ্যা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, ২০১৯ সালে বনানীর এফআর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার ভিডিওকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাসভবনে অগ্নিকাণ্ডের ভিডিও দাবিতে ইন্টারনেট প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

শামা ওবায়েদের নামে একাধিক ভুয়া ফেসবুক পেজ থেকে ভুল তথ্যের ছড়াছড়ি

0

গত ২৮ আগস্ট শামা ওবায়েদ নামক একটি ফেসবুক পেজ (আর্কাইভ) থেকে করা একটি পোস্টে দাবি করা হয়, “৩১ সদস্য নিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠিত হতে যাচ্ছে এবং সরকার প্রধান হবেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।” 

শামা ওবায়েদের
Screenshot: Facebook 

শামা ওবায়েদ বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক। তার ছবি ব্যবহার করেই উক্ত পেজটি পরিচালিত হচ্ছে। রিউমর স্ক্যানার টিম পেজটির ট্রান্সপারেন্সি সেকশন পর্যবেক্ষণ করে দেখেছে, পেজটি ২০১৮ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর যখন চালু করা হয়েছিল, তখনও একই নামই ছিল। অর্থাৎ, নাম বদল করা হয়নি। পেজটি বাংলাদেশ থেকে ১১ জন এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে একজন পরিচালনা করছেন। 

পেজটির About সেকশনে দাবি করা হয়েছে, এটি অফিশিয়াল পেজ। তবে পেজটির ইউজার নেমে শামা ওবায়েদের নামের ভুল বানান (samaobud) লক্ষ্য করেছি আমরা। 

 Screenshot: Facebook

আলোচিত সেই পোস্ট প্রসঙ্গে ফেরা যাক। তত্ত্বাবধায়ক সরকার এবং ড. মুহাম্মদ ইউনূস সম্পর্কিত সেই পোস্টটির বরাতে সেসময় দেশের একাধিক গণমাধ্যমে (,,) প্রকাশিত খবরে বলা হয়, পেজটি শামা ওবায়েদের নয়। শামা ওবায়েদের বক্তব্যের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনগুলোতে উল্লেখ করা হয়, “এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। এটি আমার আইডি নয়। ফেইক আইডি থেকে মিথ্যা এবং বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হচ্ছে।”

ড. মুহাম্মদ ইউনূস তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হচ্ছেন শীর্ষক দাবিটি এই ঘটনার প্রায় এক সপ্তাহ আগে থেকেই ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছিল। এ বিষয়টি অনুসন্ধান করে গত ২৬ আগস্ট রিউমর স্ক্যানার একটি ফ্যাক্টচেক প্রকাশ করেছিল। পড়ুন এখানে।

এই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই গত ০৫ সেপ্টেম্বর একই পেজ থেকে প্রকাশিত একটি পোস্টে (আর্কাইভ) জাতীয় দৈনিক কালবেলার সূত্রে দাবি করা হয়, “তত্ত্বাবধায়ক সরকার ঘোষণার সাথে সাথে প্রায় ৭০-৮০ লক্ষ প্রবাসী দেশে আসতে প্রস্তুত।” 

Screenshot: Facebook 

কিন্তু রিউমর স্ক্যানার টিম অনুসন্ধানে দেখেছে, কালবেলা এমন কোনো খবর প্রকাশ করেনি। পরবর্তীতে এ বিষয়ে আমাদের প্রকাশিত ফ্যাক্টচেক দেখুন এখানে। 

গত ২৫ সেপ্টেম্বর একই পেজে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতার বিষয়ে প্রকাশিত ভুল ছবির বিষয়ে করা পোস্টের (আর্কাইভ) ফ্যাক্টচেক (২০২১ সালে প্রকাশিত) দেখুন এখানে। 

Screenshot: Facebook

মধ্য সেপ্টেম্বরে শামা ওবায়েদের নাম ও ছবি ব্যবহার করে পরিচালিত আরেকটি পেজের (আর্কাইভ) একটি পোস্টে (আর্কাইভ) দাবি করা হয়, “বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মেয়ে জাইমা রহমান লন্ডনের পলিটিক্যাল সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১ম স্থান অর্জন করেছেন।” এই পেজটি চলতি বছরের ১৫ মে খোলা হয়েছে।

Screenshot: Facebook

আমাদের যখন নজরে আসে পোস্টটি, তখন তাতে প্রায় ৪৭ হাজার রিয়েক্টসহ দুই হাজারের অধিক কমেন্ট এবং ১৪০০ এর বেশি শেয়ার হয়েছে।  অর্থাৎ, বিশাল সংখ্যক মানুষ এই পোস্টের মাধ্যমে বিষয়টি জেনেছেন। 

কিন্তু রিউমর স্ক্যানার টিম ২০২১ সাল থেকেই এই দাবিটি প্রচার হয়ে আসতে দেখলে সে সময়ই অনুসন্ধান করে জানায়, জাইমা রহমান নামে পরিচালিত একটি ভুয়া ফেসবুক পেজ থেকে কোন তথ্যসূত্র ছাড়াই এই দাবিটি প্রচার করা হয়, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। এ সংক্রান্ত রিউমর স্ক্যানারের ফ্যাক্টচেক দেখুন এখানে। 

