Home Blog Page 538

তামিম ইকবালকে কলকাতা নাইট রাইডার্সের দলে নেওয়ার গুজব

সম্প্রতি, বাংলাদেশি ব্যাটার তামিম ইকবালকে আইপিএল ফ্রেঞ্চাইজি কলকাতা নাইট রাইডার্স দলে নিয়েছে দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটকে প্রচার করা হয়েছে।

কলকাতা নাইট রাইডার্সের

উক্ত দাবিতে টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি এ বিষয়ে টিকটকে প্রচারিত ভিডিওটি প্রায় ১ লাখ সাড়ে ১৭ হাজার বার দেখা হয়েছে। ভিডিওটিতে প্রায় ৭ শত পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে এবং ভিডিওটিতে ৩ শত ৮৪টি মন্তব্য করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত রিল ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি এ বিষয়ে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিওটি ৯ হাজারের অধিক বার দেখা হয়েছে। ভিডিওটিতে ৬ শত ৭১টি পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশি ব্যাটার তামিম ইকবালকে আইপিএল ফ্রেঞ্চাইজি কলকাতা নাইট রাইডার্স আসন্ন আইপিএলের জন্য ক্রয় করেনি বরং নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই ভিত্তিহীনভাবে উক্ত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে ভারতীয় গণমাধ্যম The Times of India এর ওয়েবসাইটে ২০২৩ সালের ১৯ ডিসেম্বর ‘KKR Squad IPL 2024: Complete Kolkata Knight Riders Team and Players List after IPL Auction 2024’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদনে কলকাতা নাইট রাইডার্সের পক্ষ থেকে গতবছরের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত আইপিল-২০২৪ এর নিলামে ক্রয়কৃত ক্রিকেটারদের তালিকায় তামিম ইকবালের নাম খুঁজে পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে বিষয়টি যাচাইয়ে কলকাতা নাইট রাইডার্স এর অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে ২০২৩ সালের ২৩ ডিসেম্বর ‘KKR’s IPL Auction 2024 Recap’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদনে দলটির পক্ষ থেকে ২০২৪ মৌসুমের জন্য নিলামে ক্রয়কৃত ক্রিকেটার সহ স্কোয়াডে থাকা ক্রিকেটারদের সম্পর্কে বিস্তারিত পাওয়া যায়।

নিলাম থেকে কলকাতা নাইট রাইডার্স কর্তৃক ক্রয়কৃত ক্রিকেটারঃ (ভারতীয় রুপিতে মূল্য)

মিচেল স্টার্ক (২৪ কোটি ৭৫ লক্ষ), কেএস ভারত (৫০ লক্ষ), চেতন সাকারিয়া (৫০ লক্ষ), অঙ্গকৃষ রঘুবংশী (২০ লক্ষ), রমনদীপ সিং (২০ লক্ষ), শেরফানে রাদারফোর্ড (১.৫ কোটি), মণীশ পাণ্ডে (৫০ লক্ষ), মুজিব উর রহমান (২ কোটি), গাস অ্যাটকিনসন (১ কোটি) ও সাকিব হুসেইন (২০ লক্ষ)।

টিমে কার কী রোলঃ 

উইকেটকিপার: কেএস ভারত ও রহমানুল্লাহ গুরবাজ

ব্যাটার: শ্রেয়স আইয়ার, জেসন রয়, রিঙ্কু সিং, অঙ্গকৃষ রঘুবংশী, শেরফানে রাদারফোর্ড ও মণীশ পাণ্ডে 

অলরাউন্ডার: আন্দ্রে রাসেল, নিতিশ রানা, ভেঙ্কটেশ আইয়ার, অনুকূল রায়, রমনদীপ সিং

বোলার: বরুণ চক্রবর্তী, সুনীল নারিন, বৈভব অরোরা, চেতন সাকারিয়া, হর্ষিত রানা, সুযশ শর্মা,  মিচেল স্টার্কস, গাস অ্যাটকিনসন, সাকিব হুসেইন ও মুজিব উর রহমান।

Screenshot: Kolkata Knight Riders website

অর্থাৎ, উক্ত তালিকায় বাংলাদেশি ব্যাটার তামিম ইকবালের নাম পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগ (আইপিএল) এর অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে কলকাতা নাইট রাইডার্স এর ২০২৪ মৌসুমের স্কোয়াড তালিকা পর্যবেক্ষণ করে সেখানেও তামিম ইকবালের নাম খুঁজে পাওয়া যায়নি।

Screenshot: Indian Premier League website

পাশাপাশি, গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে নিলাম পরবর্তী সময়েও তামিম ইকবালকে কলকাতা নাইট রাইডার্সের পক্ষ থেকে সরাসরি চুক্তিতে দলে নেওয়ার বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

অর্থাৎ, উপরোক্ত বিষয়গুলো পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, আসন্ন আইপিএলে খেলার জন্য তামিম ইকবালকে কলকাতা নাইট রাইডার্স ক্রয় করেনি।

প্রসঙ্গত, এবারের আইপিএলের চূড়ান্ত তালিকায় জায়গা পেয়েছিলেন বাংলাদেশের তিন ক্রিকেটার। এদের মধ্যে ছিলেন পেসার মোস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ এবং শরিফুল ইসলাম। মুস্তাফিজের ভিত্তিমূল্য ছিল ২ কোটি রুপি, তাসকিনের ভিত্তিমূল্য ছিল ৭৫ লাখ রুপি এবং শরিফুলের ভিত্তিমূল্য ছিল ৫০ লাখ রুপি। তবে পরবর্তীতে পেসার শরিফুল ইসলাম ও তাসকিন আহমেদ নিলাম থেকে তাদের নাম প্রত্যাহার করে নেন। ফলে বাংলাদেশ থেকে শুধুমাত্র মোস্তাফিজুর রহমানের নামই নিলাম তালিকায় ছিল। এরপর ২০২৩ সালের ১৯ ডিসেম্বর ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগের (আইপিএল) ২০২৪ আসরের নিলাম অনুষ্ঠিত হলে সেখান থেকে চেন্নাই সুপার কিংস মোস্তাফিজুর রহমানকে ভিত্তিমূল্য ২ কোটি রূপিতে দলে ভেড়ায়।

অর্থাৎ, চলতি বছরের আইপিএলে একমাত্র বাংলাদেশি হিসেবে চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে খেলবেন পেসার মোস্তাফিজুর রহমান।

মূলত, আগামী ২২ মার্চ ভারতের চেন্নাইয়ে আইপিএলের ১৭ তম আসর শুরু হচ্ছে। এরই মধ্যে আইপিএলকে ঘিরে ইন্টারনেটে বিভিন্ন ধরনের তথ্য প্রচার করা হচ্ছে। এরই প্রেক্ষিতে বাংলাদেশি ব্যাটার তামিম ইকবালকে আইপিএল ফ্রেঞ্চাইজি কলকাতা নাইট রাইডার্স দলে নিয়েছে দাবিতে একটি তথ্য সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটকে প্রচার করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত দাবিটি সঠিক নয়। নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই ভিত্তিহীনভাবে উক্ত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে তামিম ইকবালকে কলকাতা নাইট রাইডার্স আসন্ন আইপিএলের জন্য ক্রয় করেনি।

উল্লেখ্য, পূর্বেও তামিম ইকবালের আইপিএল খেলার বিষয়ে ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে পড়লে সেসময় বিষয়টি নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার টিম।

