গত ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় কুমিল্লার লাকসামের কৃষ্ণপুর এলাকায় বাস দুর্ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে উক্ত ঘটনায় নিহতের ভিন্ন ভিন্ন সংখ্যা (৫, ৮, ৯, ১৫, ২০, ৩০) ছড়িয়ে পড়ে।
ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, কুমিল্লার লাকসামে বাস দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা ৫, ৮, ৯, ১৫, ২০ বা ৩০ নয় বরং উক্ত দুর্ঘটনায় একজন বাসযাত্রী নিহত হয়েছেন।
অনুসন্ধানের শুরুতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে মূলধারার সংবাদমাধ্যম সমকালের ওয়েবসাইটে “এস্কেভেটরের বাকেটে ঢুকে পড়ল বাস, নিহত ১, আহত ১৫” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, কুমিল্লার লাকসামে সড়ক দুর্ঘটনায় এক বাসযাত্রী নিহত হয়েছেন। এতে আরও অন্তত ১৫ যাত্রী আহত হয়েছেন। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। নিহত সিফাত হোসেন (২৫) নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার আমিশাপাড়ার মোতালেব হোসেনের ছেলে।
এছাড়া, দৈনিক ইত্তেফাকে “লাকসামে দুর্ঘটনায় বাসযাত্রী নিহত, আহত ২০” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত আরেকটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়।
এই প্রতিবেদন থেকেও একজন নিহতের তথ্য জানানো হয়।
পাশাপাশি, একজন নিহত হওয়ার তথ্যে সংবাদ প্রকাশ করেছে অন্যান্য গণমাধ্যমও।
প্রতিবেদন দেখুন-
- সময় টিভি- কুমিল্লায় সড়ক দুর্ঘটনায় বাসযাত্রী নিহত
- বাংলা নিউজ২৪- এক্সেভেটরে ঢুকে পড়ল বাস, প্রাণ হারালেন যুবক
- দেশ রূপান্তর- কুমিল্লায় বাস-ট্রাক সংঘর্ষে নিহত ১
বিষয়টি অধিকতর যাচাইয়ের জন্য লাকসাম থানায় যোগাযোগ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। লাকসাম থানার অফিসার ইনচার্জ মো: শাহাবুদ্দিন খান বলেন, লাকসামের দুর্ঘটনায় একজন ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।
দৌলতগঞ্জ বাজার (লাকসাম) ফায়ার স্টেশনের ফায়ার ফাইটার শিহাব রিউমর স্ক্যানারকে বলেন, “আমরা ঘটনাস্থল থেকে একজনের মরদেহ উদ্ধার করেছি।”
মূলত, গত ১৩ ডিসেম্বর কুমিল্লার লাকসামের কৃষ্ণপুর এলাকায় নোয়াখালী থেকে ঢাকাগামী ইকোনো পরিবহনের সাথে এক্সেভেটর (ভেকু) বহনকারী একটি খোলা ট্রাক্টরের সংঘর্ষ হয়। উক্ত দুর্ঘটনার পরপরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উক্ত ঘটনায় নিহতের ভিন্ন ভিন্ন সংখ্যা ছড়িয়ে পড়ে। এর মধ্যে বেশিরভাগ পোস্টেই ৮, ৯, ২০ ও ৩০ জন নিহতের দাবি ছিল। তবে অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত দাবিগুলো সঠিক নয়। এই দুর্ঘটনায় প্রায় ১৫ জন ব্যক্তি আহত হলেও মারা গেছেন একজন যুবক। নিহত ব্যক্তির নাম সিফাত হোসেন (২৫)। তিনি নোয়াখালীর বাসিন্দা।
সুতরাং, কুমিল্লার লাকসামে বাস দুর্ঘটনায় একজন নিহত হলেও উক্ত দুর্ঘটনায় ৫, ৮, ৯, ১৫, ২০ ও ৩০ জন নিহতের দাবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।
তথ্যসূত্র
- Samakal- এস্কেভেটরের বাকেটে ঢুকে পড়ল বাস, নিহত ১, আহত ১৫
- Ittefaq- লাকসামে দুর্ঘটনায় বাসযাত্রী নিহত, আহত ২০
- Laksam Thana
- Laksam Fair Service
- Rumor Scanner’s Own Analysis