Home Blog Page 534

অনন্ত আম্বানির বিয়েতে খাদ্য ঘাটতি দেখা দেওয়ার দাবিতে এডিটেড ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি, ভারতের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি মুকেশ আম্বানির ছোট ছেলে অনন্ত আম্বানির প্রাক-বিবাহ অনুষ্ঠানে খাবার কম পড়েছে দাবিতে অতিথিদের প্লেট থেকে মুকেশ আম্বানির খাবার তুলে নেওয়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)

টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, অনন্ত আম্বানির প্রাক-বিবাহ অনুষ্ঠানে খাদ্য ঘাটতি দেখা দেওয়ায় অতিথিদের প্লেট থেকে খাবার তুলে নেওয়ার দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি আসল নয়। প্রকৃতপক্ষে, অনন্ত আম্বানির প্রাক-বিবাহ অনুষ্ঠান উপলক্ষে জামনগর গ্রামবাসীদের নিয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মুকেশ আম্বানির খাবার পরিবেশন করার একটি ভিডিওকে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে ভিডিওটি রিভার্স প্লে করে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটির কয়েকটি কী-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে Filmymonkey ABP News নামের একটি ফেসবুক পেজে গত ২৯ ফেব্রুয়ারি Mukesh Ambani serves food at the anna seva ceremony of Anant and Radhika শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Facebook.

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, মুকেশ আম্বানির খাবার পরিবেশনের উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওর মিল রয়েছে।

Video Comparison by Rumor Scanner 

তবে লক্ষ্য করা যায়, উক্ত ভিডিওটিকে মূলত রিভার্স প্লে করার মাধ্যমে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে। যার কারণে খাবার পরিবেশনের পরিবর্তে আলোচিত ভিডিওটিতে মুকেশ আম্বাানিকে প্লেট থেকে খাবার তুলে নিতে দেখা যাচ্ছে।

পরবর্তীতে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ভারতীয় গণমাধ্যম The Economic Times এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি Anant Ambani pre-shaadi events: Anna Seva for villagers in Jamnagar, Mukesh Ambani serves food শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি মাল্টিমিডিয়া প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Youtube

উক্ত প্রতিবেদনেও মুকেশ আম্বানিও খাবার পরিবেশনের আলোচিত দৃশ্যটি দেখতে পাওয়া যায়। এছাড়াও প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, ভিডিওটি অনন্ত আম্বানি এবং রাধিকা মার্চেন্টের প্রাক-বিবাহ অনুষ্ঠানে মুকেশ আম্বানি কর্তৃক গ্রামের অতিথিদের খাবার পরিবেশনের।প্রাক-বিবাহ উদযাপনের জন্য স্থানীয় সম্প্রদায়ের আশীর্বাদ পেতে আন্নাসেবার আয়োজন করা হয়। যেখানে প্রায় ৫১ হাজার জামনগরবাসীকে নিমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। উক্ত অনুষ্ঠানে মুকেশ আম্বানি, অনন্ত আম্বানি এবং রাধিকা বণিক-সহ আম্বানি পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা গ্রামবাসীদের ঐতিহ্যবাহী গুজরাটি খাবার পরিবেশন করেন।

পরবর্তীতে উক্ত অনুষ্ঠানে খাদ্য ঘাটতি দেখা দিয়েছিল কিনা তা জানতে প্রাসঙ্গিক বিভিন্ন কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমেও ভারতীয় কিংবা আন্তর্জাতিক কোনো গণমাধ্যম কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

অর্থাৎ, অনন্ত আম্বানির প্রাক-বিবাহ অনুষ্ঠানে খাবার সংকট দেখা দেওয়ায় খাবার তুলে নেওয়ার ভিডিও দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি সম্পাদিত।

মূলত, মার্চ মাসের শুরুতেই আয়োজিত হয় ভারতের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি মুকেশ আম্বানির ছোট ছেলে অনন্ত আম্বানির প্রাক-বিবাহ অনুষ্ঠান। অনন্ত আম্বানি এবং রাধিকা মার্চেন্টের এই প্রাক-বিবাহ অনুষ্ঠান চলে ১ মার্চ থেকে ৩ মার্চ পর্যন্ত। জমকালো এই তিন দিনের আয়োজনকে কেন্দ্র করে পুরো ইন্টারনেই দুনিয়াই বেশ সরব ছিল। মূলত তিনদিনের আয়োজন হলেও এর পূর্বে জামনগরবাসীদের নিয়ে আয়োজিত হয় অন্নসেবা নামের আর্শীবাদ অনুষ্ঠান। যেখানে প্রায় ৫১ হাজার গ্রামবাসীকে দাওয়াত করে খাওয়ান মুকেশ আম্বানি। উক্ত অনুষ্ঠানে ছেলে এবং পুত্রবধূর আগামী দিনের জন্যে গ্রামবাসীদের কাছে আর্শীবাদ চেয়ে নিজ হাতে খাবার পরিবেশন করেন তিনি। এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি, মুকেশ আম্বানির ছোট ছেলে অনন্ত আম্বানির প্রাক-বিবাহ অনুষ্ঠানে খাদ্যঘাটতি হওয়ায় অতিথিদের প্লেট থেকে খাবার তুলে নিচ্ছেন মুকেশ আম্বানি দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, অনন্ত আম্বানির প্রাক-বিবাহ অনুষ্ঠানে খাবার সংকট দেখা দেওয়ার মত কোনো ঘটনা ঘটেনি। প্রকৃতপক্ষে, মুকেশ আম্বানির খাবার পরিবেশন করার একটি ভিডিওকে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পদনার মাধ্যমে রিভার্স প্লে করার মাধ্যমে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

সুতরাং, মুকেশ আম্বানির ছেলের বিয়েতে খাদ্য ঘাটতি দেখা দেওয়ায়  অতিথিদের প্লেট থেকে খাবার তুলে নেওয়ার ভিডিও দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত ভিডিওটি এডিটেড বা সম্পাদিত।

