Home Blog Page 538

বাংলাদেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা জারির গুজব

সম্প্রতি, বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা নিয়ে টেনশনে আ’লীগ। যেভাবে ক্ষমতা হারাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী– শীর্ষক শিরোনামে এবং বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা দিলো আমেরিকা, পদত্যাগ চাইলো জো বাইডেন– শীর্ষক থাম্বনেইলে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে।

ভিডিওটিতে দাবি করা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে বাংলাদেশের ওপর এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র পদত্যাগ চেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

 বাণিজ্যিক

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু ভিডিও পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের ওপর বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা দেয়নি এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র পদত্যাগও চাননি বরং অধিক ভিউ পাবার আশায় চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এটি ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার পুরোনো কয়েকটি ভিডিও ক্লিপ এবং ছবি নিয়ে তৈরি একটি ভিডিও।

ভিডিও যাচাই- ১

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটিতে বাংলাদেশের বেসরকারি টেলিভিশন নিউজ২৪ এর লোগো দেখা যায়। 

লোগো’র সূত্র ধরে নিউজ২৪ এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ৬ ডিসেম্বর “পোশাক খাতে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন বার্তায় চিন্তার ভাঁজ!” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

আলোচিত ভিডিওটির সাথে উক্ত ভিডিওটির হুবহু মিল পাওয়া যায়।

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতে যুক্তরাষ্ট্রের যেকোনো নিষেধাজ্ঞা থাকলে পণ্য নেওয়া হবে না কিংবা ক্রয়াদেশ বাতিল করা হবে- এমন শর্তে যুক্তরাষ্ট্রের একটি ক্রেতা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশকে একটি ঋণপত্র দিয়েছে। 

Video Comparison by Rumor Scanner

ভিডিও যাচাই- ২

অনুসন্ধানের শুরুতে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে বাংলাদেশের বেসরকারি টেলিভিশন যমুনা টেলিভিশনের ইউটিউব চ্যানেল গত ৬ ডিসেম্বর “আগামী ৬ মাস পোশাক শিল্পের জন্য কঠিন সময়: বিজিএমইএ সভাপতি” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন পাওয়া যায়। 

আলোচিত ভিডিওটির সাথে উক্ত ভিডিওটির হুবহু মিল রয়েছে। 

প্রতিবেদবে বিজিএমইএ এর সভাপতি ফারুক হাসানকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, এখন থেকে ৬ মাস পোশাক শিল্পের জন্য কঠিন সময়। তৈরি পোশাক রপ্তানিতে শর্ত জুড়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটছে। বায়াররা জানিয়েছেন কোনো কারণে নিষেধাজ্ঞা এনে তারা পণ্য নেবে না।

Video Comparison by Rumor Scanner

ভিডিও যাচাই- ৩

আলোচিত ভিডিওটির এই অংশে বিএনপি নেত্রী রুমিন ফারহানাকে বক্তব্য দিতে দেখা যায়। সেই বক্তব্যের সূত্র ধরে অনুসন্ধানে করে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

অনুসন্ধানে Rumeen’s Voice নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলে গত ৭ ডিসেম্বর “বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা..প্রধানমন্ত্রীর আভাস; দেখা যাচ্ছে খারাপ লক্ষণ” শীর্ষক ক্যাপশনে একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়

আলোচিত ভিডিওটির সাথে উক্ত ভিডিওটির হুবহু মিল রয়েছে। 

ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে জানা যায়, বিএনপি নেত্রী রুমিন ফারহানা গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন সংবাদ নিয়ে আলোচনা করছেন। পাশাপাশি, আগামীতে বাংলাদেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা দিতে পারেন বলে মতামত দেন। 

অর্থাৎ, এখানেও বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে বলা হয়নি বরং বিএনপি নেত্রী রুমিন ফারহানা বিভিন্ন সংবাদের প্রেক্ষিতে নিজের মতামত দেন এবং মতামতে তিনি বলেন, আগামীতে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের ওপর বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা দিতে পারে।

Video Comparison by Rumor Scanner

পাশাপাশি, অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বাংলাদেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার দাবির বিষয়ে সত্যতা পাওয়া যায়নি।

তবে, আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিবিসি বাংলার ওয়েবসাইটে গত ১৭ নভেম্বর “আমেরিকার নতুন ঘোষণা, শ্রমিক অধিকার হরণ হলে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা দেয়া হবে” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, গত ১৬ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্র একটি নতুন শ্রম নীতি ঘোষনা করেছে। শ্রম নীতির বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন জানিয়েছেন, বিশ্বজুড়ে যারা শ্রমিক অধিকার হরণ করবে, শ্রমিকদের ভয়ভীতি দেখাবে এবং আক্রমণ করবে তাদের উপর বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞাসহ নানা ধরনের নিষেধাজ্ঞা দেবে যুক্তরাষ্ট্র।

মূলত, বিশ্বব্যাপী শ্রমিক অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গত ১৬ নভেম্বর একটি মেমোরেন্ডামে  স্বাক্ষর করেছেন। উক্ত বিষয়কে কেন্দ্র করে সম্প্রতি বাংলাদেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন কর্তৃক বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবি সম্বলিত থাম্বনেইলে থাম্বনেইলে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচারিত হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র পদত্যাগের বিষয়ে প্রচারিত তথ্যগুলো সঠিক নয়। যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শ্রম নীতির আওতায় বাংলাদেশকে এখন পর্যন্ত কোনো নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়নি।

সুতরাং, বাংলাদেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা ও প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়েছে জো বাইডেন- শীর্ষক দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

