Home Blog Page 533

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের আজান রেডিওতে প্রচারে শ্রীলঙ্কাই একমাত্র অমুসলিম দেশ নয়

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অন্তত ২০১১ সাল থেকে দাবি করা হচ্ছে, শ্রীলঙ্কা হচ্ছে একমাত্র অমুসলিম দেশ যেখানে টেলিভিশনে এবং রেডিওতে ৫ ওয়াক্ত আযান সম্প্রচার হয়ে থাকে। কখনো মৌলিক পোস্ট কখনো-বা অন্যান্য সাধারণ জ্ঞানের তথ্যের সাথে এই দাবিটি গেল প্রায় ১৩ বছর ধরে ফেসবুকে প্রচার হয়ে আসতে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার। 

এ সংক্রান্ত সাম্প্রতিক ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

বিগত বছরগুলোর একই দাবির ফেসবুক পোস্ট দেখুন ২০২৩ (, ), ২০২২, ২০২১, ২০২০, ২০১৯, ২০১৮, ২০১৭, ২০১৬, ২০১৫, ২০১৪, ২০১৩, ২০১২, ২০১১। 

এছাড়া বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমেও একই দাবি প্রচারের বিষয়টি লক্ষ্য করা গেছে৷ এমন কিছু প্রতিবেদন দেখুন বার্তা২৪ (২০২৩), ঢাকা টাইমস২৪ (২০২০), সানবিডি২৪ (২০১৯)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, অমুসলিম দেশ হিসেবে শ্রীলঙ্কার রেডিওতে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের আজান সম্প্রচারের বিষয়টি সঠিক হলেও দেশটির টেলিভিশনের ক্ষেত্রে আজান সম্প্রচারের তথ্য মেলেনি। তাছাড়া, শুধু শ্রীলঙ্কাই নয়, বিশ্বের একাধিক অমুসলিম দেশের জাতীয়, স্থানীয় এমনকি প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়েও নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের আজান রেডিওর মাধ্যমে সম্প্রচার হচ্ছে। 

দাবিটির সূত্রপাত কীভাবে? 

২০১১ সালের ২৮ নভেম্বর ফেসবুকে বাংলা ভাষায় এ সংক্রান্ত সম্ভাব্য প্রথম পোস্টগুলো (, , ) খুঁজে পাওয়া যায়। তবে এই দাবিটি আরও অন্তত পাঁচ মাস আগে থেকেই ফেসবুকে প্রচার হতে দেখা যায়। আমরা পাকিস্তানের কাশ্মীরের এক ব্যক্তির এ সংক্রান্ত একটি পোস্ট খুঁজে পেয়েছি সে বছরের (২০১১) ১৬ জুন, যা তিনি উর্দু বা হিন্দি ভাষায় লিখেছেন বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। জুনেই একই দাবি ইংরেজি ভাষাতেও প্রচারের প্রমাণ মিলেছে।  

Screenshot collage: Rumor Scanner 

শ্রীলঙ্কায় কি টেলিভিশন ও রেডিওতে আজান সম্প্রচারিত হয়? 

শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন রেডিও সম্প্রচারকারী প্রতিষ্ঠান এসএলবিসির বিশেষায়িত শাখা এসএলবিসি মুসলিম সার্ভিসে পাঁচ ওয়াক্ত আজান দেওয়ার রীতি চালু আছে। ইউটিউবে আজানের একটি রেকর্ডও পাওয়া যায়৷ ১৯৪৮ সালে ক্বারি মৌলবী রামিজ আলীম প্রথম রমজান মাসে এসএলবিসিতে আজান দেন। 

তবে শ্রীলঙ্কার টেলিভিশনে আজান সম্প্রচার হয় কিনা এ বিষয়ে কোনো তথ্য মেলেনি। 

শ্রীলঙ্কাই কি একমাত্র অমুসলিম দেশ যারা রেডিওতে আজান সম্প্রচার করে? 

সিঙ্গাপুরের ওয়ারনা ৯৪.২ এফএম রেডিও চ্যানেল দৈনিক পাঁচ ওয়াক্তের আজানই সম্প্রচার করে থাকে, যা চ্যানেলটিতে ১৯৭৮ সাল থেকেই নিয়মিত কার্যক্রম হিসেবে পরিচালিত হচ্ছে। দেশটিতে সবচেয়ে বেশি বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারীদের বসবাস রয়েছে। পিউ রিসার্চ সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী, দেশটির ১৮ শতাংশ ব্যক্তি মুসলমান।

জাতীয় টিভি বা রেডিও না হলেও বিশ্বের একাধিক অমুসলিম দেশেই দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের আজান রেডিওতে দেওয়ার নজির পাওয়া যায়। 

যুক্তরাজ্যের লন্ডনের ইস্ট লন্ডন মসজিদের নিজস্ব রেডিওতে দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের আজান প্রচারের বিষয়টি মসজিদের ওয়েবসাইটে উল্লেখ পাওয়া যায়। 

একইভাবে অস্ট্রেলিয়ার সিডনির স্থানীয় রেডিও চ্যানেল ভয়েজ অব ইসলাম ৮৭.৬ এফএমেও পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের আজান প্রচারের তথ্য পাওয়া যায় তাদের ওয়েবসাইটে। 

মূলত, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অন্তত ২০১১ সাল থেকে দাবি করা হচ্ছে, শ্রীলঙ্কা হচ্ছে একমাত্র অমুসলিম দেশ যেখানে টেলিভিশনে এবং রেডিওতে ৫ ওয়াক্ত আযান সম্প্রচার হয়ে থাকে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেশটিতে রেডিওতে আজান সম্প্রচারের সত্যতা মিললেও টেলিভিশনে আজান সম্প্রচারের তথ্য মেলেনি। তাছাড়া, শ্রীলঙ্কাই একমাত্র অমুসলিম দেশ নয়, বিশ্বের একাধিক অমুসলিম দেশের জাতীয়, স্থানীয় এমনকি প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়েও নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের আজান রেডিওর মাধ্যমে সম্প্রচারের প্রমাণ পেয়েছে রিউমর স্ক্যানার। 

