Home Blog Page 536

শোয়েব-সানিয়ার ছেলেকে ভারতে ঢুকতে না দেওয়ার হুমকি দিয়ে আসামের মুখ্যমন্ত্রী কোনো টুইট করেননি

সম্প্রতি, তৃতীয় বিয়ে করেছেন পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক শোয়েব মালিক। এর আগে ২০১০ সালে তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করেন ভারতের টেনিস তারকা সানিয়া মির্জাকে। শোয়েব মালিকের নতুন বিয়ের খবর প্রকাশ্যে আসার পর কতিপয় গণমাধ্যমের খবরে দাবি করা হয়েছে, শোয়েব-সানিয়ার ছেলেকে ভারতে ঢুকতে না দেওয়ার হুমকি দিয়ে আসামের মুখ্যমন্ত্রী টুইট করেছেন। দাবি করা হচ্ছে, উক্ত টুইটে তিনি লিখেছেন, ‘কোনো ভাবেই সানিয়া মির্জা এবং তার সন্তানকে ভারতের নাগরিকত্ব দেব না। কারো নির্বুদ্ধিতার দায় ভারত নেবে না।’ 

শোয়েব-সানিয়ার

উক্ত দাবিতে প্রকাশিত গণমাধ্যমের প্রতিবেদন দেখুন যুগান্তর, আজকের দর্পণ, জুম বাংলা, ফ্রিডম বাংলা নিউজ, বাংলাদেশ মোমেন্টস। 

একই দাবিতে গণমাধ্যমের ফেসবুক পেজের পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, শোয়েব-সানিয়ার ছেলেকে ভারতে ঢুকতে না দেওয়ার হুমকি দিয়ে আসামের মুখ্যমন্ত্রী কোনো টুইট করেননি বরং মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার নামে পরিচালিত একটি স্যাটায়ার এক্স অ্যাকাউন্ট থেকে প্রচারিত উক্ত টুইটটিকে হিমন্ত বিশ্ব শর্মার বাস্তব টুইট দাবিতে গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার ভেরিফায়েড এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্ট পর্যবেক্ষণ আলোচিত দাবিতে কোনো টুইটের অস্তিত্ব মেলেনি। 

পরবর্তীতে আরো অনুসন্ধান করে ‘हिमंता बिस्वा शर्मा – Himanta Bishwa Sharma Satire’ নামে একটি ভেরিফায়েড এক্স অ্যাকাউন্টে গত ২০ জানুয়ারি প্রকাশিত আলোচিত টুইটটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: X

এই অ্যাকাউন্টটি এখন আর সচল নেই। তবে আলোচিত এই অ্যাকাউন্টের নামে স্যাটায়ার বা ব্যাঙ্গাত্মক শব্দটির উপস্থিতিই জানান দিচ্ছে, এটি একটি স্যাটায়ার অ্যাকাউন্ট। 

তাছাড়া, এই অ্যাকাউন্টের ইউজার নেম HimantaBishwaa। অন্যদিকে হিমন্ত বিশ্ব শর্মার মূল অ্যাকাউন্টটির ইউজার নেম himantabiswa। অর্থাৎ, দুই অ্যাকাউন্টের ইউজার নেমের বানানেও পার্থক্য রয়েছে।

মূলত, সম্প্রতি পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক শোয়েব মালিকের তৃতীয় বিয়ের খবর প্রকাশ্যে এসেছে। এর আগে ২০১০ সালে তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করেন ভারতের টেনিস তারকা সানিয়া মির্জাকে। শোয়েব মালিকের নতুন বিয়ের খবরের প্রেক্ষিতে কতিপয় গণমাধ্যমের খবরে দাবি করা হয়েছে, শোয়েব-সানিয়ার ছেলেকে ভারতে ঢুকতে না দেওয়ার হুমকি দিয়ে আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা টুইট করেছেন, যেখানে তিনি লিখেছেন, ‘কোনো ভাবেই সানিয়া মির্জা এবং তার সন্তানকে ভারতের নাগরিকত্ব দেব না। কারো নির্বুদ্ধিতার দায় ভারত নেবে না।’ কিন্তু রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আসামের মুখ্যমন্ত্রী এমন কোনো টুইট করেননি। প্রকৃতপক্ষে, মুখ্যমন্ত্রীর নামে পরিচালিত একটি স্যাটায়ার এক্স অ্যাকাউন্ট থেকে উক্ত টুইটটি করা হয় যা হিমন্ত বিশ্ব শর্মার বাস্তব টুইট দাবিতে গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

সুতরাং, একটি স্যাটায়ার এক্স অ্যাকাউন্ট থেকে প্রকাশিত একটি টুইটকে আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার বাস্তব টুইট দাবিতে গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

  • Himanta Biswa Sarma: X Account 
  • हिमंता बिस्वा शर्मा – Himanta Bishwa Sharma Satire: Tweet

‘বাংলাদেশের অনূর্ধ্ব ১৯ ছেলেদের খেলা দেখে মনে হয়, বাড়িতে বাবা মা শিক্ষা দেয়নি’ শীর্ষক মন্তব্য করেননি শোয়েব আখতার 

0

সম্প্রতি, “বাংলাদেশে অনূর্ধ্ব ১৯ ছেলেদের খেলা দেখে মনে হয়, বাড়িতে বাবা মা শিক্ষা দেয়নি” শীর্ষক একটি মন্তব্যকে পাকিস্তানি কিংবদন্তি পেস বোলার শোয়েব আখতারের মন্তব্য দাবিতে তার ছবি যুক্ত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

শোয়েব আখতার 

বাংলাদেশে প্রচারিত ভাইরাল একটি পোস্টে এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি প্রায় ২৩ হাজার পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। কমেন্ট পড়েছে প্রায় ৬০০ এবং শেয়ার হয়েছে ৩৮৯ বার।

