Home Blog Page 533

বাংলাদেশের চার সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেয়নি যুক্তরাষ্ট্র

সম্প্রতি, “এবার ৪ সেনাসদস্যর উপরে নিষেধাজ্ঞা। সেনাবাহিনীর উপরে নিষেধাজ্ঞা দিতে পারে যুক্তরাষ্ট্র” শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

নিষেধাজ্ঞা

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে(আর্কাইভ)

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, সম্প্রতি বাংলাদেশের কোনো  সেনাসদস্যকে যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দেয়নি বরং বাংলাদেশের চার সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার জন্য ভারতের একটি চামকা সংগঠন কর্তৃক যুক্তরাষ্ট্র ও জাতিসংঘের নিকট দাবি জানানোর বিষয়টি অধিক ভিউ পাবার আশায় চটকদার থাম্বনেইল ব্যবহার করে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। আলোচিত ভিডিওর উপস্থাপক দর্শকদের উদ্দেশ্যে দুইটি ভিডিও দেখান।

ভিডিও যাচাই-১

প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে 1A News এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ১৭ ডিসেম্বর “এবার বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চার অফিসারকে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার দাবী জানালো ভারতের চাকমা সংগঠন।” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও(আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়।

Comparison By Rumor Scanner

উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওর মিল খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওতে উপস্থাপককে ভারতের গণমাধ্যম দ্য হিন্দু এর বরাতে বাংলাদেশের চার সেনা কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির জন্য ভারতের চাকমা আদিবাসীদের একটি সংগঠন কর্তৃক জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্রের নিকট দাবি জানানোর কথা বলা হয়। 

তবে, উক্ত ভিডিওতে উপস্থাপক কোথাও সে নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের বিষয়ে কোনো তথ্য দেননি।

পরবর্তীতে উক্ত সূত্র ধরে ভারতীয় গণমাধ্যম দ্য হিন্দুতে “Extrajudicial killing of four indigenous leaders | Chakma community appeals to United Nations, U.S. to impose sanctions against four Bangladesh Army officers” শিরোনামে প্রকাশিত আলোচিত প্রতিবেদনটি খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ১১ ডিসেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রামে চারজন আদিবাসী নেতাকে হত্যার অভিযোগে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চার কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেয়ার দাবি জানিয়েছে একটি ভারতীয় চাকমা সংগঠন। কিন্তু উক্ত প্রতিবেদনেও নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের দাবির বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায় নি।

ভিডিও যাচাই-২

প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে, News TubeTV এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ১৭ ডিসেম্বর “সেনাবাহিনীর চার অফিসারকে নিষেধাজ্ঞার দাবী ভারতের চাকমা সংগঠনের kanaksarwarNEWS” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও(আর্কাইভ) খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার টিম।

Comparison By Rumor Scanner

উক্ত ভিডিওর একটি অংশের সাথে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

ভিডিওতে ভারতীয় চাকমা সংগঠনের দাবিকৃত নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আলোচনা করতে দেখা যায়। তবে, এই ভিডিওর কোথাও সেনাবাহিনীর চার সদস্যের উপর নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের বিষয়ে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

মূলত, ভারতীয় একটি চাকমা সংগঠন বাংলাদেশের চার সেনা কর্মকর্তারা ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও জাতিসংঘের নিকট দাবি জানিয়েছে। উক্ত দাবিকেই অতিরঞ্জিত করে অধিক ভিউ পাবার আশায় বিষয়টি নিয়ে একাধিক ব্যক্তির নিজস্ব মতামতের ভিডিও যুক্ত করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চার কর্মকর্তার ওপর যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে শীর্ষক দাবি সম্বলিত শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, পূর্বে সেনাবাহিনীর অধীনে নির্বাচন এবং শতাধিক এমপি ও ব্যক্তির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আসার দাবিতে মিথ্যা তথ্য প্রচার করা হলে সে বিষয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার। 

সুতরাং, বাংলাদেশের  চার সেনা কর্মকর্তার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মধ্যমাঙ্গুলি দেখাননি, এই ছবিটি সম্পাদিত

0

সম্প্রতি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়ার সময় মধ্যমাঙ্গুলি দেখাচ্ছেন এমন একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। লন্ডন বাংলা চ্যানেল নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে ছবিটি পোস্ট করে ক্যাপশনে লেখা হয়েছে , শেখর এখন আর আসে না, তাই নিজেরটা নিজেই দিতে হয়।

ফেসবুকে প্রচারিত ছবিটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

একই ছবি কতিপয় ফেসবুক পোস্টের কমেন্টেও দেখেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

এমন একটি পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক মধ্যমাঙ্গুলি দেখানোর ছবিটি আসল নয় বরং তার বাম হাতের তর্জনী আঙ্গুল দেখানোর ছবিকে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে ছবিটি তৈরি করে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে সরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ‘বাংলাদেশ টেলিভিশন’ এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ২৭ মার্চ “বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আলোচনা সভা অনুষ্ঠান” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে (আর্কাইভ) পাওয়া যায়। 

উক্ত ভিডিওতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরনের পোশাক এবং ব্যাকগ্রাউন্ডের সাথে আলোচিত ছবিতে থাকা বিষয়বস্তুর মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

পরবর্তীতে উক্ত আলোচনা সভার পুরো ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে ভিডিওটির ২ ঘন্টা ১ মিনিট ১ সেকেন্ডের সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি স্থিরচিত্রের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবির দৃশ্যমান মিল খুঁজে পাওয়া যায়। এই দৃশ্যে দেখা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বক্তব্য দেওয়ার সময় বাম হাতের তর্জনী আঙ্গুলটি উঁচিয়ে ধরেছেন।  

Screenshot Comparison : Rumor Scanner 

পুরো ভিডিওতে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে তাকে মধ্যমাঙ্গুলি উঁচিয়ে ধরতে দেখা যায়নি। 