তথ্যসূত্র

বাংলাদেশি এমভি আবদুল্লাহ নয়, মাল্টার এমভি রুয়েন উদ্ধার করেছে ভারতীয় নৌবাহিনী

সম্প্রতি, “জলদস্যুদের হাত থেকে জাহাজ মুক্ত, ১৭ ক্রু উদ্ধার”- শীর্ষক শিরোনামে দেশীয় গণমাধ্যম যমুনা টেলিভিশন, সময় টিভি, আরটিভি ও চ্যানেল ২৪ এর ফটোকার্ড ডিজাইন সম্বলিত একাধিক ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

দাবি করা হচ্ছে, গত ১২ মার্চ ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়া কয়লাবাহী বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ হতে নাবিকদের উদ্ধার করেছে ভারতীয় নৌবাহিনী।

এমভি আবদুল্লাহ

আরটিভি’র ফটোকার্ড যুক্ত করে ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

যমুনা টেলিভিশনের ফটোকার্ড যুক্ত করে ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

সময় টিভি’র ফটোকার্ড যুক্ত করে ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

চ্যানেল ২৪ এর ফটোকার্ড যুক্ত করে ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

আরটিভি’র ফটোকার্ড যুক্ত করে টিকটকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

যমুনা টেলিভিশনের ফটোকার্ড যুক্ত করে টিকটকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

সময় টিভি’র ফটোকার্ড যুক্ত করে টিকটকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

চ্যানেল ২৪ এর ফটোকার্ড যুক্ত করে টিকটকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভারতীয় নৌবাহিনী কর্তৃক ১৭ জন ক্রু সহ উদ্ধার হওয়া জাহাজটি বাংলাদেশের জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ নয় বরং ভারতীয় নৌবাহিনী কর্তৃক উদ্ধার হওয়া জাহাজটি মাল্টার পতাকাবাহী জাহাজ ‘এমভি রুয়েন’।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত পোস্টগুলোতে ব্যবহৃত ফটোকার্ড পাঁচটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। গণমাধ্যমগুলোর সূত্র ধরে ফেসবুকে ম্যানুয়ালি অনুসন্ধানের মাধ্যমে গণমাধ্যমগুলোর ফেসবুক পেজে (আরটিভি, যমুনা টেলিভিশন, সময় টিভি, চ্যানেল ২৪) আলোচিত ফটোকার্ড গুলো খুঁজে পাওয়া যায়। (আর্কাইভ-,,,,)

উক্ত গণমাধ্যমগুলোর ফেসবুক পেজে ফটোকার্ড নিয়ে প্রচারিত পোস্টের সাথে এসম্পর্কিত একটি  প্রতিবেদন পাওয়া যায়। (আরটিভি, যমুনা টেলিভিশন, সময় টিভি, চ্যানেল ২৪)

প্রতিবেদনগুলো থেকে জানা যায়, সোমালিয়ার জলদস্যুদের কাছে থেকে ১৭ নাবিকসহ ‘এমভি রুয়েন’ নামের মাল্টার পতাকাবাহী একটি বাণিজ্যিক জাহাজ উদ্ধার করেছে ভারতীয় নৌবাহিনী। এ সময় জাহাজটিতে থাকা ৩৫ জলদস্যুর সবাই আত্মসমর্পণ করেছেন। গত ১৬ মার্চ এক এক্স বার্তায় ভারতীয় নৌবাহিনী ভারতীয় উপকূল থেকে ওই জাহাজটি উদ্ধারের তথ্য জানিয়েছে। 

এছাড়া একই বিষয়ে শিরোনামে ভারতের নৌবাহিনী কোন দেশের জাহাজ উদ্ধার করেছে এ কথা উল্লেখ না করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে আরও কিছু গণমাধ্যম। 

প্রতিবেদন দেখুন- জাগো নিউজ, এবি নিউজসারা বাংলা, ডেইলি ম্যাসেঞ্জার এবং বাংলাদেশ মোমেন্টস্

প্রতিবেদনগুলোর শিরোনামে জাহাজের নাম বা কোন দেশের জাহাজ তা উল্লেখ না করায় বিষয়টি নিয়ে নেটিজেনদের মনে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। বিস্তারিত প্রতিবেদন না পড়েই তারা বিষয়টিকে বাংলাদেশের মনে করে বিভিন্ন মন্তব্য করেছেন।  

Comment Collage By Rumor Scanner 

পরবর্তীতে বিষয়টি অধিকতর নিশ্চিতের জন্য কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিবিসি এর ওয়েবসাইটে গত ১৭ মার্চ “তিন মাস ধরে ছিনতাই করা জাহাজটি নিয়ে সাগরে ঘুরে বেড়াতো জলদস্যুরা”- শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। 

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ১৬ মার্চ বিশেষ কমান্ডো অভিযান চালিয়ে সোমালি জলদস্যুদের ছিনতাই করা মাল্টার একটি মালবাহী জাহাজ জব্দ করেছে ভারতীয় নৌ বাহিনী। এ সময় ১৭ জন নাবিককে উদ্ধার করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ (সাবেক টুইটার) নিজেদের পেইজে এ নিয়ে একটি পোস্ট দিয়েছে ভারতীয় নৌবাহিনী।

একই তথ্যে সংবাদ প্রকাশ করেছে ডয়েচে ভেলে এবং হিন্দুস্তান টাইমস। 

অর্থাৎ, উদ্ধারকৃত জাহাজটি বাংলাদেশের নয়। তবে এসম্পর্কিত খবরের শিরোনামে জাহাজের নাম বা দেশের নাম না উল্লেখ করায় ঘটনাটি বাংলাদেশের জাহাজ ভেবে নেটিজেনরা বিভ্রান্ত হয়েছেন। 

মূলত, গত ১২ মার্চ মোজম্বিকের রাজধানী মাপুটো থেকে ৫৫ হাজার টন কয়লা নিয়ে আরব আমিরাতের উদ্দেশ্যে যাত্রাকালে ভারত মহাসাগরে ২৩ নাবিকসহ বাংলাদেশি পণ্যবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহকে অপহরণ করে সোমালিয়ার জলদস্যুরা। এর মাঝে গত ১৬ মার্চ ভারতীয় নৌবাহিনী বিশেষ কমান্ডো অভিযান চালিয়ে সোমালি জলদস্যুদের ছিনতাই করা মাল্টার মালবাহী জাহাজ এমভি রুয়েন জব্দ করেছে ভারতীয় নৌ বাহিনী। এ সময় ১৭ জন নাবিককে উদ্ধার করা হয়েছে। উক্ত বিষয়ে বাংলাদেশের একাধিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের শিরোনামে জাহাজ বা দেশের  নাম উল্লেখ না করে সংবাদ প্রচার করা হয়। পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীরা বিষয়টি বাংলাদেশের জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ মনে করে ফেসবুকে প্রচার করেন। প্রকৃতপক্ষে, এই প্রতিবেদনে প্রকাশ অবধি এমভি আবদুল্লাহ সোমালিয়ান জলদস্যুদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

