Home Blog Page 351

শেখ হাসিনা, ছাত্রলীগ ও বিএনপিকে জড়িয়ে সারজিস আলমের নামে ভুয়া ভিডিও ইউটিউবে 

সম্প্রতি বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলমের বিষয়ে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে যাতে দাবি করা হচ্ছে, তিনি মন্তব্য করেছেন যে তিনি ছাত্রলীগ করেন ও শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনবেন এবং বিএনপির হাতে দেশ ছেড়ে দিবেন না। 

উক্ত দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদন প্রকাশের সময় পর্যন্ত ভিডিওটি প্রায় পৌনো সাত লক্ষাধিক বারেরও বেশি দেখা হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সারজিস আলম এমন কোনো মন্তব্য করেননি বরং অধিক ভিউ পাওয়ার আশায় চটকদার থাম্বনেইল ব্যবহার করে ভুয়া এই দাবি প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানে সারজিস আলমের অফিশিয়াল ফেসবুক অ্যাকাউন্টে গত ০৯ জুন প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। প্রচারিত ভিডিওটির সাথে উক্ত ভিডিওটির বেশকিছু অংশ মিলে যায়। উক্ত ভিডিওতে সারজিস মূলত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দেশের বিভিন্ন প্রয়োজনে ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে এগিয়ে আসার বিষয়ে কথা বলেন। এই ভিডিওতে তাকে শেখ হাসিনা বা বিএনপিকে নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে দেখা যায়নি। 

Screenshot collage: Rumor Scanner

এছাড়াও, দেশের প্রথম সারির গণমাধ্যমে এই বিষয়ে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।  

সুতরাং, সারজিস আলম ছাত্রলীগ করেন ও শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনবেন এবং বিএনপির হাতে দেশ ছেড়ে দিবেন না বলে মন্তব্য করেছেন দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

যমুনা টিভির শিরোনাম সম্পাদনা করে জামায়াতকে জড়িয়ে দুই উপদেষ্টার নামে ভুয়া মন্তব্য প্রচার

0

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ০৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। এরপর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ ভেঙে দিয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গত ০৮ আগস্ট দেশে অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে। সম্প্রতি, রাজধানীর পলাশীতে শ্রী কৃষ্ণের জন্মাষ্টমী উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে অতিথি হিসেবে যান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল ও ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য-প্রযুক্তি  উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।। উক্ত অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে এই দুই উপদেষ্টা জামায়াতে ইসলামীকে ধর্ম ব্যবসায়ী আখ্যায়িত করে জনগণকে তাদের আর সুযোগ না দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন দাবিতে ‘ধর্ম ব্যবসায়ী জামায়াতকে আর সুযোগ না দেয়ার আহ্বান দুই উপদেষ্টার’ শিরোনামে যমুনা টিভির লোগোযুক্ত একটি সংবাদের স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এবং এখানে (আর্কাইভ)।

যমুনা টিভি

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ‘ধর্ম ব্যবসায়ী জামায়াতকে আর সুযোগ না দেয়ার আহ্বান দুই উপদেষ্টার’ শিরোনামে মূলধারার ইলেকট্রনিক সংবাদমাধ্যম যমুনা টিভি বা অন্য কোনো গণমাধ্যম এমন কোনো সংবাদ প্রকাশ করেনি। প্রকৃতপক্ষে, যমুনা টিভির ফেসবুক পেজে প্রচারিত একটি সংবাদের স্ক্রিনশট ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে আলোচিত সংবাদের ছবিটি তৈরি করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত সংবাদের স্ক্রিনশটটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। আমাদের পর্যবেক্ষনে স্ক্রিনশটটিকে যমুনা টিভির ফেসবুক পেজে শেয়ার করা সংবাদ আদলে তৈরি করা হয়েছে। 

উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে যমুনা টিভি‘র ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে প্রচারিত সংবাদ পর্যালোচনা করে উক্ত শিরোনাম সম্বলিত কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

