Home Blog Page 539

অ’ ককা হাতী শীর্ষক ভারতের ভিডিওকে বাংলাদেশে শিক্ষক প্রশিক্ষণের দৃশ্য দাবিতে প্রচার  

0

সম্প্রতি, নতুন জাতীয় শিক্ষাক্রমের বিষয়ে ইন্টারনেটের বিভিন্ন মাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনা দেখেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। এর মধ্যেই একটি ভিডিও ব্যাপকভাবে ভাইরাল হয়েছে যাতে দেখা যাচ্ছে, একটি শ্রেণিকক্ষে একদল নারী-পুরুষ “অ’ ককা হাতী” শীর্ষক ছড়া সদৃশ্য একটি গান গাওয়ার মাধ্যমে শারীরিক কসরতে অংশ নিয়েছেন। দাবি করা হচ্ছে, এটি বাংলাদেশ সরকারের নতুন শিক্ষাক্রমের জন্য শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের দৃশ্য।

অ' ককা হাতী

উক্ত দাবিতে ফেসবুকের কিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

উল্লিখিত দাবিতে সংযুক্ত পোস্টগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, এই প্রতিবেদন প্রকাশ অবধি ভিডিওটি প্রায় ২১ লক্ষ বা ২.১ মিলিয়ন বার দেখা হয়েছে। ভাইরাল পোস্টগুলোর মন্তব্যঘর ঘুরে পোস্টটির দাবির প্রেক্ষিতে অধিকাংশ নেটিজেনকে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানাতে দেখা যায়।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ভিডিওটি দেশের নতুন শিক্ষাক্রমের অধীনে কোনো শিক্ষক প্রশিক্ষণের দৃশ্যের নয়, এমনকি এটি বাংলাদেশের ভিডিওই নয় বরং ভারতের আসামের ক শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে থাকা অ’ ককা হাতী শীর্ষক উক্ত ভংগীমা গীতটি গাওয়ার মাধ্যমে সেখানকার একটি স্কুলে শিক্ষকদের কসরত প্রদর্শনের ভিডিও এটি। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, একজন নারী যে গানটি গাইছেন করছেন তা হলো,

অ’ ককা হাতী 
মই যে তোমাৰ নাতি
তোমাৰ তলত সোমাই থাকিম  
মোক নেলাগে ছাতি।

মস্ত এডাল নেজ
আৰু
মস্ত এটা পেট
চকু দুটা ইমান সৰু
লাজ লাগি যায় ধেৎ।

অ’ ককা হাতী
মই যে তোমাৰ নাতি
মোৰ ওপৰত বহি নিদিবা
পেট যাব মোৰ ফাটি।

রিউমর স্ক্যানার টিম গত ১৫ মার্চ Easy to learn Academy নামে একটি ইউটিউব চ্যানেলে আলোচিত ভিডিওটি (আর্কাইভ) প্রকাশ হতে দেখেছে। 

ভিডিওটির ডেসক্রিপশন অংশ থেকে জানা যাচ্ছে, এটি অসমীয়া ভাষার একটি ভংগীমা গীত। যে নারীকে এটি গাইতে দেখা যাচ্ছে তার নাম মৃদুলা দত্ত (Mridula Dutta)।

Screenshot: YouTube 

একই ইউটিউব চ্যানেলের অধীনে থাকা ফেসবুক পেজেও (Easy to Learn) এই ভিডিওটি (আর্কাইভ) একইদিন প্রকাশ করা হয়। 

এই পোস্টে মৃদুলা দত্তের অ্যাকাউন্টটি এক ব্যক্তি মেনশন করে জানান, তিনি ইতোমধ্যে ভাইরাল হয়ে গেছেন। 

Screenshot: Facebook

আমরা মৃদুলা দত্তের সাথে এ বিষয়ে কথা বলার চেষ্টা করেছি। তবে এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া পর্যন্ত তার পক্ষ থেকে কোনো সাড়া মেলেনি।

আমরা অনুসন্ধানে দেখেছি, গত ০৬ ডিসেম্বর এক ব্যক্তি Assam Learning Centre নামে একটি পেজে প্রকাশিত একই ভিডিও শেয়ার করে ক্যাপশনে লিখেছেন, স্কুলে তার গাওয়া শেষ গান এটি। তিনি পোস্টের ক্যাপশনে স্কুলের পেজও মেনশন করেছেন যার নাম, Lambudar Borgohain Sankardev Sishu Vidya Niketan। 

Screenshot: Facebook 

এই স্কুলটি আসামের মধুপুরের ডিমৌতে অবস্থিত৷ স্কুল কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলার চেষ্টা করেছি আমরা। তবে তাদের পক্ষ থেকে উত্তর মেলেনি। 

রিউমর স্ক্যানার টিম আসামের আম্বারি শিশুকল্যাণ এলপি স্কুলের শিক্ষক রতন লাল সাহার সাথে এ বিষয়ে কথা বলেছে। তিনি বলছিলেন, ক শ্ৰেণির কৰ্মপুথি নামের বইতে এটি আছে। বইটির নাম:-অকণিৰ কৰ্মপুথি।

আমরা আসামের বাজ্যিক শিক্ষা-গবেষণা আব্রু প্রশিক্ষণ পরিষদের ওয়েবসাইটে বইটির কাভার পেজের ছবি খুঁজে পেলেও বইটির কোনো কপি পাইনি। 

Image: Akonir Karmaputi Cover Page

অকণিৰ কৰ্মপুথি নামের এই বইটির বিভিন্ন অধ্যায় নিয়ে আমরা ইউটিউবের একটি চ্যানেলে একটি প্লে-লিস্ট খুঁজে পেয়েছি যেখানে আলোচিত ভংগীমা গীতটি রয়েছে। 

Screenshot: YouTube 

আসামে ক শ্রেণিতে পাঠ্যবই হিসেবে পড়ানো হয় অকণিৰ কৰ্মপুথি নামের এই বইটি। দেখুন এখানে, এখানে। 

মূলত, সম্প্রতি বাংলাদেশের নতুন শিক্ষাক্রমের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের দৃশ্য শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে যাতে দেখা যাচ্ছে, একটি শ্রেণিকক্ষে একদল নারী-পুরুষ একটি ছড়া সদৃশ্য গান গাওয়ার মাধ্যমে শারীরিক কসরতে অংশ নিয়েছেন। কিন্তু রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভিডিওটি বাংলাদেশের নয় এবং এই ভিডিওর দৃশ্যের সাথে নতুন শিক্ষাক্রমের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণেরও কোনো সম্পর্ক নেই। প্রকৃতপক্ষে, অন্তত গত মার্চ মাস থেকেই ভারতের আসামের বিভিন্ন ফেসবুক পেজ থেকে ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়তে দেখা গেছে। ভিডিওতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা অসমীয়া ভাষায় অ’ ককা হাতী শীর্ষক যে ছড়াটি আবৃত্তি করছেন সেটি আসামের ক শ্রেণির অকণিৰ কৰ্মপুথি নামের পাঠ্য বইয়ের একটি ভংগীমা গীত। 

প্রসঙ্গত, নতুন শিক্ষাক্রমের বিষয়ে ছড়িয়ে পড়া ভুল তথ্য প্রতিরোধে অবদান রাখায় গত ০৯ ডিসেম্বর ‘পজেটিভ ইনফ্লুয়েন্সার অ্যাওয়ার্ড’-এ ভূষিত হয়েছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, ভারতের আসামের একটি স্কুলে শিক্ষকদের ভংগীমা গীত করার একটি দৃশ্যকে জাতীয় শিক্ষাক্রমের অধীনে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের দৃশ্য দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।  

তথ্যসূত্র

  • Easy to Learn: Facebook Video
  • Statement from Ratan Lal Saha
  • Rumor Scanner’s own investigation

