গত ১৩ মার্চ অনুষ্ঠিত শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে মাঠে নামে বাংলাদেশ। উক্ত ম্যাচে ২৫৫ রানের টার্গেট নিয়ে ব্যাটিং করতে নেমে ৩২ হাতে রেখেই ছয় উইকেটে জয় ছিনিয়ে নেয় বাংলাদেশ। তবে, প্রথম তিন ওভারেই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ দলের দুই ওপেনার। এর প্রেক্ষিতে শান্তিতে ইফতারটা করার জন্য ওদের ওপেনে পাঠাইসিলাম, জুসটা শেষ করার আগেই দেখি দুজনই আউট- শীর্ষক দাবিতে একটি তথ্য বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত’র মন্তব্য দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, নাজমুল হোসেন শান্ত ওপেনারদের নিয়ে এমন কোনো মন্তব্য করেননি বরং ‘দেউলিয়া রাষ্ট্র’ নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে সার্কাজম হিসেবে এই মন্তব্যটি প্রথম প্রচার করা হয়; যা পরবর্তীতে বাস্তব দাবিতে ছড়িয়ে পড়ে।
দাবিটির সূত্রপাত যেভাবে
অনুসন্ধানের শুরুতে কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ‘Deuliya Rashtro – দেউলিয়া রাষ্ট্র’ নামের একটি ফেসবুক পেজে গত ১৩ মার্চ রাত ১০ টা ৫২ মিনিটে “They had one job” শীর্ষক শিরোনামে আলোচিত মন্তব্যটি নিয়ে প্রকাশিত একটি ফটোকার্ড (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot: Facebook Post
পরবর্তীতে পেজটি নিয়ে অনুসন্ধানে তাদের অ্যাবাউট সেকশন পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, পেজটি ‘Satire/Parody বা হাস্য রসাত্মক আধেয় বা কন্টেন্ট তৈরির উদ্দেশ্যে খোলা।
Screenshot: Facebook Page
উপরিউক্ত বিষয়গুলো পর্যালোচনা করলে এটা প্রতীয়মান হয় যে, আলোচিত পোস্টটি প্রথমে সার্কাজম বা হাস্যরসের উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছে।
পরবর্তীতে বাস্তব দাবিতে প্রচার
মজার উদ্দেশ্যে দেওয়া নাজমুল হোসেন শান্ত’র মন্তব্য দাবিতে প্রচারিত উক্তিটি পরবর্তীতে ফেসবুকের বিভিন্ন পেজ এবং গ্রুপে বাস্তব দাবিতে ছড়িয়ে পড়ে।
উক্ত বিষয়টিকে সত্য মনে করে নেটিজেনদের বিভিন্ন কমেন্ট করতেও দেখা যায়।
Screenshot: Facebook Comments
এছাড়াও, গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্য কোনো সূত্রে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত’র এমন কোনো মন্তব্যের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।
মূলত, গত ১৩ মার্চ ‘Deuliya Rashtro – দেউলিয়া রাষ্ট্র’ নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে ‘শান্তিতে ইফতারটা করার জন্য ওদের ওপেনে পাঠাইসিলাম, জুসটা শেষ করার আগেই দেখি দুজনই আউট’- শীর্ষক উক্তি বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত’র নামে সার্কাজম হিসেবে প্রচার করা হয়। পরবর্তীতে উক্ত মন্তব্যটি বাস্তব দাবিতে ফেসবুকের বিভিন্ন পেজ এবং গ্রুপে প্রচার করা হয়। প্রকৃতপক্ষে শান্ত এমন কোনো মন্তব্য করেননি।
উল্লেখ্য, পূর্বেও একই পেজ থেকে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের পেসার তানজিম হাসান সাকিবের একটি মন্তব্য সার্কাজম বা হাস্যরসের উদ্দেশ্যে প্রচার করা হলে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল রিউমর স্ক্যানার।
সুতরাং, ‘শান্তিতে ইফতারটা করার জন্য ওদের ওপেনে পাঠাইসিলাম, জুসটা শেষ করার আগেই দেখি দুজনই আউট’ শীর্ষক দাবিতে একটি মন্তব্যকে নাজমুল হোসেন শান্ত’র মন্তব্য দাবিতে ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে; যা মূলত স্যাটায়ার বা কৌতুক।
গতকাল ১৫ মার্চ কুমিল্লার শাসনগাছা সংঘর্ষের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে মো. জামিল হাসান অর্ণব নামক এক যুবক মারা যান। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে নিহত যুবক ছাত্রলীগ নেতা ছিলেন দাবিতে একটি তথ্য গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, কুমিল্লার শাসনগাছায় সংঘর্ষে নিহত মো. জামিল হাসান অর্ণব ছাত্রলীগ নেতা নয় বরং তিনি স্থানীয় ছাত্রদল নেতা ছিলেন।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে অনলাইন পোর্টাল বাংলা ট্রিবিউন এর ওয়েবসাইটে গতকাল (১৫ মার্চ) “দুই গ্রুপে সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধ হয়ে ছাত্রদল নেতা নিহত” শীর্ষক শিরোনামে একটি সংবাদ প্রতিবেদনে কুমিল্লা জেলা যুবদলের সদস্য সচিব ফরিদ উদ্দিন শিবলুর বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, ‘অর্ণব দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের প্রস্তাবিত কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। তিনি নামাজ পড়ে বের হয়েছিলেন। তিনি ঘটনায় জড়িত না থাকলেও তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে বুকের বাঁ পাশে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।’
এছাড়া অনলাইন নিউজ পোর্টাল বিডিনিউজ২৪ এর ওয়েবসাইটে গতকাল “প্রকাশিত এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য জানা যায়।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, কুমিল্লা জেলা যুবদলের সদস্য সচিব ফরিদ উদ্দিন শিবলু তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে গতকাল ১৫ মার্চ একটি পোস্ট (আর্কাইভ) দিয়ে জামিল হাসান অর্ণবের কথা জানান। জনাব শিবলু তার পোস্টে উল্লেখ করেন, অর্ণব কুমিল্লার দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের নেতা ছিলেন।
Screenshot: Facebook
জামিল হাসান অর্ণবের ফেসবুক অ্যাকাউন্টের একাধিক পোস্টেও ছাত্রদলের বিষয়ক তথ্যের উপস্থিতি দেখেছি আমরা। যেমন, গত ১ মার্চের একটি পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