রিউমর স্ক্যানার টিম ফেসবুকে বাংলা এবং ইংরেজিতে শামা ওবায়েদ / Shama Obaed লিখে সার্চ করে উপরোক্ত দুইটি ছাড়াও আরও অন্তত অর্ধশতাধিক পেজের সন্ধান পেয়েছে। 

Screenshot: Facebook

তবে এর মধ্যে অন্তত চারটি পেজের About সেকশনে পেজগুলো অফিশিয়াল বলে দাবি করা হয়েছে। পেজগুলো দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

এর মধ্যে প্রথম চারটি পেজের আগে ভিন্ন নাম ছিল, পরে শামা ওবায়েদ নাম রাখা হয়েছে। চতুর্থটির নাম পরিবর্তন না করা হলেও এর ফলোয়ার সংখ্যা এই মুহূর্তে ৩২০০ এর বেশি। 

অফিশিয়াল ছাড়াও অন্তত দুইটি পেজের (, ) সন্ধান পাওয়া গেছে, যারা নিজেদের অফিশিয়াল দাবি না করলেও এদের ফলোয়ার সংখ্যা দেখে যে কেউ অফিশিয়াল ভেবে নিয়ে বিভ্রান্ত হওয়ার সুযোগ রয়েছে। এর মধ্যে একটির (আর্কাইভ) ফলোয়ার সংখ্যা ৩ লাখ ১৯ হাজারের বেশি, যা শামা ওবায়েদের নামে চালু থাকা অন্য সকল পেজের ফলোয়ার সংখ্যার চেয়ে বেশি। এই পেজটি ২০১৫ সালের ২৬ জুন বর্তমান নামেই (শামা ওবায়েদ) খোলা হয়। এরপর আর নাম পরিবর্তন হয়নি। বাংলাদেশ থেকে চারজন বর্তমানে পেজটি পরিচালনা করছেন। 

Screenshot: Facebook

অপর পেজটির (আর্কাইভ) ফলোয়ার সংখ্যা ৮৬ হাজারের বেশি। ২০১৭ সালের ১২ জানুয়ারি চালুর পর এই পেজটিরও নাম আর পরিবর্তন হয়নি। পেজটি বাংলাদেশ ছাড়াও আরও দুইটি দেশ থেকে পরিচালিত হচ্ছে। 

Screenshot: Facebook

এই দুই পেজ ছাড়াও আরো একটি পেজের (আর্কাইভ) সন্ধান পেয়েছে রিউমর স্ক্যানার টিম৷ ২০১৪ সালের ০৯ ডিসেম্বর চালু হওয়া পেজটি বর্তমানে ভারত থেকে পরিচালিত হচ্ছে। তাছাড়া, এই পেজের About সেকশনেও পেজটিকে শামা ওবায়েদের অফিশিয়াল পেজ বলে দাবি করা হয়েছে। ২ লাখ ৬৪ হাজার ফলোয়ার সংখ্যার পেজটি থেকে গত ২২ এপ্রিলের পর আর কোনো পোস্ট করা হয়নি।

Screenshot: Facebook

রিউমর স্ক্যানার টিম সার্বিক বিষয়ে জানতে শামা ওবায়েদের সাথে যোগাযোগ করেছিল। তিনি জানালেন, বর্তমানে ভারত থেকে পরিচালিত হওয়া পেজটি তার অফিশিয়াল পেজই ছিল। তবে সেটা হ্যাক হওয়ায় এখন আর তার নিয়ন্ত্রণে নেই। 

শামা ওবায়েদ বলছেন, বর্তমানে Shama Obaed নামে তার একটি অফিশিয়াল পেজ (আর্কাইভ) রয়েছে। বাকি সকল পেজই ভুয়া বা তার নিয়ন্ত্রণাধীন নয়। 

Screenshot: Facebook

এই পেজটির ফলোয়ার সংখ্যা বর্তমানে ৪৭ হাজারের কিছু বেশি। ২০১২ সালে যখন পেজটি চালু করা হয় তখন অবশ্য এর নাম শামা ওবায়েদের নামে ছিল না, নাম ছিল Banglanews24.com। গেল বছরের (২০২২) ৩০ ডিসেম্বর পেজটির নাম বদলে বর্তমান নামটি রাখা হয়। পেজটি বর্তমানে ০৭ জন পরিচালনা করছেন। 

শামা ওবায়েদ রিউমর স্ক্যানারকে বলেছেন, তার নাম ও ছবি ব্যবহার করে ভুয়া অ্যাকাউন্ট চালু থাকা এবং সেসব অ্যাকাউন্ট থেকে ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে তিনি এ বিষয়ে রাজধানীর বনানী থানায় একটি জিডি করেছেন। জিডির একটি কপি তিনি রিউমর স্ক্যানারের কাছেও পাঠিয়েছেন।

জিডিতে তিনি উল্লেখ করেন, তার www.shamaobaed.com বাদে কোন পেজ নেই।

Source: Shama Obaed 

কিন্তু লিংকটি কোনো ফেসবুক পেজের নয়, বরং একটি ওয়েবসাইটের। এই ওয়েবসাইটটি এখন সচল নেই। তবে ইন্টারনেট আর্কাইভে ২০১৬ সালের ২৭ অক্টোবর তারিখে পাওয়া সর্বশেষ সচল সংস্করণ থেকে দেখা যায়, ওয়েবসাইটটিতে সে সময় নিয়মিত শামা ওবায়েদসহ বিএনপির বিভিন্ন কার্যক্রমের বিষয়ে খবর প্রকাশিত হত। 

