বাংলাদেশ নয়, ভারতের মহারাষ্ট্র সরকার স্কুল শিক্ষকদের টি-শার্ট ও জিন্স নিষিদ্ধ করেছে

সম্প্রতি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের জিন্স ও টি-শার্ট পরা নি’ষিদ্ধ! শীর্ষক একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের জিন্স ও টি-শার্ট পরা নিষিদ্ধ হওয়ার ঘটনাটি বাংলাদেশের নয় বরং এটি ভারতের মহারাষ্ট্র সরকার শিক্ষকদের নতুন পোশাকবিধি জারি করার ঘটনা।

অনুসন্ধানের শুরুতে ফেসবুকে প্রকাশিত পোস্টগুলোর সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে দেশীয় একাধিক গণমাধ্যমে (দৈনিক জনকণ্ঠ, একাত্তর টিভি, জুমবাংলা) এবিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রচারিত প্রতিবেদনগুলো পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, সংবাদগুলোর শিরোনামে ঘটনাটির স্থান উল্লেখ করা না হলেও প্রতিবেদনগুলোর বিস্তারিত অংশে এটি ভারতের মহারাষ্ট্রের ঘটনা বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

তাছাড়া একাধিক গণমাধ্যম তাদের ফেসবুক পেজে (,) ঘটনাটি’র বিস্তারিত উল্লেখ না করে শুধুমাত্র শিরোনাম এবং ফটোকার্ড পোস্ট করার ফলে ঘটনাটি ভারতের হলেও স্থানের নাম উল্লেখ না করে বাংলাদেশে প্রচার করায় বিষয়টি বাংলাদেশের ভেবে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হচ্ছে এবং বাংলাদেশের নেটিজেনরা বিষয়টি সঠিকভাবে না জেনেই ঘটনাটি বাংলাদেশের মনে করেছেন।

Screenshot: Facebook

উক্ত পোস্টগুলোর কমেন্টবক্স বিশ্লেষণ করে নেটিজেনদের ঘটনাটি বাংলাদেশের ভেবে বিভ্রান্তিকর মন্তব্য করতে দেখা যায়।

Screenshot Collage: Rumor Scanner

পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে ভারতীয় গণমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে এর ওয়েবসাইটে গত ১৮ মার্চ “Maharashtra introduces dress code for school teachers, t-shirts, jeans not allowed” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ভারতের মহারাষ্ট্র সরকার রাজ্যের স্কুল শিক্ষকদের জন্য ড্রেস কোড চালু করেছে। টি-শার্ট, জিন্স বা ডিজাইন এবং ছবিযুক্ত অন্য কোনও শার্ট স্কুল শিক্ষকদের পরতে পরতে নিষেধ করা হয়েছে।

অর্থাৎ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের জিন্স ও টি-শার্ট না পরতে দেওয়ার ঘটনাটি বাংলাদেশের নয়। তবে এ সম্পর্কিত খবরের শিরোনামে স্থানের নাম না উল্লেখ করে বাংলাদেশে প্রচার করায় ঘটনাটি বাংলাদেশের ভেবে নেটিজেনরা বিভ্রান্ত হয়েছেন।

পাশাপাশি, দেশিয় মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে সাম্প্রতিক সময়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের জিন্স ও টি-শার্ট না পরতে দেওয়ার দাবির বিষয়ে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মূলত, সম্প্রতি ভারতের মহারাষ্ট্র সরকার রাজ্যের স্কুল শিক্ষকদের জন্য ড্রেস কোড চালু করেছে। টি-শার্ট, জিন্স বা ডিজাইন এবং ছবিযুক্ত অন্য কোনও শার্ট স্কুল শিক্ষকদের পরতে পরতে নিষেধ করেছে কর্তৃপক্ষ। উক্ত বিষয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমের বরাতে বাংলাদেশের একাধিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের শিরোনামে ঘটনাটির স্থানের নাম উল্লেখ না করে প্রচার করা হয়। পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীরা বিষয়টি বাংলাদেশের ঘটনা মনে করে ফেসবুকে প্রচার করেন।

উল্লেখ্য, পূর্বেও ভারতের একাধিক ঘটনা বাংলাদেশের দাবিতে প্রচারিত হলে তা নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কয়েকটি প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, ভারতের মহারাষ্ট্র সরকার রাজ্যের স্কুল শিক্ষকদের টি-শার্ট, জিন্স না পরতে দেওয়ার ঘটনাকে বাংলাদেশে স্থানের নাম উল্লেখ না করে ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img