সম্প্রতি, “জলদস্যুদের হাত থেকে জাহাজ মুক্ত, ১৭ ক্রু উদ্ধার”- শীর্ষক শিরোনামে দেশীয় গণমাধ্যম যমুনা টেলিভিশন, সময় টিভি, আরটিভি ও চ্যানেল ২৪ এর ফটোকার্ড ডিজাইন সম্বলিত একাধিক ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।
দাবি করা হচ্ছে, গত ১২ মার্চ ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়া কয়লাবাহী বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ হতে নাবিকদের উদ্ধার করেছে ভারতীয় নৌবাহিনী।
![এমভি আবদুল্লাহ](https://rumorscanner.com/wp-content/uploads/2024/03/1-3-1-1024x1024.jpg)
আরটিভি’র ফটোকার্ড যুক্ত করে ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
যমুনা টেলিভিশনের ফটোকার্ড যুক্ত করে ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
সময় টিভি’র ফটোকার্ড যুক্ত করে ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
চ্যানেল ২৪ এর ফটোকার্ড যুক্ত করে ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
![](https://rumorscanner.com/wp-content/uploads/2024/03/1000089799-1024x1024.jpg)
আরটিভি’র ফটোকার্ড যুক্ত করে টিকটকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
যমুনা টেলিভিশনের ফটোকার্ড যুক্ত করে টিকটকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
সময় টিভি’র ফটোকার্ড যুক্ত করে টিকটকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
চ্যানেল ২৪ এর ফটোকার্ড যুক্ত করে টিকটকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভারতীয় নৌবাহিনী কর্তৃক ১৭ জন ক্রু সহ উদ্ধার হওয়া জাহাজটি বাংলাদেশের জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ নয় বরং ভারতীয় নৌবাহিনী কর্তৃক উদ্ধার হওয়া জাহাজটি মাল্টার পতাকাবাহী জাহাজ ‘এমভি রুয়েন’।
অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত পোস্টগুলোতে ব্যবহৃত ফটোকার্ড পাঁচটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। গণমাধ্যমগুলোর সূত্র ধরে ফেসবুকে ম্যানুয়ালি অনুসন্ধানের মাধ্যমে গণমাধ্যমগুলোর ফেসবুক পেজে (আরটিভি, যমুনা টেলিভিশন, সময় টিভি, চ্যানেল ২৪) আলোচিত ফটোকার্ড গুলো খুঁজে পাওয়া যায়। (আর্কাইভ-১,২,৩,৪,)
উক্ত গণমাধ্যমগুলোর ফেসবুক পেজে ফটোকার্ড নিয়ে প্রচারিত পোস্টের সাথে এসম্পর্কিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। (আরটিভি, যমুনা টেলিভিশন, সময় টিভি, চ্যানেল ২৪)
প্রতিবেদনগুলো থেকে জানা যায়, সোমালিয়ার জলদস্যুদের কাছে থেকে ১৭ নাবিকসহ ‘এমভি রুয়েন’ নামের মাল্টার পতাকাবাহী একটি বাণিজ্যিক জাহাজ উদ্ধার করেছে ভারতীয় নৌবাহিনী। এ সময় জাহাজটিতে থাকা ৩৫ জলদস্যুর সবাই আত্মসমর্পণ করেছেন। গত ১৬ মার্চ এক এক্স বার্তায় ভারতীয় নৌবাহিনী ভারতীয় উপকূল থেকে ওই জাহাজটি উদ্ধারের তথ্য জানিয়েছে।
এছাড়া একই বিষয়ে শিরোনামে ভারতের নৌবাহিনী কোন দেশের জাহাজ উদ্ধার করেছে এ কথা উল্লেখ না করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে আরও কিছু গণমাধ্যম।
প্রতিবেদন দেখুন- জাগো নিউজ, এবি নিউজ, সারা বাংলা, ডেইলি ম্যাসেঞ্জার এবং বাংলাদেশ মোমেন্টস্।
