জুলাই মাসে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৯ দফা দাবির কর্মসূচি চলাকালে “যমুনা টেলিভিশনের সাংবাদিক” শীর্ষক দাবিতে এক ব্যক্তির একটি প্রতিবাদী বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
বক্তব্যে ব্যক্তিটিকে বলতে শোনা যায়, কেমনে মানুষের সামনে মানুষকে মারা হয়? প্রশাসন থাকতে কেমনে নিরস্ত্র ছাত্রদের সামনে হাত তোলা হয়? কীভাবে হয় এটা? আমি তো কেউ না৷ আমি কোটা নিয়ে যুদ্ধ করতে আসি নাই৷ আমি সাধারণ একজন জনগণ। আমি আমার চাকরিতে যাচ্ছিলাম। আমার কেন এসব সহ্য করতে হচ্ছে? আমি তো আন্দোলনে নামি নাই। আমার কেন রক্তাক্ত হতে হলো? আমি তো আন্দোলনে নামি নাই। আমি তো কোনো দল করি না। আমার কেন এগুলো দেখতে হলো? কেন এখানে ককটেল ফুটানো হচ্ছে পুলিশ এখানে দাঁড়িয়ে আছে? পিছনে ক্যামেরা দেন। পুলিশের পুরা বাহিনী এখানে দাঁড়ানো। আমার রাস্তায় ককটেল ফুটানো হচ্ছে আমাদের ওপরে। আমার ছাত্ররা কেন এখানে রক্তাক্ত হবে, আমার ভাইবোনরা কেন রক্তাক্ত হবে? আল্লাহর কাছে জবাব দিবা তোমরা সবাই। আমি কোনো নেতা না, আমি কোনো পলিটিশিয়ান না, আমি কোনো কোটা যোদ্ধা না, আমি কোনো কোটার জন্য আসি নাই। আমি শুধু আমার চাকরির ক্ষেত্রে যাচ্ছিলাম৷ আমি শুধু আমার চাকরির স্থানে যেতে চাচ্ছিলাম। আমার কেন রক্তাক্ত হতে হলো? এটা আমার দেশ। আমি কোনো যোদ্ধা না, এটা আমার দেশ…
ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত এই ব্যক্তি যমুনা টেলিভিশনের সাংবাদিক নন বরং, তিনি একজন শিক্ষাবিষয়ক কনটেন্ট ক্রিকেটর।
অনুসন্ধানে গত ১৭ আগস্ট সময় টিভি’র ফেসবুকে পেজ সময়ের গল্পে “আমাকে অন্য চ্যানেলের সাংবাদিক হিসেবে ভাইরাল করা হয়েছে!” শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি সাক্ষাৎকার খুঁজে পাওয়া যায়।
উক্ত সাক্ষাৎকারে উপস্থিত অতিথির চেহারার সাথে আলোচিত ভিডিওতে থাকা ব্যক্তির চেহারার মিল রয়েছে।
উক্ত সাক্ষাৎকারে সময় টিভি’র সাংবাদিক অতিথিকে আলোচিত ভিডিওটি দেখিয়ে প্রশ্ন করেন, উক্ত ভিডিওতে থাকা ব্যক্তি তিনি কি না?
উত্তরে অতিথি ফায়েদ আবরার মজুমদার বলেন, হ্যাঁ! এটি আমি।
পরবর্তীতে সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, আপনাকে একটি টেলিভিশন চ্যানেলের সাংবাদিক বলে দাবি করা হচ্ছে।
ফায়েদ আবরার মজুমদার উত্তরে বলেন, আমার সাথে যমুনা টেলিভিশনের কোনো সম্পর্ক নেই। আমি সাধারণ একজন ইংরেজির শিক্ষক।
এরপর ফায়েদ আবরার মজুমদার এর ফেসবুক পেজ পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, তিনি বিভিন্ন সেচ্ছাসেবী ও শিক্ষাবিষয়ক কনটেন্ট তৈরি করেন।
অর্থাৎ, তিনি যমুনা টেলিভিশনের সাংবাদিক নন।
সুতরাং, শিক্ষাবিষয়ক কনটেন্ট ক্রিকেটর ফায়েদ আবরার মজুমদারকে যমুনা টিভির সাংবাদিক দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
তথ্যসূত্র
- সময়ের গল্প- আমাকে অন্য চ্যানেলের সাংবাদিক হিসেবে ভাইরাল করা হয়েছে!
- Fayed Abrar Mazumder- Facebook Page
- Rumor Scanner’s Own Analysis