Screenshot: Internet Archive 

শামা ওবায়েদ রিউমর স্ক্যানারকে বলেছেন, উপরোল্লিখিত ফেসবুক পেজ ছাড়াও তার ব্যক্তিগত একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট রয়েছে, এটির লিংক এখানে (আর্কাইভ)। 

আমরা এই অ্যাকাউন্টের বাইরে আরো অন্তত বিশের অধিক অ্যাকাউন্ট পেয়েছি যেগুলো শামা ওবায়েদের নাম ও ছবি ব্যবহার করে চালু রয়েছে। 

Screenshot: Facebook

এর মধ্যে একটি অ্যাকাউন্টে (আর্কাইভ) মূল অ্যাকাউন্টের প্রোফাইল পিকচার এবং কাভার ফটো ব্যবহার করা হয়েছে, যা দেখে এটিকেও মূল অ্যাকাউন্ট ভেবে বিভ্রান্ত হওয়ার সুযোগ রয়েছে।

সুতরাং, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদের নাম ও ছবি ব্যবহার করে একাধিক ভুয়া ফেসবুক পেজ থেকে গেল কয়েক মাসে একাধিক ভুল তথ্য প্রচার করা হয়েছে। এ বিষয়ে গত আগস্টে শামা ওবায়েদ থানায় জিডিও করেছেন। রিউমর স্ক্যানারের কাছে তিনি বলেছেন, তার নিয়ন্ত্রণাধীন বর্তমানে একটি পেজ এবং একটি ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট রয়েছে। তাছাড়া, তার একটি ওয়েবসাইট থাকলেও সেটি সচল নেই এখন। 

তথ্যসূত্র

আমেরিকায় ৭ লাখ খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীর হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করার দাবিটি মিথ্যা

0

সম্প্রতি, ‘আমেরিকায় ৭ লাখ খ্রিস্টান হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করেছে’ শীর্ষক দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

এই দাবিতে বাংলাদেশে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

হিন্দু ধর্ম গ্রহণ

ওপার বাংলায় প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আমেরিকায় ৭ লাখ খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীর হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করার দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে ২০২২ সালে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে অনুষ্ঠিত একটি রথযাত্রার ভিডিওকে কেন্দ্র করে কোনো তথ্যসূত্র ছাড়াই উক্ত দাবিটি ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে। 

দাবিটি যেভাবে ছড়ালো

দাবিটি নিয়ে অনুসন্ধানে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে মাইক্রো ব্লগিং সাইট এক্সের ( সাবেক টুইটারে) हम लोग We The People নামক একটি হ্যান্ডল থেকে গত ৯ অক্টোবর ‘अमेरिका में पिछले एक दशक के दौरान 7,00,000 लोगों ने Xistianity छोड़कर सनातन धर्म अपनाया है। (During the last decade in America, 7,00,000 people have left Christianity and adopted Sanatan Dharma.)’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত ২৪ সেকেন্ডের ভিডিওসহ একটি টুইট খুঁজে পাওয়া যায়।

ভিডিওটিতে উপস্থিত মানুষদেরকে হিন্দু ধর্মীয় বিভিন্ন শ্লোক পাঠ করতে শোনা যায়। তবে টুইটটিতে ৭ লাখ খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীর হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করার দাবিকৃত তথ্যের কোনো সূত্র খুঁজে পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে ভিডিওটি নিয়ে অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম ইউটিউবে Naik78 নামের একটি চ্যানেলে ২০২২ সালের ৭ সেপ্টেম্বর ‘London Rathayatra 2022 | 4k UHD’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওটির বিস্তারিত বিবরণী থেকে জানা যায়, এটি লন্ডনে ২০২২ সালের রথযাত্রার ভিডিও। 

এই ভিডিওটির সাথে যুক্তরাষ্ট্রে ৭ লাখ খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীর হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করার দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়। এখানে দৃশ্যমান হোটেলটির নাম  Haymarket Hotel। 

Video Comparison: Rumor Scanner 

এ পর্যন্ত অনুসন্ধানে প্রতীয়মান হয়, দাবিকৃত তথ্য ও ভিডিওটি অপ্রাসঙ্গিক। অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রে ৭ লাখ খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীর হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করার দাবিতে প্রচারিত তথ্যটির সাথে শেয়ারকৃত ভিডিওটি ভিন্ন ঘটনার, ২০২২ সালে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে অনুষ্ঠিত রথযাত্রার। 

যুক্তরাষ্ট্রে হিন্দু জনসংখ্যার সংখ্যা 

যুক্তরাষ্ট্রে ৭ লাখ খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীর হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করার দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি নিয়ে অনুসন্ধানে নির্ভরযোগ্য সূত্রে দাবিটির পক্ষে কোনো তথ্যসূত্র খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক জনমত জরিপ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান পিউ রিসার্চ সেন্টারের ২০১৫ সালের ২ এপ্রিল ‘THE FUTURE OF WORLD RELIGIONS: POPULATION GROWTH PROJECTIONS, 2010-2050’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন অনুসারে, আমেরিকায় ২০০৭ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীর সংখ্যা ১০ শতাংশ কমেছে। খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীর সংখ্যা ২০০৭ সালে ছিল ৭৮.৪ শতাংশ, যা ২০১৪ সালে এসে ৭০.৬ শতাংশে নেমে আসে। তবে একই সময়ে দেশটিতে মুসলিম ও হিন্দু জনসংখ্যা দ্বিগুন হয়েছে। 