তবে গত ২৬ আগস্ট যমুনা টেলিভিশনের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে ‘ধর্ম ব্যবসায়ীদের আর সুযোগ না দেয়ার আহ্বান দুই উপদেষ্টার’ শিরোনামে একটি সংবাদ লিংক সম্বলিত পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত পোস্টের সাথে প্রচারিত স্ক্রিনশটের সংবাদের ছবি ও বিজ্ঞাপনের পুরোপুরি ও শিরোনামের বেশিরভাগ অংশের মিল রয়েছে। অর্থাৎ যমুনা টিভির ফেসবুক পেজের এই পোস্টের স্ক্রিনশট এডিটের মাধ্যমে তাতে সংবাদ শিরোনাম অংশে ‘জামায়াতকে’ শব্দটি যুক্ত করা হয়েছে।

Comparison: Rumor Scanner 

একইদিনে যমুনা টিভি’র ওয়েবসাইটে একই শিরোনামে প্রকাশিত একটি সংবাদও খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত সংবাদের বরাতে জানা যায়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দুই উপদেষ্টা মূলত বিভিন্ন সময়ে দেশের রাজনীতিতে যারা ধর্মের অপব্যবহার করেছে তাদের প্রতি সতর্ক থাকা ও তাদের সুযোগ না দিয়ে নতুন বাংলাদেশে সব ধরণের অপসংস্কৃতি রুখে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। সংবাদের কোথাও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী’র নাম বা ঐ সংক্রান্ত কোনো তথ্য দেয়ার বিষয় উল্লেখ করা হয়নি।

উক্ত ঘটনায় দুই উপদেষ্টার বক্তব্যের ভিডিও যাচাই করেও জামায়াত ইসলামী সম্পর্কিত এমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। এছাড়া দেশের মূলধারার কোনো গণমাধ্যমেও আলোচিত দাবি সমর্থিত কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, ‘ধর্ম ব্যবসায়ী জামায়াতকে আর সুযোগ না দেয়ার আহ্বান দুই উপদেষ্টার’ শীর্ষক শিরোনামে যমুনা টিভির নামে প্রচারিত সংবাদের স্ক্রিনশটটি এডিটেড বা সম্পাদিত। 

তথ্যসূত্র

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড ও ক্রিকেট নিষিদ্ধ নিয়ে ড. ইউনূসের নামে প্রচারিত মন্তব্যটি মিথ্যা

0

সম্প্রতি সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের গণআন্দোলনের মুখে গত ০৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ ছেড়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর গত ০৮ আগস্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নিয়েছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এরই প্রেক্ষিতে, ‘সুন্দর একটি উদ্যোগ’ শীর্ষক শিরোনামে ক্রিকেট নিয়ে ড. ইউনূসের নামে একটি মন্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। দাবি করা হচ্ছে, ড. ইউনূস বলেছেন, ‘ক্রিকেট বাংলাদেশের তরুণদের মূল্যবান সময় নষ্ট ও মানষিক ভারসাম্য রক্ষায় বাধা, এই জন্য আমি খুব দ্রুত আলোচনার মাধ্যমে বিসিবি ও ক্রিকেটকে এ দেশ থেকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করবো’।

ক্রিকেট নিষিদ্ধ

ফেসবুক পোস্ট: এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড ও ক্রিকেট নিষিদ্ধ নিয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের এমন কোনো মন্তব্য করেননি বরং, কোনো তথ্য প্রমাণ ছাড়াই কথিত মন্তব্যটি ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নামে প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের ড. মুহাম্মদ ইউনূস অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ গ্রহণের পর এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) ও ক্রিকেট নিষিদ্ধ নিয়ে কোনো মন্তব্য করার সংবাদ বা খবর দেশীয় ও আন্তর্জাতিক কোনো মূলধারার গণমাধ্যমে পাওয়া যায়নি।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদও এমন কোনো মন্তব্য করার বিষয়ে কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি। 

