Home Blog Page 571

বেগম খালেদা জিয়ার ৬০ এর দশকের ছবি দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত ছবিটি এডিটেড

0

সম্প্রতি, বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার ৬০ এর দশকের ছবি দাবিতে একটি স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

খালেদা জিয়া

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু ছবি দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার ৬০ এর দশকের ছবি দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ছবিটি আসল নয় বরং ইন্টারনেট থেকে হেদিল মেজরি নামক তিউনিসিয়ার একজন নাগরিকের একটি ছবি সংগ্রহ করে তা ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় এডিটের মাধ্যমে বেগম খালেদা জিয়ার মুখমণ্ডল বসিয়ে উক্ত ছবিটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার ৬০ এর দশকের ছবি দাবিতে প্রচারিত স্ক্রিনশটটি পর্যবেক্ষণ করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ফেসবুক পেজের নাম দেখতে পাওয়া যায়।

Screenshot from Facebook

তবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ফেসবুক পেজে ৬০ এর দশকে বেগম খালেদা জিয়ার এমন ছবি খুঁজে পাওয়া যায়নি।

ছবিটির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে Hedil Mejri নামক ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে গত ৫ অক্টোবরে প্রকাশিত একটি ছবির সাথে উক্ত দাবিতে প্রচারিত ছবির মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Image Comparison: Rumor Scanner

Hedil Mejri নামক ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টটির বিস্তারিত তথ্য লক্ষ্য করে দেখা যায়, তিনি তিউনিসিয়া দেশের নাগরিক।

একই দিনে হেদিল মেজরি তার ফেসবুক অ্যাকউন্টেও একই ছবিটি প্রকাশ করেন।

Screenshot from Facebook

অর্থাৎ, বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার ৬০ এর দশকের ছবি দাবিতে প্রচারিত ছবিটি আসল নয়।

মূলত, গত ৫ অক্টোবরে হেদিল মেজরি নামক একজন তিউনিসিয়ান নাগরিক তার ব্যক্তিগত ইনস্টাগ্রাম এবং ফেসবুক অ্যাকাউন্টে নিজের একটি ছবি প্রকাশ করেন। তবে সম্প্রতি হেদিল মেজরির সেই ছবিটি ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহ করে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় এডিট করে ঐ ছবিতে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুখমণ্ডলের ছবি বসিয়ে বেগম জিয়ার ৬০ এর দশকের ছবি দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, পূর্বে বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিদের ছবি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় এডিট করে প্রচার করা হলে সেসময় সেগুলো শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কয়েকটি প্রতিবেদন দেখুন:

সুতরাং, বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার ৬০ এর দশকের ছবি দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত এই ছবিটি এডিটেড বা বিকৃত। 

তথ্যসূত্র

ভিডিওটি বিসিবি সভাপতির পদত্যাগের দাবিতে মোটরসাইকেল নিয়ে আন্দোলনের নয়

সম্প্রতি, “পাপনের পদত্যাগের  দাবিতে ৫০০ মোটরসাইকেল নিয়ে আন্দোলন করলো ক্রিকেট প্রেমিকরা” শীর্ষক শিরোনামে মোটরসাইকেল শোভাযাত্রার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

 বিসিবি

ফেসবুকে প্রচারিত এরূপ ভিডিও দেখুন এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের পদত্যাগের দাবিতে মোটরসাইকেল নিয়ে মিছিলের ভিডিওটি ভিন্ন ঘটনার। প্রকৃতপক্ষে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১৯ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী আশুলিয়া আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের মোটরসাইকেল শোভাযাত্রার ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।

আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির কিছু স্থিরচিত্র রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে গত ১৫ অক্টোবর ‘প্রতিদিন দেশের খবর’ নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলে ‘ঢাকা১৯ আসনে নৌকার মনোনয়ন প্রত‍্যাশী আশুলিয়া থানা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুলের মোটর শোভাযাত্রা’ শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ভিডিওটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির মিল খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার টিম। পাশাপাশি ভিডিওটিতে আওয়ামী লীগের দলীয় পতাকা সদৃশ পতাকাও দেখা যায়। 

এছাড়া  ভিডিওটির শিরোনাম  থেকে জানা যায়, এটি আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুলের  ঢাকা-১৯ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশা করে উক্ত মোটরসাইকেল শোভাযাত্রার আয়োজন করেন। 

Video Comparison: Rumor Scanner

পরবর্তীতে এই তথ্যের সূত্র ধরে মূলধারার গণমাধ্যম নয়া দিগন্তের ওয়েবসাইটে গত ১৫ অক্টোবর  “ঢাকা-১৯ আসন নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশী সাইফুলের মোটর শোভাযাত্রা” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ঢাকা-১৯ আসনে নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশী আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ সাইফুল ইসলামের পক্ষে সাভার-আশুলিয়া এলাকায় বিশাল মোটর শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। আশুলিয়ার পল্লী বিদ্যুৎ পলাশবাড়ী এলাকা থেকে শোভাযাত্রাটি শুরু হয় এবং বিভিন্ন স্থান থেকে ২৫ শতাধিক মোটরসাইকেল ও ৩০০ মাইক্রোবাস নিয়ে হাজার হাজার নেতাকর্মী এতে অংশগ্রহণ করে।

পরবর্তীতে আলোচিত ভিডিওটিতেঁ থাকা নাজমুল হাসান পাপনের বিরুদ্ধে দেওয়া স্লোগান নিয়ে  অনুসন্ধান চালায় রিউমর স্ক্যানার টিম।

প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে Habibur Rahman Sawon নামের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ২০১৯ সালের ১ নভেম্বর ‘#পাপনের দুই গালে, জুতা মারো তালে তালে স্লোগানে উত্তাল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।’ শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Habibur Rahman Sawon Facebook post 

উক্ত ভিডিওটিতে দেওয়া স্লোগানের সাথে আলোচিত ভিডিওটিতে থাকা স্লোগানের মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

পরবর্তীতে মূলধারার গণমাধ্যম দৈনিক ইত্তেফাকের ওয়েবসাইটে ২০১৯ সালের ৩০অক্টোবর “পাপনের পদত্যাগ দাবিতে রাবি শিক্ষার্থীদের মহাসড়ক অবরোধ” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের শাস্তির প্রতিবাদে ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের পদত্যাগের দাবিতে ২০১৯ সালের অক্টোবরে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। 

এ থেকে স্পষ্টতই প্রতীয়মান হয় যে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মিছিলের স্লোগানের অডিওকে আশুলিয়া আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের মোটরসাইকেল শোভাযাত্রার ভিডিওয়ের সাথে জুড়ে দিয়ে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।

মূলত, গত ১৪ অক্টোবর আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং ঢাকা-১৯ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম আশুলিয়া এলাকায় মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা করেন। তার এই মোটরসাইকেল শোভাযাত্রার ভিডিওর সাথে ২০১৯ সালের অক্টোবরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের বিরুদ্ধে সংগঠিত একটি বিক্ষোভ মিছিলের অডিও জুড়ে দিয়ে আলোচিত দাবিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। 

উল্লেখ্য, পূর্বেও বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনকে জড়িয়ে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে পড়লে সে বিষয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

সুতরাং, আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং ঢাকা-১৯ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের একটি মোটর সাইকেল শোভাযাত্রার ভিডিওকে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের পদত্যাগের দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ইসরায়েলের সেনাপ্রধান আটকের দাবিটি মিথ্যা, ভিডিওটি এল সালভাদরের

চলমান ফিলিস্তিনের হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যকার সংঘাতকে কেন্দ্র করে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। এক ব্যক্তিকে সামরিক পোশাক পরিহিত কিছু ব্যক্তি কর্তৃক আটক করে নিয়ে যাওয়ার এই ভিডিওকে ইসরায়েলের সেনাপ্রধান আটকের দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে। 

সেনাপ্রধান

উক্ত দাবিতে ফেসবুকের কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

একই দাবিতে ইউটিউবের ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।  

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ইসরায়েলের সেনাপ্রধান আটকের দাবিটি সঠিক নয় বরং এল সালভাদরে গত সেপ্টেম্বরে এক মেয়েকে হত্যার অভিযোগে আটককৃত দেশটির আর্মড ফোর্সের এক সার্জেন্টের ভিডিও ব্যবহার করে উক্ত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে ভিডিওটির কিছু কী ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ইন্সটাগ্রামে এল সালভাদরের সংবাদমাধ্যম El Informante SV এর অ্যাকাউন্টে গত ২৯ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত একটি পোস্ট খুঁজে পেয়েছে রিউমর স্ক্যানার টিম। এই পোস্ট থেকে জানা যাচ্ছে, এল সালভাদরের ন্যাশনাল সিভিল পুলিশ দেশটির আর্মড ফোর্স সার্জন হেক্টর ওভিডিও আলভারাডোসহ আরও পাঁচ সৈন্যকে দেশটির লা লিবারেটেড শহরের কোর্টে পাঠিয়েছে। এদের বিরুদ্ধে ১৩ বছরের এক মেয়েকে ধর্ষণসহ একাধিক অভিযোগ আনা হয়েছে। এই পোস্টে সংযুক্ত আটক এক ব্যক্তির ছবির সাথে আলোচিত দাবিতে ছড়ানো ভিডিওতে থাকা ব্যক্তির দৃশ্যমান মিল লক্ষ্য করা গেছে। 