রাষ্ট্রপতি ও সেনাপ্রধান কর্তৃক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের নোটিশ প্রকাশের গুজব

গত ০৯ ডিসেম্বর ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম ইউটিউবে Sabai Sikhi নামের একটি চ্যানেলে ‘এইমাত্র প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের নোটিশ প্রকাশ করলো সেনাবাহিনী ও রাষ্ট্রপতি’ শীর্ষক শিরোনাম ও ‘এইমাত্র হাসিনার পদত্যাগ নিশ্চিত করলো সেনাপ্রধান ও রাষ্ট্রপতি’ শীর্ষক থাম্বনেইল ব্যবহার করে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।

রাষ্ট্রপতি

ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি ভিডিওটি প্রায় ৪৯ হাজার বার দেখা হয়েছে। এছাড়া ভিডিওটিতে প্রায় দেড় হাজার হাজার পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। 

পরবর্তীতে একই ভিডিওটি কয়েকটি ফেসবুক পেজ থেকে প্রচার করা হয়। পোস্টগুলো দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত ভিডিওটি’র ইউটিউব লিংক শেয়ার করে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, রাষ্ট্রপতি ও সেনাপ্রধান কর্তৃক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের নোটিশ প্রকাশ করার দাবিটি সঠিক নয় বরং অধিক ভিউ পাবার আশায় চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিও পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এটি ভিন্ন ভিন্ন কয়েকটি পুরোনো ঘটনার ভিডিও ক্লিপ এবং ছবি নিয়ে তৈরি একটি ভিডিও প্রতিবেদন, যেখানে রাষ্ট্রপতি ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের পুরোনো কিছু কার্যক্রমের দৃশ্য দেখানো হয়।

ভিডিওটি’র সংবাদপাঠ অংশে বলা হয়, “অবশেষে রাষ্ট্রপতি ও সেনাপ্রধানের নির্দেশে পদত্যাগের ঘোষণা দিলো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ইতোমধ্যেই পদত্যাগের জন্য জরুরি প্রজ্ঞাপন জারি করলো প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। এদিকে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের ঘোষণায় খুশি বিএনপি সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল। এদিকে নির্বাচনের যেকোনো দায়িত্ব পালনে প্রস্তুত সেনাবাহিনী।”

উক্ত বিষয়গুলো নিয়ে প্রাসঙ্গিক একাধিক কি ওয়ার্ড সার্চ করেও গণমাধ্যম কিংবা অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে দাবিগুলোর সত্যতা পাওয়া যায়নি।

আলোচিত ভিডিওতে প্রদর্শিত রাষ্ট্রপতির বক্তব্যের অংশটির কিছু স্থিরচিত্র রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে মূলধারার ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম যমুনা টিভি’র ইউটিউব চ্যানেলে চলতি বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি ‘সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনে ছাড় দেওয়া হবে না: মো. সাহাবুদ্দিন’ শীর্ষক শিরোনামে রাষ্ট্রপতির বক্তব্য নিয়ে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Jamuna TV

এই ভিডিওটির সাথে আলোচিত ভিডিওটি’র রাষ্ট্রপতির বক্তব্যের অংশের হুবহু মিল পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner

তবে, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন কর্তৃক সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনে ছাড় না দেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করার এই ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় এবং রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগের নির্দেশের দাবি সংক্রান্ত তথ্যও আলোচিত ভিডিওতে অনুপস্থিত।

অর্থাৎ, উপরোক্ত বিষয়গুলো পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, রাষ্ট্রপতি ও সেনাপ্রধান কর্তৃক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের নোটিশ প্রকাশের দাবিটি সঠিক নয়।

মূলত, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন করার দাবিতে বিএনপি-জামায়াতসহ আওয়ামী লীগ সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো দীর্ঘদিন ধরে রাজপথে আন্দোলন করে আসছে। এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা ধরনের তথ্য প্রচার হয়ে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ০৯ ডিসেম্বর Sabai Sikhi নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ‘এইমাত্র প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের নোটিশ প্রকাশ করলো সেনাবাহিনী ও রাষ্ট্রপতি’ শীর্ষক শিরোনাম ও ‘এইমাত্র হাসিনার পদত্যাগ নিশ্চিত করলো সেনাপ্রধান ও রাষ্ট্রপতি’ শীর্ষক থাম্বনেইল ব্যবহার করে একটি ভিডিও প্রচার করা। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে অধিক ভিউ পাবার আশায় ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার কয়েকটি পুরোনো ভিডিও ক্লিপ ও ছবি যুক্ত করে তাতে চটকদার থাম্বনেইল ও শিরোনাম ব্যবহার করে কোনোপ্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। এছাড়া, গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে বিষয়টির সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, পূর্বেও চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে বিভিন্ন ভুয়া তথ্য প্রচারের প্রেক্ষিতে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কয়েকটি প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, রাষ্ট্রপতি ও সেনাপ্রধান কর্তৃক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের নোটিশ প্রকাশ করা হয়েছে দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

সময় টিভি’র নকল ফটোকার্ডে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে ভিত্তিহীন তথ্য প্রচার

0

সম্প্রতি, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এর ছাত্রীর পোস্ট ভাইরাল’ শীর্ষক দাবিতে একটি ভাইরাল পোস্টের স্ক্রিনশটসহ বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল সময় টিভি’র লোগো সম্বলিত একটি ফটোকার্ড ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

জাহাঙ্গীরনগর

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এর ছাত্রীর পোস্ট ভাইরাল’ শীর্ষক শিরোনামে সময় টিভি কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি। বরং, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় এডিট বা সম্পাদনার মাধ্যমে সময় টিভি’র লোগো যুক্ত করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া আলোচিত ফটোকার্ডে যুক্ত কথিত ভাইরাল পোস্টটিরও কোনো অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি।

গুজবের সূত্রপাত

অনুসন্ধানের শুরুতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে বাংলা চটি গল্প ভান্ডার নামের একটি পাবলিক গ্রুপে Jim Akter নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে ৬ ডিসেম্বর দুপুর ৩:৩০ মিনিটে করা সম্ভাব্য প্রথম পোস্টটি (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook

পরবর্তীতে একই আইডি থেকে সেদিন বিকেল ৫টা ২৮ মিনিটে যশোরের মেয়ে স্বপনা নামের আরেকটি পাবলিক গ্রুপে ‘এখনো সময় আছে মেয়েদের কওমি মহিলা মাদ্রাসায় সুশিক্ষিত করুন! আর কত দেখবেন!’ শীর্ষক শিরোনামে আলোচিত ফটোকার্ডটি পুনরায় পোস্ট (আর্কাইভ) পোস্ট করা হয়।

Screenshot: Facebook

এছাড়াও একই ফেসবুক আইডি থেকে উক্ত ফটোকার্ড ব্যতীতও শুধু কথিত ভাইরাল পোস্টের তথ্যটি 💔😔ডিপ্রেশন😔💔 নামের একটি পাবলিক গ্রুপে গত ৭ ডিসেম্বর দুপুর ৩:২১ মিনিটে পোস্ট (আর্কাইভ)  করা হয়।

Screenshot: Facebook

এরপর থেকেই আলোচিত ফটোকার্ডটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। 

আলোচিত ফটোকার্ডটিতে ব্যবহৃত Tumpa Akter নামের আইডির কথিত ভাইরাল পোস্টটিতে পোস্ট করার সময়ের স্থলে ২ দিন আগে লেখা রয়েছে। অর্থাৎ ফটোকার্ডটি যদি ৬ তারিখ প্রথম পোস্ট করা হয় সে হিসেবে কথিত ভাইরাল পোস্টটি ৪ তারিখ করা হতে পারে। 

