Home Blog Page 626

কালবেলা ও প্রথম আলো’র ফটোকার্ড নকল করে মির্জা ফখরুলের নামে ভুয়া তথ্য  প্রচার

সম্প্রতি, ‘নকল পুলিশ ভেস্ট পরে বাসে আগুন দিয়েছে বিএনপি কর্মীরা ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে মির্জা ফখরুল’ শীর্ষক শিরোনামে জাতীয় দৈনিক কালবেলা ও প্রথম আলোর ডিজাইন সম্বলিত দুইটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

কালবেলা

কালবেলা’র ডিজাইন সম্বলিত ফটোকার্ডে আলোচিত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট (আর্কাইভ) এবং পোস্ট (আর্কাইভ)।

প্রথম আলো’র ডিজাইন সম্বলিত ফটোকার্ডে ফেসবুকে প্রচারিত এমন পোস্ট (আর্কাইভ)।  

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ‘নকল পুলিশ ভেস্ট পরে বাসে আগুন দিয়েছে বিএনপি কর্মীরা’ শীর্ষক কোনো মন্তব্য করেননি এবং কালবেলা এবং প্রথম আলোও ‘নকল পুলিশ ভেস্ট পরে বাসে আগুন দিয়েছে বিএনপি কর্মীরা ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে মির্জা ফখরুল’ শীর্ষক তথ্য সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি বরং আলোচিত এই ফটোকার্ডটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে কালবেলা’র ফটোকার্ডের আদলে তৈরি ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। এতে এই সংবাদটি প্রচারের তারিখ হিসেবে ২৯ অক্টোবরের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে ফটোকার্ডটিতে থাকা লোগো ও তারিখের সূত্র ধরে কালবেলা’র ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে গত ২৯ অক্টোবর বা তার আগে পরে উক্ত শিরোনাম বা তথ্য সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া, কালবেলা’র ওয়েবসাইট, ইউটিউব চ্যানেল বা অন্যকোনো গণমাধ্যমেও উক্ত দাবির বিষয়ে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

Photocard Analysis: Rumor Scanner

অর্থাৎ, আলোচিত ফটোকার্ডটির সাথে জাতীয় দৈনিক কালবেলা’র ফটোকার্ডের ডিজাইনের প্রায় হুবহু মিল থাকলেও আলোচিত দাবিতে কালবেলা কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি। 

পরবর্তীতে প্রথম আলো’র ফটোকার্ডের আদলে তৈরি ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। এতে এই সংবাদটি প্রচারের তারিখ উল্লেখ না থাকায় দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে ফটোকার্ডটিতে থাকা লোগোর সূত্র ধরে প্রথম আলো’র ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে সম্প্রতি প্রচারিত ফটোকার্ডগুলো পর্যালোচনা করা হয়। কিন্তু উক্ত শিরোনাম বা তথ্য সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড গণমাধ্যমটির পেজে খুঁজে পাওয়া যায়নি এবং তাদের ওয়েবসাইট, ইউটিউব চ্যানেলে উক্ত দাবির বিষয়ে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এছাড়াও আলোচিত দাবিতে প্রথম আলো’র ফটোকার্ডের আদলে তৈরি ফটোকার্ডের ফন্টের সাথে প্রথম আলো’র ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে প্রচারিত ফটোকার্ডের ফন্টের পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়।

Photocard Comparison by Rumor Scanner 

আলোচিত ফটোকার্ডের ন্যায় প্রথম আলো কর্তৃক প্রচারিত ‘মিথ্যা প্রচারণা’ শীর্ষক ফটোকার্ড ডিজাইনের মিল খুঁজে পাওয়া যায়। প্রথম আলো উক্ত ফর্মেটে কেবল তাদের নিয়ে ইন্টারনেটে ছড়ানো ভুল তথ্যের বিষয়ে জানায়। এই ফর্মেটের ফটোকার্ডগুলোয় শুধুমাত্র কালো রঙে শিরোনাম লেখা হয়ে থাকে। সেখানে আলোচিত ফটোকার্ডটিতে লাল এবং কালো দুটো রঙ ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়াও উক্ত ফটোকার্ড টেক্সটের ফন্টগুলো বোল্ড হলেও প্রথম আলো কর্তৃক প্রচারিত এই ফর্মেটের ফটোকার্ডের টেক্সট সাধারণত বোল্ড করা হয় না।

অর্থাৎ, জাতীয় দৈনিক প্রথম আলো ‘নকল পুলিশ ভেস্ট পরে বাসে আগুন দিয়েছে বিএনপি কর্মীরা ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে মির্জা ফখরুল’ শীর্ষক শিরোনামে কোনো ফটোকার্ড প্রচার করেনি।

মূলত, গত ২৮ অক্টোবর বিএনপি’র মহাসমাবেশে দলটির নেতাকর্মীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষের পর আজ ২৯ অক্টোবর দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডাকা হয়। এতে গাজীপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এছাড়াও এদিন সকালে রাজধানীর গুলশান-২-এর বাসা থেকে মির্জা ফখরুলকে আটক করে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। এরই প্রেক্ষিতে ‘নকল পুলিশ ভেস্ট পরে বাসে আগুন দিয়েছে বিএনপি কর্মীরা ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে মির্জা ফখরুল’ শীর্ষক শিরোনামে জাতীয় দৈনিক কালবেলা ও প্রথম আলোর ফটোকার্ডের আদলে তৈরি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে উক্ত বক্তব্য প্রদানের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। এছাড়াও দেখা যায়, দৈনিক কালবেলা ও প্রথম আলো আলোচিত দাবিতে কোনো ফটোকার্ড প্রচার করেনি।

প্রসঙ্গত, গত ২৮ অক্টোবর মূলধারার গণমাধ্যম ডেইলি স্টারে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে কাকরাইলে বাসে আগুনের ঘটনার বিষয়ে বাস চালকের বরাতে জানানো হয়, কাকরাইল এলাকায় বাসে আগুন দেওয়া দুই যুবক পুলিশের ভেস্ট পরিহিত ছিলেন।

