Home Blog Page 537

রাম মন্দির উদ্বোধন উপলক্ষ্যে বুর্জ খলিফায় রামের ছবি প্রদর্শিত হয়নি 

0

সম্প্রতি, ভারতে ‘রাম’ মন্দির উদ্বোধন উপলক্ষ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে অবস্থিত আকাশচুম্বী ভবন বুর্জ খলিফায় হিন্দু দেবতা রামের ছবি প্রদর্শিত হয়েছে দাবিতে দুইটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

রাম মন্দির উদ্বোধন

ভারতে রাম মন্দির উদ্বোধনের পর বুর্জ খলিফায় হিন্দু দেবতা ‘রাম’ এর ছবি প্রদর্শিত হয়েছে দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

বাংলাদেশি ফেসবুক ব্যবহারকারীদের অ্যাকাউন্ট থেকে প্রচারিত এমন পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এছাড়া একই সময়ে বুর্জ খলিফা ভবনে ‘রাম’ এর ছবি প্রদর্শিত হওয়ার দাবিতে ওপাড় বাংলার ফেসবুক ব্যবহারকারীদের প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে বাংলাদেশি ফেসবুক ব্যবহারকারীদের প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

টিকটকে উক্ত দাবিতে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ভারতে রাম মন্দির উদ্বোধন উপলক্ষ্যে বুর্জ খলিফায় হিন্দু দেবতা রামের ছবি প্রদর্শন হয়নি বরং অনলাইন থেকে বুর্জ খলিফার ছবি সংগ্রহ করে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় ছবিগুলো সম্পাদন বা এডিট করে হিন্দু দেবতা রামের ছবি বসিয়ে আলোচ্য ভুয়া দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে।

ছবি যাচাই: ০১

ছবিটির সত্যতা জানতে রিভার্স ইমেজ সার্চ এর মাধ্যমে স্টক ছবির সাইট Istockphoto.com এ ২০১৬ সালের ০৩ ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত মূল ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Comparison: Rumor Scanner

ছবিটির শিরোনাম থেকে জানা যায়, এটি ২০১৫ সালের ২৮ ডিসেম্বর ধারণকৃত। মূল ছবিটিতে হিন্দু দেবতা রামের ছবি দেখা যায়নি।

অর্থাৎ, ছবিটি এডিট বা সম্পাদনার মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে।

ছবি যাচাই: ০২

অনুসন্ধানে Julia’s Album নামক একটি ওয়েবসাইটে ২০১৯ সালের ২২ অক্টোবর প্রকাশিত একটি ছবি খুঁজে পাওয়া যায়।

Comparison: Rumor Scanner

উক্ত ছবির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবির মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

এছাড়া ভারতীয় এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে রাম মন্দির উদ্বোধন উপলক্ষ্যে  বুর্জ খলিফায় হিন্দু দেবতা রাম এর ছবি প্রদর্শিত হওয়ার কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মূলত, ভারতে অযোধ্যায় রাম মন্দির উদ্বোধন উপলক্ষ্যে দুবাইয়ের বুর্জ খলিফায় হিন্দু দেবতা রামের ছবি প্রদর্শিত হয়েছে দাবিতে দুইটি ছবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, দুবাইয়ের বুর্জ খলিফায় হিন্দু দেবতা রামের ছবি প্রদর্শিত হয়নি। প্রকৃতপক্ষে অনলাইন থেকে সংগ্রহকৃত বুর্জ খলিফার ছবি এডিট করে সেখানে হিন্দু দেবতা রামের ছবি বসিয়ে আলোচ্য দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, গত ২২ জানুয়ারি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভারতের অযোধ্যায় রাম মন্দির উদ্বোধন করেন।

সুতরাং, ভারতে রাম মন্দির উদ্বোধন উপলক্ষ্যে বুর্জ খলিফায় হিন্দু দেবতা রামের ছবি প্রদর্শিত হওয়ার দাবিটি মিথ্যা এবং উক্ত দাবিতে প্রচারিত ছবিগুলো এডিটেড বা বিকৃত।

তথ্যসূত্র

সিইসি ও সেনাপ্রধান তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন গ্রহণের ঘোষণা দেননি

গত ০৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে উক্ত নির্বাচনে ২২২ আসনে বিজয়ী দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সরকার গঠিত হয়। তবে গত ১৯ জানুয়ারি Sabai Sikhi নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ‘পুনরায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের ঘোষণা দিলো সিএসসি (সিইসি) ও সেনাপ্রধান’ শীর্ষক দাবি সম্বলিত শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।

সিইসি ও সেনাপ্রধান

ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি ভিডিওটি প্রায় ৫৭ হাজার বার দেখা হয়েছে। ভিডিওটিতে প্রায় ১ হাজার পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া দেখানো হয়েছে।

পরবর্তীতে এই ভিডিওটি আরও একটি ইউটিউব চ্যানেলে প্রচার করা হয়। সেটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

Sabai Sikhi চ্যানেল থেকে প্রচারিত উক্ত ভিডিওটি’র লিংক শেয়ার করে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল কিংবা সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরবর্তী সময়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে পুনরায় নির্বাচন গ্রহণের কোনো ঘোষণা দেননি বরং ভিন্ন প্রেক্ষাপটের পুরোনো কয়েকটি ভিডিও’র সাথে চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল যুক্ত করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এটি ভিন্ন ভিন্ন কয়েকটি ঘটনার পুরোনো ভিডিও ক্লিপ নিয়ে তৈরি একটি ভিডিও। 

আলোচিত ভিডিওটি’র শিরোনাম এবং থাম্বনেইলে উল্লেখিত দাবিগুলোর সাথে ভিডিওটি’র বিস্তারিত অংশের মিল পাওয়া যায়নি। উক্ত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণে কোথায় সিইসি বা সেনাপ্রধানকে পুনরায় নির্বাচন গ্রহণের ঘোষণা দিতে দেখা যায়নি। আলোচিত ভিডিওটিতে প্রচারিত ভিডিও ক্লিপগুলোর বিষয়ে আলাদা আলাদাভাবে অনুসন্ধান চালায় রিউমর স্ক্যানার টিম।

ভিডিও যাচাই- ০১

আলোচিত ভিডিওটি থেকে কিছু স্থিরচিত্র নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ‘দেশ টিভি’র ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ০৮ অক্টোবর ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে মার্কিন পর্যবেক্ষক দলের মন্তব্য জানালেন সুজন সম্পাদক’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

এই ভিডিওটি’র সাথে আলোচিত ভিডিওটিতে প্রচারিত প্রথম ভিডিও ক্লিপটি’র হুবহু মিল পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner

উক্ত ভিডিওটিতে সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যুতে সেসময় মার্কিন পর্যবেক্ষক দলের মন্তব্য নিয়ে কথা বলতে দেখা যায়।

অর্থাৎ, এই ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় এবং এর সাথে আলোচিত দাবিটি’র কোনো সম্পর্ক নেই।

ভিডিও যাচাই- ০২

আলোচিত ভিডিওটি থেকে কিছু স্থিরচিত্র নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যম বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’র অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ১২ মে ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচন হবে না। নির্বাচন নিয়ে সাধারণ মানুষের ভাবনা’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

এই ভিডিওটি’র সাথে আলোচিত ভিডিওটিতে প্রচারিত দ্বিতীয়  ভিডিও ক্লিপটি’র মিল পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner

উক্ত ভিডিওটিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন গ্রহণের বিষয়ে দুজন ব্যক্তিকে মতামত জানাতে দেখা যায়। 