Screenshot: Facebook
উক্ত পোস্টে তিনি নবগঠিত ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে শুভেচ্ছা জানান।
এছাড়া, বিএনপি এবং এর অঙ্গ সংগঠনের পক্ষ নিয়ে মো. জামিল হাসান অর্ণবের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে এমন আরো কিছু পোস্ট দেখুন এখানে,এখানে,এখানে।
মূলত, গতকাল ১৫ মার্চ কুমিল্লার শাসনগাছায় সংঘর্ষের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে মো. জামিল হাসান অর্ণব নামক এক যুবক মারা যান। এই ঘটনায় নিহত যুবক ছাত্রলীগ নেতা ছিলেন দাবিতে একটি তথ্য গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, নিহত মো. জামিল হাসান অর্ণব ছাত্রদল নেতা ছিলেন।
সুতরাং, কুমিল্লায় গতকালের সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত ছাত্রদল নেতা মো. জামিল হাসান অর্ণবকে ছাত্রলীগ নেতা শীর্ষক দাবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।
গত ১২ মার্চ ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়ে বাংলাদেশি পণ্যবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ। এরই মধ্যে “সোমালিয়ার জলদস্যুদের ভাড়া করে বাংলাদেশি পণ্যবাহী জাহাজ ও ২৩ নাবিককে জিম্মি করেছে তারেক দাবি করছে ৫ মিলিয়ন মুক্তিপণ” শীর্ষক দাবিতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবি এবং সংবাদ প্রতিবেদনের একটি স্ক্রিনশট যুক্ত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সোমালিয়ান জলদস্যুদের দ্বারা ভারত মহাসাগরে বাংলাদেশি পণ্যবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ ছিনতাই হওয়ার ঘটনায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কোনো প্রকার সম্পৃক্ততা নেই। প্রকৃতপক্ষে কোনো প্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়া সম্পূর্ণ ভিত্তিহীনভাবে আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।
অনুসন্ধানের শুরুতে প্রচারিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। পর্যবেক্ষনে ফটোকার্ডটিতে একটি সংবাদ প্রতিবেদনের স্ক্রিনশট যুক্ত থাকতে দেখা যায়।
ফটোকার্ডে যুক্ত প্রতিবেদনটির অনুসন্ধানে কি ওয়ার্ড সার্চের দেশীয় গণমাধ্যম ‘প্রতিদিনের বাংলাদেশ’ এর ওয়েবসাইটে গত ১৩ মার্চ “৫০ লাখ ডলার মুক্তিপণ দাবি, চলছে দরকষাকষি” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। এই প্রতিবেদনের স্ক্রিনশটই আলোচিত ফটোকার্ডে যুক্ত করা হয়েছে।
Screenshot Comparison : Rumor Scanner
উক্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারত মহাসাগর থেকে সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি পণ্যবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ সহ জাহাজের ২৩ জন নাবিক। মুক্তিপণ হিসেবে জলদস্যুরা ৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দাবি করছে।
প্রতিবেদনটিতে সোমালিয়ার জলদস্যুদের ছিনতাই এবং মুক্তিপণের বিষয়ে উল্লেখ থাকলেও সেখানে তারেক রহমানের সম্পৃক্ততার বিষয়ে কোনো তথ্যের উল্লেখ পাওয়া যায়নি।
পরবর্তীতে বিষয়টি আরও নিশ্চিত হতে দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে খোঁজ করে রিউমর স্ক্যানার টিম।
উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিক থেকে দুবাইয়ের দিকে কয়লা নিয়ে যাচ্ছিল বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ। সেসময় জাহাজটি জলদস্যুদের কবলে পড়েছে বলে জানান জাহাজটির মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান এসআর শিপিংয়ের প্রধান নির্বাহী মেহেরুল করিম।
উক্ত প্রতিবেদনেও তারেক রহমান প্রসঙ্গে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।
উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, যুক্তরাজ্যের মেরিটাইম ট্রেড অপারেশন (ইউকে এমটিও) তাদের ওয়েবসাইটে জানিয়েছে, এই ঘটনাটি ঘটেছে সোমালিয়ার রাজধানী মোগাদিসু থেকে ৬০০ নটিক্যাল মাইল পূর্বে। জলদস্যুরা একটি বড় ও একটি ছোট নৌযানে করে আসে। তারা ওই এলাকায় চলাচলকারী অন্য জাহাজগুলিতে সতর্ক করে দিয়েছে।
এই প্রতিবেদনেও জাহাজ অপহরণে তারেক রহমানের সম্পৃক্ততার কোনো দাবি করা হয়নি।
আরও অনুসন্ধানে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম আল জাজিরা’র ওয়েবসাইটে গত ১২ মার্চ “Pirates seize control of cargo ship near Somalia, say owners” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ১৫ থেকে ২০ জনের একটি সোমালি জলদস্যুদের দল বাংলাদেশি পণ্যবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহকে জিম্মি করে। জাহাজে ২৩ জন নাবিক ছিল। জাহাজটি মোজম্বিকের রাজধানী মাপুটো থেকে ৫৫ হাজার টন কয়লা নিয়ে আরব আমিরাতের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিল। ভারত মহাসাগরে এই ঘটনা ঘটে। জাহাজটি চট্টগ্রামের কবির গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান এসআর শিপিং লিমিটেডের মালিকানাধীন।
এই প্রতিবেদনেও জাহাজ অপহরণে তারেক রহমানের কোনো সম্পৃক্ত থাকার কোনো প্রমাণ মেলেনি।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ছাড়াও দেশীয় কোনো মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্রে এমভি আবদুল্লাহ অপহরণের সাথে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সম্পৃক্ত থাকার প্রমাণ মেলেনি।
অর্থাৎ, সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিকভাবে জাহাজ ছিনতাইয়ের ঘটনায় সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিকভাবে তারেক রহমানকে জড়িয়ে ফটোকার্ডটি প্রচার করা হয়েছে।
জলদস্যুরা কি এখন অবধি মুক্তিপন দাবি করেছে?
