Home Blog Page 535

ভারতের অনুষ্ঠানকে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে ট্রান্সজেন্ডার গায়িকার গান পরিবেশনের ভিডিও দাবিতে প্রচার

সম্প্রতি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া এক ভিডিওতে আসিফ মাহতাব নামে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় দর্শন বিভাগের খণ্ডকালীন প্রভাষককে ট্রান্সজেন্ডার এবং সমকামিতা বিরোধী বক্তব্য দিতে দেখা যায়। সেসময় তাকে সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বইয়ের একটি অধ্যায়ে ট্রান্সজেন্ডার বিষয়ক আলোচনা থাকার অভিযোগ তুলে বইটির দুইটি পৃষ্ঠা ছিঁড়ে ফেলতেও দেখা যায়। এরপরই জানা যায়, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় ওই শিক্ষকের সাথে চুক্তি বাতিল করেছে। পরবর্তীতে ইন্টারনেটে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, যাতে একজন নারীকে গান গাইতে দেখা যাচ্ছে। এই ভিডিও পোস্ট করে ক্যাপশনের মাধ্যমে দাবি করা হচ্ছে, এটি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের দৃশ্য।  

 ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে

“at BracU new campus opening concert” শিরোনাম ব্যবহার করে প্রচারিত ভিডিওটি ফেসবুকে রীতিমতো ভাইরাল হয়ে গিয়েছে যা দেখে অনেককেই ভিডিওটি ব্র্যাকের অনুষ্ঠানের বলেই মনে করেছেন।

এই ভিডিও সম্বলিত ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

একই ভিডিও সম্বলিত টিকটকে প্রচারিত একটি পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

একই ক্যাপশনে ইউটিউবে প্রচারিত উক্ত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের দৃশ্য দাবিতে যে ভিডিওটি প্রচার করা হচ্ছে তা ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় এমনকি বাংলাদেশেরই নয় বরং ভারতে একটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের অনুষ্ঠানে সেদেশের একজন ট্রান্সজেন্ডার গায়িকার গান পরিবেশনের ভিডিওকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।  

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ইন্সটাগ্রামে সুশান্ত দিভগিকার (Sushant Divgikar) নামে এক নারীর অ্যাকাউন্টে গত বছরের (২০২৩) ৩০ ডিসেম্বর প্রকাশিত মূল ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

ভিডিওর ক্যাপশন থেকে জানা যাচ্ছে, ফিউচার জেনারেলি ও জেনারেলি গ্রুপের আয়োজনে একটি অনুষ্ঠানে তিনি এই গান পরিবেশন করেন। 

Screenshot: Instagram

তিনি একই ভিডিও তার ইউটিউব চ্যানেলেও একইদিনেই প্রকাশ করেছেন। 

সুশান্ত দিভগিকার ভারতের একজন ট্রান্সজেন্ডার শিল্পী। তিনি রাণী কোহিনূর  (Rani Ko-HE-nur) নামেও পরিচিত। 

অর্থাৎ, ভারতের একটি অনুষ্ঠানকে বাংলাদেশের দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।

এছাড়া, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাস উদ্বোধনে বাংলাদেশি কিংবা ভারতীয় কোনো গায়িকার গান পরিবেশনের তথ্য মেলেনি। 

মূলত, সম্প্রতি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের দৃশ্য দাবিতে একজন ট্রান্সজেন্ডার শিল্পীর গান পরিবেশনের ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিম অনুসন্ধানে দেখেছে, উক্ত অনুষ্ঠানের দৃশ্যটি বাংলাদেশের নয়। প্রকৃতপক্ষে, গান পরিবেশনের এই ভিডিওটি সুশান্ত দিভগিকার নামে ভারতীয় একজন ট্রান্সজেন্ডার শিল্পীর, যা তিনি গত বছর ভারতের একটি প্রতিষ্ঠানের অনুষ্ঠানে পরিবেশন করেন। তাছাড়া, সাম্প্রতিক সময়ে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাসে কোনো উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হয়নি।

সুতরাং, ভারতে একজন ট্রান্সজেন্ডার শিল্পী কর্তৃক গান পরিবেশনের ভিডিওকে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষ্ঠানের দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন ও যুক্তরাষ্ট্রের চাপে পুনরায় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার গুজব

গত ০৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করেছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। এর পরবর্তী সময়ে গত ২২ জানুয়ারি Media Cell 24 নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ‘রাতেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন, আমেরিকার চাপে পুনরায় তফসিল ঘোষণা করলেন সিসি (সিইসি)’ শীর্ষক দাবি সম্বলিত শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার

ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি ভিডিওটি দেখা হয়েছে প্রায় ৩৭ হাজার বার। ভিডিওটিতে প্রায় ১ হাজার পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করা হয়নি এবং আমেরিকার চাপে পুনরায় সিইসি কর্তৃক জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার দাবিটিও সঠিক নয় বরং ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার কয়েকটি পুরোনো ও সাম্প্রতিক ভিডিও ক্লিপ যুক্ত করে তাতে চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে আলোচিত দাবিগুলো প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। উক্ত ভিডিওটিতে কোথাও বাংলাদেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন কিংবা সিইসি কর্তৃক পুনরায় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার দাবি সম্পর্কিত কোনো তথ্য বা প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি। এমনকি ভিডিওটিতে আলোচিত দাবিগুলোর সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কোনো ভিডিও কিংবা বক্তব্যেরও উল্লেখ পাওয়া যায়নি। অর্থাৎ ভিডিওটি’র শিরোনাম ও থাম্বনেইলে প্রচারিত দাবিগুলোর সাথে বিস্তারিত অংশের অসামঞ্জস্যতা রয়েছে।

আলোচিত ভিডিওটিতে প্রচারিত দাবিগুলোর বিষয়ে আরও অনুসন্ধানে ভিডিওটিতে দেখানো ভিডিও ক্লিপগুলোর বিষয়ে আলাদাভাবে অনুসন্ধান চালায় রিউমর স্ক্যানার টিম।

