Home Blog Page 536

নরওয়েতে ভার্জিন নামে বিড়াল সদৃশ দ্বীপ নেই, ভাইরাল ছবিটি ফটোশপে তৈরি 

0

সম্প্রতি, ‘এটি নরওয়ের “ভার্জিন” নামক একটা দ্বীপের ছবি!’ শীর্ষক শিরোনামে বিড়ালের মুখ সদৃশ একটি দ্বীপের ছবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে।

নরওয়েতে

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, স্ক্যান্ডিনেভিয়ান রাষ্ট্র নরওয়েতে ভার্জিন নামক কোনো দ্বীপ নেই বরং, ফ্যাবিয়েন বারাউ নামের একজন ডিজিটাল আর্টিস্ট ফটোশপের মাধ্যমে উক্ত দ্বীপের ছবিটি তৈরি করেন, যার বাস্তবিক কোনো অস্তিত্ব নেই। 

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিটি রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে ফেসবুকের একটি পেজে গত ১৭ সেপ্টেম্বর Bergen, Norway শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একই ছবি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook

ছবিটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিটির সাথে উক্ত ছবির মিল রয়েছে। তবে উক্ত ছবিটির ক্যাপশনে ছবিটিকে নরওয়ের Bergen নামক স্থানের ছবি বলে দাবি করা হয়েছে।

পরবর্তীতে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে নরওয়েতে Virgin এবং Bergen নামক কোনো দ্বীপ রয়েছে কিনা তা অনুসন্ধানে দেখা যায়, নরওয়েতে Virgin এবং Bergen কোনো নামেই কোনো দ্বীপ নেই। তবে Bergen নামে নরওয়েতে একটি শহর রয়েছে, যেটি নরওয়ের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর। 

Screenshot: Britannica

উক্ত শহরটি উপর থেকে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিটির মতো দেখতে কিনা তা জানতে Google Map এর সহায়তায় Bergen শহরের স্যাটেলাইট ভিউ পর্যবেক্ষণ করে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

Screenshot: Google Map

এতে দেখা যায়, নরওয়ের Virgin অথবা Bergen দ্বীপের ছবি দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত ছবিটির সাথে উক্ত শহরের আকৃতির কোনো মিল নেই। 

তাই পরবর্তীতে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিটির সূত্র অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে ফ্যাবিয়েন বারাউ (Fabien Barrau) নামক একটি ইনস্টাগ্রাম আইডিতে ২০১৮ সালের ৪ জুলাই  Welcome to Cat Island !! 😸 Here, cats live free like kings. শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ছবি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Instagram

ছবিটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, নরওয়ের ভার্জিন ও Bergen দ্বীপের ছবি দাবিতে প্রচারিত ছবিটির সাথে উক্ত ছবির  মিল রয়েছে। এছাড়াও ছবিটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, ছবিটি ফ্যাবিয়েন বারাউ ফটোশপের মাধ্যমে তৈরি করেছেন। 

ফ্যাবিয়েন বারাউ এর অ্যাকাউন্টটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, তিনি একজন শিল্পী (Artist)। 

Screenshot: Instagram

এছাড়াও তিনি নিজেকে millchannel ইউজারনেমের আরেকটি ইনস্টাগ্রাম আইডির Head of Print & Concept হিসেবে দাবি করেছেন। এটি মূলত The Mill নামক একটি ক্রিয়েটিভ প্রোডাকশন হাউজের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট।

Screenshot: Instagram

তাছাড়া, ফ্যাবিয়েন বারাউ আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিটি ছাড়াও বেশ কিছু ছবি ফটোশপের মাধ্যমে তৈরি করে তার অ্যাকাউন্টে বিভিন্ন সময় প্রকাশ করেছেন। এমন কিছু ছবি দেখুন এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে

মূলত, ফ্যাবিয়েন বারাউ নামক এক ব্যক্তি ২০১৮ সালে আশ্রয়হীন বিড়ালদের আবাসস্থল হিসেবে একটি ভিন্নধর্মী দ্বীপের কনসেপ্ট নিয়ে ফটোশপের মাধ্যমে একটি বিড়ালের মুখাবয়বের মতো একটি দ্বীপের ছবি তৈরি করে তা তার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে প্রকাশ করেন। পরবর্তীতে নরওয়ের Bergen দ্বীপ দাবিতে ইন্টারনেটে ছবিটি প্রচার করা হয়। তবে, রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ইউরোপীয় রাষ্ট্র নরওয়েতে ভার্জিন অথবা Bergen নামক কোনো দ্বীপ নেই। তবে Bergen নামক একটি শহর রয়েছে, যার আকৃতির সাথে উক্ত ছবির কোনো মিল নেই।

সুতরাং, ফটোশপের মাধ্যমে তৈরিকৃত একটি ছবিকে নরওয়ের ভার্জিন নামক দ্বীপের ছবি দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

২০২৫ সালের এইচএসসির পাঠ্যসূচি প্রসঙ্গে প্রচারিত এই বিজ্ঞপ্তিটি সম্পাদিত

0

সম্প্রতি, ২০২৫ সালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড, বাংলাদেশ কর্তৃক প্রণীত ২০২৪ সালের পুনর্বিন্যাসকৃত পাঠ্যসূচি অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হবে দাবিতে বাংলাদেশ আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি এবং মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, ঢাকা এর চেয়ারম্যান প্রফেসর তপন কুমার সরকার এর সাক্ষরিত একটি বিজ্ঞপ্তির ছবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে। 

এইচএসসির

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০২৫ সালের এইচএসসি পরীক্ষা ২০২৪ সালের পুনর্বিন্যাসকৃত পাঠ্যসূচি অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হবে শীর্ষক দাবিতে প্রচারিত বিজ্ঞপ্তিটি আসল নয় বরং ২০২৪ সালের এইচএসসি পরীক্ষার পাঠ্যসূচী সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিটি ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে সম্পাদনা করে উক্ত দাবির বিজ্ঞপ্তির ছবিটি তৈরি করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত বিজ্ঞপ্তিটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, ঢাকা এর নামসহ বিজ্ঞপ্তিটির প্রকাশের তারিখ ১৪ ডিসেম্বর ২০২৩ উল্লেখ করা হয়েছে।

Screenshot: Facebook

পরবর্তীতে উক্ত বিজ্ঞপ্তিতে উল্লিখিত মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, ঢাকা এবং তারিখের সূত্র ধরে অনুসন্ধান করা হয়। তবে অনুসন্ধানে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, ঢাকা এর ওয়েবসাইটের ‘এইএসসি কর্নার’ এ গিয়ে ১৪ ডিসেম্বর ২০২৩ এ প্রকাশিত কোনো বিজ্ঞপ্তি খুঁজে পাওয়া যায়নি।

Screenshot: dhaka education board

তবে অনুসন্ধানে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, ঢাকা এর ওয়েবসাইটে গত ৯ জুলাই “২০২৪ সালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার পাঠ্যসূচি প্রসঙ্গে” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি বিজ্ঞপ্তি খুঁজে পাওয়া যায়।

বিজ্ঞপ্তিটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত বিজ্ঞপ্তিটির তুলনা করে দেখা যায়, দুইটি বিজ্ঞপ্তিরই স্মারক নং এবং সূত্র একই।

