সম্প্রতি, ব্যারিস্টার সুমনকে চড় মারায় খেপে গেলেন ভারতের সৌরভ গাগুলী শীর্ষক শীরোনামে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।
যা দাবি করা হয়েছে
ভিডিওটির ক্যাপশনে দাবি করা হয়েছে, হবিগঞ্জ- ৪ আসনের নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনকে মাগুরা- ১ আসনের নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান চড় মেরেছেন এবং এর কারণে সাবেক ভারতীয় ক্রিকেটার সৌরভ গাঙ্গুলী প্রতিবাদ করেছেন।
ছোট কথা নামের ফেসবুক পেজ থেকে প্রকাশিত এই ভিডিওটি প্রকাশ অবধি প্রায় ৪ লক্ষ ৩৬ হাজার বার দেখা হয়েছে এবং প্রায় ২ হাজার বার শেয়ার করা হয়েছে। এছাড়া ভিডিওতে ২৯ হাজারেরও বেশি পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনকে চড় মারেননি এবং সুমন ও সাকিবকে জড়িয়ে সাবেক ভারতীয় ক্রিকেটার সৌরভ গাঙ্গুলীও কোনো মন্তব্য করেননি বরং ভারতীয় ক্রিকেটার ভিরাট কোহলির ৪৫ তম এক দিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট টুর্নামেন্ট (ওডিআই) শতক করা নিয়ে সৌরভ গাঙ্গুলীর দেওয়া সাক্ষাতকারের ভিডিও আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।
আলোচিত ভিডিওতে সৌরভ গাঙ্গুলীর সাক্ষাৎকারের ভিডিওর বিষয়ে অনুসন্ধানে Xtra Time নামক ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ১১ জানুয়ারিতে “What did Sourav Ganguly say about Virat Kohli scoring 45th ODI ton?” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত সৌরভ গাঙ্গুলীর একটি সাক্ষাৎকার খুঁজে পাওয়া যায়।
উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর দৃশ্যের মিল খুঁজে পাওয়া যায়।
Video Comparison: Rumor Scanner
সাক্ষাৎকারে সৌরভ গাঙ্গুলী ভারতীয় ক্রিকেটার ভিরাট কোহলির এক দিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে (ওডিআই) ৪৫ তম শতক করা নিয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, কোহলি একজন দুর্দান্ত খেলোয়াড়। এর আগে এমন অনেক ইনিংস খেলেছে, ৪৫টি সেঞ্চুরি এমনি হয়নি। তার একটি বিশেষ প্রতিভা আছে। এমন সময় থাকবে যখন সে রান পাবে না, তবে সে একজন স্পেশাল খেলোয়াড় (বাংলায় অনূদিত)।
তবে এই সাক্ষাৎকারে তিনি সাকিব আল হাসান কিংবা ব্যারিস্টার সুমনকে নিয়ে কিছু বলেননি।
সাকিব কি ব্যারিস্টার সুমনকে চড় মেরেছে?
প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন’র ফেসবুকে পেজে ২০২৩ সালের ১৬ মার্চ প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।
উক্ত ভিডিওতে ব্যারিস্টার সুমন অভিযোগ করেন, রাজধানীর একটি বেসরকারি হোটেলে সাকিবের সাথে দেখা হলে সাকিব তাকে মারার চেষ্টা করেছিলেন।
ব্যারিস্টার সুমনের এমন দাবি করার আগে থেকেই সৌরভ গাঙ্গুলীর সাক্ষাতকার ইন্টারনেটে বিদ্যমান।
এছাড়া, দেশিয় এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনকে ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান চড় মেরেছেন এবং সুমন ও সাকিবকে জড়িয়ে সাবেক ভারতীয় ক্রিকেটার সৌরভ গাঙ্গুলী মন্তব্য করেছেন এমন কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।
মূলত, ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে এক সাক্ষাৎকারে ভারতীয় ক্রিকেটার ভিরাট কোহলির এক দিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে (ওডিআই) করা ৪৫ তম শতক নিয়ে ভারতীয় ক্রিকেটার সাবেক সৌরভ গাঙ্গুলী ভিরাট কোহলির প্রশংসা করে বলেন, তার একটি বিশেষ প্রতিভা আছে। এমন সময় থাকবে যখন সে রান পাবে না, তবে সে একজন স্পেশাল খেলোয়াড়। তবে সম্প্রতি উক্ত ভিডিও প্রকাশ করে ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনকে ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান চড় মারায় সৌরভ গাঙ্গুলী প্রতিবাদ করেছেন শীর্ষক দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।
সুতরাং, ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনকে ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের চড় মারার দাবি এবং উল্লিখিত কারণে সৌরভ গাঙ্গুলী প্রতিবাদ করেছেন দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যগুলো মিথ্যা।
সম্প্রতি, “নতুন কারিকুলাম আবার ফিরে যাচ্ছে আগের পরীক্ষা পদ্ধতিতে! ২০২৪ ব্যাচ থেকে PSC ও JSC পরিক্ষা নেওয়ার চূড়ান্ত ঘোষণা” শীর্ষক একটি দাবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
ফেসবুকের নিজস্ব মনিটরিং টুলস ক্রাউট্যাঙ্গেল অনুযায়ী, প্রতিবেদনটি লেখা পর্যন্ত একই ক্যাপশনে এক হাজারেরও বেশি পোস্ট হয়েছে এবং সবগুলো পোস্ট মিলিয়ে ১ লক্ষ ৭৩ হাজারেরও অধিক রিয়্যাক্ট পড়েছে। উল্লেখযোগ্য যে, ফেসবুকের এই টুলস ব্যক্তিগত আইডি থেকে করা পোস্টের সংখ্যা দেখায় না এবং যেসব ফেসবুক পেজ, গ্রুপ ও ভেরিফাইড আইডির পোস্ট দেখায় সেগুলোরও নির্দিষ্ট ফলোয়ার সংখ্যা পার হয়ে আসতে হয়। অর্থাৎ, ছড়ানোর প্রকৃত সংখ্যা আরও অনেক বেশি।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, নতুন শিক্ষা কারিকুলাম প্রচলিত পরীক্ষা পদ্ধতিতে ফিরে যাওয়া এবং ২০২৪ ব্যাচ থেকে পুনরায় প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) এবং জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষা চালুর দাবিটি সত্য নয়। শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর সম্প্রতি ‘নতুন কারিকুলামের মূল্যায়ন পদ্ধতিতে প্রয়োজনে পরিবর্তন আসবে’ শীর্ষক বক্তব্যের প্রেক্ষিতে কোনো সূত্র ছাড়াই উক্ত দাবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এছাড়া শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বিষয়টিকে গুজব বলে রিউমর স্ক্যানারকে জানানো হয়েছে।
গুজবের সূত্রপাত
বিষয়টি যাচাইয়ে এই দাবির সম্ভাব্য সূত্রপাত খুঁজে বের করার চেষ্টা করি আমরা। গত ১৪ জানুয়ারি ভোর ৬টা ৩১ মিনিটে ‘Raju’s English Plus’ নামের একটি ফেসবুক গ্রুপে ‘Mostafizar Rahman Raju’ নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে ‘পরীক্ষা পদ্ধতি আবারও ফিরতে পারে নতুন শিক্ষাক্রমে’ শীর্ষক ক্যাপশনে একটি পোস্ট (আর্কাইভ) প্রচার হতে দেখি আমরা। তবে এই পোস্টে কোনো তথ্যসূত্র উল্লেখ করা ছিল না।
পরবর্তীতে উক্ত পোস্টের প্রায় ৪ ঘণ্টা পর সকাল ১০টা ৩৬ মিনিটে ‘Polapain Of HSC 2K24’ নামের আরেকটি ফেসবুক গ্রুপে একই ক্যাপশনে আরো একটি পোস্ট (আর্কাইভ) খুঁজে পাই। উক্ত পোস্টের কমেন্টে সূত্র হিসেবে ‘dailycampuslive’ নামের একটি অনলাইন পোর্টালে প্রকাশিত প্রতিবেদনের লিংক দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে এই প্রতিবেদনটি ডিলেট করা হয়েছে। তবে একই প্রতিবেদন ‘shikshabarta’ নামের আরেকটি অনলাইন পোর্টাল পাই।
উক্ত প্রতিবেদনটি জুড়ে নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এছাড়া প্রতিবেদনটিতে সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর গত ১২ জানুয়ারি করা মন্তব্য সম্পর্কে লেখা হয়-
‘পরীক্ষা পদ্ধতিতে ফেরার ইঙ্গিত দিয়ে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেছেন, নতুন শিক্ষাক্রম ও এর মূল্যায়ন পদ্ধতিতে প্রয়োজনে পরিবর্তন আনা হতে পারে। এটি এখন যে একেবারে শতভাগ স্থায়ী তা কিন্তু নয়। তিনি বলেন, শিক্ষা প্রশাসনের কাছে যে ‘কারেকশনগুলো’ আসবে সেগুলো সমাধান করা হবে।’
প্রতিবেদন জুড়ে ‘ফিরতে পারে’ এবং ‘ইঙ্গিত’ শীর্ষক শব্দচয়নের ব্যবহার নিশ্চিত করে প্রতিবেদনটি অনুমান নির্ভর।
গত ১৪ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৭টা ২২ মিনিটে ‘Md Mostakin Hosen’ (আর্কাইভ) নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে ‘dailycampuslive’ নামের উক্ত অনলাইন পোর্টালে প্রকাশিত উক্ত প্রতিবেদনের স্ক্রিনশট যুক্ত করে লেখা হয়েছে ‘নতুন কারিকুলাম আবার ফিরে যাচ্ছে আগের পরীক্ষা পদ্ধতিতে!’। এখানেই ঘটেছে তথ্যের বিকৃতি। আবারও ‘ফিরতে পারে’ হয়ে গেছে ‘ফিরে যাচ্ছে’। পরবর্তীতে এই ক্যাপশনে ফেসবুকে আরো অসংখ্য প্রচার হয়। এমন কিছু পোস্টের আর্কাইভ দেখুন এখানে এবং এখানে।
