সম্প্রতি অতি বৃষ্টি ও ভারত থেকে আসা পাহাড়ি ঢলের ফলে ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, চট্টগ্রাম ও খাগড়াছড়ি জেলার কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এই বন্যাকবলিত এলাকাগুলোর করুণ চিত্র তুলে ধরে সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন ছবি ও ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
এর মধ্যে “ফেনিতে বন্যা কবলিত মানুষদের জন্য আলভারেজের ১ মিলিয়ন ইউরো দান” শীর্ষক তথ্যে বা শিরোনামে যমুনা টেলিভিশন এর ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ফেনীর বন্যার্তদের আর্জেন্টাইন ফুটবলার জুনিয়র আলভারেজ ১ মিলিয়ন ইউরো দান করেছেন দাবিতে যমুনা টিভি বা অন্য কোনো গণমাধ্যম এমন কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি বরং, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে আলোচিত ফটোকার্ড তৈরি করা হয়েছে।
অনুসন্ধানে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে ফটোকার্ডটিতে যমুনা টিভির লোগো এবং এটি প্রকাশের তারিখ হিসেবে ২৪ আগস্ট, ২০২৪ উল্লেখ পাওয়া যায়।
Screenshot: Facebook
উক্ত তথ্যের সূত্রে যমুনা টিভি‘র ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে প্রচারিত ফটোকার্ডগুলো পর্যালোচনা করে উক্ত শিরোনাম সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া, যমুনা টিভি’র ওয়েবসাইট, ইউটিউব চ্যানেল বা অন্য কোনো গণমাধ্যমেও উক্ত দাবির বিষয়ে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।
তবে, আলোচিত ফটোকার্ডের বিষয়ে ২৬ আগস্ট যমুনা টিভির ফেসবুক পেজে থেকে প্রচারিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot: Jamuna Television’s Facebook Post
উক্ত পোস্টে যমুনা টিভি এমন কোনো সংবাদ প্রচার করেনি জানিয়ে গুজবে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান করা হয়।
পাশাপাশি, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে আলোচিত দাবি সমর্থিত কোনো তথ্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও পাওয়া যায়নি।
সুতরাং, ফেনীর বন্যার্তদের আর্জেন্টাইন ফুটবলার জুনিয়র আলভারেজ ১ মিলিয়ন ইউরো দান করার তথ্যটি মিথ্যা এবং উক্ত দাবিতে যমুনা টিভির নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি ভুয়া ও বানোয়াট।
সম্প্রতি অতি বৃষ্টি ও ভারত থেকে আসা পাহাড়ি ঢলের ফলে ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, চট্টগ্রাম ও খাগড়াছড়ি জেলার কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এই বন্যাকবলিত এলাকাগুলোর করুণ চিত্র তুলে ধরে সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন ছবি ও ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
এর মধ্যে বন্যার পানিতে বিয়ে করেছেন এক দম্পতি- শীর্ষক দাবিতে দুইটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বন্যার পানিতে দম্পতির বিয়ের ছবিগুলো সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং, এগুলো ২০২০ সালে পটুয়াখালীতে মো. মহিউদ্দিন ফকির নামে এক ব্যক্তির গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানের ছবি।
এছাড়া একই তারিখে জাগোনিউজ২৪ এর ওয়েবসাইটে একই শিরোনামে প্রকাশিত আরেকটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
উক্ত প্রতিবেদনগুলোতে থাকা ছবিগুলোর সাথে আলোচিত ছবিগুলোর মিল রয়েছে।
Image Comparison By Rumor Scanner
প্রতিবেদনগুলো থেকে জানা যায়, পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার লালুয়া ইউনিয়ন শাখা ছাত্রলীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন ফকির ২০২০ সালের ২২ আগস্ট জোয়ারের পানিতে বাড়ির উঠানে চেয়ার পেতে তার গায়ে হলুদের আয়োজন করেন। আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিটি সেই সময়কার।
সুতরাং, ২০২০ সালে বন্যার পানিতে গায়ে হলুদ অনুষ্ঠানের ছবিকে সাম্প্রতিক সময়ের দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।
গত ২২ আগস্ট ঢাকার আদাবর থানায় বাংলাদেশ জাতীয় দলের অলরাউন্ডার ও মামলায় মাগুরা–১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাকিব আল হাসানের বিরুদ্ধে পোশাক শ্রমিক মো. রুবেলকে হত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে মামলা করা হয়।
এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি “এবার সাকিবের বিরুদ্ধে তিন পাকিস্তানি হত্যার অভিযোগ” শীর্ষক তথ্যে বা শিরোনামে এনটিভির ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, এবার সাকিবের বিরুদ্ধে তিন পাকিস্তানি হত্যার অভিযোগ- শীর্ষক তথ্যে বা শিরোনামে এনটিভি বা অন্য কোনো গণমাধ্যম এমন কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি বরং, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।
অনুসন্ধানে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণে এতে এনটিভির লোগো এবং এটি প্রকাশের তারিখ হিসেবে ২৫ আগস্ট, ২০২৪ উল্লেখ পাওয়া যায়।
Screenshot: Facebook
উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে এনটিভির ফেসবুক পেজে প্রচারিত ফটোকার্ডগুলো পর্যালোচনা করে উক্ত শিরোনাম সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও এনটিভির ওয়েবসাইট, ইউটিউব চ্যানেল বা অন্য কোনো গণমাধ্যমেও উক্ত দাবি সমর্থিত কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।
তবে আলোচিত ফটোকার্ডের বিষয়ে এনটিভির ফেসবুক পেজে গত ২৫ আগস্ট “এই গ্রাফিক কার্ডটি এনটিভির নয়” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot: Ntv Facebook Page
উক্ত পোস্টের কমেন্ট সেকশনে থাকা প্রতিবেদনে গণমাধ্যমটির পক্ষ থেকে এমন গুজবে কান না দিয়ে পাঠক, দর্শক, শ্রোতাদের এনটিভি অনলাইনের ওয়েবসাইট ntvbd.com, এনটিভির অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ, এক্স হ্যান্ডেল অ্যাকাউন্ট, ইনস্টাগ্রাম, লিংকডইন, ইউটিউবে চোখ রাখার জন্য অনুরোধ জানানো হয়।
অর্থাৎ, আলোচিত ফটোকার্ড এনটিভি কর্তৃক প্রকাশিত নয়।
পাশাপাশি, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে অন্য কোনো গণমাধ্যমেও এসংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
সুতরাং, ‘এবার সাকিবের বিরুদ্ধে তিন পাকিস্তানি হত্যার অভিযোগ’ শীর্ষক শিরোনামে এনটিভির নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি ভুয়া ও বানোয়াট।
জুলাই মাসে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৯ দফা দাবির কর্মসূচি চলাকালে “যমুনা টেলিভিশনের সাংবাদিক” শীর্ষক দাবিতে এক ব্যক্তির একটি প্রতিবাদী বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
বক্তব্যে ব্যক্তিটিকে বলতে শোনা যায়, কেমনে মানুষের সামনে মানুষকে মারা হয়? প্রশাসন থাকতে কেমনে নিরস্ত্র ছাত্রদের সামনে হাত তোলা হয়? কীভাবে হয় এটা? আমি তো কেউ না৷ আমি কোটা নিয়ে যুদ্ধ করতে আসি নাই৷ আমি সাধারণ একজন জনগণ। আমি আমার চাকরিতে যাচ্ছিলাম। আমার কেন এসব সহ্য করতে হচ্ছে? আমি তো আন্দোলনে নামি নাই। আমার কেন রক্তাক্ত হতে হলো? আমি তো আন্দোলনে নামি নাই। আমি তো কোনো দল করি না। আমার কেন এগুলো দেখতে হলো? কেন এখানে ককটেল ফুটানো হচ্ছে পুলিশ এখানে দাঁড়িয়ে আছে? পিছনে ক্যামেরা দেন। পুলিশের পুরা বাহিনী এখানে দাঁড়ানো। আমার রাস্তায় ককটেল ফুটানো হচ্ছে আমাদের ওপরে। আমার ছাত্ররা কেন এখানে রক্তাক্ত হবে, আমার ভাইবোনরা কেন রক্তাক্ত হবে? আল্লাহর কাছে জবাব দিবা তোমরা সবাই। আমি কোনো নেতা না, আমি কোনো পলিটিশিয়ান না, আমি কোনো কোটা যোদ্ধা না, আমি কোনো কোটার জন্য আসি নাই। আমি শুধু আমার চাকরির ক্ষেত্রে যাচ্ছিলাম৷ আমি শুধু আমার চাকরির স্থানে যেতে চাচ্ছিলাম। আমার কেন রক্তাক্ত হতে হলো? এটা আমার দেশ। আমি কোনো যোদ্ধা না, এটা আমার দেশ…
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত এই ব্যক্তি যমুনা টেলিভিশনের সাংবাদিক নন বরং, তিনি একজন শিক্ষাবিষয়ক কনটেন্ট ক্রিকেটর।
অনুসন্ধানে গত ১৭ আগস্ট সময় টিভি’র ফেসবুকে পেজ সময়ের গল্পে “আমাকে অন্য চ্যানেলের সাংবাদিক হিসেবে ভাইরাল করা হয়েছে!” শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি সাক্ষাৎকার খুঁজে পাওয়া যায়।
উক্ত সাক্ষাৎকারে উপস্থিত অতিথির চেহারার সাথে আলোচিত ভিডিওতে থাকা ব্যক্তির চেহারার মিল রয়েছে।
Video Comparison By Rumor Scanner
উক্ত সাক্ষাৎকারে সময় টিভি’র সাংবাদিক অতিথিকে আলোচিত ভিডিওটি দেখিয়ে প্রশ্ন করেন, উক্ত ভিডিওতে থাকা ব্যক্তি তিনি কি না?