উল্টো গণমাধ্যম ও সংবাদ সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী (, ) দেশের রাজনৈতিক বাস্তবতা বদলে যাওয়ায় চলতি বছরের অক্টোবরে বাংলাদেশের মাটিতে আইসিসি নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ হওয়া নিয়ে শঙ্কা দেখা দিলে আসিফ মাহমুদ নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজনে আইসিসির আস্থা ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করার কথা বলেন। যদিও পরবর্তীতে জানা গেছে যে ২০২৪ সালের নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ বাংলাদেশ থেকে সরিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে নেওয়া হয়েছে।  

সুতরাং, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড ও ক্রিকেট নিষিদ্ধ নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত মন্তব্যটি মিথ্যা ও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র

বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হত্যাকাণ্ড দাবিতে মিয়ানমারের ভিডিও প্রচার 

সম্প্রতি, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের দীর্ঘ ১৫ বছরের ক্ষমতার অবসান ঘটে। সরকার পতনের পর দেশের একাধিক স্থানে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বাড়ি-ঘর ও মন্দিরে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এর প্রেক্ষিতে বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়েছে দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হত্যাকাণ্ড

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স (সাবেক টুইটার)-এ প্রচারিত এমন পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি বাংলাদেশের নয় বরং, ভিডিওটি মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর উপর চালানো নারকীয় হত্যাকাণ্ডের একটি চিত্র। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে সেন্সরবিহীন ভিডিও শেয়ারিং ওয়েবসাইট Alivegore এবং hamidvai90 নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে আলোচিত ভিডিওটির সন্ধান পাওয়া যায়। 

Screenshot College by Rumor Scanner

ভিডিওগুলোর শিরোনাম থেকে জানা যায়, এটি মূলত মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর উপর চালানো হত্যাকাণ্ডের একটি ভিডিও।

পরবর্তীতে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের আঞ্চলিক গণমাধ্যম The Arakan Express News এর এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে গত ৭ আগস্ট প্রচারিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। পোস্টটিতে আলোচিত ভিডিওটির দুটি স্ক্রিনশট ব্যবহার করে দাবি করা হয়, গত ৭ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মাংডু শহর থেকে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের প্রবেশের চেষ্টা করলে আরাকান আর্মিরা তাদের হত্যা করেন। এ সময় প্রাণে বেঁচে যাওয়া একজন ব্যক্তি উক্ত ঘটনার চিত্রটি ধারণ করেন। ছবিগুলো ভয়াবহ চিত্রেরই অংশ বিশেষ।

Screenshot: X

এছাড়াও পরবর্তীতে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ভারতের মেঘালয় পুলিশের ইন্সটাগ্রামে গত ৯ আগস্ট প্রচারিত একটি পোস্টের সন্ধানও পাওয়া যায়। যেখানে তারা আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির একটি ছবি প্রচার করে জনসাধারণকে গুজবে বিভ্রান্ত না হবার আহ্বান জানান। তারা জানান আলোচিত ভিডিওটি বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষদের উপর নির্যাতনের নয়। এটি একটি গুজব মাত্র। 

Screenshot: Instagram 

সুতরাং, মিয়ানমারের থেকে পালিয়ে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে প্রবেশের সময় আরাকান আর্মির গুলিতে নিহত হওয়ার ভিডিওকে বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর চালানো নির্যাতনের ভিডিও দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র

বন্যার কারণে সকল অপারেটর ৩০ জিবি ফ্রি ইন্টারনেট দিচ্ছে শীর্ষক দাবিটি ভুয়া

0

বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় জেলাসহ নানা জায়গায় পানি বেড়ে ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি করেছে। চলমান এই বন্যায় দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় কয়েকটি জেলায় সরকারি হিসেবে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৭ জনে দাঁড়িয়েছে। ভয়াবহ এই বন্যায় এখন পর্যন্ত প্রায় ৫৬ লাখ ১৯ হাজার ৩৭৫ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে সরকার। এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দাবি প্রচার করা হচ্ছে, বন্যার কারণে সকল অপারেটর তাদের গ্রাহককে ফ্রি ৩০ জিবি ইন্টারনেট দিচ্ছে। এক্ষেত্রে মন্তব্য সেকশনে প্রদত্ত লিঙ্কে ক্লিক করতে নির্দেশ দেওয়া হয়।