জাহাজসহ সব নাবিককে অক্ষত অবস্থায় ফিরিয়ে দিতে সোমালিয়ান জলদস্যুরা ৫০ লাখ ডলার মুক্তিপণ দাবি করেছে বলে বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে প্রতিবেদনে প্রকাশ করা হলেও এটিকে গুজব বলে জানিয়েছেন অপহৃত জাহাজটির মালিকপক্ষ কবির গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম।
তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে কোনো দাবি-দাওয়া জানায়নি জলদস্যুরা। হয়তো জাহাজটিকে তাদের সেফ জোনে নেওয়ার পর তখন তারা তাদের দাবির বিষয়টি বলতে পারে।’
মূলত, গত ১২ মার্চ মোজম্বিকের রাজধানী মাপুটো থেকে ৫৫ হাজার টন কয়লা নিয়ে আরব আমিরাতের উদ্দেশ্যে যাত্রাকালে ভারত মহাসাগরে ২৩ নাবিকসহ বাংলাদেশি পণ্যবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহকে অপহরণ করে সোমালিয়ার জলদস্যুরা। এরপরই ১৩ মার্চ জাহাজে থাকা ২৩ জন নাবিকসহ জাহাজ ফিরিয়ে দিতে জলদস্যুরা ৫০ লাখ ডলার মুক্তিপণ দাবি করে জানিয়ে দেশীয় মূলধারার একাধিক গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। যদিও মুক্তিপণের দাবির সংবাদকে গুজব বলে জানিয়েছে জাহাজটির মালিকপক্ষ। এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ফটোকার্ডে জলদস্যুদের মুক্তিপণ দাবির একটি সংবাদ প্রতিবেদনের স্ক্রিনশট সহ তাতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবি যুক্ত করে “সোমালিয়ার জলদস্যুদের ভাড়া করে বাংলাদেশি পণ্যবাহী জাহাজ ও ২৩ নাবিককে জিম্মি করেছে তারেক দাবি করছে ৫ মিলিয়ন মুক্তিপণ” শীর্ষক শিরোনামে প্রচার করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিম যাচাই করে দেখেছে যে, উক্ত ফটোকার্ডে ব্যবহৃত সংবাদ প্রতিবেদনের স্ক্রিনশটটি মুক্তিপণের দাবি নিয়ে প্রতিদিনের বাংলাদেশে প্রকাশিত একটি সংবাদ প্রতিবেদনের। উক্ত প্রতিবেদন কিংবা উক্ত ঘটনায় দেশীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত কোনো প্রতিবেদনে ভারত মহাসাগরে ২৩ নাবিকসহ বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর অপহরণ কিংবা মুক্তিপণ দাবির বিষয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সম্পৃক্ততার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
সুতরাং, বাংলাদেশি পণ্যবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ ছিনতাইয়ের ঘটনায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান জড়িত দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।
গত বছরের (২০২৩) ০৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ইসরায়েলে ‘অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড’ নামে হামলা শুরু করে। এই হামলা কেন্দ্র করে ইসরায়েল-হামাস সংঘাত শুরু হয়, যা এখনো চলছে। সম্প্রতি, রমজান মাস শুরু হওয়ার প্রেক্ষিতে গাজায় ত্রাণ সামগ্রী পাঠানো হয়েছে৷ এমন এক ত্রাণ সহায়তা পাঠানোর খবরে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া বেশ কিছু পোস্টে দাবি করা হচ্ছে, পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষ্যে গাজাবাসির জন্য ত্রাণ পাঠিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, রমজান উপলক্ষ্যে গাজায় আলোচিত ত্রাণ সহায়তা বাংলাদেশ সরকার পাঠায়নি বরং মিশরের আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা ব্যক্তিগত উদ্যোগে বাংলাদেশের জনগণ থেকে অনুদান সংগ্রহ করে তা আল আজহারের গাজা সহায়তা ফান্ডে পৌঁছে দিয়েছেন। সেখান থেকে বাংলাদেশের পতাকায় গাজায় ত্রাণের লরি গিয়েছে। এই সহায়তার সাথে বাংলাদেশ সরকারের কোনো সম্পর্ক নেই বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে জাতীয় দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারের ওয়েবসাইটে গত ১৩ মার্চ প্রকাশিত রমজানে গাজায় পৌঁছালো বাংলাদেশিদের ত্রাণ শিরোনামের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, পবিত্র রমজান মাসের তৃতীয় দিনে অসহায় গাজাবাসীদের সাহায্যার্থে ‘হেল্প গাজা’ প্রচারাভিযানের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৮০টি দেশের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে দুই হাজার টন খাদ্যসহ ১০০ ট্রাকের একটি বহর মিশরের রাফা সীমান্ত দিয়ে গাজা উপত্যকায় পাঠানো হয়েছে।
মিশরের আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশি শিক্ষার্থী (প্রাক্তন) হোজাইফা খানের বরাত দিয়ে এই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, গাজার মানুষের জন্য আল-আজহার কর্তৃপক্ষের অনুমতিক্রমে দ্য ওয়ার্ল্ড ওয়ান উম্মাহ ফাউন্ডেশনের দাতব্য তহবিলের মাধ্যমে রমজানের শুরুতেই বাংলাদেশি টাকায় মোট ৩৫ লাখ টাকার ত্রাণ পাঠানো হয়েছে।
এই অর্থ আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা হিউম্যান ফার্স্ট, আজহার ওয়েলফেয়ার সোসাইটি বাংলাদেশ ও হোয়াট পিগন ছাত্র সংগঠনগুলোর মাধ্যমে সংগ্রহ করেন বলে জানান হোজাইফা।
এ ছাড়া, বাংলাদেশের একটি স্বনামধন্য বেভারেজ প্রতিষ্ঠান ৪৮ লাখ টাকার ত্রাণ গাজার মানুষের জন্য পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয় ডেইলি স্টারের প্রতিবেদনে।
অনুসন্ধানে মিশরের সংবাদমাধ্যম Ahram এর ওয়েবসাইটে ১১ মার্চ প্রকাশিত এ সংক্রান্ত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, মিসরের আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক দাতব্য সংস্থা আল আজহার জাকাত অ্যান্ড চ্যারিটি হাউস নামক একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এই ত্রাণ সহায়তা গাজায় পাঠানো হয়েছে৷ চ্যারিটি হাউসটির এক বিবৃতির বরাতে এই তথ্য দেওয়া হয়েছে৷
এক্সে (সাবেক টুইটার) চ্যারিটি হাউসের অফিশিয়াল অ্যাকাউন্টে এ সংক্রান্ত বিবৃতিটি খুঁজে পাওয়া যায়৷ ১৩ মার্চ প্রকাশিত এই বিবৃতিতে এই ত্রাণ সহায়তার বিষয়ে বিস্তারিত উল্লেখ থাকলেও এটা স্পষ্ট করে বলা হয়নি যে, সংশ্লিষ্ট দেশগুলো থেকে ঠিক কারা সহায়তা করেছেন।
এ বিষয়ে আরো অনুসন্ধান করে আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী জনাব হোজাইফা খানের (যার বক্তব্য ডেইলি স্টারের প্রতিবেদনে রয়েছে) ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এ সংক্রান্ত একটি পোস্ট খুঁজে পেয়েছি আমরা। ১৪ মার্চের এই পোস্টে তিনি জানান, “আল-আযহারে অধ্যয়নরত আমরা এক ঝাঁক বাংলাদেশি শিক্ষার্থী নিরলস প্রচেষ্টায় এবার বাংলাদেশের ৫টি , ভারতের ১৩টি ও বৃটেনের ২টি লরি সহ মোট ২০টি লরি পাঠাতে সক্ষম হয়েছি আলহামদুলিল্লাহ।”