উত্তরে অতিথি ফায়েদ আবরার মজুমদার বলেন, হ্যাঁ! এটি আমি।
পরবর্তীতে সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, আপনাকে একটি টেলিভিশন চ্যানেলের সাংবাদিক বলে দাবি করা হচ্ছে।
ফায়েদ আবরার মজুমদার উত্তরে বলেন, আমার সাথে যমুনা টেলিভিশনের কোনো সম্পর্ক নেই। আমি সাধারণ একজন ইংরেজির শিক্ষক।
এরপর ফায়েদ আবরার মজুমদার এর ফেসবুক পেজ পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, তিনি বিভিন্ন সেচ্ছাসেবী ও শিক্ষাবিষয়ক কনটেন্ট তৈরি করেন।
অর্থাৎ, তিনি যমুনা টেলিভিশনের সাংবাদিক নন।
সুতরাং, শিক্ষাবিষয়ক কনটেন্ট ক্রিকেটর ফায়েদ আবরার মজুমদারকে যমুনা টিভির সাংবাদিক দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের গণআন্দোলনের মুখে গত ০৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ ছেড়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরই প্রেক্ষিতে, শেখ হাসিনাকে নিয়ে আরবী সংবাদ দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওতে শেখ হাসিনাকে নিয়ে সংবাদ পাঠের দাবিটি সঠিক নয় বরং, ভিডিওটি সম্পাদনার মাধ্যমে তাতে শেখ হাসিনার ছবি যুুক্ত করে আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে হয়েছে। এছাড়া, ভিডিওটিতে সংবাদ উপস্থাপকের ভাষা আরবী নয়, কাজাখ।
অনসন্ধানের শুরুতে ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে এতে, ‘ИНФОРМБЮРО’ নামে একটি লোগো দেখতে পাওয়া যায়। এর সূত্রে ২০১৭ সালের ২৮ আগস্ট কাজাখ সংবাদ ও বিনোদনধর্মী টেলিভিশন চ্যানেল ‘31 Канал’ ইউটিউব চ্যানেলে ‘Ведущий новостей “Информбюро” говорит скороговорки на казахском языке’ শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়। শিরোনামটি বাংলা অনুবাদ করলে দাড়ায়, ইনফর্মব্যুরোর (Информбюро) সংবাদ উপস্থাপক কাজাখ ভাষায় টাং/জিহ্বা টুইস্টার করছেন। এই ভিডিওটি’র প্রথম ১৮ সেকেন্ড সময়ের দৃশ্যে শেখ হাসিনার ছবি যুক্ত করে প্রচার করা হয়েছে।
Comparison: Rumor Scanner
সুতরাং, কাজাখ ভাষায় সংবাদ উপস্থাপনার ভিডিওকে শেখ হাসিনাকে নিয়ে আরবী সংবাদ দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং ভিডিওটি সম্পাদিত।
গত ০৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পদত্যাগের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের দীর্ঘ শাসনামলের অবসান ঘটে৷ সরকারবিহীন পরের তিনদিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে রাজনৈতিক হামলা হয়েছে। হত্যা, ভাংচুর, পুড়িয়ে দেওয়া, লুটপাটের অসংখ্য খবরও প্রকাশ্যে আসে। হামলা হয় বিভিন্ন ধর্মের অনুসারীদের বাসা এবং স্থাপনায়ও। এরই প্রেক্ষিতে, নতুন বাংলাদেশে হিন্দু শিক্ষিকার গায়ে হাত শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, হিন্দু শিক্ষিকার গায়ে হাত তোলার দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর নারী হিন্দু নন বরং তিনি মুসলিম ধর্মের অনুসারী।
উক্ত ভিডিওর বিষয়ে অনুসন্ধানে যমুনা টিভির ইউটিউবে চ্যানেলে ১৬ আগস্ট “অধ্যক্ষের চেয়ারে বরখাস্তকৃত উপাধ্যক্ষ, টেনে নামালেন শিক্ষকরা” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত দৃশ্যের সাদৃশ্য পাওয়া যায়।
Video Comparison: Rumor Scanner
ভিডিও থেকে জানা যায়, কুষ্টিয়া ইসলামিয়া কলেজে গিয়ে হঠাৎ অধ্যক্ষের চেয়ারে বসে পড়েন বরখাস্তকৃত উপাধ্যক্ষ সাবিনা ইয়াসমিন। পরবর্তীতে শিক্ষক টিপু সুলতানসহ কর্মচারীরা তাকে সরাতে চেষ্টা করেন।
জাতীয় দৈনিক প্রথম আলো’র এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, কুষ্টিয়া ইসলামিয়া কলেজের উপাধ্যক্ষ সাবিনা ইয়াসমিন কলেজে যোগ দিতে গিয়ে লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনায় তিনি কলেজের শিক্ষক টিপু সুলতানসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে কুষ্টিয়া মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
