এমপি হওয়ার পর নয়, সাকিবের বিরুদ্ধে ব্যারিস্টার সুমনকে মারতে চাওয়ার অভিযোগের ভিডিওটি ২০২৩ সালের 

গত ০৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাগুরা-১ আসন থেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে সাকিব আল হাসান এবং হবিগঞ্জ-৪ আসন থেকে ঈগল প্রতীক নিয়ে ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমনকে সাকিব আল হাসান হামলা করতে উদ্যত হয়েছেন শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে।

সুমনকে মারতে চাওয়ার

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত কিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে টিকটকে প্রচারিত কিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর সাকিব আল হাসান ব্যারিস্টার সুমনকে হামলা করতে উদ্যত হননি বরং ২০২৩ সালে ভারত-বাংলাদেশ সিরিজ চলাকালে হোটেল সোনারগাঁওয়ে সাকিব আল হাসান কর্তৃক হামলা চেষ্টার অভিযোগ এনে ফেসবুকে ভিডিও পোস্ট করেছিলেন সুমন, যা নতুন করে সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ‘যমুনা টিভি’র একটি ভিডিও প্রতিবেদন যুক্ত করে আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানে ২০২৩ সালের ১৭ মার্চ ‘যমুনা টিভি’র ইউটিউব চ্যানেলে ‘ব্যারিস্টার সুমনকে দেখা মাত্রই মারতে আসেন সাকিব! কী ঘটেছিল হোটেলে?’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত উক্ত ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Jamuna TV

ভিডিওতে ২০২৩ সালের মার্চে ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমনের ফেসবুকে প্রচারিত এক ভিডিও বার্তার বরাতে জানানো হয়, ভারত-বাংলাদেশ সিরিজ চলাকালে হোটেল সোনারগাঁওয়ে ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমনকে মারতে উদ্যত হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। 

পরবর্তীতে সুমনের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে ২০২৩ সালের ১৬ মার্চ ‘সাকিব আল হাসান একজন সেলেব্রিটি হওয়ায় তার অপরাধের কি বিচার হবে না?’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত মূল ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook 

উক্ত ভিডিও বার্তায় তিনি ঘটনাটির বিষয়ে বলেন, ‘‘কিছুদিন আগে বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যকার যে সিরিজ হয়, সেখানে তার (সাকিব) সঙ্গে আমার হোটেল সোনারগাঁওয়ে দেখা হয়েছিল। ওই সময় আমাকে দেখে সে পুলিশ এবং বিসিবি কর্মকতার্দের সামনে আমাকে মারতে এসেছিল। সেখানে কিছু আমেরিকান লোকজন ছিল, যাদের সঙ্গে আমি দেখা করতে গিয়েছিলাম। তাদের সামনে সবাইকে অগ্রাহ্য করে আমাকে মারতে আসছিলেন। আমি কিছু বলিনি।’’

অর্থাৎ, ব্যারিস্টার সুমনকে সাকিব আল হাসান মারতে উদ্যত হওয়ার অভিযোগ সম্বলিত এই ভিডিওটি ২০২৩ সালের মার্চের।

মূলত, ২০২৩ সালের ১৬ মার্চ নিজের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে এক ভিডিও বার্তায় ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের বিষয়ে অভিযোগ করে বলেন, সাকিব তাকে ভারত-বাংলাদেশ সিরিজ চলাকালে হোটেল সোনারগাঁওয়ে দেখা হওয়ার পর মারতে উদ্যত হয়েছিলো। সেসময় বিষয়টি নিয়ে একাধিক গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। তবে সাম্প্রতিক সময়ে উক্ত বিষয়টিকেই সাকিব আল হাসান মাগুরা-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর হবিগঞ্জ-৪ আসন থেকে সদ্য নির্বাচিত সদস্য সদস্য (স্বতন্ত্র) ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমনকে হামলা করতে উদ্যত হয়েছেন দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, পূর্বেও ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান এবং ব্যারিস্টার সুমনকে জড়িয়ে প্রচারিত ভুয়া তথ্য শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, ব্যারিস্টার সুমনকে সাকিব আল হাসান হামলা চেষ্টার অভিযোগ সম্পর্কিত পুরোনো ঘটনার ভিডিওকে সাকিব এমপি নির্বাচিত হওয়ার পরের ঘটনা দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img