রাষ্ট্রপতির ওপর ওবায়দুল কাদের ক্ষিপ্ত হওয়ার দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত ভিডিওটি এডিটেড 

সম্প্রতি “রাষ্ট্রপতির ওপর ক্ষিপ্ত ওবায়দুল কাদের। কাজ করেনা বসে বসে খায়” শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে।

রাষ্ট্রপতি

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ইউটিউবে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন’র ওপর ওবায়দুল কাদেরের ক্ষিপ্ত হওয়ার দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি উক্ত ঘটনার নয় বরং ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং ওবায়দুল কাদেরের পুরোনো বক্তব্যের খণ্ড খণ্ড দুটি অংশ জোড়া লাগিয়ে উক্ত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনের ভিডিও যাচাই

আলোচিত দাবির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য ভিডিওটির কিছু কি-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চ করে মূলধারার ইলেকট্রনিক সংবাদমাধ্যম News24 এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি “তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে যা বললেন নতুন রাষ্ট্রপতি” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ভিডিওর সাথে উক্ত আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর দৃশ্যের হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Image Comparison: Rumor Scanner

ভিডিও থেকে জানা যায়, সেদিন সাংবাদিক রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিলুপ্ত করা হয়। এখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে যাওয়ার তো আর সুযোগ নেই। তিনি জানান “আমি বাংলাদেশের রাষ্ট্র প্রধান হিসেবে মনে করি সকলের সংবিধান মানা উচিৎ এবং আমাদের কাছে যে সংবিধানের রূপ আছে, সেখানে নির্বাচনের অধ্যায়ে যা বলা আছে, ঐ ভাবেই নির্বাচন হবে।

রাষ্ট্রপতি সংবিধানের ৫৮ এর ‘গ’ এর কথা বলতে গিয়ে বলেন ‘অনির্বাচিত কারও দ্বারা কোনো সরকার বৈধ নয়’।

অর্থাৎ, রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন সেই ভিডিওতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার না থাকার পক্ষে তার অবস্থান তুলে ধরেন।

ওবায়দুল কাদেরের ভিডিও যাচাই

অনুসন্ধানে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল Somoy TV এর ইউটিউব চ্যানেলে গত 22 মার্চ “ছাত্রলীগকে সার্জারি করে বিষফোঁড়া বের করতে বললেন ওবায়দুল কাদের | Obaidul Quader | Chhatra League” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ভিডিওর সাথে উক্ত আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর দৃশ্যের হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Image Comparison: Rumor Scanner

ভিডিওতে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ছাত্রলীগকে নিয়ে আমরা যারা গর্ব করি আমাদের রাজনীতির হাতেখড়ি যে ছাত্রলীগে মাঝে মাঝে এমন কিছু হয় এমন কিছু ঘটে ছাত্রলীগের নামে। পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে আমি পরিষ্কার করে বলতে চাই, খারাপ ছেলে মেয়েদের কোনো দরকার নাই।

তিনি আরও বলেন, “আমরা সবাই মনে করছি আশার প্রদীপ আবার জ্বলবে। আমাদের আশার প্রদীপ যেনো নিভে না যায়। যারা খারাপ, সংশোধন না হলে পরিষ্কার বের করে দাও। যেই কমিটি কাজ করে না, চাঁদাবাজি করে, দখল করে, মাদক নিয়ে ব্যস্ত ঐ কমিটির কোনো দরকার নেই।”

পরবর্তীতে ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের তথ্যের ভিত্তিতে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চ করে জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোর ওয়েবসাইট্র গত ২২ মার্চ “ছাত্রলীগকে ওবায়দুল কাদেরের কড়া নির্দেশনা, করলেন রসিকতাও” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি সংবাদ প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ২২ মার্চ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে ছাত্রলীগের আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।

মূলত, গত ১৩ ফেব্রুয়ারি তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে সাংবাদিকের করা প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনকে তিনি বলেন, সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিলুপ্ত করা হয়। এখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে যাওয়ার তো আর সুযোগ নেই। এছাড়া, সংবিধানের ৫৮ এর ‘গ’ এর কথা বলতে গিয়ে বলেন ‘অনির্বাচিত কারও দ্বারা কোনো সরকার বৈধ নয়’। অপরদিকে গত ২২ মার্চ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে ছাত্রলীগের আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন “আমরা সবাই মনে করছি আশার প্রদীপ আবার জ্বলবে। আমাদের আশার প্রদীপ যেনো নিভে না যায়। যারা খারাপ, সংশোধন না হলে পরিষ্কার বের করে দাও। যেই কমিটি কাজ করে না, চাঁদাবাজি করে, দখল করে, মাদক নিয়ে ব্যস্ত ঐ কমিটির কোনো দরকার নেই। সম্প্রতি মহামান্য রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন এবং ওবায়দুল কাদেরের দেওয়া ভিন্ন ঘটনার বক্তব্য খণ্ড খণ্ড দুটি অংশ জোড়া লাগিয়ে একই ঘটনার দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে।

সুতরাং, মহামান্য রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনের ওপর সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ক্ষিপ্ত হওয়ার দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত এই ভিডিওটি এডিটেড বা বিকৃত।

তথ্যসূত্র

রাষ্ট্রপতি ও সেনাপ্রধান কর্তৃক নির্বাচন পেছানোর ঘোষণার গুজব

0

গত ১৩ ডিসেম্বর ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম ইউটিউবে Sabai Sikhi নামের একটি চ্যানেলে ‘নির্বাচন পিছানোর ঘোষণা দিলো রাষ্ট্রপতি ও সেনাপ্রধান’ শীর্ষক শিরোনাম ও ‘এইমাত্র নির্বাচন পিছানোর ঘোষণা দিলো রাষ্ট্রপতি শাহাবুদ্দিন চুপ্পু ও সেনাপ্রধান’ শীর্ষক থাম্বনেইল ব্যবহার করে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।

