Home Blog Page 570

খালেদা জিয়া মারা যাওয়ার ভুয়া দাবি ভাইরাল

সম্প্রতি, ‘আর বাঁচানো গেল না খালেদা জিয়াকে’ শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

খালেদা জিয়া

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

একই দাবিতে টিকটকে প্রচারিত কিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া মারা যাওয়ার খবরটি সঠিক নয় বরং ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবি সম্বলিত অডিও যুক্ত করে উক্ত ভিডিওটি প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যালোচনা করে রিউমর স্ক্যানার টিম। এতে দেখা যায়, ভিডিওটির শুরুতে যমুনা টেলিভিশনের উপস্থাপিকাকে বলতে শোনা যাচ্ছে, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া মারা গেছেন। 

এরপরই সময় টিভির একটি ফুটেজ দেখানো হয় যেখানে রুহুল কবির রিজভীকে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। পরবর্তীতে একজন ব্যক্তিকে বলতে শোনা যায়, আমাদের হাতে আর কোনো চিকিৎসা নেই এই মুহুর্তে এবং সর্বপরি, একজন ব্যক্তিকে দর্শকদের উদ্দেশ্যে কথা বলতে দেখা যায়। 

এই ভিডিওটির নিচে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছে খালেদা জিয়া, হাসিনা খালেদা জিয়াকে হত্যা করতে চায় শীর্ষক একটি লেখা দেখতে পাওয়া যায়। 

এরপরই ভিডিওটির উপস্থাপক ক্যামেরার সামনে আসেন এবং তিনি দর্শকদের উদ্দেশ্যে বলেন, মৃত্যু সজ্জায় খালেদা জিয়া। যেকোনো সময় মারা যাবে। সিসিইউতে ভর্তি করা হয়েছে। বিএনপির ভেতরে এই মুহুর্তে শোকের ছায়া। 

এরপর তিনি খালেদা জিয়ার বর্তমান অবস্থা জানতে দর্শকদের পুরো ভিডিওটি দেখতে বলেন। তবে ভিডিওটির কোথাও  খালেদা জিয়া মারা গেছেন শীর্ষক তথ্য উল্লেখ করা হয়নি।

ভিডিও যাচাই ১

আলোচিত ভিডিওটির শুরুতে দেখানো যমুনা টিভির ফুটেজটি অনুসন্ধানে ভিডিওতে দেখানো ‘অবরোধ সমর্থনে বিএনপির মিছিল’ শীর্ষক লেখাটির সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে যমুনা টেলিভিশনের ইউটিউব চ্যানেলে গত ১২ ডিসেম্বর অবরোধের সমর্থনে রাজধানীতে বিএনপির মশাল মিছিল | BNP blockade | Jamuna TV শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Youtube

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওর শুরুতে দেখানো যমুনা টিভির উপস্থাপিকার ফুটেজের সাথে উক্ত ভিডিওটির মিল রয়েছে।

Video Comparison by Rumor Scanner

তবে উক্ত ভিডিওটিতে উপস্থাপিকাকে বলতে শোনা যায়, ‘সরকার পতনের দাবিতে টানা ৩৬ ঘন্টা অবরোধ পালন করছে বিএনপি। কর্মসূচির সমর্থনে রাতে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে মশাল মিছিল করে দলীয় নেতাকর্মীরা। দলটির অভিযোগ বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর নেতৃত্বে বের হওয়া মশাল মিছিলে পুলিশ হামলা চালিয়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর কয়েকটি এলাকায় বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা।’ যার সাথে আলোচিত ভিডিওটির কোনো মিল নেই। 

অর্থাৎ, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় উক্ত ভিডিওতে ভিন্ন অডিও যুক্ত করে প্রচার করা হয়েছে।

ভিডিও যাচাই ২ 

পরবর্তী ভিডিওটিতে ‘সময় টিভি’র একটি ফুটেজ দেখানো হয়, যেখানে বিএনপির সিনিয়র সুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীকে দেখতে পাওয়া যায়। ভিডিওটির নিচের দিকে, ‘শর্তসাপেক্ষে ৬ মাসের জন্য বেগম জিয়ার সাজা স্থগিত’ শীর্ষক লেখাটি দেখতে পাওয়া যায়। যার সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে সময় টিভির প্রতিবেদনটি পাওয়া না গেলেও যমুনা টেলিভিশনের ইউটিউব চ্যানেলে ২০২০ সালের ২৪ মার্চ খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত শুনেই হাসপাতালে রিজভী | Jamuna TV শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Youtube

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওর রুহুল কবির রিজভীর সাথে ‍উক্ত ভিডিওর রিজভীর শার্টের রঙ এবং চেকের সাথে হুবহু মিল রয়েছে। 

Video Comparison by Rumor Scanner

এছাড়াও, দুই ভিডিওতেই তার মুখে মাস্ক দেখতে পাওয়া যায়। আর আলোচিত ভিডিওটির উপরে দেখতে পাওয়া যায় ভিডিওটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়েছে এবং কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে পাওয়া যমুনা টিভির প্রতিবেদনের শিরোনাম থেকেও জানা যায়, উক্ত ভিডিওটি হাসপাতালে ধারণ করা হয়েছে।

ভিডিও যাচাই ৩

আলোচিত ভিডিওটিতে এরপর একজন ব্যক্তিকে মাইক্রোফোন হাতে কথা বলতে দেখা যায়। উক্ত ভিডিওর ডান পাশে উপরে ‘NewsNow বাংলা’ নামের একটি লোগো দেখা যায়। লোগোটির সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে NEWS NOW বাংলা-এর ফেসবুক পেজে গত ৯ অক্টোবর আমাদের হাতে আর কোনো চিকিৎসা নানাই, খালেদা জিয়া বেশি দিন বাঁচবে না: বোর্ড চিকিৎসক শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, উক্ত ভিডিওটি মূলত খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্যে গঠন করা বোর্ডের বোর্ড চিকিৎসকের। তিনি মূলত সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার অবস্থা বর্ণনা করছিলেন। যেখানে তিনি সাংবাদিকদের জানান তার উন্নত চিকিৎসার জন্যে তাকে বিদেশে নিয়ে যাওয়া উত্তম। 

ভিডিও যাচাই ৪

আলোচিত ভিডিওটিতে উপস্থাপক দর্শকদের উদ্দেশ্যে সর্বশেষ যে ভিডিওটি দেখান তার সূত্র অনুসন্ধানে ভিডিওটির কয়েকটি কি-ফ্রেম নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে Dr. Fayzul Huq Voice নামের একটি ফেসবুক পেজে গত ৯ অক্টোবর জীবন নিয়ে লড়ছেন বেগম জিয়া। চিকিৎসকরা খালেদা জিয়ার আশা ছেড়ে দিয়েছেন। ডঃ ফয়জুল হক। শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner

ভিডিওটি মূলত ৯ অক্টোবর খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য বিষয়ে বোর্ড চিকিৎসকদের সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে দেওয়া বিবৃতির পর প্রকাশ করা হয়েছে। উক্ত ভিডিওতে  খালেদা জিয়ার মারা যাওয়ার বিষয়ে কোনো তথ্য উল্লেখ করা হয়নি।

এছাড়াও বিভিন্ন কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে কোনো গণমাধ্যমে-ই খালেদা জিয়ার মৃত্যুর সংবাদ খুঁজে পাওযা যায়নি।