পরবর্তী অনুসন্ধানে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে Tumpa Akter নামের একটি আইডি খুঁজে পাওয়া যায়। যাতে গত ৫ নভেম্বর আপলোড করা একটি ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। যার সাথে আলোচিত ফটোকার্ডে ব্যবহৃত কথিত ভাইরাল পোস্টের স্ক্রিনশটের আইডির প্রোফাইল পিকচারের হুবহু মিল রয়েছে।

Photo Comparison by Rumor Scanner

তবে, Tumpa Akter নামের উক্ত ফেসবুক আইডিটি পর্যালোচনা করেও আলোচিত স্ট্যাটাসটি খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে, আইডিটিতে গত ৯ নভেম্বর যতই ঠান্ডা পড়ুক বাড়ুক শীতের প্রকোপ, সেরার সেরা এই ঋতু যে ক্ষণস্থায়ী বড়,,তাই মনে জাগে ক্ষোভ (আর্কাইভ) শীর্ষক শিরোনামে করা একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook

যার মন্তব্যের ঘরে Sohail Hasan নামের এক ব্যক্তি আলোচিত ফটোকার্ডটি দিয়ে উক্ত পোস্টটি তার কিনা জানতে চান। এর উত্তরে Tumpa Akter জানান পোস্টটি তার নয়।

Screenshot: Facebook

পরবর্তীতে আলোচিত ফটোকার্ডটি সময় টিভি প্রকাশ করেছে কিনা তা জানতে সময় টিভি‘র ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে সাম্প্রতিক সময়ে প্রচারিত ফটোকার্ডগুলো পর্যালোচনা করে উক্ত শিরোনাম বা তথ্য সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও সময় টিভি’র ওয়েবসাইট, ইউটিউব চ্যানেল বা অন্যকোনো গণমাধ্যমেও উক্ত দাবির বিষয়ে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

তাছাড়াও সময় টিভি’র পেজে প্রচারিত ফটোকার্ডগুলোর সাথে আলোচিত ফটোকার্ডের ডিজাইনের ব্যাপক পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়। উভয় ফটোকার্ডে সময় টিভি’র লোগোর পজিশন, ছবি ব্যবহারের নিয়ম এবং শিরোনাম লেখার ধরণ ও ফন্টের মধ্যে সম্পূর্ণ ভিন্নতা রয়েছে।

Photocard Comparison by Rumor Scanner

এছাড়াও সময় টিভি’র পেজে গত ২ মাসে প্রকাশিত ফটোকার্ডগুলো পর্যালোচনা করে দেখা যায়, সময় টিভি তাদের ফেসবুক পেজে উক্ত ডিজাইনে কখনো কোনো ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি।

মূলত, গত ৬ ডিসেম্বর বাংলা চটি গল্প ভান্ডার নামের একটি পাবলিক গ্রুপে Jim Akter নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে ‘আমি একজন জাহাঙ্গীরনগরের ছাত্রী হলেও বলছি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এর ১০০% মেয়ের মধ্যে ৯০ % মেয়েই খাওয়া,’ শীর্ষক স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট যুক্ত সময় টিভি’র লোগো সম্বলিত একটি ফটোকার্ড পোস্ট করা হয়। পরবর্তীতে একই আইডি থেকে উক্ত ফটোকার্ডটি আরও বেশকিছু পাবলিক গ্রুপে পোস্ট হলে সেটি  সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সময় টিভি তাদের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে আলোচিত ফটোকার্ডটি প্রকাশ করেনি। এছাড়াও দেখা যায়, উক্ত ফটোকার্ডে ব্যবহৃত কথিত ভাইরাল পোস্টটি যে আইডি থেকে করা হয়েছে বলে উপস্থাপন করা হয়েছে সেই ফেসবুক আইডিটি পর্যালোচনা করে আলোচিত দাবি সম্বলিত কোনো পোস্ট পাওয়া যায়নি। প্রকৃতপক্ষে, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে কথিত ভাইরাল পোস্টের সাথে সময় টিভি’র লোগো যুক্ত করে আলোচিত ফটোকার্ডটি প্রচার করা হয়েছে। 

সুতরাং,‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এর ছাত্রীর পোস্ট ভাইরাল’ শীর্ষক শিরোনামে সময় টিভি‘র লোগো সম্বলিত আলোচিত ফটোকার্ডটি ভুয়া ও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র

তারেক রহমানের নির্দেশে সেনাবাহিনীর মাঠে নামার এবং শেখ হাসিনার পদত্যাগের গুজব 

সম্প্রতি, “সেনাবাহিনীর সহায়তা চাইলো তারেক জিয়া,ভয়ে পদত্যাগের ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম” শীর্ষক শিরোনাম এবং তারেক রহমানের নির্দেশো মাঠে নামছে সেনাবাহিনী, ২৪ ঘন্টার মধ্যেই হাসিনার পদত্যাগ শীর্ষক  তথ্য সম্বলিত থাম্বনেইলে ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম ইউটিউবে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।

তারেক রহমান

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে সেনাবাহিনীর মাঠে নামা এবং ২৪ ঘন্টার শেখ হাসিনার পদত্যাগ করার তথ্যগুলো  সঠিক নয় বরং অধিক ভিউ পাবার আশায় চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি (আর্কাইভ)পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ২ মিনিট ৩৪ সেকেন্ডের এই  ভিডিওটিতে প্রচারিত দাবিগুলো প্রসঙ্গে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের একটি ভিডিও দেখানো হয়।

ভিডিও যাচাই

অনুসন্ধানে গত ৩০ অক্টোবর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ‘দেশব্যাপী তিন দিনের সর্বাত্মক অবরোধ পালনের আহবান জানিয়ে বক্তব্য। 30 October 2023’ শীর্ষক শিরোনামে তারেক রহমানের একটি ভিডিও (আর্কাইভ) বার্তা খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিও দেওয়া তারেক রহমানের বক্তব্যের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওতে প্রদর্শিত তারেক রহমানের বক্তব্যের মিল পাওয়া যায়।

Video Comparison : Rumor Scanner

উক্ত ভিডিওতে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান রাজনৈতিক বিভিন্ন বিষয় এবং ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশে হামলা, নেতাকর্মীদের হত্যা, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ আন্দোলনরত বিভিন্ন দলের হাজারো নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার, বাড়ি বাড়ি তল্লাসি, হয়রানি ও নির্যাতনের প্রতিবাদে এবং এক দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে গত ৩১ অক্টোবর এবং ১ ও ২ নভেম্বর দেশব্যাপী সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচী পালন করার আহ্বান বিষয়ক বক্তব্য দেন।

তবে, উক্ত আলোচনার কোথাও তারেক রহমান সেনাবাহিনীর মাঠে নামার বিষয়ে কোনো তথ্যের উল্লেখ করেননি।

এছাড়া, একটি দেশে সেনা মোতায়েন কিংবা প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ সংক্রান্ত কোনো ঘটনা ঘটলে তা অবশ্যই গণমাধ্যমে প্রচারিত হবে। তবে, রিউমর স্ক্যানার টিম অনুসন্ধান করে সেনাবাহিনীর মাঠে নামা এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র পদত্যাগ সংক্রান্ত কোনো সংবাদ পায়নি।

মূলত, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগ এবং সেনাবাহিনীর অধীনে নির্বাচন করার দাবিতে বিএনপি-জামায়াতসহ আওয়ামী লীগ সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো দীর্ঘদিন ধরে রাজপথে আন্দোলন করে আসছে। এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ইন্টারনেটে নানা ধরনের তথ্য প্রচার হয়ে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় ইন্টারনেটে “তারেক রহমানের নির্দেশে মাঠে নামছে সেনাবাহিনী, ২৪ ঘন্টার মধ্যেই হাসিনার পদত্যাগ” শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়। ভিডিওটি নিয়ে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত দাবিগুলো সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে অধিক ভিউ পাবার আশায় একটি ভিন্ন ঘটনার ভিডিও ক্লিপ যুক্ত করে তাতে চটকদার থাম্বনেইল ও শিরোনাম ব্যবহার করে কোনোপ্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। এছাড়া, গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে দাবিগুলোর সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে মাঠে নামছে সেনাবাহিনী এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করছে দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যগুলো মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