সেনাপ্রধান

ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি ভিডিওটি প্রায় ২৩ হাজার বার দেখা হয়েছে। এছাড়া ভিডিওটিতে সাড়ে ৬ শত পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, রাষ্ট্রপতি ও সেনাপ্রধান কর্তৃক আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পেছানোর কোনো ঘোষণা দেওয়া হয়নি বরং অধিক ভিউ পাবার আশায় চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিও পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এটি ভিন্ন ভিন্ন কয়েকটি পুরোনো ঘটনার ভিডিও ক্লিপ এবং ছবি নিয়ে তৈরি একটি ভিডিও প্রতিবেদন, যেখানে রাষ্ট্রপতি ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের পুরোনো কিছু কার্যক্রমের দৃশ্য দেখানো হয়।

ভিডিওটি’র সংবাদপাঠ অংশে বলা হয়, “এবার রাষ্ট্রপতির নির্দেশে নির্বাচন পিছানোর ঘোষণা দিলো প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। রাষ্ট্রপতি বলেন, নির্বাচন গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণ মূলক হতে হলে অবশ্যই সকল রাজনৈতিক দলকে অংশগ্রহণ করতে হবে। নইলে জাতীয় নির্বাচন অবশ্যই গ্রহণযোগ্যতা হারাবে।”

উক্ত বিষয়গুলো নিয়ে প্রাসঙ্গিক একাধিক কি ওয়ার্ড সার্চ করেও গণমাধ্যম কিংবা অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে দাবিগুলোর সত্যতা পাওয়া যায়নি।

আলোচিত ভিডিওটির শুরুতে রাষ্ট্রপতির বক্তব্যের অংশটির কিছু স্থিরচিত্র রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে মূলধারার ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম চ্যানেল আই এর ইউটিউব চ্যানেলে ‘দেশকে অপমানিত করার ষড়যন্ত্রকারীরা এখনও দুদকে রয়েছে: রাষ্ট্রপতি’ শীর্ষক শিরোনামে রাষ্ট্রপতির বক্তব্য নিয়ে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিওটির সাথে আলোচিত ভিডিওটির শুরুতে প্রদর্শিত রাষ্ট্রপতির বক্তব্যের অংশের মিল পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner

তবে ভিডিওটির সাথে আলোচিত ভিডিওতে উল্লেখিত দাবির কোনো মিল পাওয়া যায়নি। দূর্নীতি দমন কমিশনের বিষয়ে দেওয়া রাষ্ট্রপতির সাম্প্রতিক বক্তব্য এটি। রাষ্ট্রপতি উক্ত বক্তব্যে নির্বাচন পেছানোর কোনো ঘোষণা দেননি।

পরবর্তীতে আলোচিত ভিডিওতে প্রদর্শিত রাষ্ট্রপতির বক্তব্যের অপর একটি ভিডিও ক্লিপ থেকে কিছু স্থিরচিত্র রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে মূলধারার ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম এটিএন নিউজের ইউটিউব চ্যানেলে চলতি বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি ‘গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য সব বিরোধীদলকে আহবান নতুন রাষ্ট্রপতির’ শীর্ষক শিরোনামে রাষ্ট্রপতির বক্তব্য নিয়ে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: ATN News

এই ভিডিওটির সাথে আলোচিত ভিডিওটি’র রাষ্ট্রপতির বক্তব্যের অংশের হুবহু মিল পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, রাষ্ট্রপতির বক্তব্যের এই ভিডিওটি গত ফেব্রুয়ারিতে তাঁর রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার পরবর্তীতে সময়ের। সেসময় তিনি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের স্বার্থ্যে সব বিরোধীদলকে এগিয়ে আসার আহবান জানান।

অর্থাৎ রাষ্ট্রপতি উক্ত বক্তব্যটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। এছাড়া উক্ত বক্তব্যে তিনি নির্বাচন পেছানোর কোনো ঘোষণা দেননি। তাছাড়া আলোচিত দাবির ভিডিওটি’র শিরোনাম এবং থাম্বনেইলে উল্লেখিত তথ্যের সাথে বিস্তারিত সংবাদপাঠ অংশের তথ্যের অমিল রয়েছে।

অর্থাৎ, উপরোক্ত বিষয়গুলো পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, রাষ্ট্রপতি ও সেনাপ্রধান কর্তৃক নির্বাচন পেছানোর ঘোষণা দেওয়া হয়নি।

মূলত, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন করার দাবিতে বিএনপি-জামায়াতসহ আওয়ামী লীগ সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো দীর্ঘদিন ধরে রাজপথে আন্দোলন করে আসছে। এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা ধরনের তথ্য প্রচার হয়ে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৩ ডিসেম্বর Sabai Sikhi নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ‘নির্বাচন পিছানোর ঘোষণা দিলো রাষ্ট্রপতি ও সেনাপ্রধান’ শীর্ষক শিরোনাম ও ‘এইমাত্র নির্বাচন পিছানোর ঘোষণা দিলো রাষ্ট্রপতি শাহাবুদ্দিন চুপ্পু ও সেনাপ্রধান’ শীর্ষক থাম্বনেইল ব্যবহার করে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে অধিক ভিউ পাবার আশায় ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার কয়েকটি পুরোনো ভিডিও ক্লিপ ও ছবি যুক্ত করে তাতে চটকদার থাম্বনেইল ও শিরোনাম ব্যবহার করে কোনোপ্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। এছাড়া, গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে বিষয়টির সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, পূর্বেও চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে বিভিন্ন ভুয়া তথ্য প্রচারের প্রেক্ষিতে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কয়েকটি প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, রাষ্ট্রপতি ও সেনাপ্রধান কর্তৃক আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পেছানোর ঘোষণা দেওয়া হয়েছে দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভীর নামে ভুয়া মন্তব্য প্রচার