Screenshot: Instagram 

আমরা এই ব্যক্তির পরিচয় নিশ্চিত হতে ইনস্টাগ্রাম পোস্টে উল্লিখিত সার্জেন্টের নাম ধরে সার্চ করে দেখতে পেয়েছি, ইনিই হেক্টর ওভিডিও আলভারাডো। 

পরবর্তীতে আরো অনুসন্ধান করে এল সালভাদরের ন্যাশনাল সিভিল পুলিশের অফিশিয়াল এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে গত ২৯ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত একটি টুইটে আলভারাডোর আটকের ছবিটি সহ আলোচিত ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: X

অর্থাৎ, প্রচারিত ভিডিওটি ইসরায়েলের নয়, এল সালভাদরের। 

রিউমর স্ক্যানার টিম অনুসন্ধানে দেখেছে, ইসরায়েলের আর্মি (আইডিএফ) প্রধান হার্জি হালেভি আটকের কোনো খবর গণমাধ্যমে আসেনি। বরং তার বিভিন্ন কার্যক্রমের বিষয়ে নিয়মিতই দেশটির সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হচ্ছে। দেখুন এখানে, এখানে। 

মূলত, গত ০৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ফিলিস্তিনের হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যকার সংঘাতকে কেন্দ্র করে এক ব্যক্তিকে সামরিক পোশাক পরিহিত কিছু ব্যক্তি কর্তৃক আটক করে নিয়ে যাওয়ার একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দিয়ে দাবি করা হচ্ছে, এটি ইসরায়েলের সেনাপ্রধান আটকের দৃশ্য। কিন্তু রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, ভিডিওতে দেখানো ব্যক্তিটির নাম হেক্টর ওভিডিও আলভারাডো, যিনি এল সালভাদরের আর্মড ফোর্সের একজন সার্জেন্ট। গত সেপ্টেম্বরে এক মেয়েকে হত্যার অভিযোগে তাকে আটকের দৃশ্যকে আলোচিত দাবিটিতে প্রচার করা হয়েছে। তাছাড়া, ইসরায়েলের আর্মি (আইডিএফ) প্রধান আটক হননি। 

প্রসঙ্গত, চলমান ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের সংঘাত ইস্যুতে একাধিক ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে একাধিক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার ৷

সুতরাং, এল সালভাদরের আর্মড ফোর্সের একজন সার্জেন্টকে আটকের ভিডিওকে ইসরায়েলের সেনাপ্রধান আটকের দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

পেপসির পূর্ণরূপ pay every penny to save Israel নয়

0

দীর্ঘদিন ধরে “পেপসি মানে ‘Pay every penny to save Israel” শীর্ষক একটি দাবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে। পাশাপাশি এটিও দাবি করা হয় যে, ‘Pay Every Penny to Create Israel’ (PEPCI) থেকে কালের বিবর্তনে পেপসি ( PEPSI) Pay Every Penny to Save Israel হয়েছে। অর্থাৎ ‘ইসরাইল বাঁচাতে প্রতি পয়সা অনুদান করুন’, ভবিষ্যতে হয়তো অন্য কিছু হতে পারে।

পেপসি

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে পুরোনো কিছু ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে (২০২২), এখানে (২০২১), এখানে (২০২০), এখানে (২০১৯), এখানে (২০১৮), এখানে (২০১৭), এখানে (২০১৬), এখানে (২০১৫), এখানে (২০১৪), এখানে (২০১৩), এখানে (২০১২), এখানে (২০১১), এখানে (২০১০) এবং এখানে (২০০৯)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের পেপসির ইতিহাস, পানীয়টির সঙ্গে ইহুদি-ইসরায়েলের সম্পর্ক অনুসন্ধানে দেখা যায়, পেপসির পূর্ণরূপ দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে প্রচার হয়ে আসা তথ্যটি ভিত্তিহীন। প্রকৃতপক্ষে পেপসি (Pepsi) শব্দটির কোনো পূর্ণরূপ নেই। এছাড়া কোমল পানীয়টির নামের বানানও (Pepci) থেকে Pepsi হয়নি। 

পেপসির পূর্ণরূপ সংক্রান্ত দাবিটির সূত্রপাত সম্পর্কে যা জানা যায়

পেপসির পূর্ণরূপ অর্থাৎ ‘Pay every penny to save Israel’ শীর্ষক দাবিটির সূত্রপাত অনুসন্ধানে আমেরিকা ভিত্তিক পলিসি ইনস্টিটিউট মিডল ইস্ট ফোরামের ওয়েবসাইটে ২০১৯ সালের ১৪ জানুয়ারি ‘Really, What Happened to Your ‘Pay Every Pence to Save Israel?’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

প্রতিবেদনটি লিখেছেন তুরস্কের শীর্ষস্থানীয় সাংবাদিক ও মিডল ইস্ট ফোরামের ফেলো বুরাক বেকদিল।

তিনি তার এই প্রতিবেদনে পেপসির এই পূর্ণরূপের দাবিটিকে কন্সপাইরেসি থিওরি হিসেবে দাবি করে লিখেন, পেপসির পূর্ণরূপের এই থিওরিটি তিনি যখন কিশোর ছিলেন অর্থাৎ ১৯৮০ এর দশকে প্রথম শুনেন।

তিনি আরও লিখেন, ১৯৯০ এর দশকে তিনি যখন ইংল্যান্ডে অধ্যয়নরত ছিলেন, তখন তার আরব ও অন্যান্য মুসলমান বন্ধুরা তাকে পেপসি কেনা থেকে বিরত থাকতে সতর্ক করতেন। নয়তো তাকে ইহুদিবাদী হিসেবে দেখা হতে পারে এবং এর ফলাফল ভোগ করতে হতে পারে।

পাশাপাশি প্রভাবশালী ইহুদি পত্রিকা দ্যা জিউস ক্রনিকলে গত ২২ সেপ্টেম্বর ‘From a Zionist storm to Mossad sharks: What are the most inventive antisemitic theories? শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকেও জানা যায়, পেপসির পূর্ণরূপ (Pay Every Penny Save Israel) ধারণাটি অন্তত ১৯৮০ এর দশক থেকে বিদ্যমান। পেপসির এই ব্যাখ্যাটি প্রাথমিকভাবে আরব বিশ্বের স্কুল শিক্ষার্থীদের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। পরবর্তীতে এটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী, ইহুদি রাষ্ট্র বিরোধী এক্টিভিস্ট, তুর্কি সাংবাদিক, হামাস সদস্য এবং  আরব টিভি প্রোগ্রামগুলোতেও ছড়িয়ে পড়ে।

পরবর্তী অনুসন্ধানে মিডল ইস্ট মিডিয়া রিসার্চ ইন্সটিটিউটের ওয়েবসাইটে ২০০৮ সালের ২৩ এপ্রিল “Hamas MP Salem Salamah: PEPSI Stands for “Pay Every Pence to Save Israel” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনের সাথে সংযুক্ত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot from Memri Website

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, ২০০৮ সালের ২৩ এপ্রিল আল-আকসা টেলিভিশনে প্রচারিত একটি সাক্ষাৎকারে হামাসের এমপি সালেম সালামাহ বলেন, পেপসিকোলা বিশ্বজুড়ে পরিচিত একটি কোম্পানি। পেপসির পূর্ণরূপ হচ্ছে Pay every pence to save Israel। মুসলমানদেরও কি এমন কোনো ফান্ড থাকা উচিত না? যার মাধ্যমে আল আকসা মসজিদকে রক্ষা করা যাবে?’

একই ওয়েবসাইটে ২০০৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি “Egyptian Cleric Hazem Abu Ismail Calls to Boycott PEPSI: Name Stands for “Pay Every Penny to Save Israel” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনের সাথে সংযুক্ত আরও একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot from Memri Website

এই প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, মিশরীয় ধর্মগুরু হাজেম আবু ইসমাইল মিশরীয় আল নাস টিভি চ্যানেলে প্রচারিত একটি অনুষ্ঠানে পেপসির পূর্ণরূপ Pay every penny to save Israel’ বলে দাবি করেন। 

তবে এসব দাবির পক্ষে তাদের পক্ষ থেকে কোনো তথ্যসূত্র উল্লেখ করা হয়নি।

পেপসির কি কোনো পূর্ণরূপ আছে? 