Press Release Comparison: Rumor Scanner

অর্থাৎ, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত বিজ্ঞপ্তিটি ২০২৪ সালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার পাঠ্যসূচির বিজ্ঞপ্তিটি সম্পাদনা করে তৈরি করা হয়েছে।

পরবর্তীতে, বাংলাদেশ আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি এবং মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, ঢাকা এর চেয়ারম্যান প্রফেসর তপন কুমার সরকারের সাথে আলোচিত দাবিটির বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে তিনি এটিকে ভুয়া বিজ্ঞপ্তি হিসেবে চিহ্নিত করেছেন এবং এমন মিথ্যা তথ্য প্রচারণাকারী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন বলে রিউমর স্ক্যানারকে জানান।

এছাড়া, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, ঢাকা এর ওয়েবসাইটে আজ দুপুরে (১৮ ডিসেম্বর) প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা যায় ২০২৫ সালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড, বাংলাদেশ কর্তৃক প্রণীত ২০২৫ সালের পাঠ্যসূচি অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হবে।

মূলত, সম্প্রতি ২০২৫ সালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড কর্তৃক প্রণীত ২০২৪ সালের পুনর্বিন্যাসকৃত পাঠ্যসূচি অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হবে শীর্ষক একটি দাবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। কিন্তু রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধনে জানা যায়, উক্ত দাবিটি সঠিক নয়। উক্ত দাবিতে প্রচারিত বিজ্ঞপ্তিটি আসল নয়। প্রকৃতপক্ষে, ২০২৪ সালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার পাঠ্যসূচি সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তির তারিখ এবং প্রাসঙ্গিক তথ্য বদলে দিয়ে এটিকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। তাছাড়া, ২০২৫ সালের এইচএসসি পরীক্ষা ২০২৫ সালের পাঠ্যসূচি অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হবে বলে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড জানিয়েছে।

সতরাং, ২০২৫ সালের এইচএসসি পরীক্ষা ২০২৪ সালের পুনর্বিন্যাসকৃত পাঠ্যসূচি অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হবে দাবিতে একটি বিজ্ঞপ্তি ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিকৃত বা এডিটেড।

তথ্যসূত্র

  • Board of Intermediate and Secondary Education, Dhaka – HSC Corner
  • Board of Intermediate and Secondary Education, Dhaka – Press Release
  • Statement from Professor Tapan Kumar Sarkar
  • Board of Intermediate and Secondary Education, Dhaka – Press Release

খুলনার ধর্ষণ-ডাকাতির ঘটনাকে নিয়ে ভারতে সাম্প্রদায়িক অপপ্রচার 

0

গত ১২ ডিসেম্বর, ২০২৩ হরিণটানা থানাধীন ঘোলা গ্রামস্থ এক হিন্দু বাড়িতে লুট ও ধর্ষণের ঘটনার খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। এই ঘটনার পরে, কিছু ভারতীয় টুইটার (বর্তামানে এক্স) অ্যাকাউন্ট থেকে একটি দাবি ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে খুলনার ওই হিন্দু নারীকে মুসলিমরা ধর্ষণ করেছে বলে দাবি করে বলা হয়, ‘খুলনার বটিয়াঘাটায় নববিবাহিত হিন্দু মহিলাকে ধর্ষণ এবং তার বাড়ি লুট করেছে ইসলামপন্থীরা।’

খুলনার ধর্ষণ

উক্ত দাবিতে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে

তবে বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধানে দেখা যায়, খুলনার হিন্দু নারী ধর্ষণ ও তার বাড়িতে লুটের ঐ ঘটনায় সাম্প্রদায়িকতা যুক্ত করে সাম্প্রদায়িক অপপ্রচার করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, ওই ঘটনায় কোনো মুসলিম ব্যক্তির সংশ্লিষ্টতা নেই বরং ওই ঘটনায় জড়িত তিনজনই হিন্দু ধর্মের।

দাবির পোস্টগুলোতে যমুনা টেলিভিশনকে সূত্র দেখানো হয় এবং যমুনা টেলিভিশনের একটি ভিডিও যুক্ত করতে দেখা যায়। তবে ওই ভিডিও প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে দেখা যায় ওই প্রতিবেদনে খুলনার হিন্দু নারী ধর্ষণের ঘটনায় মুসলিমরা জড়িত এমন কোনো তথ্যের উল্লেখ নেই, বরং ওই প্রতিবেদনেই ধর্ষণের অভিযোগে গোবিন্দ নামের একজনকে আটক করা হয়েছে এমন তথ্য রয়েছে। এছাড়াও,  যমুনা টিভির অন্য কোনো প্রতিবেদনেও ওই ঘটনায় মুসলিমদের জড়িত থাকার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। খুলনার ওই ঘটনার ওপর যমুনা টিভির আরেক প্রতিবেদনে গোবিন্দ ফৌজদার, মিঠুন বিশ্বাস ও ধীমান ফৌজদার নামের তিন ব্যক্তির আটক হওয়ার তথ্য পাওয়া যায়। 

অর্থাৎ মিথ্যাভাবে যমুনা টিভিকে সূত্র দেখিয়ে যমুনা টিভির ওই ভিডিও প্রতিবেদন ব্যবহার করে খুলনায় হিন্দু নারী ধর্ষণ-ডাকাতির ঘটনায় মুসলিমদের দায়ী করে প্রচার করা হয়েছে।

ওই ঘটনার ওপর গত ১৩ ডিসেম্বর “প্রেমিকার বিয়ে ঠিক হওয়ায় ধর্ষণ করে বাড়িতে ডাকাতি” শিরোনামে প্রথম আলোতে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, 

“খুলনা শহরের কৈয়া বাজার এলাকার একটি বাড়িতে মা–বাবাকে অচেতন করে মেয়েকে (২৯) ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এরপর ওই বাড়ি থেকে প্রায় ৩ লাখ টাকা ও ১০ ভরি স্বর্ণালংকার ডাকাতি করেছেন অভিযুক্ত ব্যক্তিরা। গত সোমবার রাত দুইটা থেকে চারটার মধ্যে এ ঘটনা ঘটে। ধর্ষণের শিকার তরুণীকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করা হয়েছে। তিনি ধর্ষণে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে চিনতে পেরেছেন বলে পুলিশকে জানিয়েছেন। তাঁর তথ্যানুযায়ী পুলিশ অভিযান চালিয়ে গতকাল মঙ্গলবার দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে। এর মধ্যে একজন ধর্ষণ ও ডাকাতিতে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আজ বুধবার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন গোবিন্দ ফৌজদার (৩০) ও ধীমান ফৌজদার (৩৫)। তাঁরা ডুমুরিয়া উপজেলার বাসিন্দা। ধীমান সোনার ব্যবসায়ী। গোবিন্দর স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ধীমানের কাছ থেকে লুট করা স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়। সকালে জ্ঞান ফিরলে মেয়ের বাবা নিজেদের তালাবদ্ধ অবস্থায় দেখে আত্মীয়-স্বজনদের ফোন করে ব্যাপারটি জানান। গোবিন্দর সঙ্গে মেয়েটির প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তবে মেয়েটির অন্য জায়গায় বিয়ে ঠিক হয়ে যাওয়ায় গোবিন্দ কৌশলে এ কাজ করেছেন বলে ধারণা করছে পুলিশ।”