সম্প্রতি, “তারেক জিয়ার মনোনয়ন বানিজ্য নস্যাৎ করতেই বিএনপির দলত্যাগী নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন” শীর্ষক একটি মন্তব্যকে বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভীর মন্তব্য দাবিতে একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

রুহুল কবির

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, “তারেক জিয়ার মনোনয়ন বানিজ্য নস্যাৎ করতেই বিএনপির দলত্যাগী নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন” শীর্ষক কোনো মক্তব্য বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এর জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রদান করেননি প্রকৃতপক্ষে কোনো প্রকার তথ্যসূত্র ছাড়াই একটি ভুয়া মন্তব্যকে রুহুল কবির রিজভীর মন্তব্য দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে রুহুল কবির রিজভীর নামে ছড়ানো মন্তব্যটির সূত্রের খোঁজ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। তবে অনুসন্ধানে দেশীয় কোনো গণমাধ্যমে এমন মন্তব্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

তবে গত ৩০ নভেম্বর Bangladesh Nationalist Party- BNP এর ইউটিউব চ্যানেলে “রুহুল কবির রিজভীর সংবাদ সম্মেলন। 30 November 2023” শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওতে রুহুল কবির রিজভীর পরিহিত পোষাক এবং ব্যাকগ্রাউন্ডের সাথে আলোচিত ফটোকার্ডে ব্যবহৃত ছবির মিল খুঁজে পাওয়া যায়। এ থেকে ধারণা করা হয় যে উক্ত ভিডিও থেকেই একটি স্থিরচিত্র আলোচিত ফটোকার্ডে যুক্ত করে উক্ত মন্তব্যটি প্রচার করা হয়েছে। 

Screenshot Comparison : Rumor Scanner 

পরবর্তীতে উক্ত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ভিডিওতে রুহুল কবির রিজভী আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। উক্ত ভিডিওতে কোথাও বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মনোনয়ন বাণিজ্য নস্যাৎ করতেই বিএনপির দলত্যাগী নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন শীর্ষক কোনো কথা বলেননি। 

মূলত, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বর্তমান সরকারের পদত্যাগ এবং নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন গ্রহণের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে বিএনপি এবং সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে প্রতিদিনই বিভিন্ন ধরনের তথ্য ইন্টারনেটে প্রচারিত হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় তারেক জিয়ার মনোনয়ন বাণিজ্য নস্যাৎ করতেই বিএনপির দলত্যাগী নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন শীর্ষক একটি মন্তব্যকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এর জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর মন্তব্য দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে। তবে রিউমর স্ক্যানার অনুসন্ধানে দেখেছে যে কোনো প্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই রুহুল কবির রিজভীর নামে ভুয়া এই মন্তব্যটি প্রচার করা হয়েছে। 

সুতরাং, ‘তারেক জিয়ার মনোনয়ন বানিজ্য নস্যাৎ করতেই বিএনপির দলত্যাগী নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন’ শীর্ষক একটি মন্তব্য রুহুল কবির রিজভীর মন্তব্য দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ বানোয়াট এবং মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপে মির্জা ফখরুল ইসলামের জামিনের দাবিতে মিথ্যা তথ্য প্রচার 

সম্প্রতি, যুক্তরাষ্ট্রের চাপে ফখরুলের মামলা বাতিল, মুক্তি পেয়ে আসছে মির্জা ফখরুল– শীর্ষক শিরোনাম এবং থাম্বনেইলে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। 

ভিডিওটিতে দাবি করা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের চাপে বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিরুদ্ধে করা মামলা বাতিল হয়েছে এবং তিনি মুক্তি পেয়েছেন।

 মির্জা ফখরুল

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু  ভিডিও পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মুক্তি পাননি এবং যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃপক্ষও তাঁর মুক্তির বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেননি বরং অধিক ভিউ পাবার আশায় পুরোনো একটি ভিডিওর সাথে চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওটিতে একজন আইনজীবী বক্তব্য দিচ্ছেন। ভিডিওটিতে বাংলাদেশের বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ২৪ এর লোগো দেখা যায়। 

সেই লোগোর সূত্র ধরে অনুসন্ধানে চ্যানেল২৪ এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ৩ জানুয়ারি “যেভাবে জামিন পেলেন মির্জা ফখরুল এবং মির্জা আব্বাস” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

ভিডিওটি থেকে জানা যায়, গত বছরের ৭ ডিসেম্বর পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় করা মামলায় কারাবন্দী বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে ছয় মাসের জন্য জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। 

একই তথ্যে সংবাদ প্রকাশ করেছিল দেশের অন্যান্য গণমাধ্যমগুলোও। 
সেগুলো দেখন-

অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিওটিতে থাকা আইনজীবীর বক্তব্যটি সাম্প্রতিক নয় বরং গত ৩ জানুয়ারি কারাবন্দী বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস জামিন পাওয়ার সময়কার। 