ভিডিওটির বিস্তারিত বর্ণনা থেকে জানা যায়, মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস ২০২৩ উদযাপন উপলক্ষে ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে এই আলোচনা সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।  

মূলত, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ২৭ মার্চ চলতি বছরের মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বক্তব্য দেন। তার বক্তব্যের একটি স্থিরচিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে, তিনি মধ্যমাঙ্গুলি দেখিয়েছেন। কিন্তু রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উক্ত অনুষ্ঠানে তার দেওয়া বক্তব্যের সময় মধ্যমাঙ্গুলি দেখাননি। প্রকৃতপক্ষে, বক্তব্যের সময় শেখ হাসিনা কর্তৃক বাম হাতের তর্জনী আঙ্গুলটি উঁচিয়ে ধরার দৃশ্যকে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে মধ্যমাঙ্গুলি উঁচিয়ে ধরার ছবি বসিয়ে প্রচার করা হয়েছে; যা সঠিক নয়। 

সুতরাং, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়ার সময় মধ্যমাঙ্গুলি দেখাচ্ছেন শীর্ষক ছবিটি এডিটেড বা বিকৃত। 

তথ্যসূত্র 

বাংলাদেশের নির্বাচন বন্ধে শেখ হাসিনাকে জো বাইডেনের ফোন দেওয়ার গুজব 

সম্প্রতি, নির্বাচন বন্ধে জো-বাইডেনের ফোন, শেষ রক্ষা হলোনা প্রধানমন্ত্রীর– শীর্ষক থাম্বনেইলে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। 

ভিডিওটিতে দাবি করা হচ্ছে, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বন্ধের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফোন দিয়েছেন। 

নির্বাচন বন্ধে

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু ভিডিও পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বন্ধে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বা অন্য কোনো ব্যক্তিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ফোন দেননি বরং অধিক ভিউ পাবার আশায় চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এটি ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার পুরোনো কয়েকটি ভিডিও ক্লিপ এবং ছবি যুক্ত করে সম্পাদনার মাধ্যমে তৈরি একটি ভিডিও।

ভিডিও যাচাই- ১

আলোচিত ভিডিওটিতে দুইজন ব্যক্তিকে বক্তব্য দিতে দেখা যায়। পাশাপাশি ভিডিওটিতে 2A News এর লোগো দেখতে পাওয়া যায়। সেই লোগো’র সূত্র ধরে অনুসন্ধানে 2A News নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলে গত ১৩ ডিসেম্বর “৭ই জানুয়ারি নির্বাচন নিয়ে বাংলাদেশকে আপনারা বাঁচান- ইউকে বিএনপির সভাপতি” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে (আর্কাইভ) পাওয়া যায়। 

উক্ত ভিডিওটির একটি সাথে আলোচিত ভিডিওটির হুবহু মিল রয়েছে। 

Video Comparison: Rumor Scanner

ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, দুইজন ব্যক্তির মধ্যে কেউই নির্বাচন বন্ধের জন্য জো বাইডেন ফোন দিয়েছেন সংক্রান্ত কোনো কথা বলেননি। 

ভিডিও যাচাই- ২

আলোচিত ভিডিওটির এই অংশে একটি সংবাদ প্রতিবেদন দেখা যায়। পাশাপাশি সংবাদ প্রতিবেদনটিতে বেসরকারি টেলিভিশন এটিএন বাংলা’র লোগো দেখা যায়। সেই লোগো’র সূত্র ধরে অনুসন্ধানে গত ১৭ ডিসেম্বর “নির্বাচনের পর বাংলাদেশে ‘আরব বসন্তের’ আশঙ্কা” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি সংবাদ প্রতিবেদন খুঁজে (আর্কাইভ) পাওয়া যায়। 

উক্ত সংবাদ প্রতিবেদনের একটি অংশের সাথে আলোচিত ভিডিওটিতে থাকা সংবাদ প্রতিবেদনটির হুবহু মিল রয়েছে। 

Video Comparison: Rumor Scanner

সংবাদ প্রতিবেদনটি পর্যবেক্ষণ করে জানা যায়, গত ১৫ ডিসেম্বর (শুক্রবার) রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা এক বিবৃতিতে আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন বলেন, বাংলাদেশ সরকারকে অস্থিতিশীল করতে ওয়াশিংটন ব্যাপকভাবে অর্থনৈতিক ও ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারে বলে আশঙ্কা করছে রাশিয়া। এ ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের মদদে বাংলাদেশে আরব বসন্তের মতো ঘটনা ঘটতে পারে বলেও আশঙ্কা করছে দেশটি।

অর্থাৎ, এই সংবাদ প্রতিবেদনেও বাংলাদেশে নির্বাচন বন্ধে জো বাইডেনের ফোন দেওয়া সংক্রান্ত কোনো তথ্য উল্লেখ করা হয়নি। 

পরবর্তীতে, দাবিটি অধিকতর যাচাইয়ের জন্য প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করতে গণমাধ্যম ও  সামাজিক মাধ্যমের কোনো বিশ্বস্ত সূত্রে এসংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

পাশাপাশি, ঢাকাস্থ যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের ফেসবুক পেজ এবং ওয়েবসাইটেও এসংক্রান্ত কোনো তথ্যের সত্যতা পাওয়া যায়নি।

মূলত, আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) সহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল এ নির্বাচন বয়কটের ঘোষণা দিয়েছে। এদিকে এই নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে বিগত কয়েকবছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলোর কূটনীতিকরা দফায় দফায় বাংলাদেশের সরকার ও বিরোধী পক্ষসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষের সাথে কথা বলছে। এর প্রেক্ষিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেশি বিদেশি বিভিন্ন ব্যক্তিকে জড়িয়ে নানা সময় নানা ধরনের তথ্য প্রচার হয়ে আসছে। আর এরই ধারাবাহিকতায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘নির্বাচন বন্ধে জো-বাইডেনের ফোন, শেষ রক্ষা হলোনা প্রধানমন্ত্রীর’ শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়। তবে অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত দাবিটি নয়। প্রকৃতপক্ষে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বন্ধে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বা অন্য ব্যক্তিকে ফোন দেননি গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে উক্ত দাবির সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

