Home Blog Page 352

আনসার-শিক্ষার্থী সংঘর্ষে আনসার হত্যার একাধিক গুজব ছড়িয়েছেন মহিলা যুবলীগ নেত্রী

0

নিজেদের চাকরি জাতীয়করণসহ কয়েকটি দাবিতে আনসার সদস্যরা কয়েক দিন ধরে ঢাকায় বিক্ষোভ করছিলেন। গতকাল রোববার তাঁরা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সচিবালয় ঘেরাও করে রাখেন এবং তাৎক্ষণিকভাবে চাকরি জাতীয়করণের ঘোষণা দেওয়ার দাবি জানান। এমতাবস্থায় সচিবালয়ের ভেতরে সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টাসহ অনেক সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আটকা পড়েন এরই প্রেক্ষিতে সচিবালয়ে আটকে পড়া দুই উপদেষ্টার ডাকে তাদের উদ্ধার করতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা রাজু ভাস্কর্য থেকে সচিবালয়ে জড়ো হন। শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে সচিবালয়ের সামনে আসলে আন্দোলনরত আনসার সদস্যের সাথে তাদের সংঘর্ষ বাঁধে। দফায় দফায় হয় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। এরই প্রেক্ষিতে, বাংলাদেশ আওয়ামী যুব মহিলা লীগের যুক্তরাজ্য শাখার সভাপতি ইয়াসমিন সুলতানা পোলেনের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে একাধিক গুজব প্রচার হতে দেখা যায় যেখানে বিভিন্ন আঙ্গিকে আনসার সদস্য নিহত হওয়ার দাবি প্রচার করা হয়।

নিচে এসব গুজবের সত্যতা যাচাই করে বিস্তারিত তুলে ধরা হলো:

শিক্ষার্থী-আনসার সংঘর্ষে আনসার সদস্য নিহতের গুজব: ১ 

Image By Rumor Scanner 

দাবি: সংঘর্ষ নিহত এক আনসার সদস্য।

উক্ত দাবিতে যুক্তরাজ্য শাখার মহিলা যুবলীগের সভাপতি ইয়াসমিন সুলতানা পোলেনের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

আলোচিত দাবিতে প্রচারিত আরো কিছু ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্ট:

রিভার্স ইমেজ সার্চ পদ্ধতিতে অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ছবিটি গত ২৫ আগস্ট অন্তত দুপুর থেকে বন্যার পানিতে নিহত আনসার সদস্যের মৃতদেহের ছবি হিসেবে প্রচারিত হয়ে আসছে। পোস্টগুলোতে বলা হয় ফেনীতে এ আনসার সদস্য গত ২৪ তারিখ নিহত হন। তার ছবি সম্বলিত কিছু পোস্টে দাবি করা হয়, ছবিতে থাকা ব্যক্তির নাম: মোঃ ওয়াহিদুর রহমান, ঠিকানা: ফেনী সদর, এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া পাওয়ার ১ এ কর্মরত ছিলেন। বন্যার্তদের সহযোগিতা করতে তিনি ফেনী গিয়েছিলেন। 

অপরদিকে ২৫ আগস্ট দিবাগত রাতে শিক্ষার্থী-আনসার মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে। অর্থাৎ, শিক্ষার্থী-আনসার সংঘর্ষ ঘটার পূর্ব থেকেই এ ছবিটি প্রচারিত হচ্ছে। সংঘর্ষের আগে থেকে ইন্টারনেটে প্রচারিত হওয়া এই ছবিটি পরবর্তীতে প্রচার করে সচিবালয়ের সামনে আনসার সদস্যকে মেরে ফেলার দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।

তাছাড়া, বিশ্বস্ত সূত্রে উক্ত আনসার-শিক্ষার্থী সংঘর্ষে আহত হওয়ার সংবাদ পাওয়া গেলেও কারোর নিহত হওয়ার সপক্ষে কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি।

অর্থাৎ, আলোচিত ছবির ব্যক্তি ২৫ আগস্ট তারিখে সংঘটিত হওয়া আনসার-শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন শীর্ষক দাবিটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র: ,

শিক্ষার্থী-আনসার সংঘর্ষে আনসার সদস্য নিহতের গুজব – ২

Image By Rumor Scanner 

দাবি: আফজাল হোসেন নামের এক আনসার সদস্যকে গতকাল সচিবালয়ের সামনে বিএনপি-জামায়াত আক্রমণ করে মেরে ফেলে।

উক্ত দাবিতে যুক্তরাজ্য শাখার মহিলা যুবলীগের সভাপতি ইয়াসমিন সুলতানা পোলেনের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

আলোচিত দাবিতে প্রচারিত আরো কিছু ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্ট: গত ২৫ আগস্টে সংঘটিত হওয়া সংঘর্ষে কোনো আনসার সদস্য নিহতের ঘটনা ঘটেনি। প্রচারিত পোস্টে আফজাল হোসেন নাম ও উক্ত ব্যক্তির আইডি কার্ডের ছবির সূত্র ধরে অনুসন্ধানে জানা যায়, গত ২২ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানার ইউএনও এর বাসভবনে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা অবস্থায় আনসার সদস্য আফজাল হোসেন (২২) নিজের শট গানের গুলিতে নিহত হয়েছেন। গত ২২ এপ্রিল সোমবার বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে এই ঘটনা ঘটে। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক ) হাসপাতালে আনা হলে জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক সন্ধ্যা ৭টার দিকে মৃত ঘোষণা করেন। 