মূলত, বিগত চার মাসের বেশি সময় ধরে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বেগম খালেদা জিয়া। গত ১১ ডিসেম্বর তার কিছু শারীরিক জটিলতা দেখা দিলে তাকে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ)-তে নেওয়া হয়। সেখানে তাঁকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখে চিকিৎসা প্রদানের পর পুনরায় কেবিনে স্থানান্তর করা হয়। এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি, ‘আর বাঁচানো গেল না খালেদা জিয়াকে’ শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওটি মূলত যমুনা টিভি ও সময় টিভির ভিন্ন ঘটনার দুটি পুরোনো ফুটেজে ভিন্ন ভিন্ন অডিও যুক্ত করে তার সাথে আরেকটি সংবাদের এবং ইন্টারনেটে প্রচারিত ভিন্ন ঘটনার ভিডিও যুক্ত করে তৈরি করা হয়েছে, যাতে খালেদা জিয়ার মৃত্যু বিষয়ক কোনো তথ্য নেই।

সুতরাং, আর বাঁচানো গেল না খালেদা জিয়াকে শীর্ষক দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

গরুর মাংস খাওয়া নিয়ে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের নামে ভুয়া মন্তব্য প্রচার

0

দীর্ঘদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে “আমি হিন্দু গরুর গোস্ত খেয়েছি আরো খাবো। হিন্দু ধর্মে কোথাও লেখা নেই যে গরুর গোস্ত খাওয়া যাবে না। গরুর প্রতি যদি আপনাদের এতো মোহাব্বত থাকে তাহলে গরুর চামড়া দিয়ে জুতা তৈরি করেন কেন? দয়া করে ধর্মের দোহায় দিয়ে সম্প্রদায়ী সন্ত্রাস সৃষ্টি করবেন না।” শীর্ষক একটি মন্তব্যকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।

গরুর মাংস

২০১৬ সালে ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 
২০১৭ সালে ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 
২০১৮ সালে ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 
২০১৯ সালে ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 
২০২০ সালে ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন  এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এবং এখানে (আর্কাইভ)। 
২০২১ সালে ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

টিকটকে প্রচারিত এমন একটি ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, “আমি হিন্দু গরুর গোস্ত খেয়েছি আরো খাবো। হিন্দু ধর্মে কোথাও লেখা নেই যে গরুর গোস্ত খাওয়া যাবে না। গরুর প্রতি যদি আপনাদের এতো মোহাব্বত থাকে তাহলে গরুর চামড়া দিয়ে জুতা তৈরি করেন কেন? দয়া করে ধর্মের দোহায় দিয়ে সম্প্রদায়ী সন্ত্রাস সৃষ্টি করবেন না।” শীর্ষক কোনো মন্তব্য পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় করেননি বরং ২০১৫ সালে প্রেস কাউন্সিল অব ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান এবং ভারতের সুপ্রিমকোর্টের সাবেক বিচারপতি মার্কয়েন্ড কাটজুর মন্তব্যের একটি অংশের সাথে অতিরিক্ত কিছু বাক্য জুড়ে দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে ছড়ানো হচ্ছে। 

দাবিটি নিয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে মমতা বন্দোপাধ্যায় এর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টগুলো পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। পর্যবেক্ষণে উক্ত দাবি সম্পর্কিত কোনো মন্তব্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কিওয়ার্ড সার্চ পদ্ধতিতে অনুসন্ধানে বেসরকারি টিভি চ্যানেল এনটিভির ওয়েবসাইটে ২০১৫ সালের ২২ মে “আমি হিন্দু, গরুর মাংস খেয়েছি, আবার খাব” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot : NTV Online 

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, প্রেস কাউন্সিল অব ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান এবং ভারতের সুপ্রিমকোর্টের সাবেক বিচারপতি মার্কয়েন্ড কাটজু ‘আমি হিন্দু, আমি গরুর মাংস খেয়েছি এবং আবার খাব। গরুর মাংস খাওয়ায় দোষের কিছু নেই। পৃথিবীর ৯০% মানুষ গরুর মাংস খায়। তারা কি সবাই পাপী? এবং আমি এটা বিশ্বাস করি না, গরু পবিত্র অথবা আমাদের মা। কীভাবে একটি পশু মানুষের মা হতে পারে? এ জন্যই আমি বলি, ৯০ শতাংশ ভারতীয়ই মূর্খ, মি. মুখতার আব্বাস নাকভিসহ।’ শীর্ষক একটি মন্তব্য করেন। 

সার্বিক অনুসন্ধানের ভিত্তিতে ধারণা করা যায় মার্কয়েন্ড কাটজুর উক্ত মন্তব্যর কিছু অংশের সাথে অতিরিক্ত বাক্য জুড়ে দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর মন্তব্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এছাড়া অনুসন্ধানে ভারতীয় গণমাধ্যম ইন্ডিয়ান টুডে’র ওয়েবসাইটে ২০১৭ সালের ২৪ এপ্রিল “Mamata: BJP spreading canards that I eat beef, spending crores on social media to tarnish my image” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, কলকাতায় অনুষ্ঠিত তৃণমূল কংগ্রেসের সাংগঠনিক নির্বাচন উপলক্ষে দেওয়া বক্তৃতায় গরুর মাংস খাওয়া নিয়ে তাকে জড়িয়ে গুজব ছড়ানো হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মূলত, প্রেস কাউন্সিল অব ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান এবং ভারতের সুপ্রিমকোর্টের সাবেক বিচারপতি মার্কয়েন্ড কাটজুর একটি মন্তব্যের কিছু অংশের সাথে অতিরিক্ত বাক্য জুড়ে দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ানো হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘আমি হিন্দু গরুর গোস্ত খেয়েছি আরো খাবো। হিন্দু ধর্মে কোথাও লেখা নেই যে গরুর গোস্ত খাওয়া যাবে না। গরুর প্রতি যদি আপনাদের এতো মোহাব্বত থাকে তাহলে গরুর চামড়া দিয়ে জুতা তৈরি করেন কেন? দয়া করে ধর্মের দোহায় দিয়ে সম্প্রদায়ী সন্ত্রাস সৃষ্টি করবেন না’। এছাড়া দেশীয় কিংবা ভারতীয় কোনো গণমাধ্যমেও বিষয়টির সত্যতা সম্পর্কিত কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, গরুর মাংস খাওয়া নিয়ে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের নামে একটি মন্তব্য দীর্ঘদিন ধরে ইন্টারনেটে প্রচার হয়ে আসছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

এমপির বাড়ি থেকে ৪৬৬ কোটি টাকা উদ্ধারের ঘটনাটি বাংলাদেশের নয়, ভারতের

0

সম্প্রতি, এমপির বাড়ি থেকে ৪৬৬ কোটি টাকা উদ্ধারের একটি সংবাদ বাংলাদেশের দাবিতে মূলধারার গণমাধ্যম কালবেলা’র ফটোকার্ড যুক্ত করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

এমপির বাড়ি

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, এমপির বাড়ি থেকে ৪৬৬ কোটি টাকা উদ্ধারের ঘটনাটি বাংলাদেশের নয় বরং ঘটনাটি ভারতের। ভারতের ঝাড়খণ্ডের কংগ্রেস রাজ্যসভার এমপি ধীরাজ প্রসাদ সাহু’র বাড়ি থেকে এই টাকা উদ্ধার করা হয়।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত পোস্টগুলোতে ব্যবহৃত কালবেলা’র ফটোকার্ডের সূত্র ধরে ম্যানুয়ালি অনুসন্ধানের মাধ্যমে গণমাধ্যমটির ফেসবুক পেজে এসম্পর্কিত একটি ফটোকার্ড (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot : Kalbela Facebook

কালবেলার উক্ত ফটোকার্ডটি নিয়ে প্রচারিত পোস্টটির কমেন্টে উল্লেখিত এসম্পর্কিত বিস্তারিত প্রতিবেদন পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। কালবেলা’র ওয়েবসাইটে ‘এমপির বাড়ি থেকে উদ্ধার ৪৬৬ কোটি টাকা!’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এমপির বাড়ি থেকে ৪৬৬ কোটি টাকা উদ্ধারের উক্ত ঘটনাটি ভারতের। 