অনুসন্ধানের এ পর্যায়ে রিউমর স্ক্যানার টিম পেপসি প্রতিষ্ঠার ইতিহাস, এর নামকরণ সম্পর্কে জানার চেষ্টা করে। 

এ নিয়ে পেপসি স্টোরের ওয়েবসাইটে ‘THE BIRTHPLACE OF PEPSI‘ শীর্ষক শিরোনামে পেপসি প্রতিষ্ঠার ধারাবাহিক ইতিহাস খুঁজে পাওয়া যায়।

এখান  থেকে জানা যায়, ১৮৯৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলাইনার নিউ বার্ন শহরে স্থানীয় ফার্মাসিস্ট ক্যালেব ব্র্যাডহাম পেপসি কোলার মূল ফর্মুলা উদ্ভাবন করেন। প্রথমে এটিকে ‘ব্র‍্যাড’স ড্রিংক’ নামে ডাকা হতো। এটি তৈরি করা হয়েছিল চিনি, পানি, ক্যারামেল, কোলা নাটস ইত্যাদি উপকরণ দিয়ে।

ওয়েবসাইটটিতে পেপসি শব্দের পূর্ণরূপ সম্পর্কে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। পাশাপাশি ওয়েবসাইটটি থেকে কোমল পানীয়টির নাম Pepci থেকে Pepsi হওয়া প্রসঙ্গেও কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে এখান থেকে পেপসির বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন স্লোগান বা থিম লাইন (প্রতিপাদ্য) সম্পর্কে জানা যায়। 

যেমন, ১৯০৩ সালে পেপসির থিম লাইন বা প্রতিপাদ্য  ছিলো ‘Exhilarating, Invigorating, Aids Digestion’ বা “আনন্দদায়ক, উদ্দীপক, হজমে সাহায্যকারী”।

১৯০৬ সালে পেপসির স্লোগান ছিল “The Original Pure Food Drink বা প্রকৃত খাবার পানীয়”।

১৯০৯ সালে কার রেসের পথিকৃৎ বার্নি ওল্ডফিল্ড সংবাদপত্রের বিজ্ঞাপনে পেপসিকে ‘A bully drink…refreshing, invigorating, a fine bracer before a race’ হিসেবে উপস্থাপন করেন।

১৯২০ সালে পেপসির থিম লাইন ছিল “Drink Pepsi-Cola, it will satisfy you” বা ‘পেপসি-কোলা পান করুন, এটি আপনাকে সন্তুষ্ট করবে’ করা হয়। 

পরবর্তীতে পেপসির নাম সম্পর্কে অনুসন্ধানে পেপসিকোর ওয়েবসাইটের FAQ বিভাগ থেকে জানা যায়, পেপসির উদ্ভাবক প্রথমে এটি নিজের নামেই অর্থাৎ ‘ব্র‍্যাড’স ড্রিংক’ হিসেবে বিক্রি করতেন। পরবর্তীতে তিনি স্থানীয় একজন বাজার প্রতিযোগী থেকে পেপ-কোলা (Pep-Cola) নামটি নেন এবং এটিকে পেপসি-কোলা (Pepsi-Cola) নামকরণ করেন।

পেপসির এই নামকরণ প্রসঙ্গে কোম্পানিটির নিজস্ব ব্যাখ্যার বাইরে আরেকটি মত পাওয়া যায়। 

এই মতানুসারে ব্র্যাডহাম যেহেতু একজন ফার্মাসিস্ট ছিলেন, তাই তিনি তার পানীয়টির স্বাস্থ্যগত দিক সম্পর্কেও সচেতন ছিলেন। আর তাই এটি তৈরিতে এনজাইম পেপসিন ও কোলা নাট অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন। আর এই উপাদানগুলোর ফলেই পানীয়টির এমন নামকরণ করা হয়ে থাকতে পারে। 

পেপসির উদ্ভাবকের পেশা বিশ্লেষণে এই মতটিও গ্রহণযোগ্য বলে প্রতীয়মান হয়। 

পেপসির এই পর্যন্ত ইতিহাস, নামকরণ, প্রচার-প্রচারণা বিশ্লেষণে এর সঙ্গে ইসরায়েলের কোনো সম্পর্কের যোগসূত্র পাওয়া যায়নি। যার মাধ্যমে প্রমাণ করা যায় যে, পেপসির পূর্ণরূপ ‘Pay every penny to Create Israel থেকে ‘Pay every penny to save Israel এ বিবর্তিত হয়েছে।

পেপসির পাশাপাশি ইসরায়েল ও ইহুদি সম্পর্কিত ইতিহাস বিশ্লেষণ করেও দাবিটির পক্ষে কোনো নির্ভরযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। 

পেপসি ও ইসরায়েল রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাকাল

ইতোপূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে যে, পেপসির যাত্রা শুরু হয়েছে ১৮৯৮ সালে। 

অপরদিকে ইতিহাস বিষয়ক ওয়েবসাইট History.com এর  “This Day In History: May 14” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি নিবন্ধ থেকে জানা যায়, ১৯৪৮ সালের ১৪ মে ইহুদিদের সংগঠন জিউস এজেন্সির চেয়ারম্যান ডেভিড বেন- গুরিয়ন ২ হাজার বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো ইসরায়েল রাষ্ট্রের ঘোষণা দেন। 

অর্থাৎ, ইসরায়েল রাষ্ট্রের জন্মের অন্তত ৫০ বছর পূর্বেই পেপসির জন্ম হয়। 

অপরদিকে, ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হলেও পেপসি ১৯৯২ সালের আগ পর্যন্ত ইসরায়েলে তাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করেনি। 

এছাড়া একই সময়ে তৎকালীন আরব লীগ ইহুদীদেরকে অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল করার জন্য প্যালেস্টাইনে ইহুদী অধ্যুষিত এলাকায় বয়কট কর্মসূচির ডাক দেয়। 

সেই সময় ইসরায়েলে কোকাকোলা খুব জনপ্রিয় থাকায় এই বয়কটের আওতায় আরব দেশগুলো কোকাকোলা বর্জন করে। তবে ইসরায়েলে ব্যবসা না করা প্রসঙ্গে পেপসির ব্যাখ্যা ছিল, কোনো রাজনৈতিক কারণে নয়। ইসরায়েলি বাজার খুব ছোট হওয়ায় সেখানে তারা ব্যবসা সম্প্রসারণ করেনি।

আবার দেশটিতে ব্যবসা করতে গিয়ে ইহুদী রক্ষণশীল গোষ্ঠী ‘গান-বাজনা-যৌনতা দিয়ে যুবসমাজকে ধ্বংস’ করার অভিযোগ আনে কোম্পানিটির উপর এবং সেই কারণে সাময়িক সময়ের জন্য পেপসির ‘কশার’ (ইহুদীদের জন্য হালাল) লাইসেন্স বাতিল করে দেওয়া হয়

তবে কেবল ইসরায়েলেই নয়, পেপসি তার জন্মস্থান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই ইহুদিদের প্রতিবাদের মুখে পড়েছিল ১৯৭৩ সালে। 

যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েশিভা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পত্রিকা The Commentator এ  ১৯৭৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি ‘Jewish organizations demand boycott of pepsi products’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিতে একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, তৎকালীন সোভিয়েত ইহুদিদের উপর চলমান নিপীড়ন রোধে রাশিয়ান সরকারের উপর চাপ তৈরি করতে যুক্তরাষ্ট্রের ইহুদিদের বেশ কয়েকটি সংগঠন পেপসিকো ও পেপসি কোলার পণ্য বয়কটের ডাক দেয়। কারণ, সে সময়ে পেপসিকো সোভিয়েত ইউনিয়নের সাথে মিলিয়ন ডলারের ব্যবসায় চুক্তি করেছিল।

Screenshot from Yeshiva University Website

ইতিহাসের এসব পাঠ থেকেও কিছু সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যায়। যথা: 

  • ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আগে থেকেই যেহেতু পেপসির অস্তিত্ব ছিল, তাই একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আগেই সেটিকে রক্ষার উদ্দেশ্যে কোনো ক্যাম্পেইন পরিচালিত হওয়া বাস্তবসম্মত নয়। বরং ক্যাম্পেইনটির উদ্দেশ্য ইসরায়েল রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা কেন্দ্রিক হলে দাবিটি আরও যুক্তিসঙ্গত হতো। তবে এক্ষেত্রে  Pepsi এর বানান Pepci হওয়া প্রয়োজন। কিন্তু পেপসির নামকরণের ইতিহাস থেকে দেখা যায়, পেপসি (Pepsi) এর বানান শুরু থেকেই এক রকম। কোনো পরিবর্তন হয়নি।
  • পেপসির দাবিকৃত পূর্ণরূপটি সঠিক হলে ইসরায়েল রাষ্ট্র বা ইহুদিদের সাথে পেপসির সম্পর্ক হতো হৃদ্যতাপূর্ণ ও কোনোরূপ স্বার্থহীন। কিন্তু ইতিহাস পর্যালোচনা করে এর বিপরীত চিত্রই পাওয়া যায়। 