অর্থাৎ, সংযুক্ত আইডি কার্ডের আনসার সদস্য গত ২৫ আগস্টে সংঘটিত হওয়া আনসার-শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে নিহত হননি, বরং উক্ত সংঘর্ষের প্রায় চার মাস পূর্বেই নিজের বন্দুকের গুলিতে নিহত হয়েছেন। 

তথ্যসূত্র:

শিক্ষার্থী-আনসার সংঘর্ষে আনসার সদস্য নিহতের গুজব – ৩

Image By Rumor Scanner 

দাবি: মোট ২৭ জন আনসার সদস্য আনসার-শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন 

উক্ত দাবিতে যুক্তরাজ্য শাখার মহিলা যুবলীগের সভাপতি ইয়াসমিন সুলতানা পোলেনের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

পরবর্তী সময়ে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত আরেকটি ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্ট: ইয়াসমিন সুলতানা পোলেন তার দাবিকৃত পোস্টে সূত্র হিসেবে বিশ্বস্ত সূত্র দাবি করলেও কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রের উল্লেখ করেননি। কোনোরকম তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই দাবিটি প্রচার করা হয়। 

প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে এ বিষয়ে গত ২৬ আগস্ট তারিখে মূলধারার গণমাধ্যম প্রথম আলোতে প্রচারিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, উক্ত সংঘর্ষে অন্তত ৪০ জন শিক্ষার্থী আহত হন। এ সময় কয়েকজন আনসার সদস্য আহত হন। সংঘর্ষে কারোর নিহত হওয়ার বিষয়ে কোনো তথ্য উল্লেখ করা হয়নি।

এ বিষয়ে দেশীয় অন্য আরেকটি গণমাধ্যম ঢাকা পোস্টে ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়ার বরাতে গত ২৬ আগস্ট তারিখে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সচিবালয়ের সামনে শিক্ষার্থী ও আনসারদের সংঘর্ষে অন্তত ৪০ জন আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা নিতে এসেছেন। এদের মধ্যে চার থেকে পাঁচজন আনসার সদস্য বাকিরা সবাই শিক্ষার্থী। 

উক্ত প্রতিবেদনেও কারোর নিহতের কোনো উল্লেখ পাওয়া যায়নি৷ এছাড়াও, অধিকতর অনুসন্ধানেও বিশ্বস্ত সূত্রে উক্ত সংঘর্ষে কারোর নিহত হওয়ার সপক্ষে কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি।

অর্থাৎ, গত ২৫ আগস্টে আনসার-শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে আনসার সদস্য নিহত হয়েছে দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত দাবিগুলো  মিথ্যা।

তথ্যসূত্র: ,

গণমাধ্যমের ভুয়া ফটোকার্ডে সাকিব এবং মাশরাফীর মৃত্যুর গুজব 

0

ছাত্র-জনতার গণ আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সাবেক সংসদ সদস্য সাকিব আল হাসান এবং মাশরাফী বিন মোর্ত্তজার মৃত্যুর দাবি ছড়িয়ে পড়ে। প্রথম আলো ও যমুনা টিভির ডিজাইন সম্বলিত দুইটি ভিন্ন ফটোকার্ডে এই দুই সাবেক এমপির মৃত্যুর দাবি করা হয়।

যমুনা টেলিভিশনের ডিজাইন সম্বলিত ফটোকার্ড যুক্ত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

প্রথম আলোর ডিজাইন সম্বলিত ফটোকার্ড যুক্ত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সাকিব আল হাসান এবং মাশরাফী বিন মোর্ত্তজার মারা গেছেন শীর্ষক তথ্যে বা শিরোনামে যমুনা টিভি এবং প্রথম আলো কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি বরং, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় যমুনা টেলিভিশন এবং প্রথম আলোর ফটোকার্ডের ডিজাইন নক করে উক্ত ফটোকার্ড দুইটি তৈরি করা হয়েছে। 

শুরুতে যমুনা টেলিভিশনের ওয়েবসাইটে অনুসন্ধান করে সাকিব আল হাসানের মৃত্যুর তথ্যে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। একইভাবে প্রথম আলো’র ওয়েবসাইটেও মাশরাফী বিন মুর্ত্তজার মৃত্যুর তথ্যে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

এছাড়া, যমুনা টেলিভিশনের ফেসবুক পেজইউটিউব চ্যানেল এবং প্রথম আলো’র ফেসবুক পেজইউটিউব চ্যানেলে আলোচিত দাবি সংক্রান্ত কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

তবে, গত ০৭ আগস্ট যমুনা টেলিভিশনের ফেসবুক পেজে এবং গত ০৯ আগস্ট প্রথম আলো’র ফেসবুক পেজে আলোচিত দাবিগুলো ভুয়া উল্লেখ করে পোস্ট করা হয়৷ 

Image By Rumor Scanner 

অর্থাৎ, আলোচিত ফটোকার্ড গুলো ভুয়া। 

এছাড়া, এই দুই সাবেক সংসদের মৃত্যুর দাবি ছড়ানোর পর তার দুইজনকেই প্রকাশ্যে সুস্থ অবস্থায় দেখা গেছে। (, )

সুতরাং, টেষ্টিকলে আঘাত পেয়ে সাকিব আল হাসানের এবং হাঁটুর বিয়ারিং খুলে মাশরাফীর মৃত্যুর দাবিতে প্রচারিত তথ্যগুলো মিথ্যা এবং যমুনা টিভি ও প্রথম আলোর নামে প্রচারিত ফটোকার্ডগুলো ভুয়া ও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র