পরবর্তীতে উক্ত দাবি বিবর্তিত হয়ে ‘নতুন কারিকুলাম আবার ফিরে যাচ্ছে আগের পরীক্ষা পদ্ধতিতে! ২০২৪ ব্যাচ থেকে PSC ও JSC পরিক্ষা নেওয়ার চূড়ান্ত ঘোষণা’ শীর্ষক দাবিটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
গত ০৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন চট্টগ্রাম-৯ আসনের সংসদ সদস্য মহিবুল হাসান চৌধুরী। দায়িত্ব পাওয়ার পর তিনি একাধিকবার (১,২) প্রয়োজনে নতুন কারিকুলাম ও মূল্যায়ন পদ্ধতিতে পরিবর্তন আসতে পারে বলে জানিয়েছেন। তবে পুনরায় পিইসি-জেএসসি পরীক্ষা ফিরার ব্যাপারে বা নতুন শিক্ষা কারিকুলাম প্রচলিত পরীক্ষা পদ্ধতিতে ফিরে যাওয়ার ব্যাপারে কোনো বক্তব্য দেননি তিনি।
এই বিষয়টি সত্যতা যাচাইয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল খায়েরের সাথে যোগাযোগ করি আমরা। তিনি জানান, ‘এটা গুজব। এমন কোনো নির্দেশনা নাই।’
তৎক্ষণাৎ বিষয়টি গুজব জানিয়ে গতকাল ১৫ জানুয়ারি রাতে আমাদের ফেসবুক পেজে একটি ডিজিটাল ব্যানার পোস্ট করা হয়। এরপর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ফেসবুক পেজেও বিষয়টি গুজব জানিয়ে একটি পোস্ট করা হয়। পরবর্তীতে একাধিক গণমাধ্যমেও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাতে বিষয়টিকে গুজব জানিয়ে সংবাদ প্রচার হয়।
আজ ১৬ জানুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয় তাদের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে এই বিষয়ে একটি বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করেছে। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, “সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিছু ব্যক্তি প্রচার করছেন যে প্রচলিত পরীক্ষা পদ্ধতিতে ফিরে যাচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ২০২৪ সালে জেএসসি এবং পিএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এই তথ্যটি মিথ্যা ও বানোয়াট। এ ধরনের তথ্যে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য সকলের প্রতি অনুরোধ করা হল।”
Screenshot: Facebook.
মূলত, সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী দায়িত্ব পাওয়ার পর একাধিকবার প্রয়োজনে নতুন কারিকুলাম ও মূল্যায়ন পদ্ধতিতে পরিবর্তন আসতে পারে জানিয়ে বক্তব্য দিয়েছেন। তার এই বক্তব্যকে কেন্দ্র করে কিছু অনলাইন পোর্টালে ‘পরীক্ষা পদ্ধতি আবারও ফিরতে পারে নতুন শিক্ষাক্রমে’ শীর্ষক সংবাদ প্রচার হয়। পরবর্তীতে উক্ত বিষয়টি বিবর্তিত হয়ে “নতুন কারিকুলাম আবার ফিরে যাচ্ছে আগের পরীক্ষা পদ্ধতিতে! ২০২৪ ব্যাচ থেকে PSC ও JSC পরিক্ষা নেওয়ার চূড়ান্ত ঘোষণা” শীর্ষক দাবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। উক্ত বিষয়টি গুজব বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সাল থেকে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) এবং জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে।
সুতরাং, নতুন শিক্ষা কারিকুলাম প্রচলিত পরীক্ষা পদ্ধতিতে ফিরে যাওয়া এবং ২০২৪ ব্যাচ থেকে পুনরায় প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) এবং জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষা চালুর ঘোষণা হওয়ার দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।
প্রগতি স্কুল গণশিক্ষা প্রকল্প-এ নিয়োগ শিরোনামে কিছু চাকরির বিজ্ঞপ্তি গত বছর দুয়েক ধরে ইন্টারনেটে প্রচারিত হয়ে আসছে। এই চাকরির বিজ্ঞপ্তিগুলো প্রচারের অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে চাকরির প্রস্তুতি ফেসবুক গ্রুপগুলো। এছাড়াও বিডিজবসেও তাদের নিয়োগের বিজ্ঞাপন প্রচার হতে দেখা যায়। গেল বছরের সেপ্টেম্বরে ফেসবুকে প্রচারিত প্রগতি স্কুল গণশিক্ষা প্রকল্পের একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক অনুমোদিত সর্ববৃহৎ আত্মনির্ভর বেসরকারী স্থায়ী গণশিক্ষা প্রকল্প (প্রগতি স্কুল গণ শিক্ষা প্রকল্প)। যার সেবার আওতায় রয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গণ শিক্ষা কার্যক্রম। যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক বিশ্ব বিখ্যাত টাইম ম্যাগাজিনের জরিপে ২০০৬ সালে প্রগতি স্কুল (গণ শিক্ষা প্রকল্প) বিশ্বের ০৮তম শিক্ষা সেবা দান কারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে মর্যাদা লাভ করে।”
অপরদিকে, গেল অক্টোবরে প্রচারিত আরেক বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, “বেসরকারী শিক্ষা সংস্থা প্রগতি স্কুল ১৯৭৬ সাল থেকে বাংলাদেশের দুস্থ, গরিব, এতিম, অসহায় ও পথশিশুদের মাঝে শিক্ষার আলো পৌঁছে দিচ্ছে। বিশ্বের মোট ০৭টি দেশে গণশিক্ষা প্রকল্প প্রগতি স্কুল শিক্ষাকার্যক্রম পরিচালনা করে। বাংলাদেশ সরকারের “শিক্ষা অধিদপ্তর” কর্তৃক অনুমতি সাপেক্ষে দাতা সংস্থা “আল-মাকতুম ফাউন্ডেশন, ১১৮ আল মানখুল রোড়, দুবাই, সংযুক্ত আরব আমিরাত” এর সহায়তায় গণশিক্ষা প্রকল্প প্রগতি স্কুল বাংলাদেশের সকল জেলা, থানা, ইউনিয়ন পর্যায়ে স্কুল স্থাপনের মাধ্যমে শিক্ষাকার্যক্রম পরিচালনা করবে। উক্ত প্রকল্পে কাজ করতে আগ্রহী ও যোগ্যতাসম্পন্ন প্রার্থীদের নিম্নলিখিত পদসমূহে আবেদন করার জন্য আহ্বান করা হচ্ছে।”
এ বিজ্ঞপ্তি দুইটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, বিজ্ঞপ্তি দুইটিতে দুটি ভিন্ন অফিস লোকেশন দেওয়া হয়েছে। ইমেইল এড্রেসেও কিঞ্চিৎ পরিবর্তন করা হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রগতি স্কুল গণশিক্ষা প্রকল্পে নিয়োগ শীর্ষক প্রচারিত বিজ্ঞপ্তিগুলো ভুয়া। প্রকৃতপক্ষে কথিত এ প্রগতি স্কুলের বাস্তবিক কোনো অস্ত্বিত্ব নেই। ভুয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রচারের মাধ্যমে চাকরি দেওয়ার নাম করে চাকরি প্রার্থীদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেওয়াই তাদের উদ্দেশ্য।
বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে রিউমর স্ক্যানার প্রগতি স্কুল গণশিক্ষার একাধিক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি পর্যবেক্ষণ করে সেখানে অসংখ্য বানান, ভাষা ও বাক্যগত অসঙ্গতি এবং বিরামচিহ্নের ব্যবহারজনিত ভুল দেখতে পায়। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করেই এ প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে নানান অসঙ্গতি দেখা যায়।
বিশাল নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি, তবে নেই কোনো অফিস বা স্কুল
কথিত প্রগতি স্কুলের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিগুলোতে দেখা যায় তারা বিশাল জনবল নিয়োগের কথা বলে। তাদের চাকরির বিজ্ঞপ্তিতে পদের সংখ্যা থাকে অনেক অনেক বেশি। থানা শিক্ষা অফিসার, ইউনিট অফিসার, ইউনিয়ন শিক্ষা অফিসার, শিক্ষক ও অফিস সহকারী সহ বিভিন্ন পদে নিয়োগের বিশাল সংখ্যা তারা উল্লেখ করে থাকে। কথিত এ স্কুলের ২০২২ সালের ২৪ জুনের একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে পদের সংখ্যা দেখানো হয়েছে ৭৫৩০ জন, ২০২৩ সালের মে মাসের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে পদের সংখ্যা দেখানো হয়েছে ১৭৫০ জন, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসের আরেক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতেও পদ সংখ্যা দেখানো হয়েছে ১৭৫০ জন। লোভনীয় বেতন ও বিশাল সংখ্যায় নিয়োগের কথা বলে মূলত তারা চাকরি প্রার্থীদের আবেদন করতে প্রলুব্ধ করে। আবেদন করার পর আবেদনকারী প্রত্যেককেই নিয়োগের কথা বলে অগ্রিম টাকা চাওয়া হয়। ইউনিয়ন পর্যায় অব্দি বিশাল নিয়োগ দেওয়ার কথা বললেও আদতে কথিত এ স্কুলের কোথাও কোনো স্কুল বা অফিস নেই। অনুসন্ধানে তাদের কোনো স্কুলের সন্ধান মেলেনি– পুরোটাই যেন কাল্পনিক!