অর্থাৎ, এই ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় এবং এর সাথে আলোচিত দাবিটি’র কোনো সম্পর্ক নেই।

পাশাপাশি, গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে এখন পর্যন্ত সিইসি কিংবা সেনাপ্রধান কর্তৃক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে পুনরায় নির্বাচন গ্রহণের ঘোষণার দাবির সত্যতা পাওয়া যায়নি।

মূলত, ০৭ জানুয়ারি বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ঘোষিত ২৯৮ আসনের ফলাফলে ২২২ টি আসন লাভ করে টানা চতুর্থবার সরকার গঠন করেছে আওয়ামী লীগ। তবে গত ১৯ জানুয়ারি Sabai Sikhi নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ‘পুনরায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের ঘোষণা দিলো সিএসসি (সিইসি) ও সেনাপ্রধান’ শীর্ষক দাবি সম্বলিত শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে। রিউমর স্ক্যানার টিম অনুসন্ধান করে দেখেছে, উক্ত দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে ভিন্ন প্রেক্ষাপটের পুরোনো কয়েকটি ভিডিও’র সাথে চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল যুক্ত করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, পূর্বেও সিইসি এবং সেনাপ্রধানকে জড়িয়ে বিভিন্ন ভুয়া প্রচারের প্রেক্ষিতে একাধিক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কয়েকটি প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, সিইসি ও সেনাপ্রধান পুনরায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন গ্রহণের ঘোষণা দিয়েছেন দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাকিবকে এমপি পদ থেকে পদত্যাগের নির্দেশ দেননি 

সম্প্রতি, হবিগঞ্জ- ৪ আসনের নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনকে মারতে যাওয়ায় মাগুরা-১ আসনের নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানকে  এমপি থেকে পদত্যাগের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শীর্ষক দাবিতে ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম ইউটিউবে Sports Channel নামের একটি অ্যাকাউন্ট হতে একটি ভিডিও (আর্কাইভ) প্রচার করা হয়েছে।

 সাকিব

ভিডিওটি এই প্রতিবেদন প্রকাশ অবধি প্রায় ১১ লক্ষ ৭৮ হাজারবার দেখা হয়েছে। ভিডিওটির কমেন্ট বক্সে প্রায় ২ হাজার ৮ শতবার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন নেটিজেনরা। এর মধ্যে অধিকাংশই ভিডিওর সংবাদ সত্য ধরে নিয়ে নিজেদের মতামত জানিয়েছেন।

উক্ত ভিডিওটি ডাউনলোড করে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত আরও ভিডিও পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ব্যারিস্টার সুমনকে মারতে যাওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক সাকিব আল হাসানকে এমপি থেকে পদত্যাগের নির্দেশ দেওয়ার দাবিটি মিথ্যা বরং ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে ভিন্ন দুইটি ঘটনার ভিডিও ক্লিপ এবং ছবি যুক্ত করে আলোচিত দাবিতে ভিডিওটি প্রচার করা হয়েছে। 

আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, শুরুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি ভিডিও ক্লিপ রয়েছে। পরবর্তীতে ব্যারিস্টার সুমনের বক্তব্য দেওয়া একটি ভিডিও ক্লিপ প্রচার করতে দেখা যায়। এরপর সাকিব আল হাসান এবং ব্যারিস্টার সুমনের বেশ কয়েকটি ছবি যুক্ত করে কোনো তথ্যপ্রমাণ ব্যতীত উপস্থাপককে কিছু কথা বলতে শোনা যায়। 

ভিডিওটিতে উপস্থাপক বলেন, এবার ব্যারিস্টার সুমনকে মারতে যাওয়ার কারণে সাকিবকে এমপি থেকে পদত্যাগের নির্দেশ দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এবারের দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে মাগুর-১ এবং হবিগঞ্জ-৪ আসন থেকে নব নির্বাচিত এমপি হয়েছের সাকিব আল হাসান এবং ব্যারিস্টার সুমন। এরপর তাদের দুজনের মধ্যে পুরোনো শত্রুতা জেগে উঠেছে। উল্লেখ্য যে বাংলাদেশ এবং ভারতের ওয়ান-ডে সিরিজ চলাকালীন এক হোটেলে বিসিবি কর্মকর্তা এবং পুলিশদের সামনে ব্যারিস্টার সুমনকে মারতে গিয়েছিল সাকিব আল হাসান। সেখান থেকেই তাদের মধ্যে একটি শত্রুতা তৈরি হয়েছে। এছাড়াও মাঠের ক্রিকেটে নানা ঘটনা এবং নির্বাচনে ভোটের দিন এক ভোটারকে পিটিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন সাকিব আল হাসান। আর এই খবর ইতোমধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর কানে পৌঁছেছে। আরেকবার সাকিবকে কঠিন এক হুশিয়ারী দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি (প্রধানমন্ত্রী) বলেন, সেলিব্রিটি বলেই রাজনীতির মাঠে ভোটারকে পেটানো এবং ব্যারিস্টার সুমনকে মারতে যাওয়া এটা চরম ধরনের বেয়াদবি। পরবর্তীতে এধরনের ঘটনা ঘটালে সাকিবের বিরুদ্ধে কঠিন ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

ভিডিও যাচাই-১ 

এই অংশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বক্তব্য দিতে দেখা যায়। বক্তব্যে শেখ হাসিনা বলেন, “এবং এই ঘটনার পরে…”

উক্ত ভিডিওর কিছু কি ফ্রেম কেটে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে এখন টিভি’র ইউটিউব চ্যানেলে গতবছরের ৩১ অক্টোবর “খুনিদের সঙ্গে সংলাপ নয়: প্রধানমন্ত্রী” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত শেখ হাসিনার একটি সংবাদ সম্মেলনের ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত ভিডিওটির সাথে আলোচিত ভিডিওটির হুবহু মিল রয়েছে। 

Video Comparison: Rumor Scanner 

উক্ত ভিডিও ক্লিপটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ১৬ মিনিটে এক সাংবাদিক বিএনপির রাজনৈতিক কর্মসূচী নিয়ে করা প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,.. ২৮ তারিখে তাদের যে ঘটনা, বিএনপি যেসমস্ত ঘটনা ঘটালো। বিশেষকরে যেভাবে পুলিশ হত্যা করেছ মানে মাটিতে ফেলে যেভাবে কুপালো, সাংবাদিকদের উপর হামলা, সাংবাদিকদের ধরে পিটানো, মারা, তাদের উপর হামলা করা এবং এই ঘটনার পরে জনগণের ধিক্কার ছাড়া বিএনপির আর কিছুই জুটবে না। 

অর্থাৎ, উক্ত অনুষ্ঠানে বিএনপিকে সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া দীর্ঘ একটি বক্তব্যের কিছু অংশ কেটে আলোচিত ভিডিওতে যুক্ত করা হয়েছে। 

ভিডিও যাচাই-২ 

উক্ত ভিডিওতে ব্যারিস্টার সুমনকে বক্তব্য দিতে দেখা যায়। গুগলে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানে কালবেলা’র ইউটিউব চ্যানেলে গতবছরের ১৬ মার্চ “ব্যারিস্টার সুমনকে মারতে গিয়েছিলেন সাকিব আল হাসান” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়। 