মূলত, ১৮৯৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলাইনার নিউ বার্ন শহরে স্থানীয় ফার্মাসিস্ট ক্যালেব ব্র্যাডহামের হাত ধরে যাত্রা শুরু করে কোমল পানীয় পেপসি। শুরুতে পানীয়টি তার উদ্ভাবকের নামে বাজারে এলেও পরবর্তীতে নাম পরিবর্তন করে পেপসি কোলা (Pepsi-Cola) ধারণ করে। প্রতিষ্ঠানটি তাদের এ নামের কোনো পূর্ণরূপ প্রকাশ বা ব্যাখ্যা না করলেও দীর্ঘদিন ধরেই প্রচার হয়ে আসছে, পেপসি শব্দের পূর্ণরূপ ‘Pay every penny to save Israel।’ এ নিয়ে অনুসন্ধানে দেখা যায়, ১৯৮০ এর দশক থেকে পেপসি শব্দের এই পূর্ণরূপটি লোকমুখে প্রচার হয়ে আসছে। যা ইন্টারনেট ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বর্তমান যুগে এসে আরও ব্যাপকতা লাভ করেছে। তবে পেপসির ইতিহাস ও এর সঙ্গে ইহুদি, ইসরায়েল রাষ্ট্রের সম্পর্ক পর্যালোচনায় দেখা যায়, পেপসি শব্দের দাবিকৃত পূর্ণরূপটি কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই সম্পূর্ণ ভিত্তিহীনভাবে প্রচার হয়ে আসছে। পাশাপাশি ১৮৯৮ সালে পেপসির যখন উদ্ভাবন হয় তখন ইসরায়েল রাষ্ট্রের জন্মও হয়নি। আবার ইসরায়েল রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠারও দীর্ঘদিন পরে পেপসি ইসরায়েলে ব্যবসা শুরু করেছে। যা পেপসি শব্দের দাবিকৃত পূর্ণরূপটির সাথে সংগতিপূর্ণ নয়। 

প্রসঙ্গত, ইসরায়েলি ভুয়া পণ্যের তালিকায় পেপসিকে যুক্ত করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হলে বিষয়টি চিহ্নিত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার টিম।

সুতরাং, কোমল পানীয় কোম্পানি পেপসির পূর্ণরূপ ‘Pay every penny to save Israel’ শীর্ষক দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ভিডিওটি জর্ডান থেকে কোনো সৈন্যের ফিলিস্তিনে প্রবেশের নয় 

সম্প্রতি, “জর্দার থেকে মুজাহিদের দল ঢোকার চেষ্টা করছে ফিলিস্তিনের পক্ষে যুদ্ধ করতে আল্লাহ ওদের সহায় হবেন ইনশাআল্লাহ” শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে, জর্ডান থেকে সৈন্যেরা ফিলিস্তিনের পক্ষে যুদ্ধ করার জন্য ফিলিস্তিনে প্রবেশের চেষ্টা করছে। 

জর্ডান

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ফিলিস্তিনের পক্ষে যুদ্ধ করার জন্য জর্ডান থেকে মুজাহিদদের ফিলিস্তিনে প্রবেশের দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি ভিন্ন ঘটনার। প্রকৃতপক্ষে এটি ইসরায়েলের নারী সেনাদের ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরের ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে থাকা জর্ডান ভ্যালির বাসিন্দা এবং দর্শনার্থীদের সাথে বাকবিতন্ডার সময়কার একটি ভিডিও। 

এ নিয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির কিছু স্থিরচিত্র রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে গত ৩০ জুন ‘KUNAL BISWAS – NEWS, Technology, Shorts’ নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলে “Fearless Israeli Woman Operatives” শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত ভিডিওটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

Video Comparison : Rumor Scanner 

উক্ত ভিডিওটির বিস্তারিত বর্ণনায় বলা হয়, জর্ডান ভ্যালির আইন সাককাউটে আরব এবং ইসরায়েল নারী সেনাদের মধ্যে সংঘর্ষ। পরবর্তীতে উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে অনুসন্ধানে গত ৩০ জুন ‘Younis Tirawi‘ নামক ফিলিস্তিন সম্পর্কিত বিষয়ে কর্মরত একজন সাংবাদিকের এক্স অ্যাকাউন্টে (সাবেক টুইটার) প্রদত্ত একটি টুইটে মূল ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Younis Tirawi X 

উক্ত টুইটটিতে থাকা বর্ণনা থেকে জানা যায়, জর্ডান ভ্যালিতে ইসরায়েল বসতি স্থাপনকারীদের সাথে টুইটকারী সাংবাদিকের বন্ধু এবং জর্ডান ভ্যালি অ্যাক্টিভিস্ট আয়মান ঘ্রায়েব এর মধ্যে সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে ইসরায়েলের নারী সেনাদের জর্ডান ভ্যালির বাসিন্দা এবং দর্শনার্থীদের সাথে বাকবিতন্ডা শুরু হয়।

অর্থাৎ, ভিডিওটি জুন মাস থেকেই ইন্টারনেটে বিদ্যমান এবং এর প্রেক্ষাপটও ভিন্ন। অপরদিকে চলমান ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত শুরু হয় গত ৭ অক্টোবর থেকে।

মূলত, মধ্যপ্রাচ্যের পশ্চিম তীরে অবস্থিত জর্ডান ভ্যালি ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনের বিরোধপূর্ণ একটি অঞ্চল। জর্ডান ভ্যালিতে গত ৩০ জুন এইন সাককাউটের বাসিন্দা এবং স্থানীয় জর্ডান অ্যাক্টিভিস্টের সাথে  ইসরায়েলের বসতি স্থাপনকারীদের সংঘর্ষের জেড় ধরে ইসরায়েল নারী সেনাদের বাকবিতন্ডা শুরু হয়। ঐ ঘটনার ধারণকৃত একটি দৃশ্যকেই সম্প্রতি জর্ডান থেকে মুজাহিদের দল ফিলিস্তিনিদের পক্ষে যুদ্ধ করতে ফিলিস্তিনে ঢোকার চেষ্টা করছে দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে। 

সুতরাং, গত জুনে ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে থাকা জর্ডান ভ্যালিতে ইহুদি বসতি স্থাপনকারী, সেখানে ঘুরতে আসা দর্শনার্থী ও ইসরায়েলি সেনাদের মধ্যে বাকবিতন্ডার একটি ভিডিওকে জর্ডান থেকে মুজাহিদদের ফিলিস্তিনের পক্ষে যুদ্ধ করতে আসার দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে যা মিথ্যা।  

তথ্যসূত্র

ইরাকের মহররমের ভিডিওতে ছাত্রদলের স্লোগানের অডিও যুক্ত করে প্রচার

সম্প্রতি, “কে বলেরে জিয়া নাই, জিয়া সারা বাংলায়। জিয়া সারা বাংলায়, কে বলেরে জিয়া নাই। বাংলাদেশের অপর নাম, জিয়াউর রহমান। জিয়াউর রহমান, বাংলাদেশের অপর নাম” শীর্ষক স্লোগান যুক্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

ছাত্রদ

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, “কে বলেরে জিয়া নাই, জিয়া সারা বাংলায়। জিয়া সারা বাংলায়, কে বলেরে জিয়া নাই। বাংলাদেশের অপর নাম, জিয়াউর রহমান। জিয়াউর রহমান, বাংলাদেশের অপর নাম” শীর্ষক স্লোগান যুক্ত এই ভিডিওটি আসল নয়। প্রকৃতপক্ষে, ইরাকের সামাওয়া শহরে অনুষ্ঠিত মহররমের শোক মিছিলের একটি ভিডিওতে ছাত্রদলের স্লোগান যুক্ত করে উক্ত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

ভিডিও যাচাই

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটির কিছু স্থিরচিত্র রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে matozargo22 নামক একটি টিকটক অ্যাকাউন্টে ‘mubarak manzoor jan’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, জিয়াউর রহমানের নামে স্লোগান সম্বলিত আলোচিত ভিডিওটির সাথে এই ভিডিওর দৃশ্যের হুবহু মিল রয়েছে। তবে ভিডিওটিতে কোথাও জিয়াউর রহমানের নামে স্লোগান শুনতে পাওয়া যায়নি। বরং ভিন্ন একটি ভাষার স্লোগান শুনতে পাওয়া যায়।

পরবর্তীতে, প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে Shia Kahani شیعہ کہانی নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে ২০২১ সালের ১৮ আগস্ট Hilla, Iraq Main Juloos e Aza Ka Manzar!! শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত আরেকটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot from Facebook

উক্ত ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ক্যাপশনে ভিডিওটিকে ইরাকের ভিডিও বলে দাবি করা হয়েছে এবং আলোচিত ভিডিওটির সাথে এই ভিডিওটির মিল রয়েছে। তবে দুইটি ভিডিও একই স্থানের হলেও ভিডিও দুইটি ভিন্নকোণ থেকে ধারণ করা। আলোচিত ভিডিওতে দেখতে পাওয়া ভবনটিকে উক্ত ভিডিওটিতেও দেখা যাচ্ছে কিন্তু এখানে ভবনটিকে কিছুটা দূরে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে।

Image Comparison: Rumor Scanner

ভিডিওটি ইরাকের কিনা তা নিশ্চিত হতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ প্রক্রিয়ায় অনুসন্ধান করে রিউমর স্ক্যানার টিম। অনুসন্ধানে ازهر নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে গত ১৭ আগস্টرفعت راس اهل السماوه موكب الاحزان শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot from Youtube

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওর হুবহু মিল রয়েছে। এছাড়া, ভিডিওটির ১৯ সেকেন্ড থেকে পরবর্তী সময় পর্যন্ত ‘ইয়া আব্বাস, ইয়া আব্বাস’ স্লোগান দিতে শোনা যায়। 