পুলিশ জানায়, “গত মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) ভোরে ডুমুরিয়া উপজেলার কৈয়া বাজার সংলগ্ন বাঁশগোলার পাশে অবসরপ্রাপ্ত উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তার বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। তারা স্প্রে করে সবাইকে অজ্ঞান করে তার বাগদত্তা মেয়েকে ধর্ষণ করে। দুর্বৃত্তরা বাড়ি থেকে নগদ টাকা ও ১১ ভরি স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায়। ধর্ষণের শিকার মেয়েটিকে গোবিন্দ নামে একজন যুবক বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিল। ওই প্রস্তাবে মেয়ের পরিববার রাজি না হওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে তিনজন মিলে তাকে ধর্ষণ করেছে। ধর্ষণের শিকার মেয়েটি গোবিন্দকে শনাক্ত করেছে। এ ঘটনায় গোবিন্দসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। একইসঙ্গে লুণ্ঠিত স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়েছে। মামলার বাদী উদ্ধার করা মালামাল শনাক্ত করেছেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার হওয়া আসামি গোবিন্দ ফৌজদার, মিঠুন বিশ্বাস ও ধীমান ফৌজদার ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।”

ওই ঘটনার বিবরণী এবং আটককৃতদের বিস্তারিত তথ্য নিজেদের ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেজে প্রকাশ করেছে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ। ‘খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের হরিণটানা থানার দস্যুতা ও গণধর্ষণে সরাসরি জড়িত ০৩ জন আসামীকে লুণ্ঠিত স্বর্ণালংকারসহ গ্রেফতার’ শিরোনামের ওই বিবরণীতে উল্লেখ করা হয়, 

“গত ১২ ডিসেম্বর ২০২৩ খ্রিঃ রাত অনুমান ০২.০০ ঘটিকা হতে ০৪.০০ ঘটিকার মধ্যে যে কোন সময় হরিণটানা থানাধীন ঘোলা গ্রামস্থ প্রনব কুমার মল্লিকের একতলা বিশিষ্ট বাড়িতে ০৩ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি দস্যুতা ও গণধর্ষণসহ স্বর্ণালংকার লুন্ঠন করে। তৎপ্রেক্ষিতে কেএমপির পুলিশ কমিশনার জনাব মোঃ মোজাম্মেল হক, বিপিএম (বার), পিপিএম-সেবা মহোদয়ের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ও নির্দেশনায় হরিণটানা থানা পুলিশ দস্যুতা ও গণধর্ষণে সরাসরি জড়িত ১) গোবিন্দ ফৌজদার(৩০), পিতা-সুনিতী ফৌজদার, সাং-কুলটি, থানা-ডুমুরিয়া, জেলা-খুলনা; ২) মিঠুন বিশ্বাস(৩৫), পিতা-চিত্তরঞ্জন বিশ্বাস, সাং-গঙ্গারামপুর, থানা-বটিয়াঘাটা, জেলা-খুলনা, এ/পি সাং-বানরগাতি সিটি গর্লস কলেজের পাশে, থানা-সোনাডাঙ্গা মডেল, জেলা-খুলনা এবং ৩) ধীমান ফৌজদার(৩৫), পিতা-প্রশান্ত ফৌজদার, সাং-কুলটি ফৌজদার পাড়া, থানা-ডুমুরিয়া, জেলা-খুলনাদের’কে লুণ্ঠিত স্বর্ণালংকারসহ গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। অত:পর মামলার বাদী উদ্ধারকৃত মালামাল শনাক্ত করেছেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামী গোবিন্দ ফৌজদার, মিঠুন বিশ্বাস ও ধীমান ফৌজদার ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। অত্র মামলাটির তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত আছে।”

অর্থাৎ, ওই ঘটনায় জড়িত তিন জন ব্যক্তি হচ্ছেন গোবিন্দ ফৌজদার, মিঠুন বিশ্বাস ও ধীমান ফৌজদার, যারা তিনজনই হিন্দু ধর্মাবলম্বী। 

সুতরাং, খুলনায় হিন্দু নারী ধর্ষণ ও তার বাসায় ডাকাতির ঘটনায় অভিযুক্ত হিসেবে মুসলিমদের মিথ্যাভাবে সম্পৃক্ত করে সাম্প্রদায়িক অপপ্রচার করা হয়েছে।

তথ্যসূত্র

ছবিগুলো এ২৩এ আইসবার্গের নয় এবং এর সাথে জড়িয়ে প্রচারিত তথ্যগুলোও সঠিক নয়

0

সম্প্রতি, বর্তমানে পৃথিবীর বৃহত্তম আইসবার্গ বিষয়ক কিছু তথ্য এবং এ সংক্রান্ত কোলাজ করা দুইটি ছবিসহ একটি পোস্ট ইন্টারনেটে ভাইরাল হয়েছে৷ 

ভাইরাল পোস্টটির শুরুতে বর্তমানে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় আইসবার্গের (Ice Berg) বিষয়ে দাবি করা হয়েছে, এটি ৬ হাজার বছর যাবত এক স্থানেই স্থির ছিল। এটি বাংলাদেশের ঢাকার চেয়েও বড় এবং বাংলাদেশের আয়তনের তিন ভাগের এক ভাগ। 

পোস্টে দাবি করা হয়, পৃথিবীর অতিরিক্ত গরমে অ্যান্টার্কটিকা থেকে ছুটে যাওয়ার আগে এখানে প্রায় ৮ রকমের প্রাণি বসবাস করত। ধারনা করা হচ্ছেিল, প্রায় ১০/১৫ হাজার এর চেয়েও বেশি মেরু ভাল্লুক (Polar bear) এবং লাখ এর চেয়েও বেশি পেঙ্গুইন ছিল। 

পোস্টে উল্লিখিত তথ্যগুলোর সূত্র হিসেবে  BBC Global এর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। 

আইসবার্গের

আলোচিত দাবিগুলোর বিষয়ে ছড়িয়ে পড়া এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বর্তমানে পৃথিবীর বৃহত্তম আইসবার্গ বিষয়ক যেসব তথ্য এবং এ সংক্রান্ত কোলাজ করা দুইটি ছবি সমেত যে পোস্টটি ইন্টারনেটে ভাইরাল হয়েছে সে ছবিগুলো আইসবার্গটির নয় বরং পুরোনো ও ভিন্ন দুইটি আইসবার্গের ছবি ব্যবহার করে বর্তমানে বৃহত্তম আইসবার্গটির এক স্থানে আটকে থাকার সময় এটিতে প্রাণিদের অবস্থান এবং বাংলাদেশের আয়তনের সাথে তুলনা বিষয়ক বেশকিছু ভুল তথ্য প্রচার করা হয়েছে। 

আলোচিত দাবিটির সূত্রপাত অনুসন্ধানে কিওয়ার্ড সার্চ করে ফেসবুকে গত ১০ ডিসেম্বর রাতে Md Talha নামে একটি অ্যাকাউন্ট থেকে এ সংক্রান্ত সম্ভাব্য প্রথম পোস্টটির (আর্কাইভ) খোঁজ মেলে। 