Video Comparison by Rumor Scanner

এছাড়া, আলোচিত ভিডিওটির সাথে উক্ত ভিডিওটির হুবহু মিল রয়েছে। 

পরবর্তীতে, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মুক্তি পেয়েছেন কিনা এ বিষয়ে অনুসন্ধান করে রিউমর স্ক্যানার টিম। অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে দৈনিক যুগান্তরে গত ৭ ডিসেম্বর “মির্জা ফখরুলকে জামিন দেননি হাইকোর্ট” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। 

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, প্রধান বিচারপতির বাসায় হামলার ঘটনায় রাজধানীর রমনা থানায় করা মামলায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে জামিন দেননি হাইকোর্ট। 

বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) বিচারপতি মো. সেলিম ও বিচারপতি শাহেদ নূরউদ্দিনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।

পাশাপাশি, আজ (১৩ ডিসেম্বর) প্রথম আলো’র ওয়েবসাইটে “সাত মামলায় মির্জা ফখরুলের জামিন আবেদন” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে পৃথক সাত মামলায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের জামিন আবেদন করা হয়েছে। আজ বুধবার এ আবেদন করা হয় বলে তাঁর আইনজীবী সৈয়দ জয়নুল আবেদীন জানিয়েছেন।

অর্থাৎ, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এখনো মুক্তি পাননি। 

এরপর, বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মুক্তির জন্য যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ নিয়েছে কি না জানতে অনুসন্ধান করে রিউমর স্ক্যানার টিম। অনুসন্ধানের করে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে এসংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

এছাড়া, ঢাকাস্থ যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের ফেসবুক পেজওয়েবসাইটেও এ-সংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

মূলত, গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনার একটি মামলায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুলকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুলিশ। পরবর্তীতে জামিনের জন্য আবেদন করা হলেও তা নাকজ করে দেয় হাইকোর্ট। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের চাপে ফখরুলের মামলা বাতিল, মুক্তি পেয়ে আসছে মির্জা ফখরুল– শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে, রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মুক্তি পাননি এবং যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃপক্ষও তাঁর মুক্তির বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেননি। প্রকৃতপক্ষে অধিক ভিউ পাবার আশায় পুরোনো একটি ভিডিওর সাথে চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

সুতরাং, যুক্তরাষ্ট্রের চাপে বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মুক্তি হয়েছে দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

বর্তমানে তুর্কমেনিস্তানের নাগরিকদের বিনামূল্যে গ্যাস,বিদ্যুৎ ও পানি প্রদানের দাবিটি মিথ্যা

0

সম্প্রতি, “তুর্কমেনিস্তানে বিনামূল্যে গ্যাস, বিদুৎ এবং পানি প্রদান করা হয় শীর্ষক দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

তুর্কমেনিস্তান

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

টিকটকে প্রচারিত এমন একটি ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, বর্তমানে তুর্কমেনিস্তানের নাগরিকদের জন্য বিনামূল্যে গ্যাস, বিদ্যুৎ এবং পানির সেবা চালু নেই। প্রকৃতপক্ষে ১৯৯৩ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত তুর্কমেনিস্তানের নাগরিকদের জন্য এই সেবা চালু ছিল।

মূলত, ১৯৯৩ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত তুর্কমেনিস্তানের নাগরিকরা বিনামূল্যে গ্যাস, পানি এবং বিদ্যুৎ সুবিধা পেত কিন্তু বর্তমানে দেশটিতে আর এই সেবাটি বিরাজ করছেনা। ২০১৯ সালে অর্থনৈতিক মন্দা কাটানোর জন্য তুর্কমেনিস্তানের সরকার এই সেবাটি বন্ধ করে দেয়। কিন্তু তুর্কমেনিস্তানের নাগরিকরা এখনও বিনামূল্যে গ্যাস, পানি এবং বিদ্যুৎ সুবিধা পাচ্ছে দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। 

উল্লেখ্য, পূর্বেও একই দাবি ইন্টারনেটে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়লে সেটি নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।

২০১৫ সালের তথ্যের বরাতে ভেনেজুয়েলায় কনডমের দাম নিয়ে ভুল তথ্য গণমাধ্যমে  

চলতি বছরের বিভিন্ন সময়ে দেশের একাধিক গণমাধ্যমে ভেনেজুয়েলায় কনডমের দামের বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন তথ্য প্রচার হতে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

কতিপয় গণমাধ্যমের দাবি, দেশটিতে একটি বা এক প্যাকেট কনডমের দাম অন্তত ৬০ হাজার টাকা৷

এই দাবিতে সংবাদ প্রকাশ করেছে চ্যানেল২৪, নাগরিক টিভি (ইউটিউব), এবিনিউজ২৪।

আবার, কিছু গণমাধ্যম দাবি করেছে, এক প্যাকেট কনডমের দাম ৭৬ হাজার টাকা৷

এই দাবিতে সংবাদ প্রকাশ করেছে সময় টিভি, স্বাধীন আলো, কারেন্ট নিউজ।

একই দাবিতে বিগত বছরগুলোয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদন দেখুন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড, নিউজ২৪

একই দাবিতে গণমাধ্যমের ফেসবুক পেজের পোস্টসহ অন্যান্য ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
একই দাবিতে গণমাধ্যমের ইউটিউব চ্যানেলের ভিডিওাহ অন্যান্য ইউটিউব ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভেনেজুয়েলায় একটি বা এক প্যাকেট কনডমের দাম ৬০ বা ৭৬ হাজার টাকা শীর্ষক তথ্যটি সঠিক নয় বরং ২০১৫ সালের একটি সংবাদের সূত্রে চলতি বছরও একই সংবাদ প্রচার করা হলেও দেশটিতে কখনোই কনডমের দাম এত বেশি ছিল না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে কিওয়ার্ড সার্চ করে চলতি বছর এ সংক্রান্ত কোনো খবর প্রকাশ হতে দেখা যায়নি। তবে ২০২২ সালে ইন্ডিয়া টাইমস, ইন্ডিয়া টুডে, নিউজ১৮, হিন্দুস্তান টাইমসসহ ভারতের একাধিক গণমাধ্যমে এই সংবাদটি প্রকাশিত হয়। 