ভিডিও যাচাইঃ ০১

আলোচিত ভিডিওটি’র শুরুর দিকের একটি অংশ থেকে কিছু স্থিরচিত্র নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ‘আরটিভি’র ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ২৯ জুলাই ‘পাকিস্তানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধানের সম্ভাব্য নাম চূড়ান্ত’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

এই ভিডিওটি’র সাথে আলোচিত ভিডিওটি’র উক্ত অংশের হুবহু মিল পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner

সেখানে একজন সংবাদ পাঠিকা সেসময়ে পাকিস্তানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধানের সম্ভাব্য নাম চূড়ান্ত হওয়ার বিষয়ে সংবাদ পাঠ করেন।

অর্থাৎ, এটি পাকিস্তানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন সম্পর্কিত ভিডিও এবং এর সাথে আলোচিত দাবিগুলোর কোনো সম্পর্ক নেই।

ভিডিও যাচাইঃ ০২

পরবর্তীতে আলোচিত ভিডিওটি’র অপর একটি অংশ থেকে কিছু স্থিরচিত্র নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে পটুয়াখালী-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (নবম জাতীয় সংসদ) গোলাম মাওলা রনি’র ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে গত ২১ জানুয়ারি ‘সমসাময়িক রাজনীতি নিয়ে আলোচনা। কোন দিকে যাচ্ছে দেশ’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

এই ভিডিওটি’র সাথে আলোচিত ভিডিওটি’র গোলাম মাওলা রনির বক্তব্যের অংশের হুবহু মিল পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner

সেখানে গোলাম মাওলা রনিকে সমসাময়িক রাজনৈতিক বিভিন্ন ইস্যুতে আলোচনা করতে দেখা যায়।

অর্থাৎ, এটি সমসাময়িক রাজনৈতিক ইস্যুতে গোলাম মাওলা রনির ব্যক্তিগত মতামতের ভিডিও এবং এই ভিডিওটি’র সাথেও আলোচিত দাবিগুলোর কোনো সম্পর্ক নেই।

পাশাপাশি, গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে গত ০৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরবর্তী সময়ে আমেরিকার চাপে সিইসি কর্তৃক আবারও জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা কিংবা তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের দাবির সত্যতা পাওয়া যায়নি।

এছাড়াও, ২০১১ সালে বাংলাদেশে আপিল বিভাগ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সম্পর্কিত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে। পরবর্তীতে এই ব্যবস্থা আর পূর্ণবহাল করা হয়নি।

মূলত, ০৭ জানুয়ারি বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ঘোষিত ২৯৮ আসনের ফলাফলে ২২২ টি আসন লাভ করে টানা চতুর্থবার সরকার গঠন করেছে আওয়ামী লীগ। তবে গত ২২ জানুয়ারি Media Cell 24 নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ‘রাতেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন, আমেরিকার চাপে পুনরায় তফসিল ঘোষণা করলেন সিসি (সিইসি)’ শীর্ষক দাবি সম্বলিত শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে। রিউমর স্ক্যানার টিম অনুসন্ধান করে দেখেছে, উক্ত দাবিগুলো সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে ভিন্ন প্রেক্ষাপটের পুরোনো ও সাম্প্রতিক কয়েকটি ভিডিও’র সাথে চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল যুক্ত করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, পূর্বেও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে বিভিন্ন ভুয়া তথ্য প্রচারের প্রেক্ষিতে একাধিক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কয়েকটি প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন ও আমেরিকার চাপে পুনরায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

রাস্তায় বানর আসার ভিডিওটি ভারতের অযোধ্যার নয়, থাইল্যান্ডের 

0

গত ২২ জানুয়ারি অযোধ্যায়র রামমন্দির উদ্বোধন করা হয়। এরই প্রেক্ষিতে অযোধ্যায় বিপুল সংখ্যক বানর এসেছে দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। 

ভিডিওটি ফেসবুকে পোস্ট করে ক্যাপশনে বলা  হয়েছে, রাম লালার ভব্য মূর্তি অযোধ্যায় পৌছানোর খবর ছড়িয়ে পড়তেই প্রভু শ্রী রামচন্দ্রের বানরসেনা বিপুল সংখ্যক অযোধ্যায় যেতে দেখা যাচ্ছে।

বাংলাদেশী ফেসবুক ব্যবহারকারীদের অ্যাকাউন্ট থেকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ভারতীয় ফেসবুক ব্যবহারকারীদের অ্যাকাউন্ট থেকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, রাস্তায় বানর আসার এই ভিডিওটি ভারতের অযোধ্যার নয় বরং এটি থাইল্যান্ডের লপবুরি শহরের পুরোনো ভিডিও। 

অনুসন্ধানের শুরুতে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে থাইল্যান্ড ভিত্তিক গণমাধ্যম Sanook.com এর ওয়েবসাইটে ২০২০ সালের ১১ মার্চ “Battle for sour milk Open a clip of hundreds of Lopburi monkeys fighting in front of Phra Kan Shrine” (ইংরেজি অনূদিত) শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত ভিডিওযুক্ত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। 

উক্ত প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, থাইল্যান্ডের লপবুরি শহরে ফর কান শেরিনের (Phra Kan Shrine) সামনে মারপিটে জড়িয়ে পড়েছিল বানরের দুটো দল। মূলত খাবারের জন্য কয়েক শো বানর এই মারপিটে জড়িয়ে পড়েছিল। তারা রাস্তা আটকে মারপিট করায় সাধারণ মানুষ এবং পর্যটকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল।

উক্ত প্রতিবেদনটিতে থাকা ভিডিওটির সাথে আলোচিত ভিডিওটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison: Rumor Scanner 

এছাড়া, উক্ত প্রতিবেদনটিতে Sasaluk Rattanachai নামক ফেসবুক অ্যাকাউন্টের একটি পোস্ট পাওয়া যায়। 

Screenshot: Facebook

২০২০ সালের ১১ মার্চ করা পোস্টটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, এটি লপবুরি শহরের বানরের লড়াইয়ের দৃশ্য। এছাড়া, পোস্টটিতে থাকা ভিডিও এবং ছবির সাথেও আলোচিত ভিডিওটির মিল রয়েছে। 

পাশাপাশি, সেসময় একই তথ্যে বেশ কয়েকটি থাই গণমাধ্যম সংবাদ প্রকাশ করে। এমন দুইটি প্রতিবেদন দেখুন- Nation Tv এবং New Tv.