সুতরাং, শ্রীলঙ্কা একমাত্র অমুসলিম দেশ যেখানে টেলিভিশনে এবং রেডিওতে ৫ ওয়াক্ত আযান সম্প্রচার হয়ে থাকে শীর্ষক একটি দাবি ইন্টারনেটে বহু বছর ধরে প্রচার হয়ে আসছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র

বাংলাদেশি অসুস্থ শিশু রাব্বির জন্য আর্থিক সহায়তা দাবিতে ভারতীয় শিশুর ছবি প্রচার

0

সম্প্রতি, “ছোট্ট রাব্বি কে বাচাতে এগিয়ে আসুন।” শীর্ষক শিরোনামে রাব্বি নামে এক শিশুর জন্য মানবিক সাহায্যের আবেদনের কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

আর্থিক

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, রাব্বি নামে প্রচারিত ছবিগুলো কোন বাংলাদেশি শিশুর নয় বরং এগুলো ভারতের গাব্বার সিং ও সুমালতার ২৮ দিন বয়সী সন্তানের ছবি।

মূলত, বাংলাদেশি দিনমজুর বাবার সন্তান শিশু রাব্বির চিকিৎসার জন্য ৫ লক্ষ টাকা আর্থিক সহায়তা প্রয়োজন দাবিতে এক শিশুর অসুস্থ অবস্থার কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ছবির শিশুটি ভারতের গাব্বার সিং ও সুমালতা দম্পতির পুত্র সন্তান। ২০২২ সালে থেকে শিশুটি ফুসফুসের সংক্রমণে ভুগছিল এবং তখন শিশুটি ভারতের নিজামাবাদে অবস্থিত কিডস কেয়ার ইমারজেন্সি চিল্ড্রেন্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল। সেইসময় ফান্ডরাইজিং ঐ ওয়েবসাইটের প্রতিবেদন থেকে জানা যায় আক্রান্ত শিশুটির চিকিৎসার জন্য ২ লাখ রুপি প্রয়োজন ছিল।

উল্লেখ্য, পূর্বেও একই শিশুর ছবি ব্যবহার করে ভুয়া নাম ও ঠিকানা দিয়ে আর্থিক সহযোগিতা চেয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হলে তা ভুয়া  হিসেবে শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল রিউমর স্ক্যানার। 

পাকিস্তানের মাওলানা তারিক জামিলের আহতের ছবি দাবিতে ভিন্ন ব্যক্তির ছবি প্রচার 

0

সম্প্রতি “ইন্না-লিল্লাহ, পাকিস্তানের বিশ্ববিখ্যাত আলেমেদ্বীন, মাওলানা তারেক জামিল সাহেব, সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে হসপিটাল ভর্তি আছেন। হে মাবুদ প্রিয় শায়েখ কে আপনি দ্রুত সুস্থতা করে দিন আমিন” শীর্ষক শিরোনামে দুইটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। 

তারিক জামিলের

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ছবিটি পাকিস্তানের মাওলানা তারিক জামিলের নয় বরং ছবিটি পাকিস্তানের ইসলামিক স্কলার আজাদ জামিলের।

মূলত, আলোচিত ছবিটি পাকিস্তানের মাওলানা তারিক জামিলের নয়। ছবিটি পাকিস্তানের আরেক ইসলামিক স্কলার আজাদ জামিলের। ২০১৯ সালে পাকিস্তানি ইসলামিক স্কলার আজাদ জামিলের সড়ক দুর্ঘটনায় আহত অবস্থায় তোলা ছবিকে আরেক পাকিস্তানি স্কলার তারিক জামিলের ছবি দাবিতে ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। 

প্রসঙ্গত, তারিক জামাল ২০২০ সালের ৩১ মে নিম্ন রক্তচাপের কারণে নিজে বাসায় পড়ে গিয়ে আহত হয়েছিলেন। এ তথ্যটি নিজের ভেরিফায়েড টুইটার অ্যাকাউন্টে সে সময় তিনি নিশ্চিত করেছিলেন।

উল্লেখ্য, প্রায় একই দাবিতে বিষয়টি পূর্বেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হলে সে সময় বিষয়টিকে মিথ্যা হিসেবে শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার টিম।

ফিলিস্তিন নিয়ে ক্যাম্পেইন শুরুর পর মোজোর ৫০০ মিলি বোতলের দাম বাড়েনি 

0

গত বছরের (২০২৩) ০৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ইসরায়েলে ‘অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড’ নামে হামলা শুরু করে। এই হামলা কেন্দ্র করে ইসরায়েল-হামাস সংঘাত শুরু হয়, যা এখনো চলছে। সংঘাতের মধ্যেই ইন্টারনেটের বিভিন্ন মাধ্যমে এই সংঘাত সংক্রান্ত নানা তথ্য আসছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে গাজায় ত্রাণ এবং অর্থ সহায়তাও পাঠানো হচ্ছে। দেশীয় শিল্পপ্রতিষ্ঠান আকিজ ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের কোমল পানীয় মোজোর পক্ষ থেকে জানানো হয়, বিক্রয়কৃত মোজোর প্রতিটি বোতল থেকে ১ টাকা যাবে ফিলিস্তিনের সহায়তায়। এই ক্যাম্পেইন শুরুর পরবর্তী সময়ে ক্রেতাদের মধ্যে বেশ সাড়া ফেলে আকিজ ফুড এন্ড বেভারেজের এই পণ্য। তবে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মোজোর ৫০০ মিলিলিটারের একটি বোতলের ছবি প্রকাশ করে দাবি করা হচ্ছে, মোজো তাদের ১ টাকা ডোনেশান ক্যাম্পেইন শুরু করার পর মোজোর দাম ১০ টাকা বাড়িয়েছে। বলা হচ্ছে, ২৫ টাকার মোজো এই সময়ে হয়েছে ৩৫ টাকা।