দেশের গণমাধ্যমগুলোর মধ্যে চলতি বছর সময় টিভি ইন্ডিয়া টুডের বরাতে এবং চ্যানেল২৪ ইন্ডিয়া টাইমসের বরাতে সংবাদটি প্রকাশ করেছে। এই দুই সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে খবরটির কোনো সূত্র উল্লেখ করা না হলেও ইন্ডিয়া টুডের এ সংক্রান্ত ভিডিও প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, ৩৬ প্যাকের একটি কনডম ৭৫৫ মার্কিন ডলারে বিক্রি হয় দেশটিতে৷ 

এই তথ্যের সূত্র ধরে মার্কিন সংবাদমাধ্যম Bloomberg এর ওয়েবসাইটে ২০১৫ সালের ০৪ ফেব্রুয়ারি এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

এই প্রতিবেদনে MercadoLibre নামে ভেনেজুয়েলার পণ্য নিলামের একটি ওয়েবসাইটের লিংক হাইপারলিংক করে বলা হয়, “ভেনেজুয়েলার মানুষ সহজে পাওয়া যায় না এমন পণ্য পেতে এই সাইটটি (MercadoLibre) ব্যবহার করে যেখানে ৩৬-প্যাকের একটি ট্রোজান কনডম ৪৭৬০ বলিভারে (সরকারি বিনিময় মূল্যে যা ৭৫৫ মার্কিন ডলার) বিক্রি হয়, যা দেশের ন্যূনতম মাসিক মজুরি ৫৬০০ বলিভারের কাছাকাছি। যাদের ডলার ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে, তাদের আনঅফিশিয়াল কালোবাজারে এই কনডম কিনতে খরচ হয় ২৫ মার্কিন ডলার, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ২১ মার্কিন ডলার”। 

MercadoLibre এর লিংকটিতে প্রবেশ করে এখন আর কনডম বিষয়ক কোনো তথ্য মিলছে না৷ 
এই বিষয়ে ব্লুমবার্গের এই প্রতিবেদনটিই সবচেয়ে পুরোনো। পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক একাধিক সংবাদমাধ্যমেই (, , ) খবরটি এসেছে।

ব্লুমবার্গের প্রতিবেদন প্রকাশের পরপরই একই মাসের ২৪ তারিখে ভেনেজুয়েলার সংবাদমাধ্যম Venezuelanalysis এর ওয়েবসাইটে এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় যাতে দাবি করা হয়, ব্লুমবার্গ যা বলছে তার বিপরীতে দেখা যাচ্ছে, দেশটিতে তিনটি ডিউরেক্স কনডমের একটি প্যাকেট সেই সময়ে ১০০-৩০০ বলিভার (৮-২৬ মার্কিন ডলার) খুচরা মূল্যে পাওয়া যাচ্ছিল। এটি ব্যয়বহুল হলেও মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে নয় বলে উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে। 

অনলাইন ভেরিফিকেশন ও মিডিয়া গবেষণা প্লাটফর্ম ডিসমিসল্যাব এ বিষয়ে ভেনেজুয়েলার সাংবাদিক Alessandro Di Stasio এর সাথে কথা বলেছে। তিনি বলছিলেন, ভেনেজুয়েলা এনালাইসিস ঠিক বলেছে যে আপনি কখনই ৭৫৫ ডলার দামে কনডমের প্যাকেট পাবেন না, যেহেতু এখানে মানুষ বাজারের মূল্য দিয়ে চালিত হয়, সরকার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত মূল্য দিয়ে নয়।

আমরা ভেনেজুয়েলায় বর্তমানে কনডমের দামের বিষয়ে জানার চেষ্টা করেছি। MercadoLibre এর ওয়েবসাইটে তিনটি কনডম সম্বলিত এক প্যাকেট ডিউরেক্সের দাম চাওয়া হয়েছে ৬.৫ মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ৭১৫ টাকা)। এ হিসেবে ৩৬ টি কনডমের প্যাকেটের দাম দাঁড়াচ্ছে প্রায় সাড়ে ৮ হাজার টাকা। অবশ্য ভেনিজুয়েলার আরেক পণ্য বেচাকেনার সাইটে এর চেয়ে প্রায় অর্ধেক দামেই কনডমের মূল্য দেখা যাচ্ছে। 

মূলত, চলতি বছর দেশের একাধিক গণমাধ্যমে ভেনেজুয়েলায় কনডমের দামের বিষয়ে প্রকাশিত সংবাদে দাবি করা হয়, দেশটিতে একটি বা এক প্যাকেট কনডমের দাম অন্তত ৬০ হাজার টাকা৷ কতিপয় গণমাধ্যম দাবি করেছে, এক প্যাকেট কনডমের দাম ৭৬ হাজার টাকা৷ কিন্তু রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, দাবিগুলো সঠিক নয়। ২০১৫ সালে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, ৩৬-প্যাকের একটি ট্রোজান কনডমের মূল্য ৭৫৫ মার্কিন ডলার। পরবর্তী সময়ে এই সংবাদের বরাতেই উক্ত তথ্যটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে এসেছে। একইভাবে এই তথ্যটি দেশের গণমাধ্যমগুলোতেও প্রচার হয়ে আসছে। তবে ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে একটি পণ্য বেচাকেনার সাইটের বরাতে উক্ত দামের বিষয়টি উল্লেখ থাকলেও দেশটির একাধিক সাংবাদিক নিশ্চিত করেছেন যে ভেনেজুয়েলায় কনডমের দাম কখনোই এত বেশি ছিল না। তাছাড়া, দেশটিতে বর্তমানে সমপরিমাণ কনডমের দাম প্রায় সাড়ে ৮ হাজার টাকা।