উক্ত ভিডিওটির সাথে আলোচিত ভিডিওটির হুবহু মিল রয়েছে। 

Video Comparison: Rumor Scanner 

কালবেলার উক্ত ভিডিওটিতে ব্যারিস্টার সুমনকে বলতে শোনা যায়, সাকিব আল হাসানের ব্যাপারে আমার বক্তব্য হচ্ছে সে বাংলাদেশের একজন সেলিব্রিটি। তার নিজেরই তো একটা বিবেক থাকা দরকার যে কোন জায়গায় উনি যাবেন, কোন জায়গায় উনি যাবেননা। উনি যদি তারপরও মনে করে এরকম একজন হত্যাকারী বা হত্যাকাণ্ডের আসামি তার এখানে যাবেন, আর যদি এতে উনি লজ্জাবোধ না করেন, তাহলে আমার আসলে কিছু বলার নাই। কারণ হচ্ছে যে সাকিব আল হাসানেরও অনেক বড় ফ্যান ফলোয়ার আছে। কিছু বললেই হয়তো ফ্যান ফলোয়াররা খুবই উত্তেজিত হয়ে উঠে যে এরকম একজন ভালো প্লেয়ার। কিন্তু একজন ভালো প্লেয়ারের সাথে একজন ভালো মানুষ হওয়াও কিন্তু জরুরি। সাকিব আল হাসান কিন্তু কোনো সমালোচনা নিতে পারেনা। তারে কোনো সমালোচনা করলে সে মারতে আসে। সে এ ধরণের মানসিকতার লোক। আর আমিতো ভাই নিরীহ লোক। আমি এরকম কেউ যদি মারতে আসতে আসে এরকম লোকের ব্যাপারে কথা বলতে চাইনা। কারণ আমার আপনারা জানেন কিছুদিন আগে আমি তার জুয়াতে ইনভলভ হওয়া নিয়ে একটা বক্তব্য দিছিলাম। এই কারণে হোটেল সোনারগাঁওতে সে আমারে মারতে আসছিল। আমাকে দেখেই পুলিশ টুলিশের সামনে মারতে আসছে। তখন আমিতো আশ্চর্য হয়ে গেছি একজন সেলিব্রিটি যিনি বাংলাদেশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ক্রিকেটে উনি একজন সামান্য সমালোচনা সহ্য করতে পারেন না। এখন সমস্যা হচ্ছে ঢ়ে আল্লাহ তারে ক্ষমতা দিছেন সে সেলিব্রিটি হইছে, অনেক মানুষের জনপ্রিয়তা। এখন সে মারলেও তো মানুষ আমার বিচার নিবে না। বলবে যে সে সেলিব্রিটি সে মারতেই পারে সে। এজন্য ভাই এখান থেকে আমি একটু বিরত থাকতে চাই।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ১৫ মার্চ ডুবাইয়ে স্বর্ণ ব্যবসায়ী ও বাংলাদেশে পুলিশ সদস্য হত্যা মামলার পলাতক আসামি রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খানের জুয়েলারি দোকান উদ্বোধন করেন সাকিব। এর প্রেক্ষিতে পরদিন ১৬ মার্চ সাকিবের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে একটি ভিডিও প্রকাশ করেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। যেখানে তিনি কিছুদিন পূর্বে ভারত-বাংলাদেশ সিরিজ চলাকালে হোটেল সোনারগাঁওয়ে সাকিব কর্তৃক হামলা চেষ্টার শিকার হওয়ার অভিযোগ তুলেন।

এই ভিডিও বার্তার বিষয়ে তার মতামত নিয়ে কালবেলা তাদের ইউটিউবে ভিডিও প্রকাশ করে। অর্থাৎ এই ভিডিওটি ২০২৩ সালের এবং ভিডিওতে বর্নিত ঘটনাটিও সেসময়কার। অন্যদিকে সালে সাকিব আল হাসান এমপি নির্বাচিত হয়েছেন এ বছরের ৭ জানুয়ারি। সুতরাং এটা স্পষ্ট যে কালবেলায় প্রকাশিত ৩ মিনিট ৭ সেকেন্ডের ভিডিওটির শুরুর কয়েকটি সেকেন্ডে ব্যারিস্টার সুমনের দেওয়া বক্তব্য কেটে আলোচিত ভিডিওটিতে ব্যবহার করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে আলোচিত দাবির সাথে সুমনের এই বক্তব্যের কোনো সম্পর্ক নেই। 

এছাড়া, আলোচিত বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে গণমাধ্যম এবং বিশ্বস্ত সামাজিক মাধ্যমে এসংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

মূলত, গত ০৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হবিগঞ্জ-৪ (মাধবপুর-চুনারুঘাট) আসনের জয়লাভ করেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন এবং মাগুরা-১ (শ্রীপুর ও সদরের একাংশ) আসন থেকে জয়লাভ করে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। এরপর গত ১০ জানুয়ারি সংসদে ২৯৮ জন সংসদ সদস্যকে শপথ বাক্য পাঠ করান স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। এরইমধ্যে ব্যারিস্টার সুমনকে মারতে যাওয়ায় সাকিবকে এমপি থেকে পদত্যাগের নির্দেশ দিলেন প্রধানমন্ত্রী– শীর্ষক ক্যাপশনে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত দাবিটি মিথ্যা। প্রকৃতপক্ষে, পুরোনো ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার ভিডিও ক্লিপ এবং ছবি যুক্ত করে আলোচিত দাবিরভিডিওটি প্রচার করা হয়েছে। 

সুতরাং, ব্যারিস্টার সুমনকে মারতে যাওয়ায় সাকিবকে এমপি থেকে পদত্যাগের নির্দেশ দিলেন প্রধানমন্ত্রী- শীর্ষক দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

প্রধানমন্ত্রীসহ ৫ জন পুলিশ ও মন্ত্রীর ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞার তালিকা প্রকাশের ভুয়া দাবি 

সম্প্রতি, ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম ইউটিউবে “প্রধানমন্ত্রীসহ ৫ জন পুলিশ ও মন্ত্রীর ভিসায় নিষেধাজ্ঞা ভিসা নিষেধাজ্ঞার তালিকা প্রকাশ করলো আমেরিকা” শীর্ষক থাম্বনেইলে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে। 

ভিসা নিষেধাজ্ঞার

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি ভিডিওটি দেখা হয়েছে প্রায় ১ লাখ ২৩ হাজার বার। ভিডিওটিতে প্রায় ২ হাজার ৭০০ পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া দেখানো হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়,  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সহ ৫ জন পুলিশ ও মন্ত্রীর ওপর যুক্তরাষ্ট্র ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেয়নি

 এবং দেশটি ভিসা নিষেধাজ্ঞার কোনো তালিকাও প্রকাশ করেনি বরং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিসানীতি অনুযায়ী নিষেধাজ্ঞা প্রাপ্তদের নাম প্রকাশ করা হয়না। প্রকৃতপক্ষে, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় ভিন্ন দুইটি ঘটনার ভিডিও ক্লিপ যুক্ত করে আলোচিত দাবি সম্বলিত উক্ত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৫ জন পুলিশ ও মন্ত্রীর ওপর আমেরিকার ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। উক্ত ভিডিওটিতে আমার বাংলা (এবি) পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদের একটি ভিডিও এবং কালবেলায় প্রকাশিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন দেখানো হয়।

ভিডিওটিতে প্রচারিত ভিডিও ক্লিপগুলো পৃথকভাবে যাচাই করেছে রিউমর স্ক্যানার টিম।

ভিডিও যাচাই – ০১ 

আলোচিত ভিডিওটিতে দেখানো এবি পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদের ভিডিওটির অনুসন্ধানে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে অনলাইন সংবাদমাধ্যম বার্তা বাজারের ইউটিউব চ্যানেলে গত ১৪ জানুয়ারি “ভিসা রেস্ট্রিকশন এখন বাস্তবায়ন হচ্ছে” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