প্রসঙ্গত, আগামী ৭ জানুয়ারি রোববার ভোটগ্রহণের দিন রেখে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। গত ১৫ নভেম্বর সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া এক ভাষনে এই ঘোষণা দেন তিনি। ইতোমধ্যে নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীদের প্রতীকও বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

সুতরাং, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফোন দিয়েছেন দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষে ৬ পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে হত্যার গুজব

সম্প্রতি, ‘ইন্না-লিল্লাহ পুলিশ বিএনপি ভয়াবহ সংঘর্ষ ৬ পুলিশ পিটেয়ে নিহত এইমাত্র’ শীর্ষক থাম্বনেইল সম্বলিত একটি ভিডিও ইউটিউবে প্রচার করা হয়েছে।

পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষে

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সম্প্রতি পুলিশ ও বিএনপির নেতাকর্মীদের কোনো সংঘর্ষে ৬ জন পুলিশ সদস্য নিহত হবার মত ঘটনা ঘটেনি। অধিক ভিউ পাবার আশায় চটকদার থাম্বনেইল ব্যবহার করে ২৮ অক্টোবর পুলিশ ও বিএনপি সংঘর্ষের একটি ভিডিও ফুটেজের সাথে ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার ভিডিওকে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় যুক্ত করে ভিত্তিহীনভাবে উক্ত দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। এতে দেখা যায়, ভিডিওটির ইন্ট্রোতে ৪টি ভিডিও দেখানো হয়। প্রথমটিতে DESH TV এর একটি ভিডিও দেখানো হয় যেখানে সংবাদপাঠিকাকে বলতে শোনা যায়, ‘এদিকে একতরফা নির্বাচন বাতিলের দাবিতে বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর সকাল-সন্ধ্যা হরতাল চলছে।’ পরবর্তীতে হরতালের ভিডিও দাবিতে দুটো ভিডিও দেখানো হয় যার প্রথমটিতে বাসে আগুন লেগেছে বলে একজন ব্যক্তিকে বলতে শোনা যায়। পরবর্তী ভিডিওতে বিএনপি নেতাকর্মীদের পুলিশ সদস্যদের ধাওয়া করতে দেখা যায়। যার শেষে একজন পুলিশ সদস্যকে আক্রমণ করতেও দেখা যায়। এরপরই DESH TV আরেকটি ভিডিও দেখানো হয় যেটিতে পূর্বের সংবাদপাঠিকাকেই আবার বলতে শোনা যায়, ‘এতে চারজনের মরদেহ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস।’ এরপরই আলোচিত ভিডিওটির উপস্থাপক পর্দার সামনে আসেন। যার পর তিনি দাবি করেন বিএনপির সকাল-সন্ধ্যা হরতালে ইতিমধ্যে চারজন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছে। সর্বপরি তিনি দর্শকদের উদ্দেশ্যে দুটি ভিডিও দেখান। যার দুটোই সম্প্রতি মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস নামের রেলে দুর্বৃত্তদের আগুনের ঘটনা নিয়ে। এছাড়াও ইন্ট্রোর শেষ ভিডিওটি মূলত ‍উপস্থাপকের দেখানো এই দুটি ভিডিওর দ্বিতীয়টির একটি অংশ কাট করে তৈরি করা হয়েছে। যার সাথে আলোচিত দাবির কোনো সম্পর্ক নেই।

ভিডিও যাচাই ১

আলোচিত ভিডিওটির ইন্ট্রোতে DESH TV এর দেখানো প্রতিবেদনটির সূত্র অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে DESH TV News এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ১৯ ডিসেম্বর ​বিএনপির সকাল-সন্ধ্যা হরতাল চলছে | BNP Hortal | BNP | Desh TV News শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Youtube

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, উক্ত ভিডিওটির সাথে আলোচিত ভিডিওটির ইন্ট্রোতে দেখানো প্রথম ভিডিওর হুবহু মিল রয়েছে। 

Video Comparison by Rumor Scanner

তবে উক্ত প্রতিবেদনে বিএনপি নেতাকর্মীদের সাথে পুলিশের কোনো সংঘর্ষের ঘটনার কথা বলা হয়নি। 

ভিডিও যাচাই ২

পরবর্তীতে হরতালের ভিডিও দাবিতে দেখানো দুটো ভিডিওর মধ্যে প্রথমটি না পাওয়া গেলেও প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে Tareq Shams Mithu নামের একটি ফেসবুক আইডিতে গত ২৯ অক্টোবর রাজারবাগ পুলিশ লাইনে ফেরত যাওয়ার পথে পুলিশ সদস্যদের উপর পরিকল্পিত বর্বরোচিত হামলার ঘটনায় জড়িত সকলকে আইনের আওতায় আনা হোক।। শীর্ষক শিরোনামে  প্রচারিত পুলিশের উপর হামলার দ্বিতীয় ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Facebook

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশের সময় পুলিশের সাথে বিএনপির সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ সদস্যরা রাজারবাগ পুলিশ লাইনে ফিরে যাওয়ারকালে উক্ত ভিডিওটি ধারণ করা হয়েছে। যা সাম্প্রতিক সময়ের কোনো সংঘর্ষের ঘটনার ভিডিও নয়। 