পরবর্তীতে, ভিডিওটির শিরোনাম ইংরেজিতে অনুবাদ করে ‎You raised the head of the people of Samawa procession of sorrows‎ পাওয়া যায়। অর্থাৎ, ‘ইয়া আব্বাস, ইয়া আব্বাস’ বলে স্লোগান দেওয়া শোকের মিছিলের ভিডিওটি ইরাকের Samawah শহরের। যা কারবালা থেকে ২৪০ কিলোমিটার দূরে এবং ইউফ্রেটিস নদীর তীরে অবস্থিত।

Screenshot from Youtube

এছাড়া, ستوريات بنو 23 নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ২৩ জুলাই رفعت راس اهل السماوة????❤️، موكب الاحزان، ستوريات حسينيه محرم ستوريات انستا بدون حقوق شاشة سوداء (অনুবাদ- I raised the head of the people of Samawa ????❤️, procession of sorrows, Husseiniya Muharram stories, Instagram stories without rights, black screen) শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত ঐ একই ভিডিও থেকে একই তথ্য জানা যায়।  

অডিও যাচাই

পরবর্তীতে আলোচিত ভিডিওর অডিওর অর্থাৎ স্লোগানের উৎস অনুসন্ধান করে রিউমর স্ক্যানার টিম। অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে Sakibur Rahman নামের একটি ফেসবুক আইডিতে গত ৮ আগস্ট “কে বলেরে জিয়া নাই জিয়া সারা বাংলাই মুক্তিযুদ্ধের অপর নাম জিয়াউর রহমান” শীর্ষক শিরোনাম প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot from Facebook

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওর স্লোগানের সাথে উক্ত ভিডিওর শুরু থেকে ১২ সেকেন্ড পর্যন্ত স্লোগানের হুবহু মিল রয়েছে।

অর্থাৎ, ইরাকের মহররমের ভিডিওর সাথে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের মিছিলের স্লোগান ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় যুক্ত করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

মূলত, ইরাকের সামাওয়া শহরে অনুষ্ঠিত মহররমের শোক মিছিলের একটি ভিডিও দীর্ঘদিন ধরে ইন্টারনেটে প্রচার হয়ে আসছে। সম্প্রতি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে মহররমের সেই শোক মিছিলের ভিডিওতে থাকা ‘ইয়া আব্বাস, ইয়া আব্বাস’ শীর্ষক স্লোগান কাট করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের দেওয়া “কে বলেরে জিয়া নাই, জিয়া সারা বাংলায়। জিয়া সারা বাংলায়, কে বলেরে জিয়া নাই। বাংলাদেশের অপর নাম, জিয়াউর রহমান। জিয়াউর রহমান, বাংলাদেশের অপর নাম” শীর্ষক স্লোগান যুক্ত করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, পূর্বে ইরাকের মহররমের একই ভিডিওতে ছাত্রলীগের স্লোগান যুক্ত করে ইন্টারনেটে প্রচার করা হলে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, “কে বলেরে জিয়া নাই, জিয়া সারা বাংলায়। বাংলাদেশের অপর নাম, জিয়াউর রহমান।” শীর্ষক স্লোগানযুক্ত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচারিত এই ভিডিওটি বিকৃত বা এডিটেড।

তথ্যসূত্র

চ্যানেল২৪ এর ফটোকার্ড বিকৃত করে অপ্রাসঙ্গিকভাবে রুমিন ফারহানার ছবি প্রচার

0

সম্প্রতি, “খেলা চলার সময় কনডমের বিজ্ঞাপন বন্ধে লিগ্যাল নোটিশ” শীর্ষক শিরোনামের সাথে ব্যবসায়ী শওকত আজিজ ও বিএনপি নেত্রী রুমিন ফারহানার ছবি ব্যবহার করে মূলধারার গণমাধ্যম ‘চ্যানেল২৪’ এর ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

রুমিন ফারহানা

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ) এবং পোস্ট (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, “খেলা চলার সময় কনডমের বিজ্ঞাপন বন্ধে লিগ্যাল নোটিশ” শীর্ষক তথ্যে ব্যবসায়ী শওকত আজিজের সাথে বিএনপি নেত্রী রুমিন ফারহানার ছবি সম্বলিত যে ফটোকার্ডটি চ্যানেল২৪ এর দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে তা চ্যানেল২৪ প্রকাশ করেনি বরং সম্প্রতি চ্যানেল২৪ এর ফেসবুক পেজে একই শিরোনামে প্রচারিত একটি ফটোকার্ডে থাকা সেনসেশন কনডমের একটি বিজ্ঞাপনে অভিনয় করা নারী-পুরুষের  ছবির স্থলে রুমিন ফারহানা-শওকত আজিজের ছবি বসিয়ে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে চ্যানেল২৪ এর প্রচারিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। এতে সংবাদটি প্রচারের তারিখ দেখানো হয়েছে ১৮ অক্টোবর ২০২৩।

দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে ফটোকার্ডটিতে থাকা তারিখ এবং চ্যানেল২৪ এর লোগোর সূত্র ধরে চ্যানেল২৪ এর ফেসবুক পেজে গত ১৮ অক্টোবর প্রচারিত একটি ফটোকার্ড পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। এই ফটোকার্ডে একই শিরোনাম থাকলেও রুমিন ফারহানা ও শওকত আজিজের ছবির স্থলে ভিন্ন দুজন নারী ও পুরুষের ছবি দেখা যায়।

Photocard Comparison by Rumor Scanner 

অর্থাৎ, চ্যানেল২৪ এর ফেসবুক পেজে প্রকাশিত একটি ফটোকার্ডে থাকা বিজ্ঞাপনে অভিনয় করা দুই মডেলের ছবি মুছে দিয়ে সেখানে রুমিন ফারহানা ও শওকত আজিজের ছবি বসিয়ে  আলোচিত ফটোকার্ডটি প্রচার করা হয়েছে। 

চ্যানেল২৪ এর ফটোকার্ড পোস্টের কমেন্টে একই তারিখে চ্যানেল২৪ এর ওয়েবসাইটে “খেলা চলার সময় কনডমের বিজ্ঞাপন বন্ধে লিগ্যাল নোটিশ”  শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, চলমান ক্রিকেট বিশ্বকাপের খেলাগুলো সাধারণত আমরা পরিবারসহ অথবা অফিস কর্মী বা ছোট-বড় সকল বয়সের খেলা প্রেমীরা একসাথে মিলেমিশে দেখে থাকি। কিন্তু সেসময় হঠাৎ কনডমের বিজ্ঞাপন আমাদের চরম বিব্রতকর পরিস্থিতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যার ফলাফল স্বরূপ ক্রিকেট সহ অন্যান্য জনপ্রিয় খেলা হওয়া সত্ত্বেও পরিবারসহ দেখতে আমাদেরই ইতস্ততাবোধ হয়। এজন্যে নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে গত ১৮ অক্টোবর ঢাকা আইনজীবী সমিতির দশজন আইনজীবীর পক্ষে খেলা প্রচারকারী টিভি চ্যানেল টি-স্পোর্টস ও জিটিভিকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আল মামুন রাসেল।

উপরোক্ত তথ্যের সূত্র ধরে অনুসন্ধানে জানা যায়, চ্যানেল২৪ এর মূল ফটোকার্ডে ব্যবহৃত নারী ও পুরুষের ছবিটি কনডম প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান সেনসেশন এর বিজ্ঞাপন থেকে নেওয়া।

মূলত, পরিবার অথবা অফিস কর্মী বা ছোট-বড় সকল বয়সের খেলা প্রেমীরা একসাথে মিলেমিশে বিশ্বকাপ খেলা দেখার সময় স্ক্রিনে কনডমের বিজ্ঞাপন বিব্রতকর পরিস্থিতির কারণ হয়ে দাঁড়ায় বলে অভিযোগ তুলে বিশ্বকাপ খেলা চলাকালে টিভিতে কনডমের বিজ্ঞাপন বন্ধে খেলা প্রচারকারী টি-স্পোর্টসের সিইও ইশতিয়াক সাদিক ও জিটিভির ম্যানেজিং ডিরেক্টর আমান আশরাফ ফায়েজকে গত ১৮ অক্টোবর লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছেন ঢাকা আইনজীবী সমিতির দশ সদস্য। এ বিষয়ে গত ১৮ অক্টোবর ‘চ্যানেল২৪’ এর ফেসবুক পেজে “খেলা চলার সময় কনডমের বিজ্ঞাপন বন্ধে লিগ্যাল নোটিশ” শীর্ষক শিরোনামে কনডম প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান সেনসেশন এর একটি বিজ্ঞাপনের ছবি সম্বলিত একটি ফটোকার্ড প্রচারিত হয়। পরবর্তীতে উক্ত ফটোকার্ডে থাকা বিজ্ঞাপনের নারী ও পুরুষের ছবিটির স্থলে ব্যবসায়ী শওকত আজিজ রাসেল ও বিএনপি নেত্রী রুমিন ফারহানার ছবি বসিয়ে ফেসবুকে প্রচার করা হয়।

সুতরাং, চ্যানেল২৪ এর ফটোকার্ডে থাকা সেনসেশন কনডমের  বিজ্ঞাপনের নারী ও পুুরুষের(মডেল) ছবির স্থলে শওকত আজিজ ও রুমিন ফারহানার  ছবি বসিয়ে ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে; যা এডিটেড বা বিকৃত।