সুতরাং, বাংলাদেশি ব্যাটার তামিম ইকবালকে আইপিএল ফ্রেঞ্চাইজি কলকাতা নাইট রাইডার্স দলে নিয়েছে দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

তামিম ইকবাল অবসরের ঘোষণা দেননি 

গতকাল ১১ মার্চ BD CRICS PRO নামের একটি খেলাধুলা বিষয়ক ইউটিউব চ্যানেলে “হাথুরুকে নিয়ে ওপেনিং খেলুক সাকিব আমি খেলবোনা! সাক্ষাৎকারের বোমা ফাটিয়ে অবসর নিলেন তামিম ইকবাল” শীর্ষক শিরোনামে এবং থাম্বনেইলে একটি ভিডিও (আর্কাইভ) প্রচার করা হয়েছে। 

তামিম ইকবাল

পরবর্তীতে ইউটিউব ভিডিওটি ডাউনলোড করে ফেসবুকেও প্রচার করা হয়। ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সাকিব আল হাসান এবং চন্ডিকা হাথুরুসিংহকে নিয়ে তামিম ইকবাল এমন কোনো মন্তব্য করেননি এবং তিনি অবসরের ঘোষণাও দেননি বরং ভিন্ন প্রেক্ষিতে তামিম ইকবালের দেওয়া বক্তব্যকে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, শুরুতে তামিম ইকবালকে সাংবাদিকের করা প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন। 

সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, চন্ডিকা হাথুরুসিংহ থাকলে? তামিম ইকবাল উত্তরে বলেন, আমার ফেরাটা উইলবি ভেরি ডিফিকাল্ট। 

পরবর্তীতে, বেশ কয়েকটি ছবি যুক্ত করে উপস্থাপনকে মনগড়া কিছু কথা বলতে শোনা যায়। 

বিষয়টি যাচাইয়ে আলোচিত ভিডিওটির শুরুতে প্রদর্শিত তামিম ইকবালের বক্তব্যের ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধান করে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে ‘খেলাযোগ’ এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ১১ মার্চ “আমার ফেরাটা অনেক কঠিন”: তামিম…”ক্যাপ্টেন্সি ছাড়তে থ্রেটও দেয়া হয়েছিলো“- শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি সাক্ষাৎকারের ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত সাক্ষাৎকারের একটি অংশের সাথে আলোচিত ভিডিওটির শুরুতে থাকা তামিম ইকবালের বক্তব্যের হুবহু মিল রয়েছে। 

Video Comparison: Rumor Scanner 

উক্ত সাক্ষাৎকারটি পর্যবেক্ষণ করে তামিম ইকবাল কর্তৃক সাকিব আল হাসান এবং চন্ডিকা হাথুরুসিংহকে জড়িয়ে কোনো বক্তব্য কিংবা অবসরের ঘোষণা দিতে দেখা যায়নি। 

এছাড়া, তামিম ইকবালের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ,

গণমাধ্যম কিংবা অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রেও এসংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট নিয়ে তামিম ইকবালের সর্বশেষ অবস্থান কী?

গত ০২ মার্চ ফরচুন বরিশালের হয়ে শিরোপা জয় পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরা প্রসঙ্গে বিসিবির নতুন প্রধান নির্বাচকের সাথে যোগাযোগ হয়েছে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তামিম ইকবাল বলেন, “তার সঙ্গে (নতুন প্রধান নির্বাচক) আমার কোনো কথাবার্তা হয়নি। আমার সঙ্গে জালাল ভাইয়ের কথা হয়েছে। আমি কথা বলতে প্রস্তুত ছিলাম, আমার সঙ্গে বসার কথা ছিল (কিন্তু হয়নি), তবে আমাদের একটা যোগাযোগ আছে। কালকে সকালে আমি আবার দেশের বাইরে চলে যাব। আশা করি, ফেরার পর আমরা বসব।”

‘একটা কথা আপনাদের পরিস্কার করেই বলতে চাই, আমার জন্য ফিরে আসতে হলে অনেক কিছুই ঠিকঠাক হতে হবে। সেসব না হলে স্রেফ ফেরা আর খেলার কোনো মানে নেই। কারণ, আমি ক্যারিয়ারের এমন পর্যায়ে আছি, হয়তো সম্ভবত আর দুই বছর খেলব। তো ওই কথাগুলি উনাদের সঙ্গে বলতে হবে। এখনও যেহেতু উনাদের সঙ্গে চূড়ান্ত কথা হয়নি, এই সংবাদ সম্মেলনে এসে অনুপযুক্ত কিছু বলে দেওয়া উচিত হবে না।’

এরপর জাতীয় দলে ফেরা প্রসঙ্গে গত ১০ মার্চ রাতে বিসিবির সিনিয়র পরিচালক এনায়েত হোসেন সিরাজ ও ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুসের সঙ্গে দীর্ঘ সভায় বসেন তামিম ইকবাল। সভা প্রসঙ্গে দৈনিক কালেরকণ্ঠকে তামিম ইকবাল বলেন,’আমার তো নতুন করে কিছু বলার নেই। আগে যা বলেছি, এবারও তাই বলেছি। এর বেশি কিছু বলব না। কারণ, বিসিবি আমার অভিভাবক।’

সেদিনই রাতে একাত্তর টিভির খেলাযোগকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তামিম ইকবাল জানান, ‘আমার জন‍্য আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরা খুব ডিফিকাল্ট।’

মূলত, ২০২৩ সালের জুলাইয়ে বাংলাদেশ-আফগানিস্তানের ওয়ানডে সিরিজ চলাকালে আকষ্মিকভাবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দেন তৎকালীন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক তামিম ইকবাল। তবে অবসরের ঘোষণারই পরদিন গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে সাক্ষাৎ শেষে অবসরের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের কথা জানান তিনি। এরপর একই বছরের আগস্ট মাসে জাতীয় দলের অধিনায়কত্ব ছাড়ার ঘোষণা দেন তামিম ইকবাল। এরপর থেকেই জাতীয় দলের বাইরে আছেন তিনি। সম্প্রতি, বিপিএলে ফরচুন বরিশালের অধিনায়কত্ব গ্রহণ করে দারুণ পারফরম্যান্স করে দলকে করেছেন চ্যাম্পিয়ন। এরইমধ্যে হাথুরুকে নিয়ে ওপেনিং খেলুক সাকিব আমি খেলবোনা! সাক্ষাৎকারের বোমা ফাটিয়ে অবসর নিলেন তামিম ইকবাল- শীর্ষক শিরোনামে এবং থাম্বনেইলে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সাকিব আল হাসান এবং চন্ডিকা হাথুরুসিংহকে নিয়ে তামিম ইকবালের এমন কোনো মন্তব্য করা কিংবা ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণার করেননি এবং অবসরের ঘোষণা দেওয়ার কোনো প্রমাণ মেলেনি। 

উল্লেখ্য, ২০২২ সালের জুলাইয়ে আন্তর্জাতিক টি টোয়েন্টি ক্রিকেট অবসর নিয়েছেন তামিম ইকবাল।

সুতরাং, চন্ডিকা হাথুরুসিংহে এবং সাকিব আল হাসানকে জড়িয়ে তামিম ইকবালের মন্তব্য এবং অবসরের ঘোষণা দেওয়ার দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

গবাদি পশু বেষ্টিত এই ছবিটি নোয়াখালীর স্বর্ণদ্বীপের নয়

0

সম্প্রতি, “নোয়াখালী সর্ণদ্বীপ” শীর্ষক ক্যাপশনে গবাদি পশু বেষ্টিত একটি ছোট দ্বীপের দৃশ্যকে বাংলাদেশের নোয়াখালী জেলায় অবস্থিত স্বর্ণদ্বীপের ছবি দাবি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