Screenshot : Facebook 

জনাব তালহা তার পোস্টের শুরুতে মেরু ভাল্লুকের সংখ্যা লিখেছেন ৬০/৯০ হাজার। ১৪ ডিসেম্বর পোস্টের ক্যাপশন এডিট করে এই সংখ্যা ১০/১৫ হাজার উল্লেখ করেন। তালহা বিবিসি গ্লোবালকে সূত্র হিসেবে উল্লেখ করলেও এ সংক্রান্ত কোনো লিংক তার পোস্টে দেননি। 

Screenshot : Facebook

পরবর্তীতে পোস্টটি কপির মাধ্যমে ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে যায়। 

ভাইরাল পোস্টগুলোতে যে দুইটি আইসবার্গের ছবি রয়েছে সেগুলো যাচাই করে দেখা গেছে, এগুলো ভিন্ন আইসবার্গের পুরোনো ছবি। 

প্রথম ছবিটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এতে আইসবার্গটির নাম উল্লেখ রয়েছে A-76 এবং আকার বলা হয়েছে ৪৩২০ বর্গ কিলোমিটার। রিভার্স ইমেজ সার্চে ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির ওয়েবসাইটে ২০২১ সালের মে মাসে প্রকাশিত একই ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। তখন এটিই ছিল বিশ্বের বৃহত্তম আইসবার্গ। সে সময় এটি কয়েক টুকরায় বিভক্ত হয়ে যায়৷ 

Screenshot: ESA

আইসবার্গটির বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে মার্কিন সরকারের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা জানিয়েছে, গত মে মাসে এটি আরও সংকীর্ণ হয়েছে। 

দ্বিতীয় ছবিটি রিভার্স ইমেজ সার্চ করে দেখা যায়, এই আইসবার্গের নাম A68A৷ সে সময় সর্বশেষ তথ্যমতে, এটির আকার ছিল ৪২০০ বর্গ কিলোমিটার। (শুরুতে ৬ হাজার বর্গ কিলোমিটার ছিল A68 নামে) সে সময় এটি ভেঙে দুই টুকরো হয়ে গিয়েছিল। ২০২১ সালে এই আইসবার্গটির অস্তিত্ব বিলীন হয়।  

Screenshot: The Guardian 

অর্থাৎ, দুইটি ভিন্ন আইসবার্গের ছবি ব্যবহার করে আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। 

ভাইরাল পোস্টগুলোতে তথ্যের সূত্র হিসেবে বিবিসি গ্লোবালের নাম উল্লেখ থাকার প্রেক্ষিতে পরবর্তীতে ব্রিটিশ এই সংবাদমাধ্যমটির ওয়েবসাইটে গত ২৪ নভেম্বর প্রকাশিত এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।  

এই প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, A23a নামের একটি আইসবার্গ যাকে বর্তমানে পৃথিবীর বৃহত্তম আইসবার্গ বলা হচ্ছে তা অ্যান্টার্কটিকা থেকে সরে যেতে শুরু করেছে। 

বিবিসি লিখেছে, প্রায় চার হাজার বর্গ কিলোমিটার আকারের এই আইসবার্গটি  ১৯৮৬ সালে অ্যান্টার্কটিকা উপকূল থেকে আলাদা হয়ে পড়েছিল। তিন দশকের বেশি সময় পর সম্প্রতি সমুদ্রের তলদেশে আটকে থাকা এই আইসবার্গ সরে যেতে শুরু করেছে।  

ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি বলছে, ২০২০ সালে এটি সমুদ্রতলের উপর তার দখল হারিয়ে ফেলে এবং ওয়েডেল সাগরে ভাসতে শুরু করে। বিজ্ঞানীরা বলছেন যে আইসবার্গগুলির সমুদ্র তলে আটকে থাকা  অস্বাভাবিক নয়, তবে সময়ের সাথে সাথে তারা মাটির নিচে এবং ভাসতে ভাসতে যথেষ্ট সঙ্কুচিত হয়ে পড়ে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বাতাস এবং স্রোত দ্বারা চালিত হয়ে এটির সরে যাওয়া আরো ত্বরান্বিত করেছে এবং এখন অ্যান্টার্কটিক উপদ্বীপের উত্তর প্রান্ত অতিক্রম করছে এটি। 

অর্থাৎ, ৬ হাজার বছর ধরে নয়, তিন দশকের কিছুটা বেশি সময় ধরে এক স্থানে ছিল এ২৩এ নামের আইসবার্গটি। 

তাছাড়া, এই আইসবার্গের সর্বশেষ প্রকাশিত ছবির সাথে ভাইরাল পোস্টগুলোতে যুক্ত ছবিগুলোর মিল পাওয়া যায়নি। 

Screenshot: CBS

ভাইরাল পোস্টগুলোতে এই আইসবার্গের প্রাণিদের বিষয়ে যেসব তথ্য যেমন প্রায় ৮ রকমের প্রাণির বাস, ১০-১৫ হাজার পোলার বিয়ার এবং লক্ষাধিক পেঙ্গুইন থাকা বিষয়ক তথ্য উল্লেখ পাওয়া যায়নি বিবিসির প্রতিবেদনে। তবে বিবিসি জানিয়েছে, যদি এই আইসবার্গ দক্ষিণ জর্জিয়ার দিকে যায়, তবে এটি দ্বীপে প্রজননকারী লক্ষ লক্ষ সীল, পেঙ্গুইন এবং অন্যান্য সামুদ্রিক পাখির জন্য সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। 

তাছাড়া, মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফোর্বসের একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, আন্টার্কটিকায় পোলার বিয়ার বা মেরু ভাল্লুক থাকে না। এরা থাকে আর্কটিক অঞ্চলে। তবে অ্যান্টার্কটিকার উপকূলে পেঙ্গুইন থাকার কথা জানা যায়।  

এছাড়া, ভাইরাল পোস্টগুলোতে এ২৩এ আইসবার্গের আকার বাংলাদেশের ঢাকা থেকে বড় দাবি করা হয়েছে যার সত্যতা মিলেছে। কারণ, ঢাকা জেলার আয়তন ১৪৬৩.৬০ বর্গ কিলোমিটার, যা আইসবার্গটির থেকে প্রায় তিন গুণ কম। তবে পোস্টগুলোতে আইসবার্গটি বাংলাদেশের আয়তনের তিন ভাগের এক ভাগ দাবি করা হলেও তা সঠিক নয়৷ কারণ, বাংলাদেশের আয়তন ১ লক্ষ ৪৭ হাজার ৫৭০ বর্গকিলোমিটার। ফলে বাংলাদেশের আয়তনের তিন ভাগের এক ভাগ হবে ৪৯ হাজার ১৯০ বর্গকিলোমিটার। 

মূলত, গত ২৪ নভেম্বর থেকে অ্যান্টার্কটিকায় আটকে থাকা এ২৩এ নামের বর্তমান সময়ে পৃথিবীর বৃহত্তম আইসবার্গটি তার অবস্থান থেকে সরে যেতে শুরু করে। এই ঘটনায় পুরোনো ও ভিন্ন দুইটি আইসবার্গের ছবি ফেসবুকে প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে, আইসবার্গটি ৬ হাজার বছর ধরে এক জায়গায় আটকে ছিল, যা সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, তিন দশকের কিছু বেশি সময় এটি আটকে ছিল এক স্থানে। তাছাড়া, ভাইরাল পোস্টগুলোতে এই আইসবার্গের প্রাণিদের বিষয়ে যেসব তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে তারও সত্যতা মেলেনি। এমনকি আইসবার্গটি বাংলাদেশের আয়তনের তিন ভাগের এক ভাগ দাবি করা হলেও সেটিও ভুল তথ্য হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। 