ফেসবুকে ছড়িয়ে এ সংক্রান্ত পোস্টগুলোতে উল্লেখ করা হয়েছে, “ছবি দেখে মনে হচ্ছে মোজো ৫০ টাকা দাম কমিয়ে ৩৫ টাকা করসে। আদতে মোজো কোনদিন ৫০ টাকা ছিলই না। মোজো ছিল ২৫ টাকা। কোকের উপর গোস্বা করার পর মোজো ১ টাকা ডোনেশান ক্যাম্পেইন শুরু করে। কিন্তু ১ টাকা ডোনেশনের বিপরীতে মোজোর দাম বাড়িয়ে দেয় ১০ টাকা। ২৫ টাকার মোজো হয়ে যায় ৩৫ টাকা।  (যেহেতু মানুষ কোনদিন মোজো খাইতই না, সো তারা এই লেবেল দেখে ভাবসে মোজো ৫০ টাকা ছিল)।” 

উক্ত দাবি সম্বলিত ফেসবুকের কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, মোজোর ৫০০ মিলি বোতলের দাম কখনো ৫০ টাকা না থাকলেও ফিলিস্তিনের বিষয়ে ক্যাম্পেইন শুরুর পর পণ্যটির দাম ১০ টাকা বাড়ানোর দাবি সঠিক নয় বরং গত ডিসেম্বরে এ সংক্রান্ত ক্যাম্পেইন শুরুর আগে গত জুনে সর্বশেষ ৫০০ মিলি বোতলের দাম ৩০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩৫ টাকা করা হয়। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে মোজোর উৎপাদনকারী মূল প্রতিষ্ঠান আকিজ ভেঞ্চারের ওয়েবসাইটে গত বছরের (২০২৩) ০৭ ডিসেম্বর প্রকাশিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা যাচ্ছে, গত বছরের (২০২৩) ২৪ নভেম্বর ঢাকার হাতিরঝিলে আয়োজিত ‘To Gaza From Dhaka’ নামে একটি ফান্ডরেইজিং কনসার্টে মোজো ‘Mojo Support Palestine’ নামে একটি ক্যাম্পেইন শুরুর ঘোষণা দেয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এই ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে মোজোর প্রতি বোতলের আয় থেকে এক টাকা ফিলিস্তিনের সহায়তায় পাঠানো হবে। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের দিনই মোজোর ফেসবুক পেজেও বিষয়টি জানানো হয়। 

আকিজ ফুড এন্ড বেভারেজের ব্র্যান্ড ম্যানেজার আদনান শফিক রিউমর স্ক্যানারকে জানিয়েছেন, তারা ০৪ ডিসেম্বর থেকে এই ক্যাম্পেইন শুরু করেন। 

রিউমর স্ক্যানার অনুসন্ধানে দেখেছে, গত বছরের অক্টোবরেও একই লেভেলে (৫০ টাকার পরিবর্তে ৩৫ টাকা) মোজোর ৫০০ মিলির বোতল বাজারে ছিল। 

Screenshot: Facebook 

আগস্টের এক ফেসবুক পোস্টেও সেসময় মোজোর দাম ৩৫ টাকা থাকার বিষয়ে জানা যাচ্ছে। তবে সেপ্টেম্বরে অনলাইনে পণ্য বেচাকেনার একটি প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটের আর্কাইভ থেকে দেখা যায়, সেসময় তারা ৩০ টাকায় মোজোর ৫০০ মিলির বোতল বিক্রি করছিল। যদিও অনলাইনের এসব প্রতিষ্ঠানে প্রায়ই কোনো না কোনো অফার চলে। তাই দামের হেরফের হওয়া অস্বাভাবিক নয়। আদনান শফিকও আমাদের এমনটাই বলছেন৷ তার মতে, “ই-কমার্স ব্যবসায় উনারা কিছু কম রাখে। এটা বেশিরভাগ পণ্যের ক্ষেত্রেই। এক্ষেত্রে ব্র্যান্ড কিছু ছাড় দেয়, ই-কমার্স সাইট থেকে কিছু ছাড় দেয়। আবার এমনও হয় তারা তথ্য আপডেট করতেও সময় নেয়।”

আদনান বলছেন, কো-ব্রান্ডিংয়ের ক্ষেত্রেও দামের এমন ভিন্নতা হয়। যেমন স্পা পানির বোতল স্থানীয় বাজারে এক দাম, আবার হোটেল রেডিসন ব্লুতে বেশি দাম। 

অর্থাৎ, সাম্প্রতিক সময়ে মোজোর যে বোতলের লেভেল দেখিয়ে দাবি করা হচ্ছে, গত ডিসেম্বর বা পরবর্তী সময়ে মোজোর ৫০০ মিলির বোতলের দাম ২৫ থেকে ৩৫ টাকা হয়েছে তা সঠিক নয়। কারণ, গত বছরের (২০২৩) আগস্টেও একই দামেই মোজো বিক্রি হওয়ার প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। 

আমরা আদনান শফিকের কাছে জানতে চেয়েছিলাম মোজোর ৫০০ মিলির বোতলের দাম সর্বশেষ কবে বেড়েছে। তিনি বলেছেন, “কাঁচা মালের দাম বেড়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে মোজো ৫০০ মিলি বোতলের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ৩৫ টাকা করা হয় ২০২৩ সালের জুন মাসে।”

আমরা অবশ্য গত জুলাইতেও একটি ফেসবুক পোস্টে ৩০ টাকায় মোজো বিক্রি হতে দেখেছি। তবে এই বোতলের লট ৩০ মে অর্থাৎ জুনে দাম বৃদ্ধির পূর্বেই উৎপাদিত হয়েছিল যা মোড়কে থাকা উৎপাদনের তারিখ থেকে নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে। পরবর্তীতে জুলাই এর আরেকটি পোস্ট থেকে হাফ লিটার মোজোর দাম ৩৫ টাকা থাকার বিষয়ে জানা যায়। 

আদনান নিজেও রিউমর স্ক্যানারকে বলেছেন, “মোজো সাপোর্ট ফিলিস্তিন এই ক্যাম্পেইন চলাকালীন এখন পযর্ন্ত মোজো পি ই টি বোতলের কোন দাম বাড়ানো হয় নাই, দাম বাড়ানো নিয়ে ভুল ইনফরমেশন ছড়ানো হচ্ছে।”

মোজোর ৫০০ মিলির দাম কি ৫০ টাকা ছিল?