উল্লেখ্য, পূর্বে ভারতের ঘটনা বাংলাদেশের দাবিতে প্রচারিত হলে তা নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কয়েকটি প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে। 

সুতরাং, ভারতের নৌবাহিনীর মাল্টার মালবাহী জাহাজ এমভি রুয়েন উদ্ধারেরঘটনায় বাংলাদেশে জাহাজ বা দেশের  নাম উল্লেখ না করে ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

জলদস্যুদের হাতে জিম্মি এমভি আবদুল্লাহ জাহাজ উদ্ধারে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর রওনা হওয়ার গুজব

গত ১২ মার্চ আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিক থেকে কয়লা নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার পথে ভারত মহাসাগরে ২৩ জন নাবিকসহ বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ ছিনতাই করে সোমালিয়ার জলদস্যুরা। এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবল থেকে ২৩ নাবিকসহ বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে গত ১৬ মার্চ শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম টিকটকে ‘এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজ উদ্ধারের জন্য বাংলাদেশ নৌবাহিনী যাচ্ছে’ শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।

জলদস্যুদের

উক্ত দাবিতে টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি টিকটকে প্রচারিত এই ভিডিওটি ৭৮ হাজারের অধিক বার দেখা হয়েছে। ভিডিওটিতে প্রায় ৭ হাজার ১ শত ১৮ পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে এবং ভিডিওটিতে ১ শত ৭৪ টি মন্তব্য করা হয়েছে। ভিডিওটি শেয়ার করা হয়েছে ১০৪ বার।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ উদ্ধারে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর কোনো টিম  রওনা হয়নি বরং ২০২১ সালে সময় টিভিতে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর বার্ষিক মহড়া নিয়ে প্রচারিত একটি পুরোনো ভিডিওকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। উক্ত ভিডিওতে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল সময় টিভি’র লোগো খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত লোগোর সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড  সার্চের মাধ্যমে সময় টিভি’র ইউটিউব চ্যানেলে ২০২১ সালের ১৫ জানুয়ারি ‘হলিউডের সিনেমা নয় এটি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বার্ষিক মহড়া’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Somoy TV YouTube

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এটি বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ২০২১ সালের বার্ষিক মহড়ার ভিডিও।

এই ভিডিওটি’র একটি অংশের সাথে আলোচিত ভিডিওটি’র মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner

অর্থাৎ, এই ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং প্রায় ৩ বছর পূর্বের।

পাশাপাশি, গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে এখন পর্যন্ত সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহকে উদ্ধারে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর কোনো পদক্ষেপ বা তৎপরতার সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

অর্থাৎ, উপরোক্ত বিষয়গুলো পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহকে উদ্ধারে বাংলাদেশ নৌবাহিনী এখন পর্যন্ত যাত্রা শুরু করেনি।

মূলত, গত ১২ মার্চ মোজম্বিকের রাজধানী মাপুটো থেকে ৫৫ হাজার টন কয়লা নিয়ে আরব আমিরাতের উদ্দেশ্যে যাত্রাকালে ভারত মহাসাগরে ২৩ নাবিকসহ বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহকে অপহরণ করে সোমালিয়ার কয়েকজন জলদস্যু। সর্বশেষ তথ্যমতে জাহাজটি এখনো সোমালিয়ার জলদস্যুদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এরই মধ্যে উক্ত ঘটনায় শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম টিকটকে ‘এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজ উদ্ধারের জন্য বাংলাদেশ নৌবাহিনী যাচ্ছে’ শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, সোমালিয়ার জলদস্যুদের ছিনতাইকৃত বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ উদ্ধারের জন্য এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ নৌবাহিনী যায়নি। প্রকৃতপক্ষে, ২০২১ সালে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল সময় টিভি’তে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর বার্ষিক মহড়ার বিষয়ে প্রচারিত একটি প্রতিবেদনের ভিডিওকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

উল্লেখ্য, ইতোমধ্যে সোমালিয়ার জলদস্যু কর্তৃক বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ অপহরণের ঘটনায় একাধিক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। প্রতিবেদনগুলো দেখুন এখানে

সুতরাং, সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহকে উদ্ধারে বাংলাদেশ নৌবাহিনী যাত্রা শুরু করেছে দাবিতে টিকটকে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

বাস, জাহাজ কিংবা বিমানে ভ্রমণের সময় বমি হয় কেন?

0

ভ্রমণ করতে কে না পছন্দ করে! কিন্তু আমাদের মধ্যে অনেকেই এমন আছেন যাদের কাছে ভ্রমণ একটি আতঙ্কের নাম। এর কারণ হলো যাত্রাপথের অস্বস্তিকর অভিজ্ঞতা। অনেকেই বাস, ট্রেন, লঞ্চ বা বিমানে যাত্রার সময় গা গুলিয়ে ওঠা, মাথা ঘোরা, বমিসহ আরও কিছু শারীরিক জটিলতায় ভোগেন। এই অস্বস্তিকর অভিজ্ঞতাকে বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় মোশন সিকনেস। 

মোশন সিকনেস আসলে কী?