৩০ জিবি ফ্রি

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, বন্যার কারণে সকল অপারেটরের ৩০ জিবি ইন্টারনেট ফ্রি দেওয়ার ক্যাম্পেইন লিংকটি ভুয়া এবং এই পদ্ধতিতে ৩০ জিবি ফ্রি ইন্টারনেট পাওয়ার বিষয়টিও মিথ্যা এবং প্রতারণামূলক।

অনুসন্ধানে দাবিকৃত পোস্টের মন্তব্য সেকশনে প্রদত্ত লিঙ্ক পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায় এটি বাংলাদেশি কোনো মোবাইল অপারেটর কিংবা তার সাথে সম্পৃক্ত কোনো প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার ওয়েবসাইট নয়। 

ওয়েবসাইট লিঙ্কে ক্লিক করলে এটি একটি সার্ভেতে অংশগ্রহণ করতে নির্দেশ দেয় যেখানে বয়স, লিঙ্গ, পরিবারের সদস্য ইত্যাদি তথ্য জানতে চাওয়া হয়। একইসাথে বলা হয় প্রতি মাসে দশজন বাংলাদেশে বসবাসকারী ব্যক্তি উক্ত সার্ভে পূরণ করে ভিডিও গেমিং কনসোল প্লেস্টেশন ফাইভ জিততে পারেন। কোথাও ৩০ জিবি ইন্টারনেটের কোনো কথা উল্লেখ করা হয়নি।

Screenshots & Collage of Fake Website

অতঃপর, বেশ কয়েকটি বক্স থেকে সর্বোচ্চ তিনটি বক্স নির্বাচন করতে বলা হয় এবং ২ টি ধাপ অতিক্রম করেই প্লেস্টেশন ফাইভ জিতে নিতে বলা হয়। কিন্তু, উক্ত দুইটি ধাপের প্রথম ধাপে Babu88 নামের একটি জুয়ার সাইটে অ্যাকাউন্ট খুলতে বলা হয়। পুরো ধাপে কোথাও ৩০ জিবি ডাটা বা ইন্টারনেট ফ্রিতে দেওয়ার বা পাওয়ার কোনো উল্লেখ করা হয়নি। বরং জুয়ার সাইটে অ্যাকাউন্ট খুলে ভিডিও গেমিং কনসোল প্লেস্টেশন ফাইভ জিতে নেওয়ার লোভ দেখানো হয়।

অতঃপর, এ বিষয়ে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে অনুসন্ধান করলে জানা যায়, কিছু মোবাইল অপারেটর শর্তসাপেক্ষে সীমিত মেয়াদের সীমিত টকটাইম ও ইন্টারনেট ফ্রিতে দিয়েছে। যেমন: নির্দিষ্ট কিছু এলাকায় তিন দিন মেয়াদের ১০ মিনিট ও ৫০০ এমবি ফ্রি দিয়েছে গ্রামীণফোন।

তাছাড়া, শর্তসাপেক্ষে বন্যা দুর্গত নির্দিষ্ট কিছু এলাকায় একই পরিমাণ টকটাইম ও ইন্টারনেট ফ্রি দিয়েছে বাংলালিংক। এছাড়া, শর্তসাপেক্ষে রবি দিচ্ছে ২০ মিনিট টকটাইম ও ২৫০ এমবি ফ্রি। তবে কোনো অপারেটরই ৩০ জিবি ডাটা ফ্রি দেওয়ার সপক্ষে কোনো বিশ্বস্ত তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি।

অর্থাৎ, বন্যার কারণে সকল অপারেটর তাদের গ্রাহকদের ৩০ জিবি ইন্টারনেট ডাটা ফ্রি’তে দিচ্ছে শীর্ষক দাবিটি মিথ্যা এবং উক্ত দাবিতে সংযুক্ত ওয়েবসাইট লিঙ্কটিও ভুয়া।