জনাব হোজাইফা বলছেন, “বাংলাদেশ থেকে আসা অনুদানগুলো আযহার কতৃপক্ষের অনুরোধে এবার বাংলাদেশি পতাকার পাশাপাশি নির্দিষ্ট একাধিক ব্যানারে দেওয়া হয়েছে।”
হোজাইফা তার পোস্টে তাদের এই কাজ সংশ্লিষ্ট একাধিক ব্যক্তিকে মেনশন করেছেন। এদের মধ্যে জনাব আবদুল্লাহ হাশেমের সাথে কথা বলেছি আমরা৷
জনাব হাশেমের কাছে আমরা আলোচিত দাবিটির বিষয়ে জানতে চেয়েছিলাম। তিনি রিউমর স্ক্যানার টিমকে জানিয়েছেন, “আল আযহারের মাধ্যমে বাংলাদেশের ব্যানারে যতো ত্রাণ পাঠানো হয়েছে, সব বাংলাদেশের জনগণের অনুদান। এখানে সরকারি কোন অনুদান, সহায়তা বা সহযোগিতা নাই। আল আযহারে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা ব্যক্তিগত উদ্যোগে দেশ ও বিদেশ থেকে বাংলাদেশি ভাইবোনদের থেকে গাজার জন্য অনুদান কালেকশন করেছেন। এরপর সব অনুদান আল আযহারের গাজা সহায়তা ফান্ডে পৌঁছে দিয়েছেন। সেখান থেকে বাংলাদেশের পতাকায় গাজায় ত্রাণের লরি গিয়েছে। এ ক্ষেত্রে মিসরস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসেরও কোন অবদান ও সহযোগিতা নেই।”
জনাব হাশেম গত কয়েকদিনে এই ত্রাণ সহায়তা সংশ্লিষ্ট একাধিক পোস্ট ও ভিডিও প্রকাশ করেছেন৷ সেগুলোর কয়েকটি দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
মূলত, গত বছরের (২০২৩) ০৭ অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিনের হামাস কর্তৃক ইসরায়েলে ‘অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড’ নামে হামলা শুরু হলে ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের পুরোনো সংঘাত নতুন রূপ পায়, যা এখনও চলছে। সম্প্রতি, রমজান মাস শুরু হওয়ার প্রেক্ষিতে বিভিন্ন দেশ থেকে ফিলিস্তিনের গাজায় ত্রাণ সামগ্রী পাঠানো হয়েছে৷ এমন এক ত্রাণ সহায়তা পাঠানোর খবরে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া বেশ কিছু পোস্টে দাবি করা হচ্ছে, পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষ্যে গাজাবাসির জন্য ত্রাণ পাঠিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। কিন্তু রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত দাবিটি সঠিক নয়। রমজান উপলক্ষ্যে গাজায় আলোচিত এই ত্রাণ সহায়তা বাংলাদেশ সরকার পাঠায়নি। মিশরের আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা ব্যক্তিগত উদ্যোগে দেশ ও বিদেশ থেকে বাংলাদেশের জনগণ থেকে গাজার জন্য অনুদান সংগ্রহ করে তা আল আজহারের গাজা সহায়তা ফান্ডে পৌঁছে দিয়েছেন। সেখান থেকে বাংলাদেশের পতাকায় গাজায় ত্রাণের লরি গিয়েছে। এই সহায়তার ক্ষেত্রে সরকারি কোনো অনুদান, সহায়তা বা সহযোগিতা এমনকি মিসরস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসেরও কোনো সম্পর্ক নেই বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
সুতরাং, রমজান উপলক্ষ্যে গাজায় ত্রাণ সহায়তা পাঠিয়েছে বাংলাদেশ সরকার শীর্ষক একটি দাবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।
গত ৪ মার্চ সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল (পুরুষ) শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দল (পুরুষ) এর মধ্যকার তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথমটিতে ৩ রানের জয় পায় শ্রীলঙ্কা। সেই ম্যাচ দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশি ক্রিকেটার জাকের আলির অভিষেক হয়েছে দাবিতে একটি তথ্য বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়,বাংলাদেশি ক্রিকেটার জাকের আলির গত ৪ মার্চে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ বনাম শ্রীলঙ্কার মধ্যকার টি২০ ম্যাচ দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হওয়ার দাবিটি সত্য নয় বরং ২০২৩ সালের অক্টোবরে এশিয়ান গেমসে খেলার মধ্য দিয়ে টি২০ ফরম্যাটে তার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয়।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত ০৪ মার্চ বাংলাদেশ বনাম শ্রীলঙ্কার মধ্যকার টি২০ ম্যাচ পরবর্তী কতিপয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ঐ ম্যাচকে জাকের আলির আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের অভিষেক ম্যাচ দাবি করা হলেও বেশিরভাগ গণমাধ্যমেই(১,২) তার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক ম্যাচ হিসেবে ২০২৩ সালের ৪ অক্টোবরে এশিয়ান গেমসের বাংলাদেশ বনাম মালয়েশিয়ার ম্যাচের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
পরবর্তীতে উক্ত দাবির অধিকতর সত্যতা যাচাইয়ে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে ক্রিকেট বিষয়ক গণমাধ্যম ইএসপিএন ক্রিকইনফো’র ওয়েবসাইটে ২০২৩ সালের ৪ অক্টোবরের এশিয়ান গেমসে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল বনাম মালয়েশিয়া ক্রিকেট দলের (পুরুষ) টি২০ ম্যাচটির সামারি (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়।
সেই ম্যাচে জাকের আলি ১৪ বল খেলে দুই চারে মোট ১৪ রান করেন।
এশিয়ান গেমসে জাকের আলি মোট ৩টি ম্যাচ খেলেন। প্রথমটি ৪ অক্টোবর মালয়েশিয়ার বিপক্ষে, দ্বিতীয়টি ৬ অক্টোবর ভারতের বিপক্ষে এবং তৃতীয়টি ৭ অক্টোবর পাকিস্তানের বিপক্ষে।
এশিয়ান গেমস কি আইসিসি কর্তৃক স্বীকৃত?
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে অলিম্পিক এর ওয়েবসাইটে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর “Asian Games cricket: India reigning champions in men’s and women’s categories – full winners list” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এশিয়ান গেমসে ক্রিকেট ২০১০ সালে আত্নপ্রকাশ করে। কিন্তু তখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল থেকে এশিয়ান গেমসে ক্রিকেটকে আন্তর্জাতিক মর্যাদা দেওয়া হয়নি। তবে, ২০২৩ সালে এশিয়ান গেমসে ক্রিকেটকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল – আইসিসি আন্তর্জাতিক মর্যাদা দেয়।
সেই হিসেবে ২০২৩ সালে জাকের আলির এশিয়ান গেমসে খেলা প্রথম টি২০-ই আন্তর্জাতিক তার টি২০ ক্যারিয়ারের অভিষেক ম্যাচ।