উক্ত দাবিতে বাংলাদেশে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ওপার বাংলায় প্রচারিত এমন একটি পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ওপার বাংলায় প্রচারিত ভাইরাল পোস্টটি এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি প্রায় ৫৯১ বার শেয়ার হয়েছে এবং মন্তব্য পড়েছে প্রায় ৬ হাজার ৯০০। সেসব মন্তব্য বিশ্লেষণে দেখা যায় বিষয়টিকে অনেক ভারতীয়রা সত্য হিসেবে মেনে নিয়ে মন্তব্য করেছেন অপরদিকে বাংলাদেশি কিছু অ্যাকাউন্ট থেকে এর বিরোধিতা করতে দেখা গেছে। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, পাকিস্তানি কিংবদন্তি পেস বোলার শোয়েব আখতার ‘বাংলাদেশের অনূর্ধ্ব ১৯ ছেলেদের খেলা দেখে মনে হয়, বাড়িতে বাবা মা শিক্ষা দেয়নি’ শীর্ষক মন্তব্য করেননি বরং কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই ভিত্তিহীনভাবে উক্ত মন্তব্যটি শোয়েব আখতারের নামে প্রচার করা হয়েছে। 

গুজবের সূত্রপাত 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে কিওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ‘রক্তে আমার ক্রিকেট ২.০’ নামক ভারতীয় একটি ফেসবুক পেজে গত ২১ জানুয়ারি দুপুর ১ টা ৩৩ মিনিটে “বাংলাদেশের অনূর্ধ্ব ১৯ ছেলেদের খেলা দেখে মনে হয় বাড়িতে বাবা মা শিক্ষা দেয়নিl” শীর্ষক ক্যাপশনে ফটোকার্ড (আর্কাইভ) সম্বলিত  সম্ভাব্য প্রথম পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত পোস্টের কোথাও শোয়েব আখতার এমন মন্তব্য করেছেন দাবিটির স্বপক্ষে কোনো প্রকার তথ্যসূত্রের উল্লেখ পাওয়া যায়নি। 

Screenshot : Claim Post 

পরবর্তীতে পোস্টটি পর্যবেক্ষণে এর মন্তব্য ঘরে ‘বাংলাদেশের উগ্র সমর্থকদের সাইজ করার জন্য আমাদের এই পেজ রক্তে আমার ক্রিকেট ২.০ ফলো দেও’ শীর্ষক মন্তব্য খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot : Facebook Post 

এর সূত্র ধরে পোজটি পর্যবেক্ষণে দেখা যায় এটি একটি ট্রল পেজ যেখানে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে নিয়ে একাধিক ট্রল পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়।

শোয়েব আখতার কি এমন মন্তব্য করেছেন? 

আলোচিত দাবিটি নিয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে শোয়েব আখতারের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ, এক্স অ্যাকাউন্ট (সাবেক টুইটার) এবং ইউটিউব চ্যানেল পর্যবেক্ষণে দক্ষিণ আফ্রিকায় চলমান অনূর্ধ্ব -১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব ১৯ দলের খেলা তার কোনো মন্তব্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

এছাড়া প্রাসঙ্গিক একাধিক কিওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে গণমাধ্যম কিংবা নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্রে আলোচিত দাবিটির সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

মূলত, পাকিস্তানি কিংবদন্তি পেস বোলার শোয়েব আখতারের মন্তব্য দাবিতে ইন্টারনেটে একটি তথ্য প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে তিনি বলেছে, ‘বাংলাদেশে অনূর্ধ্ব ১৯ ছেলেদের খেলা দেখে মনে হয়, বাড়িতে বাবা মা শিক্ষা দেয়নি’। তবে রিউমর স্ক্যানার অনুসন্ধানে দেখেছে যে শোয়েব আখতার বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব -১৯ ক্রিকেট টিমকে নিয়ে এরূপ কোনো মন্তব্য করেননি। প্রকৃতপক্ষে কোনো প্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই ভিত্তিহীনভাবে আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। 

প্রসঙ্গত, গত ১৯ জানুয়ারি দক্ষিণ আফ্রিকা বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিসের মধ্যকার ম্যাচ দিয়ে শুরু হয় অনূর্ধ্ব- ১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০২৪। বাংলাদেশ টিম ভারতের মুখোমুখি হয় গত ২০ জানুয়ারি। উক্ত ম্যাচে ভারত ৮৪ রানে জয়লাভ করে। 

সুতরাং, ‘বাংলাদেশে অনূর্ধ্ব ১৯ ছেলেদের খেলা দেখে মনে হয়, বাড়িতে বাবা মা শিক্ষা দেয়নি’ শীর্ষক মন্তব্যকে শোয়েব আখতারের মন্তব্য দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে ; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র 

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে জাতিসংঘ মহাসচিবের পাঠানো চিঠিটি আসল

সম্প্রতি একাধিক গণমাধ্যমে পুনরায় প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস অভিনন্দন জানিয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন দাবিতে সংবাদ প্রচার করা হয়েছে। আবার কতিপয় ফেসবুক ব্যবহারকারী ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এই চিঠি ভুয়া দাবি করেছেন। ফলে চিঠিটি আসল নাকি নকল এ নিয়ে জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে।

জাতিসংঘ

চিঠিটি নকল দাবি করে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

গত ২১ জানুয়ারি রোববার নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না ‘সরকার জাতিসংঘ মহাসচিবের চিঠি নিয়ে জালিয়াতি করেছে’ দাবি করে বক্তব্য দিয়েছেন। গণমাধ্যমে প্রচারিত এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন দেখুন এখানে (আর্কাইভ), বক্তব্যের ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে টিকটকে প্রচারিত কিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, পুনরায় প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ায় শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস স্বাক্ষরিত ইন্টারনেটে প্রচারিত চিঠিটি আসল।

অনুসন্ধানের শুরুতে সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাতের এক্স আইডিতে গত ২০ জানুয়ারি প্রচারিত এক পোস্টে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পাঠানো চিঠির ছবি খুঁজে পাই। উক্ত পোস্টে আরাফাত জানান চিঠিটি বাংলাদেশ সময় ১৯ জানুয়ারি পাঠানো হয়েছে। 

পরবর্তীতে আলোচ্য চিঠির সত্যতা যাচাইয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিকের সাথে ই-মেইলে যোগাযোগ করি আমরা। চিঠিটি আসল নিশ্চিত করে স্টিফেন ডুজারিক আমাদের জানান, “হ্যাঁ, এমন একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে আমি নিশ্চিত করতে পারি। এটা উল্লেখ করা গুরুত্বপূর্ণ যে, নির্বাচনের পর মহাসচিব সাধারণত সরকারের প্রধান এবং রাষ্ট্রপ্রধানদের কাছে এই ধরনের চিঠি পাঠানোর প্রথা অনুসরণ করেন।”