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত পোস্টগুলোতে মোজোর ৫০০ মিলি বোতলের দাম ৫০ টাকা কেটে ৩৫ টাকা উল্লেখ করা হয়েছে। আমরা এ বিষয়ে জানতে চাইলে জনাব আদনান বলেছেন, “মোজো ৫০০ মিলি বোতলের লেবেল এ ৫০ টাকা কেটে যে ৩৫ টাকা লেখা আছে এর অর্থ বাজারে কোলাপানীয় ৫০০ মিলি প্রোডাক্টের দাম ৫০ টাকা সেখানে মোজো অফার করছে ৩৫ টাকা। যেটি একটি ব্যবসায়িক কৌশলমাত্র, এখানে ৫০০ মিলি কোলা ক্যাটাগরি প্রোডাক্ট এর মার্কেট প্রাইস এবং মোজো ৫০০ মিলি অফার প্রাইস বিষয়টি দেখানো হয়েছে যার মাধ্যমে ভোক্তাসাধারণ যাতে ভ্যালু ফর মানি বা প্রাইস বেনিফিট বিষয়টি বুঝতে পারে । তারপর সেই ভোক্তা যেই পণ্যটিই ক্রয় করুক এটা তার নিতান্তই নিজস্ব ব্যাপার।”

অর্থাৎ, মোজোর ৫০০ মিলির দাম ৫০ টাকা ছিল না। অন্যান্য কোমল পানীয় এর দামের সাথে তুলনা দেখাতে এই ব্যবসায়িক কৌশল ব্যবহার করেছে মোজো কর্তৃপক্ষ। 

মূলত, গত বছরের (২০২৩) ০৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ইসরায়েলে ‘অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড’ নামে হামলা শুরু করে। এই হামলা কেন্দ্র করে ইসরায়েল-হামাস সংঘাত শুরু হয়, যা এখনো চলছে। এই সময়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে গাজায় ত্রাণ এবং অর্থ সহায়তাও পাঠানো হচ্ছে। দেশীয় শিল্পপ্রতিষ্ঠান আকিজ ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের কোমল পানীয় মোজোর পক্ষ থেকেও জানানো হয়, বিক্রয়কৃত মোজোর প্রতিটি বোতল থেকে ১ টাকা যাবে ফিলিস্তিনের সহায়তায়। তবে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মোজোর ৫০০ মিলিলিটারের একটি বোতলের ছবি প্রকাশ করে দাবি করা হচ্ছে, মোজো কোনোদিন ৫০ টাকা ছিলই না। মোজো তাদের ১ টাকা ডোনেশান ক্যাম্পেইন শুরু করার পর মোজোর দাম ১০ টাকা বাড়িয়ে ২৫ টাকা থেকে ৩৫ টাকা করেছে। কিন্তু রিউমর স্ক্যানার টিম অনুসন্ধানে জেনেছে, মোজোর ৫০০ মিলি বোতলের দাম কখনো ৫০ টাকা না থাকলেও ফিলিস্তিনের বিষয়ে ক্যাম্পেইন শুরুর পর পণ্যটির দাম ১০ টাকা বাড়ানোর দাবি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, গত ডিসেম্বরে এ সংক্রান্ত ক্যাম্পেইন শুরুর আগে গত জুনে সর্বশেষ ৫০০ মিলি বোতলের দাম ৩০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩৫ টাকা করা হয়। এরপর আর মোজোর দাম বাড়েনি। 

সুতরাং, মোজোর ৫০০ মিলি বোতলের দাম কখনো ৫০ টাকা না থাকলেও ফিলিস্তিনের বিষয়ে ক্যাম্পেইন শুরুর পর বোতলটির দাম ১০ টাকা বাড়ানোর ভুল দাবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র

  • Akij Venture: Mojo Support Palestine
  • Statement from Adnan Shafiq, Akij Food & Beverage Limited
  • Rumor Scanner’s own analysis 

রমজান মাসে বেপর্দা নারীকে বাস থেকে নামিয়ে দেওয়ার দাবি সংক্রান্ত ভাইরাল ভিডিওটি স্ক্রিপ্টেড

সম্প্রতি, “রমজান মাসে বেপর্দা মহিলা বাসের হেলপারের সাথে কি ক*র*ছে” শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।  

এছাড়া কাউকে কাউকে ভিডিওকে সত্য ভেবে এ নিয়ে সমালোচনা করতেও দেখা যায়। এমন পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ভিডিওর শুরুতেই দেখা যায়, একজন সুপারভাইজার তার বাসে ওঠা একজন নারীকে বাস থেকে নেমে যেতে বলেন। বিষয়টিকে কেন্দ্র করে সেই মহিলা ও বাসের সুপারভাইজারের বাদানুবাদ চলতে থাকে। পরিশেষে বাসের চালক ও সুপারভাইজার, রমজান মাসে বেপর্দা নারীকে বাসে তুলবেন না বলে ঐ নারীকে বাস থেকে নেমে যেতে বলেন। 

ফেসবুকের একাধিক পোস্টে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)

ইউটিউবে একই দাবিতে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)

