Home Blog Page 513

আইসিসি সাকিবকে আজীবন নিষিদ্ধ ঘোষণা করেনি

সম্প্রতি, “কঠিন দুঃসংবাদ পেল সাকিব! সাকিবকে আজীবন ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ ঘোষণা আইসিসির” শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

আইসিসি

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে(আর্কাইভ)

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনকে হামলা চেষ্টা অভিযোগে আইসিসি সাকিব আল হাসানকে আজীবন নিষিদ্ধ ঘোষণা করেনি বরং ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার ভিডিও ফুটেজ ব্যবহার করে কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই অধিক ভিউ পাওয়ার আশায় চটকদার শিরোনাম এবং থাম্বনেইল ব্যবহার করে আলোচিত ভিডিওটি প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতেই আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ভিডিওতে আইসিসির সিইও ডেভিড রিচার্ডসন ও ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমনের পৃথক দুইটি ভিডিও ক্লিপের পাশাপাশি সাকিব আল হাসান ও সায়েদুল হক সুমনের কয়েকটি ছবি প্রদর্শিত হয়।

ভিডিওটির সংবাদ অংশে দাবি করা হয়, ‘ব্যারিস্টার সমুনকে মারতে যাওয়ার কারণে সাকিবকে আজীবন নিষিদ্ধ আইসিসির’। তবে ভিডিওতে এই দাবির পক্ষে কোনো সূত্র উল্লেখ করা হয়নি।

পরবর্তীতে আলোচিত ভিডিওটিতে থাকা ভিডিও ক্লিপগুলোর বিষয়ে আলাদাভাবে অনুসন্ধান চালায় রিউমর স্ক্যানার টিম।

ভিডিও যাচাই-১

প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে Curent Line এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০১৯ সালের ৪ মার্চ “ICC rejected BCCI threat letter …David Richardson talks following the ICC Board meetings” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ভিডিওর একটি অংশের সাথে আলোচিত ভিডিওটির আইসিসির সিইও ডেভিড রিচার্ডসনের বক্তব্যের ফুটেজ অংশের মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Comparison By Rumor Scanner

উক্ত ভিডিওতে ২০১৯ সালের মার্চে আইসিসির সিইও ডেভিড রিচার্ডসনকে আইসিসির বোর্ড সভার পর প্রেস কনফারেন্স বক্তব্য রাখতে দেখা যায়।

উক্ত ভিডিওর সূত্র ধরে Reuters এর ওয়েবসাইটে ২০১৯ সালের ৩ মার্চ “ICC assures members of robust security at World Cup” শীর্ষক শিরোনামের একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০১৯ সালের মার্চ মাসে অনুষ্ঠিত আইসিসির সভা শেষে এক প্রেস কনফারেন্সে আইসিসির সিইও ডেভিড রিচার্ডসন জানান, ২০১৯ বিশ্বকাপে নিরাপত্তার সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। নিরাপত্তার সকল বিষয় নিশ্চিত করবে স্বাগতিক ইংল্যান্ড। উক্ত প্রেস কনফারেন্সে ডেভিড রিচার্ডসনকে সাকিবকে নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে দেখা যায়নি।

অর্থাৎ, ভিডিওটি পুরোনো এবং ভিন্ন ঘটনার।

ভিডিও যাচাই-২

প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে Barrister Syed Sayedul Haque Suman এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ১৬ মার্চের একটি ভিডিও(আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ভিডিওর একটি অংশের সাথে আলোচিত ভিডিওটির সায়েদুল হক সুমনের ফুটেজ অংশের মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Comparison By Rumor Scanner

উক্ত ভিডিওতে ব্যারিস্টার সুমন দাবি করেন, সোনারগাঁ হোটেলে সাকিব আল হাসানের সাথে তার দেখা হলে সাকিব তাকে সর্বসম্মুখে মারতে আসেন।

এই ভিডিওতে সাকিবকে আইসিসির নিষিদ্ধ করার দাবির বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

এছাড়াও, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম কিংবা নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্র থেকে সাকিব আল হাসানের উপর আইসিসির আজীবন নিষেধাজ্ঞার দাবির সত্যতা জানা যায়নি।

তবে সাকিব আল হাসান কর্তৃক ব্যারিস্টার সুমনকে হামলা চেষ্টার দাবির অভিযোগের বিষয়ে অনুসন্ধানে

ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমনের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে ২০২৩ সালের ১৬ মার্চ প্রকাশিত এক ভিডিও বার্তায় তিনি সাকিব আল হাসানের দুবাইয়ে গিয়ে আলোচিত স্বর্ণ ব্যবসায়ী আরাভ খানের জুয়েলারি শপ উদ্ভোধন করতে যাওয়ার বিষয়ের সমালোচনা করে সাকিবের বিরুদ্ধে তার (সুমন) ওপর হামলার চেষ্টার অভিযোগ করেন। তবে উক্ত ঘটনায় সেসময় বা পরবর্তীতে ব্যারিস্টার সুমন কোনো ধরণের মামলা করেননি। এছাড়া এ বিষয়ে সেসময় ব্যারিস্টার সুমন কর্তৃক সাকিবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বিসিবি কিংবা আইসিসির কাছে কোনো অভিযোগ করতে দেখা যায়নি।

মূলত, ২০১৯ সালের মার্চ মাসে আইসিসির বোর্ড সভা শেষে প্রেস কনফারেন্সে বক্তব্য রাখেন আইসিসির সিইও ডেভিড রিচার্ডসন। সেসময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান ২০১৯ সালে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিতব্য বিশ্বকাপের নিরাপত্তায় সকল ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তার সে বক্তব্যের ভিডিওর অংশবিশেষের সাথে সাকিব আল হাসানের বিরুদ্ধে সায়েদুল হক সুমনের অভিযোগ প্রসঙ্গের পুরোনো ভিডিও যুক্ত করেই ব্যারিস্টার সুমনকে হামলা চেষ্টার অভিযোগে আইসিসি সাকিব আল হাসানকে আজীবন নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়। তবে অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত দাবিটি সঠিক নয়। সাকিব ও সুমনের পুরোনো দ্বন্দ্ব ইস্যুতে আইসিসি কোনো প্রতিক্রিয়াই জানায়নি এবং এ বিষয়ে সাকিবের বিরুদ্ধে সুমন আইসিসিতে অভিযোগ করেছেন এমন কোনো সংবাদই পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমনকে হামলা চেষ্টার অভিযোগে আইসিসি সাকিব আল হাসানকে আজীবন নিষিদ্ধ করেছে দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