উক্ত ঘটনায় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) প্রধান হারুন অর রশীদ বলেন, “রাজধানীর কাকরাইলে বাসে অগ্নিসংযোগকারী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বা ডিবির কেউ না। অনেক সময় ডিবির জ্যাকেট পড়ে ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধ করে অপরাধীরা। ঢাকায় বাসে আগুনের ঘটনাটিও তেমন কোনো চক্র। যারাই এটা করেছে, আমরা তাদের খুঁজছি।”

এর মধ্যে বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনায় ‘প্রেস’ লেখা ভেস্ট পরিহিত এক যুবককে শনাক্ত করেছে পুলিশ। গণমাধ্যম থেকে পুলিশের বরাতে জানা যায়, বাসে আগুন দেওয়া ‘প্রেস’ লেখা ভেস্ট পরিহিত ওই যুবক হলেন রবিউল ইসলাম নয়ন। তিনি যুবদল ঢাকা দক্ষিণের সদস্য সচিব।

উল্লেখ্য, বিএনপি’র ২৮ অক্টোবরে সমাবেশের ঘটনায় বিভিন্ন ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে একাধিক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কিছু প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে ‘নকল পুলিশ ভেস্ট পরে বাসে আগুন দিয়েছে বিএনপি কর্মীরা’ শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং প্রচারিত ফটোকার্ড দুইটি ভুয়া ও  বানোয়াট।

তথ্যসূত্র

  • Kalbela Facebook Page
  • Prothom Alo Facebook Page
  • Rumor Scanner’s Own Analysis

গণমাধ্যমের ফটোকার্ড নকল করে আক্তারুজ্জামানকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব করার ভুয়া তথ্য প্রচার

সম্প্রতি, সংবাদমাধ্যম প্রথম আলো এবং ডেইলি স্টারে’র লোগো সম্বলিত পৃথক পৃথক ফটোকার্ডে তারেক রহমানের নির্দেশে মেজর(অব.) আক্তারুজ্জামানকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে দাবিতে একটি তথ্য ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়।

বিএনপি

ফেসবুকে প্রচারিত প্রথম আলো’র লোগো সম্বলিত ফটোকার্ড দেখুন এখানে(আইকাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ)।

ফেসবুকে একই দাবিতে প্রচারিত ডেইলি স্টারে’র লোগো সম্বলিত ফটোকার্ড দেখুন এখানে(আর্কাইভ)

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, মেজর (অব.) আক্তারুজ্জামান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব নেননি বরং প্রথম আলো এবং ডেইলি স্টারে’র ফটোকার্ড নকল করে ভুয়া তথ্যটি প্রচার করা হচ্ছে।

প্রথমত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব হিসেবে মেজর(অব.) আক্তারুজ্জামানের দায়িত্ব নেওয়ার বিষয়ে দেশিয় কোনো সংবাদমাধ্যম কিংবা নির্ভরযোগ্য কোন সূত্র থেকে উক্ত দাবির সত্যতা নিশ্চিত করা যায়নি।

প্রথম আলো কী উক্ত শিরোনামে ফটোকার্ড প্রকাশ করেছে?

অনুসন্ধানে, প্রথম আলো’র ফেসবুক পেজ এবং ওয়েবসাইটে ২৯ অক্টোবর প্রকাশিত এরূপ কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এছাড়াও, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ড এবং প্রথম আলো’র প্রচলিত ফটোকার্ডের ফন্টের মধ্যে ভিন্নতা খুঁজে পাওয়া যায়।

Photocard Comparison: Rumor Scanner 

ডেইলি স্টার কী উক্ত শিরোনামে ফটোকার্ড প্রকাশ করেছে?

অনুসন্ধানে, দ্য ডেইলি স্টারের ফেসবুক পেজ এবং ওয়েবসাইটেও ২৯ অক্টোবর প্রকাশিত এরূপ কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এছাড়াও, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ড এবং ডেইলি স্টারে’র ফেসবুক পেজে পাওয়া প্রচলিত ফটোকার্ডের ফন্টের মধ্যে অমিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Photocard Comparison: Rumor Scanner 

এ ব্যাপারে অধিকতর সত্যতা নিশ্চিতের উদ্দেশ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবিরে’র সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি তথ্যটিকে সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং গুজব বলে রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করেছেন।

প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে মেজর (অব.) আক্তারুজ্জামানকে দলীয় প্রাথমিক সদস্যপদসহ সকল পদ থেকে বহিষ্কার করে বিএনপি।

মূলত, আজ ২৯ অক্টোবর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গ্রেপ্তার হন। তার গ্রেপ্তারের প্রেক্ষাপটে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে মেজর(অব.) আক্তারুজ্জামানকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে শীর্ষক দাবিতে মূলধারার গণমাধ্যম প্রথম আলো এবং ডেইলি স্টারে’র ডিজাইন সম্বলিত দুইটি ফটোকার্ড ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে। অনুসন্ধানে জানা যায়, দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, গণমাধ্যম দুইটির ফটোকার্ড নকল করে আলোচিত দাবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। 

উল্লেখ্য, পূর্বেও প্রথম আলো’র ফটোকার্ড নকল করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নামে ভুয়া তথ্য প্রচারিত হলে সে বিষয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার টিম।

সুতরাং, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গ্রেপ্তার হওয়ায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব হিসেবে মেজর (অব.) আক্তারুজ্জামানকে দায়িত্ব দেওয়ার তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং উক্ত দাবিতে ডেইলি স্টার এবং প্রথম আলো’র নামে প্রচারিত ফটোকার্ড দুইটি ভুয়া ও বানোয়াট। 

তথ্যসূত্র

পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষে কথিত যুবদল নেতার নিহতের ঘটনায় বাংলাদেশ প্রতিদিনের সংবাদ বিকৃত করে প্রচার

সম্প্রতি, ‘নয়াপল্টনে নিজেদের ছোড়া ইট-পাটকেলে যুবদল নেতা নিহত’ শীর্ষক শিরোনামে একটি গণমাধ্যমের ওয়েবসাইটে  প্রকাশিত সংবাদের স্ক্রিনশট দাবিতে একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। 