লিখিত অভিযোগে সাবিনা ইয়াসমিন উল্লেখ করেন, ২০১৯ সালে তিনি উপাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্বে থাকাকালে কলেজের তৎকালীন পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি অন্যায়ভাবে তাঁকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেন। গত ১৪ আগস্ট দুপুরে জেলা প্রশাসনের এক চিঠির আদেশে তিনি স্বপদে যোগ দিতে যান। এ সময় কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হাবিবুল ইসলামসহ বেশ কয়েক শিক্ষক তাঁকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও বিশৃঙ্খলা তৈরি করেন। একপর্যায়ে দর্শন বিভাগের শিক্ষক টিপু সুলতান তাঁর মুঠোফোন কেড়ে নিয়ে ভেঙে ফেলেন। এরপর তাঁকে টেনেহিঁচড়ে মারধর করে কলেজ থেকে বের করে দেন।
সুতরাং, হিন্দু শিক্ষিকার গায়ে হাত তোলার দাবিতে মুসলিম নারীকে হেনস্তা করার ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের পর গত ০৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের সরকার পতনের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চিত্রকর্ম আঁকা হয়। চট্টগ্রামের জি ই সি মোড়ে ইসলামি ক্যালিগ্রাফি আঁকা হয়। উক্ত ক্যালিগ্রাফি মুছে ফেলা হয়েছে- শীর্ষক একটি দাবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
সম্প্রতি, এক নারীর আপত্তিকর দৃশ্যের একটি ছবি ইন্টারনেটে প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে, তিনি কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের সদ্য সাবেক মেয়র তাহসীন বাহার সূচনা। ভিডিওটি গত ১৭ আগস্ট Atika Binte Hossain নামক একটি ফেসবুক পেজ থেকে শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, “আমাদের দলের মেয়র কুমিল্লার রসমালাই। এই পোস্ট টি ১০০০ শেয়ার দেখতে চাই তারপর ভিডিও আপলোড দিব।’
ফেসবুকে উক্ত দাবিতে প্রচারিত পোস্ট দেখুন দেখুন, এখানে (আর্কাইভ)।
এছাড়া, একই ছবি ইউটিউবে থাম্বনেল হিসেবে Nur Fact নামক ইউটিউব চ্যানেলেও ব্যবহার করা হয়।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ভিডিওটিতে যে নারীকে দেখা যাচ্ছে তিনি তাহসীন বাহার সূচনা নন বরং ভিন্ন এক নারীর আপত্তিকর ছবির মুখের স্থলে তাহসীন বাহারের মুখ ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় বসিয়ে এই ছবিটি তৈরি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে Indian Housewife’s নামক একটি ফেসবুক পেজে ২০১৮ সালের ৩ আগস্ট প্রকাশিত একটি ছবি (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়।
Image Comparison: Rumor Scanner
ছবিতে নগ্ন অবস্থায় যে নারীকে দেখা যায়, তার চেহারার সাথে আলোচিত ছবির নারীর চেহারার মিল খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে উক্ত নারীর পেছনের দেয়াল, ছাদের রংসহ আনুষঙ্গিক অন্যান্য বিষয়বস্তুর সাথে তাহসীন বাহারের ছবি দাবিতে প্রচারিত দৃশ্যের মিল খুঁজে পাওয়া যায়।
সুতরাং, ভিন্ন এক নারীর আপত্তিকর ছবিতে তাহসীন বাহারের মুখ বসিয়ে ছবিটি তাহসীন বাহারের দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিকৃত।
ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে বাংলাদেশের কয়েকটি জেলায় আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এই পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করে পুরোনো ও ভিন্ন ঘটনা বা প্রেক্ষাপটের ছবি-ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার হচ্ছে, ছড়াচ্ছে বিভ্রান্তিকর নানা তথ্যও। এর প্রেক্ষিতে রিউমর স্ক্যানারের এই লাইভ আপডেটে আপনাকে স্বাগত।
ফ্যাক্ট: চলমান বন্যা ইস্যুতে মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা নিরূপণ বা স্বাধীনভাবে যাচাই সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে তাই গণমাধ্যম সূত্রে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য নিম্নে তুলে ধরা হলো –
সরকারি হিসাব – ২৩ জন। ছয়জন কুমিল্লায়, চট্টগ্রামে পাঁচজন, নোয়াখালীতে পাঁচজন, কক্সবাজারে তিনজন, ফেনীতে একজন, খাগড়াছড়িতে একজন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একজন এবং লক্ষ্মীপুরে একজন। (২৬ আগস্ট দুপুর)
৪১/ দাবি: বন্যা পরিস্থিতিতে ভারতের দায় থাকার অভিযোগের প্রেক্ষাপটে ভারতে গ্যাস সরবরাহ (লাইন) বন্ধ করে দিয়েছে বাংলাদেশ।