তথ্যসূত্র

ডেইলি বাংলাদেশের ফটোকার্ড নকল করে ছাত্রলীগ নেত্রী আতিকাকে নিয়ে ভুয়া তথ্য

0

সম্প্রতি, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আতিকা বিনতে হোসাইনের ছবি ব্যবহার করে ‘বাংলাদেশে ভাইরাল হয়ে পেলেন পর্ণ চুক্তির প্রস্তাব’ শীর্ষক তথ্যে বা শিরোনামে ‘ডেইলি বাংলাদেশ’ এর লোগো সম্বলিত একটি ফটোকার্ড ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

ছাত্রলীগ নেত্রী

Atika Binte Hussian নামের ফেসবুক পেজ থেকে প্রচারিত ফটোকার্ডটি দেখুন- এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ফেসবুক পোস্ট দেখুন- এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আতিকা বিনতে হোসাইনের ছবি ব্যবহার করে ‘বাংলাদেশে ভাইরাল হয়ে পেলেন পর্ণ চুক্তির প্রস্তাব’ শীর্ষক তথ্যে বা শিরোনামে কোনো সংবাদ বা প্রতিবেদন বা ফটোকার্ড ‘ডেইলি বাংলাদেশ’ প্রকাশ করেনি বরং, ডেইলি বাংলাদেশের ফেসবুক পেজে গত ০৭ আগস্ট ‘অলিম্পিকে ভাইরাল হয়ে পেলেন পর্ণ চুক্তির প্রস্তাব’ শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ফটোকার্ড সম্পাদনার মাধ্যমে তাতে ছবি ও শিরোনাম পরিবর্তন করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে দাবির সত্যতা যাচাইয়ে ফটোকার্ডটিতে থাকা লোগো’র সূত্র ধরে ডেইলি বাংলাদেশের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে প্রচারিত ফটোকার্ডগুলো পর্যালোচনা করে উক্ত তথ্য বা শিরোনাম সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও, ডেউলি বাংলাদেশ’র ওয়েবসাইট বা অন্য কোনো গণমাধ্যমেও উক্ত দাবির বিষয়ে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

তবে ডেইলি বাংলাদেশের ফেসবুক পেজে গত ০৭ আগস্ট ‘অলিম্পিকে ভাইরাল হয়ে পেলেন পর্ণ চুক্তির প্রস্তাব’ শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়। ফটোকার্ডটি পর্যলোচনা করে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডের সাথে এর সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়। এই ফটোকার্ডটিতে থাকা ছবির পরিবর্তে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডটিতে আতিকা বিনতে হোসাইনের ছবি যুক্ত করা হয়েছে এবং ‘অলিম্পিকে’ এর পরিবর্তে ‘বাংলাদেশে’ লেখা হয়েছে।

Image comparison: Rumor Scanner 

উক্ত ফটোকার্ড সম্বলিত পোস্টের মন্তব্যের ঘরে পাওয়া ‘অলিম্পিকে ভাইরাল হয়ে পেলেন পর্ণ চুক্তির প্রস্তাব’ শিরোনামে গণমাধ্যমটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ফরাসি পোল ভল্টার অ্যান্থনি আম্মিরাতি অলিম্পিক গেমসে ৫.৭০ মিটার উচ্চতায় লাফ দেয়ার সময় অপ্রত্যাশিতভাবে তার পুরুষাঙ্গ ক্রসবার স্পর্শ করে। এ ঘটনার পর ক্যামসোডা নামের একটি পর্নোগ্রাফিক ওয়েবসাইট আম্মিরাতিকে ২ লাখ ৫০ হাজার ডলারের একটি চুক্তির প্রস্তাব দেয়।