যুবদল নেতা

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত একটি  পোস্ট (আর্কাইভ)।

আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ড পোস্ট (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ‘নয়াপল্টনে নিজেদের ছোড়া ইট-পাটকেলে যুবদল নেতা নিহত’ শীর্ষক শিরোনামে কোনো গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়নি। প্রকৃতপক্ষে, জাতীয় দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনের ওয়েবসাইটে ‘নয়াপল্টনে সংঘর্ষে যুবদল নেতা নিহত’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি সংবাদের শিরোনাম এবং ইন্ট্রো এডিট বা সম্পাদনার মাধ্যমে আলোচিত স্ক্রিনশটটি তৈরি করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে জাতীয় দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন’র ওয়েবসাইটে গত ২৮ অক্টোবর ‘নয়াপল্টনে সংঘর্ষে যুবদল নেতা নিহত’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Bangladesh Pratidin

প্রতিবেদনটি পর্যালোচনা দেখা যায়, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত প্রতিবেদনের স্ক্রিনশটের সাথে উক্ত পোর্টালের নিউজের টেমপ্লেটের হুবহু মিল রয়েছে। এছাড়াও উক্ত নিউজে ব্যবহৃত ফিচার ইমেজ, ক্রেডিট লাইন এবং প্রকাশের তারিখের সাথে আলোচিত স্ক্রিনশটের প্রতিবেদনের মিল রয়েছে।

Screenshot Comparison by Rumor Scanner 

এছাড়া, এ বিষয়ে অধিকতর নিশ্চিতে উক্ত প্রতিবেদনের URL-এর ক্যাশ এবং আর্কাইভ অনুসন্ধান করে আলোচিত স্ক্রিনশটে থাকা শিরোনামের সাথে উক্ত প্রতিবেদনের কোনো  মিল খুঁজে পাওয়া যায়নি।

পাশাপাশি; উক্ত দাবিতে অন্যান্য গণমাধ্যম বা সংশ্লিষ্ট কোনো গ্রহণযোগ্য সূত্রে কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি।

অর্থাৎ, আলোচিত দাবিতে কোনো গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়নি।

মূলত, গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে শেখ হাসিনা সরকার পতনের এক দফা দাবিতে মহাসমাবেশ আয়োজন করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। উক্ত সমাবেশে নেতাকর্মীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ চলাকালে শামীম মোল্লা নামের এক ব্যক্তি আহত হন। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় তাঁকে রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। পরবর্তীতে উক্ত ব্যক্তিকে যুবদল কর্মী বলে দাবি করে বিএনপি। এর প্রেক্ষিতে জাতীয় দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন তাদের ওয়েবসাইটে গত ২৮ অক্টোবর ‘নয়াপল্টনে সংঘর্ষে যুবদল নেতা নিহত’ শীর্ষক শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ করে। পরবর্তীতে উক্ত সংবাদের শিরোনাম ও ইন্ট্রো এডিট বা সম্পাদনার মাধ্যমে  ‘নয়াপল্টনে নিজেদের ছোড়া ইট-পাটকেলে যুবদল নেতা নিহত’-তে পরিবর্তন করে একটি স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

উল্লেখ্য, পূর্বেও বিএনপি’র এই মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে গুজব ছড়ানো হলে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। 

সুতরাং, ‘নয়াপল্টনে নিজেদের ছোড়া ইট-পাটকেলে যুবদল নেতা নিহত’ শীর্ষক শিরোনামে দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনের স্ক্রিনশট দাবিতে একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে; যা এডিটেড বা  সম্পাদিত।

তথ্যসূত্র

বিএনপি’র সমাবেশে সময় টিভি ও একাত্তর টিভিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়নি

সম্প্রতি, বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল সময় টিভি ও একাত্তর টিভিকে বিএনপির সমাবেশে অবাঞ্ছিত ঘোষণা শীর্ষক তথ্য বা শিরোনামে  সময় টিভি ও একাত্তর টিভির ডিজাইন সম্বলিত দুইটি আলাদা ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে সময় টিভির ডিজাইন সম্বলিত ফটোকার্ডসহ ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন, এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

বিএনপি

একাত্তর টিভির ডিজাইন সম্বলিত ফটোকার্ডসহ ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন, এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সময় টিভি ও একাত্তর টিভিকে বিএনপির সমাবেশে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়নি এবং সময় টিভি ও একাত্তর টিভি উক্ত দাবিতে কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি। প্রকৃতপক্ষে, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে আলোচিত ফটোকার্ড দুইটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে সময় টিভি এবং একাত্তর টিভির ডিজাইন সম্বলিত ফটোকার্ড দুইটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। তবে সেই ফটোকার্ডগুলোতে এই সংবাদটি প্রচারের কোনো তারিখ উল্লেখ করা হয়নি।

Collected from Facebook

তবে ২৮ অক্টোবরে ঢাকায় বিএনপির মহাসবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ায় ধারণা করা যায় বিএনপি’র এই মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করেই আলোচিত দাবিটি ইন্টারনেটে এসেছে। 

দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য ফটোকার্ডটিতে থাকা সময় টিভি ও একাত্তর টিভির লোগোর সূত্র ধরে ২৮ অক্টোবরে সময় টিভিএকাত্তর টিভির ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে প্রচারিত ফটোকার্ডগুলো পর্যালোচনা করে শিরোনাম বা তথ্য সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও সময় টিভি এবং একাত্তর টিভির ওয়েবসাইট কিংবা অন্যকোনো গণমাধ্যমেও উক্ত দাবিতে প্রচারিত কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে বিএনপির ইউটিউব চ্যানেলে ২৮ অক্টোবরে ঢাকার নয়া পল্টনে অনুষ্ঠিত মহাসমাবেশ থেকে প্রচারিত সরাসরি সম্প্রচার গুলো (, ,,, ,, )  বিশ্লেষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। তবে সেই ভিডিও গুলোতে সময় ও একাত্তর টিভিকে বিএনপির সমাবেশে বক্তব্য প্রদানকারী কোনো নেতা সময় ও একাত্তর টিভিকে বিএনপির সমাবেশে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করার কোনো বক্তব্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