আর্থিক সংকটে একই পরিবারের সবার আত্মহত্যার ঘটনাটি বাংলাদেশের নয়, ভারতের

0

সম্প্রতি, আর্থিক সংকটে একই পরিবারের সবার আত্মহত্যার একটি সংবাদ বাংলাদেশের দাবিতে মূলধারার গণমাধ্যম কালবেলা এবং বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ইনডিপেনডেন্ট টিভি’র পৃথক দুটি ফটোকার্ড যুক্ত করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

আর্থিক সংকটে

উক্ত গণমাধ্যম দুটির ফটোকার্ড শেয়ার করে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন- এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আর্থিক সংকটে একই পরিবারের সবার আত্মহত্যার ঘটনাটি বাংলাদেশের নয় বরং ঘটনাটি ভারতের কর্ণাটকের।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত পোস্টগুলোতে ব্যবহৃত কালবেলা এবং ইনডিপেনডেন্ট টিভি’র ফটোকার্ডের সূত্র ধরে ম্যানুয়ালি অনুসন্ধানের মাধ্যমে গণমাধ্যম দুটির ফেসবুক পেজে এসম্পর্কিত ফটোকার্ড দুটি (কালবেলা, ইনডিপেনডেন্ট টিভি) খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Kalbela Facebook
Screenshot: Independent TV Facebook

উক্ত গণমাধ্যম দুটির ফটোকার্ড নিয়ে প্রচারিত পোস্টের কমেন্টে উল্লেখিত এসম্পর্কিত বিস্তারিত প্রতিবেদন পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। কালবেলার ওয়েবসাইটে ‘অনটনে সন্তানকে হত্যার পর বাবা-মায়ের আত্মহত্যা’ শীর্ষক শিরোনামে এবং ইনডিপেনডেন্ট টিভি’র ওয়েবসাইটে ‘আর্থিক সংকটে’ শিশুসহ পরিবারের সবার আত্মহত্যা’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন দুটি থেকে জানা যায়, উক্ত ঘটনাটি ভারতের কর্ণাটকের।

প্রতিবেদনগুলোর শিরোনামে ঘটনাটির স্থানের নাম উল্লেখ না করায় বিষয়টি নিয়ে নেটিজেনদের মনে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। বিস্তারিত প্রতিবেদন না পড়েই তারা বিষয়টিকে বাংলাদেশের মনে করে বিভিন্ন মন্তব্য করেছেন।

Comment Collage by Rumor Scanner

পরবর্তীতে বিষয়টি অধিকতর নিশ্চিতের জন্য কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি’র ওয়েবসাইটে গত ১০ ডিসেম্বর ‘Couple Kills 11-Year-Old Daughter, Dies By Suicide At Karnataka Resort’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ভারতের কর্ণাটকের কোডাগু এলাকায় একটি রিসোর্ট থেকে একই পরিবারের ৩ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রতিবেদনে পুলিশের বরাতে জানানো হয়, পরিবারটি আর্থিক সংকটের কথা জানিয়ে একটি সুইসাইড নোট রেখে যায়।

অর্থাৎ, আর্থিক সংকটে একই পরিবারের সবার আত্মহত্যার ঘটনাটি বাংলাদেশের নয়। তবে এসম্পর্কিত খবরের শিরোনামে স্থানের নাম না উল্লেখ করায় ঘটনাটি বাংলাদেশের ভেবে নেটিজেনরা বিভ্রান্ত হয়েছেন।

মূলত, সম্প্রতি ভারতের কর্ণাটকে আর্থিক সংকটে একটি পরিবারের সদস্যদের আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে উক্ত বিষয়ে বাংলাদেশের একাধিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের শিরোনামে ঘটনাটির স্থানের নাম উল্লেখ না করে সংবাদ প্রচার করা হয়। পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীরা বিষয়টি বাংলাদেশের ঘটনা মনে করে ফেসবুকে প্রচার করেন।

উল্লেখ্য, পূর্বেও ভারতের ঘটনা বাংলাদেশের দাবিতে প্রচারিত হলে তা নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন দুটি প্রতিবেদন দেখুন এখানে এবং এখানে

সুতরাং, আর্থিক সংকটে ভারতের কর্ণাটকের একই পরিবারের সবার আত্মহত্যার ঘটনাটি বাংলাদেশে স্থানের নাম উল্লেখ না করে ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

নতুন শিক্ষা কারিকুলাম: ভুল তথ্য যাচাইয়ে স্বীকৃতি পেল রিউমর স্ক্যানার

0

বাংলাদেশে চলতি বছর প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের প্রথম, দ্বিতীয়, ষষ্ঠ এবং সপ্তম শ্রেণিতে নতুন একটি শিক্ষা কারিকুলাম বা পাঠ্যক্রম চালু করেছে সরকার। আগামী বছর থেকে তৃতীয়, চতুর্থ, অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে এবং এরপর ২০২৫ সালে পঞ্চম ও দশম শ্রেণিতে, ২০২৬ সালে একাদশ শ্রেণিতে এবং ২০২৭ সালে দ্বাদশ শ্রেণিতেও এই শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের কথা জানিয়েছে সরকার। এর ফলে প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থায় বেশকিছু পরিবর্তন আসবে, নতুনত্ব আসবে পাঠ্যসূচি ও মূল্যায়ন পদ্ধতিতেও। এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে নানা আলোচনা-সমালোচনা হতে দেখা যাচ্ছে।  

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড বলছে, শিক্ষার্থীদের আনন্দময় পরিবেশে পড়ানোর পাশাপাশি মুখস্থনির্ভরতার পরিবর্তে দক্ষতা, সৃজনশীলতা, জ্ঞান ও নতুন দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে শেখাতেই নতুন এই শিক্ষাক্রম চালু করা হচ্ছে। 

কিন্তু এ নিয়ে আলোচনা থামছে না। শিক্ষাক্রম বিষয়ে ইন্টারনেটের বিভিন্ন মাধ্যমে গত নভেম্বর থেকে ভুল তথ্য ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়তে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার টিম৷ বিশেষ করে নভেম্বরের শেষ দিকে এসে বেশ কিছু ভিডিও ইন্টারনেটে রীতিমতো ভাইরাল আকার ধারণ করেছিল যেগুলোকে নতুন শিক্ষা কারিকুলামের অধীনে শিক্ষক প্রশিক্ষণের দৃশ্য বলে দাবি করা হচ্ছিল। রিউমর স্ক্যানারের ফেসবুক গ্রুপসহ বিভিন্ন মাধ্যমে এ বিষয়ে যাচাইয়ের অনুরোধ আসার প্রেক্ষিতে আমরা ভিডিওগুলো নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করি। 

ফেসবুকের মনিটরিং টুল এবং ম্যানুয়াল অনুসন্ধানে রিউমর স্ক্যানার টিম দেখেছে, নভেম্বরের শেষদিক থেকে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ অবধি এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সর্বাধিক ভাইরাল হয়েছে। টিলিং টিলিং সাইকেল চলাই শিরোনামের এই ভিডিওতে একটি শ্রেণীকক্ষে একদল নারী-পুরুষের টিলিং টিলিং ছাইকেল চলাই শীর্ষক একটি ছড়া আবৃত্তির মাধ্যমে প্রশিক্ষণ নিতে দেখা যাচ্ছিল৷ আমরা ০৪ ডিসেম্বর সকালে যখন এ বিষয়ে ফ্যাক্টচেক ভিডিও প্রকাশ করি সেসময়ের মধ্যেই আলোচিত এই ভিডিওটি ফেসবুকেই প্রায় এক কোটি মানুষ দেখে ফেলেছেন। বিশাল সংখ্যক এই মানুষের কাছে ভিডিওটি নতুন শিক্ষা কারিকুলামের অধীনে শিক্ষক প্রশিক্ষণের দৃশ্য হিসেবেই ভিডিওটি বিভ্রান্তির সৃষ্টি করেছে। 