মূলত, টানা চতুর্থবারের মত সরকার গঠন করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন বিষয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস স্বাক্ষরিত একটি চিঠি ইন্টারনেটে ভাইরাল হয়েছে এবং অনেকেই চিঠিটি ভুয়া দাবি করে ইন্টারনেটে প্রচার করেছেন। এমনকি একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এই চিঠিটি ভুয়া যাবি করে বক্তব্য দিয়েছেন। তবে, জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক চিঠিটি আসল বলে রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করেছেন।

সুতরাং, পুনরায় প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ায় শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস স্বাক্ষরিত ইন্টারনেটে প্রচারিত চিঠিটি ভুয়া দাবি করে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্টগুলো মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

অষ্টম শ্রেণির বিজ্ঞান বইয়ে হিলিয়াম পরমাণু নিয়ে ভুল তথ্য

0

দেশে চলতি বছর থেকে অষ্টম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষা কারিকুলাম বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। নতুন কারিকুলামের বিজ্ঞান (অনুসন্ধানী পাঠ) বইয়ের একটি ভুল নিয়ে নেটিজেনদের মধ্যে সমালোচনা দেখেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

যে ভুল নিয়ে আলোচনা

অষ্টম শ্রেণির বিজ্ঞান (অনুসন্ধানী পাঠ) বইয়ের ৩য় অধ্যায়ের (পরমাণুর গঠন) ২৮ নং পৃষ্ঠায় পরমাণু এবং পারমাণবিক মডেলের ধারণার উৎপত্তি ও বিকাশ শিরোনামের প্যারায় একটি চিত্র দেওয়া হয়েছে যেখানে একটি নিউক্লিয়াস এঁকে  হিলিয়াম পরমাণুর ইলেকট্রন, প্রোটন ও নিউট্রনের অবস্থান দেখানো হয়েছে। 

চিত্রটির চিহ্নিতকরণ অংশে দাবি করা হয়েছে, হালকা লাল (ধনাত্মক চার্জ) চিহ্নিত অংশটি ইলেকট্রন, হালকা আকাশী (চার্জ নিরপেক্ষ) চিহ্নিত অংশটি প্রোটন এবং হালকা কমলা (ঋণাত্মক চার্জ) চিহ্নিত অংশটি নিউট্রন। এই চিহ্নিতকরণে মাধ্যমে এটাই বোঝাচ্ছে যে, হিলিয়াম নিউক্লিয়াসের বাইরের অংশে ঘূর্ণায়মান থাকে নিউট্রন এবং ভেতরের অংশে ইলেকট্রন ও প্রোটনের অবস্থান।  

হিলিয়াম পরমাণু

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, অষ্টম শ্রেণির বিজ্ঞান (অনুসন্ধানী পাঠ) বইয়ে একটি নিউক্লিয়াসে হিলিয়াম পরমাণুতে ইলেকট্রন, প্রোটন ও নিউট্রনের যে অবস্থান দেখানো হয়েছে তা সঠিক নয় বরং ভুল চিহ্নিতকরণের মাধ্যমে নিউক্লিয়াসের বাইরে ঘূর্ণায়মান ইলেকট্রনকে ভেতরে ঘূর্ণায়মান বলে দাবি করা হয়েছে। একইভাবে নিউক্লিয়াসের ভেতরে ঘূর্ণায়মান চার্জ নিরপেক্ষ নিউট্রনকে ঋণাত্মক চার্জবিশিষ্ট এবং ধনাত্মক চার্জবিশিষ্ট প্রোটনকে চার্জ নিরপেক্ষ বলে দাবি করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে যুক্তরাজ্যের বিজ্ঞান বিষয়ক ওয়েবসাইট Phys.org এ Who discovered helium? শিরোনামের একটি প্রতিবেদনে হিলিয়াম পরমাণুর একটি থ্রিডি ছবি খুঁজে পাওয়া যায়৷ এতে দেখা যায়, নিউক্লিয়াসের ভেতরে ঘূর্ণায়মান রয়েছে ধনাত্মক চার্জের প্রোটন এবং চার্জ নিরপেক্ষ নিউট্রন। এছাড়া, নিউক্লিয়াসের বাইরের অংশে ঘূর্ণায়মান রয়েছে ঋণাত্মক চার্জের ইলেকট্রন।

Screenshot source: Phys.org 

আরো অনুসন্ধান করে যুক্তরাষ্ট্রের হিউস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের (The University of Houston) ওয়েবসাইটে হিলিয়াম বিষয়ক এক আলোচনাতেও হিলিয়াম পরমাণুর প্রায় একই মডেলের ছবির সন্ধান মেলে। এখানেও ইলেকট্রন, প্রোটন এবং নিউট্রনের বিষয়ে একই তথ্যের উল্লেখ পাওয়া যায়৷ 

Screenshot source: The University of Houston

বিবিসি জানাচ্ছে, একটি হিলিয়াম পরমাণুতে দুইটি ঋণাত্মক চার্জবিশিষ্ট ইলেকট্রন থাকে যারা নিউক্লিয়াসের বাইরে অবস্থান করে৷ এছাড়া, পরমাণুটির দুইটি ধনাত্মক চার্জবিশিষ্ট প্রোটন রয়েছে যা নিউক্লিয়াসের ভেতরে চার্জ নিরপেক্ষ দুইটি নিউট্রনের সাথে থাকে।  