কোনো ব্যক্তির গতিশীল অবস্থার কারণে দেহের অভ্যন্তরীণ ভারসাম্য রক্ষিত না হলে অনেকেই বমি বমি ভাব, মাথা ব্যথা, মাথা ঘোরা, গা গুলিয়ে ওঠাসহ একাধিক শারীরিক সমস্যায় ভোগেন। এটিই মোশন সিকনেস নামে পরিচিত। বাস-ট্রেন, জাহাজ-নৌকা কিংবা উড়োজাহাজ, যেকোনো পথে ভ্রমণের ক্ষেত্রেই মোশন সিকনেস দেখা দিতে পারে। এমনকি সুউচ্চ ভবনের লিফটেও হতে পারে মোশন সিকনেস। সমুদ্র পথে যাত্রাকালে সৃষ্ট মোশন সিকনেসকে ‘সি সিকনেস’ও বলা হয়। অর্থাৎ, মোশন বা গতির কারণে যাত্রাপথে অনেকেই যে বমিসহ অন্যান্য শারীরিক অসুস্থতায় ভোগেন সেটিই হলো মোশন সিকনেস। 

মোশন সিকনেস কেন হয়?

যখন আমাদের দেহের দুটি সেন্সরি স্নায়ু (দর্শন এবং ভারসাম্য রক্ষা) দেহের গতীয় অবস্থা সম্পর্কে পরস্পরবিরোধী সংকেত মস্তিষ্কে প্রেরণ করে, তখন আমাদের মস্তিষ্ক দেহের প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে। মস্তিষ্কের এই বিভ্রান্তিকর অবস্থার ফলেই মাথা ঘোরা, বমি-বমিভাব সহ একাধিক শারীরিক জটিলতার উদ্ভব হয়। 

মোশন সিকনেসের পুরো প্রক্রিয়াটি বুঝতে হলে দেহের ভারসাম্য রক্ষার প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানা প্রয়োজন।

আমাদের দেহের ভারসাম্য রক্ষার প্রক্রিয়া

আমরা জানি কান আমাদের শ্রবণ অঙ্গ। তবে আমাদের মধ্যে অনেকেই হয়তো জানেন না, শ্রবণের পাশাপাশি কানের একটি অংশ দেহের ভারসাম্য রক্ষাতেও অদ্বিতীয় ভূমিকা পালন করে। আমাদের কান মূলত তিনটি প্রধান অংশে ভাগ করা যায়। এগুলো হলো- বহিঃকর্ণ, মধ্যকর্ণ, অন্তকর্ণ। 

Source: National Library of Medicine

যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিনের তথ্যমতে, আমাদের অন্তকর্ণে কিছু অর্ধ-বৃত্তাকার নালিকা ও দুটি অটোলিথ অর্গান রয়েছে যেগুলো একধরনের তরল পদার্থ দ্বারা পূর্ণ থাকে। যখন আমরা আমাদের মাথা দোলাই তখন অন্তকর্ণের ভেতরে থাকা তরলও দুলতে থাকে। অন্তকর্ণের তরলের এই স্থানচ্যুতির ফলে মস্তিষ্কে সংকেত প্রেরিত হয়। এই সংকেতের ফলে মস্তিষ্ক আমাদের দৈহিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে পারে। এরপর মস্তিষ্ক সেই সংকেত অনুযায়ী দেহের অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে ভারসাম্য রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সংকেত প্রেরণ করে। এভাবেই অন্তকর্ণের মাধ্যমে মানবদেহের ভারসাম্য রক্ষিত হয়।

এবার মোশন সিকনেসের যেভাবে সংঘটিত হয় সে প্রক্রিয়ায় আসা যাক। যখন আমরা বাস, জাহাজ কিংবা উড়োজাহাজে ভ্রমণ করি তখন আমরা আমাদের চারপাশের প্রকৃতি গতিশীল দেখি। ফলে, আমাদের চোখ মস্তিষ্কে যে দর্শন অনুভূতি প্রেরণ করে সে অনুসারে মস্তিষ্ক ভাবে যে আমাদের দেহ গতিশীল আছে। আবার একই সাথে আমাদের দেহ স্থির থাকার কারণে অন্তকর্ণ মস্তিষ্কে স্থির অবস্থায় থাকার সংকেত প্রেরণ করে। একই দেহের দুটি ভিন্ন সেন্সরি স্নায়ু (দর্শন ও ভারসাম্য রক্ষা) দুইটি ভিন্ন অবস্থার অনুভূতি মস্তিষ্কে প্রেরণ করায় মস্তিষ্ক বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে এবং দেহের প্রকৃত অবস্থা নিরূপণ করতে জটিলতার সৃষ্টি হয়। মস্তিষ্কের এই বিভ্রান্তিকর অবস্থার ফলেই আমাদের মাথা ঘোরা, গা গুলানো কিংবা বমির মত সমস্যার উদ্রেক হয়।

মোশন সিকনেস কতক্ষণ থাকে

যাত্রা বা ভ্রমণ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই মোশন সিকনেস ঠিক হয়ে যায়। তবে কারো কারো চার ঘণ্টা থেকে কয়েক দিন পর্যন্ত এর প্রভাব থাকতে পারে। যদি ঘনঘন বমি হয় তবে মোশন সিকনেসের প্রভাব কাটিয়ে উঠতে ও পানিশূন্যতা রোধে ওরস্যালাইন পান করা যেতে পারে।

মোশন সিকনেস কাদের বেশি হয়?

যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিনের তথ্য অনুসারে যেসকল ফ্যাক্টর মোশন সিকনেসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয় সেগুলো হলো: 

  • জেন্ডার: মেয়েদের মোশন সিকনেস ছেলেদের তুলনায় বেশি।
  • বয়স: ৬ বছর বয়স থেকে মোশন সিকনেস দেখা দেয় এবং ৯ বছর বয়সে এ সংক্রান্ত জটিলতা চরমে পৌঁছায়। তবে, বয়স বাড়ার সাথে সাথে অভিযোজনের মাধ্যমে এ সমস্যা কমতে থাকে। কিন্তু, বৃদ্ধদের মোশন সিকনেসে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনাও বেশি। 
  • হরমোন: গর্ভধারণ কিংবা ঋতুচক্রের সময় হরমোনাল ইমব্যালেন্স তৈরি হলে মোশন সিকনেসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
  • প্রসূতিরোগ ও মাইগ্রেনের সমস্যা থাকলে মোশন সিকনেস হওয়ার ঝুঁকি বেশি।