যুক্তরাষ্ট্র ড. ইউনূসের ছবি সম্বলিত মুদ্রা প্রচলন করেনি

0

সম্প্রতি, “যুক্তরাষ্ট্র প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ছবি সম্বলিত মুদ্রা প্রচলন করেছেন” শীর্ষক দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। দাবিটি ড. ইউনূসের ছবি যুক্ত সোনালি রঙের একটি মুদ্রার ন্যায় একটি বস্তুর ছবিসহ প্রচার করা হচ্ছে।

ড. ইউনূসের ছবি

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ছবি সম্বলিত মুদ্রা প্রচলন করেনি বরং মার্কিন কংগ্রেস কর্তৃক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রদানকৃত ‘কংগ্রেসনাল গোল্ড মেডেল’ নকল করে তৈরি ব্রোঞ্জ মেডেলের একটি ছবি যুক্ত করে উক্ত দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে। 

তথ্যটি যাচাইয়ের শুরুতে দাবিটির সাথে যুক্ত ছবিটি যাচাই করি আমরা। এক্ষেত্রে রিভার্স ইমেজ সার্চ পদ্ধতি ব্যবহার করে, যুক্তরাষ্ট্রের মুদ্রা প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড স্টেটস মিন্ট (United States Mint) এর ওয়েবসাইটে হুবহু একই ছবি খুঁজে পাই।

উক্ত সূত্র থেকে জানা যায়, বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অবদান রাখায় মার্কিন কংগ্রেস কর্তৃক শান্তিতে নোবেলজয়ী, বাংলাদেশি অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ‘কংগ্রেসনাল গোল্ড মেডেল’ প্রদান করেন। ২০১০ সালের ০৫ অক্টোবর মার্কিন কংগ্রেস এই পদকটির অনুমোদন দেয় এবং ২০১৩ সালের ১৭ এপ্রিল ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে এই মেডেল প্রদান করা হয়। 

ইউনাইটেড স্টেটস মিন্টের বিস্তারিত তথ্য থেকে আরও জানা যায় প্রচারিত ছবিটি একটি ব্রোঞ্জ পদক যা কংগ্রেসনাল গোল্ড মেডেলের নকল করে তৈরি করা হয়েছে।

এই নকল ব্রোঞ্জ পদকটি কেন তৈরি করা হয় সে প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায় আমেরিকান বিজ্ঞানীদের সংঘ ফেডারেল অফ আমেরিকান সায়েন্টিস্ট (Federation of American Scientists) এর এক নথি থেকে। কংগ্রেসনাল গোল্ড মেডেল হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার। এই গোল্ড মেডেলকে নকল করে ব্রোঞ্জ মেডেলটি তৈরি করা হয়। এটি সাধারণত তৈরি করা হয় যেন প্রাপকরা মূল মেডেলটি নিরাপদ স্থানে রাখতে পারেন এবং নকলটি প্রদর্শন বা স্মারক হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। এই নকলগুলি মাঝে মাঝে জাদুঘর, শিক্ষামূলক প্রতিষ্ঠান বা সংগ্রাহকদের কাছে বিক্রির জন্যও তৈরি করা হয়, যেন মূল মেডেলের খরচ সংগ্রহ করা যায়।

পরবর্তীতে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে সাবেক মার্কিন রাজনীতিবিদ ও ৫৩তম মার্কিন হাউস স্পিকার জন বোনারের ইউটিউব চ্যানেলে ২০১৩ সালের ১৭ এপ্রিল ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ‘কংগ্রেসনাল গোল্ড মেডেল’ প্রদানের ভিডিও খুঁজে পাই আমরা।

এছাড়া বিস্তারিত অনুসন্ধানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ছবি সম্বলিত মুদ্রা প্রচলনের স্বপক্ষে কোনো তথ্য পাইনি আমরা। এই বিষয়ে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক কোনো গণমাধ্যমেও সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। যুক্তরাষ্ট্রের মুদ্রা প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড স্টেটস মিন্টের ওয়েবসাইটেও এই সংক্রান্ত কোনো তথ্য মিলেনি।

মূলত, বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অবদান রাখায় মার্কিন কংগ্রেস কর্তৃক শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ২০১৩ সালে ‘কংগ্রেসনাল গোল্ড মেডেল’ প্রদান করা হয়। উক্ত মেডেলের নকল করে তৈরি করা ব্রোঞ্জ মেডেলের একটি ছবি যুক্ত করে ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ছবি সম্বলিত মুদ্রা প্রচলন করেছেন’ শীর্ষক একটি দাবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

সুতরাং, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ছবি সম্বলিত মুদ্রা প্রচলন করেছে দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

সাকিবকে জড়িয়ে মাশরাফির নামে ভুয়া মন্তব্য প্রচার

হবিগঞ্জ- ৪ আসনের নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন এবং মাগুরা- ১ আসনের নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য সাকিব আল হাসানের পুরোনো দ্বন্দ্বের বিষয়ে মাশরাফি বিন মর্তুজা ‘সাকিবের নামে মামলা করা উচিৎ’ শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে গত ১২ জানুয়ারি Sports Center নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।

ভুয়া মন্তব্য

ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, মাশরাফি বিন মর্তুজা সাকিব আল হাসানের নামে মামলা করা উচিৎ শীর্ষক কোনো মন্তব্য করেননি এবং সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর সাকিব আল হাসান কর্তৃক ব্যারিস্টার সুমনকে হুমকি দেওয়ার দাবিটিও সঠিক নয়। বরং অধিক ভিউ পাবার আশায় ভিন্ন ভিন্ন কয়েকটি ঘটনার ছবি ও ভিডিও ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় যুক্ত করে তার সাথে চটকদার থাম্বনেইল ও শিরোনাম ব্যবহার করে করে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যসূত্র ছাড়াই ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যালোচনা করে রিউমর স্ক্যানার টিম। এতে ভিডিওটির শুরুতে মাশরাফি বিন মর্তুজাকে ‘সবাইকে আইনের আওয়াতায় আসা উচিত’ শীর্ষক মন্তব্য করতে দেখা যায়। পরবর্তীতে ব্যারিস্টার সুমনকে ‘তারে কোনো সমালোচনা করলে সে মারতে আসে’ শীর্ষক কথা বলতে দেখা যায়। এরপর ভিডিওটির উপস্থাপক কোনো প্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই ভিত্তিহীনভাবে দাবি করেন মাশরাফি বিন মর্তুজা ‘সাকিব অনেক বেড়ে গেছে ওর নামে মামলা করা উচিত’ শীর্ষক মন্তব্য করেছেন। এছাড়া তিনি আরও দাবি করেন, এমপি হবার পর ব্যারিস্টার সুমনকে আবারও মারার হুমকি দিয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। এই ঘটনা শোনার পর সংবাদ মাধ্যমে এসে মাশরাফি বিন মর্তুজা বলেন, “প্রত্যেক খেলোয়াড়ের কোড অফ কন্ডাক্ট থাকা উচিত। হঠাৎ করে একজন খেলোয়াড় কোনো সাধারণ মানুষকে মারতে যাবে এর জন্যে সেই খেলোয়াড়কে কঠিন শাস্তি দেওয়া উচিত এমন দৃষ্টান্ত স্থাপন করা উচিত যেন বাকি খেলোয়াড়রা এইসব কাজ না করতে পারে। “