নতুন শিক্ষা কারিকুলাম
Screenshot: Facebook

আমরা এ বিষয়ে অনুসন্ধান করে দেখতে পাই, ভিডিওটি বাংলাদেশেরই নয়। গত ১৭ নভেম্বর ভারতের আসামের শিক্ষক রতন লাল সাহা তার ফেসবুক পেজে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ সংশ্লিষ্ট টিলিং টিলিং চাইকেল চলাই শীর্ষক একটি ভিডিও প্রকাশ করেন। উক্ত ভিডিওকে সম্প্রতি বাংলাদেশের নতুন শিক্ষা কারিকুলামের প্রশিক্ষণের দৃশ্য দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। 

আমাদের প্রচারিত এ সংক্রান্ত ফ্যাক্টচেক ভিডিওটি ফেসবুকে রিউমর স্ক্যানারের পেজসহ বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট থেকে রি-পোস্টের মাধ্যমে এখন অবধি প্রায় ১৩ লক্ষাধিক মানুষ দেখেছেন৷ 

এই ফ্যাক্টচেক প্রকাশের পর রিউমর স্ক্যানার টিম এ বিষয়ে আরো একাধিক ভিডিও যাচাইয়ের অনুরোধ পেয়েছে। এর মধ্যে দুইটি ভিডিও আলাদাভাবে অনুসন্ধান করে আমরা দেখেছি, দুটোই কুমিল্লার একটি অনুষ্ঠানের এবং নিশ্চিতভাবেই এগুলোর সাথেও নতুন শিক্ষা কারিকুলামের কোনো সম্পর্কই নেই। 

প্রথম ভিডিওতে দেখা যাচ্ছিল, একদল নারী-পুরুষের ব্যাঙ নৃত্যের প্রশিক্ষণে অংশ নিয়েছেন।

Screenshot: Facebook

আমরা যখন এই বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করি, তখন এই ভিডিও সম্বলিত একটি পোস্টই প্রায় ৩১ লক্ষাধিক মানুষ দেখেছেন। আমরা ভিডিওতে প্রশিক্ষকের ভূমিকায় থাকা ব্যক্তির পরিচয় নিশ্চিত হতে পেরেছি। তিনি কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার মনতলী সরকারি প্রাথমিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: ইয়াছিন। আমরা তার সাথে এ বিষয়ে কথা বলেছি এবং প্রাসঙ্গিক অনুসন্ধানের পর নিশ্চিত হয়েছি যে, গত ২৮ নভেম্বর কুমিল্লা প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং ইন্সটিটিউটে (পিটিআই) কাব স্কাউটের এক প্রশিক্ষণে  আলোচিত একটি ব্যাঙ নৃত্যের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের। এই প্রশিক্ষণেরই দৃশ্য এটি। 

এই বিষয়ে অনুসন্ধান চলাকালীনই আরেকটি ভিডিও ব্যাপকভাবে ভাইরাল হতে দেখা যায়, যেখানে একদল নারী-পুরুষের ঝিংগা লালা হু শীর্ষক শব্দগুচ্ছ উচ্চারণের মাধ্যমে জংলী সদৃশ পোশাকে নৃত্য করছেন।

Screenshot: Facebook

একটি পোস্টের মাধ্যমেই এই ভিডিওটি প্রায় ১০ লক্ষাধিক বার দেখা হয়েছে, শেয়ার করা হয়েছে প্রায় ১০ হাজার বার।

আমরা যাচাই করে দেখেছি, কুমিল্লা প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং ইন্সটিটিউটে (পিটিআই) কাব স্কাউটের গত নভেম্বরের একই প্রশিক্ষণের অনুষ্ঠানের দৃশ্য এটি৷ 

ভাইরাল এই ভিডিওতে থাকা আব্দুর রহিম স্বপন নামের এক ব্যক্তিকে শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছে রিউমর স্ক্যানার টিম। জনাব স্বপন আমাদের কাছে ঐ দিনের অনুষ্ঠানের বেশ কয়েকটি ছবি পাঠিয়ে নিশ্চিত করেছেন যে, এটি নতুন শিক্ষাক্রমের অধীনে কোনো প্রশিক্ষণের ঘটনা নয়।

আমাদের নিয়মিত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো মনিটরিংয়ে মাধ্যমে আরেকটি ভিডিও ভাইরাল হয়ে ছড়িয়ে পড়তে দেখা যায়। কতিপয় নারী-পুরুষ প্যাঁক প্যাঁক শীর্ষক হাঁসের ডাকের শব্দগুচ্ছ উচ্চারণের মাধ্যমে হাঁসের চলার মতো ভঙ্গি করছেন, এমন একটি দৃশ্য ছিল এই ভিডিওতে। দাবি করা হচ্ছিল, এটিও বাংলাদেশ সরকারের নতুন শিক্ষা কারিকুলামের জন্য শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের দৃশ্য।

Screenshot: Facebook

আমরা যাচাই করে দেখেছি, ২০২২ সালের শুরুতে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে মূল গণিত বইয়ের বিষয়গুলো সহজ ও আনন্দের সাথে শিক্ষার্থীদের শেখাতে গণিত অলিম্পিয়াডের আদলে এই শিখন কৌশলটি শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল৷ তবে এটি এখন আর দেওয়া হচ্ছে না, আর নতুন শিক্ষা কারিকুলামেও এই বিষয়টির উল্লেখ নেই। নওগাঁর বদলগাছিতে উক্ত প্রশিক্ষণের প্রশিক্ষক হিসেবে ছিলেন এমন একজন শিক্ষকের সাথে এ বিষয়ে কথা বলে নিশ্চিত হয়েছে রিউমর স্ক্যানার টিম। তাছাড়া, চতুর্থ শ্রেণির ‘আনন্দে গণিত শিখি-কনটেন্ট ডেলিভারি বুক’-এ প্যাকঁ প্যাকেঁর এই শিখন কৌশলের বিষয়ে (৮৩ পৃষ্ঠায়) উল্লেখ রয়েছে। তবে এটি মূল পাঠ্যবইয়ের অংশ নয়৷ চতুর্থ শ্রেণির গণিত বইয়েও এই বিষয়টির উল্লেখ নেই। মজার বিষয় হচ্ছে, এই শ্রেণিতে নতুন শিক্ষা কারিকুলাম বাস্তবায়ন শুরু হবে আগামী বছর। তাই ২০২২ সালে এটির প্রশিক্ষণ হওয়াও অবান্তর। 

নতুন শিক্ষা কারিকুলামে শুধু যে বাংলা ভাষা কেন্দ্রিক ভিডিও-ই বিভ্রান্তির উদ্দেশ্যে প্রচার করা হয়েছে তা নয়, কতিপয় নারী-পুরুষ একটি হিন্দি ছড়া আবৃত্তির মাধ্যমে গোল হয়ে নৃত্য করছেন এমন দৃশ্যের একটি ভিডিও প্রচার করে এটিকেও বাংলাদেশের সরকারের নতুন শিক্ষা কারিকুলামের জন্য শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের দৃশ্য বলে দাবি করা হয়েছে। 