ফ্যাক্ট: এই দাবিটি ছড়াচ্ছে একটি এক্স পোস্ট এবং একটি ভিডিওকে কেন্দ্র করে৷ আয়রন ক্ল্যাড নামের এক্স অ্যাকাউন্টটি থেকে গতকাল এক পোস্টে দাবি করা হয়, “ভারতের সেভেন সিস্টারে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে বাংলাদেশ।” এরা কী গ্যাস তা অবশ্য পরিস্কার করেনি। এই অ্যাকাউন্টটি অবশ্য প্রোপাগাণ্ডা ছড়াতে সিদ্ধহস্ত৷ এই পোস্টের পর এরা আরেক পোস্টে দাবি করছে, ভারত সরকার নাকি সকল এনজিওকে বলেছে বাংলাদেশে যাতে কোনো ত্রাণ সহায়তা না পাঠানো হয়। আদতে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে এমন কোনো নির্দেশনাই আসেনি। ভারতের একজন ফ্যাক্টচেকারও রিউমর স্ক্যানারকে জানিয়েছেন, এমন কোনও খবর তাদের চোখে পড়েনি। তিনি বলছিলেন, “কূটনীতিক দোনামনা থাকলেও এমন পরিস্থিতিতে এই ধরনের কোনও নির্দেশনা বা সিদ্ধান্ত অবাস্তব মনে হয়। আজগুবি। সার্চ করেও এই এক্স পোস্ট ছাড়া এই সংক্রান্ত আর কিছু দেখলাম না।” তিনি আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন আমাদের। বলছিলেন, “আগেও মনে হয় আন্তর্জাতিক স্তরে গুজব ছড়িয়েছে এই হ্যান্ডলটা। সরকারিভাবে ইন্ডিয়ায় ব্যান করা।”
ভিডিও যেটি ছড়াচ্ছে, তার মূল সোর্স অবশ্য এখনও অনুসন্ধান চলছে। পেলে এই পোস্টেই আপডেট করে জানানো হবে।
গ্যাস সরবরাহ বন্ধের দাবিটি নিয়ে প্রাথমিক অনুসন্ধানে রিউমর স্ক্যানার দেখেছে, ২০২২ সালের জুনে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতিক্রমে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে ৮২ মেট্রিক টন তরল পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) ভারতে পাঠানো হয়। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোর চাহিদা মেটাতে ৮ জুন এসব গ্যাস ইন্ডিয়ান অয়েল করপোরেশনের অধীনে ত্রিপুরা রাজ্যের বিশালগড়ের প্লান্টে সরবরাহ করা হয়।
এই সরবরাহের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয় তারও বছর তিনেক আগে। ২০১৯ সালে বাংলাদেশের সেসময়ের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি সফরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাতের সময় উভয় দেশের মধ্যে এক সমঝোতা হয়। সে অনুযায়ী বাংলাদেশ ত্রিপুরার ইন্ডিয়ান করপোশেনের (ওএনজিসি) বিশালগড় বটলিং প্লান্টে ট্যাংকারে করে এলপিজি সরবরাহে সম্মত হয়। ওই সমঝোতা অনুসারে বাংলাদেশের ব্যক্তি মালিকানাধীন ওমেরা, বেক্সিমকো ও বিএম এনার্জি পেট্রোলিয়ামের মাধ্যমে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোর জন্য এলপিজি আমদানি করছে ইন্ডিয়ান অয়েল করপোরেশন। ২০২২ সালের পর আর এলপিজি গ্যাস পাঠানো হয়েছে কিনা এ বিষয়ে গণমাধ্যম সূত্রে কোনো তথ্য পাওয়া যায়না।
তবে ভারতে বাংলাদেশ থেকে কখনোই প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহ করা হয়নি। এ বিষয়টি রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করেছেন সরকারের জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব মোঃ নূরুল আলম।
তথ্যসূত্র: রিউমর স্ক্যানারের বিশ্লেষণ
সময়: ২৬ আগস্ট সকাল ০৯:১৬ মিনিট
জিজ্ঞাসা: চলমান বন্যায় কতজন মারা গেছেন?
ফ্যাক্ট: চলমান বন্যা ইস্যুতে মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা নিরূপণ বা স্বাধীনভাবে যাচাই সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে তাই গণমাধ্যম সূত্রে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য নিম্নে তুলে ধরা হলো –
সরকারি হিসাব – ২০ জন। কুমিল্লায় ৬ জন, চট্টগ্রামে ৫, নোয়াখালীতে ৩, কক্সবাজারে ৩ এবং ফেনী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও লক্ষ্মীপুরে একজন। (২৫ আগস্ট সন্ধ্যা)
ফ্যাক্ট: চলমান বন্যা ইস্যুতে মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা নিরূপণ বা স্বাধীনভাবে যাচাই সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে তাই গণমাধ্যম সূত্রে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য নিম্নে তুলে ধরা হলো –
সরকারি হিসাব – ১৮ জন। চট্টগ্রামে ৫ জন, কুমিল্লায় ৪ জন, নোয়াখালীতে ৩ জন, কক্সবাজারে ৩ জন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১ জন, ফেনীতে ১ জন ও লক্ষ্মীপুরে ১ জন। (২৪ আগস্ট দুপুর)
ফ্যাক্ট: ফান্ড রাইজ করে নোয়াখালী মেডিকেল কলেজ শিক্ষার্থীদের কেনা ত্রাণসামগ্রী প্রস্তুতির ছবিকে নিজেদের বলে প্রচার করা হয়েছে আওয়ামী লীগের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে।
৩৯/ দাবি: ছবিতে থাকা শিশুর পরিবারের সবাই মারা গেছে।
ফ্যাক্ট: ছবিটির ফটোগ্রাফার নাজমুল হাসান তপন জানিয়েছেন, বাচ্চা ও তার পরিবার সুস্থ আছেন।
তথ্যসূত্র : ফটোগ্রাফারের বক্তব্য।