Screenshot source: BBC

মূলত, দেশে এ বছর থেকে অষ্টম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষা কারিকুলাম চালু হয়েছে। উক্ত শ্রেণির বিজ্ঞান (অনুসন্ধানী পাঠ) বইয়ের ৩য় অধ্যায়ে একটি চিত্র দেওয়া হয়েছে যেখানে একটি নিউক্লিয়াস এঁকে হিলিয়াম পরমাণুর ইলেকট্রন, প্রোটন ও নিউট্রনের অবস্থান দেখানো হয়েছে। দাবি করা হয়েছে, হালকা লাল (ধনাত্মক চার্জ) চিহ্নিত অংশটি ইলেকট্রন, হালকা আকাশী (চার্জ নিরপেক্ষ) চিহ্নিত অংশটি প্রোটন এবং এরা নিউক্লিয়াসের ভেতরে অবস্থান করছে। এছাড়া হালকা কমলা (ঋণাত্মক চার্জ) চিহ্নিত অংশটি নিউট্রন এবং এটি নিউক্লিয়াসের বাইরের অংশে ঘূর্ণায়মান থাকে। কিন্তু রিউমর স্ক্যানার টিম অনুসন্ধানে জেনেছে, এই চিত্রটির চিহ্নিতকরণ সঠিকভাবে করা হয়নি। প্রকৃতপক্ষে, নিউক্লিয়াসের ভেতরে ঘূর্ণায়মান রয়েছে ধনাত্মক চার্জের প্রোটন এবং চার্জ নিরপেক্ষ নিউট্রন। এছাড়া, নিউক্লিয়াসের বাইরের অংশে ঘূর্ণায়মান রয়েছে ঋণাত্মক চার্জের ইলেকট্রন। চিহ্নিতকরণের ভুলে প্রোটন, নিউট্রন এবং ইলেকট্রনের ভুল অবস্থান দেখানো হয়েছে বইটিতে। 

প্রসঙ্গত, গেল কয়েক বছর ধরেই পাঠ্যবইয়ে থাকা ভুলের বিষয়ে নিয়মিত ফ্যাক্টচেক প্রকাশ করে আসছে রিউমর স্ক্যানার। দেখুন এখানে।

সুতরাং, চিত্রের ভুল চিহ্নিতকরণের কারণে অষ্টম শ্রেণির বিজ্ঞান (অনুসন্ধানী পাঠ) বইয়ে হিলিয়াম নিউক্লিয়াসে ইলেকট্রন, প্রোটন ও নিউট্রনের ভুল অবস্থান দেখানো হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

ভারতের কর্ণাটকের মসজিদকে বাবরি মসজিদের ছবি দাবিতে প্রচার 

0

সম্প্রতি, ভারতের অযোধ্যার বাবরি মসজিদের ছবি দাবিতে একটি ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে।

বাবরি মসজিদ

উক্ত ছবিযুক্ত ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

একই ছবিযুক্ত টিকটকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

একই ছবি যু্ক্ত করে সম্প্রতি গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন- ইনডিপেনডেন্ট টিভি (ইউটিউব)।

২০১৯ সালে একই ছবি ব্যবহার করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে- কালের কণ্ঠ। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রচারিত মসজিদের ছবিটি বাবরি মসজিদের নয় বরং ভারতের কর্ণাটকের গুলবার্গার ফোর্টে অবস্থিত একটি জামে মসজিদের ছবিকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে বিশ্বকোষ হিসেবে পরিচিত এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকার ওয়েবসাইটের কিডস শাখার ওয়েবসাইটে মূল ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Britannica Kids

ছবিটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, ভারতের কর্ণাটকের গুলবার্গার ফোর্টে অবস্থিত জামে মসজিদের ছবি এটি। ছবিটি তুলেছেন জন হেনরি রাইস নামে এক ব্যক্তি। 

মূলত, গত ২২ জানুয়ারি অযোধ্যার রামমন্দির উদ্বোধন করা হয় ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই স্থানেই দাঁড়িয়ে ছিল বাবরি মসজিদ। ২০১৯ সালে সুপ্রিম রায়ের পর শুরু হয়েছিল রামমন্দির নির্মাণের কাজ। এর প্রেক্ষিতে বাবরি মসজিদের দাবিতে একটি ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত ছবিটি বাবরি মসজিদের নয়। প্রকৃতপক্ষে, এটি ভারতের কর্ণাটকের গুলবার্গার ফোর্টে অবস্থিত জামে মসজিদের ছবি। 

সুতরাং, ভারতের ভিন্ন স্থানের মসজিদের ছবিকে বাবরি মসজিদের ছবি দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

  • Britannica Kids- Photo
  • Rumor Scanner’s Own Analysis  

এটি বাবরি মসজিদ প্রাঙ্গনে নামাজ আদায়ের দৃশ্য নয়  

0

সম্প্রতি, ভারতের অযোধ্যার বাবরি মসজিদের সামনে মুসুল্লিদের নামাজ আদায়ের দৃশ্য দাবিতে একটি ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। 

বাবরি মসজিদ

উক্ত ছবিযুক্ত ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

একই ছবি ব্যবহার করে গণমাধ্যমের প্রতিবেদন দেখুন ইত্তেফাক (ইউটিউব)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, মুসুল্লিদের নামাজ আদায়ের দৃশ্যের প্রচারিত ছবিটি বাবরি মসজিদ এলাকার নয় বরং এটি ২০০৮ সালে নয়াদিল্লির একটি মসজিদ প্রাঙ্গণে মুসুল্লিদের ঈদুল আযহার নামাজ আদায়ের দৃশ্য। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আন্তজার্তিক গণমাধ্যম AP এর ওয়েবসাইটে মূল ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: AP

ছবিটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, ২০০৮ সালের ৯ ডিসেম্বর ফটোগ্রাফার গুরিন্দর ওসান ছবিটি তুলেছিলেন। সেসময় ভারতের নয়াদিল্লির ফিরোজ শাহ কোটলা মসজিদে ঈদুল আযহার নামাজ আদায়ের দৃশ্য এটি।

মূলত, গত ২২ জানুয়ারি অযোধ্যার রামমন্দিরে প্রাণপ্রতিষ্ঠা হল রামলালার। ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই স্থানেই দাঁড়িয়ে ছিল বাবরি মসজিদ। ২০১৯ সালে সুপ্রিম রায়ের পর শুরু হয়েছিল রামমন্দির নির্মাণের কাজ। এর প্রেক্ষিতে বাবরি মসজিদ প্রাঙ্গনে মুসুল্লিদের নামাজ আদায়ের দৃশ্য দাবিতে একটি ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত ছবিটি বাবরি মসজিদ প্রাঙ্গণে মুসুল্লিদের নামাজ আদায়ের দৃশ্যের নয়। প্রকৃতপক্ষে, ছবিটি নয়াদিল্লির ফিরোজ শাহ কোটলা এলাকায় অবস্থিত একটি মসজিদ প্রাঙ্গণে মুসুল্লিদের ঈদুল আযহার নামাজ পড়ার দৃশ্যের যা ২০০৮ সালে ধারণ করা হয়েছিল।