ভিডিও যাচাই ৩

ইন্ট্রোর শেষ ভিডিও এবং উপস্থাপকের দর্শকদের উদ্দেশ্যে দেখানো শেষ ভিডিওটির সন্ধানে DESH TV লেখাটি ও প্রতিবেদনের বিষয়বস্তুর সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে Desh TV News এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ১৯ ডিসেম্বর তেজগাঁওয়ে ট্রেনে আগুন: সর্বশেষ যা জানা গেল | Mohanganj Express Fire | News | Desh TV শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Youtube

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওটির সর্বশেষে দর্শকদের উদ্দেশ্যে উপস্থাপকের দেখানো শেষ ভিডিওর হুবহু মিল রয়েছে। 

Video Comparison by Rumor Scanner

এছাড়াও ইন্ট্রোর শেষ ভিডিওর সংবাদপাঠিকার ‘এতে চারজনের মরদেহ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস।’ শীর্ষক অংশটুকুও উক্ত ভিডিওতে খুঁজে পাওয়া যায়। 

ভিডিও যাচাই ৪

আলোচিত ভিডিওর শুরুতে দর্শকদের উদ্দেশ্যে উপস্থাপকের দেখানো প্রথম ভিডিওটির সূত্র অনুসন্ধানে ভিডিওটির ডান পাশের উপরের থাকা Channel 24 এর লোগোর সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে Channel 24 এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ১৯ ডিসেম্বর ৩ বছরের শিশুকে জড়িয়ে ট্রেনের আগুনে পুড়ে ম-র-ল মা-শিশু | Tejgaon | Rail | DMP Commissioner শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Youtube

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওর উপস্থাপকের দেখানো প্রথম ভিডিওটির সাথে উক্ত ভিডিওর হুবহু মিল রয়েছে। 

Video Comparison by Rumor Scanner

ভিডিওটির শিরোনাম থেকে জানা যায় উক্ত ভিডিওটি মূলত ডিএমপি কমিশনারের মিডিয়াকে দেওয়া একটি বিবৃতির ভিডিও। এছাড়াও পর্যালোচনায় আরও দেখা যায়, ডিএমপি কমিশনার উক্ত বিবৃতিতে গত ১৯ ডিসেম্বর মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস নামক ট্রেনটিতে দেওয়া আগুন এবং এতে নিহত হওয়া শিশু ও মায়ের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন। তার আলোচনার কোথাও ৬ পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে হত্যার দাবির  বিষয়ে কোনো তথ্য কিছু পাওয়া যায়নি।

এছাড়াও প্রাসঙ্গিক নানা কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে গণমাধ্যম বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিশ্বস্ত কোনো সূত্রে সম্প্রতি পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষে ৬ পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে হত্যার দাবির বিষয়ে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মূলত, গত ১৯ ডিসেম্বর নেত্রকোনা থেকে ছেড়ে আসা মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস নামের একটি ট্রেন রাজধানীর তেজগাঁও স্টেশনে আসলে তাতে দুর্বৃত্তরা আগুন দেয়। যাতে মা ও ৩ বছরের এক সন্তানসহ চারজন যাত্রী নিহত হয়। উক্ত ঘটনা নিয়ে প্রায় সবদেশীয় গণমাধ্যমই সংবাদ প্রকাশ করে। এরই প্রেক্ষিতে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল Channel 24 এবং Desh Tv এর দুটো প্রতিবেদনের সাথে ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশের সময় সংঘটিত পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষের একটি ভিডিও এবং ভিন্ন ঘটনার দুটি ভিডিও ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় ‍যুক্ত করে অধিকতর ভিউ পাবার আশায় ‘ইন্না-লিল্লাহ পুলিশ বিএনপি ভয়াবহ সংঘর্ষ ৬ পুলিশ পিটেয়ে নিহত এইমাত্র’ শীর্ষক থাম্বনেইল ব্যবহার করে কোনোপ্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপি’র মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশের সাথে বিএনপি’র নেতা-কর্মীদের সংঘাতে এক পুলিশ সদস্য নিহত হন।

সুতরাং, পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষে ৬ পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা করার দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ইন্দোনেশিয়ার ভিডিওকে বাংলাদেশের রাস্তার দৃশ্য দাবিতে প্রচার 

সম্প্রতি “হজরত শেখ হাসিনা সরকার, তুমার ডিজিটাল রোড” শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

এ সংক্রান্ত ফেসবুকের ভাইরাল একটি ভিডিও বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, বাংলাদেশের রাস্তা দাবিকৃত ভিডিওটি এখন অবধি প্রায় ৭ লাখ ২৪ হাজারের বেশিবার দেখা হয়েছে। শেয়ার করেছেন ৩৯০০ জন।

বাংলাদেশের রাস্তার

ফেসবুকের ভাইরাল পোস্টটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

আলোচিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ে টিকটকেও ভাইরাল হতে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। গত সেপ্টেম্বরে voicer_rasel_vai_10 নামের একটি অ্যাকাউন্টে প্রকাশিত এই ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এটি এখন অবধি প্রায় ৮৮ লক্ষাধিক বার দেখা হয়েছে। রিয়েক্ট পড়েছে আড়াই লক্ষাধিক। 

উক্ত ভিডিওটি সহ টিকটকের একাধিক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রচারিত একই ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওটি বাংলাদেশের কোনো রাস্তার নয় বরং ইন্দোনেশিয়ার একটি রাস্তার ভিডিওকে সম্প্রতি বাংলাদেশের রাস্তার অবস্থা দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে ভিডিওটি থেকে প্রাপ্ত স্থিরচিত্র রিভার্স সার্চের মাধ্যমে ২০২২ সালের ১৭ নভেম্বর ‘RODA JALANAN’ নামক ইউটিউব চ্যানেলে ‘Today !! Bad Events on Steep Grades || Heavy Truck and Bus’ শীর্ষক শিরোনামে ৫৪ মিনিট সময়ের আলোচিত মূল ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot from ‘RODA JALANAN’ Youtube