সুতরাং, অ্যান্টার্কটিকায় পৃথিবীর বৃহত্তম আইসবার্গটি সম্প্রতি তার অবস্থান থেকে সরে যাওয়ার ঘটনায় পুরোনো ও ভিন্ন দুইটি আইসবার্গের ছবি ফেসবুকে প্রচার করে বেশকিছু ভুল তথ্য প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র

প্রধান নির্বাচন কমিশনারের গ্রেফতার এবং তারেক রহমানের দেশে ফেরার গুজব 

সম্প্রতি, “সেনাবাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হচ্ছে সিইসি দেশে আসছে তারেক জিয়া নিরাপত্তা দিবে সেনাবাহিনী” শীর্ষক শিরোনাম এবং “এই মাত্র সেনাবাহিনীর হাতে গ্রেফতার সিইসি সেনাবাহিনীর নিরাপত্তায় দেশে আসলেন তারেক” শীর্ষক তথ্য সম্বলিত থাম্বনেইলে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। 

গ্রেফতার

ফেসবুকে প্রচারিত এমন একটি ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ইউটিউবে প্রচারিত এমন কিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সেনাবাহিনী কর্তৃক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের গ্রেফতার এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরার কোনো ঘটনা ঘটেনি বরং ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার একাধিক ভিডিও ক্লিপ যুক্ত করে কোনো প্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এটি ভিন্ন ভিন্ন কয়েকটি পুরোনো ঘটনার ভিডিও ক্লিপ এবং ছবি নিয়ে তৈরি একটি ভিডিও প্রতিবেদন, যেখানে তারেক রহমান, প্রধান নির্বাচন কমিশনার সহ সেনাবাহিনীর সদস্যদের কিছু ছবি এবং আলোচিত দাবিটি প্রসঙ্গে অনলাইন এক্টিভিস্ট ডঃ ফয়জুল হকের দুটি ভিডিও দেখানো হয়।  

ভিডিও যাচাই  

আলোচিত ভিডিওতে থাকা প্রথম ভিডিওটির অনুসন্ধানে কিওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে Dr. Fayzul Huq নামক ইউটিউব চ্যানেলে গত ২৫ মে “তারেক রহমান আসছে! নিরাপত্তা দিবে এদেশের সব বাহিনী। তাকে ছাড়া নির্বাচন করতে পারবে না!  ডঃ ফয়জুল হক” শীর্ষক শিরোনাম এবং গত ২৭ নভেম্বর “নিষেধাজ্ঞা আসছে! হতাশ সিইসি! ব্যালটে সীল মারার কথা স্বীকার! পদত্যগ করুন!ডঃ ফসজুল হক”শীর্ষক শিরোনামে অনুরূপ দুটি ভিডিও (, ) খুঁজে পাওয়া যায়। 

Video Comparison : Rumor Scanner 
Video Comparison : Rumor Scanner

সাত মিনিট তিন সেকেন্ডের প্রথম ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ভিডিওটিতে অনলাইন এক্টিভিস্ট ডঃ ফয়জুল হক আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়ে নিজস্ব মতামত ব্যাক্ত করেছেন। 

একইভাবে দ্বিতীয় ভিডিওটিতে তিনি নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের পতদ্যাগের দাবিতে নিজস্ব অভিমত ব্যাক্ত করেন। 

অর্থাৎ প্রচারিত ভিডিওটিতে ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার যে ভিডিও ক্লিপগুলো যুক্ত করা হয়েছে সেগুলোতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের গ্রেফতার এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরার বিষয়ক কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

এছাড়া, বাংলাদেশের মূলধারার কোনো গণমাধ্যম কিংবা অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে আলোচিত দাবিগুলো প্রসঙ্গে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মূলত, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বর্তমান সরকারের পদত্যাগ এবং সেনাবাহিনীর অধীনে নির্বাচন করার দাবিতে বিএনপি-জামায়াতসহ আওয়ামী লীগ সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো দীর্ঘদিন ধরে রাজপথে আন্দোলন করে আসছে। এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ইন্টানেটে নানা ধরনের তথ্য প্রচার হয়ে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় ইন্টানেটে “সেনাবাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হচ্ছে সিইসি দেশে আসছে তারেক জিয়া নিরাপত্তা দিবে সেনাবাহিনী” শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়। ভিডিওটি নিয়ে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত দাবিগুলো সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে অধিক ভিউ পাবার আশায় ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার কয়েকটি ভিডিও ক্লিপ এবং ছবি যুক্ত করে তাতে চটকদার থাম্বনেইল ও শিরোনাম ব্যবহার করে কোনোপ্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। এছাড়া, গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে দাবিগুলোর সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ২০০৮ সাল থেকে স্বপরিবারে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন। সেনাসমর্থিত তত্বাবধায়ক সরকারের সময় গ্রেফতার হবার পর জামিন পেয়ে তিনি চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্য যান। সেখানে তিনি এখন স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি পেয়েছেন বলে জানা যায়।

সুতরাং, প্রধান নির্বাচন কমিশনারের গ্রেফতার এবং তারেক রহমানের দেশে ফেরার দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

সাকিব আল হাসান অর্থ উপার্জনের কোনো অ্যাপ প্রকাশের ঘোষণা দেননি

0

সম্প্রতি, ‘সাকিব আল হাসান অর্থ উপার্জনের অ্যাপ প্রকাশের ঘোষণা দিয়েছেন’ শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

সাকিব আল হাসান

ফেসবুকে প্রচারিত এমন একটি পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান সাম্প্রতিক সময়ে অর্থ উপার্জনের কোনো অ্যাপ প্রকাশের ঘোষণা দেননি বরং প্রতারণার উদ্দেশ্যে সাকিব আল হাসানের নাম ব্যবহার করে উক্ত অ্যাপের মাধ্যমে বোনাস প্রদানের এই প্রলোভন দেখানো হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ভিডিওটিতে সাকিব আল হাসানের কিছু পুরোনো ভিডিও ক্লিপ দেখানো হয় এবং সেখানে RTI নামের একটি অ্যাপের ব্যাপারে বলা হয়।

ভিডিওটিতে বলা হয়, “সর্বশ্রেষ্ঠ ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান অর্থ উপার্জনের একটি অসাধারণ নতুন উপায় উপস্থাপন করেছেন, যেখানে যে কেউ জিততে পারে। আমি বাংলাদেশিদের জন্য একটি নতুন অ্যাপ তৈরি করেছি যা জীবনকে ভালোর জন্য পরিবর্তন করছে এবং আমার দেশের সবাই অর্থ উপার্জন করছে। এমনকি একটি শিশুও এখানে আয় করতে পারে, তাড়াতাড়ি করে ডাউনলোড করতে পারে যখন আপনার ডিপোজিটে ৫০০ বোনাস থাকে।”

রিউমর স্ক্যানার টিম যাচাই করে দেখেছে আলোচিত ভিডিওটিতে ব্যবহৃত কণ্ঠস্বরটি সাকিব আল হাসানের নয়। তাছাড়া গণমাধ্যম, সাকিব আল হাসানের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্য কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে আলোচিত দাবিটির সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এছাড়া, ভিডিওটিতে দেখানো সাকিব আল হাসানের আলাদা আলাদা দুটো ভিডিও ক্লিপের বিষয়ে অনুসন্ধান চালায় রিউমর স্ক্যানার টিম।