ভিডিও যাচাই ১

আলোচিত ভিডিওটির শুরুতে মাশরাফি বিন মর্তুজার বক্তব্যের ফুটেজের বিষয়ে অনুসন্ধানে তার বক্তব্যের সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে Ekattor TV এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২১ সালের ২৪ মার্চ শুধু ক্রিকেটাররাই কথা বলতে পারবেন না: মাশরাফি | Khelajog | Ekattor TV শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Youtube

উক্ত ভিডিওর ৫৮ সেকেন্ড থেকে ১ মিনিট সময় পর্যন্ত অংশের সাথে আলোচিত ভিডিওতে থাকা মাশরাফি বিন মর্তুজার ক্লিপের হুবহু মিল রয়েছে।

Video Comparison by Rumor Scanner

এছাড়াও ভিডিওটি থেকে জানা যায়, উক্ত ভিডিওটি মূলত একাত্তর টেলিভিশনের খেলাধুল বিষয়ক অনুষ্ঠান খেলাযোগ-এ মাশরাফির দেওয়া সাক্ষাৎকারের ঘটনায় ধারণকৃত। ভিডিওটিতে তাকে বিসিবি‘র কর্মকাণ্ড নিয়ে নানা মন্তব্য করতে দেখা যায়। কোড অফ কন্ডাক্টের কারণে খেলোয়াড়রা বোর্ড নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে না পারলেও বোর্ডের কর্মকর্তারা খেলোয়াড়দের নিয়ে গণমাধ্যমের সামনে যা তা মন্তব্য করেন দাবি করে তিনি বলেন, ‘ক্রিকেট বোর্ডের সবার কোড অফ কন্ডাক্ট থাকা উচিত। সবাইকে আইনের আওতায় আসা উচিত। প্লেয়াররা শুধু কথা বলতে পারবে না আর সবাই যা মন চায় তাই বলে যাবে এটা তো হতে পারে না।’

অর্থাৎ, মাশরাফি বিন মর্তুজার ক্রিকেট বোর্ডের কর্মকর্তাদের নিয়ে করা পুরোনো মন্তব্যকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে। এছাড়াও ভিডিওটিতে তাকে ‘মামলা করা উচিত’ শীর্ষক কোনো মন্তব্যও করতে শোনা যায় না। 

ভিডিও যাচাই ২

পরবর্তীতে আলোচিত ভিডিওতে দেখানো ব্যারিস্টার সুমনের ফুটেজের বিষয়ে অনুসন্ধানে তার বক্তব্যের সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চের Kalbela News এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ১৬ মার্চ ব্যারিস্টার সুমনকে মারতে গিয়েছিলেন সাকিব আল হাসান | Barrister Sumon | Shakib Al Hasan | Kalbela শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Youtube

উক্ত ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ভিডিওর ৪ সেকেন্ড থেকে ৫ সেকেন্ড সময় পর্যন্ত আলোচিত ভিডিওর ব্যারিস্টার সুমনের ক্লিপের সাথে হুবহু মিল রয়েছে।

Video Comparison by Rumor Scanner

ভিডিওটি থেকে আরও জানা যায়, মূলত পুলিশ সদস্য হত্যার দায়ে অভিযুক্ত দুবাই প্রবাসী আরাভ খানের আরাভ জুয়েলার্সের উদ্বোধনের জন্যে সাকিব আল হাসানের সংযুক্ত আরব আমিরাত যাওয়া নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যম থেকে ব্যারিস্টার সুমনের মন্তব্য জানতে চাওয়া হয়। তখন তিনি বলেন, ‘সাকিব আল হাসান কিন্তু কোনো সমালোচনা নিতে পারেন না। তারে কোনো সমালোচনা করলে মারতে আসে।… তার নিজেরই তো একটা বিবেক থাকা উচিত যে, কোন জায়গায় তিনি যাবেন আর কোন জায়গায় তিনি যাবেন না। উনি যদি তারপরও মনে করেন যে, এইরকম একজন হত্যাকারী বা হত্যাকাণ্ডের আসামী তার ওখানে যাবেন আর ওতে উনি লজ্জাবোধ না করেন তাহলে আমার আসলে কিছু বলার নাই।’ 

এছাড়াও পরবর্তীতে আলোচিত দাবির সত্যতা যাচাইয়ে প্রাসঙ্গিক নানা কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমেও গণমাধ্যম কিংবা কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর সাকিব আল হাসান কর্তৃক ব্যারিস্টার সুমনকে হুমকি দেওয়া এবং উক্ত বিষয়ে  মাশরাফি বিন মর্তুজার আলোচিত মন্তব্যের দাবির কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। 

মূলত, গত বছরের ১৬ মার্চ ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন তার ফেসবুক পেজে একটি ভিডিও প্রচার করে দাবি করেন ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান হোটেল সোনারগাঁওয়ে তাকে দেখামাত্র মারতে আসেন। ঘটনাটি সেসময় ভারত-বাংলাদেশ সিরিজ চলাকালে ঘটে বলে তিনি জানান। সেসময় উক্ত ঘটনা নিয়ে প্রায় প্রতিটি গণমাধ্যমই সংবাদ প্রকাশ করে। সম্প্রতি, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাগুরা-১ আসনে সাকিব আল হাসান সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর পুনরায় তাকে মারার হুমকি দেন এবং এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে মামলা করা উচিত বলে মাশরাফি বিন মর্তুজা মন্তব্য করেছেন দাবিতে একটি ভিডিও ইউটিউবে প্রচার করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত দাবিগুলো সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, সাকিব আল হাসান এমপি নির্বাচিত হওয়ার আগে বা পরে কখনোই মাশরাফি বিন মুর্তজা সাকিবকে জড়িয়ে এমন কোনো মন্তব্য করেননি। এবং এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর সাকিব আল হাসান ব্যারিস্টার সুমনকে হুমকি দিয়েছেন এমন তথ্যও কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর সাকিব আল হাসান কর্তৃক সায়েদুল হক সুমনকে হুমকি দেওয়া এবং এর প্রেক্ষিতে সাকিবের বিরুদ্ধে মামলা করা উচিত বলে মাশরাফি বিন মুর্তজা মন্তব্য করেছেন দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যগুলো মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