তথ্যসূত্র

কালবেলা’র নকল ফটোকার্ডে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ভুয়া মন্তব্য প্রচার 

সম্প্রতি, ‘আমার বক্তব্য বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে হয়েছে। আমি এই মাসের ১৮ অক্টোবরে চুড়ি পরার কথা বলিনি, আমি বলেছি সামনের বছরের কথা।‘- শীর্ষক তথ্য বা শিরোনামে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ছবিসহ জাতীয় দৈনিক কালবেলা’র ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

মির্জা ফখরুল

ফেসবুকে প্রচারিত এমনকিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন কোনো মন্তব্য করেননি এবং দৈনিক কালবেলাও উক্ত শিরোনামে কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি বরং ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে উক্ত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে কালবেলা’র ফটোকার্ডের ডিজাইন সম্বলিত ছবিটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। সেখানে এই সংবাদটি প্রচারের তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে ১৮ অক্টোবর ২০২৩ এবং ফটোকার্ডটিতে ‘নিবন্ধ লিংক’ উল্লেখ করা হয়। 

Screenshot: Facebook Claim Post

দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে ফটোকার্ডটিতে থাকা তারিখ, কালবেলা’র লোগো এবং নিবন্ধ লিংক লিখার সূত্র ধরে কালবেলা’র ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে ১৮ অক্টোবর প্রচারিত ফটোকার্ডগুলো পর্যালোচনা করে উক্ত শিরোনাম বা তথ্য সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও কালবেলা’র ওয়েবসাইট কিংবা অন্যকোনো গণমাধ্যমেও উক্ত দাবিতে প্রচারিত কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি।

তবে একই দিনে কালবেলা’র ফেসবুক পেজে প্রকাশিত তিনটি (, এবং ) ফটোকার্ডের ডিজাইনের সাথে আলোচিত ফটোকার্ডটির ডিজাইনের হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Photocard Comparison: Rumor Scanner 

অর্থাৎ, গত ১৮ অক্টোবর কালবেলা’র ফেসবুক পেজে প্রকাশিত এই তিনটি ফটোকার্ডের কোনো একটিকে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে তাতে ‘আমার বক্তব্য বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে হয়েছে। আমি এই মাসের ১৮ অক্টোবরে চুড়ি পরার কথা বলিনি, আমি বলেছি সামনের বছরের কথা।’ শীর্ষক তথ্য বা শিরোনাম এবং মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ছবি যুক্ত করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত ১৭ অক্টোবর দেশের মূলধারার গণমাধ্যম প্রথম আলো’র ফটোকার্ড নকল করে ‘আগামী ১৮ অক্টোবরের সমাবেশে সরকারের পতন ঘটাতে না পারলে হাতে চুড়ি পরবো‘ শীর্ষক মন্তব্যকে বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মন্তব্য দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ফটোকার্ড প্রচার করা হয়। উক্ত ফটোকার্ড নিয়ে আলোচনা সমালোচনার মধ্যেই একই বিষয়কে কেন্দ্র করে কালবেলা’র নামে এই ভুয়া ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে বলে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে প্রতীয়মান হয়।

মূলত, সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে গতকাল ১৮ অক্টোবর বিএনপির পক্ষ থেকে রাজধানী ঢাকায় পূর্বঘোষিত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সমাবেশের আগেরদিন অর্থাৎ ১৭ অক্টোবর প্রথম আলো’র ফটোকার্ড নকল করে সমাবেশকে জড়িয়ে বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নামে একটি ভুয়া মন্তব্য প্রচার করা হয়। পরবর্তীতে উক্ত ভুয়া মন্তব্যের প্রেক্ষিতে গতকাল ১৮ অক্টোবর বিএনপির সমাবেশ পরবর্তী সময়ে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় কালবেলার ফটোকার্ড ডিজাইন নকল করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নামে উক্ত ভুয়া মন্তব্যটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়।

উল্লেখ্য, পূর্বেও কালবেলা’র ফটোর্কাড এডিট করে বিকৃত মন্তব্য প্রচার করা হলে তা নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল রিউমর স্ক্যানার। 

এমনকিছু প্রতিবেদন পড়ুন-

সুতরাং, বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্ধৃত করে ‘আমার বক্তব্য বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে হয়েছে। আমি এই মাসের ১৮ অক্টোবরে চুড়ি পরার কথা বলিনি, আমি বলেছি সামনের বছরের কথা।’ শীর্ষক দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা এবং উক্ত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডটি এডিটেড বা বিকৃত।

তথ্যসূত্র

বিএনপি’র কর্মীরা আমির খসরুকে উদ্দেশ্য করে ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দেননি

সম্প্রতি, ‘এবার বিএনপি’র কর্মীরা আমির খসরুকে দেখে ভুয়া ভুয়া বললেন’ শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

ভুয়া ভুয়া

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, বিএনপি কর্মীদের ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে উদ্দেশ্য করে দেওয়া নয় বরং তারা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে উক্ত স্লোগান দিয়েছেন।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম।

Screenshot: Facebook Claim Post

ভিডিওটিতে যা আছে

১৩ সেকেন্ডের এই ভিডিওটির শুরুতে ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান শোনা যায়। এরপর আমির খসরুকে বলতে শোনা যায়, “আচ্ছা ঠিক আছে।” এরপর হাসির একটি ফানি ক্লিপ যুক্ত করা হয়।

বিষয়টি যাচাইয়ে ভিডিওটির মূল উৎস অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে bd news7 নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে গত ২৮ সেপ্টেম্বর ‘সাভারের আমিনবাজারে ঢাকা জেলা বিএনপির সমাবেশ’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়, যার একটি অংশের সাথে আলোচিত ভিডিওটির মিল রয়েছে।

Screenshot: YouTube 

এই ভিডিওটির ১২ মিনিট ০২ সেকেন্ড থেকে ১২ মিনিট ০৯ সেকেন্ড অংশ পর্যন্ত আলোচিত ভিডিওটির আমির খসরুর বক্তব্যের অংশ এবং ভুয়া ভুয়া স্লোগানের হুবহু মিল পাওয়া যায়।

‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগানের প্রেক্ষাপট

মূল ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, সেখানে বিএনপি’র কর্মীরা ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দেওয়ার পর আমির খসরু বলেন, “আচ্ছা ঠিক আছে। এরা যে ভুয়া এটা আপনারা না, সারা বিশ্ব জেনে গেছে। সারা বিশ্ব বুঝে গেছে।” আমির খসরুর এই কথার পর বিএনপি’র কর্মীরা বিষয়টিকে সমর্থন জানিয়ে ‘হ্যা’ বলেন।

এর আগে তিনি বলেন, “ওয়াশিংটনে জাতিসংঘের কাজ শেষ হয়ে গেছে। বক্তব্য শেষ হয়ে গেছে। বিশ্বের সব নেতারা কিন্তু বাড়ি চলে গেছে। আমাদের অনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী ওয়াশিংটনে বসে আছে। অবস্থা বুঝেন কি খারাপ? কত খারাপ বুঝেন? সেলফি তুলেও কাজ হচ্ছে না। সেলফি তুলে কতদিন একটু ফরফুরা মেজাজে ছিল। তারপর  দেখে যে তার উপরে আরেকটা আসছে।” এরপরই উপস্থিত কর্মীরা ভুয়া ভুয়া স্লোগান দিতে থাকেন।

অর্থাৎ, বিএনপি কর্মীদের উক্ত ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান আমির খসরুকে উদ্দেশ্য করে দেওয়া নয়।

পরবর্তীতে বিএনপির ভেরিফাইড ফেসবুক পেজেও একই তারিখে এই ঘটনার লাইভ ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়। সেখান থেকে নিশ্চিত হওয়া যায়, ভিডিওটি গত ২৮ সেপ্টেম্বর সাভারের আমিন বাজারে অনুষ্ঠিত বিএনপির সমাবেশের এবং ভিডিওটির ৫৬ মিনিট অংশ থেকে আলোচিত ভিডিওটির সাথে মিল পাওয়া যায়।

এছাড়া, মূলধারার গণমাধ্যম প্রথম আলো’র অনলাইন সংস্করণে একই তারিখে ‘বিএনপি সেলফির রাজনীতি করে না: আমীর খসরু’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকেও ওই দিনের সমাবেশের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়।

অর্থাৎ, উপরোক্ত বিষয়গুলো পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, বিএনপির কর্মীরা ‘ভুয়া ভুয়া’ শীর্ষক স্লোগান তাদের নেতা আমির খসরুকে উদ্দেশ্য করে দেয়নি। 

মূলত, গত ২৮ সেপ্টেম্বর সাভারের আমিনবাজারে অনুষ্ঠিত বিএনপির সমাবেশে বক্তব্য প্রদান করেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে বক্তব্য দেওয়ার সময়ে সেখানে উপস্থিত কর্মীরা ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দিতে থাকেন। পরবর্তীতে সেই স্লোগানের খণ্ডিত অংশ কেটে তাতে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় ‘এবার বিএনপি’র কর্মীরা আমির খসরুকে দেখে ভুয়া ভুয়া বললেন’ শীর্ষক শিরোনাম যুক্ত করে বিকৃতভাবে প্রচার করা হয়।