একই তথ্যে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদন দেখুন- The Sun, Marca এবং Daily Mail। 

অর্থাৎ, রাস্তায় বানর আসার ভিডিওটি ভারতের অযোধ্যার নয়। 

মূলত, গত ২২ জানুয়ারি ভারতের অযোধ্যায় বহুল আলোচিত রামমন্দির উদ্বোধন করেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই স্থানেই দাঁড়িয়ে ছিল বাবরি মসজিদ। ২০১৯ সালে সুপ্রিম রায়ের পর শুরু হয়েছিল রামমন্দির নির্মাণের কাজ। সম্প্রতি রাম মন্দির উদ্বোধন প্রেক্ষিতে রাস্তায় শত-শত বানর আসার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করে দাবি করা হয়, রাম লালার ভব্য মূর্তি অযোধ্যায় পৌঁছানোর খবর ছড়িয়ে পড়ায় অযোধ্যায় রাস্তায় বিপুল সংখ্যক বানর দেখা যাচ্ছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত দাবিটি মিথ্যা। প্রচারিত ভিডিওটি ভারতের অযোধ্যার নয়। প্রকৃতপক্ষে, ২০২০ সালের থাইল্যান্ডের লপবুরি শহরের ফর কান শেরিনের (Phra Kan Shrine) সামনে খাবারের জন্য মারপিটে জড়িয়ে পড়েছিল বানরের দুটো দল। এটি সেই ঘটনারই একটি ভিডিও।

সুতরাং, থাইল্যান্ডের লপবুরি শহরে বানরের মারামারির ভিডিওকে রাম মন্দির উদ্বোধনের প্রেক্ষিতে অযোধ্যার রাস্তায় বানরের উপস্থিতি দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

তামিমকে দর্শকরা ‘ভুয়া ভুয়া’ দুয়োধ্বনি দিয়েছে দাবিতে এডিটেড ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি, দর্শকরা তামিমকে ‘ভুয়া ভুয়া’ দুয়োধ্বনি দিয়েছেন দাবিতে গত ২৩ জানুয়ারি চলমান বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল) কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে ফরচুন বরিশালের হয়ে খেলা তামিম ইকবালের আউট হয়ে ফেরার সময়কার একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে। 

ভুয়া ভুয়া

ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

টিকটকে প্রচারিত কিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফেসবুকে প্রচারিত ভাইরাল এক ভিডিও এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি প্রায় ১ লক্ষ ৮৩ হাজার বার দেখা হয়েছে। ভিডিওটিতে ৮ হাজার ৮০০ পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। মন্তব্য পড়েছে ১ হাজার ৭০০ এবং শেয়ার হয়েছে ৪৩৩ বার। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়,  বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল) এ গত ২৩ জানুয়ারি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স বনাম ফরচুন বরিশালের খেলায় তামিম ইকবালের আউট হয়ে ফেরার সময় তাকে দর্শকদের ‘ভুয়া ভুয়া’ দুয়োধ্বনি দেওয়ার দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে চলমান বিপিএলে গত ২০ জানুয়ারি তামিমের দল ফরচুন বরিশাল ও সাকিব আল হাসানের দল রংপুর রাইডার্স খেলায় দর্শকদের ‘ভুয়া ভুয়া’ দুয়োধ্বনির শিকার হন সাকিব আল হাসান। সেই দুয়োধ্বনিকেই ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় তামিমের মাঠ থেকে ফেরার ভিডিওয়ের সঙ্গে যুক্ত করে ভাইরাল ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানে আলোচিত ভিডিওটি এবং ভিডিওতে যুক্ত অডিওর বিষয়ে পৃথকভাবে অনুসন্ধান করে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

ভিডিও যাচাই 

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটিতে থাকা স্কোরবোর্ডের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কিওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে খেলাধুলা বিষয়ক ইউটিউব চ্যানেল ‘Rabbitholebd Sports’ এ গত ২৩ জানুয়ারি “Comilla Victorians vs Fortune Barishal | 8th Match | Highlights | Season 10 | BPL 2024” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত ম্যাচটির হাইলাইটস ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

Video Comparison : Rumor Scanner 

এই ভিডিওর ৪ মিনিট ১৯ সেকেন্ড সময় থেকে ৪ মিনিট ২৬ সেকেন্ড অংশের সাথে আলোচিত ভিডিওটির হুবহু মিল পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে কোথাও তামিম ইকবালকে উদ্দেশ্য করে দর্শকদের ‘ভুয়া’ ‘ভুয়া’ স্লোগান শোনা যায়নি। 

অডিও যাচাই 

ভিডিওটিতে যুক্ত ‘ভুয়া’ ‘ভুয়া’ দুয়োধ্বনির অনুসন্ধানে খেলাধুলা বিষয়ক প্ল্যাটফর্ম ‘T Sports’ এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ২০ জানুয়ারি “Shakib vs Tamim | Match 3 | BPL 2024 | T Sports” শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়৷ 