কথিত প্রগতি স্কুল তাদের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে লিখেছে– “বাংলাদেশের সকল জেলা, থানা, ইউনিয়ন পর্যায়ে স্কুল স্থাপনের মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে সকল জেলা/থানা/ইউনিয়নের প্রকৃত পুরুষ/মহিলাগনের নিকট থেকে ১২ বছর স্থায়ীভাবে মানবতার কল্যাণে কাজ করার নিমিত্তে দরখাস্ত আহবান করা যাচ্ছে। নির্বাচিত সকল প্রার্থীদের শিক্ষার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে এবং প্রশিক্ষণ চলাকালীন ভাতা প্রদান করা হবে। নির্বাচিত সকল প্রার্থীদের কর্মস্থল ও প্রশিক্ষণ নিজ জেলায় রাখা হবে।”
একে তারা কোথাও বলছে তারা ১৯৭৬ সাল থেকে কার্যক্রম চালাচ্ছে, বাংলাদেশসহ ২৬টি দেশে তাদের কার্যক্রম রয়েছে, তারা ২০০৬ সালে টাইম ম্যাগাজিনেও জায়গা পেয়েছে সহ নানান গল্প। অন্যদিকে আবার তারাই ২০২৩ সালের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে বলছে– ‘স্কুল স্থাপনের মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্য’ এর কথা! এই কথার দ্বারা বোঝায় তাদের প্রতিষ্ঠিত কোনো স্কুল নেই। আরেক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে তারা পাহাড়ি জেলা সহ কয়েকটি জেলায় স্কুল রয়েছে বলেও উল্লেখ করে, তবে অনুসন্ধানে এমন কোনো স্কুল থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
টাইম ম্যাগাজিনের ভুয়া স্বীকৃতি
প্রগতি স্কুল গণশিক্ষা প্রকল্পের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক বিশ্ব বিখ্যাত টাইম ম্যাগাজিনের জরিপে ২০০৬ সালে প্রগতি স্কুল বিশ্বের ০৮ তম শিক্ষা সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে মর্যাদা লাভ করেছে বলে উল্লেখ করা হয়। তবে অনুসন্ধানে টাইম ম্যাগাজিনের জরিপে প্রগতি স্কুল নামের কোন কিছুর ফিচার হওয়ার কোনো তথ্যই পাওয়া যায়নি। সম্পূর্ণ ভুয়া ভাবে তারা টাইম ম্যাগাজিনের গল্প নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করে আসছে।
উপরের বিজ্ঞপ্তিতে প্রগতি স্কুল এর লোগোতে দেখা যায় ২০২০ সাল। তবে অন্য আরেক লোগোতে দেখা যায় ২০২২ সাল। তাদের ২০২০ সালের চেয়ে পুরোনো কোনো লোগো পাওয়া যায়নি। তবে একটি বিজ্ঞপ্তিতে ১৯৭৬ সাল থেকে প্রগতি স্কুলের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করার দাবি দেখা গেছে।
বিভিন্ন দেশে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার ভুয়া দাবি
কথিত প্রগতি স্কুলের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিগুলোতে দেখা গেছে বাংলাদেশ ছাড়াও তারা বিভিন্ন দেশে তাদের গণশিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তাদের বিভিন্ন সময়ের বেশ কয়েকটি বিজ্ঞপ্তি পর্যবেক্ষণ করে তথ্যের গড়মিল ও অসঙ্গতি পাওয়া গেছে। যেমন ২০২৩ সালের আগস্ট মাসের একটি বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয় বিশ্বের মোট ৭টি দেশে প্রগতি স্কুল গণশিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয়। বলা হয়– “বিশ্বের মোট ০৭টি দেশে গণশিক্ষা প্রকল্প প্রগতি স্কুল শিক্ষাকার্যক্রম পরিচালনা করে। বাংলাদেশ সরকারের “শিক্ষা অধিদপ্তর” কর্তৃক অনুমতি সাপেক্ষে দাতা সংস্থা “আল-মাকতুম ফাউন্ডেশন, ১১৮ আল মানখুল রোড়, দুবাই, সংযুক্ত আরব আমিরাত” এর সহায়তায় গণশিক্ষা প্রকল্প প্রগতি স্কুল বাংলাদেশের সকল জেলা, থানা, ইউনিয়ন পর্যায়ে স্কুল স্থাপনের মাধ্যমে শিক্ষাকার্যক্রম পরিচালনা করবে।”
আবার ২০২২ সালের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয় বর্তমানে ২৪তম দেশ হিসেবে বাংলাদেশের শিক্ষা অধিদপ্তরের অনুমতি সাপেক্ষে বাংলাদেশে তারা শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, “বর্তমানে ২৪তম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ সরকারের “শিক্ষা অধিদপ্তর” কর্তৃক অনুমতি সাপেক্ষে দাতা সংস্থা “শিশু কল্যাণ ট্রাষ্ট- দুবাই ও প্রগতি স্কুল (গণ শিক্ষা প্রকল্প) ২২৪/বি শিল্প নগরী তেজগাঁও, ঢাকা-১২১৫ এর যৌথ উদ্যোগে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে কাজ করে আসছে।”
একই বিষয় উল্লেখ করতে গিয়ে ২০২৩ সালের মে মাসে বলা হয়েছে ২৬ তম দেশ হিসেবে বাংলাদেশে তারা এ কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, “প্রগতি স্কুল (গণশিক্ষা প্রকল্প) সাউথ কুরিয়া, থাইল্যান্ড, ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্থান, কেনিয়া, জিম্বাবুয়ে ও লাইবেরিয়াসহ বিশ্বের ২৫টি দেশে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। বর্তমানে ২৬তম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ সরকারের “শিক্ষা অধিদপ্তর” কর্তৃক অনুমতি সাপেক্ষে দাতা সংস্থা তারাহুম চ্যারিটি ফাউন্ডেশন, দুবাই ও প্রগতি স্কুলগণ শিক্ষা প্রকল্প হাউজ – ২২৪.বি শিল্পনগরী এলাকা তেজগাও, ঢাকা- এর যৌথ উদ্যোগে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে কাজ করে আসছে প্রগতি স্কুল (গণশিক্ষা প্রকল্প) কার্যক্রম টি দুস্থ, গরিব, এতিম ও অসহায় শিশুদের মাঝে স্কুল স্থাপনের মাধ্যমে শিক্ষার আলো পৌছে দেবার লক্ষ্যে এবং নিরক্ষতামুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যায়ে কাজ করে আসছে।”
এখান থেকে বেশ কয়েকটি বড় অসঙ্গতি পাওয়া যায়–
এক. শিক্ষা অধিদপ্তর নামে একটি দপ্তরের অনুমতিপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে দাবি করা হয়। তবে এ নামে বাংলাদেশে নির্দিষ্ট করে কোনো অধিদপ্তর নেই। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর থাকলেও কেবল ‘শিক্ষা অধিদপ্তর’ নামে কোনো অধিদপ্তর নেই।
দুই. কথিত প্রগতি স্কুল তাদের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে বিভিন্ন সময়ে দুবাই ভিত্তিক কথিত কিছু দাতা সংস্থার নাম উল্লেখ করতে দেখা যায়। যেমন উপরের তিনটি বিজ্ঞপ্তিতে তারা দাতা সংস্থা আল-মাকতুম ফাউন্ডেশন, দুবাই, শিশু কল্যাণ ট্রাষ্ট, দুবাই এবং দাতা সংস্থা তারাহুম চ্যারিটি ফাউন্ডেশন, দুবাই নামের তিনটি সংস্থার নাম উল্লেখ করেছে।
তিন. একটি বিজ্ঞপ্তিতে তারা ১৯৭৬ সাল থেকে বাংলাদেশে প্রগতি স্কুলের শিক্ষা কার্যক্রমের কথা বললেও তারা অন্তত তিনটি বিজ্ঞপ্তিতে ২৩তম দেশ হিসেবে, ২৪তম দেশ হিসেবে এবং ২৬ তম দেশ হিসেবে বাংলাদেশে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার কথা বলেছে। অর্থাৎ, প্রগতি স্কুল বাংলাদেশের কথিত শিক্ষা অধিদপ্তরের অনুমতিপ্রাপ্ত হয়ে ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশে যাত্রা শুরু করার কথা বলে পরবর্তীতে বাইরের বিভিন্ন দেশে আগে প্রতিষ্ঠিত হয়ে তারপর এ প্রকল্প বাংলাদেশে এসেছে বলে বুঝিয়েছে। ২০২৩ সালের একটি বিজ্ঞপ্তিতে এমন কি ৭ দেশের কথাও উল্লেখ রয়েছে।
প্রগতি স্কুল নামে ভিন্ন কেনো দেশে কোনো স্কুল আছে কিনা তা অনুসন্ধান করতে গিয়ে ভারতে প্রগতি স্কুল নামের একটি স্কুল খুঁজে পাওয়া যায়। ১৯৬৯ সালে জনাব এম. পি. জৈন প্রগতি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। এই বিদ্যালয়ের সকল তথ্য তাদের ওয়েবসাইটে রয়েছে। বাংলাদেশের কথিত প্রগতি স্কুলের সাথে ভারতের গুজরাটের এই প্রগতি স্কুলের যোগসূত্র অনুসন্ধান করে এ দুটির মধ্যে কোনো সম্পর্ক পাওয়া যায়নি। উপরন্তু, দেখা গেছে ভারতের প্রগতি স্কুলের লোগো নকল করে কথিত প্রগতি স্কুল নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির একটি বিজ্ঞাপনে ব্যবহার করা হয়েছে।
Logo Comparison by Rumor Scanner