ভিডিওগুলো পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ১১ লাখের অধিক মানুষ ভিডিওগুলো দেখেছেন। ভিডিওগুলোতে ২৫ হাজারের অধিক রিঅ্যাক্ট পড়েছে এবং প্রায় ১০ হাজার ভিন্ন ভিন্ন অ্যাকাউন্ট থেকে ভিডিওটি শেয়ার করা হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, রমজান মাসে বেপর্দা নারীকে বাস থেকে নামিয়ে দেওয়ার দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত ভিডিওটি বাস্তব কোনো ঘটনার নয় বরং বিনোদনের উদ্দেশ্যে তৈরি উক্ত ভিডিওটি বাস্তব দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত ভিডিওগুলোর পোস্টের কমেন্টবক্স পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, অনেক নেটিজেন বিষয়টিকে বাস্তব ঘটনার ভিডিও ভেবে নিজেদের মন্তব্য ব্যক্ত করেছেন।

Image By Rumor Scanner

বিষয়টি যাচাইয়ে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে Carton Show নামের একটি ফেসবুক পেজে গত ১৪ মার্চ “রমজান মাসে বেপর্দা মহিলা বাসের হেলপারের সাথে কি ক*র*ছে অতঃপর” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত আলোচিত মূল ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়।

পরবর্তীতে, Carton Show নামের উক্ত পেজটির অ্যাবাউট সেকশন থেকে জানা যায় পেজটি একটি ডিটিজাল কনটেন্ট তৈরির পেজ। সেইসাথে পেজের কনটেন্ট পর্যবেক্ষণ করে নাটক সদৃশ বিভিন্ন ধরণের কনটেন্ট খুঁজে পাওয়া যায়।  

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওর নারী যাত্রী ও বাসের হেলপার একই পেজের একাধিক ভিডিওতে রয়েছেন। তাছাড়াও ভিডিওগুলোতে তাদেরকে ভিন্ন ভিন্ন ভূমিকায় অভিনয় করতে দেখা যায়।

এমন কিছু ভিডিও দেখুন এখানে, এখানে, এখানে

Comparison By Rumor Scanner

একই ব্যক্তির একাধিক ভিডিওতে ভিন্ন ভিন্ন ভূমিকায় উপস্থিতি থেকে বোঝা যায় যে, বাসের নারী যাত্রী ও বাসের সুপারভাইজার উভয়ই Carton Show টিমের সদস্য।

মূলত, Carton Show নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে “রমজান মাসে বেপর্দা মহিলা বাসের হেলপারের সাথে কি ক*র*ছে অতঃপর” শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও প্রচারিত হয়। উক্ত ভিডিওটি সম্প্রতি বাস্তব ঘটনার ভিডিও দাবিতে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। 

উল্লেখ্য, পূর্বেও বেশ কয়েকটি স্ক্রিপ্টেড ভিডিও বাস্তব দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত হলে সেগুলো  শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল রিউমর স্ক্যানার। 

সুতরাং, রমজান মাসে বেপর্দা নারীকে বাস থেকে নামিয়ে দেওয়ার দাবি সংক্রান্ত একটি স্ক্রিপ্টেড ভিডিও বাস্তব ঘটনা দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

  • Facebook Page: Carton Show
  • Rumor Scanner’s Own Analysis

পচে যাওয়া তরমুজের স্তূপের ছবিগুলো পুরোনো

0

সম্প্রতি, ক্রেতারা তরমুজ না কেনায় বিক্রেতাদের তরমুজ নষ্ট হয়ে গেছে- দাবিতে তরমুজের স্তূপের দুইটি ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ফেলে রাখা পচে যাওয়া তরমুজের স্তূপের ছবি দুইটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং ছবিগুলো গত বছরের এপ্রিল মাসের। 

প্রথম ছবি যাচাই

অনুসন্ধানের শুরুতে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ঢাকা ট্রিবিউনের ওয়েবসাইটে গত বছরের ০৫ এপ্রিল “এত তরমুজ রাস্তায় ফেলে দিলো কারা?” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। 

উক্ত প্রতিবেদনে প্রকাশিত একটি ছবির সাথে আলোচিত ছবির হুবহু মিল পাওয়া যায়। 

Image Comparison: Rumor Scanner 

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ছবিটি চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালী থানাধীন ফিরিঙ্গি বাজার সড়কের পাশে ফেলে দেওয়া তরমুজের স্তুপের দৃশ্যের।

অর্থাৎ ছবিটি গত বছর চট্টগ্রাম থেকে তোলা। 

দ্বিতীয় ছবি যাচাই

রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমেই কালের কণ্ঠ এর ওয়েবসাইটে গত বছরের ০৪ এপ্রিল ‘পানির দরেও’ বিক্রি হচ্ছে না তরমুজ’- শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত  প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিটি ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Image Comparison: Rumor Scanner 

উক্ত প্রতিবেদনে থাকা ছবিটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, ক্ষেতে বৃষ্টিতে ভেজার কারণে এবং নৌকায় প্রচণ্ড রোদে থেকে অনেক তরমুজে পচন ধরেছে। কীর্তনখোলার তীরে ও পানিতে পড়ে আছে শত শত পচা তরমুজ। গতবছরের ০৩ এপ্রিল বরিশালের পাইকারি ফলের আড়ত পোর্ট রোড থেকে তোলা। 

অর্থাৎ, এই ছবিটিও গত বছরের।

চলতি বছর কি তরমুজ পচে যাওয়ার কোনো ঘটনা ঘটেছে?