ডাক্তারদের নিয়ে গান গাওয়া ভারতের এই মেয়েটি মারা যায়নি

0

বিগত কয়েক বছর ধরেই, “ডাক্তার সাহেবকে নিয়ে গান গেয়ে হাসতে হাসতে দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়ে গেলো” শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার হয়ে আসছে, যা সম্প্রতি ফের ছড়িয়ে পড়তে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

ডাক্তারদের নিয়ে গান

ফেসবুকে প্রচারিত এমনকিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, হাসপাতালের বেডে শুয়ে ডাক্তারদের নিয়ে গান গাওয়া মেয়েটি মারা যাওয়ার দাবিটি সঠিক নয় বরং রাপূর্ণা ভট্টাচার্য নামে ভারতের এই মেয়েটি ২০১৯ সালে অপারেশনের সপ্তাহখানেক পরই সুস্থ হয়ে ওঠেন। বর্তমানে তিনি দেশটির পুনেতে পড়াশোনা করছেন।

মূলত, ২০১৯ সালে রাপূর্ণা ভট্টাচার্য নামে ভারতের এক কিশোরী মেয়ের একটি অপারেশনের পূর্বে হাসপাতালের বেডে শুয়ে ডাক্তারদের নিয়ে তার গলায় গাওয়া একটি গান গাওয়ার পর সেটি ইন্টারনেটে ভাইরাল হয়। সম্প্রতি, একই ভিডিও প্রচার করে একাধিক পোস্টে দাবি করা হয়, ডাক্তারকে নিয়ে গান গেয়ে হাসতে হাসতে দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছে মেয়েটি। কিন্তু রিউমর স্ক্যানার টিম অনুসন্ধানে জেনেছে, রাপূর্ণা অপারেশনের পর মারা যাননি। ২০১৯ সালে অপারেশনের সপ্তাহখানেক পরই তিনি সুস্থ হয়ে যান। বর্তমানে তিনি পুনের একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গ্র্যাজুয়েশন করছেন। 

উল্লেখ্য, পূর্বেও একই দাবিতে ভিডিওটি ব্যাপকভাবে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে সে বিষয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

যমুনা টিভির ফটোকার্ড নকল করে ওবায়দুল কাদেরের নামে ভুয়া মন্তব্য প্রচার

0

সম্প্রতি, ‘শিশুদের ভোটের অধিকার কে নিশ্চিত করেছে’ শীর্ষক মন্তব্যকে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের মন্তব্য দাবিতে দেশের বেসরকারি ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম যমুনা টিভি’র ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

ওবায়দুল কাদেরের

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ‘শিশুদের ভোটের অধিকার কে নিশ্চিত করেছে’ শীর্ষক কোনো মন্তব্য করেননি এবং যমুনা টিভিও উক্ত তথ্য সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি বরং আলোচিত এই ফটোকার্ডটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে।

দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে ফটোকার্ডটিতে থাকা লোগো ও লেখার সূত্র ধরে যমুনা টিভি’র ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে উক্ত শিরোনাম বা তথ্য সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া, যমুনা টিভি’র ওয়েবসাইট, ইউটিউব চ্যানেল বা অন্যকোনো গণমাধ্যমেও উক্ত দাবির বিষয়ে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

তবে, গত ১৪ জানুয়ারি যমুনা টিভির ফেসবুক পেজে “আবারও নির্বাচনের দাবি মামার বাড়ির আবদার” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ফটোকার্ডের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডটির শিরোনাম ব্যতীত বাকি অংশের হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Photocard Comparison: Rumor Scanner

ফটোকার্ড দুটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত ফটোকার্ডটির টেক্সট ফন্টের সাথে যমুনা টিভি’র ফেসবুক পেজে প্রচারিত ফটোকার্ডের টেক্সট ফন্টের ভিন্নতা রয়েছে।

অর্থাৎ যমুনা টিভি’র ফেসবুক পেজে প্রকাশিত এই ফটোকার্ডটি সম্পাদনা করেই আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

পরবর্তীতে যমুনা টিভি’র ফটোকার্ডের তথ্যের বিষয়ে বিস্তারিত জানতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড অনুসন্ধান করে, “দেশি বিদেশি চাপ আছে: ওবায়দুল কাদের” শীর্ষক শিরোনামে যমুনা টিভি’র ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ১৪ জানুয়ারি সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, দেশি বিদেশি চাপ অতিক্রম করার ক্ষমতা ও সাহস সরকারের আছে। আবারও নির্বাচনের দাবি মামার বাড়ির আবদার। জনগণ সরকারের সাথে আছে। কোনো চাপের কাছে নতি স্বীকার করবেন না তারা।

এছাড়া, ‘শিশুদের ভোটের অধিকার কে নিশ্চিত করেছে’ শীর্ষক কোনো মন্তব্য ওবায়দুল কাদের কখনো করেছেন কিনা তা জানতে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে দেশিয় এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে কোন তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মূলত, গত ১৪ জানুয়ারি সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সাথে প্রেস ব্রিফিংয়ের সময় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বলেন, দেশি বিদেশি চাপ অতিক্রম করার ক্ষমতা ও সাহস সরকারের আছে। আবারও নির্বাচনের দাবি মামার বাড়ির আবদার। জনগণ সরকারের সাথে আছে। কোনো চাপের কাছে নতি স্বীকার করবেন না তারা। উক্ত তথ্যের উপর ভিত্তি করে বেসরকারি ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম যমুনা টিভি তাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে “আবারও নির্বাচনের দাবি মামার বাড়ির আবদার” শীর্ষক ক্যাপশনে একটি ফটোকার্ড পোস্ট করে। তবে সম্প্রতি যমুনা টিভি’র সেই ফটোকার্ডটির শিরোনাম ডিজিটাল প্রযুক্তি সহায়তায় বিকৃত করে “শিশুদের ভোটের অধিকার কে নিশ্চিত করেছে” শীর্ষক শিরোনামে প্রচার করা হচ্ছে।

সুতরাং, ‘শিশুদের ভোটের অধিকার কে নিশ্চিত করেছে’ শীর্ষক মন্তব্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের করেন নি এবং এই দাবিতে প্রচারিত যমুনা টিভি’র ফটোকার্ডের আদলে প্রচারিত ফটোকার্ডটি এডিটেড বা বিকৃত।