গবাদি পশু

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু ছবি দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদন প্রকাশ অবধি উক্ত দাবিতে সবচেয়ে ভাইরাল পোস্টটিতে প্রায় ৪০ হাজার পৃথক ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। পোস্টটি শেয়ার করা হয়েছে ৩৫৩ বার।

ছবিটির মন্তব্যঘরে অনেক নেটিজেনকে ছবিটিকে এডিটেড বলে দাবি করতে দেখা যায়।

Image Collage: Rumor Scanner

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, গবাদি পশু বেষ্টিত ছোট দ্বীপের ভাইরাল ছবিটি বাংলাদেশের নোয়াখালীর স্বর্ণদ্বীপের নয় বরং এটি পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজারের রাজধানী নিয়ামেতে অবস্থিত নাইজার নদীর মাঝে থাকা একটি ছোট দ্বীপের দৃশ্য।

ছবিটির সত্যতা জানতে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে International Livestock Research Institute এর ওয়েবসাইটে ২০১৫ সালের ১০ জুন “Livestock scientists say climate change can increase risk of animal pests and diseases” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদনের সাথে যুক্ত ছবির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবির মিল পাওয়া যায়।

Image Comparison: Rumor Scanner

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এই ছবিটি পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজারের নাইজার নদীর মাঝে থাকা একটি দ্বীপে পশু চড়ানোর সময় তোলা। স্টিভ মান নামক একজন ব্যক্তি এই ছবিটি তুলেছেন।

এছাড়া, ছবি বিষয়ক ওয়েবসাইট flickr এ ২০০৯ সালের ২ অক্টোবরে প্রকাশিত একই ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ওয়েবসাইটে থেকেও আলোচিত ছবি সম্পর্কে একই তথ্য জানা যায়।

অর্থাৎ, আলোচিত ছবিটি বাংলাদেশের নোয়াখালীর স্বর্ণদ্বীপের নয় এবং এটি এডিটেড ছবিও নয়।

মূলত, বেশ কয়েকবছর আগে স্টিভ মান নামক একজন চিত্রগ্রাহক পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজারের নাইজার নদীর মাঝে থাকা একটি দ্বীপে পশু চড়ানোর একটি ছবি তোলেন। সম্প্রতি সেই ছবিটিই বাংলাদেশের নোয়াখালীর স্বর্ণদ্বীপের ছবি দাবিতে ফেসবুকেপ্রচার করা হয়েছে।

সুতরাং, পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজারের নাইজার নদীর মাঝে থাকা দ্বীপে পশু চড়ানোর একটি ছবি বাংলাদেশের নোয়াখালীর স্বর্ণদ্বীপের ছবি দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

কুবিতে রমজানে ইফতার পার্টি নিষিদ্ধ হয়নি, উপাচার্যের নামে ভুয়া ফেসবুক আইডি খুলে অপপ্রচার

0

গত ২৮ ফেব্রুয়ারি রমজানে সরকারিভাবে বড় করে ইফতার পার্টি উদ্‌যাপন না করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর প্রেক্ষিতে গতকাল, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইফতার পার্টি নিষিদ্ধ করা হলো”- শীর্ষক একটি তথ্য কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈনের নাম এবং ছবি যুক্ত একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্ট করা হয়েছে। 

ইফতার পার্টি

ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইফতার পার্টি নিষিদ্ধের কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈনও এমন কোনো পোস্ট ফেসবুকে দেননি বরং উপাচার্যের নাম এবং ছবি ব্যবহার করে একটি ভুয়া ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে উক্ত পোস্ট করা হয় যার মাধ্যমে উক্ত বিষয়ে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইফতার পার্টি নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত উপাচার্যের কথিত পোস্টটির বিষয়ে একাধিক গণমাধ্যমে (বাংলা ট্রিবিউন, জুম বাংলা, প্রতিদিনের বাংলাদেশ) এ সংক্রান্ত সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়৷

উক্ত সংবাদগুলো থেকে জানা যাচ্ছে, উপাচার্যের নামে পোস্টকারী ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈনের নয়। 

এই তথ্যগুলোর সূত্র ধরে ড. এ এফ এম আবদুল মঈনের মূল ফেসবুক অ্যাকাউন্টটির সন্ধান মিলেছে। এই অ্যাকাউন্টে গতরাতে তিনি একটি লাইভ ভিডিও (আর্কাইভ) প্রচার করেছেন। 

ভিডিওতে তাকে বলতে শোনা যায়, ‘বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল করতে আমার নাম ও ছবি ব্যবহার করে একটি ফেক আইডি থেকে ভুয়া তথ্য ছড়াচ্ছিল। আমি ইতোমধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে কথা বলেছি। কাল থানায় জিডিসহ অন্যান্য আইনি সাহায্য নেবো।’

তাছাড়া, লাইভ ভিডিও প্রকাশের পূর্বে আরো একটি পোস্টেও (আর্কাইভ) তিনি জানান, “সতর্কীকরণ: সংশ্লিষ্ট সকলের জন্য একটি বিজ্ঞপ্তি যে কিছু দুর্বৃত্ত আমার পরিচয় চুরি করে এবং আমার নামে একটি ভুয়া ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুলেছে।”

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে চলতি রমজানে ইফতার পার্টি সংক্রান্ত কোনো নির্দেশনা রয়েছে কিনা এমন প্রশ্নে বিশ্ববিদ্যালয়টির রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) মো: আমিরুল হক চৌধুরী রিউমর স্ক্যানারকে জানান, ইফতার পার্টি সংক্রান্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। 

মূলত, গতকাল ১২ মার্চ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈনের নাম এবং ছবি যুক্ত একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে “মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইফতার পার্টি নিষিদ্ধ করা হলো”- শীর্ষক একটি তথ্য পোস্ট করা হয়। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, রমজানে ইফতার পার্টি নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত কোনো সিদ্ধান্ত কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নেয়নি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈনও এ সংক্রান্ত কোনো পোস্ট করেননি। প্রকৃতপক্ষে, উপাচার্য অধ্যাপক ড. মঈনের নাম এবং ছবি যুক্ত করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভুয়া অ্যাকাউন্ট খুলে ভুয়া এই তথ্যটি প্রচার করা হয়। 

সুতরাং, রমজানে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইফতার পার্টি নিষিদ্ধ সংক্রান্ত কথিত তথ্য  বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে পোস্ট করেছেন দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং উক্ত ফেসবুক অ্যাকাউন্টটিও ভুয়া। 

তথ্যসূত্র

শাকিব খানকে বিয়ে করার জন্যে বাংলাদেশে এসেছিলাম শীর্ষক মন্তব্য কোর্টনি কফি করেননি

সম্প্রতি, ঢালিউড অভিনেতা শাকিব খানের নতুন সিনেমা রাজকুমার-এর নায়িকা হলিউড অভিনেত্রী কোর্টনি কফি একটি ভিডিওতে তিনি শাকিব খানকে বিয়ে করার জন্যে বাংলাদেশে এসেছিলেন কথাটি বলেছেন দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