Screenshot from Youtube

আলোচিত দাবির বিষয়ে জানতে বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবিরের কাছে জানতে চাইলে তিনি এই তথ্যটিকে ভুয়া বলে চিহ্নিত করেন।

তবে অনুসন্ধানে দেশিয় গণমাধ্যম দ্য ডেইলি স্টার এ গত ৮ আগস্টে “সময়-একাত্তর টিভির টকশো বর্জনের সিদ্ধান্ত বিএনপি নেতাদের” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদ প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বিএনপি নেতারা বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল সময় টিভি ও একাত্তর টিভির টকশো অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

বিএনপির প্রচার সম্পাদক ও মিডিয়া সেলের সদস্য সচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানির বরাত দিয়ে দ্য ডেইলি স্টার এ তথ্য প্রকাশ করে।

শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি বলেন, ‘টকশোতে অংশগ্রহণকারী দলের নেতৃবৃন্দ এবং কেন্দ্রীয় নেতারা আলোচনা করে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত আমরা এ দুটি টিভি চ্যানেলের টকশোতে অংশ নেব না।’

তিনি আরও বলেন, ‘সময় টিভিতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও জিয়া পরিবারকে হেয় করতে বিভিন্ন ভিডিও দেখাচ্ছে। চ্যানেলটি শত্রুর মতো আচরণ করছে, ভুয়া তথ্য ছড়াচ্ছে।’

জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোতে গত ৮ আগস্ট ‘বেসরকারি দুটি টেলিভিশনের টকশো বর্জনের সিদ্ধান্ত বিএনপির’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদ প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য পাওয়া যায়।

মূলত, গত ২৮ অক্টোবরে একদফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ঢাকার নয়া পল্টনে বিএনপি মহাসমাবেশ করে। উক্ত মহাসমাবেশে সময় টিভি ও একাত্তর টিভিকে বিএনপি অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে দাবিতে সময় টিভি এবং একাত্তর টিভির ডিজাইন সম্বলিত দুটি ফটোকার্ড ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। তবে অনুসন্ধানে ২৮ অক্টোবরের সমাবেশেবিএনপি কর্তৃক সময় টিভি ও একাত্তর টিভিকে  অবাঞ্ছিত ঘোষণা করার কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া সময় টিভি ও একাত্তর টিভি উক্ত দাবিতে কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি। প্রকৃতপক্ষে, গণমাধ্যম দুইটির ফটোকার্ড নকল করে আলোচিত ফটোকার্ডগুলো তৈরি করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ২৮ অক্টোবরে অনুষ্ঠিত বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে ইন্টারনেটে বিভিন্ন ভুল তথ্য প্রচারিত হলে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

এমন কিছু প্রতিবেদন দেখুন এখানে:

সুতরাং, ২৮ অক্টোবরে নয়া পল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশে সময় টিভি ও একাত্তর টিভিকে অবাঞ্ছিত করার দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা এবং উক্ত দাবিতে সময় টিভি ও একাত্তর টিভির নামে প্রচারিত ফটেকার্ডগুলো ভুয়া ও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র

কালবেলার ফটোকার্ড বিকৃত করে সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর নামে ভুয়া মন্তব্য প্রচার 

সম্প্রতি, ” পিটার হাস আমাদের উপরে তুলে মই সরিয়ে নিয়েছে” শীর্ষক মন্তব্যকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল এর সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর মন্তব্য দাবিতে জাতীয় দৈনিক কালবেলা’র ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

টুকু

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়,বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ‘পিটার হাস আমাদের উপরে তুলে মই সরিয়ে নিয়েছে’ শীর্ষক কোনো মন্তব্য করেননি এবং কালবেলাও উক্ত তথ্য সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি বরং আলোচিত এই ফটোকার্ডটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় এডিট করে তৈরি করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে কালবেলা’র ফটোকার্ডের ডিজাইন সম্বলিত ছবিটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। সেখানে এই সংবাদটি প্রচারের তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে ২৮ অক্টোবর ২০২৩। 

Screenshot: Facebook Claim Post

দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে ফটোকার্ডটিতে থাকা তারিখ এবং কালবেলা’র লোগোর সূত্র ধরে কালবেলা’র ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে ২৮ অক্টোবর প্রচারিত ফটোকার্ডগুলো পর্যালোচনা করে উক্ত শিরোনাম বা তথ্য সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি পাশাপাশি কালবেলা’র ওয়েবসাইটেও এসংক্রান্ত কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি।

এছাড়া, দাবিটির বিষয়ে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে অন্যান্য গণমাধ্যম এবং নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্রেও কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

তবে অনুসন্ধানে অনলাইন সংবাদমাধ্যম জাগো নিউজ২৪ এর ইংরেজি সংস্করণে ২০২২ সালের ৪ ডিসেম্বর “Jubo Dal President Tuku ‘detained” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে প্রকাশিত ছবির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডে থাকা ছবিটির হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot:jagonews24

উক্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, বিএনপির তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক আমিরুজ্জামান খান শিমুল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) সহযোগী সংগঠন যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাহউদ্দিন টুকুকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আটক করার দাবিতে অভিযোগ করে।

অর্থাৎ উক্ত প্রতিবেদনে উল্লেখিত ছবিটি সম্পাদনার মাধ্যমে আলোচিত ফটোকার্ডটিতে বসানো হয়েছে। তাছাড়া, আলোচিত ফটোকার্ডটির টেক্সট ফন্টের সাথে কালবেলা’র ফেসবুক পেজে প্রচারিত অন্যান্য ফটোকার্ডের টেক্সট ফন্টের ভিন্নতা রয়েছে।