Screenshot: Facebook

আমরা এই ভিডিও নিয়ে দীর্ঘ অনুসন্ধান করেছি, পৌঁছানোর চেষ্টা করেছি ভিডিওটির মূল সূত্রে। এই ভিডিও গেল কয়েক বছরে ভারত এবং পাকিস্তানে প্রচার হয়ে আসতে দেখা গেছে। আমরা এ বিষয়ে কথা বলেছি ভারত ও পাকিস্তানের একাধিক ফ্যাক্টচেকারের সাথে। পাকিস্তানের একজন ফ্যাক্টচেকার আমাদের বলেছেন, তারা নিশ্চিত যে এটা পাকিস্তানের কোনো দৃশ্য নয়৷ 

ভিডিওটি প্রথম ছড়াতে শুরু করে ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে, ভারতের হায়দারাবাদ ভিত্তিক কিছু ফেসবুক পেজ থেকে। ভিডিওতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা ‘মাম্মি কি রুটি গোল গোল‘ নামে যে ছড়াটি আবৃত্তি করছেন সেটি ভারতে বহুল প্রচলিত একটি শিশু ছড়া হলেও এটি পাঠ্যবইয়ে অন্তর্ভূক্ত নেই বলে ভারতের একজন ফ্যাক্টচেকার রিউমর স্ক্যানারকে জানিয়েছেন। আমরা ভিডিওর মূল সূত্র নিশ্চিত হতে না পারলেও এটা নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, এটি বাংলাদেশের ভিডিও নয়৷ 

নতুন শিক্ষা কারিকুলামের বিষয়ে ভিন্ন দেশ এবং পুরোনো ঘটনার ভিডিওগুলো অল্প সময়ের ব্যবধানে ফেসবুকে লক্ষ লক্ষ মানুষের পৌঁছে যেতে দেখেছি আমরা৷ এত বিশাল সংখ্যক মানুষের কাছে এই ভুল তথ্যগুলো পৌঁছানোর ফলে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে অভিভাবক এবং সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে যেমন ভুল বার্তা গিয়েছে তেমনি শিক্ষা সংশ্লিষ্ট প্রশাসন তথা সরকারকেও পড়তে হয়েছে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে। আমরা এই বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে ওয়েবসাইটে ফ্যাক্টচেক প্রকাশের পাশাপাশি এ বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুক, ইউটিউব, এক্স, টিকটক) ফ্যাক্টচেক ভিডিও-ও প্রকাশ করেছি। আমাদের ধারণা ছিল, এর মাধ্যমে আরও অধিক মানুষের কাছে সঠিক তথ্যটি পৌঁছে দেওয়া সম্ভব। এই প্রতিবেদন যখন প্রকাশিত হচ্ছে, তখন অবধি রিউমর স্ক্যানারের নিজস্ব পেজ এবং সংশ্লিষ্ট অ্যাকাউন্টগুলো থেকে প্রায় ২২ লক্ষ বা ২.২ মিলিয়ন মানুষের কাছে পৌঁছেছে এই ভিডিওগুলো। সোশাল মিডিয়া মনিটরিং টুলগুলোর ডাটা বিশ্লেষণ করে আমাদের অনুমান, এই ভিডিওগুলো আরো অন্তত ২ মিলিয়ন মানুষের কাছে পৌঁছেছে। 

এই কাজের তাৎক্ষণিক স্বীকৃতিও মেলেছে। গেল ০৯ ডিসেম্বর নতুন শিক্ষাক্রমের বিষয়ে ইন্টারনেটে ছড়ানো গুজব প্রতিরোধে ভূমিকা রাখায় ‘পজেটিভ ইনফ্লুয়েন্সার অ্যাওয়ার্ড’-এ ভূষিত হয়েছে রিউমর স্ক্যানার। সেদিন লিডসউইন লিমিটেডের আয়োজনে ঢাকায় অনুষ্ঠিত স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ এবং চতুর্থ শিল্প বিপ্লব উপযোগী বিশ্ব নাগরিক গঠনে নতুন শিক্ষা কারিকুলাম বাস্তবায়ন শীর্ষক সম্মেলন- ২০২৩ এ রিউমর স্ক্যানারের পাঁচ সদস্যের হাতে সম্মাননা স্মারক ও ক্রেস্ট তুলে দেন জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সদস্য (শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান এবং নতুন শিক্ষাক্রম প্রণয়নকাজের সঙ্গে যুক্ত থাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. এম তারিক আহসান। দেশব্যাপী শিক্ষা ব্যবস্থাপনাকে ডিজিটালাইজড করতে কাজ করছে প্রযুক্তি বিষয়ক ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান লিডসউইন লিমিটেডের এডুম্যান প্রজেক্ট।

Image: Rumor Scanner 

রিউমর স্ক্যানার টিম বিশ্বাস করে, নতুন শিক্ষা কারিকুলামের বিষয়ে ছড়িয়ে পড়া ভুল তথ্য প্রতিরোধ এবং তার স্বীকৃতি পাওয়া এই কাজ চলমান রাখার বিষয়ে দায়বদ্ধতার জায়গা তৈরি করে দিয়েছে। সে দায়িত্ব পালনে রিউমর স্ক্যানার টিম কাজ করে যাবে। সকলের সম্মিলিত চেষ্টা এবং আন্তরিকতার মাধ্যমে শিক্ষা ক্ষেত্রের বিষয়ে ছড়িয়ে পড়া ভুল তথ্য প্রতিরোধ করা সম্ভব বলে মনে করি আমরা।

এক নজরে নতুন শিক্ষা কারিকুলামের বিষয়ে এখন অবধি প্রকাশিত ফ্যাক্টচেক 

১. ‘টিলিং টিলিং সাইকেল চলাই’ ভিডিওটি নতুন কারিকুলামের অধীন শিক্ষক প্রশিক্ষণের অংশ নয় 
২. শিক্ষা কারিকুলামের নয়, ব্যাঙের ছড়ার নৃত্য প্রশিক্ষণের ভিডিওটি কাব স্কাউটের ট্রেনিংয়ের দৃশ্য 
৩. নতুন শিক্ষা কারিকুলামের নয়, ঝিংগা লালা হু শীর্ষক ভিডিওটি কাব স্কাউটের প্রশিক্ষণের দৃশ্য 
৪. নতুন শিক্ষা কারিকুলামের নয়, প্যাঁক প্যাঁক শীর্ষক শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের ভিডিওটি ২০২২ সালের 
৫. নতুন শিক্ষা কারিকুলামের প্রশিক্ষণ দাবিতে হিন্দি ছড়া আবৃত্তি করে শিক্ষকদের গোল নৃত্যের ভিডিওটি বাংলাদেশের নয় 

ফ্যাক্টচেক ভিডিও 

আমেরিকান সংগীত তারকা কোয়াভোর ছবি বিকৃত করে ওবায়দুল কাদেরের নামে প্রচার

0

সম্প্রতি, সড়ক পরিবহন এবং সেতুমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ছবি দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ছবি প্রচার করা হচ্ছে।

ওবায়দুল কাদের

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নামে প্রচারিত এই ছবিটি আসল নয় বরং ইন্টারনেট থেকে আমেরিকান সংগীত তারকা কোয়াভো এর একটি ছবি সংগ্রহ করে তা সম্পাদনার মাধ্যমে সেখানে কোয়াভো এর মাথার স্থলে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের মাথা বসিয়ে উক্ত ছবিটি তৈরি করা হয়েছে।

আলোচিত দাবির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য ছবিটি রিভার্স ইমেজ সার্চ করে luvfafits নামক ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে গত ৮ অক্টোবরে প্রকাশিত একটি ছবি খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ছবির সাথে উক্ত আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিটির হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Image Comparison: Rumor Scanner

উক্ত পোস্টের বিস্তারিত বিবরণী থেকে জানা যায়, ছবিতে থাকা ব্যক্তি হচ্ছেন আমেরিকান সংগীত তারকা কোয়াভো।