Atika Binte Hussian নামের কথিত ফেসবুক পেজটি ২০২৩ সালের ০১ এপ্রিল পেজটি চালুর পর এখন পর্যন্ত একাধিকবার নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। শুরুতে ‘ᴅᴇᴘʀᴇssɪᴏɴ’ নাম দেওয়া হলেও ২০২৩ সালের ০২ এপ্রিল নাম বদলে রাখা হয় ‘ডিপ্রেশনツ’। পরবরর্তীতে, চলতি বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারী ‘Mohammad Esmail Sarker’ নাম রাখা হয় । এবং ১৭ মে ‘তিশা শুনছো..?’ ও ‘তিশা শুনছো..?’ নামে দুইবার নাম পরিবর্তন করেন। সর্বশেষ গত ০৭ আগস্ট ‘Atika Binte Hussian’ নামে বর্তমান নাম রাখা হয়।

সুতরাং, ছাত্রলীগ নেত্রী আতিকা বিনতে হোসাইনের ছবি সম্বলিত ‘বাংলাদেশে ভাইরাল হয়ে পেলেন পর্ণ চুক্তির প্রস্তাব’ শীর্ষক তথ্যে বা শিরোনামে ‘ডেইলি বাংলাদেশ’ এর লোগো সম্বলিত ইন্টারনেটে প্রচারিত ফটোকার্ডটি সম্পূর্ণ ভুয়া ও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র

রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগের ভুয়া তথ্য ইউটিউবে 

গত ০৫ আগস্ট বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগের পর দেশ ছাড়েন। পরবর্তীতে, রাষ্ট্রপতি কর্তৃক সংসদ ভেঙে দেওয়ার পর দেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন হয়েছে। দেশের বিভিন্ন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের বদলি অথবা অব্যাহতি দেয়া হচ্ছে। এরই প্রেক্ষিতে, সম্প্রতি রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন সেনাপ্রধানের নির্দেশে ক্ষমা চেয়ে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও ইউটিউবে প্রচার করা হয়েছে। 

সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগের

উক্ত দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদন প্রকাশের সময় পর্যন্ত ভিডিওটি ০১ লাখ ৩৪ হাজার বারেরও বেশি দেখা হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সেনাপ্রধানের নির্দেশে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন পদত্যাগের কোনো ঘোষণা দেননি বরং অধিক ভিউ পাওয়ার আশায় চটকদার থাম্বনেইল ব্যবহার করে ভুয়া এই দাবি প্রচার করা হয়েছে।

প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, ভিডিওর শুরুতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুলের একটি ভিডিও যুক্ত করা হয়েছে এবং ভিডিওর বাকি অংশে রাষ্ট্রপতির বেশ কয়েকটি ছবি ও ভিডিও যুক্ত করে একজন ব্যক্তিতে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের কথা বলতে শোনা যায়।

অনুসন্ধানে ড. আসিফ নজরুল এর অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে গত ১০ আগস্ট প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। প্রচারিত ভিডিওটির প্রথম অংশে ব্যবহৃত ড. আসিফ নজরুলের বক্তব্যের সাথে উক্ত ভিডিওটির বেশকিছু অংশ মিলে যায়। উক্ত ভিডিওতে ড. আসিফ নজরুল রাষ্ট্রপতির নয় বরং সম্প্রতি পদত্যাগ করা সাবেক প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান সম্পর্কে কথা বলেছেন। প্রচারিত ভিডিওর বাকি অংশে কোনো সূত্র ছাড়া এবং সম্পূর্ণ ভিত্তিহীনভাবে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ সম্পর্কে বলা হয়েছে।

Screenshot collage: Rumor Scanner

এছাড়াও, দেশের প্রথম সারির গণমাধ্যমে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের বিষয়ে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।  

সুতরাং, সম্প্রতি রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন সেনাপ্রধানের নির্দেশে ক্ষমা চেয়ে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

সৌদি সংবাদ পাঠিকা চলমান বন্যার দৃশ্য দেখে কেঁদেছেন দাবিতে সম্পাদিত ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি অতি বৃষ্টি ও ভারত থেকে আসা পাহাড়ি ঢলের ফলে দেশের বেশ কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এই বন্যাকবলিত এলাকাগুলোর করুণ চিত্র তুলে ধরে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন ছবি ও ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে, সম্প্রতি এক সৌদি নারী সংবাদ পাঠিকা দেশে চলমান বন্যার খবর পড়তে গিয়ে কেঁদেছেন শীর্ষক দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে।