ভারতের সেভেন সিস্টার্সে যাওয়া গ্যাস লাইন বন্ধের দাবিটি গুজব  

0

স্মরণকালের অন্যতম ভয়াবহ বন্যা দেখছে বাংলাদেশ। বাঁধ খুলে দেওয়ার অভিযোগ এনে বন্যার এই পরিস্থিতির জন্য বিভিন্ন মাধ্যমে ভারতকে দায়ী করা হচ্ছে। এরই প্রেক্ষিতে সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যমে দাবি করা হচ্ছে, ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বাংলাদেশ থেকে সরবরাহ করা গ্যাস লাইনের সংযোগ বন্ধ করে দিয়েছে বাংলাদেশ। একই দাবিতে একটি ভিডিও-ও প্রচার করা হয়েছে, যা দেখিয়ে বলা হচ্ছে, গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্নের দৃশ্য এটি। 

গ্যাস লাইন বন্ধের

উক্ত দাবিতে ফেসবুকের পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ভিডিওটি ব্যবহার করে ফেসবুকের পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

একই দাবিতে ইউটিউবের ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

একই দাবিতে টিকটকের ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে এক্সের পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশ থেকে ভারতে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ার যে দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে তা সঠিক নয় বরং বাংলাদেশ থেকে প্রাকৃতিক গ্যাস ভারতে রপ্তানি হয় না। তবে এলপি গ্যাস রপ্তানি হলেও তার সরবরাহ বন্ধ হওয়ার কোনো তথ্য নেই। যে ভিডিওটি প্রচার করা হচ্ছে তাও দুই বছরের পুরোনো এবং ভিন্ন ঘটনার৷ 

রিউমর স্ক্যানার এ বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করে দেখতে পায়, এই দাবিটি ছড়াচ্ছে একটি এক্স পোস্ট এবং একটি ভিডিওকে কেন্দ্র করে৷ আয়রন ক্ল্যাড নামের এক্স অ্যাকাউন্টটি থেকে গত ২৫ আগস্ট করা এক পোস্টে দাবি করা হয়, “ভারতের সেভেন সিস্টারে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে বাংলাদেশ।” এই পোস্টে প্রাকৃতিক নাকি এলপি গ্যাস তা অবশ্য পরিস্কার করা হয়নি। আমরা যাচাই করে দেখেছি, এই অ্যাকাউন্টটি নিয়মিতই অপতথ্য ছড়িয়ে থাকে। 

আলোচিত পোস্টটির পর অ্যাকাউন্টটি থেকে আরেক পোস্টে দাবি করা হচ্ছে, “ভারত সরকার সকল এনজিওকে বলেছে বাংলাদেশে যাতে কোনো ত্রাণ সহায়তা না পাঠানো হয়।” আদতে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে এমন কোনো নির্দেশনাই আসেনি। ভারতের একজন ফ্যাক্টচেকারও রিউমর স্ক্যানারকে জানিয়েছেন, এমন কোনো খবর তাদেরও চোখে পড়েনি। তিনি বলছিলেন, “কূটনীতিক দোনামনা থাকলেও এমন পরিস্থিতিতে এই ধরনের কোনও নির্দেশনা বা সিদ্ধান্ত অবাস্তব মনে হয়। আজগুবি। সার্চ করেও এই এক্স পোস্ট ছাড়া এই সংক্রান্ত আর কিছু দেখলাম না।”

এই অ্যাকাউন্টটি থেকে নিয়মিত অপতথ্য ছড়ানোর দরুন ভারত সরকারের পক্ষ থেকে এই অ্যাকাউন্টটি ব্যান করে দেওয়া হয়েছে। দেশটির দুইজন ফ্যাক্টচেকার বিষয়টি রিউমর স্ক্যানারকে জানিয়েছেন। 

একই দাবিতে যে ভিডিওটি ছড়াচ্ছে, তার বিষয়ে অনুসন্ধানে ইউটিউবের একটি বাংলাদেশি চ্যানেলে ২০২২ সালের ০৭ মার্চ প্রকাশিত একই ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওটির বিষয়ে চ্যানেলটি উল্লেখ করেছে, এটি তেল এবং গ্যাস লাইনে অভ্যন্তরীণ ক্ল্যাম্প ইনস্টল করার দৃশ্য। অর্থাৎ, এটা নিশ্চিত যে দৃশ্যটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। 

গ্যাস সরবরাহ বন্ধের দাবিটি নিয়ে প্রাথমিক অনুসন্ধানে রিউমর স্ক্যানার দেখেছে, ২০২২ সালের জুনে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতিক্রমে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে ৮২ মেট্রিক টন তরল পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপি) ভারতে পাঠানো হয়। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোর চাহিদা মেটাতে ৮ জুন এসব গ্যাস ইন্ডিয়ান অয়েল করপোরেশনের অধীনে ত্রিপুরা রাজ্যের বিশালগড়ের প্লান্টে সরবরাহ করা হয়। 

২০২২ সালের পর আর এলপি গ্যাস পাঠানো হয়েছে কিনা এ বিষয়ে গণমাধ্যম সূত্রে কোনো তথ্য পাওয়া যায়না। এ বিষয়ে সরকারের জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের যুগ্মসচিব শামীমা ফেরদৌস রিউমর স্ক্যানারকে বলেছেন, ২০১৭ সালে নেপালসহ ভারতীয় সেভেন সিস্টার্স স্টেটসমূহে ৫০ হাজার মেট্রিক টন এলপি গ্যাস রপ্তানির অনুমতির জন্য সরাসরি জ্বালানি  ও খনিজ সম্পদ বিভাগে ওমেরা পেট্রোলিয়াম লিমিটেড আবেদন করে। পরবর্তীতে তাদের অনাপত্তি প্রদান করা হয়। এর মধ্যে ২০২৩ সালেও প্রায় ৪৭ হাজার মেট্রিক টন পাঠাতে না পারায় আবারও অনাপত্তিপত্র চাওয়া হয়। এর প্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয় সে বছরের ১২ জুলাই ফের অনাপত্তিপত্র দেয়। 

জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে পাওয়া নথি থেকে জানা যাচ্ছে, অপর কোম্পানি বিএম এনার্জি লিমিটেড ২০২১ সালে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে ১৫ হাজার মেঃ টন এলপিজি রপ্তানি করতে অনাপত্তি চাইলে তাদেরও অনাপত্তিপত্র দেওয়া হয়। সর্বশেষ ২০২২ সালে অনাপত্তি পত্রের মেয়াদ বৃদ্ধি প্রদান করার জন্য কোম্পানিটির অনুরোধের প্রেক্ষিতে সেসময় ফের অনাপত্তিপত্র দেওয়া হয়৷ তবে বেক্সিমকোর বিষয়ে এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য নেই বলে এই সূত্রটি আমাদের নিশ্চিত করেছে।  

তবে ভারতে বাংলাদেশ থেকে কখনোই প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহ করা হয়নি। এ বিষয়টি রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করেছেন সরকারের জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব মোঃ নূরুল আলম। 

সুতরাং, ভারতের সেভেন সিস্টার্সে যাওয়া গ্যাস লাইন বন্ধ দাবিতে ভাইরাল বিষয়টি মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

কুমিল্লায় সম্প্রতি অগ্নিকাণ্ডে তিন শতাধিক নিহতের গুজব 

0

গত ২৩ আগস্ট ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পদুয়ার বাজার এলাকায় ‘প্রাণ আর আর এফ এল’ কোম্পানির একটি ডিপোতে আগুনের ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় তিন শতাধিক নিহত হয়েছেন- শীর্ষক একটি দাবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। 

অগ্নিকাণ্ডে তিন শতাধিক

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রাণ আরএফএল কোম্পানিতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তিন শতাধিক নিহত হওয়ার দাবিটি মিথ্যা বরং উক্ত অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কেউ নিহত হননি। 

অনুসন্ধানে জাতীয় দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারের ওয়েবসাইটে গত ২৩ আগস্ট “কুমিল্লায় প্রাণ কোম্পানির গোডাউনের আগুন দেড় ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে, ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। 

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২৩ আগস্ট দুপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পদুয়ার বাজার এলাকায় ‘প্রাণ আর আর এফ এল’ কোম্পানির একটি ডিপোতে আগুনের ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে ফায়ার সার্ভিসের ছয়টি ইউনিট কাজ করে দেড় ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। 

একই দিনে সমকালে প্রকাশিত আরেকটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, উক্ত অগ্নিকাণ্ডে কেউ হতাহত হয়নি বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।   

এছাড়া, নিহতের কোনো তথ্য বা বিশ্বস্ত সূত্রে পাওয়া যায়নি। 

এ বিষয়ে জানতে কুমিল্লা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক মোঃ তৌফিকুল ইসলাম ভূঁইয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি রিউমর স্ক্যানারকে বলেন, নিহতের কোনো তথ্য আমরা এখনো পাইনি। এটি মিথ্যা। এছাড়া, কেউ আহত হওয়ার তথ্যও আমরা পাইনি। 

কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানার ওসি বলেন, গত ২৩ আগস্টের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কেউ নিহত হননি। 

উল্লেখ্য, গত ২৪ আগস্ট রাত ১টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে কুমিল্লার সদর উপজেলার আমতলী এলাকার রমনা ইন্টারন্যাশনাল মটরস নামের একটি গাড়ির শোরুমে অগ্নিকাণ্ড ঘটে। তবে, এখানেও নিহতের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, ২৩ আগস্ট কুমিল্লায় প্রাণ আরএফএল কোম্পানিতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তিন শতাধিক নিহত হওয়ার দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

সাগরিকা আক্তারের কান ধরে ওঠবস করার ভিডিওকে তামান্না জেসমিন রিভার দাবিতে প্রচার 

গত জুলাইয়ে কোট সংস্কার আন্দোলনে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সাথে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীসহ ছাত্রলীগের কর্মীদের ঘটেছে সংঘর্ষ ও সহিংসতার ঘটনা। এরই প্রেক্ষিতে, ইডেন মহিলা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভাকে কান ধরে উঠবস করালো সাধারণ শিক্ষার্থীরা দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন- এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভিডিওতে কান ধরে উঠবস করা মেয়েটি ইডেন মহিলা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভার নয় বরং, উক্ত নারী ইডেনের ছাত্রলীগের কর্মী সাগরিকা আক্তার।

অনুসন্ধানে সাংবাদিক ‘Mahdy Hasan Talha’ ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে গত ১৭ জুলাই প্রকাশিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়। এই ভিডিওতে উল্লেখ করা হয়, কান ধরে ওঠবস করা নারীর নাম সাগরিকা আক্তার, যিনি ইডেন মহিলা কলেজের ছাত্রলীগ নেত্রী।

পরবর্তীতে জাতীয় দৈনিক কালবেলার ওয়েবসাইটে ‘আন্দোলনকারীরা নেত্রীদের সমন্বয়হীনতার সুযোগ নিয়েছে’ শীর্ষক শিরোনামে ফিচারে আলোচিত মেয়েটির ছবি যুক্ত প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। 

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ‘তিনি কলেজটির সামাজিক বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৪-১৫ সেশনের শিক্ষার্থী। শাখা ছাত্রলীগের একজন সহ-সভাপতির বান্ধবী হওয়ায় থাকতেন তার রুমে। ছাত্রলীগের কোনো পদপদবিতে না থাকলেও সক্রিয় কর্মী ছিলেন। ওই নেত্রীকে কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা হেনস্তা করেন। কান ধরে ওঠবস করিয়ে মোবাইল ফোনে ভিডিও করে তা ছড়িয়ে দেন সর্বত্র।’