একই প্রতিষ্ঠানের ২০১৫ সালের ১২ মে ‘America’s Changing Religious Landscape’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০০৭ সাল থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে হিন্দু জনসংখ্যা শূণ্য দশমিক চার থেকে শূণ্য দশমিক সাতে বৃদ্ধি পেয়েছে। একই সময়ে মুসলিমদের সংখ্যা  শূণ্য দশমিক চার থেকে শূণ্য দশমিক নয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে হিন্দু ধর্ম যুক্তরাষ্ট্রের চতুর্থ বৃহৎ ধর্মের জায়গা পেয়েছে।

কিন্তু এই সমীক্ষা অনুযায়ী, আমেরিকায় হিন্দু জনসংখ্যার অধিকাংশই অভিবাসী। এর মধ্যে ৯১ শতাংশই এশিয়ান বংশোদ্ভূত। অপরদিকে ২০০৭ সাল থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে দেশটিতে এমন লোকের সংখ্যা বেড়েছে, যারা কোনো ধর্মের অনুসারী নয়। এই সময়ের মধ্যে তাদের সংখ্যা ১ দশমিক ৯ কোটি বেড়ে ৫ দশমিক ৬ কোটি হয়েছে।

পিউ রিসার্চ সেন্টারের গবেষণায় আরও উঠে আসে যে, আমেরিকায় হিন্দুদের জনসংখ্যা আগামী দিনে বাড়বে। ২০১০ সালে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী হিন্দুদের শতাংশ ছিল বিশ্বের হিন্দু জনসংখ্যার  শূণ্য দশমিক ছয় শতাংশ এবং এই সংখ্যা ২০৫০ সালের মধ্যে এক দশমিক দুই শতাংশ  বৃদ্ধি পাবে।

কিন্তু এই প্রতিবেদনে এমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি যে আমেরিকায় মানুষ খ্রিস্টান ধর্ম ছেড়ে হিন্দু ধর্মে ধর্মান্তরিত হচ্ছে। 

তবে এবারই প্রথম নয়, এর আগে ২০১৬ সালে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নেতা প্রবীণ তোগাদিয়াও দাবি করেছিলেন, বিশ্বব্যাপী সাড়ে সাত লক্ষ মুসলমান এবং খ্রিস্টান হিন্দু ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়েছে।  যা সে সময়ে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। কিন্তু এই দাবির পক্ষে তিনি কোনো প্রমাণ দেননি। 

তার এ দাবি নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত কিছু প্রতিবেদন দেখুন 

এ পর্যন্ত অনুসন্ধানে প্রতীয়মান হয়, কোনো ধরনের নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই যুক্তরাষ্ট্রে ৭ লাখ খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করেছেন দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে। এছাড়া অনুরূপ দাবি কেবল স্থান পরিবর্তন করে এর আগে ২০১৬ সালে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নেতা প্রবীণ তোগাদিয়াও করেছিলেন।  তবে সে সময়ও তিনি কোনো প্রমাণ দেননি।

মূলত, সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে ৭ লাখ খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করেছেন দাবিতে একটি তথ্য প্রচার করা হচ্ছে। তবে দাবিটি নিয়ে অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রথমে একটি ভিডিও শেয়ারের মাধ্যমে ও পরবর্তীতে কেবল লিখিত রূপে দাবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এর মধ্যে ভিডিওটি ২০২২ সালে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে অনুষ্ঠিত একটি রথযাত্রার এবং উভয়ক্ষেত্রেই দাবিকৃত তথ্যটির কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্র নেই।

সুতরাং,  যুক্তরাষ্ট্রে ৭ লাখ খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করার দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

প্রথম আলো’র ফটোকার্ড বিকৃত করে মির্জা ফখরুলের নামে ভুয়া মন্তব্য প্রচার

সম্প্রতি, ‘২৮ অক্টোবর নেতা-কর্মীরা ঢাকায় না এসে নিজ জেলায় সমাবেশে অংশগ্রহন করুন’ শীর্ষক মন্তব্যকে বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মন্তব্য দাবিতে দেশের মূলধারার গণমাধ্যম প্রথম আলো’র ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

মির্জা ফখরুল

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ) এবং পোস্ট (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ‘২৮ অক্টোবর নেতা-কর্মীরা ঢাকায় না এসে নিজ জেলায় সমাবেশে অংশগ্রহন করুন’ শীর্ষক কোনো মন্তব্য করেননি এবং প্রথম আলোও উক্ত তথ্য সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি বরং আলোচিত এই ফটোকার্ডটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে প্রথম আলো’র ফটোকার্ডের ডিজাইন সম্বলিত ছবিটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। এতে এই সংবাদটি প্রচারের তারিখ হিসেবে ২৩ অক্টোবরের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

Screenshot: Facebook Claim Post

দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে ফটোকার্ডটিতে থাকা লোগো ও তারিখের সূত্র ধরে প্রথম আলো’র ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে গত ২৩ অক্টোবর বা তার আগে পরে উক্ত শিরোনাম বা তথ্য সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া, প্রথম আলো’র ওয়েবসাইট, ইউটিউব চ্যানেল বা অন্যকোনো গণমাধ্যমেও উক্ত দাবির বিষয়ে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