বন্যার দৃশ্য

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি দেশের চলমান বন্যার সংবাদ পড়তে গিয়ে উক্ত নারী সংবাদ পাঠিকার কান্নার দৃশ্য নয় বরং ২০১৯ সালে সিরিয়ার একটি সংবাদ পাঠের সময় পাঠিকার কান্নার দৃশ্যের ভিডিও সম্পাদনা করে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানে সিরিয়া ভিত্তিক মধ্যপ্রাচ্যের আরবি ভাষার গণমাধ্যম Orient News এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০১৯ সালের ২৫ জুলাই প্রকাশিত মূল ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়। এছাড়াও, Orient News এর অফিশিয়াল এক্স (টুইটার) অ্যাকাউন্টে একই দিনে ভিডিওটি প্রচার করা হয়। 

Comparison: Rumor Scanner

ভিডিওটিতে আরবি ভাষায় সিরিয়া নিয়ে করা একটি রিপোর্ট পড়তে গিয়ে সংবাদ পাঠিকাকে আবেগতাড়িত হয়ে কান্না করতে দেখা যায়। ওরিয়েন্ট টিভিতে সংবাদ পাঠিকার সিরিয়া নিয়ে পাঁচ বছরের পুরোনো এই রিপোর্ট পড়তে গিয়ে কেঁদে ফেলার এই ভিডিওটির ব্যাকগ্রাউন্ড পরিবর্তন করে এবং চলমান বন্যা পরিস্থিতি দাবিতে একটি এআই দিয়ে তৈরি ছবি যুক্ত করে প্রচার করা হয়েছে।

সুতরাং, বাংলাদেশের চলমান বন্যা পরিস্থিতির খবর পড়তে গিয়ে সৌদি সংবাদ পাঠিকা কেঁদেছেন দাবিতে পুরোনো ও ভিন্ন ঘটনার সংবাদের একটি ফুটেজ প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পাদিত।

তথ্যসূত্র

উপদেষ্টা আসিফ ও নাহিদ ফ্লোরিং করে থাকেন দাবিতে প্রচারিত ছবিটি ভিন্ন ব্যক্তির বাসার 

0

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দুই উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ এখনও ফ্লোরিং করে থাকে দাবিতে একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে প্রচারিত এমন পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ছবিটি নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদের ফ্লোরিং করে থাকার নয় বরং তাদের আহত বন্ধুকে দেখতে গিয়ে ভিন্ন ব্যক্তির বাসায় তোলা ছবিকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানে জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোর সাংবাদিক তারেক হাসান নির্ঝরের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে আজ (২৭ আগস্ট) একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook

উক্ত পোস্টে তিনি আলোচিত দাবিতে প্রচারিত পোস্টের একটি স্ক্রিনশট শেয়ার করে জানান, “জার্সি পরা ছেলেটা আমার ছোটভাই আসিফ হিমাদ্রী। প্রথম আলোর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক। গতকাল রাতে সচিবালয়ে আনসার সদস্যরা ওর ওপর হামলা চালায়। হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে হিমাদ্রী আমার বাসায় আসে। নাহিদ হলো হিমাদ্রীর ব্যাচমেট বন্ধু। হিমাদ্রীর ওপর হামলার খবর পেয়ে নাহিদ আসিফ মাহমুদকে নিয়ে ল্যাবএইড হাসপাতালে যায়। সেখানে না পেয়ে পরে খোঁজ নিয়ে বাসায় এসে বন্ধুকে দেখে গেছে। এটাই। ওদের বন্ধুত্বটাই এখানে প্রধান। আর কিছু না।”