এছাড়া, ইএসপিএন ক্রিকইনফো’র ওয়েবসাইটে জাকের আলির প্রফাইলে তার আন্তর্জাতিক অভিষেক ২০২৩ সালের ৪ অক্টোবরের এশিয়ান গেমসে বাংলাদেশ বনাম মালয়েশিয়ার (আর্কাইভ) ম্যাচ উল্লেখ করা হয়েছে।
মূলত, ২০২৩ সালের ৪ অক্টোবরে এশিয়ান গেমসের বাংলাদেশ বনাম মালয়েশিয়ার ম্যাচের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশি ক্রিকেটার জাকের আলির আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয়। তবে সম্প্রতি গত ৪ মার্চে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ বনাম শ্রীলঙ্কার মধ্যকার টি২০ ম্যাচের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশি ক্রিকেটার জাকের আলির অভিষেক হয়েছে দাবিতে একটি তথ্য কতিপয় গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, গত ০৪ মার্চ বাংলাদেশ জাতীয় পুরুষ ক্রিকেট দলের হয়ে জাকের আলি প্রথম ম্যাচ খেললেও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তার অভিষেক হয় ২০২৩ সালের ০৪ অক্টোবর।
সুতরাং, ২০২৩ সালে এশিয়ান গেমসে জাকের আলি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তার অভিষেক ম্যাচ খেললেও গত ৪ মার্চে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে তার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছে দাবিতে কতিপয় গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।
সম্প্রতি, ক্রিকেটার তানজিম হাসান সাকিব “সৌম্য লিটনকে বাদ দিয়ে তামিমকে নেন একটা ম্যাচেও পারবেনা শ্রীলঙ্কা!” শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে।
ইউটিউবে একই দাবিতে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে(আর্কাইভ)।
এই প্রতিবেদন প্রকাশ অবধি ফেসবুকে প্রচারিত এই ভিডিওটি প্রায় ১ লক্ষ ২৩ হাজার বার দেখা হয়েছে এবং ভিডিওটিতে প্রায় ১২ হাজার পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। ভিডিওটি শেয়ার করা হয়েছে ৯২ বার।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ক্রিকেটার তানজিম হাসান সাকিব “সৌম্য লিটনকে বাদ দিয়ে তামিমকে নেন একটা ম্যাচেও পারবেনা শ্রীলঙ্কা!” শীর্ষক কোনো মন্তব্য করেননি বরং গত ১৩ মার্চ বাংলাদেশ বনাম শ্রীলঙ্কার প্রথম ওডিআই পরবর্তী ম্যাচে তানজিম সাকিবের দেওয়া সাক্ষাৎকারের ভিডিও ফুটেজকে আলোচিত দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে।
অনুসন্ধানের শুরুতে প্রাসঙ্গিক একাধিক কি ওয়ার্ড সার্চ করে সংবাদমাধ্যম কিংবা নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্র হতে আলোচিত দাবির সত্যতা পাওয়া যায়নি।
উক্ত ভিডিওর কিছু কি ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে T Sports এর ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে গত ১৩ মার্চ প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।
উক্ত ভিডিওর, তানজিম হাসান সাকিবের সাক্ষাৎকারের একটি অংশের সাথে আলোচিত ভিডিওটির হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।
Comparison Image By Rumor Scanner
বাংলাদেশের পেস স্কোয়াডে জায়গা করে নেওয়া কতটা কঠিন- এমন প্রশ্নের জবাবে ক্রিকেটার তানজিম হাসান সাকিব উক্ত সাক্ষাৎকারে বলেন, জাতীয় দলে কোন পেসারকে সুযোগ পেতে হলে বেস্ট হয়েই আসতে হবে, গুড হয়ে আসা যাবে না।
এছাড়া সম্পূর্ণ সাক্ষাৎকারটি পর্যবেক্ষণ করেও আলোচিত দাবির সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।
মূলত, গত ১৩ মার্চ বাংলাদেশ বনাম শ্রীলঙ্কা ওডিআই ম্যাচ পরবর্তী সাক্ষাৎকারে এক প্রশ্নের জবাবে ক্রিকেটার তানজিম হাসান বলেন, জাতীয় দলে কোন পেসারকে সুযোগ পেতে হলে বেস্ট হয়েই আসতে হবে, গুড হয়ে আসা যাবে না। তার সে বক্তব্যের ভিডিও ফুটেজ ব্যবহার করেই তিনি “সৌম্য লিটনকে বাদ দিয়ে তামিমকে নেন একটা ম্যাচেও পারবেনা শ্রীলঙ্কা!” শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, পূর্বেও তানজিম সাকিবের নামে ভুয়া মন্তব্য ইন্টারনেটে প্রচারিত হলে সে বিষয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।
সুতরাং, তানজিম হাসান সাকিব “সৌম্য লিটনকে বাদ দিয়ে তামিমকে নেন একটা ম্যাচেও পারবেনা শ্রীলঙ্কা!” শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।
১৬ মার্চ, ২০২৪ : এই প্রতিবেদন প্রকাশ পরবর্তী সময়ে ইউটিউবে একই দাবি সম্বলিত ভিডিও আমাদের নজরে আসার প্রেক্ষিতে উক্ত ভিডিওকে প্রতিবেদনে দাবি হিসেবে যুক্ত করা হলো।
গতকাল ১৩ মার্চ বাংলাদেশ ক্রিকেট দল (পুরুষ) বনাম শ্রীলংকা ক্রিকেট দলের মধ্যকার একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট (ওডিআই) ৩ ম্যাচ সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৬ উইকেটের জয় পায় বাংলাদেশ। সেই ম্যাচে তানজিম হাসান সাকিব তিন উইকেট পান। এরই পরিপ্রেক্ষিতে “সিয়াম পালন অবস্থায় খেলতেছেন তানজিম সাকিব, একাই নিয়েছেন ৩ উইকেট” শীর্ষক দাবিতে একটি তথ্য ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, তানজিম হাসান সাকিবের বাংলাদেশ বনাম শ্রীলঙ্কার প্রথম ওডিআই ম্যাচে রোজা রাখে খেলার দাবিটি সঠিক নয় বরং তিনি সেদিন ম্যাচ চলাকালীন কোমল পানীয় পান করেছিলেন। যখন তিনি কোমল পানীয় পান করছিলেন তখন মাঠ সংশ্লিষ্ট এলাকা চট্টগ্রামে ইফতারের সময় হয়নি।
অনুসন্ধানে D42 নামক একটি ফেসবুক পেজে গতকাল ১৩ মার্চ সরাসরি সম্প্রচারিত বাংলাদেশ বনাম শ্রীলঙ্কার মধ্যকার প্রথম ওডিআই ম্যাচের ভিডিও (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot: Facebook.
ভিডিওতে দেখা যায় তানজিম হাসান তামিম শ্রীলঙ্কার ৪৬ তম ওভারের শেষে পানীয় পান করছেন।
বাংলাদেশ সময় কয়টায় উক্ত ওভারের খেলা হয়েছে তা জানতে অনুসন্ধানে ক্রিকেট বিষয়ক জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ক্রিকবাজের ওয়েবসাইটে গতকাল ১৩ মার্চে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ বনাম শ্রীলঙ্কার ম্যাচের কমেন্টারি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম।
কমেন্টারি থেকে জানা যায়, চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কা প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নামে এবং ৪৮ ওভার ৫ বলে ২৫৫ রানে অল আউট হয়ে যায়। তখন ঘড়িতে বাংলাদেশ সময় ৬ টা ৯ মিনিট বাজছিল।
Screenshot: Cricbuzz.