পরবর্তীতে Donda’s Place নামক এক্স অ্যাকাউন্টে (সাবেক টুইটার) ২০২১ সালের ২৩ নভেম্বরে প্রকাশিত পোস্ট থেকেও একই ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।

মূলত, আমেরিকান সংগীত তারকা কোয়াভো’র একটি ছবি ২০২১ সাল থেকে ইন্টারনেটে বিদ্যমান। সম্প্রতি সেই ছবিটিতে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে কোয়াভোর মুখমণ্ডলের স্থলে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের মুখমণ্ডল যুক্ত করে প্রচার করা হচ্ছে।

সুতরাং, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নামে ফেসবুকে প্রচারিত এই ছবিটি এডিটেড বা বিকৃত।

তথ্যসূত্র

আসন্ন পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপ ২০২৪ এর দলগুলোর এখনও গ্রুপ বিন্যাস হয়নি 

0

সম্প্রতি, আসন্ন টি২০ বিশ্বকাপ ২০২৪ উপলক্ষে অংশগ্রহণকারী দলগুলোর গ্রুপ বিন্যাসের তথ্য দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি তালিকা প্রচার করা হয়েছে।

বিশ্বকাপ ২০২৪

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আসন্ন টি২০ বিশ্বকাপ ২০২৪ উপলক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) এখন পর্যন্ত অংশগ্রহণকারী দলগুলোর গ্রুপ বিন্যাস প্রকাশ করেনি বরং নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যসূত্র ছাড়াই ভিত্তিহীনভাবে গ্রুপ বিন্যাসের তালিকাটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত দাবির পোস্টগুলো পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার। পোস্টগুলোতে বলা হয়, আসন্ন টি২০ বিশ্বকাপে সবচেয়ে কঠিন গ্রুপে বাংলাদেশ এবং সবচেয়ে সহজ গ্রুপে রয়েছে শ্রীলঙ্কা। সেখানে গ্রুপ এ তে ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, বাংলাদেশ, স্কটল্যান্ড এবং ওমান, গ্রুপ বি তে পাকিস্তান, ভারত, আফগানিস্তান, পাপুয়া নিউগিনি এবং নেপাল, গ্রুপ সি তে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, অস্ট্রেলিয়া, সাউথ আফ্রিকা, কানাডা এবং নামিবিয়া, গ্রুপ ডি তে শ্রীলঙ্কা, আয়ারল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, যুক্তরাষ্ট্র এবং উগান্ডা রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।

বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধানে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) এর অফিশিয়াল ওয়েবসাইট, ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ এবং ভেরিফাইড টুইটার হ্যান্ডেল পর্যবেক্ষণ করে কোথাও আসন্ন টি২০ বিশ্বকাপ ২০২৪ এর গ্রুপ বিন্যাসের কোনো তালিকা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এছাড়া, আইসিসির ওয়েবসাইটে Men’s Events সেকশনে গিয়ে টি২০ বিশ্বকাপ নিয়ে প্রকাশিত সর্বশেষ ইভেন্টগুলো পর্যবেক্ষণ করে সেখানে এ সম্পর্কিত কোনো তথ্যের উল্লেখ পাওয়া যায়নি।

অর্থাৎ, উপরোক্ত বিষয়গুলো পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, আসন্ন টি২০ বিশ্বকাপের গ্রুপ বিন্যাস এখন পর্যন্ত প্রকাশিত হয়নি। 

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের টি২০ বিশ্বকাপের আয়োজনে যৌথভাবে রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। মোট ২০টি দল অংশগ্রহণ করবে এবারের টি২০ বিশ্বকাপে। দলগুলোকে ৪টি গ্রুপে ভাগ করা হবে। প্রত্যেক গ্রুপে থাকবে পাঁচটি করে দল। প্রতিটি গ্রুপ থেকে শীর্ষে থাকা দু’টি দল সুপার ৮ এর যোগ্যতা অর্জন করবে। এই দলগুলোকে আবারও দু’টি গ্রুপে ভাগ করা হবে। চারটি করে দল থাকবে এই দু’টি গ্রুপে। যেখান থেকে চারটি দল সেমিফাইনাল খেলবে। 

মূলত, আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিতব্য টি২০ বিশ্বকাপের গ্রুপ বিন্যাস হয়েছে দাবিতে ইন্টারনেটে বিশ্বকাপে অংশগ্রহণকারী দলগুলোর একটি তালিকা প্রচার করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) আসন্ন টি২০ বিশ্বকাপ ২০২৪ উপলক্ষে অংশগ্রহণকারী দলগুলোর  গ্রুপ বিন্যাস এখনও প্রকাশ করেনি। এছাড়া আলোচিত দাবিতে প্রচারিত পোস্টগুলোতে কোনো তথ্যসূত্র উল্লেখ নেই। ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি’র ওয়েবসাইট বা অন্য কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে উক্ত দাবিটির সত্যতা পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, আসন্ন টি২০ বিশ্বকাপ ২০২৪ উপলক্ষে অংশগ্রহণকারী দলগুলোর গ্রুপ বিন্যাস প্রকাশিত হয়েছে দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

  • International Cricket Council: Facebook
  • International Cricket Council: Website
  • International Cricket Council: Twitter
  • International Cricket Council: Website 
  • Rumor Scanner’s Own Analysis

তামিম ইকবালকে বিশ্বের সেরা ওপেনার বলেননি টম মুডি

0

সম্প্রতি, কলকাতা নাইট রাইডার্সের কোচ টম মুডি “গৌতম গম্ভীর এবং সুনীল নারীন আমাকে খুব করে রিকোয়েস্ট করেছে তামিম ইকবালকে দলে ভেড়ানোর জন্য, আমরা চেষ্টা করছি তামিমকে দলে নিতে, তামিম ইকবাল বাংলাদেশের ও পৃথিবীর সেরা ওপেনার” শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে একটি ফটোকার্ড ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়।

তামিম

ফেসবুকে প্রচারিত এমনকিছু পোস্ট দেখুন, এখানে(আর্কাইভ),  এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ)

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, আইপিএল ফ্রাঞ্চাইজি কলকাতা নাইট রাইডার্সের কোচ টম মুডি ক্রিকেটার তামিম ইকবালকে নিয়ে আলোচিত মন্তব্যটি করেননি বরং Sports Diversity নামের একটি ক্রীড়া বিষয়ক ফেসবুক পেজের ফটোকার্ড এডিট করে আলোচিত দাবি সম্বলিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

আলোচিত দাবির বিষয়ে অনুসন্ধানে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম কিংবা নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্র থেকে তামিম ইকবালের বিষয়ে কলকাতা নাইট রাইডার্সের কোচ টম মুডির আলোচিত মন্তব্যটির সত্যতা পায়নি রিউমর স্ক্যানার টিম।

তবে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে, ভারতীয় সংবাদমাধ্যম The Times of India এর ওয়েবসাইটে ২০২০ সালের ৪ এপ্রিল “Rohit Sharma, David Warner world’s best T20 openers: Tom Moody” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Source: The Times of India

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, টম মুডি বিশ্বের সেরা টি টুয়েন্টি ওপেনার হিসেবে ভারতীয় ক্রিকেটার রোহিত শর্মা এবং অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার ডেভিড ওয়ার্নারকে বেছে নিয়েছেন।

পরবর্তীতে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত ফটোকার্ডে থাকা Sports Diversity শীর্ষক নামের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে উক্ত নামের একটি ফেসবুক পেজ খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত পেজ পর্যবেক্ষণে পেজটিতে গত ২৮ নভেম্বর প্রকাশিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত পোস্টে সংযুক্ত ফটোকার্ডের সাথে আলোচিত ফটোকার্ডের অনেক মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Source: Sports Diversity Facebook Page