নির্ঝর তার পোস্টে জানান, এই দুই উপদেষ্টা তাদের সরকারি বাসভবনে থাকছেন। 

বাংলা ট্রিবিউন এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, উপদেষ্টারা সরকারি খরচে রেল ভ্রমণ ও বিদেশ ভ্রমণের পাশাপাশি সরকারি বাসভবন সুবিধা পাবেন। 

উল্লেখ্য, রাজধানীর সচিবালয় এলাকায় গত ২৫ আগস্টে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আনসার সদস্যদের সংঘর্ষের ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ এবং প্রথম আলোর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি আসিফসহ অন্তত ৪০ জন আহত হয়েছেন।

সুতরাং, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দুই উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ এখনও ফ্লোরিং করে থাকেন দাবিতে ভিন্ন প্রেক্ষাপটের ছবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

তারেক রহমানকে নিয়ে সারজিস আলমের মন্তব্য দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি সম্পাদিত

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম ‘তারেক রহমানের দেশে এসে লাভ নেই’ শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

আলোচিত দাবিতে প্রচারিত কথিত এই ভিডিওতে সারজিস আলমকে বলতে শোনা যায়, তারেক জিয়া এই আন্দোলনে ছাত্রদল নেতাকর্মীদের প্রবেশ করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। আব্দুল্লাহ আল পিন্টু এখানে টাকা দিচ্ছেন। এখানে আসিফ নজরুল আছেন, ফরহাদ মাজহার আছেন। তারা বিভিন্ন ধরনের সংঘর্ষের দিকে ছাত্রদেরকে ফেলে দিচ্ছেন এবং আন্দোলনে মেয়েদেরকে ব্যবহার করা হচ্ছে। যারা শহিদুল্লাহ হলে আক্রমণ করেছে, যারা বিজয় একাত্তর হলে আক্রমণ করেছে যারা বঙ্গবন্ধু হলে আক্রমণ করেছে তারা কেউ মেয়ে নয় তারা সবাই শিবির-ছাত্রদলের ক্যাডার। আন্দোলনটা এখন শিবির-ছাত্রদলের সাথে ছাত্রলীগের আদর্শিক লড়াই হিসেবে দাড়িয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদন প্রকাশ অব্দি এখন পর্যন্ত ভাইরাল আলোচিত ভিডিওটি ৫ লক্ষ ৬৬ হাজারবার দেখা হয়েছে এবং ৯ হাজার রিয়েকশন দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, ৪ হাজার ৭ শতবার শেয়ার করা হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সারজিস আলম তারেক রহমানকে নিয়ে এমন কোনো মন্তব্য করেনন বরং উক্ত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি সম্পাদিত। প্রকৃতপক্ষে, ভিন্ন ঘটনার অডিও সারজিস আলমের ভিডিওতে যুক্ত করে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

ভিডিও যাচাই

অনুসন্ধানে সারজিস আলমের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে গত ৬ আগস্ট প্রকাশিত একটি লাইভ ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর সাদৃশ্য খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison: Rumor Scanner 

উক্ত লাইভ ভিডিওতে সারজিস আলম তার আসল ফেসবুক অ্যাকাউন্ট নিয়ে আলোচনা করেন এবং তার নামে তৈরি ভুয়া ফেসবুক অ্যাকাউন্ট নিয়ে সাধারণ মানুষসহ গণমাধ্যম কর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানান। এছাড়া উক্ত ভিডিওতে তিনি সরকার পতনের পর সংগঠিত সহিংসতা ও সংখ্যালঘুদের উপর হামলার দাবিতে কথা বলেন। তবে উক্ত ভিডিওতে তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়ে কোন মন্তব্য করেননি।

অডিও যাচাই

অনুসন্ধানে নাগরিক টিভির ফেসবুক পেজে গত ১৫ জুলাই প্রকাশিত একটি ভিডিওতে আলোচিত ভিডিওর অডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, উক্ত কথাগুলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন বলছিলেন।

সুতরাং, সারজিস আলমের ভিডিওতে ভিন্ন অডিও যুক্ত করে তিনি তারেক রহমানকে নিয়ে মন্তব্য করেছেন দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পাদিত।

তথ্যসূত্র