মোশন সিকনেস থেকে বাঁচতে হলে

মোশন সিকনেস থেকে নিজেকে দূরে রাখতে বেশকিছু বিষয় খেয়াল রাখা প্রয়োজন। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিনের তথ্যমতে মোশন সিকনেস প্রশমিত করতে নিম্নোক্ত উপায় অবলম্বন করা যেতে পারে-

  • ভ্রমণকালে মাথা, কাঁধ, নিতম্ব ও হাঁটুর নড়াচড়া কমিয়ে দেওয়া।
  • চলন্ত গাড়িতে বইপত্র কিংবা ম্যাগাজিন পড়া থেকে বিরত থাকা।
  • গাড়ির সামনের দিকে বসা; যাতে সামনের দৃষ্টি প্রসারিত থাকে।
  • দ্রুত চলমান কিছুর দিক থেকে দৃষ্টি সরিয়ে নেওয়া; এক্ষেত্রে স্থির দিগন্তে দৃষ্টি আবদ্ধ রাখা যেতে পারে।
  • চোখ বন্ধ করে ধীরে ধীরে শ্বাসগ্রহণ করা।
  • নিকোটিন ও অ্যালকোহল সেবন থেকে বিরত থাকা।
  • দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় ভ্রমণ থেকে বিরত থাকা।
  • ভ্রমণের ক্ষেত্রে শীতল ও সুখকর গান শোনার পরামর্শও দেওয়া হয়।

মূলত, চলন্ত গাড়িতে দেহের সেন্সরি স্নায়ু মস্তিষ্কে পরস্পরবিরোধী সঙ্কেত পাঠানোর প্রেক্ষিতে আমাদের মোশন সিকনেস হতে পারে। মোশন সিকনেসের শিকার হওয়া একটি স্বাভাবিক ঘটনা। বয়স বাড়ার সাথে সাথে এ সমস্যা অনেকটাই কেটে যায়। তবে বয়স বাড়ার পরও যারা এ সমস্যায় ভোগেন যাত্রাকালে তারা কিছু ছোট বিষয় মাথায় রাখলেই এ সমস্যা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব।

তথ্যসূত্র

বাজপাখির ৪২ দিনে ১০ হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দেওয়ার তথ্যটি গুজব

0

সম্প্রতি ‘একটা বাজপাখি সাউথ-আফ্রিকা থেকে ফিনল্যান্ডে উড়ে যাওয়ার সময় তার শরীরে কিছু ইকুইপমেন্ট বসানো হয়, আর এই ছবিতে দেখা যাচ্ছে স্যাটেলাইট থেকে তার যাত্রাপথ।’ শীর্ষক শিরোনামে একটি ছবি ও তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

বাজপাখির

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ফিনল্যান্ডে উড়ে যাওয়ার সময় বাজপাখির যাত্রাপথ দাবিতে প্রচারিত তথ্য ও ছবিটি সঠিক নয় বরং কোনো ধরণের নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই দীর্ঘদিন ধরে ইন্টারনেটে এই তথ্যটি প্রচার হয়ে আসছে। 

মূলত, ইন্টারনেটে দীর্ঘদিন ধরেই একটি বাজপাখির দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ফিনল্যান্ডে ৪২ দিনে ১০ হাজার কিলোমিটার পথ উড়ে যাওয়ার সময়ের যাত্রাপথ দাবিতে একটি ছবি ও তথ্য প্রচার হয়ে আসছে। তবে রিউমর স্ক্যানার যাচাই করে দেখেছে যে, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবি ও তথ্যটি কোনো প্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ওয়েবসাইট ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হয়ে আসছে। উপরন্তু অনুসন্ধানে আরও দেখা যায়, একই ছবি ইতোপূর্বে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ফিনল্যান্ড পর্যন্ত সোমালি টেকটনিক প্লেটের একটি ফল্টলাইনের বিচ্যুতি নির্দেশ করতেও ব্যবহার করা হয়েছে। তবে সার্বিক অনুসন্ধানে কোনো দাবির পক্ষেই নির্ভরযোগ্য সূত্রে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, পূর্বেও একই দাবিতে আলোচিত ছবি ও তথ্যটি ইন্টারনেটে প্রচার করা হলে সেসময় বিষয়টি নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার। 

অস্কারের মূল অনুষ্ঠানে ‘মেসি’ নামের কুকুর উপস্থিত ছিল না, দেয়নি তালিও

গত ১১ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলসের ডলবি থিয়েটারে জিমি কিমেলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত হয় ৯৬তম একাডেমি অ্যাওয়ার্ডস বা অস্কারের পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠান। মূল অনুষ্ঠানে ‘অ্যানাটমি অব আ ফল’ সিনেমার তারকা ‘মেসি’ নামের একটি কুকুর উপস্থিত ছিল এবং সে ‘ওপেনহেইমার’ সিনেমার জন্য পার্শ্বচরিত্রে সেরা অভিনেতা হওয়া রবার্ট ডাউনি জুনিয়রের পুরস্কার নেওয়ার সময় সেও দুই পা দিয়ে করতালি দিচ্ছিল এমন দাবিগুলো দেশের একাধিক গণমাধ্যমে প্রচার হতে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার৷ 

অস্কারের মূল

দাবিগুলো উল্লেখ করে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন সময় টিভি, প্রথম আলো (ইউটিউব), ইত্তেফাক, চ্যানেল আই, আরটিভি, প্রতিদিনের বাংলাদেশ (ইউটিউব), মানবকণ্ঠ, সংবাদ প্রকাশ, ঢাকা প্রকাশ, সকাল সন্ধ্যা, রাইজিং বিডি, ঢাকা মেইল, জুম বাংলা, ঢাকা টুডে