বিভিন্ন চাকরির গ্রুপে ভুয়া ফেসবুক আইডি দিয়ে প্রচার করা হয় বিজ্ঞাপন
অনুসন্ধান দেখা গেছে প্রগতি স্কুল নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিগুলো প্রচারের জন্য মূলত ব্যবহার করা হয় বিভিন্ন চাকরি প্রস্তুতি ভিত্তিক ফেসবুক গ্রুপ। চাকরির ফেসবুক গ্রুপগুলোতে লোভনীয় বেতনের বিশাল এ নিয়োগ বিজ্ঞাপন প্রচার করা হতো বিভিন্ন ভুয়া ফেসবুক আইডির মাধ্যমে। প্রগতি স্কুল, প্রগতি স্কুল গণশিক্ষা প্রজেক্ট, প্রগতি স্কুল বাংলাদেশ, Pragati School নামের ফেসবুক আইডিসহ আরও ভিন্ন ভিন্ন ফেসবুক আইডি থেকে গ্রুপগুলোতে পোস্ট করা হতো। তাদের নেই কোনো অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ। ১৯৭৬ সাল থেকে বিশ্বের ২৬ দেশে কার্যক্রম পরিচালনা করা টাইম ম্যাগাজিনে ফিচার হওয়া প্রতিষ্ঠানের অফিশিয়াল কোনো ফেসবুক পেজ কিংবা সোস্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট নেই– ভাবা যায়! আরেকটা মজার ব্যাপার হলো ২০২২ সালের পূর্বে কথিত স্কুল সম্পর্কে ফেসবুকে কোনো তথ্য বা নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি পাওয়া যায়না। ২০২২ ও ২০২৩ সালেই কেবল এ কথিত স্কুলের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিগুলো পাওয়া যায়।
Screenshot: Pragati School FB accounts
এছাড়াও, www.pragatischoolbd.net এবং https://pragatischoolbd.com/ নামের দুটি ওয়েবসাইটেও নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি তারা প্রচার করতো। বর্তমানে ওয়েবসাইট দুটি এভাইলেবল নেই। ওয়েবসাইট দুটিতে প্রবেশ করতে গেলে ডোমেইন মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে প্রদর্শিত হয়। এছাড়াও, কথিত এ প্রতিষ্ঠান বিডিজবসেও তাদের চাকরির বিজ্ঞপ্তি বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে প্রচার করতো। ইউনিসেফ সংস্থা নামের একটি ভুয়া আইডি থেকেও প্রগতি স্কুলের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে প্রচার করা হয়। ওই একই পেজে ইউনিসেফ স্বাস্থ্য প্রকল্পে নিয়োগ নামের একটি ভুয়া চাকরির বিজ্ঞপ্তিও প্রচার করতে দেখা গেছে, যা নিয়ে ইতিপূর্বেই “ইউনিসেফের স্বাস্থ্য প্রকল্পে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া” শিরোনামে ফ্যাক্টচেক প্রকাশ করেছিল রিউমর স্ক্যানার।
Screenshot: Facebook post
কথিত প্রগতি স্কুলে আবেদনকারী কিছু ব্যক্তির অভিজ্ঞতা
রিউমর স্ক্যানার অনুসন্ধানে অসংখ্য চাকরি প্রার্থীর মন্তব্য দেখেছে যারা কথিত এ প্রগতি স্কুলে আবেদন করে প্রতারিত হয়েছে। তেমন কয়েকটি মন্তব্য থাকছে এ পর্বে।
প্রগতি স্কুলের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির একটি পোস্টে Mahmudul Hasan Akash নামের এক ব্যাক্তির মন্তব্য খুঁজে পাওয়া যায়। যেখানে তিনি প্রগতি স্কুলের অফিস খুঁজতে গিয়ে তার কোনো অস্ত্বিত্ব পাননি। মন্তব্যে তিনি লিখেছেন,
“ঢাকা থাকার সুবাদে আজকে তাদের অফিস ভিজিট করতে গিয়েছিলাম। যখন তারা বুঝতে পারে যে আমি ঢাকায় থাকি এবং তাদের অফিসের সামনে আমাকে যেতে বলে তাতে অফিস থেকে প্রথমে বলে ভূমি অফিসের সামনে তো আমি ভূমি অফিসের সামনে যাইয়া তাদের ফোন দিই। ও তারা মনে হয় তখন বুঝে গেছে যে আমি আসলেই ভূমি অফিস চিনি তো তারপরে ভূমি অফিসের সামনে যেয়ে ফোন দেওয়ার পরে তারা ফোন রিসিভ করেনা চার-পাঁচবার পর ফোন রিসিভ করার পরে তারা বলে আগোরার সামনে যেতে কিন্তু সাত রাস্তার মাথায় আগোরার কোন সপ নেই। তারপরে বললাম যে ভাই আমি ব্যস্ত মানুষ আইসা নিয়া যান তাহলে ভালো হয় তো তারা বলে আচ্ছা ঠিক আছে আসতেছি ওয়েট করেন। এরকম ওয়েট করতে করতে প্রায় ১৫ ২০ মিনিট হয়ে যাওয়ার পর ফোন দিচ্ছি তো তারা আবার বলল রাবেয়া মেনশন এর সামনে যে। তো তেজগঞ্জ এরিয়াতে আপনার রাবেয়া মেনশন নামেও কোনো বাড়ি নেই। বিজ্ঞাপনে এমন অ্যাড্রেস দিছে যে আপনি এই এড্রেসে কোন ঠিকানাই খুঁজে পাবেন না।মানে এক কথায় পুরা ভুয়া পোস্ট তো কেউ অগ্রিম টাকা দিবেন না আর যারা দিছেন তো দিছেন ই।”
প্রগতি স্কুলের অপর আরেকটি নিয়োগ পোস্টের কমেন্টে Masud Saodagar নামের এক ব্যক্তি লিখেছেন,
“সালারা ভুয়া, চিটার, বাটপার, কেউ এদের এখানে এপ্লাই করিবেন না। এরা আপনাদের কল দিবো বলবে ১ ঘন্টার মধ্যে ১৭৫০/১৯৫০/২২৫০ ইত্যাদি পরিমান টাকা পাঠান, নয়লে আপনার এপ্লাই বাতিল হবে। সারাদেশে এদের কোন অফিস নাই। এদের থেকে সাবধান হন। কোন প্রকার টাকা দিবেন না।”
ডিসেম্বর-২০২২ এর আরেকটি নিয়োগ পোস্টে তিনজন ব্যক্তির টাকা পাঠিয়ে কথিত প্রগতি স্কুল এর কাছে প্রতারিত হয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন। Saiful Alam নামের এক ব্যক্তি লিখেছেন,
“সাবধান, প্রতারক,আমার কাছ থেকে টাকা নিয়েছে। শুধু টাকা নিবে মোবাইল ব্যাংকিং এর মধ্যেমে। যে সার্কুলার ঐ অফিস এটা না। যারা আবেদন করবেন ঐ অফিস এর অনলাইনে চেক করে তারপর সিভি পাঠাবেন। প্রতারক থেকে নিজেকে নিরাপদ রাখবেন।”
Md Dedar Mazumdar নামে এক ব্যক্তি লিখেছেন, “সাবধান, প্রতারক,আমার কাছ থেকে টাকা নিয়ে আর যোগাযোগ করে না।”
Md Dedar Mazumder এর কমেন্টের রিপ্লাইয়ে Shakila Azad Shakila নামের আরেকজন মন্তব্য করেছেন, “সঠিক বলেছেন ভাই। আমার কাছ থেকেও টাকা নিয়ে আর খবর নাই।”
অপর আরেক পোস্টে উম্মে আইমান নামের একজন লিখেছেন, “এটা ফেক। কেউ এপ্লাই কইরেন না….তাদের নাকি স্কুলটা এখনও স্থাপনই হয় নাই.. তারা লোক নিয়োগ নিচ্ছে তারপর স্কুলটা করবে। সব টাকা নেওয়ার ধান্দা। ”
এছাড়াও আরও অসংখ্য মন্তব্য আমরা দেখেছি যেখানে কথিত এ স্কুলে আবেদন করে আগে টাকা পাঠিয়ে লোকজন প্রতারিত হওয়ার কথা জানিয়েছে। এ স্কুলের কোনো অস্তিত্ব না থাকার কথা জানিয়েছে। উপরের মন্তব্যগুলোসহ আরও এমন মন্তব্যের স্ক্রিনশটগুলো থাকছে এখানে।
কথিত এ প্রগতি স্কুল গণশিক্ষা প্রকল্প কিংবা এর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে আরও অনেক অসঙ্গতি আমরা দেখতে পেয়েছি। ইতিমধ্যে যেগুলো উল্লেখ করা হয়েছে তার ভিত্তিতেই বলা যায়– প্রগতি স্কুল নামের কথিত এ স্কুলের বাস্তবিক কোনো অস্তিত্ব নেই, পুরোটাই কাল্পনিক।
ইতিপূর্বে, আনন্দ স্কুল গণশিক্ষা প্রকল্প নামে একটি চক্র ভুয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রচার করে একইভাবে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার প্রমাণ মিলেছে। কথিত ওই আনন্দ স্কুলের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিকে ভুয়া চিহ্নিত করে ফ্যাক্টচেক করেছিল রিউমর স্ক্যানার।
সুতরাং, প্রগতি স্কুল গণশিক্ষা প্রকল্পের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিগুলো সম্পূর্ণ ভুয়া।
সম্প্রতি, বিকাশের ৭ কোটি গ্রাহক পূর্তি উপলক্ষ্যে বিকাশ সব ব্যবহারকারীদের ৭৯৯৯ টাকা বোনাস দিচ্ছে শীর্ষক দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বিকাশের ৭ কোটি গ্রাহক পূর্তি উপলক্ষ্যে বিকাশ কর্তৃক সব ব্যবহারকারীদের ৭৯৯৯ টাকা বোনাস দেওয়ার দাবিটি সত্য নয় বরং বিকাশের নামে ভুয়া ওয়েবসাইট তৈরি করে প্রতারণার উদ্দেশ্যে বোনাস প্রদানের এই প্রলোভন দেখানো হচ্ছে।
অনুসন্ধানের শুরুতে বোনাসের অফার দেওয়া ওয়েবসাইটটিতে প্রবেশের চেষ্টা করে রিউমর স্ক্যানার টিম। কিন্তু সেসময় ওয়েবসাইট লিংকটি কাজ না করায় প্রবেশ সম্ভব হয়নি।
বিকাশের ওয়েবসাইট ও ভেরিফাইড ফেসবুক পেইজে অনুসন্ধান করে ৭ কোটি গ্রাহক পূর্তি উপলক্ষ্যে বোনাস দেওয়ার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