সুতরাং, ২০১৫ সালের ভুল তথ্যের বরাতে ভেনেজুয়েলায় কনডমের দাম ৬০ (কোনো গণমাধ্যমে ৭৬) হাজার টাকা শীর্ষক দাবিতে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচার হয়ে আসছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র

বিএনপি’র বহিষ্কৃত নেতা মেজর (অব.) আখতারুজ্জামানের ওপর হামলার পুরোনো ভিডিও সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার

সম্প্রতি, বিএনপি’র বহিষ্কৃত নেতা ও  সাবেক সংসদ সদস্য মেজর (অব.) আখতারুজ্জামানের ওপর বর্বরোচিত হামলা হয়েছে দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

মেজর (অব.) আখতারুজ্জামানের

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বিএনপি’র বহিষ্কৃত নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য মেজর (অব.) আখতারুজ্জামানের ওপর হামলার ঘটনার ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচারণা চলাকালে তার ওপর হামলার ঘটনাকে সাম্প্রতিক সময়ের ঘটনা দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।

আলোচিত দাবির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য ভিডিওটির কিছু কি-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চ করে probasnews24.com নামক ফেসবুক পেজে ২০১৮ সালের ২৪ ডিসেম্বর প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর দৃশ্যের হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner

পরবর্তীতে উক্ত ভিডিওর সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল যমুনা টিভি’র ওয়েবসাইটে ২০১৮ সালের ২৫ ডিসেম্বরে প্রকাশিত একটি সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, অবসরপ্রাপ্ত মেজর আখতারুজ্জামান সেদিন সাদা পোশাকের পুলিশের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ করেন। উক্ত হামলার ঘটনায় তিনিসহ ১৫ জন আহত হয়েছেন অন্তত।

এছাড়া, অনুসন্ধানে মেজর (অব.) আখতারুজ্জামানের উপর সম্প্রতি হামলা হওয়ার কোনো তথ্য দেশিয় এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে খুঁজে পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ-২ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে লড়বেন।

মূলত, ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ-২ আসনে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত মেজর আখতারুজ্জামান। সেসময় নির্বাচনী প্রচারণার অংশ হিসেবে জেলার কটিয়াদী উপজেলার বীর নোয়াকান্দি গ্রামে উঠান বৈঠক করার সময় সাদা পোশাকের পুলিশ সদস্য কর্তৃক তিনি হামলার শিকার হওয়ার অভিযোগ করেন।। তার আহত হওয়ার তথ্য ও ভিডিও সেসময় দেশিয় গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত হয়। সম্প্রতি অবসরপ্রাপ্ত মেজর আখতারুজ্জামানের ওপর কোনো হামলার ঘটনা না ঘটলেও তার ওপর বর্বরোচিত হামলা হয়েছে দাবিতে সেই পুরোনো ভিডিও আবার নতুন করে ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, দলীয় শৃংখলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে অবসরপ্রাপ্ত মেজর আখতারুজ্জামানকে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের শেষের দিকে প্রাথমিক সদস্যপদসহ দলের সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করে বিএনপি।

সুতরাং, ২০১৮ সালে সাবেক সংসদ সদস্য মেজর (অব.) আখতারুজ্জামানের ওপর হামলার ঘটনার ভিডিওকে সম্প্রতি তার ওপর বর্বরোচিত হামলা হওয়ার দাবিতে ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

প্রিম্যাচিউর শিশুকে বাঁচাতে বাবার বুক ছিদ্র করে ফুসফুসের সাথে সংযোগ স্থাপনের দাবিটি মিথ্যা

0

সম্প্রতি, প্রিম্যাচিউর বাচ্চা ভূমিষ্ঠ হওয়ায় সন্তানের শ্বাসকষ্ট সমস্যা থেকে বাঁচাতে বাবার বুক চিড়ে ফুসফুসের সাথে সংযোগ স্থাপন করা হয়েছে দাবিতে একটি তথ্য ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়।

প্রিম্যাচিউর

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ)

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়,  প্রচারিত ছবিতে প্রিম্যাচিউর শিশুটিকে তার বাবার বুক ছিদ্র করে ফুসফুসের সাথে যুক্ত করে শ্বাস দেওয়ার বিষয়টি সত্য নয় বরং শিশুটিকে কেবল বুকে রেখে স্কিন টু স্কিন থেরাপি দেয়া হচ্ছিল, যা সাধারণত প্রিম্যাচিউর নবজাতকদের দেওয়া হয়ে থাকে।

মূলত, অকালে বা প্রিম্যাচিউর হয়ে জন্ম নেওয়া শিশুদের জন্য স্কিন টু স্কিন বা ক্যাঙ্গারু কেয়ার উপকারি হয়। জেনি সানচেজ এবং রাসিক ডিকি দম্পতির ৫ মাসে জন্ম নেওয়া প্রিম্যাচ্যুর শিশুকে তার বাবার বুকে রেখে সেই স্কিন টু স্কিন থেরাপি দেওয়ার সময়ের তোলা কিছু ছবি শিশুটির মা তার ইনস্টাগ্রামে আপলোড করেন। পরবর্তীতে সেই ছবিগুলো বিভ্রান্তিকর দাবিতে প্রচারিত হয়।