উক্ত ভিডিও বিশ্লেষণে জানা যায়, গত ২০ জানুয়ারি সাকিব আল হাসানের রংপুর টাইগার্সের মুখোমুখি হয় তামিম ইকবালের ফরচুন বরিশাল। উক্ত ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধের সপ্তম ওভারে ফরচুন বরিশালের ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল মুখোমুখি হন সাকিব আল হাসানের বোলিং এর। ওভারে শেষের দিকে দর্শকদের “ভুয়া ভুয়া” দুয়োধ্বনি শিকার হন সাকিব আল হাসান।

উক্ত ভিডিওর ২ মিনিট থেকে ২ মিনিট ৭ সেকেন্ড পর্যন্ত সাকিবকে উদ্দেশ্য করে দর্শকদের দেওয়া ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগানের সাথে ‘তামিমকে উদ্দেশ্যে করে দর্শক ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দিয়েছে’ দাবিতে প্রচারিত আলোচ্য ভিডিওতে থাকা অডিওর হুবহু মিল রয়েছে।

অর্থাৎ, সাকিব আল হাসানকে উদ্দেশ্য করে দর্শকদের ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় যুক্ত করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।  

মূলত, গত ২৩ জানুয়ারি চলমান বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল) এ কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের মুখোমুখি হয় তামিম ইকবালের ফরচুন বরিশাল। উক্ত ম্যাচে তামিম ইকবালের আউট হয়ে মাঠ থেকে ফেরার সময়কার একটি ভিডিওকে তামিমকে উদ্দেশ্য করে দর্শকরা ‘ভুয়া ভুয়া’ দুয়োধ্বনি দিয়েছে দাবিতে প্রচার করা হয় । তবে রিউমর স্ক্যানার টিম যাচাই করে দেখেছে, তামিম ইকবালের আউট হয়ে মাঠ থেকে ফেরার সময় দর্শকরা তাকে উদ্দেশ্য করে ‘ভুয়া’ ‘ভুয়া’ দুয়োধ্বনি দেয়নি বরং গত ২০ জানুয়ারি ফরচুন বরিশাল ও রংপুর টাইগার্সের খেলায় সাকিব আল হাসানকে উদ্দেশ্য করে দর্শকদের ‘ভুয়া’ ‘ভুয়া’ দুয়োধ্বনি দেওয়ার স্লোগানটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে আলোচিত ভিডিওটিতে যুক্ত করা হয়েছে। 

সুতরাং, ‘ভুয়া’ ‘ভুয়া’ দুয়োধ্বনি যুক্ত তামিম ইকবালের আউট হয়ে ফেরার সময়কার ভিডিওটি এডিটেড বা বিকৃত। 

তথ্যসূত্র

ফটোগ্রাফারের কান্নার এই ছবিটি অযোধ্যার রামমন্দিরে রামলালার মূর্তির ভিডিওকালের মুহূর্তের নয়

0

সম্প্রতি, কাঁদতে কাঁদতে রামলালার ভিডিও করা এই ক্যামেরাম্যানের দৃশ্যটাই সব কিছু বুঝিয়ে দেয়- শীর্ষক ক্যাপশনের সাথে একজন ফটোগ্রাফারের কান্নার একটি ছবি সংযুক্ত করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। 

দাবি করা হচ্ছে, গত ২২ জানুয়ারি অযোধ্যার রামমন্দিরে রামলালার মূর্তির ভিডিও করার সময় ক্যামেরাম্যানের কান্না করার ছবি এটি।

 রামলালার মূর্তির

বাংলাদেশী ফেসবুক ব্যবহারকারীদের অ্যাকাউন্ট থেকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ভারতীয় ফেসবুক ব্যবহারকারীদের অ্যাকাউন্ট থেকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ফটোগ্রাফারের কান্নার এই ছবিটি ভারতের অযোধ্যায় রামমন্দিরে রামলালার মূর্তির ভিডিও ধারণের দৃশ্যের নয় বরং ছবিটি ২০১৯ সালে ধারণ করা একজন ইরাকি ফটোগ্রাফারের।

রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে ২০১৯ সালের ২৪ জানুয়ারি এশিয়া ও ওশেনিয়া অঞ্চলের ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা Asian Football Confederation (AFC) এর AFC Asian Cup এর অফিশিয়াল এক্স (সাবেক টুইটার) একাউন্টে মূল ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: AFC Asian Cup X Account 

ছবিটির শিরোনাম থেকে জানা যায়, ছবিটিতে থাকা ফটোগ্রাফার একজন ইরাকি। তাঁর এই ছবিটি তোলা হয়েছিল ২০১৯ সালের এশিয়ান কাপের “Round Of 16” কাতার বনাম ইরাকের ম্যাচ চলাকালীন সময়ে।

পাশাপাশি আরব আমিরাতের খেলাধুলা ভিত্তিক ওয়েবসাইট Sports360 Arabiya এর এক্স (সাবেক টুইটার) একাউন্টে একই বছরের ২৫ জানুয়ারি ‘‏مصور عراقي يبكي أثناء تأدية عمله وهو يشاهد خروج منتخب بلاده من كأس آسيا.‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি বার্তা খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Sports360 Arabiya X Account 

আরবি ভাষায় প্রদত্ত বার্তাটির শিরোনাম ইংরেজিতে অনুবাদ করে জানা যায়, ছবিতে থাকা এই ইরাকি ফটোগ্রাফার এশিয়ান কাপ থেকে তার দেশের বিদায়ে কান্না করছিলেন।

উপরোক্ত তথ্যের সূত্র ধরে বিষয়টির অধিকতর সত্যতা নিশ্চিতে খেলাধুলা ভিত্তিক গণমাধ্যম ESPN এর ওয়েবসাইট পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। পর্যবেক্ষণে জানা যায়, ২০১৯ সালের ২২ জানুয়ারি এএফসি এশিয়া কাপের রাউন্ড অব ১৬ এর খেলায় ইরাক বনাম কাতারের ম্যাচে প্রতিপক্ষ ইরাককে ১-০ গোলে পরাজিত করে কাতার। 