মূলত, ‘পিটার হাস আমাদের উপরে তুলে মই সরিয়ে নিয়েছে’ শীর্ষক শিরোনামে একটি তথ্য বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু’র মন্তব্য দাবিতে জাতীয় দৈনিক কালবেলা’র ডিজাইন সম্বলিত ফটোকার্ডের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়। তবে অনুসন্ধানে কালবেলা’র ফেসবুক পেজ কিংবা অন্যান্য প্ল্যাটফর্মে উক্ত তথ্য সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া, মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো সূত্রে আলোচিত দাবিটির সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত বিভিন্ন গণমাধ্যমের নাম, লোগো, শিরোনাম এবং নকল ফটোকার্ড ব্যবহার করে অপপ্রচারের বিষয়ে গত ০৫ সেপ্টেম্বর বিস্তারিত ফ্যাক্ট ফাইল প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ‘পিটার হাস আমাদের উপরে তুলে মই সরিয়ে নিয়েছে’ শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং প্রচারিত ফটোকার্ডটি ভুয়া ও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র

ডিবিসি নিউজের ফটোকার্ড নকল করে তামিম ইকবালকে নিয়ে আকাশ চোপড়ার নামে ভুয়া মন্তব্য প্রচার

0

সম্প্রতি, সাবেক ভারতীয় ক্রিকেটার এবং ক্রিকেট বিশ্লেষক আকাশ চোপড়া তামিম ইকবালকে নিয়ে “তামিম কোনো খেলোয়াড়ের তালিকায় পড়ে না তার উচিত ইউটিউবিং করা” শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে মূলধারার সংবাদমাধ্যম ডিবিসি নিউজে’র লোগো সম্বলিত একটি ফটোকার্ড ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়।

তামিম

ফেসবুকে প্রচারিত এমনকিছু পোস্ট দেখুন এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সাবেক ভারতীয় ব্যাটসম্যান এবং ক্রিকেট বিশ্লেষক আকাশ চোপড়া তামিম ইকবালকে নিয়ে আলোচিত মন্তব্য করেননি বরং ডিবিসি নিউজে’র প্রচলিত ফটোকার্ডের আদলে ভুয়া ফটোকার্ড তৈরি করে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।

প্রথমত, আকাশ চোপড়া ক্রিকেটার তামিম ইকবালের বিষয়ে আলোচিত মন্তব্যটি করেছেন কী-না সে বিষয়ে অনুসন্ধান করা হয়। তবে দেশীয় বা আন্তর্জাতিক কোনো গণমাধ্যমে বা নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্রে আকাশ চোপড়ার এমন কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে, ডিবিসি নিউজের ফেসবুক পেজ এবং ওয়েবসাইটে কোথাও আলোচিত ফটোকার্ডটি খুঁজে পাওয়া যায়নি।

তবে, ডিবিসি নিউজে’র ফেসবুক পেজে ২০২৩ সালের ২৭ অক্টোবরের একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত পোস্ট থেকে জানা যায়, আলোচিত ফটোকার্ডটি ডিবিসি নিউজে’র লোগো ব্যবহার করে ভুয়া দাবিতে প্রচারিত হচ্ছে। 

Source: DBC News Facebook Page 

এই ব্যাপারে অধিকতর সত্যতা নিশ্চিতের উদ্দেশ্যে ডিবিসি নিউজে’র সিনিয়র ডিজিটাল মিডিয়া ম্যানেজার মো: কামরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি আলোচিত ফটোকার্ডটি ভুয়া এবং ডিবিসি নিউজে’র তৈরিকৃত নয় বলে রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করেছেন।

মূলত, ক্রিকেটার তামিম ইকবালের বিশ্বকাপ দল থেকে বাদ পড়ার প্রেক্ষাপটে তামিম ইকবালকে নিয়ে সাবেক ভারতীয় ক্রিকেটার আকাশ চোপড়ার “তামিম কোনো খেলোয়াড়ের তালিকায় পড়ে না তার উচিত ইউটিউবিং করা” শীর্ষক মন্তব্য সম্বলিত একটি ফটোকার্ড ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়। প্রকৃতপক্ষে, আকাশ চোপড়া তামিম ইকবালকে নিয়ে এরূপ কোনো মন্তব্য করেননি, ডিবিসি নিউজও আলোচিত ফটোকার্ডটি প্রকাশ করেনি।

উল্লেখ্য, পূর্বেও ক্রিকেটার তামিম ইকবালকে জড়িয়ে ডিবিসি নিউজের ফটোকার্ডের আদলে ভুয়া ফটোকার্ড প্রচারিত হলে সেবিষয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, আকাশ চোপড়া তামিম ইকবালকে নিয়ে “তামিম কোনো খেলোয়াড়ের তালিকায় পড়ে না তার উচিত ইউটিউবিং করা” শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা এবং উক্ত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডটি ভুয়া ও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র

  • Facebook Page: DBC News
  • Statement of Md. Kamrul Islam, Sr. Manager, Digital Media, DBC News

ফটোকার্ড নকল করে কমলাপুরে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের হাতে তরুণী লাঞ্ছিত হওয়ার ভুয়া সংবাদ প্রচার

সম্প্রতি, “কমলাপুর রেলস্টেশনে যাবার পথে ছাত্রদলের নেতাদের হাতে লাঞ্ছিত তরুণী” শীর্ষক শিরোনামে মূলধারার গণমাধ্যম ঢাকা পোস্টে’র লোগো সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

তরুণী

ফেসবুকে প্রচারিত এমনকিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, ঢাকা পোস্ট আলোচিত শিরোনামে কোনো ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি বরং ঢাকা পোস্টে’র প্রচলিত ফটোকার্ডের আদলে ভুয়া ফটোকার্ড তৈরি করে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত হচ্ছে।

অনুসন্ধানের শুরুতেই, ঢাকা পোস্টে’র ফেসবুক পেজে ২৮ অক্টোবর প্রকাশিত ফটোকর্ডগুলো পর্যবেক্ষণ করে আলোচিত শিরোনামের কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে, ঢাকা পোস্টে’র ফেসবুক পেজে ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবরের একটি পোস্ট খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার টিম।