কোর্টনি কফি

টিকটকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ইউটিউবে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, শাকিব খানের নতুন সিনেমা রাজকুমার-এর নায়িকা হলিউড অভিনেত্রী কোর্টনি কফি ‘শাকিব খানকে বিয়ে করার জন্যে বাংলাদেশে এসেছিলাম’ শীর্ষক কোনো মন্তব্য করেননি। বরং রাজকুমার সিনেমার নায়িকা কোর্টনি কফি’র পরিচিতিমূলক একটি ভিডিওর কিছু অংশ কাট করে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে এর শুরুতে কোর্টনি কফি’র একটি ভিডিও দেখতে পাওয়া যায়। যেখানে তাকে ‘সে নিশ্চয়ই বাংলাদেশের টম ক্রুজ। আমি শাকিব খানকে বিয়ে করেছি।’ শীর্ষক কথা বলতে শোনা যায়। পরবর্তীতে ভিডিওটির উপস্থাপক দাবি করেন রাজকুমার সিনেমার অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে গিয়ে কোর্টনি কফি বলেছেন, ‘শাকিব খান বাংলাদেশের টম ক্রুজ। তাকে বিয়ে করতেই বাংলাদেশে এসেছিলাম।’ এরপর তিনি কোর্টনি কফির আরও অভিজ্ঞতার কথাও ভিডিওটিতে তুলে ধরেন। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে কোর্টনি কফি’র ভিডিওটির কয়েকটি স্থিরচিত্র নিয়ে রির্ভাস ইমেজ সার্চের মাধ্যমে শাকিব খানের নিজস্ব প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান SK Films এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ২৩ ডিসেম্বর Introducing Courtney Coffey | @ShakibKhanDigital | RAJKUMAR Movie | কোর্টনি কফি | SK Films শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত কোর্টনি কফি’র ভিডিওটির সাথে এটির বেশকিছু অংশের হুবহু মিল পাওয়া যায়। 

Video Comparison by Rumor Scanner

পাশাপাশি ভিডিওটির শিরোনাম থেকে জানা যায়, এটি মূলত শাকিব খানের নতুন সিনেমা রাজকুমার-এর নায়িকার পরিচিত মূলক একটি ভিডিও। যেখানে তিনি তার বাংলাদেশের বিভিন্ন অভিজ্ঞার পাশাপাশি সিনেমার কিছু অভিজ্ঞা নিয়েও আলোচনা করেন।

শুটিংয়ের সেরা অভিজ্ঞা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বেস্ট অভিজ্ঞাগুলোর মধ্যে একটি হলো শাকিব খানের সাথে বিয়ের ঘটনা এবং সারাদিন সুইমংপুলে সাঁতার কাটতে পারা। কারণ আমি সাঁতার কাটতে পছন্দ করি।’ এছাড়াও তিনি শাকিব খানকে বাংলাদেশের টম ক্রুজ বলেও অভিহিত করেন। পাশাপাশি বাংলাদেশের খাবার ও বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ভিডিওটিতে তিনি তার অভিজ্ঞা শেয়ার করেন। কিন্তু ভিডিওটির কোথাও তাকে ‘শাকিব খানকে বিয়ে করার জন্যে বাংলাদেশে এসেছিলাম’ শীর্ষক কোনো কথা বলতে শোনা যায়না।

পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক বিভিন্ন কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে আলোচিত দাবির প্রেক্ষিতে কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে বা গণমাধ্যমে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

মূলত, আগামী রোজার ঈদে মুক্তি পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশের কিং খান খ্যাত বলিউড অভিনেতা শাকিব খানের নতুন সিনেমা রাজকুমার। সিনেমাটির বড় চমক হলো এর  অভিনেত্রী হিসেবে অভিনয় করেছেন হলিউড অভিনেত্রী কোর্টনি কফি। হলিউড এই তারকার এটিই প্রথম বাংলা সিনেমা। তাই সিনেমার শুটিং শেষে দর্শকদের সাথে তার পরিচয় করিয়ে দিতে রাজকুমার সিনেমার প্রযোজনার সাথে যুক্ত শাকিব খানের নিজস্ব প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান SK Films এর ইউটিউব চ্যানেলে তার একটি পরিচিতিমূলক ভিডিও প্রচার করা হয়। যেখানে তিনি সিনেমার শুটিংয়ের পাশাপাশি বাংলাদেশে তার বিভিন্ন অভিজ্ঞা শেয়ার করেন। সম্প্রতি, উক্ত ভিডিওটির কিছু অংশ কাট করে কোর্টনি কফি শাকিব খানকে বিয়ে করার জন্যে বাংলাদেশে এসেছিলেন শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে একটি তথ্য ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে, আলোচিত সাক্ষাৎকারে কোর্টনি কফি’র এমন কোনো মন্তব্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, কোর্টনি কফি শাকিব খানকে বিয়ে করার জন্যে বাংলাদেশে এসেছিলেন শীর্ষক মন্তব্য করেছেন  দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

‘Book’ শব্দের কোনো পূর্ণরূপ নেই 

0

সম্প্রতি, বইয়ের ইংরেজি শব্দ ‘Book’ এর পূর্ণরূপ ‘Bio Optical Organized Knowledge’ দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। 

Book

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বইয়ের ইংরেজি শব্দ ‘Book’ এর পূর্ণরূপ ‘Bio Optical Organized Knowledge’ নয় বরং ‘Book’ শব্দের কোনো পূর্ণরূপই নেই।

এই বিষয়ের সত্যতা যাচাইয়ে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে শব্দের উৎস, ইতিহাস, এবং বিকাশের তথ্য প্রদানকারী অনলাইন শব্দকোষ এটিমোলজিতে Book (বই) শব্দের উৎপত্তি সম্পর্কে জানা যায়, মধ্যযুগীয় ইংরেজি শব্দ ‘bok’ এবং প্রাচীন ইংরেজি শব্দ ‘boc’ যার অর্থ Book (বই), লেখা, লিখিত নথি, এগুলো প্রোটো-জার্মানিক শব্দ bōk(ō)- থেকে এসেছে। প্রোটো-জার্মানিক হলো যে ভাষা থেকে আধুনিক জার্মান, ইংরেজি, ডাচ, এবং অন্যান্য জার্মানিক ভাষাগুলো উদ্ভূত হয়েছে। এই bōk(ō)- শব্দটি আরও প্রাচীন শব্দ bokiz থেকে এসেছে যার অর্থ ছিল ‘বীচ’ বা বীচ গাছ।

Image: Etymonline.

এ বিষয়ে আরো বিস্তারিত অনুসন্ধানে ২০১৪ সালের ১৫ জুন অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেসের ব্লগে অক্সফোর্ড ইংরেজি ডিকশনারির উপ-প্রধান সম্পাদক ফিলিপ ডারকিনের লেখা ‘When is a book a tree?’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদনের সূত্রে Book (বই) শব্দ সম্পর্কে জানা যায়, ‘book’ শব্দটি প্রাচীন ইংরেজি শব্দ ‘bōc’ থেকে এসেছে, যা জার্মানের ‘Buch’ ও ডাচের ‘boek’ এর মতো শব্দের সঙ্গে সম্পর্কিত। এই সম্পর্কটি প্রাচীন জার্মান সংস্কৃতিতে লেখার জন্য প্রচলিত বীচ কাঠে রুন (Rune) অক্ষর (প্রাচীন জার্মান লেখার পদ্ধতি) খোদাই করে লেখা তৈরির ধারণা থেকে এসেছে। এই বিষয়ে বিতর্ক থাকলেও, অধিকাংশ গবেষক এবং ভাষাবিদরা মনে করে ‘book’ শব্দটি প্রাচীন জার্মান জাতিগুলোর লেখার উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত বীচ কাঠের সাথে সম্পর্কিত। 

Screenshot: OUPblog. 