অর্থাৎ, এটা নিশ্চিত যে আলোচিত ভিডিওতে কান ধরে উঠবস করা মেয়েটি ইডেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের তামান্না জেসমিন রিভা নয়।

এছাড়াও, রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে পাওয়া এই নারীর প্রথম বর্ষের ভর্তির পরীক্ষার একটি প্রবেশপত্র পাওয়া যায়। উক্ত প্রবেশপত্রটিতে মেয়েটির নাম ‘MST. SAGARIKA AKTER’ উল্লেখ রয়েছে।

Image: Rumor Scanner 

সুতরাং, ইডেন মহিলা কলেজে ছাত্রলীগ নেত্রী সাগরিকা আক্তারের কান ধরে ওঠবস করার ভিডিওকে তামান্না জেসমিন রিভার দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

কোটা সংস্কার আন্দোলনে হিন্দু নারীকে শারীরিক নির্যাতনের দাবিতে ভারতের পুরোনো ঘটনা প্রচার

কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে বাংলাদেশে ইসলামিক আর্মি কর্তৃক একজন হিন্দু নারীকে সংঘবদ্ধভাবে শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি স্ক্রিনশট প্রচার করা হয়েছে। 

হিন্দু নারীকে শারীরিক নির্যাতনের

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)

উক্ত দাবিতে এক্স (টুইটার) এ প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ছবিটি কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে কোনো হিন্দু নারীকে সংঘবদ্ধ নির্যাতনের নয় বরং ভারতের কেরালার ২০২১ সালের ভিন্ন একটি ঘটনার ছবিকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানে ২০২১ সালের ০৮ জুন অনলাইন সংবাদমাধ্যম নিউজবাংলা২৪ এর ওয়েবসাইটে “ভারতে তরুণীকে নির্যাতন: পাচারকারী চক্রের হোতার স্বীকারোক্তি” শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত সংবাদে ব্যবহৃত স্থিরচিত্রের সাথে প্রচারিত স্ক্রিনশটটির বেশ কয়েকটি অংশের মিল পাওয়া যায়।

Comparison: Rumor Scanner

উক্ত সংবাদের বরাতে জানা যায়, সে বছর বাংলাদেশের এক তরুণী ভারতের কেরালায় সংঘবদ্ধ শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়। ঐ তরুণী ও নির্যাতনকারীরা পূর্বপরিচিত এবং বাংলাদেশের নাগরিক। নির্যাতনের শিকার হওয়ার পর তাকে বেঙ্গালুরুর পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছিলো। পরবর্তীতে উক্ত ঘটনায় জড়িত পাঁচজনকে বেঙ্গালুরু পুলিশ গ্রেফতার করলে তারা স্বীকারোক্তি দেয়। তারা বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশ থেকে নারী পাচারে জড়িত ছিল। 

এছাড়া, আলোচিত দাবিতে গণমাধ্যম সূত্রে কোনো সংবাদ বা তথ্য পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, ভারতে ২০২১ সালে এক নারীকে সংঘবদ্ধ শারীরিক নির্যাতনের ঘটনার একটি ছবি কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে বাংলাদেশে এক হিন্দু নারীকে সংঘবদ্ধ নির্যাতন করা হয়েছে দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

বিএনপিকে জড়িয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নামে ভুয়া মন্তব্য প্রচার

ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মুখে গত ০৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়েছেন শেখ হাসিনা। এরপর গত ০৮ আগস্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নিয়েছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এর আগে গত ০৬ আগস্ট নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের রূপরেখা দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা

এরই প্রেক্ষিতে, গত ০৭ আগস্ট ‘DH Sports News’ নামের ইউটিউব চ্যানেলে ‘বিএনপিকে কোনোভাবেই নতুন সরকার করা হবেনা’ শীর্ষক শিরোনাম থাম্বনেইলে উল্লেখপূর্বক সরকার গঠন নিয়ে জাতির উদ্দেশ্যে ড. ইউনূসের বক্তব্য দাবিতে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।

বিএনপিকে জড়িয়ে

DH Sports News’ নামে একটি চ্যানেল থেকে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন- এখানে (আর্কাইভ)। ইউটিউবে এই ভিডিওটি দেখা হয়েছে এখন পর্যন্ত ৩ লক্ষ ২৯ হাজারের অধিক বার।

এছাড়াও, উক্ত দাবিতে টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন- এখানে (আর্কাইভ)। টিকটকে এই ভিডিওটি দেখা হয়েছে প্রায় ৫৭ লক্ষাধিক বার। রিঅ্যাক্ট (লাভ) পড়েছে প্রায় ৩ লক্ষ ৩৭ হাজার এবং মন্তব্য করা হয়েছে প্রায় সাড়ে ৪ হাজারের অধিক বার । এছাড়াও, ভিডিওটি শেয়ার হয়েছে প্রায় ১৩ হাজারের অধিক বার।