তবে, গত ২৩ অক্টোবর প্রথম আলো’র ফেসবুক পেজে ‘২৮ অক্টোবর নিরাপত্তার ‘ঘাটতি’ দেখা দিলেই শক্তি প্রয়োগ করবে পুলিশ’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ফটোকার্ডের বিট এবং তারিখের সাথে আলোচিত ফটোকার্ডটির বিট এবং তারিখের হুবহু মিল খুজে পাওয়া যায়। উভয় ফটোকার্ডে-ই বিটের স্থানে বাংলাদেশ এবং তারিখের স্থানে ২৩ অক্টোবর দেখতে পাওয়া যায়। উক্ত ফটোকার্ড ব্যতীত প্রথম আলোর অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে সেদিন বাংলাদেশ বিটে আর কোনো ফটোকার্ড প্রচার করা হয়নি। ধারণা করা যায়, এই ফটোকার্ডটি এডিট করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে। তাছাড়া, আলোচিত ফটোকার্ডটির টেক্সট ফন্টের সাথে প্রথম আলো’র ফেসবুক পেজে প্রচারিত অন্যান্য ফটোকার্ডের টেক্সট ফন্টের ভিন্নতা রয়েছে।

Photocard Comparison by Rumor Scanner 

পরবর্তী অনুসন্ধানে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর উক্ত মন্তব্যটি করেছেন কিনা জানতে একাধিক প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমেও এমন কোনো তথ্যের সন্ধানে পাওয়া যায়নি। তবে দৈনিক প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে গত ২৩ অক্টোবর ‘হুঁশিয়ারি, বাধা উপেক্ষা করেই ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশের প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুজে পাওয়া যায়।

Screenshot: ProthomAlo

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে আন্দোলনের চূড়ান্ত ধাপে এই মহাসমাবেশ থেকে মহাযাত্রা শুরুর কথা বলেছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সেই প্রেক্ষাপটে মহাসমাবেশ থেকেই বিএনপি ঢাকার রাজপথে বসে পড়বে কি না, এ ধরনের নানা আলোচনা চলছে। গতকাল দলের এক যৌথসভার পর সাংবাদিকদের কাছে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অবশ্য বলেছেন, ‘২৮ অক্টোবরের সমাবেশ কেন্দ্র করে দলের নেতা-কর্মীদের ঢাকায় এসে বসে পড়তে বলা হয়নি। আমরা বলেছি, ২৮ তারিখে কর্মসূচির পরে যে যার জায়গায় চলে যাবে এবং পরবর্তী কর্মসূচির জন্য তারা অপেক্ষা করবে।’ দলটির একাধিক নেতা জানিয়েছেন, পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণার মধ্য দিয়ে ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশ শেষ করা হবে, এমন পরিকল্পনা নিয়েই তাঁরা এগোচ্ছেন।

প্রতিবেদন থেকে আরও জানা যায়,  দলটির কেন্দ্র থেকে এই বার্তা দেওয়া হয়েছে যেকোনো পরিস্থিতিতে মহাসমাবেশে এসে হাজির হতে হবে। এছাড়াও ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশে কেবল যুবদলেরই পাঁচ লাখ নেতা-কর্মীকে হাজির করানোর লক্ষ্য নিয়ে তাঁরা কাজ করছেন জাতীয়তাবাদী যুবদলের শীর্ষ নেতারা।

এছাড়াও পরবর্তীতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর উক্ত মন্তব্যটি করেছেন কিনা জানতে চেয়ে বিএনপি চেয়ারপার্সনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবিরের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি রিউমর স্ক্যানারকে জানান, “মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন কোনো মন্তব্য করেননি।”

অর্থাৎ, ‘২৮ অক্টোবর নেতা-কর্মীরা ঢাকায় না এসে নিজ জেলায় সমাবেশে অংশগ্রহন করুন’ শীর্ষক কোনো মন্তব্য মির্জা ফখরুল ইসলাম করেননি।

মূলত, সরকারের পদত্যাগ, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও বেগম খালেদা জিয়ার স্থায়ী মুক্তির দাবিতে গত ১৮ অক্টোবর জনসমাবেশ করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। উক্ত সমাবেশ থেকে সরকারকে পদত্যাগ করতে ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশ পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়া হয়। এই সময়ের মধ্যে সরকার দাবি না মানলে মহাসমাবেশ থেকে আরো কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার কথাও জানানো হয়। এছাড়াও ‍উক্ত মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে ব্যাপক জনসমাগমের প্রস্তুতিও নিচ্ছে দলটি।  যাকে কেন্দ্র করে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে বিরাজ করছে এক সংকটময় পরিস্থিতি। এরই প্রেক্ষিতে উক্ত সমাবেশের বিষয়টি নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে ‘২৮ অক্টোবর নেতা-কর্মীরা ঢাকায় না এসে নিজ জেলায় সমাবেশে অংশগ্রহন করুন’ শীর্ষক শিরোনামে একটি তথ্য বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মন্তব্য দাবিতে দেশের মূলধারার গণমাধ্যম প্রথম আলো’র ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। তবে ‍রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে প্রথম আলো’র ফেসবুক পেজ কিংবা অন্যান্য প্ল্যাটফর্মে উক্ত তথ্য সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া, বিএনপি’রমহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও এমন কোনো মন্তব্য করেননি বলে বিএনপি চেয়ারপার্সনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করেছেন।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত বিভিন্ন গণমাধ্যমের নাম, লোগো, শিরোনাম এবং নকল ফটোকার্ড ব্যবহার করে অপপ্রচারের বিষয়ে গত ০৫ সেপ্টেম্বর বিস্তারিত ফ্যাক্ট ফাইল প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। 