Video Comparison : Rumor Scanner 

এই ভিডিওটির সাথে আলোচিত ভিডিওটিতে যুক্ত প্রথম ভিডিওটির হুবহু মিল পাওয়া যায়। 

উক্ত ভিডিওতে ব্যারিস্টার ফুয়াদ গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যথোপযুক্ত হয়নি দাবি করে ভিসা নিষেধাজ্ঞার আশংকা রয়েছে বলে নিজের মতামত ব্যক্ত করেন।  

ভিডিও যাচাই – ০২ 

ভিডিটিওতে  আমরা কালবেলার একটি ভিডিও প্রতিবেদন দেখতে পাই। উক্ত ভিডিও প্রতিবেদনের বিষয়ে অনুসন্ধানে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে কালবেলার ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ২২ সেপ্টেম্বর “বাংলাদেশে ভিসা নিষেধাজ্ঞা শুরু করেছে আমেরিকা। US Visa Restrictions। Kalbela” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একই ভিডিওটি প্রতিবেদনটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Video Comparison : Rumor Scanner 

ভিডিও প্রতিবেদনের বিষয়ে বিস্তারিত অনুসন্ধানে কালবেলার ওয়েবসাইটে একই দিনে “বাংলাদেশে ভিসা নিষেধাজ্ঞা শুরু করেছে আমেরিকা” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার ওইদিন এক বিবৃতিতে এ কথা জানিয়েছেন বলে জানা যায়। তবে উক্ত বিবৃতিতে কোনো ব্যক্তির নাম প্রকাশ করা হয়নি। 

পরবর্তীতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রাপ্ত ব্যক্তিদের নাম প্রকাশের বিষয়ে অনুসন্ধানে দৈনিক যুগান্তরে গত ২৪ সেপ্টেম্বর “যে কারণে ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রাপ্তদের নাম প্রকাশ করে না যুক্তরাষ্ট্র” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, কেন ভিসা নিষেধাজ্ঞা ব্যক্তিদের নাম প্রকাশ করা হয় না- এ বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু বলেন, ভিসানীতির আওতায় ভিসা নিষেধাজ্ঞা যাদের দেওয়া হবে, তাদের নাম প্রকাশ করা হয় না। কারণ কাউকে ভিসা না দেওয়াসহ যে কোনো ভিসা রেকর্ড মার্কিন আইন অনুযায়ী গোপনীয় তথ্য। তিনি আরও বলেন, সাক্ষ্যপ্রমাণ ভালোভাবে পর্যালোচনা করার পর আমরা আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্যদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

অর্থাৎ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিসানীতিতে নিষেধাজ্ঞা প্রাপ্তদের নাম প্রকাশ করে না।

মূলত, গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার ২০২৩ সালের ২২ সেপ্টেম্বর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান। যুক্তরাষ্ট্রের এই ঘোষণাকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যক্তির নাম উল্লেখ করে তাদেরকে ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে বলে  প্রচার হয়ে আসছে। এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি “প্রধানমন্ত্রীসহ ৫ জন পুলিশ ও মন্ত্রীর ভিসায় নিষেধাজ্ঞা ভিসা নিষেধাজ্ঞার তালিকা প্রকাশ করলো আমেরিকা ” শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়। ভিডিওটি নিয়ে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে আমেরিকা কর্তৃক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সহ ৫ জন পুলিশ ও মন্ত্রীর ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়নি এবং ভিসানীতি অনুযায়ী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসা ব্যক্তিদের নাম প্রকাশ করেনা। অধিক ভিউ পাবার আশায় ভিন্ন ঘটনার  ভিডিও যুক্ত করে তাতে চটকদার থাম্বনেইল ব্যবহার করে কোনোপ্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই আলোচিত ভিডিওটি প্রচার করা হয়েছে। এছাড়া, গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে দাবিগুলোর সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, পূর্বেও বিভিন্ন ব্যক্তির ওপর মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞা নিয়ে মিথ্যা তথ্য প্রচারের প্রেক্ষিতে একাধিক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কয়েকটি প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সহ ৫ জন পুলিশ ও মন্ত্রীর ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার দাবিটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র 

শেখ হাসিনাকে পদত্যাগের জন্য জো বাইডেনের ফোন এবং পুনরায় নির্বাচনের ঘোষণা সিইসি’র দাবিতে গুজব 

সম্প্রতি, ফোনে হাসিনাকে পদত্যাগের নির্দেশ দিলো বাইডেন, পুনরায় নির্বাচনের ঘোষণা দিলো কাজী হাবিবুর আউয়াল– শীর্ষক শিরোনামে এবং হাসিনাকে পদত্যাগে বাইডেনের ফোন, পুনরায় নির্বাচনের ঘোষণা সিএসসি– শীর্ষক থাম্বনেইলে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। 

শেখ হাসিনাকে পদত্যাগের

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফোন দিয়ে পদত্যাগ করতে বলার দাবিটি সঠিক নয় এবং প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল পুনরায় নির্বাচনের ঘোষণা দেওয়ার দাবিটিও মিথ্যা বরং ভিন্ন কয়েকটি সংবাদ প্রতিবেদনের ভিডিও ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে চটকদার থাম্বনেইল এবং শিরোনামে আলোচিত ভিডিওটি প্রচার করা হচ্ছে। 

আলোচিত ভিডিওটিতে পাঁচটি সংবাদের খণ্ডাংশ প্রচার করতে দেখা। 

ভিডিও যাচাই-১

এই অংশে সংবাদ পাঠিকার পঠিত সংবাদের সূত্র ধরে অনুসন্ধানে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল NTV এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ১৯ জানুয়ারি “নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি, সব দল অংশ না নেয়ায় হতাশ যুক্তরাষ্ট্র” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি সংবাদ প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত প্রতিবেদনটির সাথে আলোচিত ভিডিওটির হুবহু মিল রয়েছে। 

Video Comparison: Rumor Scanner 

উক্ত সংবাদ প্রতিবেদনটি পর্যবেক্ষণ করে জানা যায়, ১৮ জানুয়ারি মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের নবনির্বাচিত সরকার নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মুখপাত্র ম্যাথু মিলারের দেওয়া বক্তব্যের প্রেক্ষিতে করা সংবাদ প্রতিবেদন এটি। 

ভিডিও যাচাই-২

এই অংশে সংবাদ পাঠিকার পঠিত সংবাদের সূত্র ধরে অনুসন্ধানে NTV এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ১৮ জানুয়ারি “নির্বাচন-ব্যবস্থার ওপর জনগণের আস্থা কমে গেছে: সিইসি” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি সংবাদ প্রতিবেদন পাওয়া যায়। 

উক্ত প্রতিবেদনটির সাথে আলোচিত ভিডিওটির হুবহু মিল রয়েছে। 

Video Comparison: Rumor Scanner 

উক্ত সংবাদ প্রতিবেদনটি পর্যবেক্ষণ করে জানা যায়, ১৮ জানুয়ারি নির্বাচন ভবনের অডিটোরিয়ামে আয়োজিত ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও সফলভাবে সম্পন্ন করায়’ শীর্ষক ধন্যবাদ জ্ঞাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সফলভাবে সম্পন্ন হওয়ায় জাতি সংকট থেকে ওঠে এসেছে। তবে এটা স্থায়ী সমাধান নয়। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন ব্যবস্থার ওপর জনগণের আস্থা অনেকটা হ্রাস পেয়েছে। নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক নেতৃত্বেরও প্রয়োজন হবে একটি পদ্ধতি অন্বেষণ করা।’