ফ্যাক্ট

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়,  ড. ইউনূস ‘বিএনপিকে কোনোভাবেই নতুন সরকার করা হবে না’ শীর্ষক মন্তব্য করেনি। বরং, গত ০৭ আগস্ট ইউনূস সেন্টারের পক্ষ থেকে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দেশবাসীর উদ্দেশে গণমাধ্যমে পাঠানো বক্তব্যের সাথে অপ্রাসঙ্গিকভাবে বিএনপিকে জড়িয়ে আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। এছাড়া, আলোচিত ভিডিওতে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের যে ভিডিওটি দেখানো হয়েছে তা পুরোনো এবং উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবির কোনো সম্পর্ক নেই।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ভিডিওর শুরুতেই ড. ইউনূসের একটি ইংরেজি বক্তব্যের ভিডিও দেখিয়ে একজন উপাস্থাপিকা বলেন, “বিএনপিকে কোনোভাবেই নতুন সরকার গঠন করা হবেনা, সংবাদ মাধ্যমে এসে জাতির উদ্দেশ্যে নতুন সরকার গঠন নিয়ে একি বললেন ড. মোহাম্মদ ইউনূস, বিস্তারিত দেখুন ‍পুরো ভিডিওতে”। বিস্তারিত অংশে উপস্থাপিকা বলেন, “দর্শক, গণবিক্ষোভের মুখে গত সোমবার বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশের নিয়ন্ত্রণ নেয় সেনাবাহিনী, এখন প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ ইউনূসের অধীনে বাংলাদেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হতে যাচ্ছে, এইদিকে গণমাধ্যমে এসে দেশবাসীর উদ্দেশ্যে নোবেলজয়ী প্রফেসব ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘আমি সাহসী ছাত্রদের অভিনন্দন জানাই, যারা আমাদের দ্বিতীয় বিজয় দিবসকে বাস্তবে রূপ দিতে নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং অভিনন্দন জানাই দেশের আপামর জনসাধারণকে, যারা ছাত্রদের এই আন্দোলনে পূর্ণ সমর্থন দিয়েছেন।’ তিনি বলেন আমি সবাইকে বর্তমান পরিস্থিতিতে শান্ত থাকতে এবং সব ধরনের সহিংস এবং স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ বিনষ্ট করা থেকে বিরত থাকতে আহ্বান জানাচ্ছি। তবে, আমার মনে হচ্ছে বিএনপি নেতাকর্মীরা বেশি উচ্ছৃংখলা করছে তার করণে তাদের হাতে দায়িত্ব দেওয়া যাবেনা”

ইউনূসের আলোচিত বক্তব্যের ফুটেজের উৎসের সন্ধানে ভিডিওর কিছু স্থিরচিত্র রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে ‘OxfordUnion’ ইউটিউব চ্যানেলে ২০১৫ সালের ২২ এপ্রিল ‘Prof. Muhammad Yunus – Full Address’ শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর একটি অংশের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner 

ভিডিওটিতে, ড. মুহাম্মদ ইউনূস তরুণদের ভাগ্যবান উল্লেখ করেন এবং স্যোশাল বিজনেস এবং জব নিয়ে বিস্তর আলোচনা করেন। অর্থাৎ, এটা নিশ্চিত যে ভিডিওটি ০৫ আগস্ট শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার পরবর্তী সময়ের নয়। এবং আলোচিত দাবির সাথে এই ভিডিও’র কোনো সম্পর্ক নেই।

পরবর্তীতে, কি-ওয়ার্ড সার্চ করে প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে গত ০৭ আগস্ট ‘দেশবাসীর উদ্দেশে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বার্তা’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। 

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, ড. মুহাম্মদ  ইউনূস ইউনূস চিকিৎসার জন্য ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে অবস্থানকালে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করাকে সামনে রেখে ইউনূস সেন্টারের পক্ষ থেকে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দেশবাসীর উদ্দেশ্যে গণমাধ্যমে পাঠানো একটি বক্তব্যে তিনি সাহসী ছাত্রদের অভিনন্দন জানান দ্বিতীয় বিজয় দিবসকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য এবং অভিনন্দন জানান দেশের আপামর জনসাধারণকে, যারা ছাত্রদের আন্দোলনে পূর্ণ সমর্থন দিয়েছেন। এছাড়া, দেশ পুনর্গঠনে এগিয়ে আসার আহ্বান এবং বিজয়ের সর্বোত্তম সদ্ব্যবহার নিশ্চিতে দেশকে নিজেদের ও পরবর্তী প্রজন্মের জন্য রক্ষা করার জন্য ছাত্র-দল-মত-নির্বিশেষে সবাইকে শান্ত থাকার জন্য অনুরোধ জানান। 

অর্থাৎ, ইউনূস সেন্টারের পক্ষ থেকে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দেশবাসীর উদ্দেশ্যে গণমাধ্যমে পাঠানো এই বক্তব্যের সাথে বিএনপিকে জড়িয়ে আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।

সুতরাং, বিএনপিকে কোনোভাবেই নতুন সরকার করা হবেনা দাবিতে ড. ইউনুসের নামে প্রচারিত মন্তব্যটি ভুয়া এবং বানোয়াট।

তথ্যসূত্র

দ্য সিম্পসন্‌স কার্টুনে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সরকার প্রধান হবার ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়নি

গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে গঠন করা হয় ১৭ সদস্যের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। সম্প্রতি, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সরকার প্রধান হওয়ার তথ্যটি বহু আগেই মার্কিন সিটকম এনিমেশন কার্টুন দ্য সিম্পসন্‌স ভবিষ্যদ্বাণী করেছিল দাবিতে কার্টুনটির একটি দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, দ্য সিম্পসন্‌স-এ ড. ইউনূসের সরকার প্রধান হওয়ার ভবিষ্যদ্বাণী করার দাবিটি সঠিক নয় বরং, ২০১০ সালে প্রচারিত দ্য সিম্পসন্‌স-এর একটি পর্বে  ড. ইউনূসকে দেখানো হলেও সেখানে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিষয়ে কোনো তথ্য উল্লেখ ছিল না। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে Felipe Leonardo Tibocha Cala নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ২০১০ সালের ৫ অক্টোবর Prof. Yunus in The Simpsons. শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner 