আলোচিত ভিডিওটির বর্ণনা থেকে জানা যায়, এটি ইন্দোনেশিয়ার উত্তর সুমাত্রা প্রদেশের ট্রান্স-সুমাত্রা নামক রোডে ধারণকৃত ভিডিও। 

এছাড়া, ‘RODA JALANAN’ ইউটিউব চ্যানেলে একই রাস্তার বেশ কয়েকটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot from ‘RODA JALANAN’ Youtube

পরবর্তীতে, জায়গাটির সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ইন্দোনেশিয়ান সংবাদমাধ্যম ‘TV One News’ এর ওয়েবসাইটে ২০২২ সালের ২০ এপ্রিলে ‘Jalur Mudik Jalinsum Batu Jomba di Tapanuli Selatan Mulai Diperbaiki’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot from ‘TV One News’ website 

উক্ত প্রতিবেদনটিতে স্থানটিকে ইন্দোনেশিয়ার উত্তর সুমাত্রা প্রদেশের বাতু জোম্বা এলাকার রাস্তা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্থ রাস্তাটির মেরামত শুরু হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। 

পাশাপাশি, গুগল ম্যাপ অনুসন্ধানেও জায়গাটিকে উত্তর সুমাত্রা প্রদেশের বলে নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে। 

Screenshot from ‘Google Maps’ 

মূলত, সাম্প্রতিক সময়ে ক্ষতিগ্রস্থ একটি রাস্তার ভিডিওকে বাংলাদেশের রাস্তা দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, উক্ত ভিডিওটি বাংলাদেশের কোনো রাস্তার নয়। প্রকৃতপক্ষে ইন্দোনেশিয়ার উত্তর সুমাত্রা প্রদেশের একটি ক্ষতিগ্রস্থ রাস্তার ভিডিওকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

প্রসঙ্গত, পূর্বে চীনের রাস্তার ছবিকে বাংলাদেশের মিঠামইনের রাস্তা এবং চীনের কাওহাই টানেলের ভিডিওকে বঙ্গবন্ধু টানেল দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। সেসময়ে বিষয়গুলোকে মিথ্যা হিসেবে শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। 

সুতরাং, ইন্দোনেশিয়ার একটি রাস্তার ভিডিওকে বাংলাদেশের রাস্তার চিত্র দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অবৈধ সরকার বলেননি

সম্প্রতি, প্রধানমন্ত্রীকে অবৈধ সরকার বললো রাষ্ট্রপতি পুলিশকে পেটাচ্ছে বিএনপি জামাত শীর্ষক শিরোনাম এবং থাম্বনেইলে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে।

অবৈধ সরকার

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, মহামান্য রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অবৈধ সরকার বলেননি বরং অধিক ভিউ পাবার আশায় চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। পর্যবেক্ষণে দেখা যায় ভিডিওটির শুরুতেই বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ২৪ এর লোগোসহ রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন’র এর একটি বক্তব্য প্রচার করা হয়েছে।

Screenshot: Rumor Scanner

পরবর্তীতে চ্যানেল ২৪ এবং রাষ্ট্রপতির দেওয়া বক্তব্যের সূত্র ধরে অনুসন্ধানে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ২৪ এর ফেসবুক পেজে গত ১৮ ডিসেম্বর “বাংলাদেশের স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা আমাদের গর্ব: রাষ্ট্রপতি” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ভিডিও প্রতিবেদনের একটি অংশের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Rumor Scanner

ভিডিও থেকে জানা যায়, গত ১৮ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপতি মো: সাহাবুদ্দিন সুপ্রিম কোর্টের ইনার কোর্ট ইয়ার্ডে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। উক্ত অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “স্বৈরশাসকরা তাদের পতনের আগে সংবিধানের পঞ্চম ও সপ্তম সংশোধনী পাস করার জন্য সংসদকে অবৈধভাবে ব্যবহার করে তাদের সব অপকর্মকে বৈধতা দেয়ার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট তা অনুমোদন করেনি। সংবিধানের পঞ্চম ও সপ্তম সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে দেশের জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছে সুপ্রিম কোর্ট। সুপ্রিম কোর্ট হচ্ছে সাধারণ মানুষের শেষ আশ্রয়। যেখানে তারা ন্যায় বিচার ও অধিকার রক্ষার জন্য মুখবর্তী হন। দেশের সকল শ্রেণী-পেশার মানুষের ভরসা ও জাতির গৌরবের প্রতীক হলো সুপ্রিমকোর্ট। সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক যেকোনো আইনকে খর্ব করতে সুপ্রিম কোর্ট সবসময়ই বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেছে এবং বাংলাদেশের সংবিধান সম্পর্কিত যেকোনো বিষয়ে অভিভাবক হিসেবে বিভিন্ন ব্যাখ্যা দিয়ে ঐতিহাসিকভাবে আইনের শাসন নিশ্চিত করেছে।”

আরেক বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল সময় টিভির ইউটিউবে গত ১৮ ডিসেম্বর “সব অন্যায় এমনকি অবৈধ রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধেও অবস্থান নিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট’ Mohammed Shahabuddin” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য জানা যায়।

তবে রাষ্ট্রপতির উক্ত বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অবৈধ সরকার বলে সম্বোধন করার কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অবৈধ সরকার বলেছেন, এমন কোনো তথ্য দেশিয় এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এছাড়া, আলোচিত ভিডিওর শিরোনামে বিএনপির নেতাকর্মীরা পুলিশকে পেটাচ্ছে বলে দাবি করা হলেও ভিডিওর ভেতরে এমন কোনো দৃশ্য দেখানো হয়নি।