উল্লেখ্য, পূর্বেও বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের বক্তব্যের খণ্ডিত অংশ বিকৃতভাবে প্রচারের প্রেক্ষিতে একাধিক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কয়েকটি প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে বিএনপি’র কর্মীদের দেওয়া ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগানকে বিএনপি নেতা আমির খসরুকে উদ্দেশ্য করে দেওয়া স্লোগান দাবিতে ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

চলমান সংঘাতে ইসরায়েলকে ড. ইউনূসের ১০০ কোটি টাকা সহায়তা দেওয়ার খবরটি মিথ্যা

সম্প্রতি, দেশের একটি অনলাইন গণমাধ্যমসহ ইন্টারনেটের একাধিক মাধ্যমে প্রকাশিত অসংখ্য পোস্টে দাবি করা হয়েছে যে, ফিলিস্তিনের হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যকার চলমান সংঘাতের ঘটনায় ইসরায়েলকে নিজের প্রতিষ্ঠিত সংস্থা গ্রামীণ আমেরিকার মাধ্যমে ১০০ কোটি টাকার সহায়তা দিয়েছেন নোবেল বিজয়ী বাংলাদেশি অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

ইউনূস

উক্ত দাবিতে সংবাদ প্রকাশ করেছে দেশীয় সংবাদমাধ্যম বাংলা ইনসাইডার। 

একই দাবিতে গণমাধ্যমসহ ফেসবু্কের কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

একই দাবিতে টিকটকের কিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

তাছাড়া, নিউইয়র্ক টাইমসকে সূত্র হিসেবে উল্লেখ করে সংবাদমাধ্যমটির এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদনের স্ক্রিনশট ব্যবহার করে উক্ত দাবিতে প্রকাশিত একটি ইউটিউব ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

একই ভিডিও ফেসবুকে দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

তাছাড়া, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন আজ (১৮ অক্টোবর) এক আলোচনা সভায় একই দাবি করেন। দেখুন এখানে এবং এখানে।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যকার চলমান সংঘাতের ঘটনায় ড. মুহাম্মদ ইউনূস ইসরায়েলকে ১০০ কোটি টাকার কোনো সহায়তা দেননি বরং বানোয়াট সূত্র ব্যবহার করে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীনভাবে পুরো বিষয়টি ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে। তাছাড়া, ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও বিষয়টিকে মিথ্যা বলে জানিয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে বাংলা ইনসাইডারের পুরো প্রতিবেদনটি পড়ে দেখেছি আমরা।  

গত ১৩ অক্টোবর প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, ড. মুহাম্মদ ইউনূস ইসরায়েলের মানবিক বিপর্যয়ের কথা বলে দেশটিকে একশো কোটি টাকার সহায়তা দিয়েছেন বলে নিশ্চিত তথ্য পাওয়া গেছে। 

গ্রামীণ আমেরিকা ইসরায়েলকে এই মানবিক সহায়তা দিয়েছে। গ্রামীণ আমেরিকার কো-চেয়ার হলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। 

বাংলা ইনসাইডারের দাবি, সাম্প্রতিক সময়ে ইসরায়েলের পররাষ্ট্র দপ্তরের এক বিবৃতিতে দেখা যায় ইসরায়েলের ওপর হামাসের আক্রমণের পর যে সমস্ত ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠান তাদেরকে সহায়তা দিয়েছে তাদের প্রতি ইসরায়েল সরকার কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে। এই সহায়তা দানকারীদের তালিকায় গ্রামীণ আমেরিকা রয়েছে।

Screenshot: Bangla Insider 

ফেসবুকের একাধিক পোস্টে রিউমর স্ক্যানার টিম এই দাবির বিষয়ে প্রকাশিত একটি পত্রিকার এ সংক্রান্ত একটি সংবাদের খণ্ডিত অংশের ছবিও ভাইরাল হতে দেখেছে। 

উক্ত ছবিটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, প্রতিবেদনটির প্রতিবেদক হিসেবে মঞ্চ ডেস্ক শীর্ষক একটি নামের উল্লেখ রয়েছে। পাশাপাশি, উক্ত প্রতিবেদনটি পড়ে বাংলা ইনসাইডারের প্রতিবেদনের সাথে এটির পুরোপুরি মিল লক্ষ্য করা যায়।

Image: Facebook 

প্রতিবেদনে পত্রিকাটির নাম উল্লেখ না থাকায় কোনো পত্রিকার নামের সাথে মঞ্চ যুক্ত আছে কিনা সে বিষয়ে অনুসন্ধানে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর কর্তৃক গত ১৪ মে প্রকাশিত দেশের পত্রিকাগুলোর তালিকায় ‘দৈনিক বীর চট্টগ্রাম মঞ্চ’ নামে চট্টগ্রাম থেকে প্রকাশিত একটি পত্রিকার খোঁজ পেয়েছি আমরা। 

Screenshot: Ministry of Information and Broadcasting’s pdf

এই নামের সূত্র ধরে পত্রিকাটির কোনো ওয়েবসাইট বা ফেসবুক পেজের সন্ধান পাওয়া না গেলেও ফেসবুকের কতিপয় পোস্ট (, ) থেকে জানা যাচ্ছে, উক্ত পেপারের কাটিং এই পত্রিকারই এবং এই খবরটি প্রকাশিত হয়েছে গত ১৪ অক্টোবরের পত্রিকার প্রথম পাতায়। 

পত্রিকাটির সম্পাদক সৈয়দ ওমর ফারুক নামে এক ব্যক্তি। তার ফেসবুক প্রোফাইলে (আর্কাইভ) থাকা কাভার ফটোতে (আর্কাইভ) পত্রিকাটির প্রথম পাতার একটি ছবি শোভা পাচ্ছে। এটিতেও দেখা যাচ্ছে, প্রতিবেদন লেখকদের নামের স্থলে মঞ্চ ডেস্ক লেখা রয়েছে।

Screenshot: Facebook 

অর্থাৎ, আলোচিত প্রতিবেদনটি চট্টগ্রামের দৈনিক ‘বীর চট্টগ্রাম মঞ্চ’ এর পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে এবং বাংলা ইনসাইডারের আলোচিত প্রতিবেদনটির সাথে এই প্রতিবেদনের হুবহু মিল রয়েছে। 

বাংলা ইনসাইডার তাদের প্রতিবেদনের খবরটির বিষয়ে নির্দিষ্ট কোনো সূত্র উল্লেখ করেনি। তবে দাবি করেছে, সাম্প্রতিক সময়ে ইসরায়েলের পররাষ্ট্র দপ্তর একটি বিবৃতি দিয়েছে যেখানে ইসরায়েলের ওপর হামাসের আক্রমণের পর যে সমস্ত ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠান তাদেরকে সহায়তা দিয়েছে তাদের প্রতি ইসরায়েল সরকার কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে। এই সহায়তা দানকারীদের তালিকায় গ্রামীণ আমেরিকা রয়েছে। আরও বলেছে, গ্রামীণ আমেরিকার কো-চেয়ার হলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। 

আমরা শুরুতে গ্রামীণ আমেরিকার ওয়েবসাইটে গিয়ে বিষয়টি যাচাই করে দেখতে পেয়েছি, প্রতিষ্ঠানটির Board of Directors এর তালিকায় Co-Chair হিসেবে ইউনূসের নাম রয়েছে। 

Screenshot: Grameen America Website 

নিউইয়র্ক ভিত্তিক অলাভজনক ক্ষুদ্রঋণ প্রদানকারী এই প্রতিষ্ঠান ২০০৮ সালে ড. ইউনূসের হাত ধরেই যাত্রা শুরু করে। প্রতিষ্ঠানটির ন্যাশনাল এম্বাসেডর হিসেবে রয়েছেন মার্কিন গায়িকা জেনিফার লোপেজ। 

প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইট থেকে জানা যাচ্ছে, তারা মূলত নারীদের নিয়েই কাজ করেন। অসচ্ছল এবং দারিদ্রসীমার নিচে বসবাসকারী নারীদেরকে স্বাবলম্বী করে তুলতে প্রতিষ্ঠানটি ক্ষুদ্রঋণসহ নানা সেবা প্রদান করে থাকে। যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে গ্রামীণ আমেরিকার ২২ টি শাখার নিকটবর্তী নাগরিকেরা এই সেবা গ্রহণ করতে পারেন। তবে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে সম্প্রতি ইসরায়েল বা পূর্বে কোনো সংস্থা বা দেশকে সহায়তা প্রদানের তথ্য ওয়েবসাইটে পাওয়া যায়নি। 

পরবর্তীতে, ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্রগুলো যাচাই করার সিদ্ধান্ত নেই আমরা। যেহেতু চলমান সংঘাত শুরু হয়েছে গত ০৭ অক্টোবর এবং আলোচিত দাবিটি গত ১৩ অক্টোবর প্রথম প্রকাশ্যে এসেছে। তাই উক্ত ০৭ দিনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এ সংক্রান্ত বিবৃতিগুলো পর্যালোচনা করে দেখেছি আমরা। এই দিনগুলোতে ওয়েবসাইটে ৩০ টি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে বিভিন্ন বিষয়ে। 