সুতরাং, ভারতের ভিন্ন স্থানের পুরোনো ছবিকে বাবরি মসজিদ প্রাঙ্গণে মুসুল্লিদের নামাজ পড়ার দৃশ্য দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

“গে”দের দিন শেষ নগদের বাংলাদেশ” শীর্ষক শিরোনামে নগদ কোনো ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি

0

সম্প্রতি “গে” দের দিন শেষ নগদের বাংলাদেশ” শীর্ষক শিরোনামে একটি ফটোকার্ড আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান নগদ প্রকাশ করেছে দাবিতে একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার হয়েছে।

নগদের বাংলাদেশ

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, “গে” দের দিন শেষ নগদের বাংলাদেশ” শীর্ষক ফটোকার্ড নগদ প্রকাশ করেনি বরং নগদের ফটোকার্ড দাবিতে প্রচারিত ছবিটি বানোয়াট। নগদের পক্ষ থেকেও বিষয়টিকে ভুয়া হিসেবে রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচ্য ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করি আমরা। শুরুতেই নজরে পড়ে ফটোকার্ডের কোণায় থাকা নগদের লোগো। সম্প্রতি নিজেদের লোগো পরিবর্তন করেছে নগদ। তবে আলোচ্য ফটোকার্ডটিতে পুরোনো লোগো ব্যবহার করা হয়েছে। লোগো পরিবর্তনের পরবর্তী সময় নগদের ফেসবুক পেজে প্রচারিত অন্যান্য ফটোকার্ডগুলোতে নতুন লোগো ব্যবহার করা হলেও আলোচ্য ফটোকার্ডে পুরোনো লোগো ব্যবহার সন্দেহের সৃষ্টি করে। 

Screenshot: Facebook

আলোচ্য দাবির সাথে একটি স্ক্রিনশট প্রচার হতে দেখি আমরা। স্ক্রিনশটে দেখা যাচ্ছে ‘Nogad’ নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে আলোচ্য ফটোকার্ড প্রচার করা হয়েছে। 

Image: Facebook

তবে স্ক্রিনশটটি ভালোভাবে লক্ষ্য করলে বুঝা যায় উক্ত পেজটি ভুয়া। পেজের নামের বানানে ‘Nogad’ ব্যবহৃত হয়েছে, যেখানে নগদের ইংরেজি নামের বানান ‘Nagad’। নগদের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজও ‘Nagad’ নামে।

পরবর্তীতে ‘Nogad’ নামের উক্ত ভুয়া পেজটি খোঁজার চেষ্টা করি আমরা। ফেসবুকে সার্চ করে ৩ লাইকের একটি পেজ পাই। তবে এই পেজে ২০২৩ সালের ২ সেপ্টেম্বর সর্বশেষ পোস্ট করা হয়েছে। তাছাড়া ফেসবুক সার্চে প্রাপ্ত পেজের প্রোফাইল ফটোর সাথে উক্ত স্ক্রিনশটে থাকা ফেসবুক পেজের প্রোফাইল ফটোর অমিল রয়েছে। এই নামে আর কোনো ফেসবুক পেজও পাইনি আমরা। এর দুইটি সম্ভাব্য কারণ হতে পারে, হয় উক্ত স্ক্রিনশটটি এডিটেড অথবা যে পেজ থেকে পোস্টটি করা হয়েছে তা বর্তমানে আনপাবলিশ অবস্থায় রয়েছে। নিশ্চিত কারণ না জানা গেলেও এটি নিশ্চিত যে উক্ত স্ক্রিনশটটি নগদের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজের নয়।

বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করতে নগদের মিডিয়া এন্ড কমিউনিকেশন বিভাগের প্রধান মুহাম্মদ জাহিদুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করি আমরা। তিনি আমাদের জানান, “আমরা (নগদ) এমন ফটোকার্ড প্রকাশ করিনি।”

জাহিদুলের সাথে যোগাযোগের পরবর্তী সময় গত ২৩ জানুয়ারি নগদের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে করা এক পোস্টে আলোচিত ফটোকার্ডটিকে অপপ্রচার উল্লেখ করে জানায়, “নগদের নামে ছড়ানো এই ছবিটি তাদের তৈরি নয়। নগদের কোনো সোশ্যাল মিডিয়া পেইজ থেকেও এমন কোনো পোস্ট করা হয়নি। বিভ্রান্তি ও গুজব এড়াতে তাদের ওয়েবসাইট ও অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজের সাথে থাকার অনুরোধ করা হয়।”

Screenshot: Facebook

মূলত, বাংলাদেশি আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান নগদ “গে”দের দিন শেষ নগদের বাংলাদেশ” শীর্ষক একটি ফটোকার্ড প্রকাশ করেছে দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ভাইরাল পোস্টে নগদের যে লোগোটি দেখা যাচ্ছে সেটি পুরোনো। নগদ সম্প্রতি তাদের লোগো পরিবর্তন করে নতুন লোগো ব্যবহার করেই পেজে নিয়মিত পোস্ট করছে। Nogad নামের যে পেজের স্ক্রিনশট ভাইরাল হয়েছে, সেটিও ভুয়া পেজ। নগদের পক্ষ থেকেও বিষয়টিকে ভুয়া হিসেবে নিশ্চিত করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি জাতীয় শিক্ষাক্রমের সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সমাজবিজ্ঞান বইয়ে ট্রান্সজেন্ডার বিষয়ক আলোচনা রয়েছে দাবি করে উক্ত পাঠ্যবই ছিঁড়ে আলোচনায় আসে বেসরকারি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের খণ্ডকালীন শিক্ষক আসিফ মাহতাব। এরপরই তাকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ‘চাকরিচ্যুত’ করেছে বলে অভিযোগ করেন আসিফ। পরবর্তীতে সারাদেশের ব্র্যাকের সকল পণ্য ও সেবা বয়কটের ডাক উঠে। এরই প্রেক্ষিতে ব্র্যাক মালিকানাধীন মোবাইল ব্যাংকিং সেবা বিকাশ বয়কটের ডাক উঠে। 

সুতরাং, নগদের নাম ব্যবহার করে “গে”দের দিন শেষ নগদের বাংলাদেশ” শীর্ষক শিরোনামে ইন্টারনেটে প্রচারিত ফটোকার্ডটি ভুয়া।