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে মূলধারার গণমাধ্যম আজকের পত্রিকার ওয়েবসাইটে গত ১৮ মার্চ “ক্রেতা সংকটে পচছে তরমুজ, বিপাকে ব্যবসায়ীরা” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাওয়ায় তরমুজের ক্রেতা সংকটে পড়ছে রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার ব্যবসায়ীরা। চড়া দামে তরমুজ বিক্রি না হওয়ায় পচে যাচ্ছে ব্যবসায়ীদের অবিক্রীত তরমুজ। 

অর্থাৎ, আলোচিত ছবিগুলো চলতি বছরের না হলেও এ বছর তরমুজ পচে যাওয়ার ঘটনা সত্য।

মূলত, চলতি বছরে তরমুজের লাগামহীন দাম নিয়ে চলছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে নানান সমালোচনা। এরইমধ্যে ক্রেতারা তরমুজ না কেনায় বিক্রেতাদের তরমুজ নষ্ট হয়ে গেছে দাবিতে পচে যাওয়া তরমুজের স্তূপের দুইটি ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, চলতি বছর তরমুজ পচে যাওয়ার ঘটেছে। তবে আলোচিত ছবিগুলো সাম্প্রতিক সময়ের নয়। প্রকৃতপক্ষে, ছবি দুইটির গত বছরের এপ্রিল মাসে বরিশাল এবং চট্টগ্রাম থেকে তোলা। 

সুতরাং, গত বছরের পচে যাওয়া তরমুজের স্তূপের ছবিকে সাম্প্রতিক সময়ের ছবি দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র

রমজান উপলক্ষে আড়ং থেকে ৮০ হাজার টাকা উপহার দেওয়ার ক্যাম্পেইনটি ভুয়া

0

সম্প্রতি, “Aarong Ramadan gifts Through the questionnaire, you will have a chance to get 80000 taka.”– শীর্ষক শিরোনামে একটি ক্যাম্পেইনের লিংক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

আড়ং

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমার স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আড়ং কোম্পানি “Aarong Ramadan gifts Through the questionnaire, you will have a chance to get 80000 taka.” শীর্ষক কোনো ক্যাম্পেইনের আয়োজন করেনি এবং উক্ত পদ্ধতি ব্যবহারে ৮০ হাজার টাকা উপহারের বিষয়টিও মিথ্যা। 

অনুসন্ধানের মাধ্যমে দেখা যায়, একটি ভুয়া ওয়েবসাইট থেকে ‘আড়ং’ এর নামে প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে ৮০ হাজার টাকা জিতে নেওয়া শীর্ষক ক্যাম্পেইনটি চালানো হচ্ছে। 

অনুসন্ধানের মাধ্যমে দেখা যায়, যে ডোমেইনগুলো ব্যবহার করে ক্যাম্পেইনটি পরিচালনা করা হচ্ছে সেটা মূলত আড়ং কোম্পানির মূল ওয়েবসাইট নকল করে তৈরি করা। ক্যাম্পেইনটির ভুয়া ওয়েবসাইট (আর্কাইভ) গুলোতে দাবি করা হচ্ছে, ‘আড়ং রমজান উপহার! প্রশ্নাবলীর মাধ্যমে আপনি ৮০ হাজার টাকা জিতে নেওয়ার সুযোগ পাবেন। সেখানে সর্বমোট ৪টি প্রশ্ন উল্লেখ করা হয়েছে।’ 

প্রশ্নগুলো হলো-

Screenshot Collage By Rumor Scanner 

প্রশ্নগুলোর উত্তর দেওয়ার পর দেখা যায় নতুন আরেকটি পেজে তারা একটি অভিনন্দন পত্র দেয় এবং সেখানে ‘আপনার পুরস্কার জিতে নেওয়ার একটি সুযোগ আছে। উপহার নিতে হলে আপনাকে সঠিক বক্স নির্বাচন করতে হবে এবং সর্বোচ্চ তিনবার চেষ্টা করে সঠিক বক্সটি থেকে উপহার নেওয়ার সুযোগ পাবেন’ এমনটা লেখা থাকে। 

Screenshot: Fake Aarong Website

এরপর সঠিকভাবে বক্স বেছে নেওয়ার শর্তে ক্যাম্পেইনের লিংকটি ৫টি গ্রুপ এবং ২০জন বন্ধুকে শেয়ার করতে বলা হয়। পাশাপাশি নিজের ঠিকানা প্রদান করে নিবন্ধন সম্পন্ন করে ৫ থেকে ৭ দিনের ভেতর উপহার দেওয়ার কথা বলা হয়।

Screenshot: Fake Aarong website

এছাড়া আড়ং এর অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ এবং ওয়েবসাইটে এ সংক্রান্ত কোনো ক্যাম্পেইনের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মূলত, একটি ভুয়া ওয়েবসাইট থেকে পবিত্র রমজান উপলক্ষে আড়ং কোম্পানির নাম করে প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে ৮০ হাজার টাকা ৫ থেকে ৭ দিনের ভেতর উপহার দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে একটি ক্যাম্পেইন লিংক ৫ টি গ্রুপ অথবা ২০ জনকে শেয়ার করতে বলা হচ্ছে। 

উল্লেখ্য, পূর্বেও বিশ্ব নারী বিশ্ব নারী দিবস উপলক্ষে আড়ং কোম্পানির নাম করে প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে ৩০ হাজার টাকা উপহার দেওয়ার দাবিতে একটি ভুয়া লিংক প্রচার করা হলে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল রিউমর স্ক্যানার। 

সুতরাং, পবিত্র রমজান উপলক্ষে আড়ং থেকে ৮০ হাজার টাকা উপহার দেওয়ার ক্যাম্পেইনটি সম্পূর্ণ ভুয়া। 

তথ্যসূত্র

বাংলাদেশ নয়, ভারতের মহারাষ্ট্র সরকার স্কুল শিক্ষকদের টি-শার্ট ও জিন্স নিষিদ্ধ করেছে

0

সম্প্রতি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের জিন্স ও টি-শার্ট পরা নি’ষিদ্ধ! শীর্ষক একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের জিন্স ও টি-শার্ট পরা নিষিদ্ধ হওয়ার ঘটনাটি বাংলাদেশের নয় বরং এটি ভারতের মহারাষ্ট্র সরকার শিক্ষকদের নতুন পোশাকবিধি জারি করার ঘটনা।

অনুসন্ধানের শুরুতে ফেসবুকে প্রকাশিত পোস্টগুলোর সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে দেশীয় একাধিক গণমাধ্যমে (দৈনিক জনকণ্ঠ, একাত্তর টিভি, জুমবাংলা) এবিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রচারিত প্রতিবেদনগুলো পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, সংবাদগুলোর শিরোনামে ঘটনাটির স্থান উল্লেখ করা না হলেও প্রতিবেদনগুলোর বিস্তারিত অংশে এটি ভারতের মহারাষ্ট্রের ঘটনা বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