অর্থাৎ, এখানে শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ বা পুনরায় নির্বাচন ঘোষণা সংক্রান্ত কোনো কথা বলেননি। 

ভিডিও যাচাই-৩

এই অংশে একজন উপস্থাপককে সংবাদ পাঠ করতে দেখা যায়। পঠিত সংবাদের সূত্র ধরে অনুসন্ধানে চ্যানেল২৪ এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ৯ জানুয়ারি “নির্বাচনের দিন বিভিন্ন অনিয়মের দাবি নিয়ে উদ্বেগ যুক্তরাষ্ট্রের” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি সংবাদ প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত প্রতিবেদনটির সাথে আলোচিত ভিডিওটির হুবহু মিল রয়েছে। 

Video Comparison: Rumor Scanner 

গত ০৮ জানুয়ারি বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি বলে মন্তব্য করে যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া বিবৃতি নিয়ে উক্ত সংবাদ প্রতিবেদনটিতে করা হয়েছে। তবে সেখানে আলোচিত দাবিগুলো নিয়ে কোনো তথ্য উল্লেখ করা হয়নি। 

ভিডিও যাচাই-৪ 

এই অংশে একজন উপস্থাপককে সংবাদ পাঠ করতে দেখা যায়। পঠিত সংবাদের সূত্র ধরে অনুসন্ধানে যমুনা টেলিভিশনের ইউটিউব চ্যানেলে গত ১৯ জানুয়ারি “বাংলাদেশের নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি- ফের দাবি যুক্তরাষ্ট্রের” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি সংবাদ প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত প্রতিবেদনটির সাথে আলোচিত ভিডিওটির হুবহু মিল রয়েছে। 

Video Comparison: Rumor Scanner 

উক্ত সংবাদ প্রতিবেদনটি পর্যবেক্ষণ করে জানা যায়, ১৮ জানুয়ারি মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের নবনির্বাচিত সরকার নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মুখপাত্র ম্যাথু মিলারের দেওয়া বক্তব্যের প্রেক্ষিতে করা সংবাদ প্রতিবেদন এটি। 

ভিডিও যাচাই-৫ 

এখানেও একটি সংবাদ প্রতিবেদন প্রচার করা হয় এবং এখানে অনলাইন গণমাধ্যম বার্তা বাজারের লোগো দেখা যায়। লোগো’র সূত্র ধরে অনুসন্ধানে বার্তা বাজারের ইউটিউব চ্যানেলে গত ১৮ জানুয়ারি “নির্বাচন পদ্ধতির উপর জনগণের আস্থা নষ্ট হয়ে গিয়েছে” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি সংবাদ প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত প্রতিবেদনটির সাথে আলোচিত ভিডিওটির হুবহু মিল রয়েছে। 

Video Comparison: Rumor Scanner

উক্ত সংবাদ প্রতিবেদনটি পর্যবেক্ষণ করে জানা যায়, এটিও ১৮ জানুয়ারি সিইসি’র মন্তব্যের প্রেক্ষিতে করা সংবাদ প্রতিবেদন এটি। 

এছাড়া, আলোচিত দাবিগুলো নিয়ে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

পাশাপাশি, ঢাকাস্থ যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের ফেসবুক পেজে এবং ওয়েবসাইটেও এ-সংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

মূলত, গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে সর্বাধিক আসনে জয়লাভ করে সরকার গঠন করেছে আওয়ামী লীগ। এরই মধ্যে ফোনে হাসিনাকে পদত্যাগের নির্দেশ দিলো বাইডেন, পুনরায় নির্বাচনের ঘোষণা দিলো কাজী হাবিবুর আউয়াল– শীর্ষক শিরোনামে এবং হাসিনাকে পদত্যাগে বাইডেনের ফোন, পুনরায় নির্বাচনের ঘোষণা সিএসসি– শীর্ষক থাম্বনেইলে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওটিতে ভিন্ন ভিন্ন পাঁচটি সংবাদ প্রতিবেদন কেটে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে, আলোচিত দাবিগুলো সঠিক নয়। এছাড়া, গণমাধ্যমেও এ-সংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

উল্লেখ্য, গত ০৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৯৮টি আসনের মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যক ২২২টি আসনে জয়ী হয় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। এ ছাড়া জাতীয় পার্টি ১১টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) ১টি, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি ১টি, বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টি ১টি এবং স্বতন্ত্র পদে মোট ৬২ টি আসনে জয়লাভ করেন প্রার্থীরা।

সুতরাং, শেখ হাসিনাকে পদত্যাগের জন্য জো বাইডেনের ফোন এবং পুনরায় নির্বাচনের ঘোষণা সিইসি’র দাবিগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

পারিবারিক অশান্তি নিয়ে প্রচারিত এই পোস্টটি মারজুক রাসেল করেন নি

0

সম্প্রতি, Marzuk Russell নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে পারিবারিক অশান্তি ও বিবাহ বিচ্ছেদ নিয়ে দেওয়া একটি পোস্ট অভিনেতা মারজুক রাসেলের আসল পোস্ট দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

মারজুক রাসেল

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

আলোচিত পোস্টটিতে যা আছে

Marzuk Russell নামের পেজটির পোস্টে বলা হয়েছে, “পর*কীয়া, পারিবারিক অশা*ন্তি আর বিবাহ বি*চ্ছেদের মতো ভ*য়াবহ স*মস্যার মূল করণ হচ্ছে ফ্রি মিক্সিং/মা-বোনদেরকে ফেইসবুক, মেসেঞ্জার, টিকটক, হোয়াটসঅ্যাপ, ইমো, টুইটার ব্যবহার করতে দেয়া। ফেইসবুকে শত শত পর পুরুষের প্রসংসা পাওয়া একজন মহিলা যখন ঘরে জামাইয়ের মুখে শোনে, তরকারিতে লবণ কম হয়েছে তখনই ঐ মহিলার মাথায় খারাপ চিন্তা চলে আসে। তাছাড়া নি*ষিদ্ধ জিনিসের প্রতি মানুষের জন্মলগ্ন থেকেই আলাদা একটা টান তো আছেই।

আর আমরাও পুরুষেরা কম না, ঘরে বউ থাকতেও পাশের এলাকার ভাবীর ফেইসবুক ছবিতে লাভ রিয়েক্ট দিয়ে ‘ওয়াও/অপরূপা/অসাম/গর্জিয়াস’ টাইপের কমেন্ট করি। অথচ নিজের বউয়ের প্রসংসা করে কখনোই বলিনা, ‘তোমার হাসিটা সুন্দর’।”

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত পোস্টটি অভিনেতা মারজুক রাসেলের নয় বরং তার নামে পরিচালিত একটি ফ্যান পেজের মাধ্যমে এই পোস্টটি প্রচার করা হয়েছে। 

কিওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে Marzuk Russell নামের ফেসবুক পেজটিতে গত ১৭ জানুয়ারি আলোচিত পোস্টটি (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook

উক্ত পেজটির বায়ো এবং ডিটেইলস সেকশনে গিয়ে দেখা যায়, এটি একটি ফ্যান পেজ।

Screenshot: Facebook

পরবর্তীতে কি-ওয়ার্ড সার্চ করে Marzuk Russell নামের ভিন্ন একটি পেজ খুঁজে পাওয়া যায়। পেজটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায় এটিতে মোট ১৮ হাজারেরও বেশি লাইক এবং ১ লক্ষ ১২ হাজারেরও অধিক ফলোয়ার রয়েছে। এছাড়া, পেজটিতে গত ১৬ জানুয়ারি প্রকাশিত একটি লাইভ ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