বিশ্বস্ত শব্দকোষ কলিন্স ডিকশনারির ওয়েবসাইটে Book শব্দের উৎপত্তি সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘Book’ শব্দটি প্রাচীন ইংরেজি শব্দ ‘bōc’ থেকে এসেছে। এটি প্রাচীন নর্স ভাষার ‘bōk’, প্রাচীন হাই জার্মান ভাষার ‘buoh’ এবং গথিক ভাষায় ‘bōka’ শব্দের সাথে সম্পর্কিত। এই সম্পর্কটি বীচ গাছের সাথেও দেখা যায় (যার বাকল লেখার পৃষ্ঠ হিসাবে ব্যবহৃত হতো)।

উপরিউক্ত সূত্রগুলোতে বইয়ের ইংরেজি প্রতিশব্দ ‘Book’ এর উৎপত্তি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানা গেলেও শব্দটির কোনো পূর্ণরূপের তথ্য পাওয়া যায়নি।

Book শব্দের পূর্ণরূপের ব্যাপারে অনুসন্ধানের মাধ্যমে শিক্ষাবিষয়ক অনলাইন পোর্টাল টিউটোরিয়ালসমেটে ‘BOOK Full Form: What is the full form of BOOK?’ শীর্ষক প্রকাশিত একটি নিবন্ধ খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘Book’ একটি সাধারণ ইংরেজি শব্দ, যার কোনো সংক্ষিপ্ত রূপ (Acronym) নেই। ইংরেজি বাক্যে ব্যবহারের ভিত্তিতে এটি একটি বিশেষ্য (Noun), ক্রিয়া (Verb) অথবা বিশেষণ (Adjective) হিসেবে কাজ করতে পারে। শব্দটির নিজস্ব একটি অর্থ আছে। যেহেতু ‘Book’ কোনো সংক্ষিপ্ত রূপের শব্দ নয়, তাই এর কোনো পূর্ণরূপও নেই।

তবে মানুষ মজা করে অথবা বইয়ের প্রতি সম্মান জানাতে কিছু কাল্পনিক পূর্ণরূপ তৈরি করেছে। ‘বই’ শব্দের একটি জনপ্রিয় কাল্পনিক পূর্ণরূপ হল ‘Big Ocean of Knowledge’। 

Screenshot: Tutorialsmate. 

প্রতিবেদনের ‘Book’ শব্দের আরও কিছু কাল্পনিক পূর্ণরূপের কথা উল্লেখ রয়েছে। যার মধ্যে দাবিকৃত ‘Bio Optical Organized Knowledge’ একটি।

পরবর্তীতে Acronym বা সংক্ষিপ্ত রূপের শব্দের ব্যাপারে অনুসন্ধানে ডিজিটাল রাইটিং অ্যাসিসট্যান্ট টুল গ্রামারলির (Grammarly) ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক নিবন্ধ থেকে জানা যায়, ‘Acronym’ বা সংক্ষিপ্ত রূপ হচ্ছে এমন একটি শব্দ যা একটি দীর্ঘ নাম বা বাক্যের প্রথম অক্ষরগুলো নিয়ে তৈরি। এই শব্দটি সাধারণত আলাদা একটি শব্দ হিসেবে উচ্চারিত হয়। এই ধরনের সংক্ষিপ্ত রূপগুলো প্রধানত মূল নাম বা বাক্যটিকে সহজে মনে রাখা এবং দ্রুত উল্লেখ করার জন্য ব্যবহৃত হয়। উদাহরণ স্বরূপ, ‘National Aeronautics and Space Administration’ এর সংক্ষিপ্ত রূপ হলো NASA।

এছাড়া রিউমর স্ক্যানার টিমের নিজস্ব অনুসন্ধানে দেখা যায়, Acronym বা সংক্ষিপ্ত রূপের শব্দগুলো অনলাইন ডিকশনারি বা শব্দকোষে সার্চ করলে পূর্ণরূপ দেখায়। যেমনঃ NASA শব্দটি শব্দকোষে সার্চ করলে এর পূর্ণরূপ দেখাচ্ছে, কিন্তু Book শব্দটির ক্ষেত্রে এমন ঘটে না। 

Comparison: Rumor Scanner.

মূলত, ইংরেজি শব্দ ‘Book’ এর পূর্ণরূপ ‘Bio Optical Organized Knowledge’ দাবিতে একটি তথ্য ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, ইন্টারনেটে ‘Book’ শব্দের এই পূর্ণরূপ ছাড়াও আরও অনেকগুলো পূর্ণরূপ দেখা যায়। তবে সবগুলো পূর্ণরূপই কাল্পনিক। ‘Book’ শব্দের কোনো সংক্ষিপ্ত রূপ বা Acronym নেই। প্রাচীন ইংরেজি শব্দ ‘bōc’ থেকে ‘Book’ শব্দটি এসেছে। 

সুতরাং, ‘Book’ এর পূর্ণরূপ ‘Bio Optical Organized Knowledge’ দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর স্ত্রী মিলিকে উদ্দেশ্য করে এই চিঠি লিখেননি

0

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ যে সাতজন বীরশ্রেষ্ঠ উপাধি পেয়েছেন তাদের একজন তৎকালীন পাকিস্তান বিমানবাহিনীর ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান। ১৯৭১ সালের ২০ আগস্ট যুদ্ধ চলাকালেই পাকিস্তান বিমানবাহিনীর এই বাঙালি অফিসার একটি যুদ্ধবিমান নিয়ে পালিয়ে আসার চেষ্টা করার সময় ওই বিমানে থাকা রশিদ মিনহাজ নামে পাকিস্তানী শিক্ষানবীশ পাইলটের সাথে ধস্তাধস্তির সময় বিমানটি বিধ্বস্ত হয় এবং দুজনই নিহত হন। মতিউর যেদিন নিহত হন সেই ২০ আগস্টই তিনি তাঁর স্ত্রী মিলি রহমানের উদ্দেশ্যে একটি চিঠি লিখেছিলেন শীর্ষক একটি দাবি গেল কয়েক বছর ধরেই ইন্টারনেটে প্রচার হয়ে আসছে৷ 

প্রিয়তমা মিলি সম্বোধনে শুরু করা দীর্ঘ চিঠিটির শুরুর অংশটি এমন, “একটা চুম্বন তোমার পাওনা রয়ে গেলো…সকালে প্যারেডে যাবার আগে তোমাকে চুমু খেয়ে বের না হলে আমার দিন ভালো যায় না। আজ তোমাকে চুমু খাওয়া হয় নি। আজকের দিনটা কেমন যাবে জানি না… এই চিঠি যখন তুমি পড়ছো, আমি তখন

তোমাদের কাছ থেকে অনেক দূরে। ঠিক কতোটা দূরে আমি জানি না। মিলি, তোমার কি আমাদের বাসর রাতের কথা মনে আছে? কিছুই বুঝে উঠার আগে বিয়েটা হয়ে গেলো।…..”