মূলত, গত ১৮ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সুপ্রিম কোর্টের ইনার কোর্ট ইয়ার্ডে রাষ্ট্রপতি মো: সাহাবুদ্দিন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। উক্ত অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি তার বক্তব্যে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিভিন্ন অবদানের দিক তুলে ধরেন। যা বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ২৪সহ দেশিয় গণমাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত হয়। তবে উক্ত ঘটনায় চ্যানেল ২৪ এ প্রকাশিত  রাষ্ট্রপতির বক্তব্যের একটি খণ্ডিত অংশ ব্যবহার করে রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অবৈধ সরকার বলেছেন দাবিতে একটি ভিডিও ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। তবে অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন এমন কোনো মন্তব্য করেননি। এছাড়া, রাষ্ট্রপতি বক্তব্যের যে অংশটুকু আলোচিত দাবিতে প্রচারি করা হচ্ছে সে অংশেও রাষ্ট্রপতির এমন কোনো মন্তব্য নেই।

সুতরাং, রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অবৈধ সরকার বলেছেন দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

অনুপস্থিতির কারণে নয়, স্বেচ্ছায় ফাইনাল পরীক্ষায় অংশ নেননি অনূর্ধ্ব-১৯ দলের ক্রিকেটার শিবলি

0

সম্প্রতি, অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের ফাইনালে বাংলাদেশের হয়ে সেঞ্চুরি করা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান শিবলির ক্লাস উপস্থিতি ৬০ শতাংশ না থাকায় তার বিভাগ ফাইনাল পরীক্ষা দিতে না দেওয়ার একটি দাবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

১৯ দলের ক্রিকেটার

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের ক্রিকেটার আশিকুর রহমান শিবলির জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস উপস্থিতি ৬০ শতাংশ না থাকায় পরীক্ষা না দিতে পারার দাবিটি সত্য নয় বরং আশিকুর রহমান শিবলি ইচ্ছা করেই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেননি।

আলোচিত দাবির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য শুরুতে আশিকুর রহমান শিবলির অধ্যয়নরত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিকস বিভাগের চেয়ারম্যান সহযোগী অধ্যাপক ড. মাহফুজা মোবারককের সাথে যোগাযোগ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। এ বিষয়ে তিনি বলেন, “পরীক্ষার সময়ে ওর(শিবলি) খেলা ছিল। তখন আমরা ওর সাথে যোগাযোগ করি সে পরীক্ষা দেবে কিনা। তখন শিবলি বিভাগে এসে আমার সাথে এবং কোর্স কো অর্ডিনেটরের সাথে কথা হয়েছে। সে বলেছে এবার সে ড্রপ দিতে চাচ্ছে এবং পরের ব্যাচের সাথে কন্টিনিউ করবে।”

পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে উক্ত বিষয়ে মূলধারার গণমাধ্যম আজকের পত্রিকার ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে গণমাধ্যমটিকে দেওয়া আশিকুর রহমান শিবলির মন্তব্য খুঁজে পাওয়া যায়। 

ক্লাসে উপস্থিতি ৬০ শতাংশের নিচে থাকায় প্রথম বর্ষের পরীক্ষায় অংশ নিতে না দেওয়ার বিষয়ে তাকে প্রশ্ন করা হলে জবাবে শিবলি বলেন, “না, না। এটা আমারই সিদ্ধান্ত ছিল যে এ বছর পরীক্ষা দেব না। বিভাগের সভাপতি ও পরীক্ষা কমিটির সভাপতি আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, এ বছর পরীক্ষা দিতে চাই কি না। আমি নিজেই থেকেই বলেছিলাম আগামী বছর পরীক্ষা দেব।”

উল্লেখ্য, গত ১৭ ডিসেম্বর অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের ফাইনালে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে ১৯৫ রানে জয়লাভ করে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল।

মূলত, বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অনূর্ধ্ব-১৯ এর ক্রিকেটার আশিকুর রহমান শিবলি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিকস বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। সম্প্রতি তার ক্লাস উপস্থিতি ৬০ শতাংশ না থাকায় তার বিভাগ তাকে প্রথম বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষায় অংশগ্রণ করতে দেয়নি দাবিতে একটি তথ্য ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। তবে অনুসন্ধানে জানা যায়, শিবলি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ থাকার কারণে প্রথম বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেননি। তার পরীক্ষা অংশগ্রহণ না করার পেছনে ৬০ শতাংশ ক্লাসে উপস্থিতির বিষয়ের কোনো সম্পর্ক নেই। যা শিবলি এবং তার বিভাগ কর্তৃপক্ষ উভয় দিক থেকেই নিশ্চিত করা হয়েছে।

সুতরাং, বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের ক্রিকেটার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান শিবলির ক্লাস উপস্থিতি ৬০ শতাংশ না থাকায় তার বিভাগ প্রথম বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষা দিতে দেয়নি দাবিতে ফেসবুকে একটি তথ্য প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

নাজমুল হাসান পাপন অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ জয়ীদের ২০ লাখ টাকা অর্থ পুরস্কারের ঘোষণা দেননি

0

সম্প্রতি, ‘অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ জয়ী ক্রিকেটারদেরকে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন ২০ লাখ টাকা অর্থ পুরস্কারের ঘোষণা দিয়েছেন’ শীর্ষক দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

নাজমুল হাসান পাপন

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ‘অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ জয়ী ক্রিকেটারদেরকে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন ২০ লাখ টাকা অর্থ পুরস্করের ঘোষণা দেননি বরং কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই ভিত্তিহীনভাবে উক্ত দাবিটি ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

গুজবের সূত্রপাত

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ‘Cricket Zone 24’ নামের একটি ফেসবুক পেজে গত ১৭ ডিসেম্বর ‘তারা অনেক সুন্দর খেলেছে তাই আমি নিজে থেকেই তাদের জন্য ২০ লাখ টাকা দিব’ শীর্ষক তথ্য সম্বলিত একটি ফটোকার্ড (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook

উক্ত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, সেখানে ‘Cricket Zone 24’ নামের পেজটির নাম এবং লোগো রয়েছে। এতে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, উক্ত পেজের এডমিনরাই ভাইরাল এই ফটোকার্ডটির নির্মাতা। এছাড়াও এই পেজটি থেকে প্রায় একই ডিজাইনের ফটোকার্ড (, , ) বিভিন্ন সময়ে প্রচার করা হয়েছে।

পরবর্তী অনুসন্ধানে গণমাধ্যম কিংবা ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে এখন পর্যন্ত অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ জয়ী ক্রিকেটারদেরকে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের ২০ লাখ টাকা অর্থ পুরস্কার ঘোষণার দাবিটির সত্যতা পাওয়া যায়নি।

বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল সময় টিভি’র ইউটিউব চ্যানেলে গত ২০ ডিসেম্বর ‘শেরাটনে যুব এশিয়া কাপজয়ীদের সঙ্গে পাপনের ডিনার পার্টি’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ জয়ী ক্রিকেটারদের নিয়ে রাজধানীর হোটেল শেরাটনে ডিনার পার্টির আয়োজন করেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন।

সেখানে এশিয়া কাপ জয়ী জুনিয়র ক্রিকেটারদের পুরস্কার প্রসঙ্গে পাপন বলেন, “আমি চাই ওরা শুধু খেলায় কনসেন্ট্রেট করুক। ওরা মাত্র খেলা শুরু করেছে, শিখছে। এই সময়টায় ওদের মাথায় কোনো টাকাপয়সার চিন্তা আসাই উচিত না। যখন সময় হবে বিসিবি ওদের দেখবে।”

মূলত, গত ১৭ ডিসেম্বর সংযুক্ত আরব আমিরাতকে পরাজিত করে অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ। জুনিয়র ক্রিকেটারদের এই সাফল্যের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদেরকে নেটিজেনরা অভিনন্দন জানিয়ে বিভিন্ন ধরনের পোস্ট দেন। পরবর্তীতে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন বিজয়ী ক্রিকেটারদের ২০ লাখ টাকা অর্থ পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন দাবিতে একটি তথ্য ফেসবুকে প্রচার করা হয়। তবে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিটির সত্যতা পাওয়া যায়নি। প্রকৃতপক্ষে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ জয়ী ক্রিকেটারদের কোনো অর্থ পুরস্কারের ঘোষণা দেননি।

উল্লেখ্য, নিউজিল্যান্ডের সাথে গত ১৭ ডিসেম্বর ওডিআই ম্যাচে পরাজয়ের জন্য সৌম্য সরকারকে দায়ী করে এই একই পেজ থেকে নাজমুল হোসেন শান্তর নামে ভুয়া মন্তব্য সম্বলিত একটি ফটোকার্ড প্রচার করা হয়েছিল। সেসময় বিষয়টি নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল রিউমর স্ক্যানার। প্রতিবেদনটি দেখুন এখানে

সুতরাং, অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ জয়ী ক্রিকেটারদের জন্য বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের ২০ লাখ টাকা অর্থ পুরস্কার ঘোষণার তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

একই ফ্রেমে চারটি ভিন্ন যানবাহনের ছবিতে বিমানের দৃশ্যটি এডিটের মাধ্যমে যুক্ত করা

0

একই ছবিতে চারটি ভিন্ন যানবাহনের (বিমান, ট্রেন, বাস এবং নৌকা) চলার দৃশ্য সম্বলিত একটি ছবি বিগত কয়েক বছর ধরে ফেসবুকে প্রচার হয়ে আসছে। কতিপয় পোস্টের ক্যাপশনে দাবি করা হয়েছে, ছবিতে একই ফ্রেমে চারটি ভিন্ন যানবাহনের দেখা মিলেছে।  

বিমানের দৃশ্য

উক্ত ছবি সম্বলিত চলতি বছরের (২০২৩) ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

উক্ত ছবি সম্বলিত ২০২২ সালের ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

তাছাড়া,  আলোচিত ছবিটি ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ফেসবুক ব্যবহাকারীরা বিভিন্ন সময়ে পোস্ট করেছেন৷ দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভাইরাল এই ছবির মূল ছবিতে বিমানের দৃশ্যটি ছিল না বরং ফটোগ্রাফার নিজেই মূল ছবি প্রকাশের সময় এটিতে বিমানের দৃশ্য যুক্ত করে আলোচিত ছবিটিও প্রকাশ করেন যা পরবর্তীতে বাস্তব দাবিতে প্রচার হয়ে আসছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ইনস্টাগ্রামে Gopii12868 নামের একটি অ্যাকাউন্টে (ইউজার নেম: aurobindo_sf) ২০২১ সালের ৩০ অক্টোবর প্রকাশিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। 

এই পোস্টে তিনি দুইটি ছবি যুক্ত করেছেন যার প্রথমটিতে আলোচিত ছবিটি রয়েছে। তিনি ক্যাপশনে লিখেছেন, ভারতের বিশাখাপত্তম থেকে এই ছবিতে একসঙ্গে চার ধরণের যানবাহন দেখা যাচ্ছে। তবে বিমানের দৃশ্যটি এই ছবিতে যুক্ত করে দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। 

Screenshot: Instagram 

একই পোস্টের দ্বিতীয় ছবিটিই তার তোলা মূল ছবি যাতে বিমানের দৃশ্যটি ছিল না। 

Screenshot: Instagram 

মূলত, ২০২১ সালে ইনস্টাগ্রামে Gopii12868 নামের ভারতীয় একটি অ্যাকাউন্ট থেকে একই ফ্রেমে চারটি ভিন্ন যানবাহনের দৃশ্য সম্বলিত একটি ছবি পোস্ট করা হয় যাতে একই ছবিতে বিমান, বাস, ট্রেন, নৌকা দেখা যাচ্ছে। পোস্টকারী জানান, বিমানের দৃশ্যটি ছবিতে ছিল না, এটি তিনি যুক্ত করেছেন। তিনি এ সংক্রান্ত মূল ছবিটিও একই পোস্টে যুক্ত করেন। তবে বিমানসহ ছবিটি পরবর্তীতে বাস্তব দৃশ্য দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার হয়ে আসছে।