সুতরাং, বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ‘২৮ অক্টোবর নেতা-কর্মীরা ঢাকায় না এসে নিজ জেলায় সমাবেশে অংশগ্রহন করুন’ শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং প্রচারিত ফটোকার্ডটি এডিটেড বা বিকৃত।

তথ্যসূত্র

ডেইলি স্টারের নকল ফটোকার্ডে রিয়াসাদ আজিমকে নিয়ে ভুয়া তথ্য প্রচার 

0

সম্প্রতি, দ্য ডেইলি স্টার ও ইস্পাহানি টি লিমিটেড আয়োজিত ‘ব্লেন্ডারস চয়েস-দ্য ডেইলি স্টার ওটিটি অ্যান্ড ডিজিটাল কনটেন্ট অ্যাওয়ার্ডস- ২০২২’ এ “বেস্ট স্পোর্টস অ্যানালাইস্ট” হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন একাত্তর টিভির সাবেক সাংবাদিক রিয়াসাদ আজিম শীর্ষক তথ্য ও রিয়াসাদ আজিমের ছবিসহ জাতীয় ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারের ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

রিয়াসাদ আজিম

ফেসবুকে প্রচারিত এমনকিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, দ্য ডেইলি স্টার ও ইস্পাহানি টি লিমিটেড আয়োজিত ‘ব্লেন্ডারস চয়েস-দ্য ডেইলি স্টার ওটিটি অ্যান্ড ডিজিটাল কনটেন্ট অ্যাওয়ার্ডস- ২০২২’ এ ‘বেস্ট স্পোর্টস অ্যানালাইস্ট রিয়াসাদ আজিম’ শীর্ষক তথ্যে ডেইলি স্টার কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি এবং ‘ব্লেন্ডারস চয়েস-দ্য ডেইলি স্টার ওটিটি অ্যান্ড ডিজিটাল কনটেন্ট অ্যাওয়ার্ডস- ২০২২’ এ এমন কোনো ক্যাটাগরিতে পুরস্কারও দেওয়া হয়নি বরং ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে উক্ত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে ইংরেজি জাতীয় দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। পর্যবেক্ষণ করে গত ২১ অক্টোবর ‘ব্লেন্ডারস চয়েস-দ্য ডেইলি স্টার ওটিটি অ্যান্ড ডিজিটাল কনটেন্ট অ্যাওয়ার্ডস- ২০২২’ এ তিনটি বিভাগে ২৭ টি ক্যাটাগরিতে বিজয়ীদের নিয়ে করা একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। পোস্টটিতে পুরস্কার বিজয়ীদের নিয়ে আলাদা আলাদা ফটোকার্ড রয়েছে।

Screenshot: Daily Star

তবে, এখানে ‘বেস্ট স্পোর্টস অ্যানালাইস্ট’ বা রিয়াসাদ আজিমকে নিয়ে কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

এছাড়া, দ্য ডেইলি স্টার ও ইস্পাহানি টি লিমিটেড আয়োজিত ‘ব্লেন্ডারস চয়েস-দ্য ডেইলি স্টার ওটিটি অ্যান্ড ডিজিটাল কনটেন্ট অ্যাওয়ার্ডস- ২০২২’ এ  তিনটি ক্যাটাগরিতে ২৭ টি ক্যাটাগরিতে  এই পুরস্কার প্রদান করা হয়। তবে, ২৭ ক্যাটাগরিতে ‘বেস্ট স্পোর্টস অ্যানালাইস্ট’ নামক কোনো ক্যাটাগরি খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

উক্ত প্রতিবেদন নিয়ে অনুসন্ধান চলাকালে ২৩ অক্টোবর ডেইলি স্টারের ফেসবুক পেজে উক্ত ফটোকার্ডটি নকল উল্লেখ করে একটি পোস্ট করা হয়।

Screenshot: Daily Star 

পরবর্তীতে দাবিটি নিয়ে অনুসন্ধানে কি-ওয়ার্ড সার্চ করে কোনো গণমাধ্যম বা বিশ্বাসযোগ্য সূত্রে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

অর্থাৎ, গত ২১ অক্টোবর বিজয়ীদের নিয়ে দ্য ডেইলি স্টারের ফেসবুক পেজ প্রকাশিত ফটোকার্ডগুলোর কোনো একটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় এডিট করে একাত্তর টিভির সাবেক সাংবাদিক রিয়াসাদ আজিমের ছবি বসিয়ে উক্ত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