উক্ত পোস্ট থেকে জানা যায়, ঢাকা পোস্টের নামে ছড়ানো আলোচিত ফটোকার্ডটি এবং এর তথ্য সঠিক নয়। বিভ্রান্তি এড়াতে তাদের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ এবং অনলাইনে যুক্ত থাকার আহ্বান জানায় সংবাদমাধ্যমটি।

Source: Dhaka Post Facebook Page

বিষয়টির অধিকতর সত্যতা নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে, ঢাকা পোস্টে’র চিফ রিপোর্টার আদনান রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে, এ ধরনের কোনো নিউজ বা পোস্ট হয়নি বলে রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করেন তিনি।

পরবর্তীতে, প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে কমলাপুর এলাকায় ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের হাতে তরুণী লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনার বিষয়ে অনুসন্ধান করে রিউমর স্ক্যানার টিম। কিন্তু কোনো সংবাদমাধ্যম কিংবা কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে আলোচিত দাবির সত্যতা নিশ্চিত করা যায়নি।

মূলত, ২৮ অক্টোবর ঢাকার নয়াপল্টন এলাকায় বিএনপি মহাসমাবেশ আহ্বান করে। উক্ত মহাসমাবেশের প্রেক্ষাপটে ঢাকা পোস্টের ফটোকার্ড নকল করে বিএনপির ছাত্রসংগঠন ছাত্রদলের নেতারা কমলাপুর রেলস্টেশনে যাবার পথে এক তরুণীকে লাঞ্ছিত করেছে দাবিতে একটি তথ্য ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে, কমলাপুর এলাকায় ছাত্রদলের নেতাদের হাতে তরুণী লাঞ্ছিত হবার কোনো ঘটনা ঘটেনি এবং ঢাকা পোস্ট উক্ত শিরোনামে কোনো ফটোকার্ডও প্রকাশ করেনি।

সুতরাং, কমলাপুর এলাকায় ছাত্রদলের নেতাদের হাতে তরুণী লাঞ্ছিত হওয়ার তথ্যটি মিথ্যা এবং উক্ত শিরোনামে ঢাকা পোস্টে’র ফটোকার্ডটি এডিটেড বা বিকৃত।

তথ্যসূত্র

  • Facebook Page: Dhaka Post
  • Statement of Adnan Rahman, Chief Reporter, Dhaka Post 

২৮ অক্টোবরের সমাবেশ ঘিরে তারেক জিয়াকে নিয়ে গণমাধ্যমের নামে ভুয়া ফটোকার্ড

সম্প্রতি ‘ডেটলাইন ২৮শে অক্টোবর সমাবেশে কমপক্ষে ৮০-১০০ টা লাশ চায় তারেক জিয়া’ শীর্ষক একটি দাবি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল যমুনা টিভি ও জাতীয় পর্যায়ের দৈনিক মানবজমিন এর ডিজাইন সম্বলিত দুইটি আলাদা ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

তারেক জিয়া

উক্ত দাবিতে যমুনা টিভি’র ডিজাইন সম্বলিত ফটোকার্ডের মাধ্যমে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ)।

একই দাবিতে মানবজমিনের ডিজাইন সম্বলিত ফটোকার্ডের মাধ্যমে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, তারেক জিয়াকে নিয়ে যমুনা টিভি ও মানবজমিন এরূপ কোনো ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি। প্রকৃতপক্ষে, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় যমুনা টিভি ও মানবজমিন এর ডিজাইন নকল করে আলোচিত এই ফটোকার্ড দুইটি তৈরি করা হয়েছে। 

যমুনা টিভি’র ফটোকার্ড যাচাই

অনুসন্ধানের শুরুতে রিউমর স্ক্যানার টিম আলোচিত দাবিতে যমুনা টিভি’র নাম ও লোগো ব্যবহার করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত ফটোকার্ডটি বিশ্লেষণ করে। এতে দেখা যায়, ফটোকার্ডটিতে কোনো তারিখের উল্লেখ নেই। তাই ফটোকার্ডটির প্রচারকাল সম্পর্কে কোনো ধারণা পাওয়া যায়নি। 

পরবর্তীতে যমুনা টিভি’র ওয়েবসাইট, ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ, ইউটিউব চ্যানেলইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে এ নিয়ে অনুসন্ধানে এমন কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মানবজমিন এর ফটোকার্ড যাচাই

অনুরূপভাবে একই দাবিতে মানবজমিন এর নাম ও লোগো ব্যবহার করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত ফটোকার্ডটি বিশ্লেষণ করেও দেখা যায়, ফটোকার্ডটিতে কোনো তারিখের উল্লেখ নেই। ফলে ফটোকার্ডটির প্রচারকাল সম্পর্কে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে মানবজমিন এর ওয়েবসাইট, ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ (১), (), ইউটিউব চ্যানেলে নিয়ে অনুসন্ধানে এমন কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

পাশাপাশি যমুনা টিভি ও মানবজমিন ছাড়াও এ নিয়ে অনুসন্ধানে অন্যান্য কোনো গণমাধ্যম সূত্রেও নির্ভরযোগ্য সূত্রে এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

এছাড়া তারেক রহমানের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজেও সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত একাধিক ভিডিও যাচাই করে তার এমন কোনো মন্তব্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