প্রতিবেদনে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি বরাতে জানানো হয়, কংগ্রেসের রাজ্যসভার সংসদ সদস্য ধীরজ প্রসাদ সাহু’র বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ৩৫৩ দশমিক ৫ কোটি রুপি উদ্ধার করা হয়েছে, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৪৬৬ কোটি ৩৪ লাখ ৭৬ হাজার টাকা।

প্রতিবেদনটি’র শিরোনামে ঘটনাটির স্থান উল্লেখ করা না হলেও প্রতিবেদনের বিস্তারিত অংশে এটি ভারতের ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে বাংলাদেশের অনেক ফেসবুক ব্যবহারকারীরা বিষয়টি যথাযথ যাচাই না করে শুধুমাত্র শিরোনামটি কপি-পেস্ট করে ফেসবুকে প্রচার করছেন। ফলে ঘটনাটি ভারতের হলেও ভারত শব্দটি উল্লেখ না করে বাংলাদেশে প্রচার করায় ঘটনাটি বাংলাদেশের ভেবে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে।

Screenshot Collage : Rumor Scanner

পরবর্তীতে বিষয়টি অধিকতর নিশ্চিতের জন্য কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি’র ওয়েবসাইটে গত ১১ ডিসেম্বর ‘Rs 350 Crore, 176 Bags Full, 25 Machines: Day 5 Of Congress MP’s Cash Haul’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ভারতের ঝাড়খণ্ডের কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ ধীরাজ প্রসাদ সাহু’র বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ৩৫৩ দশমিক ৫ কোটি রুপি উদ্ধার করা হয়, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৪৬৬ কোটি ৩৪ লাখ ৭৬ হাজার টাকার সমান।

অর্থাৎ, এমপির বাড়ি থেকে ৪৬৬ কোটি টাকা উদ্ধারের ঘটনাটি বাংলাদেশের নয়। তবে এসম্পর্কিত খবরের শিরোনামে স্থানের নাম উল্লেখ না করায় ঘটনাটি বাংলাদেশের ভেবে নেটিজেনরা বিভ্রান্ত হয়েছেন।

মূলত, সম্প্রতি ভারতের ঝাড়খণ্ডের কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ ধীরাজ প্রসাদ সাহু’র বাড়িতে অভিযান  চালিয়ে ৩৫৩ দশমিক ৫ কোটি রুপি (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৪৬৬ কোটি টাকা) উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে উক্ত বিষয়ে বাংলাদেশের গণমাধ্যম কালবেলায় প্রকাশিত প্রতিবেদনের শিরোনামে ঘটনাটির স্থানের নাম উল্লেখ না করে সংবাদ প্রচার করা হয়। পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীরা বিষয়টি বাংলাদেশের ঘটনা মনে করে ফেসবুকে প্রচার করেন।

উল্লেখ্য, পূর্বেও ভারতের একাধিক ঘটনা বাংলাদেশের দাবিতে প্রচারিত হলে তা নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কিছু প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, ভারতে এমপির বাড়ি থেকে ৪৬৬ কোটি টাকা উদ্ধারের ঘটনাটি বাংলাদেশে স্থানের নাম উল্লেখ না করে ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

মিথ্যা রূপচাঁদা বা চান্দা মাছ থেকে সাবধান শীর্ষক প্রচারিত পোস্টের ঘটনাটি বাংলাদেশের নয়

0

সম্প্রতি, একটি মাছের কিছু ছবিসহ মাছটির বিষয়ে একাধিক তথ্য সম্বলিত সতর্কতামূলক একটি বার্তা ইন্টারনেটে ব্যাপকভাবে ভাইরাল হতে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

ভাইরাল এই বার্তাটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এখানে মাছের তিনটি ছবি যুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি ছবিতে ছবিটি ধারণের তারিখ উল্লেখ রয়েছে ১৭ অক্টোবর। অন্য ছবিগুলোতে তারিখ উল্লেখ নেই। “মিথ্যা রূপচাঁদা মাছ চান্দা মাছ থেকে সাবধান” শিরোনাম এবং মানুষকে সচেতন হওয়ার বার্তা দিয়ে শুরু করা ভাইরাল পোস্টটিতে যা লেখা রয়েছে তা হলো, “আজকাল বিশেষত অনেক শহরে এবং গ্রামগঞ্জের বাজারে একধরনের মাছ বিক্রি হতে দেখা যাচ্ছে, যাকে মৎস ব্যবসায়ীরা রূপচাঁদা মাছ বা চান্দা মাছ অথবা চাঁদা মাছ বলছেন। এই মাছ কোথা থেকে আসে জিজ্ঞাসা করা হলে তাঁরা বলছেন, এই মাছ পুকুরে চাষ করা হয়। দামেও অন্যান্য মাছের তুলনায় বেশ সস্তা। তাই গ্রামগঞ্জে মানুষের পছন্দের তালিকায় একেবারে প্রথম সারিতে এখন এই মাছ। কিন্তু এই মাছের সম্পর্কে শুনলে আপনি চমকে উঠবেন। এই মাছ মূলত মাংসাশী শ্রেণির। এখন অনেক মৎস ব্যবসায়ীও এই মাছ চাষ করছেন। এই মাছগুলি ধরতে ও মারতে পুকুরে তীব্রমাত্রায় বিষ প্রয়োগ করতে হয়। এরা নাকি মানুষখেকো সেই পিরানহা মাছের জাত। যে জলে এই পিরানহা মাছ হয়, সেখানে নামলে সর্বোচ্চ ১৫ মিনিট সময় লাগে একজন আস্ত মানুষকে হজম করতে। এই মাছ চেনার উপায় হল, এর সামনের দাঁত অবিকল মানুষের মতো। এই মাছ খেলে ফুসফুস ক্যানসার, ব্রেন ক্যানসার, স্ট্রোক ইত্যাদি রোগ শরীরে দানা বাঁধে। যদি কোনো মৎস ব্যবসায়ী এই মাছ বিক্রি করেন, তবে তাঁর বিরুদ্ধে সরকারি বিধি মোতাবেক জেল- জরিমানা হওয়ারও বিধান রয়েছে। অথচ সাধারণ মানুষকে বোকা বানিয়ে প্রশাসনের নাকের ডগায় বসে ব্যবসায়ীরা এই মাছকে রূপচাঁদা বা চাঁদা অথবা চান্দা বলে বিক্রি করে চলেছেন। কাজেই সবাইকে সতর্ক হতে অনুরোধ করছি। এই মাছ এলাকায় বিক্রি হতে দেখলে অবিলম্বে ওই মৎস্য ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিন। তাঁদেরও সাবধান করুন।” 

মিথ্যা রূপচাঁদা

এই সংক্রান্ত একটি পোস্টই প্রায় ২৪ হাজারের অধিকবার শেয়ার করা হয়েছে, যাতে রিয়েক্ট পড়েছে ৬৪ হাজারের বেশি। এই পোস্টসহ একই দাবিতে এ সংক্রান্ত আরো কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, মিথ্যা রূপচাঁদা বা চান্দা মাছ থেকে সাবধান শীর্ষক প্রচারিত পোস্টের ঘটনাটি বাংলাদেশের নয় বরং ভারত থেকে ছড়িয়ে পড়া পোস্টটি বাংলাদেশের দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। তাছাড়া, এই মাছটি মানুষখেকো নয় বলে মত দিয়েছেন ভারত ও বাংলাদেশের একাধিক বিশেষজ্ঞ।

রিউমর স্ক্যানার টিম আলোচিত দাবিটির সূত্রপাত খোঁজার মাধ্যমে এ বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করে। 