একই দাবিতে গণমাধ্যমের ফেসবুক পেজসহ অন্যান্য ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, অস্কারের মূল অনুষ্ঠানে মেসি নামের কুকুরটি উপস্থিত ছিল না এবং তার আলোচিত হাততালির দৃশ্যটিও মৌলিক নয় বরং মেসির একজন ট্রেনার কুকুরের প্লাস্টিকের পা দিয়ে আগে দৃশ্যটি রেকর্ড করে রেখেছিলেন। শো এর মাঝে প্রি-রেকর্ডেড এই ক্লিপটি চালানো হয়।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য হলিউড রিপোর্টারের সাংবাদিক ক্রিস গার্ডনারের একটি এক্স পোস্ট নজরে আসে আমাদের। গত ১০ মার্চের এই পোস্টে একটি শর্ট ভিডিও শেয়ার করেছেন তিনি, যাতে দেখা যাচ্ছে, কুকুর মেসি অল্প সংখ্যক দর্শকের সাথে দর্শক সারিতে বসে আছে। একাধিক ক্যামেরার মাধ্যমে তার হাত তালি দেওয়ার দৃশ্য ধারণ করা হচ্ছে। গার্ডনার তার পোস্টে জানিয়েছেন, অস্কারে কুকুর মেসি অংশ নেয়নি তবে অল্প সংখ্যক দর্শকের সামনে তার জন্য একটি সেগমেন্টের আয়োজন ছিল। 

অস্কারের এবারের আসরের উপস্থাপক জিমি কিমেলের একটি ইউটিউব ভিডিওতে দেখা যায়, মেসির হাততালি দৃশ্যটি ধারণের সময় তার বসার স্থানের নিচে এক ব্যক্তিকে কৃত্রিম দুইটি কুকুরের পা ধরে রেখেছেন। এই পাগুলো নাড়ানোর ফলে মনে হচ্ছিল মেসিই পা নাড়িয়ে হাততালির অঙ্গভঙ্গি করছেন, আসলে তা নয়। 

Screenshot: YouTube

পরবর্তীতে জিমি কিমেল একই চ্যানেলে প্রকাশিত আরেক ভিডিওতেও বিষয়টি স্পষ্ট করেছেন।  

মার্কিন সংবাদমাধ্যম এসোসিসেটেড প্রেসের (এপি) এক প্রতিবেদন থেকেও বিষয়টি জানা যাচ্ছে।  

এপির ফটোগ্রাফার ক্রিস ফিজেলো বলছেন, মূল শো শুরুর পৌনে এক ঘন্টা আগে যখন আমন্ত্রিত অতিথিরা ডলবি থিয়েটারের অনুষ্ঠান স্থলে আসতে শুরু করেছেন ঠিক সেসময়ই মেসির দৃশ্যটি ধারণ করা হয়। এই দৃশ্যই পরে মূল অনুষ্ঠানে প্রযুক্তির সহায়তায় ব্যবহার করা হয়। 

মূলত, গত ১১ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রের ৯৬তম একাডেমি অ্যাওয়ার্ডস বা অস্কারের পুরষ্কার বিতরণীর মূল অনুষ্ঠানে ‘অ্যানাটমি অব আ ফল’ সিনেমার তারকা ‘মেসি’ নামের একটি কুকুর উপস্থিত ছিল এবং সে ‘ওপেনহেইমার’ সিনেমার জন্য পার্শ্বচরিত্রে সেরা অভিনেতা হওয়া রবার্ট ডাউনি জুনিয়রের পুরস্কার নেওয়ার সময় সেও দুই পা দিয়ে করতালি দিচ্ছিল এমন দাবিগুলো দেশের একাধিক গণমাধ্যমে প্রচার হতে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার৷ কিন্তু রিউমর স্ক্যানার টিম অনুসন্ধানে জেনেছে, মূল অনুষ্ঠানে মেসি উপস্থিত ছিল না এবং তার আলোচিত হাততালির দৃশ্যটিও মৌলিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, মেসির ট্রেনার লরা মার্টিন কুকুরের কৃত্রিম পা দিয়ে অনুষ্ঠানে শুরুর পূর্বেই দৃশ্যটি রেকর্ড করে রাখা হয়েছিল যা প্রযুক্তির সহায়তায় মূল শো এ চালানো হয়।

সুতরাং, সম্প্রতি অস্কারের মূল অনুষ্ঠানে ‘মেসি’ নামের একটি কুকুর উপস্থিত ছিল এবং সে দুই পা দিয়ে করতালি দিচ্ছিল শীর্ষক দাবিগুলো গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ উদ্ধারে বাংলাদেশ নৌবাহিনী সাবমেরিন পাঠায়নি

২৩ জন নাবিকসহ বাংলাদেশি পণ্যবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ গত ১২ মার্চ সোমালিয়ান জলদস্যুদের ছিনতাইয়ের কবলে পড়ে। জলদস্যুদের হাত থেকে এখনও উদ্ধার করা যায়নি ২৩ নাবিকসহ জাহাজ এমভি আবদুল্লাহকে। এরই মধ্যে শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম টিকটকে “এইমাত্র পাওয়ার খবর আরো দুইটি সাবমেরিন নিয়ে রওয়ানা হয়েছে বাংলাদেশের নৌবাহিনী সোমালিয়ার উদ্দেশ্যে” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে। 

জলদস্যুদের

উক্ত দাবিতে টিকটকে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি টিকটকে প্রচারিত ভিডিওটি প্রায় ২ লক্ষাধিক বার দেখা হয়েছে। ভিডিওটিতে প্রায় ১৪ হাজার ৩ শত পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে এবং শেয়ার করা হয়েছে ১২৬ বার। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ উদ্ধারে বাংলাদেশ থেকে কোনো সাবমেরিন রওনা হয়নি বরং ২০২৩ সালে সময় টিভিতে প্রচারিত ভিন্ন ঘটনার পুরোনো একটি ভিডিওকেই আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

দাবিটি নিয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। পর্যবেক্ষণে ভিডিওতে সময় টিভি’র একটি লোগো দেখতে পাওয়া যায়। উক্ত লোগোর সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড  সার্চের মাধ্যমে সময় টিভি’র ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩  সালের ২০ মার্চ “স্বাধীনতার মাসে আরও একটি অর্জন বাংলাদেশের সামরিক খাতে। Sheikh Hasina Submarine। Somoy TV” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর একটি অংশের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison : Rumor Scanner 

সময় টিভির প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ভিডিওটি দেশের প্রথম সাবমেরিন ঘাঁটি স্থাপনের সময়কার। কক্সবাজারের পেকুয়ায় নবনির্মিত এই ঘাঁটির কমিশনিং করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ‘নবযাত্রা’ ও ‘জয়যাত্রা’ নামক দুটি আধুনিক সাবমেরিনের কমিশনিং করেন প্রধানমন্ত্রী। 