ভিডিও যাচাই- ১

রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে Neyon & on নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে চলতি বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি ‘কোন জিনিসটা সাকিব আল হাসানের মন খারাপ করায়’ শীর্ষক শিরোনামে সাকিব আল হাসানের সাক্ষাতকার নিয়ে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Neyon & on

এই ভিডিওটির সাথে আলোচিত ভিডিওটিতে দেখানো সাকিব আল হাসানের প্রথম ভিডিওটির হুবহু মিল পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner

অর্থাৎ, এই ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় এবং এর সাথে আলোচিত ভিডিওটিতে প্রচারিত দাবির কোনো যোগসূত্র নেই।

ভিডিও যাচাই- ২

রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে মূলধারার ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম যমুনা টিভি’র ইউটিউব চ্যানেলে চলতি বছরের ০৪ জানুয়ারি ‘বিপিএল’র যা-তা অবস্থা, দায়িত্ব পেলে ২ মাসে সব বদলে দিতাম’ শীর্ষক শিরোনামে সাকিব আল হাসানের বক্তব্য নিয়ে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Jamuna TV

এই ভিডিওটির সাথে আলোচিত ভিডিওটিতে দেখানো সাকিব আল হাসানের দ্বিতীয় ভিডিওটির হুবহু মিল পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner

অর্থাৎ, এই ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় এবং এর সাথে আলোচিত ভিডিওটিতে প্রচারিত দাবির কোনো যোগসূত্র নেই।

অর্থাৎ, উপরোক্ত বিষয়গুলো পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান RTI নামের অর্থ উপার্জনের কোনো কোনো অ্যাপ প্রকাশের ঘোষণা দেননি।

মূলত, বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান সাম্প্রতিক সময়ে অর্থ উপার্জনের একটি অ্যাপ প্রকাশের ঘোষণা দিয়েছেন শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচারের প্রেক্ষিতে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান অর্থ উপার্জনের কোনো অ্যাপ প্রকাশের ঘোষণা দেননি বরং প্রতারণার উদ্দেশ্যে সাকিব আল হাসানের নাম ব্যবহার করে উক্ত অ্যাপের মাধ্যমে বোনাস প্রদানের এই প্রলোভন দেখানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, পূর্বেও সাকিব আল হাসান ফেসবুক লাইভে এসে অর্থ পুরস্কার ঘোষণা করার ভুয়া তথ্য প্রচারের প্রেক্ষিতে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, সাকিব আল হাসান অর্থ উপার্জনের অ্যাপ প্রকাশের ঘোষণা দিয়েছেন দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

গাজায় ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষ সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়নি

0

সম্প্রতি, ফিলিস্তিনের গাজায় ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষ সমাপ্ত ঘোষণা করেছে সেখানকার শিক্ষা মন্ত্রণালয় শীর্ষক একটি দাবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়েছে।

শিক্ষাবর্ষ

উক্ত দাবিতে ফেসবুকের কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ),  এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ফিলিস্তিনের শিক্ষা মন্ত্রণালয় গাজায় ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষ সমাপ্ত ঘোষণা করেনি। তবে গাজার স্কুলগুলোতে শিক্ষা কার্যক্রম স্থগিত রাখার কথা জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে কি ওয়ার্ড সার্চ করে ভারতের সংবাদমাধ্যম Etv Bharat এর ওয়েবসাইটে গত ৩১ অক্টোবর প্রকাশিত এ সংক্রান্ত একটি সংবাদের খোঁজ মেলে। সংবাদে দাবি করা হয়, ইসরায়েলের হামলায় ফিলিস্তিনে তিন হাজারের শিশু মারা যাওয়ার প্রেক্ষিতে গাজার জাতীয় শিক্ষা মন্ত্রণালয় গাজার ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের অকাল সমাপ্তি ঘোষণা করেছে। সংবাদটির সূত্র হিসেবে মন্ত্রণালয়ের একটি বিবৃতির বিষয়ে উল্লেখ করা হয়। 

কিন্তু এ বিষয়ে সেসময় অন্য কোনো গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হতে দেখেনি রিউমর স্ক্যানার টিম।

অনুসন্ধানে জানা যাচ্ছে, জর্ডান ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম Roya News গাজার শিক্ষার্থীদের মৃত্যুর বিষয়ে সেখানকার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সাদেক আল খদৌর (Sadeq Al-Khdour) এর বরাতে সংবাদ প্রকাশ করে গত ২৯ অক্টোবর৷ এই সংবাদে বলা হয়, গাজায় দুই হাজার শিক্ষার্থী ইসরায়েলের হামলায় প্রাণ হারিয়েছে। এর বাইরে ৭০ এর অধিক শিক্ষকও মারা গেছেন বলে জানিয়েছেন তিনি৷ কিন্তু শিক্ষাবর্ষ সমাপ্ত ঘোষণা সংক্রান্ত কোনো তথ্য মেলেনি এই প্রতিবেদনে।

আমরা দাবিটির সূত্রপাত খুঁজতে গিয়ে ২৬ অক্টোবর আরবি নামের একটি ফেসবুক অ্যকাউন্টের পোস্টে (আর্কাইভ) এই দাবিটি আরবি ভাষায় প্রচার হতে দেখেছি।  

Screenshot: Facebook

পরবর্তীতে ২৭ অক্টোবর রোমানিয়ার একটি এক্স অ্যাকাউন্ট থেকেও একই তথ্য প্রকাশ করা হয়, যা রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়। এই প্রতিবেদন প্রকাশের সময় দেখা যায়, আলোচিত এই টুইটটি প্রায় পৌনে ছয় লাখ মানুষের কাছে পৌঁছেছে। 

Screenshot: X 

২৭ ও ২৮ অক্টোবর একই তথ্য এক্সের আরো দুইটি অ্যাকাউন্ট (, ) থেকে অন্তত ৫২ লাখ মানুষের কাছে পৌঁছেছে। 

অধিকতর অনুসন্ধানে ফিলিস্তিনের সংবাদ সংস্থা Wafa এর সাথে যোগাযোগ করে রিউমর স্ক্যানার টিম৷ 

ওয়াফা’র পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মন্ত্রণালয়ের এমন কোনো ঘোষণার বিষয়ে তারা অবগত নন৷ তবে এমন ঘোষণা না আসলেও গাজায় কার্যত শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি৷ 

ফিলিস্তিনের ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান তাহাকাক (Tahaqaq) এর প্রতিষ্ঠাতা বাকের আবেদ আল হক (Baker Abd Al-Haq) এবং কাশিফ (Kashif) এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা রিহাম আবু আইতা’র (Riham Abu Aita) সাথে আমরা এ বিষয়ে কথা বলেছি। তারা দুজনই নিশ্চিত করেছেন যে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এমন কোনো ঘোষণা দেয়নি৷ 

রিউমর স্ক্যানার টিম ফিলিস্তিনের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে চলমান সংঘাত শুরুর (০৭ অক্টোবর) পর থেকে প্রকাশিত সকল বিজ্ঞপ্তি/বিবৃতি পর্যবেক্ষণ করে দেখেছে। এসব বিজ্ঞপ্তির কোনোটিতেই শিক্ষাবর্ষ সমাপ্ত ঘোষণা সংক্রান্ত কোনো তথ্য মেলেনি। 