ফেসবুক মনিটরিং টুল এবং একাধিক ম্যানুয়াল পদ্ধতির অনুসন্ধানে দেখা যায়, এ বিষয়ে উক্ত তিনটি ছবি যুক্ত করে সম্ভাব্য সবচেয়ে পুরোনো পোস্টগুলো (, , , ) পাওয়া যায় গত ২১ অক্টোবর। সেদিন একাধিক ফেসবুক পেজ এবং অ্যাকাউন্ট থেকে একই পোস্ট করা হলেও সম্ভাব্য প্রথম পোস্টটি (সন্ধ্যা ৭ টা ২৫ মিনিটে) করা হয় Arup Mitra নামে ভারতের কলকাতার একজন গণিত শিক্ষকের অ্যাকাউন্ট থেকে। দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।  

Screenshot: Facebook

আরো অনুসন্ধান করে গত ০১ অক্টোবর ভারতের একটি পেজ এবং অ্যাকাউন্ট থেকে প্রকাশিত ১৭ অক্টোবরে তোলা ছবিটি বাদে অন্য ছবিগুলো সমেত এবং একটি পত্রিকার কাটিং সম্বলিত একই শিরোনামের একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

Screenshot: Facebook 

পোস্টে যে পত্রিকার কাটিং রয়েছে, তার লেখার সাথে ভাইরাল পোস্টগুলোর তথ্যের দৃশ্যমান মিল পাওয়া যাচ্ছে। পত্রিকায় এই লেখাটি লিখেছেন শুভজিৎ বোস নামে একজন শিক্ষক যিনি ভারতের শিলিগুড়ির নকশালবাড়ির রথখোলায় থাকেন বলে উল্লেখ করেছেন লেখার শেষে৷ 

Image: Facebook 

আমরা প্রাসঙ্গিক অনুসন্ধানে জনাব শুভজিৎ বোসের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুঁজে পেয়েছি। তার অ্যাকাউন্ট পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, তিনি উত্তরবঙ্গ সংবাদ নামে ভারতের কলকাতা ভিত্তিক একটি পত্রিকায় নিয়মিতই লিখে থাকেন। তবে সেখানে আলোচিত এই কাটিংটি পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়ে তার সাথে কথা বলার চেষ্টা করলেও তিনি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাননি। 

রিউমর স্ক্যানার টিম পরবর্তীতে উত্তরবঙ্গ সংবাদ পত্রিকার সংবাদ সমন্বয়ক দীপ সাহার (Deep Saha) সাথে কথা বলেছে। তিনি আমাদের নিশ্চিত করেছেন, পত্রিকার কাটিংটি উত্তরবঙ্গ সংবাদের জনমত বিভাগে প্রকাশিত হয়েছিল। 

প্রায় সমজাতীয় একটি দাবি ২০১৯ সালেও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল। দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

তবে, সম্প্রতি আলোচিত দাবিটি ভারত থেকেই প্রথম ছড়িয়েছে এবং এর সাথে বাংলাদেশের কোনো সম্পর্ক নেই। 

ভাইরাল সতর্কতামূলক বার্তাটির উৎসের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার পর পোস্টে উল্লিখিত তথ্যগুলো যাচাই করে দেখার সিদ্ধান্ত নেয় রিউমর স্ক্যানার টিম৷ 

ভারতে এই মাছটি বিক্রি হচ্ছে কিনা বা এটির বিষয়ে কোনো নেতিবাচক ধারণা রয়েছে কিনা তা জানতে রিউমর স্ক্যানার টিমের পক্ষ থেকে আমরা কথা বলেছিলাম দেশটির পশ্চিমবঙ্গের বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (Vidyasagar University) ফিশারি সায়েন্স বিভাগের সহকারি অধ্যাপক ড. মানোজ কুমার পাতি‘র (Dr. Manoj Kumar Pati) সাথে৷ জনাব মানোজ রিউমর স্ক্যানারকে বলেছেন, এটির বৈজ্ঞানিক নাম Piractus sp. এবং এটি এখানে (ভারতে) পাওয়া যায়। ভোক্তারা এটি পছন্দ করে এবং খাচ্ছেও। কেউ বলছে না, এটি মানুষখেকো। স্বাস্থ্য ঝুঁকির বিষয়ে যদি বলতে হয়, আমি মনে করি না এই মাছ খেলে স্বাস্থ্যঝুঁকি আছে। 

যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি প্রতিষ্ঠান United States Geological Survey এর ওয়েবসাইট থেকে জানা যাচ্ছে, Piractus sp. বৈজ্ঞানিক নাম সম্বলিত মাছটির সাধারণ নাম unidentified pacu (অশনাক্তকৃত পাকু)। 

Screenshot: USGS

তবে এই মাছের নাম পাকু নয় বলে মনে করছেন বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞরা৷ রিউমর স্ক্যানার টিমকে এমনটাই জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ রোকনুজ্জামান এবং নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ এন্ড মেরিন সায়েন্স বিভাগের চেয়ারম্যান ড. আবদুল্লাহ আল মামুন। তারা দুজনই বলছেন, এটি পিরানহা মাছ৷  

ড. আবদুল্লাহ আল মামুন এর কারণ হিসেবে বলছেন, পিরানহার মতো সাইজ নয় পাকুর। পাকু এটির চেয়েও সাইজে বড় হয়ে থাকে৷ 

বাংলাদেশের মাছের প্রজাতির ডাটাবেজ হিসেবে কাজ করা সংস্থা Bangladesh Fisheries Information Share Home (BdFISH) এর ওয়েবসাইট থেকে জানা যাচ্ছে, লাল পাকু ও লাল পিরানহা এর মধ্যে বাহ্যিক পার্থক্য অতি সামান্যই যদিও খাদ্যাভ্যাস ও স্বভাবে রয়েছে বড় ধরণের পার্থক্য। যার ফলে মাছের এই প্রজাতি দুটি শনাক্তকরণে ভুল করার অবকাশ থেকে যায়।

এই সাইটে লাল পাকু এবং লাল পিরানহার কিছু সুস্পষ্ট পার্থক্য তুলে ধরা হয়েছে। এখানে বলা হয়েছে, পিরানহার দাঁত এক সারিতে থাকে। ভাইরাল পোস্টগুলোর ছবিতে থাকা মাছটির চোয়ালেও এক সারিতেই দাঁত দেখা যাচ্ছে।

Screenshot: Bdfish

একই ওয়েবসাইট থেকে জানা যাচ্ছে, পিরানহা সম্পূর্ণভাবে মাংসাশী (Carnivorous) অর্থাৎ কেবলমাত্র প্রাণীজাতীয় খাবারই খেয়ে থাকে। হিংস্র শিকারি মাছ হিসেবে পিরানহার পরিচিতি পৃথিবীব্যাপী বলেও উল্লেখ করা হয়েছে তাতে। এই মাছ মানুষকে আক্রমণ করে এমন নজিরও রয়েছে।

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইন্সটিটিউটের মহাপরিচালক ইয়াহিয়া মাহমুদ বলছেন, পিরানহা মাছ খেলে কোনও স্বাস্থ্য ঝুঁকি নেই।

তবে বাংলাদেশে এই মাছ নিষিদ্ধ রয়েছে ২০০৮ সাল থেকে। এটি নিষিদ্ধ হওয়ার পেছনে যে স্বাস্থ্যগত কোনো ঝুঁকি নেই তা স্পষ্ট জনাব ইয়াহিয়া মাহমুদের কথাতেই। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ বন্যা প্রবণ দেশ। এখন পুকুরে বা ঘে‌রে যদি পিরানহা মাছ চাষ ক‌রা হয় এবং সেই মাছ যদি পানিতে ভেসে অবরুদ্ধ স্থান থেকে মুক্ত জলাশয় যেমন নদী, খাল বিলে চলে আসে, তখন তাদের আক্রমণে দেশীয় ছোট বড় সব মাছ বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে।