৩৮/ দাবি: পবিত্র জুম্মার দিনে পানি বন্দি মসজিদে নামাজ শেষে মোনাজাতরত অবস্থার দৃশ্য।
ফ্যাক্ট: বন্যায় অনেক এলাকার মসজিদ এখনও পানির নিচে। কোনো মসজিদের শুধু চালা পানির উপরে রয়েছে, এমন দৃশ্যও গণমাধ্যমের ভিডিওতে এসেছে। তবে এই ছবিটি গতকালের জুম্মার সময়ের নয়। ২০২১ সালের ৮ অক্টোবর (সেদিনও শুক্রবার ছিল) সাতক্ষীরা থেকে ফটোগ্রাফার সারোয়ার হোসেন ছবিটি তোলেন।
৩৩/ দাবি: কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদের দানবাক্স থেকে সংগৃহীত ৭ কোটি ২২ লাখ ১৩ হাজার টাকা বন্যার্তদের দেওয়া হয়েছে।
ফ্যাক্ট: ভাইরাল তথ্যটি ভুয়া। উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ও সমন্বয়ক সারজিস আলমের নামে তৈরি একটি ভুয়া পেজের পোস্টের ভিত্তিতে এই মিথ্যা তথ্য সামাজিক মাধ্যম এবং গণমাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে। পাগলা মসজিদ কমিটির সভাপতি ও কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ রিউমর স্ক্যানারকে জানিয়েছেন, এই দাবি সত্য নয়। মসজিদ কমিটির এই বিষয়ে কোনো মিটিং হয়নি।
তথ্যসূত্র : মসজিদ কমিটির সভাপতির বক্তব্য।
৩২/ দাবি: সীতাকুণ্ড উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্যের পক্ষ থেকে বন্যা দুর্গতদের সহায়তা
ফ্যাক্ট: বড়বাজার সার্বজনীন পূজা উদযাপন পরিষদের এই ত্রাণ কার্যক্রমের পেছনে রাজনৈতিক হাত নেই বলে জানা গেছে।
৩১/ দাবি: বিদ্যানন্দের প্রকাশিত এই ছবিটি সম্পাদিত।
ফ্যাক্ট: বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের ফেসবুক পেজ এক টাকায় আহার এ আলোচিত এই ছবিটি আপলোড করা হয় ২২ আগস্ট রাত ০৮ টা ০৪ মিনিটে। ছবিটি নিয়ে নেটিজেনদের মনে সন্দেহ কুকুরের অবস্থানের কারণে। প্রাণীটি দাঁড়িয়ে আছে পানির উপরে, তার পুরো শরীর শুকনো বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। অনেকেই এটিকে তাই এডিটেড ছবি বলে মনে করছেন।
রিউমর স্ক্যানার বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনে যোগাযোগ করে ছবির মূল ফাইলসহ একই সময়ের একাধিক ছবি সংগ্রহ করেছে। এই ছবিটির মেটাডাটা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, মূল ছবি আর এই ছবির মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। ছবিটি তোলা হয় ২২ আগস্ট বিকেল ০৪ টা ৩২ মিনিটে। ফেনীর বন্ধুুয়া ব্রিজের কাছ থেকে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের একজন বোর্ড মেম্বার (নিরাপত্তার স্বার্থে নাম প্রকাশ করছি না) শাওমির রেডমি থার্টিন সি ফাইভ জির একটি মডেলের মাধ্যমে এই ছবিটি তোলেন। রিউমর স্ক্যানার বিদ্যানন্দের উক্ত বোর্ড মেম্বারের সাথে কথা বলেছে। তিনি বলছিলেন, “কুকুরটি একটা মাটি কাটার স্কেভেটর গাড়ির উপর দাঁড়িয়েছিল। আমাদের বাম পাশের স্বেচ্ছাসেবকের পেছনে দেখবেন গাড়ির খাড়া অংশ পানির উপরে। গাড়ির হরাইজন্টাল অংশ পানির লেভেলে ছিল।পানি যথেষ্ট ঘোলা এবং স্কেভেটরের রঙ হলুদ হওয়ায় পানির নীচে কিছু একটা আছে সেটা বুঝা যায়না।” বিদ্যানন্দের এই সদস্য জানালেন, “কুকুরটা নিয়ে আসতে চাইলে দূর থেকে এক ব্যক্তি বলেন সেটি পালিত কুকুর।মালিক দূরে কোথাও আছে। আর নীতিগতভাবে এক এলাকার কুকুর আমরা অন্য এলাকায় ট্রান্সফার করিনা। তাই পাশের রাস্তায় রেখে এসেছি।”
অর্থাৎ, ছবিটি সম্পাদিত বা এডিটেড নয়।
তথ্যসূত্র: ছবির মেটাডাটা বিশ্লেষণ।
সময়: ২৪ আগস্ট সকাল ০৯:২০ মিনিট
জিজ্ঞাসা: চলমান বন্যায় কতজন মারা গেছেন?
ফ্যাক্ট: চলমান বন্যা ইস্যুতে মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা নিরূপণ বা স্বাধীনভাবে যাচাই সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে তাই গণমাধ্যম সূত্রে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য নিম্নে তুলে ধরা হলো –
২৮/ দাবি: ছেলেটাকে একা পাওয়া গেছে। কেউ সাথে ছিল না।
ফ্যাক্ট: এই ছবিটি এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে বলে আমাদের বিশ্লেষণে উঠে এসেছে। গতকালই ছবিটির বিষয়ে জানিয়ে পোস্ট করেছি আমরা। সম্প্রতি, এই ছবির ভিত্তিতেই একটি ভিডিও তৈরি করে প্রচার করা হচ্ছে, যেখানে শিশুটিকে হাত নাড়তে দেখা যায়। প্রথমবারের মতো এই ভিডিওটি ‘Kalachan Miya’ নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে প্রচার করা হয়েছে। উক্ত পেজে এই ভিডিওটি প্রতীকী হিসাবে এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে বলে ডিসক্লেইমার দেয়া থাকলেও, অনেকেই ভিডিওটি আসল ভেবে ফেসবুকে শেয়ার করছেন।