মতিউর

চলতি বছর (২০২৪ সালে) উক্ত চিঠি মতিউর রহমানের লেখা দাবিতে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

শুধু চলতি বছরই নয়, একই চিঠি গেল ১১ বছর ধরেই ফেসবুকে নিয়মিত প্রচার হয়ে আসছে। দেখুন ২০২৩, ২০২২, ২০২১, ২০২০, ২০১৯, ২০১৮, ২০১৭, ২০১৬, ২০১৫, ২০১৪, ২০১৩। 

একই চিঠি মতিউর রহমানের লেখা দাবিতে বিভিন্ন সময়ে প্রকাশিত ইউটিউবের ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান ১৯৭১ সালের ২০ আগস্ট স্ত্রী মিলি রহমানের উদ্দেশ্যে আলোচিত চিঠিটি লিখেননি বরং আরিফ মঈনুদ্দীন নামে এক ব্যক্তি ২০১৩ সালে কাল্পনিক এই চিঠিটি লিখেছিলেন যা পরবর্তীতে মতিউরের লেখা বাস্তব চিঠি হিসেবে প্রচার পেয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে মূল ধারার অনলাইন সংবাদমাধ্যম বিডিনিউজ২৪ এর ওয়েবসাইটে ২০১৪ সালের ১৩ জুন ‘বীরশ্রেষ্ঠ মতিউরের নামে ভুয়া চিঠি ফেইসবুকে’ শীর্ষক শিরোনামের একটি প্রতিবেদন খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার টিম৷ এই প্রতিবেদনে সাংবাদিক মানস ঘোষের একটি ফেসবুক পোস্ট এবং রুদ্র সাইফুল নামে এক ব্যক্তির নেওয়া মিলি রহমানের সাক্ষাৎকারের বরাতে বলা হয়, আলোচিত চিঠিটি মতিউর রহমান লিখেননি৷ 

আমরা মানস ঘোষের করা ২০১৪ সালের ১১ জুন প্রকাশিত এ সংক্রান্ত ফেসবুক  পোস্টটি (আর্কাইভ) খুঁজে বের করেছি। জনাব ঘোষ জানাচ্ছেন, “মিলি রহমান জানালেন চিঠিটি মতিউর এর না। এটা একটা ভুয়া চিঠি। গত ২-৩ বছর ধরে তিনি এটা ফেইসবুকে দেখছেন, কিন্তু থামাতে পারছেন। মিলি রহমান চান এই মিথ্যে চিঠিটা ফেইসবুক থেকে মুছে যাক।”

Screenshot: Facebook 

এছাড়া, মুক্তিযু্দ্ধ বিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও অনলাইন সংগ্রহশালা একাত্তরের প্রতিষ্ঠাতা জনাব রুদ্র সাইফুলের নেওয়া মিলি রহমানের সাক্ষাৎকারের ভিডিওটিও আমরা খুঁজে পেয়েছি একাত্তরের ফেসবুক পেজে (ekattor.org)। ২০১৪ সালের ১৩ জুন প্রকাশিত দুই মিনিটের কিছু বেশি সময় দৈর্ঘ্যের এই ভিডিওতে মিলি রহমানকে বলতে শোনা যায়, “চিঠিটা সম্পূর্ণ ভুয়া। আমি তার স্ত্রী মিলি রহমান। আমি জানি চিঠিটা কতখানি অসত্য।” 

মিলি জানান, “কিছু চিঠি যেটা আমাকে লেখা ছিল, সেটা যখন ঘটনা ঘটে। সেদিন ব্যক্তিগত সেই ফাইলটি সিল করে নিয়ে যায়। কাজেই সেই চিঠিগুলোর সবগুলোই পাকিস্তানে আটকা। আমার কাছে কিছুই নেই।”

চিঠিতে যে সময়ের (২০ আগস্ট, ১৯৭১) কথা বলা হয়েছে, তখন স্বামীর সঙ্গেই ছিলেন জানিয়ে মিলি রহমান বলেছেন, “একই বাড়িতে একই ছাদের নিচে (ছিলাম)। চিঠি লেখার প্রশ্নই আসে না।”

চিঠিটি যে ভুয়া তা নিশ্চিত হওয়ার পর রিউমর স্ক্যানার টিম কথিত এই চিঠির সূত্রপাত খোঁজার সিদ্ধান্ত নেয়৷ এর প্রেক্ষিতে ২০১৩ সালের ২৩ ডিসেম্বর তৎকালীন চালু থাকা অনলাইন সংবাদমাধ্যম এটিএন টাইমস- এ একই চিঠি খুঁজে পাওয়া যায়৷ গণমাধ্যমটির এই সংবাদকেই চিঠিটির মূল সূত্রপাত দাবি করে পরের বছর (২০১৪) অন্তত দুইটি ফেসবুক পোস্ট (, ) নজরে এসেছে আমাদের। কিন্তু এটিএন টাইমস বা উক্ত সংবাদদাতা ওয়ালিউর রশিদ তমাল এই চিঠি বানাননি। 

আমাদের অনুসন্ধানে দেখা যায়, এই চিঠিটি ফেসবুকে প্রথম পোস্ট করা হয় এই সংবাদ প্রকাশের আরও প্রায় মাস দেড়েক আগে৷ সে বছরের (২০১৩) ০৯ নভেম্বর আরিফ মঈনুদ্দীন নামে এক ব্যক্তি এই চিঠিটি পোস্ট করেছিলেন। চিঠিটি নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হলে ২০১৯ সালের ২০ আগস্ট তিনি তার পোস্ট এডিট করে জানান, “চিঠিটি রূপক। কাল্পনিক অর্থে লেখা। কেউ বিভ্রান্ত না হবার অনুরোধ রইলো।” সে সময় তিনি কমেন্ট সেকশনেও একই তথ্য দেন। 

Screenshot collage: Rumor Scanner

আমরা এই বিষয়ে জনাব আরিফ মঈনুদ্দীনের সাথে কথা বলেছি। তিনি রিউমর স্ক্যানারকে বলছিলেন, “(এটি) আমার লেখা। ২০১৩ সালে। যেহেতু প্রচন্ড প্রতিকূলতার মধ্যেও মতিউর দেশে ফিরতে চেয়েছিলেন এবং সেটা নিজের স্ত্রীকেও জানতে দেন নি… সেক্ষেত্রে আমি এটা ভেবে দেখার চেষ্টা করেছিলাম, যদি সুযোগ হতো তাহলে প্রিয় স্ত্রী’কে মতিউর শেষ চিঠিতে কি লিখতেন। এটা একটা কাল্পনিক এবং রূপক চিঠি।” 

মূলত, বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান ১৯৭১ সালের ২০ আগস্ট স্ত্রী মিলি রহমানের উদ্দেশ্য করে দীর্ঘ একটি চিঠি লিখেছিলেন শীর্ষক একটি দাবি দীর্ঘদিন ইন্টারনেটে প্রচার হয়ে আসছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত চিঠিটি মতিউর রহমানের লেখা নয়৷ আরিফ মইনুদ্দীন নামে এক ব্যক্তি ২০১৩ সালে কাল্পনিক এই চিঠিটি লিখেছিলেন। পরবর্তীতে এটি মতিউর রহমানের বাস্তব চিঠি হিসেবে প্রচার পেয়েছে।

সুতরাং, ১৯৭১ সালের ২০ আগস্ট স্ত্রী মিলিকে উদ্দেশ্য করে বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের লেখা চিঠি দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত চিঠিটি সম্পূর্ণ ভুয়া ও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র

‘Father’ ইরানি অ্যানিমেশন চলচ্চিত্র, মিশরীয় নয় 

0

সম্প্রতি, ১ মিনিট ৪০ সেকেন্ডের সংক্ষিপ্ত অ্যানিমেশন চলচ্চিত্র ‘Father’ আন্তর্জাতিক ফিল্ম ফ্যাস্টিভ্যালে সেরা ফিল্মের পুরস্কার জিতেছে দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।  