তথ্যসূত্র

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক খণ্ডকালীন শিক্ষক আসিফ মাহতাব উৎস গ্রেফতার হননি 

0

সম্প্রতি, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিলোসফির সদ্য সাবেক খণ্ডকালীন শিক্ষক আসিফ মাহতাব উৎসের সপ্তম শ্রেণীর পাঠ্যবইয়ের ‘মানুষে মানুষে সাদৃশ্য ও ভিন্নতা’ অধ্যায়ের  ‘শরীফার গল্প’ অংশের পাতা ছিঁড়ে প্রতিবাদ জানানোর ঘটনায় ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম ইউটিউবে “প্রকাশ্যে বই ছিড়ে ফেলায় আসিফ মাহাতাব গ্রেপ্তার সমকামীতা জায়েজ করলো Bd latest news” শীর্ষক শিরোনাম এবং “প্রকাশ্যে বই ছিড়ে আসিফ মাহতাব গ্রেফতার” শীর্ষক থাম্বনেইলে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।  

উক্ত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ট্রান্সজেন্ডার ইস্যুতে প্রতিবাদ জানাতে প্রকাশ্যে সপ্তম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ের পৃষ্ঠা ছিঁড়ে ফেলার ঘটনায় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিলোসফির সদ্য সাবেক খণ্ডকালীন শিক্ষক আসিফ মাহতাব উৎস গ্রেফতার হননি বরং তিনি তার সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্টে সরব থাকার পাশাপাশি গণমাধ্যমেও নিয়মিত কথা বলছেন।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ভিডিওটিতে আসিফ মাহতাব এবং গণ অধিকার পরিষদের একাংশের নেতা  মোঃ তারেক রহমানের একটি ভিডিও দেখানো হয়। ভিডিওতে আসিফ মাহতাবকে দেখা গেলেও তাকে গ্রেফতারের কোনো দৃশ্য দেখা যায়নি। ভিডিওতে দাবিটি প্রসঙ্গে চ্যানেলটির উপস্থাপক বলেন, ‘আপনারা আশ্চর্য হবেন ৯৬ ভাগ মুসলমানের দেশে এই সমকামিতা প্রমাণ করার জন্য জায়েজ করার জন্য কিভাবে উঠেপড়ে লেগেছে ব্র্যাক প্রতিষ্ঠান। তাদের এত সাহস হল কোথা থেকে…।”

ভিডিওতে থাকা দাবিটি নিয়ে অনুসন্ধানে মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে এরূপ কোনো দাবির সত্যতা পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে উক্ত ভিডিওটিতে দেখানো দুইটি ভিডিও ক্লিপের বিষয়ে পৃথকভাবে অনুসন্ধান চালায় রিউমর স্ক্যানার টিম।

ভিডিও যাচাই – ০১ 

আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওতে যুক্ত আসিফ মাহতাবের ভিডিওটির অনুসন্ধানে কিওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে আসিফ মাহতাবের ফেসবুক পেজে গত ১৯  জানুয়ারি “নতুন ট্রান্সজেন্ডার আইন এবং ক্লাস ৭ এর বাচ্চাদের পাঠ্য বইয়ে ট্রান্সজেন্ডার গল্প ঢুকিয়ে তাদের মগজধোলাই করে ট্রান্সজেন্ডার বানানোর নতুন সিলেবা।” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

Video Comparison : Rumor Scanner

এই ভিডিওটির একটি অংশই আলোচিত ভিডিওটিতে যুক্ত করা হয়েছে। 

ভিডিওতে আসিফ মাহতাবকে রাজধানীর কাকরাইলে ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সে জাতীয় শিক্ষক ফোরাম কর্তৃক আয়োজিত‘বর্তমান কারিকুলামে নতুন পাঠ্যপুস্তক : বাস্তবতা ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক সেমিনারে সপ্তম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে ট্রান্সজেন্ডারের গল্প ঢুকিয়ে শিক্ষার্থীদের মগজধোলাই করা হচ্ছে এমন অভিযোগ করে পাঠ্যবই থেকে ‘শরীফ থেকে শরীফা’ হওয়ার গল্পের পাতা ছিঁড়ে ফেলতে দেখা যায়। তবে ভিডিওর কোথায় তাকে গ্রেফতারের কোনো দৃশ্য দেখা যায়নি। 

ভিডিও যাচাই – ২ 

দ্বিতীয় ভিডিওটির অনুসন্ধানে কিওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ‘তারেক/ গণ অধিকার পরিষদ’ নামক ফেসবুক পেজে গত ২২ জানুয়ারি “স’ ‘ম ‘কা মি’ ‘তা এর প্রতিবাদ করায় চাকরি হারাচ্ছেন শিক্ষক আসিফ মাহতাব।” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

Video Comparison : Rumor Scanner 

উক্ত ভিডিওটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর মিল খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিওটি সম্পাদনার মাধ্যমে আলোচিত ভিডিওটিতে যুক্ত করা হয়েছে। 

ভিডিওতে গণ অধিকার পরিষদের একাংশের নেতা মোঃ তারেক রহমান আসিফ মাহতাবকে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চাকরিচ্যুত করার বিষয়ে নিজস্ব মতামত ব্যক্ত করতে দেখা যায়। 

অর্থাৎ আলোচিত ভিডিওটিতে আসিফ মাহতাবকে গ্রেফতারের দাবি করা হলেও ভিডিওর পুরো অংশে দাবির পক্ষে কোনো তথ্য কিংবা দৃশ্য দেখা যায়নি।

পাশাপাশি, ভিডিওটি প্রচারের পর অর্থাৎ ২৩ জানুয়ারি শিক্ষক আসিফ মাহতাব অনলাইন সংবাদমাধ্যম ফেস দ্যা পিপলস পিপলের ফেসবুকে পেজে প্রচারিত লাইভ টকশোতে অংশ নিয়েছেন।

অর্থাৎ উপরোক্ত তথ্য উপাত্ত থেকে এটি স্পষ্ট যে আলোচিত শিক্ষক আসিফ মাহতাব গ্রেফতার হননি।