সুতরাং, এক ফ্রেমে বিমান, বাস, ট্রেন, নৌকার দৃশ্য সম্বলিত ভারতের এই ছবিটি এডিটেড বা বিকৃত। 

তথ্যসূত্র

ফল বিক্রেতাকে কেমিক্যালযুক্ত ড্রাগন ফল খাওয়ানোর ভিডিওটি বাস্তব নয় 

সম্প্রতি, “ড্রাগন ফলে ব্যবসায়িক কেমিক্যাল মিশাতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা খেল জনতার হাতে” শীর্ষক ক্যাপশনে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। 

ভিডিওটিতে দেখা যায়, একজন ড্রাগন ফল বিক্রেতা সিরিঞ্জের মাধ্যমে ড্রাগন ফলে কেমিক্যাল প্রবেশ করানোর সময় একজন ক্রেতা তাকে ধরে ফেলেন। পরবর্তীতে, সেই রাসায়নিক মিশ্রিত ড্রাগন ফল বিক্রেতাকে খাওয়ানোর চেষ্টা করা হলে তিনি প্রথমে অস্বীকৃতি জানান। ফলে উপস্থিত ক্রেতারা জোর করে রাসায়নিক মিশ্রিত ফল খাওয়ানোর চেষ্টা করলে এক পর্যায়ে বিক্রেতা ফলে রাসায়নিক মেশানোর কথা স্বীকার করেন এবং বিক্রেতাকে উপস্থিত সবার কাছে ক্ষমা চাইতে দেখা যায়।

ফল বিক্রেতাকে

ফেসবুকের একাধিক পোস্টে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ভিডিওগুলো পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, পনের হাজারের অধিক মানুষ ভিডিওগুলো দেখেছেন। ভিডিওগুলোতে পাঁচশো’র অধিক রিঅ্যাক্ট পড়েছে এবং ৩৫০ এর অধিকবার শেয়ার করা হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ফল বিক্রেতাকে কেমিক্যালযুক্ত ড্রাগন ফল খাওয়ানোর দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত ভিডিওটি বাস্তব কোনো ঘটনার নয় বরং বিনোদনের উদ্দেশ্যে তৈরি উক্ত ভিডিওটি বাস্তব দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত ভিডিওগুলোর পোস্টের কমেন্টবক্স পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, অনেক নেটিজেন বিষয়টিকে বাস্তব ঘটনার ভিডিও ভেবে নিজেদের মন্তব্য ব্যক্ত করেছেন।

Image By Rumor Scanner

বিষয়টি যাচাইয়ে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে Bdt Best নামের একটি ফেসবুক পেজে গত ১৮ ডিসেম্বর “ড্রাগন ফলে ব্যবসায়িক কে,মিক্যাল মিশাতে গিয়ে হাতেনাতে ধ,রা খেল জনতার হাতে” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত আলোচিত মূল ভিডিওটি (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়।

পরবর্তীতে, Bdt Best নামের উক্ত পেজটির অ্যাবাউট সেকশন এবং পেজের কনটেন্ট পর্যবেক্ষণ করে নাটক সদৃশ বিভিন্ন ধরণের কনটেন্ট খুঁজে পাওয়া যায়।  

রিউমর স্ক্যানার টিম অনুসন্ধানে দেখেছে, আলোচিত ভিডিওর ফল বিক্রেতাকে এই পেজের একাধিক ভিডিওতে খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওগুলোতে ঐ ব্যক্তিকে ভিন্ন ভিন্ন ভূমিকায় দেখতে পাওয়া যায়।

এমন কিছু ভিডিও দেখুন এখানে, এখানে, এখানে

Comparison By Rumor Scanner

এছাড়াও, উক্ত ভিডিওতে ফল ক্রেতার ভূমিকায় থাকা ব্যক্তিকে একই চ্যানেলের ভিন্ন একটি ভিডিওতে ভিন্ন ভূমিকায় দেখতে পাওয়া যায়।

Comparison By Rumor Scanner

একই ব্যক্তির একাধিক ভিডিওতে ভিন্ন ভিন্ন ভূমিকায় উপস্থিতি থেকে বোঝা যায় যে, কথিত সেই ফল বিক্রেতা এবং ক্রেতা উভয়ই Bdt Best টিমের সদস্য।

মূলত, সাম্প্রতিক সময়ে দেশি প্রজাতির বড় সাইজের ড্রাগন ফল চাষে টনিক ব্যবহার এবং ক্রেতা আকর্ষণের উদ্দেশ্যে ফলে রাসায়নিক প্রয়োগের বিষয় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা- সমালোচনার ঝড় ওঠে। পরবর্তীতে, Bdt Best নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে বিনোদনের উদ্দেশ্যে তৈরি “ড্রাগন ফলে ব্যবসায়িক কেমিক্যাল মিশাতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা খেল জনতার হাতে” শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও প্রচারিত হয়। উক্ত ভিডিওটি সম্প্রতি বাস্তব দাবিতে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে, যা সঠিক নয়। 

উল্লেখ্য, পূর্বে বাংলাদেশি নাগরিক বলে বাবার চিকিৎসা করাতে ভারতে গিয়ে হেনস্তার শিকার হয়েছে দাবিতে একটি ভিডিও প্রচার করা হলে সেটিও স্ক্রিপ্টডে শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল রিউমর স্ক্যানার। 

সুতরাং, ড্রাগন ফলে কেমিক্যাল মেশানোয় ফল বিক্রেতাকে কেমিক্যাল মেশানো ফল খাওয়ানো হয়েছে দাবিতে নাটকের দৃশ্যকে বাস্তব দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

  • Facebook Page: Bdt Best
  • Rumor Scanner’s Own Analysis