Father

উক্ত দাবিতে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদন প্রকাশের সময় পর্যন্ত এই বিষয়ে ভাইরাল একটি ভিডিও ২৬ লাখেরও বেশি বার দেখা হয়েছে। এই ভিডিওতে ১ লক্ষ ৬৮ হাজার পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। ভিডিওটিতে মন্তব্যের সংখ্যা ১৭শ পর্যন্ত পৌঁছেছে। এছাড়াও, ভিডিওটি ২১ হাজারের অধিক বার শেয়ার করা হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ‘Father’ নামের শর্ট অ্যানিমেশন চলচ্চিত্রটি মিশরের নয় বরং ইরানের। এছাড়া চলচ্চিত্রটি ইরানের একাধিক ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভালে নির্দিষ্ট ক্যাটাগরিতে সেরা ফিল্মের পুরস্কার জিতলেও সামগ্রিকভাবে সেরা ফিল্মের পুরস্কার জিতেনি।

এ বিষয়ে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে ইন্টারনেট মুভি ডাটাবেজ (আইএমডিবি) এর ওয়েবসাইটে সংক্ষিপ্ত অ্যানিমেশন চলচ্চিত্র ফাদার এর বিষয়ে একটি নিবন্ধ (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Imdb

ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য থেকে জানা যায়, ফাদার নামক শর্ট বা স্বল্প দৈর্ঘ্যের অ্যানিমেশন চলচ্চিত্রটি ২০১৪ সালের ০১ জানুয়ারি মুক্তি পায়। এই চলচ্চিত্রটি ইরানি নাগরিক মোহাম্মদ রেজা খেরাদমান্দান  নামক একজন চলচ্চিত্র পরিচালক তৈরি করে।

আইএমডিবির সূত্রে আলোচ্য চলচ্চিত্র বিতরণকারী প্রতিষ্ঠান বার পিকচার্স মিডিয়া (Barr Pictures Media) এর ইউটিউব চ্যানেলে মূল চলচ্চিত্রটি খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর শিরোনামেও চলচ্চিত্রটি ইরানের বলে উল্লেখ করা হয়েছে। 

পরবর্তীতে, বার পিকচার্স মিডিয়া অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে আলোচ্য চলচ্চিত্রটির পরিচালকের নামে একটি নিবন্ধ খুঁজে পাওয়া যায়। সেখানে তার সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘মোহাম্মদ রেজা খেরাদমান্দান ১৯৮৪ সালে ইরানের শিরাজে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ইরান ব্রডকাস্টিং বিশ্ববিদ্যালয় (আইআরআইবি) থেকে চলচ্চিত্র পরিচালনায় ডিগ্রি লাভ করেন। তর প্রথম ফিচার ফিল্ম, ’21 Days Later’, ২০১৭ সালে মুক্তি পায়, এটি তেহরানের ৩৫তম ফজর আন্তর্জাতিক ফিল্ম উৎসবে ‘দর্শক পুরস্কার’ লাভ করে, এবং তিনি এরপর ইরান এবং বিদেশে পুরস্কার জয়ী অনেক শর্ট ফিল্ম পরিচালনা করেন।’

অর্থাৎ, Father নামের শর্ট অ্যানিমেটেড চলচ্চিত্রটি ইরানের চলচ্চিত্র, মিশরের নয়।

‘Father’ চলচ্চিত্রটি কি আন্তর্জাতিক ফিল্ম ফ্যাস্টিভ্যালে সেরা ফিল্মের পুরস্কার জিতেছে?

উক্ত দাবির সত্যতা যাচাইয়ে আলোচ্য চলচ্চিত্রের বিতরণকারী প্রতিষ্ঠান বার পিকচার্স মিডিয়ার ওয়েবসাইটে উক্ত চলচ্চিত্রটি নিয়ে প্রকাশিত একটি নিবন্ধ খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনে চলচ্চিত্রটির জেতা পুরস্কার সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘Father’ বহু পুরস্কার জিতেছে, যার মধ্যে রয়েছে ফিল্ম ১০০-এর ৯ম আন্তর্জাতিক ফিল্ম ফেস্টিভালে সেরা অ্যানিমেশন শর্ট ফিল্ম, ৩০তম আন্তর্জাতিক শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভাল তেহরানে শর্ট অ্যানিমেশনের জন্য সেরা আডিয়া এবং ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভাল সিটিতে সেরা অ্যানিমেশন শর্ট ফিল্ম। 

উক্ত নিবন্ধের সূত্রে ফারসি ভাষায় কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ইরানের গণমাধ্যমগুলোতে একই তথ্য পাওয়া যায়।  (,)

সুতরাং, ‘Father’ চলচ্চিত্রটি  ইরানের একাধিক ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভালে পুরস্কার জিতেছে। তবে এই পুরস্কারগুলো মূলত অ্যানিমেশন শর্ট ফিল্ম ক্যাটাগরিতে পেয়েছে। দাবিকৃত ‘সেরা ফিল্ম’ বলতে সাধারণত সামগ্রিকভাবে সব ক্যাটাগরি থেকে নির্বাচিত সেরা চলচ্চিত্রকে বোঝায়। অর্থাৎ, ‘Father’ চলচ্চিত্রটি সেরা ফিল্মের পুরস্কার জিতেছে দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি বিভ্রান্তিকর। 

মূলত, ১০০ সেকেন্ডের একটি শর্ট অ্যানিমেশন চলচ্চিত্রের ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে, এটি আন্তর্জাতিক ফিল্ম ফ্যাস্টিভ্যালে সেরা ফিল্মের পুরস্কার জয়ী মিশরীয় চলচ্চিত্র। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০১৪ সালে ইরানী নাগরিক মোহাম্মদ রেজা খেরাদমান্দান নামক একজন চলচ্চিত্র পরিচালক চলচ্চিত্রটি তৈরি করেন। অর্থাৎ, এটি একটি ইরানি চলচ্চিত্র। এছাড়া চলচ্চিত্রটি ইরানের একাধিক ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভালে নির্দিষ্ট ক্যাটাগরিতে সেরা ফিল্মের পুরস্কার জিতলেও সামগ্রিকভাবে সেরা ফিল্মের পুরস্কার জিতেনি।

সুতরাং, ‘Father’ নামের সংক্ষিপ্ত অ্যানিমেশন চলচ্চিত্র মিশরীয় চলচ্চিত্র এবং এটি আন্তর্জাতিক ফিল্ম ফ্যাস্টিভ্যালে সেরা ফিল্মের পুরস্কার জিতেছে দাবিতে প্রচারিত তথ্যগুলো বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

এসএসসির গণিতে ৯ পেলে পাস ও ৫৫ পেলে এ প্লাস পাওয়ার ঘোষণার বিষয়টি গুজব

0

গত ২৫ ফেব্রুয়ারি চলতি বছরের এসএসসির গণিত বিষয়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে উক্ত পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে “গণিত পরীক্ষা কঠিন হয়েছে তাই সুখবর! মাত্র “৯” পেলেই পাস, আর ৫৫ পেলে A+” শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়। 

উক্ত ভিডিওর শুরুতেই শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর বক্তব্যের একটি ভিডিওর খণ্ডাংশ দেখানো হয়। এরপর ভিডিওর বিস্তারিত অংশে দাবি করা হয় প্রশ্ন কঠিন হওয়ায় গণিতে এবার ৯ নম্বর পেলে পাস আর ৫৫ নম্বর পেলেই এ প্লাস পাওয়া যাবে।