তবে গত ১৪ ডিসেম্বর মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষক দিবসে সেই সকল শিক্ষকদের ধন্যবাদ জানানো হয় যারা সংকটময় এই পরিস্থিতিতেও শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। 

এই বিজ্ঞপ্তি থেকে বিষয়টি স্পষ্ট যে, চলতি শিক্ষাবর্ষ সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়নি। 

তবে গত ০৭ অক্টোবর মন্ত্রণালয়ের ফেসবুক পেজে প্রকাশিত এক পোস্ট (আর্কাইভ) থেকে জানা যাচ্ছে, সেসময় পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া অবধি গাজার স্কুলগুলোতে ক্লাসের কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করা হয়৷  

Screenshot: Facebook 

মূলত, গত ০৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস ইসরায়েলে ‘অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড’ নামে হামলা শুরু করে। এই হামলার প্রেক্ষিতে ইসরায়েলও হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজা উপত্যকায় পাল্টা হামলা চালায়। এই হামলা চলাকালীন গেল অক্টোবরের শেষদিকে একটি তথ্য ইন্টারনেটে ব্যাপকভাবে ভাইরাল হয় যাতে দাবি করা হচ্ছিল, ফিলিস্তিনের গাজায় ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষ সমাপ্ত ঘোষণা করেছে সেখানকার শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কিন্তু রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত দাবিটি সঠিক নয়৷ প্রকৃতপক্ষে, সংঘাত শুরুর সময় গত ০৭ অক্টোবর মন্ত্রণালয়ের ফেসবুক পেজ থেকে গাজার স্কুলগুলোর ক্লাসের কার্যক্রম বন্ধ রাখার ঘোষণা দেওয়া হলেও পুরো শিক্ষাবর্ষ সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়নি৷ তাছাড়া, সম্প্রতি শিক্ষক দিবসে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এই সংকটময় পরিস্থিতিতে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া শিক্ষকদের ধন্যবাদ জানানো হয়েছে, যা থেকে এটাই স্পষ্ট হয় যে, ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের সমাপ্তি ঘটেনি৷ 

উল্লেখ্য, চলমান ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের সংঘাত ইস্যুতে একাধিক ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে একাধিক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার৷

সুতরাং, ফিলিস্তিনের গাজায় ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষ সমাপ্ত ঘোষণা করেছে গাজার শিক্ষা মন্ত্রণালয় শীর্ষক দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র

  • Gaza Education Ministry: Press Release Dec 14
  • Gaza Education Ministry: Facebook Post
  • Statement from WAFA News Agency 
  • Statement from Riham Abu Aita
  • Statement from Baker Abd Al-Haq
  • Rumor Scanner’s own investigation 

বিশ্ব ব্যাংকের নাম ও লোগো ব্যবহার করে ঋণ দেওয়ার নামে প্রতারণা 

0

সম্প্রতি, স্বল্প সুদে বিশ্ব ব্যাংক থেকে ঋণ দেওয়া হচ্ছে দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

বিশ্ব ব্যাংকের

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সম্প্রতি বিশ্ব ব্যাংক স্বল্প সুদে ঋণ প্রদানের এরূপ কোনো প্রকল্প হাতে নেয়নি বরং বিশ্ব ব্যাংকের নাম ও লোগো ব্যবহার করে প্রতারণার উদ্দেশ্যে উক্ত তথ্যটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত পোস্টটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা, সেখানে বিশ্ব ব্যাংকের ওয়েবসাইট ঠিকানা হিসেবে www.theworldbank.co উল্লেখ রয়েছে।

তবে, বিশ্ব ব্যাংকের ওয়েবসাইটের মূল ঠিকানা www.worldbank.org 

Screenshot: Facebook Claim Post

পরবর্তীতে, বিশ্ব ব্যাংকের ওয়েবসাইটফেসবুক পেজ এবং বিশ্ব ব্যাংকের বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের ফেসবুক পেজ পর্যবেক্ষণ করে স্বল্প সুদে ঋণ প্রদান সংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

তবে, আলোচিত দাবির বিষয়ে বিশ্ব ব্যাংকের বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের ফেসবুক পেজে গত ১৫ ডিসেম্বর প্রকাশিত সতর্কবার্তামূলক একটি পোস্ট (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: World Bank Bangladesh 

পোস্টটিতে বলা হয়, “বিশ্বব্যাংক সবাইকে অনলাইনে প্রতারণামূলক স্কিম বা বিনিয়োগ কার্যক্রমের ব্যাপারে সতর্ক করছে। প্রতারক বিশ্বব্যাংকের নাম ও লোগোর অপব্যবহার করে, ফি এর বিনিময়ে ব্যক্তিদের ঋণ প্রদানের প্রলোভন দেখায়। বিশ্বব্যাংক সরাসরি কাউকে ঋণ প্রদান করে না।” 

মূলত, বিশ্ব ব্যাংকের নাম ও লোগো ব্যবহার করে স্বল্প সুদে ঋণ দেওয়া হচ্ছে দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, বিশ্ব ব্যাংক ঋণ দানের এমন কোনো প্রকল্প গ্রহণ করেনি। বিশ্ব ব্যাংকের বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে স্বল্প সুদে ঋণ প্রদানের বিষয়ে প্রচারিত দাবিটিকে ভুয়া নিশ্চিত করে উক্ত বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার আহবান জানানো হয়।    

সুতরাং, স্বল্প সুদে বিশ্ব ব্যাংকের ঋণ প্রাপ্তির দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ বানোয়াট ও প্রতারণামূলক।

তথ্যসূত্র

ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো এবার টাইম ম্যাগাজিন বর্ষসেরা অ্যাথলেট নির্বাচিত হননি

0

সম্প্রতি, ইতিহাসে প্রথম ফুটবলার হিসেবে ‘টাইম ম্যাগাজিনের’ বর্ষসেরা অ্যাথলেট নির্বাচিত হয়েছেন পর্তুগালের ফুটবলার ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো শীর্ষক একটি দাবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

রোনালদো

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ইতিহাসে প্রথম ফুটবলার হিসেবে ‘টাইম ম্যাগাজিনের’ বর্ষসেরা অ্যাথলেট হিসেবে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো নির্বাচিত হননি বরং, ইতিহাসের প্রথম পুরুষ ফুটবলার হিসেবে লিওনেল মেসি টাইম ম্যাগাজিনের বর্ষসেরা অ্যাথলেট হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত দাবির সত্যতা যাচাইয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম TIME Magazine এর ওয়েবসাইট পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে দেখা যায়, ২০২৩ সালের ATHLETE OF THE YEAR হিসেবে লিওনেল মেসিকে নির্বাচিত করা হয়েছে। এজন্যে তাকে নিয়ে ওয়েবসাইটে একটি বিশেষ পেজ তৈরি করা হয়েছে। পেজটিতে তাকে নিয়ে বিস্তর বিবরণী যুক্ত করা হয়েছে। 

Screenshot: Time Magazine

এছাড়াও পেজটিতে আগামী ২৫ তারিখে প্রকাশ হতে যাওয়া TIME Magazine এর নতুন সংখ্যার কাভার পেজটিও যুক্ত করা হয়েছে। 