২৮ অক্টোবরকে ঘিরে তারেক রহমানের পেজে প্রকাশিত কিছু ভিডিও দেখুন 

মূলত, ২৮ অক্টোবর রাজধানী ঢাকায় এক দফা দাবিতে মহাসমাবেশের ডাক দেয়  বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। এ সমাবেশকে ঘিরে বিভিন্ন গণমাধ্যমের ডিজাইন সম্বলিত ফটোকার্ডে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন দাবি ছড়িয়ে পড়তে দেখা যায়। এরই ধারাবাহিকতায়  বেসরকারি টিভি চ্যানেল যমুনা টিভি ও জাতীয় পর্যায়ের দৈনিক মানবজমিন এর ডিজাইন সম্বলিত দুইটি আলাদা ফটোকার্ডে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নামে ‘ডেটলাইন ২৮শে অক্টোবর সমাবেশে কমপক্ষে ৮০-১০০ টা লাশ চায় তারেক জিয়া’ শীর্ষক একটি দাবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তবে অনুসন্ধানে দেখা যায়, যমুনা টিভি কিংবা মানবজমিন কেউই এরূপ কোনো ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি। উক্ত গণমাধ্যম দুইটির ফটোকার্ড নকল করে আলোচিত ফটোকার্ড দুইটি তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া, গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্য কোনো গ্রহণযোগ্য সূত্রে এরূপ কোনো সংবাদের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, বিএনপি’র ২৮ অক্টোবরে সমাবেশের ঘটনায় বিভিন্ন ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে একাধিক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কিছু প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, ‘ডেটলাইন ২৮শে অক্টোবর সমাবেশে কমপক্ষে ৮০-১০০ টা লাশ চায় তারেক জিয়া’ শীর্ষক দাবিতে প্রথম আলো ও মানবজমিন এর নামে প্রচারিত ফটোকার্ডগুলো ভুয়া ও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র


প্রথম আলো’র ফটোকার্ড নকল করে ছাত্রদল নেতাদের নামে বাসে আগুন দেওয়ার ভুয়া তথ্য প্রচার

সম্প্রতি, ‘কাকরাইলের বাসে আগুন দিয়ে পালিয়ে গেল ছাত্রদলের ২ নেতা‘ শীর্ষক একটি তথ্য দেশের মূলধারার গণমাধ্যম প্রথম আলো’র ফটোকার্ডের ডিজাইন সম্বলিত একটি ছবির মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

আগুন

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ‘কাকরাইলের বাসে আগুন দিয়ে পালিয়ে গেল ছাত্রদলের ২ নেতা’ শীর্ষক দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সঠিক নয় এবং প্রথম আলোও উক্ত তথ্য সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি বরং আলোচিত এই ফটোকার্ডটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে প্রথম আলো’র ফটোকার্ডের ডিজাইন সম্বলিত ছবিটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। এতে এই সংবাদটি প্রচারের তারিখ হিসেবে ২৮ অক্টোবরের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

Screenshot: Facebook Claim Post

দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে ফটোকার্ডটিতে থাকা লোগো ও তারিখের সূত্র ধরে প্রথম আলো’র ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে গত ২৮ অক্টোবর বা তার আগে পরে উক্ত শিরোনাম বা তথ্য সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া, প্রথম আলো’র ওয়েবসাইট, ইউটিউব চ্যানেল বা অন্যকোনো গণমাধ্যমেও উক্ত দাবির বিষয়ে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

তবে প্রথম আলো’র প্রযুক্তি, বিনোদন এবং বাংলাদেশ শাখা হতে প্রকাশিত কয়েকটি ফটোকার্ডের ডিজাইনের সাথে আলোচিত ফটোকার্ডটির ডিজাইনের মিল খুঁজে পাওয়া যায়। ধারণা করা যায়, এই ফটোকার্ডগুলো থেকে কোনো একটি সম্পাদনার মাধ্যমে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে। 

Photocard Comparison by Rumor Scanner

আলোচিত বিষয়ে অনুসন্ধান চলাকালে ২৯ অক্টোবর সকাল ১১:৫৪ মিনিটে প্রথম আলো’র ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে ফটোকার্ডটিকে মিথ্যা প্রচারণা উল্লেখ করে একটি ফটোকার্ড পোস্ট হতে দেখে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

Screenshot: Prothom Alo Facebook

উক্ত ফটোকার্ড পোস্টে আরও বলা হয়, “প্রথম আলোর নামে ছড়ানো এই ছবি ও তথ্য নকল, আমাদের তৈরি নয়। বিভ্রান্তি এড়াতে আমাদের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ ও অনলাইনের সঙ্গে থাকুন।”

অর্থাৎ, ‘কাকরাইলের বাসে আগুন দিয়ে পালিয়ে গেল ছাত্রদলের ২ নেতা’ শীর্ষক শিরোনামে প্রথম আলো সাম্প্রতিক সময়ে কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি।

পাশাপাশি, মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো সূত্রে এখন পর্যন্ত কাকরাইলে বাসে আগুনের ঘটনায় ছাত্রদলের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মূলত, গতকাল ২৮ অক্টোবর সরকার পতনের এক দফা দাবিতে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপি মহাসমাবেশের আয়োজন করে। পরবর্তীতে সংঘর্ষ ও ভাঙচুরের ঘটনার জের ধরে সেই সমাবেশ স্থগিত করে দলটির পক্ষ থেকে ২৯ অক্টোবর সারাদেশে হরতালের ডাক দেওয়া হয়। পরবর্তীতে ‘কাকরাইলের বাসে আগুন দিয়ে পালিয়ে গেল ছাত্রদলের ২ নেতা’ শীর্ষক একটি তথ্য দেশের মূলধারার গণমাধ্যম প্রথম আলো’র ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ডেরমাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়। তবে অনুসন্ধানে প্রথম আলো’র ফেসবুক পেজ কিংবা অন্যান্য প্ল্যাটফর্মে উক্ত তথ্য সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাছাড়া, প্রথম আলো’র ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ থেকেও উক্ত ফটোকার্ডটি ভুয়া এবং তাদের তৈরি নয় বলে জানানো হয়।

প্রসঙ্গত, গত ২৮ অক্টোবর মূলধারার গণমাধ্যম ডেইলি স্টারে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে কাকরাইলে বাসে আগুনের ঘটনার বিষয়ে বাস চালকের বরাতে জানানো হয়, কাকরাইল এলাকায় বাসে আগুন দেওয়া দুই যুবক পুলিশের ভেস্ট পরিহিত ছিলেন।