ভিডিওটি অভিনেতা মারজুক রাসেলের একটি লাইভ ভিডিও। লাইভে এসে মারজুক রাসেল জানান, উক্ত পেজটি তার নিজের। এছাড়াও তিনি জানান, “দীর্ঘদিন ধরে লক্ষ্য করছি আমার নাম ও ছবি ব্যবহার করে কতগুলো জনপ্রিয় ফ্যানপেজ বিভিন্ন ব্যক্তি, সংগঠন এবং সংস্থাকে উদ্দেশ্য করে তাদের নিজস্ব মতামত প্রচার করছে। যার কারণে সাধারণ মানুষজন বিভ্রান্ত হচ্ছেন। দীর্ঘদিন আমার কোনো পেজ ছিল না। তবে ’ত্যালফ্যাল ছাড়া যে রান্ধে’, ‘পাশা ভাই’ এমন বিষয়ভিত্তিক কয়েকটি অনিয়মিত পেজ ছাড়া ফেসবুকে আর কোনো সক্রিয়তা ছিলো না। তবে তিনি এই পেজ খুলে লাইভ করে এটি তার অফিসিয়াল পেজ বলে জানান। পাশাপাশি তিনি তার নামে চালানো অন্য পেজের বিষয়ে সাইবার সিকিউরিটি বিভাগে মৌখিক ভাবে বলে রেখেছেন বলে জানান।

মূলত, গত ১৭ জানুয়ারি পারিবারিক অশান্তি ও বিবাহ বিচ্ছেদ নিয়ে একটি পোস্ট অভিনেতা মারজুক রাসেলের নামে পরিচালিত একটি ফেসবুক পেজ থেকে প্রচার করা হয়। পরবর্তীতে সেই পোস্টটিকে মারজুক রাসেলের আসল পোস্ট ভেবে নেটিজেনরা সেটি শেয়ার করেন। তবে অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত এই পোস্টটি যে পেজ থেকে প্রচার করা হয়েছে সেটি মারজুক রাসেলের আসল পেজ নয় বরং সেটি তার নামে পরিচালিত একটি ফ্যান পেজ। 

উল্লেখ্য, পূর্বেও অভিনেতা মারজুক রাসেলের নামে ধর্ম ও ক্রিকেটকে জড়িয়ে একটি ফেসবুক পোস্ট ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে তা শনাক্ত ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, অভিনেতা মারজুক রাসেলের নামে পরিচালিত ফ্যান পেজ থেকে পারিবারিক অশান্তি ও বিবাহ বিচ্ছেদ নিয়ে একটি পোস্ট মারজুক রাসেলের আসল ফেসবুক পোস্ট দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

এআই দিয়ে তৈরি ডিম পোচ সদৃশ ফুলের ছবি বাস্তব দাবিতে প্রচার

0

সম্প্রতি, “দেখতে ডিমের মতো মনে হলেও এগুলো কিন্তু ডিম ভাজা নয়, এগুলো এক প্রকার ফুল” শীর্ষক দাবিতে একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

গত ১৮ জানুয়ারি Nazmin Islam নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে ‘দুই বাংলার, গাছের হাট 🌿’ নামের একটি ফেসবুক গ্রুপে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত একটি পোস্টে (আর্কাইভ) এখন অবধি প্রায় ৭২ হাজারেরও অধিক রিয়্যাক্ট পড়েছে। এছাড়া পোস্টটিতে এখন অবধি কমেন্ট হয়েছে ৫৩৯টি এবং পোস্টটি ২৯০০ এর অধিক বার শেয়ার করা হয়েছে। 

তৈরি ডিম

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এবং এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে টিকটকের ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ডিম পোচের মতো দেখতে বাস্তব ফুল দাবিতে ছড়িয়ে পড়া ছবিটি বাস্তব কোনো ফুলের নয় বরং এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই দ্বারা তৈরি একটি ছবি। 

রিভার্স ইমেজ সার্চ পদ্ধতি ব্যবহার করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই আর্ট ওয়েবসাইট সিভিটএআই (Civitai)-এ  গত ০৬ জানুয়ারি ‘Flexability’ নামের একজন ব্যবহারকারীর প্রকাশিত হুবহু একই ছবি খুঁজে পাই আমরা।

Image Source: Civitai 

একই পোস্টে আলোচ্য ছবিটি ছাড়াও ডিম পোচের ন্যায় দেখতে বিড়াল ও মাছের ছবিও দেখা যায়। 

সিভিটএআই (Civitai) ওয়েবসাইটে একই ধরণের ছবি তৈরি করার চেষ্টা করি আমরা। প্রথমে আলোচ্য ছবিটি তৈরিতে ব্যবহারকৃত কমান্ড কপি করে নেই, এরপর ওয়েবসাইটের ক্রিয়েট অপশনে গিয়ে কমান্ডটি দিতেই প্রায় কাছাকাছি দেখতে ৪ট ছবি তৈরি হয়ে যায়। 

Image Source: Civitai

অর্থাৎ, বাস্তব ফুল দাবিতে ছড়িয়ে পড়া আলোচ্য ছবিটি মূলত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই দিয়ে তৈরি। 

অন্যদিকে ওপেন সোর্স অনুসন্ধানে জানা যায়, ফ্রাইড এগ প্ল্যান্ট নামে পরিচিত দুই ধরণের ফুল গাছ পাওয়া যায়। একটি হল Matilija poppy (Romneya coulteri), যা বড় জায়গার জন্য উপযুক্ত এবং বড় সাদা ফুলের জন্য পরিচিত। অন্যটি হল Polyspora axillaris, যা ছোট জায়গায় উপযোগী চিরসবুজ গাছ এবং সাদা ও হলুদ রঙের ফুল। তবে এই ফুলগুলোর সাথে আলোচ্য ছবিটির কোনোরূপ মিল নেই।

Image Comparison: Rumor Scanner.

মূলত, ডিম পোচের ন্যায় দেখতে বাস্তব ফুল দাবিতে একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচ্য ছবিটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই দিয়ে তৈরি। এছাড়া এগ প্ল্যান্ট নামে পরিচিত দুই ধরণের ফুল গাছ পাওয়া গেলেও সেগুলোর সাথে আলোচ্য ছবির কোনোরূপ মিল নেই।

সুতরাং, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা এআই তৈরি ডিম পোচের সদৃশ ফুলকে বাস্তব ফুলের ছবি দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

বাংলাদেশে টিকটক নিষিদ্ধ করা হচ্ছে জানিয়ে সম্প্রতি সরকার কোনো ঘোষণা দেয়নি 

0

সম্প্রতি, ‘বাংলাদেশ থেকে চিরতরে ব্যান করা হচ্ছে জনপ্রিয় “TikTok’’জানালেন বাংলাদেশ শিক্ষা বোর্ড’ শীর্ষক শিরোনামে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম ইউটিউব এবং শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটকে প্রচার করা হচ্ছে।

টিকটক নিষিদ্ধ

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন  এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত কিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত দাবিতে টিকটকে প্রচারিত কিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশ থেকে চিরতরে শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটক নিষিদ্ধ করা হচ্ছে বলে সম্প্রতি সরকার কোনো ঘোষণা দেয়নি এবং ‘বাংলাদেশ শিক্ষাবোর্ড’ নামেও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে কোন দপ্তর সংস্থার ফেসবুক আইডি বা পেজ নেই বরং ২০২০ সালে চীনের সাথে বিরোধের জেরে ভারতে চীনা অ্যাপ টিকটক নিষিদ্ধ করার বিষয়টিকেই উক্ত পেজের বরাতে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে টিকটক নিষিদ্ধ হচ্ছে দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।