Screenshot: Bkash Website
পাশাপাশি, নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্রে বিকাশ থেকে এমন বোনাস দেওয়া প্রসঙ্গে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।
বিষয়টি অধিকতর যাচাইয়ের জন্য রিউমর স্ক্যানারের পক্ষ থেকে বিকাশের ওয়েবসাইটের লাইভ চ্যাটের মাধ্যমে শাফায়েত নামক বিকাশের একজন কর্মীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বিকাশের ৭ কোটি গ্রাহক পূর্তি উপলক্ষ্যে বিকাশ দিচ্ছে সব বিকাশ ব্যবহারকারীদের ৭৯৯৯ টাকা বোনাস দেওয়ার কোনো তথ্য তারা প্রকাশ করেনি এবং তিনি এই তথ্যটিকে বানোয়াট উল্লেখ করেছেন।
তিনি আরও জানান, “অনুগ্রহ করে এ ধরনের ভুল তথ্য দ্বারা বিভ্রান্ত হবেন না। বিকাশের তুমুল জনপ্রিয়তার জন্য কিছু অসাধু চক্র বিভিন্ন নকল ওয়েবসাইট তৈরি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বা অন্য কোনো মাধ্যমে নানা ধরনের মিথ্যা অফার দেখিয়ে বিকাশের সুনাম নষ্ট করার চেষ্টা করছে। বর্তমানে বিকাশ এ ধরনের কোনো অফার ঘোষণা করেনি এবং উক্ত অফারগুলোর সাথে বিকাশ-এর কোনো সম্পর্ক নেই। তাই, এসব মিথ্যা অফারের লোভে পড়ে কিংবা প্রতারিত হয়ে এই ধরনের কোনো ওয়েবসাইট অথবা অন্য কোনো মাধ্যমে কোনো লেনদেন করবেন না এবং আপনার বিকাশ একাউন্ট নাম্বার, পিন, ভেরিফিকেশন কোড বা অন্য কোনো তথ্য দিবেন না। এছাড়া এ ধরনের ওয়েবসাইটের লিংক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করা থেকে বিরত থাকবেন। মনে রাখবেন, বিকাশ কখনোই আপনার বিকাশ একাউন্টের পিন ও ভেরিফিকেশন কোড জানতে চায় না।”
মূলত, বিকাশের ৭ কোটি গ্রাহক পূর্তি উপলক্ষ্যে বিকাশ সব ব্যবহারকারীদের ৭৯৯৯ টাকা বোনাস দিচ্ছে দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, বিকাশের পক্ষ থেকে এমন কোনো বোনাস ঘোষণা করা হয়নি। প্রকৃতপক্ষে বিকাশের ওয়েবসাইটের আদলে তৈরি ভুয়া ওয়েবসাইটের মাধ্যমে প্রতারণার উদ্দেশ্যে উক্ত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।
পূর্বে, ঈদুল আযহা উপলক্ষে বিকাশ কর্তৃক ব্যবহারকারীদের ৪৯৯৯ টাকা বোনাস দেওয়ার দাবিতে একটি তথ্য ইন্টারনেটে প্রচার করা হলে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।
সুতরাং, বিকাশের ৭ কোটি গ্রাহক পূর্তি উপলক্ষ্যে বিকাশ সব ব্যবহারকারীদের ৭৯৯৯ টাকা বোনাস দিচ্ছে দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ বানোয়াট ও প্রতারণামূলক।
সম্প্রতি, মাগুরা- ১ আসনের নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান ও হবিগঞ্জ- ৪ আসনের নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমনের আলোচিত দ্বন্দ্ব নিরসনে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মর্তুজা তাদের দুজনকে সাথে নিয়ে একটি লাইভ আলোচনা করেছেন দাবিতে ‘সাকিব সুমনের ঝগড়া মিটিয়ে দিলেন মাশরাফি তিন জন একসাথে লাইভে একি বললেন ভাইরাল ভিডিও’ এবং ‘তিন এমপি একসাথে লাইভে ব্যারিস্টার সুমনকে দেখে ভয় পেলো সাকিব’ শীর্ষক পৃথক দুটি শিরোনামে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন ও ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের আলোচিত দ্বন্দ্ব নিরসনে মাশরাফি বিন মর্তুজা তাদেরকে সাথে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোনো লাইভ আলোচনা করেননি। বরং, ভক্তদের উদ্দেশ্যে সাকিব আল হাসানের দেওয়া একক একটি বক্তব্যের ভিডিওর সাথে ক্রিকেটার তামিম ইকবাল ও মাশরাফি বিন মর্তুজার একটি লাইভ প্রোগামের কিছু অংশ এবং জার্মানিভিত্তিক গণমাধ্যম DW আয়োজিত একটি টকশোর কিছু অংশ কাট করে আলোচিত লাইভ ভিডিও দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।
অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যালোচনা করে রিউমর স্ক্যানার টিম। এতে সাকিব আল হাসানকে বলতে শোনা যায়, ‘আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। কিন্তু আমার মনে হয় তারও সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত ছিল। অবশ্যই খুবই সেনসিটিভ… ভুল-ত্রুটি হবেই। ভুল-ত্রুটি নিয়েই আমরা আসলে জীবনে চলাচল করি। আমার কোনো ভুল হয়ে থাকলে অবশ্যই আমি আপনাদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। আপনাদের মনে কষ্ট দিয়ে থাকলে সেজন্যেও আমি ক্ষমা প্রার্থনা করছি।… অবশ্যই আমি এজন্যে আন্তরিকভাবে দুঃখিত, ক্ষমাপ্রার্থী এবং আমি মনে করি আপনারা এটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। ভবিষ্যতে এ ধরনের কোনো ঘটনার যেন পুনরাবৃত্তি না হয় সেটিও চেষ্টা করবো। এমন কিছু যেন আমরা না করি যাতে মানুষ আমাদেরকে দ্বিধা দ্বন্দ্বে ফেলে দেয় যে আমরা আসলে এক নাকি আলাদা। আমরা যতক্ষণ পর্যন্ত এক থাকবো ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা শক্তিশালী’।
এছাড়াও ভিডিওটিতে মাশরাফিকে বলতে শোনা যায়, “কাপ্তান সাহেব আসসালামু আলাইকুম…সব সমস্যা তুই-ই বাঁধাইয়া দিস… আজকে মনে হচ্ছে কিছু একটা হবে…তুই যে পুংঠার পুংঠা তুই সবাইরে নাড়াইয়া বেড়াস।” তবে পুরো ভিডিওতে ব্যারিস্টার সুমনকে কোনো কথা বলতে দেখা যায় না।
পরবর্তীতে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত লাইভ ভিডিওটিতে ব্যবহৃত ভিডিও ক্লিপগুলোর বিষয়ে অনুসন্ধানে সাকিব আল হাসানের ক্লিপটির কিছু কী-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে Shakib Al Hasan নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ২০২০ সালের ১৬ নভেম্বর প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot: Youtube
উক্ত ভিডিওটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর সাকিব আল হাসানের অংশের বেশকিছু অংশের হুবহু মিল পাওয়া যায়।
Video Comparison by Rumor Scanner
এছাড়াও ভিডিওটি থেকে জানা যায়, ২০২০ সালে বেনাপোল বন্দর ইমিগ্রেশনে একজন ভক্ত সাকিব আল হাসানের সাথে সেলফি তুলতে আসছে সাকিব তার ফোনটি ছুড়ে ফেলে দেওয়ার আলোচিত ঘটনাকে ভিত্তি করে তিনি উক্ত ভিডিও বার্তাটা প্রচার করেন। যেখানে তিনি তার ভক্তদের কাছে উক্ত ঘটনার জন্যে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। যার সাথে ব্যারিস্টার সুমনের সাথে তার আলোচিত দ্বন্দ্বেরের কোনো সম্পর্ক নেই। এছাড়াও ভিডিওটি মাশরাফি ও ব্যারিস্টার সুমনের সাথে করা কোনো লাইভ প্রোগামের নয়।
পরবর্তীতে মাশরাফির ফুটেজটি অনুসন্ধানে আলোচিত ভিডিও থেকে কিছু কী-ফ্রেম নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে ক্রিকেটার তামীম ইকবালের ইউটিউব চ্যানেলে ২০২০ সালের ৫ মে #TI28 Tamim Iqbal Live with Mashrafe Bin Mortaza শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot: Youtube
উক্ত ভিডিওটির সাথে আলোচিত ভিডিওর মাশরাফি বিন মর্তুজার ফুটেজের বেশকিছু অংশের হুবহু মিল পাওয়া যায়।
Video Comparison by Rumor Scanner
এছাড়াও জানা যায়, উক্ত ভিডিওটি প্রচারের সময় ক্রিকেটার তামিম ইকবাল তার ইউটিউব চ্যানেলে দেশি-বিদেশি ক্রিকেটারদের নিয়ে প্রায়ই লাইভ ভিডিও প্রচার করতেন। যেখানে তিনি তাদের সাথে ক্রিকেট নিয়ে নানা ধরনের আলোচনা করতেন।
সর্বশেষ ব্যারিস্টার সুমনের ভিডিওটি অনুসন্ধানে আলোচিত ভিডিওর সুমনের অংশের ফুটেজ থেকে কিছু কী-ফ্রেম নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে ‘DW খালেদ মুহিউদ্দীন জানতে চায়’ নামের ইউটিউব চ্যানেলে গত ১২ জানুয়ারি কে সরকারি কে বিরোধী? শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি সরাসরি সম্প্রচারকৃত ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot: Youtube