তথ্যসূত্র

সাকিব আল হাসানকে নিয়ে ব্যারিস্টার সুমনের নামে ভুয়া মন্তব্য প্রচার

সম্প্রতি, “দেশের জন্য নয় টাকা কামানোর জন্য এমপি হয়েছে সাকিব!! লাইভে এসে ধুয়ে দিলেন ব্যারিস্টার সুমন” শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

যা দাবি করা হচ্ছে-

হবিগঞ্জ- ৪ আসনের নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লাইভে এসে বলেছেন, ‘মাগুরা- ১ আসনের নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান দেশের জন্য নয়, টাকা কামানোর জন্য এমপি হয়েছেন।’

মন্তব্য

ভিডিওটি কয়েকটি ফেসবুক আইডি থেকে পোস্ট করা হয়েছে। পোস্টগুলো দেখুন এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, ব্যারিস্টার সুমন “দেশের জন্য নয় টাকা কামানোর জন্য এমপি হয়েছে সাকিব” শীর্ষক কোনো মন্তব্য করেননি বরং ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানকে নিয়ে ব্যারিস্টার সুমনের ভিন্ন মন্তব্য সম্বলিত পুরোনো একটি ভিডিও ব্যবহার করে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

ভিডিও যাচাই

ভিডিওটিতে প্রদর্শিত বেসরকারি ইলেকট্রনিক টেলিভিশন আরটিভি’র লোগোর সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে গণমাধ্যমটির ইউটিউব চ্যানেলে ২০২২ সালের ১২ আগস্ট “সাকিবকে কেন টাকা দিতে চাইলো ব্যারিস্টার সুমন? Sakib Al Hasan | Barrister Sumon | Betwinner | Rtv” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ভিডিওর একটি অংশের সাথে আলোচিত ভিডিওটির ১মিনিট ৫ সেকেন্ড থেকে ২ মিনিট ৪৫ সেকেন্ড অংশ পর্যন্ত হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

Comparison By Rumor Scanner

উক্ত ভিডিওতে ব্যারিস্টার সুমনকে বলতে শোনা যায়, “মানুষ বলে সাকিব আল হাসান নিজের জন্য খেলে, দেশের জন্য খেলে না।” তবে ভিডিওর কোথাও ব্যারিস্টার সুমনকে সাকিবের বিষয়ে আলোচিত মন্তব্যটি করতে দেখা যায়নি। 

তাছাড়াও, ভিডিও ২০২২ সালের আগস্ট মাসের। সুতরাং, স্পষ্টতই ভিডিওটি সাকিব আল হাসানের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ারও বহু পূর্বের।

পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে, ২০২২ সালের ১৩ আগস্ট দৈনিক যুগান্তরের ওয়েবসাইটে “সাকিবকে ৩ লাখ টাকা দিতে চান ব্যারিস্টার সুমন” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Source: দৈনিক যুগান্তর

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০২২ সালে বেটিং প্রতিষ্ঠান বেটউইনারের সাথে চুক্তিবদ্ধ হন সাকিব। কিন্তু ক্রিকেট বোর্ডের অনাপত্তির মুখে সে চুক্তি থেকে সরে আসতে হয় তাকে। এ ঘটনার প্রেক্ষিতেই ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন এক ফেসবুক ভিডিওতে সাকিব আল হাসানের সমালোচনা করেন। 

এছাড়াও, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক কোনো সংবাদমাধ্যম কিংবা নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্র থেকে সাকিব আল হাসান সম্পর্কে ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমনের আলোচিত মন্তব্যের দাবির সত্যতা জানা যায়নি।

মূলত, ২০২২ সালে বেটিং প্রতিষ্ঠান বেটউইনারের সাথে

ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের চুক্তিবদ্ধ হওয়ার  প্রেক্ষিতে ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন এক ভিডিও বার্তায় সাকিব আল হাসানের সমালোচনা করেন। সম্প্রতি ব্যারিস্টার সুমনের সে ভিডিও ব্যবহার করে তিনি “দেশের জন্য নয় টাকা কামানোর জন্য এমপি হয়েছে সাকিব” শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, পূর্বেও ব্যারিস্টার সুমন এবং সাকিব আল হাসানকে জড়িয়ে মিথ্যা তথ্য প্রচার করা হলে সে বিষয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। 

সুতরাং, সাকিব আল হাসান দেশের জন্য নয় টাকা কামানোর জন্য এমপি হয়েছেন শীর্ষক মন্তব্য ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন করেছেন  দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

দুবাইয়ে আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতা ২০২৪ এ তাকরিমের প্রথম হওয়ার দাবিটি মিথ্যা

0

সম্প্রতি, দুবাই আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতা-২০২৪ এ বিশ্বের ৭০টি দেশকে পিছনে ফেলে আবারও বিশ্বসেরা হয়েছেন বাংলাদেশে সালেহ আহমেদ তাকরিম শীর্ষক একটি তথ্য ফেসবুকে ব্যাপকভাবে ভাইরাল হয়েছে।

তাকরিমের প্রথম

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, হাফেজ সালেহ আহমেদ তাকরিম দুবাই আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতা-২০২৪ এ বিশ্বসেরা বা প্রথম হননি। প্রকৃতপক্ষে, দুবাই আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতা-২০২৪ এর আসর এখনও শুরুই হয়নি। আগামী ১২ মার্চ–২৫ মার্চ ২০২৪ এ প্রতিযেগিতা অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া, ২০২৩ সালের  দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে অ্যাওয়ার্ড জেতায় ২০২৪ সালের এ প্রতিযোগিতায় সালেহ আহমেদ তাকরিমের অংশগ্রহণের সুযোগ নেই। 

অনুসন্ধানে দেখা যায়, সম্প্রতি দুবাইয়ের ২০২৪ কোরআন প্রতিযোগিতায় সালেহ আহমেদ তাকরিম প্রথম হয়েছেন বিষয়টি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। প্রথমদিকের কিছু পোস্টের সাথে যমুনা টেলিভিশনের একটি সংবাদের ভিডিও যুক্ত হয়ে প্রচার হওয়ার ফলে দ্রুততরভাবে এটি ছড়িয়ে পড়ে। তবে যমুনা টেলিভিশনের ওই ভিডিওটি মূলত গতবছরের প্রতিযোগিতায় তাকরিমের প্রথম হওয়ার সংবাদের।  