ভারতে অবশ্য দুয়েকটি রাজ্য বাদে সকল স্থানেই এই মাছ বিক্রির অনুমতি রয়েছে৷ 

বাংলাদেশে নিষিদ্ধ হলেও ভিন্ন নামে এই মাছ বিক্রির বিষয়ে জানিয়েছেন ড. আবদুল্লাহ আল মামুন। নোবিপ্রবির এই শিক্ষক বলছিলেন, বাংলাদেশে এটি রূপচান্দা মাছ নামে বিক্রি হয়। তবে তা খুবই কম। কুমিল্লার লাকসামের কিছু হ্যাচারিতে এর চাষ হয়ে থাকে। 

মূলত, সম্প্রতি পিরানহা সদৃশ একটি মাছের কিছু ছবিসহ মাছটির বিষয়ে একাধিক তথ্য সম্বলিত সতর্কতামূলক একটি বার্তা ইন্টারনেটে ব্যাপকভাবে ভাইরাল হয়েছে যাতে দাবি করা হয়েছে, মৎস্য ব্যবসায়ীরা রূপচাঁদা মাছ বা চান্দা মাছ অথবা চাঁদা মাছ বলে এটি বাজারে বিক্রি করছেন৷ এরা মানুষখেকো সেই পিরানহা মাছের জাত। যে পানিতে এই পিরানহা মাছ হয়, সেখানে নামলে সর্বোচ্চ ১৫ মিনিট সময় লাগে একজন আস্ত মানুষকে হজম করতে। এই মাছ খেলে ফুসফুস ক্যানসার, ব্রেন ক্যানসার, স্ট্রোক ইত্যাদি রোগ শরীরে দানা বাঁধে। যদি কোনো মৎস ব্যবসায়ী এই মাছ বিক্রি করেন, তবে তাঁর বিরুদ্ধে সরকারি বিধি মোতাবেক জেল-জরিমানা হওয়ারও বিধান রয়েছে। কিন্তু রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভাইরাল এই সতর্কতামূলক এই বার্তাটি ভারত থেকে প্রথম ছড়িয়েছে৷ সেখানকার একজন শিক্ষক এই মাছটিকে পাকু বলেও চিহ্নিত করে এটি খাওয়ার ক্ষেত্রে কোনো স্বাস্থ্যঝুঁকি নেই বলে জানিয়েছেন। তবে বাংলাদেশের দুইটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা এটির নাম পিরানহা বলে মত দিয়েছেন। তাছাড়া, এই মাছ ভারতের কয়েকটি রাজ্যে নিষিদ্ধ হলেও বাকি স্থানগুলোতে বিক্রিতে বাধা নেই। তবে বাংলাদেশে পিরানহা বিক্রি নিষিদ্ধ। 

সুতরাং, ভারত থেকে ছড়িয়ে পড়া মিথ্যা রূপচাঁদা বা চান্দা মাছ থেকে সাবধান শীর্ষক প্রচারিত ভাইরাল সতর্কবার্তার তথ্যাবলি বাংলাদেশের দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র

কুমিল্লার লাকসামে বাস দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা নিয়ে গুজব 

0

গত ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় কুমিল্লার লাকসামের কৃষ্ণপুর এলাকায় বাস দুর্ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে উক্ত ঘটনায় নিহতের ভিন্ন ভিন্ন সংখ্যা (৫, ৮, ৯, ১৫, ২০, ৩০) ছড়িয়ে পড়ে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, কুমিল্লার লাকসামে বাস দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা ৫, ৮, ৯, ১৫, ২০ বা ৩০ নয় বরং উক্ত দুর্ঘটনায় একজন বাসযাত্রী নিহত হয়েছেন। 

অনুসন্ধানের শুরুতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে মূলধারার সংবাদমাধ্যম সমকালের ওয়েবসাইটে “এস্কেভেটরের বাকেটে ঢুকে পড়ল বাস, নিহত ১, আহত ১৫” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। 

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, কুমিল্লার লাকসামে সড়ক দুর্ঘটনায় এক বাসযাত্রী নিহত হয়েছেন। এতে আরও অন্তত ১৫ যাত্রী আহত হয়েছেন। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। নিহত সিফাত হোসেন (২৫) নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার আমিশাপাড়ার মোতালেব হোসেনের ছেলে।

এছাড়া, দৈনিক ইত্তেফাকে “লাকসামে দুর্ঘটনায় বাসযাত্রী নিহত, আহত ২০” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত আরেকটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। 

এই প্রতিবেদন থেকেও একজন নিহতের তথ্য জানানো হয়। 

পাশাপাশি, একজন নিহত হওয়ার তথ্যে সংবাদ প্রকাশ করেছে অন্যান্য গণমাধ্যমও। 
প্রতিবেদন দেখুন-

বিষয়টি অধিকতর যাচাইয়ের জন্য লাকসাম থানায় যোগাযোগ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। লাকসাম থানার অফিসার ইনচার্জ মো: শাহাবুদ্দিন খান বলেন, লাকসামের দুর্ঘটনায় একজন ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। 

দৌলতগঞ্জ বাজার (লাকসাম) ফায়ার স্টেশনের  ফায়ার ফাইটার শিহাব রিউমর স্ক্যানারকে বলেন, “আমরা ঘটনাস্থল থেকে একজনের মরদেহ উদ্ধার করেছি।” 

মূলত, গত ১৩ ডিসেম্বর কুমিল্লার লাকসামের কৃষ্ণপুর এলাকায় নোয়াখালী থেকে ঢাকাগামী ইকোনো পরিবহনের সাথে এক্সেভেটর (ভেকু) বহনকারী একটি খোলা ট্রাক্টরের সংঘর্ষ হয়। উক্ত দুর্ঘটনার পরপরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উক্ত ঘটনায় নিহতের ভিন্ন ভিন্ন সংখ্যা ছড়িয়ে পড়ে। এর মধ্যে বেশিরভাগ পোস্টেই ৮, ৯, ২০ ও ৩০ জন নিহতের দাবি ছিল। তবে অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত দাবিগুলো সঠিক নয়। এই দুর্ঘটনায় প্রায় ১৫ জন ব্যক্তি আহত হলেও মারা গেছেন একজন যুবক। নিহত ব্যক্তির নাম সিফাত হোসেন (২৫)। তিনি নোয়াখালীর বাসিন্দা।

সুতরাং, কুমিল্লার লাকসামে বাস দুর্ঘটনায় একজন নিহত হলেও উক্ত দুর্ঘটনায় ৫, ৮, ৯, ১৫, ২০ ও ৩০ জন নিহতের দাবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র

বাংলাদেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা জারির গুজব

সম্প্রতি, বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা নিয়ে টেনশনে আ’লীগ। যেভাবে ক্ষমতা হারাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী– শীর্ষক শিরোনামে এবং বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা দিলো আমেরিকা, পদত্যাগ চাইলো জো বাইডেন– শীর্ষক থাম্বনেইলে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে।

ভিডিওটিতে দাবি করা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে বাংলাদেশের ওপর এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র পদত্যাগ চেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

 বাণিজ্যিক

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু ভিডিও পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের ওপর বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা দেয়নি এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র পদত্যাগও চাননি বরং অধিক ভিউ পাবার আশায় চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এটি ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার পুরোনো কয়েকটি ভিডিও ক্লিপ এবং ছবি নিয়ে তৈরি একটি ভিডিও।

ভিডিও যাচাই- ১

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটিতে বাংলাদেশের বেসরকারি টেলিভিশন নিউজ২৪ এর লোগো দেখা যায়। 

লোগো’র সূত্র ধরে নিউজ২৪ এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ৬ ডিসেম্বর “পোশাক খাতে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন বার্তায় চিন্তার ভাঁজ!” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