মূলত, গত ২১ অক্টোবর দ্য ডেইলি স্টার ও ইস্পাহানি টি লিমিটেড আয়োজিত ‘ব্লেন্ডারস চয়েস-দ্য ডেইলি স্টার ওটিটি অ্যান্ড ডিজিটাল কনটেন্ট অ্যাওয়ার্ডস- ২০২২’ এর পুরস্কার প্রদান করা হয়। এতে তিনটি বিভাগে ২৭ টি ক্যাটাগরিতে পুরস্কার প্রদান করা হয়। পরবর্তীতে, একাত্তর টিভির সাবেক সাংবাদিক রিয়াসাদ আজিম ‘বেস্ট স্পোর্টস অ্যানালাইস্ট’ নির্বাচিত হয়েছেন শীর্ষক তথ্যে ডেইলি স্টারের ফটোকার্ডের ডিজাইন সম্বলিত একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ডেইলি স্টার এমন কোনো ফটোর্কাড প্রকাশ করেনি। প্রকৃতপক্ষে ‘ব্লেন্ডারস চয়েস-দ্য ডেইলি স্টার ওটিটি অ্যান্ড ডিজিটাল কনটেন্ট অ্যাওয়ার্ডস- ২০২২’ এ ‘বেস্ট স্পোর্টস অ্যানালাইস্ট’ নামক কোনো ক্যাটাগরিই ছিল না।

উল্লেখ্য, পূর্বেও ডেইলি স্টারের ফটোকার্ড এডিট করে ভুল তথ্য প্রচার করা হলে  তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিলো রিউমর স্ক্যানার। 

সুতরাং, ‘ব্লেন্ডারস চয়েস-দ্য ডেইলি স্টার ওটিটি অ্যান্ড ডিজিটাল কনটেন্ট অ্যাওয়ার্ডস- ২০২২’ এ একাত্তর টিভির সাবেক সাংবাদিক রিয়াসাদ আজিম ‘বেস্ট স্পোর্টস অ্যানালাইস্ট’ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন শীর্ষক তথ্যটি মিথ্যা এবং আলোচ্য দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডটি এডিটেড বা বিকৃত।

তথ্যসূত্র

সাকিবকে নিয়ে কেন উইলিয়ামসনের মন্তব্য দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি ব্যঙ্গাত্মক

0

সম্প্রতি, “নিশ্চয়ই সাকিব আমাদের টিমে থাকলে বিশ্বকাপ জিতা সহজ হতো। তবে এটাও ঠিক সাকিব আমাদের দলে থাকলে আমার খেলা নিয়েও শঙ্কা ছিলো। কারণ আমি ১০০% ফিট না” শীর্ষক দাবিতে একটি তথ্য নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন’র মন্তব্য দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

সাকিব

ফেসবুক প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশের অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের বিশ্বকাপে খেলা এবং ফিটনেস প্রসঙ্গে নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন আলোচিত মন্তব্যটি করেননি বরং এই মন্তব্যটি ব্যঙ্গাত্মকভাবে কেন উইলিয়ামসনের মন্তব্য হিসেবে প্রচার করা হয়েছে। যা পরবর্তীতে আসল মন্তব্য ভেবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে।

উৎপত্তি

অনুসন্ধানের শুরুতে কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ‘P O L A S H’ নামের একটি ফেসবুক পেজে গত ১৭ অক্টোবর আলোচিত মন্তব্যটি নিয়ে একটি পোস্ট (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook Troll Post

পোস্টটি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, এটি পেজটির ‘TROLL WITH COMMONSENSE’ শীর্ষক একটি অ্যালবামে যুক্ত করা হয়েছে। এই অ্যালবামটিতে ট্রল কেন্দ্রিক আরও বেশ কিছু পোস্টও খুঁজে পাওয়া যায়। 

যেখান থেকে প্রতীয়মান হয় যে, পোস্টটি ট্রলের উদ্দেশ্য দেওয়া হয়েছে। ধারণা করা যায়, এই পেজটি থেকেই আলোচিত মন্তব্যটি প্রথমে প্রচার করা হয়েছে।

পরবর্তীতে বাস্তব দাবিতে প্রচার

ট্রল হিসেবে পোস্ট করা কেন উইলিয়ামসনের মন্তব্য দাবিতে প্রচারিত উক্তিটি পরবর্তীতে ফেসবুকের বিভিন্ন পেজে বাস্তব দাবিতে ছড়িয়ে পড়ে। এমন কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

Screenshot Collage by Rumor Scanner

এছাড়াও, উক্ত দাবিতে প্রচারিত পোস্টগুলোতে বিষয়টিকে সত্য মনে করে নেটিজেনদের কমেন্ট করতে দেখা যায়।

Comment Collage by Rumor Scanner

এছাড়াও, গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্য কোনো সূত্রে সাকিব আল হাসান দলে থাকলে বিশ্বকাপ জেতা সহজ হওয়া এবং ফিটনেস না থাকলে নিজের খেলার বিষয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনের এমন কোনো মন্তব্যের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি।

অর্থাৎ, উপরোক্ত বিষয়গুলো পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, বাংলাদেশের অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে নিয়ে বিশ্বকাপে খেলা প্রসঙ্গে কেন উইলিয়ামসন’র মন্তব্য দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সঠিক নয়।

মূলত, গত ১৭ অক্টোবর ‘P O L A S H’নামের একটি ফেসবুক পেজে “নিশ্চয়ই সাকিব আমাদের টিমে থাকলে বিশ্বকাপ জিতা সহজ হতো। তবে এটাও ঠিক সাকিব আমাদের দলে থাকলে আমার খেলা নিয়েও শঙ্কা ছিলো। কারণ আমি ১০০% ফিট না” শীর্ষক দাবিতে একটি তথ্য ব্যঙ্গাত্মক হিসেবে নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন’র নামে করা হয়। পরবর্তীতে উক্ত বিষয়টি বাস্তব দাবিতে ফেসবুকের বিভিন্ন পেজ এবং গ্রুপে প্রচার করা হয়। প্রকৃতপক্ষে, নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন বাংলাদেশের অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে নিয়ে এমন কোনো মন্তব্য করেননি।