মূলত, গত ১৯ জানুয়ারি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিলোসফির খণ্ডকালীন শিক্ষক আসিফ মাহতাব রাজধানীর কাকরাইলে ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সে জাতীয় শিক্ষক ফোরাম কর্তৃক আয়োজিত‘বর্তমান কারিকুলামে নতুন পাঠ্যপুস্তক : বাস্তবতা ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক সেমিনারে সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বইয়ে ট্রান্সজেন্ডারের গল্প ঢুকিয়ে শিক্ষার্থীদের মগজধোলাই করা হচ্ছে এমন অভিযোগ করে উক্ত পাঠ্যবইয়ের ‘শরীফ থেকে শরীফা’ হওয়ার গল্পের পাতা ছিঁড়ে প্রতিবাদ জানায়। উক্ত ঘটনার রেশ ধরে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাকে চাকরিচ্যুত করার অভিযোগ উঠে। এই বিষয়টিকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে বিভিন্ন ব্যক্তিদের যুক্তি-পাল্টা যুক্তি। এরই ধারাবাহিকতায় ইন্টারনেটে ‘প্রকাশ্যে বই ছিড়ে আসিফ মাহতাব গ্রেফতার’ শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে। তবে রিউমর স্ক্যানার যাচাই করে দেখেছে যে আলোচিত দাবিটি সঠিক নয়। আলোচিত শিক্ষক আসিফ মাহতাব তার ফেসবুক পেজে নিয়মিত সক্রিয় থেকে বিভিন্ন মতামত ব্যক্ত করছেন এবং গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারগুলো শেয়ার করছেন। এছাড়া, তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা কিংবা তাকে গ্রেফতার করার কোনো তথ্য গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়নি।

 সুতরাং, ট্রান্সজেন্ডার ইস্যুতে প্রকাশ্যে পাঠ্যবইয়ের পৃষ্ঠা ছিঁড়ে ফেলার ঘটনায়  আলোচিত শিক্ষক আসিফ মাহতাব উৎসকে  গ্রেফতার করার তথ্যটি  মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

সপ্তম শ্রেণির আলোচিত বই নিয়ে প্রচারিত এই পোস্টটি মারজুক রাসেলের নয়

0

সম্প্রতি, Marzuk Russell নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে নতুন শিক্ষা কারিকুলামের আওতায় মাধ্যমিকের সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের প্রদানকৃত আলোচিত ‘ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান’ বই প্রসঙ্গে দেওয়া একটি পোস্ট অভিনেতা মারজুক রাসেলের আসল পোস্ট দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

মারজুক

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

আলোচিত পোস্টটিতে যা আছে

Marzuk Russell নামের পেজটির পোস্টে বলা হয়েছে, “সবকিছু বয়কট করলাম ঠিকাছে কিন্তু সপ্তম শ্রেণীর যে পাঠ্যবইটির জন্য এতো কিছু সেই বইটি কারা শিক্ষার্থীদের কাছে দিল সেইটা নিয়ে কিছু বলেন না কেন? নাকি ভাসুরের নাম মুখে নেওয়া পাপ??”

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সপ্তম শ্রেণীর ‘ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান’ পাঠ্যবই নিয়ে আলোচিত এই পোস্টটি অভিনেতা মারজুক রাসেলের নয় বরং তার নামে পরিচালিত একটি ফ্যান পেজের মাধ্যমে এই পোস্টটি প্রচার করা হয়েছে। 

কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে Marzuk Russell নামের ফেসবুক পেজটিতে আলোচিত পোস্টটি (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook

উক্ত পেজটির বায়ো এবং ডিটেইলস সেকশনে গিয়ে দেখা যায়, এটি একটি ফ্যান পেজ।

Screenshot: Facebook

পরবর্তীতে এ বিষয়ে অনুসন্ধানে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ১৮ হাজার লাইক এবং ১ লাখ ১২ হাজার ফলোয়ার সমৃদ্ধ Marzuk Russell নামের ভিন্ন একটি পেজের সন্ধান পায় রিউমর স্ক্যানার টিম। উক্ত পেজটিতে গত ১৬ জানুয়ারি ❝কবিতাই আমার রাজনীতির জায়গা।❞… শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি লাইভ ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, উক্ত ফেসবুক পেজটিকে মারজুক রাসেল তার আসল ফেসবুক পেজ উল্লেখ করে ভক্তদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে লক্ষ করছি আমার নাম ও ছবি ব্যবহার করে কতগুলো সো কল্ড ফ্যানপেজ বিভিন্ন ব্যক্তি, সংগঠন এবং সংস্থাকে উদ্দেশ্য করে তাদের নিজস্ব মতামত প্রচার করছে। যাতে মানুষজন বিভ্রান্ত হচ্ছেন। দীর্ঘদিন আমার কোনো পেজ ছিল না। তবে ’ত্যালফ্যাল ছাড়া যে রান্ধে―’, ‘পাশা ভাই’ এমন বিষয়ভিত্তিক ৩-৪টা ইরেগুলার পেজ ছাড়া ফেসবুকে আমার কোনো অ্যাক্টিভিটি ছিল না। কিন্তু সম্প্রতি আমি একটি পেজ খুলেছি যার মাধ্যমে এই লাইভটি করছি। এইটাই আমার অফিসিয়াল পেজ।’ তিনি আরো বলেন, ‘সাইবার অপরাধ নিয়ে যারা কাজ করেন তাদেরকে বিষয়টি আমি মৌখিকভাবে জানিয়ে রেখেছি। আমাকে হেয় করার চেষ্টা করা হচ্ছে, ডিস্টার্ব করার চেষ্টা করা হচ্ছে এটা আমার জন্যে খুব বিরক্তিকর।’

অর্থাৎ, সপ্তম শ্রেণীর পাঠ্যবই প্রসঙ্গে মারজুক রাসেলের পোস্ট দাবিতে ছড়িয়ে পড়া আলোচিত পোস্টটি মারজুক রাসেলের নয়। 