এছাড়া Teller Report নামের একটি ওয়েবসাইটে ২০১৯ সালের ২৫ জানুয়ারি ‘An Iraqi photographer hides his grief with his lens‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, কান্নারত ফটোগ্রাফারের নাম মুহাম্মেদ আল আজ্জায়ী। তিনি ইরাক ফুটবল ফেডারেশনের ফটোগ্রাফার।

মূলত, গত ২২ জানুয়ারি অযোধ্যার রামমন্দির উদ্বোধন করা হয়। ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই স্থানেই দাঁড়িয়ে ছিল বাবরি মসজিদ। ২০১৯ সালে সুপ্রিম রায়ের পর শুরু হয়েছিল রামমন্দির নির্মাণের কাজ। এরই প্রেক্ষিতে রামমন্দিরে রামলালার মূর্তিতে প্রাণ প্রতিষ্ঠার ভিডিও ধারণ করতে গিয়ে ফটোগ্রাফারের কান্না দৃশ্য দাবিতে একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত দাবিটি মিথ্যা। প্রকৃতপক্ষে, ২০১৯ সালের ২২ জানুয়ারিতে সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত এএফসি এশিয়ান কাপের ‘রাউন্ড অব ১৬’ ম্যাচে কাতারের কাছে ১-০ গোলে হেরে যায় ইরাক। এই ম্যাচের সময় মাঠে উপস্থিত ইরাক ফুটবল ফেডারেশনের ফটোগ্রাফার Mohammeed al-Azzawi নিজ ক্যামেরা সহ কান্নায় ভেঙে পড়েন। এটি সেই সময়কার দৃশ্য।

উল্লেখ্য, পূর্বেও একই ছবি ভিন্ন ভিন্ন দাবিতে প্রচার করা হলে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল রিউমর স্ক্যানার। 

প্রতিবেদন পড়ুন-

সুতরাং, অযোধ্যার রামমন্দিরে রামলালার মূর্তির ভিডিও ধারণ করতে গিয়ে ফটোগ্রাফারের কান্নায় ভেঙে পড়া ছবি দাবিতে ২০১৯ সালের সংযুক্ত আরব আমিরাতে এএফপি এশিয়ান কাপ চলাকালে ধারণকৃত একটি ছবি প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের টয়লেট ফি’র রশিদ দাবিতে প্রচারিত ছবিটি সম্পাদিত

0

সম্প্রতি, বাংলাদেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের টয়লেট ফি’র রশিদের ছবি দাবিতে একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

রশিদ

আলোচিত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের টয়লেট করার ফি’র রশিদ দাবিতে প্রচারিত ছবিটি আসল নয় বরং আলোচিত ছবিটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে এবং ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে টয়লেট ফি নামের আলাদা কোনো ফি চালু নেই।

গুজবের সূত্রপাত

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে Brac University Student Community নামের একটি ফেসবুক গ্রুপে গত ১৮ জানুয়ারি প্রকাশিত সম্ভাব্য প্রথম ফেসবুক পোস্টটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook

‘সুমিত জামান’ নামক একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী আলোচিত পোস্টটি (আর্কাইভ) করেন। 

পোস্টে তিনি লিখেন, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে ফি নিয়ে যে সকল আলোচনা শুরু হয়েছে এর মধ্যে যদি তারা এটি (টয়লেট ফি) নিয়ে আসা হয় তাহলে সত্যিই অবাক হওয়ার কিছু নেই। ওহ! এখানে ভ্যাট এড করতে ভুলে গিয়েছি।

অর্থাৎ, এই পোস্টের ছবিটি তিনিই তৈরি করেছেন।

পরবর্তীতে বিষয়টির ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে সুমিত জামানের সাথে ফেসবুক মেসেঞ্জারে যোগাযোগ করে রিউমর স্ক্যানার টিম।

আলোচিত ছবিটির বিষয়ে জানতে চাইলে সুমিত জামান জানান, ছবিটি তিনি সম্পাদনার মাধ্যমে তৈরি করেছেন।

তিনি আরও জানান, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মূলত তাদের উপর গাড়ি পার্কিং ফি চাপিয়ে দেওয়াতে সবাই ক্ষুব্ধ ছিলো। তাই এই মিমটা বানানো হয়েছিল। যেহেতু এই সেই ফি দিচ্ছে সেটাকে নিয়ে মজা করেই এই মিম টা বানানো হয়।

ফি’র রশিদের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান ছবিটি তিনি ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়া তিনি রিউমর স্ক্যানারকে আলোচিত ছবিটির লিংক শেয়ার করেন।

উক্ত ছবির সাথে আলোচিত ছবির বেক গ্রাউন্ডে থাকা ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের লোগো ব্যতীত বাকি সবকিছুর হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Image Comparison: Rumor Scanner

আলোচিত ছবিটি দক্ষিণ আফ্রিকার গণমাধ্যম The Herald এ ২০১৭ সালের ৪ মে প্রকাশিত একটি সংবাদ প্রতিবেদনের সাথে প্রকাশিত হয়।

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, রেজা খান নামক এক ব্যক্তি দেশটির জলি গ্রুবার নামক স্থানে অগ্রাহকদের টয়লেটের সুবিধা না দেওয়া এবং টয়লেট ফি বেশি রাখায় সমালোচনা করে ফেসবুকে পোস্ট করেন।

পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে Reeza Khan এর ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ২০১৭ সালের ২ মে তারিখে প্রকাশিত একটি পোস্টে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook

তবে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে টয়লেট সুবিধা গ্রহণের জন্য আলাদা ফি দিতে হয় কিনা এমন দাবির সত্যতা যাচাইয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির ওয়েবসাইট এবং দেশীয় গণমাধ্যমে এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। এছাড়া ইন্টারনেটে তথ্যপ্রমাণসহ উক্ত দাবি সংক্রান্ত কোনো অভিযোগের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় সম্প্রতি তাদের নতুন ক্যাম্পাসে নির্ধারিত ফি’র বিনিময়ে শিক্ষার্থীদের জন্য পার্কিং সুবিধা দেওয়ার ঘোষণা করেছে। 

মূলত, বাংলাদেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের টয়লেট করার ফি’র রশিদের ছবি দাবিতে একটি ছবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত ছবিটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সাহায্যে সম্পাদিত। প্রকৃতপক্ষে, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়েরই একজন শিক্ষার্থীর তৈরি মিম পোস্ট পরবর্তীতে সত্য দাবিতে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে।

সুতরাং, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের টয়লেটের ফি’র ছবি দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত ছবিটি এডিটেড বা বিকৃত।

তথ্যসূত্র

এই ছবিটি বাবরি মসজিদের নয়

0

গত ২২ জানুয়ারি অযোধ্যার রামমন্দির উদ্বোধন করা হয়। এর আগে ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত একই স্থানেই দাঁড়িয়ে ছিল বাবরি মসজিদ। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে সম্প্রতি একটি মসজিদের ছবি ইন্টারনেটে প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে, এটি বাবরি মসজিদের ছবি।

বাবরি মসজিদের

উক্ত দাবিতে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায় ইন্টারনেটে প্রচারিত ছবিটি বাবরি মসজিদের নয় বরং ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের অন্তর্গত পানিপথ জেলার কাবুলীবাগ মসজিদের ছবিকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে আলোচিত ছবিটিকে ভ্রমণ বিষয়ক সরকারি ওয়েবসাইট Hariyana Tourism এর “Kabuli Bagh Mosque, Panipat” শীর্ষক শিরোনামের একটি নিবন্ধে খুঁজে পাওয়া যায়।

Source: Hariyana Tourism

উক্ত নিবন্ধে প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে, এটি পানিপথে অবস্থিত কাবুলীবাগ মসজিদের ছবি।

উক্ত নিবন্ধ থেকে আরও জানা যায়, ১৫২৬ খ্রিষ্টাব্দে পানিপথের প্রথম যুদ্ধে সুলতান ইব্রাহিম লোদির বিপক্ষে জয়লাভ করে সম্রাট বাবর পানিপথে কাবুলীবাগ নামের এই মসজিদটি নির্মাণ করেন।

পরবর্তীতে, ভ্রমণবিষয়ক ওয়েবসাইট Travel Setu এর “Kabuli Bagh Mosque, Panipat, Haryana, India: A Historical Tourist Attraction” শীর্ষক শিরোনামের একটি নিবন্ধে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Source: Travel Setu

উক্ত নিবন্ধ থেকেও একই তথ্য মিলেছে। 

মূলত, ১৫২৬ খ্রিষ্টাব্দে পানিপথের প্রথম যুদ্ধে সুলতান ইব্রাহিম লোদির বিপক্ষে জয়লাভ করে সম্রাট বাবর পানিপথে কাবুলীবাগ নামের একটি মসজিদ নির্মাণ করেন। উক্ত মসজিদের ছবিকেই সম্প্রতি ভারতের বহুল আলোচিত বাবরি মসজিদের ছবি দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, পূর্বে বাবরি মসজিদের প্রাঙ্গণে নামাজ আদায়ের ছবি দাবিতে মিথ্যা তথ্য প্রচার করা হলে সে বিষয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার টিম।

সুতরাং, মসজিদের একটি ছবিকে বাবরি মসজিদের ছবি দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দাবিতে প্রক্টরের ছবি প্রচার

0

সম্প্রতি, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের ছবি দাবিতে ‘ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপচার্য কি শরীফ না শরীফা তাই তো বুঝতেছিনা’ ও ‘ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য,  তিনি ভাইয়া নাকি আপু….?’ শীর্ষক ভিন্ন ভিন্ন ক্যাপশনে  একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

ব্র্যাক

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত ছবিতে চিহ্নিত ব্যক্তিটি ব্র্যাক  বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য নয়। প্রকৃতপক্ষে, ছবিটি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রুবানা আহমেদের। 

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত পোস্টগুলো পর্যালোচনা করে রিউমর স্ক্যানার টিম। এতে দেখা যায়, একটি পোস্টের মন্তব্যঘরে করা বেশ কয়েকটি মন্তব্যে দাবি করা হয়েছে ছবিটি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষিকা সহকারী অধ্যাপক রুবানা আহমেদের। 

Comment collage by Rumor Scanner

পরবর্তী অনুসন্ধানে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে দৈনিক ইত্তেফাক এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ২৩ জানুয়ারি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক বন্ধ করে দিয়েছে শিক্ষার্থীরা | Brac University | Asif Mahatab শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Youtube

উক্ত ভিডিওটিতে আলোচিত ছবিতে থাকা কালো চাদর ও সার্জিক্যাল মাস্ক পরিহিত চিহ্নিত ব্যক্তিকে খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওতে পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সদস্যদের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলতে দেখা যায়।

Image Comparison by Rumor Scanner

ভিডিওটির ১ মিনিট ২১ সেকেন্ডে একজনকে বলতে শোনা যায় ‘এই যে প্রক্টর ম্যাম আছে, আপনি কথা বলেন’।

উপরোক্ত প্রাপ্ত তথ্যসমূহের ভিত্তিতে আলোচিত ছবির চিহ্নিত ব্যক্তির পরিচয়  যাচাইয়ে পরবর্তীতে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট অনুসন্ধানের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রসাশনিক কর্মকর্তাদের একটি তালিকা খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত তালিকা থেকে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রক্টরের নাম রুবানা আহমেদ। 