প্রসঙ্গত, বিশ্বকাপে দল ঘোষণার আগে বাংলাদেশ দলের সাবেক ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবালের ফিটনেস নিয়ে মন্তব্য করে সমালোচনায় পড়েছিলেন বর্তমান অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। তামিমের বিশ্বকাপ দলে না থাকার পেছনে সাকিবের ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করেন ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট অনেকেই। পরবর্তীতে বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচের সময় পেশির ইনজুরিতে পড়েন সাকিব আল হাসান। এরপরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচ্য দাবিটির সূত্রপাত হয়। 

এছাড়া, গত ১৩ অক্টোবর বাংলাদেশের বিপক্ষের ম্যাচে ব্যাটিংয়ের সময় নাজমুল হোসেন শান্তর ছোঁড়া বলে বাঁ হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলিতে আঘাত পেয়ে ইনজুরিতে পড়েন নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন।

উল্লেখ্য, পূর্বেও বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের নাম উদ্ধৃত করে ভুয়া বক্তব্য প্রচারের প্রেক্ষিতে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, “নিশ্চয়ই সাকিব আমাদের টিমে থাকলে বিশ্বকাপ জিতা সহজ হতো। তবে এটাও ঠিক সাকিব আমাদের দলে থাকলে আমার খেলা নিয়েও শঙ্কা ছিলো। কারণ আমি ১০০% ফিট না” শীর্ষক শিরোনামে কেন উইলিয়ামসনের নামে প্রচারিত এই মন্তব্যটি স্যাটায়ার বা ব্যঙ্গাত্মক।

তথ্যসূত্র

ভিডিওটি ফিলিস্তিন কর্তৃক ইসরায়েলে হামলার নয় 

সম্প্রতি, “ইসরাইলের উপর হামলা করছে ফিলিস্তিন জয় হবে ইনশাআল্লাহ” শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে। 

হামলা

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

একই দাবিতে টিকটকে প্রচারিত এমন কিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ইসরায়েলের উপর ফিলিস্তিনের হামলার দবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পুরানো ও ভিন্ন ঘটনার। প্রকৃতপক্ষে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী কর্তৃক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার একটি ভিডিওকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে। 

এ নিয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটির কিছু স্থিরচিত্র রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে গত ১৯ অক্টোবর ‘Slava’ নামক একটি এক্স অ্যাকাউন্টে (সাবেক টুইটার) একটি অনুরূপ ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot : Slava x post

উক্ত টুইটের ক্যাপশন থেকে জানা যায়, ভিডিওটি ইউক্রেনের। 

পরবর্তীতে উক্ত ভিডিওটিতে দৃশ্যমান ‘acer.negundo’ নামক একটি টিকটক অ্যাকাউন্টের সূত্রে গত ২৬ সেপ্টেম্বর আলোচ্য ভিডিওটির অনুরূপ একই ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot : TikTok Post 

উক্ত ভিডিওটির ক্যাপশনটি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ক্যাপশনটিতে #armed forces of Ukraine, #military #soldiers of Ukraine, #Ukrainian military শীর্ষক একাধিক হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়া ভিডিওটির ক্যাপশনের সঙ্গে একটি পতাকার ছবি দেখতে পাওয়া যায়। উক্ত ছবিটির সাথে ইউক্রেনের পতাকার হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

অপরদিকে ভিডিওটির প্রচারকাল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, এটি গত ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে ইন্টারনেটে বিদ্যমান। বিপরীতে চলমান ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংঘাত শুরু হয়েছে গত ৭ অক্টোবর। অর্থাৎ হামাসের ইসরায়েলে হামলা শুরুর পূর্ব থেকেই ভিডিওটি ইন্টারনেটে প্রচার হয়ে আসছে।

এছাড়া আলোচিত ভিডিওটিতে দৃশ্যমান ক্ষেপনাস্ত্রবাহী গাড়িটির সঙ্গে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ব্যবহৃত ক্ষেপনাস্ত্রবাহী গাড়ির মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ব্যবহৃত ক্ষেপনাস্ত্রবাহী গাড়ির ছবি নিয়ে ইন্টারনেটে বিদ্যমান টুইট ও প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে। 

মূলত, গত ০৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ইসরায়েলে ‘অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড’ নামে হামলা করলে ফিলিস্তিন-ইসরায়েলের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলা সংঘাত নতুন মাত্রা পায়। এই সংঘাতকে কেন্দ্র করে ইসরায়েলের উপর ফিলিস্তিনের হামলার দাবিতে ক্ষেপনাস্ত্র ছোড়ার একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে। তবে অনুসন্ধানে দেখা যায়, এই ভিডিওটি উক্ত সংঘাত শুরুর পূর্ব থেকেই ইন্টারনেটে বিদ্যমান এবং এটি ইউক্রেনের।

সুতরাং, ইউক্রেনের একটি ভিডিওকে ইসরায়েলের উপর ফিলিস্তিনের হামলার দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র