অর্থাৎ, সময় টিভি’র প্রচারিত ভিন্ন ঘটনার পুরোনো একটি ভিডিওকেই এমভি আবদুল্লাহ উদ্ধারে যুদ্ধ জাহাজ পাঠাচ্ছে রাশিয়া দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

পরবর্তীতে জাহাজ উদ্ধারের বিষয়ে গৃহীত পদক্ষেপের বিষয়ে অনুসন্ধানে সময় টিভির ওয়েবসাইটে আজ (১৯ মার্চ) “জিম্মি জাহাজে অভিযানের বিষয়ে জানে না মালিকপক্ষ” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবলে পড়া জাহাজ উদ্ধারের অভিযান শুরু করার প্রস্তুতি নিয়েছে সোমালিয়ার পুলিশ এবং আন্তর্জাতিক নৌবাহিনীর সম্মিলিত দল। তবে জাহাজটির মালিকপক্ষ এ ধরনের অভিযানের বিষয়ে কিছু জানেননা বলে দাবি করেছেন। 

মূলত, গত ১২ মার্চ মোজম্বিকের রাজধানী মাপুটো থেকে ৫৫ হাজার টন কয়লা নিয়ে আরব আমিরাতের উদ্দেশ্যে যাত্রাকালে ভারত মহাসাগরে ২৩ নাবিকসহ বাংলাদেশি পণ্যবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহকে অপহরণ করে সোমালিয়ার জলদস্যুরা। এই প্রতিবেদন প্রকাশ অবধি জাহাজটি সোমালিয়ান জলদস্যুদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এরই মাঝে উক্ত ঘটনায় “এইমাত্র পাওয়ার খবর আরো দুইটি সাবমেরিন নিয়ে রওয়ানা হয়েছে বাংলাদেশের নৌবাহিনী সোমালিয়ার উদ্দেশ্যে” শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়। তবে রিউমর স্ক্যানার যাচাই করে দেখেছে যে, সোমালিয়ার জলদস্যুদের ছিনতাইকৃত বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ উদ্ধারে বাংলাদেশ নৌবাহিনী কোনো সাবমেরিন পাঠায়নি। প্রকৃতপক্ষে, ২০২৩ সালে দেশের প্রথম সাবমেরিন ঘাঁটি স্থাপনের সময়কার সময় টিভিতে প্রচারিত একটি ভিডিওকেই আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

সুতরাং, সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ উদ্ধারে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সাবমেরিন পাঠানোর দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

যুক্তরাষ্ট্রে নয়, পৃথিবীর সবচেয়ে প্রশস্ত রাস্তা চীনে অবস্থিত

0

সম্প্রতি, পৃথিবীর সব থেকে বড় রাস্তা এটি ! পৃথিবীর সবচেয়ে প্রশস্ত হাইওয়ে টেক্সাস এর ক্যাথি ফ্রিও‌য়ে যেটির কিছু জায়গায় একাধারে ২৬ টি লেন রয়েছে। শীর্ষক দাবিতে একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের ২৬ লেন বিশিষ্ট টেক্সাস ক্যাথি ফ্রিও‌য়ে পৃথিবীর সবচেয়ে প্রশস্ত হাইওয়ে বা রাস্তা নয় বরং চীনের জি৪ বেইজিং-হংকং-ম্যাকাউ এক্সপ্রেসওয়ের ৫০ লেনের পার্কিং লট হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে প্রশস্ত রাস্তা বা হাইওয়ে।

এ বিষয়ে সত্যতা জানতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে যুক্তরাষ্ট্রের ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া ব্লুমবার্গ এর ওয়েবসাইটে ২০১৫ সালের ৮ অক্টোবর “China’s 50-Lane Traffic Jam Is Every Commuter’s Worst Nightmare” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদ প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, চীনের জি৪ বেইজিং-হংকং-ম্যাকাউ এক্সপ্রেসওয়ের রাস্তা ৫০ লেন বিশিষ্ট।

চীন ভিত্তিক গণমাধ্যম China’s Daily এর এক্স অ্যাকাউন্টে ২০১৫ সালের ৬ অক্টোবরে প্রকাশিত এক পোস্টেও একই তথ্য জানা যায়। 

এছাড়া, উক্ত বিষয় নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যম USA Today এর ফ্যাক্টচেক বিভাগ ও যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক ফ্যাক্টচেকিং সংস্থা Politifact এর পৃথক দুইটি ফ্যাক্টচেকিং প্রতিবেদন থেকেও পৃথিবীর সবচেয়ে প্রশস্ত রাস্তা হিসেবে চীনের ৫০ লেন বিশিষ্ট জি৪ রাস্তার কথা জানা যায়।

মূলত, যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের ২৬ লেন বিশিষ্ট ক্যাথি ফ্রিওয়ে দীর্ঘদিন যাবত বিশ্বের সবচেয়ে প্রশস্ত রাস্তা দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার হয়ে আসছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, এটি বিশ্বের সবচেয়ে প্রশস্ত রাস্তা নয়। প্রকৃতপক্ষে চীনের জি৪ বেইজিং-হংকং-ম্যাকাউ এক্সপ্রেসওয়ের ৫০ লেনের রাস্তা হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে প্রশস্ত রাস্তা।

সুতরাং, যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের ২৬ লেন বিশিষ্ট ক্যাথি ফ্রিওয়ে পৃথিবীর সবচেয়ে প্রশস্ত রাস্তা দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ২৬ জিবি ফ্রি ইন্টারনেট শীর্ষক অফারটি ভুয়া

0

সম্প্রতি, “মহান স্বাধীনতা দিবস (২৬ মার্চ) উপলক্ষে বিভিন্ন সিম অপারেটরের পক্ষ থেকে বিনামূল্যে ২৬ জিবি ইন্টারনেট দেওয়া হচ্ছে” শীর্ষক শিরোনামে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু  পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায় যে, মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন সিম অপারেটরের পক্ষ থেকে ২৬ জিবি ফ্রি ইন্টারনেট অফার দেওয়ার দাবি সংক্রান্ত লিংকটি ভুয়া এবং উক্ত পদ্ধতি ব্যবহার করে ২৬ জিবি ইন্টারনেট পাওয়ার বিষয়টিও মিথ্যা।  