Screenshot compile by RS

অনুসন্ধানে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ওয়েবসাইটে আন্তর্জাতিক হিফ্জুল কুরআন প্রতিযোগিতা দুবাই ২০২৪ এ অংশগ্রহণের জন্য আবেদন আহবান করে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রকাশিত একটি বিজ্ঞপ্তি খুঁজে পাওয়া যায়। ওই বিজ্ঞপ্তিতে দেখা যায়, ২০২৪ সালের দুবাই আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতা আগামী ১২ থেকে ২৫ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে। শর্তাবলীর মধ্যে দেখা যায়, ইতোপূর্বে দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক হিফয প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের আবেদনের প্রয়োজন নেই বলে উল্লেখ করা হয়েছে। 

Notice Screenshot from Islamic Foundation 

পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালক মো: আনিছুর রহমান সরকারের সাথে কথা বলে রিউমর স্ক্যানার। বিষয়টি নিয়ে তিনি জানান– “এই প্রতিযোগিতায় তাকরিম জয়ী হয়ে এসেছে। তার আর যাওয়ার সুযোগ নেই। এবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ফয়সাল আহমেদ যাওয়ার জন্য নির্বাচিত হয়েছে।”

দুবাই আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতার অফিশিয়াল ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, সাধারণত প্রতিবছর রমজান মাসের প্রথম দিন থেকে এই প্রতিযোগিতা শুরু হয় এবং এ প্রতিযোগিতার অংশগ্রহণের একটি শর্ত হলো পূর্বের কোনো কোরআন প্রতিযোগিতার আওয়ার্ড সেশনে অংশগ্রহণকারীরা আবেদন করতে পারবে না।

মূলত, গতবছর ২৬তম দুবাই আন্তর্জাতিক কুরআন তিলাওয়াত প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছিলেন হাফেজ সালেহ আহমেদ তাকরিম। সম্প্রতি গতবছরের এই প্রথম হওয়ার সংবাদ ২০২৪ সালের আসরেও প্রথম হয়েছেন হিসেবে ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়েছে। তবে দুবাই আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতা -২০২৪ এর আসর এখনও শুরু হয়নি, এই প্রতিযোগিতা সাধারণত রমজান মাসে অনুষ্ঠিত হয় এবং গতবছর অংশগ্রহণ করে পুরস্কার জেতায় হাফেজ সালেহ আহমেদ তাকরিমের এ বছর এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের আর সুযোগ নেই। আগামী মার্চে অনুষ্ঠিতব্য এই প্রতিযোগিতায়৷ বাংলাদেশ থেকে একমাত্র প্রতিযোগী হিসেবে অংশ নেবেন ফয়সাল আহমেদ।

সুতরাং, হাফেজ সালেহ আহমেদ তাকরিমের ২০২৪ দুবাই আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতা প্রথম হওয়ার দাবিটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

  1. Islamic Foundation notice 
  2. Dubai Quran competition official website 
  3. Statement of Islamic Foundation’s Director  
  4. Rumor Scanner Investigation 

ব্যারিস্টার সুমনের কথিত মামলায় সাকিব আল হাসানের কারাগারে যাওয়ার গুজব

সম্প্রতি, হবিগঞ্জ-৪ আসনের নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমনের করা মামলায় মাগুরা-১ আসনের নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান কারাগারে গিয়েছেন শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম ইউটিউবে প্রচার করা হয়েছে।

কথিত মামলায়

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি এবিষয়ে ফেসবুকে প্রচারিত সর্বাধিক ভাইরাল ভিডিওটি দেখা হয়েছে প্রায় ১ লাখ ৬৩ হাজার বার। ভিডিওটিতে প্রায় সাড়ে ৭ হাজার পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া দেখানো হয়েছে। ভিডিওটিতে নেটিজেনরা মন্তব্য করেছেন প্রায় দেড় হাজার। ভিডিওটি শেয়ার করা হয়েছে প্রায় ৪ শত বার। ভিডিওটি’র মন্তব্য ঘর ঘুরে অধিকাংশ নেটিজেনকে উক্ত দাবির পক্ষে মন্তব্য করতে দেখা গেছে।

একই দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের বিরুদ্ধে কোনো মামলা করেননি এবং সাকিব আল হাসানও কারাগারে যাননি বরং ভিন্ন একটি মামলার বিষয়ে ব্যারিস্টার সুমনের কথা বলার পুরোনো ভিডিও’র সাথে কিছু ছবি ও ভিডিও ক্লিপ যুক্ত করে তাতে চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ভিডিওটিতে ব্যারিস্টার সুমনকে বলতে শোনা যায়, এটাই ছিল আমার সবচেয়ে বড় সফলতা। আদালত তার সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। উনি আট বছর জেলে থাকবেন, ১৫ লক্ষ টাকা ফাইন (জরিমানা) দিবেন এবং আনাদায়ে আরও এক বছর জেলে থাকবেন।”

উক্ত ভিডিওটি’’ সংবাদপাঠ অংশে বলা হয়, ব্যারিস্টার সুমনের মামলায় সাকিব আল হাসানের ২ বছরের জেল হয়েছে। তবে সেখানে এবিষয়ে কোনো নির্ভরযোগ্য প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি।

বিষয়টি’র সত্যতা যাচাইয়ে আলোচিত ভিডিওটি থেকে কিছু স্থিরচিত্র নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে বেসরকারি টেলিভিশন ‘চ্যানেল ২৪’ এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০১৯ সালের ২৮ নভেম্বর “এ রায় সব থানার ওসিদের জন্য একটা ‘অশনি সংকেত’: ব্যারিস্টার সুমন” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Channel 24

ভিডিওটি থেকে জানা যায়, ফেনীর মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার অভিযোগে ২০১৯ সালে সোনাগাজী মডেল থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের আট বছরের কারাদণ্ড ও ১৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ডের আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। সেসময় ট্রাইব্যুনালের রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে মামলার বাদী ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন বলেন, ‘রায়ে আমরা ন্যায়বিচার পেয়েছি। এ রায় বাংলাদেশের সব থানার ওসিদের জন্য একটা ‘অশনি সংকেত’। বিভিন্ন থানায় বসে যে সব ওসিরা নিজেদের জমিদার মনে করেন, তাদের জন্য এ রায় ‘অশনি সংকেত’ হয়ে থাকবে। কেউ অপরাধ করলে তাকে বিচারের আওতায় আসতে হবে।’

এই ভিডিওটি’র সাথে আলোচিত ভিডিওটি’র ব্যারিস্টার সুমনের বক্তব্যের অংশের হুবহু মিল পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner

অর্থাৎ, এটি সাকিব আল হাসানের বিরুদ্ধে ব্যারিস্টার সুমনের করা কোনো মামলা বিষয়ক বক্তব্যের ভিডিও নয়।