গুজবের সূত্রপাত

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত পোস্টগুলো পর্যবেক্ষণ করে দেখা, অধিকাংশ পোস্টেই তথ্যসূত্র হিসেবে ‘বাংলাদেশ শিক্ষা বোর্ড’ নামের একটি পেজের উল্লেখ করা হয়েছে। পরবর্তীতে কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে উক্ত পেজটির সন্ধান পায় রিউমর স্ক্যানার টিম। পেজটিতে গত ১৭ জানুয়ারি প্রকাশিত এ সম্পর্কিত পোস্টটি (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook Post

উক্ত পোস্টটির মন্তব্যঘর পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, সেখানে পেজটি’র পক্ষ থেকে টিকটক ব্যান করার উক্ত বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, “টিকটক-সহ ৫৯টি চিনা অ্যাপের ব্যবহার চিরতরে বন্ধ হতে যাচ্ছে দেশে। টিকটক-সহ (Tiktok) ৫৯টি চিনা মোবাইল অ্যাপ পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্রীয় সরকার। গত বছর ১৫ জুন গালওয়ান ভ্যালিতে ভারত-চিন সীমান্ত সংঘর্ষে ভারতের ২০ জন সেনা শহিদ হন। চিন দাবি করে তাদের সেনা হতাহতের সংখ্যা ২০’র কম। তবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) জানিয়েছিলেন, চিনা সেনা ভারত ভূখণ্ডে ঢুকতে পারেনি। ইন্দো-চিন সীমান্তে সংঘর্ষের কোপ এসে পড়ে।”

Screenshot: Facebook Comment

এবিষয়ে অনুসন্ধানে ২০২০ সালের ৩০ জুন দেশীয় মূলধারার গণমাধ্যম The Business Standard এর ওয়েবসাইটে ‘টিকটকসহ ৫৯টি চীনা অ্যাপকে নিষিদ্ধ করল ভারত’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০২০ সালে ভারতীয় সাইবার সুরক্ষা ও সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত করার লক্ষ্যে টিকটক, ইউসি ব্রাউসার, হ্যালোসহ ৫৯টি চীনা মোবাইল অ্যাপ নিষিদ্ধ করে ভারত। সেবছরের ১৫ জুন ভারত ও চীনের সীমানা নিয়ে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরির কারণে চীনের বিভিন্ন ধরনের পণ্য নিষিদ্ধ করার উদ্যোগ নেয় ভারত। এরই ধারাবাহিকতায় এমন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম BBC এর ওয়েবসাইটে ২০২০ সালের ২৯ জুন ‘India bans TikTok, WeChat and dozens more Chinese apps’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে থেকে একই তথ্য জানা যায়।

অর্থাৎ, টিকটক নিষিদ্ধ হওয়ার উক্ত ঘটনাটি বাংলাদেশের নয় বরং ভারতের।

এছাড়াও অনুসন্ধানে বাংলাদেশের গণমাধ্যম, শিক্ষা মন্ত্রণালয় কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে টিকটক নিষিদ্ধ হচ্ছে শীর্ষক ঘোষণা সম্পর্কিত কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

তাছাড়া বাংলাদেশের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে গত ১৮ জানুয়ারি প্রকাশিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Ministry of Education, Bangladesh

উক্ত পোস্টে বলা হয়, “বাংলাদেশ শিক্ষা বোর্ড” নামে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন কোন দপ্তর সংস্থার ফেইসবুক আইডি বা পেইজ নেই।”

অর্থাৎ, ‘বাংলাদেশ শিক্ষা বোর্ড’ নামের যে পেজটি থেকে উক্ত ঘটনাটি ফেসবুকে ছড়িয়েছিলো সেটি কোনো অফিশিয়াল পেজ নয়।

উপরোক্ত বিষয়গুলো পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে সরকারের বা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো দপ্তরের পক্ষ থেকে টিকটক নিষিদ্ধ হচ্ছে বলে কোনো ঘোষণা দেওয়া হয়নি।

মূলত, ২০২০ সালের জুনে চীনের সাথে ভারতের সীমান্ত বিরোধের জেরে সাইবার সুরক্ষার কারণ দেখিয়ে ভারতে টিকটকসহ কয়েকটি চীনা অ্যাপ নিষিদ্ধ করা হয়। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ফেসবুকে ‘বাংলাদেশ শিক্ষা বোর্ড’ নামের কথিত একটি পেজের বরাতে বাংলাদেশে টিকটক নিষিদ্ধ হচ্ছে দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে। উক্ত পেজটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ভারতের টিকটক নিষিদ্ধের পুরোনো বিষয়টি তারা বাংলাদেশ দাবিতে প্রচার করেছে। প্রকৃতপক্ষে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে টিকটক নিষিদ্ধ হচ্ছে বলে কোনো ঘোষণা দেওয়া হয়নি।

প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে তৎকালীন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার টিকটক নিষিদ্ধ করার উদ্যোগ নেওয়ার কথা বললেও পরবর্তীতে সেটি বাস্তবায়িত হয়নি। 

সুতরাং, ‘বাংলাদেশ শিক্ষা বোর্ড’ নামের একটি ফেসবুক পেজের বরাতে ‘বাংলাদেশ থেকে টিকটক নিষিদ্ধ করা হচ্ছে’ শীর্ষক দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

প্রধানমন্ত্রীর ছবি বিকৃতি করে স্ট্রোক করে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ভুয়া তথ্য প্রচার

0

সম্প্রতি, স্ট্রোক করে হাসপাতালে ভর্তি প্রধানমন্ত্রী, তাকে দেখতে মন্ত্রীদের ভীড় শীর্ষক দাবিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে থাকা অবস্থায় সাবেক রাষ্ট্রপতি মোঃ আব্দুল হামিদের ছবিসহ একটি ভিডিও শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম টিকটকে প্রচার করা হয়েছে।

স্ট্রোক

ভিডিওটি এই প্রতিবেদন প্রকাশ অবধি ২১ লক্ষেরও অধিক বার দেখা হয়েছে। ৩৫ হাজার বারেরও বেশি ভিন্ন অ্যাকাউন্ট থেকে লাইক পাওয়া এই ভিডিওটি আড়াই হাজারেরও বেশি বার শেয়ার করা হয়েছে।

টিকটকে প্রচারিত আলোচিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্ট্রোক করে হাসপাতালে ভর্তি হননি বরং তিনি সুস্থ আছেন। প্রকৃতপক্ষে, ডিজিটাল প্রযুক্তির সাহায্যে সম্পাদনার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর ছবি বিকৃত করে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

শুরুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে থাকা অবস্থায় সাবেক রাষ্ট্রপতি মোঃ আব্দুল হামিদ পাশে থাকার ছবিটির বিষয়ে অনুসন্ধান করে রিউমর স্ক্যানার টিম।

রিভার্স ইমেজ সার্চ করে রাষ্ট্রপতির কার্যালয় (বঙ্গভবন) এর ওয়েবসাইটে ২০১৮ সালের ৪ আগস্ট প্রকাশিত দুটি ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত ছবির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর দৃশ্যের মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison: Rumor Scanner

ওয়েবসাইটটি থেকে জানান যায়, সাবেক রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ জাতীয় দৈনিক সমকাল সম্পাদক গোলাম সারওয়ারকে অসুস্থ অবস্থায় ২০১৮ সালের ০২ আগস্ট দেখতে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে যান। সেসময়ের ছবি এটি।