আলোচিত পোস্টে থাকা বলা হয়েছে ‘Learn more’ অপশনে ক্লিক করে লিংকে প্রবেশ করার জন্য। সেই নির্দেশনা অনুযায়ী লিংকটিতে ঢুকলে প্রথমেই বিনামূল্যে ইন্টারনেট নেওয়ার জন্য একটি অপশন আসে এবং তারপর মোবাইল নাম্বর দিতে হয়। মোবাইল নম্বর দেওয়ার পর তারা মোবাইল নাম্বারে একটি ওটিপি কোড দিয়ে বলে ৫ মিনিটের মধ্যে নির্ধারিত অফারটি পাওয়া যাবে৷ 

তবে সকল নির্দেশনা অনুসরণ করার পরেও পোস্টগুলোতে বলা ২৬ জিবি ইন্টারনেট পাওয়া যায়নি।

Image By Rumor Scanner 

অর্থাৎ, মহান স্বাধীনতা দিবস (২৬ মার্চ) উপলক্ষে ২৬ জিবি ইন্টারনেট বিনামূল্যে দেওয়ার অফারটি ভুয়া।

মূলত, মহান স্বাধীনতা দিবস (২৬ মার্চ) উপলক্ষে বিভিন্ন সিম অপারেটরের পক্ষ থেকে ব্যবহারকারীদের বিনামূল্যে ২৬ জিবি ইন্টারনেট দেওয়া হচ্ছে দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, কোনো সিম অপারেটরের পক্ষ থেকে এমন কোনো বোনাস ঘোষণা করা হয়নি। প্রকৃতপক্ষে, ওয়েবসাইটটি নিজেদের প্রচারণার স্বার্থে মহান স্বাধীনতা দিবস (২৬ মার্চ) উপলক্ষে ২৬ জিবি ইন্টারনেটের প্রলোভন দেখিয়ে এই লিংকটি ছড়াচ্ছে। 

উল্লেখ্য, এ ধরণের স্ক্যাম লিংকের মাধ্যমে সোশ্যাল মিডিয়া আইডি হ্যাক, ব্যক্তিগত তথ্য চুরি ও ব্ল্যাকমেইলের মাধ্যমে অনলাইন নিরাপত্তাকে বিঘ্নিত করার নজির রয়েছে।  

প্রসঙ্গত, পূর্বেও নববর্ষ উপলক্ষ্যে বিনামূল্যে ৫০ জিবি ইন্টারনেটের অফার, দারাজের নাম ব্যবহারে ৩০ জিবি ফ্রি ইন্টারনেট এবং হোয়াটসঅ্যাপের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে ৫০ জিবি ফ্রি ইন্টারনেট শীর্ষক একাধিক মিথ্যা তথ্য শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার টিম।

সুতরাং, মহান স্বাধীনতা দিবস (২৬ মার্চ) উপলক্ষে বিনামূল্যে ২৬ জিবি ইন্টারনেট প্রদানের দাবিতে যে লিংকটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ ভুয়া।

তথ্যসূত্র

  • Rumor Scanner’s Own Analysis 

জলদস্যুদের কবলে পড়া জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ হতে নাবিকদের ফিরিয়ে আনার দাবিটি মিথ্যা 

সম্প্রতি, আলহামদুলিল্লাহ তাদেরকে জলদস্যুর হাত- থেকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে- শীর্ষক ক্যাপশনে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। 

দাবি করা হচ্ছে, গত ১২ মার্চ ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়া কয়লাবাহী বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ হতে নাবিকদের ফিরিয়ে আনা হয়েছে। 

টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

এই প্রতিবেদন প্রকাশ অবধি এবিষয়ে টিকটকে প্রচারিত সবচেয়ে ভাইরাল ভিডিওটি প্রায় ১২ লাখ বার দেখা হয়েছে। এছাড়া ভিডিওটিতে প্রায় দুই হাজার পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া করা হয়েছে এবং ১ হাজার বারের উপরে ভিডিওটি শেয়ার করা হয়েছে। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়া কয়লাবাহী বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ হতে নাবিকদের উদ্ধার করে ফিরিয়ে আনার দাবিটি সঠিক নয় বরং গত ১১ মার্চ থেকে শুরু হওয়া “জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ-২০২৪” উপলক্ষে চাঁদপুরের নৌ র‍্যালির ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে মূলধারার ইলেকট্রনিক সংবাদমাধ্যম ডিবিসি নিউজ এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ১১ মার্চ “জাতীয় জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ উপলক্ষে চাঁদপুরে নৌ র‍্যালি” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত ভিডিওটির সাথে হুবহু মিল না থাকলেও স্পিড বোটে থাকা পুলিশ এবং স্পিড বোটের সাজসজ্জার সাথে মিল রয়েছে।

Video Comparison: Rumor Scanner

উক্ত ভিডিওটি থেকে জানা যায়, গত ১১ মার্চ ‘জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ-২০২৪’ এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে চাঁদপুরে আয়োজিত নৌ র‍্যালির ভিডিও এটি। 

অর্থাৎ, প্রচারিত ভিডিওটি সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়া কয়লাবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর নাবিকদের ফিরিয়ে আনার নয়। 

এছাড়া, সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়া কয়লাবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর নাবিকদের ফিরিয়ে আনা হয়েছে কি না এবিষয়ে অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে গণমাধ্যম ও বিশ্বস্ত সূত্রে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

মূলত, গত ১২ মার্চ ভারত মহাসাগরে ২৩ নাবিকসহ বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ অপহরণ করে সোমালিয়ান জলদস্যুরা। এরপর থেকেই জাহাজটি সোমালি জলদস্যুদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এরইমধ্যে সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়া কয়লাবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ হতে নাবিকদের ফিরিয়ে আনা হয়েছে- দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, গত ১১ মার্চ ‘জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ-২০২৪’ এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে চাঁদপুরে আয়োজিত নৌ র‍্যালির একটি ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। এছাড়া, গণমাধ্যমেও আলোচিত দাবির সত্যতা পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়া জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ হতে নাবিকদের ফিরিয়ে আনা হয়েছে- শীর্ষক দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র