তাছাড়া একাধিক গণমাধ্যম তাদের ফেসবুক পেজে (,) ঘটনাটি’র বিস্তারিত উল্লেখ না করে শুধুমাত্র শিরোনাম এবং ফটোকার্ড পোস্ট করার ফলে ঘটনাটি ভারতের হলেও স্থানের নাম উল্লেখ না করে বাংলাদেশে প্রচার করায় বিষয়টি বাংলাদেশের ভেবে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হচ্ছে এবং বাংলাদেশের নেটিজেনরা বিষয়টি সঠিকভাবে না জেনেই ঘটনাটি বাংলাদেশের মনে করেছেন।

Screenshot: Facebook

উক্ত পোস্টগুলোর কমেন্টবক্স বিশ্লেষণ করে নেটিজেনদের ঘটনাটি বাংলাদেশের ভেবে বিভ্রান্তিকর মন্তব্য করতে দেখা যায়।

Screenshot Collage: Rumor Scanner

পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে ভারতীয় গণমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে এর ওয়েবসাইটে গত ১৮ মার্চ “Maharashtra introduces dress code for school teachers, t-shirts, jeans not allowed” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ভারতের মহারাষ্ট্র সরকার রাজ্যের স্কুল শিক্ষকদের জন্য ড্রেস কোড চালু করেছে। টি-শার্ট, জিন্স বা ডিজাইন এবং ছবিযুক্ত অন্য কোনও শার্ট স্কুল শিক্ষকদের পরতে পরতে নিষেধ করা হয়েছে।

অর্থাৎ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের জিন্স ও টি-শার্ট না পরতে দেওয়ার ঘটনাটি বাংলাদেশের নয়। তবে এ সম্পর্কিত খবরের শিরোনামে স্থানের নাম না উল্লেখ করে বাংলাদেশে প্রচার করায় ঘটনাটি বাংলাদেশের ভেবে নেটিজেনরা বিভ্রান্ত হয়েছেন।

পাশাপাশি, দেশিয় মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে সাম্প্রতিক সময়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের জিন্স ও টি-শার্ট না পরতে দেওয়ার দাবির বিষয়ে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মূলত, সম্প্রতি ভারতের মহারাষ্ট্র সরকার রাজ্যের স্কুল শিক্ষকদের জন্য ড্রেস কোড চালু করেছে। টি-শার্ট, জিন্স বা ডিজাইন এবং ছবিযুক্ত অন্য কোনও শার্ট স্কুল শিক্ষকদের পরতে পরতে নিষেধ করেছে কর্তৃপক্ষ। উক্ত বিষয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমের বরাতে বাংলাদেশের একাধিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের শিরোনামে ঘটনাটির স্থানের নাম উল্লেখ না করে প্রচার করা হয়। পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীরা বিষয়টি বাংলাদেশের ঘটনা মনে করে ফেসবুকে প্রচার করেন।

উল্লেখ্য, পূর্বেও ভারতের একাধিক ঘটনা বাংলাদেশের দাবিতে প্রচারিত হলে তা নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কয়েকটি প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, ভারতের মহারাষ্ট্র সরকার রাজ্যের স্কুল শিক্ষকদের টি-শার্ট, জিন্স না পরতে দেওয়ার ঘটনাকে বাংলাদেশে স্থানের নাম উল্লেখ না করে ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

ইফতার চাওয়ায় মাশরাফি বিন মর্তুজা কর্তৃক গরিবদের পেটানোর ভুয়া দাবি

সম্প্রতি, “ইফতার চাওয়ায় গরিবদের ইচ্ছা মত পিটালো একি করলো মাশরাফি বিন মর্তুজা” শীর্ষক দাবিতে একটি তথ্য ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম ইউটিউবে প্রচার করা হয়েছে। 

ইফতার চাওয়ায়

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ইফতার চাওয়ায় নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মর্তুজা কর্তৃক গরিবদের পিটানোর কোনো ঘটনা ঘটেনি বরং দেশের দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইফতার পার্টি বন্ধের ঘটনায় প্রকাশিত দুটি ভিডিওর কিছু অংশের সাথে আলোচিত দাবিটি যুক্ত করে ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে ভিডিওর কোথাও মাশরাফি বিন মুর্তজা কর্তৃক গরিবদের পিটানোর কোনো দৃশ্য কিংবা তথ্যের উল্লেখ পাওয়া যায়নি। এমনকি পুরো ভিডিওর কোথাও আলোচিত দাবির সাথে সম্পর্কিত মাশরাফি বিন মর্তুজার উপস্থিতি দেখা যায়নি। 

আলোচিত ভিডিওটিতে প্রচারিত দাবির বিষয়ে আরও অনুসন্ধানে ভিডিওটিতে দেখানো ভিডিও ক্লিপগুলোর বিষয়ে আলাদাভাবে অনুসন্ধান চালায় রিউমর স্ক্যানার টিম।

ভিডিও যাচাই ০১ 

অনুসন্ধানের শুরুতেই আলোচিত ভিডিওটিতে যুক্ত প্রথম ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ‘News Today Bangla’ এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ১৭ মার্চ “ইফতার বন্ধের নির্দেশ দিলো কে।। তারেক। গণঅধিকার পরিষদ” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিওর একটি অংশই আলোচিত ভিডিওটিতে যুক্ত করা হয়েছে। 

Video Comparison : Rumor Scanner

ভিডিওতে গণঅধিকার পরিষদের একাংশের নেতা তারেক রহমান গত ১০ মার্চ ক্যাম্পাসে ইফতার পার্টির আয়োজন না করার বিষয়ে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি সম্পর্কে নিজস্ব মতামত ব্যক্ত করেন। 