উক্ত ঘটনায় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) প্রধান হারুন অর রশীদ বলেন, “রাজধানীর কাকরাইলে বাসে অগ্নিসংযোগকারী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বা ডিবির কেউ না। অনেক সময় ডিবির জ্যাকেট পড়ে ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধ করে অপরাধীরা। ঢাকায় বাসে আগুনের ঘটনাটিও তেমন কোনো চক্র। যারাই এটা করেছে, আমরা তাদের খুঁজছি।”

উল্লেখ্য, বিএনপি’র ২৮ অক্টোবরে সমাবেশের ঘটনায় বিভিন্ন ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে একাধিক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কিছু প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

এছাড়া, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত বিভিন্ন গণমাধ্যমের নাম, লোগো, শিরোনাম এবং নকল ফটোকার্ড ব্যবহার করে অপপ্রচারের বিষয়ে গত ০৫ সেপ্টেম্বর বিস্তারিত ফ্যাক্ট ফাইল প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, ‘কাকরাইলের বাসে আগুন দিয়ে পালিয়ে গেল ছাত্রদলের ২ নেতা’ শীর্ষক দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা এবং উক্ত দাবিতে প্রথম আলো’র নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি ভুয়া ও বানোয়াট। 

তথ্যসূত্র

কালবেলা’র নকল ফটোকার্ডে মহিলাদলের কর্মীকে স্পর্শ করে যুবদলের নেতা গণপিটুনি খাওয়ার মিথ্যা তথ্য প্রচার 

সম্প্রতি, ‘পল্টনে মহিলাদল কর্মী মৌসুমীর পাছায় হাত দিয়ে গণপিটুনি খেলেন বরিশাল যুবদল নেতা রায়হান’– শীর্ষক তথ্য বা শিরোনামে জাতীয় দৈনিক কালবেলা’র ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

গণপিটুনি

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, গত ২৮ অক্টোবর বিএনপি’র নয়াপল্টনে ডাকা মহাসমাবেশে মহিলাদলের কর্মীকে স্পর্শ করে কোনো ব্যক্তির গণপিটুনি খাওয়ার মত ঘটনা ঘটেনি এবং দৈনিক কালবেলাও উক্ত শিরোনামে কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি বরং ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে উক্ত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে কালবেলা’র ফটোকার্ডের ডিজাইন সম্বলিত ছবিটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। সেখানে এই সংবাদটি প্রচারের তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে ২৮ অক্টোবর ২০২৩। 

Screenshot: Facebook Claim Post

আলোচিত ফটোকার্ডে থাকা মৌসুমী নামক কথিত নারীর ছবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চসহ একাধিক পদ্ধতির অনুসন্ধানে ছবিটির মূল উৎসের খোঁজ মেলেনি। 

তবে, আলোচিত ফটোকার্ডে থাকা টেক্সটের ফন্ট ডিজাইন এবং কালারের সাথে কালবেলা কর্তৃক প্রকাশিত ফটোকার্ডের টেক্সটের ফন্ট ডিজাইন এবং কালারের সুস্পষ্ট পার্থক্য রয়েছে।

Photocard Comparison by Rumor Scanner

পাশাপাশি, প্রচারিত দাবিটির বিষয়ে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে অন্যান্য গণমাধ্যম এবং নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্রেও কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে ফটোকার্ডটিতে থাকা তারিখ এবং কালবেলা’র লোগোর সূত্র ধরে কালবেলা’র ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে ২৮ অক্টোবর প্রচারিত ফটোকার্ডগুলো পর্যালোচনা করে উক্ত শিরোনাম বা তথ্য সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও কালবেলা’র ওয়েবসাইটেও এসংক্রান্ত কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি।

এছাড়া, আলোচিত ফটোকার্ডে থাকা ছবিগুলোর বিষয়ে অনুসন্ধানে ভারতীয় গণমাধ্যম Opindia এর ওয়েবসাইটে ২০২০ সালের ১৮ এপ্রিল “Maharashtra: 3 men, including 2 Sadhus, brutally hacked to death by a mob in Palghar, police arrest 110 people” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে ফটোকার্ডে থাকা একটি ছবির খোঁজ মেলে। 

ছবিটির ক্যাপশন এবং বিস্তারিত প্রতিবেদন পড়ে জানা যাচ্ছে, মুম্বাইয়ের পালঘর জেলার একটি গ্রামের বাসিন্দারা ডাকাত সন্দেহে তিন জন ব্যক্তির উপর হামলা চালালে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করলে পুলিশের গাড়িতেও হামলা চালায় গ্রামবাসী। ছবিটি সেসময়ই তোলা। 

অর্থাৎ, ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়, এমনকি বাংলাদেশের কোনো ঘটনার নয় দৃশ্য এটি। 

মূলত, গত ২৮ অক্টোবর সরকার পতনের এক দফা দাবিতে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপি মহাসমাবেশের আয়োজন করে। উক্ত সমাবেশে মহিলাদলের এক কর্মীকে স্পর্শ করে গণপিটুনি খেলেন বরিশালের রায়হান নামের এক যুবদল নেতা- শীর্ষক তথ্য বা শিরোনামে  জাতীয় দৈনিক কালবেলা’র আদলে তৈরি একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। কিন্তু রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় জাতীয় দৈনিক কালবেলা’র ডিজাইন নকল করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া, অনুসন্ধানে গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্য কোনো গ্রহণযোগ্য সূত্রে পল্টনে মহিলা দলের কথিত কর্মী মৌসুমীকে শ্লীলতাহানি করায় বরিশালের যুবদল নেতা গণপিটুনির শিকার শীর্ষক দাবির বিষয়ে কোনো সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, পূর্বেও বিএনপি’র এই মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে গুজব ছড়ানো হলে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। 

সুতরাং, পল্টনে মহিলাদলের এক কর্মীকে স্পর্শ করে গণপিটুনি খেলেন বরিশালের রায়হান নামের এক যুবদলের নেতা- শীর্ষক তথ্যটি মিথ্যা এবং উক্ত দাবিতে কালবেলা’র নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি ভুয়া ও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র