উক্ত ভিডিওটির সাথে আলোচিত ভিডিওতে থাকা ব্যারিস্টার সুমনের ফুটেজের কিছু অংশের হুবহু মিল পাওয়া যায়।
Video Comparison by Rumor Scanner
উক্ত ভিডিও থেকে আরও জানা যায়, জার্মানভিত্তিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম DW এর বাংলা বিভাগের প্রধান সাংবাদিক খালেদ মুহিউদ্দীনের জনপ্রিয় টক শো ‘খালেদ মুহিউদ্দীন জানতে চায়’ এ সম্প্রতি গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি ও ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। উক্ত প্রোগ্রামে খালেদ মুহিউদ্দীন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নানা সময়ে চলা আন্দোলন ও সংসদের বিরোধীদল নিয়ে অতিথিদের সাথে নানা আলোচনা করেন। যার সাথে আলোচিত দাবির কোনো সম্পর্ক নেই।
পরবর্তীতে মাশরাফি বিন মর্তুজা আসলেই ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান ও ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমনকে নিয়ে কোনো আলোচনা করেছেন কিনা তা জানতে প্রাসঙ্গিক নানা কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমেও কোনো গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য সূত্রে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
মূলত, ক্রিকেট তারকা সাকিব আল হাসান ২০২৩ সালে ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনকে দেখে মারতে উদ্ধত হন বলে অভিযোগ তুলে সেসময় নিজের ফেসবুক পেজে একটি লাইভ ভিডিও প্রচার করেন ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন। ভিডিওটিতে তিনি জানা, ভারত-বাংলাদেশ সিরিজ চলাকালে হোটেল সোনারগাঁওয়ে উক্ত ঘটনাটি ঘটে। সাম্প্রতিক সময়ে এই দুই ব্যক্তি উভয়ই সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর তাদের পূর্বের দ্বন্দ্বের উক্ত বিষয়টি পুনরায় ইন্টারনেটে ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়ে। যার প্রেক্ষিতে সম্প্রতি, বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মর্তুজা তাদের দুজনকে সাথে নিয়ে একটি লাইভ আলোচনা করে তাদের দ্বন্দ্বের বিষয়টি সুরাহা করে দিয়েছেন দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, মাশরাফি বিন মর্তুজা এমন কোনো লাইভ প্রোগাম করেননি। প্রকৃতপক্ষে, কয়েকটি ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার ভিডিও ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে যুক্ত করে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।
সুতরাং, সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন ও সাকিব আল হাসানের আলোচিত দ্বন্দ্ব নিরসনে মাশরাফি বিন মর্তুজাসহ এই তিন সাংসদের একত্রে লাইভ করার দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত ভিডিওটি এডিটেড বা সম্পাদিত।
দীর্ঘদিন ধরেই কয়েকজন ব্যক্তির ছবিযুক্ত টয়লেটে এক ব্যক্তির মূত্রত্যাগের একটি ছবি কিছু তথ্য জুড়ে দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেদাবি করা হচ্ছে, আইসল্যান্ডে প্রতিবছর দুর্নীতিবাজদের তালিকা প্রকাশ করা হয়। পরবর্তী এক বছরের জন্য দুর্নীতিবাজদের ছবি সারা দেশের টয়লেটগুলোর ইউরিনাল কমোডে এভাবেই রাখা হয়। যাতে করে জনগণ তাদের মুখে প্রস্রাব করে ঘৃণা জানাতে পারেন।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আইসল্যান্ডে প্রতিবছর দুর্নীতিবাজদের তালিকা প্রকাশ করার দাবিটি সঠিক নয় এবং পরবর্তী এক বছরের জন্য দুর্নীতিবাজদের ছবি সারা দেশের টয়লেটগুলোর ইউরিনাল কমোডে টানিয়ে দেওয়ার দাবিটিও মিথ্যা বরং কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই ভিন্ন ঘটনার ছবি যুক্ত করে আলোচিত দাবিটি প্রচার হয়ে আসছে। আলোচিত দাবিগুলো নিয়ে অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে গণমাধ্যমে এসংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
পরবর্তীতে আলোচিত ছবিটি নিয়ে অনুসন্ধান করে রিউমর স্ক্যানার টিম। অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে শেয়ারিং এবং স্টোরেজ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান Getty Images এর ওয়েবসাইটে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot: Getty Images
ছবিটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, আলোচিত ছবিটি ২০০৯ সালের ২৫ এপ্রিল বার্তা সংস্থা এএফপির ফটোগ্রাফার অলিভিয়ার মরিন আইসল্যান্ডের সেন্ট্রাল রিকজাভিকের সোদোমা বারের টয়লেট থেকে তুলেছেন।
ক্যাপশন থেকে আরও জানা যায়, টয়লেটটিতে ওই সব প্রাক্তন ব্যাংক কর্মকর্তাদের ছবি লাগানো হয়েছিল, যারা আইসল্যান্ডে ২০০৮ সালে আর্থিক বিপর্যয়ের পরে পালিয়ে যায়। ওই সময় দেশটির অর্থনৈতিক পতনের সাত মাস পর সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছিল।
এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক গণমাধ্যম Bloomberg ২০১৬ সালের ৩১ মার্চ “This Is Where Bad Bankers Go to Prison” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, আইসল্যান্ডই পৃথিবীর একমাত্র দেশ যারা ২০০৮ সালে আর্থিক সংকটের পর দেশটির শীর্ষ ব্যাংক কর্মকর্তাদের কারাগারে পাঠিয়েছিল।
অর্থাৎ, ২০০৮ সালে ব্যাংক খাতে দুর্নীতির কারণে ব্যাপক আর্থিক সংকটে পড়ে ইউরোপের দ্বীপ রাষ্ট্র আইসল্যান্ড। বিক্ষুব্ধ মানুষ রাস্তায় বেরিয়ে এই ঘটনার প্রতিবাদ করে। ফলে ওই সময় ক্ষমতাসীন সরকারের পতন হয় এবং অনেক ব্যাংক কর্মকর্তাকে দুর্নীতির দায়ে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ওই সময় প্রতিবাদের অংশ হিসেবে দেশটির রাজধানীর একটি বারের টয়লেটে আর্থিক দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত কিছু প্রাক্তন ব্যাংক কর্মকর্তার ছবি লাগিয়ে দেওয়া হয়।
মূলত, আইসল্যান্ডে প্রতিবছর দুর্নীতিবাজদের তালিকা প্রকাশ করা হয় এবং পরবর্তী এক বছরের জন্য দুর্নীতিবাজদের ছবি সারা দেশের টয়লেটগুলোর ইউরিনাল কমোডে টানিয়ে দেওয়া হয়- শীর্ষক দাবিতে কয়েকজন ব্যক্তির ছবিযুক্ত টয়লেটে এক ব্যক্তির মূত্রত্যাগের একটি ছবি দীর্ঘদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত দাবিগুলো সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, আইসল্যান্ড রাষ্ট্রের কর্তৃপক্ষ এমন কোনো তালিকা প্রকাশ করে না এবং আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিটি ২০০৯ সালে ব্যাংক কর্মকর্তাকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদের অংশ। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে আলোচিত দাবিগুলোর বিষয়ে কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি।
সুতরাং, আইসল্যান্ডে প্রতিবছর দুর্নীতিবাজদের তালিকা প্রকাশ করা হয় এবং পরবর্তী এক বছরের জন্য দুর্নীতিবাজদের ছবি সারা দেশের টয়লেটগুলোর ইউরিনাল কমোডে টানিয়ে দেওয়া হয়- শীর্ষক দাবিগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা।
সম্প্রতি, “ডিবি পরিচয়ে মামলার ভয় দেখিয়ে বাগানিদের কাছ থেকে গার্লফ্রেন্ডের জন্য গাছ নিতেন ৩ ফুটের মফিজ!” শীর্ষক শিরোনামে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ‘সময় টিভি’র ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ‘ডিবি পরিচয়ে মামলার ভয় দেখিয়ে বাগানিদের কাছ থেকে গার্লফ্রেন্ডের জন্য গাছ নিতেন ৩ ফুটের মফিজ!’ শীর্ষক তথ্য বা শিরোনামে সময় টিভি কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি বরং গণমাধ্যমটির ফেসবুক পেজে প্রচারিত একটি ফটোকার্ডের শিরোনাম ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে এটি তৈরি করা হয়েছে।
অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম।
ফটোকার্ডটির উপরে ডান কোণে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল সময় টিভি’র লোগো ব্যবহার করা হয়েছে। এই সূত্রে ধরে অনুসন্ধানে কি-ওয়ার্ড সার্চ পদ্ধতি ব্যবহার করে সময় টিভির ওয়েবসাইট, ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে সাম্প্রতিক সময়ে উক্ত তথ্য সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।
এই পোস্টে ব্যবহৃত ফটোকার্ডের সঙ্গে আলোচিত ফটোকার্ডটির ছবি ও শিরোনামের কিছু অংশের মিল খুঁজে পাওয়া যায়।
পরবর্তীতে এই ফটোকার্ডটির সাথে আলোচিত ফটোকার্ডটির তূলনামূলক বিশ্লেষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। এতে বেশ কিছু পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়।
সময় টিভি’র ফটোকার্ডে যুক্ত ছবির সাথে আলোচিত ফটোকার্ডের অমিল
সময় টিভি’র ফটোকার্ডে ব্যবহৃত ছবিটির সাথে আলোচিত ফটোকার্ডের ছবির অমিল রয়েছে। সময় টিভির ফটোকার্ডে সংযুক্ত ছবিতে অভিযুক্ত মফিজের দুই পাশে দুইটি গাছ থাকলেও আলোচিত ফটোকার্ডে ঐ দুইটি গাছের পাশাপাশি আরো দুইটি গাছের ছবি জুড়ে দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া, সময় টিভি’র ফটোকার্ডে যুক্ত ছবিতে কোনো ব্যক্তির ছবিসহ ওয়াটার মার্ক দেখা যায়নি যেখানে আলোচিত ফটোকার্ডের উপরে ডান দিকে ‘Abu Hasan Bhuiyan’ শীর্ষক ওয়াটার মার্ক রয়েছে।
সময় টিভি’র ফটোকার্ড এর সাথে আলোচিত ফটোকার্ড এর ফন্টের অমিল
সময় টিভি’র ফটোকার্ডে ব্যবহৃত ফন্টের সাথে আলোচিত ফটোকার্ডের ফন্টের মিল নেই।
এছাড়া, সময় টিভির ফটোকার্ডের ‘ডিবি পরিচয়ে’ বাক্যাংশের সাথে আলোচিত ফটোকার্ডের প্রথম বাক্যাংশটি মিললেও পরবর্তী অংশে সময় টিভি’র ফটোকার্ডে ‘মামলার ভয় দেখান ৩ ফুট মফিজ’ লেখা যেখানে আলোচিত ফটোকার্ডে লেখা, ‘মামলার ভয় দেখিয়ে বাগানিদের কাছ থেকে গার্লফ্রেন্ডের জন্য গাছ নিতেন ৩ ফুটের মফিজ’।
Photocard Comparison : Rumor Scanner
এসব বিশ্লেষণ থেকে প্রতীয়মান হয় যে, এই ফটোকার্ডটির শিরোনাম ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে ‘মামলার ভয় দেখিয়ে বাগানিদের কাছ থেকে গার্লফ্রেন্ডের জন্য গাছ নিতেন ৩ ফুটের মফিজ’ শীর্ষক বাক্যাংশ যুক্ত করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।
মূলত, ২০২৩ সালের ২১ নভেম্বর রাজবাড়ীতে ডিবি পুলিশ কর্মকর্তা পরিচয়ে মামলা ও গ্রেপ্তারের ভয় দেখিয়ে টাকা দাবির অভিযোগে মো. শামসুর রহমান মফিজ (২৮) নামে ৩ ফুট উচ্চতার এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। উক্ত ঘটনায় ‘ডিবি পরিচয়ে মামলার ভয় দেখান ৩ ফুটের মফিজ’শীর্ষক একটি ফটোকার্ড ও প্রতিবেদন প্রকাশ করে বেসরকারি টিভি চ্যানেল সময় টিভি। পরবর্তীতে সময় টিভির এই ফটোকার্ডটিকেই সম্পাদনা করে ‘মামলার ভয় দেখিয়ে বাগানিদের কাছ থেকে গার্লফ্রেন্ডের জন্য গাছ নিতেন ৩ ফুটের মফিজ’ শীর্ষক শিরোনামে ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।
সুতরাং, সময় টিভি’র নাম ব্যবহার করে ‘ডিবি পরিচয়ে মামলার ভয় দেখিয়ে বাগানিদের কাছ থেকে গার্লফ্রেন্ডের জন্য গাছ নিতেন ৩ ফুটের মফিজ’ শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা এবং আলোচিত ফটোকার্ডটি এডিটেড বা বিকৃত।
সম্প্রতি বাংলাদেশি ক্রিকেটার মুস্তাফিজুর রহমান ইলন বেট নামক জুয়া বিষয়ক অ্যাপের প্রচারণা করেছেন দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ক্রিকেটার মুস্তাফিজুর রহমান ইলন বেট নামক জুয়া বিষয়ক অ্যাপের প্রচারণা করেননি বরং মুস্তাফিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে ছবি এবং ভিডিও সংগ্রহ করে ডিজিটাল পদ্ধতির সাহায্যে সম্পাদনার মাধ্যমে বিজ্ঞাপনটি তৈরি করা হয়েছে।
ভিডিও যাচাই
বিজ্ঞাপনের দেখানো ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে মুস্তাফিজের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে ২০২১ সালের ২৬ আগস্ট প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।
উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর দৃশ্যের মিল খুঁজে পাওয়া যায়।
Video Comparison: Rumor Scanner
ভিডিও থেকে জানা যায়, মুস্তাফিজুর রহমান করোনাকালীন সময়ে কফি খাচ্ছিলেন এবং নিজের বোলিং এর হাইলাইটস দেখছিলেন।
ভিডিওতে মুস্তাফিজের ফোনের ডিসপ্লেতে ইলন বেট অ্যাপের কোনো দৃশ্য দেখা যায়নি।
ছবি যাচাই
বিজ্ঞাপনের দেখানো ছবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে মুস্তাফিজের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে ২০২২ সালের ১ অক্টোবর প্রকাশিত একটি ছবি খুঁজে পাওয়া যায়।
Video Comparison: Rumor Scanner
উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর দৃশ্যের মিল খুঁজে পাওয়া যায়। তবে ছবিতে ইলন বেট অ্যাপের কোনো দৃশ্য দেখা যায়নি এবং তার ফোনের ডিসপ্লেটি বন্ধ ছিলো।
এছাড়া, দেশিয় এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বেট নামক জুয়া বিষয়ক অ্যাপের সাথে মুস্তাফিজুর রহমানের সম্পৃক্ত থাকার ব্যাপারে কোনো তথ্য অনুসন্ধানে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
মূলত, বাংলাদেশি ক্রিকেটার মুস্তাফিজুর রহমান ইলন বেট নামক জুয়া বিষয়ক অ্যাপের প্রচারণা করেছেন দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভিডিওটি মুস্তাফিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে বিভিন্ন সময়ে প্রকাশ করা ছবি এবং ভিডিও সংগ্রহ করে ডিজিটাল পদ্ধতির সাহায্যে সম্পাদনার তৈরি করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, মুস্তাফিজুর রহমানের সাথে ইলন বেট নামক জুয়া বিষয়ক অ্যাপের কোনো সম্পৃক্ততা খুঁজে পাওয়া যায়নি।
সুতরাং, ক্রিকেটার মুস্তাফিজুর রহমানের ইলন বেট নামক জুয়া বিষয়ক অ্যাপের প্রচারণা চালানোর দাবিটি মিথ্যা এবং একই দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত ভিডিওটি সম্পাদিত।
গত ৭ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ ও ফলাফলকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম ইউটিউবে “সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ফলাফল বাতিল পুনরায় নির্বাচনের ঘোষণা দিলো সিএসসি” শীর্ষক থাম্বনেইল ও প্রায় সমজাতীয় শিরোনামে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।
এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি ভিডিওটি প্রায় ৩৭ হাজার বার দেখা হয়েছে। ভিডিওটিতে প্রায় ১ হাজার ৩ শত পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, হাইকোর্ট কর্তৃক নির্বাচনী ফলাফল বাতিলের কোনো নির্দেশ দেওয়া হয়নি এবং পুনরায় নির্বাচনের তারিখও ঘোষণা দেননি প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল বরং গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা -৪ আসনের ভোটের ফলাফল হাইকোর্ট কর্তৃক স্থগিতাদেশের বিষয়টিকে অধিক ভিউ পাওয়ার আশায় চটকদার থাম্বনেইলে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।
অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। উক্ত ভিডিওটির শুরুতে কয়েকটি সংবাদ প্রতিবেদনের ভিডিও ক্লিপ দেখানো হয়। পরবর্তীতে আলোচিত দাবিটি প্রসঙ্গে ব্যারিস্টার ফুয়াদের একটি ভিডিও দেখানো হয়। তবে পুরো ভিডিওর কোথাও হাইকোর্ট কর্তৃক ফলাফল বাতিল কিংবা সিইসির নির্বাচনের নতুন তারিখ ঘোষণা সংক্রান্ত কোনো তথ্য কিংবা দৃশ্যের উল্লেখ পাওয়া যায়নি।
পরবর্তীতে ভিডিওটিতে প্রচারিত ভিডিও ক্লিপগুলো পৃথকভাবে যাচাই করেছে রিউমর স্ক্যানার টিম।
ভিডিও যাচাই ০১ ও ০২
অনুসন্ধানে আলোচিত ভিডিওটিতে যুক্ত প্রথম দুটি ভিডিও ক্লিপই গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা- ৪ আসনের নির্বাচনের ফলাফল স্থগিতের বিষয়ে এনটিভি ও একুশে টেলিভিশনের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত সংবাদ প্রতিবেদন (১,২) থেকে নেওয়া৷
Video Comparison : Rumor Scanner Video Comparison : Rumor Scanner
উল্লেখিত প্রতিবেদন গুলোতে গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পোলিং এজেন্টদের মারধর, কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়াসহ ভোটে অনিয়মের অভিযোগ ওঠায় ঢাকা-৪ আসনের ফলাফলের গেজেট প্রকাশে হাইকোর্টের দেওয়া স্থগিতাদেশের বিষয়ে বলা হয়েছে।
ভিডিও যাচাই ০৩
আলোচিত ভিডিওটিতে প্রচারিত ৩য় ভিডিও ক্লিপটির অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক কিওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ডিবিসি নিউজের ইউটিউব চ্যানেলে ২০২১ সালের ১০ জুন “খুলনা বিভাগের ১১৯ টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন স্থগিত” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
এই ভিডিওটির সাথে আলোচিত ভিডিওর একটি অংশের হুবহু মিল পাওয়া যায়।
Video Comparison : Rumor Scanner
উক্ত প্রতিবেদনে ওই সময় করোনাভাইরাসের প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় নির্বাচন কমিশনার কর্তৃক খুলনা বিভাগের ১১৯টি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচন স্থগিতের বিষয়ে বলা হয়েছে।
ভিডিও যাচাই ০৪
আলোচিত ভিডিওটিতে যুক্ত সর্বশেষ ভিডিওটির অনুসন্ধানে কিওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে বার্তা বাজার নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলে গত ১ জানুয়ারি “বাংলাদেশে সেংশন কবে আসবে জানালেন ব্যারিস্টার ফুয়াদ” শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।
এই ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওর একটি অংশের হুবহু মিল পাওয়া যায়।
Video Comparison : Rumor Scanner
উক্ত ভিডিওতে ব্যারিস্টার ফুয়াদকে সরকার ব্যাবস্থা এবং বিভিন্ন রাষ্ট্রের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্কের বিষয়ে নিজস্ব মতামত ব্যক্ত করতে দেখা যায়।
অর্থাৎ, এই ভিডিওগুলোর সাথে আলোচিত দাবির কোনো সম্পর্ক নেই।
পাশাপাশি, গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে হাইকোর্টের নির্দেশে নির্বাচনের ফলাফল বাতিল কিংবা নির্বাচন কমিশন কর্তৃক পুনরায় নির্বাচন ঘোষণার দাবির সত্যতা পাওয়া যায়নি।
মূলত, গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত নির্বাচনে ঢাকা- ৪ আসনে পোলিং এজেন্টদের মারধর, কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়াসহ ভোটে অনিয়মের অভিযোগ ওঠায় ওই আসনের ফলাফলের গেজেট প্রকাশে স্থগিতাদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এই বিষয়টি নিয়ে একাধিক গণমাধ্যমের ওয়েবসাইটে সংবাদসহ ভিডিও প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়। উক্ত ঘটনার দুইটি প্রতিবেদনসহ একাধিক ভিন্ন ঘটনার ভিডিও যুক্ত করে তাতে “সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ফলাফল বাতিল পুনরায় নির্বাচনের ঘোষণা দিলো সিএসসি” শীর্ষক থাম্বনেইলে প্রচার করা হচ্ছে। তবে রিউমর স্ক্যানার যাচাই করে দেখেছে যে আলোচিত দাবিগুলো ভিত্তিহীন। প্রকৃতপক্ষে অধিক ভিউ পাওয়ার আশায় চটকদার থাম্বনেইলে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ০৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৯৮টি আসনের মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যক ২২২টি আসনে জয়ী হয় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। এ ছাড়া জাতীয় পার্টি ১১টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) ১টি, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি ১টি, বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টি ১টি এবং স্বতন্ত্র পদে মোট ৬২ টি আসনে জয়লাভ করেন প্রার্থীরা।
সুতরাং, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে নির্বাচনের ফলাফল বাতিল এবং ইসি পুনরায় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছে দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যগুলো মিথ্যা।
সম্প্রতি, ‘ফেব্রুয়ারিতে রোজা হওয়ায় মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষা পিছিয়ে এপ্রিলের ১ তারিখ থেকে শুরু হবে’ শীর্ষক দাবিতে একটি তথ্য শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটকে প্রচার করা হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, রোজার কারণে এসএসসি পরীক্ষা পিছিয়ে এপ্রিলের ১ তারিখ থেকে শুরু হওয়ার দাবিটি সঠিক নয় বরং এসএসসি পরীক্ষা পূর্বনির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকেই শুরু হবে।
অনুসন্ধানের শুরুতে কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে মূলধারার গণমাধ্যম প্রথম আলো’র অনলাইন সংস্করণে ২০২৩ সালের ২১ ডিসেম্বর ‘এসএসসি ২০২৪ পরীক্ষার রুটিন’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০২৪ সালে এসএসসি পরীক্ষা আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হবে।
পরবর্তীতে ‘মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড, ঢাকা’র ওয়েবসাইটে গত ২১ ডিসেম্বর প্রকাশিত ২০২৪ সালের এসএসসি পরীক্ষার সময়সূচি খুঁজে পাওয়া যায়।
Routine Collage by Rumor Scanner
উক্ত সময়সূচি অনুযায়ী এ বছরের এসএসসি পরীক্ষা আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের ১৫ তারিখ শুরু হবে। আর পরীক্ষা শেষ হবে আগামী ১২ মার্চ। ব্যবহারিক পরীক্ষা আগামী ১৩ মার্চ থেকে ২০ মার্চের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে।
এছাড়াও, গণমাধ্যম, শিক্ষা মন্ত্রনালয় কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্য কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে এখন পর্যন্ত রোজার কারণে চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষার সময়সূচি পরিবর্তন সম্পর্কিত কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।
মূলত, সম্প্রতি ‘ফেব্রুয়ারিতে রোজা হওয়ায় মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষা পিছিয়ে এপ্রিলের ১ তারিখ থেকে শুরু হবে’ শীর্ষক দাবিতে একটি তথ্য টিকটকে প্রচার করা হয়েছে। তবে অনুসন্ধানে উক্ত দাবিটি’র সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি। প্রকৃতপক্ষে, এসএসসি পরীক্ষা পূর্বনির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হবে।
উল্লেখ্য, পূর্বে ২০২৪ সালের এসএসসি পরীক্ষার ভুয়া রুটিন প্রচার করা হলে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।
সুতরাং, ফেব্রুয়ারিতে রোজা হওয়ায় চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষা পিছিয়ে এপ্রিলের ১ তারিখ থেকে শুরু হওয়ার তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।