“জাপান এ মৃত ব্যাক্তিদের কবরে বসানো হয়েছে কিউ আর স্ক্যানিং কোড যেটা স্ক্যান করলে জানতে পারবেন মৃত ব্যাক্তি সম্পর্কিত বেঁচে থাকতে সময়ের সকল তথ্য” শীর্ষক শিরোনামে কিউ আর কোড সম্বলিত দুইটি স্তম্ভের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে প্রচার করা হচ্ছে।
ভাইরাল কিছু ফেসবুক পোস্টের আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, এটি জাপানে মৃত ব্যক্তিদের কবরে বসানো কিউ আর কোড নয় বরং ছবিগুলো ২০১৫ সালে দক্ষিণ-পশ্চিম চীনের চংকিং শহরের একটি থিম পার্ক থেকে তোলা।
রিভার্স ইমেজ সার্চ পদ্ধতি ব্যবহার করে চীনের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সংবাদ সংস্থা চায়না নিউজ সার্ভিসের ইংরেজি ভার্সন ECNS এর ওয়েবসাইটে ২০১৫ সালের ০১ এপ্রিলে ‘Online memorial dedicated to WWII victims’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে মূল ছবিটির অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়।
এছাড়াও একই ছবি China Daily এবং China.org.cn ওয়েবসাইটেও খুঁজে পাওয়া যায়।
পাশাপাশি OCR টুলসের সহায়তায় স্তম্ভের উপরে থাকা লেখাটি শনাক্ত করে অনুবাদের মাধ্যমে দেখা যায় সেখানে চীনা ভাষায় “নানজিং গণহত্যার শিকার” লেখা রয়েছে।
মূলত, ২০১৫ সালে দক্ষিণ-পশ্চিম চীনের চংকিং শহরে ফরেনার্স স্ট্রিট নামে একটি থিম পার্কে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় চীনে জাপানি সেনাদের দ্বারা সংঘটিত নানজিং গণহত্যা এবং চংকিং বোমা হামলায় মৃত ব্যক্তিদের জীবন সম্পর্কে তথ্য দিতে সমাধির মতো দেখতে একপ্রকার স্তম্ভের উপর কিউআর কোডগুলো বসানো হয়। পার্কে আসা দর্শনার্থীরা সেসব কিউআর কোড স্ক্যান করে ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
উল্লেখ্য, মূল ছবিটি বিকৃত করে প্রচারের ফলে ছবিটি কবরের বা সমাধির মত দেখতে মনে হলেও এটি প্রকৃতপক্ষে কোন কবর নয় বরং এটি একটি স্মৃতি স্তম্ভ।
অন্যদিকে, ছড়িয়ে পড়া পোস্টগুলোতে সংযুক্ত দ্বিতীয় সমাধিস্তম্ভের ছবিটি বিকৃত করা। রিভার্স ইমেজ সার্চ পদ্ধতি ব্যবহার করে Shutterstock, Depositphotos নামক ফটো স্টক ওয়েবসাইটে মূল ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।
ছবিটিকে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রতীকী ছবির পাশাপাশি ইন্টারনেটে মিমস তৈরিতেও ব্যবহার করতে দেখা যায়।
তাছাড়া, জাপানের কবরস্থান গুলোতে QR কোড বসানো হয়েছে এমন দাবির পক্ষে কোন নির্ভরযোগ্য প্রমাণ ইন্টারনেটে খুঁজে পাওয়া যায় নি।
একই বিষয়ে গত ১৭ ই সেপ্টেম্বরে ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান ফ্যাক্টওয়াচ ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
অর্থাৎ, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নানজিং গণহত্যা এবং চংকিং বোমা হামলায় নিহতদের জীবন সম্পর্কে তথ্য প্রদানে QR কোড সম্বলিত একটি স্তম্ভের ছবিকে জাপানের কবরস্থানে কিউ আর কোড বসানো হয়েছে দাবিতে সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং মিথ্যা।
[su_box title=”True or False” box_color=”#f30404″ radius=”0″]
- Claim Review: জাপান এ মৃত ব্যাক্তিদের কবরে বসানো হয়েছে কিউ আর স্ক্যানিং কোড
- Claimed By: Facebook Posts
- Fact Check: False
[/su_box]
তথ্যসূত্র
- ECNS: http://www.ecns.cn/hd/2015-04-01/detail-ifytxtex5133454.shtml#
- China Daily: https://www.chinadaily.com.cn/china/2015-04/01/content_19966811_2.htm
- China Org: http://www.china.org.cn/china/2015-04/01/content_35216560.htm
- The Rape of Nanking: https://www.history.com/this-day-in-history/the-rape-of-nanking
- Chongqing Bombing: https://ww2db.com/battle_spec.php?battle_id=281
- Shutterstock: https://www.shutterstock.com/image-photo/blank-gravestone-other-graves-trees-background-1117496669
- Depositphotos: https://depositphotos.com/210920572/stock-photo-blank-gravestone-other-graves-trees.html
- NY Post: https://nypost.com/2019/04/06/this-iowa-mans-obituary-is-comedy-gold/