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওতে দেখানো দ্য সিম্পসন্‌স-এর ফুটেজের সাথে উক্ত ভিডিওর মিল রয়েছে। এটিতে দেখা যায়, দ্য সিম্পসন্‌স-এর অন্যতম জনপ্রিয় চরিত্র লিসা তার দাদার কাছ থেকে পাওয়া টাকা মানুষকে সাহায্যের মাধ্যমে দাদাকে সম্মানিত করার জন্য ইন্টারনেটে একটি ভালো দাতব্য সংস্থার সন্ধান করতে থাকে। এমন সময় সে Metamorphosis Microfinance নামের একটি ওয়েবসাইটের সন্ধান পায়। যেখানে তিনি নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের একটি বক্তব্য খুজে পান। উক্ত ভিডিওটি থেকে পরবর্তীতে সে নেলশন নামের একজন তরুণ উদ্যোক্তার সন্ধান পান। যাকে তিনি ঋণ প্রদান করেন। ভিডিওটির কোথাও ড. ইউনূসের ভবিষ্যতে বাংলাদেশের সরকার প্রধান হওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি। মূলত এখানে তাকে একজন সফল মাইক্রোফাইন্যান্স উদ্যোক্তা এবং নোবেল বিজয়ী হিসেবেই উপস্থাপন করা নয়।

পরবর্তীতে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে simpsons.fandom.com নামের একটি ওয়েবসাইটে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে দেখানো দ্য সিম্পসন্‌স-এর আলোচিত ওই এপিসোড সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়। ওয়েবসাইটটি থেকে জানা যায়, আলোচিত ভিডিওটি দ্য সিম্পসন্‌স-এর ২২তম সিজনের দ্বিতীয় পর্ব Loan-a Lisa এর একটি অংশ। পর্বটি ২০১০ সালের ৩ অক্টোবর প্রচার করা হয়। এছাড়াও ওয়েবসাইটিতে পর্বটি সম্পর্কিত বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে। সেখান থেকে জানা যায়, পর্বটিতে মূলত লিসা এবং সিম্পসন্‌স পরিবারের বাকি সদস্যরা তার দাদার সাথে দেখা করতে গেলে তিনি সবাইকে উত্তরাধিকার হিসেবে পাওয়া সম্পদ বিবেচনায় সবাইকে ৫০ ডলার করে দেন। টাকাটি বিভিন্নজন নানাভাবে খরচ করলেও লিসা দাদাকে সম্মানিত করার জন্যে টাকাটি একটি দাতব্য সংস্থাকে দরিদ্র মানুষদের সহায়তা ব্যয় করার জন্য দিতে চায়। এ সময় পূর্বের ভিডিওর অংশটুকু দেখানো হয়। যার সাথে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সরকার প্রধান হওয়ার ভবিষ্যদ্বাণীর কোনো সম্পর্ক নেই।

এছাড়াও, ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসির ওয়েবসাইটে দ্য সিম্পসন্‌স-এ ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে দেখানোর বিষয়ে ২০১০ সালের ২৭ জুলাই প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, উক্ত পর্বটির জন্যে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ভয়েস সংগ্রহের জন্যে লিসা চরিত্রে ভয়েস দেওয়া আর্টিস্ট ইয়ার্ডলি স্মিথ ঢাকাতে এক সপ্তাহ অবস্থান করেছেন। এস ময় তিনি গ্রামীণ ব্যাংক সম্পর্কেও পড়াশোনা করেন।

সুতরাং, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বাংলাদেশের সরকার প্রধান হওয়ার বিষয়ে দ্য সিম্পসন্‌স-এর ভবিষ্যদ্বাণীর আলোচিত দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

প্রধান উপদেষ্টার নামে ভুয়া ফেসবুক পেজ খুলে আর্থিক প্রতারণা

0

সম্প্রতি অতি বৃষ্টি ও ভারত থেকে আসা পাহাড়ি ঢলের ফলে দেশের বেশকিছু জেলায় ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। সপ্তাহ গড়িয়ে আসলেও এখনও অনেক এলাকার মানুষ পানিবন্দী৷ এসব এলাকায় খাবার সংকটসহ মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। এসবের প্রেক্ষিতে ত্রাণ সহায়তা কার্যক্রম চালাচ্ছে সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা ও সংগঠন। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসও তার অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে ত্রাণ সহায়তার জন্য একটি ব্যাংক হিসাব নাম্বার দিয়েছেন। ‘প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল’ নামের এই হিসাবে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সোনালী ব্যাংক কর্পোরেট শাখায় ০১০৭৩৩৩০০৪০৯৩ এই হিসাব নম্বরে অর্থ পাঠানোর আহ্বান জানানো হয়েছে। যে পোস্টে এই বিষয়টি বলা হয়েছে সেটিসহ পরবর্তী বিভিন্ন পোস্টে প্রধান উপদেষ্টার নামে খোলা আরো দুইটি পেজ থেকে কমেন্ট করে দাবি করা হচ্ছে, “সকলের অনুরোধের ভিত্তিতে মোবাইল ব্যাংকিং বিকাশ এবং নগদ চালু করা হয়েছে। বিকাশ পারসোনাল নাম্বার 01863945552, নগদ পারসোনাল নাম্বার 01863945552।”

প্রধান উপদেষ্টার নামে

অ্যাকাউন্ট দুইটির লিংক এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রধান উপদেষ্টার নামে যে ফেসবুক পেজ দুইটি থেকে বন্যার্তদের জন্য মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে আর্থিক সহায়তা চাওয়া হচ্ছে তা তার আসল পেজ নয় বরং আর্থিক প্রতারণার উদ্দেশ্যে ভুয়া নাম্বারের মাধ্যমে এই অর্থ সহায়তা চাওয়া হচ্ছে।