আলোচিত ভিডিওটির সাথে উক্ত ভিডিওটির হুবহু মিল পাওয়া যায়।

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতে যুক্তরাষ্ট্রের যেকোনো নিষেধাজ্ঞা থাকলে পণ্য নেওয়া হবে না কিংবা ক্রয়াদেশ বাতিল করা হবে- এমন শর্তে যুক্তরাষ্ট্রের একটি ক্রেতা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশকে একটি ঋণপত্র দিয়েছে। 

Video Comparison by Rumor Scanner

ভিডিও যাচাই- ২

অনুসন্ধানের শুরুতে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে বাংলাদেশের বেসরকারি টেলিভিশন যমুনা টেলিভিশনের ইউটিউব চ্যানেল গত ৬ ডিসেম্বর “আগামী ৬ মাস পোশাক শিল্পের জন্য কঠিন সময়: বিজিএমইএ সভাপতি” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন পাওয়া যায়। 

আলোচিত ভিডিওটির সাথে উক্ত ভিডিওটির হুবহু মিল রয়েছে। 

প্রতিবেদবে বিজিএমইএ এর সভাপতি ফারুক হাসানকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, এখন থেকে ৬ মাস পোশাক শিল্পের জন্য কঠিন সময়। তৈরি পোশাক রপ্তানিতে শর্ত জুড়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটছে। বায়াররা জানিয়েছেন কোনো কারণে নিষেধাজ্ঞা এনে তারা পণ্য নেবে না।

Video Comparison by Rumor Scanner

ভিডিও যাচাই- ৩

আলোচিত ভিডিওটির এই অংশে বিএনপি নেত্রী রুমিন ফারহানাকে বক্তব্য দিতে দেখা যায়। সেই বক্তব্যের সূত্র ধরে অনুসন্ধানে করে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

অনুসন্ধানে Rumeen’s Voice নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলে গত ৭ ডিসেম্বর “বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা..প্রধানমন্ত্রীর আভাস; দেখা যাচ্ছে খারাপ লক্ষণ” শীর্ষক ক্যাপশনে একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়

আলোচিত ভিডিওটির সাথে উক্ত ভিডিওটির হুবহু মিল রয়েছে। 

ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে জানা যায়, বিএনপি নেত্রী রুমিন ফারহানা গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন সংবাদ নিয়ে আলোচনা করছেন। পাশাপাশি, আগামীতে বাংলাদেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা দিতে পারেন বলে মতামত দেন। 

অর্থাৎ, এখানেও বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে বলা হয়নি বরং বিএনপি নেত্রী রুমিন ফারহানা বিভিন্ন সংবাদের প্রেক্ষিতে নিজের মতামত দেন এবং মতামতে তিনি বলেন, আগামীতে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের ওপর বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা দিতে পারে।

Video Comparison by Rumor Scanner

পাশাপাশি, অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বাংলাদেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার দাবির বিষয়ে সত্যতা পাওয়া যায়নি।

তবে, আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিবিসি বাংলার ওয়েবসাইটে গত ১৭ নভেম্বর “আমেরিকার নতুন ঘোষণা, শ্রমিক অধিকার হরণ হলে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা দেয়া হবে” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, গত ১৬ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্র একটি নতুন শ্রম নীতি ঘোষনা করেছে। শ্রম নীতির বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন জানিয়েছেন, বিশ্বজুড়ে যারা শ্রমিক অধিকার হরণ করবে, শ্রমিকদের ভয়ভীতি দেখাবে এবং আক্রমণ করবে তাদের উপর বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞাসহ নানা ধরনের নিষেধাজ্ঞা দেবে যুক্তরাষ্ট্র।

মূলত, বিশ্বব্যাপী শ্রমিক অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গত ১৬ নভেম্বর একটি মেমোরেন্ডামে  স্বাক্ষর করেছেন। উক্ত বিষয়কে কেন্দ্র করে সম্প্রতি বাংলাদেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন কর্তৃক বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবি সম্বলিত থাম্বনেইলে থাম্বনেইলে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচারিত হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র পদত্যাগের বিষয়ে প্রচারিত তথ্যগুলো সঠিক নয়। যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শ্রম নীতির আওতায় বাংলাদেশকে এখন পর্যন্ত কোনো নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়নি।

সুতরাং, বাংলাদেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা ও প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়েছে জো বাইডেন- শীর্ষক দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

রাষ্ট্রপতির ওপর ওবায়দুল কাদের ক্ষিপ্ত হওয়ার দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত ভিডিওটি এডিটেড 

সম্প্রতি “রাষ্ট্রপতির ওপর ক্ষিপ্ত ওবায়দুল কাদের। কাজ করেনা বসে বসে খায়” শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে।

রাষ্ট্রপতি

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ইউটিউবে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন’র ওপর ওবায়দুল কাদেরের ক্ষিপ্ত হওয়ার দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি উক্ত ঘটনার নয় বরং ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং ওবায়দুল কাদেরের পুরোনো বক্তব্যের খণ্ড খণ্ড দুটি অংশ জোড়া লাগিয়ে উক্ত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনের ভিডিও যাচাই

আলোচিত দাবির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য ভিডিওটির কিছু কি-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চ করে মূলধারার ইলেকট্রনিক সংবাদমাধ্যম News24 এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি “তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে যা বললেন নতুন রাষ্ট্রপতি” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ভিডিওর সাথে উক্ত আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর দৃশ্যের হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Image Comparison: Rumor Scanner

ভিডিও থেকে জানা যায়, সেদিন সাংবাদিক রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিলুপ্ত করা হয়। এখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে যাওয়ার তো আর সুযোগ নেই। তিনি জানান “আমি বাংলাদেশের রাষ্ট্র প্রধান হিসেবে মনে করি সকলের সংবিধান মানা উচিৎ এবং আমাদের কাছে যে সংবিধানের রূপ আছে, সেখানে নির্বাচনের অধ্যায়ে যা বলা আছে, ঐ ভাবেই নির্বাচন হবে।

রাষ্ট্রপতি সংবিধানের ৫৮ এর ‘গ’ এর কথা বলতে গিয়ে বলেন ‘অনির্বাচিত কারও দ্বারা কোনো সরকার বৈধ নয়’।

অর্থাৎ, রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন সেই ভিডিওতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার না থাকার পক্ষে তার অবস্থান তুলে ধরেন।

ওবায়দুল কাদেরের ভিডিও যাচাই

অনুসন্ধানে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল Somoy TV এর ইউটিউব চ্যানেলে গত 22 মার্চ “ছাত্রলীগকে সার্জারি করে বিষফোঁড়া বের করতে বললেন ওবায়দুল কাদের | Obaidul Quader | Chhatra League” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ভিডিওর সাথে উক্ত আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর দৃশ্যের হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Image Comparison: Rumor Scanner

ভিডিওতে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ছাত্রলীগকে নিয়ে আমরা যারা গর্ব করি আমাদের রাজনীতির হাতেখড়ি যে ছাত্রলীগে মাঝে মাঝে এমন কিছু হয় এমন কিছু ঘটে ছাত্রলীগের নামে। পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে আমি পরিষ্কার করে বলতে চাই, খারাপ ছেলে মেয়েদের কোনো দরকার নাই।

তিনি আরও বলেন, “আমরা সবাই মনে করছি আশার প্রদীপ আবার জ্বলবে। আমাদের আশার প্রদীপ যেনো নিভে না যায়। যারা খারাপ, সংশোধন না হলে পরিষ্কার বের করে দাও। যেই কমিটি কাজ করে না, চাঁদাবাজি করে, দখল করে, মাদক নিয়ে ব্যস্ত ঐ কমিটির কোনো দরকার নেই।”