ভিডিও যাচাই ০২ 

দ্বিতীয় ভিডিওর বিষয়ে অনুসন্ধানে অনলাইন সংবাদ মাধ্যম ‘Sylhet 9’ এর ফেসবুক পেজে গত ১২ মার্চ “ইফতার নি*ষিদ্ধ করতে গিয়ে সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে হয়ে গেলো গণ ইফতার” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিওটির একটি অংশই আলোচিত ভিডিওটিতে যুক্ত করা হয়েছে। 

Video Comparison : Rumor Scanner 

ভিডিওতে দেশের দুইটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইফতার পার্টি না করার নির্দেশনার প্রতিবাদে সিলেট বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত ইফতার পার্টির দৃশ্য দেখানো হয়।

অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিওটিতে যুক্ত দুইটি ভিডিওই কোনো প্রকার প্রাসঙ্গিকতা ছাড়া প্রচারিত দাবির সাথে যুক্ত করা হয়েছে।

পরবর্তীতে আলোচিত দাবির বিষয়ে প্রাসঙ্গিক একাধিক কি-ওয়ার্ড সার্চে গণমাধ্যম কিংবা অন্য কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্রে ইফতার চাওয়ায় গরিবদের মাশরাফি বিন মর্তুজা পিটিয়েছেন এমন কোনো, ভিডিও, সংবাদ কিংবা তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে অনুসন্ধানে বিগত কয়েক বছরে মাশরাফি বিন মর্তুজা বিভিন্ন শ্রেণির মানুষদের ইফতার সামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার বিষয়ে সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়। এমন কিছু প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে। 

মূলত, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা উল্লেখ করে গত ১০ এবং ১১ মার্চ ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে ইফতার পার্টি আয়োজন না করার অনুরোধ জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। উক্ত ঘটনার প্রতিবাদে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত গণ ইফতারের একটি ভিডিও এবং উক্ত ঘটনায় গণঅধিকার পরিষদের একাংশের নেতা তারেক রহমানের নিজস্ব মতামতের একটি ভিডিওর সাথে “ইফতার চাওয়ায় গরিবদের ইচ্ছা মত পিটালো একি করলো মাশরাফি বিন মর্তুজা” শীর্ষক থাম্বনেইল যুক্ত করে ইউটিউবে প্রচার করা হয়েছে। 

সুতরাং, ইফতার চাওয়ায় গরিবদের ইচ্ছা মত পিটালো মাশরাফি বিন মর্তুজা শীর্ষক দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

মোজোর মোড়কে হালাল ও হারাম সম্পর্কিত কোনো লেখা যুক্ত করা হয়নি

0

বাংলাদেশের কোমল পানীয় ব্র্যান্ড মোজোর মোড়কে “তিনি ‘মোজো’ কে করেছেন হালাল এবং ‘কোক’ কে করেছেন হারাম” শীর্ষক লেখা যুক্ত করা হয়েছে দাবিতে একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

মোজোর মোড়কে

এমন কিছু ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আকিজ ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের কোমল পানীয় মোজোর মোড়কে হালাল ও হারাম সম্পর্কিত কোনো লেখা যুক্ত করা হয়নি বরং মোজোর বোতলের একটি ছবি সম্পাদনার মাধ্যমে আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে।

গুজবের সূত্রপাত

অনুসন্ধানের মাধ্যমে ‘মুবিন’ নামের একটি ফেসবুক আইডিতে গত ১৮ মার্চ রাত ১০টা ০৬ মিনিটে প্রকাশিত আলোচ্য ছবি সম্বলিত সম্ভাব্য প্রথম পোস্ট (আর্কাইভ) খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার টিম।

Screenshot: Facebook.

পরবর্তীতে আমরা এই ছবির বিষয়ে জানতে জনাব মুবিনের সাথে যোগাযোগ করি। তিনি আমাদের জানিয়েছেন, ছবিটি তিনি নিজেই এডিট বা সম্পাদনা করেছেন। ফেসবুক থেকে সংগৃহীত মোজোর বোতলের একটি ছবির ওপর তিনি এই এডিট করেছেন। এই কাজটি শুধুমাত্র বিনোদনের উদ্দেশ্যে করেছেন বলে তিনি আমাদের জানিয়েছেন।

জনাব মুবিন আমাদের মোজোর মূল বোতলের ছবিটিও সরবরাহ করেছেন। মূল ছবিটিতে এই লেখাটি নেই।

Image Comparison: Rumor Scanner.

তাছাড়া রিউমর স্ক্যানার টিম বাজারে থাকা মোজোর বোতলগুলোতেও এই লেখা দেখতে পায়নি।

মূলত, দেশীয় শিল্পপ্রতিষ্ঠান আকিজ ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের কোমল পানীয় ব্র্যান্ড মোজোর মোড়কে “তিনি ‘মোজো’ কে করেছেন হালাল এবং ‘কোক’ কে করেছেন হারাম” শীর্ষক লেখা যুক্ত হয়েছে দাবিতে একটি ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এর প্রেক্ষিতে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, মোজোর মোড়কে এমন কোনো লেখা যুক্ত হয়নি। উক্ত দাবিতে প্রচারিত ছবিটি এডিটেড বা সম্পাদিত। মুবিন নামের একজন ব্যক্তি বিনোদনের উদ্দেশ্যে সম্পাদনার মাধ্যমে মোজোর বোতলে এই লেখা যুক্ত করেন, যা পরবর্তীতে বাস্তব দাবিতে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।

আরো পড়ুনঃ যেভাবে জন্ম নিলো ভুয়া মোজো স্টুডিও বাংলা

সুতরাং, মোজোর মোড়কে “তিনি ‘মোজো’ কে করেছেন হালাল এবং ‘কোক’ কে করেছেন হারাম” শীর্ষক লেখা যুক্ত করা হয়েছে দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা এবং এই দাবিতে প্রচারিত মোজোর বোতলের ছবিটি এডিটেড বা বিকৃত।

তথ্যসূত্র

  • Rumor Scanner’s own investigation.
  • Statement by Mubin.