এছাড়া, অনুসন্ধানে Chandan Commentary নামক ইউটিউব চ্যানেলে গতকাল ১৩ মার্চ সরাসরি সম্প্রচারিত বাংলাদেশ বনাম শ্রীলঙ্কার ম্যাচের কমেন্টারি খুঁজে পাওয়া যায়।
ভিডিও থেকে জানা যায়, শ্রীলঙ্কার প্রথম ইনিংসের ৪২ তম ওভারে মোট ৫ মিনিট ৩২ সেকেন্ড সময় লেগেছে। ৪৩ তম ওভারে সময় লেগেছে ৪ মিনিট ২৮ সেকেন্ড এবং ৪৪ তম ওভারে সময় লেগেছে ৫ মিনিট ২০ সেকেন্ড। অর্থাৎ গড় প্রতি প্রত্যেক ওভারে ৫ মিনিট করে সময় লেগেছে।
তানজিম হাসান সাকিব কোমল পানীয় পান করে ৪৬ তম ওভারের শেষে। অন্য দিকে শ্রীলঙ্কার ইনিংস শেষ হয় ৪৮.৫ ওভারে অর্থাৎ প্রায় ৪৯ ওভারে।
যদি আমরা শ্রীলঙ্কার ইনিংস শেষ হওয়ার ৪৮.৫ ওভার থেকে থেকে ৪৬ তম ওভারের সময় বাদ দিই তাহলে তানজিম সাকিবের কোমল পানীয় পানের আনুমানিক সময় সন্ধ্যা প্রায় ৫ টা বেজে ৫৫ মিনিট।
অন্যদিকে গতকাল ১৩ মার্চ চট্টগ্রামে ইফতারির সময় (আর্কাইভ) ছিল সন্ধ্যা ৬ টা ২ মিনিটে।
অর্থাৎ এই বিশ্লেষণ থেকে বুঝা যাচ্ছে যে তানজিম হাসান সাকিব সেদিন রোজা রাখেননি।
তাছাড়া, অনুসন্ধানে বেসরকারি ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যম চ্যানেল ২৪ এর ওয়েবসাইটে গতকাল ১৪ মার্চ “মাঠে সাকিবের পানি খাওয়া প্রসঙ্গে যা বললেন মুশফিক” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি সংবাদ প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সেই ম্যাচ চলাকালীন মাঠে তানজিম হাসান সাকিব পানি খাওয়ার বিষয়ে মুশফিকুর রহিমকে জিজ্ঞাসা করা হয়। তখন তিনি জানান, যেটা বললেন ওর (সাকিব) অবস্থাটা কী, সেটা কিন্তু ভিন্ন। কারণ, স্বাভাবিক আজকে যেরকম গরম ছিল, ওর জন্য একটু কঠিন ছিল, ক্র্যাম্প হচ্ছিল। পেস বোলারদের জন্য এটা আরও অনেক কঠিন। আপনি যদি খেয়াল করেন, আজকে প্রায় দু-তিনজনের ক্র্যাম্প হচ্ছিল। এটা মানুষের যার যার ব্যক্তিগত মন্তব্য।’
এই প্রতিবেদন থেকেও প্রতীয়মান হয় যে তানজিম হাসান সাকিব সেদিন রোজা রাখেন নি।
মূলত, গতকাল ১৩ মার্চ চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল (পুরুষ) বনাম শ্রীলংকা ক্রিকেট দলের মধ্যকার একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট (ওডিআই) ৩ ম্যাচ সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৬ উইকেটের জয় পায় বাংলাদেশ। সেই ম্যাচে তানজিম হাসান সাকিব তিন উইকেট নিয়ে দলের জয় বড় ভূমিকা রাখেন। ওই ম্যাচ চলাকালীন ও ম্যাচ পরবর্তী সময়ে তানজিম হাসান সাকিব ওই ম্যাচ রোজা রেখে খেলেছিলেন শীর্ষক দাবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে ওই ম্যাচ চালাকালীন সময়ে তানজিম হাসান সাকিব কোমল পানীয় পান করেছেন। যার দৃশ্য খেলা চলাকালীন সময়ে টিভি স্ক্রিনেই দেখানো হয়েছে। তানজিম সাকিব যখন কোমল পানীয় পান করেছেন ওইদিন তখনও চট্টগ্রামে ইফতারের সময় হয়নি।
সুতরাং, গতকাল ১৩ মার্চে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ক্রিকেট দল (পুরুষ) বনাম শ্রীলংকা ক্রিকেট দলের মধ্যকার ওডিআই ম্যাচে তানজিম হাসান সাকিব রোজা রেখে খেলেছিলেন দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভারতে রোজা এবং তারাবী নিষিদ্ধ করা হয়নি এবং সম্প্রতি ভারতে মসজিদে ঢুকে গুলি করে হত্যা করার ঘটনাও ঘটেনি বরং ভিন্ন ঘটনার ভিডিওর সাথে চটকদার থাম্বনেইল ব্যবহার করে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।
অনুসন্ধানের শুরুতে আস-সুন্নাহ টিভি নামক ইউটিউব চ্যানেলে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে গণ অধিকার পরিষদের একাংশের নেতা তারেক রহমানকে কথা বলতে দেখা যায়।
উক্ত ভিডিওটির সাথে একটি অংশের সাথে আলোচিত ভিডিওটির হুবহু মিল রয়েছে।
Video Comparison: Rumor Scanner
উক্ত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে জানা যায়, ভারতে নামাজরত মুসুল্লিদের ওপর পুলিশের হামলার ঘটনার সমালোচনা করে তারেক রহমান এই ভিডিওটি প্রচার করেন। ভিডিওর কোথাও তিনি ভারতে তারাবীর নামাজ ও রোজা রাখা নিষিদ্ধ কিংবা সাম্প্রতিক সময়ের মসজিদে ঢুকে গুলি করে হত্যার কোনো তথ্য প্রদান করেননি।
পরবর্তীতে নামাজরত মুসুল্লিদের ওপর হামলার বিষয়ে অনুসন্ধানে করে বিবিসি এর ওয়েবসাইটে গত ০৯ মার্চ “নামাজিদের লাথি মেরে সাসপেন্ড দিল্লির এক পুলিশ” শীর্ষক শিরোনামে একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়।
উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ০৮ মার্চ ভারতের দিল্লির ইন্দ্রোলোক এলাকায় রাস্তায় জুম্মার নামাজ পড়তে থাকা মুসুল্লিদের সরাতে লাথি দেন এক পুলিশ সাব-ইন্সপেক্টর৷ পরবর্তীতে এই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এই পুলিশ কর্মকর্তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়।
এছাড়া, Nice Tv নামক ইউটিউব চ্যানেলে প্রচারিত ভিডিওতেও ০৮ মার্চের ঘটনা উল্লেখ করে আলোচিত দাবি প্রচার করা হয়। উক্ত ভিডিওতেও দাবির স্বপক্ষে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি।
অর্থাৎ, ভারতে নামাজরত মুসুল্লিদের ওপর হামলার ঘটনাটি গত ০৮ মার্চের। যা রমজান শুরুর আগের ঘটনা।
পরবর্তীতে ভারতে রোজা ও তারাবীর নামাজের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে কিনা এবং সম্প্রতি মসজিদে ঢুকে মুসল্লিকে গুলি করে হত্যার ঘটনা ঘটেছে কিনা বিষয়গুলো নিয়ে অনুসন্ধানে গণমাধ্যম ও বিশ্বস্ত সূত্রে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
মূলত, গত ০৮ মার্চ ভারতের দিল্লির ইন্দ্রোলোক এলাকায় রাস্তায় জুম্মার নামাজ পড়তে থাকা মুসুল্লিদের সরাতে লাথি দেন এক পুলিশ সাব-ইন্সপেক্টর। পরবর্তীতে এই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এই পুলিশ কর্মকর্তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়। উক্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে সমালোচনা করে ভিডিও প্রকাশ করেন গণঅধিকার পরিষদের একাংশের নেতা তারেক রহমান। সেই ভিডিওর সাথে চটকদার থাম্বনেইল ব্যবহার করে ভারতে তারাবী নামাজ পড়া ও রোজা রাখা নিষিদ্ধ এবং মসজিদ ঢুকে মুসল্লিকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রচার করা হয়েছে।