এসএসসিতে

ইউটিউবে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফেসবুকে একই দাবিতে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায় যে, সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এসএসসির গণিত বিষয়ের পরীক্ষায় ৯ নম্বর পেলে পাস ও ৫৫ নম্বর পেলে এ প্লাস পাওয়া যাবে দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সঠিক নয় বরং, ঢাকা শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান বিষয়টি গুজব বলে রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করেছেন।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক একাধিক কি ওয়ার্ড সার্চ করেও দেশীয় কোনো গণমাধ্যম কিংবা নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্র থেকে আলোচিত দাবির সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

পরবর্তীতে, আলোচিত ভিডিওতে ব্যবহৃত শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর বক্তব্যের খন্ডাংশের বিষয়ে আলাদাভাবে অনুসন্ধান চালায় রিউমর স্ক্যানার টিম।

প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে SOMOY TV এর ওয়েবসাইটে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি “এমবিবিএস পরীক্ষার জন্য অভিভাবকদের তদবির শিক্ষামন্ত্রীর কাছে! | Mohibul Hasan Chowdhury | MBBS Exam” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ভিডিওর একটি অংশের সাথে আলোচিত ভিডিওটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Comparison Image By Rumor Scanner

উক্ত ভিডিওতে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বিভিন্ন পরীক্ষার সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে প্রচারিত গুজবের সমালোচনা করেন। এছাড়াও, শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের অনৈতিক অনুরোধের বিষয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, যদি অভিভাবক পর্যায়ে নৈতিকতার অধঃপতন হয় তাহলে আমরা সন্তানদের কী শিক্ষা দিব?

অর্থাৎ, উক্ত ভিডিওর সাথে প্রচারিত দাবির কোনো প্রাসঙ্গিকতা নেই।

পরবর্তীতে, আলোচিত দাবির বিষয়ে অধিকতর সত্যতা নিশ্চিত করার জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, ঢাকা’র চেয়ারম্যান প্রফেসর তপন কুমার সরকারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টিকে সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করেছেন।

মূলত, ২০২৪ সালের এসএসসি পরীক্ষায় একাধিক বোর্ডে গণিত বিষয়ের প্রশ্নপত্র তুলনামূলক কঠিন হওয়ার অভিযোগ আসার প্রেক্ষিতে “গণিত পরীক্ষা কঠিন হয়েছে তাই সুখবর! মাত্র “৯” পেলেই পাস, আর ৫৫ পেলে A+” শীর্ষক একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। তবে, রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায় আলোচিত দাবিটি সঠিক নয়। এমন কোনো নির্দেশনা বা ঘোষণা দেওয়া হয়নি বলে রিউমর স্ক্যানারকে জানিয়েছেন মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, ঢাকা’র চেয়ারম্যান প্রফেসর তপন কুমার সরকার।

সুতরাং, এসএসসিতে গণিতে ৯ পেলে পাস ও ৫৫ নম্বর পেলে এ প্লাস পাওয়া যাবে দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

কোহলি লাইভে এসে তামিমকে আইপিএলে খেলার অফার দেননি

সম্প্রতি, লাইভে এসে ভারতীয় ক্রিকেটার বিরাট কোহলি বাংলাদেশের ক্রিকেটার তামিম ইকবালকে আইপিএলে খেলার জন্যে অফার দিয়েছেন এবং তার অফারের প্রেক্ষিতে তামিম ১৩ কোটি টাকার বিনিময়ে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের হয়ে খেলতে রাজি হয়েছেন দাবিতে ‘অসম্ভবকে সম্ভব করলো বিরাট কোহলি, ১৩ কোটিতে ব্যাঙ্গালোর হয়ে খেলবেন তামিম ইকবাল’ শীর্ষক থাম্বনেইল ও একই তথ্য সম্বলিত শিরোনামে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

কোহলি লাইভে

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ইউটিউবে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, বিরাট কোহলি লাইভে এসে তামিমকে আইপিএলের দল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরে খেলার অফার দেননি এবং  তামিম ১৩ কোটি টাকার বিনিময়ে দলটির হয়ে খেলতে রাজি হওয়ার দাবিটিও সত্য নয় বরং, করোনাকালীন সময়ে কোহলিকে নিয়ে তামিমের ইউটিউব চ্যানেলে করা দুজনের একটি লাইভ ভিডিওর কিছু অংশ ব্যবহার করে আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে ভিডিওটিতে কোহলি ও তামিম দুজনকে কুশল বিনিময় এবং তাদের পরিবার নিয়ে কথা বলার পাশাপাশি ক্রিকেট খেলা নিয়ে কিছু কথা বলতে দেখা যায়। এছাড়া আইপিএল বা তামিম ইকবালকে কোনো অফার দেওয়ার বিষয় কাউকেই আলোচনা করতে দেখা যায়নি। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে তামিম ইকবালের ইউটিউব চ্যানেল ২০২০ সালের ১৮ মে #TI28 Tamim Iqbal Live with Virat Kohli শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি লাইভ ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির বেশকিছু অংশের সাথে উক্ত ভিডিওর মিল রয়েছে।

Video Comparison by Rumor Scanner 

ভিডিওটি থেকে জানা যায়, মূলত করোনাকালীন সময় তামিম ইকবাল ভারতীয় ক্রিকেটার বিরাট কোহলিকে নিয়ে তার ইউটিউব চ্যানেলে উক্ত লাইভ ভিডিওটি প্রচার করেন। লাইভে তারা সেসময়ের করোনা পরিস্থিতি এবং ক্রিকেটের নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। যার সাথে আলোচিত দাবির কোনো প্রকার সম্পর্ক নেই।

পাশাপাশি প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে তামিম ইকবাল এবং বিরাট কোহলির উক্ত লাইভ ভিডিও নিয়ে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল Jamuna TV এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২০ সালের ১৯ মে মুশফিকের স্লেজিং যেভাবে জিততে সাহায্য করে কোহলিকে | Tamim Live With Kohli শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও প্রতিবেদনও খুঁজে পাওয়া যায়। 

অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক বিভিন্ন কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে কোনো গণমাধ্যম কিংবা কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে আলোচিত দাবির পক্ষে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

মূলত, করোনাকালীন সময়ে ক্রিকেটার তামিম ইকবাল তার ইউটিউব চ্যানেলে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ক্রিকেটারদের নিয়ে লাইভে এসে নানা বিষয়ে আড্ডা দিতেন। এরই প্রেক্ষিতে তিনি ভারতীয় ক্রিকেটার বিরাট কোহলিকে নিয়েও তার ইউটিউব চ্যানেলে একটি লাইভ করেন। সম্প্রতি, উক্ত লাইভ ভিডিওর কিছু অংশ ব্যবহার করে একটি ভিডিও তৈরি করে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। প্রচারিত ভিডিওটিতে দাবি করা হচ্ছে, কোহলি লাইভে এসে তামিমকে আইপিএলে খেলার জন্যে অফার দিয়েছেন এবং তার অফারের প্রেক্ষিতে তামিম ১৩ কোটি টাকার বিনিময়ে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের হয়ে খেলতে রাজি হয়েছেন। 

সুতরাং, লাইভে এসে তামিম আইপিএলে খেলার জন্যে কোহলির অফার দেওয়া এবং তার প্রেক্ষিতে তামিমের ১৩ কোটি টাকার বিনিময়ে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরে খেলতে রাজি হওয়ার দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র