মূলত, গত ২২ জানুয়ারি সপ্তম শ্রেণীর ‘ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান’ পাঠ্যবই প্রসঙ্গে কবি ও অভিনেতা মারজুক রাসেলের নামে পরিচালিত একটি ফেসবুক পেজ থেকে একটি পোস্ট প্রচার করা হয়। পরবর্তীতে সেই পোস্টটিকে মারজুক রাসেলের আসল পোস্ট ভেবে নেটিজেনরা সেটি শেয়ার করেন। তবে অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত এই পোস্টটি যে পেজ থেকে প্রচার করা হয়েছে সেটি মারজুক রাসেলের আসল পেজ নয় বরং সেটি তার নামে পরিচালিত একটি ফ্যান পেজ। প্রকৃতপক্ষে, দীর্ঘদিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মারজুক রাসেল নিজের নামে পরিচালিত তার কোনো পেজ ছিল না। তিনি ভিন্ন ভিন্ন নামের বিষয়ভিত্তিক কয়েকটি পেজের মাধ্যমে অনিয়মিতভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যুক্ত ছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি তিনি তার নামে একটি ফেসবুক পেজ খুলেছেন। যেখানে আলোচিত পোস্টটির কোনো অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও তার নামে পরিচালিত বিভিন্ন পেজের আপত্তিকর পোস্টের মাধ্যমে ভক্তদের বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্যে উক্ত পেজটিতে একটি লাইভ ভিডিওর মাধ্যমে সতর্ক করেছেন মারজুক রাসেল।

প্রসঙ্গত, গত ১৯ জানুয়ারি “বর্তমান কারিকুলামে নতুন পাঠ্যপুস্তক: বাস্তবতা ও ভবিষ্যৎ” শীর্ষক একটি সেমিনারে আসিফ মাহতাব নামের বেসরকারি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন খণ্ডকালীন শিক্ষক ট্রান্সজেন্ডার এবং সমকামিতা বিরোধী বক্তব্য দেন। এসময় তিনি নতুন পাঠ্যসূচির আওতায় সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের প্রদান করা ‘ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান’ বইয়ের ট্রান্সজেন্ডার বিষয়ক আলোচনা রয়েছে দাবি করে প্রকাশ্যে বইটির দুইটি পৃষ্ঠা ছিঁড়ে ফেলেন। যার পর থেকে উক্ত বিষয়টি নিয়ে আলোচনা ও সমালোচনার শুরু হয়। এ ঘটনার পরপরই ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ উক্ত খণ্ডকালীন শিক্ষককে ক্লাস নেওয়া থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ দেয়। যাতে করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একাংশের মধ্যে অসন্তুষ দেখা দেয় এবং তাকে চাকরিতে ফিরিয়ে আনার জন্য প্রতিবাদ জানিয়ে গত ২৩ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটকে আন্দোলনে নামে। পরবর্তীতে সারাদেশের ব্র্যাকের সকল পণ্য ও সেবা বয়কটের ডাক উঠে।

সুতরাং, অভিনেতা মারজুক রাসেলের নামে পরিচালিত ফ্যান পেজ থেকে সপ্তম শ্রেণীর আলোচিত পাঠ্যবই ‘ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান’ প্রসঙ্গে করা একটি পোস্ট মারজুক রাসেলের আসল ফেসবুক পোস্ট দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

যুক্তরাষ্ট্রের আদালত বাংলাদেশের নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করেনি

সম্প্রতি, “যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে প্রধানমন্ত্রী ধরা। নির্বাচনী ফলাফল বাতিল ঘোষণা” শীর্ষক থাম্বনেইলে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

নির্বাচনের ফলাফল বাতিল

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে(আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের আদালত বাংলাদেশের নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করেনি  বরং কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই অধিক ভিউ পাওয়ার আশায় চটকদার শিরোনাম এবং থাম্বনেইল ব্যবহার করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতেই আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওটি দুটি সংবাদপাঠের ভিডিও এবং ভিন্ন ভিন্ন কয়েকটি ঘটনার ভিডিও ফুটেজ ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে।

ভিডিও যাচাই-১

প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে BanglaVision News এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৪ সালের ১৯ জানুয়ারি “বাংলাদেশের নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি: ম্যাথিউ মিলার | Matthew Miller | U.S. Department of State” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ভিডিওটির সাথে আলোচিত ভিডিওটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Comparison By Rumor Scanner

উক্ত ভিডিওটিতে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র অন্যান্য পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে একমত যে, এই নির্বাচন অবাধ বা সুষ্ঠু হয়নি। নির্বাচনে সব দল অংশগ্রহণ না করায় আমরা হতাশ”

তবে, ভিডিওটির কোথাও যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের ফলাফল বাতিলের বিষয়ে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

ভিডিও যাচাই-২

প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে MANCHITRO এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৪ সালের ১৯ জানুয়ারি “হাসিনা সরকারকে স্বীকৃতি দেয়া হবে না: মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর? | US State Dept | Bangladesh Election” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ভিডিওটির সাথে আলোচিত ভিডিওটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Comparison By Rumor Scanner

ভিডিওতে, বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ম্যাথু মিলারের বক্তব্য নিয়ে আলোচনা করতে দেখা যায়। 

তবে, উক্ত ভিডিওটির কোথাও যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের ফলাফল বাতিলের বিষয়ে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

আলোচিত দাবির অধিকতর সত্যতা যাচাইয়ে,  যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইট পর্যবেক্ষণ করে দাবির বিষয়ে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

তাছাড়া, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম কিংবা নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্রে যুক্তরাষ্ট্রের আদালত কর্তৃক বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করার দাবিটির সত্যতা পাওয়া যায়নি। 

মূলত, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) সহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের বয়কটের মুখে গত ০৭ জানুয়ারি বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত নির্বাচনে ২২২ আসনে জয় লাভ করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে। এরই মাঝে গত ১৯ জানুয়ারি বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি বলে মন্তব্য করেন মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার। পরবর্তীতে তার সেই বক্তব্যের ভিডিও ফুটেজকে ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্রের আদালত কর্তৃক বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করা হয়েছে দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়। তবে অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত দাবিটি সঠিক নয়। যুক্তরাষ্ট্রের আদালত কর্তৃক বাংলাদেশের নির্বাচন বাতিলের কোনো ঘটনা ঘটে নি।

প্রকৃতপক্ষে,অধিক ভিউ পাবার আশায় ভিন্ন ভিন্ন ভিডিওর খণ্ডাংশ যুক্ত করে করে তাতে চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে কোনোপ্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই আলোচিত দাবির ভিডিওটি প্রচার করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, পূর্বেও চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে বিভিন্ন ভুয়া তথ্য প্রচারের প্রেক্ষিতে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কয়েকটি প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, যুক্তরাষ্ট্রের আদালত কর্তৃক বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করা হয়েছে দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র