ফ্যাক্ট: এই উদ্যোগে কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের জড়িত থাকার প্রমাণ মেলেনি। ২২ আগস্টও একই ভিডিও পোস্ট হয়েছে ফেসবুকে, সেখানে লেখা রয়েছে এটি তরুণ উদ্যোক্তাদের উদ্যোগ। একই ঘটনা নিয়ে দেশের একাধিক গণমাধ্যমেও সংবাদ এসেছে। সেগুলোতে এই ঘটনাকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের উদ্যোগ বলা হয়েছে।
ফ্যাক্ট: যমুনা টিভি এমন কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি। যমুনা টিভির নামে তৈরি একটি ভুয়া ফেসবুক পেজ থেকে এই ফটোকার্ড প্রচার করা হয়েছে। এছাড়া ফেনীতে ৪২৮ জন, নোয়াখালীতে ৩৮৫ জন ও কুমিল্লায় ১০৩ জন মৃত্যুর সংবাদ অনান্য গণমাধ্যমেও পাওয়া যায়নি।
ফ্যাক্ট: ছাত্রলীগের ত্রাণ উদ্যোগের দাবিতে ডানের পোস্টে তিনটি ছবি যুক্ত করা হয়েছে। যার প্রথম দুটি প্রচেষ্টা ফাউন্ডেশনের পেজে তাদের গতকালের প্রোগ্রামের ছবি হিসেবে পাওয়া যায় এবং তৃতীয় ছবিটি ঢাবির অমর একুশে হলের সাধারণ শিক্ষার্থীদের।
ফ্যাক্ট: এটি সাম্প্রতিক বা পূর্বের কোনো বন্যার দৃশ্য নয়। ২০১৭ সালে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে নদী বিলাসের অন্যান্য ছবির সঙ্গে এই ছবিটিও অন্তর্ভুক্ত থাকতে দেখা যায়। ছবিটির ফটোগ্রাফার নাসিফ ইমতিয়াজ জানিয়েছেন, এটি মুন্সিগঞ্জের ধলেশ্বরী নদীতে তোলা, যেখানে বাচ্চাটি তার ভাইয়ের সঙ্গে খেলছিল।
তথ্যসূত্র: ফটোগ্রাফারের বক্তব্য।
১৭/ দাবি: শেখ হাসিনার অনুরোধে ভারত বাঁধ খুলে দিয়েছে। – যমুনা টিভির ফটোকার্ড
ফ্যাক্ট: যমুনা টিভি এমন কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি। শেখ হাসিনার অনুরোধে ভারত বাঁধ খুলে দিয়েছে শীর্ষক দাবিতে অন্যান্য গণমাধ্যমেও কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি৷
৭। ফটিকছড়ি, চট্টগ্রাম জেলা: ০১৭৬৯-২৭২৩৪২ ০১৭৬৯-২৭২৩৩৬
৮। খাগড়াছড়ি জেলা: ০১৭৬৯-৩০২৩৪২ ০১৭৬৯-৩০২৩৩৬
বার্তা প্রেরক : বাংলাদেশ সেনাবাহিনী
বাংলাদেশ নৌবাহিনী
বন্যার্তদের সহায়তায় ফেনীতে নৌবাহিনী কনটিজেন্টের গুরুত্বপূর্ণ ফোন নাম্বার সমূহঃ
১. ঢাকাস্থ কেন্দ্রীয় অপারেশন রুম অফিসারঃ ০১৭৬৯৭০১১১১
২. চট্টগ্রামস্থ কেন্দ্রীয় অপারেশন রুম অফিসারঃ ০১৭৬৯৭২১২২০
বন্যার্তদের সাহায্যের জন্য বাংলাদেশের সর্বস্তরের মানুষের কাছে উদাত্ত আহবান জানাচ্ছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী। আপনাদের যে কোন রকমের সহযোগিতা (অর্থ, খাদ্য, চিকিৎসা) সংগ্রহ করে বন্যার্তদের নিকট পৌঁছে দেয়া হবে। বন্যার্তদের নিকট খাদ্য সামগ্রী প্রেরণের জন্য যানবাহন সহায়তা দিতেও প্রস্তুত বাংলাদেশ নৌবাহিনী। বাংলাদেশ নৌবাহিনী পরিবার কল্যাণ সংঘের নিম্নোক্ত ব্যাংক হিসেবে আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করার জন্য অনুরোধ করা হলো।
Account Number: 01214-02000279
Account Name:
BNFWA Donation Fund.
Sonali Bank PLC, NHQ Branch, Banani, Dhaka.
Branch Routing Number: 200263434
বার্তা প্রেরক: বাংলাদেশ নৌবাহিনী
বাংলাদেশ বিমানবাহিনী
বন্যাদুর্গতদের উদ্ধারকার্য পরিচালনার জন্য এবং দুর্গত এলাকাসমূহে প্রয়োজনীয় ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দেয়ার জন্য বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর বিমানসমূহ প্রস্তুত রয়েছে। উল্লেখ্য, বৈরী আবহাওয়ার কারণে উদ্ধারকার্য ব্যহত হচ্ছে।
সহায়তার জন্য জরুরি প্রয়োজনে যোগাযোগের নম্বর: +8801769993888।
বার্তা প্রেরক: বাংলাদেশ বিমানবাহিনী
ফায়ার সার্ভিস
সারা দেশের বন্যা কবলিত এলাকার উদ্ধারকাজ বিষয়ে যেকোনো সেবা গ্রহণের জন্য ফায়ার সার্ভিসের হটলাইন নম্বর ১০২ এবং কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষের নিয়মিত ফোন নম্বর ০২২২৩৩৫৫৫৫৫ চালু থাকবে। পাশাপাশি মনিটরিং সেলে সার্বক্ষণিক যোগাযোগের জন্য ০১৭১৩-০৩৮১৮১ মোবাইল নম্বর ব্যবহার করা যাবে। এর পাশাপাশি জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল করেও ফায়ার সার্ভিসের এ সংক্রান্ত সেবা গ্রহণ করা যাবে।
বার্তা প্রেরক : ফায়ার সার্ভিস মিডিয়া সেল।
সময়: ২৩ আগস্ট সকাল ০৯:২০ মিনিট
জিজ্ঞাসা: চলমান বন্যায় কতজন মারা গেছেন?
