সম্প্রতি, ইন্না-লিল্লাহ রোজা ও তারাবী নিষিদ্ধ ভারতে, মাসজিদে ডুকে গুলি করে হত্যা- শীর্ষক থাম্বনেইলে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে।

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভারতে রোজা এবং তারাবী নিষিদ্ধ করা হয়নি এবং সম্প্রতি ভারতে মসজিদে ঢুকে গুলি করে হত্যা করার ঘটনাও ঘটেনি বরং ভিন্ন ঘটনার ভিডিওর সাথে চটকদার থাম্বনেইল ব্যবহার করে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।
অনুসন্ধানের শুরুতে আস-সুন্নাহ টিভি নামক ইউটিউব চ্যানেলে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে গণ অধিকার পরিষদের একাংশের নেতা তারেক রহমানকে কথা বলতে দেখা যায়।
পরবর্তীতে অনুসন্ধানে তারেক রহমান এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ০৯ মার্চ “এ কেমন আচরণ ভার’তীয় পুলিশের, নামাজ রত অবস্থায় লা’থি মা’রছে মুস’ল্লিদে’র” (আর্কাইভ) শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়।
উক্ত ভিডিওটির সাথে একটি অংশের সাথে আলোচিত ভিডিওটির হুবহু মিল রয়েছে।

উক্ত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে জানা যায়, ভারতে নামাজরত মুসুল্লিদের ওপর পুলিশের হামলার ঘটনার সমালোচনা করে তারেক রহমান এই ভিডিওটি প্রচার করেন। ভিডিওর কোথাও তিনি ভারতে তারাবীর নামাজ ও রোজা রাখা নিষিদ্ধ কিংবা সাম্প্রতিক সময়ের মসজিদে ঢুকে গুলি করে হত্যার কোনো তথ্য প্রদান করেননি।
পরবর্তীতে নামাজরত মুসুল্লিদের ওপর হামলার বিষয়ে অনুসন্ধানে করে বিবিসি এর ওয়েবসাইটে গত ০৯ মার্চ “নামাজিদের লাথি মেরে সাসপেন্ড দিল্লির এক পুলিশ” শীর্ষক শিরোনামে একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়।
উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ০৮ মার্চ ভারতের দিল্লির ইন্দ্রোলোক এলাকায় রাস্তায় জুম্মার নামাজ পড়তে থাকা মুসুল্লিদের সরাতে লাথি দেন এক পুলিশ সাব-ইন্সপেক্টর৷ পরবর্তীতে এই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এই পুলিশ কর্মকর্তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়।
এছাড়া, Nice Tv নামক ইউটিউব চ্যানেলে প্রচারিত ভিডিওতেও ০৮ মার্চের ঘটনা উল্লেখ করে আলোচিত দাবি প্রচার করা হয়। উক্ত ভিডিওতেও দাবির স্বপক্ষে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি।
অর্থাৎ, ভারতে নামাজরত মুসুল্লিদের ওপর হামলার ঘটনাটি গত ০৮ মার্চের। যা রমজান শুরুর আগের ঘটনা।
পরবর্তীতে ভারতে রোজা ও তারাবীর নামাজের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে কিনা এবং সম্প্রতি মসজিদে ঢুকে মুসল্লিকে গুলি করে হত্যার ঘটনা ঘটেছে কিনা বিষয়গুলো নিয়ে অনুসন্ধানে গণমাধ্যম ও বিশ্বস্ত সূত্রে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
মূলত, গত ০৮ মার্চ ভারতের দিল্লির ইন্দ্রোলোক এলাকায় রাস্তায় জুম্মার নামাজ পড়তে থাকা মুসুল্লিদের সরাতে লাথি দেন এক পুলিশ সাব-ইন্সপেক্টর। পরবর্তীতে এই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এই পুলিশ কর্মকর্তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়। উক্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে সমালোচনা করে ভিডিও প্রকাশ করেন গণঅধিকার পরিষদের একাংশের নেতা তারেক রহমান। সেই ভিডিওর সাথে চটকদার থাম্বনেইল ব্যবহার করে ভারতে তারাবী নামাজ পড়া ও রোজা রাখা নিষিদ্ধ এবং মসজিদ ঢুকে মুসল্লিকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রচার করা হয়েছে।
সুতরাং, ভারতে রোজা ও তারাবী নিষিদ্ধ এবং মসজিদে ঢুকে মুসল্লিকে গুলি করে হত্যা করার দাবিগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা।
তথ্যসূত্র
- Tarek’s Time- এ কেমন আচরণ ভার’তীয় পুলিশের, নামাজ রত অবস্থায় লা’থি মা’রছে মুস’ল্লিদে’র
- BBC- নামাজিদের লাথি মেরে সাসপেন্ড দিল্লির এক পুলিশ
- Rumor Scanner’s Own Analysis