পরবর্তীতে ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের তথ্যের ভিত্তিতে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চ করে জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোর ওয়েবসাইট্র গত ২২ মার্চ “ছাত্রলীগকে ওবায়দুল কাদেরের কড়া নির্দেশনা, করলেন রসিকতাও” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি সংবাদ প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ২২ মার্চ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে ছাত্রলীগের আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।

মূলত, গত ১৩ ফেব্রুয়ারি তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে সাংবাদিকের করা প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনকে তিনি বলেন, সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিলুপ্ত করা হয়। এখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে যাওয়ার তো আর সুযোগ নেই। এছাড়া, সংবিধানের ৫৮ এর ‘গ’ এর কথা বলতে গিয়ে বলেন ‘অনির্বাচিত কারও দ্বারা কোনো সরকার বৈধ নয়’। অপরদিকে গত ২২ মার্চ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে ছাত্রলীগের আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন “আমরা সবাই মনে করছি আশার প্রদীপ আবার জ্বলবে। আমাদের আশার প্রদীপ যেনো নিভে না যায়। যারা খারাপ, সংশোধন না হলে পরিষ্কার বের করে দাও। যেই কমিটি কাজ করে না, চাঁদাবাজি করে, দখল করে, মাদক নিয়ে ব্যস্ত ঐ কমিটির কোনো দরকার নেই। সম্প্রতি মহামান্য রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন এবং ওবায়দুল কাদেরের দেওয়া ভিন্ন ঘটনার বক্তব্য খণ্ড খণ্ড দুটি অংশ জোড়া লাগিয়ে একই ঘটনার দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে।

সুতরাং, মহামান্য রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনের ওপর সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ক্ষিপ্ত হওয়ার দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত এই ভিডিওটি এডিটেড বা বিকৃত।

তথ্যসূত্র

রাষ্ট্রপতি ও সেনাপ্রধান কর্তৃক নির্বাচন পেছানোর ঘোষণার গুজব

0

গত ১৩ ডিসেম্বর ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম ইউটিউবে Sabai Sikhi নামের একটি চ্যানেলে ‘নির্বাচন পিছানোর ঘোষণা দিলো রাষ্ট্রপতি ও সেনাপ্রধান’ শীর্ষক শিরোনাম ও ‘এইমাত্র নির্বাচন পিছানোর ঘোষণা দিলো রাষ্ট্রপতি শাহাবুদ্দিন চুপ্পু ও সেনাপ্রধান’ শীর্ষক থাম্বনেইল ব্যবহার করে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।

সেনাপ্রধান

ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি ভিডিওটি প্রায় ২৩ হাজার বার দেখা হয়েছে। এছাড়া ভিডিওটিতে সাড়ে ৬ শত পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, রাষ্ট্রপতি ও সেনাপ্রধান কর্তৃক আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পেছানোর কোনো ঘোষণা দেওয়া হয়নি বরং অধিক ভিউ পাবার আশায় চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিও পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এটি ভিন্ন ভিন্ন কয়েকটি পুরোনো ঘটনার ভিডিও ক্লিপ এবং ছবি নিয়ে তৈরি একটি ভিডিও প্রতিবেদন, যেখানে রাষ্ট্রপতি ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের পুরোনো কিছু কার্যক্রমের দৃশ্য দেখানো হয়।

ভিডিওটি’র সংবাদপাঠ অংশে বলা হয়, “এবার রাষ্ট্রপতির নির্দেশে নির্বাচন পিছানোর ঘোষণা দিলো প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। রাষ্ট্রপতি বলেন, নির্বাচন গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণ মূলক হতে হলে অবশ্যই সকল রাজনৈতিক দলকে অংশগ্রহণ করতে হবে। নইলে জাতীয় নির্বাচন অবশ্যই গ্রহণযোগ্যতা হারাবে।”

উক্ত বিষয়গুলো নিয়ে প্রাসঙ্গিক একাধিক কি ওয়ার্ড সার্চ করেও গণমাধ্যম কিংবা অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে দাবিগুলোর সত্যতা পাওয়া যায়নি।

আলোচিত ভিডিওটির শুরুতে রাষ্ট্রপতির বক্তব্যের অংশটির কিছু স্থিরচিত্র রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে মূলধারার ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম চ্যানেল আই এর ইউটিউব চ্যানেলে ‘দেশকে অপমানিত করার ষড়যন্ত্রকারীরা এখনও দুদকে রয়েছে: রাষ্ট্রপতি’ শীর্ষক শিরোনামে রাষ্ট্রপতির বক্তব্য নিয়ে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিওটির সাথে আলোচিত ভিডিওটির শুরুতে প্রদর্শিত রাষ্ট্রপতির বক্তব্যের অংশের মিল পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner

তবে ভিডিওটির সাথে আলোচিত ভিডিওতে উল্লেখিত দাবির কোনো মিল পাওয়া যায়নি। দূর্নীতি দমন কমিশনের বিষয়ে দেওয়া রাষ্ট্রপতির সাম্প্রতিক বক্তব্য এটি। রাষ্ট্রপতি উক্ত বক্তব্যে নির্বাচন পেছানোর কোনো ঘোষণা দেননি।

পরবর্তীতে আলোচিত ভিডিওতে প্রদর্শিত রাষ্ট্রপতির বক্তব্যের অপর একটি ভিডিও ক্লিপ থেকে কিছু স্থিরচিত্র রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে মূলধারার ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম এটিএন নিউজের ইউটিউব চ্যানেলে চলতি বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি ‘গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য সব বিরোধীদলকে আহবান নতুন রাষ্ট্রপতির’ শীর্ষক শিরোনামে রাষ্ট্রপতির বক্তব্য নিয়ে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: ATN News

এই ভিডিওটির সাথে আলোচিত ভিডিওটি’র রাষ্ট্রপতির বক্তব্যের অংশের হুবহু মিল পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, রাষ্ট্রপতির বক্তব্যের এই ভিডিওটি গত ফেব্রুয়ারিতে তাঁর রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার পরবর্তীতে সময়ের। সেসময় তিনি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের স্বার্থ্যে সব বিরোধীদলকে এগিয়ে আসার আহবান জানান।

অর্থাৎ রাষ্ট্রপতি উক্ত বক্তব্যটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। এছাড়া উক্ত বক্তব্যে তিনি নির্বাচন পেছানোর কোনো ঘোষণা দেননি। তাছাড়া আলোচিত দাবির ভিডিওটি’র শিরোনাম এবং থাম্বনেইলে উল্লেখিত তথ্যের সাথে বিস্তারিত সংবাদপাঠ অংশের তথ্যের অমিল রয়েছে।

অর্থাৎ, উপরোক্ত বিষয়গুলো পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, রাষ্ট্রপতি ও সেনাপ্রধান কর্তৃক নির্বাচন পেছানোর ঘোষণা দেওয়া হয়নি।

মূলত, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন করার দাবিতে বিএনপি-জামায়াতসহ আওয়ামী লীগ সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো দীর্ঘদিন ধরে রাজপথে আন্দোলন করে আসছে। এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা ধরনের তথ্য প্রচার হয়ে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৩ ডিসেম্বর Sabai Sikhi নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ‘নির্বাচন পিছানোর ঘোষণা দিলো রাষ্ট্রপতি ও সেনাপ্রধান’ শীর্ষক শিরোনাম ও ‘এইমাত্র নির্বাচন পিছানোর ঘোষণা দিলো রাষ্ট্রপতি শাহাবুদ্দিন চুপ্পু ও সেনাপ্রধান’ শীর্ষক থাম্বনেইল ব্যবহার করে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে অধিক ভিউ পাবার আশায় ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার কয়েকটি পুরোনো ভিডিও ক্লিপ ও ছবি যুক্ত করে তাতে চটকদার থাম্বনেইল ও শিরোনাম ব্যবহার করে কোনোপ্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। এছাড়া, গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে বিষয়টির সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, পূর্বেও চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে বিভিন্ন ভুয়া তথ্য প্রচারের প্রেক্ষিতে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কয়েকটি প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, রাষ্ট্রপতি ও সেনাপ্রধান কর্তৃক আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পেছানোর ঘোষণা দেওয়া হয়েছে দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভীর নামে ভুয়া মন্তব্য প্রচার