ফ্যাক্ট: চলমান বন্যা ইস্যুতে মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা নিরূপণ বা স্বাধীনভাবে যাচাই সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে তাই গণমাধ্যম সূত্রে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য নিম্নে তুলে ধরা হলো –
সরকারি হিসাব – ০২। একজন ফেনীর, আরেকজন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার। (২২ আগস্ট দুপুর)
মূল ধারার সংবাদমাধ্যম
প্রথম আলো – ০৮ জন, বন্যার পানিতে ডুবে, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে। এর মধ্যে কুমিল্লায় চারজন, কক্সবাজারে দুজন, ফেনীতে একজন ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একজন মারা গেছেন।
দ্য ডেইলি স্টার – ০৫ জন। কক্সবাজারের রামুতে তিনজন এবং ফেনী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একজন করে ডুবে মারা গেছেন।
৬/ দাবি: বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক বন্যার্তদের উদ্ধারের ছবি।
ফ্যাক্ট: প্রচারিত ছবিগুলোর অন্তত তিনটি ছবি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। প্রকৃতপক্ষে, উক্ত ছবিগুলোর একটি ২০১৮ সালে মৌলভিবাজারে এবং একটি ২০২২ সালে সুনামগঞ্জে তোলা হয়। এছাড়াও আরেকটি ছবি ২০২২ সাল থেকেই ইন্টারনেটে বিদ্যমান রয়েছে।
ফ্যাক্ট: রিউমর স্ক্যানারের বিশ্লেষণে ভাইরাল ছবিটি এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি করা বলে প্রতীয়মান হয়েছে। তবে বন্যার বাস্তব দৃশ্য প্রকৃতপক্ষে আরো করুণ।
আলোর প্রতিফলন, শিশুটির চোখের অভিব্যক্তি, কপালের ভাঁজ ও ঠোঁটের অস্বাভাবিকতা ইত্যাদি অসংগতি অনুযায়ী আপাতদৃষ্টিতে অনেকেই ভাইরাল ছবিটিকে এআই জেনারেটেড বলেই ধারণা করেছেন। তাছাড়া, এআই ছবি যাচাইয়ের বিভিন্ন ওয়েবসাইটও ছবিটিকে ৬০% থেকে ৯১% পর্যন্ত এআই বলে ফলাফল দিয়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিম MidJourney AI ব্যবহার করে এই একই ধরনের ছবি পুনরায় তৈরি করার চেষ্টায়ও প্রায় একই ফলাফল পাওয়া গেছে।
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ০৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। এরই মধ্যে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ ভেঙে দিয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গত ০৮ আগস্ট দেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে। পরবর্তীতে, বিভিন্ন অভিযোগে রাজনীতিবিদ, সাবেক মন্ত্রী ও সাবেক সংসদ সদস্যসহ বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে আওয়ামী সরকারের সাবেক সংসদ সদস্য ও কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগমকে গ্রেফতার করা হয়েছে শীর্ষক দাবি ছড়িয়ে পড়েছে। ‘আ’ট’ক কন্ঠ শিল্পী মমতাজ’’ শীর্ষক শিরোনামে যমুনা টেলিভিশন এর ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, মমতাজ বেগমকে গ্রেফতার করা হয়েছে দাবিতে যমুনা টিভি বা অন্য কোনো গণমাধ্যম এমন কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি বরং, মমতাজকে গ্রেফতারের কোনো সংবাদ গণমাধ্যমে আসেনি।
অনুসন্ধানে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে ফটোকার্ডটিতে যমুনা টিভির লোগো এবং এটি প্রকাশের তারিখ হিসেবে ১৮ আগস্ট, ২০২৪ উল্লেখ পাওয়া যায়। উক্ত তথ্যের সূত্রে যমুনা টিভি‘র ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে প্রচারিত ফটোকার্ডগুলো পর্যালোচনা করে উক্ত শিরোনাম সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও যমুনা টিভি’র ওয়েবসাইট, ইউটিউব চ্যানেল বা অন্য কোনো গণমাধ্যমেও উক্ত দাবির বিষয়ে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।
আলোচিত ফটোকার্ডের সাথে যমুনা টিভির পেজে প্রচারিত ফটোকার্ডের গ্রাফিক্যাল ডিজাইনের মিল থাকলেও আলোচিত ফটোকার্ডের শিরোনামে ব্যবহৃত ফন্টের সাথে যমুনা টিভির সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অ্যাকাউন্টগুলোতে প্রচারিত ফটোকার্ডের পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়।
Comparison: Rumor Scanner
এছাড়াও, গত ১৯ আগস্ট যমুনা টিভির অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে প্রচারিত এক পোস্টে ‘আ’ট’ক কন্ঠ শিল্পী মমতাজ’ শীর্ষক শিরোনামে যমুনা টিভি কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি বলে জানানো হয়েছে।
তাছাড়া, অন্যান্য গণমাধ্যমেও মমতাজের গ্রেফতার দাবিতে কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি।
সুতরাং, কন্ঠশিল্পী মমতাজ গ্রেফতার শীর্ষক দাবিটি ভুয়া এবং উক্ত দাবিতে যমুনা টিভির নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি বানোয়াট।