উক্ত ফটোকার্ডে কলকাতা নাইট রাইডার্সের কোচ টম মুডির উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, “আমি মনে করি রাসেল এবং নারিনকে ধরে রাখার ক্ষেত্রে গম্ভীর বেশ গুরুত্বপূর্ণ ছিল। সে তাদের বোঝে, সে তাদের সাথে খেলেছে, সে তাদের ক্যাপ্টেন এবং সে তাদের থেকে সেরাটা বের করতে সক্ষম হবে।” 

Comparison By Rumor Scanner

অর্থাৎ, উক্ত ফটোকার্ডে টম মুডির মন্তব্যের অংশ এডিট বা সম্পাদনা করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

মূলত, আইপিএল ২০২৪ এর আসরে কলকাতা নাইট রাইডার্স আন্দ্রে রাসেল এবং সুনীল নারিনকে ধরে রাখার পিছনে গৌতম গম্ভীরের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল বলে জানান কোচ টম মুডি। পরবর্তীতে টম মুডির উক্ত বক্তব্য সম্বলিত একটি ফটোকার্ড Sports Diversity নামের ক্রীড়াবিষয়ক একটি পেজে প্রকাশিত হয়। সেই ফটোকার্ডে টম মুডির বক্তব্যের অংশ ডিজিটাল প্রযুক্তির সাহায্যে সম্পাদনা করে তামিম ইকবালের নাম জড়িয়ে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, পূর্বে তামিম ইকবালের নামে ইন্টারনেটে ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে পড়লে সে বিষয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, কলকাতা নাইট রাইডার্সের কোচ তামিম ইকবালকে বাংলাদেশ ও বিশ্বের সেরা ওপেনার বলেছেন শীর্ষক দাবিতে  ইন্টারনেটে প্রচারিত ফটোকার্ডটি এডিটেড বা বিকৃত এবং উক্ত দাবিতে প্রচারিত তথ্যটিও মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ইসরায়েল-ফিলিস্তিন ইস্যুতে বিএনপি’র অবস্থান নিয়ে তারেক রহমানের নামে প্রচারিত বক্তব্যটি এআই দিয়ে তৈরি

সম্প্রতি, ফিলিস্তিন নয় যুক্তরাষ্ট্রকে খুশি রাখতে ইসরাইলকে সাপোর্ট করছে বিএনপি– শীর্ষক ক্যাপশনে তারেক রহমানের বক্তব্য দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। 

৪৯ সেকেন্ডের ভিডিওটিতে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে বলতে শোনা যায়, প্রিয় দেশবাসী! আসসালামু আলাইকুম। আজ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনীতি এক গভীর সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এমতাবস্থায় অনেকেই জানতে চাচ্ছেন, ইসরায়েল- হামাস ইস্যুতে বিএনপি’র অবস্থান কী? বলে রাখা ভালো বাংলাদেশের রাজনীতি খুবই জটিল। ক্ষমতায় আওয়ামী লীগ। তারা সাপোর্ট করছে ফিলিস্তিনকে। এখন যদি আমরা ফিলিস্তিনকে সাপোর্ট করি তাহলে যুক্তরাষ্ট্র আমাদের উপর বেজার হবে, নষ্ট হবে আমাদের সুসম্পর্ক। তাই চুপচাপ থাকবো। সুযোগ বুঝে সিদ্ধান্ত নেব। কাকে সাপোর্ট করলে ফায়দা আমাদের। সবাইকে ধন্যবাদ!  বাংলাদেশ জিন্দাবাদ। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল জিন্দাবাদ। 

ইসরায়েল

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুলন্ধানে দেখা যায়, ইসরায়েল-ফিলিস্তিন ইস্যুতে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যুক্তরাষ্ট্রকে খুশি রাখতে ইসরায়েলকে সাপোর্ট করছে বিএনপি শীর্ষক কোনো মন্তব্য করেননি নয় বরং তারেক রহমানের ভিন্ন ঘটনার বক্তব্যের ভিডিওর স্ক্রিনশট নিয়ে তাতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) সাহায্যে আলোচিত দাবি সম্বলিত অডিও যুক্ত করে উক্ত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে। 

শুরুতে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এমন কোনো বক্তব্য দিয়েছেন কি না সে বিষয়ে অনুসন্ধান করে রিউমর স্ক্যানার টিম। অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে মূলধারার গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমের কোনো বিশ্বস্ত সূত্র হতে উক্ত বক্তব্য সংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

এছাড়া, তারেক রহমান দেশবাসী ও রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে দেওয়া বক্তব্যের ভিডিও তাঁর ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে পোস্ট করা হয়ে থাকে। 

তবে, আলোচিত ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে তারেক রহমানের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ পর্যবেক্ষণ করে এ সংক্রান্ত কোনো পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

পাশাপাশি, বিএনপি’র মিডিয়া সেল এবং বিএনপি’র অফিসিয়াল ফেসবুক পেজেও উক্ত ভিডিও সংশ্লিষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে বক্তব্যটির বিষয়ে অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে তারেক রহমানের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে গত ২৫ জুলাই “লন্ডন হতে সরাসরি। ২৫ জুলাই ২০২৩, মঙ্গলবার ২৭ জুলাই ঢাকার মহাসমাবেশ সফল করার আহবান জানিয়ে দেশবাসীর উদ্দেশ্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বক্তব্য”- শীর্ষক ক্যাপশনে প্রকাশিত একটি ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওটির পোশাক এবং ব্যাকগ্রাউন্ডের মিল খুঁজে (আর্কাইভ) পাওয়া যায়। তবে, এই ভিডিওতে তারেক রহমান ইসরায়েল-ফিলিস্তিন নিয়ে আলোচিত ভিডিওটিতে থাকা বক্তব্যটি দেননি। 

Comparison Image By Rumor Scanner

এতে প্রতীয়মান হয় যে গত ২৫ জুলাই তারেক রহমানের দেওয়া ভিডিও বক্তব্যটির কোনো একটি অংশ থেকে স্ক্রিনশট নিয়ে আলোচিত ভিডিওটিতে ব্যবহার করা হয়েছে। 

আলোচিত ভিডিওতে থাকা অসংগতি 

৪৯ সেকেন্ডের আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ভিডিওতে থাকা কণ্ঠের সাথে তারেক রহমানের কণ্ঠের মিল নেই এবং কথা বলার সময়ও কণ্ঠস্বরের কোনো পরিবর্তন নেই। 

এছাড়া, চোখের নড়াচড়া ও কথা বলার সময় ঠোঁটর নড়াচড়ার মধ্যেও অসংগতি রয়েছে। 

মূলত, গত ২৭ জুলাই বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশবাসী ও নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে ঢাকার মহাসমাবেশ সফল করার আহবান জানিয়ে একটি বক্তব্য দেন। সেই বক্তব্য তাঁর ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে পোস্ট করা হয়। পরবর্তীতে সেই ভিডিও থেকে স্ক্রিনশট নিয়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে তাতে ফিলিস্তিন নয় যুক্তরাষ্ট্রকে খুশি রাখতে ইসরাইলকে সাপোর্ট করছে বিএনপি শীর্ষক অডিও যুক্ত করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত ০৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ইসরায়েলে ‘অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড’ নামে হামলা শুরু করে। এই হামলার প্রেক্ষিতে ইসরায়েলও হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজা উপত্যকায় পাল্টা হামলা চালায়। পরবর্তীতে বিভিন্ন দেশের রাজনৈতিক ব্যক্তিরা উক্ত ইস্যুতে নিজেদের অবস্থান নিয়ে বক্তব্য দেয় এবং সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়।

সুতরাং, ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের ঘটনায় বিএনপি’র অবস্থান নিয়ে তারেক রহমানের বক্তব্যের দৃশ্য দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে; যা বিকৃত বা এডিটেড। 

তথ্যসূত্র