সুতরাং, ভারতে রোজা ও তারাবী নিষিদ্ধ এবং মসজিদে ঢুকে মুসল্লিকে গুলি করে হত্যা করার দাবিগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা।
সম্প্রতি, মাগুরা- ১ আসনের সংসদ সদস্য ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান ও হবিগঞ্জ- ৪ আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমনকে নিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল একটি লাইভ করেছেন এবং সাকিব-সুমনের মধ্যকার দ্বন্দ্বে তিনি সাকিবের পক্ষে নিয়েছেন দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।
এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি উক্ত দাবিতে টিকটকে ভাইরাল একটি ভিডিও-ই প্রায় ৭৪ হাজার ১৪৫ বার দেখা হয়েছে। ভিডিওটিতে প্রায় ২ হাজার ৬৫৮ টি পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সাকিব আল হাসান ও ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমনকে নিয়ে তামিম ইকবাল কোনো লাইভ করেননি বরং ভিন্ন ভিন্ন ঘটনায় প্রকাশিত তাদের তিনজনের পৃথক তিনটি ভিডিওকে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় যুক্ত করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।
অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যালোচনা করে রিউমর স্ক্যানার টিম। এতে তামিম ইকবালকে ‘আসসালামু আলাইকুম সবাইকে, আমরা একটু সিডিউল টাইমের তিন-চার মিনিট আগেই শুরু করে দিচ্ছি আমাদের সেশনটা। কারণ, আমাদের যে গেস্ট ওর ব্যাপারে বলার কিছু নেই। আমার কাছে মনে হয় বিশ্বে এমন কোনো ক্রিকেট ফ্যান নেই যে ওর খেলা এবং ওকে ব্যক্তিগতভাবে পছন্দ করে না। আমি যখনই ওর সাথে খেলেছি তখনই আমি অনেক কিছু শিখতে পেরেছি ওর কাছে থেকে।’ শীর্ষক কথাগুলোর পাশাপাশি আরও কিছু কথা বলতে শুনতে পাওয়া যায়। যার সাথে আলোচিত দাবির কোনো সম্পর্ক নেই।
পাশাপাশি ভিডিওটিতে সাকিব আল হাসানকে ‘আমার মনে হয় উনি ভালো প্লেয়ার। যাকে এই টিমে খেলানো যেতে পারে। কিন্তু যেহেতু এখানে… দেশে থাকতে পারবে না…তো ওভাবে আসলে চলে আসে…ওটার জন্যে মার খেতে হয়েছে অনেকবার…অনেকের অনেকের আসলে এক দুইজনের নাম বলতে গেলে তো আসলে কম বলা হবে…সবার সার্পোটের কারণেই আজকে আসলে এ পর্যন্ত আসা’ শীর্ষক কথা বলতে শোনা যায়।
এছাড়াও ভিডিওটিতে ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমনকে রাজনৈতিক আলাপচারিতা করতে দেখা যায়। তবে তার এই আলাপচারিতা আলোচিত দাবির প্রেক্ষিতে প্রাসঙ্গিক নয়।
এছাড়া ভিডিও ফুটেজগুলো পর্যালোচনার মাধ্যমে তিনজনের বক্তব্যের মধ্যেই অসামঞ্জ্যতা লক্ষ্য করা যায়। যা থেকে এটি ধারণা করা যায় যে ভিডিওগুলো কাট করে করে বক্তব্যগুলো তৈরি করার চেষ্টা করা হয়েছে।
অনুসন্ধানের এ পর্যায়ে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত লাইভ ভিডিওটিতে ব্যবহৃত সাকিব আল হাসানের ভিডিও ক্লিপটির বিষয়ে অনুসন্ধানে কিছু কী-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে দেশীয় ই-কমার্স ওয়েবসাইট দারাজ এর ফেসবুক পেজ Daraz Online Shopping-এ ২০২১ সালের ১ এপ্রিল Shakib Al Hasan Live Adda with Daraz শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি লাইভ ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।
ভিডিওটি পর্যলোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওটির সাকিব আল হাসানের ক্লিপের সাথে উক্ত ভিডিওতে দেখানো সাকিব আল হাসানের পোশাক, ব্যাকগ্রাউন্ডের পাশাপাশি বেশকিছু অংশের হুবহু মিল রয়েছে।
Video Comparison by Rumor Scanner
তাছাড়াও ভিডিওটির বিস্তারিত বিবরণী থেকে জানা যায়, পহেলা বৈশাখ ১৪২৮ উপলক্ষে ই-কমার্স ওয়েবসাইটটি ভিন্ন অফার দেন। যার প্রচারণার জন্যে তারা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের সাথে একটি অনলাইন আড্ডার আয়োজন করেন। উক্ত ভিডিওটি মূলত সেই অনলাইন আড্ডারই।
পরবর্তীতে তামিম ইকবালের ভিডিওটি অনুসন্ধানে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে তামিম ইকবালের ইউটিউব চ্যানেলে ২০২০ সালের ২১ মে #TI28 Tamim Iqbal Live with Kane Williamson শীর্ষক শিরোনামে সরাসরি সম্প্রচারকৃত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।
ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওতে দেখানো তামিম ইকবালের ফুটেজের সাথে উক্ত ভিডিওর বেশকিছু অংশের হুবহু মিল রয়েছে।
Video Comparison by Rumor Scanner
এছাড়াও জানা যায়, উক্ত ভিডিওটি ২০২০ সালে কোভিড-১৯ চলাকালীন সময়ে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট দলের ব্যাটার কেন উইলিয়ামসনকে নিয়ে তামিম ইকবালের ইউটিউব চ্যানেলে করা একটি লাইভ ভিডিও। মূলত, সেসময় তামিম ইকবাল তার ইউটিউব চ্যানেলে দেশী-বিদেশী ক্রিকেটারদের নিয়ে লাইভ আড্ডা দিতেন। উক্ত ভিডিওটিও সেই সময়েরই একটি আড্ডার ভিডিও।
সর্বশেষ ব্যারিস্টার সুমনের ভিডিওটি অনুসন্ধানে আলোচিত ভিডিওর সুমনের অংশের ফুটেজ থেকে কিছু কী-ফ্রেম নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে ‘DW খালেদ মুহিউদ্দীন জানতে চায়’ নামের ইউটিউব চ্যানেলে গত ১২ জানুয়ারি কে সরকারি কে বিরোধী? শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি সরাসরি সম্প্রচারকৃত ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।
উক্ত ভিডিওটির সাথে আলোচিত ভিডিওতে থাকা ব্যারিস্টার সুমনের ফুটেজের কিছু অংশের হুবহু মিল পাওয়া যায়।
Video Comparison by Rumor Scanner
উক্ত ভিডিও থেকে আরও জানা যায়, জার্মানভিত্তিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম DW এর বাংলা বিভাগের প্রধান সাংবাদিক খালেদ মুহিউদ্দীনের জনপ্রিয় টক শো ‘খালেদ মুহিউদ্দীন জানতে চায়’ এর উক্ত পর্বে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি ও ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। উক্ত প্রোগ্রামে খালেদ মুহিউদ্দীন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নানা সময়ে চলা আন্দোলন ও সংসদের বিরোধীদল নিয়ে অতিথিদের সাথে নানা আলোচনা করেন। যার সাথে আলোচিত দাবির কোনো সম্পর্ক নেই।