পাশাপাশি, গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে এখন পর্যন্ত সাকিব আল হাসানের বিরুদ্ধে ব্যারিস্টার সুমন কর্তৃক মামলা করার কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাছাড়া সাকিব আল হাসানের কারাগারে যাওয়ার দাবিটিরও সত্যতা পাওয়া যায়নি।

তবে ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন তার অফিশিয়াল  ফেসবুক পেজে ২০২৩ সালের ১৬ মার্চ প্রকাশিত এক ভিডিও বার্তায় সাকিব আল হাসানের দুবাইয়ে গিয়ে বাংলাদেশের পুলিশ সদস্য হত্যা মামলায় অভিযুক্ত আলোচিত স্বর্ণ ব্যবসায়ী আরাভ খানের জুয়েলারি শপ উদ্বোধন করতে যাওয়ার বিষয়ের সমালোচনা করে সাকিবের বিরুদ্ধে তার (সুমন) ওপর হামলার চেষ্টার অভিযোগ করেন। তবে উক্ত ঘটনায় সেসময় বা পরবর্তীতে কোনো ধরনের মামলা করা হয়নি।

তাছাড়া, গণমাধ্যম কিংবা অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পরবর্তী সময়েও এই দুই ব্যক্তির প্রকাশ্যে বিবাদে জড়ানোর কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

এছাড়াও, মাগুরা-১ আসনের নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে অনুসন্ধানে জানা যায়, গত ১৪ জানুয়ারি রাতে তিনি চোখের চিকিৎসা করাতে লন্ডনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন।

মূলত, ২০২৩ সালের ১৬ মার্চ ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন তার অফিশিয়াল  ফেসবুক পেজে প্রকাশিত এক ভিডিও বার্তায় সাকিব আল হাসানের দুবাইয়ে গিয়ে বাংলাদেশের পুলিশ সদস্য হত্যা মামলায় অভিযুক্ত আলোচিত স্বর্ণ ব্যবসায়ী আরাভ খানের জুয়েলারি শপ উদ্বোধন করতে যাওয়ার বিষয়ের সমালোচনা করেন এবং ভিডিও বার্তার কিছুদিন পূর্বে সাকিবের বিরুদ্ধে তাকে হামলা চেষ্টা করার ক অভিযোগ করেন। পরবর্তী উক্ত বিষয়টি ব্যাপক ভাইরাল হলে তা নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। সেই ঘটনায় গণমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিও ব্যবহার করে সাম্প্রতিক সময়ে ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমনের করা মামলায় সাকিব আল হাসান কারাগারে গিয়েছেন শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম ইউটিউবে প্রচার করা হয়। তবে অনুসন্ধানে জানা যায়, দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন সাকিব আল হাসানের বিরুদ্ধে কখনো কোনো মামলা করেননি এবং সাকিব আল হাসানও কখনো কোনো কারাগারে যাননি। বর্তমানে তিনি চোখের চিকিৎসার জন্য লন্ডনে অবস্থান করছেন।

উল্লেখ্য, পূর্বেও ব্যারিস্টার সুমন এবং সাকিব আল হাসানের বিষয়ে ভুল তথ্য প্রচারের প্রেক্ষিতে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমনের করা মামলায় সাকিব আল হাসান কারাগারে গিয়েছেন দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ বানোয়াট ও মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

জি এম কাদের ও মুজিবুল হক চুন্নুকে জাতীয় পার্টি থেকে বহিষ্কারের গুজব

সম্প্রতি, “চুন্নু ও জিএম কাদেরকে দল থেকে বহিষ্কার জাতীয় পার্টির কার্যালয় ঘেরাও ভাঙচুর” শীর্ষক শিরোনাম এবং “চুন্নু ও জিএম কাদেরকে দল থেকে বহিষ্কার হঠাৎ পুলিশের হাতে গ্রেফতার জিএম কাদের” শীর্ষক থাম্বনেইলে ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম ইউটিউবে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে। 

জি এম কাদের

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের ও মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুর দল থেকে বহিষ্কারের দাবিটি সঠিক নয় এবং জি এম কাদের গ্রেফতার হননি বরং গত ১০ জানুয়ারি জিএম কাদের ও মুজিবুল হক চুন্নুর পদত্যাগের দাবিতে বনানী জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে নেতাকর্মীদের বিক্ষোভের একটি ভিডিওকে চটকদার থাম্বনেইল ও শিরোনাম যুক্ত করে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

দাবিগুলো নিয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ভিডিওর কোথাও জি এম কাদের ও চুন্নুর দল থেকে বহিষ্কার কিংবা জি এম কাদেরের গ্রেফতারের কোনো দৃশ্য বা তথ্যের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে দাবিটি প্রসঙ্গে চ্যানেলটির উপস্থাপক বলেন, “দর্শক জি এম কাদের ও মুজিবুল হক চুন্নুকে জাতীয় পার্টি থেকে বহিষ্কার এবং জাতীয় পার্টির কার্যালয় ঘেরাও করে ব্যাপক হামলা এবং ভাঙচুর করেছে নেতাকর্মীরা। কেন? চলুন আমরা বিস্তারিত দেখি ভিডিওতে..।” 

সংবাদ পাঠ অংশে থাকা বিষয়গুলো নিয়ে অনুসন্ধানে মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে আলোচিত দাবিগুলোর সত্যতা পাওয়া যায়নি। 

পরবর্তীতে আলোচিত দাবিতে যুক্ত ভিডিওটির অনুসন্ধানে কালবেলার ফেসবুক পেজে গত ১০ জানুয়ারি “Live: জাতীয় পার্টির কার্যালয়ের সামনে নেতা-কর্মীদের বি ক্ষো ভ..” শীর্ষক শিরোনামে একই ভিডিওর ভিন্ন কোণ থেকে ধারণকৃত একটি লাইভ ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।  

Video Comparison : Rumor Scanner 

ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে কালের কণ্ঠের ওয়েবসাইটে গত ১০ জানুয়ারি “জি এম কাদের ও চুন্নুর পদত্যাগ দাবিতে বনানীতে বিক্ষোভ” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। এই প্রতিবেদনে থাকা স্থিরচিত্রর সাথে আলোচিত ভিডিওর দৃশ্যের মিল পাওয়া যায়। 

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ১০ জানুয়ারি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের সাংগঠনিক দুর্বলতা, অদক্ষতা ও রাজনৈতিক অদূরদর্শিতাই নির্বাচনে ভরাডুবির প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ করে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জি এম কাদের ও দলটির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুর পদত্যাগ দাবিতে বনানী কার্যালয়ে বিক্ষোভ করেন নেতাকর্মীরা। 