এর মধ্যে গত ০৭ অক্টোবর প্রকাশিত একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা যাচ্ছে, সেদিন এই সংঘাত শুরুর পর বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান এবং নেতারা এ ঘটনায় ইসরায়েলের পক্ষে সমর্থন জানিয়ে দেশটির প্রেসিডেন্ট আইস্যাক হেরজোগকে ফোন করেছেন। সমর্থন দেওয়া ব্যক্তিদের যে তালিকা বিজ্ঞপ্তিতে রয়েছে সেখানে ড. ইউনূস বা বাংলাদেশের কারো নাম নেই। 

Screenshot: Israeli Ministry of Foreign Affairs website

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্ট পর্যবেক্ষণ করে এমন কোনো তথ্য না পেলেও উক্ত সময়ের মধ্যে সমর্থনের জন্য বিভিন্ন দেশকে ধন্যবাদ জানিয়ে কিছু টুইট এবং রিটুইট (, , ) করতে দেখা গেছে।   

তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক পরিচালিত স্টেট অফ ইসরায়েলের একটি এক্স অ্যাকাউন্টে গত ১০ অক্টোবর প্রকাশিত এক টুইট বার্তায় ইসরায়েলি কোম্পানি, স্বেচ্ছাসেবক এবং ব্যক্তি যারা সাহায্যের জন্য এগিয়ে এসেছেন তাদের ধন্যবাদ জানানো হয়েছে। 

এ বিষয়ে জানতে ইসরায়েলের ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান The Whistle এর ফ্যাক্টচেকার উরিয়া বার মিয়িরের সাথে যোগাযোগ করেছিল রিউমর স্ক্যানার টিম। তিনি জানিয়েছেন, গ্রামীণ আমেরিকার বিষয়ে উল্লেখ করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাম্প্রতিক কোনো বিবৃতির বিষয়ে তার জানা নেই৷ রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুরোধে তিনি নিজে বিষয়টি অনুসন্ধান করে এমন কোনো তথ্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে প্রকাশ হওয়ার প্রমাণ পাননি। পরবর্তীতে উপরে উল্লিখিত একই টুইটের বিষয়ে আমাদের জানিয়ে বলেছেন, এটাই সবচেয়ে প্রাসঙ্গিক বিবৃতি। 

Image: Rumor Scanner

রিউমর স্ক্যানার টিম বিষয়টি নিয়ে ইসরায়েলের মূল ধারার সংবাদমাধ্যম Times of Israel এর সাংবাদিক তাল স্নাইডারের সাথে কথা বলেছে। তিনিও বলেছেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এমন কোনো বিবৃতির (যেখানে গ্রামীণ আমেরিকার নাম উল্লেখ আছে) বিষয়ে তার জানা নেই। 

Image: Rumor Scanner

স্নাইডারের সাথে যোগাযোগের পূর্বে আমরা ইসরায়েলের একাধিক সংবাদমাধ্যমের গত কয়েকদিনের ঘটনা প্রবাহ পর্যবেক্ষণ করে সংশ্লিষ্ট দাবির পক্ষে কোনো তথ্য পাইনি। তাছাড়া, আলোচ্য বিবৃতিতে ইউনূস বা গ্রামীণ আমেরিকার নাম থাকলে তা বাংলাদেশের গণমাধ্যমেও প্রকাশ পেত। কিন্তু বাংলাদেশের গণমাধ্যমে এমন কোনো তথ্য প্রকাশিত হয়নি। আমরা দেশের একাধিক মূল ধারার সংবাদমাধ্যমের সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেছি। তারা সকলেই এক বাক্যে জানিয়েছেন, এই ধরনের কোনো তথ্য তারা পাননি। 

পরবর্তীতে রিউমর স্ক্যানার টিম সরাসরি যোগাযোগ করে ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লায়র হাইয়াতের সাথে। লায়র রিউমর স্ক্যানারের সাথে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। বলেছেন, ইউনূস কর্তৃক ইসরায়েলকে সহায়তার বিষয়টি আপনার কাছ থেকেই প্রথম জানলাম। তাছাড়া, ইসরায়েল দাতাগোষ্ঠীর কোনো সহায়তার বিষয় জনসম্মুখে প্রকাশ করে না। 

Image: Rumor Scanner

রিউমর স্ক্যানার টিম বিষয়টি নিয়ে ইউনূস সেন্টারের সাথেও কথা বলেছে। ড. ইউনূসের বিষয়ে মুখপাত্রের ভূমিকা পালন করা প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে রিউমর স্ক্যানার টিমকে আলোচিত সংবাদটি মিথ্যা বলে নিশ্চিত করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি রিউমর স্ক্যানারকে জানিয়েছে, বিষয়টি গভীর উদ্বেগজনক কারণ ভুয়া এই সংবাদটি ড. ইউনূসের সুনামকে ইচ্ছাকৃতভাবে কলঙ্কিত করছে বলে মনে হচ্ছে।

Image: Rumor Scanner 

এদিকে, ইসরায়েলকে ড. ইউনূসের সহায়তার বিষয়টি মার্কিন সংবাদমাধ্যম The New York Times এ প্রকাশিত হয়েছে শীর্ষক দাবিতে যে সংবাদের স্ক্রিনশটটি প্রচার করা হয়েছে তা ভিন্ন একটি সংবাদকে ডিজিটাল প্রযুক্তির সাহায্যে বিকৃত করে তৈরি করা হয়েছে বলে প্রমাণ পেয়েছে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

গত ১৪ অক্টোবর নিউইয়র্ক টাইমসে On the Front Lines, an Israeli University Grieves and Readies for War শীর্ষক শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। উক্ত সংবাদের ফিচার এবং শিরোনামে বদলে দিয়ে ফিচারে ইউনূসের ছবি এবং শিরোনামে ‘Nobel laureate Yunus stands by the affected Israelis’ শীর্ষক বাক্য বসিয়ে আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। কিন্তু মূল সংবাদের সাব হেডলাইনে থাকা “At Ben-Gurion University of the Negev, dorms turned into barracks and medical students manned emergency rooms. Dozens from the university community were killed in the Hamas attacks.” বাক্যটি অস্পষ্টভাবে এডিট করা স্ক্রিনশটেও দেখা যাচ্ছে।  

Screenshot comparison: Rumor Scanner 

তাছাড়া, নিউইয়র্ক টাইমসে কিওয়ার্ড সার্চ করে এ সংক্রান্ত কোনো সংবাদ প্রকাশের তথ্য পায়নি রিউমর স্ক্যানার। 

মূলত, গত ০৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ফিলিস্তিনের হামাস ও ইসরায়েলের সাম্প্রতিক সংঘাত ইস্যুতে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন জানিয়ে নিজের প্রতিষ্ঠিত সংস্থা গ্রামীণ আমেরিকার মাধ্যমে দেশটিকে ১০০ কোটি টাকার সহায়তা দিয়েছেন নোবেল বিজয়ী বাংলাদেশি অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস শীর্ষক একটি দাবি ইন্টারনেটের বিভিন্ন মাধ্যমসহ প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রচার হতে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। কিন্তু রিউমর স্ক্যানারের দীর্ঘ অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত দাবিটি সঠিক নয়। অনলাইন সংবাদমাধ্যম বাংলা ইনসাইডারের গত ১৩ অক্টোবরের একটি প্রতিবেদন থেকে আলোচিত দাবিটি ছড়িয়ে পড়ে। উক্ত প্রতিবেদনে দাবিটির পক্ষে ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি বিবৃতির বিষয়ে বলা হলেও মন্ত্রণালয় কর্তৃক সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত কোনো বিবৃতিতে এমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। উক্ত দাবি সম্বলিত কোনো বিবৃতি প্রকাশিত হয়নি বলে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকেও রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করা হয়েছে। তাছাড়া, ইসরায়েলের গণমাধ্যম এবং ফ্যাক্টচেকারও এমন কোনো সহায়তার বিষয়ে অবগত নন বলে জানিয়েছেন। একই সাথে, ইউনূস সেন্টারও বিষয়টি ভুয়া বলে নিশ্চিত করেছে।

প্রসঙ্গত, সাম্প্রতিক সময়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিষয়ে ইন্টারনেটে একাধিক ভুল তথ্য প্রচারের প্রেক্ষিতে সেসব বিষয়ে একাধিক ফ্যাক্টচেক প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। দেখুন এখানে। 

সুতরাং, হামাস ও ইসরায়েলের চলমান সংঘাতের ঘটনায় ইসরায়েলকে ড. ইউনূস ১০০ কোটি টাকার সহায়তা দিয়েছেন দাবি করে ইন্টারনেটে প্রচারিত বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র 

  • Israeli Ministry of Foreign Affairs: X Tweet
  • Statement from Lior Haiat, Spokesperson of the Israeli Ministry of Foreign Affairs
  • Statement from Tal Schneider, TOI
  • Statement from Yunus Centre 
  • Statement from Uria Ber-Meir, Fact Checker, Israel 
  • Rumor Scanner’s own investigation