সম্প্রতি, “তারেক জিয়ার মনোনয়ন বানিজ্য নস্যাৎ করতেই বিএনপির দলত্যাগী নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন” শীর্ষক একটি মন্তব্যকে বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভীর মন্তব্য দাবিতে একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

রুহুল কবির

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, “তারেক জিয়ার মনোনয়ন বানিজ্য নস্যাৎ করতেই বিএনপির দলত্যাগী নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন” শীর্ষক কোনো মক্তব্য বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এর জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রদান করেননি প্রকৃতপক্ষে কোনো প্রকার তথ্যসূত্র ছাড়াই একটি ভুয়া মন্তব্যকে রুহুল কবির রিজভীর মন্তব্য দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে রুহুল কবির রিজভীর নামে ছড়ানো মন্তব্যটির সূত্রের খোঁজ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। তবে অনুসন্ধানে দেশীয় কোনো গণমাধ্যমে এমন মন্তব্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

তবে গত ৩০ নভেম্বর Bangladesh Nationalist Party- BNP এর ইউটিউব চ্যানেলে “রুহুল কবির রিজভীর সংবাদ সম্মেলন। 30 November 2023” শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওতে রুহুল কবির রিজভীর পরিহিত পোষাক এবং ব্যাকগ্রাউন্ডের সাথে আলোচিত ফটোকার্ডে ব্যবহৃত ছবির মিল খুঁজে পাওয়া যায়। এ থেকে ধারণা করা হয় যে উক্ত ভিডিও থেকেই একটি স্থিরচিত্র আলোচিত ফটোকার্ডে যুক্ত করে উক্ত মন্তব্যটি প্রচার করা হয়েছে। 

Screenshot Comparison : Rumor Scanner 

পরবর্তীতে উক্ত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ভিডিওতে রুহুল কবির রিজভী আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। উক্ত ভিডিওতে কোথাও বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মনোনয়ন বাণিজ্য নস্যাৎ করতেই বিএনপির দলত্যাগী নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন শীর্ষক কোনো কথা বলেননি। 

মূলত, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বর্তমান সরকারের পদত্যাগ এবং নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন গ্রহণের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে বিএনপি এবং সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে প্রতিদিনই বিভিন্ন ধরনের তথ্য ইন্টারনেটে প্রচারিত হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় তারেক জিয়ার মনোনয়ন বাণিজ্য নস্যাৎ করতেই বিএনপির দলত্যাগী নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন শীর্ষক একটি মন্তব্যকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এর জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর মন্তব্য দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে। তবে রিউমর স্ক্যানার অনুসন্ধানে দেখেছে যে কোনো প্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই রুহুল কবির রিজভীর নামে ভুয়া এই মন্তব্যটি প্রচার করা হয়েছে। 

সুতরাং, ‘তারেক জিয়ার মনোনয়ন বানিজ্য নস্যাৎ করতেই বিএনপির দলত্যাগী নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন’ শীর্ষক একটি মন্তব্য রুহুল কবির রিজভীর মন্তব্য দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ বানোয়াট এবং মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপে মির্জা ফখরুল ইসলামের জামিনের দাবিতে মিথ্যা তথ্য প্রচার 

সম্প্রতি, যুক্তরাষ্ট্রের চাপে ফখরুলের মামলা বাতিল, মুক্তি পেয়ে আসছে মির্জা ফখরুল– শীর্ষক শিরোনাম এবং থাম্বনেইলে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। 

ভিডিওটিতে দাবি করা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের চাপে বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিরুদ্ধে করা মামলা বাতিল হয়েছে এবং তিনি মুক্তি পেয়েছেন।

 মির্জা ফখরুল

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু  ভিডিও পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মুক্তি পাননি এবং যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃপক্ষও তাঁর মুক্তির বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেননি বরং অধিক ভিউ পাবার আশায় পুরোনো একটি ভিডিওর সাথে চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওটিতে একজন আইনজীবী বক্তব্য দিচ্ছেন। ভিডিওটিতে বাংলাদেশের বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ২৪ এর লোগো দেখা যায়। 

সেই লোগোর সূত্র ধরে অনুসন্ধানে চ্যানেল২৪ এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ৩ জানুয়ারি “যেভাবে জামিন পেলেন মির্জা ফখরুল এবং মির্জা আব্বাস” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

ভিডিওটি থেকে জানা যায়, গত বছরের ৭ ডিসেম্বর পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় করা মামলায় কারাবন্দী বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে ছয় মাসের জন্য জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। 

একই তথ্যে সংবাদ প্রকাশ করেছিল দেশের অন্যান্য গণমাধ্যমগুলোও। 
সেগুলো দেখন-

অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিওটিতে থাকা আইনজীবীর বক্তব্যটি সাম্প্রতিক নয় বরং গত ৩ জানুয়ারি কারাবন্দী বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস জামিন পাওয়ার সময়কার। 

Video Comparison by Rumor Scanner

এছাড়া, আলোচিত ভিডিওটির সাথে উক্ত ভিডিওটির হুবহু মিল রয়েছে। 

পরবর্তীতে, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মুক্তি পেয়েছেন কিনা এ বিষয়ে অনুসন্ধান করে রিউমর স্ক্যানার টিম। অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে দৈনিক যুগান্তরে গত ৭ ডিসেম্বর “মির্জা ফখরুলকে জামিন দেননি হাইকোর্ট” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। 

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, প্রধান বিচারপতির বাসায় হামলার ঘটনায় রাজধানীর রমনা থানায় করা মামলায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে জামিন দেননি হাইকোর্ট। 

বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) বিচারপতি মো. সেলিম ও বিচারপতি শাহেদ নূরউদ্দিনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।

পাশাপাশি, আজ (১৩ ডিসেম্বর) প্রথম আলো’র ওয়েবসাইটে “সাত মামলায় মির্জা ফখরুলের জামিন আবেদন” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে পৃথক সাত মামলায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের জামিন আবেদন করা হয়েছে। আজ বুধবার এ আবেদন করা হয় বলে তাঁর আইনজীবী সৈয়দ জয়নুল আবেদীন জানিয়েছেন।

অর্থাৎ, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এখনো মুক্তি পাননি। 

এরপর, বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মুক্তির জন্য যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ নিয়েছে কি না জানতে অনুসন্ধান করে রিউমর স্ক্যানার টিম। অনুসন্ধানের করে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে এসংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

এছাড়া, ঢাকাস্থ যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের ফেসবুক পেজওয়েবসাইটেও এ-সংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

মূলত, গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনার একটি মামলায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুলকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুলিশ। পরবর্তীতে জামিনের জন্য আবেদন করা হলেও তা নাকজ করে দেয় হাইকোর্ট। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের চাপে ফখরুলের মামলা বাতিল, মুক্তি পেয়ে আসছে মির্জা ফখরুল– শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে, রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মুক্তি পাননি এবং যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃপক্ষও তাঁর মুক্তির বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেননি। প্রকৃতপক্ষে অধিক ভিউ পাবার আশায় পুরোনো একটি ভিডিওর সাথে চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

সুতরাং, যুক্তরাষ্ট্রের চাপে বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মুক্তি হয়েছে দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র