উক্ত ঘটনার ভিডিওকেই আলোচিত দাবিতে যুক্ত করে প্রচার করা হচ্ছে। 

এছাড়া, গত ৭ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রংপুর – ৩ আসনে জয়ী জি এম কাদের গত ১০ জানুয়ারি জাতীয় সংসদে শপথ নিতে যান৷ অর্থাৎ আলোচিত ভিডিওতে জি এম কাদেরের গ্রেফতারের দাবিটি সঠিক নয়।

মূলত, গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাত্র ১১ আসনে জয় পেয়েছেন জাতীয় পার্টি।  নির্বাচনের ফল ঘোষণার ৩ দিন পর জি এম কাদেরের সাংগঠনিক দুর্বলতা, অদক্ষতা ও রাজনৈতিক অদূরদর্শিতাই নির্বাচনে ভরাডুবির প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ করে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জি এম কাদের ও দলটির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুর পদত্যাগ দাবিতে গত ১০ জানুয়ারি বনানী কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ  করেছেন দলটির নেতাকর্মীরা। এরই ধারাবাহিকতায় উক্ত ঘটনার একটি ভিডিওকে “চুন্নু ও জিএম কাদেরকে দল থেকে বহিষ্কার হঠাৎ পুলিশের হাতে গ্রেফতার জিএম কাদের” শীর্ষক দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে। তবে রিউমর স্ক্যানার যাচাই করে দেখেছে যে আলোচিত দাবিগুলো সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে অধিক ভিউ পাওয়ার আশায় চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত ভিডিওটি প্রচার করা হয়েছে। এছাড়া গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে আলোচিত দাবিটি’র সত্যতা পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, জি এম কাদের ও মুজিবুল হক চুন্নুর দল থেকে বহিষ্কার ও জি এম কাদেরের গ্রেফতার হয়েছেন দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যগুলো মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

প্রেমিকাকে পাশ করাতে মেয়ে সেজে পরীক্ষা দিতে গিয়ে প্রেমিকের ধরা পড়ার ঘটনাটি বাংলাদেশের নয়, ভারতের

0

সম্প্রতি, প্রেমিকাকে পাশ করাতে মেয়ে সেজে পরীক্ষা দিতে গিয়ে প্রেমিকের ধরা পড়ার একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

প্রেমিকের ধরা

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রেমিকাকে পাশ করাতে মেয়ে সেজে পরীক্ষা দিতে গিয়ে প্রেমিকের ধরা পড়ার উক্ত ঘটনাটি বাংলাদেশের নয় বরং ঘটনাটি ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যের ফরিদকোটের।

অনুসন্ধানের শুরুতে ফেসবুকে প্রকাশিত পোস্টগুলোর সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে দেশীয় একাধিক গণমাধ্যমে (ডিবিসি নিউজ, ইনকিলাব, সময়ের কণ্ঠস্বর, ঢাকা পোস্ট) এবিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Inqilab 

প্রচারিত প্রতিবেদনগুলো পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, সংবাদ গুলোর শিরোনামে ঘটনাটির স্থান উল্লেখ করা না হলেও প্রতিবেদনগুলোর বিস্তারিত অংশে এটি ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যের ফরিদকোট নামের স্থানের ঘটনা বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

তাছাড়া একাধিক গণমাধ্যম তাদের ফেসবুক পেজে (,, ) ঘটনাটি’র বিস্তারিত উল্লেখ না করে শুধুমাত্র শিরোনাম এবং ফটোকার্ড পোস্ট করার ফলে ঘটনাটি ভারতের হলেও স্থানের নাম উল্লেখ না করে বাংলাদেশে প্রচার করায় বিষয়টি বাংলাদেশের ভেবে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হচ্ছে এবং বাংলাদেশের নেটিজেনরা বিষয়টি সঠিকভাবে না জেনেই ঘটনাটি বাংলাদেশের মনে করেছেন। 

Screenshot: Channel 24 Facebook

উক্ত পোস্টগুলোর কমেন্টবক্স বিশ্লেষণ করে নেটিজেনদের ঘটনাটি বাংলাদেশের ভেবে বিভ্রান্তিকর মন্তব্য করতে দেখা যায়।

Comment Collage by Rumor Scanner

পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি’র ওয়েবসাইটে গত ১৫ জানুয়ারি ‘Punjab Man Dressed As His Girlfriend To Write Exam On Her Behalf, Caught’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যের ফরিদকোটের একটি পরীক্ষা কেন্দ্রে এক যুবক তার গার্লফ্রেন্ডের ছদ্মবেশ নিয়ে পরীক্ষা দিতে গিয়ে ধরা পড়েছেন। অভিযুক্ত ওই প্রেমিকের নাম আংরেজ সিং। তিনি তার প্রেমিকা পরমজিৎ কৌরের ছদ্মবেশ নিয়ে পরীক্ষার হলে গিয়েছিলেন।

অর্থাৎ, প্রেমিকাকে পাশ করাতে মেয়ে সেজে পরীক্ষা দিতে গিয়ে প্রেমিকের ধরা পড়ার উক্ত ঘটনাটি বাংলাদেশের নয়। তবে এসম্পর্কিত খবরের শিরোনামে স্থানের নাম না উল্লেখ করায় ঘটনাটি বাংলাদেশের ভেবে নেটিজেনরা বিভ্রান্ত হয়েছেন।

পাশাপাশি, মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে মেয়ে সেজে পরীক্ষা দিতে গিয়ে কোনো ব্যক্তির ধরা পড়ার বিষয়ে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মূলত, সম্প্রতি ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশের ফরিদকোটে প্রেমিকাকে পাশ করাতে মেয়ে সেজে পরীক্ষা দিতে গিয়ে এক যুবকের ধরা পড়ার ঘটনা ঘটেছে। উক্ত বিষয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমের বরাতে বাংলাদেশের একাধিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের শিরোনামে ঘটনাটির স্থানের নাম উল্লেখ না করে প্রচার করা হয়। পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীরা বিষয়টি বাংলাদেশের ঘটনা মনে করে ফেসবুকে প্রচার করেন।

উল্লেখ্য, পূর্বেও ভারতের একাধিক ঘটনা বাংলাদেশের দাবিতে প্রচারিত হলে তা নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কয়েকটি প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, ভারতে প্রেমিকাকে পাশ করাতে মেয়ে সেজে পরীক্ষা দিতে গিয়ে প্রেমিকের ধরা পড়ার ঘটনাটি বাংলাদেশে স্থানের নাম উল্লেখ না করে ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র