Credit: Time Magazine

উক্ত কাভার পেজটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত পোস্টারটির বর্ডারের সাথে উক্ত পোস্টারের বর্ডারের মিল রয়েছে। উভয় পোস্টারের বাম পাশে উপরের দিকে বর্ডারে DEC. 25, 2023 লেখাটি রয়েছে। অর্থাৎ, আলোচিত পোস্টারটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় TIME Magazine কর্তৃক প্রকাশিত কাভার পেজের উপর তৈরি করা হয়েছে। 

Poster Comparison by Rumor Scanner 

ইতিহাসে প্রথম ফুটবলার হিসেবে ‘টাইম ম্যাগাজিনের’ বর্ষসেরা অ্যাথলেট হবার দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে পরবর্তী অনুসন্ধানে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিন Yahoo এর খেলাধুলা বিষয়ক সেকশন Yahoo Sports এর ওয়েবসাইটে গত ৬ ডিসেম্বর Lionel Messi named 2023 Time Athlete of the Year following impact on Inter Miami, MLS শীর্ষক শিরোনাম প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Yahoo Sports

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, ২০১৯ সাল থেকে TIME Magazine বর্ষসেরা অ্যাথলেট উপাধি দেওয়া শুরু করার পর থেকে লিওনেল মেসি-ই প্রথম পুরুষ ফুটবলার হিসেবে এই উপাধিটি পেয়েছেন। 

Screenshot: Yahoo Sports

মূলত, গত ৫ ডিসেম্বর লিওনেল মেসিকে ২০২৩ সালের অ্যাথলেট অব দ্য ইয়ার ঘোষণা করে টাইম ম্যাগাজিন তাদের ওয়েবসাইটে একটি বিশেষ পেজ প্রকাশ করে। এই প্রথম কোনো পুরুষ ফুটবলার হিসেবে লিওনেল মেসির এই অর্জনের তথ্যটি দ্রুত ইন্টারনেট দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। তবে উক্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে সম্প্রতি, ইতিহাসে প্রথম ফুটবলার হিসেবে ‘টাইম ম্যাগাজিনের’ বর্ষসেরা অ্যাথলেট নির্বাচিত হলেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো শীর্ষক একটি পোস্টার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে, যা সঠিক নয়। 

সুতরাং, ইতিহাসে প্রথম ফুটবলার হিসেবে লিওনেল মেসির ‘টাইম ম্যাগাজিনের’ বর্ষসেরা অ্যাথলেট নির্বাচিত হওয়ার তথ্যকে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর বর্ষসেরা অ্যাথলেট নির্বাচিত হয়েছেন শীর্ষক দাবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক গুয়েতেমালায় নিষেধাজ্ঞার ঘটনা বাংলাদেশের দাবিতে প্রচার

সম্প্রতি, ১০০ এমপি মন্ত্রী সহ ৩০০ জনকে নিষেধাজ্ঞা, কেঁদে কেঁদে পদত্যাগ করলেন ডিবি হারুন শীর্ষক শিরোনামে এবং থাম্বনেইলে বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের ছবিসহ একটি ভিডিও ইউটিউবে প্রচার করা হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক

উক্ত দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশের কোনো মন্ত্রী বা সংসদ সদস্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দেয়নি বরং মধ্য আমেরিকার দেশ গুয়েতেমালায় গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ও আইনের শাসনে বাধাগ্রস্ত করায় যুক্তরাষ্ট্র ১০০ কংগ্রেস সদস্যসহ প্রায় ৩০০ নাগরিকের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এছাড়া ডিএমপির ডিবি প্রধান হারুন অর রশিদের পদত্যাগ করার তথ্য কোনো গ্রহণযোগ্য সূত্রে পাওয়া যায়নি।

অনুসন্ধানের শুরুতেই আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ৮ মিনিট ৩৯ সেকেন্ডের এই ভিডিওটির শুরুতে জাতীয় দৈনিক কালবেলা’র লোগোসহ একটি সংবাদ প্রতিবেদনের খণ্ডাংশ দেখানো হয়।

পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ অনুসন্ধান করে কালবেলা’র ইউটিউব চ্যানেলে গত ১২ ডিসেম্বর “দুর্নীতি করায় ৩০ ব্যক্তির ওপর মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞা | US Visa Sanction | Against Corruption” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, দুর্নীতির অভিযোগে গত ১১ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক দুর্নীতি প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন দেশের ৩০ ব্যক্তির ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানায়।। এই নিষেধাজ্ঞার তালিকায় বিদেশে অবস্থানরত বর্তমান এবং সাবেক কিছু কর্মকর্তা এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা রয়েছেন।

অর্থাৎ, শিরোনামে ৩০০ জনের নিষেধাজ্ঞার কথা বললেও আলোচিত ভিডিওতে ৩০ জনের ওপর নিষেধাজ্ঞার তথ্য তুলে ধরেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেট এর ওয়েবসাইটে গত ১১ ডিসেম্বর মুখপাত্রের ফ্যাক্ট শীট থেকেও একই তথ্য পাওয়া যায়।

বাংলাদেশি ১০০ জন সংসদ সদস্যসহ মোট ৩০০ জনের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার ব্যাপারে অনুসন্ধানে দেশিয় এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে কোনো গ্রহণযোগ্য তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

তবে অনুসন্ধানে যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেট এর ওয়েবসাইটে গত ১১ ডিসেম্বর বিভাগটির মুখপাত্র মেথু মিলারের দেওয়া এক বিবৃতি খুঁজে পাওয়া যায়।

বিবৃতি থেকে জানা যায়, মধ্য আমেরিকার দেশ গুয়েতেমালায় গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ও আইনের শাসনে বাধাগ্রস্ত করায় যুক্তরাষ্ট্র ১০০ কংগ্রেস সদস্যসহ প্রায় ৩০০ নাগরিকের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।

এছাড়া ডিএমপির ডিবি প্রধান হারুন অর রশিদের পদত্যাগ করার ব্যাপারে অনুসন্ধানে দেশিয় এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে কোনো গ্রহণযোগ্য তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মূলত, গত ১১ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেট এর মুখপাত্র মেথু মিলার এক বিবৃতি দিয়ে মধ্য আমেরিকার দেশ গুয়েতেমালায় গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ও আইনের শাসনে বাধাগ্রস্ত করায় গুয়েতেমালায় ১০০ কংগ্রেস সদস্যসহ প্রায় ৩০০ নাগরিকের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার কথা বিভাগটির ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেন। উক্ত বিবৃতি নিয়ে দেশিয় এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে সংবাদ প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়। তবে সম্প্রতি, উক্ত ঘটনারই পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশে ১০০ জন সংসদ সদস্যসহ ৩০০ জনকে যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে এবং ডিএমপির ডিবি প্রধান হারুন অর রশিদের পদত্যাগ করেছেন দাবিতে একটি ভিডিও ইউটিউবে প্রচার করা হচ্ছে।

সুতরাং, ১০০ জন সংসদ সদস্যসহ ৩০০ জনকে যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে এবং ডিএমপির ডিবি প্রধান হারুন অর রশিদের পদত্যাগ করেছেন দাবিতে একটি ভিডিও ইউটিউবে প্রচার করা হচ্ছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র