মূলত, ক্রিকেট তারকা সাকিব আল হাসান ২০২৩ সালে ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনকে দেখে মারতে উদ্ধত হন বলে অভিযোগ তুলে সেসময় নিজের ফেসবুক পেজে একটি লাইভ ভিডিও প্রচার করেন ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন। ভিডিওটিতে তিনি জানান, ভারত-বাংলাদেশ সিরিজ চলাকালে হোটেল সোনারগাঁওয়ে উক্ত ঘটনাটি ঘটে। সাম্প্রতিক সময়ে উভয় ব্যক্তি-ই সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর তাদের পূর্বের দ্বন্দ্বের বিষয়টি পুনরায় ইন্টারনেটে ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়ে। যার প্রেক্ষিতে সম্প্রতি, তামিম ইকবাল মাগুরা- ১ আসনের সংসদ সদস্য ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান ও হবিগঞ্জ- ৪ আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমনকে নিয়ে একটি লাইভ ভিডিও করেছেন দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। যাতে দাবি করা হচ্ছে, সাকিব-সুমন দ্বন্দ্বে তামিম ইকবাল সাকিবের পক্ষ নিয়েছেন। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, তারা তিনজন একত্রে কোনো লাইভে যুক্ত হননি। প্রকৃতপক্ষে, ভিন্ন ভিন্ন ঘটনায় প্রকাশিত তাদের পৃথক কয়েকটি ভিডিওর ফুটেজ ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় যুক্ত করে আলোচিত দাবি সম্বলিত ভিডিওটি প্রচার করা হয়েছে।
সুতরাং, তামিম ইকবাল সংসদ সদস্য সাকিব আল হাসান ও ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমনকে নিয়ে লাইভ করেছেন দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত ভিডিওটি এডিটেড বা সম্পাদিত।
সম্প্রতি, “অবশেষে ফেঁসে গেলেন ওবায়দুল কাদের! এবার সড়ক পরিবহন মন্ত্রীর দুর্নীতি ফাঁস করলেন ব্যারিস্টার সুমন” শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।
দাবি করা হচ্ছে, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের দুর্নীতি ফাঁস করেছেন হবিগঞ্জ- ৪ আসনের নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। যার ফলশ্রুতিতে ওবায়দুল কাদের ব্যারিস্টার সুমনের প্রতি ক্ষিপ্ত হয়েছেন।
টিকটকে প্রচারিত ভিডিওটি এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি প্রায় ৩ লাখ ৭৯ হাজার বার দেখা হয়েছে। ভিডিওটিতে প্রায় ২৬ হাজার ৭০০ পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে এবং ভিডিওটি শেয়ার করা হয়েছে প্রায় ৩ হাজার ৩৫৯ বার।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, দুর্নীতির অভিযোগ তোলায় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ব্যারিস্টার সুমনের ওপর ক্ষিপ্ত হওয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি বরং কোনো প্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই অধিক ভিউ পাওয়ার আশায় ভিন্ন ঘটনার পুরোনো ভিডিওর সাথে চটকদার শিরোনাম এবং থাম্বনেইল ব্যবহার করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।
অনুসন্ধানের শুরুতেই আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওটি ওবায়দুল কাদের এবং ব্যারিস্টার সুমনের ভিন্ন দুইটি ভিডিও ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে।
ওবায়দুল কাদেরের ভিডিও যাচাই
আলোচিত ভিডিওটিতে যুক্ত ওবায়দুল কাদেরের ভিডিও ক্লিপটির বিষয়ে অনুসন্ধানে নিউজ২৪ এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি “সাংবাদিকদের ওপর রেগে গেলেন ওবায়দুল কাদের। Obaidul Quader। News24” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিওর শুরুর দিকের কয়েক সেকেন্ডের অংশটুকুই আলোচিত ভিডিওতে ব্যবহার করা হয়েছে।
Video Comparison : Rumor Scanner
ভিডিওতে সেসময় রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর মনোনয়ন পত্র জমা দিতে ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল নির্বাচন কমিশন ভবনে যায়। সেসময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদেরের রেগে যাওয়ার সময়কার একটি ভিডিও ক্লিপ আলোচিত ভিডিওতে ব্যবহার করা হয়েছে। এই ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবির কোনো প্রাসঙ্গিকতা নেই।
ব্যারিস্টার সুমনের ভিডিও যাচাই
ভিডিওতে যুক্ত ব্যারিস্টার সুমনের ভিডিওটির অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক একাধিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ব্যারিস্টার সুমনের ফেসবুক পেজে ২০২২ সালের ৩ জুন “মাননীয় যোগাযোগ মন্ত্রী, দেখুন সিলেটে কিভাবে চলছে পানির উপরে রাস্তার কার্পেটিং” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওতে যুক্ত ব্যারিস্টার সুমনের ভিডিওটির হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।
Video Comparison : Rumor Scanner
ভিডিওতে ব্যারিস্টার সুমনকে সিলেটের একটি রাস্তা সংস্কারে অনিয়ম প্রসঙ্গে যোগাযোগ মন্ত্রী অর্থাৎ তৎকালীন ও বর্তমান সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে উদ্দেশ্য করে কথা বলতে দেখা যায়। ভিডিওতে তিনি সিলেটের একটি রাস্তা সংস্কারের অনিয়ম তুলে ধরেন। তবে ভিডিওর কোথাও তিনি ওবায়দুল কাদেরকে সরাসরি দায়ি করে কোনো কথা বলেননি।
অর্থাৎ ভিডিও ফুটেজগুলো অপ্রাসঙ্গিকভাবে আলোচিত দাবির ভিডিওতে যুক্ত করা হয়েছে।
এছাড়া, গণমাধ্যম কিংবা অন্য কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্রে আলোচিত দাবির স্বপক্ষে কোনো তথ্য কিংবা সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।
মূলত, ব্যারিস্টার সুমন ২০২২ সালে নিজের ফেসবুক পেজ থেকে সিলেটের একটি রাস্তা সংস্কারে অনিয়ম নিয়ে ক্যাপশনে ওবায়দুল কাদেরকে উদ্দেশ্য করে একটি ভিডিও বার্তা প্রদান করেন। পরবর্তীতে এই ভিডিওটির সাথে ২০২৩ সালে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নে ওবায়দুল কাদেরের রাগান্বিত হওয়ার সময়কার একটি ভিডিও যুক্ত করে সম্প্রতি “অবশেষে ফেঁসে গেলেন ওবায়দুল কাদের! এবার সড়ক পরিবহন মন্ত্রীর দুর্নীতি ফাঁস করলেন ব্যারিস্টার সুমন” শীর্ষক শিরোনামে প্রচার করা হয়।
সুতরাং, দুর্নীতি অভিযোগ তোলায় ব্যারিস্টার সুমনের বিরুদ্ধে ওবায়দুল কাদেরের ক্ষিপ্ত হওয়ার দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি বিভ্রান্তিকর।