অনুসন্ধানে প্রধান উপদেষ্টার অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে যে দুইটি অ্যাকাউন্টের কমেন্ট পাওয়া গেছে সেগুলোর নাম (Cheif Adviser GOB) এবং প্রোফাইলের ছবি একই। এই অ্যাকাউন্ট দুইটির নামের বানানে চিফ (Chief) শব্দটিও ভুল। পেজ দুইটিই খোলা হয়েছে ২৫ আগস্ট। এদের মধ্যে একটির ফলোয়ার সংখ্যা একজন, আরেকটির দুইজন। তবে আলাদা করে বোঝার উপায় নেই যে দুইটি আলাদা পেজ এগুলো। লিংকের ইউআরএল যাচাই করলেই শুধু তা বোঝা সম্ভব। 

Comparison: Rumor Scanner 

অন্যদিকে প্রধান উপদেষ্টার অফিশিয়াল পেজটির নাম Chief Adviser GOB (Head of the Government)। এই পেজটি খোলা হয় গত ১৪ আগস্ট। বর্তমানে এক লক্ষাধিক ফলোয়ার থাকা পেজটি থেকে নিয়মিত ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিভিন্ন কর্মকান্ডের হালনাগাদ তথ্য ও ছবি প্রকাশ করা হয়।

ভুয়া পেজ দুইটি বিকাশ এবং নগদে অর্থ সহায়তা চেয়ে যে নম্বরটি (01863945552) ব্যবহার করছে তা ট্রু কলারে যাচাই করে ফ্রড বা প্রতারক হিসেবে চিহ্নিত অবস্থায় পাওয়া গেছে। নাম্বারটিতে হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট খোলা নেই। একাধিকবার চেষ্টা করেও নাম্বারটিতে কল দিয়ে বন্ধ পাওয়া গেছে৷ 

এই নাম্বারটি প্রতারকদের হলেও বিকাশের অ্যাপের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে অর্থ সহায়তা দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। তবে এটির জন্য আলাদা করে কোনো প্রচারণা চালানো হয়নি প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক পেজ থেকে। 

Screenshot: Bkash App

সুতরাং, প্রধান উপদেষ্টার নামে পরিচালিত যে ফেসবুক পেজগুলো থেকে বন্যার্তদের জন্য মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে আর্থিক সহায়তা চাওয়া হচ্ছে সেই পেজগুলো ভুয়া এবং মোবাইল নাম্বারটি প্রতারক চক্রের।

তথ্যসূত্র

  • Rumor Scanner’s own analysis 

শেখ হাসিনার পদত্যাগ উদযাপনে ৩০ জিবি ফ্রি ইন্টারনেটের অফারটি ভুয়া

0

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ অভ্যুত্থানের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ত্যাগ করেছেন  শেখ হাসিনা। পরবর্তীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের চাহিদার ভিত্তিতে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গটন করা হয়। এ ঘটনায় গত ৯ আগস্ট ও ১০ আগস্ট সম্পূর্ণ ফ্রি ইন্টারনেট সেবা প্রদানের ঘোষণা দেয় মোবাইল ফোন অপারেটিং প্রতিষ্ঠান গ্রামীণফোন। 

এরই প্রেক্ষিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ উদযাপনের জন্য সকল মোবাইল ফোন অপারেটরের পক্ষ থেকে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে সবাইকে ৩০ জিবি ইন্টারনেট প্রদান করা হবে দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

পোস্টটিতে দাবি করা হয়, উক্ত ৩০ জিবি ইন্টারনেট পাওয়া জন্যে পোস্টটি প্রথমে ১২ জন ব্যক্তিকে শেয়ার করতে পবে। পরবর্তীতে পোস্টে ব্যবহৃত লিংকটিকে প্রবেশ করতে হবে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ উদযাপনের জন্যে সকল সিমের গ্রাহকদের ৩০ জিবি ফ্রি ইন্টারনেট অফার দেওয়ার দাবি সংক্রান্ত লিংকটি ভুয়া এবং উক্ত পদ্ধতি ব্যবহার করে ৩০ জিবি ইন্টারনেট পাওয়ার বিষয়টিও মিথ্যা।

দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে আলোচিত পোস্টের নির্দেশনা অনুযায়ী রিউমর স্ক্যানারের একজন সদস্য অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে প্রথমে পোস্টটি ১২ জন মানুষের কাছে শেয়ার করে। এরপর পোস্টে থাকা লিংকটিতে প্রবেশ করলে যেখানে Claim নামের একটি বাটন দেখতে পাওয়া যায়। সেটিতে ক্লিক করতে প্রতিবারই বিভিন্ন অনলাইন ভিত্তিক জুয়ার ওয়েবসাইটে নিয়ে যায়। একাধিকবার চেষ্টা করার পরও ৩০ জিবি ফ্রি ইন্টারনেট পাওয়া যায়নি।

Screenshot: msttumi38.blogspot.com

এছাড়াও শেখ হাসিনার পদত্যাগের কারণে মোবাইল ফোন অপারেটরগুলো এমন কোনো অফার দিয়েছে কিনা তা জানতে কি-ওয়ার্ড সার্চ করেও গণমাধ্যম কিংবা কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে এমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ উদযাপনে সরকারের পক্ষ থেকে সকল সিম গ্রাহকদের ৩০ জিবি ফ্রি ইন্টারনেট প্রদানের দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

  • Rumor Scanner’s Own Analysis