Screenshot: www.bracu.ac.bd

পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে রুবানা আহমেদের  প্রোফাইলে পাওয়া ছবির সাথে আলোচিত ছবির চিহ্নিত ব্যক্তির চেহারার হবহু মিল পাওয়া যায়।

Image Comparison by Rumor Scanner 

ড. রুবানা আহমেদের প্রোফাইল থেকে আরও জানা যায়, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি ও সামাজিক বিজ্ঞান বিভাগের একজন সহকারী অধ্যাপক। ২০২২ সালের ২৩ মে থেকে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

Screenshot: www.bracu.ac.bd

তাছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়টির ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, বর্তমানে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির উপ-উপাচার্য প্রফেসর সৈয়দ মাহফুজুল আজিজ। 

Screenshot: www.bracu.ac.bd

অর্থাৎ, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিটি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের নয়। 

মূলত, গত ১৯ জানুয়ারি “বর্তমান কারিকুলামে নতুন পাঠ্যপুস্তক: বাস্তবতা ও ভবিষ্যৎ” শীর্ষক একটি সেমিনারে আসিফ মাহতাব নামের বেসরকারি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন খণ্ডকালীন শিক্ষক ট্রান্সজেন্ডার এবং সমকামিতা বিরোধী বক্তব্য দেন। এসময় তিনি নতুন পাঠ্যসূচির আওতায় সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের প্রদান করা ‘ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান’ বইয়ের ট্রান্সজেন্ডার বিষয়ক আলোচনা রয়েছে দাবি করে প্রকাশ্যে বইটির দুইটি পৃষ্ঠা  ছিঁড়ে ফেলেন। যার পর থেকে উক্ত বিষয়টি নিয়ে আলোচনা ও সমালোচনার শুরু হয়। এ ঘটনার পরপরই ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ উক্ত খণ্ডকালীন শিক্ষককে ক্লাস নেওয়া থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ দেয়। যাতে করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একাংশের মধ্যে অসন্তুষ দেখা দেয় এবং তাকে চাকরিতে ফিরিয়ে আনার জন্য প্রতিবাদ জানিয়ে গত ২৩ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটকে আন্দোলনে নামে।  এসময় তাদের সাথে কথা বলতে ঘটনাস্থলে যান বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রক্টর ও অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষিকা রুবানা আহমেদ ও পুলিশের একটি দল। পরবর্তীতে উক্ত ঘটনায় ধারণকৃত একটি দৃশ্যে এক ব্যক্তিকে চিহ্নিত করে  ‘ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপচার্য কি শরীফ না শরীফা তাই তো বুঝতেছিনা’ ও ‘ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য,  তিনি ভাইয়া নাকি আপু….?’ শীর্ষক ভিন্ন ভিন্ন ক্যাপশনে  একটি তথ্য  সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়।  তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, উক্ত ছবিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের নয়। এটি মূলত বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রক্টর এবং অর্থনীতি ও সামাজিক বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. রুবানা আহমেদের।

সুতরাং, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের ছবিকে উপাচার্যের ছবি দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

ইনডিপেনডেন্ট টিভি’র ফটোকার্ড বিকৃত করে মেসি, রোনালদো এবং নেইমারকে জড়িয়ে ভুয়া তথ্য প্রচার 

0

সম্প্রতি, ‘রোনালদো উভকামী, মেসির ডিভোর্স, আর ট্রান্সজেন্ডারপ্রেমী নেইমার’ শীর্ষক শিরোনামে টিভি চ্যানেল ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশন-এর ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

মেসি

উক্ত ফটোকার্ড যুক্ত ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, রোনালদো উভকামী, মেসির ডিভোর্স, আর ট্রান্সজেন্ডারপ্রেমী নেইমার- দাবিতে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশন কোনো ফটোকার্ড প্রচার করেনি। প্রকৃতপক্ষে, কিউবান আলোচিত ভবিষ্যদ্বক্তা এমহনি ভিদেন্তের করা ভবিষ্যদ্বাণীর প্রেক্ষিতে গত ১৩ জানুয়ারি ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে ভবিষ্যদ্বক্তার ২০২৪ সালের ভবিষ্যদ্বাণী: রোনালদো উভকামী, মেসির ডিভোর্স, আর ট্রান্সজেন্ডারপ্রেমী নেইমার’ শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশন-এর আদলে তৈরি আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। পরবর্তীতে দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে গত ১৩ জানুয়ারি ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের ফেসবুক পেজে ‘রোনালদো উভকামী, মেসির ডিভোর্স, আর ট্রান্সজেন্ডারপ্রেমী নেইমার’ শীর্ষক শিরোনাম বা তথ্যে প্রকাশিত একটি ফটোকার্ড ও পোস্টটির কমেন্টে একটি সংবাদ প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Independent Tv Facebook Page 

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, কিউবান ট্রান্সজেন্ডার ভবিষ্যদ্বক্তা এমহনি ভিদেন্তে ট্যারট কার্ড পড়ে বলেছেন, ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো উভকামী, মেসি ডিভোর্স দেবেন স্ত্রীকে এবং ট্রান্সজেন্ডার সঙ্গী নিয়ে মুখ খুলবেন নেইমার।

ফটোকার্ডটি পর্যালোচনা করে দেখা যায় আলোচিত ফটোকার্ডটির সাথে উক্ত ফটোকার্ডটির ডিজাইন এবং ফটোকার্ডটিতে যুক্ত ছবির হুবহু মিল রয়েছে। তবে ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের ফেসবুক পেজে প্রচারিত ফটোকার্ডটিতে ভবিষ্যদ্বক্তার ২০২৪ সালের ভবিষ্যদ্বাণী শীর্ষক একটি লেখা থাকলেও আলোচিত ফটোকার্ডটিতে তা নেই। যার ফলে নেটিজেনদের মধ্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে।