উল্লেখ্য, পূর্বেও একই দাবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে সেসময় ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

তারেক জিয়াকে নিয়ে পিনাকী ভট্টাচার্যের মন্তব্য দাবিতে বিভ্রান্তিকর ভিডিও প্রচার

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, তারেক জিয়াকে উদ্দেশ্য করে পিনাকী ভট্টাচার্য, ‘ওই নাকি ইংল্যান্ড আর জার্মানির বাজারকে ছাড়াইয়া যাওয়ার জন্যে কাজ করিচ্ছে। ওই নাকি আবার কাজও করে! টাকা মারা ছাড়া তো জানতাম আর কোনো কাজ নাই!’ শীর্ষক কোনো মন্তব্য করেননি। প্রকৃতপক্ষে, পিনাকী ভট্টাচার্য তার ইউটিউব চ্যানেলে গত ৬ ডিসেম্বর ‘হাসিনার স্যাংশনের ডর || নির্বাচনের পর স্যাংশন আসতে পারে- শেখ হাসিনা || Pinaki Bhattacharya’ শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও প্রচার করেন। উক্ত ভিডিওটিতে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং আসন্ন নিবার্চন নিয়ে বিভিন্ন কথা বলেন। এরই প্রেক্ষিতে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে ‘ওই নাকি ইংল্যান্ড আর জার্মানির বাজারকে ছাড়াইয়া যাওয়ার জন্যে কাজ করিচ্ছে। ওই নাকি আবার কাজও করে! টাকা মারা ছাড়া তো জানতাম আর কোনো কাজ নাই!’ শীর্ষক মন্তব্যটি করেন। সেই ভিডিরও উক্ত অংশটুকু কাট করে তার সাথে তারেক জিয়ার ছবি যুক্ত করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যালোচনা করে রিউমর স্ক্যানার টিম। এতে দেখা যায় ভিডিওটির বামপাশে উপরের বাংলা পলিটিক্স লেখা একটি লোগো রয়েছে। 

Screenshot: Youtube

লোগোটির সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে বাংলা পলিটিক্স নামের একটি ফেসবুক পেজে গত ৮ ডিসেম্বর টাকা মা*রা ছাড়া তা*রেক জি*য়ার আর কি কাজ জানালেন পি*নাকী দা😃 শীর্ষক শিরেনামে প্রচারিত আলোচিত ভিডিওটি (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook 

এছাড়াও, পেজটির ক্যাটাগরি সেকশনে গিয়ে দেখা যায়, এটি একটি কমেডি পেজ। বিভিন্ন সময়ে এই পেজটি থেকে বিভিন্ন কমেডিধর্মী পোস্ট প্রচার করতে দেখা যায়।

পরবর্তীতে পিনাকী ভট্টাচার্যের ভিডিওটির সূত্র অনুসন্ধানে তার ইউটিউব চ্যানেলটি পর্যালোচনার মাধ্যমে গত ৬ ডিসেম্বর হাসিনার স্যাংশনের ডর || নির্বাচনের পর স্যাংশন আসতে পারে- শেখ হাসিনা || Pinaki Bhattacharya শীর্ষক শিরোনামে তার চ্যানেলে প্রচার করা একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Youtube

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ভিডিওটির ২ মিনিট ২৫ সেকেন্ড থেকে ২ মিনিট ৩৬ সেকেন্ড পর্যন্ত অংশটুকুর সাথে আলোচিত ভিডিওটির সাথে হুবহু মিল রয়েছে। 

Video Comparison by Rumor Scanner 

তিনি মূলত ভিডিওটিতে আসন্ন জাতীয় নিবার্চন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে বিভিন্ন ধরনের কথা বলেন। ভিডিওটির এ পর্যায়ে তিনি গত ১৯ নভেম্বর বাংলাদেশের অনলাইন মিডিয়া bdnews24.com এ যুক্তরাজ্য ও জার্মানির বাজারকে ছাড়িয়ে যেতে কাজ করছি: শেখ হাসিনা শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন দর্শকদের উদ্দেশ্যে দেখিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে আলোচিত মন্তব্যটি করেন। 

অর্থাৎ, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করে বাংলা পলিটিক্স নামক ফেসবুক পেজ থেকে ব্যাঙ্গাত্মক হিসেবে প্রথমে প্রচার করে। যা পরবর্তীতে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে।

মূলত, গত ৬ ডিসেম্বর পিনাকী ভট্টাচার্য তার ইউটিউব চ্যানেলে ‘হাসিনার স্যাংশনের ডর || নির্বাচনের পর স্যাংশন আসতে পারে- শেখ হাসিনা || Pinaki Bhattacharya’ শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও প্রচার করে। ভিডিওটিতে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে নানা মন্তব্য করেন। ভিডিওটির এক পর্যায়ে তিনি বাংলাদেশের অনলাইন মিডিয়া bdnews24.com এ গত ১৯ নভেম্বর ‘যুক্তরাজ্য ও জার্মানির বাজারকে ছাড়িয়ে যেতে কাজ করছি: শেখ হাসিনা’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন দর্শকদের উদ্দেশ্যে দেখিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে আলোচিত মন্তব্যটি করেন। যেটি পরবর্তীতে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করে বাংলা পলিটিক্স নামক ফেসবুক পেজ থেকে ব্যাঙ্গাত্মক হিসেবে প্রথমে প্রচার করে। পরবর্তীতে উক্ত ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে।

সুতরাং, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে পিনাকী ভট্টাচার্যের করা একটি মন্তব্যের ভিডিওকে তারেক জিয়ার উদ্দেশ্যে করা বক্তব্য দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র