অর্থাৎ, আলোচিত ছবিটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর ছবি হাসপাতালের বিছানায় জুড়ে দেওয়া হয়েছে।

কি-ওয়ার্ড সার্চ করে জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে “হস্তশিল্পকে ‘বর্ষপণ্য’ ঘোষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ২১ জানুয়ারি ২৮তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা (ডিআইটিএফ) ২০২৪-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। সেদিন তিনি হস্তশিল্পকে ‘বর্ষপণ্য’ হিসেবে ঘোষণা করেন।

পরবর্তীতে, জাতীয় দৈনিক দ্য ডেইলি স্টার এর ওয়েবসাইটে “আওয়ামী লীগের বিপুল জনসমর্থনের প্রমাণ ৭ জানুয়ারির নির্বাচন: প্রধানমন্ত্রী” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদ প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

সংবাদ প্রতিবেদনে প্রধানমন্ত্রী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে কথা বলেন। তিনি জানান আওয়ামী লীগের প্রতি জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস থাকায় ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে বিপুল জনসমর্থন পেয়েছেন।

এছাড়া, দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্ট্রোক করে হাসপাতালে ভর্তি থাকার বিষয়ে কোনো তথ্য অনুসন্ধানে খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মূলত, ২০১৮ সালের ০২ আগস্ট সাবেক রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ জাতীয় দৈনিক সমকালের সম্পাদক গোলাম সারওয়ারকে অসুস্থ অবস্থায় রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে দেখতে যান। সেই ছবিটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর ছবি হাসপাতালের বিছানায় জুড়ে দিয়ে, ‘প্রধানমন্ত্রী স্ট্রোক করে হাসপাতালে ভর্তি’ দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

সুতরাং, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর ছবি হাসপাতালের বিছানায় জুড়ে দিয়ে তিনি স্ট্রোক করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

সজীব ওয়াজেদ জয় যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেফতারের দাবিটি গুজব

সম্প্রতি, এইমাত্র যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেফতার সজিব ওয়াজেদ জয় খবর শুনেই স্টক করলো শেখ হাসিনা– শীর্ষক শিরোনামে এবং থাম্বনেইলে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। 

সজীব ওয়াজেদ জয়

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র ও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেফতার হননি বরং অধিক ভিউ পাওয়ার আশায় ভিন্ন ঘটনার একটি ভিডিওর সাথে চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে। 

আলোচিত ভিডিওটি পর্য়বেক্ষণ করে দেখা যায়, ডয়েচে ভেলের বাংলা বিভাগের প্রধান খালেদ মুহিউদ্দীন নবনির্বাচিত তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাতের সাক্ষাৎকার নেওয়ার ভিডিও এটি। এছাড়া, ভিডিওটিতে ডয়েচে ভেলের লোগোও দেখা যায়।

উক্ত সূত্র ধরে অনুসন্ধানে ‘DW খালেদ মুহিউদ্দীন জানতে চায়’ নামক ইউটিউব চ্যানেলে গত ১৯ জানুয়ারি “কী করবেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি টকশোর লাইভ ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত ভিডিওটির একই অংশই আলোচিত ভিডিওটিতে ব্যবহার করা হয়েছে।

Video Comparison: Rumor Scanner

১ ঘন্টা ৫৩ সেকেন্ডের টকশোটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ৩১ মিনিটের মাথায় সঞ্চালক খালেদ মুহিউদ্দীন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাতকে সজীব ওয়াজেদ জয় সম্পর্কে প্রশ্ন করেন। 

প্রশ্নে খালেদ মুহিউদ্দীন বলেন, প্রাইম মিনিস্টারের পুত্র জনাব সজীব ওয়াজেদ জয় এবার ভোটের সময় কেন এলেন না? প্রাইম মিনিস্টার যে বলেছিলেন, ওরা যদি আমার ছেলের সম্পত্তি কেড়ে নিয়ে দেশ থেকে ভাগিয়ে দিতে চায় বা দেবে- একথা কি তিনি কোনো আশংঙ্কা থেকে বলেছিলেন? জয় সাবেক কি কোনো সমস্যায় আছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে? অনেকে বলছেন যে তিনি নানা ধরনের সমস্যায়, প্রতিকূলতা তিনি ফেস করছেন, তার সম্পত্তি সেখানে বাজেয়াপ্ত হতে পারে, তার টাকাপয়সা… নানা জায়গা থেকে তার অনেক টাকাপয়সা রয়েছে।… 

উত্তরে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত বলেন, আমার কথা হলো যে ন্যূনূনতম কোনো এভিডেন্স আর তথ্য ছাড়া এধরনের কথা বলা বা প্রশ্ন তোলাও ঠিক নয়। এগুলো নিয়ে দীর্ঘদিন কথা বলা হয়েছে। তারপর তিনি বাংলাদেশে এসেছিল, এসে ঘুরে গেছে। তখন আপনারা দেখেছেন ইয়ুথ ইয়াং বাংলার বিভিন্ন প্রোগ্রামে সে পার্টিসিপেট করেছে। আবার সে গেছে। কিছুদিন পর হয়তো আবার আসবে। এখন ইলেকশনের সময় কেন আসলো না বা…তার সাথে এগুলোর কী সম্পর্ক আমি জানি না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে বক্তব্য দিয়েছিলেন সম্পত্তি বাজেয়াপ্তর বিষয়। সেটা আপনি যদি খেয়াল করেন কনটেক্সটটা দেখলে বুঝতে পারবেন কেন বলেছিলেন। যখন এইযে ভিসা স্যাংশন এগুলো নিয়ে কথা বলছিল অ্যামেরিকানরা সেটা নিয়ে অনেক ধরনের কথাবার্তা হচ্ছে। তখন তিনি বলেছেন যে, এগুলো নিয়ে আমরা বদার্ড না। আমরা বাংলাদেশকে ভালো বুঝি, আমরা ভালো চিনি, এটা আমাদের দেশ। এদেশকে নিয়ে আমরা এগিয়ে যাবো। ওই পাশ্চাত্যের কী ভিসা স্যাংশন দিচ্ছে কি দিচ্ছে না এগুলো নিয়ে আমরা কেয়ার করি না। এটি বলতে যেয়ে প্রসঙ্গক্রমে বলেছেন যে, আমার ছেলেও তো এখানে পড়াশোনা করেছে, চাকরি করে, থাকে, এখানে তার বাড়ি আছে, তার সবকিছু এখানে আছে।… এটি নিয়ে আমরা যে বদার্ড না এটি বুঝানোর জন্য এক্সট্রিমে যেয়ে উনি এটা বলেছেন।… কনটেক্সটটা দেখলে বুঝা যায়। 

অর্থাৎ, মোহাম্মদ এ আরাফাত যুক্তরাষ্ট্রে সজীব ওয়াজেদ জয় গ্রেফতার হওয়া নিয়ে কোনো কথা বলেননি। এছাড়া, খালেদ মুহিউদ্দীনও জয় গ্রেফতার হয়েছেন এ-সংক্রান্ত কোনো তথ্য উল্লেখ করেননি। 

এছাড়া, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে এসংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

মূলত, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র ও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেফতার হয়েছেন- শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত দাবিটি মিথ্যা। প্রকৃতপক্ষে, ভিন্ন একটি ভিডিওর সাথে চটকদার থাম্বনেইল ও শিরোনাম ব্যবহার করে আলোচিত ভিডিওটি প্রচার করা হচ্ছে। 

সুতরাং, সজীব ওয়াজেদ জয় যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেফতারের দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র