প্রতিবেদনগুলোর শিরোনামে জাহাজের নাম বা কোন দেশের জাহাজ তা উল্লেখ না করায় বিষয়টি নিয়ে নেটিজেনদের মনে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। বিস্তারিত প্রতিবেদন না পড়েই তারা বিষয়টিকে বাংলাদেশের মনে করে বিভিন্ন মন্তব্য করেছেন।
![](https://rumorscanner.com/wp-content/uploads/2024/03/1000088821-1-1024x787.jpg)
পরবর্তীতে বিষয়টি অধিকতর নিশ্চিতের জন্য কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিবিসি এর ওয়েবসাইটে গত ১৭ মার্চ “তিন মাস ধরে ছিনতাই করা জাহাজটি নিয়ে সাগরে ঘুরে বেড়াতো জলদস্যুরা”- শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়।
উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ১৬ মার্চ বিশেষ কমান্ডো অভিযান চালিয়ে সোমালি জলদস্যুদের ছিনতাই করা মাল্টার একটি মালবাহী জাহাজ জব্দ করেছে ভারতীয় নৌ বাহিনী। এ সময় ১৭ জন নাবিককে উদ্ধার করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ (সাবেক টুইটার) নিজেদের পেইজে এ নিয়ে একটি পোস্ট দিয়েছে ভারতীয় নৌবাহিনী।
একই তথ্যে সংবাদ প্রকাশ করেছে ডয়েচে ভেলে এবং হিন্দুস্তান টাইমস।
অর্থাৎ, উদ্ধারকৃত জাহাজটি বাংলাদেশের নয়। তবে এসম্পর্কিত খবরের শিরোনামে জাহাজের নাম বা দেশের নাম না উল্লেখ করায় ঘটনাটি বাংলাদেশের জাহাজ ভেবে নেটিজেনরা বিভ্রান্ত হয়েছেন।
মূলত, গত ১২ মার্চ মোজম্বিকের রাজধানী মাপুটো থেকে ৫৫ হাজার টন কয়লা নিয়ে আরব আমিরাতের উদ্দেশ্যে যাত্রাকালে ভারত মহাসাগরে ২৩ নাবিকসহ বাংলাদেশি পণ্যবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহকে অপহরণ করে সোমালিয়ার জলদস্যুরা। এর মাঝে গত ১৬ মার্চ ভারতীয় নৌবাহিনী বিশেষ কমান্ডো অভিযান চালিয়ে সোমালি জলদস্যুদের ছিনতাই করা মাল্টার মালবাহী জাহাজ এমভি রুয়েন জব্দ করেছে ভারতীয় নৌ বাহিনী। এ সময় ১৭ জন নাবিককে উদ্ধার করা হয়েছে। উক্ত বিষয়ে বাংলাদেশের একাধিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের শিরোনামে জাহাজ বা দেশের নাম উল্লেখ না করে সংবাদ প্রচার করা হয়। পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীরা বিষয়টি বাংলাদেশের জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ মনে করে ফেসবুকে প্রচার করেন। প্রকৃতপক্ষে, এই প্রতিবেদনে প্রকাশ অবধি এমভি আবদুল্লাহ সোমালিয়ান জলদস্যুদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
উল্লেখ্য, পূর্বে ভারতের ঘটনা বাংলাদেশের দাবিতে প্রচারিত হলে তা নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কয়েকটি প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
সুতরাং, ভারতের নৌবাহিনীর মাল্টার মালবাহী জাহাজ এমভি রুয়েন উদ্ধারেরঘটনায় বাংলাদেশে জাহাজ বা দেশের নাম উল্লেখ না করে ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।
তথ্যসূত্র
- Rtv- Facebook Post
- Somoy Tv- Facebook Post
- Jamuna Television- Facebook Post
- Channel 24- Facebook Post
- BBC- তিন মাস ধরে ছিনতাই করা জাহাজটি নিয়ে সাগরে ঘুরে বেড়াতো জলদস্যুরা
- Rumor Scanner’s Own Analysis