Photocard Comparison: Rumor Scanner

মূলত, ফুটবল তারকা মেসি, রোনালদো ও নেইমারকে নিয়ে কিউবান ট্রান্সজেন্ডার ভবিষ্যদ্বক্তার করা ভবিষ্যদ্বাণীর প্রেক্ষিতে গত ১৩ জানুয়ারি সংবাদ প্রকাশ করে বেসরকারি ইলেকট্রনিক সংবাদমাধ্যম ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশন। উক্ত বিষয়ে “ভবিষ্যদ্বক্তার ২০২৪ সালের ভবিষ্যদ্বাণী: রোনালদো উভকামী, মেসির ডিভোর্স, আর ট্রান্সজেন্ডারপ্রেমী নেইমার” শীর্ষক শিরোনামে সংবাদমাধ্যমটি তাদের ফেসবুক পেজে একটি ফটোকার্ডও প্রকাশ করে। পরবর্তীতে এই ফটোকার্ডে থাকা ভবিষ্যদ্বক্তার ২০২৪ সালের ভবিষ্যদ্বাণী– শীর্ষক তথ্যটি সম্পাদনার মাধ্যমে মুছে দিয়ে আলোচিত ফটোকার্ডটি  প্রচার করা হয়। 

সুতরাং, রোনালদো উভকামী, মেসির ডিভোর্স, আর ট্রান্সজেন্ডারপ্রেমী নেইমার- শীর্ষক শিরোনামে  ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি এডিটেড বা বিকৃত।

তথ্যসূত্র

২২ জানুয়ারি রাম মন্দির উদ্বোধনের দিনকে ইসরায়েলের জাতীয় উৎসব ঘোষণার দাবিটি ভুয়া 

0

সম্প্রতি, “ইসরাইল রাম মন্দির উদ্বোধনের দিন 22 জানুয়ারিকে একটি জাতীয় উৎসব ঘোষণা করেছে” শীর্ষক একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। অযোধ্যার রাম মন্দির উদ্বোধন উপলক্ষে ইসরায়েল ২২ জানুয়ারিকে জাতীয় উৎসব ঘোষণা করে ছুটি ঘোষণার এ দাবিটি প্রথমে ভারতে প্রচারিত হওয়ার পর বাংলাদেশেও ছড়িয়েছে।

রাম মন্দির

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, অযোধ্যায় ২২ জানুয়ারি রাম মন্দির উদ্বোধন উপলক্ষে ২২ জানুয়ারিকে ইসরায়েলে জাতীয় উৎসব ঘোষণা কিংবা ছুটির দিন ঘোষণার দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে ইসরায়েল ২২ জানুয়ারিকে কোনো জাতীয় উৎসব বা ছুটির দিন হিসেবে ঘোষণা করেনি এবং এদিন রাম মন্দির উদ্বোধন উপলক্ষে ইসরায়েলে কোনো জাতীয় উৎসব বা ছুটি ছিল না। 

অযোধ্যার রাম মন্দির উদ্বোধন উপলক্ষে ইসরায়েল ২২ জানুয়ারি জাতীয় উৎসব ঘোষণা করে দেশব্যাপী ছুটি ঘোষণা করেছে কিনা তা অনুসন্ধানে ভারত কিংবা ইসরায়েলের কোনো গণমাধ্যমে এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। ভারতস্থ ইসরায়েলের দূতাবাসের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট, তেল আবিবে অবস্থিত ভারতের দূতাবাসের ওয়েবসাইট এবং তাদের অফিসিয়াল সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টগুলো অনুসন্ধান করেও এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।  

অনুসন্ধানে দেখা যায় অযোধ্যার রাম মন্দির উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে অন্তত গত ১৬ জানুয়ারি থেকে ভারতে এই দাবিটি প্রচারিত হয়ে আসছে। 

Claim post screenshot from India 

ভারতে এই দাবিটি ভাইরাল হওয়ার পর একাধিক ভারতীয় ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠানের ফ্যাক্টচেক খুঁজে পাওয়া যায় যেখানে ইতিমধ্যে এই দাবিকে ভুয়া হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের ফ্যাক্টচেকে ভারতস্থ ইসরায়েলি দূতাবাসের একজন মুখপাত্রের বক্তব্য পাওয়া যায় যেখানে তিনি ২২ জানুয়ারিতে ইসরায়েলে কোনো উৎসব বা কোনো ছুটি নেই বলে নিশ্চিত করেছেন। 

পরবর্তীতে ২২ জানুয়ারি ইসরায়েলে জাতীয় উৎসব বা ছুটি ঘোষণা করার বিষয় সম্পর্কে জানতে চেয়ে ইসরায়েলের ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান The Whistle এর ফ্যাক্টচেকার উরিয়া বার মিয়িরের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ২২ জানুয়ারি কোনো জাতীয় উৎসব ছিল না বলে রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করেছেন।

মূলত, গত ২২ জানুয়ারি ভারতের অযোধ্যায় বহুল আলোচিত-সমালোচিত রাম মন্দির উদ্বোধন করেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এরই প্রেক্ষিতে ইসরায়েল তাদের দেশে ২২ জানুয়ারি জাতীয় উৎসব ও ছুটি ঘোষণা করেছে শীর্ষক একটি তথ্য প্রথমে ভারতে এবং পরবর্তীতে বাংলাদেশেও ব্যাপকভাবে প্রচারিত হচ্ছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে ২২ জানুয়ারি ইসরায়েলে কোনো জাতীয় উৎসব বা ছুটি থাকার দাবির সত্যতা পাওয়া যায়নি।  

সুতরাং, অযোধ্যা রাম মন্দির উদ্বোধন উপলক্ষে ২২ জানুয়ারি ইসরায়েলের জাতীয় উৎসব ও ছুটি ঘোষণার দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।  

তথ্যসূত্র

  1. Rumor Scanner Investigation 
  2. Statement of Israeli Fact-Checker
  3. Statement of Israel Embassy via Indian fact-checking organization